নিজের দাসীকে যৌন নির্যাতন করে সহবাস ইসলামে বৈধ?


বিষয়ঃ নিজের দাসীকে যৌন নির্যাতন করে সহবাস ইসলামে বৈধ?

লিখেছেনঃ এমডি আলী।

===================

লেখাটি যারা শরিয়া সম্পাদনা করেছেনঃ

মুফতি মনোয়ার হোসেন (হা;ফি)/ প্রিন্সিপাল,মাদরাসাতুল মাদীনা,বগুড়া।

মাওলানা রাকিবুল ইসলাম (হা;ফি)/ শিক্ষক,গবেষক,জামিয়া রশিদিয়া আরাবিয়া, গাজীপুর।

উত্তরঃ ইসলামবিদ্বেষীদের খুবই প্রিয় অভিযোগ ইসলাম নাকি নিজের দাসীর সাথে জবরদস্তি বা যৌন নির্যাতন করে সেক্স করাকে বৈধতা দেয়। ওরা দাসীর সাথে সহবাস করার হাদিস গুলো দেখিয়ে বলে এই যে দেখো দাসীর সাথে জবরদস্তি আর যৌন নির্যাতন করে সহবাস করা হয়েছে। কিন্তু খুব সতর্কতার সাথে সেই হাদিস গুলো পড়লে কোথাও এই ধরণের কিছুই পাওয়া যায় না যে দাসীদের সাথে জবরদস্তি করে সহবাস করা হয়েছে অথবা নিজের দাসী সহবাস করতে রাজি না তাই তাকে অত্যাচার করে সহবাস করা হয়েছে। কুরআন-সুন্নাহে আমি এমন কোনো তথ্য পাইনি যেখানে বলা হয়েছে তোমরা দাসীদেরকে নির্যাতন করো যদি তারা সহবাসে রাজি না হয়। মানুষকে ইসলাম থেকে দূরে সরিয়ে রাখার জন্য নাস্তিকরা মুক্তমনেই ইসলাম নিয়ে মিথ্যাচার করে থাকে। নাস্তিকরা অর্ধেক অংশ ধামাচাপা দিয়ে বাকি অংশকে লালদাগ দিয়ে দেখিয়ে বানিয়ে বানিয়ে মিথ্যা ব্যাখ্যা করে ইসলামের সাথে মিশানোর পয়তারা করে আর মানুষকে ইসলাম বিষয় ভুল বোঝায়। নাস্তিকান্ধরা যতো মিথ্যুকমনা হবে আমরা ততো সত্যমনা হবো।কুরআন সুন্নাহ নিয়ে ওরা যতো মিথ্যাচার করবে,আমরা ততো মানুষের কাছে ওদের ভন্ডামি প্রকাশ করতেই থাকবো। ইনশাআল্লাহ।

নিজের দাসীর সাথে সহবাস করা হয়েছে এরকম হাদিস গুলো প্রথমে পড়া যাকঃ

সুনানে আন নাসায়ী,হাদিসঃ৩৯৫৯,সহিহ হাদিসঃআনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃতিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম–এর কাছে একটি বাঁদি ছিল যার সাথে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) সহবাস করতেন। এতে আয়েশা (রাঃ) এবং হাফসা (রাঃ) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম–এর সাথে লেগে থাকলেন।পরিশেষে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম সেই বাঁদিটিকে নিজের জন্য হারাম করে নিলেন।এর পরিপ্রেক্ষিতে আল্লাহ্‌পাক নাযিল করেনঃ (আরবি) “হে নবী আল্লাহ্‌আপনার জন্য যা হালাল করেছেন তা আপনি নিজের জন্য কেন হারাম করে নিয়েছেন (সূরা তাহরীমঃ ০১) নাযিল করেন।-ihadis.com

সহিহ বুখারী,হাদিসঃ৬৬০৩,সহিহ হাদিসঃআবূ সা’ঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃতিনি একবার নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নিকট উপবিষ্ট ছিলেন। এমন সময় আনসারদের এক লোক এসে বলল,হে আল্লাহ্‌র রসূল! আমরা তো বাঁদীদের সঙ্গে সংগত হই অথচ মালকে ভালবাসি।কাজেই ‘আযল’র ব্যাপারে আপনার অভিমত কি? রসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেনঃতোমরা কি এ কাজ কর? তোমাদের জন্য এটা করা আর না করা দুটোই সমান। কেননা, যে কোন জীবন যা পয়দা হওয়াকে আল্লাহ্‌ লিখে দিয়েছেন তা পয়দা হবেই।-ihadis.com

সহিহ বুখারী,হাদিসঃ২২২৯,সহিহ হাদিসঃআবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃএকদা তিনি নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নিকট উপবিষ্ট ছিলেন, তখন তিনি বললেন, হে আল্লাহর রসূল! আমরা বন্দী দাসীর সাথে সঙ্গত হই।কিন্তু আমরা তাদের বিক্রয় করে মূল্য হাসিল করতে চাই।এমতাবস্থায় আযল- নিরুদ্ধ সঙ্গম করা সম্পর্কে আপনি কী বলেন? তিনি বললেন, আর তোমরা কি এরূপ করে থাক! তোমরা যদি তা আযল না কর তাতে তোমাদের কোন ক্ষতি নেই। কারণ আল্লাহ তা‘আলা যে সন্তান জন্ম হওয়ার ফায়সালা করে রেখেছেন, তা অবশ্যই জন্ম নিবে।-ihadis.com

সুনানে আবু দাউদ,হাদিসঃ৪০১৭,হাসান হাদিসঃ বাহ্‌য ইবনু হাকীম (রাঃ) হতে তার পিতা ও দাদা থেকে বর্ণিতঃতিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে প্রশ্ন করলাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমাদের ঢেকে রাখার অঙ্গসমূহ কার সামনে আবৃত রাখবো এবং কার সামনে অনাবৃত করবো? তিনি বলেনঃ তোমার স্ত্রী ও দাসী ব্যতীত সবার সামনে তা আবৃত রাখো। বর্ণনাকারী বলেনঃ যতদূর সম্ভব কেউ যেন অন্যের গোপন অঙ্গের দিকে না তাকায়। বর্ণনাকারী বলেন, আমি প্রশ্ন করলাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমাদের কেউ যখন নির্জনে থাকে? তিনি বলেনঃ লজ্জার ব্যাপারে আল্লাহ মানুষের চেয়ে অধিক হকদার।-ihadis.com

