নাস্তিকদের বিভিন্ন প্রকার মুক্তচিন্তা


বিষয়ঃ নাস্তিকদের বিভিন্ন প্রকার মুক্তচিন্তা

লিখেছেনঃ এমডি আলী

—-----------------------------------------------------------


বর্তমান সময়ের নাস্তিকরা চায় সকলেই মুক্তচিন্তা করুন কিন্তু তারা মুক্তচিন্তার একটি অংশ দেখালেও সম্পূর্ণ দিক আপনাদের সামনে নিয়ে আসতে চাইবে না। নাস্তিকরা মানুষের সামনে ইসলামবিরোধীতা তুলে ধরে এমনকি নিজেদের অন্ধভক্তদেরকে সে দিকেই ডুবিয়ে রাখতে চায়। কারণ? এটা জানার জন্য আপনাকে আজকের পুরো লেখাটি মন দিয়ে পড়তে হবে। আপনাদেরকে যাচাই করে দেখতে হবে নাস্তিকদের নাস্তিক্যধর্ম আসলেই মানব মুক্তির পথ হতে পারে কিনা? মুক্তচিন্তা মানুষকে সভ্য করার ক্ষমতা রাখতে পারে কিনা? প্রতিটি মানুষ যদি নিজের ইচ্ছায় মুক্তচিন্তা করে তাহলে মানব সভ্যতা অস্তিত্ব থাকতে পারবে কিনা?

আমি যখন নাস্তিকদের বই-পত্র পড়তে থাকলাম তখন আশ্চর্য হতে লাগলাম যে নাস্তিক্যধর্মের মুক্তচিন্তায় যে কত ধরণের মুক্তচিন্তা করার স্বাধীনতা রয়েছে যা নাস্তিকরা আমাদের সামনে নিয়ে আসে না অথবা তুলে ধরতে চাচ্ছে না। পাঠক আপনাদের সামনে আমি নাস্তিকদের লুকানো মুক্তচিন্তার বিভিন্ন প্রকার তুলে ধরবো যাতে আপনারা নিজেরাই সিদ্ধান্ত নিয়ে নিতে পারেন। তবে কোনো নাস্তিকের যদি নাস্তিক্যবিশ্বাস দুর্বল হয়ে থাকে তবে সে চাইলে এই লেখাটি এড়িয়ে থাকতে পারে।

ছাত্রছাত্রীদেরকে ধর্ষণ করবার মুক্তচিন্তা

হ্যাঁ, আপনি ভুল পড়েন নি। মুক্তচিন্তায় ছাত্রছাত্রীদেরকে জবরদস্তি যৌন সম্পর্ক করবার মুক্তচিন্তার বৈধতা রয়েছে। কেউ কোনো নাস্তিক এই মুক্তচিন্তা করার ফ্রিডম রাখে। কি বিশ্বাস হচ্ছে? আমি নাস্তিক মুক্তমনাদের বইপত্র থেকেই প্রমাণ দেখিয়ে দিচ্ছি। আপনারা যাচাই করে নিজ দায়িত্বে দেখে নিন।

অন্যতম প্রসিদ্ধ একজন মুক্তমনা নাস্তিক নাম প্রবীর ঘোষ, উনার লিখিত “যুক্তিবাদের চোখে নারী-মুক্তি” বইয়ের ১০৩ পৃষ্ঠায় বর্ণিত হয়েছেঃ

নারীবাদী আন্দোলন ও নারীমুক্তি আন্দোলনের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সিমোন দ্য বোভোয়ার।তার সঙ্গে জঁ-পল সার্ত্রের বিবাহ বহির্ভূত শারীরিক সম্পর্ক ছিল। ‘দ্যা ডেঞ্জারাস লিয়াজো’ বইটি থেকে আমরা জানতে পারি, জঁ-পল সার্ত্র ও সিমোন দ্য বোভোয়ার তাদের ছাত্রী ও ছাত্রদের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক গড়তেন বা গড়তে বাধ্য করতেন। এমনকী সার্ত্রে তার ছাত্রদের পাঠাতেন বোভোয়ারের সঙ্গে মিলনের জন্য। বিনিময়ে বোভোয়ারও তার ছাত্রীদের পাঠাতেন সার্ত্রের কাছে। সেই সময়কার বুদ্ধিজীবীরা ওদের বিরুদ্ধে নষ্ট চরিত্রের অভিযোগ এনেছিলেন। কিন্তু নারী স্বাধীনতা,ক্ষমতায়ন ও চেতনামুক্তি অভিযাত্রায় সিমোন দ্য বোভোয়ার আজ প্রাতঃস্মরণীয়।

কি অবাক হলেন তো? অনলাইনের সস্তা নাস্তিকরা নিজেদেরকে যেভাবেই নারীবাদী, মানবতাবাদী, মুক্তমনা, ব্যাক্তি স্বাধীনতা-বাক স্বাধীনতা বিশ্বাসী বলে চিল্লাচিল্লি করে গলা ফাটিয়ে ফেলুক না কেন বাস্তবতা সম্পূর্ণ তার উল্টো। নাস্তিকদের পূর্বপুরুষরা তো চতুষ্পদ জানোয়ারই ছিল। নাস্তিকরা পারবে এই কথা অবিশ্বাস করতে? পাঠক একটু চিন্তা করে দেখুন তো একজন নারীবাদী আন্দোলন ও নারীমুক্তি আন্দোলনের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা অথচ ছাত্র ছাত্রীদেরকে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সাথে যৌন কারবার করার জন্য বাধ্য করতেন, জবরদস্তি করতেন আর যৌন সঙ্গম করার জন্য অসহায় ছাত্রছাত্রীদেরকে বিনিময়ে আদান প্রদান পর্যন্ত করতেন। সিমোন দ্য বোভোয়ার ও  জঁ-পল সার্ত্রে এই মুক্তচিন্তা করতেন যে ছাত্রছাত্রীদেরকে যৌন সঙ্গম করার জন্য বাধ্য করা যাবে। বিনিময়ে ছাত্রছাত্রীদেরকে সাপ্লাই পর্যন্ত করা যাবে। হ্যাঁ, মুক্তচিন্তায় এগুলো করা বৈধ। মুক্তচিন্তায় যৌনসঙ্গম করা যার যার একান্ত ব্যাপার কথাটি বলা নাস্তিকগুলোই আবার অভিযোগ করে যে ইসলামে কেন দাসী তার মুনিবের সাথে সহবাস করবে? চারজন নারী কেন একজন পুরুষকে বিয়ে করতে পারবে? কি হাস্যকর নাস্তিকদের মগজ। অথচ একজন নাস্তিকও নিজের নাস্তিক্যধর্ম দিয়ে এগুলোকে খারাপ প্রমাণ করতে পারবে না।

