বিষয়ঃ আয়িশা (রা) নয় বছরেও বয়ঃসন্ধিতে পৌঁছান নি?
লিখেছেনঃ এমডি আলী
সূচনালাপঃ
বর্তমানে বিবর্তিত চেহারার নাস্তিকদের দেখতে পাওয়া যায়, যারা নানান কৌশলে আয়েশা (রা) এর বিয়ে নিয়ে সমালোচনা করে থাকে। প্রকৃত ব্যক্তিস্বাধীনতায় বিশ্বাসী নাস্তিকরা হয়তো এই বিষয়ে কোনো কথাই বলবেন না কিন্তু ক্লাস ওয়ানে তিনবার ফেল মারা কোনো লোক যদি অভিযোগ করার চাকরি পায় তাহলে তাকে যতোই আদর করে, মাথায় হাত বুলিয়ে ছোট শিশুদের মতো সঠিকটা বুঝানোর চেষ্টা করা হোক না কেন সেটা গাধাকে মানব সভ্যতা বুঝানোর মতোই একটি ব্যাপার। গাধাকে যেমন মানবসভ্যতা বুঝালেও সুস্থচিন্তা করানো যাবে না তেমনি চতুষ্পদ প্রাণী থেকে বিবর্তিত কিছু নাস্তিকদেরকেও যতোই সত্য বুঝানোর চেষ্টা করা হোক না কেন এরা সত্যকে বুঝার মতো ক্ষমতাই রাখে না কারণ এদের মস্তিস্ক এখনো জন্তুদের প্রজাতিতেই আটকিয়ে আছে।
আম্মাজান আয়েশা (রা)কে নিয়ে যতো প্রকারের মিথ্যে অভিযোগ করা হয় সমস্ত মিথ্যাচারের দলিল ভিত্তিক জবাব দিয়েছি আমার আজকের লেখাটিতে। নৈতিকতা নিয়ে নাস্তিকরা যা বিশ্বাস করে সেই বিশ্বাসের সুত্রে কি আসলেই আয়েশা (রা)এর বিয়ের বিষয়টি আপত্তি তোলা যায়? এমন কোনো তথ্য আয়েশা (রা) থেকে বর্ণিত হয়েছে উনার স্বামী উনাকে শারীরিক নির্যাতন করতেন,জবরদস্তি করতেন? তাহলে একজন কম বয়সী নারী যদি অধিক বয়স্কা স্বামী নিয়ে সুখে থাকে তবে এরকম সংসারের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়া কিভাবে যৌক্তিক? খেয়াল করলে দেখবেন নাস্তিকরা কখনো নিজেদের নাস্তিক্যধর্ম নিয়ে কথা বলতে চায় না কারণ তারা খুব ভালো করেই জানে নাস্তিক্যধর্ম নিয়ে কথা বলতে গেলে নাস্তিকতা যে মিথ্যার উপর প্রতিষ্ঠিত সেটা সহজেই ধরে ফেলা যাবে। তাই তারা নিজেদের সম্প্রদায়কে ইসলামের মিথ্যা সমালোচনায় ডুবিয়ে রাখাকেই বেশি ভালোবাসে। এতে করে যেমন নিজের গোষ্ঠীর কাছে নায়ক সাজা যায় তেমনি বিভ্রমে আসক্ত করা যায়।
পুরো লেখাটি মন দিয়ে পড়তে থাকতে হবে। বুঝার চেষ্টা করতে হবে যা বুঝানো হয়েছে। সত্য নিজের বিরুদ্ধে গেলেও মেনে নিবো এমন মন প্রস্তুত করে নিতে হবে। তাই সময় নিয়ে হলেও পুরো লেখাটি অবশ্যই পড়তে হবে আপনাকে।
শিশুদের প্রতি মুক্তচিন্তকদের যৌনকামনার নমুনাঃ
প্রতিটি নাস্তিক পিতামাতা নিজের শিশু-সন্তান নিয়ে মুক্তচিন্তা করার স্বাধীনতা রাখে। তাই কোনো নাস্তিক চাইলে নিজের শিশুর সাথে সেক্স করতে পারবে আবার কেউ চাইলে নাও করতে পারে কিন্তু কেউ করতে চাইলে বাধা দেয়া যাবে না। তবে শর্ত হচ্ছে শিশুটির ক্ষতি করা যাবে না। কোনো নাস্তিক বাবা যদি তার ছোট্ট বাচ্চা ছেলের সাথে সমকামীতা চর্চা করতে চায় সেটাও পারবে আবার কোনো মা যদি তার ছোট্ট মেয়ের সাথে লেসবিয়ান সম্পর্ক রাখতে চায় এটাও পারবে। অনেক নাস্তিক প্রশ্ন করতে পারে শিশুর সম্মতি কিভাবে নিবে? সহজ উত্তর হচ্ছে,যেহেতু শিশুটি সম্মতি দিতে পারবে না তাই শিশুটির পিতামাতার সম্মতিটিই শিশুর সম্মতি হিসেবে ধর্তব্য হতে পারে কিন্তু শিশুর সম্মতি নিতে শিশুর নাস্তিক পিতামাতা বাধ্য না কারণ তারাই শিশুকে জন্ম দিয়েছে। শিশুর সম্মতি নিতে হবে নাকি হবে না এটা নাস্তিক পরিবার ঠিক করার স্বাধীনতা রাখে। নাস্তিক্যধর্মের দৃষ্টিতে শিশুর ঈশ্বর হচ্ছে পিতামাতা। শিশুর অস্তিত্বে আসতে কি পিতামাতার ভূমিকা নেই?
ধরুন,জার্মানিতে বসবাসকারী আসিফ মহিউদ্দিন নামের একজন মুক্তমনা নাস্তিক লোক রয়েছে।তার একটি ছোট্ট ছেলে সন্তান আছে। ধরা যাক সন্তানটির নাম সিদ্ধার্থ। একদিন এই নাস্তিক লোকটি তার ছোট্ট ছেলেকে বললো তুমি যদি আমার শিশ্ন চুষে দেও তাহলে আমি তোমাকে অনেক চকলেট উপহার দিব। ধরা যাক উক্ত ছেলেটি তার বাবার শিশ্ন চুষে দিয়েছে। ধরা যাক শিশু সন্তানটির মায়ের নাম লোপানিজ। সেই নাস্তিক মা এরকম কর্ম দেখে আনন্দের সাথে বলছে তোমরা বাপ-ছেলে মিলে মজা নিবে আমাকে দেবে না? নাস্তিক লোকটি নিজের ছেলেকে বললো তুমি যদি তোমার মাকে আমার মতো আনন্দ দিতে পারো চুইংগামের মতো চুষে তাহলে তোমাকে আরও বেশি করে চকলেট দিবো। ছেলেটি চকলেটের লোভে একই বিছানাতে নিজের নাস্তিক পিতা-মাতাকে অনেক আনন্দ দেয়। অনেক মজা প্রদান করে। মুক্তবুদ্ধিতে বিশ্বাসী পিতামাতাও খুব খুশি হয়ে নিজের সন্তানের প্রতি প্রাউড হয় এবং কথা অনুযায়ী অনেক চকলেট উপহার দেয়।
উপরের উদাহরণটি নাস্তিক্যধর্ম অনুপাতে অমানবিক বলে গণ্য করার কোনো উপায় নেই নাস্তিকদের কাছে। কারণ সেখানে কারও ক্ষতি তো হয়ই নি উল্টো সকলেই আনন্দ পেয়েছে, মজা পেয়েছে। কেউ শিশ্নের মজা, কেউ ভেজাইনার মজা আবার কেউ চকলেটের মজা। সুতরাং নাস্তিকগোষ্ঠীর পক্ষে এমন কর্মকে অনৈতিক বলার ভিত্তি নেই। আরেকটি উদাহরণ দিলে সহজেই বুঝতে পারবেন। ধরুন হুমায়ুন আজাদ নামের কোনো শিশুকামি নাস্তিক যে কিনা উলঙ্গ শিশুদের দেখে সুখ পেয়েছিল। সংশয় হচ্ছে নাস্তিক্যধর্ম কি হুমায়ুন আজাদের লেংটা শিশুদের দেখে যে মজা নিয়েছিল এটাকে খারাপ বলে গণ্য করার নৈতিকতা দিবে? নাকি এটা হুমায়ুন আজাদের একান্ত ব্যক্তিগত নৈতিকতা হিসেবেই ধরা হবে? হুমায়ুন আজাদের লিখিত "আমার অবিশ্বাস" বইয়ের ১৪ পৃষ্ঠায় বর্ণিত হয়েছেঃ
উলঙ্গ শিশুরা, তাদের পরার কিছুই নেই, মাঘের শীতে পাতার আগুনে উম নিচ্ছে দেখে সুখ পাই। সুখ পেয়ে নিজেকে অপরাধী বোধ করি। আমার ইন্দ্রিয়গুলোর মধ্যে চোখ দুটিই শ্রেষ্ঠ: এ দুটি দিয়ে আমি দূর থেকে ভেতরে টেনে আনি দৃশ্যের পর দৃশ্য, সৌন্দর্যের পর সৌন্দর্য।
আমি হলে সেই শিশুদের জামা-কাপড়ের ব্যবস্থা করতাম ওদের কষ্ট দেখে আমি হুমায়ুন আজাদের মতো সুখ নেবার কথা চিন্তাও করতাম না। নিজেকে অপরাধী নয় বরং সেই শিশুদেরকে সাহায্য করে আমি প্রশান্তি অনুভব করতাম। নাস্তিকদের উচিত ভালো করে এই কথা গুলো মাথায় ঢুকিয়ে নেয়া। নাস্তিকদের নির্দিষ্ট কোনো নৈতিকতা নেই। তাই দুনিয়ার সমস্ত মানুষ যেইভাবে মন-চায় সেভাবে চললেও নাস্তিক্যদৃষ্টিতে খারাপ প্রমাণ করার কোনো যুক্তি নেই। যে যার মতো জীবন-পরিচালনা করতে পারবে। আপনার কাছে খারাপ মনে হলেও সেটা অন্যদের কাছে খারাপ হতে বাধ্য নয় আবার আপনার কাছে ভালো মনে হলেও সেটাও অন্যদের কাছে ভালো হতে বাধ্য নয়। নাস্তিকরা কি এই কথা গুলো বোঝে না?
নাস্তিক্যবিশ্বাস অনুযায়ী যেহেতু তারা চতুষ্পদ জানোয়ার থেকেই এসেছে তাই এদের থেকেও নৈতিকতা নেয়া যাবে,যদি কেউ ইচ্ছা করে। ধরুন ইসলামের কিছু সস্তা সমালোচক "আমাদের নীতি-নৈতিকতা তথা morality-র উৎস ধর্ম নয়" এই শিরোনামে মানুষের নৈতিকতার সাথে শিপ্পাঞ্জির নৈতিকতার সাদৃশ্য দেখিয়ে নিজেরা যে শিপ্পাঞ্জীর বংশধর সেটা প্রমাণ করার চেষ্টা করেছে। সংশয় হলো যদি নাস্তিকরা প্রাণীজগত থেকে নৈতিকতা নিতেই চায় তাহলে সব নৈতিকতা কেন নেয় না? ডারউইনবাদ অন্যায়ভাবে মানুষ-গণহত্যার,নারী-ধর্ষণের, চুরি-ডাকাতির বৈধতা দেয় এই কারণে? যেহেতু নাস্তিক্যবিশ্বাস অনুযায়ী বিবর্তনের মাধ্যমে তারা এসেছে জন্তু-জানোয়ার থেকে আর শিপ্পাঞ্জীর মধ্যে শিশুকামিতা আছে তাই এই হিসেবে যদি কোনো নাস্তিক তার পূর্বপুরুষের এই নৈতিকতাকে নিজের জীবনের আদর্শ হিসেবে বাস্তবায়ন করতে চায় তাহলে অবশ্যই এই স্বাধীনতা তার রয়েছে এবং অন্য মুক্তমনারাও উক্ত নাস্তিকের এই মুক্তচিন্তাকে সাধুবাদ জানাতেই পারে। শিপ্পাঞ্জীর মধ্যে শিশুকামিতা রয়েছে তার প্রমাণ দিচ্ছি। পড়ে দেখে নিন। মন দিয়ে পড়ুন। দরকার হলে সরাসরি বই খুলে দেখে নিন।
মুক্তমনা অভিজিৎ রায়ের "সমকামিতা" বইয়ের ৬৯ পৃষ্ঠায় (বনোবো শিপ্পাঞ্জীর ছবির পাশে) বর্ণিত আছেঃ
বনোবো শিপ্পাঞ্জীদের মধ্যে সমকামী প্রবণতা খুবই বেশি।বিজ্ঞানীরা এরকম ৪৫০ টিরও বেশি প্রজাতিতে সমকামিতার উপস্থিতি লক্ষ করেছেন। (উপরে লেখা আছে),এদের মধ্যে প্রবলভাবে আছে নারী সমকামিতাও। এমনকি শিশুদেরকেও তারা রেহাই দেয় না।কেউ যদি এ ধরনের সমকামে অনীহা প্রকাশ করে তবে,তাহলে বনোবো সমাজে সে "অচ্ছুৎ" বলে পরিগণিত হয়।অন্যান্য সদস্যরা তাকে এড়িয়ে চলে।
এটা পরিস্কার যে শিপ্পাঞ্জীদের মধ্যে শিশুকামিতা শ্রেষ্ঠ এক নৈতিকতা তাই তাদের মধ্যে যারা এই নৈতিকতাকে গ্রহণ করে না তাদেরকে এই মুক্তমনা প্রাণীরা "অচ্ছুৎ" বলে পরিগণিত করে এবং অন্যান্য সদস্যরাও তাকে এড়িয়ে চলে। শিশুকামে,সমকামে অনীহা করা হলে বনোবো শিপ্পাঞ্জীরা বয়কট করে, এইই যাদের পূর্বপুরুষদের নৈতিকতার চেহারা তারা যদি অন্য মানুষকে খারাপ প্রমাণ করার বিন্দুমাত্র চেষ্টাও করে তাহলে সংশয় জেগে উঠে এহেন কাজ নাস্তিক্যবিরোধী-মুক্তচিন্তার বিরোধী কাজ না তো কি? এমন নির্লজ্জ বর্বর নৈতিকতা নিয়ে নাস্তিকরা যখন অন্য কারো সমালোচনা করে তখন হাসতে হাসতে আমার পেট খিল ধরে যায়।
পশ্চিমা যৌন বিজ্ঞানের পুরোধা John Money,PHD.ডাচ শিশুকাম জার্নাল PAIDIKA-তে সাক্ষাৎকার দেন। বর্ণনা করেন (A),
বয়স্ক পুরুষ আর ছোট বালকের যৌন সহবাস গঠনমূলক হতে পারে, যদি উভয়ের সম্মতি থাকে।
তিনি আরও বর্ণনা দেন যে (B),
আমাকে যদি এমন ঘটনা দেখানো হয়, যেখানে ১০/১১ বছরের বালক ২০/৩০ বছরের পুরুষের প্রতি যৌন আকর্ষণ বোধ করছে আর পারস্পারিক সম্মতিক্রমে, সম্পূর্ণ মিউচুয়ালি; তাহলে আমি একে কোনোভাবেই অস্বাভাবিক বলবো না।
যারা নিজেদেরকে মুক্ত যৌনসম্পর্কে বিশ্বাসী বলে দাবি করে তারা কখনো অন্যের যৌন সম্পর্ক নিয়ে আপত্তি তোলার ভিত্তি রাখে না। ধরুন কোথাও দাসী কেনা-বেচা হয়। সেখান থেকে কোনো এক নাস্তিক দাসী কিনে তার সাথে যদি জীবন যাপন করে। এমনকি সেই দাসীর সাথে যদি খারাপ ব্যাবহার না করে অর্থাৎ দাসীর সকল প্রয়োজন সে নাস্তিক মুনিব পূরণ করে একইসাথে সম্মতিতে সেই দাসীর সাথে সঙ্গম করে তাহলে এমন সম্পর্ককেও মুক্তচিন্তার অথবা মুক্ত যৌনসম্পর্কের দৃষ্টিতে অমানবিক বলার ভিত্তি নেই ইসলামবিদ্বেষী সম্প্রদায়ের কাছে। এই পয়েন্টটি ভালো করে মাথায় ঢুকিয়ে নিন আপনি।
Princeton University-র Professor of Bioethics অস্ট্রেলীয় দার্শনিক Peter Singer তার Heavy Petting আর্টিকেলে বলেন (C),
প্রাণীকে আঘাত না করলে বা ক্ষতি না করলে প্রাণীর সাথে যৌনতা খারাপ কিছু না, যদি উভয়েই ব্যাপারটা এনজয় করে।
পশুকামীদের সংগঠন ZETA-র চেয়ারম্যান Michael Kiok জানিয়েছেন (D),
স্রেফ একটা নীতি-মূল্যবোধ কখনো আইন হতে পারে না। পশুকামের বিরুদ্ধে আইন করার চেষ্টা করলে আমরাও আইনী লড়াই চালাবো। খবর Daily Mail এর।
ধরুন মাতাব্বর আজাদ অভিজিৎ নামে এক নাস্তিক যিনি বাসায় কুকুর লালন পালন করে থাকেন। একদিন এই মুক্তমনা চিন্তা করলো উনি নিজের কাম চাহিদা পূরণ করবেন। কিন্তু সম্মতি নেবার জন্য ছিল না নিজের সমকামী বন্ধু ফারাজ অর্ণব এমনকি ছিল না নারীবাদী নারীরা। বাসায় একা থাকতে থাকতে হতাশ হয়ে নিজের কুকুরের সামনে সুস্বাদু খাবার রাখলে কুকুরটি সেটা খেয়ে লেজ নাড়িয়ে সম্মতি দেয়। কুকুরের লেজ নাড়ানোকে সম্মতি ধরে উক্ত মুক্তবুদ্ধি চর্চাকারী নাস্তিক লোকটি নিজের কুকুরের সাথে সঙ্গম করে নিজের যৌন চাহিদা পূরণ করে। এখানে বড় প্রশ্ন হচ্ছে মাতাব্বর আজাদ অভিজিৎ নামের নাস্তিক লোকটি যে নিজের কুকুরের সাথে যৌন সম্পর্ক করলো এখানে কারও ক্ষতি হয়নি। তাই এমন মুক্ত যৌন সম্পর্ককে কি অমানবিক বলার যুক্তি আছে নাস্তিকগোষ্ঠীর কাছে? কি মনে হয়?
পাঠক সামনে আরও অজানা অধ্যায় আপনাকে জানিয়ে দেয়া হবে এটা কেবল শুরু মাত্র। তাই পড়তে থাকতে হবে। থামা যাবে না। ক্লান্ত হওয়া যাবে না। সত্য আপনাকে জানতেই হবে। যারা আপনাকে সত্যের কথা জানতে দেয় নি তাদের বিরুদ্ধে যৌক্তিক আওয়াজ তুলতে হবে আপনাকেই।
তসলিমার মুক্তচিন্তায় প্রকাশ্যে সেক্স করার বিধানঃ
কোনো সভ্য মানুষকি রাস্তায় কুকুরের মতো সেক্স করতে পারে? কি মনে হয় আপনার? কিন্তু নারীবাদীদের অবতার তসলিমা নাসরিন সেটাই চাচ্ছে। কি বিশ্বাস হচ্ছে না? প্রমাণ দিচ্ছি দেখে নিন। Jagonews24.com এ ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ তারিখে (১) একটি সংবাদ প্রকাশ করা হয় এই শিরোনামে “সময় এখন প্রকাশ্যে সেক্স করার:তসলিমা নাসরিন” সেই সংবাদে বর্ণিত হয়েছে,
জার্মানিতে নির্বাসিত দুই বাংলাদেশি অ্যাক্টিভিস্ট শাম্মী হক ও অনন্য আজাদের ভালোবাসা দিবসের চুমুর ইভেন্টে সমর্থন জানিয়েছেন আরেক নির্বাসিত লেখিকা তসলিমা নাসরিন। বুধবার নিজের ফেসবুকের ভেরিফাইড পেজে দেয়া এক স্ট্যাটাসে সমর্থনের কথা জানিয়েছেন তিনি। স্ট্যাটাসে তিনি লেখেন, ‘কত প্রিমিটিভ সমাজ হলে ছেলে মেয়েকে প্রকাশ্যে চুমু খাওয়ার জন্য সংগ্রাম করতে হয়। সময় ত প্রকাশ্যে সেক্স করার।
উল্লেখ্য, কিছুদিন আগে একটি ফেসবুক ইভেন্টে ভালোবাসা দিবসে ঢাকায় প্রকাশ্যে চুমু খাওয়ার জন্য প্রেমিক যুগলদের প্রতি আহ্বান জানান শাম্মী হক ও অনন্য আজাদ। এ ইভেন্টের নাম তারা দিয়েছেন ভালোবাসা দিবসে পুলিশি পাহারায় প্রকাশ্যে চুমু খাব। এই আহ্বানের পর থেকেই স্যোশাল মিডিয়ায় বিতর্কের ঝড় ওঠে।এসএইচএস/আরআইপি।
তসলিমা নাসরিনরা চায় মানুষ কুকুরের মতো রাস্তায় লাগালাগি করতে থাকুক। মুক্তমনারা রাস্তায় সেক্স করার মুক্তচিন্তা করে আবার কুকুরও রাস্তায় যৌনসঙ্গম করে। কি বিশ্রীমনা এই মুক্তমনাগোষ্ঠীরা। অথচ এই তসলিমাকেই তার মামা চাচারা মুক্তমনে বলৎকার করেছিল। আমি প্রমাণ সহ দেখিয়ে দিচ্ছি আপনারা দায়িত্ব নিয়ে পড়ে দেখুন। পড়তে থাকুন।
তসলিমা নাসরিন মুক্তমনাদের দ্বারা যেভাবে বলৎকারের শিকার হয়েছে তার ইতিহাসঃ
শিয়ালের লেজ কাটা গল্প পড়েছেন কখনো? একটি শেয়ালের লেজ কেটে গেলে সে যেমন চায় সবাইর যেন লেজ না থাকে একইভাবে নাস্তিকদের চরিত্র এতোই নোংরা যে এরা যায় এদের নোংরা চেহারা গুলো যেভাবেই হোক ইসলামের দিকে চাপিয়ে দিতে যাতে মুসলিমদের সাথে প্রতারণা করে তাদেরকে ইসলাম থেকে বের করে নাস্তিকদের নৈতিকতার শেকলে বন্দী করে ফেলা যায়। তসলিনা নাসরিন শিশুকালে মুক্তমনাদের দ্বারা যৌনকর্মের শিকার হয়েছিলেন। এসব মুক্তবুদ্ধির ইতিহাস নাস্তিকরা বলতে লজ্জা পায়। তসলিমার বই থেকেই আমি তুলে ধরছি পড়তে থাকুন। তসলিমা নাসরিনের অন্যতম বিখ্যাত একটি বইয়ের নাম “আমার মেয়ে বেলা”। এই বইয়ের ৬৩ নং পৃষ্ঠায় বর্ণিত হয়েছেঃ
চোখের বাদামি তারা নাচছে শরাফ মামার আর ঠোঁটের কিনারে একরকম হাসি, যার ঠিক অনুবাদ আমি জানি না। মজার জিনিসটা এই বার তরে দেখাই বলে একটানে আমাকে চৌকির ওপর শুইয়ে দেন মামা। আমার পরনে একটি কুঁচিঅলা রঙিন হাফপ্যান্ট শুধু। শরাফ মামা সেটিকে টেনে নিচে নামিয়ে দেন। আমি তাজ্জব। হাফপ্যান্ট দুহাতে টেনে বলি- কি মজার জিনিস দেখাইবা দেখাও। আমারে ন্যাংটা কর ক্যা? শরাফ মামা তাঁর শরীরকে হাসতে হাসতে আমার ওপরে ধপাশ করে ফেলে আবার টেনে নামান আমার হাফপ্যান্ট আর নিজের হাফপ্যান্ট খুলে তাঁর নুনু ঠেসে ধরেন আমার গায়ে। বুকে চাপ লেগে আমার শ্বাস আটকে থাকে। ঠেলে তাঁকে সরাতে চেষ্টা করি আর চেঁচিয়ে বলি- এইটা কি কর, সর শরাফ মামা, সর। গায়ের সব শক্তি দিয়ে ঠেলে তাঁকে একচুল সরাতে পারি না। মজার জিনিস দেহাইতে চাইছিলাম, এইডাই মজার জিনিস। শরাফ মামা হাসেন আর সামনের পাটির দাঁতে কামড়ে রাখেন তাঁর নিচের ঠোঁট। এইটারে কি কয় জানস,চোদাচুদি। দুনিয়ার সবাই চোদাচুদি করে। তর মা বাপ করে, আমার মা বাপ করে। শরাফ মামার তাঁর নুনু ঠেলতে থাকেন বিষম জোরে। আমার বিচ্ছিরি লাগে। শরমে চোখ ঢেকে রাখি দু’হাতে। হঠাৎ ইঁদুর দৌড়ায় ঘরে। শব্দে শরাফ মামা লাফিয়ে নামেন। আমি এক দৌড়ে হাফপ্যান্ট ওপরে টেনে দৌড়ে বের হয়ে যাই ঘর থেকে। ঝোপ পার হতে আমি আর সাপের ভয় ইতস্তত করি না। আমার বুকের মধ্যে সড়াত সড়াত শব্দ হয়, যেন একশ ইঁদুর দৌড়াচ্ছে। শরাফ মামা পেছন থেকে অদ্ভুদ গলায় বলেন - কাউকে কইবি না। কইলে কিন্তু সর্বনাশ।
তসলিমা নাসরিনের “আমার মেয়ে বেলা” এই বইয়ের ৮০ নং পৃষ্ঠায় বর্ণিত হয়েছেঃ
কাকা টেনে আমাকে ঢোকান ভেতরে। দাত মেলে হাসতে হাসতে বলেন, আরে খাড়ও, খাড়ও, ম্যাচ লইয়া যাও। ম্যাচ আছে। যাদু দেখানোর মত হঠাৎ একটি দেশলাইএর বাক্স চোখের সামনে ধরেন আমার।হাত বাড়াতে গেলে তিনি সরিয়ে নেন হাত। আবার ধরতে যাই, আবার সরিয়ে নেন। এই ভেসে ওঠে চোখের সামনে দেশলাই, এই নেই। জোনাক পোকার মত, এই আলো, এই আঁধার। দেশলাই ধরতে কাছে চাই কাকার, কাকা টেনে আমাকে আরও কাছে নেন। আরও কাছে গেলে কাকা দেশলাই না দিয়ে পেটে বগলে কাতুকুতু দিতে দিতে আমাকে বিছানায় ফেললেন চিৎ করে। আমি কুঁকড়ে থাকি শামুকের মত। আমার শামুক শরীরটি কাকা শুন্যে তুলে ছুড়ে দেন, কাকা ডাং, আর আমি যেন তাঁর ডাংএর গুটি। আমার শরীর বেয়ে কাকার হাত নেমে আসে আমার হাফপ্যান্টে, হাতটি নামাতে থাকে হাফপ্যান্ট নিচের দিকে। গড়াতে গড়াতে আমি বিছানা থেকে নেমে যেতে থাকি। আমার পা মেঝেয়, পিঠ বিছানায়, হাফপ্যান্ট হাঁটুর কাছে, হাঁটু বিছানাতেও নয়, মেঝেতেও নয়। গলায় আমার নাল শরীফের তাবিজ। কাকা তাঁর লুঙ্গি ওপরে তোলেন, দেখি কাকার তলপেটের তল থেকে মস্ত বড় এক সাপ ফণা তুলে আছে আমার দিকে যেন এক্ষুণি ছোবল দেবে। ভয়ে আমি সিটিয়ে থাকি। আমাকে আরও ভয় পাইয়ে দিয়ে আমার দু’উরুর মাঝখানে ছোবল দিতে থাকে সেই সাপ। এক ছোবল দুই ছোবল তিন ছোবল। ভয়ে আমার গা হাত পা কাঠ হয়ে থাকে। আমার বিস্ফোরিত চোখের দিকে তাকিয়ে কাকা বলেন- লজেন্স খাইবা ? তুমারে কালকা লজেন্স কিইনা দিমু। এই নেও ম্যাচ। আর শুন মামনি, কাউরে কইও না তুমি যে আমার নুনু দেখছ আর আমি যে তুমার সুনা দেখছি। এই সব খারাপ জিনিস, কাউরে কইতে হয় না। আমি দেশলাই হাতে ঘর থেকে বেরিয়ে আসি। দুউরুর মাঝখানে ব্যথা হয়, পেচ্ছাব পায়, আবার দেখি পেচ্ছাব ভরে গেছে আমার হাফপ্যান্ট। জানি না কি নাম এই ন্যাংটো-খেলার।আমি বুঝে পাই না কি কারণে শরাফ মামা বা আমান কাকা আমার ওপরে চড়ে বসেন। কাকা বলেছেন এসব কাউকে বলতে হয় না। আমারও তাই মনে হয়, এসব কাউকে বলতে নেই। সাত বছর বয়সে হঠাৎ এক বোধ জন্ম নেয় আমার ভেতর, যে এসব বড় শরমের কাজ, এসব কথা কখনও কাউকে বলা ঠিক নয়, বড় গোপন ব্যাপার এসব।
ঘটনাটি বিস্তারিত আপনারা সরাসরি বই থেকেও পড়ে নিতে পারেন। কিন্তু এখানে যেটা বুঝার বিষয় শরাফ মামা আর আমান কাকা উনারা একান্ত ব্যক্তিগত ইচ্ছায় যে কাজটি করেছেন সেটা উনাদের কাছে নৈতিক ছিল কারণ তারা যদি এটা অনৈতিক মনে করতো তবে তো আর এসব কাজ করতেন না। উনারা যে তসলিমা নাসরিনের সাথে যৌনকর্ম করেছে সেটা ব্যক্তিস্বাধীনতার অধিকারেই করেছে এবং এই নৈতিকতা নাস্তিক্যধর্ম সম্পূর্ণ সমর্থন করে এবং করবেও। শরাফ মামা ও আমান কাকারা নিজেদের মুক্তবুদ্ধি চর্চা করেই কর্মটি করতে পেরেছে। নাস্তিকরা এখানে বলতে পারে তসলিমা নাসরিনের ফিজিক্যাল ক্ষতি হয়েছে তাই এটা খারাপ। কিন্তু তসলিমার স্বীকারোক্তি থেকেই স্পষ্ট যে সামান্য দুউরুর মাঝখানে ব্যথা হয়, পেচ্ছাব করা আর সামান্য কষ্ট ছাড়া তেমন কোনো ভয়াবহ-মারাত্মক ফিজিক্যাল ক্ষতি হয়নি ভয়ংকর ক্ষতি হয়নি দেখেই তো তসলিমা নাসরিনের শরাফ মামা আর আমান কাকা ব্যক্তিগত ভাবে মজা নিয়েছেন এবং উনারা উভয়ই একজন সরাসরি মজার জিনিস দেখিয়ে ফেলেছেন আরেকজন চকলেটের প্রলোভন দেখিয়েছেন কিন্তু চকলেট দিয়েছিলেন নাকি সেটা নিয়ে সংশয় রয়ে গেছে।
আমি মুসলিম হিসেবে এরকম মুক্তমনা ঘটনাকে তীব্রনিন্দা জানাই কারণ নাস্তিক্যধর্মের দৃষ্টিতে এই ধরণের কাজ সমর্থন করলেও ইসলামে এই ধরণের অজাচারকে সমর্থন করতে বাধ্য না। আপনি যদি নাস্তিক হয়ে থাকেন হয়তো এই মুহূর্তে ভাবতে পারেন যে নবীজি (সা) তো আয়েশা (রা)কে ছয় বছর বয়সে বিয়ে করেছিল একই তো ঘটনা হলো - এই তো ইসলাম নিয়ে একটা মিথ্যাকথা বলে দিলেন।
মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল গালিব (হাঃফি) লিখিত “সীরাতুর রাসুল (সা)” ১৯৯ পৃষ্ঠায় বর্ণিত হয়েছেঃ
একাদশ নববী বর্ষের শাওয়াল মাসে অর্থাৎ হযরত সওদা বিন্তে যাম’আর সাথে বিয়ের ঠিক এক বছরের মাথায় ওছমান বিন মাযউন (রা) এর স্ত্রী খাওলা বিনতে হাকীম (রা) এর প্রস্তাবক্রমে হযরত আবু বকরের নাবালিকা কন্যা আয়েশা রাসুলুল্লাহ (সা) বিবাহ করেন। বিয়ের তিন বছর পরে সাবালিকা হলে নয় বছর বয়সে মদীনায় ১ম হিজরী সনের শাওয়াল মাসে তিনি নবীগ্রহে গমন করেন।
সুনানে ইবনে মাজাহ,হাদিসঃ৩৩২৪,সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিতঃ
আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃআমার মা আমাকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সংসারে পাঠাতে চাচ্ছিলেন বিধায় আমার দৈহিক পরিপুষ্টির জন্য চিকিৎসা করাতেন। কিন্তু তা কোন উপকারে আসলো না। অবশেষে আমি তাজা খেজুরের সাথে শসা মিশিয়ে খেলাম এবং উত্তমরুপে দৈহিক পরিপুস্টি লাভ করলাম।-ihadis.com
সিরিয়াসলি বলছি ইসলাম নিয়ে সঠিকভাবে পড়াশোনা করুন। ইসলামবিদ্বেষী সাইট থেকে ইসলাম দেখলে জীবনেও সঠিক তথ্য জানার সৌভাগ্য হবে না আপনার, বরং ভুল ব্যাখ্যা পড়লে ইসলাম নিয়ে মনে ঘৃণাই জন্মাবে। ইসলাম নিয়ে সঠিক তথ্য জানতে আপনি আগ্রহী না? নবীজি (সা) আম্মাজান আয়েশা (রা)কে অল্প বয়সে বিয়ে করলেও সম্পূর্ণ দাম্পত্য জীবন শুরু করেন বিয়ে করার তিন বছর পরে অর্থাৎ আম্মাজান আয়েশা (রা) প্রাপ্তবয়স্কা হয়ে যাওয়ার পরে। আম্মাজান আয়েশা (রা) উনার বয়স্ক স্বামীকে নিয়ে সুখেই ছিলেন।
মুক্তমনা শরাফ মামা, আমান কাকারা যাইই হোক না কেন-তারা যা করেছে সেটা নাস্তিক্যধর্ম সম্পূর্ণ সমর্থন করে। নাস্তিকতায় নৈতিক বাধ্যবাধকতা নাই এই কারণে যার যেমন ইচ্ছা সে তেমন নৈতিকতা মুক্তচিন্তায় ধারণ করে নিতে পারে। যেমন শরাফ মামা, আমান কাকারা লজেন্স বা মজার জিনিসের প্রলোভন দেখিয়ে নিজের ব্যক্তিগত ইচ্ছায় নিজের কামনা পূরণ করেছেন। উনারা যেই কেউই হউক না কেন নাস্তিক্যধর্ম তা সম্পূর্ণ সমর্থন করে নিবে। নাস্তিক তসলিমা তার সাথে ঘটে যাওয়ার এমন ঘটনা নিয়ে আফসস করেছিলেন কিন্তু আমার সংশয় হচ্ছে উনি তাহলে কেন “পারো তো ধর্ষণ করো“ এমন কবিতা লিখতে গেলেন? এরমানে উনি তখন যদি বড় থাকতেন তাহলে নিজের মুক্তমনা মামা-কাকদেরকেও পাল্টা ধর্ষণ করে দিতেন? ফলাফল কি হতো তখন তাহলে?
