আল্লাহ রিজিকদাতা হলে মানুষ না খেয়ে মরে কেন?
লিখেছেনঃ এমডি আলী।
ভূমিকাঃ
ইসলামবিরোধী বিশ্বাসীরা কুরআনে আল্লাহ রিজিক দাতা বিষয়ক আয়াত গুলো দেখিয়ে পাশাপাশি বিভিন্ন দুর্ভিক্ষের ছবিতে ছোট ছোট ক্ষুধার্ত শিশুদের ছবি দেখিয়ে অভিযোগ করে আল্লাহ যদি সব প্রাণীর রিজিকের দায়িত্ব নিয়েই থাকেন তাহলে মানুষ ক্ষুধার্ত হয়ে মারা যাবে কেন? তারমানে কি আল্লাহ আসলে আমাদের রিজিক দাতা নয়? এমন অনেক পরিবার আছে যারা ক্ষুধার জ্বালা সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যা পর্যন্ত করেন। ক্ষুধার কারণে নিজের আপন মা পর্যন্ত নিজের সন্তানদেরকে বিক্রি করে দেয়ার ঘটনাও কম নয় সমাজে। তাহলে আল্লাহ কিভাবে রিজিক দাতা হতে পারেন যেখানে উনারা বান্দারাই রিজিকের অভাবে মৃত্যুর কাছে নিজেকে বিলীন করে দিচ্ছে। আজকের লেখায় ইসলামবিরোধী বিশ্বাসীদের এই অভিযোগ গুলোর সত্যতা যাচাই করবো। ইসলামের দৃষ্টিতে আল্লাহ রিজিক দাতা বলতে যা বোঝায় সেটারও স্পষ্ট ধারণা আমরা আজকে জানবো। আপনি নিজেকে নিরপেক্ষ ও সততার সাথে লেখাটি পাঠ করতে পারলে আপনার অনেক ভুল বিশ্বাস দূর হবে বলে আমি আশা করছি। ইসলাম সম্পর্কে অজ্ঞতার কারণে নাস্তিকরা ইসলামবিরোধী বিশ্বাস পোষণ করে থাকে। তারা যদি মন দিয়ে লেখা গুলো পাঠ করতো তাহলে তারা ইসলাম নিয়ে অন্ধবিশ্বাস করতে পারতো না।
খাদ্য সংকট কেন হয়,হচ্ছে?
দুর্ভিক্ষ হল কোনো এলাকা/দেশে ব্যাপক খাদ্য ঘাটতি। সাধারনত ফসলহানি, যুদ্ধ, সরকারের নীতিগত ব্যর্থতা, একদলীয় ইচ্ছাদিন শাসন ইত্যাদি কারণে দুর্ভিক্ষ সংগঠিত হয়। এছাড়াও ধনীদের অপচয়, গরিবদের প্রতি জুলুম, দুর্নীতি ইত্যাদি দুর্ভিক্ষের কারণ। পৃথিবীতে তো পর্যাপ্ত পরিমাণে রিজিক মৌজুদ আছে কিন্তু কতিপয় অসাধু মানুষ অন্যের প্রতি জুলুম করে দেখে অন্যজন জুলুমের শিকার হয়। তাহলে যৌক্তিকভাবে বুঝতে পারলাম দুর্ভিক্ষের জন্য মানুষ দায়ী। মানুষ যেমন কর্ম করবে আল্লাহ তেমন ফল দিবেন। মানুষ যখন অন্যায় কাজ করবে এবং সেই অন্যায়ের বিরুদ্ধে যখন কেউ প্রতিবাদ করবে না তখন আল্লাহ মানুষকে দুর্ভিক্ষ দিবে। আর তা মানুষের জন্য হয়ে উঠবে এক কঠিন পরিক্ষা।
Food and Agriculture Organization of United Nations (FAO)-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী—
Roughly one third of the food produced in the world for human consumption every year-approximately 1.3 billion tonnes gets lost or wasted. Global quantitative food losses and waste per year are roughly 30% for cereals, 40-50% for root crops, fruits and vegetables, 20% oil seeds, meat and dairy plus 15% for fish. Per capita waste by consumers is between 95-115 kg a year in Europe and North America.
অর্থাৎ প্রতিবছর সারা বিশ্বে মোট উৎপাদিত খাদ্যের তিন ভাগের এক ভাগ অপচয় হয়। যার পরিমাণ ১.৩ বিলিয়ন টন বা ১৩০ কোটি টন। মোট উৎপাদিত দানাদার শস্যের ৩০% ফল সবজি এবং মূলজাতীয় শস্যের (পেয়াজ, আদা, রসুন, আলু ইত্যাদি) ৪০-৫০%, তৈল বীজ ২০%, মাছ মাংস এবং দুগ্ধজাতীয় খাদ্য ৩৫% অপচয় হয়। ইউরোপ ও আমেরিকার মানুষ প্রতিবছর জনপ্রতি গড়ে ১৫-১১৫ কেজি খাবার অপচয় করে।
কি বুঝলেন? এতো গুলো খাবার অপচয় না করে যদি সরকার থেকে আইন করে দেয়া হতো অতিরিক্ত খাবার ক্ষুধার্তদেরকে রাষ্ট্রীয়ভাবে প্রদান করা হবে তাহলে আপনার মনে হয় খাদ্য সংকট হতো? যে পরিমাণ খাবার অপচয় হয় তার অল্প কিছু পরিমাণ খাবারও যদি অপচয় না করে সঠিকভাবে ক্ষুধার্ত মানুষদের মধ্যে বণ্টন করে দেওয়া হতো, তবে পৃথিবীতে ক্ষুধার্ত মানুষ তো থাকতই না, বরং তখন আরও অতিরিক্ত খাদ্য ফেলেই দিতে হতো। কারণ তখন খাবার থাকতো কিন্তু খাওয়ার মানুষ থাকতো না। সেই খাবার গুলো পশুপাখিদের জন্য রাখা যেতো। কিন্তু এখন? পরিস্থিতি পুরো উল্টো, খাওয়ার মানুষ আছে কিন্তু খাবার নেই। দানশীল রিজিকদাতা আল্লাহ কিন্তু ঠিকই প্রয়োজনের তুলনায় বেশি পরিমাণ খাদ্যই আমাদেরকে দিয়েছেন। কিন্তু সেটা বণ্টনের দায়িত্ব যাদের উপর রয়েছে তারা ঠিকমতো দায়িত্ব পালন করছে কি? যেই মানুষকে আল্লাহ বণ্টনের দায়িত্ব দিয়েছেন সেই মানুষ দায়িত্ব পালন না করে যদি অন্য মানুষকে ক্ষতি করে তাহলে এর জন্য আল্লাহকে কেন দায়ী করা হবে? দোষ তো মানুষের। সব কিছুর বিচার হবে যারা অন্যায় করে পার পেয়ে যাচ্ছে। আল্লাহর সামনে দাঁড়াতে হবে। জবাব দিতে হবে। অন্যায় করবে আর শাস্তি পাবে না এটা চলবে না।
আসুন জেনে নেই খাদ্য অপচয়ের আরও তথ্যাবলি। এই তথ্যগুলো নিয়ে ইসলামবিরোধী বিশ্বাসীরা গভীরভাবে চিন্তা করতে চাইবে না। কারণ তাদের উদ্দেশ্যই হচ্ছে স্রষ্টাকে খারাপ করে দেখাতে হবে যাতে মানুষ নাস্তিক্যধর্মে বিশ্বাস এনে ফেলে। কিন্তু আমি তো নাস্তিক্যধর্মে অবিশ্বাস করি। আমি তো নাস্তিকদের মতো মিথ্যাচার করতে পারি না। আমি তো মুক্তচিন্তার নামে নাস্তিকদের মতো নিজেকে বন্দী করে রাখি না। আমি তো চাই মানুষ সত্যটা জানুক, সত্যটা প্রচার করুক হোক সেটা নিজের বিরুদ্ধেই।
“Feeding America” খাদ্য সংস্থার রিপোর্ট অনুযায়ী (১),
America has more than enough food for everyone to eat. But each year, billions of pounds of perfectly good food go to waste. Meanwhile, 34 million face hunger in the United States….Each year, 108 billion pounds of food is wasted in the United States. That equates to 130 billion meals and more than $408 billion in food thrown away each year. Shockingly, nearly 40% of all food in America is wasted.