নাস্তিক প্রবীর ঘোষ, উনার লিখিত “যুক্তিবাদের চোখে নারী-মুক্তি” বইয়ের ১০৩ পৃষ্ঠাতেই বলেছেন,

বোভোয়ার ও সার্ত্রের জীবনে যত উচ্ছৃঙ্খলতা ছিল, তা সবই তাদের ব্যাক্তিজীবনে আবদ্ধতাদের সৃষ্টিতে তা নগ্ন রুপ পায়নিএই বক্তব্যের মধ্য দিয়ে আমি অবশ্য তাদের বা অন্য কারও ব্যাক্তিজীবনের যৌন উচ্ছৃঙ্খলতা বা বহুগামিতালে সামান্যতম সমর্থন করছি না। বরং নিন্দা করছি, এই নিন্দনীয় কাজের চেয়ে তসলিমার কাজ বহুগুণে বেশি নিন্দনীয়

এখানে আমি নাস্তিক প্রবীর ঘোষ সাহেবের সমালোচনাকে সাধুবাদ জানাই কিন্তু উনার এই নিন্দা প্রকাশ করার কারণে কি উপরে বর্ণিত ছাত্রছাত্রীদেরকে যে মুক্তচিন্তায় ধর্ষণ করা হতো সেটাকে খারাপ প্রমাণ করা যাবে? কারণ যারা ধর্ষণ গুলো করেছে তাদের মুক্তচিন্তায় সেই যৌনকর্মকে ভালো মনে হয়েছে দেখে তারা করেছে। সেই মুক্তমনারা ব্যাক্তিস্বাধীনতা মেনেই করেছেন আর প্রবীর ঘোষ প্রথমে সেটা স্বীকারও করেছেন যে সেসব কাজ তাদের ব্যাক্তিজীবনে আবদ্ধ। 

যে কোন নাস্তিক যদি চায় নিজের মায়ের সাথে যৌন সঙ্গম করবে তাহলে সম্মতিতে সেটা করতে পারবে? অন্য নাস্তিকের কাছে সেটা ভালো না লাগতেই পারে কিন্তু যার মুক্তচিন্তায় সেটা ভালো সেই নাস্তিক সেটা করতেই পারে? এমনকি যদি কোনো নাস্তিক মায়ের দশজন ছেলে থাকে এবং সকলের সাথে সম্মতি থাকে তবে সকলেই মুক্তমনে, মুক্তবুদ্ধিতে যৌনসঙ্গম করতে পারবে? নাস্তিক বাপেও পারবে নাস্তিক নারীবাদী কন্যাদের সাথে যৌনমিলন করতে তবে সম্মতি নিতে হবে?

নারীরা চুইংগাম যাদেরকে সারাসন্ধা চাবানো যাবে

অনেক নাস্তিকই হয়তো জানে না নাস্তিক্যধর্মে নারীদেরকে চুইংগাম ভাবা যাবে। এমনকি নারীদেরকে সারাসন্ধা চুষতে থাকা যাবে। চাবানো যাবে। পাঠক নাস্তিকদের বই থেকেই প্রমাণ তুলে ধরছি। পুরো লেখাটি না পাঠ করতে পারলে অনেক কিছুই উপলব্ধি করতে পারবেন না।

নাস্তিক, মুক্তমনা, বিজ্ঞানলেখক, বিজ্ঞানমনস্ক হুমায়ুন আজাদ লিখিত “আমার অবিশ্বাস” বইয়ের ১৫ পৃষ্ঠায় বর্ণিত হয়েছেঃ 

যখন শিশু ছিলাম,কিশোর হয়ে উঠেছি যখন, তখনও আমি সব কিছু চুষে দেখতে চেয়েছি, আজো অনেক কিছু চুষে আর চেখে দেখতে ইচ্ছা করে, ছেলেবেলা ভোরে ইচ্ছে হতো চুলোর লাল আগুনের টুকরোগুলোকে চুষে দেখতে, ওগুলো লাল গোলাপের থেকেও লাল হতে জ্বলজ্বল করতো। সূর্যাস্তকেও চুষে স্বাদ নিতে ইচ্ছে হতো,কয়েক বছর আগে সারা সন্ধ্যা চুষতে চিবুতে ইচ্ছে হয়েছিল চুইংগামের মতো এক তরুণীকে।

হুমায়ুন আজাদের মুক্তচিন্তায় এসবই ভ্রমণ করতে থাকতো। নারীকে যে সম্মান দিতে হয়, নারীরা যে চুইংগাম না, নারীদেরকে যে চাবানো যায় না সেটা হুমায়ুন আজাদের বিবর্তিত মগজে ঢুকতে পারেনি। একবার কল্পনা করুন তো যদি এই নাস্তিকটি সুযোগ পেতো আর সারাসন্ধা সেই অসহায় তরুণীকে চুষতে থাকতো আর চাবাতে থাকতো তাহলে কি অবস্থা হতো সেই তরুণীর? হুমায়ুন আজাদের মুক্তবুদ্ধিতে আরও কত প্রকারের মুক্তচিন্তা ভ্রমণ করতে থাকতো সেটা তার বই থেকেই দেখে নেই।