সহিহ মুসলিম,হাদিসঃ৩৪৪৮,৩৪৪৯,সহিহ হাদিসঃজাবির (রাযিঃ) থেকে বর্ণিতঃএক ব্যক্তি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর কাছে এসে বলল, আমার একটি দাসী আছে যে আমাদের খিদ্মাত ও পানি সরবরাহের কাজে নিয়োজিত।আমি তার নিকট আসা যাওয়া করে থাকি, কিন্তু সে গর্ভবতী হোক তা আমি পছন্দ করি না।তখন তিনি বললেন, তুমি ইচ্ছে করলে তার সাথে ‘আয্ল করতে পার।তবে তার তাক্বদীরে সন্তান থাকলে তা তার মাধ্যমে আসবেই। লোকটি কিছু দিন অতিবাহিত করল। অতঃপর সে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর কাছে এসে বলল, দাসীটি গর্ভবতী হয়েছে।তিনি বললেন, আমি তোমাকে এ মর্মে জানিয়ে ছিলাম যে,তার তাক্বদীরে যা আছে তা আসবেই।-ihadis.com

মিশকাতুল মাহাবিহ,হাদিসঃ১৮৯৮,সহিহ হাদিসঃআবূ যার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃতিনি বলেন,রসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃপ্রত্যেক ‘তাসবীহ’ অর্থাৎ সুবহা-নাল্ল-হ বলা সদাক্বাহ্, প্রত্যেক ‘তাকবীর’ অর্থাৎ আল্ল-হু আকবার বলা সদাক্বাহ্, প্রত্যেক ‘তাহমীদ’ বা আলহামদুলিল্ল-হ বলা সদাক্বাহ্। প্রত্যেক ‘তাহলীল’ বা ‘লা-ইলা-হা ইল্লাল্ল-হ’ বলা সদাক্বাহ্।নেককাজের নির্দেশ দেয়া,খারাপ কাজ থেকে ফিরিয়ে রাখা সদাক্বাহ্।নিজের স্ত্রী অথবা দাসীর সাথে সহবাস করাও সদাক্বাহ্।সাহাবীগন আরয করলেন,হে আল্লাহর রসূল! আমাদের কেউ যদি নিজের কামভাব চরিতার্থ কতে তাতেও কি সে সাওয়াব পাবে? উত্তরে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেনঃ আমাকে বলো,কোন ব্যক্তি যদি হারাম উপায়ে কামভাব চরিতার্থ করে তাহলে সেকি গুনাহগার হবে না? ঠিক এভাবেই হালাল উপায়ে স্ত্রী অথবা দাসীর সাথে কামভাব চরিতার্থকারী সাওয়াব পাবে।-ihadis.com

সহিহ মুসলিম,হাদিসঃ৩৪৩৮,সহিহ হাদিসঃআবূ সা’ঈদ আল খুদ্রী (রাযিঃ) থেকে বর্ণিতঃতিনি বলেন, আমরা কিছু সংখ্যক যুদ্ধবন্দিনী লাভ করেছিলাম। তাদের সাথে আমরা ‘আয্ল করছিলাম।এরপর আমরা রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে জিজ্ঞেস করলাম।তিনি আমাদের বললেন, অবশ্যই তোমরা এ কাজ করবে। অবশ্যই তোমরা এ কাজ করবে।অবশ্যই তোমরা এ কাজ করবে।বিস্ময় প্রকাশ করে বললেন বস্তুত ক্বিয়ামাত পর্যন্ত যত প্রানী সৃষ্টি হওয়ার তা সৃষ্টি হবেই।-ihadis.com

হযরত বুরাইদা (রা) হযরত আলী (রা)কে খুমুস থেকে এক বাদী নিজের জন্য নির্বাচন করত তার সাথে সহবাস করেছে জেনে তিনি তাঁর প্রতি অত্যন্ত রুষ্ট এবং অন্তরে বিদ্বেষভাব পোষণ করতে লাগলেন।কারন,তিনি এটাকে আত্মসাৎ মনে করেন,যা শরয়ী দলীল দ্বারা নিষিদ্ধ। --- লামিউস দারারী গ্রন্থে আছে গর্ভমুক্ততা যাচাই ব্যটিরেকে সহবাস করেছেন।অতএব হতে পারে, গর্ভমুক্ততা যাচাই করত কিছুদিন তথা এক মিন্সকালীন সময় অতিবাহিত হওয়ার পর তিনি সহবাস করেন।এ সেই বাদী যার গর্ভে পরবর্তীতে মুহাম্মদ বিন হানাফিয়াহ (রহ) এর জন্ম হয়।-সহজ ইন আমুনুলবারী শরহে বুখারী মাগাযী ও তাফসীর অংশ, ২২৭ ও ২২৮ পৃষ্ঠায় বিস্তারিত এই তথ্যটি দেয়া আছে।

সহিহ বুখারী,হাদিসঃ৪৩৫০,সহিহ হাদিসঃরাইদাহ (রা.) থেকে বর্ণিতঃতিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম 'আলী (রাঃ)- কে খুমুস গানীমাতের এক-পঞ্চমাংশ নিয়ে আসার জন্য খালিদ (রাঃ)- এর কাছে পাঠালেন।রাবী বুরাইদাহ বলেন, আমি 'আলী (রাঃ)- এর প্রতি অসন্তুষ্ট, আর তিনি গোসলও করেছেন। রাবী বলেন তাই আমি খালিদ (রাঃ)- কে বললাম, আপনি কি তার দিকে দেখছেন না? এরপর আমরা নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর কাছে ফিরে আসলে আমি তাঁর কাছে বিষয়টি জানালাম। তখন তিনি বললেন, হে বুরাইদাহ! তুমি কি 'আলীর প্রতি অসন্তুষ্ট? আমি বললাম জ্বী, হ্যাঁ।তিনি বলেলন, তার উপর অসন্তুষ্ট থেক না।কারণ খুমুসে তার প্রাপ্য এর চেয়েও অধিক আছে।-ihadis.com

নাস্তিকান্ধদের অভিযোগের নিয়ে আমার সংশয়ঃ

নাস্তিকান্ধরা যতগুলো হাদিস দেখিয়ে সাধারণ মানুষদের সাথে প্রতারণা করে সব গুলো হাদিস আমি উপরে যুক্ত করে দিয়েছি। প্রয়োজনে সব গুলো হাদিস আরেকবার মনোযোগ দিয়ে পড়ুন। কারণ আপনারা উপরে পেশ করা হাদিস গুলো বুঝতে পারলেই নাস্তিকদের মিথ্যাচারের আশ্রয় গুলো সহজেই ধরতে পারবেন। নাস্তিকান্ধদের মিথ্যা দাবি অনুযায়ী ওরা যেহেতু নিশ্চিত যে উপরের সব দাসীদের সাথে যৌন নির্যাতন,জবরদস্তি,অত্যাচার করেই সহবাস করা হয়েছে। তাই উপরে দেয়া হাদিস থেকেই ওদের দাবির পক্ষে প্রমাণ পেশ করতে হবে।