আমেরিকায় সবার খাওয়ার জন্য পর্যাপ্ত খাবার রয়েছে। কিন্তু প্রতি বছর, বিলিয়ন পাউন্ড পুরোপুরি ভাল খাবার নষ্ট হয়ে যায়। এদিকে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ৩৪ মিলিয়ন মানুষ ক্ষুধার মুখোমুখি। প্রতি বছর, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ১০৮ বিলিয়ন পাউন্ড খাদ্য নষ্ট হয়। এটি প্রতি বছর ১৩০ বিলিয়ন খাবার এবং ৪০৮ বিলিয়ন ডলারের বেশি খাবারের সমান। আশ্চর্যজনকভাবে, আমেরিকার সমস্ত খাবারের প্রায় ৪০% নষ্ট হয়।
World Population Review-এর সুত্র (২) অনুযায়ী জানানো হয়েছে ২০২২ সালে বিভিন্ন দেশে কেমন পরিমাণ খাদ্য নষ্ট করে দেয়া হয় সেই তথ্য। সেখানে বলা হয়েছে,
The gross amount of food waste in China exceeds 91 million tons. The large quantities of food waste reported by China, while considerable, probably shouldn't be too much of a surprise for the world's most populous country. The gross amount of food waste for India exceeds 68 million tons. Much like China, India's sheer population numbers unsurprisingly result in larger amounts of unused food. The gross amount of food waste in the US exceeds 19 million tons. While other countries can cite population numbers as the inherent reason for food waste, the US can't make that claim. For the most powerful nation on earth, food waste is a result of being the world's largest consumer of food.The gross amount of food waste in Japan exceeds 8 million tons. Although Japan can't make the same population boasts as larger countries, it is a densely populated land. That is also the primary culprit for Japan's large food waste numbers. The gross amount of food waste in Germany exceeds 6 million tons. Germany, like several other European nations, owes its food waste excess to both size and wealth.The gross amount of food waste in France exceeds 5 million tons. Known for its love of food and baked goods, France is less known for its food waste, a problem it shares with fellow European nations.The gross amount of food waste in the UK exceeds 5 million tons. Even the most regal of countries are not immune to the issue of food waste, and the UK is exhibit number one.The gross amount of food waste in Russia exceeds 4 million tons. Russia's food waste excess is in large part due to the size and number of people that live in this vast country.The gross amount of food waste in Spain exceeds 3 million tons. The country of Spain is well known for its celebrations and food, but much of that food becomes waste, also putting Spain on the food waste by country list.The gross amount of food waste in Australia exceeds 2 million tons. Arguably one of the more surprising countries on the list, Australia rounds out the food waste by country list. What makes Australia such an unexpected member of the food-waste club is that Australia is also a world leader in green energy and conservation efforts.
চায়নাতে ৯১ মিলিয়ন টন, ভারতে ৬৮ মিলিয়ন টন,ইউএসে ১৯ মিলিয়ন টন,জাপানে ৮ মিলিয়ন টন,জার্মানিতে ৬ মিলিয়ন টন, ফ্রান্স ৫ মিলিয়ন টন, ইউকে ৫ মিলিয়ন টন, রাশিয়া ৪ মিলিয়ন টন, স্পেন ৩ মিলিয়ন টন, অস্ট্রেলিয়া ২ মিলিয়ন টন খাবার ফেলে দেয়া হয়। কল্পনা করতে পারবেন একটু?
এছাড়াও THE WORLD COUNT এর রিপোর্ট অনুযায়ী (৩)
Roughly a third of the world’s food is wasted. That’s about 1.3 billion tons a year.The world loses an astounding quantity of food every year. It blows your mind but a third of all food for human consumption in the world is lost or wasted. 1.3 billion tons of food suitable for human consumption and 1.6 billion tons of so-called "primary product equivalents” are lost or wasted.
অর্থাৎ, বিশ্বের খাদ্যের প্রায় এক তৃতীয়াংশ নষ্ট হয়। এটি বছরে প্রায় ১.৩ বিলিয়ন টনে গিয়ে পৌঁছে। বিশ্ব প্রতি বছর একটি বিস্ময়কর পরিমাণ খাদ্য হারায়। এটি আপনার মনকে উড়িয়ে দেয় তবে বিশ্বের মানুষের খাওয়ার জন্য সমস্ত খাবারের এক তৃতীয়াংশ হারিয়ে যায় বা নষ্ট হয়। মানুষের খাওয়ার জন্য উপযুক্ত ১.৩ বিলিয়ন টন খাদ্য এবং ১.৬ বিলিয়ন টন তথাকথিত "প্রাথমিক পণ্যের সমতুল্য" হারিয়ে গেছে বা নষ্ট হয়ে গেছে। এই বিষয় জানতে আরও পড়তে পারেন এই লেখা (৪),(৫) গুলো।
আল্লাহ তো মানুষকে প্রয়োজনের অতিরিক্ত খাবার দিয়ে রেখেছেনই এখন মানুষ যদি নিজের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন না করে তাহলে এর দোষ অবশ্যই মানুষের। ইসলামে অপচয় করাকে তীব্র নিন্দা করা হয়েছে। আপনি অর্থহীনভাবে কেন অপচয় করবেন, হোক সেটা খাদ্য, পোশাক, জুতা, ঘড়ি, বাসা ইত্যাদি? অপচয় করা হারাম,আল্লাহর দেয়া এই বিধান যদি সঠিকভাবে মানা হতো তাহলে কি খাদ্য সংকট হতো? ইসলাম সমাধান দিয়েছে কিন্তু দুনিয়ার কতজন মানুষ এই সমাধান গ্রহণ করছে?
আল কুরআন, সুরা আরাফ ৭ঃ৩১ আয়াতে বলা আছে,
হে বনী-আদম! তোমরা প্রত্যেক নামাযের সময় সাজসজ্জা পরিধান করে নাও, খাও ও পান কর এবং অপব্যয় করো না। তিনি অপব্যয়ীদেরকে পছন্দ করেন না।
আল কুরআন, সুরা বনী ইসরাইল, ১৭ঃ২৫,২৬,২৭ আয়াতে বলা আছে,
তোমাদের পালনকর্তা তোমাদের মনে যা আছে তা ভালই জানেন। যদি তোমরা সৎ হও, তবে তিনি তওবাকারীদের জন্যে ক্ষমাশীল। আত্নীয়-স্ব জনকে তার হক দান কর এবং অভাবগ্রস্ত ও মুসাফিরকেও। এবং কিছুতেই অপব্যয়/অপচয় করো না। নিশ্চয় অপব্যয়কারীরা শয়তানের ভাই। শয়তান স্বীয় পালনকর্তার প্রতি অতিশয় অকৃতজ্ঞ।
আল কুরআন, সুরা আনআম ৬ঃ১৪১ আয়াতে বলা আছে,