আমার অবিশ্বাস, ১৫২ পৃষ্ঠায় বর্ণিত হয়েছেঃ 

আরও কিছুকাল আমি নক্ষত্র দেখতে চাই, নারী দেখতে চাই, শিশির ছুঁতে চাই, ঘাসের গন্ধ পেতে চাই, পানীয়র স্বাদ পেতে চাই, বর্ণমালা আর ধনীপুঞ্জের সাথে জড়িয়ে থাকতে চাই, মগজে আলোড়ন বোধ করতে চাই। আরও কিছু দিন আমি হেসে যেতে চাই

আমার অবিশ্বাস, ১৩ পৃষ্ঠায়, প্রথম পরিচ্ছেদ, আমার ইন্দ্রিয়গুলো, বর্ণিত হয়েছেঃ

আমার ভাল লাগতো ভোরের আকাশ, শ্রাবনের মেঘ, হেমন্ত, নদী বা নারী, কখনোই জানবো না আমি কবিতা পড়েছিলাম, এমনকি লিখেছিলামও, কেঁপে উঠেছিলাম কামনায়, অজস্র বার তৃপ্ত করেছিলাম আমার কামনা এবং বহুবার পরিতৃপ্ত করতে পারিনি

আমার অবিশ্বাস, ১৬ পৃষ্ঠায় সুস্পষ্ট বর্ণিত হয়েছেঃ

ছোঁয়া সবচেয়ে অন্তরঙ্গ অনুভূতি, আমাদের শরীর ছোঁয়া চায়, আমরা ছুঁতে চাই, আমিও ছুঁতে চেয়েছি, ছোঁয়া চেয়েছি এবং ছোঁয়া পেয়ে ও ছুঁয়ে সুখী হয়েছি

নাস্তিক হুমায়ুন আজাদ, নারীদেরকে সব সময় দেখতে চাইতো, ছুঁতে চাইতো। তার দেখার ধরণ আসলে কেরকম সেটা চিন্তাশীল পাঠকদের হাতে ছেড়ে দিলাম। এক নারী নাস্তিকতা ও মুক্তচিন্তা ছেড়ে দিয়ে সভ্যতাকে গ্রহণ করে নিলে সেই হুমায়ুন আজাদ উক্ত নারীকে নিয়ে কেমন মন্তব্য করেন আসুন পড়ে দেখি।

“আমরা কি এই বাঙলাদেশ চেয়েছিলাম” বইয়ের ১৯ পৃষ্ঠায় বর্ণিত হয়েছে,

 

এটাই দেখছি বাঙলাদেশঃ  ষাটের দশকে এক উগ্র আধুনিকাকে সেদিন দেখলাম, এখন সে বিসর্জিত দুর্গার মতো ভেঙ্গেচুরে গেছে, মুখে এতোটুকুও আভা নেই, একদা কলাভবনের বারান্দায় যার শরীরের বিভিন্ন বাঁকের তরঙ্গভঙ্গ দেখা আমাদের জন্য সুখকর ব্যাপার ছিলো, যার সম্মুখ ও পশ্চাৎ ছিলো সমান জলভ্রমিপূর্ণ, এখন সে বোরকা হিজাব তাঁবু বিসমিল্লায় সম্পূর্ণ ঢেকে ফেলেছে নিজেকে, কয়েকবার পবিত্র মক্কা মদিনা মনোয়ারা ঘুরে এসেছে, ধনসম্পদে নিজেকে ভরে ফেলেছে ও ভরে চলছে- এটা করতে ভুল করে নি ও পবিত্র উপায়ে করে নি, কিন্তু এখন অন্ধকারে ঢেকে ফেলেছে নিজেকে, বিসমিল্লাহ, আলহামদুলিল্লা ইনশাল্লা ছাড়া কথা বলে না, ইসলামের জয়গানে সারাক্ষণ মুখর, সে জানে না তার এসবই পশুশ্রম, ধর্মগ্রন্থ ও সহিহ হাদিসগুলো সে পড়ে নি- হুররা তাকে তার কাম্য প্রাসাদে ঢুকতে দেবে না, তার সেখানে প্রবেশাধিকার নেই।

“আমরা কি এই বাঙলাদেশ চেয়েছিলাম” বইয়ের ১৭ পৃষ্ঠায় বর্ণিত হয়েছে, 

কলাভবন, শরিফ মিয়ার ক্যান্টিন, বিভিন্ন ছাত্রাবাস, নিউমার্কেটের নতুন ঝলমলে বইয়ের দোকান, এবং আরো নানা জায়গায় ছিলো আধুনিকতা সম্পর্কে তর্ক-বিতর্ক ও অনুপ্রাণিত হওয়ার স্থান; তখন অনাধুনিকতা, মধ্যযুগীয়তা, বিসমিল্লাহ আলহামদুলিল্লাহ জোব্বা বোরকা ছিলো হাস্যকর, হিজাবের কথা কেউ জানতোই না

 কলাভবনের বারান্দায় যেই নারীর দেহ দেখে, দেহের অঙ্গভঙ্গি দেখে মনে মনে সুখ গ্রহণ করতো নাস্তিকটি সেই নারীই যখন সভ্যতা গ্রহণ করলো তখনই শুরু করে দিল তাকে পশ্চাৎপদ, মধ্যযুগীও, অনাধুনিক বলে সমালোচনা করে ফেলা। “আমার দেহ আমার সিদ্ধান্ত” কথাটি হয়তো নাস্তিকের মগজ তখন ভুলে গিয়েছিল? তাই না? পাঠক আপনারা হয়তো এতক্ষণে ঠিকই বুঝে নিয়েছেন নাস্তিকগোষ্ঠীরা কেন চায় নারী ছোট ছোট খোলামেলা পোশাকে থাকুক? নাস্তিক হুমায়ুন আজাদের যদি এই মুক্তচিন্তা হয় তাহলে যারা তার বই পড়ে তার কথা বিশ্বাস করে নাস্তিক্যধর্ম গ্রহণ করেছে তাদের মুক্তচিন্তার কিরকম চিত্র হতে পারে? শিপ্পপাঞ্জিরা লেংটা থাকে তাই নাস্তিকরা নিজেদের পূর্বপুরুষদের আদর্শ এখনো ধরে রাখতে চাইছে নাকি?