পাঠক তারা কখনো নিজেদের আদর্শ আপনাদের সামনে নিয়ে আসবে না। তারা নিজেদের এবং মানুষকে ইসলামের মিথ্যা সমালোচনায় ডুবিয়ে রাখতে চায় যাতে নিজেদের আদর্শের নোংরামি ও বর্বরতা চিন্তাশীল মানুষ টের না পায়। নিজেদের ভক্তদেরকেও এরা চিন্তা করতে দিতে চায় না। কারণ মুক্তমনাদের বর্বরতা জেনে গেলে নিজেদের ধান্দায় উন্নতি আসবে না। এমনকি চিন্তাশীল মগজধারী সভ্য মানুষরা নাস্তিকদের মুক্তচিন্তাকে থুথু দেবে। চিন্তার মুক্তির নামে যে বর্বর আন্দোলন নাস্তিকরা চালাতে চায় তা সভ্য মানুষরা কখনোই মেনে নিতে পারে না। আর পারবেও না।
নাস্তিক্যধর্মে শিশু বিয়ে করা হারাম?
নাস্তিকদের এমন কোনো নির্দিষ্ট “নাস্তিক্যবিধিগ্রন্থ” নেই যেখানে এই বিধান লেখা আছে যে শিশু মেয়েকে বিয়ে করার মুক্তচিন্তা করা যাবে না। নাস্তিক্যদৃষ্টিতে নৈতিকতা যার-যার ব্যক্তিগত ব্যাপার তাই অন্যের ক্ষতি না করে যা ইচ্ছা তাই করা কর্ম গুলো অমানবিক নয় নাস্তিক্যধর্মে। এই কথার সাথে কোনো নাস্তিকই দ্বিমত পোষণ করতে পারবে না। কোনো নাস্তিক যদি অন্য নাস্তিকের মেয়েকে শিশু বয়সে বিয়ে করে যদিও বিয়ে করা নাস্তিকতায় তেমন গুরুত্বপূর্ণ কিছু না এবং এতে যদি উভয় পক্ষের কারো ক্ষতি না হয় তাহলে নাস্তিক্যধর্মে এটি সম্পূর্ণ বৈধ একটি কর্ম। তাই নাস্তিকদের দাবি করা গোল্ডেন রুলের দৃষ্টিতেই কম বয়সী কাউকে বিয়ে করা মোটেও অন্যায় কাজ নয়। ছয় বছর বয়সী কাউকে বিয়ে করা নিষেধ-এমন নৈতিকতা নাস্তিকরা কি দিয়ে নির্ধারণ করেছে? যদি বলে বিবেক দিয়ে তাহলে যে প্রশ্নটির জবাব এখানে জানা আবশ্যক সেটা হচ্ছে অন্য কোনো নাস্তিকরা যদি নিজের বিবেক থেকেই কম বয়সী শিশুকে বিয়ে করাকে নৈতিক মনে করে তাহলে সেটা কেন খারাপ হবে? কোনো নাস্তিক নিজের জন্য কোন বয়সে যৌন সম্পর্ক করাকে নৈতিক মনে করবে সেটা তো সেই নাস্তিকই সিদ্ধান্ত নিবে। তাই না? সকল নাস্তিক কি নৈতিকতার শেকলে বন্দী থাকতে বাধ্য? নৈতিকতার বিরুদ্ধে গিয়ে মুক্তচিন্তা করবার স্বাধীনতা নাস্তিকরা কেন ভোগ করবে না?
ধরুন দুটো পরিবার যাদের সকলেই নাস্তিক। উভয় পরিবারের সম্মতিতে সাত বছরের একটি নাস্তিক মেয়ের সাথে আশি বছর বয়স্কা একজন পুরুষের বিয়ে দেয়া হলো।সেই অল্প বয়স্কা মেয়েটিকে তার নাস্তিক পিতামাতা বুঝালো যে নাস্তিক পুরুষটি খুবই বিজ্ঞানমনস্ক তোকে সে সহজেই বিজ্ঞান বুঝাতে পারবে,নারীবাদ শিখাতে পারবে,মুক্তচিন্তা শিখাতে পারবে ইত্যাদি।সেই ছোট মেয়েটিও পিতামাতার সম্মতিতে সম্মতি দিল এবং আজীবন সেই বয়স্কা পুরুষের সাথেই আনন্দে কাটিয়ে দিল। উদাহরণটি বুঝে থাকলে প্রশ্নটি লক্ষ্য করুন, নাস্তিক্যদৃষ্টিতে কেন এই বিয়েকে অনৈতিক বলা হবে? এখানে কিন্তু কারও ক্ষতি হয়নি। তাছাড়া বিখ্যাত নাস্তিক, ভাষা বিজ্ঞানী হুমায়ুন আজাদ তার “আমার অবিশ্বাস” বইয়ের ১৪৩ পৃষ্ঠায় পরিস্কার বর্ণনা করেছে,
নৈতিকতা হওয়া উচিৎ সংকীর্ণ আমার কোন কাজ যেন অন্যের ক্ষতি না করে।এতটুকুই;
তারমানে দাঁড়াচ্ছে কারও ক্ষতি না করে যা করা হবে তাই নৈতিক এবং মানবিক। সুতরাং অন্যের ক্ষতি না করে কেউ যদি অল্প বয়স্কা শিশুকেও বিয়ে করে তাহলে এটি নাস্তিক্যধর্মের দৃষ্টিতে মোটেও অমানবিক কিছু নয় বরং মানবিক।
বহুবিবাহ, শিশু বিবাহ ও স্ত্রীর প্রতি অপব্যাবহারের বিষয়ে কমিউনিস্ট পার্টির হোমরাচোমরা কর্মচারীরা রেকর্ড স্থাপন করেছিল । "Pravda Vostoka, june 1955 and march 1956" - পত্রিকায় এই কথার প্রমাণ মেলে। এই বিষয় আরও বিস্তারিত জানতে পড়ুন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক বিশিষ্ট গবেষক ও চিন্তাবিদ ডঃ হাসান জামান স্যারের লিখিত বই “কমিউনিস্ট শাসনে ইসলাম” ৫২,৫৩ পৃষ্ঠা। সেখানে বর্ণিত হয়েছেঃ
উজবেকিস্থান রেলওয়ের কর্মচারী তখতো মুরাদ ইকরামভ কমপক্ষে ৬ টি বিবাহ করেছিল ও সে তার কোন কোন স্ত্রী ও শিশুকে পথে বসিয়েছিল। কমিউনিস্ট আভেযভ ২ বছরে ৬ টি নারীকে বিবাহ করে আবার তালাকও দিয়েছিল। এবং "Turk Mens Kaya iskra, 5 january 1956" সুত্র থেকে জানা যায় তুর্কমেনিয়ার আইনাযারভেবও বহু স্ত্রী ছিল এবং "ইজভেস্তিয়া,২৫ নভেম্বর, ১৯৪৫" সূত্রে তৎকালীন স্কুলের ছোট ছোট মেয়েদেরকেও কমিউনিস্ট কর্মচারীদের সঙ্গে বিবাহ দেয়া হয়েছিল।
মুক্তমনা কমিউনিস্টদের এরকম নৈতিকতাকে খারাপ প্রমাণ করার কোনো ভিত্তি আছে কি বিবর্তনবাদী নাস্তিকদের কাছে? নাস্তিকান্ধরা হয়তো বলতে পারে তারা আগে যা করেছে খারাপ করেছে কিন্তু সংশয় হচ্ছে পূর্বে যেসব কমিউনিস্টরা স্কুলের ছোট ছোট মেয়েদেরকে বিয়ে করেছিল তারা কিন্তু অনৈতিক মনে করে বিয়ে গুলো করেনি তাহলে আপনি কিসের ভিত্তিতে তাদেরকে খারাপ বলতে চাইছেন? আপনি খারাপ হিসেবে যাই নির্ধারণ করে দিবেন সেটাই কি তারা মেনে চলবে? আপনি কেন নাস্তিক হয়ে অন্য নাস্তিকের মুক্তচিন্তায় বাধা দিবেন?
এই যুগের নাস্তিকদের কাছে কি এমন চুরান্ত নৈতিকতা এসে গেছে যে পূর্বের নাস্তিকরা সব খারাপ কাজ করে গেছে এটা প্রমাণ করে ফেলে আর বর্তমান সময়ের নাস্তিকরা সবাই একেকটা অবতার? তৎকালীন ক্ষমতাধর কমিউনিস্ট নাস্তিকরা একাধিক নারী বিয়ে করেছে এমনকি ছোট-ছোট স্কুলের শিশু মেয়েদেরকেও বিয়ে করেছিল। কিন্তু এদের নিজের স্ত্রীদেরকে পথে বসিয়েছিল যা অমানবিক তাই এই অমানবিক কাজ তাদের কাছে ভালো মনে হলেও আমি একজন মুসলিম হিসেবে নারীর প্রতি এরকম অন্যায়-আচরণ সমর্থন করতে পারি না কারণ ইসলাম আমাকে এটাই শিক্ষা দিয়েছে। স্ত্রীর প্রতি স্বামীর আচরণের ক্ষেত্রে ইসলাম যে আইন দেয় তা পড়ুন।
সুনানে ইবনে মাজাহ,হাদিসঃ ১৯৭৮,সহিহ হাদিসঃ
আব্দুল্লাহ বিন আম্র (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃতিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,তোমাদের মধ্যে উত্তম লোক তারাই,যারা তাদের স্ত্রীদের কাছে উত্তম।-ihadis.com
সুনানে আবু দাউদ,হাদিস নং ২১৪৪,সহিহ হাদিসঃ
রাসুল (সা) বলেনঃ তোমরা যা খাবে স্ত্রীদেরকেও তাই খাওয়াবে এবং তোমরা যা পরবে,তাদেরকেও তা পরিধান করাবে।তাদেরকে প্রহার করবে না এবং গালিগালাজ করবে না।-ihadis.com
কোনো নাস্তিক যদি সত্যিই ব্যাক্তিস্বাধীনতায় বিশ্বাসী হয়ে থাকে তাহলে অন্যদের স্বাধীনতাকে অবশ্যই সে সমর্থন করবে? সে বিশ্বাস করবে আমি যেমন ব্যক্তিস্বাধীনতা চাই অন্য মানুষেরও সেই অধিকার থাকা চাই? কোনো নাস্তিক কিভাবে অন্যের স্বাধীনতাকে অনৈতিক হিসেবে বিশ্বাস করতে পারে? প্রতিটি নাস্তিকের নিজস্ব মুক্তচিন্তাকে অনৈতিক প্রমাণ করার কোনো ভিত্তি কি অন্য নাস্তিকরা নাস্তিক্যবাদ দিয়ে নির্ধারণ করে দিলে সেটা কি বাকি সবাই মেনে নিতে বাধ্য? ধরুন একজন নাস্তিক নিজের বিবেক থেকে দাবি করলো যে নিজের স্বার্থে মিথ্যাকথা বলাটাই যৌক্তিক কারণ এতে নিজের অনেক লাভ হয় এইক্ষেত্রে অন্য নাস্তিকরা কেন তার এই মুক্তচিন্তাকে অনৈতিক বলে গণ্য করবে? আপনি নিজেকে নাস্তিক দাবি করে থাকলে কোনো পরিবার কার সাথে তাদের নারীকে বিয়ে দিবে নাকি দিবে না এই নৈতিকতা আপনি নির্দিষ্ট করে দেবার কে? নাস্তিকরা কি নৈতিক দাতা?
নাস্তিক্যধর্মের দৃষ্টিতে কোনো অল্প বয়স্কা নারীর এই স্বাধীনতা থাকবে না সে কোন বয়সের পুরুষ বিয়ে করবে? পরিবার নিজস্ব স্বাধীনচিন্তার অধিকার রাখবে না? ধরুন কোনো মানুষ নিজস্ব স্বাধীনচিন্তায় নিজেকে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বলে দাবি করলো এবং অন্য মানুষরাও নিজেদের স্বাধীনতায় উনাকেই সর্বশ্রেষ্ঠ বলে স্বীকার করে নিয়েছে এখন একজন লোক নিজের মেয়েকে উক্ত লোকের সাথে বিয়ে দিয়েছে, দেখা গিয়েছে মেয়েটি তার স্বামীর সাথে আজীবন সুখেই ছিল। মেয়েটির ক্ষতিও হয়নি বিয়ের ফলে। সংশয় হচ্ছে নাস্তিক্যধর্মে এরকম স্বাধীনচিন্তা কোন যুক্তিতে অনৈতিক হবে? মানুষকে কি স্বাধীনভাবে মুক্তচিন্তার করার অধিকার দিতে হবে না? মুক্তচিন্তার দৃষ্টিতে কোনো যুক্তি আছে নাস্তিকদের কাছে এই কর্মকে অযৌক্তিক দাবি করবার?
মহানবী (সা)কে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব দাবি করা হয় বলেই আমরা নাস্তিকরা অল্প-বয়স্কা মেয়েকে বিয়ে করার ফলে উনার সমালোচনা করি নাহলে করতাম না,বুঝেছেন?
হ্যাঁ নাস্তিক পণ্ডিতজি ভালো করেই বুঝেছি। এখন আপনারা আমার কথা মনোযোগ দিয়ে বুঝার চেষ্টা করুন কেমন। নাস্তিকদের কথায় যেই নৈতিক বাক্যটি তৈরি হয়েছে সেটা হচ্ছেঃ
নিজেকে সর্বকালের শ্রেষ্ঠ মহামানব দাবি করলে ৬ বছরের মেয়েকে বিয়ে করে ৯ বছর বয়সে প্রাপ্তবয়স্কা হলেও দাম্পত্য সম্পর্ক করা যাবেই না। নিজেকে মহান দাবি করলে অল্প বয়সের নারী বিয়ে করা যাবে না যদি করে তাকে সেটা অন্যায়।
এখানে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নটি হচ্ছে, এই নৈতিকতাটি আপনারা কোথা থেকে নিয়েছেন এবং কেন সেখান থেকেই নির্দিষ্ট করেছেন? নিজস্ব বিবেক থেকে? পরিবার,সমাজ,রাষ্ট্র থেকে? যদি আপনার উত্তর হয় YES তাহলে এখানে সংশয় হলো দুনিয়ার সমস্ত মানুষ আপনাদের তৈরি করে দেয়া এই নৈতিকতা বিশ্বাস করতে বাধ্য? পরিবার-সমাজ-রাষ্ট্র এগুলো কিসের ভিত্তিতে প্রমাণ করবে যে নিজেকে শ্রেষ্ঠ দাবি করলে ৬ বছরের মেয়েকে বিয়ে করা যাবে না? নাস্তিকদের তৈরি করা নৈতিকতাকে মুক্তমনে অবিশ্বাস করা হলে অন্য নাস্তিকরা কেন ব্যক্তিগতভাবে একে অনৈতিক বলবে? অথচ সকল মানুষ মুক্তচিন্তা করতে শিখুক এটাই কিন্তু নাস্তিকরা বলে বেড়ায় তাই না? নিজেকে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ দাবি করে অল্পবয়সের মেয়েকে বিয়ে করা যাবে না-মর্মে নৈতিকতাটি কি স্বয়ং সর্বকালের জন্য সর্বশ্রেষ্ঠ নৈতিকতা? যদি উত্তর YES হয় তাহলে আপনার তৈরি করা নৈতিকতাটিই বাতিল হয়ে যাচ্ছে যেহেতু আপনিই দাবি করছেন আপনার তৈরি করা নৈতিকতা সর্বশ্রেষ্ঠ। যদি আপনার উত্তর হয় NO তাহলে আপনার নিজের তৈরি করা নৈতিকতাকেই সর্বকালের জন্য শ্রেষ্ঠ হবার যোগ্যতাই যেখানে রাখছে না সেখানে আপনি কিভাবে অন্যের মুক্তচিন্তাকে এটা বলে অনৈতিক বলতে চাচ্ছেন যে নিজেকে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ দাবি করে ৬ বছরের মেয়েকে বিয়ে করা যাবে না? নাস্তিক্যধর্ম কিভাবে এই সমস্যার সমাধান দিতে পারবে,বলুন? একজন মানুষ নিজস্ব মুক্তচিন্তায় নিজেকে শ্রেষ্ঠ মহামানব দাবি করবে কি করবে না সেটার নৈতিকতা নাস্তিকরা বানিয়ে দেবে কেন? মানুষের জীবনের বিধি-নিষেধের নৈতিক মানদণ্ড নাস্তিকরা নির্দিষ্ট করে দিবে? ধরুন রিচার্ড ডকিন্স নামের একজন মুক্তচিন্তক নিজেকে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব বলে দাবি করলো এবং উনার এই দাবিকে একাধিক মুক্তচিন্তক নিজস্ব বিবেকে সত্য বলে বিশ্বাস করলো-প্রশ্ন হচ্ছে এই মুক্তচিন্তা কি নাস্তিক্যধর্মে অনৈতিক? অনৈতিক হবার যুক্তি গুলো কি কি? নিজেকে সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব বলে দাবি করলে অল্পবয়স্কা নারী বিয়ে করা যাবে না-এই আদেশ-নৈতিকতা কি স্বয়ং শ্রেষ্ঠ?
বর্তমানে যারা ইসলামবিদ্বেষ পোষণের ফলে দাবি করছে যে নবী মোহাম্মদ (সা) ছয় বছরের মেয়েকে বিয়ে করে অনৈতিক কাজ করেছেন-এদের কাছে আমার প্রশ্ন হচ্ছে আপনি কিসের ভিত্তিতে এই নৈতিকতা নির্ধারণ করে দিলেন যে ছয় বছরের মেয়েকে বিয়ে করা অনৈতিক? যদি বলেন আপনার বিবেক থেকে তাহলে এখানে প্রশ্ন আসবে আপনার বিবেক দিয়ে আপনি নৈতিকতা নির্ধারণ করতে পারলে একইভাবে অন্য মানুষরাও যদি নিজের বিবেক দিয়ে ছয় বছরের মেয়েকে বিয়ে করাকে ভালো মনে করে তাহলে সেটা কোন যুক্তিতে অনৈতিক হবে? নাস্তিকরা যেমন বিশ্বাস করে সে কার সাথে সমকামীতা চর্চা করবে কি করবে না সেটা তার ব্যাপার ঠিক তেমনি অন্য মানুষের ক্ষেত্রে নাস্তিকদেরকে অবশ্যই এটা বিশ্বাস করতে হবে অন্য মানুষরা কোন বয়সী নারী বিয়ে করবে কি করবে না সেটা তাদের ব্যাপার। নাস্তিকরা যদি এমন বিশ্বাস করতে না পারে তাহলে নাস্তিকরা নিজের বিশ্বাসের সাথে গাদ্দারি করা হবে। নাস্তিক্যবাদ মানুষকে নৈতিকতা নির্ধারণ করে দেয় না। তাই যে যার মতো ইচ্ছা নিজের কল্যাণের জন্য নৈতিকতা নির্ধারণ করতেই পারে। তাই পূর্বে যে মানুষ গুলো নিজের ইচ্ছায় অল্প বয়স্কা নারীদের মেয়ে বিয়ে করেছিলেন সেটা নাস্তিক্যধর্মের দৃষ্টিতে সম্পূর্ণ নৈতিক।
নাস্তিক্যবাদকে ধর্ম বলতে নাস্তিকরা ঠিকই বিব্রতবোধ করে অথচ অল্প বয়সের নারীকে বিয়ে করা যাবে এই বিধান অন্যদের উপর চাপিয়ে দিতে চায়। কি ভয়ংকর বৈপরীত্য তাই না? ভাবা যায়? নিজেকে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব দাবি না করে ৬ বছরের অল্পবয়স্কা মেয়েকে বিয়ে করলে যদি এটা নৈতিক হয়ে যায় আর ব্যক্তিস্বাধীনতার অন্তর্ভুক্ত হয়ে যায় তাহলে নিজের ব্যক্তিগত স্বাধীনতায় নিজেকে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ দাবি করে অল্প বয়সের মেয়েকে বিয়ে করলে সেটা নাস্তিকদের কাছে অনৈতিক হবে কেন? এই নৈতিকতার তফাৎ গুলো কিসের ভিত্তিতে বানানো হয়েছে? প্রকৃত নাস্তিক যারা অর্থাৎ যাদের মনে ইসলামবিদ্বেষ নেই তারা কখনো হযরত মোহাম্মদ (সা)এর অল্প বয়স্কা মেয়ে বিয়েকে অনৈতিক হিসেবে গণ্য করবে না বরং তারা মনে করবে এটা হযরত মোহাম্মদ (সা)এর ব্যক্তিগত স্বাধীনতা এবং উনি যেহেতু উনাকে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব হিসেবে দাবি করে থাকেন তবে সেটাও উনার ব্যাপার এমনকি উনাকে যারা অনুসরণ করে অর্থাৎ মুসলিমরা, এনাদেরও অধিকার আছে উনাকে সবার চেয়ে শ্রেষ্ঠ হিসেবে স্বীকার করার। একজন নাস্তিক হিসেবে এখানে অনৈতিক দাবি করার কোনো যুক্তি নেই। তাই যারা এই বিয়ের সমালোচনা করে তারা আসলে ধোঁকাবাজ নাস্তিক। ধান্দাবাজ নাস্তিক। প্রতারক নাস্তিক। মিথ্যুকবাজ নাস্তিক। পেশাদার ইসলামবিদ্বেষী বললেও ভুল হবে না।
শিশুকামিতার জন্য আয়েশা (রা)কে শিশুকালে বিয়ে করে নবী মুহাম্মদ (সা)?
নাস্তিকান্ধতা থেকে সরে এসে সততার সাথে যদি নবী মোহাম্মদ (সা)এর সাথে আয়েশা (রা) সম্পর্ক মিলানো হয় তাহলে শিশুকামিতা অথবা যৌন আকর্ষণের কারণ গুলো নবী মোহাম্মদ (সা)এর মধ্যে পাওয়া যায় না। পুরো লেখাটি মন দিয়ে পড়তে থাকতে হবে পরিস্কারভাবে বুঝার জন্য। ‘BBC NEWS।বাংলা’ সুত্রে ২১ নভেম্বর ২০২০ তারিখে “নেক্রোফিলিয়া, সেক্সুয়াল স্যাডিজম, পেডোফিলিয়া, ক্লেপটোম্যানিয়াসহ যে সাত মানসিক ব্যাধি মানুষকে বানাতে পারে অপরাধী” শিরোনামে খবর প্রকাশ করা হয়। সেখানে বিভিন্ন রোগের গবেষণা আলোচনা করা হয়। সেখানে বর্ণিত হয়েছেঃ(২)
শিশুদের সাথে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করা বা যৌন হয়রানি,নির্যাতন করার যৌন বিকৃতিকে 'পেডোফিলিয়া' হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। এই ব্যাধিতে আক্রান্তদের চিহ্নিত করা হয় পেডোফাইল হিসেবে। শিশুদের প্রতি যৌন আকর্ষণ তৈরি হওয়ার ফলে শিশুদের যৌন নির্যাতন করার সমস্যা এবং এরকম ঘটনার হার বৃদ্ধি পাওয়া বিশ্বের অধিকাংশ দেশের জন্যই এখন চিন্তার বিষয়। বিশেষ করে অনলাইনে শিশুদের সাথে যৌন হয়রানিমূলক আচরণের হার সম্প্রতি আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে। করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে ইয়োরোপিয়ান ইউনিয়নের ২৭টি দেশে অনলাইনে শিশুদের সাথে যৌন হয়রানি ও যৌন নির্যাতনমূলক আচরণ রেকর্ড পরিমাণে বেড়েছে বলে এ বছরের মে মাসে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা ইউরোপোলের বরাত দিয়ে খবর প্রকাশ করে সংবাদ সংস্থা রয়টার্স।
যুক্তরাজ্যের পত্রিকা 'দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট' এ বছরের মার্চ মাসে একটি খবর প্রকাশ করে, যেখানে শিশুদের যৌন হয়রানি ও নির্যাতন থেকে সুরক্ষা প্রদানের উদ্দেশ্যে তৈরি সংস্থা 'দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইনকোওয়ারি ইনটু চাইল্ড সেক্সুয়াল অ্যাবিউজ'এর প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে বলা হয় যে ২০১৬ সাল থেকে ২০১৯ পর্যন্ত যুক্তরাজ্যের পুলিশ প্রতি মাসে গড়ে '৪০০ থেকে ৪৫০ জন' অভিযুক্তকে 'অনলাইনে শিশুদের সাথে যৌন নির্যাতনমূলক আচরণ করায়' গ্রেফতার করে।
বাংলাদেশে গত মাসে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তিনজন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীকে গ্রেফতার করে, যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল 'শিশু পর্নোগ্রাফি তৈরি করে ছড়িয়ে' দেয়ার। তবে শুধু অনলাইনে নয়, বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সময়ে শিশুদের সাথে যৌন সহিংসতা, যৌন হয়রানিমূলক আচরণ বা যৌন নির্যাতনের ঘটনা বেড়েছে।
পেডোফিলিয়ার সংজ্ঞা নিয়ে বিশেষজ্ঞদের মধ্যে দ্বিমত রয়েছে। আমেরিকান সাইকিয়াট্রিক অ্যাসোসিয়েশন ও ন্যাশনাল লাইব্রেরি অব মেডিসিনে প্রকাশিত একাধিক গবেষণা প্রতিবেদনে ধারণা প্রকাশ করা হয় যে, শিশুদের সাথে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করতে চাওয়া সব ব্যক্তিকেই পেডোফাইল বলা যায় না, আবার সব পেডোফাইলরা শিশুদের সাথে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করতে চায় না। অধিকাংশ গবেষণাতেই ধারণা প্রকাশ করা হয়, প্রাপ্তবয়সে পেডোফিলিয়ার উপসর্গ প্রকাশিত হওয়া ব্যক্তিদের সিংহভাগ শৈশবে শারীরিক, মানসিক বা যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, যৌন বিকৃতির অন্যতম কারণ শৈশবে জটিলতা থাকা ও নির্যাতনের শিকার হওয়া। সাধারণত পেডোফাইলদের অধিকাংশ পুরুষ হলেও ২০১০ সালে হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুলের জার্নালে প্রকাশিত হওয়া এক রিপোর্টে প্রাপ্তবয়স্ক নারীদের দ্বারা ছেলে বা মেয়ে শিশুর যৌন নির্যাতনের কয়েকটি ঘটনাও তুলে ধরা হয়।
প্রশ্ন হচ্ছে নবী মোহাম্মদ (সা) কি আয়েশা (রা)কে কখনো যৌন নির্যাতন করেছিলেন? আয়েশা (রা) থেকে এরকম কোনো বর্ণনা আছে কি যে উনি বলেছেন নবী মোহাম্মদ (সা) আমাকে অত্যাচার-নির্যাতন করতেন? উনার সাথে সহবাসে রাজি না হওয়াতে? নবী মোহাম্মদ (সা)এর ছোট বেলায় কারো দ্বারা কি নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন? এরকম কোনো তথ্যের ইতিহাস আমার জানা নেই তাই কেউ যদি পান আমাকে অবশ্যই জানাবেন। শিশুকাম বা পেডোফিলিয়া হলো এমন একটি মানসিক রোগ যে রোগে একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যাক্তি এখনো বয়ঃসন্ধিতে পৌঁছায়নি এমন বাচ্চাদের প্রতি যৌন আকর্ষণ অনুভব করেন। এই সংজ্ঞা নবীজি মোহাম্মদ (সা) ক্ষেত্রে যায় না কারণ উনি নিজের যৌনতাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারতেন। এই সাক্ষ্য দিয়েছেন উনার স্ত্রী আয়েশা (রা) নিজেই।
সহিহ বুখারী,হাদিসঃ ১৯২৭, সহিহ হাদিসঃ
‘আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃতিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম সওমের অবস্থায় চুমু খেতেন এবং গায়ে গা লাগাতেন। তবে তিনি তাঁর প্রবৃত্তি নিয়ন্ত্রণে তোমাদের চেয়ে অধিক সক্ষম ছিলেন।-ihadis,com
সহিহ মুসলিম,হাদিসঃ ২৪৬৫,সহিহ হাদিসঃ
আয়িশাহ্(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃতিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম সওমের অবস্থায় আমাকে চুমু দিতেন। তোমাদের মধ্যে কে এমন আছে যে, নিজের কামোদ্দীপনাকে আয়ত্বে রাখতে পারে, যেমন আয়ত্বে রাখতে সক্ষম ছিলেন রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর কামোদ্দীপনাকে।-ihadis.com
সুনানে ইবনে মাজাহ,হাদিসঃ৬৩৫,সহিহ হাদিসঃ
আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃতিনি বলেন, আমাদের কারো হায়িদ শুরু হলে নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে তার লজ্জাস্থানে শক্ত করে পাজামা বাঁধার নির্দেশ দিতেন, অতঃপর তিনি তার সাথে আলিঙ্গন করতেন। তোমাদের মধ্যে এমন কে আছে যে তার প্রবৃত্তিকে বশে রাখতে পারে, যেমন রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর প্রবৃত্তিকে বশে রাখতে সক্ষম ছিলেন!-ihadis.com
নাস্তিকান্ধদের মিথ্যা দাবি অনুপাতে যদি নবীজি (সা) কামাতুর হতেনই তাহলে আম্মাজান আয়েশা (রা) কেন এটা বললেন যে মোহাম্মদ (সা) তাঁর প্রবৃত্তিকে বশে রাখতে সক্ষম ছিলেন? একজন পুরুষ যদি নিজের তীব্র উত্তেজনাপূর্ণ যৌনতাকে পুরো কন্ট্রোল করতে পারে তাহলে এটা নিয়ে সংশয় নেই যে নবী মোহাম্মদ (সা) সম্পূর্ণ সুস্থ স্বাভাবিক একজন মানুষ ছিলেন। নাস্তিকান্ধদের দাবি অনুযায়ী যদি মোহাম্মদ (সা) আসলেই খারাপ মানুষ হতেন এবং নিজের স্বার্থের জন্য আয়েশা (রা)কে বিয়ে করতেনই তাহলে তো উনি হায়েজ অবস্থায়ও সহবাস করার নিয়ম বানাতেন নিজের চাহিদা সম্পূর্ণ করার জন্য অথচ উনি তো এরকম কিছুই বানায় নাই। কেন?
উনি তো এরকম নিয়ম তৈরি করতে পারতেন যে হায়েজ অবস্থাতেও স্ত্রী সহবাস করলে জান্নাতে যাওয়া যাবে কিন্তু উনি কি এরকম কিছু বলেছিলেন? নবীজি (সা) যদি শিশুকামি হয় তাহলে তিনি কেন মাত্র একটি বিয়ে অল্প বয়সের মেয়েকেই করতে গেলেন? নবী মোহাম্মদ (সা) কি আয়েশা (রা)কে বিয়ে করার জন্য জবরদস্তি করেছিলেন? তিনি তো ইচ্ছা করলে একইসাথে ৫০ টি শিশু মেয়েকে বিয়ে করতে পারতেন কিন্তু করলেন না কেন? অথবা সেসব শিশুর সাথে বিয়ে করে অথবা না করেই সাথে সাথেই সহবাস করার আইন বানাতে পারতেন কিন্তু করেন নাই কেন? নবী মোহাম্মদ (সা) থেকে কি এমন বর্ণনা আছে যে উনি বলেছেন আয়েশা (রা)কে আমি যৌনআকর্ষণের জন্যই বিয়ে করেছি? ছয় বছর বয়সে বিয়ের কারণ যদি শিশুকামিতা হয় তাহলে তিন বছর পর্যন্ত অপেক্ষা করার কথা নয় কারণ নাস্তিকদের দাবি উনি বিয়েই করেছেন যৌন আকর্ষণের জন্য কিন্তু কেউ যদি যৌন আকর্ষণের জন্য কাউকে বিয়ে করে তাহলে তিন বছর কেন অপেক্ষা করতে যাবে? তারমানে কি উনি আসলে শিশুকামের জন্য বিয়েই করেন নাই? তিনি ইচ্ছা করলেই সাথে সাথেই কি বিয়ে করে সহবাস করতে পারতেন না? নিজের স্বার্থ হাসিল করতে পারতেন না?