যেমনঃ

১ >উপরে দেয়া হাদিসে যেসব দাসীর সাথে সহবাস করা হয়েছে তাদের নিজস্ব মুখের সাক্ষ্য পেশ করতে হবে যে উনাদের সাথে সাহাবীরা যৌন নির্যাতন-অত্যাচার করে সহবাস করেছেন।

২ >যদি নাস্তিকান্ধরা বলে যে সাহাবীরা নারীদের সাক্ষ্য লুকিয়ে ফেলেছে তাহলে এরপক্ষেও সাক্ষ্য,বিশুদ্ধ তথ্য পেশ করতে হবে।কবে লুকিয়েছে? কোথায় লুকিয়েছে? কারা দেখেছে লুকাতে? স্পষ্ট প্রমাণ পেশ করতে হবে।

পাঠক খেয়াল করুন উপরের হাদিস গুলো থেকে নাস্তিকদের দাবি কিন্তু সত্য প্রমাণ হচ্ছে না। আমি উপরে দেয়া হাদিস গুলো মনোযোগ দিয়ে পড়েছি কিন্তু এমন কোনো তথ্যই পেলাম না যেখানে সাহাবীরা দাসীদের সাথে নির্যাতন করে, অত্যাচার করে, জবরদস্তি করে সহবাস করেছে বা দাসীরা সহবাস করতে রাজি ছিল না। মুক্তমনে মিথ্যাচার করা ছাড়া নাস্তিকরা সততার সাথে যদি নিজেদের দাবির পক্ষে প্রমাণ পেশ করতে না পারে সেই পর্যন্ত নাস্তিকরা যে বিশুদ্ধ-খাটি মিথ্যুকবাজ এটা চূড়ান্ত সত্য প্রমাণিত হয়ে থাকছে। 

দাসীর সাথে সার্বিক আচরণের ক্ষেত্রে ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গিঃ

আল কুরআন, সুরা নিসা ৪:৩৬ আয়াতে বর্ণিত, 

পিতা-মাতার সাথে সৎ ও সদয় ব্যবহার কর এবং নিকটাত্নীয়,এতীম-মিসকীন , প্রতিবেশী,অসহায় মুসাফির এবং নিজের দাস-দাসীর প্রতিওনিশ্চয়ই আল্লাহ পছন্দ করেন না অহংকারীকে।

সহিহ বুখারী,হাদিসঃ৭৩৭৬,সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,

রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ্ তার প্রতি রহম করেন না,যে মানুষের প্রতি রহম করে না। -ihadis.com

সহিহ বুখারী,হাদিসঃ৬১২৪,৬১২৫,সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,

নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা নম্র হও এবং কঠোর হয়ো না। শান্তি দান কর,বিদ্বেষ সৃষ্টি করো না। -ihadis.com

সুনানে আবু দাউদ,হাদিসঃ৪৭৮৬,সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,

আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃতিনি বলেন রাসুলাল্লাহ সাল্লাল্লাহি ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম কখনো কোন খাদেমকে এবং কোন মহিলাকে মারধর করেননি। -ihadis.com

সুনানে আবু দাউদঃ৪৭৯০,হাসান হাদিস থেকে বর্ণিত,

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ মু'মিন ব্যক্তি সরল ও ভদ্র প্রকৃতির হয়ে থাকে, কিন্তু পাপিষ্ঠ ব্যক্তি ধোকাবাজ ও নির্লজ্জ হয়। -ihadis.com

সহিহ মুসলিম,হাঃ৬৪৯২,৬৪৯৩,৬৪৯৪,৬৪৯৬,সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,

নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি নম্র আচরণ থেকে বঞ্চিত সে প্রকৃত কল্যাণ থেকেই বঞ্চিত। -ihadis.com

সুনানে আবু দাউদঃহাদিসঃ৫১৫৬, সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,

আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃতিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর শেষ উপদেশ ছিলঃ সলাত, সলাত এবং দাস-দাসীদের সম্পর্কে আল্লাহকে ভয় করা।-আদাবুল মুফরাদ,হাদিসঃ১৫৭,সহিহ হাদিস। -ihadis.com

সুনানে আবু দাউদ,হাদিসঃ৫১৬১,সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের দাস-দাসীর মধ্যে যারা তোমাদেরকে খুশি করে তাদেরকে তোমরা যা খাও তা-ই খেতে দাও এবং তোমরা যা পরিধান করো তাই পরতে দাও।আর যেসব দাস তোমাদের খুশি করে না তাদেরকে বিক্রি করো। তোমরা আল্লাহর সৃষ্টিজীবকে শাস্তি দিও না। -ihadis.com

আদাবুল মুফরাদ,হাদিসঃ১৮০,সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,

আম্মার ইবনে ইয়াসার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ যে কেউ নিজ গোলামকে নির্যাতকরূপে প্রহার করবে,তাকে কিয়ামতের দিন শৃঙ্খলাবদ্ধ করা হবে। -ihadis.com

উপদেশ,হাদিসঃ২০৬,২০৭,সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,তোমাদের মধ্যে সে ব্যক্তিই আমার কাছে অধিক প্রিয়,যার চরিত্র ভাল। -ihadis.com

উপদেশ,হাদিসঃ২১১,সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,

রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,কঠোর ও রুক্ষ্ম স্বভাবের মানুষ জান্নাতে প্রবেশ করবে না। -ihadis.com

সহিহ বুখারী,হাদিসঃ৩০,সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,

মা‘রূর (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃতিনি বলেনঃআমি একবার রাবাযা নামক স্থানে আবূ যর (রাঃ)-এর সঙ্গে দেখা করলাম। তখন তাঁর পরনে ছিল এক জোড়া কাপড় লুঙ্গি ও চাদর আর তাঁর ভৃত্যের পরনেও ছিল ঠিক একই ধরনের এক জোড়া কাপড়।আমি তাঁকে এর কারণ জিজ্ঞেস করলে তিনি বললেনঃএকবার আমি জনৈক ব্যক্তিকে গালি দিয়েছিলাম এবং আমি তাকে তার মা সম্পর্কে লজ্জা দিয়েছিলাম।তখন আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাকে বললেন,আবূ যার! তুমি তাকে তার মা সম্পর্কে লজ্জা দিয়েছ? তুমি তো এমন ব্যক্তি, তোমার মধ্যে এখনো অন্ধকার যুগের স্বভাব বিদ্যমান। জেনে রেখো,তোমাদের দাস-দাসী তোমাদেরই ভাই। আল্লাহ তা‘আলা তাদের তোমাদের অধীনস্থ করে দিয়েছেন।তাই যার ভাই তার অধীনে থাকবে, সে যেন নিজে যা খায় তাকে তা-ই খাওয়ায় এবং নিজে যা পরিধান করে, তাকেও তা-ই পরায়। তাদের উপর এমন কাজ চাপিয়ে দিও না,যা তাদের জন্য অধিক কষ্টদায়ক।যদি এমন কষ্টকর কাজ করতে দাও,তাহলে তোমরাও তাদের সে কাজে সহযোগিতা করবে। -ihadis.com