 

হুমায়ুন আজাদ যদি ইসলামের এই বিধান গুলোকে নিজের জীবনে প্রয়োগ করতো তাহলে হয়তো সে বা তার অন্ধভক্তরা সভ্য হতে বেশি সময় লাগতো না। আসুন দেখি নারী নিয়ে ইসলাম কি শিক্ষা দেয়?

সহিহ বুখারি, হাদিস নং ৫৯৭১, সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত হয়েছে,

আবু হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, এক লোক নবী মুহাম্মদ (সা) কে প্রশ্ন করল হে আল্লাহ্‌র রাসুল,আমার কাছে কে উত্তম ব্যাবহার পাওয়ার বেশি হকদার? তিনি বললেন, তোমার মালোকটি বলল তারপর কে? নবীজি (সা) বললেন তোমার মালোকটি আবার বলল তারপর কে? নবী (সা) বললেন তোমার মা।সে আবার বলল তারপর কে? নবীজি (সা) বললেন তোমার বাবা।-ihadis.com

সহিহ বুখারি, হাদিস নং ৫৯৭২, সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত হয়েছে,

এক ব্যাক্তি নবী (সা)কে জিজ্ঞাসা করল, আমি কি জিহাদে যাব? তিনি বললেন, তোমার কি পিতামাতা আছে ? সে বললঃ হ্যাঁ। নবী (সা) বলেন, তাহলে তাদের সেবা করার মাধ্যমে জিহাদ করো।-ihadis.com

সহিহ বুখারি, হাদিস নং ৫৯৭৯, সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত হয়েছে,

আসমা (রা) থেকে বর্ণিত তিনি বলেনঃ কুরাইশরা যে সময় নবী (সা) এর সঙ্গে সন্ধি চুক্তি করেছিল ঐ চুক্তিবদ্ধ সময়ে আমার মা তাঁর পিতার সঙ্গে এলেন। আমি নবী (সা) এর কাছে জিজ্ঞেস করলাম । আমার মা এসেছেন, তবে সে অমুসলিমআমি কি তাঁর সঙ্গে উত্তম ব্যাবহার করবো? নবী (সা) বলেন, হ্যাঁ। তোমার মায়ের সাথে উত্তম ব্যাবহার করো ।-ihadis.com

আমি নাস্তিকদের বইয়ের নাম, পৃষ্ঠা নাম্বার সহ উল্লেখ করে দিয়েছি। রেফারেস্নটি আবার দেখুন প্রয়োজনে। দরকার হলে নিজে বই খুলে সরাসরিও দেখতে পারেন এটাই ভালো। আপনি বুকে হাত রেখে বলুন তো, আপনি নাস্তিক বা নষ্টিক যাই হোন আমার আপত্তি নাই, আপনার মা অথবা বোনকে কোন নাস্তিক যদি মুক্তচিন্তায় চুইংগামের মতো  চুষতে আর চাবাতে চায় আপনি তাকে কি করবেন? সন্ধ্যা বেলা একজন নারী রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিল। সেই তরুণীকে চুষতে আর চিবুতে ইচ্ছা করা কি কোনো কোন সুস্থ স্বাভাবিক মানুষের কাজ? নারীরা কিভাবে চুইংগামের মতো হয়? আমি যদি তখন উপস্থিত থাকতাম সেই সম্মানিত নারীকে জিজ্ঞাসা করতাম, হে আমার বোন! নাস্তিক হুমায়ুন আজাদ আপনাকে সারা সন্ধ্যা চুষতে আর চাবাইতে চেয়েছে আপনি তাকে কি করবেন? এরপরেও নাস্তিকরা হুমায়ুন আজাদকে লুচ্চা বলবে না? হুমায়ুন আজাদকে ধর্ষকের মুক্তচিন্তক বলবে না? 

 

শুধু কি অসহায় তরুণী? শিশুরাও বাদ যায়নি হুমায়ুন আজাদের মুক্তচিন্তা থেকে। ছোট শিশুদের নগ্ন দেহ দেখে সুখ নিতেন সেই নাস্তিকটি।

আমার অবিশ্বাস, ১৪ পৃষ্ঠায় বর্ণিত হয়েছেঃ 

উলঙ্গ শিশুরা, ওদের পরার কিছুই নেই, মাঘের শীতে পাতার আগুনের উম নিচ্ছে দেখে সুখ নেই, সুখ পেয়ে নিজেকে অপরাধী বোধ করি।আমার ইন্দ্রিয়গুলোর মধ্যে চোখ দুটিই শ্রেষ্ঠ। এ দুটি দিয়ে আমি দূর থেকে ভেতরে টেনে আনি দৃশ্যের পর দৃশ্য,সৌন্দর্যের পর সৌন্দর্য। অন্য কোনো ইন্দ্রিয় দিয়ে এভাবে টানতে পারি না বাহিরকে।

ভেবে বলুন তো আমি অথবা আপনি হলে সেখানে কি করতাম? অবশ্যই সেই শিশুদের জামা কাপড় কিনে দিতাম যেন তারা তাদের নগ্ন দেহকে ঢাকতে পারে। যেহেতু প্রচণ্ড শীতে তারা জামাহীন তাই প্রথমেই তাদেরকে শীতের পোশাকের ব্যবস্থা করা দরকার ছিল। মূর্খ নাস্তিকটি করলোটা কি? শিশুদের নগ্ন দেহ দেখে নিজে তো সুখ নিতেনই আবার একইসাথে নিজেকে অপরাধীও নাকি মনে করতেন সেই নাস্তিক। কি হাস্যকর বৈপরীত্য। শুধু কি তাই? হুমায়ুন আজাদের মুক্তবুদ্ধি থেকে বাদ যায়নি পশুরাও। তার নিজের লেখা বই থেকেই প্রমাণ দেখাচ্ছি। হুমায়ুন আজাদ নারী ও শিশুদেরকে নিয়ে কেমন মুক্তচিন্তা করতেন সেটা তো জানা গেলো। এমনকি পশু দেখলেও নাকি তার ছুঁতে ইচ্ছে করতো। সে পশুকামীও ছিল কিনা সেটা নিয়ে যথেষ্ট সংশয় রয়েছে। অন্যদিকে ইসলাম আমাদেরকে কি শিক্ষা দেয়?