নাস্তিকদের মিথ্যাচার এখনো কি বুঝতে পারেননি আপনি ? খেয়াল করুন নাস্তিকান্ধদের দাবি অনুপাতে যদি মোহাম্মদ (সা) একজন খারাপ মানুষ হতেন তাহলে তিন বছর অপেক্ষা করার কোনো যৌক্তিকতাই থাকছে না কেননা উনি যেহেতু ফেইক নবী নাস্তিকদের অন্ধবিশ্বাস অনুযায়ী তাহলে উনি তো চাইলেই নতুন নিয়ম বানিয়ে সাথে সাথে একাধিক শিশুর সাথেও সহবাস করতে পারতেন? বিয়ে না করেও নতুন নিয়ম বানিয়ে সহবাস করতে পারতেন অথচ উনি এরকম কিছুই করেন নাই। প্রশ্ন হচ্ছে কেন? নবী মোহাম্মদ (সা) তিন বছর কেন অপেক্ষা করেছেন সেটারও সুস্পষ্ট তথ্য রয়েছে। মন দিয়ে বুঝে পড়তে থাকতে হবে।
রাশীদ হাইলামায যিনি একজন ইসলামী গবেষক, চিন্তাবিদ এবং সীরাত লেখক, তাঁর লেখা "জীবন ও কর্ম আয়েশা (রা)" অনুবাদ করেছেন মুহাম্মদ আদম আলী, এই কিতাবের ৩০ ও ৩১ পৃষ্ঠায় বর্ণিত আছেঃ
হযরত জিবরাইল (আ) রাসুল (সা) কাছে এসে বললেন আয়েশা আপনার স্ত্রী তাঁকে ঘরে তুলুন । এদিকে আবু বকর (রা)ও রাসুলের কাছে এসে একই প্রশ্ন করলেন ইয়া রাসুলুল্লাহ ! আপনার স্ত্রীকে ঘরে তুলে নিচ্ছেন না কেন? রাসুল (সা) জবাবে বললেন সাদাক।সাদাক হচ্ছে মোহরের টাকা যা বিয়ের সময় স্ত্রীকে পরিশোধ করতে হয় । আবু বকর (রা)এর নিকট কোন জাগতিক মূল্য দিয়ে রাসুল (সা)কে তুলনা করার অবকাশ ছিল না । তিনি রাসুল (সা)কে প্রয়োজনীয় টাকা ধার দিলেন। রাসুল (সা) সেটি দেরি না করে আয়েশা (রা) এর কাছে পাঠিয়ে দেন। জাহেলি যুগে নারীদের কোনো অধিকার ছিল না । মোহরের টাকা মেয়ের বাবাই আত্মসাৎ করতো এবং মেয়েকে সেটা দিত না। যতই দিন গড়াতে থাকে রাসুল (সা) সমাজের এসব দুর্নীতি দূর করতে থাকেন এবং ইসলামী সমাজ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত করেন।
মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল গালিব (হাঃফি) লিখিত “সীরাতুর রাসুল (সা)” ১৯৯ পৃষ্ঠায় বর্ণিত হয়েছেঃ
একাদশ নববী বর্ষের শাওয়াল মাসে অর্থাৎ হযরত সওদা বিন্তে যাম’আর সাথে বিয়ের ঠিক এক বছরের মাথায় ওছমান বিন মাযউন (রা) এর স্ত্রী খাওলা বিনতে হাকীম (রা) এর প্রস্তাবক্রমে হযরত আবু বকরের নাবালিকা কন্যা আয়েশা রাসুলুল্লাহ (সা) বিবাহ করেন। বিয়ের তিন বছর পরে সাবালিকা হলে নয় বছর বয়সে মদীনায় ১ম হিজরী সনের শাওয়াল মাসে তিনি নবীগ্রহে গমন করেন।
পাঠক লক্ষ্য করুন, নবী মোহাম্মদ (সা)কে আয়েশা (রা)এর পিতা পর্যন্ত বলেছিলেন যে আয়েশা (রা)কে ঘরে নিতে এমনকি জিব্রাইল (আ)ও বলেছিলেন এরপরেও উনি দেনমোহরের কারণে ঘরে তুলেন নাই। প্রশ্ন হচ্ছে নবীজি (সা) কেন এরকম নিয়ম তখন বানালেন না যে দেনমোহর না দিয়েও ঘরে তুলতে পারবে? উনি যদি শিশুকামি হোন তাহলে নিজের জন্য কেন এরকম কঠিন নিয়ম বানাবেন যার কারণে ৩ বছর অপেক্ষা করতে হলো? নাস্তিকরা কি এখনো মানুষের মতো চিন্তাভাবনা করতে শেখে নি? আর কত এরা নবী মোহাম্মদ (সা)কে নিয়ে অন্ধবিশ্বাস আর ঘৃণা করতে থাকবে?
দ্বিতীয় কারণ হিসেবে যা পেলাম তিন বছর অপেক্ষা করার কারণ হচ্ছে ৯ বছর বয়সে প্রাপ্তবয়স্কা নারী হয়ে যাবার জন্য অপেক্ষা করা। নাস্তিকদের অন্ধবিশ্বাস হচ্ছে হযরত মোহাম্মদ (সা) খারাপ মানুষ ছিলেন তাহলে প্রশ্ন হচ্ছে উনি কেন একটি মেয়েকে প্রাপ্তবয়স্কা হবার সুযোগ দিবেন যেই সুযোগের ফলে উনি নিজেই উক্ত মেয়ের সাথে সহবাস করতে পারলেন না? বাস্তব সত্য কথা হচ্ছে নবী মোহাম্মদ (সা) কখনোই শিশুকামি ছিলেনই না। বিবর্তনবাদী প্রাণীরা যদি সুস্থচিন্তা করতে জানতো তাহলে হযরত মোহাম্মদ (সা) সম্পর্কে এরকম নোংরা মিথ্যাচার করতে পারতো না কেননা একজন সুস্থ স্বাভাবিক মানবিক মানুষ কখনো তথ্য জালিয়াতি করতে পারে না। পাঠক এইবার বিশাল একটি ঘটনা পড়ার জন্য তৈরি হন। এই ঘটনার দ্বারা প্রকৃত সত্য প্রকাশ হয়ে উঠবে এবং নাস্তিকরা যে মিথ্যাবাদী সেটাও স্পষ্ট হয়ে যাবে। পড়া শুরু করুন।
মুয়াল্লীমা মোরশেদা বেগম সংকলনে “রাসুলুল্লাহ (সা) এর স্ত্রীগণ যেমন ছিলেন” বইয়ের ৩৭,৩৮ ও ৩৯ পৃষ্ঠায় বর্ণিত হয়েছে যেঃ
রাসুল (সা)এর খালা খাওলা বিনতে হাকিম ইসলামের ব্যাপক প্রচার ও আরবের জাহেলী যুগের কুসংস্কার দূর করার জন্য আয়েশা (রা)কে বিয়ে করার ব্যাপারে তাঁকে বললেন, তৎক্ষণাৎ রাসুল (সা) এ বিষয়ে হ্যাঁ বা না কিছুই বললেন না। তিনি আল্লাহর হুকুমের অপেক্ষা করতে লাগলেন। এরপর তিনি এক রাতে দেখলেন, এক ফেরেশতা কারুকার্য খচিত একটি রুমাল জড়িয়ে অতি মনোরম এক বস্তু তাঁকে উপহার দিচ্ছেন। রাসুল (সা) তা হাতে নিয়ে ফেরেশতাকে জিজ্ঞেস করলেন এটি কি জিনিস? উত্তরে ফেরেশতা তা খুলে দেখার জন্য বললেন। রাসুল (সা) খুলে দেখলেন তার মধ্যে আয়েশার ছবি অঙ্কিত রয়েছে। এরপর রাসুল (সা)এর নিকট থেকে অনুমতি নিয়ে খাওলা আয়েশা (রা)এর পিতা-মাতার নিকট প্রস্তাব পেশ করেন। প্রস্তাব শুনে আবু বকর জানান যে,এ বিয়েতে তাঁর কোন আপত্তি নেই। কিন্তু তিনি বিস্মিত হয়ে বলেন, এ বিয়ে কিভাবে বৈধ হবে? আয়েশা তো রাসুলুল্লাহর ভাইঝি। এ কথা শুনে রাসুল (সা) বলেন, তিনি তো কেবলমাত্র আমার দ্বীনি ভাই। খাওলা আবু বকর (রা)কে বোঝান যে,রাসুল (সা) তো আপনার রক্ত সম্পর্কের ভাই নন। রক্ত সম্পর্কে না থাকলে একই খান্দানে এক মুসলমান অন্য মুসলমানের মেয়েকে পর্যন্ত বিয়ে করতে পারে। আয়েশা (রা) এর মা এ বিষয়ে বললেন, আয়েশার সাথে রাসুলুল্লাহ (সা)এর বিয়ে খুবই আনন্দের কথা। আমার বিশ্বাস এ বিয়ের ফলে আরবের অনেক জঘন্য কু-প্রথা দূর হবে।
এরপর আবু বকর (রা) উনার পিতা আবু কুহাফাকে বিষয়টি বললেন। তিনি তাঁর মতামতে বললেন, রাসুলুল্লাহর সাথে আমার নাতনীর বিয়ে হলে তা বড়ই গৌরবের কথা হবে। আমার আদরের নাতনী মাহবুব রাব্বুল মাশরিকাইন ও মাগরিবাইন এর মাহবুবা হবে। তবে আমি আমার নাতনীর বিয়ে যুবায়ের ইবনে মাতয়াম এর ছেলের সাথে দেবার প্রতিজ্ঞা আবদ্ধ আছি। এ কথা আমি কারো নিকট প্রকাশ করিনি। আমি যুবায়েরের মতামত নিয়ে তোমাকে আমার অভিমত জানাবো। যুবায়ের ও তার পরিবার তখনও ইসলাম গ্রহণ করেনি। সে কারণে তারা নওমুসলিম আবু বকরের কন্যার সাথে তাদের সন্তানের বিয়ে দিতে অস্বীকৃতি জানায়। ফলে রাসুল (সা)এর সাথে আয়েশা (রা)এর বিয়ের বাধা দূরীভূত হয়। উভয়পক্ষ বিয়েতে সম্মত হয়ে ৫০০ দিরহাম মহরানা ধার্য করা হয়। এরপর আবু বকর (রা) নিজে রাসুল (সা) এর বাড়িতে গিয়ে তাঁকে নিজ বাড়িতে আনলেন। রাসুল (সা) আবু বকরের বাড়িতে আসার সাথে সাথে উপস্থিত মেহমানবৃন্দ ‘মারহাবান মারহাবান,আহলান ওয়া সাহলান’ অর্থাৎ শুভেচ্ছা স্বাগতম বলে তাঁকে খোশ আমদেদ (স্বাগতম) জানালেন। বিয়ের মজলিসে সকলকে উদ্দেশ্য করে আবু বকর সিদ্দিক (রা) একটি বক্তৃতা দিলেন, তিনি বললেন, আপনারা জানেন রাসুলুল্লাহ (সা) আমাদের পয়গম্বর। তিনি আমাদেরকে আঁধার থেকে আলোতে নিয়ে এসেছেন।
এ আলোকের প্রদীপ জ্বালিয়ে রাখবার এবং চিরদিনের জন্য আমাদের এ কৃত্রিম বন্ধুত্ব বজায় রাখবার পথ অনেকদিন ধরে খুঁজছি। তাই আজ আপনাদের খেদমতে আমার ছোট মেয়েটিকে এনেছি। এ ছোট-ছোট ছেলে মেয়েদের নিয়ে কতশত কুসংস্কার আমরা গড়ে তুলেছি। বিনা অজুহাতে আমরা শিশু কন্যাকে মাটিকে পুঁতে ফেলি, হাত পা বেধে দেব-দেবীর পায়ে বলি দেই; যাদেরকে বাঁচিয়ে রাখি তাদেরকে জীবন্ত-মরা করে ফেলি, দোস্তের মেয়েকে আমাদের কেউই বিয়ে করতে পারে না। আপনারা যদি আমার এ আয়েশাকে রাসুলুল্লাহ (সা)এর হাতে সোপর্দ করে দেন তবে চিরতরে আরব দেশ থেকে এ সকল কুসংস্কার মুছে ফেলতে পারবেন। এতে আপনারা আমার বন্ধুত্ব বজার রাখতে পারবেন এবং আমার প্রিয় কন্যা রাসুলুল্লাহ (সা)এর সাথে থেকে ভবিষ্যতে তাঁর আদর্শ ও বানী জগতে প্রচার করতে পারবে। উপস্থিত সুধীবৃন্দ এ বক্তৃতা শোনার পর সমবেত কণ্ঠে আবার বলে উঠলেন, মারহাবান,মারহাবান, (স্বাগতম) আয়েশার বিয়ের মধ্য দিয়ে আমাদের সেই কল্যাণ নেমে আসুক। এরপর আবু বকর (রা) নিজে খুতবা পাঠ করে রাসুল (সা) ও আয়েশার (রা) বিয়ে পড়িয়ে দেন।
পাঠক, এরকম বর্ণনা কি রয়েছে যেখানে নবী মোহাম্মদ (সা) বলেছেন উনি আগে থেকেই শিশুদের নিয়ে যৌন আকর্ষণের কথা চিন্তা করাকে সওয়াবের মনে করতেন? কেননা এই ঘটনা থেকে এটা স্পষ্ট যে নবী মোহাম্মদ (সা) খাওলা বিনতে হাকিমের প্রস্তাবের আগে কখনোই আয়েশা (রা)কে নিয়ে কোনো কিছুই চিন্তা করেন নাই। নবী মোহাম্মদ (সা) শিশুকামি ছিলেনই না তার আরেকটি প্রমাণ হচ্ছে খাওলা বিনতে হাকিমের থেকে সর্বপ্রথম বিয়ের প্রস্তাব পাওয়ার সাথে সাথেই উনি রাজি হয়ে যান নাই বরং আল্লাহর আদেশের জন্য অপেক্ষা করেছেন। প্রশ্ন হচ্ছে ইসলামের নিয়ম কানুন যদি নবী মোহাম্মদ (সা) নিজের ইচ্ছা মতোই বানিয়ে থাকতেন তাহলে উনি অপেক্ষা কেন করতে যাবেন? আগে থেকেই শিশুকামির রোগ নিয়ে চলাফেরা করা খারাপ মানুষ কি শিশুকে বিয়ে করার জন্য অপেক্ষা করার কথা বলবে? এই প্রশ্ন গুলো নিয়ে নাস্তিক প্রাণীদের চিন্তা করার সুস্থ যোগ্যতা রয়েছে কি? হযরত মুহাম্মদ (সা) আয়েশা (রা)কে কেন বিয়ে করেছেন সেটা তিনি নিজেই স্পষ্ট বলেছেন।
সহিহ বুখারি, হাদিসঃ ৭০১১,৭০১২ সহিহ হাদিসঃ
আয়েশা (রা) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন রাসুল (সা) বলেছেনঃ তোমাকে আমায় দুবার সপ্নে দেখানো হয়েছে। আমি দেখলাম এক ব্যাক্তি তোমাকে রেশমী এক টুকরো কাপড়ে জড়িয়ে বয়ে নিয়ে আসছে আর বলছে ইনি আপনার স্ত্রী। আমি তার নিকাব উন্মোচন করে দেখতে পাই যে ঐ মহিলাটি তুমিই এবং আমি বলেছি যদি এটা আল্লাহর তরফ থেকে হয়ে থাকে তা হলে তিনি তা সত্যে পরিনত করবেন।-ihadis.com / ই,ফা,বুখারি শরীফ, ৮ খণ্ড, হাদিসঃ ৪৭০৭,সহিহ হাদিস।
ইসলামের মিথ্যুকবাজ সমালোচকদের কাছে প্রশ্ন হচ্ছে এমন একটি হাদিস কি দেখানো যাবে যেখানে নবী মোহাম্মদ (সা) এই কথা স্পষ্ট বলেছেন যে উনি আয়েশা (রা) আল্লাহর হুকুমে বিয়ে করেন নাই বরং নিজের যৌনকামনা পরিপূর্ণ করতে বিয়ে করেছেন? যদি প্রমাণ পেশ করতে না পারেন তাহলে নবী মোহাম্মদ (সা)কে নিয়ে মিথ্যাকথা বলার নাম কি মুক্তচিন্তার আন্দোলন? আয়েশা (রা) নয় বছর বয়সে প্রাপ্তবয়স্কা হলে এরপরেও নবীজি (সা) আসলেই উনার সাথে সহবাস করেছিলেন কিনা সেটাও নির্দিষ্ট করে বলা যায় না (৩)।
নাস্তিকান্ধরা এখানে অভিযোগ করে বলে যে
মুসলিমরা এ স্বপ্নের ব্যাখ্যা দাঁড় করিয়েছেন যে, আল্লাহ নবীকে আয়েশাকে বিয়ে করতে বলেছেন। কিন্তু, আমরা মুসলিমদের এ ব্যাখ্যা সঠিক বলে মেনে নিবো কেন? আমরা যারা আল্লাহর অস্তিত্বেই বিশ্বাস করি না তারা কেনো বিশ্বাস করতে যাবো,আল্লাহই নবীকে এ স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন? আজ রাতে যদি আমি জেনিফার লরেন্সকে স্বপ্নে দেখি এবং তারপর স্বপ্নের ব্যাখ্যা হিসেবে দাবি করি আল্লাহ চান আমি জেনিফার লরেন্সকে বিয়ে করি, তাহলে কি মুসলিমরা আমার দাবিটি মেনে নেবেন?
এটিও নাস্তিকদের মিথ্যাচার কারণ মুসলিমরা এই ব্যাখ্যা নিজেদের থেকে বানায় নাই বরং যিনি বিয়ে করেছেন তিনি নিজের বিয়ের মূল কারণ বলেই দিয়েছেন আল্লাহ উনাকে বিয়ে করতে বলেছেন। তাই যেহেতু উনি নিজেই উনার কারণ বলে দিয়েছেন সেখানে আপনারা নাস্তিকরা নিজেদের মিথ্যাব্যাখ্যা কেন নবী মোহাম্মদ (সা)এর দিকে চাপিয়ে দিচ্ছেন? মুমিনদের কাছে যুক্তিতে ধরা খেয়ে এরকম নতুন স্টাইলের মিথ্যাচার করা শুরু করেছেন কবে থেকে? আবার নাস্তিকান্ধরা নিজেরাই যেখানে বলছে আল্লাহকেই মানে না তাহলে জেনিফার লরেন্সকে সপ্নে দেখে সেটা আল্লাহর নামে বলাটা নাস্তিকতার দৃষ্টিকেও বাতিল হবে না কিভাবে? তাছাড়া কোনো নাস্তিক যদি স্রস্টার হুকুমে জেনিফার লরেন্সকে বিয়ে করেও তাহলেও আমাদের আপত্তি নেই। একজন নাস্তিক স্রস্টার হুকুমে একটি মেয়েকে বিয়ে করেছে দাবি করা নাস্তিক লোকটি যে অটোম্যাটিক নাস্তিকতার বন্দীত্ব থেকেই মুক্তি পেয়ে যাচ্ছে সেই কথা কি ভুলে গেলে চলবে? আবার আমরা মুসলিমরা তো নাস্তিকদের দাবি গুলোকে অবিশ্বাস করি তাহলে আমরা কেন নাস্তিকদের অভিযোগ গুলোকে সত্য বলে মেনে নিব?
মজার কথা হচ্ছে নাস্তিকান্ধরা এখানে উদাহরণ দিতেও ভুল করেছে কারণ ওরা যদি এমন উদাহরণ পেশ করতো যে,যদি কোনো নাস্তিক সপ্নে ছয় বছরের একটি মেয়েকে দেখে বাস্তবে বিয়ে করে এবং এই বিয়ে স্রস্টার হুকুমে হয়েছে বলে নাস্তিক দাবি করে তাহলে কি মুসলিমরা মেনে নিবে? যদিও আমাদের এখানে আপত্তি নেই কিন্তু এই উদাহরণ দিলে নাস্তিক্যধর্মে যে অল্পবয়স্কা নারীকে বিয়ে করা সমর্থন করে সেটা ফাঁস হয়ে যেত এই কারণে অল্পবয়স্কার কথা উল্লেখ করেই নি। তাছাড়া একজন নাস্তিক যদি অল্প বয়সের মেয়েকে বিয়ে করে সেটাকে আল্লাহর নাম বলে প্রচার করে তাহলে একেতো নাস্তিক্যবাদ অনুপাতে এই যুক্তি ভুল হবে কেননা নাস্তিকতা স্বয়ং স্রস্টাকেই অস্বীকার করে দ্বিতীয়তো নাস্তিকতার সাথেও সাংঘর্ষিক হয়ে যাচ্ছে। নিজেকে নাস্তিক দাবি করলে একইসাথে স্রস্টার হুকুমে বিয়ে করেছি এরকম দাবি করলে সেটা একে অপরকে ভুল প্রমাণ করে দেয়। এই কারণে নাস্তিকরা যা বলেছে সেটা ভুল।
এরপরে মিথ্যুক প্রতারকরা আরেকটি অভিযোগ করে বলে,
আল্লাহর উদ্দেশ্য যাইহোক না কেন, তিনি যদি একজন সুবিচারক স্রস্টা হয়ে থাকেন, তাহলে তিনি কোনোভাবেই কাউকেই একটা বাচ্চা মেয়ের সাথে যৌনসম্পর্ক স্থাপন করার বৈধতা দেবেন না। ঠিক যেমন তিনি কোনোভাবেই একজন নিরপরাধ মানুষকে হত্যা করার বৈধতা দেবেন না।
পাঠক খেয়াল করুন, একটু আগেই উপরে দাবি করেছে যে আল্লাহকেই নাস্তিকরা মানে না অথচ এখানে আবার দাবি করছে আল্লাহ কখনো বাচ্চা মেয়েকে বিয়ে করার বৈধতা দেবেন না। সংশয় হচ্ছে আল্লাহকে অস্বীকার করা নাস্তিক কিভাবে এই বিশ্বাস করতে পারে যে আল্লাহ অল্প বয়স্কা মেয়ের বিয়ের বৈধতা দেবেন না? নাস্তিকরা এরকম সাংঘর্ষিক বিশ্বাস কেন করে? তাছাড়া উপরে আমরা আগেই পড়েছি যে নাস্তিক্যধর্ম অল্প বয়সের মেয়েকে বিয়ে করাকে সমর্থন করে। আর ছয় বছর বয়সে আয়েশা (রা)কে বিয়ে করে নয় বছর বয়সে প্রাপ্তবয়স্কা হলে এরপর সহবাস করেছে তাই বাচ্চা মেয়ের সাথে যৌনসম্পর্ক স্থাপন করেছেন এই কথাটি নাস্তিকদের ডাহা-মিথ্যাচার।
যদি কেউ ছয় বছর বয়সের মেয়েকে বিয়ে করে এবং নয় বছর বয়সে প্রাপ্তবয়স্কা হলে সহবাস করে এতে যদি উভয়ের ক্ষতি না হয় তাহলে এটা নাস্তিক্যধর্মে অমানবিক কিছু নয়। তাই নাস্তিকদের এখানে আপত্তি করার কোনো যৌক্তিক কারণ থাকছে না। অন্যায়ভাবে কাউকে হত্যা করা এবং অল্পবয়স্কা মেয়েকে বিয়ে করা যে দুটো ভিন্ন নৈতিকতা এই সহজ বিষয়টি বুঝতে না পারলে এর দায়ভার কে নেবে? একজন মানুষকে অন্যায়ভাবে হত্যা করা যেমন আল্লাহ নিষেধ করেছেন আবার নবীজি (সা) ছয় বছর বয়সে বিয়ে করে নয় বছরে আয়েশা (রা) প্রাপ্তবয়স্কা হলে দাম্পত্য জীবন শুরু করার অনুমতিও আল্লাহ বৈধতা দিয়েছেন। তো নাস্তিক্যধর্মের দৃষ্টিতে এখানে সমস্যা কথায়? ইসলামের বিধানকে তো নাস্তিক্যধর্মের দৃষ্টিতেও অমানবিক প্রমাণ করা যাচ্ছে না। তাহলে?
এরপরে নাস্তিকান্ধরা আরেকটি অভিযোগ করে যেমন,
ছয় বছর বয়সের আয়েশাকে নবী বিয়ে না করলে, নয় বছর বয়সের আয়েশার সাথে নবী যৌনসম্পর্ক স্থাপন না করলে আল্লাহ তার কোন পরিকল্পনাটির বাস্তবায়ন করতে পারতেন না? আল্লাহ না অসীম ক্ষমতার অধিকারী,আল্লাহ না তার যা ইচ্ছে তাই করার ক্ষমতা রাখেন? তাহলে তো নবী ছয় বছর বয়সের আয়েশাকে বিয়ে না করলেও আল্লাহ তার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে পারার কথা?
এর জবাব হচ্ছে, এই বিয়ে না হলেও আল্লাহ সব কিছুই বাস্তবায়ন করতে পারতেন কিন্তু এরপরেও আল্লাহ এই সিস্টেমেই বিয়ে করতে বলেছেন যেহেতু আল্লাহ এই সিস্টেমও বিয়ের অনুমতি দিতে পারেন তাই। আর আল্লাহ অসীম ক্ষমতার অধিকারী,আল্লাহর পরিকল্পনা পারফেক্ট,আল্লাহ যা ইচ্ছা তাই করার ক্ষমতা রাখেন এরমানে এই না যে উনি নয় বছরের প্রাপ্তবয়স্কা নারীর সাথে বয়স্কা স্বামীর দাম্পত্য জীবনের আইন করতে পারবেন না। এই আইন বাস্তবায়ন না করলেও আল্লাহ পারতেন কিন্তু বাস্তবায়ন করেছেন মানুষের কল্যাণের জন্য। অল্পবয়সের স্ত্রীর সাথেও যে দাম্পত্য জীবনকে সুন্দর করা যায় এই জন্য। এখানে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হচ্ছে আল্লাহ কি ঠিক করে দেবেন আর কি দেবেন না এটা কি নাস্তিকান্ধরা ঠিক করে দেবে? নাস্তিকরা যেখানে আল্লাহকেই স্বীকার করে না সেখানে আল্লাহ কি ঠিক করে দেবেন আর কি দিতে পারবেন না এই নৈতিকতা নাস্তিকরা কেন নির্দিষ্ট করে দিচ্ছে? নাস্তিকদের বানানো “স্রস্টা যা যা করতে পারবেন আর যা যা করতে পারবেন না” বিধানে নাস্তিকরা নিজেরা বিশ্বাস করে তো?
এরপরে নাস্তিকরা অভিযোগ করে যেমন,
আল্লাহর ইচ্ছায় বিয়ে করেছেন বলে নবীর একটি বাচ্চাকে বিয়ে করা এবং তার সাথে যৌনসম্পর্ক স্থাপন করাকে গ্রহনযোগ্য প্রমাণ করা যায় না, বরং আল্লাহকেই আরও প্রশ্নবিদ্ধ করা যায়। আল্লাহর ইচ্ছায় নবী কোনো নিরপরাধ মানুষকে হত্যা করলে কি হত্যাটি গ্রহণযোগ্য হয়ে যাবে? না, বরং আল্লাহই প্রশ্নবিদ্ধ হবেন।
এর উত্তর হচ্ছে,নাস্তিক্যদৃষ্টিতে যেখানে অল্পবয়স্কা নারীকে বিয়ে করার স্বাধীনতা রয়েছে সেখানে আল্লাহর আদেশে নবী মোহাম্মদ (সা) ছয় বছরের মেয়েকে বিয়ে করেছেন এবং প্রাপ্তবয়স্কা হলে সংসার শুরু করেছেন এটাকে অনৈতিক বলার কোনো যুক্তি নেই। নাস্তিকদের কোনো সুযোগ নেই একে খারাপ দাবি করার। তাছাড়া কুরআনের কোন আয়াতে অথবা হাদিসের ঠিক কোথায় এই কথা বলা হয়েছে যে শিশুর সাথে সহবাস করা যাবে? বা নবী মোহাম্মদ (সা) কোথায় এই কথা বলেছেন যে শিশুর সাথে তোমরা সহবাস করো? তাই আল্লাহ বাচ্চা মেয়ের সাথে যৌনসম্পর্ক স্থাপন করতে বলেছেন এই কথা ডাহামিথ্যা। আল্লাহকে প্রশ্নবিদ্ধ করা তো দূরে থাক বরং ইসলাম নিয়ে নাস্তিকদের অন্ধবিশ্বাস গুলোকে প্রশ্নবিদ্ধ করা যায়। অল্পবয়স্কা মেয়েকে বিয়ে করলে ক্ষতি হতে পারে-এটাই যদি এই নৈতিকতাকে খারাপ বলে গণ্য করার কারণ হয় তাহলে যদি ক্ষতি না হয় তাহলে কেন নৈতিক হিসেবে গণ্য করা যাবে না?
নাস্তিক্যবাদ কোনো ধর্ম না, নাস্তিকতা মানুষের জীবন নিয়ে ডিল করে না কথা গুলো কিন্তু নাস্তিকরাই বলে বেড়ায়। তাহলে অল্প বয়স্কা নারীকে বিয়ে করা যাবে না এই বিধান নাস্তিকরা কেন বর্ণনা করে? নাস্তিকরা কেন অন্যের জীবন নিয়ে ডিল করতে যায়?এই প্রশ্ন গুলোকে ধামাচাপা দেবার উপায় আছে কি নাস্তিকগোষ্ঠীর কাছে? কোনো নাস্তিক নিজের ইচ্ছায় ছয় বছরের মেয়েকে বিয়ে করার মুক্তচিন্তা করতে পারবে না কেন? একজন পিতা নিজের ইচ্ছায় তার মেয়েকে বয়স্ক পুরুষের কাছে বিয়ে দেবার নৈতিকতা নিজের জন্য নির্ধারণ করার অধিকার রাখতে পারবে না কেন? একটি মেয়ে যদি আজীবন বয়স্কা পুরুষের সাথে সংসার করে যদি সুখে থাকতে চায় তবে সেটা কেন অনৈতিক হবে? নাস্তিক্যবাদ এসব সংশয়ের কি যৌক্তিক নৈতিকতা নির্ধারণ করবে? অন্যদিকে কুরআনের কোন আয়াতে আছে নিরপরাধ মানুষকে আল্লাহ হত্যা করতে বলেছেন? প্রেক্ষাপট গোপন না করে পারবেন এরকম একটি মাত্র আয়াত দেখাতে? যুদ্ধের আয়াত এখানে টেনে আইনেন না আবার। তাই যেখানে কুরআনে নিরপরাধ মানুষকে হত্যা করার কথাই নেই সেখানে যদি আল্লাহ অন্যায়ভাবে হত্যা করার আদেশ দেন তাহলে সেটা শিশু বিয়ের মতোই অনৈতিক হবে এই কথা বলা নিঃসন্দেহে নাস্তিকদের মিথ্যাচার। নাস্তিকরা যে ইসলাম নিয়ে মুক্তচিন্তায় মিথ্যাচার করে যাচ্ছে সেটা নিয়ে আমার সংশয় নেই।
নাস্তিকান্ধরা এরপরে অভিযোগ করে বলে,
বিয়ের প্রস্তাবে নাকি বিব্রত ছিল হযরত আবু বকর (রা)। এই দাবির পক্ষে হাদিস পেশ করে বুখারী,হাদিসঃ৫০৮১,সহিহ হাদিসঃ উরওয়া (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম আবূ বকর (রাঃ) - এর কাছে ‘আয়িশাহ্ (রাঃ) - এর বিয়ের পয়গাম দিলেন। আবূ বকর (রাঃ) বললেন, আমি আপনার ভাই। নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, তুমি আমার আল্লাহ্র দ্বীনের এবং কিতাবের ভাই। কিন্তু সে আমার জন্য হালাল।-ihadis.com
এতো নিন্মমানের দুর্বল অভিযোগ নাস্তিক প্রাণী ছাড়া কেউ করতে পারে না। আচ্ছা মিথ্যাচার না করে কি ইসলামের ভুল বের করতে পারে না নাস্তিকরা? আবু বকর (রা) নবীজি (সা)এর আপন ভাই ছিলেন না বরং দ্বীনের ভাই ছিলেন আর এটা উনি জানতেন না এটা পরিস্কার হাদিসে বুঝাই যাচ্ছে কিন্তু যখন নবীজি (সা) বললেন তখন উনি উনার জবাব পেয়ে আর কিছুই বলেন নাই। এই সাধারণ বিষয়কে মুসলিম বিদ্বেষীরা কিভাবে উপস্থাপনা করেছে দেখলেন তো? তর্কের খাতিরে ধরে নিলাম যে আবু বকর (রা) বিব্রত ছিল কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে কেউ যদি কিছু না জেনে প্রশ্ন করে বিব্রত হয় এটা কি অন্যায়? নাস্তিকরা আর কিভাবে মানুষকে ব্রেনওয়াশ করাতে চাচ্ছে?
নাস্তিকদের আরও হাস্যকর অভিযোগ পড়ুন। আমি পুরোটাই তুলে ধরছি,
নবী মোহাম্মদ (সা) একবার হামাগুড়ি দেয়া কন্যা শিশুকে দেখে বিয়ে করতে চেয়েছিলেন। এটাই প্রমাণ যে উনি শিশু কন্যা দেখেও উনার মনে যৌন আকর্ষণ কাজ করতো।
THE LIFE OF MUHAMMAD (A TRANSLATION OF ISHAQ'S SIRAT RASUL ALLAH) page 311 তে বর্ণিত হয়েছে যে Suhayli,ii.79: In the riwaya of Yunus I. I recorded that the apostle saw her (Ummul-Fadl) when she was a baby crawling before him and said, ‘If she grows up and I am still alive I will marry her.’ But he died before she grew up and Sufyan b. al-Aswad b.Abdul-Asad al-Makhzumi married her and she bore him Rizq and Lubaba. . .সুহায়লির ভাষ্য; ইউনুসের রেওয়াতে ইবনে ইসহাক বলেছেন যে উম্মুল ফজল যখন হামাগুড়ি দিচ্ছে যে কচি শিশু। তখন রাসুল করীম (সা) তাঁকে দেখেন এবং বলেন আমি যদি বেঁচে থাকি সে বড় হলে তাঁকে আমি বিয়ে করবো। কিন্তু সে বড় হওয়ার আগেই উনি ইন্তেকাল করেন। তাঁকে বিয়ে করেন সুফিয়ান ইবনে আল আসওয়াদ এবং তাঁর ঔরসে জন্ম হয় রিজক ও লুবাবা। - এই রেফারেন্স থেকে প্রমাণ হয় যে নবী মোহাম্মদ (সা) শিশুকামি ছিলেন অর্থাৎ হামাগুড়ি কচি শিশু দেখলেই উনার মনে বিবাহের ইচ্ছা জাগতো। তাহলে উনাকে শিশুকামি না বলার কি উপায় আছে?