সহিহ বুখারী,হাদিসঃ২৫৪৭,৫০৮৩,৩৪৪৬,সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,

নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যে লোক তার বাঁদীকে উত্তমরূপে জ্ঞান ও আদব শিক্ষা দেয় এবং তাকে মুক্ত করে ও বিয়ে করে,সে দ্বিগুণ সাওয়াব লাভ করবে। আর যে ক্রীতদাস আল্লাহর হক আদায় করে এবং মনিবের হকও আদায় করে, সেও দ্বিগুণ সাওয়াব লাভ করবে।-সুনানে আন নাসায়ী,হাদিসঃ৩৩৪৪,সহিহ হাদিস।-ihadis.com

সহিহ বুখারী,হাদিসঃ২৫৪৪,৩০১১,সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,

রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,কারো যদি একটি বাঁদী থাকে আর সে তাকে প্রতিপালন করে, তার সাথে ভাল আচরণ করে এবং তাকে মুক্তি দিয়ে বিয়ে করে,তাহলে সে দ্বিগুন সাওয়াব লাভ করবে। -ihadis.com

সহিহ মুসলিম,হাদিসঃ৭০৮১,সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,

হারিসাহ্ ইবনু ওয়াহ্ব আল খুযা‘ঈ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃতিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ জান্নাতবাসীগণের পরিচয় আমি কি তোমাদেরকে জানাব না? তারা হবে দুর্বল কোমল হৃদয় বিনয়ী লোক। যারা আল্লাহর উপর ভরসা করে কসম করলে আল্লাহ তা পূর্ণ করান। তিনি আবার বললেন, আমি কি তোমাদেরকে জাহান্নামীদের পরিচয় বলব না? তারা হবে দাম্ভিক, হীন বা নীচ এবং অহংকারী লোক। -ihadis.com

সিলসিলা সহিহা,হাদিসঃ২৭,সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,

ইয়াযিদ ইবনু জারিয়াহ থেকে বর্ণিতঃতিনি বলেন,রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়সাল্লাম বিদায় হাজ্জের দিন বলেছেন,তোমাদের দাসদাসীদের ব্যাপারে সাবধান থেকো।তোমরা তোমাদের দাস-দাসীদের ব্যাপারে সাবধান থেকো,তোমরা তোমাদের দাস-দাসীদের ব্যাপারে সাবধান থেকো।অর্থাৎ, তাদের অধিকার আদায় করো,তাদের প্রতি অত্যাচার কর না এবং আল্লাহকে ভয় কর তোমরা যা খাও তাদেরও তা খাওয়াও,তোমরা যা পর তাদেরও তা পরাও।যদি তারা কোন অপরাধ করে যা তোমরা ক্ষমা করতে ইচ্ছা কর না। তবে আল্লাহর বান্দাদের বিক্রয় করবে।তাদের কষ্ট দিবে না। -ihadis.com

সিলসিলা সহিহা,হাদিসঃ৫৬, সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,

ইয়াজ ইবনু হিমার থেকে বর্ণিতঃইয়াজ ইবনু হিমার নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ননা করেন যে, তিনি নাবী রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাদের উদ্দেশ্য করে বলেনঃআল্লাহ তাআলা আমার কাছে ওহী প্রেরন করেছেন যে,তোমরা নম্রতা অবলম্বন কর। একজন যেন অন্যজনের উপর গর্ব-অহংকার না করে এবং একে অন্যের প্রতি জুলুম-অত্যাচার না করে। -ihadis.com

হাদিস সম্ভার,হাদিসঃ১৭৪৩,সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,

আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃনবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,আত্মীয়তার বন্ধন বজায় রাখা, সুন্দর চরিত্র অবলম্বন করা এবং প্রতিবেশীর সাথে সদ্ব্যবহার রাখায় দেশ আবাদ থাকে এবং আয়ু বৃদ্ধি পায়। -ihadis.com

আদাবুল মুফরাদ,হাদিসঃ৪৮৯,সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,

নবী (সাঃ) বলেনঃতোমরা অবশ্যই যুলুম করা থেকে বিরত থাকবে। কেননা যুলুম কিয়ামতের দিন অন্ধকার রূপ ধারণ করবে।তোমরা অবশ্যই অশ্লীলতা বর্জন করবে। কেননা আল্লাহ তাআলা অশ্লীলভাষী ও অশ্লীলতার প্রসারকারীকে পছন্দ করেন না।তোমরা অবশ্যই কৃপণতা পরিহার করবে।কেননা তা তোমাদের পূর্ববর্তীদেরকে পারস্পরিক আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্ন করতে এবং হারামসমূহকে হালালরূপে গ্রহণ করতে উদ্যত করেছে। -ihadis.com

আদাবুল মুফরাদ,হাদিসঃ২৫৭,সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,

হাসান বসরী (র) থেকে বর্ণিতঃ আল্লাহর শপথ! যে সম্প্রদায়ের লোকজন পরামর্শ করে কাজ করে,তারা সর্বোত্তম পন্থার সন্ধান পেয়ে যায়। তারপর তিনি তিলাওয়াত করেন, “তাদের বিষয়সমূহ পরামর্শের মাধ্যমে সম্পাদিত হয়” (৪২ : ৩৮)।-ihadis.com

আদাবুল মুফরাদ,হাদিসঃ১৮৭,সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,

জাবের ইবনে আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃনবী (সাঃ) ক্রীতদাসদের সাথে সদয় ব্যবহার করার উপদেশ দিতেন এবং বলতেনঃতোমরা যা খাও তাদেরকেও তাই খাওয়াও,তোমরা যা পরিধান করো তাদেরকেও তা পরিধান করাও এবং মহামহিম আল্লাহর সৃষ্টিকে কষ্ট দিও না। -ihadis.com

আদাবুল মুফরাদ,হাদিসঃ১৯১,১৯২,১৯৮,সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,

আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃনবী (সাঃ) বলেনঃ দাস তার আহারাদি ও পরিধেয় পাবে এবং তার উপর তার সাধ্যাতীত কাজের বোঝা চাপানো যাবে না। -ihadis.com

রিয়াদুস সলেহিন,হাদিসঃ ৬৩০,সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,