সহিহ তারগিব ওয়াত তাহরিব,হাদিসঃ ১০০, সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত হয়েছে,

আবদুল্লাহ ইবনু ওমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃতিনি বর্ণনাটি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পর্যন্ত পৌঁছিয়েছেন। তিনি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ “যে ব্যক্তি ছোটদের প্রতি স্নেহশীল নয় এবং বড়দের হক বুঝে না (তাদের শ্রদ্ধা করে না) সে আমার (উম্মতের) অন্তর্ভুক্ত নয়।”-ihadis.com

সহিহ তারগিব ওয়াত তাহরিব,হাদিসঃ ১০৩, হাসান সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত হয়েছে,

আমার বিন শুআয়ব থেকে বর্ণিতঃতিনি তাঁর পিতা থেকে তাঁর দাদা থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, “যে ব্যক্তি ছোটদের স্নেহ করে না এবং বড়দের মর্যাদা বুঝে না সে আমাদের (উম্মতের) অন্তর্ভুক্ত নয়।”-ihadis,com

কোন নাস্তিক যদি কোন নারীকে প্রেগন্যান্ট করে ফেলে এবং সেই নারী যদি চায় তার সন্তানের দায়িত্ব নাস্তিকটি নিবে অথচ নাস্তিক বলছে নিবে না তাহলে সেই নারী কি করবে? নিজের সন্তানকে খুন করবে? কারণ যৌনমিলনের সম্মতি হয়েছিল বাচ্চার দায়িত্বের সম্মতি তো নেয়া হয়নি? এই ক্ষেত্রে সমাধান কি হবে? এই প্রশ্নটি কেন করলাম? কারণ হুমায়ন আজাদের বই থেকে জানা যায় সে নারীদের ছুঁয়েছে নিজেকে অনেকবার তৃপ্তি দিয়েছে তো যদি একইভাবে কোনো নাস্তিক অন্য নারীকে ছুঁতে গিয়ে প্রেগন্যান্ট বানিয়ে দেয় তখন কি হবে আরকি? যাই হোক পশু দেখলেও নাস্তিকটি ছুঁতে চাইতো তার প্রমাণ দিচ্ছি। পড়ুন।

আমার অবিশ্বাস, ১৬ পৃষ্ঠায় পরিষ্কার বর্ণিত হয়েছেঃ 

আকাশ আর আগুন ছুঁয়ে ফেলেছি কতোবার, ঘাস দেখলে এখনো ছুঁতে ইচ্ছা করে, পশু দেখলে ছুঁতে ইচ্ছা করে, কোনো কোনো নারী দেখলে ছুঁতে ইচ্ছা করে, কিন্তু ছুঁই না। সব কিছু ছোঁয়া অনুমোদিত নয়ওষ্ঠ দিয়ে ছোঁয়া নিবিড়তম ছোঁয়া, আমি যা কিছু ওষ্ঠ দিয়ে ছুঁয়েছি তারাই আমাকে সুখী করেছে সবচেয়ে বেশি। আমাদের সমাজে ছোঁয়া খুবই নিষিদ্ধ ব্যাপার । আমরা খুব কম মানুষকেই ছুঁতে পারি, খুব কম মানুষকেই ছোঁয়ার অধিকার আছে আমাদেরছোঁয়া এখানে পাপ, কোনো নারী যদি কোনো পুরুষকে ছোঁয়, কোনো পুরুষ যদি কোনো নারীকে ছোঁয়, তাতে সূর্য খ'সে পড়ে না , আকাশে হুলস্থূল শুরু হয়ে যায় না। কিন্তু আমরা মনে করি মহাজগত তাতে খেপে উঠেছে । শরীর খুবই আপত্তিকর আমাদের কাছে, একে অজস্র পাপের উৎস ভেবে আমরা ভয় পাই, পবিত্র বইগুলো সব সময় মনে করিয়ে দেয় যে আমরা পাপী তাই আমাদের সুখ নয়, শাস্তি প্রাপ্য । কিন্তু আমি ছুঁয়েছি, ছোঁয়া পেয়েছি তাতে চাঁদতারা খ'সে পড়ে নি । ছুঁয়ে ও ছোঁয়া পেয়ে আমি যে সুখ পেয়েছি, তা আর কিছুতে পাইনি।

পশু ও নারী ছুঁতে না পেরে যে কত রেগেছিল হুমায়ুন আজাদ সেটা তার লেখা থেকেই পরিস্কার। সামাজিক কারণে সে কতকিছু করতে পারেনি। নাস্তিকরা বিশ্বাস করে তারা চতুষ্পদ প্রাণী থেকে বিবর্তিত হয়েছে এই কারণে তারা মানুষের মতো স্বাভাবিকভাবে কিছু ভাবতে পারে না। যেসব নাস্তিকরা নিজেদেরকে বিজ্ঞানমনস্ক দাবি করে থাকেন তারা কেন বললেন না যে "আকাশ আর আগুন ছুঁয়ে ফেলেছি কতোবার" আকাশ কি কখনো ছুঁয়ে দেখা যায়? নাস্তিকরা কি এখানে বৈজ্ঞানিক ভুল সন্ধান করে দেখে না? নাস্তিকতা কিভাবে মানুষকে মুক্তি দেখাবে? মুক্তচিন্তা মানুষকে কিভাবে সভ্য করবে? মুক্তবুদ্ধি কিভাবে মানুষকে নৈতিক বানাতে পারে? প্রশ্ন গুলোও ভাবিয়ে তোলে।

মুক্তচিন্তায় গণহত্যা

নাস্তিকরা নাকি সব থেকে বেশি মানবিক। এই কথাটি হুমায়ুন আজাদ তার মুক্তচিন্তায় বিশ্বাস করে থাকেন এবং উনার বইতে উনি নিজের নাস্তিকগোষ্ঠীকে রক্ষা করার অনেক পয়তারা করেছেন। প্রথমে দেখে নেই সে কি বলেছে তার বইতে।