আমি যখন প্রথম এই অভিযোগটি পড়ি তখন অনেক হেসেছিলাম। কারণটি জানলে আপনারাও আমার সাথে হাসবেন। কারণ কি জানেন? এই প্রমাণটি নবী মোহাম্মদ (সা)কে শক্তিশালী ভাবেই শিশুকামি হিসেবে প্রমাণ করে না। নাস্তিক প্রাণীদের যদি মানুষের মতো বুদ্ধি থাকতো তাহলে তারা সহজেই বিষয়টি বুঝে যেত অর্থাৎ নবী মোহাম্মদ (সা) কিন্তু নিজেই বলেছেন উম্মুল ফজল যদি বড় হয় তাহলে সে তাঁকে বিয়ে করবে এর মানে যেহেতু সে ছোট তাই উনাকে বিয়ে করবেন না আর এটাই সরাসরি প্রমাণ করে যে উনি শিশুকামি রোগে আক্রান্ত ছিলেনই না। তাছাড়া শিশু যৌন আকর্ষণ বোধকরা কোনো মানুষ বড় হওয়া পর্যন্ত কেন কষ্ট করে অপেক্ষা করতে যাবে? নতুন করে এই নিয়ম বানাতেন যে বড় হওয়া লাগবে না এই মুহূর্তেই আমার সাথে বিয়ে দেও, কিন্তু এরকম কি কোনো কথা নবী মোহাম্মদ (সা) বলেছিলেন? কেন উম্মুল ফজলকে শিশু অবস্থায় বিয়ে করলেন না? উনি নিজেই নিয়ম বানিয়ে চাইলেই পারতেন উম্মুল ফজলকে বিয়ে করতে কিন্ত করেন নাই কেন? সেক্স করার জন্যই নবীজি (সা) বিয়ে করতে চেয়েছিলেন এই কথার প্রমাণ কি নাস্তিকদের কাছে? উপরের দেয়া তথ্যে তো এমন কিছুই বর্ণিত নেই যেখানে নবীজি (সা) বলেছেন উম্মুল ফজলকে সেক্স করার জন্য বিয়ে করবো তাহলে নাস্তিকরা কেন মিথ্যা বলল? তাছাড়া নবী মোহাম্মদ (সা)যে সত্যিই আল্লাহর আদেশে আয়িশা (রা) বিয়ে করেন উম্মুল ফযলকে বিয়ে না করাটাও অন্যতম প্রমাণ হিসেবে গণ্য করলে ভুল হবে না। তাই বলাই যায় এই তথ্যকে কেন্দ্র করে নবী মোহাম্মদ (সা)যে শিশুকামি ছিলেন না এটাই প্রমাণ হয়। আরও মজার ব্যাপার হচ্ছে নবীজি (সা) শিশুকে বিয়ে করতে চেয়েছিলেন মর্মে ঘটনাটি সহিহ নয় বরং জইফ (৪)। নাস্তিকরা উক্ত ঘটনাকে বিকৃতি করে নিজেদের মিথ্যা মিশাতে পারবে দেখে সহিহ জইফ যাচাই না করেই ঘটনাটি দেখিয়েছে। এগুলো নাস্তিকদের ইসলামের বদনাম করার কৌশল। বোঝেন নি?
নাস্তিকদের হাস্যকর আরও অভিযোগ পড়ুন,
কুমারী মেয়েদের প্রতি আসক্ত ছিল নবী মোহাম্মদের (সা)। প্রমাণ হিসেবে এই হাদিস দেখায়, সহিহ বুখারী,হাদিসঃ ৫২১৩,সহিহ হাদিস,আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম - এর সুন্নত এই যে, যদি কেউ কুমারী মেয়ে বিয়ে করে, তবে তার সাথে সাত দিন-রাত্রি যাপন করতে হবে আর যদি কেউ কোন বিধবা মহিলাকে বিয়ে করে, তাহলে তার সঙ্গে তিন দিন যাপন করতে হবে।-ihadis.com
এই হাদিসের উপরেই অধ্যায়ে লেখা ছিল যে “আপন স্ত্রীদের মধ্যে ইনসাফ করা” এর নিচে কুরআনের আয়াত অর্থাৎ সুরা নিসা ৪ঃ ১২৯ নাম্বার আয়াতটি লেখা আছে। কুরআনের আয়াতে বর্ণিত হয়েছেঃ তোমরা কক্ষনো স্ত্রীদের মধ্যে সমতা রক্ষা করতে পারবে না যদিও প্রবল ইচ্ছা করো,তোমরা একজনের দিকে সম্পূর্ণরুপে ঝুঁকে পড়ো না এবং অন্যকে ঝুলিয়ে রেখো না। যদি তোমরা নিজেদেরকে সংশোধন করো এবং তাকওয়া অবলম্বন করো তবে আল্লাহ অতি ক্ষমাশীল,পরম দয়ালু।
উপরের হাদিসটি মূলত বর্ণনা করাই হয়েছে স্ত্রীদের মধ্যে ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করার উদ্দেশ্যে অথচ নাস্তিকরা হাদিস দেখিয়ে নিজেরা ব্যাখ্যা বানিয়েছে যে নবী মোহাম্মদ (সা) কুমারী নারীদের প্রতি আসক্ত ছিলেন। কি নির্লজ্জ মিথ্যাচার হযরত মোহাম্মদ (সা)কে নিয়ে করে নাস্তিক প্রাণীরা। হাদিসের কথায় এই কথা বর্ণিত হয়েছে যে নবী মোহাম্মদ (সা) কুমারি নারীর প্রতি আসক্ত ছিল? উক্ত হাদিস থেকে তো এরকম কিছুই বুঝা যায় না। পাঠক খেয়াল করুন। কুমারী মেয়ের সাথে বেশি সময় কাটানোর কথা কেন বলেছেন? একেবারে সহজ উত্তর কুমারী মেয়েদের যখন বিয়ে হয় তখন তারা দাম্পত্য জীবন নিয়ে জ্ঞান থাকে কম তাই সে স্বামীর সংসারে বেশি সময় দিলে সংসারের অবস্থা বুঝতে পারবে আর বিধবা নারী তো সংসারে সব কিছু বুঝেই, সে সময় কম দিলেও সমস্যা নেই। আয়েশা (রা) কি নিজেই বলেন নাই যে নবী মোহাম্মদ (সা) নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে অনেক সক্ষম ছিলেন? উপরের এটা স্পষ্ট প্রমাণিত হয়ে গিয়েছে আগেই যে নবী মোহাম্মদ (সা) অল্প বয়স্কা নারীর প্রতি যৌন আসক্তি ছিলেনই না।
আরেকটি হাস্যকর অভিযোগের কথা এখানে না বলে পারছি না । নাস্তিকরা আরেকটি হাদিস দেখিয়ে দাবি করেছে সেই হাদিসে নাকি ভয়ংকর মানসিকতার কথা বলা হয়েছে। সেই হাদিস কোনটি? এটি।
হাদিস সম্ভার,হাদিসঃ২৫৫৮,সহিহ হাদিসঃএকাধিক সাহাবী কর্তৃক বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমরা কুমারী বিবাহ কর। কারণ কুমারীদের মুখ অধিক মিষ্টি, তাদের গর্ভাশয় অধিক সন্তানধারী, তাদের যোনীপথ অধিক উষ্ণ, তারা ছলনায় কম হয় এবং স্বল্পে অধিক সমত্মুষ্ট থাকে।-hadithbd.com
এই হাদিসের মধ্যে ভয়ংকর মানসিকতার কথা হচ্ছে নাকি কুমারী মেয়েদের যৌনীপথ অধিক উষ্ণ। হাহাহাহাহা। দুঃখিত আমি হেসে ফেললাম। পুরো হাদিসটি কি পড়তে পারেনি নাস্তিকরা? পাঠক উপরের হাদিস পড়লে পরিস্কার বুঝাই যাচ্ছে এখানে সেসব কুমারী নারীদের কথা বলা হচ্ছে যারা সন্তান জন্ম দিতে সক্ষম। আর যেসব নারী সন্তান জন্ম দিতে সক্ষম তাদের যৌনীপথ উষ্ণ হতেই পারে। এতে অবাক হবার কিছুই নেই। তাছাড়া কুমারী মেয়েদের মুখ অধিক মিষ্টি হয় তারা ছলনাময় কম হয় এবং সল্পে অধিক খুশি থাকে এক কথায় কুমারী নারীদের প্রশংসা করা হয়েছে এখানে। কোনো খারাপ উদ্দেশ্যে এখানে কিছুই বলা হয় নাই। নবী মোহাম্মদ (সা)কে নিয়ে নাস্তিকরা অন্ধবিশ্বাস করে তাই উনাকে নিয়ে মিথ্যা কথা বানাতে বুক কাপে না নাস্তিকগোষ্ঠীর।
হুমায়ুন আজাদের বই পড়া নাস্তিকদের কাছে উক্ত সাধারণ কথাটি কেন ভয়ংকর মনে হচ্ছে? নিজের মায়ের সাথে যৌন সঙ্গম করা যাবে বলা নাস্তিকদের কাছে কেন এই সাধারণ কথাটি ভয়ংকর মনে হবে? আসলে হুমায়ুন আজাদের বই পড়া নাস্তিকরা এই হাদিসকে কেন ভয়ংকর হিসেবে দেখাতে চাচ্ছে জানেন? হুমায়ুন আজাদের “কবি অথবা দণ্ডিত অপুরুষ” বইতে এতো এতো নোংরা নির্লজ্জ বেহায়া বাণীর ঘটনা হুমায়ুন আজাদ বর্ণনা করেছে যে নাস্তিকরা নিজেদের গুরুর চরিত্র কিভাবে রক্ষা করবে সেটি নিয়েই স্বয়ং সংশয়ে ভুগছে কিন্তু কি আর করার? তাই মুক্তমনা অনুসারীদেরকে তো কিছু একটা দেখিয়ে নাস্তিক্যধর্ম ত্যাগ করা থেকে ফিরাতে হবে। তাই না? মুসলিমরা এই হাদিসকে নিয়ে কিছু মনে না করুক এটলিস্ট নাস্তিকরা এই হাদিসকে ভয়ংকর ভাবুক কারণ নাস্তিক্য বই-পত্রে এমন এমন কথা পাওয়া যায় যা স্বাভাবিক মানুষ তার পরিবার নিয়ে পড়ার রুচিবোধ করবে না। “কবি অথবা দণ্ডিত অপুরুষ” চটি বইয়ের নোংরামি থেকে সচেতনতার জন্য একটি রিভিউ সময় করে দিব কিন্তু আপাতত হুমায়ুন আজাদের লেখা বিখ্যাত একটি বই “আমার অবিশ্বাস” থেকে ছোট্ট একটি প্রমাণ দেখাই। এই বইয়ের ১৫ নং পৃষ্ঠায় বর্ণিত হয়েছেঃ
যখন শিশু ছিলাম,কিশোর হয়ে উঠেছি যখন,তখনও আমি সব কিছু চুষে দেখতে চেয়েছি,আজো অনেক কিছু চুষে আর চেখে দেখতে ইচ্ছা করে। ছেলেবেলা ভরে ইচ্ছে হতো চুলোর লাল আগুনের টুকরো গুলোকে চুষে দেখতে,ওগুলো লাল গোলাপের থেকেও লাল হয়ে জ্বলজ্বল করতো,সূর্যাস্তকেও চুষে স্বাদ নিতে ইচ্ছা হতো,কয়েক বছর আগে সারা সন্ধ্যা চুষতে চিবুতে ইচ্ছে হয়েছিল চুইংগামের মতো এক তরুণীকে।
নাস্তিক গাধারা কিন্তু এসব কথায় ভয়ংকর মানুসিকতার সন্ধান করে পাবে না। একজন অসহায় তরুণীকে সারা সন্ধ্যা চুষতে,চাবানোর মধ্যে নাস্তিকরা সাহিত্য খুঁজে পায়। আচ্ছা এই ধর্ষণ করার মুক্তচিন্তার সাহিত্য পড়ে নাস্তিকরা কি কি বিজ্ঞান আবিস্কার করবে? যেই নাস্তিকের বইতে অসহায় তরুণীকে এভাবে নির্মম ধর্ষণের মুক্তচিন্তার বর্ণনা পাওয়া যায় সেই নাস্তিকের “কবি অথবা দণ্ডিত অপুরুষ” বইতে কি লেভেলের মুক্তচিন্তার কথা থাকতে পারে? ভাবতে পারেন? “কুমারি নারীদের যৌনি পথ উষ্ণ” এই সাধারণ কথায় নাস্তিকরা ভয় পেয়েছে অথচ হুমায়ুন আজাদের মুক্তচিন্তা থেকে বর্ণিত সারা সন্ধ্যা তরুণীকে চুইংগামের মত চুষতে চাবানোর কথায় নাস্তিকরা সভ্যতা দেখে,সাহিত্য দেখে,বাক স্বাধীনতা দেখে। বাহ! বাহ! কি মুক্তচিন্তা। হাত তালি দিতে ইচ্ছে করছে আমার।
নাস্তিকরা এরপরে আরও হাস্যকর অভিযোগ করে বলে,
আয়েশাকে বিয়ে করে আবু বকরের সাথে নবীর দৃঢ় সম্পর্ক গড়ে তোলার কোনো প্রয়োজন ছিলো না। তার সাথে নবীর আগে থেকেই দৃঢ় সম্পর্ক ছিলো। আয়েশাকে বিয়ে করার আগে থেকেই তিনি নবীর ঘনিষ্ঠ ছিলেন।এছাড়াও, নবীর আবু বকরের মেয়েকে বিয়ে করে তার সাথে দৃঢ় সম্পর্ক গড়ে তোলার থাকলে তিনি আবু বকরের আরেক মেয়ে আসমা বিনতে আবু বকরকে বিয়ে করতে পারতেন, যিনি তার বোন আয়েশার চেয়ে বয়সে অনেক বড়ই ছিলেন এবং সেসময় বিবাহিত ছিলেন না।এটার উত্তর কি হবে?
হযরত মোহাম্মদ (সা) এর কি প্রয়োজন আর কি প্রয়োজন না এই বিধি-নিষেধ নাস্তিকরা নির্ধারণ করে দিবে কোন যুক্তিতে? নাস্তিক্যধর্মের দৃষ্টিতে নবী মোহাম্মদ (সা)এর সম্পূর্ণ স্বাধীনতা রয়েছে উনি কাকে বিয়ে করবেন আর কাকে করবেন না। নাস্তিকরা কি মানুষের ব্যক্তিস্বাধীনতায় বিশ্বাসী? যদি উত্তর হয় yes তাহলে মোহাম্মদ (সা) কাকে বিয়ে করবেন কাকে করবেন না এই ব্যক্তিস্বাধীনতা উনার আছে। যদি উত্তর হয় no তাহলে নাস্তিকরা অমানবিক-প্রতারক বলে প্রমানিত হয়ে যাচ্ছে। আয়েশা (রা)কে বিয়ে করার আগে থেকেই আবু বকর (রা) নবী (সা)এর নবীর ঘনিষ্ঠ ছিলেন- এরপরেও নবী মোহাম্মদ (সা) আয়েশা (রা) বিয়ে করেছেন প্রশ্ন হচ্ছে নাস্তিক্যধর্মের কোন যুক্তির দৃষ্টিতে এটা অনৈতিক? মোহাম্মদ (সা)এর কি বিয়ে করার স্বাধীনতা থাকবে না? আবু বকর (রা) উনার সন্তানকে কার সাথে দিয়ে দেবেন এই স্বাধীনতা করার অধকার উনাকে দেয়া হবে না? তর্কের খাতিরে যদি ধরেও নেই যে নবী মোহাম্মদ (সা)এর সাথে আবু বকর (রা) এর সম্পর্ক দৃঢ় করার প্রয়োজন নেই এরপরেও নবীজি (সা) আয়েশা (রা)কে বিয়ে করেছেন একে অমানবিক বলার যুক্তি নাস্তিকদের কাছে নেই। কারণ নাস্তিক্যধর্মের দৃষ্টিতে অল্প বয়সে বিয়ে করাটা অন্যায় নয়। নাস্তিকরা মানুষের জীবন নিয়ে ডিল করে না অথচ হযরত মোহাম্মদ (সা) কাকে বিয়ে করবেন কি করবেন না এই বিষয় নাস্তিকরা ডিল করতে চাচ্ছে। কি হাস্যকর এসব বিবর্তিত প্রাণীদের মগজ গুলো?
নাস্তিকরা এরপরে অভিযোগ করে,
ইসলামের দ্বিতীয় খলীফা হযরত উমর একজন অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়েকে বিয়ে করেছিলেন যার তখনো পিরিয়ড শুরু হয়নি। সেই মেয়েটির পিতা ছিল হযরত আলী। উমর রীতিমত জোরাজোরি করেই আলীর অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়ে উম্মে কুলসুমকে বিবাহ করেন বলে ইবনে সাদের তাবাকাত আল কাবীর গ্রন্থ Volume 8,page 299 থেকে জানা যায়। বর্ণিত হয়েছে,
Her mother was Fatima, the daughter of the Prophet. She married *Umar ibn al-Khattab when she was a young girl who had not yet reached puberty. She remained with him until he was killed and bore him Zayd and Ruqayya. Then she married 'Awn ibn Ja'far ibn Abi Talib, but he died. Then she married his brother, Muhammad ibn Ja'far, and he died. Then she married his brother, 'Abdullah ibn Ja'far, after her sister, Zaynab bint 'Ali. Umm Kulthum said, "I was not shy with Asma' bint 'Umays. Two of her sons died while married to me, but I did not fear this for the third." She died while married to him. She did not bear children to any of them.
It is related that 'Umar ibn al-Khattab asked 'Ali ibn Abi Talib for the hand of his daughter, Umm Kulthum. Ali said, "I am keeping my daughters for the sons of Ja'far." Umar said, "Marry her to me, Ali. By Allah, there is no man on the face of the earth who will treat her better than I will." 'Ali said. "I have done it." Umar went to the assembly of the Muhajirun sitting between the grave and the minbar. They were Ali, 'Uthman, az-Zubayr, Talha and 'Abdu'r-Rahman ibn *Awf. When anything came to 'Umar from abroad, he would come to them and inform them about that and consult with them about it. "Umar came and said, "Congratulate me" They congratulated him and said, "To whom, Amir al-Mu'minin?" He said, "To the daughter of 'Ali ibn Abi Talib." Then he told them that the Prophet said, "Every lineage and means will be cut off on the Day of Rising except my lineage and means." Then he added, "I accompanied him, and I wanted to have this as well."
When 'Umar ibn al-Khattab asked to marry 'Ali's daughter, Umm Kulthum, he said, "Amir al-Mu'minin, she is still a child." He said, "By Allah, that is not your intention. We know what your intention is." 'Ali commanded that she be prepared and then commanded that a striped garment be wrapped up. He said, "Take this to Amir alMu'minin and say, "My father has sent me to greet you. He says. "If you are pleased with the garment, keep it. If it displeases you, return it.**** When she went to 'Umar, he said, "May Allah bless you and your father. We are pleased." She went back to her father and said, "He did not undo the garment nor look at anything except at me." So he married her to him and she bore him a son called Zayd.
এই ঘটনাটিও সহিহ নয় (৫)। এরপরেও তর্কের খাতিরে যদি ধরেও নেই তাহলে পাঠক একবার কল্পনা করুন কতবড় মিথ্যুকবাজ হলে বলতে পারে উমার (রা) নাকি জবরদস্তি করেছিল বিয়ে করার জন্য অথচ উমার (রা) নিজেই বলেছেন যে Umar said, "Marry her to me, Ali. By Allah, there is no man on the face of the earth who will treat her better than I will ভাবানুবাদঃ উমর (রাঃ) বললেন, আলী, তাকে আমার সাথে বিয়ে দাও। আল্লাহর কসম, পৃথিবীতে এমন কোন মানুষ নেই যে তার সাথে আমার চেয়ে উত্তম ব্যবহার করবে। উমার (রা) সেই অল্প বয়সী নারীর সাথে ভালো আচরণ করবে এমন প্রস্তাব দিচ্ছে অথচ ইসলামের সমালোচকরা বলছে উমার নাকি জবরদস্তি করেছে। মিথ্যা বলতে নাস্তিকগোষ্ঠীর বুক কাপে না। কেন জানেন? কারণ এরা মিথ্যুকবাজ অমানুষ।
তর্কের খাতিরে যদি ধরেও নেই উমার (রা) জোরাজোরি করেছেন আলী (রা) এর মেয়েকে বিয়ে করতে তাহলে নাস্তিক্যধর্মের দৃষ্টিতে প্রশ্ন হচ্ছে জোরাজোরির ফলে কি কারও কোনো ক্ষতি হয়েছে? অবশ্যই না। তাই উমার (রা) যদি জোরাজোরি করে বিয়ে করেও থাকে এরফলে যেহেতু কারও ক্ষতি হয়নি সেহেতু যুক্তি অনুযায়ী নাস্তিকদের সুযোগ নেই উমার (রা) এর বিয়েকে খারাপ বলার।
আয়িশা কেন প্রতিবাদ করেনি?
নাস্তিকরা বলে থাকে,
আয়িশা আসলে নবী মোহাম্মদকে ভয় পেতো এই কারণে নবীর বিরুদ্ধে কিছু বলতে সাহস পেতো না। কারণ ইসলামের শরিয়তের বিধান অনুসারে, নবী মুহাম্মদের যেকোন সমালোচনাকারী শাতিমে রাসুল হিসেবে গণ্য এবং সে মৃত্যুদণ্ডের উপযুক্ত ব্যক্তি। আয়িশা যদি সাহস করে নবীর সম্পর্কে অভিযোগ করতোও, তাহলে তাকে কী আর জীবিত থাকতে দেয়া হতো? আয়িশা কী এটি জানতেন না যে, নবীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করলে তার ফলাফল কী হতে পারে? সেই সময়ে খলিফা কারা ছিলেন? তার পিতা আবু বকর, উমর, উসমান আলী, এরা। এরা সকলেই ছিল নবীর খুবই ঘনিষ্ঠ এবং নবীর নামেই তাদের সাম্রাজ্য বিস্তার এবং খিলাফতের প্রধান হওয়ার সুযোগ হয়েছে। তারা কী এরকম কথা সহ্য করতো? পৃথিবীতে অনেক অপরাধ ঘটে, যেখানে ভিক্টিমের কোন অভিযোগ পাওয়া যায় না। ভিক্টিমের অভিযোগ পাওয়া না গেলেই অপরাধটি ঘটেনি, এরকম বলা শুধু হাস্যকরই নয়, প্রতারণাও বটে। আমাদের দেশের নানীদাদীদের অনেকেই সারাজীবন স্বামীর দ্বারা নির্যাতনের শিকার হয়েছে। স্বামীর মৃত্যুর পরে তারা কেউই স্বামীর নামে অভিযোগ করেননি।
নাস্তিকরা দাবি করছে যে আয়িশা নবীকে ভয় পেতেন দেখেই নবীর বিরুদ্ধে কিছু বলে নাই- কিন্তু এই দাবির পক্ষে একটি প্রমাণও নেই। আয়িশা (রা) এর হাদিস গুলো মনোযোগ দিয়ে পাঠ করলেই বুঝা যায় নাস্তিকরা এখানে নকল মায়াকান্না দেখাতে চাচ্ছে। এমন একটি সহিহ হাদিস নেই যেখানে লেখা আছে আয়িশা (রা) নবীকে পছন্দ করতেন না অথবা ভয় পেতেন অথবা নবী আয়িশাকে অত্যাচার করতেন। উপরের অভিযোগটি সম্পূর্ণটাই মিথ্যা কথা সেটা স্পষ্ট। কারণ নবী মোহাম্মদ (সা) উনাকে আয়িশা (রা)কে ছেড়ে যাবার অনুমতি দিয়েছিলেন কিন্তু আয়িশা (রা) নিজ থেকেই এমনকি উনার পিতামাতার সাথে পরামর্শ না করেই সেচ্ছায়, নির্ভয়ে স্পষ্ট বলেছিলেন উনি নবী মোহাম্মদ (সা)এর সাথেই থাকবেন। তাহলে নবী মোহাম্মদ (সা)কে যদি আয়িশা (রা) পছন্দ না করবেন অথবা ঘৃণা করবেন তাহলে অবশ্যই উনি নবী মোহাম্মদ (সা) থেকে তালাক নিতেই পারতেন। কারণ উনাকে সেই সুযোগ দিয়ে রাখা হয়েছিলই।
আল্লাহ তাঁর রাসুলকে আদেশ দিচ্ছেন সুরা আহযাব ৩৩ঃ২৮ আয়াতেঃ
হে নবী, আপনার পত্নীগণকে বলুন, তোমরা যদি পার্থিব জীবন ও তার বিলাসিতা কামনা কর, তবে আস, আমি তোমাদের ভোগের ব্যবস্থা করে দেই এবং উত্তম পন্থায় তোমাদের বিদায় নেই।
সুনানে আন নাসায়ী, হাদিসঃ ৩২০২, সহিহ হাদিসঃ
আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর স্ত্রীগণকে তাঁর দাম্পত্য বন্ধনে থাকা না থাকার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহনের স্বাধিকার দিয়েছিলেন। তা কি তালাক বিবেচিত হয়েছিল ? অর্থাৎ এতে তাঁরা তালাক হননি।-ihadis.com
সুনানে আন নাসায়ী, হাদিসঃ ৩২০৩, সহিহ হাদিসঃ
আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদেরকে ‘ইখতিয়া’র দিলে আমরা তাঁকেই গ্রহন করলাম তা কখনো তালাক বলে গণ্য হয়নি।-ihadis.com
সহিহ বুখারি, হাদিসঃ ৪৭৮৫ ও ৪৭৮৬, সহিহ হাদিসঃ
লায়স (রহ.) থেকে বর্ণিতঃ নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সহধর্মিণী ‘আয়িশাহ (রাঃ) বলেন, যখন রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে তাঁর সহধর্মিণীদের ব্যাপারে দু’টি পন্থার একটি পন্থা বেছে নেয়ার নির্দেশ দেয়া হল, তখন তিনি প্রথমে আমাকে বললেন, তোমাকে একটি বিষয় সম্পর্কে বলব। তাড়াহুড়ো না করে তুমি তোমার আব্বা ও আম্মার সঙ্গে পরামর্শ করে নিবে। ‘আয়িশাহ (রাঃ) বলেন, তিনি অবশ্যই জানতেন, আমার আব্বা-আম্মা তাঁর থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার কথা বলবেন না। ‘আয়িশাহ (রাঃ) বলেন, এরপর তিনি বললেন, আল্লাহ্ তা‘আলা বলেছেনঃ يَا أَيُّهَا النَّبِيُّ قُلْ لِأَزْوَاجِكَ إِنْ كُنْتُنَّ تُرِدْنَ الْحَيَاةَ الدُّنْيَا وَزِينَتَهَا إِلَى أَجْرًا عَظِيمًا “হে নাবী! আপনি আপনার স্ত্রীগণকে বলুন, তোমরা যদি পার্থিব জীবন ও তার ভূষণ কামনা কর.....মহা প্রতিদান পর্যন্ত। ‘আয়িশাহ (রাঃ) বলেন, এ ব্যাপারে আমার আব্বা-আম্মার সঙ্গে পরামর্শের কী আছে? আমি তো আল্লাহ্, তাঁর রসূল এবং আখিরাতের জীবন কামনা করি। ‘আয়িশাহ (রাঃ) বলেনঃ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর অন্যান্য সহধর্মিণী আমার মতই জবাব দিলেন।-ihadis.com
সুনানে আন নাসায়ী, হাদিসঃ ৩২০১, সহিহ হাদিসঃ
আবূ সালামা ইব্ন আবদুর রহমান (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – এর স্ত্রী আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি তাঁর নিকট বর্ণনা করেছেন, আল্লাহ্ তা’আলা যখন রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম – কে তাঁর স্ত্রীগণকে দাম্পত্য সম্পর্ক ছিন্ন করার ব্যাপারে ‘ইখতিয়ার’ (স্বাধিকার) প্রদানের আদেশ করলেন, আয়েশা (রাঃ) বলেন, তখন রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাকে দিয়েই আরম্ভ করলেন। তিনি বললেনঃ আমি তোমার নিকট একটি কথা বলব, কিন্তু তুমি সে ব্যাপারে তোমার পিতামাতার পরামর্শ গ্রহনের পূর্বে অবিলম্বে সে সম্বন্ধে মতামত প্রকাশ করবে না। কারন তিনি জানতেন, আমার মাতাপিতা তাঁর কাছ থেকে বিচ্ছেদের পরামর্শ আমাকে দেবেন না। তারপর রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ (কুরআনের ভাষা অনুসারে) “হে নবী। আপনি আপনার স্ত্রীগণকে বলুন, যদি তোমরা পার্থিব জীবন এবং এর সাজসজ্জা কামনা কর; তবে আসো, আমি তোমাদের ভোগ সামগ্রীর ব্যবস্থা করে দেই এবং সৌজন্যের সাথে তোমাদের বিদায় দেই (৩৩:২৮)। আমি বললামঃ এ ব্যাপারে আমি আমার পিতামাতার নিকট পরামর্শ করব? আমি তো আল্লাহ্, আল্লাহ্র রাসূল এবং আখিরাতের জীবন কামনা করি।-ihadis.com
এরপরে নাস্তিকরা অভিযোগ করে,
আবু বকর এবং উমর দুইজনই নবীর সাথে সামান্যতম বেয়াদবির জন্য আয়িশা এবং হাফসাকে রীতিমত মারধোর করতেন বলেও সহিহ হাদিস থেকে জানা যায়। নবী মুহাম্মদ যখন আয়িশা এবং হাফসাকে তালাক দেয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, সেই সময়েও আবু বকর এবং ওমর নবীর পক্ষেই উকালতি করেছেন। নিজের মেয়েদের পাশে দাঁড়াননি। সেই সময়ে আয়িশা এবং হাফসা নবীর কাছে খোরপোষ দাবী করেছিল। এই দাবীর কারণে খোদ নবীর সামনেই আবু বকর এবং উমর আয়িশা এবং হাফসাকে কিলঘুষি মারেন। যেই মেয়েদের নিজের পিতা তাদের মারধোর করতো এই কারণে যে, তারা তাদের স্বামী নবী মুহাম্মদের সাথে সামান্যতম দ্বিমত করেছে, ন্যায্য দাবী করেছে, সেই মেয়েরা কীভাবে তাদের পিতার শাসনামলে তাদের মৃত স্বামী সম্পর্কে অভিযোগ করবে? এটি কী কখনো সম্ভব?