তিনিই উদ্যান সমূহ সৃষ্টি করেছে-তাও, যা মাচার উপর তুলে দেয়া হয়, এবং যা মাচার উপর তোলা হয় না এবং খর্জুর বৃক্ষ ও শস্যক্ষেত্র যেসবের স্বাদবিশিষ্ট এবং যয়তুন ও আনার সৃষ্টি করেছেন-একে অন্যের সাদৃশ্যশীল এবং সাদৃশ্যহীন। এগুলোর ফল খাও, যখন ফলন্ত হয় এবং হক দান কর কর্তনের সময়ে এবং অপব্যয় করো না। নিশ্চয় তিনি অপব্যয়ীদেরকে পছন্দ করেন না।
এই তথ্য গুলো জেনে নেবার পরেও যারা আল্লাহর দিকে দোষ চাপিয়ে দিবে তারা যে ধোঁকাবাজ ও অসাধুগোষ্ঠী এটা নিয়ে আমার বিন্দুমাত্র সংশয় নেই। আমি নিশ্চিত। আল্লাহ তায়ালা সকল জীবের বসবাসের জন্য পর্যাপ্ত বায়ু সৃষ্টি করেছেন। তেমনিভাবে খাদ্যও। যদি কোনো অত্যাচারী কোনো জীবের বাতাস কেটে দেয়, শ্বাস নিতে বাধা দেয় এবং তাকে হত্যা করে, তবে সেই প্রাণীর মৃত্যু বায়ু নেই বলে নয়, বরং বায়ু গ্রহণে বাধা দেওয়ার কারণে। তাই বলা যায় না যে তিনি বাতাসের অভাবে মারা গেছেন। তিনি মারা গেছেন কারণ তাকে বাতাস নিতে বাধা দেওয়া হয়েছিল। আল্লাহ প্রত্যেক জীবকে পর্যাপ্ত বাতাস দেন; তিনি প্রত্যেক জীবকে বেঁচে থাকার জন্য যথেষ্ট রিজিকও দেন। অত্যাচারী মানুষরা তাদের কাছ থেকে আল্লাহর দেওয়া রিজিক কেড়ে নেয় এবং তারা তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত হয় ফলে মারা যায়। সেক্ষেত্রে সেই প্রাণীর মৃত্যু হয় রিযিকের অভাবে নয়, বরং তাকে দেওয়া রিযিক থেকে বঞ্চিত হওয়ার কারণে এবং,যে এটা ঘটাচ্ছে সে একজন খুনি হয়ে যায়। অর্থাৎ কোনো জীবকে তার রিযিক পেতে বাধা দেওয়া এবং তার মৃত্যু ঘটানোর অর্থ এই নয় যে, জীবিকা না পাওয়ার কারণে সে মারা গেছে, বরং তার রিজিক বাধাপ্রাপ্ত হওয়ার কারণে।
আল কুরআন, সুরা রুম ৩০ঃ৪১ আয়াতে বলা হয়েছে,
স্থলে ও জলে মানুষের কৃতকর্মের দরুন বিপর্যয় ছড়িয়ে পড়েছে। আল্লাহ তাদেরকে তাদের কর্মের শাস্তি আস্বাদন করাতে চান, যাতে তারা ফিরে আসে।
আল কুরআন,সুরা তুর ৫২ঃ২১ আয়াতে বলা হয়েছে,
যারা ঈমানদার এবং যাদের সন্তানরা ঈমানে তাদের অনুগামী, আমি তাদেরকে তাদের পিতৃপুরুষদের সাথে মিলিত করে দেব এবং তাদের আমল বিন্দুমাত্রও হ্রাস করব না। প্রত্যেক ব্যক্তি নিজ কৃত কর্মের জন্য দায়ী।
রিজিক নিয়ে সেই আয়াত গুলোঃ
আল কুরআন, সুরা হুদ ১১ঃ৬ আয়াতে লেখা আচে,
পৃথিবীতে চলমান সকল প্রাণীর জীবিকার দায়িত্ব আল্লাহর। তিনি তাদের অবস্থানস্থল ও সংরক্ষণস্থল জানেন। সব কিছুই এক স্পষ্ট কিতাবে লিখিত আছে।
এই আয়াত দেখিয়ে নাস্তিক সমাজ দাবি করতে চান যেহেতু আল্লাহ সকলের রিজিকের দায়িত্ব নিয়েছেন সেহেতু আল্লাহ আসমান থেকে খাবার পাঠাবেন, আমরা পরিশ্রম করব না বরং বসে বসে খাব তবে যেহেতু আমরা পৃথিবীতে দেখতে পাই এমন অনেক জাগা আছে যেখানে মানুষ খাবার পায় না বরং খাদ্যের অভাবে মারা যায় তাই এখান থেকে বুঝা যায় আল্লাহ বলতে আসলে কেউই নেই অথবা কুরআনের আয়াত ভুল। নাস্তিকদের এই ব্যাখ্যাটি ঠিক নয়। কারণ ইসলাম এই ব্যাখ্যাকে সমর্থন করেই না। আল্লাহ সকল প্রাণীর রিজিকের দায়িত্ব নিয়েছেন কথা সত্য কিন্তু এরমানে এই না যে মানুষ কোনো কাজ করবে না, মানুষ হাত পা বেধে বসে থাকবে আর আল্লাহ উপরের থেকে খাবার পাঠাবেন ব্যাপারটা এরকম নয়। আল্লাহ আমাদের সবার রিজিকের মালিক এবং তিনি কিছু সিস্টেম তৈরি করেছেন যা মানুষের রিজিকের অভাব দূর করবে।
আল কুরআন, সুরা জারিয়াত ৫১ঃ১৯ আয়াতে লেখা আছে,
ধনীদের ধন সম্পদে রয়েছে অভাব গ্রস্থ ও বঞ্চিতদের অধিকার।
এই আয়াত থেকে পরিস্কার বুঝা যাচ্ছে যে আল্লাহ চান তিনি যেই রিজিক ধনীদের দান করেছেন এখানে গরিবদের রিজিকও আছে সুতরাং ধনীদের সম্পদে যেই গরীবদের রিজিক আল্লাহ রেখেছেন সেই রিজিক ধনীরা যেন গরিবদের দান করে মূলত এটাই হল আল্লাহর সিস্টেম,এটাই আল্লাহর আদেশ। ধনীদেরকে নিজেদের সম্পদ থেকে খরচ করতে বলেছেন আল্লাহ। এমনকি ধনী ও গরীবদের মধ্যে যে পার্থক্য হয়েছে সেটা এই কারণে যে একে অপরের সাহায্য করতে পারবে। কুরআনের আয়াত গুলো মনোযোগ দিয়ে পাঠ করুন।
আল কুরআন, সুরা নিসা ৪:৫৮ আয়াতে বলা আছে,
নিশ্চয় আল্লাহ্ তোমাদেরকে নির্দেশ দিচ্ছেন আমানত সমূহ তাদের প্রাপকদের কাছে পৌছে দিতে ।তোমরা যখন মানুষের মধ্যে বিচার কাজ পরিচালনা করবে তখন ন্যায়-পরায়নতার সাথে বিচার করবে।
আল কুরআন, সুরা যূখরুফ ৪৩:৩২ আয়াতে বলা আছে,
তারা কি আপনার পালনকর্তার রহমত বন্টন করে? আমি তাদের মধ্যে তাদের জীবিকা বন্টন করেছি পার্থিব জীবনে এবং একের মর্যাদাকে অপরের উপর উন্নীত করেছি, যাতে একে অপরকে সেবক রূপে গ্রহণ করে। তারা যা সঞ্চয় করে, আপনার পালনকর্তার রহমত তদপেক্ষা উত্তম।
আল কুরআন,সুরা সাজদা ৩২:১৬ আয়াতে বলা আছে,
আল্লাহ তাদেরকে যে রিযিক দিয়েছি, তা থেকে ব্যয় করে।
আল কুরআন, সুরা যিলযাল ৯৯:৭,৮ আয়াতে বলা আছে,
কেউ অনু পরিমান ভাল কাজ করলে সে তা দেখতে পারবে এবং কেউ অনুপরিমান খারাপ কাজ করে থাকলেও তাও সে দেখতে পারবে।
জামে আত তিরমিজি, হাদিসঃ ১৯২২, সহিহ হাদিসঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে লোক মানুষের প্রতি দয়া-অনুগ্রহ প্রদর্শন করে না তাকে আল্লাহ্ তা‘আলাও দয়া করেন না।-ihadis.com
জামে আত তিরমিজি, হাদিসঃ ২০০৫, সহিহ হাদিসঃ
আবদুল্লাহ ইবনুল মুবারাক (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ সদাচার ও উত্তম চরিত্রের বর্ণনা দিতে গিয়ে আবদুল্লাহ ইবনুল মুবারাক (রহঃ) বলেন, তা হলো হাস্যোজ্জ্বল চেহারা, উত্তম জিনিস দান করা এবং কষ্ট দেয়া হতে বিরত থাকা।-ihadis.com
ধনীরা যেভাবে অপচয় করেঃ
"বাংলাদেশ প্রতিদিন, ২ নভেম্বর ২০১৯" সূত্রে "কে কিভাবে টাকা উড়ায়" শিরোনামে কিছু কোটিপতিদের টাকা উড়ানর কিছু ঘটনা উল্লেখ করা হয়েছে।
হলিউডের তুমুল জনপ্রিয় সুন্দরী মডেল ও অভিনেত্রী "কিম কারদেশিয়ানের" সঙ্গে একটু সময় কাটাতে ৪০ কোটি টাকা ঢেলে দিতে একটুও কার্পণ্য বোধ করেনি রিচার্ড লাগনার। প্রতি সন্ধায় একজন সেলেব্রেটির সাথে একটু নাস্তা করা, নাচ গান না করলে তার চলেই না।
রাশিয়ান ব্যবসায়ী সহস্র কোটিপতি "রোমান আব্রাহিমোভিচ" রেস্টুরেন্টে খেতে ৪০ লাখ টাকা খরচ করলেন একাই। "ম্যানহাটনের" এক রেস্টুরেন্টে অল্প কিছুক্ষণের জন্য বসেছিলেন, উদ্দেশ্য সামান্য নাস্তা করা। তিনি এমন ভাবে খাবারের অর্ডার করছিল যেন বেয়ারাদের দৌড়াদৌড়ি শুরু হয়ে গেল। খাবারের বিল আসছে ৪০ লাখ টাকা। এনার মাত্র এক বেলার খাবারেই ৪০ লাখ !