নাস্তিক হুমায়ুন আজাদ লিখিত “আমার অবিশ্বাস’ বইয়ের ৭৮ পৃষ্ঠায় উল্লেখ করা হয়েছে, 

যে কোনো নির্বোধের পক্ষে ধার্মিক হওয়া সহজ,কিন্তু শুধু জ্ঞানী ও মানবিক ব্যাক্তিই হতে পারে নাস্তিক। নাস্তিক হত্যা আর ধ্বংস করে না, কিন্তু ধার্মিক সব সময় হত্যা ও ধ্বংসের জন্যে ব্যগ্রে থাকে। তারা ইতিহাসের পাতাকে যুগে যুগে রক্তাক্ত করেছে। প্রত্যেক ধর্মে রয়েছে অসংখ্য সন্ত,যারা ঠাণ্ডা মস্তিষ্কের হত্যাকারী। নাস্তিক চায় মানুষের চেতনাকে বদলে দিতে,মানুষকে বিকশিত করতে,আর ধার্মিক চায় মানুষের চেতনাকেও নষ্ট করতে,মানুষকে রুদ্ধ করতে। ধার্মিকদের নৈতিকতাবোধ খুবই শোচনীয়।

“আমরা কি এই বাঙলাদেশ চেয়েছিলাম” বইয়ের ৮৩,৮৪ পৃষ্ঠায় বর্ণনা করা হয়েছে, 

 

বাঙলাদেশে নাস্তিক আছে ক-জন? সবাই তো ধার্মিক। দেশে এতো খুন, করছে কারা? তারা কি নাস্তিক? না, তারা ধার্মিক, তাদের সব কাজে আছে সর্বশক্তিমান আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা। দেশে এতো ধর্ষণ, করছে কারা? তারা কি নাস্তিক? না, তারা সবাই ধার্মিক, তারা নামাজ পড়ে, রোজা রাখে, তাদের সব কাজে আছে সর্বশক্তিমান আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা। দেশে এতো ঘুষ খাওয়াখাওয়ি, এতো ঋণখেলাপি। তারা কি নাস্তিক? না, তারা ধার্মিক, পাজেরো হাকিয়ে তারা মসজিদে যায়, তাদের সব কাজে সর্বশক্তিমান আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা আছে। আমলারা কি নাস্তিক? না, তাদের সব কাজে আছে সর্বশক্তিমান আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা। দারোগাপুলিশরা কি নাস্তিক? না, তাদের সব কাজে আছে সর্বশক্তিমান আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা। কাস্টমসের লোকেরা, ব্যাংকের লোকেরা কি নাস্তিক? না, তাদের সব কাজে আছে সর্বশক্তিমান আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা। ডিসিরা, এসপিরা, জজরা কি নাস্তিক? না, তাদের সব কাজে আছে সর্বশক্তিমান আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা। হজ আর ওমরা কারা করে? তারা কি নাস্তিক, তারা আস্তিক, তাদের সব কাজে আছে সর্বশক্তিমান আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা। এমনকি পতিতারাও এখানে নাস্তিক নয়, তাদেরও আছে সর্বশক্তিমান আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা। তবু বাঙলাদেশ কেনো এতো দুর্নীতিগ্রস্ত? বিশ্বে প্রথম? একটি নাস্তিকও দুর্নীতিগ্রস্ত নয়, কিন্তু প্রতিটি ধার্মিকই দুর্নীতিগ্রস্ত। তাদের দুর্নীতি মূলস্তম্ভ টাকা, ঘুষ ছাড়া, অবৈধ উপায়ে টাকা বানানো ছাড়া,বাঙলাদেশে আর কোনো পবিত্র কাজ নেই

পাঠক দেখলেন তো নাস্তিক লোকটি কত কষ্ট করে নিজেদের নাস্তিকগোষ্ঠীর প্রশংসা করে নাস্তিক্যধর্মকে রক্ষা করার চেষ্টা করলো। তার অন্ধভক্তরা হয়তো হাত তালি দিয়ে আনন্দ প্রকাশ করবে। কিন্তু আমরা যারা সত্যটা জানি আমাদের কাছে নাস্তিকদের তেমন কর্ম দেখে হাস্যকর লাগবে। কেন? নাস্তিকরা যে অপকর্ম করে, শিশু হত্যা করে, মানুষ খুন করে, মিথ্যা কথা বলে এগুলো স্বীকার করে নিয়েছেন নাস্তিকগোষ্ঠীর এক মুক্তমনা লোক। প্রবীর ঘোষ যার নাম। উনি উনার বইতে পরিস্কার করে লিখেছেন।

প্রবীর ঘোষ লিখিত “যুক্তিবাদের চোখে নারী-মুক্তি” বইয়ের ১০৩ পৃষ্ঠাতে,

প্রবীর ঘোষকে প্রশ্ন করা হয় যে তসলিমা একজন ধর্মহীন, মানবতাবাদী মানুষ এটা তো স্বীকার করবেন? উত্তরে নাস্তিক প্রবীর ঘোষ বলেন তসলিমা কতটা মানবতাবাদী আসুন দেখি। কারন ধর্মহীন বা নাস্তিক হলেই মানবতাবাদী, ভালো মানুষ হবেন এমনটা সত্যি নয়। নাস্তিক লম্পট,দুর্নীতিগ্রস্ত মানুষ আমরা অনেক দেখেছি।

নাস্তিক প্রবীর ঘোষ স্বীকার করে নিয়েছেন ঠিক আছে তারপরেও যেই কথা থেকে যায় যেটা হচ্ছে, ইসলাম আমাদেরকে কখনোই দুর্নীতি শিক্ষা দেয় না, অন্যায়ভাবে মানুষ হত্যা শিক্ষা দেয় না, ঘুষ খাওয়া শিক্ষা দেয় না তাহলে যারা এসব কাজ করে তারা কেন করে? একটাই উত্তর। সেটা হচ্ছে তারা নিজেদের মুক্তচিন্তায় এগুলো করে। ইসলামের আইন অমান্য করে তারা নিজেদের মুক্তবুদ্ধিতে কুকর্মগুলো করে।