আব্দুল্লাহ ইবনে ‘আমর ইবনে ‘আস রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিতঃ আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রকৃতিগতভাবে কথা ও কাজে অশ্লীল ছিলেন না এবং ইচ্ছাকৃতভাবেও অশ্লীল ছিলেন না। আর তিনি বলতেন, তোমাদের মধ্যে সেই ব্যক্তিই উত্তম, যে তোমাদের মধ্যে সুন্দরতম চরিত্রের অধিকারী। -ihadis.com

রিয়াদুস সলেহিন,হাদিসঃ৬০৭,সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,

ইয়ায ইবনে হিমার রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিতঃ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,আল্লাহ তা‘আলা আমার নিকট অহী পাঠালেন যে,তোমরা পরস্পরে নম্র ব্যবহার অবলম্বন কর।যাতে কেউ যেন কারো প্রতি গর্ব না করে এবং কেউ যেন কারো প্রতি যুলুম না করে। -ihadis.com

উপদেশ,হাদিসঃ২০০,সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,

আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘আল্লাহ কোমল, তিনি কোমলতাকে ভালবাসেন।আর তিনি কোমলতার প্রতি যত অনুগ্রহ করেন,কঠোরতা এবং অন্য কোন আচরণের প্রতি তত অনুগ্রহ করেন না’।মুসলিমের অপর এক বর্ণনায় আছে, একদা রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম আয়েশা (রাঃ)-কে বলেন,কোমলতা নিজের জন্য বাধ্যতামূলক করে নাও এবং কঠোরতা ও নির্লজ্জতা হতে নিজেকে বাঁচাও।কারণ যাতে নম্রতা ও কোমলতা থাকে তার সৌন্দর্য বৃদ্ধি হয়।আর যাতে কোমলতা থাকে না,তা দোষণীয় হয়ে পড়ে। -ihadis.com

উপদেশ,হাদিসঃ২১৪,সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,

আবু যার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃরাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বললেন,তুমি যেখানে থাকবে আল্লাহকে ভয় করবে। কোন কারণে মন্দ কাজ হয়ে গেলে তার পর পরই ভাল কাজ করবে।ভাল কাজ পাপকে মুছে ফেলবে। আর সদাচরণের মাধ্যমে মানুষের সাথে মিলে মিশে থাকবে। -ihadis.com

উপদেশ,হাদিসঃ২১৫,সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,

রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,আমি কি তোমাদেরকে এমন লোকের সংবাদ দিব না? যার উপর জাহান্নামের আগুন হারাম হয়ে যায়;আর আগুনও তাকে স্পর্শ করতে পারবে না। এমন প্রত্যেক ব্যক্তি যার মেজায নরম, স্বভাব কোমল, মানুষের নিকটতম মিশুক এবং আচরণ সরল সহজ। -ihadis.com

উপদেশ,হাদিসঃ২২৩,সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,

রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,আল্লাহ তা‘আলা সে ব্যক্তির উপর অনুগ্রহ করেন না যে ব্যক্তি মানুষের প্রতি দয়া করে না। -ihadis.com

সুনানে আবু দাউদ,হাদিসঃ৪৯১৯,সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,

আবু দারদা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃতিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহি ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেনঃ আমি কি তোমাদের সিয়াম,সালাত,সদাকাহ্‌র চেয়েও ফযিলত পূর্ণ কাজের কথা বলবো না? সাহাবীগণ বললেন, হ্যাঁ অবশ্যই হে আল্লাহ্‌র রাসূল! তিনি বললেনঃপরস্পরের মধ্যে মীমাংসা করা।আর পরস্পরের মধ্যে ঝগড়া বাধানো ধ্বংসের কারণ। -ihadis.com

রিয়াদুস সলেহিন,হাদিসঃ৬৩৮,সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,

আয়েশা রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহা থেকে বর্ণিতঃরাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,‘আল্লাহ তা‘আলা কোমল; তিনি প্রত্যেকটি ব্যাপারে কোমলতা ও নম্রতাকে ভালবাসেন।- হে ‘আয়িশাহ! আল্লাহ যাবতীয় কার্যে নম্রতা পছন্দ করেন।-এই কথাটি একটা ঘটনাতেও পাওয়া যায়,বিস্তারিত পাঠ করতে সহিহ বুখারী,হাদিসঃ৬০২৪,সহিহ হাদিস। -ihadis.com

পাঠক উপরের হাদিস গুলো পাঠ করে হয়তো নিজেরাই বুঝে নিয়েছেন দাসীর সাথে ইসলাম কেমন আচরণের হুকুম দেয়। কিন্তু জানোয়ার থেকে বিবর্তিত হওয়া নাস্তিক প্রাণী গুলো কি ইসলামের এসব তথ্য দেখাবে? কি মনে হয় আপনার? তাছাড়া যেসব তথ্য আপনাদের সামনে তুলে ধরলাম এগুলো নাস্তিকরা ধামাচাপা দিয়ে শুধুমাত্র একতরফা হাদিস দেখিয়ে তাও প্রেক্ষাপটকে লুকিয়ে রেখে বানিয়ে বানিয়ে মুক্তমনে মিথ্যাচার করে ইসলামের বদনাম করার পয়তারা করে নাস্তিকসম্প্রদায়। যাদের চিন্তাশীল মগজ রয়েছে তারা সহজেই অনুধাবন করতে পারবে ব্যাপারটি। ইসলামে দাসবিধির যেই বিধান বর্ণিত হয়েছে তাতে তো পরিস্কার যে প্রাচীন বর্বর দাসপ্রথাকে বাতিল করে ইসলাম যৌক্তিক উপায়ে যে দাসবিধি দিয়েছে তা নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবি রাখে। জানি ইসলামের প্রশংসা পড়লে নাস্তিকরা মনে কষ্ট পায় তাই বলে কি সত্য বলা বন্ধ করতে হবে? একদমই না।