দুবাইয়ের শেখ হামাদ বিন হামদান আল নাইয়ান , প্রায় ১২৫ কোটি টাকা খরচ করে দ্বীপজুড়ে খোদাই করেছেন নিজের নাম "হামাদ"। তার নাম এত সুবিশাল যে সেটি চাঁদ থেকেও স্পষ্ট দেখা যায়। দ্বীপজুড়ে এ নামের দীর্ঘ ২ মাইল পর্যন্ত।
ভারতীয় ধনকুবের "লাক্ষি মিত্তাল" তার মেয়ের বিয়েতে ৫০০ কোটি টাকা খচর করে বিয়ে দেন। এই বিয়েতে সোনালী রং বাছাই করার কারনে পুরো প্রাসাদ ও আসবাব মুড়ে দেয়া হয় সোনালী রঙে,ক্ষেত্র বিশেষে ব্যাবহার করা হয় খাটি স্বর্ণ।
এগুলো অপচয় না তো কি? অপচয় না করে নিজেকে ধনী প্রমাণ করা যায় না? পৃথিবীতে যেই গরীবরা রয়েছে ধনীরা যদি দায়িত্ব নিয়ে এই সমস্যা সমাধান করতে চাইতো তাহলে কি গরীবি থাকতো? আল্লাহ কিন্তু ধনীদের উপর গরীবদের দায়িত্ব চাপিয়ে দিয়েছেন এখন ধনীরা যদি সেই দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন না করে তাহলে অবশ্যই এর জন্য ধনীরা অপরাধী। কাউকে দায়িত্ব দেয়া তো অন্যায় নয় কিন্তু দায়িত্ব পালন না করাটা অন্যায়। এই কারণে দুনিয়াতে যতো গরীবরা রয়েছে তার জন্য ধনীদেরকে দায়ী করা অযৌক্তিক হবে না। আপনিও একমত হবেন আমার সাথে আগে এই তথ্যটি পড়ুন।
"BBC News বাংলা, ১৬ জানুয়ারি ২০১৭" “বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি কারা?” শিরোনামে খবর লেখা হয়েছে,
বিশ্বের সবচেয়ে ধনী আট জন ব্যক্তির হাতে যতো সম্পদ আছে সেই সম্পদের পরিমাণ দুনিয়ার অর্ধেক মানুষের সম্পদের সমান, বলছে আন্তর্জাতিক এক দাতব্য সংস্থা অক্সফ্যাম। সংস্থাটি এসংক্রান্ত যেসব তথ্য প্রকাশ করেছে তাতে দেখা যাচ্ছে, ধনী ও দরিদ্রের মধ্যে ব্যবধান ক্রমশই বাড়ছে। এবং এই ব্যবধান যতো হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হয়েছিলো আসলে তার চাইতেও অনেক বেশি। সবচে ধনী এই আট জনের মধ্যে রয়েছেন বিল গেটস, মার্ক জাকারবার্গ এবং ওয়ারেন বাফেট। অক্সফ্যাম বলছে, এই আট জনের হাতে যতো সম্পদ রয়েছে তার পরিমাণ বিশ্বের ৩৬০ কোটি দরিদ্র মানুষের সম্পদের সমান। তবে অনেকেই অক্সফ্যামের এই তথ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তারা বলছেন, প্রতি বছর অক্সফ্যাম সম্পদের যে পরিসংখ্যান তুলে ধরছে সেটা ঠিক আছে, কিন্তু সংস্থাটি এর যে ব্যাখ্যা দিচ্ছে সেটি ঠিক নয়। গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইন্সটিটিউট অফ ইকোনমিক অ্যাফেয়ার্সের একজন গবেষক মার্ক লিটলউড বলেছেন, অক্সফ্যামের উচিত প্রবৃদ্ধি বাড়ানোর উপায়ের দিকে জোর দেওয়া। অক্সফ্যামের প্রতিবেদনটি এমন এক সময়ে প্রকাশ করা হলো যখন সুইজারল্যান্ডে শুরু হয়েছে বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের সম্মেলন। এই সম্মেলনে বিশ্বের প্রভাবশালী রাজনীতিক ও ব্যবসায়ীরা অংশ নিচ্ছেন। অক্সফ্যামের একজন কর্মকর্তা ক্যাটি রাইট বলেছেন, এটা নিয়ে কোন সন্দেহ নেই যে ডাভোস সম্মেলন শুধু ধনী লোকেদের কথার ফুলঝুরির সম্মেলন হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারা এই ধনী ব্যক্তিঃ ১. যুক্তরাষ্ট্রের বিল গেটস, মাইক্রোসফটের একজন সহযোগী প্রতিষ্ঠাতা। তার সম্পদের পরিমাণ ৭৫ বিলিয়ন ডলার। ২. স্পেনের ব্যবসায়ী আমানচিও ওরতেগা। জারার প্রতিষ্ঠাতা এবং ইনটিডেক্সের মালিক। তার সম্পদ ৬৭ বিলিয়ন ডলার। ৩. যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ার ব্যবসায়ী ওয়ারেন বাফেট, বার্কশায়ার হাথেওয়ের সবচে বেশি শেয়ারের মালিক। সম্পদ ৬১ বিলিয়ন ডলার। ৪. মেক্সিকোর ব্যবসায়ী কার্লোস স্লিম হেলু। গ্রুপো কারসোর মালিক। সম্পদ ৫০ বিলিয়ন ডলার। ৫. যুক্তরাষ্ট্রের জেফ বেজোস। ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান আমাজনের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী। সম্পদের পরিমাণ ৪৫ বিলিয়ন ডলার। ৫. যুক্তরাষ্ট্রের মার্ক জাকারবার্গ। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের একজন প্রতিষ্ঠাতা এবং প্রধান নির্বাহী। সম্পদ ৪৫ বিলিয়ন ডলার। ৭. যুক্তরাষ্ট্রের ল্যারি এলিসন। সফটওয়্যার নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান ওরাকলের একজন প্রতিষ্ঠাতা এবং প্রধান নির্বাহী। ৪৪ বিলিয়ন ডলার। ৮. যুক্তরাষ্ট্রের মাইকেল ব্লুমবার্গ। ব্লুমবার্গ এলপির মালিক। তার সম্পদের পরিমাণ ৪০ বিলিয়ন ডলার।
“কালের কণ্ঠ” পত্রিকায় ২০ জানুয়ারি, ২০২২ তারিখে “ধনীদের সম্পদের করে টিকা দেওয়া যাবে পুরো বিশ্বে” শিরোনামে খবরে লেখা হয়েছে,
বিশ্বের ধনীদের ওপর যদি সম্পদ কর আরোপ করা যায় তবে বছরে কমপক্ষে ২.৫২ ট্রিলিয়ন ডলার পাওয়া যাবে। এ অর্থে বিশ্বের সব মানুষকে কভিড-১৯-এর টিকা দেওয়া যাবে। এমনকি এর পাশাপাশি কয়েক শ মানুষকে দারিদ্র্যের অভিশাপ থেকে মুক্তিও দেওয়া যাবে। গতকাল বুধবার অলাভজনক কয়েকটি সংস্থা এমন প্রস্তাব উত্থাপন করেছে। বেসরকারি সংস্থা সোশ্যাল মুভমেন্ট এবং প্রো-ট্যাক্স মিলিয়নেয়ার আলাদা প্রতিবেদনে জানিয়েছে, দুই বছরের এ করোনা মহামারিতে বিশ্বের সম্পদশালীরা আরো ধনী হয়েছে। দাতব্য সংস্থা অক্সফাম এর আগে এক প্রতিবেদনে জানায়, এই সময়ে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় ১০ ধনীর সম্পদ দ্বিগুণ বেড়ে হয়েছে ১.৫ ট্রিলিয়ন ডলার। এ নিয়ে এক বিবৃতিতে ফ্লাইট ইনইকোয়ালিটি অ্যালায়েন্সের বৈশ্বিক আহ্বায়ক জেনি রিকস এক বিবৃতিতে বলেন, ‘নিদারুণ বাস্তবতা হচ্ছে করোনা মহামারির সময় যখন শত শত কোটি মানুষ প্রতিদিনের জীবিকা জোগাড়ের জন্য লড়াই করে যাচ্ছে, একই সময়ে বিলিয়নেয়ারদের সম্পদ বেড়েছে অনিয়ন্ত্রিত হারে। ফ্লাইট ইনইকোয়ালিটি অ্যালায়েন্স, অক্সফাম, যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ইনস্টিটিউট ফর পলিসি স্টাডিজ এবং প্যাট্রিয়টিক মিলিয়নেয়ার ধনীদের ওপর কর আরোপের এ প্রস্তাব করে। তাদের প্রস্তাবে বলা হয়, যাদের আয় পাঁচ মিলিয়ন ডলারের বেশি তাদের সম্পদের ওপর কর আরোপ করা হবে ২ শতাংশ, যাদের আয় ৫০ মিলিয়ন ডলারের বেশি তাদের ওপর ৩ শতাংশ এবং যাদের আয় এক বিলিয়ন ডলারের বেশি তাদের ওপর ৫ শতাংশ কর আরোপ করতে হবে। সংস্থাগুলো জানায়, এর ফলে বার্ষিক উত্তোলন করা যাবে ২.৫২ ট্রিলিয়ন ডলার। যার মাধ্যমে বিশ্বের ২৩০ কোটি মানুষকে দারিদ্র্যমুক্ত করা যাবে এবং সারা বিশ্বের জন্য টিকা উৎপাদন করা সম্ভব হবে। এ অর্থে এমনকি নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশের ৩৬০ কোটি মানুষকে সার্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা এবং সামাজিক সুরক্ষা দেওয়া যাবে। বেসরকারি সংস্থাগুলোর এ গ্রুপ জানায়, যদি বিলিয়নেয়ারদের ওপর একটু বাড়তি কর ১০ শতাংশ আরোপ করা যায় তবে বছরে উঠবে ৩.৬২ ট্রিলিয়ন ডলার।