সহীহ মুসলিম,হাদিস, ৩৫৫৭, সহিহ হাদিস, যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) … জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আবূ বকর (রাঃ) এসে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকটে উপস্থিতির অনুমতি প্রার্থনা করলেন। তিনি তার দরজায় অনেক লোককে উপবিষ্ট দেখতে পেলেন। তবে তাদের কাউকে ভেতরে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয় নি। তিনি (বর্ণনাকারী) বলেন, এরপর তিনি আবূ বকর (রাঃ) কে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হলে তিনি প্রবেশ করলেন। এরপর উমর (রাঃ) এলেন এবং তিনি অনুমতি প্রার্থনা করলেন। তখন তাকেও প্রবেশের অনুমতি প্রদান করা হল। তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে চিন্তিত ও নীরব বসে থাকতে দেখলেন আর তখন তার চতুষ্পার্শ্বে তাঁর সহধর্মিনীগণ উপবিষ্টা ছিলেন। তিনি (বর্ণানাকারী জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ)) বলেন, উমর (রাঃ) বললেনঃ নিশ্চয়ই আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকটে এমন কথা বলব যা তাঁকে হাসাবে। এপর তিনি বললেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আপনি যদি দেখতেন খারিজার কন্যা (উমর (রাঃ) এর স্ত্রী) আমার কাছে খোরপোষ তলব করছিল। আমি তার দিকে উঠে গেলাম এবং তার ঘাড়ে ঘুষি মারলাম। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হেসে উঠলেন এবং বললেন, আমার চতুষ্পার্শ্বে তোমরা যাদের দেখতে পাচ্ছ তারা আমার কাছে খোরপোষ দাবী করছে। অমনি আবূ বকর (রাঃ) আয়িশা (রাঃ) এর দিকে ছুটলেন এবং তাঁর গর্দানে ঘুষি মারলেন। উমর (রাঃ)ও দাঁড়িয়ে গেলেন এবং হাফসা (রাঃ) এর দিকে অগ্রসর হয়ে তাঁর ঘাড়ে ঘুষি মারলেন।
তাঁরা উভয়ে বললেন, তোমরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এমন জিনিস দাবী করছে যা তাঁর কাছে নেই। তখন তাঁরা (নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সহধর্মিনীগণ) বললেন, আল্লাহর কসম! আমরা আর কখনো রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এমন জিনিস চাইব না যা তাঁর কাছে নেই। এরপর তিনি তাঁদের (তাঁর সহধর্মিনীগণের) থেকে একমাস কিংবা ঊনত্রিশ দিন পৃথক রইলেন। এপর তাঁর প্রতি এই আয়াত নাযিল হলঃ (অর্থ) “হে নবী! আপনি আপনার সহধর্মিনীদের বলে দিন, তোমরা যদি পার্থিব জীবনের ভোগ ও এর বিলাসিতা কামনা কর, তাহলে এসো আমি তোমাদের ভোগ-বিলাসে ব্যবস্থা করে দেই এবং সৌজন্যের সাথে তোমাদের বিদায় করে দেই। আর যদি তোমরা আল্লাহ, তাঁর রাসুল ও পরকালকে কামনা কর তাহলে তোমাদের মধ্যে যারা সৎকর্মপরায়ন আল্লাহ তাদের জন্য মহা প্রতিদান প্রস্তুত করে রেখেছেন।” (আহযাবঃ ২৮ ২৯)
তিনি [জাবির (রা)] বলেন, তিনি (রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আয়িশা (রাঃ) কে দিয়ে (আয়াতের নির্দেশ তামীল করতে) শুরু করলেন। তখন তিনি বললেন, হে আয়িশা! আমি তোমার কাছে একটি (গুরত্বপূর্ণ) বিষয়ে আলাপ করতে চাই। তবে সে বিষয়ে তোমার পিতা-মাতার সঙ্গে পরামর্শ না করে তোমার ত্বরিত সিদ্ধান্ত গ্রহণ না করাই আমি পছন্দ করি। তিনি বললেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ! সে বিষয়টা কি (আমি জানতে পারি)? তখন তিনি তার কাছে এই আয়াত তিলাওয়াত করলেন। তিনি বললেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আপনার ব্যাপারে আমি কি আমার পিতা-মাতার কাছে পরামর্শ নিতে যাব? (এর কোন প্রয়োজন নেই)। না, বরং আমি আল্লাহ, তাঁর রাসুল ও আখিরাতকেই বেছে নিয়েছি। তবে আপনার সকাশে আমার একান্ত নিবেদন, আমি যা বলেছি সে সম্পর্কে আপনি আপনার অন্যান্য সহধর্মিনীগণের কারো কাছে ব্যক্ত করবেন না। তিনি বললেন, তাদের যে কেউ সে বিষয় আমাকে জিজ্ঞাসা করলে আমি অবশ্যই তাঁকে তা বলে দিব। কারণ আল্লাহ আমাকে কঠোরতা আরোপকারী ও হঠকারীরূপে নয় বরং সহজ পন্থায় (শিক্ষাদানকারী) হিসাবে প্রেরণ করেছেন।-hadithbd.com
পাঠক আপনাদেরকে বলবো, আপনারা লম্বা হাদিসটি মনোযোগ দিয়ে পাঠ করুন। নিজেই বুঝতে পারবেন এখানে যে ওমার (রা) ও আবু বকর (রা) এর ঘুষি মারার কথা রয়েছে সেটা ঠাট্টাপূর্ণ অথবা দুষ্টামির ছলনায় মজা করে উনারা ঘুষি মেরেছেন। নির্যাতন অথবা অত্যাচার অর্থে নয়। কারণ উক্ত হাদিসেই স্পষ্ট করে বলা হয়েছে যে,
তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে চিন্তিত ও নীরব বসে থাকতে দেখলেন আর তখন তার চতুষ্পার্শ্বে তাঁর সহধর্মিনীগণ উপবিষ্টা ছিলেন। তিনি (বর্ণানাকারী জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ)) বলেন, উমর (রাঃ) বললেনঃ নিশ্চয়ই আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকটে এমন কথা বলব যা তাঁকে হাসাবে। এপর তিনি বললেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আপনি যদি দেখতেন খারিজার কন্যা (উমর (রাঃ) এর স্ত্রী) আমার কাছে খোরপোষ তলব করছিল। আমি তার দিকে উঠে গেলাম এবং তার ঘাড়ে ঘুষি মারলাম। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হেসে উঠলেন এবং বললেন, আমার চতুষ্পার্শ্বে তোমরা যাদের দেখতে পাচ্ছ তারা আমার কাছে খোরপোষ দাবী করছে। অমনি আবূ বকর (রাঃ) আয়িশা (রাঃ) এর দিকে ছুটলেন এবং তাঁর গর্দানে ঘুষি মারলেন। উমর (রাঃ)ও দাঁড়িয়ে গেলেন এবং হাফসা (রাঃ) এর দিকে অগ্রসর হয়ে তাঁর ঘাড়ে ঘুষি মারলেন।
নাস্তিকরা তো নিজের পিতামাতা থেকে দূরে থাকে এই কারণে কোনটা নির্যাতন আর কোনটা আদরের সেই বিষয়ের পার্থক্য তারা করতে পারে না। এরপরে পুরো হাদিসটি লক্ষ্য করলে এটাও স্পষ্ট হয় যে নবী মোহাম্মদ (সা) নিজেই উনার সকল স্ত্রীদেরকে এই সুযোগ দিয়েছিলেন যে উনার সব স্ত্রীরা চাইলেই উনাকে ছেড়ে দিতে পারেন উনাকে তালাক দিতে পারেন। পড়ুন।
তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আয়িশা (রাঃ) কে দিয়ে (আয়াতের নির্দেশ তামীল করতে) শুরু করলেন। তখন তিনি বললেন, হে আয়িশা! আমি তোমার কাছে একটি (গুরত্বপূর্ণ) বিষয়ে আলাপ করতে চাই। তবে সে বিষয়ে তোমার পিতা-মাতার সঙ্গে পরামর্শ না করে তোমার ত্বরিত সিদ্ধান্ত গ্রহণ না করাই আমি পছন্দ করি। তিনি বললেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ! সে বিষয়টা কি (আমি জানতে পারি)? তখন তিনি তার কাছে এই আয়াত তিলাওয়াত করলেন। তিনি বললেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আপনার ব্যাপারে আমি কি আমার পিতা-মাতার কাছে পরামর্শ নিতে যাব? (এর কোন প্রয়োজন নেই)। না, বরং আমি আল্লাহ, তাঁর রাসুল ও আখিরাতকেই বেছে নিয়েছি। তবে আপনার সকাশে আমার একান্ত নিবেদন, আমি যা বলেছি সে সম্পর্কে আপনি আপনার অন্যান্য সহধর্মিনীগণের কারো কাছে ব্যক্ত করবেন না। তিনি বললেন, তাদের যে কেউ সে বিষয় আমাকে জিজ্ঞাসা করলে আমি অবশ্যই তাঁকে তা বলে দিব। কারণ আল্লাহ আমাকে কঠোরতা আরোপকারী ও হঠকারীরূপে নয় বরং সহজ পন্থায় (শিক্ষাদানকারী) হিসাবে প্রেরণ করেছেন।
আয়িশা (রা) যদি নবী মোহাম্মদ (সা)কে ঘৃণা করতেন, ভয় পেতেন, স্বামী হিসেবে পছন্দ না করতেন তাহলে উনি তো তালাক সহজে নিতে পারতেন? স্বয়ং নবী মোহাম্মদ (সা) উনাকে সেই সুযোগ দিয়ে রেখেছিলেন। কিন্তু উনি তালাক দেন নাই। এটাই প্রমাণ করে যে উনি উনার স্বামীকে মন থেকেই ভালোবাসতেন। নাহলে কেন তালাক নিবেন না? সুযোগ দেয়া সত্ত্বেও?
এরপরে নাস্তিকরা বলে,
একবার নবী মুহাম্মদ ও তার অনুসারীদের জন্য পানির ব্যবস্থা করতে দেরী হওয়ায়, আবু বকর আয়িশার কোমরে আঘাত করলেন। এমনকি, একটি গলার হার হারিয়ে ফেলায় নবীর বিরক্তি উৎপাদন করার জন্যেই আবু বকর আয়িশাকে প্রচণ্ড জোরে থাপ্পড় দিয়েছিলেন বলে জানা যায়। নবীর এরকম অনুগত একজন মানুষ যার পিতা, সেই মেয়েটি তার বাবার খিলাফত আমলে বাবার কাছে নবী সম্পর্কে অভিযোগ করবে, এরকম কল্পনা করাও হাস্যকর। তাই আয়িশা নিজের পিতার ভয়েও নবীর বিরুদ্ধে কিছু বলেন নাই।
সহিহ বুখারী, হাদিসঃ ৬৮৪৪, সহিহ হাদিস, আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, একবার আবূ বকর (রাঃ) এলেন। এ সময় রসূলুল্লাহ্ (সাল্লালাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) স্বীয় মাথা আমার উরুর ওপর রেখে আছেন। তখন তিনি বললেন, তুমি রসূলুল্লাহ্ (সাল্লালাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও লোকদেরকে আটকে রেখেছ, এদিকে তাদের পানির কোন ব্যবস্থা নেই। তিনি আমাকে তিরস্কার করলেন ও নিজ হাত দ্বারা আমার কোমরে আঘাত করতে লাগলেন। আর রসূলুল্লাহ (সাল্লালাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – এর অবস্থানই আমাকে নড়াচড়া হতে বিরত রেখেছিল। তখন আল্লাহ্ তায়াম্মুমের আয়াত অবতীর্ণ করলেন।-ihadis.com
সহিহ বুখারী, হাদিসঃ ৬৮৪৫, সহিহ হাদিস, আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, একবার আবূ বাকর (রাঃ) এলেন ও আমাকে খুব জোরে ঘুষি মারলেন আর বললেন, তুমি লোকজনকে একটি হারের জন্য আটকে রেখেছ। আমি রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর অবস্থানের দরুন মরার মত ছিলাম। অথচ তা আমাকে খুবই কষ্ট দিয়েছে। সামনে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন। لَكَزَ- وَوَكَزَ একই অর্থের।-ihadis.com
সহীহ বুখারী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন),হাদিস,৪২৫৩, সহিহ হাদিস,ইয়াহইয়া ইবনু সুলায়মান (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) বলেছেন, মদিনায় প্রবেশের পথে বায়দা নামক স্থানে আমার গলার হারটি পড়ে গেল। এরপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সেখানে উট বসিয়ে অবস্থান করলেন। তিনি আমার কোলে মাথা রেখে শুয়েছিলেন। আবূ বকর (রাঃ) এসে আমাকে কঠোরভাবে থাপ্পড় লাগালেন এবং বললেন একটি হার হারিয়ে তুমি সকল লোককে আটকে রেখেছ। এদিকে তিনি আমাকে ব্যথা দিয়েছেন, অপর দিকে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ অবস্থায় আছেন, এতে আমি মৃত্যু যাতনা ভোগ করছিলাম। তারপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জাগ্রত হলেন, ফজর সালাত (নামায/নামাজ)-এর সময় হল এবং পানি খোঁজ করে পাওয়া গেল না, তখন নাযিল হলঃيَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِذَا قُمْتُمْ إِلَى الصَّلاَةِ الآيَةَ হে মু’মিনগণ, যখন তোমরা সালাতের জন্য প্রস্তুত হবে তখন তোমরা তোমাদের মুখমন্ডল ও হাত কণুই পর্যন্ত ধৌত করবে। (৫ঃ ৬) এরপর উসায়দ ইবনু হুযায়র বললেন, হে আবূ বকরের বংশধর! আল্লাহ তা’আলা তোমাদের কারণে মানুষের জন্য বরকত নাযিল করেছেন। তোমাদের আপাদ মস্তক তাদের জন্য বরকতই বরকত।-hadithbd.com
সহীহ বুখারী (তাওহীদ পাবলিকেশন),হাদিস ৪৬০৮, সহিহ হাদিস, ’আয়িশাহ (রাঃ) বলেছেন, মদিনা্য় প্রবেশের পথে বাইদা নামক স্থানে আমার গলার হারটি পড়ে গেল। এরপর নবী সাল্লাল্লাহু ’আলাইহি ওয়াসাল্লাম সেখানে উট বসিয়ে অবস্থান করলেন। তিনি আমার কোলে মাথা রেখে শুয়েছিলেন। আবূ বকর (রাঃ) এসে আমাকে জোরে থাপ্পড় লাগালেন এবং বললেন একটি হার হারিয়ে তুমি সকল লোককে আটকে রেখেছো। এদিকে তিনি আমাকে ব্যথা দিয়েছেন, অপরদিকে রাসূল সাল্লাল্লাহু ’আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ অবস্থায় আছেন, এতে আমি মৃত্যু যাতনা ভোগ করছিলাম। তারপর রাসূল সাল্লাল্লাহু ’আলাইহি ওয়াসাল্লাম জাগ্রত হলেন, ফজর সালাতের সময় হল এবং পানি খোঁজ করে পাওয়া গেল না, তখন অবতীর্ণ হলঃيٓٓأَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوْآ إِذَا قُمْتُمْ إِلَى الصَّلَاةِ فَاغسْلُوْا وَجُوْهكُم …..ওহে যারা ঈমান এনেছ! তোমরা যখন সালাতের জন্য দাঁড়াতে চাও তখন ধৌত করে নিবে নিজেদের মুখমন্ডল এবং হাত কনুই পর্যন্ত। (সূরাহ আল-মায়িদাহ ৫/৬) এরপর উসায়দ ইবনু হুযায়র বললেন, হে আবূ বকরের বংশধর! আল্লাহ তা’আলা তোমাদের কারণে মানুষের জন্যে বারাকাত অবতীর্ণ করেছেন। মানুষের জন্য তোমরা হলে কল্যাণ আর কল্যাণ।-hadithbd.com
সহীহ বুখারী (তাওহীদ পাবলিকেশন),হাদিস,৬৮৪৫, সহিহ হাদিস, ’আয়িশাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার আবূ বকর (রাঃ) এলেন ও আমাকে খুব জোরে ঘুষি মারলেন আর বললেন, তুমি লোকজনকে একটি হারের জন্য আটকে রেখেছ। আমি রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর অবস্থানের দরুন মরার মত ছিলাম। অথচ তা আমাকে খুবই কষ্ট দিয়েছে। সামনে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন। لَكَزَ- وَوَكَزَএকই অর্থের।-hadithbd.com
উপরের হাদিস গুলোর মধ্যেই স্পষ্ট জবাব রয়েছে। নাস্তিকদের মগজ তো আসলে প্রাণী থেকে বিবর্তিত এই কারণে মানুষের মতো নাস্তিকরা চিন্তা করতে পারছে না। আপনি একটু খেয়াল করে দেখুন তো আমাদের জীবনে আমাদের পিতামাতারা অনেক সময় আমাদেরকে শাসন করে থাকতেন। আমাদেরকে মারতেন। এখন কেউ যদি বলে আমাদের পিতামাতা আসলে অত্যাচারী তাহলে ব্যাপারটা কেমন হাস্যকর দাড়ায় না? আবু বকর (রা) উনার মেয়েকে শাসন করতেই পারেন এখানে আপত্তি করবার যুক্তি নেই।
সহিহ বুখারী, হাদিসঃ ৬৮৪৪, সহিহ হাদিস,
আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, একবার আবূ বকর (রাঃ) এলেন। এ সময় রসূলুল্লাহ্ (সাল্লালাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) স্বীয় মাথা আমার উরুর ওপর রেখে আছেন। তখন তিনি বললেন, তুমি রসূলুল্লাহ্ (সাল্লালাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও লোকদেরকে আটকে রেখেছ, এদিকে তাদের পানির কোন ব্যবস্থা নেই। তিনি আমাকে তিরস্কার করলেন ও নিজ হাত দ্বারা আমার কোমরে আঘাত করতে লাগলেন। আর রসূলুল্লাহ (সাল্লালাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – এর অবস্থানই আমাকে নড়াচড়া হতে বিরত রেখেছিল। তখন আল্লাহ্ তায়াম্মুমের আয়াত অবতীর্ণ করলেন।-ihadis.com
একজন পিতা নিজের সন্তানকে শাসন করবে না তো কাকে শাসন করবেন। অবশ্যই পিতার অধিকার রয়েছে নিজের সন্তানদেরকে শাসন করার। হাদিস থেকেই স্পষ্ট বুঝা যাচ্ছে যে আয়িশা (রা) এর কারণে বাকি সবার কষ্ট হয় এমনকি সবাই আটকিয়ে ছিল দেখেই উনার পিতা উনাকে শাসন করেছিলেন। আমাদের দৈনন্দিন জীবনেও দেখা যায়, যেমন অনেক সময় বাসায় মেহমান আসলে শরবত বানাতে বললে লেট হলে মা অথবা বাবা বকা দেন অথবা মারধর করেন আবার গুরুত্বপূর্ণ কিছু হারিয়ে ফেললেও বকা ও মার খেতে হয়। তাই সার্বিক তথ্য প্রমাণ সামনে রেখে এসব হাদিস থেকে এটা কোনোভাবেই প্রমাণ হয় না যে আয়িশা (রা) নিজের বাবার ভয়ে জবরদস্তি নবী মোহাম্মদ (সা) সাথে ছিলেন। মিথ্যুকবাজ নাস্তিকরা হয়তো জানেই না ইসলামে মেয়ে বিয়ে ভেঙ্গে ফেলার অধিকার রাখে।
সহিহ বুখারী, হাদিসঃ ৫১৩৮, সহিহ হাদিস,
খান্সা বিনতে খিযাম আল আনসারইয়্যাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বর্ণনা করেন যে, যখন তিনি অকুমারী ছিলেন তখন তার পিতা তাকে বিয়ে দেন। এ বিয়ে তিনি অপছন্দ করলেন। এরপর তিনি রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর কাছে আসলেন। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এ বিয়ে বাতিল করে দিলেন।-ihadis.com
সহীহ বুখারী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন), হাদিসঃ ৪৭৬২, সহিহ হাদিস,
ইসমাঈল (রহঃ) ... খানসা বিনতে খিযাম আল আনসারিয়া (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বর্ণনা করেন যে, যখন তিনি বয়স্কা ছিলেন তখন তার পিতা তাকে শাদী দেন। এ শাদী তার পছন্দ ছিল না। এরপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে গেলে তিনি এ শাদী বাতিল করে দেন।-hadithbd.com
নাস্তিকরা যেই হাদিস গুলো দেখিয়েছে সেখান থেকে এটা প্রমাণ হয় না যে আয়িশা (রা) নিজের বাবার ভয়ে নবীর বিরুদ্ধে কিছু বলেন নাই। এছাড়া নবী মোহাম্মদ (সা)কে উনার এক স্ত্রী পছন্দ না করলে উনি সেই স্ত্রীকে সম্মানের সাথে বাসায় ফিরিয়ে দেন এমনকি দুটো কাতান কাপড় উপহার দেন। সেই স্ত্রী নবী মোহাম্মদ (সা)কে বাজারি পর্যন্ত বলে সম্বোধন করেন এরপরেও নবীজি মোহাম্মদ (সা) সেই নারীকে কিছুই বলেন নাই উল্টো উপহার দিয়ে বাসায় পৌছিয়ে দিয়েছেন। তাই যেই নাস্তিকরা বলছে আয়িশা (রা) নিজের মৃত্যুর ভয়ে নবীর বিরুদ্ধে কিছু বলে নাই তারা যে টাকটা মিথ্যুকবাজ এটা নিয়ে সংশয় নেই। হাদিস গুলো পড়ুন।
সহিহ বুখারী, হাদিসঃ ৫২৫৫, সহিহ হাদিস,
আবূ উসায়দ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেনঃ আমরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সঙ্গে বের হয়ে শাওত নামক বাগানের নিকট দিয়ে চলতে চলতে দু’টি বাগান পর্যন্ত পৌছালাম এবং এ দু’টির মাঝে বসলাম। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তোমরা এখানে বসে থাক। তিনি (ভিতরে) প্রবেশ করলেন। তখন নু’মান ইব্ন শারাহীলের কন্যা উমাইয়ার খেজুর বাগানস্থিত ঘরে জাওনিয়াকে আনা হয়। আর তাঁর খিদমতের জন্য ধাত্রীও ছিল। নবী যখন তার কাছে গিয়ে বললেন, তুমি নিজেকে আমার কাছে সমর্পণ কর। তখন সে বললঃ কোন রাজকুমারী কি কোন বাজারিয়া ব্যক্তির কাছে নিজেকে সমর্পণ করে? রাবী বলেনঃ এরপর তিনি তাঁর হাত প্রসারিত করলেন তার শরীরে রাখার জন্য, যাতে সে শান্ত হয়। সে বললঃ আমি আপনার থেকে আল্লাহ্র নিকট পানাহ চাই। তিনি বললেনঃ তুমি উপযুক্ত সত্তারই আশ্রয় নিয়েছ। এরপর তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের নিকট বেরিয়ে আসলেন এবং বললেনঃ হে আবূ উসায়দ! তাকে দু’খানা কাতান কাপড় পরিয়ে দাও এবং তাকে তার পরিবারের নিকট পৌঁছিয়ে দাও।-ihadis.com
সহিহ বুখারী, হাদিসঃ ৫২৫৬, সহিহ হাদিসে বর্ণিত হয়েছে,
সাহ্ল ইবন সা’দ ও আবূ উসায়দ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ (ভিন্ন সনদে) সাহ্ল ইব্ন সা’দ ও আবূ উসায়দ (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন। তাঁরা বলেন যে, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম উমাইয়া বিনতু শারাহলীকে বিবাহ করেন। পরে তাকে তাঁর কাছে আনা হলে তিনি তার দিকে হাত বাড়ালেন। সে এটি অপছন্দ করল। তাই নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম আবূ উসাইদকে তার জিনিসপত্র গুটিয়ে এবং দুখানা কাতান বস্ত্র প্রদান করে তার পরিবারের নিকট পৌছে দেবার নির্দেশ দিলেন।-ihadis.com
সহিহ বুখারী, হাদিসঃ ৫২৫৭, সহিহ হাদিসে বর্ণিত হয়েছে,
সাহ্ল ইবন সা’দ ও আবূ উসায়দ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ(ভিন্ন সনদে) সাহ্ল ইব্ন সা’দ ও আবূ উসায়দ (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন। তাঁরা বলেন যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উমাইয়া বিনতু শারাহলীকে বিবাহ করেন। পরে তাকে তাঁর কাছে আনা হলে তিনি তার দিকে হাত বাড়ালেন। সে এটি অপছন্দ করল। তাই নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আবূ উসাইদকে তার জিনিসপত্র গুটিয়ে এবং দুখানা কাতান বস্ত্র প্রদান করে তার পরিবারের নিকট পৌছে দেবার নির্দেশ দিলেন।-ihadis.com
তাই আয়িশা (রা) যদি নবী মোহাম্মদ (সা)কে পছন্দ না করতেন তাহলে উনি সরাসরি সেটা বলে দিলেই পারতেন। নবী মোহাম্মদ (সা) যেভাবে উনার এক স্ত্রীকে সম্মানের সাথে বিদায় জানান ঠিক সেভাবেও আয়িশা (রা)কেও বিদায় জানাতেন। নাস্তিকরা এতো অন্ধবিশ্বাসী যে এসব নিয়ে সততার সাথে কখনো ভেবে দেখে না। আসলে মুক্তমনারা ইসলাম নিয়ে সত্যিটা চায় না। আয়িশা (রা) ও নবী মোহাম্মদ (সা) বিষয় নাস্তিকদের অন্ধবিশ্বাস যদি আসলেই সঠিক হতো তাহলে আয়িশা (রা) প্রথমেই নবী মোহাম্মদ (সা) থেকে দ্রুত তালাক নিতেন যেহেতু উনাকে নবী মোহাম্মদ (সা) যেই সুযোগ দিয়েছিলেনই। দ্বিতীয়ত উনি নিজেই নিজের বিয়ে ভেঙ্গে দিতে পারতেন কারণ ইসলামের আইনেই আছে বাবা যদি জবরদস্তি নিজ কন্যাকে বিয়ে দেয় তাহলে কন্যার এই অধিকার আছে যেকোনো সময় নিজের বিয়ে ভেঙ্গে ফেলার। কিন্তু আয়িশা (রা) এসব কিছুই করেন নাই। যেকোনো বুদ্ধিমান চিন্তাশীল মানুষ সহজেই বুঝতে পারবে নাস্তিক মুক্তমনারা আয়িশা (রা)এর ব্যাপারে বানিয়ে বানিয়ে ভুল কথা বলে যাচ্ছে। ডিলিউশনাল ডিজঅর্ডারে ভোগা নাস্তিকদের সকল অভিযোগ আপত্তি ও মিথ্যা দাবির উপর চপেটাঘাত হিসেবে যথেষ্ট হযরত আয়িশা (রা)এর এর এই হাদিস গুলো।
সহিহ মুসলিম, হাদিসঃ ৬১৭২, সহিহ হাদিসঃ
আয়িশাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, আমি খাদীজাহ্ ব্যতীত নবী সহধর্মিণীদের আর কারো প্রতি ঈর্ষান্বিত হইনি, অথচ আমার সাথে তাঁর সাক্ষাৎ ঘটেনি। তিনি বলেন: রসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন বকরী যাবাহ করতেন তখন বলতেন, এর গোস্ত খাদীজার বান্ধবীদের পাঠিয়ে দাও। একদা আমি তাঁকে রাগিয়ে দিলাম এবং বললাম, খাদীজাকে এতই ভালবাসেন? রসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম তখন বললেনঃ তাঁর ভালবাসা আমার মনে জায়গা করে নিয়েছে।-ihadis.com
সহিহ মুসলিম,হাদিসঃ ৬১৭৪, সহিহ হাদিসঃ
আয়িশাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, নবী সহধর্মিণীদের কারো উপর আমি এত ঈর্ষান্বিত হইনি যতটুকু ঈর্ষা করেছি খাদীজার উপর। কারণ নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁকে বেশি স্মরণ করতেন। অথচ আমি তাঁকে কক্ষনো দেখিনি।-ihadis.com
সহিহ মুসলিম, হাদিসঃ ৩৫৭৯, সহিহ হাদিস,
‘আয়িশাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃতিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদিগকে ইখ্তিয়ার প্রদান করেছিলেন। এরপর আমরা তাঁকে গ্রহণ করলাম। এটা আমাদের উপর ত্বলাক্ব বলে গন্য হয় নি।-ihadis.com
নিজের স্বামীর ব্যাপারে যেই নারী ঈর্ষা পোষণ করে সেই নারী কিভাবে নিজের স্বামীকে ঘৃণা করে?
পূর্বে অনেক মেয়েরাই অল্পবয়সে প্রাপ্তবয়স্কা হয়ে যেত এর প্রমাণ পাওয়াই যায় না?
পূর্বকালে এমন অনেক ঘটনা পাওয়া যায় যে কম বয়সী নারীকে অধিক বয়স্কা পুরুষের সাথে বিয়ে দেয়া হয়েছে এবং এতে কারোই ক্ষতি হয় নাই। অধিক বয়স্কা নারীর বিয়ে যেমন স্বাভাবিক ছিল তেমনি অল্প বয়স্কা নারীকে বিয়ে করাও স্বাভাবিক ঘটনা ছিল। অধ্যাপক,সাংবাদিক ও গবেষক গোলাম মুরশিদ সাহেবের "হাজার বছরের বাঙালি সংস্কৃতি" নামে একটি তথ্যবহুল বই আছে । তিনি এই বইয়ের ২২০ পৃষ্ঠায় উল্লেখ করেছেনঃ
বাল্যবিবাহের এই রীতি কতো ব্যাপকভাবে প্রচলিত ছিল তার প্রমান পাই উনিশ শতকের বিখ্যাত লোকদের জীবনী থেকে । দ্বারকানাথ ঠাকুর (যিনি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের দাদা ছিলেন)। ইনি বিয়ে করেছিলেন ১৫ বছর বয়সে। চিন্তার দিক দিয়ে তিনি সে যুগের তুলনায় খুব আধুনিক থাকলেও তার পুত্র দেবেন্দ্রনাথের বিয়ে দিয়েছিলেন ১৭ বছর বয়সে। পাত্রীর বয়স ছিল ১১ । ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, রাজনারায়ণ বসু ,বক্রিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় , কেশচন্দ্র সেন, সতেন্দ্রনাথ ঠাকুর, কালীপ্রসন্ন সিংহ, রমেশচন্দ্র দত্ত - সেকালের বিখ্যাত এই ব্যাক্তিরা সবাই বিয়ে করেছিলেন তাদের বয়স ১৭ হবার মধ্যেই। তাদের পাত্রীদের বয়স ছিল আরও কম। বক্রিমচন্দ্র যাকে বিয়ে করেছিলেন তার বয়স ছিল মাত্র ৫ বছর । দেবেন্দ্রনাথ ও বিজয়কৃষ্ণ গোস্বামীর স্ত্রীর বয়স ছিল ৬ বছর। সতেন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্ত্রীর বয়স ছিল ৭ বছর। ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের স্ত্রীর বয়স আট বছর, কেশব সেন এবং জ্যোতিরিন্দ্রনাথের ৯, শিবনাথ শাস্ত্রীর ১০ আর রাজনারায়ন বসুর স্ত্রীর বয়স ছিল ১১ বছর।
প্রশ্ন হচ্ছে উনারা সবাই কি যৌন আসক্ত রোগী ছিলেন? শিশুকামী ছিলেন? সততার সাথে উত্তর হচ্ছে না। উনারা কেউই যৌন আসক্ত ছিলেন না। তাহলে কেন এমন বিয়ে করলেন? সামাজিক কারণে। উনারা সকলেই হিন্দু হতে পারেন এমন কি উনাদের বিশ্বাসকে আমি অবিশ্বাস পর্যন্ত করি তারমানে কি উনাদের নিয়ে নাস্তিকদের মতো মিথ্যাচার করতে হবে আমাকে? অবশ্যই না। হযরত মোহাম্মদ (সা) কখনোই নারী আসক্ত ছিলেন না এই পরিস্কার সত্য কথা জানার পরেও যখন নাস্তিকতার শেকলে বন্ধী নাস্তিকগোষ্ঠী বলে উনি নারীলোভী ছিলেন তখন এটা মুক্তমনে মিথ্যাচার নয় তো কি,হে?
বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান সাহেবের লেখা বই "অসমাপ্ত আত্মজীবনী" সুত্রেও জানা যায় তার স্ত্রী বেগম ফজিলাতুন্নেসার যখন ৮ বছর হয় তখন তিনি বিয়ে করেন । শেখ ফজিলাতুন্নেসার জন্ম ১৯৩০ সালে আর তার বিয়ে ১৯৩৮ সালে হয়।-এনাদের কাউকেই শিশুকামি বলা যায় না, আর যাবেও না। তবে কেউ যদি উনাদের মতো বড় বড় চিন্তাবিদ, গবেষক, লেখক, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, অধ্যাপক, দেশপ্রেমীদের তীব্র-ঘৃণা করে তবে মানুষের কাছে উনাদের বদনাম করার জন্য উনাদেরকে কেউ যদি শিশুকামি দাবি করে তবে সেটার দায়ভার অবশ্যই উনারা নিবেন না আর এতে উনাদের কিছুই আসে যায়ও না। কারণ তখন সমাজের নৈতিকতা এটাই ছিল এবং তখন মানুষের বিবেকের কাছে এটাই ভালো ছিল। উনাদের দুশমনরা যদি দাবি করে উনারা সবাই শিশুকামিতায় আক্রান্ত ছিলেন তাহলে কি উনাদের ব্যাপারে ডাক্তারের রিপোর্ট দেখানো উচিত না? উনাদের ব্যাপার সেই ডাক্তারের রিপোর্ট গুলো কোথায়?
অ্যামেরিকার সংবিধান তৈরিতে যেসব বিখ্যাত বইয়ের সাহায্য নেয়া হয়েছে তার মধ্যে Spirit of laws বইটি অন্যতম । এই বইয়ের ১৬ খণ্ডে ২৬৪ পৃষ্ঠায় ফ্রেঞ্চ দার্শনিক Montesquew উল্লেখ করেন,
উষ্ণ অঞ্চলের মেয়েরা ৮,৯,১০ বছর বয়সেই বিয়ের জন্য উপযুক্ত হয়ে যায় আর ২০ বছর বয়সে তাদের বিয়ের জন্য বৃদ্ধ ভাবা হয়।
যারা এই বিধান মেনে অল্প বয়সের মেয়েদের বিয়ে করেছিল সবাই কি শিশুকামিতার জন্যই বিয়ে করেছিল? ধরুন আজ আপনি ২১ বছরের বয়সে একটি ১৮ বছরের মেয়েকে বিয়ে করলেন । ঠিক ১০০০ বছর পর আইন হলো যে ছেলেদের বিয়ের বয়স ২৮ আর মেয়েদের ২৫। তখন কি ৩০১৬ সালের মানুষ আপনাকে বাল্যবিয়ে আইন ভঙ্গ করেছেন অথবা আপনি শিশুকামি ছিলেন এমন অভিযোগে অভিযুক্ত করলে সেটা যৌক্তিক হবে? বিবর্তিত মগজধারী মস্তিস্ক না হয় এসব কথা বুঝবে কিন্তু আপনি তো মানুষ আপনার তো মানুষের মতো চিন্তাশীল মগজ আছে। আপনার কি মনে হয়?