বুলগুল মারাম, হাদিসঃ ৮৪৩, সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত হয়েছে, 

আবদুল্লাহ বিন্‌ ‘আম্‌র বিন্‌ আস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঘুষ দাতা ও ঘুষ গ্রহীতা উভয়কেই অভিসম্পাত করেছেন।-ihadis.com

জামে আত তিরমিজি, হাদিসঃ ১৩৩৬, সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত হয়েছে,

আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃতিনি বলেন, বিচারের ক্ষেত্রে ঘুষখোর ও ঘুষ প্রদানকারীকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম অভিসম্পাত করেছেন।-ihadis.com

সুনানে আন নাসায়ী, হাদিসঃ ৪০১১, সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত হয়েছে, 

আবদুল্লাহ ইবন আমর (রাঃ) সূত্রে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণিতঃতিনি বলেনঃ কবীরা গুনাহ হলোঃ আল্লাহর সাথে শরীক করা, পিতামাতার নাফরমানী করা, অন্যায়ভাবে হত্যা করা এবং মিথ্যা কসম করা।-ihadis.com

নাস্তিক হুমায়ুন আজাদ আসলে নাস্তিকগোষ্ঠীদের খুশি করার জন্য এতো বানিয়ে বানিয়ে কথা বলেছেন যে ইতিহাস বিষয় হয়তো ঠিক মতো দেখার সুযোগটুকু পাননি। যদি ইতিহাস অধ্যায়ন করতেন তাহলে উনি নিজেই প্রমাণ পেয়ে যেতেন যে নাস্তিকতা প্রতিষ্ঠিত করবার জন্য কি পরিমাণ গণহত্যা করেছে মুক্তমনা নাস্তিকরা। নাস্তিকদের ইতিহাস ঘাঁটলে প্রমাণ পেলে রক্তের হোলি খেলার। মানুষের রক্ত নিয়ে মুক্তচিন্তায় কিভাবে খেলেছে সেই নাস্তিকরা আসুন জেনে নেই।

হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস থেকে প্রকাশিত আলোচিত গ্রন্থ "The Black of Communism" থেকে জানা যায়,নাস্তিকতা সমাজতন্ত্র ভিত্তিক সরকার কেবল বিংশ শতকেই ১০০ মিলিয়নের বেশি মানুষকে হত্যা করেছে

ড রাফান আহমেদ তার "অবিশ্বাসী কাঠগড়ায়" ১৬৮ পৃষ্ঠায় "Times of India, 8 sep. 2017" সূত্রে উল্লেখ করা হয়েছে যেঃ 

নাস্তিক নেতা মাও সেতুং এর অনুপ্রেরণা স্টেলিন , যে চীনের সরকার আইন করে নাস্তিকতাকে চাপিয়ে দিয়েছিল। প্রায় ৯০ মিলিয়ন পার্টি মেম্বারকে বলা হয়েছিল হয় ধর্ম ছাড়ো অথবা শাস্তির সম্মুখীন হও এবং অবশ্যই তাদের মাক্সবাদী নাস্তিক হতে হবে, না হলে রক্ষা নেই

"অবিশ্বাসী কাঠগড়ায়" লেখক  রাফান আহমেদ, পৃষ্ঠা ১৬৪,১৬৫ তে উল্লেখ করেছেন,ডেভিন প্যাট্রিক কেলি নামক এক মিলিটেন্ত নাস্তিক "Max Jaeger,Texas Church Shooter Was a Militant Atheist,New York Post, November 6, 2017" এর সুত্র অনুযায়ী,

ডেভিন প্যাট্রিক কেলি চার্চে খৃষ্টানদের উপাসনালয়ে ভয়ংকর হামলা চালায় এমন সময় যে খৃষ্টানরা তখন তাদের ধর্মীয় কাজে মগ্ন ছিল। টোটাল ২৬ জন মানুষ এই হামলায় মারা যায় , যাদের মাঝে ৮ জনই শিশু এবং সব থেকে ছোটজনের বয়স ছিল মাত্র ১ বছরএই নাস্তিক ফেসবুকে নাস্তিকদের সমর্থনে অনেক পোস্ট করত এবং ধর্মে বিশ্বাসীদের গালাগালি করত

বেইলর ইউনিভার্সিটির সমাজবিজ্ঞান ও নৃতত্ত্ববিদ্যার সহকারী অধ্যাপক পল ফ্রয়েস "Journal for the scientific study of religion.vol 43.issue 1.page 35 (2004) - এ লিখেন,

সোভিয়েত ইউনয়নের নাস্তিকেরা ধর্মীয় বিশ্বাসের ওপর দীর্ঘ ৭০ বছর ধরে যুদ্ধ চালিয়েছেসমাজতান্ত্রিক এই দলটি ধ্বংস করেছে অগণিত চার্চ, মসজিদ ও মন্দির ,হত্যা করেছে অসংখ্য ধর্মগুরুকে। স্কুলে ও মিডিয়ার মাধ্যমে ধর্মবিরোধী পোপাগান্ডার বন্যা বইয়ে দিয়েছে এবং বৈজ্ঞানিক নাস্তিকতার নামে বিশ্বাস ব্যাবস্থার প্রচলন করেছে,যা পূর্ণ ছিল নানা নাস্তিকীয় আচার, ধর্মত্যাগকারীগন ও দুনিয়াবি মুক্তির প্রতিজ্ঞার দ্বারা।