অনেকে এখানে বলতে পারে তাদের তো চ্যারিটি আছে কিন্তু সেই চ্যারিটি দিয়ে কি সবার সমাধান হবে? ইসলাম তো ভালো লাগে না, ইসলামে ধনীদের জন্য যেই যাকাত সিস্টেম করেছে সেই সিস্টেমে গরীবদেরকে একটা ভারসাম্যময় জীবন দেয়া যেতো। কিন্তু গরীবদের এই উন্নতি তো সবার ভালো লাগবে না। ইসলামকে ধ্বংস করতে হবে, নাস্তিকখ্রিস্টান থেকে নিয়ে ইত্যাদি ইসলামবিরোধী গোষ্ঠীরা মিলে ইসলামকে ধ্বংস করতে চায়। প্রশ্ন হচ্ছে কেন? ইসলাম আমাদেরকে কি শিক্ষা দেয় আসুন জেনে নেই।
আল কুরআন, সুরা বাকারা ২ঃ১৭৭ আয়াতে লেখা আছে,
সৎকর্ম শুধু এই নয় যে, পূর্ব কিংবা পশ্চিমদিকে মুখ করবে, বরং বড় সৎকাজ হল এই যে, ঈমান আনবে আল্লাহর উপর কিয়ামত দিবসের উপর, ফেরেশতাদের উপর এবং সমস্ত নবী-রসূলগণে র উপর, আর সম্পদ ব্যয় করবে তাঁরই মহব্বতে আত্নীয়-স্ব জন, এতীম-মিসকীন , মুসাফির-ভিক্ষুক ও মুক্তিকামী ক্রীতদাসদের জন্যে। আর যারা নামায প্রতিষ্ঠা করে, যাকাত দান করে এবং যারা কৃত প্রতিজ্ঞা সম্পাদনকারী এবং অভাবে, রোগে-শোকে ও যুদ্ধের সময় ধৈর্য্য ধারণকারী তারাই হল সত্যাশ্রয়ী, আর তারাই পরহেযগার।
সহিহ বুখারী, হাদিসঃ ৫৯৭৫, সহিহ হাদিসঃ
সা’দ ইবনু হাফ্স (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন: আল্লাহ তা’আলা তোমাদের উপর হারাম করেছেন, মা-বাপের নাফরমানী করা, প্রাপকের প্রাপ্য আটক রাখা, যে জিনিস গ্রহণ করা তোমাদের জন্য ঠিক নয় তা তলব করা এবং কন্যা সন্তানকে জীবিত ক্ববর দেয়া। আর তিনি তোমাদের জন্য অপছন্দ করেছেন গল্প-গুজব করা, অতিরিক্ত প্রশ্ন করা ও সম্পদ অপচয় করা।-ihadis.com
রিয়াদুস সলেহিন, হাদিসঃ ৩৪৫, সহিহ হাদিসঃ
আবূ ঈসা মুগীরা ইবনু শু‘বাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘অবশ্যই আল্লাহ তোমাদের জন্য (তিনটি কর্মকে) হারাম করেছেন; মায়ের অবাধ্যাচরণ করা, অধিকার প্রদানে বিরত থাকা ও অনধিকার কিছু প্রার্থনা করা এবং কন্যা জীবন্ত প্রোথিত করা। আর তিনি তোমাদের জন্য অপছন্দ করেছেন (তিনটি কর্ম); ভিত্তিহীন বাজে কথা বলা (বা জনরবে থাকা), অধিক (অনাবশ্যক) প্রশ্ন করা (অথবা প্রয়োজনের অধিক যাচ্ঞা করা) এবং ধন-মাল বিনষ্ট (অপচয়) করা।’’-ihadis.com
ইসলাম সম্পদকে অপচয় করাকে নিষেধ করে এবং গরীবদের দান করতে উৎসাহ প্রদান করে। এই বিষয় আরও হাদিস পড়তে দেখুনঃ
সহিহ বুখারি, হাদিসঃ ৬৪৭৩,সহিহ হাদিস।-ihadis.com
সুনানে আবু দাউদ,হাদিসঃ ২৮৭২,হাসান সহিহ।-ihadis.com
জামে আত তিরমিজি,হাদিসঃ ৬৭২,সহিহ হাদিস।-ihadis.com
সুনানে ইবনে মাজাহ,হাদিসঃ ২২৯৪,সহিহ হাদিস।-ihadis.com
সুনানে ইবনে মাজাহ,হাদিসঃ ২৭১৮,হাসান সহিহ।-ihadis.com
সুনানে ইবনে মাজাহ,হাদিসঃ ৩৬০৫,হাসান হাদিস।-ihadis.com
বুলগুল মারাম,হাদিসঃ ১৪৫৬,সহিহ হাদিস।-ihadis.com
মিশকাতুল মাসাবিহ,হাদিসঃ ৪২৭,হাসান হাদিস।-ihadis.com
ইসলামকে নবীজি মোহাম্মদ (সা) যেভাবে বুঝিয়েছেন আমাদেরকে ঠিক সেভাবেই বুঝতে হবে। নবীজি মোহাম্মদ (সা) নিজেই বলেছেন আল্লাহ এক দলের মাধ্যমে অন্য দলের রিজিকের ব্যবস্থা করেন।
সুনানে আবু দাউদ, হাদিসঃ ৩৪৪২ , সহিহ হাদিসঃ
রাসুল (সা) বলেছেন শহরবাসী গ্রামবাসীর পক্ষ হয়ে পণ্য বিক্রি করবে না। তোমরা লোকদের ছেড়ে দাও। মহান আল্লাহ এক দলের মাধ্যমে উপর দলের রিজিকের ব্যবস্থা করেন।-ihadis.com
জামে আত তিরমিজি, হাদিসঃ ২৩৫২ , সহিহ হাদিসঃ
এই হাদিসের শেষের অংশে রাসুল (সা) আম্মাজান আয়েশা (রা)কে উপদেশ দিচ্ছেন যেঃ হে আয়শা! তুমি যঞ্জাকারী দরিদ্রকে ফিরিয়ে দিও না। যদি দেয়ার মত কিছু তোমার না থাকে, তাহলে একটি খেজুরের টুকরা হলেও তাকে দিও। হে আয়েশা! তুমি দরিদ্রদের ভালবাসবে এবং তাদেরকে তোমার সান্নিধ্যে রাখবে। তাহলে কিয়াময়ের দিন আল্লাহ তোমাকে তার সান্নিধ্যে রাখবে।-ihadis.com
সহিহ বুখারি, হাদিসঃ ৭৩ , সহিহ হাদিসঃ
রাসুল (সা) বলেছেন কেবল দুটি বিষয় ঈর্ষা করা বৈধ। ১/ সে ব্যাক্তির উপর যাকে আল্লাহ সম্পদ দিয়েছেন অতপর তাকে বৈধ পন্থায় অকাতরে ব্যয় করার ক্ষমতা দিয়েছেন। ২/ সে ব্যাক্তির উপর যাকে আল্লাহ প্রজ্ঞা দান করেছেন, অতপর সে তাঁর মাধ্যমে বিচার ফয়সালা করে ও তা অন্যকে শিক্ষা দেয়।
ইসলাম আমাদেরকে কেমন যৌক্তিক ভারসাম্যপূর্ণ সিস্টেম জানিয়ে দিয়েছে খেয়াল করেছেন? ধনীরা গরীবদেরকে সেবা করবে এটা আল্লাহর আদেশ। এটা আল্লাহর হুকুম। এটা ইসলামের বিধান। এই কারণে ইসলামিক রাষ্ট্র থাকলে ধনীদের থেকে যাকাত আদায় করে সব গরীবদের মধ্যে ছড়িয়ে দেয়া হতো। আল্লাহর এই সিস্টেম যদি আমরা আমাদের বাস্তব জীবনে প্রয়োগ করি তাহলে ধনী গরীবের মাঝে সুন্দর সম্পর্ক সৃষ্টি হতো এবং মানুষে মানুষে ভালবাসার বন্ধন তৈরি হতো। ধরুন আপনি প্রচুর কোটিপতি , এমন এক দ্বীপে গেলেন যেখানে মানুষ খাবার পাচ্ছে না এখন আপনি আপনার সম্পদ থেকে তাদেরকে খাবারের অবস্থান তৈরি করলেন এতে তাদের মধ্যে আর আপনার মধ্যে একটি ভালো সম্পর্ক হল। আর এটাই আল্লাহ চান, বিধায় কুরআনে তাই বলেছেন ধনীদের সম্পদে রয়েছে গরীবদের হক।
সহিহ বুখারী, হাদিসঃ ৫৪২৩, সহিহ হাদিসঃ
‘আবিস (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, আমি ‘আয়িশা (রাঃ) -কে জিজ্ঞেস করলামঃ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কি কুরবানীর গোশ্ত তিন দিনের অধিক সময় খেতে নিষেধ করেছেন? তিনি বললেনঃ সেই বছরেই কেবল নিষেধ করেছিলেন, যে বছর মানুষ অনাহারের কবলে পড়েছিল। তিনি চেয়েছিলেন যেন ধনীরা গরীবদের খাওয়ায়। আমরা তো বকরীর পায়াগুলো তুলে রাখতাম এবং পনের দিন পর তা খেতাম। তাঁকে জিজ্ঞেস করা হলঃ কিসে আপনাদের এগুলো খেতে বাধ্য করত? তিনি হেসে বললেনঃ মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহ্র সঙ্গে মিলিত হবার পূর্ব পর্যন্ত তাঁর পরিবার পরিজন এক নাগাড়ে তিনদিন তরকারীসহ গমের রুটি পেট ভরে খাননি। অন্য সনদে ইবনু কাসীর বলেছেন, সুফিয়ান (রহঃ) ‘আবদুর রহমান ইবনু ‘আবিস সূত্রে উক্ত হাদীসটি আমার কাছে বর্ণনা করেছেন।-ihadis.com