গবেষক মাইকেল এইচ হার্ট লিখিত "১০০ বিশ্বের শ্রেষ্ঠ মনিষী" (বাংলা অনুবাদ) ৪০ ও ৪১ পৃষ্ঠায় উল্লেখ করেছেনঃ
প্রকৃতপক্ষে জীবনের উত্তরপর্বে এসে আইনস্টাইন হয়ে উঠেছিল গৃহ সন্ন্যাসী। বড়দের চেয়ে শিশুরাই তার প্রিয়। তাদের মধ্যে গেলে সবকিছু ভুলে যান। শিশুদের কাছে কল্পনার খ্রিষ্টমাস বুড়ো। পরনে কোট নেই, টাই নেই, জ্যাকেট নেই। ঢলঢলে প্যান্ট আর গলা আটা সোয়েটার, মাথায় বড় বড় চুল, মুখে খোঁচা খোঁচা দাড়ি , ঝ্যাঁটা গোঁফ । দাড়ি কামাতে অর্ধেক দিন ভুলে যান । যখন মনে পড়ে গায়ে মাখা সাবানটা গালে ঘসে দাড়ি কেটে নেন। কেউ জিজ্ঞেস করলে কি ব্যাপার গায়ে মাখা সাবান দিয়ে দাড়ি কাটা। আইনস্টাইন জবাব দিতেন, দুরকম সাবান ব্যাবহার করে কি লাভ।
বিজ্ঞানী আইনস্টাইন আস্তিক মানুষ ছিলেন আর উপরে দেয়া সুত্র মতে শিশুরাই উনার প্রিয় ছিল বড়দের চেয়ে তাহলে এখানে কি কোনো সুস্থ মানুষ এই কথা বলতে পারে যে উনি শিশুকামি ছিলেন? উত্তর হচ্ছে না। কারণ একজন মানুষের কাছে বড়দের থেকে শিশুদের ভালো লাগতেই পারে উনাকে ঘৃণা করে উনাকে শিশুকামি বানিয়ে ফেলা একজন সুস্থ-সভ্য মানুষদের কাজ হতে পারে না। তবে কেউ যদি আইনস্টাইনের বিরুদ্ধে কথা বলার চাকরি পায় তাহলে সে বলতেও পারে কারণ জীবিকার কথা আসে যে।
ইতিহাসের অধ্যাপক মার্গারেট ওয়েড ল্যাবার্জ (Professor of history Margaret Wade Labarge) বলেনঃ
এটি মনে রাখা দরকার যে মধ্যযুগীয় অনেক বিধবা বৃদ্ধ ছিলেন না, গুরুত্বপূর্ণ উত্তরাধিকারীরা প্রায়শই ৫ থেকে ১০ বছর বয়সের মধ্যে বিবাহিত ছিলেন এবং তারা কিশোর বয়সে বিধবা থাকতে পারেন (৬)।
মাওরিন ডাববাগ একজন লেখক ও চিন্তাবিদ। মিশিগানে জন্মগ্রহণকারী, তিনি ভার্জিনিয়ার সুপ্রীম কোর্টের পারিবারিক মধ্যস্থতাকারীর দায়িত্ব পালন করছেন, তিনি বর্ণনা করেন,
উনিশ শতকে, বেশিরভাগ আমেরিকান রাজ্যে যৌন মিলনের জন্য সর্বনিম্ন সম্মতির বয়স ছিল দশ বছর। ডেলাওয়ারে এটি ছিল মাত্র সাত বছর (৭)।
উইকিপিডিয়ায় “বাল্যবিবাহ” শিরোনামে, ইউএনএফপিএ -র রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০০০-২০১১ সালের মধ্যে উন্নয়শীল দেশসমূহের ২০-২৪ বছর বয়সী নারীদের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ (প্রায় ৩৪%) তাদের ১৮তম জন্মদিনের পূর্বেই বিবাহিত। ২০১০ সালে এর আনুমানিক সংখ্যা প্রায় ৬৭ মিলিয়ন। প্রায় ১২% নারী ১৫ বছর বয়সের আগে বিবাহিত। বাল্যবিবাহের প্রবণতা স্থানভেদে ভিন্ন হয়। বিশ্বব্যাপী, শহরাঞ্চলের মেয়েদের তুলনায় গ্রামাঞ্চলের মেয়েদের বাল্যবিবাহের প্রবণতা প্রায় দ্বিগুণ। ইউনিসেফের তথ্য অনুযায়ী, আফ্রিকার তিন দেশে ১৮ বছরের নিচে মেয়েদের বাল্যবিবাহের হার ৭০% এর বেশি। এর মধ্যে নাইজারে বাল্যবিবাহের হার সর্বোচ্চ। ২০-২৪ বছর বয়সী নাইজেরীয়ান নারীদের মধ্যে ৭৬% নারী ১৮ বছরের আগে এবং ২৮% নারী ১৫ বছরের আগে বিবাহিত। এই ইউনিসেফের রিপোর্ট ১৯৯৫-২০০৪ সাল পর্যন্ত সংগ্রহীত নমুনার উপর ভিত্তি করে তৈরি। বর্তমানে অবকাঠামোগত দুর্বোধ্যতা ও অঞ্চলভিত্তিক সহিংসতার কারণে এই হার অজানা।
অল্প বয়স্কা মেয়েকে বিয়ে করলেই শিশুকামি এই কথা ভুল কারণ শিশুকামি আক্রান্ত না হওয়া লোকও কিন্তু অল্পবয়স্কা মেয়েকে বিয়ে করতে পারে। তাছাড়া ইউএনএফপিএর তথ্য মোতাবেক, যে সকল কারণ বাল্যবিবাহের জন্য দায়ী তার মধ্যে রয়েছে দারিদ্র্য এবং অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতা; লিঙ্গ বৈষম্য; জমি-জমা বা সম্পদের চুক্তি; পরিবারের সম্মান রক্ষা; প্রচলিত প্রথা বা চর্চা; এবং নিরাপত্তাহীনতা, বিশেষত যুদ্ধ, দুর্ভিক্ষ বা মহামারীর সময়। অন্যান্য কারণসমূহের মধ্যে আছে- বিয়ের মাধ্যমে দুই পরিবারের মধ্যে শক্তিশালী বন্ধন গড়ে তোলা। আবার বাল্য়বিবাহ অনেক সময় আর্থসামাজিক পরিস্থিতির উপর নির্ভর করে। প্রাচীন ইউরোপে সামন্তপ্রথা যখন প্রচলিত ছিল তখন রাজনৈতিক সমঝোতার একটা পন্থা ছিল বাল্যবিবাহ। তখনকার অভিজাত পরিবারগুলোর মধ্যে বাল্যবিবাহের দ্বারা অর্থনৈতিক বা রাজনৈতিক বন্ধন সুদৃঢ় হত। এবং বিবাহের মাধ্যমেই দুই পরিবারের মধ্যে চুক্তি হত যার ভাঙ্গন দুই পরিবারের মধ্যে মারাত্নক প্রভাবের সম্ভাবনা তৈরি করত।
এটা বলাই যায় যে, অল্প বয়সের মেয়েকে বিয়ে করলে যাকে-তাকে শিশুকামি বলে ফেলার ধারনা মানুসিক দুর্বলতা। উইকিপিডিয়া “বাল্যবিবাহ” এর কারণ,লাভ-ক্ষতি উভয়টি নিয়েই বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। জানার জন্য পড়তে পারেন। কিন্তু হ্যাঁ এই একই তথ্যে বাল্যবিবাহকে নিষিদ্ধ করার কথা আছে এটা দেখে নাস্তিকান্ধদের খুশি হবার কোনো কারণ নেই কেননা জবরদস্তি অনেক ছোট মেয়েকেই বিয়ে দেয়া হতো ফলে অনেক ক্ষতি হতো কিন্তু যদি সেসব মেয়ের কোন ক্ষতি না হয়? যেমন ধরুন একটি মেয়েকে অল্প বয়সে বিয়ে দেয়া হয়েছে এবং তার পড়াশোনা বা শারীরিক কোন ক্ষতি হই নাই বরং দেখা গেছে এই বিয়ের কারনেই তার অনেক উপকার হয়েছে অথবা সে সংসার জীবনে সুখী এই মেয়ের জন্য কি অল্প বয়সের বিয়েটা ক্ষতিকর হয়েছে? তাছাড়া উপরে তথ্য দেয়া অল্প বয়সের মেয়েদেরকে বিয়ে করা সমস্ত পুরুষদেরকে শিশুকামি বলাও যাবে না।
প্রাচীন কালে অল্পবয়সেই মেয়েরা প্রাপ্তবয়স্কা হয়ে যেত এর প্রচুর প্রমাণ রয়েছে, কম বয়সে প্রাপ্তবয়স্কা হয়ে যাওয়া তৎকালীন সাধারণ বিষয় ছিল। ইমাম শাফিয়ী বলছেন, “ইয়ামানে অবস্থানকালী নয় বছরের অনেক এমন মেয়ের সাথে আমার আকস্মিক সাক্ষাত ঘটেছে যাদের ঋতুস্রাব হত” (৮)। ইমাম বায়হাকিও ইমাম শাফিয়ীর উক্তি বর্ণনা করছেন : “আমি (ইয়ামানের) সানা শহরে এক নানীকে দেখেছি, তখন তার বয়স ছিল ২১ বছর। নয় বছর বয়সে তার ঋতুস্রাব শুরু হয় এবং দশ বছর বয়সে সে সন্তানের জন্ম দেয়” (৯)। ইবনুল জাওযিও ইবনে উকাইল এবং উবায়েদ আল-মাহ্লভি হতে অনুরূপ ঘটনা বর্ণনা করেছেন : আব্বাদ ইবনে আব্বাদ আল-মাহলভি বলছেন : “আমি মুহ্লাভার একটি মহিলাকে প্রত্যক্ষ করেছি যে আঠারো বছর বয়সে নানী হয়েছিল। সে তার মেয়ে সন্তানের জন্ম দিয়েছিল নয় বছর বয়সে এবং তার মেয়েও একটি সন্তানের জন্ম দেয় নয় বছর বয়সে, এভাবে মহিলাটি আঠারো বছর বয়সে নানী হয়ে যায়”(১০)।
হযরত ইমাম শাফিয়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, আমি এক মহিলাকে দেখেছি যে- তিনি নয় বছর বয়সে বালেগা বা প্রাপ্তাবয়স্ক হয়েছেন এবং দশ বছর বয়সে সন্তান জন্ম দিয়েছেন। আর হযরত মুগীরাতাদ্ব দ্বব্বী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে বর্ণিত। তিনি নিজেই বলেন- احتلمت وانا ابن اثنة عشرة سنة = অর্থ: আমি বালেগ বা প্রাপ্ত বয়সে উপনীত হয়েছি যখন আমার বয়স বারো অর্থাৎ আমি যখন বারো বছর বয়সের ছেলে তখন আমি বালেগ বা প্রাপ্ত বয়সে উপণীত হই। অতএব, মেয়েদের বালেগা বা প্রাপ্ত বয়স হওয়ার জন্য সর্বনিম্ন বয়স হচ্ছে সাধারনভাবে নয় বছর এবং ঊর্ধ্বতম বয়স হচ্ছে পনেরো বছর। আর ছেলেদের বালেগা বা প্রাপ্ত বয়স হওয়ার জন্য সর্বনিম্ন বয়স হচ্ছে সাধারনভাবে বারো বছর এবং উর্ধ্বতম বয়স হচ্ছে পনেরো বছর (১১)। মেয়ের বয়ঃসন্ধিকাল বয়স শুরু হয় নয় থেকে - বারো বছরের মাঝে, সেই সময় তার দেহের নানা ধরণের অঙ্গ - প্রত্যঙ্গ বৃদ্ধি লাভ করে, তবে একেক মেয়ের ক্ষেত্রে একেক বছর প্রযোজ্য///বয়ঃসন্ধির অন্যতম প্রধান শারীরিক পরিবর্তন হ'ল যৌন অঙ্গগুলির বৃদ্ধি এবং বিকাশ - যৌন মিলন এবং শিশু তৈরির জন্য ব্যবহৃত হয়ে থাকে (১২)।
নির্দিষ্ট করে নাস্তিকদের এ কথা বলার সুযোগ নেই যে প্রাচীন কালে অল্পবয়স্কা নারীরা শারীরিক পরিপক্কতা পেতো না। অল্প বয়সে সন্তান জন্ম দিয়েছে এমনকি কোনো ক্ষতি হয়নি এমন ঘটনার প্রমাণ পর্যন্ত পাওয়া যায়। তাই তখনকার মেয়েরা ঠিক মতো খাবার পেতো না তাই শারীরিকভাবে দুর্বল ছিল কথাটি সব মেয়ের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়।
নারীর বয়ঃসন্ধি হওয়া মানেই কি ইসলাম প্রাপ্তবয়স্ক হিসেবে ধরে নেয়? কুরআনে শিশু সহবাস বৈধ?
শুধুমাত্র বয়ঃসন্ধিতে পৌঁছানো হলেই ইসলাম নারীকে প্রাপ্তবয়স্ক হিসেবে গণ্য করে না বরং একইসাথে মেয়ের বুদ্ধিবৃত্তিক ও শারীরিকভাবে সক্ষম থাকতে হবে। কোনো মেয়ের মধ্যে যদি এরকম লক্ষন পাওয়া যায় যে, সে বয়ঃসন্ধিতে পৌঁছিয়েছে পাশাপাশি শারীরিক বুদ্ধিবৃত্তিক ভাবেও ফিট তাহলে এরকম মেয়ের বয়স কম হলেও পরিবার ইচ্ছা করলে তাকে বিয়ে দিতে পারেন। এরকম লক্ষন পাওয়া মেয়েকে ইসলামের দৃষ্টিতে প্রাপ্তবয়স্ক হিসেবে গণ্য করা যায়। এর প্রমাণ স্বয়ং আয়েশা (রা) এর বিয়ে ও প্রাপ্তবয়স্কা হয়ে যাওয়া। কিন্তু যেসব মূর্খ নাস্তিকরা এটা বলে যে ইসলামে নাকি নারী স্রেফ বয়ঃসন্ধিতে পৌঁছালে মেয়েকে প্রাপ্তবয়স্ক হিসেবে ধরে নেয়া হয়-এটা ডাহা মিথ্যাচার।
আবার অনেক নারী এরকম রয়েছে যাদের হায়েজ আসা লেট কিন্তু সে শারীরিক মানুসিক ভাবে পরিপক্ক তাহলে এরকম নারীর ক্ষেত্রে কি বলা যাবে? সে শিশু? আরেকটি কথা এখানে না বললেই না অল্পবয়স্ক মানেই কিন্তু শিশু নয়। ধরুন একটি মেয়ের ১৩ বছর বয়সে সন্তান জন্ম দিয়েছে এবং এতে উনার কোনো ক্ষতি হয় নাই আর সে মেয়ে বুদ্ধিবৃত্তিক ও শারীরিকভাবে ফিট ও তার দাম্পত্য জীবন নিয়ে সে খুশি এখন এই প্রকারের নারীকে কি শিশু বলা যাবে? অবশ্যই না। কিন্তু বয়স কম হওয়ায় অল্প বয়স্ক ঠিকই বলা যাবে। শিশুরা অল্প বয়স্ক হয় কথাটি যেমন সত্য ঠিক সব অল্প বয়স্ক নারীই কিন্তু শিশু না এই কথাটিও সত্য।
আল লু’লু ওয়াল মারজান,হাদিসঃ১১২১, সহিহ হাদিসঃ
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, দু’জন মহিলা ছিল। তাদের সাথে দু’টি সন্তানও ছিল। হঠাৎ একটি বাঘ এসে তাদের একজনের ছেলে নিয়ে গেল। সঙ্গের একজন মহিলা বললো, “তোমার ছেলেটিই বাঘে নিয়ে গেছে।” অন্য মহিলাটি বললো, “না, বাঘে তোমার ছেলেটি নিয়ে গেছে।” অতঃপর উভয় মহিলাই দাঊদ (‘আ.)-এর নিকট এ বিরোধ মীমাংসার জন্য বিচারপ্রার্থী হলো। তখন তিনি ছেলেটির বিষয়ে বয়স্কা মহিলাটির পক্ষে রায় দিলেন। অতঃপর তারা উভয়ে বেরিয়ে দাউদ (‘আ.)-এর পুত্র সুলায়মান (‘আ.)-এর নিকট দিয়ে যেতে লাগল এবং তারা দু’জনে তাঁকে ব্যাপারটি জানালেন। তখন তিনি লোকদেরকে বললেন, তোমরা আমার নিকট একখানা ছোরা নিয়ে আস। আমি ছেলেটিকে দু’ টুক্রা করে তাদের দু’জনের মধ্যে ভাগ করে দেই। এ কথা শুনে অল্প বয়স্কা মহিলাটি বলে উঠলো, তা করবেন না, আল্লাহ্ আপনার উপর রহম করুন। ছেলেটি তারই। তখন তিনি ছেলেটি সম্পর্কে অল্প বয়স্কা মহিলাটির অনুকূলে রায় দিলেন।-ihadis.com
এই অল্প বয়স্কা মা নারীকে শিশু বলা যাবে? অবশ্যই না। সুতরাং ইসলামে অপ্রাপ্তবয়স্ক নারী তথা বয়স হবার কারণে যে নারীর বয়স কম সেই নারী যদি শারীরিক ও বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে ফিট হয় তাহলে অবশ্যই তার সাথে সহবাস করা যাবে। আবার অপ্রাপ্তবয়স্ক কিন্তু শারীরিক ও মানুসিকভাবে যোগ্য নয় এমন নারীর সাথে সহবাস করা যাবে না। কুরআনের একটি আয়াত দেখিয়ে মিথ্যুকবাজরা দাবি করে কুরআনে শিশুর সাথে যৌনকর্ম করা নাকি জায়েজ। চলুন সেই আয়াতটি পড়ে দেখি।
আল কুরআন, সুরা তালাক ৬৫:৪ আয়াত থেকে বর্ণিত,
তোমাদের যেসব স্ত্রীদের মাসিক হবার আশা নেই, তাদের ইদ্দত সম্পর্কে তোমরা সন্দেহ করলে তাদের ইদ্দতকাল হবে তিন মাস এবং যাদের এখনো মাসিক হয়নি তাদেরও। আর গর্ভবতী নারীদের ইদ্দতকাল সন্তান প্রসব করা পর্যন্ত। আল্লাহকে যে ভয় করবে, তিনি তার সমস্যার সমাধান সহজ করে দেবেন।
পাঠক খেয়াল করলে দেখবেন উক্ত আয়াতে কিন্তু শিশুর কথা বলা নেই কারণ শিশু শব্দের আরবি শব্দ হচ্ছে "তিফলুং" যা সুরা তালাকের ৬৫:৪ এর কোথাও নেই। আয়াতে বলা হচ্ছে যাদের মাসিক হবার আশা নেই বা এখনো যাদের মাসিক হয়নি তাদের ইদ্দতের কথা বলা হয়েছে। শিশুদের কিন্তু মাসিক হয় না আবার এমন অনেক নারী আছেন যারা শারীরিক এবং মানুসিক ভাবে ফিট কিন্তু বয়স কম এদেরকে কি শিশু বলা যায়? অবশ্যই না। কুরআনে উক্ত আয়াতে ঠিক এমন অপ্রাপ্তবয়স্কা অথবা কম বয়সী নারীর কথাই বলা হয়েছে যাদের মাসিক শুরু হয়নি অথচ সাবালিকা হয়ে যায়। তাফসীর থেকেই সরাসরি প্রমাণ দিচ্ছি পড়ুন।
তাফসীরে আহসানুল বায়ান, সুরা তালাক ৬৫:৪ তাফসীর, পৃষ্ঠাঃ ৯৯৪ এ বর্ণিত হয়েছে,
এ হল সেই মহিলাদের ইদ্দত যাদের বার্ধক্যের কারনে মাসিক বন্ধ হয়ে গেছে অথবা যাদের এখনো মাসিক শুরু হয়নি। জ্ঞাতব্য যে, বিরল হলেও এমনও হয় যে মেয়ে সাবালিকা হয়ে যায় অথচ তার মাসিক আসে না।
আমি এখানে অল্প করে লিখেছি আমার বিস্তারিত লিখা আছে এই বিষয়। জানতে পড়ে দেখুন (১৩)। হাদিস থেকে, তাফসীর থেকে, বিজ্ঞ গবেষকদের থেকে, সালাফদের থেকে আমি বিস্তারিত প্রমাণ পেশ করেছি। আগ্রহীরা আমার সেই লেখাটি পড়ুন। কোনো নারীর যদি ছয় বছরে বিয়ে হয়ে নয় বছরে স্বামীর সংসারে আসে এবং আজীবন এই দাম্পত্য জীবনের পক্ষে সম্মতি ছিল একইসাথে এই অল্প বয়স্ক বিয়ের ফলে উক্ত নারীর কোনো ক্ষতিও হয় নি তাহলে এরকম সম্পর্ককে কিভাবে যৌক্তিকভাবে বাতিল করা যায়?
নয় বছরেও বয়ঃসন্ধিতে পোঁছায় নি আয়েশা (রা)- দাবিটি সঠিক?
নাস্তিকিস্টদের পুরো দাবিটি ও এর পক্ষে যে দুর্বল প্রমাণ পেশ করে সেগুলো হুবহু তুলে ধরছি এরপরে অভিযোগ গুলো তদন্ত করে সঠিক কিনা তা যাচাই করে দেখবো। হুবহু দাবি ও অভিযোগটি তুলে ধরছি পড়ুন। নাস্তিকরা বলে,
আয়েশা (রা) ৯ বছরেরও অবুঝ শিশু ছিলেন। প্রমাণ হিসেবে তারা "সহজ নসরুল বারী শরহে সহীহ বুখারী, ১১ খণ্ড, ২৪১ পৃষ্ঠায় উমডাতুল কারী বরাতে বলা হয়েছেঃ রাসুল (সা) হযরত আয়েশা (রা) এর প্রতি উদারচিত্ত ও হাস্যজ্বল ছিলেন।হাস্যরস করেছেন । এমনকি তিনি তাঁর পুতুল খেলায়ও সম্মতিতে দিয়েছেন। তাঁর সাথে খেলার জন্য তাঁর বান্ধবীদের ডেকে পাঠিয়েছেন। আর সে সময় হযরত আয়েশা (রা) নাবালিকা ছিলেন। তাই তিনি তাকে খেলাধুলার অনুমতি দিয়েছেন। কিন্তু সাবালিকা নারীদের জন্য এটা মাকরুহ।
সহিহ মুসলিম, হাদিসঃ ৩৩৭২, সহিহ হাদিসঃ আয়িশাহ্(রাযিঃ) থেকে বর্ণিতঃ আছে যে, তার সাত বছর বয়সে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে বিবাহ করেন। তাকে নয় বছর বয়সে তাঁর ঘরে বধুবেশে নেয়া হয় এবং তাঁর সঙ্গে তাঁর খেলার পুতুলগুলোও ছিল। তাঁর আঠার বছর বয়সে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইন্তিকাল করেন।- পুতুল খেয়ার হাদিস গুলো আরও আছে সহিহ বুখারি, হাদিসঃ ৬১৩০, সহিহ হাদিস/সুনানে আবু দাউদ, হাদিসঃ ৪৯৩১, সহিহ হাদিস।-ihadis.com
খায়বারের যুদ্ধ হয়েছিলো ৬২৮ খ্রিস্টাব্দে আর তাবূকের যুদ্ধ হয়েছিলো ৬৩০ খ্রিস্টাব্দে। এদিকে, আয়েশার জন্ম হয়েছিলো ৬১৪ খ্রিস্টাব্দে। তাহলে, খায়বারের যুদ্ধের সময় আয়েশার বয়স ছিলো (৬২৮ – ৬১৪) = ১৪ বছর আর তাবূকের যুদ্ধের সময় ছিলো (৬৩০ – ৬১৪) = ১৬ বছর। অর্থ্যাৎ,সুনান আবূ দাউদের,৪৯৩২, নং হাদিসটি আমাদের বলছে যে, আয়েশা ১৪ অথবা ১৬ বছর বয়সেও পুতুল নিয়ে খেলা করতেন। যার অর্থ, ১৪ অথবা ১৬ বছর বয়সের আগে আয়েশা বয়ঃসন্ধিকালে পৌঁছাননি।
এসব থেকে কি প্রমাণ হয় না যে আয়েশা (রা) ৯ বছর বয়সেও অবুঝ শিশু ছিলেন এবং ৯ বছর বয়সেও উনি বয়ঃসন্ধিতে পোঁছান নাই? ইবনে হাজার আসকালানির বর্ণনা থেকেও প্রমাণ হয় যে যেহেতু আয়েশা ৯ বছরেও নাবালেগ ছিলেন তাই সে শিশু ছিলেন আর উনাকে শিশুকালে বিয়ে করে যৌনসম্পর্ক করা হয়েছে তাই নবী মোহাম্মদ শিশুকামি ছিলেন।
দাবিটির তদন্তনামাঃ আম্মাজান আয়েশা (রা)এর নিজের বর্ণনা ইবনে হাজার আসকালানির উক্তিকে বাতিল করে দেয়। আম্মাজান আয়েশা (রা) থেকে আমরা পাই যেখানে উনি সরাসরি নিজের ক্ষেত্রেই বলেছেন নয় বছরের নারীরা মহিলা হয়ে যায়। সেখানে এর বিপরীতে অন্য কেউ মতামত পেশ করলে সেটা দুর্বল বলেই গণ্য হবে। মুফতি আল্লামা তাকি উসমানী সাহেবের লিখিত বিখ্যাত বই দারসে তিরমিজি, ৩ খণ্ড, ৪৫৬ পৃষ্ঠায় স্পষ্ট বলা হয়েছেঃ
নবীজি (সা) আয়েশা (রা)কে নিয়ে মধুরাত্রি যাপন করেছেন যখন তাঁর বয়স নয় বছর । হযরত আয়েশা (রা) বলেছেন কোন মেয়ে ৯ বছরে পৌছলে সে বয়স্কা রমণী হয়ে যায়।
এই তথ্যটি আরও পাবেন ihadis.com, জামে আত তিরমিজি, হাদিসঃ ১১০৯ , হাসান সহিহ হাদিসের নিচে বর্ণিত ফুটনোটেও যেখানে বর্ণিত হয়েছে,
আইশা (রা) তাঁর ৯ বছর বয়সে রাসুল (সা) এর সাথে বাসর যাপন করেন।আইশা (রা) বলেছেন কোন বালিকা ৯ বছর পদার্পণ করলে সে মহিলা বলে গণ্য হবে।- এই বিশুদ্ধ তথ্যটি আরও পাবেনঃ সহীহ আত তিরমিজি, ২ খণ্ড,৪০১ পৃষ্ঠায়,তাহকিক, মুহাম্মদ নাসিরুদ্দীন আলবানী (রহ)।
আরও পাবেন, আহমাদ ও ইসহাক বলেছেন, নয় বছরে পদার্পণ করার পর ইয়াতীম বালিকাকে বিয়ে দেয়া হলে এবং সে এতে রাজী থাকলে তা জায়িয হবে। বিয়ে বহাল রাখা বা ভেঙ্গে দেয়ার ক্ষেত্রে বালেগ হওয়ার পর তার কোন কর্তৃত্ব থাকবে না। আইশা (রাঃ)-এর বিষয়কে তারা দলীল হিসাবে নিয়েছেন। আইশা (রাঃ)-কে নিয়ে তার নয় বছর বয়সে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বাসর যাপন করেছেন। আইশা (রাঃ) বলেছেন, কোন বালিকা নয় বছরে পদার্পণ করলে সে মহিলা বলে গণ্য হবে (১৪)।
নাস্তিকান্ধরা এই তথ্যকে হজম করতে না পেরে মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে বলে আয়েশা (রা) এর এই দাবি নাকি ভিত্তিহীন। কিন্তু কথাটি নাস্তিকিস্টদের মুক্তমনা মিথ্যাচারের অংশ- কারণ কি? ইমাম আহমাদ (রহ) ও ইমাম ইসহাক (রহ) উনারা দুইজনেই আয়েশা (রা) এর নয় বছরে বালেগা হয়ে যাওয়াকেই স্বীকার করেছেন এবং একেই দলীল হিসেবে গণ্য করেছেন একইসাথে পেশও করেছেন।যদি এই তথ্য ভিত্তিহীন বা বাতিল হতো তাহলে উনারা কেন এটা দলীল হিসেবে পেশ করবেন? আয়েশা (রা) উক্তিটি যে বিশুদ্ধ এর প্রমাণ হচ্ছে দুইজন মুজতাহিদ ইমাম একে দলীল হিসেবে পেশ করেছেন। ভিত্তিহীন হলে অবশ্যই একে দলীল হিসেবে পেশ করতেন না। সুতরাং আয়েশা (রা) যে বলেছেন নয় বছরে মেয়েরা নারী হয় যায় এটি বিশুদ্ধ। হযরত আয়েশা (রা)এর কথাটি যে সহিহ সেটার আরও বিস্তারিত প্রমাণ জানতে পড়ুন (১৫)।
নাস্তিকিস্টদের দাবি যখন মিথ্যা প্রমাণিত হয়ে গেছে তখন নতুন কৌশলে তারা ব্যাখ্যা করে আয়েশা (রা) এর উক্তিকে নিষিদ্ধ করতে চায়। তারা বলে,
আয়েশা (রা) যদি বলেও থাকেন মেয়েরা নয় বছর বয়সেই পূর্ণ বয়স্কা নারী হয়ে যায় তাহলেও তিনি ভুল বলেছেন। তিনি বলেছেন বলেই বিষয়টা সত্য হয়ে যায় না। তিনি যে কথা বলেছেন সে কথা সে কথাকে সত্য প্রমান করে না। তিনি মনে করতেন যে ৯ বছর বয়সে মেয়েরা পূর্ণ বয়স্কা নারী হয়ে যায়। তার মনে করাটা অবশ্যই ভুল ছিল।কারন সে দেখেছে ৯ বছর বয়সেই তাঁকে স্বামীর কাছে যেতে হয়েছে,৯ বছর বয়সেই তাঁকে সংসার করতে হয়েছে তাই ৯ বছর বয়সে নিজেকে প্রাপ্ত বয়স্কা মনে করতেই পারে কিন্তু এতে কথাকে সত্য প্রমান করেনা।
পাঠক মজার কথা কি জানেন? নাস্তিকদের এরকম কথা ওদের বিরুদ্ধেই গেছে একইসাথে নাস্তিকদের কথাটি ইবনে হাজার আসকালানি (রহ) এর ফতোয়াকে আরও দুর্বল করে দেয়। কেননা নাস্তিকদের বানানো ব্যাখ্যা মতে আয়েশা (রা) নিজেকে নয় বছর বয়সেই প্রাপ্ত বয়স্কা নারী মনে করতেন কারণ উনি যা দেখেছেন সেই অনুযায়ী মনে করেছেন। তর্কের খাতিরে যদি এটা ধরেও নেই তাহলেও তো আয়েশা (রা)কে কথাকে ভুল প্রমাণ করা যায় না। কারণ উনার নিজেকে অল্প বয়সে প্রাপ্তবয়স্ক নারী দাবি করাতে তো কোনো ক্ষতি হয়নি। বরং একজন নারী অল্প বয়সে নিজেকে প্রাপ্তবয়স্ক মনে করাটা এবং আজীবন স্বামীর সাথে আনন্দে সংসার করাটা প্রমাণ করে তার দাবিটি আসলেই অযৌক্তিক ছিল না। নাস্তিক্যধর্মের দৃষ্টিতে যেই প্রশ্ন গুলো এখানে থেকে যাবে সেটা হচ্ছে নয় বছরে যদি কোনো নারী নিজেকে প্রাপ্তবয়স্কা মনে করে আর এতে যদি তার ক্ষতি না হয় তাহলে আয়েশা (রা) কোন যুক্তিতে ভুল কথা বলেছেন? নিজেকে প্রাপ্তবয়স্কা নারী হিসেবে গণ্য করার স্বাধীনচিন্তা করা যাবে না? কোনো নারী নিজেকে কি মনে করবে সেটা নাস্তিকরা কেন ঠিক করে দিতে যাবে? নারীবাদীরা বলে “আমার দেহ, আমার সিদ্ধান্ত” এই যুক্তির দৃষ্টিতে আয়েশা (রা)এর কথাটি কিভাবে অমানবিক বলা যায়? যৌক্তিকভাবে নাস্তিকান্ধদের কোনো সুযোগ নেই আয়েশা (রা) এর কথাকে ভুল প্রমাণ করবার।
নাস্তিকদের তো নৈতিক গ্রন্থ নেই যে সবাইকে সেটাই বিশ্বাস করতে হবে তাহলে নাস্তিকরা যে নৈতিকতা বানিয়ে মুসলিমদেরকে সেই নৈতিকতা বিশ্বাস করাতে চাচ্ছে এই চাওয়াটা কি নাস্তিকতাকে ধর্ম হিসেবে প্রমাণ করে না? যদি বলে মুসলিমরা নাস্তিকদের নৈতিকতায় বিশ্বাস করুক এটা তারা চায় না তাহলে প্রশ্ন হচ্ছে এমন নৈতিকতা কেন বানালো যে মানুষ সেটা মানুক এটা নাস্তিকরাই চাচ্ছে না? স্রেফ ইসলামবিদ্বেষ এর জন্য?