দাসীর সাথে আচরণ করার ইসলামিক আদেশ সমূহঃ

১ >দাসীর সাথে সৎ ও সদয় ব্যবহার করতে হবে।

২ >দাসীর প্রতি কষ্টকর কাজ চাপানো যাবে না।

৩ >দাসীকে উত্তমভাবে জ্ঞান আদব শিক্ষা দিতে হবে।

৪ >দাসীকে মুক্ত করে বিয়ে করলে বেশি সওয়াব।

৫ >সকল কাজে নম্রতা অবলম্বন করা।

৬ >নবীজি (সা) কখনো কোন মহিলাকে মারেননি।

৭ >দাসী সম্পর্কে আল্লাহকে ভয় করতেই হবে।

৮ >সব বিষয় পরস্পরে পরামর্শ করা।

৯ >পরস্পরের মিমাংসা করে কাজ করা,ঝগড়া না করা।

১০ >সদাচরণের মাধ্যমে মানুষের সাথে মিলে মিশে থাকবে।

১১ >নিজের গোলামকে নির্যাতন করলে জাহান্নামে যাবে।

১২ >চরিত্রকে সুন্দর করতে হবে। অশ্লীলতা ত্যাগ করতে হবে।

১৩ >দাসীর কাজ কঠিন হলে মুনিবকে দাসীর কাজে সাহায্য করতে হবে।

১৪ >দাসীদেরকে অত্যাচার করা যাবে না। কারো প্রতি সামান্যতম জুলুম করা যাবে না।

১৫ > শাস্তি-নম্রতা দান করতে হবে,বিদ্বেষ সৃষ্টি করা যাবে না। 

১৬ >মুমিন লোক সরল ও ভদ্র প্রকৃতির হবে আর পাপিষ্ঠ ব্যক্তি ধোকাবাজ ও নির্লজ্জ হয়।

১৭ >দাসী মুনিবকে খুশি না করে তাহলে তাকে বিক্রি করে দেও এরপরেও কষ্ট দেয়া যাবে না।

১৮ >কোমল হৃদয় বিনয়ী লোক জান্নাতী তবে দাম্বিক-নীচ অহংকারী লোক জাহান্নামী।

১৯ >আল্লাহ কোমলতা ও নম্রতা অবলম্বন করতে বলেছেন।মানুষের প্রতি দয়া করতে বলেছেন।

২০ >দাসীর খাবার,পোশাকের ইত্যাদির ব্যবস্থা মুনিবকে নিতে হবে। 

পাঠক আপনাদের সামনে কুরআন-হাদিস থেকে সরাসরি দাসীদের সাথে যেমন আচরণ করতে ইসলাম আদেশ দেয় তুলে ধরলাম। এরপরে নাস্তিকদের আর মিথ্যাচার করার সুযোগ নেই। নাস্তিকদের অন্ধবিশ্বাস অনুযায়ী দাসীর সাথে জবরদস্তি করা,অত্যাচার করা, নির্যাতন করা যদি ইসলামের বিধান হতোই তাহলে দাসীর সাথে ভালো আচরণ করার আইন ইসলাম দেবে কেন? নাস্তিকরা কেন ইসলাম নিয়ে অন্ধবিশ্বাস করছে? উপরে কুরআনের আয়াত এবং সহিহ হাদিস পেশ করা হয়েছে সেসবের বিপরীত কথা কুরআনের আয়াত অথবা সহিহ হাদিস থেকে কি নাস্তিকরা দেখাতে পারবে?

যেমনঃ

১ >কুরআনে আল্লাহ সরাসরি দাসীর সাথে ভালো ব্যাবহার করতে বলেছেন তাই নাস্তিকান্ধদের দাবি সত্য প্রমাণ করতে হলে এমন আয়াত কুরআন থেকেই সরাসরি দেখাতে হবে যেখানে বলা হয়েছে দাসীর সাথে খারাপ ব্যাবহার করো।

২ >বিশুদ্ধ হাদিসে সরাসরি বলা আছে দাসীদের কষ্ট দিও না,কোনো কাজ তাদের উপর চাপিয়ে দিও না। নাস্তিকান্ধদের মিথ্যা দাবিকে সত্য প্রমাণ করতে হলে সহিহ হাদিস থেকেই সরাসরি দেখাতে হবে যেখানে বলা আছে তোমরা দাসীদেরকে যৌন কষ্ট দেও,যৌন নির্যাতন করো,যৌন জবরদস্তি করো যদি তারা সহবাসে রাজি না হয়।

নবীজি (সা) নিজে যেখানে এই নৈতিকতা শিক্ষা দেন যে “আল্লাহ সব কাজে নম্রতা পছন্দ করেন” সেখানে নাস্তিকান্ধদের মিথ্যা বিশ্বাস তথা “ইসলামে দাসীকে যৌন নির্যাতন করে জবরদস্তি সহবাস বৈধ” কিভাবে সঠিক হয়? ইসলাম নিয়ে তাহলে নাস্তিকরা অন্ধবিশ্বাস করছে না? নাস্তিকদের জালিয়াতিপূর্ণ ব্যাখ্যা নাস্তিকদের অন্ধ অনুসারীরা বিশ্বাস করতে পারে কিন্তু আমার মতো একজন চিন্তাশীল যুক্তিবাদী মানুষ কখনোই তা মেনে নেবে না। ইসলাম নিয়ে নাস্তিকদের এমন ডাহামিথ্যেচার গুলোই নাস্তিক্যবাদকে মিথ্যে এবং ইসলামকে সত্য প্রমাণ করে দেবার জন্য চিন্তাশীলদের জন্য যথেষ্ট।

আজলের ক্ষেত্রে দাসীর অনুমতি লাগবে না এর থেকে কি প্রমান হয় না যে দাসীর সাথে জবরদস্তি করে সহবাস ইসলামে বৈধ?

নাস্তিকরা এই ক্ষেত্রে যেই রেফারেন্স দেখায়, ইঃফা,বুখারী শরীফ,৭ খণ্ড,৬৯ পৃষ্ঠায় বলা হয়েছে,

আযল হল স্ত্রী সঙ্গমকালে বীর্যপাতের ঠিক পূর্ব মুহূর্তে স্ত্রী যোনি থেকে পুরুষাঙ্গ বের করে এনে বাইরে বীর্যপাত ঘটান।ইমাম আবু হানিফা (রহ) এর মতে বাদীর সাথে তার অনুমতি  ব্যতিরেকেই এই কাজ জায়েয। তবে আযাদ স্ত্রীর সাথে এই কাজ করতে হলে তার অনুমতি লাগবে।অনুমতি ব্যতীত বৈধ নয়।