সহিহ বুখারী, হাদিসঃ ৫৪৩৮, সহিহ হাদিসঃ
‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এ (তিন দিনের অধিক কুরবানীর গোশ্ত রাখার) নিষেধাজ্ঞা কেবল সে বছরের জন্যই ছিল, যে বছর লোকে দুর্ভিক্ষে পড়েছিল। তিনি চেয়েছিলেন ধনীরা যেন গরীবদের খাওয়ায়। নইলে আমরা তো পরবর্তী সময় পায়াগুলো পনের দিন রেখে দিতাম। মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর পরিবার পরপর তিন দিন পর্যন্ত তরকারী দিয়ে যবের রুটি পেট ভরে খাননি।-ihadis.com
সুনানে আন নাসায়ী, হাদিসঃ ৪৪৩২, সহিহ হাদিসঃ
‘আবিস (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেনঃ আমি আয়েশা (রাঃ) –এর নিকট গিয়ে বললামঃ রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কি তিন দিনের পর কুরবানীর গোশত খেতে নিষেধ করেছেন? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ। লোকের মধ্যে অভাব দেখা দেওয়ায় রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পছন্দ করলেন যেন ধনী লোকেরা দরিদ্রদেরকে খাওয়ায়। এরপর তিনি বললেনঃ আমি মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর পরিবার বর্গকে পনের দিন পরেও গরু-ছাগলের পা– এর গোশত খেতে দেখেছি। আমি বললামঃ তা কেন করতেন? তখন তিনি হেসে বললেনঃ মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর পরিবারের লোক উপর্যপরি তিন দিন তৃপ্তি সহকারে রুটি খেতে পাননি, যাবৎ না তিনি মহান আল্লাহর সাথে মিলিত হয়েছেন।-ihadis.com
ধনী ও গরীবদের পরিক্ষাঃ
ধনীদেরকে আল্লাহ রিজিক বৃদ্ধি করে দিয়ে গরীবদেরকে রিজিক কম দিয়ে মানুষের জন্য এটা পরিক্ষার সিস্টেম করে দিয়েছেন। কারা আল্লাহর দেয়া বিধান অনুযায়ী সম্পদ ব্যাবহার করেছে সেই বিষয় নিখুত বিচার করা হবে। বিচার দিবসে। অন্যদিকে ধনীরা যদি নিজেদের দায়িত্ব পালন না করে তাহলে আখিরাতে আল্লাহর কাছে কঠিন জবাবদিহিতার মুখোমুখি হতে হবে অন্য দিকে গরীবদের জন্য আখিরাতে সহজ হিসাব হবে। আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ কথা হচ্ছে, ইসলাম মনস্তাত্ত্বিকভাবেও শক্তিশালী হতে শিক্ষা দেয়। আপনি যখন এটা মনে প্রাণে বিশ্বাস করবেন যে আপনার এই জীবনটা আপনার জন্য পরিক্ষা তখন অনেক কষ্ট বেদনা আপনি সহজেই ডিল করতে পারবেন। আপনার মধ্যে হতাশা আসবে না, ডিপ্রেশনে ভুগতে পারবেন না আপনি। কারণ আপনি মনে প্রাণে বিশ্বাস করেন আপনার এই জীবন যদিও কষ্টের কিন্তু আখিরাতে আপনার হিসাব হবে একদম সহজ এবং আপনি সহজে জান্নাতে যেতে পারবেন। অন্যদিকে নাস্তিক্যধর্মের বস্তুবাদী বিশ্বাসে শুধু হতাশা আর হতাশা। নাস্তিকরা বিশ্বাস করে এই জীবনই শেষ তাই যদি কোনো নাস্তিক গরীব হয় তাহলে তার উৎসাহের বা আশার কোন আলো নেই। তার শেষ সমাধান আত্মহত্যা করে নেয়া কিন্তু একজন প্রকৃত মুসলিমদের আত্মহত্যা কখনো স্পর্শ করতে পারে না। আসুন রিজিক যে আল্লাহ অনেক সময় কমিয়ে দেন আবার বৃদ্ধি করে দেন আবার এসব যে আল্লাহর পরিক্ষা মানুষের জন্য এই সম্পর্কে আয়াত গুলো জেনে নেই।
আল কুরআন, সুরা বাকারা ২:১৫৫ আয়াতে লেখা আছে,
অবশ্যই আমি তোমাদিগকে পরীক্ষা করব কিছুটা ভয়, ক্ষুধা, মাল ও জানের ক্ষতি ও ফল-ফসল বিনষ্টের মাধ্যমে। তবে সুসংবাদ দাও সবরকারীদের।
আল কুরআন, সুরা ফজর ৮৯:১৬ আয়াতে লেখা আছে,
যখন তাকে পরীক্ষা করেন, অতঃপর রিযিক সংকুচিত করে দেন, তখন বলেঃ আমার পালনকর্তা আমাকে হেয় করেছেন।
আল কুরআন,সুরা মুলক ৬৭:২ আয়াতে লেখা আছে,
যিনি সৃষ্টি করেছেন মরণ ও জীবন, যাতে তোমাদেরকে পরীক্ষা করেন-কে তোমাদের মধ্যে কর্মে শ্রেষ্ঠ? তিনি পরাক্রমশালী, ক্ষমাময়।
আল কুরআন, সূরা রাদ ১৩:২৬ আয়াতে লেখা আছে,
আল্লাহ তায়ালা যার রিজিকের প্রশস্ততা দিতে চান তাই করেন, আবার যাকে তিনি চান জীবিকা সংকীর্ণ করে দেন।
আল কুরআন, সুরা বাকারা ২:২১২ আয়াতে লেখা আছে,
আল্লাহ যাকে ইচ্ছা সীমাহীন রুযী দান করেন।
আল কুরআন, সুরা আনকাবুত ২৯:৬২ আয়াতে লেখা আছে,
আল্লাহ তাঁর বান্দাদের মধ্যে যার জন্য ইচ্ছা রিযিক প্রশস্ত করে দেন এবং যার জন্য ইচ্ছা হ্রাস করেন। নিশ্চয়, আল্লাহ সর্ববিষয়ে সম্যক পরিজ্ঞাত।
আল কুরআন,সুরা সা’বা ৩৪:৩৬ আয়াতে লেখা আছে,
আমার পালনকর্তা যাকে ইচ্ছা রিযিক বাড়িয়ে দেন এবং পরিমিত দেন। কিন্তু অধিকাংশ মানুষ তা বোঝে না।
আবার ধনীরা যখন চিন্তা করবে আল্লাহ আমাকে এতো সম্পদ দিয়েছেন আমি যদি সঠিকভাবে গরীবদের মধ্যে তাদের অধিকার বুঝিয়ে না দেই তাহলে আল্লাহ আমাকে শাস্তি দিবেন এবং জাহান্নামে পাঠিয়ে দিবেন। পাঠক খেয়াল করেছেন ইসলাম আমাদেরকে কেমন যৌক্তিক মানসিকভাবেও নৈতিক করে তোলে। গণ্ডমূর্খ নাস্তিকরা যে বলে সকল মানুষ বিবেক দিয়ে নিজের ইচ্ছে মতো নৈতিকতা তৈরি করে নিতে পারে আল্লাহর দরকার নেই-তাহলে প্রশ্ন হচ্ছে দুনিয়াতে যতো ধনীরা আছে তারা গরীবদের সমস্যা কেন সমাধান করছে না? মানুষ কেন নিজের বিবেক থাকা সত্ত্বেও চুরি করছে? ডাকাতি করছে? ধর্ষণ করছে? তাদেরকে মনে যদি আল্লাহর জবাবদিহিতার ভয় ঢুকিয়ে দেয়া যেতো তাহলে কি তারা এমনটা করতে পারতো অপরাধ করার সুযোগ হলেও? আল্লাহর ভয় এরপরে পাপবোধ এরপরে জান্নাতের আশা আর জাহান্নামের শাস্তির ভয় যৌক্তিকভাবেই অপরাধ কমাতে অনেক ভূমিকা রাখে নাস্তিকরা এটা স্বীকার করুক অথবা নাই করুক। তাহলে আমরা বুঝতে পারলাম ইসলাম আমাদেরকে শুধুমাত্র বাহ্যিকভাবেই না বরং মনস্তাত্ত্বিকভাবেও শক্তিশালী করে তোলার শিক্ষা দেয়।
রিজিক আল্লাহ সবই দিয়ে রেখেছেন মানুষকে সন্ধান করে নিতে হবেঃ