বর্তমান যুগের নাস্তিকরা বলে থাকে যে তারা অন্যায় কাজ করেছেন কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে আপনাদের দেয়া বিধান সেই নাস্তিকরা মুক্তচিন্তায় অবিশ্বাস করেছে এবং মুক্তচিন্তায় অন্যায়কাজ গুলোকে ভালো মনে করেই সম্পূর্ণ করেছে। এই যুগের নাস্তিকদের কাছে ধরে দিলাম গণহত্যা খারাপ কিন্তু যেসব নাস্তিকরা হত্যা করে, গণহত্যা করে, মানুষ খুন করে তাদের মুক্তচিন্তায় সেসব ভালো। মুক্তমনা বিজ্ঞানমনস্ক নাস্তিক মাও সেতুং, জোসেফ স্টালিনরা যে ইতিহাসে রক্তের হোলি খেলেছেন শুধু কি তখন? একদম না। বর্তমান সময়েও চীনের নাস্তিকরা মুসলিমদের কল্লা ফেলে দিচ্ছে আর অসহায় মা বোনদের ধর্ষণ করছে আর ছোট শিশুদেরকে মেরে অত্যাচার নির্যাতন করা হচ্ছে।

কিছু কিছু সস্তা নাস্তিকরা নিজেদের নাস্তিকতাকে বাঁচানোর জন্য বলে নাস্তিকরা খারাপ হতে পারে তারমানে নাস্তিকতাকে দায়ী করা যাবে না- এই কথাটি আসলে ডাহামিথ্যে। কারণ নাস্তিকরা বিশ্বাস করে থাকে মুক্তচিন্তায়। আর প্রতিটি নাস্তিকের এই ফ্রিডম আছে যে নিজের মতো করে নিজের জীবন পরিচালনা করবে। যদি তর্কের খাতিরে ধরেও নেই নাস্তিকদের কুকর্মের জন্য নাস্তিকতাকে দায়ী করা যাবে না তাহলে নাস্তিকদের এটা স্বীকার করে নিতে হবে যে নাস্তিকদের সকল কুকর্মের জন্য তাদের মুক্তচিন্তা এবং মুক্তবুদ্ধি দায়ী যা তারা বিবর্তনের মাধ্যমে পেয়েছে। আর তাছাড়া নাস্তিক্যধর্মে নৈতিকতার কোনো সিমানা নেই, নেই কোনো নির্দিষ্ট রেখা, কোনো নাস্তিক যদি অন্যকে ক্ষতি না করে নিজে ইয়াবা সেবন করে, যদি অন্যকে ক্ষতি করে না নিজের মেয়ের সাথে, মায়ের সাথে, ছাত্র-ছাত্রীদের সাথে,বাবার সাথে সম্মতিতে সংগম করে তাহলে এসব নাস্তিকতায় ব্যাক্তিস্বাধীনতার অংশ হিসেবে ধরে নেয়া হয়। আবার কোনো নাস্তিক যদি বিবর্তনবাদ মেনে অথবা দুনিয়ার সব কিছুই নিরর্থক এটা বিশ্বাস করে কাউকে হত্যা করে, ধর্ষণ করে তাহলে এটাও নাস্তিক্যধর্মের দৃষ্টিতে মুক্তচিন্তায় বৈধ বলেই ধর্তব্য হবে। সুতরাং এটা বলে নাস্তিকদের কখনোই রক্ষা পাওয়ার উপায় নেই যে নাস্তিকদের অপরাধের জন্য নাস্তিক্যধর্ম দায়ী না।

উপসংহারঃ পাঠক মুক্তমনাদের মুক্তচিন্তার প্রকার বলতে থাকলে শেষ হবে না। চিন্তাশীল ধারালো মস্তিস্কদের জন্য এতটুকুই যথেষ্ট হবে বলে মনে করছি। আপনারা নিজেরাই যাচাই করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করুন আপনারা মানুষের কাতারে আসবেন নাকি চতুষ্পদ থেকে বিবর্তিত সম্প্রদায়ে। আপনারা মানুষের বিবেক দিয়ে চিন্তাশীল হবেন নাকি জানোয়ার থেকে প্রাপ্ত বিবেক? নাস্তিকরা কেন নিজেদের ভক্তদেরকে ইসলামবিরোধীতার চর্চায় ডুবিয়ে রাখতে চায় এইবার ধরতে পেরেছেন তো? ইসলাম যেখানে আমাদেরকে মানবতা শিক্ষা দিচ্ছে সেখানে নাস্তিকগোষ্ঠীরা ইসলামকে পৃথিবী থেকে মুছে দিয়ে কেমন মুক্তচিন্তার প্রতিষ্ঠা করতে চাইছে এখনো বুঝেননি? সব প্রমাণ আপনাদের সামনে রয়েছে কিন্তু।

যেসব নাস্তিকরা চায় সবাই মুক্তচিন্তা করতে শিখুক। প্রশ্ন হচ্ছে মুক্তচিন্তার কি সীমারেখা হবে নাকি অবাধ হবে? যদি বলেন সীমারেখা হবে তাহলে সেটা কিভাবে চিন্তার মুক্তি হতে পারে? মুক্তচিন্তা কি নৈতিকতার মধ্যে বন্দী থাকবে নাকি মুক্ত? এটা করা ভালো,সেটা করা খারাপ এগুলো যদি কেউ নির্ধারণ করে দেয় তাহলে অন্য নাস্তিকরা কেন সেসবকে বিশ্বাস করতে যাবে? ধরুন কোনও নাস্তিকের কাছে ধর্ষণ করা খারাপ এখন তারমানে তো এটা নয় যে সব নাস্তিক ধর্ষণ করাকে খারাপ হিসেবেই বিশ্বাস করতে হবে। ধর্ষণ করাকে যদি খারাপ মনে করার মুক্তচিন্তা করা যায় তাহলে একই যুক্তিতে ভালো মনে কেন করতে পারবে না নাস্তিক?

এমডি আলী

যিনি একজন লেখক, বিতার্কিক ও গবেষক। বিভিন্ন ধর্ম ও মতবাদ বিষয় পড়াশোনা করেন। ইসলামের সত্যতা মানুষের কাছে ছড়িয়ে দিতে চান। “সত্যের অনুভূতি” উনার লেখা প্রথম বই। “ফ্যান্টাস্টিক হামজা” দ্বিতীয় বই। জবাব দেবার পাশাপাশি নাস্তিক মুক্তমনাদের যৌক্তিক সমালোচনা করে থাকেন।

Previous Post Next Post