অন্যদিকে কোনো নাস্তিক যদি সততার সাথে ব্যক্তিস্বাধীনতায় বিশ্বাসী হয়েই থাকতো তাহলে তো সে এটা বলতো যে আয়িশা নয় বছরেই নিজেকে প্রাপ্তবয়স্কা ভাবতো এটা নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবি রাখে কারণ নিজেকে নিয়ে এমন চিন্তা করতে পারাটা আয়িশা যে বুদ্ধিমান নারী ছিল সেটাই প্রমাণ করে। আয়িশা উনার অধিক বয়স্কা স্বামীর সাথে আজীবন সংসার করেছে আর এই বিয়ে নিয়ে কখনো অভিযোগ পর্যন্ত করে নি তাহলে যেখানে একজন নারী নিজেকে প্রাপ্তবয়স্কা হিসেবে চিন্তা করতে পেরেছে একইসাথে নিজের সংসার নিয়ে আনন্দেই ছিল-এরকম চমৎকার সংসার নিয়ে প্রকৃত নাস্তিক হিসেবে আপত্তি করাই যায় না। প্রকৃত ব্যক্তিস্বাধীনতায় বিশ্বাসী নাস্তিকদের কথা কি এমনটা হওয়া উচিত ছিল না? অথচ পেশাদার নাস্তিকরা ইসলামকে স্রেফ ঘৃণা করে দেখে সত্যটা স্বীকার করতে চায় না। অল্প বয়সে যে প্রাপ্তবয়স্ক নারী হয়ে যায় তার আরও কিছু প্রমাণ দেখে নেয়া যাক।
নসরুল বারী শরহে সহীহ বুখারী ১০ খণ্ড, ১৭৩ পৃষ্ঠায় বর্ণিত হয়ছেঃ
যখন রাসুল (সা) আয়েশা (রা) কে বিবাহ করেন তখন তাঁর বয়স ছিল ছয় বছর এবং যখন বাসর করেন তখন তাঁর বয়স ছিল নয় বছর।আর মোট নয় বছর তিনি রাসুল (সা) এর সাথে জীবন যাপন করেন। এই হাদিসের অনুচ্ছেদে স্পষ্ট বলা আছে “যে ব্যাক্তি নয় বছর বয়সের স্ত্রীর সাথে সহবাস করে যখন সে সাবালিকা হয়ে যায়”।
নসরুল বারী শরহে সহীহ বুখারী ৬ খণ্ড, ৫০৮ পৃষ্ঠায় বর্ণিত হয়েছেঃ
স্ত্রী লোকেরা হায়েয আসা দ্বারা সাবালিকা হয়ে যায় যদিও তাদের বয়স নয় অথবা দশ বছর হয়।
মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল গালিব (হাঃফি) লিখিত “সীরাতুর রাসুল (সা)” ১৯৯ পৃষ্ঠায় বর্ণিতঃ
একাদশ নববী বর্ষের শাওয়াল মাসে অর্থাৎ হযরত সওদা বিন্তে যাম’আর সাথে বিয়ের ঠিক এক বছরের মাথায় ওছমান বিন মাযউন (রা) এর স্ত্রী খাওলা বিনতে হাকীম (রা) এর প্রস্তাবক্রমে হযরত আবু বকরের নাবালিকা কন্যা আয়েশা রাসুলুল্লাহ (সা) বিবাহ করেন। বিয়ের তিন বছর পরে সাবালিকা হলে নয় বছর বয়সে মদীনায় ১ম হিজরী সনের শাওয়াল মাসে তিনি নবীগ্রহে গমন করেন।
নসরুল বারী শরহে সহীহ বুখারী ৬ খণ্ড, ৫০৭ পৃষ্ঠা থেকে বর্ণিতঃ
আল্লাহর বানী তোমাদের সন্তান সন্ততি বয়ঃপ্রাপ্ত হলে তারাও যেন অনুমতি চায় - (সুরা নুর ২৪:৫৯) মুগিরা (রহ) বলেন বারো বছর বয়সে আমি সাবালক হয়েছি । আর মেয়েরা সাবালিকা হয় হায়িয হলে । যেমন আল্লাহ তা"লা বলেন তোমাদের যেসব মেয়েরা ঋতুস্রাবের বিষয়ে নিরাশ হয়ে গেছে... সন্তান প্রসব করা পর্যন্ত (সুরা তালাক-৪)। হাসান ইবনু সালিহ (রহ) বলেন আমাদের এক প্রতিবেশীকে একুশ বছর বয়সেই আমি নানী হয়ে দেখেছি । মেয়েদের ক্ষেত্রে সাবালিকা হওয়ার সর্বনিন্ম সময়সীমা হল নয় বছর । আর ছেলেদের ক্ষেত্রে বারো বছর । অর্থাৎ যদি নয় বছরের মেয়ে ও বারো বছরের ছেলে নিজেকে সাবালক বলে দাবি করে তাহলে তাদের কথা গ্রহন করা হবে। মেয়েদের সাবালিকা হওয়ার আলামত হল হায়েয আসা, গর্ভবতী হওয়া। আর ছেলেদের সাবালক হওয়ার আলামত হল বীর্যপাত ও স্বপ্নদোষ হওয়া। আর সাবালক হওয়ার সর্বোচ্চ সময় সীমা হল পনের বছর। এর উপরেই ফতোয়া। ... আর হাসান ইবনে সালেহ বলেন আমি আমার একজন প্রতিবেশী পেয়েছি সে একুশ বছরে নানী হয়ে গিয়েছিল । একুশ বছরে নানী হওয়ার সুরত। ওই প্রতিবেশী নারী একুশ বছর বয়সে এভাবে নানী হয়েছিল যে তার বয়স যখন নয় বছর তখন সে সাবালিকা হয়ে যায় আর দশ বছর বয়সে তার গর্ভে একটি কন্যা সন্তান জন্মগ্রহণ করে। সে কন্যাও নয় বছর বয়সে সাবালিকা এবং দশ বছর বয়সে সন্তানের মা হয়ে যায়। এভাবেই সে একুশ বছর বয়সে সর্বপ্রথম নানী হয়।
ইসলামের দৃষ্টিতে উপরের বর্ণিত সকল প্রমাণ থেকে এটা নিশ্চিতকরেই বলা যায় যে আম্মাজান আয়েশা (রা) অল্প বয়সে প্রাপ্তবয়স্ক হয়ে যাওয়াটা মোটেও অস্বাভাবিক কিছু ছিল না। এই সত্য কথাটিকে ধামাচাপা দেবার জন্য কি কি মিথ্যুকবাজি আছে নাস্তিকগোষ্ঠীর কাছে? পাঠক সব থেকে বড় কথাটি হচ্ছে, তর্কের খাতিরে যদি ধরেও নেয়া হয় আয়েশা (রা) নয় বছরের বয়সে বয়ঃসন্ধিতে পৌঁছান নি এরপরেও আপত্তি করার সুযোগ নেই কেননা নবী মোহাম্মদ (সা)এর সংসারে প্রবেশের আগে উনি শারীরিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক পরিপক্ষ ছিলেন। আমি প্রমাণ দিয়ে দিচ্ছি আপনারা মন দিয়ে যাচাই করে পড়তে থাকুন।
সুনানে ইবনে মাজাহ,হাদিসঃ৩৩২৪,সহিহ হাদিসঃ
আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ আমার মা আমাকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সংসারে পাঠাতে চাচ্ছিলেন বিধায় আমার দৈহিক পরিপুষ্টির জন্য চিকিৎসা করাতেন। কিন্তু তা কোন উপকারে আসলো না। অবশেষে আমি তাজা খেজুরের সাথে শসা মিশিয়ে খেলাম এবং উত্তমরুপে দৈহিক পরিপুস্টি লাভ করলাম।-ihadis.com
সুনানে আবু দাউদ, হাদিসঃ ৩৯০৩,সহিহ হাদিসঃ
আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, আমার মায়ের ইচ্ছা ছিল আমাকে স্বাস্থ্যবতী বানিয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নিকট পাঠাবেন। এজন্য তিনি অনেক ব্যবস্থা গ্রহণ করেন, কিন্তু কোন ফল হয়নি। শেষে তিনি আমাকে পাকা খেজুরের সাথে শসা বা খিরা খাওয়াতে থাকলে আমি তাতে উত্তমরূপে স্বাস্থ্যের অধিকারী হই।-ihadis.com
আল্লামা ইদরীস কান্ধলবী (রহ) লিখিত সীরাতুল মুস্তফা (সা) ৩ খণ্ড, ২৭১ পৃষ্ঠায় বর্ণিত হয়েছেঃ
...তিনি নয় বৎসরে (হযরত আয়েশা) এত ব্যাপক বিস্তীর্ণ গভীর জ্ঞানের অধিকারী হয়েছিলেন। মহানবী (সা) ইন্তিকালের পর প্রবীণ সাহাবায়ে কেরামের মধ্যে কোন বিষয় জটিলতা বা সন্দেহের সৃষ্টি হলে তা হযরত আয়েশা (রা) এর নিকট পেশ করা হতো। সাহাবায়ে কেরামের যুগে হযরত আয়েশা (রা) এর জ্ঞান এবং ইতিহাস ও বিধিবিধান বিষয়ক দক্ষতা ছিল স্বীকৃত। এমনকি এমনও বলা হয়েছে যে, ইসলাম বিধি বিধানের এক চতুর্থাংশ হযরত আয়েশা (রা) থেকে বর্ণিত হয়েছে। আবার ২৭২ পৃষ্ঠায় বর্ণিত হয়েছে, ইমাম যুহরী (রহ) বলেন, হযরত আয়েশা (রা) এর ইলম বা জ্ঞান অন্যান্য উম্মুল মুমিনীন ও সব মহিলাদের সাথে তুলনা করলে তাঁর অবস্থান-সেরাও বিজয়ী হবে।
রাশীদ হাইলামায যিনি একজন ইসলামী গবেষক এবং সীরাত লেখক, তাঁর লেখা "জীবন ও কর্ম আয়েশা (রা)" অনুবাদ করেছেন মুহাম্মদ আদম আলী, এই কিতাবের ২৮৭ ও ২৮৮ পৃষ্ঠায় বর্ণিত আছেঃ
... এটা ভুলে গেলে চলবে না যে , এ (অল্প) বয়সে বিয়ে করা তখনকার সমাজে খুবই প্রচলিত একটি বিষয় ছিল এবং তখন শিশুরা একটু আগেই বেড়ে উঠত । ... বিশেষ করে মেয়ে শিশুরা পারিপার্শ্বিক পরিবেশ -পরিস্থিতির কারনে আগেই বালেগ হয়ে যেত এবং স্বামীর গৃহে তারা যথেষ্ট দক্ষতারও পরিচয় দিত। অধিকন্তু এটা শুধু মেয়েদের বেলায়ই প্রযোজ্য ছিল না। তখনকার সমাজে সমাজে ছেলেরাও ৮ - ১০ বছর বয়সে বিয়ে করতো এবং এ বয়সেই তারা পরিবারের কর্তা বনে যেত যা আজকের সমাজে অবিশ্বাস্য মনে হয়।
সাইয়েদ সুলাইমান নদভী (রহ) লিখিত বিখ্যাত সিরাত গ্রন্থ "উম্মুল মুমিনীন সীরাতে আয়েশা (রা)" ৪৯ পৃষ্ঠায় বলা হয়েছেঃ
বিবাহের সময় হযরত আয়েশা (রা) এর বয়স ছিল মাত্র ছয় বছর।এতো অল্প বয়সে বিবাহ হওয়ার রহস্য ছিল নবুওয়াত ও খেলাফতের মধ্যে দৃঢ় সম্পর্ক গড়া। প্রথমত আরবের শুষ্ক আবহাওয়ায় মেয়েরা অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে উঠত। আবার অভিজ্ঞতা বলে,বিশেষ ব্যক্তিদের মেধা-প্রতিভা-চেতনায় যেমন বিশেষত্ব থাকে,তেমনি থাকে শারীরিক গঠনেও,যাকে ইংরেজিতে বলে প্রিকৌশাস-অকালপক্ব। যাই হোক,রাসুল (সা) হযরত আয়েশা (রা) কে এতো অল্প বয়সে জীবনসঙ্গিনীরূপে গ্রহণ করা প্রমান যে শৈশবেই তাঁর মাঝে অসাধারণ মেধা-প্রতিভা ও অস্বাভাবিক বর্ধনশীলতা লক্ষ করা গিয়েছিল।
সাইয়েদ আবুল হাসান আলী নাদভী (রহ) লিখিত “নবীয়ে রহমত” বইয়ের ৪২০ ও ৪২১ পৃষ্ঠায় বর্ণিত হয়েছে যেঃ
রিজালশাস্ত্র ও তাবাকাতের ইমাম যাহাবী (রহ) (মৃ.৭৪৮ হি.) তাঁর তাযকিরাতুল-হুফফাজ নামক বিখ্যাত গ্রন্থে লিখেছেন, তিনি (আয়েশা) ফিকহশাস্ত্র সম্পর্কে অভিজ্ঞ ফকীহ সাহাবীদের মধ্যে সবচেয়ে বিশিষ্ট ছিলেন। বিভিন্ন মাসলা-মাসায়েলের ক্ষেত্রে সাহাবায় কিরাম (রা) তাঁর শরণাপন্ন হতেন। কাবীসা বিনতে যুওয়ায়র (রা) থেকে বর্ণিত, হযরত আয়েশা (রা) মাসলা-মাসায়েল সম্পর্কে সর্বাপেক্ষা অভিজ্ঞ ছিলেন। শীর্ষস্থানীয় সাহাবীগণও তাঁর নিকট মাসলা-মাসায়েল সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করতেন। আবু মুসা (রা) বলেন, আমরা রাসুল (সা)এর সাহাবীরা কোন হাদিস বুঝতে অসুবিধার সম্মুখীন হলে আয়েশা (রা)-কে জিজ্ঞেস করতাম এবং এ বিষয় তিনি অবশ্যই জানতেন। হাসসান (রা) বলেন,আমি কুরআন মজীদ, হালাল-হারাম, ফারায়েয ও বিধি-বিধান, কবিতাবলী, আরবের ইতিহাস ও আরবদের নসবনামা (বংশ-পরিচয়) সম্পর্কে তাঁর চেয়ে বেশি অভিজ্ঞ আর কাউকে পাইনি।
প্রাচ্যবিদ কারেন আর্মস্ট্রং পর্যন্ত স্বীকার করেছেন আয়িশা(রা) তখন পূর্ণবয়স্ক ছিলেনঃ
“Tabari says that she was so young that she stayed in her parents’ home and the marriage was consummated there later when she had reached puberty.”-[Muhammad: A Biography of the Prophet - Karen Armstrong; 157}
ক্যারেন আর্মস্ট্রং, মুহম্মদ : দ্য প্রফেট ফর আওয়ার টাইম; পৃ. ৯২-৯৩ (ভাষান্তর: রাফান আহমেদ; হারপার কলিন্স, ২০০৭) এ সুত্রে বর্ণিত হয়েছে,
মুহম্মদের (ﷺ) অন্দরমহল সম্পর্কে পশ্চিমা সমাজে আবেগতাড়িত ও অসুস্থ ধারণার ছড়াছড়ি লক্ষ্য করা যায়। কিন্তু আরবে, যেখানে একবিবাহের তুলনায় বহুবিবাহের চল বেশি, সেখানের কথা আলাদা। খাদিজার মৃত্যুর আগ পর্যন্ত মুহম্মদও তো একপত্নীকই ছিলেন। তাছাড়া মুহম্মদের (পরবর্তী) বিবাহগুলো রোমান্স কিংবা যৌন-তাড়নার ফলশ্রুতি ছিলো না, বরং এর পিছে বাস্তবিক কারণ ছিলো। যেমন – সাওদাহ্ ছিলেন যৌবনের প্রথমভাগ অতিক্রান্ত একজন সংসারী নারী; কিন্তু মুহম্মদের গৃহস্থালী দায়দায়িত্ব সামাল দিতে পারবেন তিনি। তাছাড়া সাওদাকে বিবাহ করার মাধ্যমে তাঁর জ্ঞাতিভাই সুহায়েলের সাথেও সম্পর্কোন্নয়নের সম্ভাবনা ছিলো, যে তখনও ওহির ব্যাপারে দোদুল্যমান ছিল। আয়েশার সাথে বাগদানেও মুহম্মদের কোনও ভুল ছিলো না। সে সময় মৈত্রীর স্বার্থে অপরিণতবয়েসী পাত্রীর অনুপস্থিতিতে এমন বিবাহ অতিসাধারণ ব্যাপার ছিলো। এমনকি কোনও কোনও ক্ষেত্রে পাত্রীর বয়স আয়েশার চেয়েও কম হতো৷ ইউরোপে আধুনিক যুগের প্রথমভাগ পর্যন্ত এই রীতি ভালোমতই অনুসৃত হয়েছেI বয়ঃসন্ধি উত্তীর্ণ হবার আগপর্যন্ত এই ক্ষেত্রে বাসরযাপনের কোনো প্রশ্ন আসতো না। বয়:প্রাপ্ত হওয়ার পর আর দশটা সাধারণ মেয়ের মতো আয়েশাকেও বিয়ের পিড়িতে চড়তে হতো।
আম্মাজান আয়েশা (রা) ৯ বছরেই বয়সন্ধিতে পৌঁছিয়েছিলেন। সরাসরি হাদিসে পাওয়া যায়। সুনানে আবু দাউদ, হাদিসঃ ৪৯৩৩, সহিহ হাদিসঃ
আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, আমার ছয় বা সাত বছর বয়সে (রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম)) আমাকে বিয়ে করেন। আমরা মদিনায় আগমন করলে একদল মহিলা আসলেন। বর্ণনাকারী বিশরের বর্ণনায় রয়েছেঃ আমার নিকট (আমার মা) উম্মু রূমান (রাঃ) আসলেন, তখন আমি দোলনায় দোল খাচ্ছিলাম। তিনি আমাকে নিয়ে গেলেন, আমাকে প্রস্তুত করলেন এবং পোশাক পরিয়ে সাজালেন। অতঃপর আমাকে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট পেশ করা হলো। তিনি আমার সঙ্গে বাসর যাপন করলেন, তখন আমার বয়স নয় বছর। মা আমাকে ঘরের দরজায় দাড় করালেন এবং আমি উচ্চহাসি দিলাম। ইমাম আবূ দাঊদ (রহঃ) বলেন, অর্থাৎ আমার মাসিক ঋতু হয়েছে। আমাকে একটি ঘরে প্রবেশ করানো হলো। তাতে আনসার গোত্রের একদল মহিলা উপস্থিত ছিলেন। তারা আমার জন্য কল্যাণ ও বরকত কামনা করলেন।-ihadis.com
নয় বছরের বয়সে আয়েশা (রা) বয়ঃসন্ধিতে পৌঁছিয়েছেন হাদিসটি পেশ করা হলে মিথ্যুকবাজি করে নাস্তিকরা বলে,
আয়িশার যে ঋতুস্রাব হয়েছিল, তা আবু দাউদের মতামত মাত্র। উনি আয়িশা অথবা আয়িশার কাছ থেকে সরাসরি শুনেছেন এমন কারো কাছ থেকেও এই কথা শোনেন নি। শুধুমাত্র আবু দাউদের মতামত তো গ্রহণযোগ্য নয়।
পাঠক হাস্যকর বিষয়টি খেয়াল করেছেন? ইমাম আবু দাউদ (রহ) এর মতামত দেখে নাস্তিকিস্টরা একে বাতিল করে দিচ্ছে অথচ ইবনে হাজার আসকালানি (রহ) মতামতকে বাতিল করছে না আম্মাজান আয়েশা (রা) এর বর্ণনা পাওয়ার পরেও। সততার সাথে ইসলামের সমালোচনা করলে এরকম ধাপ্পাবাজি করতে পারতো নাস্তিকগোষ্ঠী? হয়তো পশু থেকে বিবর্তিত মগজ বলেই এরকম প্রতারণা করা সম্ভব? প্রশ্ন হচ্ছে ইমাম দাউদ (রা) যদি আয়েশা (রা) থেকে সরাসরি না শোনার কারণে যদি ইমাম দাউদ (রহ)এর মতামত নাস্তিকরা ত্যাগ করতে পারে তাহলে একইভাবে ইবনে হাজার আসকালানী (রহ) যিনি ইমাম দাউদ (রহ) এর অনেক পরে এসেছেন উনার ফতোয়া দিয়ে নয় বছরের বয়ঃসন্ধিতে পৌঁছান নাই দাবি করা কিভাবে গ্রহনযোগ্য হতে পারে নাস্তিকদের কাছে? ইমাম দাউদ (রহ) এর জন্ম হচ্ছে ৮১৭ খ্রিষ্টাব্দ আর ইবনে হাজার আসকালানী (রহ) এর জন্ম হচ্ছে ১৩৭২ খ্রিষ্টাব্দ। ইমাম আবু দাউদ (র) এর ব্যাখ্যা বেশি যৌক্তিক নাকি ইবনে হাজার আসকালানি (র) এর?
তাছাড়া ইমাম আবু দাউদ (রহ) যেহেতু নিজে সনদ সহ হাদিস বর্ণনা করেছেন সেহেতু "আয়েশা (রা) কি উদ্দেশ্যে হাসি দিয়েছেন" সেটা উনিই ভালো বুঝবেন। ইমাম ইবনে হাজার আসকালানী (রহ) নবীজি (সা) থেকে এমন কোনো হাদিস পেশ করেন নাই যেখানে এই কথা বলা আছে যে নয় বছরে আয়েশা (রা) পুতুল খেলেছিল অবুঝ শিশু হবার কারণে। অথচ আয়েশা (রা) নিজে বলেছেন নয় বছর হলে মেয়েরা প্রাপ্তবয়স্কা নারী হয়ে যায় একইসাথে অন্য হাদিস থেকেও সরাসরি এই তথ্য জানতে পারলাম তাই এখানে নাস্তিকদের প্রতারণার কোনোই বিন্দুমাত্র সুযোগ থাকছে না। হাফেজুল হাদিস ইমাম আবু দাউদ (রা) নিজে হাদিসটি বর্ণনা করে হাদিসটি বুঝলেন না আর কোটি কোটি বছর ধরে জানোয়ার থেকে বিবর্তিত হওয়া মগজধারী নাস্তিক প্রাণী গুলো হাদিস বুঝে ফেলেছে। কি হাস্যকর তাই না?
আমি এরকম হাদিস পাইনি যেখানে এটা বর্ণিত আছে আয়েশা (রা) নয় বছরে শিশু ছিল দেখে পুতুল খেলেছিলেন। আসলে পুতুল খেলার সাথে নাবালেক অথবা সালাবেকের সম্পর্ক নেই। ইসলামে পুতুল খেলা নিষেধ করা হয়েছে পুতুল মূর্তির মতো এই কারণে। নবীজি (সা) থেকে সরাসরি হাদিস গুলো পড়ুন। এসব হাদিস গুলো থেকে পরিস্কার ধারণা পাওয়া যাবে।
সহিহ বুখারি, হাদিসঃ ৫৯৫৫, সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত হয়েছে,
আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম এক সফর থেকে ফিরে আসলেন। সে সময় আমি নক্শাওয়ালা (প্রাণীর) ছবিযুক্ত কাপড় দিয়ে পর্দা লটকিয়ে ছিলাম। আমাকে তিনি তা খুলে ফেলার নির্দেশ দিলেন। তখন আমি খুলে ফেললাম।-ihadis.com
সহিহ বুখারি, হাদিসঃ ৫৯৫৪, সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,
আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাবূক যুদ্ধের সফর থেকে ফিরে আসলেন। আমি আমার কক্ষে পাতলা কাপড়ের পর্দা টাঙিয়েছিলাম। তাতে ছিল প্রাণীর অনেকগুলো ছবি। রসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন এটা দেখলেন, তখন তা ছিঁড়ে ফেললেন এবং বললেনঃ ক্বিয়ামাতের দিন সে সব লোকের সব থেকে শক্ত আযাব হবে, যারা আল্লাহ্র সৃষ্টির প্রাণীর সদৃশ তৈরি করবে। ‘আয়িশা (রাঃ) বলেনঃ এরপর আমরা ওটা দিয়ে একটি বা দু’টি বসার আসন তৈরী করি।-ihadis.com
সহিহ বুখারি, হাদিসঃ ৫৯৫২, সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত হয়েছে,
আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজের ঘরের এমন কিছুই না ভেঙ্গে ছাড়তেন না, যাতে কোন প্রাণীর ছবি থাকত।-ihadis.com
এসব হাদিসে পুতুলের কথা নেই কিন্তু মূর্তির মত অথবা মানুষের আকৃতির কিছু পেলেই নবীজি (সা) সেটা নষ্ট করে ফেলতেন এটা থেকে পরিস্কার বুঝা যায় যে আয়েশা (রা) এর পুতল গুলো মূর্তির মতো ছিল না আবার মানুষের সাদৃশ্যও ছিল না দেখে নবীজি (সা) তাঁকে খেলার অনুমতি দেন। যদি আয়েশা (রা) এর পুতল মানুষের আকৃতির পুতুল হতো তাহলে অবশ্যই নবীজি (সা) খেলার অনুমতি দিতেন না।
নাস্তিকরা এরপরে অভিযোগ করে,
মদিনায় হিজরতের পরে নবী প্রথমবার হজ্জ করতে এসেছিলেন ৬২৯ সালে অর্থাৎ হিজরতের ৭ম বছরে। আয়িশার জন্ম হয়েছিল ৬১৩ বা ৬১৪ সালে। অর্থাৎ এই সময়ে তার বয়স ছিল ১৫ বছরের কাছাকাছি। এই হাদিস থেকে নিশ্চিতভাবে না হলেও মোটামুটি বোঝা যায়, এই বছরের কাছাকছি সময়ই আয়িশার প্রথম হায়েজ হয়েছিল। কারণ মেয়েরা সাধারণত পিরিয়ড হওয়ার শুরুর দিকেই বেশি ব্যথা পায় এবং কান্নাকাটি করে। যদিও স্পষ্টভাবে এই হাদিস থেকে এটি বোঝা যায় না, তবে ধারণা করা যায়। এর আগে আয়িশার হায়েজ হয়েছিল এরকম কোনো তথ্য পাওয়া যায় না।
সহিহ বুখারী,হাদিসঃ ২৯৪,সহিহ হাদিসঃ‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃতিনি বলেনঃ আমরা হজ্জের উদ্দেশেই মদীনা হতে বের হলাম। ‘সারিফ’ নামক স্থানে পৌঁছার পর আমার হায়েয আসলো। আল্লাহ্র রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম এসে আমাকে কাঁদতে দেখলেন এবং বললেনঃ এ তো আল্লাহ্ তা’আলাই আদম-কন্যাদের জন্য নির্ধারণ করে দিয়েছেন। সুতরাং তুমি বাইতুল্লাহ্র ত্বওয়াফ ছাড়া হজ্জের বাকী সব কাজ করে নাও। ‘আয়িশা (রাঃ) বলেনঃ আল্লাহ্র রসূল সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর স্ত্রীদের পক্ষ হতে গাভী কুরবানী করলেন।-ihadis.com
ইমাম আবু দাউদ (রহ) এর শক্তিশালী মতামতকে বাতিল করে দেয়া নাস্তিক এই হাদিসের ব্যাখ্যা করছে এই হাদিস থেকে নাকি বুঝা যায় আয়েশা (রা) এর প্রথম হায়েজ হয়েছিল, হায়রে মুক্তমনা মিথ্যুকবাজগোষ্ঠী। আয়েশা (রা) এর হায়েজ হয়েছিল এই হাদিসের আগে আর কোনো হাদিস পাওয়া যায় না-কথাটি নাস্তিকদের মিথ্যাচার কারণ ইমাম আবু দাউদ (র) থেকে পরিস্কার হাদিস আছে যে নবী মোহাম্মদ (সা) এর ঘরে অর্থাৎ নয় বছর বয়সেই উনার হায়েজ হয়েছিল এমনকি স্বয়ং আয়েশা (রা) থেকে বিশুদ্ধ সনদে প্রমাণিত যে নয় বছরে নারী মহিলা হয়ে যায়। সুতরাং নাস্তিকরা এই হাদিস দেখিয়ে মিথ্যা ব্যাখ্যা করেও তেমন সুবিধা করতে পারেনি। এই হাদিস থেকে কিভাবে নিশ্চিত বুঝা যায় যে সেটাই ছিল আয়েশা (রা) এর প্রথম হায়েজ? পাঠক খেয়াল করুন নবীজি (সা) আয়েশা (রা)কে বলেছিলেন যে তুমি বাইতুল্লাহ্র ত্বওয়াফ ছাড়া হজ্জের বাকী সব কাজ করে নাও এই কথা থেকে কিন্তু পরিস্কার বুঝে নেয়া যায় যে হায়েজ আসার কারণে আয়েশা (রা) হজের সময় ত্বওয়াফ করতে পারবেন না দেখে কান্না করেছিলেন।
যুক্তি কি বলে অল্প বয়সে নারীর বিয়ে মানেই খারাপ?
হযরত আয়েশা (রা) উনার স্বামীর সাথে আজীবন সুখের সংসার করেছেন ব্যাপারটিকে নাস্তিকরা যুক্তি দিয়ে খারাপ প্রমাণ করতে পারবে না। নাস্তিকরা নিজেদের ভিত্তিকে শ্রেষ্ঠ প্রমাণ করার জন্য দাবি করে থাকে নাস্তিকতা নাকি সম্পূর্ণ যুক্তির উপর প্রতিষ্ঠিত। এমনকি মুক্তমনা হুমায়ুন আজাদ লিখিত “ধর্মানুভূতির উপকথা” বইতেও এই কথার পক্ষে ফতোয়া পাওয়া যায়। নাস্তিক হুমায়ুন আজাদ থেকে বর্ণিতঃ
পৃথিবীতে সব কিছুই চলে যুক্তির সাহায্যে; গণিত, পদার্থবিদ্যা, রসায়ন প্রভুতি থেকে শুরু করে সব কিছুই চলে যুক্তির সাহায্যে, কোনো জ্ঞানই যুক্তি ছাড়া সম্ভব না, কোনো সত্যই যুক্তি ছাড়া উদ্ঘাটন করা যায় না।
ইসলাম নাকি নাস্তিকদের মুক্তচিন্তায় বাধা দেয় তাহলে নাস্তিকদের বানানো কথা ‘অল্প বয়সের নারীকে বিয়ে করা যাবে না’ বিধান মুসলিমদের দিকে চাপিয়ে দিতে চাচ্ছে তার পক্ষে নাস্তিকদের যুক্তি কি? হয়তো ক্ষতির কারণ দেখাতে চেষ্টা করবে। যেমন কম বয়সে নারীকে বিয়ে করার ফলে নাস্তিকরা প্রধান যে ক্ষতি গুলো দেখাবে তা হচ্ছেঃ
মাতৃমৃত্যুর ঝুঁকি রয়েছে।
শারীরিক ও মানুসিক ভাবে দুর্বলতা দেখা দিবে।
জন্ম হওয়া সন্তান অপুষ্টিতে ভুগতে পারে।
আমি আপাতত প্রধান তিন কারণ ধরে নিলাম বাকি আপনারা চাইলে আরও ভেবে নিতে পারেন। প্রশ্ন হচ্ছে অল্প বয়সে বিয়ে করার ফলে একটি নারীর মধ্যে যদি এই ক্ষতির কারণ গুলো পাওয়া না গিয়ে বিপরীত উপকারী কারণ পাওয়া যায় যেমন অধিক বয়স্কা স্বামীর সাথে সুখেই আছে, শারীরিক ও মানুসিকভাবে দুর্বলতাও পাওয়া যায়নি অথবা সেই দাম্পত্য জীবনে সন্তানই হয় নি তাহলে কি এই ‘অল্প বয়সের নারীর বিয়ে হওয়া’ কে খারাপ বলার যৌক্তিকতা থাকবে? অবশ্যই না। নাস্তিক্যধর্মের দৃষ্টিতে এরকম কোনো বিধান নির্দিষ্ট গ্রন্থে বলা নেই যে অল্প বয়সের নারীকে বিয়ে করা যাবে না। এটা নাস্তিকরা ইসলামের বিরোধিতা করার জন্য বানিয়েছে কিন্তু একজন নাস্তিক কি অন্য নাস্তিককে এই বিধান চাপিয়ে দিতে পারে যে তুমি চাইলেই তোমার অন্য নাস্তিক বন্ধুর অল্প বয়স্কা কন্যাকে বিয়ে করার মুক্তচিন্তা করতে পারবে না? এই স্বাধীনতা তোমাকে দেয়া হবে না?
নাস্তিকরা যদি বলে অল্প বয়সে মেয়ের বিয়ে হলে ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে তাই ক্ষতি যাতে না হয় তাই এই বিয়ের সিস্টেমকেই বাতিল করতে হবে তাহলে ক্ষতির আশংকাও আর থাকবে না। যদি তাই হয় তাহলে এমন হাজারো জিনিস আছে যেখানে ক্ষতির বা বিপদের আশংকা থাকা সত্ত্বেও সকলেই তা করে থাকে। কিন্তু সেগুলোর অস্তিত্ব কি বাতিল করা হয়? সহজ উদাহরণ দিলে বুঝতে সুবিধা হবে। উদাহরণ গুলো মন দিয়ে পড়তে থাকুন।
মানুষ এক দেশ থেকে অন্য দেশে যাবার জন্য বিমানে উড়ে। বিমান দুর্ঘটনায় অনেক অনেক মানুষ মারা যায় তাহলে বিমানের উড়ার মধ্যে যেহেতু মৃত্যুর ঝুঁকি আছে সেহেতু বিমান বানানোর কারখানা বন্ধ করে দেয়া উচিত? কারণ বিমান বানানো বন্ধ হয়ে গেলেই মানুষ বিমানে উড়তে পারবে না আর মরবেও না? গাড়ি চালিয়ে দুর্ঘটনায় মৃত্যু হবার ঘটনা অসংখ্য রয়েছে তাই এখানেও ক্ষতি আছে তাহলে গাড়ি বানানোর কারখানা গুলোর অস্তিত্ব বাতিল করে দিতে হবে? বড় বড় দালানকোঠা ধ্বসে গিয়ে হাজার হাজার মানুষের প্রাণ যায় তাহলে দালানকোঠা বানানোই বন্ধ করে দিতে হবে? কম্পিউটারে ইন্টারনেট ব্যাবহার করে এমনকি মোবাইলে ফেসবুক ব্যাবহার করেও হ্যাকাররা ব্যাংক ডাকাতি করে কোটি কোটি ডলার মুক্তমনে ভোগ করে তাহলে কি ইন্টারনেট,কম্পিউটার,মোবাইল,ফেসবুক এগুলো সব বাতিল করে ফেলতে হবে যাতে মানুষ এগুলো ব্যাবহার করতে না পারে? মানুষ ধনী হলে তার সম্পদ ডাকাতগোষ্ঠী কিডন্যাপ করতে পারে মৃত্যুর হুমকি দিতে পারে এমনকি টাকা না দিলে মেরেও ফেলতে পারে তাহলে কি টাকা কামানো যাবে না? ধনী হওয়া যাবে না? টাকা ও সম্পদ যাতে মানুষ অর্জন করতে না পারে সেটা বন্ধ করে দিতে হবে? এমনকি প্রযুক্তি বিজ্ঞান অগ্রসর হবার কারণে আধুনিক অস্ত্র,গোলাবারুদ তৈরি করা হচ্ছে এগুলো মুক্তমনে ব্যাবহার করে হয়ে যাচ্ছে যুদ্ধ। মারা যাচ্ছে কোটি কোটি মানুষ। যেহেতু এখানে ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে সেহেতু “প্রযুক্তি বিজ্ঞান” নিয়ে গবেষণা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করে দেয়া উচিত?