শুধু পরিক্ষা দেখে হাত বা বসিয়ে বাসায় বসে থাকলে চলবে না। আপনাকে রিজিক সন্ধান করে নিতে হবে। এটাও আল্লাহর আদেশ। আপনাকে আল্লাহর বলা কথা অনুযায়ী চলতে হবে। নাস্তিকরা এসব চমৎকার ব্যাপার গুলো আপনাদেরকে কখনো জানতে দেবে না। ইসলামের সঠিক ব্যাখ্যা মানুষ জেনে গেলে নাস্তিকরা মানুষকে ধোঁকা দিবে কিভাবে? আসুন কুরআনে আরও কিছু আয়াত মনোযোগ দিয়ে পাঠ করে জেনে নেই।
আল কুরআন, সুরা জুময়া ৬২ঃ১০ আয়াতে লেখা আছে,
অতঃপর নামায সমাপ্ত হলে তোমরা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড় এবং আল্লাহর অনুগ্রহ তালাশ কর ও আল্লাহকে অধিক স্মরণ কর, যাতে তোমরা সফলকাম হও।
আল কুরআন,সূরা মুলক ৬৭:১৫ আয়াতে লেখা আছে,
তিনি তোমাদের জন্য পৃথিবীকে সুগম করেছেন, অতএব তোমরা পৃথিবীতে বিচরণ করো এবং তার দেয়া রিজিক আহার করো।
আল কুরআন, সুরা হামিম সেজদা ৪১ঃ১০ আয়াতে লেখা আছে,
তিনি তাতে (পৃথিবীতে) অটল পর্বতমালা স্থাপন করেছেন। এবং স্থাপন করেছেন কল্যাণ এবং চার দিনের মধ্যে তাতে খাদ্যের ব্যবস্থা করেছেন,সমানভাবে সকল অনুসন্ধানীদের জন্য।
আল কুরআন,সূরা মুজ্জাম্মিল ৭৩:২০ আয়াতে লেখা আছে,
কেউ কেউ আল্লাহর অনুগ্রহ সন্ধানে দেশে-বিদেশে যাবে।
আল কুরআন,সুরা বাকারা ২:১৯৫ আয়াতে লেখা আছে,
তোমরা নিজেদের জীবন ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিও না আর মানুষের সাথে ভাল ব্যাবহার করো,নিশ্চয় আল্লাহ্ভাল ব্যাবহারকারীদের ভালবাসেন।
আল কুরআন, সুরা নাজম ৫৩:৩৯,৪০ আয়াতে লেখা আছে,
মানুষ শুধু তাই পায় যা সে অর্জন করে এবং তার কর্ম শীঘ্রই তাকে দেখানো হবে।
আল কুরআন, সুরা রাদ ১৩:১১ আয়াতে লেখা আছে,
নিশ্চয় আল্লাহ্কোন জাতির অবস্থার পরিবর্তন করেন না, যে পর্যন্ত তারা নিজেরা নিজেদের অবস্থার পরিবর্তন না করে।
উপরের আয়াত গুলো পড়লে রিজিকের ব্যাপারে ইসলামিক দৃষ্টিভঙ্গিটা স্পষ্ট জানা যায়। রিজিক আল্লাহই দিবেন, উনি রিজিক দিয়েছেনও কিন্তু সেই রিজিক আমাদেরকে সন্ধান করে নিতে হবে। ধনীদের সম্পদে গরীবদের যেই অধিকার আছে সেই অধিকার যদি ধনীরা যা দেয় তাহলে গরীবরা নিজেদের অধিকার আদায়ের জন্য লড়াই, সংগ্রাম পর্যন্ত করতে পারবে। ইসলাম এই অধিকার গরীবদের দিয়েছে। সমাজের মধ্যে সকল প্রকার অন্যায়-অবিচার ও জুলুমের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও সংগ্রাম করতে শিক্ষা দেয় ইসলাম। ইসলাম চুরি করা বন্ধ করতে শিক্ষা দেয়, ইসলাম ডাকাতি বন্ধ করার শিক্ষা দেয়, ইসলাম ধর্ষণ বন্ধ করার শিক্ষা দেয়। এক কথায় মানুষের অধিকারের জন্য মানবতা ও সত্য প্রতিষ্ঠা করতে যা যা দরকার সব কিছুই ইসলাম শিক্ষা দেয়।
আল কুরআন, সুরা আল ইমরান, ৩:১১০ আয়াতে বলা হয়েছে,
তোমরাই হলে সর্বোত্তম উম্মত, মানবজাতির কল্যানের জন্যেই তোমাদের উদ্ভব ঘটানো হয়েছে। তোমরা সৎকাজের নির্দেশ দান করবে ও অন্যায় কাজে বাধা দেবে এবং আল্লাহর প্রতি ঈমান আনবে। আর আহলে-কিতাবররা যদি ঈমান আনতো, তাহলে তা তাদের জন্য মঙ্গলকর হতো। তাদের মধ্যে কিছু তো রয়েছে ঈমানদার আর অধিকাংশই হলো পাপাচারী।
সুনানে আন নাসায়ী, হাদিসঃ ৪০৯৬, সহিহ হাদিসঃ
আবূ জা’ফর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ আমি সুআয়দ ইব্ন মুকাররিন -এর নিকট উপবিষ্ট ছিলাম, সে সময় তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি যুলুম -এর প্রতিরোধ করতে গিয়ে মারা যায়, সে শহীদ।-ihadis.com
সুনানে আন নাসায়ী, হাদিসঃ ৪০৮৪, সহিহ হাদিসঃ
আবদুল্লাহ্ ইব্ন আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেনঃ আমি রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম -কে বলতে শুনেছিঃ যে ব্যক্তি তার মাল রক্ষার্থে যুদ্ধ করে নিহত হয়, সে শহীদ।-ihadis.com
সুনানে আন নাসায়ী, হাদিসঃ ৪০৮৫, সহিহ হাদিসঃ
আবদুল্লাহ্ ইব্ন আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেনঃ আমি রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম -কে বলতে শুনেছিঃ যে ব্যক্তি তার মাল রক্ষার্থে যুদ্ধ করে নিহত হয়, সে শহীদ।-ihadis.com
সুনানে আন নাসায়ী, হাদিসঃ ৪০৮৬, সহিহ হাদিসঃ
আবদুল্লাহ ইবন আমর ইবন আস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃরাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি তার মাল রক্ষার্থে অন্যায়ভাবে নিহত হয়, তার জন্য জান্নাত রয়েছে।-ihadis.com
সুনানে আন নাসায়ী, হাদিসঃ ৪০৯৪, সহিহ হাদিসঃ
সাঈদ ইবন যায়দ (রাঃ) সূত্রে নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণিতঃ বর্ণিত। তিনি বলেনঃ যে ব্যক্তি নিজের মাল রক্ষার্থে যুদ্ধ করে মারা যায়, সে শহীদ। এমনিভাবে যে ব্যক্তি নিজের প্রাণ রক্ষার্থে যুদ্ধ করে মারা যায়, সে শহীদ এবং যে নিজ পরিবারের লোকের জন্য যুদ্ধ করে মারা যায়, সে শহীদ।-ihadis.com
রিজিক নিয়ে কিছু প্রশ্ন ও যৌক্তিক জবাবঃ
প্রশ্ন হচ্ছে,
সূরা আনকাবুত ২৯:৬০ আয়াতে বলা আছে, এমন কত জীবজন্তু আছে, যারা নিজেদের খাদ্য মজুদ রাখে না; আল্লাহই রিজিক দান করেন তাদের ও তোমাদের এবং তিনি সর্বশ্রোতা সর্বজ্ঞ । - আয়াতে বলা হচ্ছে কিছু প্রাণী নিজেদের জন্য খাদ্য মজুদ রাখে না এরপরেও আল্লাহ তাদের রিজিক দান করেন। তাহলে কি এটা বুঝায় না যে আমরা যদি কাজ নাও করি তাহলেও আল্লাহ আমাদের রিজিক দিবেন?
জবাবঃ
আয়াতে কি বলা হচ্ছে যে ঐ প্রাণী গুলা বসে থাকে অথবা কোনো কাজই করে না এরপরেও আল্লাহ রিজিক দেন? উত্তর হচ্ছে না। তাছাড়া আল্লাহ ইচ্ছা করলে মানুষকে বিনা কষ্টে রিজিক দিতে পারেন কিন্তু তিনি কোনো মানুষের ক্ষেত্রে এরকম করবেন না কিন্তু যদি করেন সেটি তাহলে একান্তই আল্লাহর ব্যাপার। কিন্তু কুরআনের সার্বিক আয়াত গুলো পর্যবেক্ষণ করতে এটাও পাওয়া যায় যে মানুষ যাতে রিজিক সন্ধান করে নেয়।
প্রশ্ন হচ্ছে,
সুরা মুলক ৬৭:২১ আয়াতে বলা হচ্ছে, তিনি যদি রিযিক বন্ধ করে দেন, তবে কে আছে, যে তোমাদেরকে রিযিক দিবে বরং তারা অবাধ্যতা ও বিমুখতায় ডুবে রয়েছে। - এই আয়াত থেকে প্রশ্ন আসে যে সেসব দেশে দুর্ভিক্ষ আছে সেখানে তো আল্লাহ রিজিক দিচ্ছেন না কিন্তু ধনীরা ইচ্ছা করলে সেসব গরীবদের সাহায্য করতে পারে তাহলে আল্লাহ রিজিক বন্ধ করে দিলেও মানুষ কিন্তু ঠিকই এই সমস্যা সমাধান করতে পারেন তাই না? তাহলে মানুষ বড় নাকি আল্লাহ?