পাঠক খেয়াল করুন,এখানে এটা বলা হয়নি যে নিজের দাসী যদি মুনিবের সাথে সহবাস করতে রাজি না হয় তাহলে মুনিবের অনুমতির দরকার নেই তাই মুনিব নিজের দাসীর উপর যৌন হামলা করতে পারবে।ইমাম আবু হানিফা (রহ) কোথায় বলেছেন দাসীদের নির্যাতন করো, অত্যাচার করো, জবরদস্তি করো? ইমাম আবু হানিফা (রহ) এর উপরের বর্ণনা থেকে বিন্দুমাত্র প্রমাণ হয় না দাসীর সাথে জবরদস্তি করে সহবাস করা বৈধ। কারণ উভয়ে সহবাস করতে ইচ্ছা করা আর সহবাস শেষে আযলের ক্ষেত্রে বাদীর অনুমতি লাগবে না দুটো আলাদা সিচুয়েশন কিন্তু। বোঝা গেছে? নিজের দাসী যদি মুনিবের সাথে সহবাস করতে রাজি না হয় তাহলে মুনিব দাসীকে নির্যাতন করবে,অত্যাচার করবে,জবরদস্তি করবে,কষ্ট দিবে এই বিধান ইসলাম দেয় না বরং দাসী যদি মুনিবকে খুশি না করে তাহলে ইসলামের দৃষ্টিতে মুনিব সর্বোচ্চ যা করতে পারে তা হচ্ছে দাসীকে বিক্রি করে দিবে এরপরেও দাসীকে কষ্ট দেয়া যাবে না এমনকি দাসীর প্রতি কোনো কাজ চাপিয়ে দেয়া ইসলামে নিষেধ। উপরের এই বিষয় হাদিস সরাসরি তুলে ধরেছিই।

তাছাড়া ইসলামিক গবেষক মুফতী ওলি উল্লাহ (হাঃফি) তিনি দাওরা হাদীস(মাস্টার্স) সম্পন্ন করেছেন আল-জামিয়াতুল ইসলামিয়া কাসেমুল (জামিল মাদ্রাসা) থেকে। তিনি ইসলামী আইন অনুষদ  (ইফতা) বিষয়ের উপরেও পড়াশোনা করেছেন আল-জামিয়াতুল ইসলামিয়া কাসেমুল (জামিল মাদ্রাসা)। উনি গবেষণা করে বর্ণনা করেছেন, 

দাসীদের সাথে সহবাসের ক্ষেত্রে ইসলাম অন্য কিছু ধর্মের ন্যায় জোড় করার অনুমতি দেয়না।এক্ষেত্রে ইসলামের বিধান হলো দাসীদের সাথে সহবাস কেবল তাদের সন্তুষ্টি চিত্তেই হবে।জোড়পূর্বক নয়। - সুত্রঃ https://ifatwa.info/10144/

শুধু এটাই নয় বরং ই;ফা, মুয়াত্তা ইমাম মালেক,২ খণ্ড, ২২৩ পৃষ্ঠা,১০০ রেওয়ায়েতে উল্লেখ করা হয়েছে,

যকীফ (রহ) হইতে বর্ণিত,ইবনে আব্বাস (রা) কে প্রশ্ন করা হইল আযল সম্পর্কে। তিনি তাহার জনৈকা দাসীকে ডাকিয়া বলিলেন-ইহাদিগকে বাতলাইয়া দাও। দাসী লজ্জাবোধ করিল।ইবনে আব্বাস বলিলেন ইহা তাহাই অর্থাৎ আযল করা মুবাহ আমিও উহা করিয়া থাকি অর্থাৎ তিনিও আযল করেন।

পাঠক খেয়াল করুন, আযলের কথা বলায় দাসী লজ্জাবোধ করল! কোনো দাসীকে যদি অত্যাচার করা হয়,নির্যাতন করা হয় তাহলে কি লজ্জাবোধ করার কথা,বিব্রতবোধ করার কথা? উত্তর হচ্ছে না। এই তথ্য থেকে পরোক্ষভাবে বুঝা যায় সে সময়ে দাসী তার মুনিবের সাহে সহবাসের ব্যাপারটি স্বাভাবিকই ছিল। এছাড়া একটা মেয়ে তাহলে কখন লজ্জাবোধ করে অথবা বিব্রতবোধ করে তা আমার সরাসরি না বললেও হবে। এটা বলাই যায় সাহাবীরা যারা নিজেদের দাসীর সাথে সহবাস করতেন অথবা সহবাসের শেষে আযল করতেন সেটা নিজের দাসীর সাথে জবরদস্তি করে করতেন না। তা না হলে দাসীকে ডেকে আজলের বিষয় বুঝিয়ে দেবার কি দরকার ছিল? ইসলামবিদ্বেষীদের গালে এই হাদিসটি কষ্টদায়ক চপেটাঘাত। তাছাড়া এই ঘটনাকে দুর্বল বলারও সুযোগ নেই কারণ ঘটনাটি সম্পূর্ণ বিশুদ্ধ। ই;ফা,“মুয়াত্তা ইমাম মালেক”১ খণ্ড,৫১ পৃষ্ঠায় বলা হয়েছে,

‘মুয়াত্তা’য় যাহা কিছু গ্রহণ করা হইয়াছে মুহাদ্দিসীনের রীতিনীতি অনুযায়ী পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর গ্রহণ হইয়াছে।‘মুয়াত্তা’য় পরিবেশিত সব হাদিস ও ফতওয়া সম্পূর্ণ বিশুদ্ধ।‘মুয়াত্তা’র রাবিগণ ছিলেন হিজাযী।হিজাযের রাবিগণ সর্ববিষয়ে শ্রেষ্ঠত্বের অধিকারী।এই দিক দিয়েও ‘মুয়াত্তা’র শ্রেষ্ঠত্ব সর্বজনীনস্বীকৃত।সাধারণত মুহাদ্দিসীনের মতে, ‘মুয়াত্তা’র স্থান তিরমিযী ও মুসলিমের পর ধার্য করা হয়।প্রখ্যাত মুহাদ্দিস শাহ ওয়ালীউল্লাহ (রহ) ও শাহ আবদুল আযীয (রহ) এর মতে, মুয়াত্তার’ স্থান বুখারী শরীফেরও উর্ধে।

আদাবুল মুফরাদ,হাদিসঃ২৫৭,সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,

হাসান বসরী (র) থেকে বর্ণিতঃ আল্লাহর শপথ! যে সম্প্রদায়ের লোকজন পরামর্শ করে কাজ করে,তারা সর্বোত্তম পন্থার সন্ধান পেয়ে যায়। তারপর তিনি তিলাওয়াত করেন, “তাদের বিষয়সমূহ পরামর্শের মাধ্যমে সম্পাদিত হয়” (৪২ : ৩৮)।-ihadis.com

ইসলামের অন্যতম শিক্ষা হচ্ছে পরামর্শ করে কাজ করা তাই মুনিব তার বাদীর সাথে পরামর্শ করে কাজ করবে এবং বাদীও তার মুনিবের সাথে পরামর্শ করে কাজ করবে। ইসলামের আরও শিক্ষা হচ্ছে নিজেদের মধ্যে মতানৈক্য হলে অথবা মনের অমিল হলে মীমাংসা করে ফেলা কারণ পরস্পরের মধ্যে ঝগড়া বাধানো ধ্বংসের কারণ। হাদিসটি পড়ুন। 

সুনানে আবু দাউদ,হাদিসঃ৪৯১৯,সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,