জবাবঃ
উপরের আয়াতে আল্লাহ রিজিক বন্ধ করে দেয়া মানে হচ্ছে দুনিয়াতে সকল খাদ্য সিস্টেম নষ্ট হয়ে যাওয়া। ধরুন দুনিয়াতে যদি পানি, গাছ, অক্সিজেন না হতো তাহলে মানুষ নিজের জন্য খাদ্য সিস্টেম তৈরি করতে পারতো? অবশ্যই না। তাহলে বুঝেছেন তো আল্লাহ যদি এসব রিজিক বন্ধ করে দেন তাহলে মানুষরা কেমন বিপদের মুখে আসবে। তাছাড়া আমরা আগেই জেনেছি কুরআনে আছে যেই জাতি নিজেকে পরিবর্তন করবে না আল্লাহও তাদেরকে পরিবর্তন করেন না। আল্লাহই যেখানে এই আদেশ দিচ্ছেন মানুষকে পরিবর্তন হবার সেখানে মানুষ কিভাবে বড় হয়? ধরুন আল্লাহ সকল মানুষকেই পাগল বানিয়ে দিল আর এমন সিস্টেম করল যে তারা আর কোনো খাবার খেতেই পারবে না এখন কি এই মুহূর্তে মানুষ কি বিন্দুমাত্র কিছু করতে পারবে আল্লাহর বিপক্ষে গিয়ে? উত্তর হচ্ছে না। সুতরাং কুরআন ঠিকই বলছে যে আল্লাহ যদি রিযিক বন্ধ করে দেন, তবে কে আছে, যে তোমাদেরকে রিযিক দিবে?
প্রশ্ন হচ্ছে,
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন যদি তোমরা আল্লাহর প্রতি যথাযোগ্য ভরসা রাখ, তবে তিনি তোমাদেরকে সেই মত রুজি দান করবেন যেমন পাখীদেরকে দান করে থাকেন। তারা সকালে ক্ষুধার্ত হয়ে (বাসা থেকে) বের হয় এবং সন্ধ্যায় উদর পূর্ণ করে (বাসায়) ফিরে (জামে আত তিরমিজি, হাদিসঃ ২৩৪৪,সহিহ হাদিস-ihadis.com)। এই হাদিস থেকে প্রশ্ন হচ্ছে, এখানে বলা হচ্ছে আল্লাহর উপর ভরসা করলে আল্লাহ রিজিক দিবে তাহলে তো শুধু ভরসা করলেই হয় রিজিক সন্ধান করার দরকার কি?
জবাবঃ
হাদিসের এই লাইনটি খেয়াল করুন, "তারা সকালে ক্ষুধার্ত হয়ে (বাসা থেকে) বের হয় এবং সন্ধ্যায় উদর পূর্ণ করে (বাসায়) ফিরে" এই লাইন থেকে কি বুঝা যায় যে পাখিরা বাসায় বসে থাকে আর শুধুই আল্লাহর উপর ভরসা রাখে? উত্তর হচ্ছে না। তাহলে হাদিস আসলে আমাদেরকে শিক্ষা দিচ্ছে আমরা আল্লাহর উপর ভরসা করবোই এবং পাখিদের মতো সকাল বেলা বাসা থেকে বের হবো রিজিক সন্ধানের জন্য তাহলে আল্লাহও আমাদের রিজিক দিবেন। এখানে আপনি ঘরে বসে থাকবেন কোনো কাজ করবেন না আর আল্লাহ আসমান থেকে আপনার মুখে খাবার তুলে দিবেন এসব কিছুই হাদিস থেকে বুঝা যায় না। হাদিসের দৃষ্টিতে এটা স্পষ্ট যে আল্লাহর উপর ভরসা রেখে রিজিকের সন্ধানে বের হলে পাখির মতো আল্লাহ রিজিক দিবেন।
প্রশ্ন হচ্ছে,
সবাইকে আল্লাহ কেন বড়লোক বানালেন না?
জবাবঃ
যদিও একদম শুরুতেই এই প্রশ্নের জবাব দেয়া হয়েছে। হয়তো মনুষ্য বিবেক না থাকার কারণে নাস্তিকরা বুঝতে পারেনি। যাইহক। এক মিনিটের জন্য ভাবুন এই মুহূর্তে সবাই কোটিপতি হয়ে গেল। এমন কি আপনিও।এতোএতো কোটিপতি তারা তো মলমুত্র ত্যাগ করবে তাই না? এইগুলা পরিস্কার করবে কে আপনারা? বাড়ি বানাবে কে আপনারা নিজেরাই? সকলের চিকিৎসা করবে আপনারাই? সকলে কি ডাক্তার হবে? মূলত সকলেই এক সাথে ধনী আবার একই সাথে সবাই কি সব কিছু পাড়বে? উত্তর হচ্ছে না। সবাই যদি পুরুষ হয় নারী হবে কে? সবাই যদি নারী হয় পুরুষ হবে কে? সবাই যদি গরীব হয় ধনী হবে কে? সবাই যদি ধনী হয় গরিব হবে কে? এরকম হলে দুনিয়ার ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যাবে। এই কারণেই আল্লাহ সবাইকে এক সাথে বড়লোক বানাননি বরং আল্লাহ আমাদেরকে একে অপরের উপর নির্ভরশীল সিস্টেমে তৈরি করেছেন। কুরআনের আয়াতেও ভারসাম্যের কথাটি আল্লাহ বলে দিয়েছেন।
আল কুরআন, সুরা যূখরুফ ৪৩:৩২ আয়াতে বলা আছে,
তারা কি আপনার পালনকর্তার রহমত বন্টন করে? আমি তাদের মধ্যে তাদের জীবিকা বন্টন করেছি পার্থিব জীবনে এবং একের মর্যাদাকে অপরের উপর উন্নীত করেছি, যাতে একে অপরকে সেবক রূপে গ্রহণ করে। তারা যা সঞ্চয় করে, আপনার পালনকর্তার রহমত তদপেক্ষা উত্তম।
আল কুরআন, সুরা শুরা ৪২ঃ২৭ আয়াতে লেখা আছে,
যদি আল্লাহ তাঁর সকল বান্দাকে প্রচুর রিযিক দিতেন, তবে তারা পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টি করত। কিন্তু তিনি যে পরিমাণ ইচ্ছা সে পরিমাণ নাযিল করেন। নিশ্চয় তিনি তাঁর বান্দাদের খবর রাখেন ও সবকিছু দেখেন।
ধর্মহীন ধনীদের মুক্তচিন্তার স্বাধীনতাঃ
কোনো নাস্তিক যদি চায় গরীবদের দান করতে সেটাও তার একান্ত ব্যাপার। কিন্তু অন্যদিকে যেকোনো যুক্তিবাদী নাস্তিক ধনীদের এভাবে মুক্তচিন্তা করার স্বাধীনতা আছেঃ
আল্লাহ বললেই কি হবে গরীবদেরকে দান করো? আমি গরীবদেরকে দান করতে বাধ্য নই। কারণ সম্পদ আমার মর্জি আমার। আমি যদি গরীবদেরকে দান করি তাহলে আমার সম্পদ কমে যাবে যা যুক্তি অনুযায়ী খারাপ। তাই আমার যুক্তিতে গরীবদেরকে দান করা অন্যায় এবং অমানবিক। ডারউইন দাদু আমাদেরকে শিখিয়েছে ন্যাচারাল সিলেকশন। এখন ন্যাচার যদি গরীবদেরকে সিলেক্ট না করে তাহলে তারা ধ্বংস হয়ে যাবে। গরীবরা যদি টিকে থাকতে না পারে তাহলে তারা মারা যাবে। শিশু গুলো মারা যাবে। নারী গুলো মারা যাবে। পুরুষ গুলো মারা যাবে। এখানে ধনীদেরকে কি আসে যায়? ধনীদের কে ঠেকা যে গরীবদেরকে সাহায্য করতে হবে? চিন্তার মুক্তির আন্দোলন জিন্দাবাদ।
উপসংহারঃ
আল্লাহই রিজিকদাতা, আল্লাহই রিজিকের দায়িত্ব নিয়েছেন এই কারণেই উনি দুনিয়াতে রিজিকের সকল ব্যবস্থা করে রেখেছেন। মানুষের দায়িত্ব হচ্ছে এখন পরিশ্রম করে রিজিক সন্ধান করে নেয়া। কিন্তু মানুষ যদি নিজের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন না করে তাহলে আল্লাহ রিজিক কমিয়ে দিয়ে মানুষের জন্য কঠিন পরিক্ষায় ফেলে দিবেন। যদিও এটা মানুষের আখিরাতের ভালোর জন্যই। তাই রিজিক নিয়ে টেনশন না করে রিজিক সন্ধানের দিকে নিজেকে নিয়োজিত করতে হবে। পরিশ্রম করে আল্লাহর দেয়া নিজের রিজিক নিজেকেই অর্জন করে নিতে হবে। ইসলাম ধনী ও গরীবের মধ্যে বন্ধুত্ব শেখায়। ধনী ও গরীবের মধ্যে যৌক্তিক ভারসাম্যতা শেখায়। অন্যদিকে নাস্তিক্যধর্মে যেকোনো নাস্তিক চাইলেই গরীবদেরকে দান করা অন্যায় ও যুক্তিহীন মনে করে মুক্তচিন্তায় বিশ্বাস করতে পারবে। এখন আপনি সিদ্ধান্ত নিন আপনি ইসলাম ধর্মে থাকবেন নাকি নাস্তিক্যধর্মে।
রেফারেন্সমালাঃ
(১) How We Fight Food Waste in the US
https://www.feedingamerica.org/our-work/reduce-food-waste
(২) Food Waste by Country 2022
https://worldpopulationreview.com/country-rankings/food-waste-by-country
(৩) Tons of food lost or wasted
(৪) Global Food waste in 2022
https://greenly.earth/en-us/blog/ecology-news/global-food-waste-in-2022
(৫) FOOD WASTE
https://www.nrdc.org/food-waste