আবু দারদা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃতিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহি ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেনঃ আমি কি তোমাদের সিয়াম,সালাত,সদাকাহ্‌র চেয়েও ফযিলত পূর্ণ কাজের কথা বলবো না? সাহাবীগণ বললেন, হ্যাঁ অবশ্যই হে আল্লাহ্‌র রাসূল! তিনি বললেনঃপরস্পরের মধ্যে মীমাংসা করা।আর পরস্পরের মধ্যে ঝগড়া বাধানো ধ্বংসের কারণ। -ihadis.com

মুনিব-বাদীর লাভ স্টোরিঃ

আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া, ৯ খণ্ড,৮৬,৮৭ পৃষ্ঠাঃ বর্ণিত আছে  যে একলোক একটি দাসী ক্রয় করেছিল।দাসীটি খুব সুন্দরভাবে কুরআন পাঠ করত,কবিতা আবৃতি করত এবং তার আরো অনেক গুণ ছিল।লোকটি ওই দাসীকে খুবই ভালবেসেছিল।সে তার পেছনে প্রচুর অর্থ ব্যয় করেছিল। এক পর্যায়ে তার সব সম্পদ শেষ হয়ে সে দেউলিয়া হয়ে যায়।ওখন এই দাসী ব্যতীত তার অন্য কোন সম্পদ অবশিষ্ট থাকল না।

এক দিন দাসীটি তাঁকে বলল আপনার দৈন্য ও অভাবের কথা আমি বুঝতে পেরেছি।আপনি যদি আমাকে বিক্রি করে অর্থ নিজের কাজে ব্যয় করেন তাহলে তা আপনার জন্য ভাল হবে।লোকটি তার ওই দাসীটি উমার ইবনে উবায়দুল্লাহ এর নিকট এক লক্ষ দিরহামে বিক্রি করল।তিনি তখন বসরার শাসনকর্তা ছিলেন।মূল্যগ্রহণ করার পর মালিক নিজেও অনুতপ্ত হল দাসীটিও অনুতপ্ত হলো।

অতঃপর কয়েকটি পংক্তির মাধ্যমে দাসীটি তার মালিককে মনের কথা বলেছিল,

আমাকে বিক্রি করে যে মূল্য আপনি গ্রহণ করলেন তা তো আপনার জন্যে তৃপ্তিকর ও মজার বটে।কিন্তু আমার হাতে এখন দুশ্চিন্তা ও বিরহ ব্যথা ছাড়া কিছুই রইল না।আমার আত্মা এখন জীবন-দুঃখে জর্জরিত।আমি সেটিকে বলছি যে তুম দুঃখ বেশী ভোগ কর,আর কম জীবন সাথী কিন্তু পৃথক হয়ে চলে গিয়েছে।এই সংকট উত্তরণে তোমার নিকট যখন কোন কৌশল নেই এবং ধৈর্য ধারণ ব্যাতীত যখন কোন উপায় নেই,তখন ধৈর্য ধারণ কর।

উত্তরে তার মালিক বলল,

যুগ পরিক্রমা যদি তোমার ব্যাপারে আমাকে এই সংকটে না ফেলত,তাহলে মৃত্যু ব্যতীত অন্য কিছুই আমাদের মাঝে বিচ্ছেদ ঘটাতে পারত না।এখন ধৈর্য ধারণ কর।তোমার বেদনাদায়ক বিচ্ছেদে আমি বারবার দুঃখ ও অনুতাপে ভুগছি।দীর্ঘ সময় তোমাকে স্মরণ করে আমি আমার হৃদয়ের সাথে একান্ত আলাপ করছি।তোমাকে বিদায়ী সালাম।আমাদের মাঝে আর দেখা হবে না।আর মিলন ঘটবে না যদি না মা’মারের বংশধর উমার ইচ্ছা করেন।

ইবন মা’মার যখন দাসীটির প্রেম-ভালবাসার কথা শুনলেন,তখন বললেন আমি কখনো ভালবাসার পাত্র-পাত্রীর মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটাব না।উভয়ের মাঝে বিচ্ছেদ-বেদনা দেখতে পেয়ে মূল্য বাবদ প্রাপ্ত সব টাকা এবং ওই দাসী দুটোকেই বিক্রেতাকে দিয়ে দিলেন,লোকটি মূল্য বাবদ প্রাপ্ত দিরহাম এবং ওই দাসী নিইয়ে চলে গেল।

উপসংহারঃ

সার্বিক আলোচনায় সূর্যের মতো পরিস্কার ইসলাম কখনো দাসীর সাথে নির্যাতন করতে, অত্যাচার করতে, জবরদস্তি করতে আদেশ দেয় না বরং মানবিক আচরণ করতে বলে। নাস্তিকরা ইসলাম নিয়ে যেভাবেই মিথ্যাচার করুক না কেন সত্যকে কখনোই নাস্তিকরা মিথ্যা দিয়ে বিবর্তন করতে পারবে না। কারণ সত্যের জন্মই হয় মিথ্যাকে ধ্বংস করার জন্য। সমালোচনার নামে ইসলাম নিয়ে নাস্তিকরা যে মুক্তমনে মিথ্যাচার করছে এটা প্রমাণিত সত্য। নাস্তিকরা নিজেদের অন্ধ অনুসারীদেরকে ধোঁকা দিয়ে বোকা বানাতে পারলেও কোনো চিন্তাশীল মগজওয়ালা যুক্তিবাদী মানুষকে ধোঁকা দিতে পারবে না। যারা সত্যকে মাথা পেতে গ্রহণ করতে পারে তাদেরকে মিথ্যা বুঝিয়ে লাভ নেই, বোঝা গেছে নাস্তিক প্রাণীগণ?

======================

🌹আলহামদুলিল্লাহ সমাপ্ত🌹

======================

প্রাসঙ্গিক লেখা গুলো পড়তে ক্লিক করুনঃ

বনু মুস্তালিকের যুদ্ধবন্দিনীদের ধর্ষণ করা হয়েছিল?

বিবর্তনবাদের দৃষ্টিতে দাসপ্রথা

এমডি আলী

যিনি একজন লেখক, বিতার্কিক ও গবেষক। বিভিন্ন ধর্ম ও মতবাদ বিষয় পড়াশোনা করেন। ইসলামের সত্যতা মানুষের কাছে ছড়িয়ে দিতে চান। “সত্যের অনুভূতি” উনার লেখা প্রথম বই। “ফ্যান্টাস্টিক হামজা” দ্বিতীয় বই। জবাব দেবার পাশাপাশি নাস্তিক মুক্তমনাদের যৌক্তিক সমালোচনা করে থাকেন।

Previous Post Next Post