উপরে যা যা উদাহরণ গুলো পেশ করলাম সব গুলোই আমাদের জীবনে কোনো না কোনো ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ কিন্তু একইসাথে সেসব ব্যাপারে মৃত্যুর ঝুঁকির প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে আরও আরও ক্ষতি রয়ে থাকতে পারে কিন্তু তাই বলে কি আমরা সব কিছুকেই বাতিল বা বন্ধ করে দিব? অবশ্যই না। তাহলে কি করবো? সচেতনতার সাথে বিষয় গুলোকে প্রয়োগ করবো। ক্ষতি গুলোকে সাবধানতার সাথে এড়িয়ে চলবো। এই সহজ কথাটি বুঝে থাকলে এটা বুঝতে আর অসুবিধা হবে না যে উভয় পরিবার যদি প্রয়োজনের তাগিদে তাদের সন্তানদেরকে অল্প বয়সে বিয়ে করিয়ে দেন এবং এতে যদি কারো ক্ষতি না হয় তাহলে এই বিয়েকে অন্যায় বলার, অমানবিক বলার কোনো যুক্তিই নেই নাস্তিকদের কাছে। বুঝতে পেরেছেন? পাঠক উপরে গাড়ি,বিমান,ইত্যাদির উদাহরণের সাথে কিন্তু নারীকে তুলনা করা হয় নাই বরং নাস্তিক্যবিধানের অসঙ্গতি তুলে ধরা হয়েছে। মুক্তমনা প্রাণীরা আমার সহজ উদাহরণ না বুঝে বলতে পারে গাড়ির সাথে নারীর তুলনা করে নারীকে ছোট করা হয়েছে তাই আগেই পরিস্কার করে দিলাম আরকি। আম্মাজান আয়েশা (রা)এর বিয়ের দিকে যদি আমরা তাকাই তাহলে পরিস্কার বুঝাই যায় যে এই বিয়ের ফলে উনার বিন্দুমাত্র কোনো ক্ষতি হয় নাই এমনকি এই বিয়ে নিয়ে উনার কোনো অভিযোগ পর্যন্ত পাওয়া যায় না তাহলে নাস্তিকদের আপত্তির মানে কি এখানে? আয়েশা (রা) এর নিজের যেখানে সমস্যা নেই, আপত্তি নেই সেখানে মিথ্যুকবাজ নাস্তিকদের আপত্তি কেন? ইসলামবিদ্বেষ? মুসলিমবিদ্বেষ? হযরত মোহাম্মদ (সা) বিদ্বেষ? কুরআন বিদ্বেষ? আল্লাহ বিদ্বেষ? হিংসা? অহংকার?
নাস্তিকরা আমার সহজ যুক্তি গুলো বুঝতে চায় না তাই আরেকটু বেশি সহজ উদাহরণ দিয়ে বুঝিয়ে দিচ্ছি ইসলামবিদ্বেষী সম্প্রদায়কে। উদাহরণটি মন দিয়ে খেয়াল করুন।
ধরুন এক নাস্তিক লোকের নাম হারিস আরেক নাস্তিকের নাম সুলতান। উভয়ই মুক্তচিন্তায় বিশ্বাসী একইসাথে দুইজনেই খুবই ভালো বন্ধু। সুলতান একদিন চিন্তা করলো হারিস তো গরীব ওর অল্প বয়স্কা একটি কন্যা আছে ওকে যদি আমার সাথে বিয়ে দেয় তাহলে এই মেয়ের ভবিষ্যৎ অনেক ভালো হবে। এই মেয়েকে আমি বিজ্ঞানমনস্ক বানাতে পারবো,মুক্তচিন্তা শিখাতে পারবো, মত প্রকাশের স্বাধীনতা শিক্ষা দিতে পারবো,নারীবাদী বানাতে পারবো ইত্যাদি ইত্যাদি।
সুলতান, হারিসের কাছে সেই অল্প বয়স্কা নারীকে বিয়ের কথা জানালে হারিস বলে সে তো অল্প বয়স্কা। এরপরে সুলতান তাকে যুক্তি দিয়ে বুঝায় সে অল্প বয়স্কা কথা ঠিক কিন্তু আমার সাথে বিয়ে দিলে তোমার মেয়ের বিন্দুমাত্র ক্ষতি হবে না এই আস্থা তুমি দ্বিতীয় বিদ্যায় রাখতে পারো। বন্ধুর কথায় বিশ্বাস করে ঠিকই নাস্তিক্যধর্ম অনুযায়ী বিয়ে হয়ে গেলো। একদিন হারিস মারা যায় এবং সুলতান তার অল্প বয়স্কা স্ত্রীকে নিয়ে জীবন যাপন করতে থাকে। সুলতান যখন মারা যায় তখন তার স্ত্রী অনেক কষ্ট পায় এবং স্বামীর জন্য খুব কান্না করে।
উপরের কাল্পনিক উদাহরণ চিন্তা করুন। আপনি যদি নিজেকে নাস্তিক দাবি করে থাকেন তাহলে আপনার কাছে কি এমন যুক্তি আছে উপরে বর্ণিত গল্পের নাস্তিকদের কর্মকে অনৈতিক দাবি করার? সততার সাথে বলুন তো? আছে কিছু?
অল্প বয়সেই হযরত আয়েশা (রা)এর শারীরিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক পরিপক্কতাঃ
আম্মাজান আয়েশা (রা) হ্যাংলা পাতলা ছিলেন, অল্প বয়স্কা ছিলেন এরকম হাদিস দেখিয়ে নাস্তিকান্ধরা বলতে চায় আয়েশা (রা) শারীরিক ভাবে খুবই দুর্বল ছিলেন। এটাই প্রমাণ করে যে উনি শিশু ছিলেন। নাস্তিকান্ধরা যে হাদিস গুলো পেশ করে তা পড়া যাকঃ
সহিহ বুখারী,হাদিসঃ২৬৬১,সহিহ হাদিসে যেখানে বলা হয়েছে, আয়েশা (রা) থেকে বর্ণিত তখনকার মেয়েরা দুবলা পাতলা হতো,মোটা সোটা হতো না। কেননা খুব সামান্য খাবার তারা খেতে পেতো। তাই হাওদা উঠাতে গিয়ে তার ভার তাদের নিকট অস্বাভাবিক বলে মনে হল না। তদুপরি সে সময় আমি অল্প বয়স্কা কিশোরী ছিলাম এবং তখন তারা হাওদা উঠিয়ে উট হাঁকিয়ে রওনা হয়ে গেল।…… এরকম কথা সহিহ বুখারী,হাদিসঃ ৪৭৫০, সহিহ হাদিসেও পাওয়া যায়।-ihadis.com
সহিহ বুখারী,হাদিসঃ ২৬৩৭,সহিহ হাদিসে বলা হয়েছেঃ আর বারীরা (রাঃ) বললেন, তার আয়েশা সম্পর্কে একটি মাত্র কথাই আমি জানি, তা এই যে, অল্প বয়স্কা হবার কারণে পরিবারের লোকদের জন্য আটা খামির করার সময় তিনি ঘুমিয়ে পড়েন সেই ফাঁকে বকরী এসে তা খেয়ে ফেলে।-ihadis.com
আয়েশা (রা) পাতলা ছিলেন,তেমন মোটা ছিলেন না অথবা অল্প বয়স্কা কিশোরী ছিলেন কথা গুলো থেকে এটা প্রমাণ হয় না যে উনি বিয়ের উপযুক্ত ছিলেন না। অথবা এটাও প্রমাণ হয় না যে উনি শারীরিকভাবে খুবই দুর্বল ছিলেন। আমরা পরিস্কার হাদিস পাই যেখানে আম্মাজান আয়েশা (রা) উত্তম সাস্থের অধিকারী ছিলেন বলে প্রমাণিত। তাই নাস্তিকরা যেই মিথ্যাচার করার পয়তারা করেছে সেটারও সুযোগ থাকছে না আর। সহিহ হাদিস গুলো পড়তে থাকুন কারণ এই হাদিস গুলো তারা কখনো দেখাতে চাইবে না। মানুষকে জানাতে চাইবে না।
সুনানে ইবনে মাজাহ,হাদিসঃ৩৩২৪,সহিহ হাদিসঃ
আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ আমার মা আমাকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সংসারে পাঠাতে চাচ্ছিলেন বিধায় আমার দৈহিক পরিপুষ্টির জন্য চিকিৎসা করাতেন। কিন্তু তা কোন উপকারে আসলো না। অবশেষে আমি তাজা খেজুরের সাথে শসা মিশিয়ে খেলাম এবং উত্তমরুপে দৈহিক পরিপুস্টি লাভ করলাম।-ihadis.com
সুনানে আবু দাউদ, হাদিসঃ ৩৯০৩,সহিহ হাদিসঃ
আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃতিনি বলেন, আমার মায়ের ইচ্ছা ছিল আমাকে স্বাস্থ্যবতী বানিয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নিকট পাঠাবেন। এজন্য তিনি অনেক ব্যবস্থা গ্রহণ করেন, কিন্তু কোন ফল হয়নি। শেষে তিনি আমাকে পাকা খেজুরের সাথে শসা বা খিরা খাওয়াতে থাকলে আমি তাতে উত্তমরূপে স্বাস্থ্যের অধিকারী হই।-ihadis.com
এই হাদিস গুলো সরাসরি চোখে আঙ্গুল দিয়ে প্রমাণ করে দিচ্ছে আম্মাজান আয়েশা (রা) রাসুল (সা)এর সংসারে যাবার জন্য সম্পূর্ণ পরিপক্ক ছিলেন। আরও আছে যা নাস্তিকিস্টরা জানলে সরিয়ে ফেলতে চাইবে অথবা দেখাতে চাইবে না। রাশীদ হাইলামায যিনি একজন ইসলামী গবেষক এবং সীরাত লেখক, তাঁর লেখা "জীবন ও কর্ম আয়েশা (রা)" অনুবাদ করেছেন মুহাম্মদ আদম আলী, এই কিতাবের ২৮৭ ও ২৮৮ পৃষ্ঠায় বর্ণিত আছেঃ
... এটা ভুলে গেলে চলবে না যে , এ (অল্প) বয়সে বিয়ে করা তখনকার সমাজে খুবই প্রচলিত একটি বিষয় ছিল এবং তখন শিশুরা একটু আগেই বেড়ে উঠত । ... বিশেষ করে মেয়ে শিশুরা পারিপার্শ্বিক পরিবেশ - পরিস্থিতির কারনে আগেই বালেগ হয়ে যেত এবং স্বামীর গৃহে তারা যথেষ্ট দক্ষতারও পরিচয় দিত । অধিকন্তু এটা শুধু মেয়েদের বেলায়ই প্রযোজ্য ছিল না। তখনকার সমাজে সমাজে ছেলেরাও ৮ - ১০ বছর বয়সে বিয়ে করতো এবং এ বয়সেই তারা পরিবারের কর্তা বনে যেত যা আজকের সমাজে অবিশ্বাস্য মনে হয়।
আল্লামা ইদরীস কান্ধলবী (রহ) লিখিত সীরাতুল মুস্তফা (সা) ৩ খণ্ড, ২৭১ পৃষ্ঠায় বর্ণিত হয়েছেঃ
...তিনি নয় বৎসরে (হযরত আয়েশা) এত ব্যাপক বিস্তীর্ণ গভীর জ্ঞানের অধিকারী হয়েছিলেন। মহানবী (সা) ইন্তিকালের পর প্রবীণ সাহাবায়ে কেরামের মধ্যে কোন বিষয় জটিলতা বা সন্দেহের সৃষ্টি হলে তা হযরত আয়েশা (রা) এর নিকট পেশ করা হতো। সাহাবায়ে কেরামের যুগে হযরত আয়েশা (রা) এর জ্ঞান এবং ইতিহাস ও বিধিবিধান বিষয়ক দক্ষতা ছিল স্বীকৃত। এমনকি এমনও বলা হয়েছে যে, ইসলাম বিধি বিধানের এক চতুর্থাংশ হযরত আয়েশা (রা) থেকে বর্ণিত হয়েছে। আবার ২৭২ পৃষ্ঠায় বর্ণিত হয়েছে, ইমাম যুহরী (রহ) বলেন, হযরত আয়েশা (রা) এর ইলম বা জ্ঞান অন্যান্য উম্মুল মুমিনীন ও সব মহিলাদের সাথে তুলনা করলে তাঁর অবস্থান-সেরাও বিজয়ী হবে।
সাইয়েদ সুলাইমান নদভী (রহ) লিখিত বিখ্যাত সিরাত গ্রন্থ "উম্মুল মুমিনীন সীরাতে আয়েশা (রা)" ৪৯ পৃষ্ঠায় বলা হয়েছেঃ
বিবাহের সময় হযরত আয়েশা (রা) এর বয়স ছিল মাত্র ছয় বছর।এতো অল্প বয়সে বিবাহ হওয়ার রহস্য ছিল নবুওয়াত ও খেলাফতের মধ্যে দৃঢ় সম্পর্ক গড়া। প্রথমত আরবের শুষ্ক আবহাওয়ায় মেয়েরা অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে উঠত। আবার অভিজ্ঞতা বলে,বিশেষ ব্যক্তিদের মেধা-প্রতিভা-চেতনায় যেমন বিশেষত্ব থাকে,তেমনি থাকে শারীরিক গঠনেও,যাকে ইংরেজিতে বলে প্রিকৌশাস-অকালপক্ব। যাই হোক,রাসুল (সা) হযরত আয়েশা (রা) কে এতো অল্প বয়সে জীবনসঙ্গিনীরূপে গ্রহণ করা প্রমান যে শৈশবেই তাঁর মাঝে অসাধারণ মেধা-প্রতিভা ও অস্বাভাবিক বর্ধনশীলতা লক্ষ করা গিয়েছিল।
সাইয়েদ আবুল হাসান আলী নাদভী (রহ) লিখিত “নবীয়ে রহমত” বইয়ের ৪২০ ও ৪২১ পৃষ্ঠায় বর্ণিত হয়েছে যেঃ
রিজালশাস্ত্র ও তাবাকাতের ইমাম যাহাবী (রহ) (মৃ.৭৪৮ হি.) তাঁর তাযকিরাতুল-হুফফাজ নামক বিখ্যাত গ্রন্থে লিখেছেন, তিনি (আয়েশা) ফিকহশাস্ত্র সম্পর্কে অভিজ্ঞ ফকীহ সাহাবীদের মধ্যে সবচেয়ে বিশিষ্ট ছিলেন। বিভিন্ন মাসলা-মাসায়েলের ক্ষেত্রে সাহাবায় কিরাম (রা) তাঁর শরণাপন্ন হতেন। কাবীসা বিনতে যুওয়ায়র (রা) থেকে বর্ণিত, হযরত আয়েশা (রা) মাসলা-মাসায়েল সম্পর্কে সর্বাপেক্ষা অভিজ্ঞ ছিলেন। শীর্ষস্থানীয় সাহাবীগণও তাঁর নিকট মাসলা-মাসায়েল সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করতেন। আবু মুসা (রা) বলেন, আমরা রাসুল (সা)এর সাহাবীরা কোন হাদিস বুঝতে অসুবিধার সম্মুখীন হলে আয়েশা (রা)-কে জিজ্ঞেস করতাম এবং এ বিষয় তিনি অবশ্যই জানতেন। হাসসান (রা) বলেন,আমি কুরআন মজীদ, হালাল-হারাম, ফারায়েয ও বিধি-বিধান, কবিতাবলী, আরবের ইতিহাস ও আরবদের নসবনামা (বংশ-পরিচয়) সম্পর্কে তাঁর চেয়ে বেশি অভিজ্ঞ আর কাউকে পাইনি।
সুনানে আবু দাউদ, হাদিসঃ ৪৯৩৩, সহিহ হাদিসঃ
আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, আমার ছয় বা সাত বছর বয়সে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বিয়ে করেন। আমরা মদিনায় আগমন করলে একদল মহিলা আসলেন। বর্ণনাকারী বিশরের বর্ণনায় রয়েছেঃ আমার নিকট (আমার মা) উম্মু রূমান (রাঃ) আসলেন, তখন আমি দোলনায় দোল খাচ্ছিলাম। তিনি আমাকে নিয়ে গেলেন, আমাকে প্রস্তুত করলেন এবং পোশাক পরিয়ে সাজালেন। অতঃপর আমাকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নিকট পেশ করা হলো। তিনি আমার সঙ্গে বাসর যাপন করলেন, তখন আমার বয়স নয় বছর। মা আমাকে ঘরের দরজায় দাড় করালেন এবং আমি উচ্চহাসি দিলাম। ইমাম আবূ দাঊদ (রহঃ) বলেন, অর্থাৎ আমার মাসিক ঋতু হয়েছে। আমাকে একটি ঘরে প্রবেশ করানো হলো। তাতে আনসার গোত্রের একদল মহিলা উপস্থিত ছিলেন। তারা আমার জন্য কল্যাণ ও বরকত কামনা করলেন।-ihadis.com
ইসলামবিদ্বেষী সম্প্রদায় কখনো চাইবে না এ সত্য গুলো মানুষকে জানাতে। কারণ সঠিক ব্যাখ্যাটা জেনে গেলে মানুষ ইসলাম সম্পর্কে সত্যটা জেনে যাবে। মানুষ সত্য বুঝে গেলে ইসলামবিদ্বেষীদের বানানো ব্যাখ্যা বিশ্বাস করবে না। বোঝেন নাই ব্যাপারটা? আপনাকে সত্যটা জানতে হবে। পড়তে হবে।
কুমারী নারীকে বিয়ে করতে বলে নবী মোহাম্মদ (সা) অন্যায় করেছেন?
নাস্তিকিস্টরা বিশ্বাস করে নবী মোহাম্মদ (সা) নাকি কুমারীদের প্রতি তীব্র যৌন আকর্ষণ ছিল বিদায় নিজের সাহাবীদেরকেও কুমারী নারী বিয়ে করার আদেশ দিতেন-এটি নাস্তিকদের মিথ্যাচার। নবী মোহাম্মদ (সা) কোন হাদিসে বলেছেন উনি কুমারী নারীদের প্রতি যৌন আসক্ত ছিলেন? উদাহরণস্বরূপ আমি যদি কাউকে বলি, তুমি বাস দিয়ে ভ্রমণ না করে বিমান দিয়ে ভ্রমণ করতে পারো এতে তোমার সুবিধা বেশি হবে এই কথার অর্থ কি আমি বিমানে ভ্রমণের প্রতি আসক্ত? অবশ্যই না। হাদিসের প্রেক্ষাপট গুলো পর্যবেক্ষণ করলেই কিন্তু সত্যতা গুলো বোঝা যায় কিন্তু নাস্তিকিস্টরা সেই সত্যের সন্ধান কেন করতে যাবে? সত্য বলে মুক্তচিন্তার আন্দোলনের চাকরি হারাবে নাকি? আসুন হাদিস গুলো পাঠ করে দেখি।
সুনানে আন নাসায়ী,হাদিসঃ ৩২১৯, সহিহ হাদিসঃ
জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃবিবাহ করার পড় আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম –এর খিদমতে আগমন করলে তিনি বললেনঃ হয়ে জাবির! তুমি কি বিবাহ করেছ? আমি বললামঃ জ্বী হ্যাঁ। তিনি বললেনঃ কুমারী, না বিবাহিতা? আমি বললামঃ বিবাহিতা। তিনি ইরশাদ করলেনঃ কুমারী কেন বিবাহ করলে না, যে তোমার সাথে ক্রীড়া-কৌতুক করতো, আর তুমি তার সাথে ক্রীড়া-কৌতুক করতে!-ihadis.com
সুনানে আন নাসায়ী,হাদিসঃ ৩২২০, সহিহ হাদিসঃ
জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে আমার দেখা হলে তিনি বললেনঃ হে জাবির? আমার অজ্ঞাতে তুমি কি স্ত্রী গ্রহণ করেছ? আমি বললামঃ হ্যাঁ, ইয়া রাসূলুল্লাহ্! তিনি বললেনঃ কুমারী, না পূর্বে বিবাহিতা (তালাকপ্রাপ্তা ; বিধবা) ? আমি বললামঃ পূর্বে বিবাহিতা। তিনি বললেনঃ কেন কুমারী (বিবাহ) করলে না, তাহলে তুমি তার সাথে আমদ-ফুর্তি করতে এবং সেও তোমার সাথে ক্রীড়া-কৌতুক করতো।-ihadis.com
নবী মোহাম্মদ (সা) যেই উদ্দেশ্যে কুমারী নারীকে বিয়ে করার পরামর্শ দিয়েছেন সেটা কিন্তু হাদিসেই স্পষ্ট অর্থাৎ কুমারী নারী বিয়ে করলে একে অপরের সাথে আনন্দ ফুর্তি, কৌতুক করতে পারতো। আর বিধবা নারীর চেয়ে কুমারী নারীরা কৌতুক,খেলাধুলা প্রবণতা বেশি হবে এটাই স্বাভাবিক। কুমারী স্ত্রী এবং স্বামী যাতে আনন্দে থাকতে পারে সেই পরামর্শ দেয়া কিভাবে অন্যায় হতে পারে? নাস্তিকদের মগজ কি এতো পচনশীল যে এই সাধারণ বিষয় গুলো বুঝতে অক্ষম? আরেকটি হাদিস পড়লে পুরো প্রেক্ষাপট আরও পরিস্কার হয়ে যাবে।
সুনানে আন নাসায়ী,হাদিসঃ৩২২৬,সহিহ হাদিসঃ
জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃতিনি রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সময় এক নারীকে বিবাহ করলেন। তাঁর সাথে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সাক্ষাৎ হলে তিনি জিজ্ঞাসা করলেনঃ হে জাবির, তুমি কি বিবাহ করছো? তিনি বলেন, আমি বললামঃ জ্বী, হ্যাঁ। তিনি বললেনঃ কুমারী, না পূর্ব-বিবাহিতা? আমি বললামঃ বরং বিবাহিতা। তিনি বললেনঃ কেন একজন কুমারী কে বিবাহ করলে না, যে তোমার সাথে মন মাতান আচরণ করতো? তিনি বললেন, আমি বললামঃ ইয়া রাসূলুল্লাহ্! আমার কয়েকজন বোন রয়েছে। আমার ভয় হলো, সে আমার এবং তাদের মধ্যে দখলদারী সৃষ্টি করবে। তিনি বললেনঃ তা হলে তাই (ভাল)। নারীদেরকে তাদের ধর্ম, সম্পদ, এবং সৌন্দর্যের কারণে বিবাহ করা হয়ে থাকে। অতএব তুমি ধার্মিক মেয়ে বিবাহ করবে। আল্লাহ্ তোমার ভাল করুন।-ihadis.com
পাঠক খেয়াল করুন পুরো হাদিসটি কিন্তু নাস্তিকরা কখনো দেখাবে না অর্ধেক হাদিস দেখিয়ে নিজেদের অন্ধবিশ্বাস হাদিসের মধ্যে মিশিয়ে চালিয়ে দিবে। নাস্তিকগোষ্ঠীরা পুরো ইসলামবিদ্বেষ নামক শেকলে বন্দী। সত্য গ্রহণের সাহস যেই দিন এই সম্প্রদায় করা শিখবে সেই দিন শেকল থেকে মুক্তি পেয়ে যাবে।
স্বামী স্ত্রীর সাথে জবরদস্তি সহবাস করতে পারবে? অথবা স্বামী স্ত্রীর ক্ষতি করতে পারবে? ইসলাম কি আসলেই তাই বলে?
সোজা বাংলায় “না”। নাস্তিকরা স্বামীর প্রতি স্ত্রীর দায়িত্বের হাদিস গুলো দেখিয়ে বানিয়ে বানিয়ে ব্যাখ্যা করে বলে ইসলাম নাকি জবরদস্তি,নির্যাতন,অত্যাচার করে স্ত্রীর সাথে সহবাস করতে বলে। এটি এক্কেবারে খাটি মিথ্যাকথা। নাস্তিকিস্টরা আরও বলে প্রাপ্তবয়ষ্ক কিংবা অপ্রাপ্তবয়ষ্ক, সকল নারীর জন্য স্বামীর যৌনচাহিদা পূরণ স্ত্রীর জন্য অবশ্য কর্তব্য। এরপরে কিছু হাদিস পেশ করে ওরা যেমনঃ
সহিহ মুসলিম,হাদিসঃ ৩৪৩০, সহিহ হাদিসঃ নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, স্বামীর বিছানা পরিহার করে কোন স্ত্রী রাত্রি যাপন করলে ফজর পর্যন্ত মালাকগণ তার প্রতি লা’নত করতে থাকে।-ihadis.com
সহিহ মুসলিম,হাদিসঃ ৩৪৩২, সহিহ হাদিসঃ আবূ হুরায়রাহ্ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ কসম সেই সত্তার যাঁর হাতে আমার জীবন। কোন ব্যক্তি তার স্ত্রীকে যখন বিছানায় আহবান করে, কিন্তু সে তা অস্বীকার করে, নিঃসন্দেহে যে পর্যন্ত সে তার স্ত্রীর প্রতি সন্তুষ্টি না হয়, ততক্ষন আসমানবাসী তার প্রতি অসন্তুষ্ট থাকে।-ihadis.com
সুনানে ইবনে মাজাহ,হাদিসঃ ১৮৫৩, হাসান সহিহঃ আবদুল্লাহ বিন আবূ আওফা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃতিনি বলেন, মুআয (রাঃ) সিরিয়া থেকে ফিরে এসে নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে সিজদা করেন। নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, হে মুআয! এ কী? তিনি বলেন, আমি সিরিয়ায় গিয়ে দেখতে পাই যে, তথাকার লোকেরা তাদের ধর্মীয় নেতা ও শাসকদেরকে সিজদা করে। তাই আমি মনে মনে আশা পোষণ করলাম যে, আমি আপনার সামনে তাই করবো। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, তোমরা তা করো না। কেননা আমি যদি কোন ব্যক্তিকে আল্লাহ ছাড়া অপর কাউকে সিজদা করার নির্দেশ দিতাম, তাহলে স্ত্রীকে নির্দেশ দিতাম তার স্বামীকে সিজদা করতে। সেই স্বত্তার শপথ, যাঁর হাতে মুহাম্মাদের প্রাণ! স্ত্রী তার স্বামীর প্রাপ্য অধিকার আদায় না করা পর্যন্ত তার প্রভুর প্রাপ্য অধিকার আদায় করতে সক্ষম হবে না। স্ত্রী শিবিকার মধ্যে থাকা অবস্থায় স্বামী তার সাথে জৈবিক চাহিদা পূরণ করতে চাইলে স্ত্রীর তা প্রত্যাখ্যান করা অনুচিত।-ihadis.com
জামে আত তিরমিজি,হাদিসঃ ১১৫৯, হাসান সহিহঃ আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃরাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ আমি যদি কাউকে অন্য কোন লোকের প্রতি সিজদা করার নির্দেশ দিতাম তাহলে অবশ্যই স্ত্রীকে তার স্বামীর প্রতি সিজদা করার নির্দেশ দিতাম।-ihadis.com
উপরের হাদিস গুলো পেশ করে মিথ্যুকমনারা প্রমাণ করতে চায় অল্প বয়স্কা নারীর সাথে যদি স্বামী সহবাস করতে চায় তাহলে স্ত্রী মানা করতে পারবে না, স্ত্রী সহবাসে ইচ্ছুক থাকুক অথবা না থাকুক। কিন্তু নাস্তিকদের এই ব্যাখ্যার সাথে ইসলামের কোনো সম্পর্ক নেই। উপরের হাদিস গুলো স্বাভাবিক অবস্থায় স্ত্রী তার স্বামীর প্রতি যে দায়িত্ব আছে তা পালন করাকে বুঝায় কিন্তু অল্প বয়স্কা হবার কারণে যদি সহবাসে স্ত্রীর ক্ষতির আশংকা থাকে তাহলে কি স্বামীর দায়িত্ব কি হবে ইসলাম তা দেয় নাই? অবশ্যই দিয়েছে। স্বামীকে ইসলাম কি কি দায়িত্ব চাপিয়ে দিয়েছে সেগুলো ইসলামবিদ্বেষী সম্প্রদায় কখনো জানতে দিবে না। স্বামী যে স্ত্রীর ক্ষতি করতে পারবে না এই হাদিস গুলো নাস্তিকিস্টরা সরিয়ে ফেলার চেষ্টা করে। না হলে উপরের হাদিস গুলোই কেন দেখাতে চাবে? অন্য হাদিস গুলো কেন নয়?
উপরের হাদিসে একজন স্ত্রীর স্বামীর প্রতি কি দায়িত্ব সেটা তুলে ধরা হয়েছে কিন্তু একজন স্বামীর কি দায়িত্ব স্ত্রী প্রতি সেটা কিন্তু নাস্তিকরা দেখায় নি। ইসলাম নিয়ে কিভাবে মুক্তচিন্তার আন্দোলন করা হয় বুঝেন নি এখনো? নবী মোহাম্মদ (সা) আয়েশা (রা) কে কেমন মূল্যায়ন করতেন সেটা জেনে গেলেই পরিস্কার হয়ে যাবে যে অল্প বয়স্কা স্ত্রীকে কেমন মর্যাদা দিতে হবে। কেমন আচরণ করতে হবে।
সহিহ মুসলিম,১৯৪৯,সহিহ হাদিস সুত্রেঃ
আয়িশাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, আল্লাহর শপথ! আমি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে দেখলাম, তিনি আমার হুজরার দরজায় দাঁড়িয়ে আছেন আর কৃষ্ণাঙ্গ যুবকেরা তাদের অস্ত্র দ্বারা রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর মাসজিদে নাবাবীতে তাদের যুদ্ধের কলাকৌশল দেখাচ্ছে। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাকে তাঁর চাদর দ্বারা আড়াল করে দিচ্ছেন যাতে আমি তাদের খেলা দেখতে পারি। অতঃপর তিনি সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমার জন্য দাঁড়িয়ে থাকলেন, যতক্ষণ আমি নিজে ফিরে না আসি। অতএব অল্পবয়স্কা বালিকাদের খেল-তামাশার প্রতি যে লোভ রয়েছে তার মূল্যায়ন কর।-ihadis.com
সহিহ মুসলিম,হাদিসঃ ১৯৫০, সহিহ হাদিস সুত্রেঃ
আয়িশাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, একবার রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঘরে প্রবেশ করে দেখেন, আমার কাছে দু’টি বালিকা জাহিলিয়্যাত যুগে সংঘটিত বু’আস যুদ্ধের গান গাইছে। তিনি বিছানায় কাত হয়ে শুয়ে চেহারা অন্যদিকে ফিরিয়ে দিলেন। এমন সময় আবূ বকর (রাঃ) প্রবেশ করলেন। তিনি এ দৃশ্য দেখে আমাকে ধমক দিয়ে বললেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম- এর নিকটে শাইত্বনের বাদ্য চলছে? এ কথা শুনে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর দিকে ফিরে বললেন, হে আবূ বাক্র! এদের ছেড়ে দাও। এরপর তিনি যখন অন্যমনস্ক হলেন, আমি বালিকাদ্বয়কে আস্তে খোঁচা দিলাম। তারা বের হয়ে চলে গেল। এটা ঈদের ঘটনা। কৃষ্ণাঙ্গ যুবকেরা ঢাল-বল্লম দ্বারা রণকৌশল ও খেল-তামাশা করছিল। তখন হয়ত আমি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর কাছে আবেদন করেছি না হয় তিনি আমাকে জিজ্ঞেস করেছেন তুমি কি তা দেখতে আগ্রহী? আমি বললাম- জি হ্যাঁ। তিনি সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাকে তাঁর পিছনে এমনভাবে দাঁড় করিয়ে দিলেন যে, আমার গণ্ডদেশ তাঁর গণ্ডদেশের উপর সংলগ্ন হলো। এরপর তিনি সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাদেরকে লক্ষ্য করে বললেন, হে বানী আরফিদাহ্! তোমরা তোমাদের খেলা চালিয়ে যাও। অনেকক্ষণ পর আমি যখন একটু বিরক্তবোধ করলাম, তিনি আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, হয়েছে তো? আমি বললাম, জ্বি হ্যাঁ! তিনি বললেন, তাহলে এবার যাও।-ihadis.com
সহিহ মুসলিম,হাদিসঃ ১৯৫১, সহিহ হাদিস সুত্রেঃ
আয়িশাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, কিছু সংখ্যক আবিসিনীয় লোক মাদীনায় পৌঁছে ঈদের দিন মাসজিদে নাবাবীতে (অস্ত্র নিয়ে) খেলা করছিল। নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাকে ডাকলেন। আমি তাঁর কাঁধের উপর মাথা রেখে তাদের খেলা দেখতে লাগলাম। অনেকক্ষণ এ দৃশ্য উপভোগ করে শেষ পর্যন্ত আমি নিজেই তাদের দিক থেকে দৃষ্টি ফিরিয়ে নিলাম।-ihadis.com
সুনানে আন নাসায়ী,হাদিসঃ ১৫৯৫, সহিহ হাদিসঃ
আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে দেখেছি তিনি আমাকে তাঁর চাদর দ্বারা ঢেকে রাখতেন যখন আমি হাবশীদের (নিগ্রো) দিকে নিজে ক্লান্ত না হওয়া পর্যন্ত দেখতে থাকতাম। তারা মসজিদে খেলাধূলা করত। এখন তোমরা, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর কাছে খেলাধূলায় আগ্রহী অল্প বয়স্কা বালিকাদের কতটুকু মর্যাদা ছিল তা আন্দাজ করতে পারো।-ihadis.com
হাদিস গুলো মন দিয়ে বুঝার চেষ্টা করুন। নবী মোহাম্মদ (সা) যদি নাস্তিকান্ধ চশমায় আসলেই খারাপ লোক হতেন তাহলে কখনোই নিজের অল্প বয়স্কা স্ত্রীর পছন্দকে গুরুত্ব দিতেনই না। নাস্তিকতার শেকলে বন্দিত্ব বরণ করা নাস্তিক গুলো কিভাবে এই মিথ্যা অভিযোগ করে অল্প বয়স্কা স্ত্রীর ক্ষতি হলেও জবরদস্তি সহবাস করতে পারবে স্বামী? নিজের কাঁধে স্ত্রীকে নিয়ে খেলা দেখাতেন যেই মানুষ সেই মানুষকে নিয়ে মিথ্যা বলতে একটু বিবেকে বাধে না যেই সম্প্রদায়ের তারা কেমন গোষ্ঠী এটা কি আমাকে বুঝাতে হবে? স্ত্রীর আগ্রহ পছন্দ-অপছন্দের গুরুত্ব দিতে জানে যে স্বামী সে কিভাবে স্ত্রীর ক্ষতি করার নির্দেশ দিবে? এখন আরও কিছু হাদিসের তথ্য তুলে ধরবো যেখানে ইসলাম অন্যের ক্ষতি করাকে নিষেধ করে দিয়েছে। পাঠক মন দিয়ে নিচের সহিহ হাদিস গুলো পাঠ করতে থাকুন।
সুনানে ইবনে মাজাহ,হাদিসঃ ২৩৪০, সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,
উবাদাহ ইবনুস সাবিত (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম নির্দেশ দিয়েছেন যে, "ক্ষতি করাও যাবে না, ক্ষতি সহাও যাবে না।-ihadis.com
সুনানে ইবনে মাজাহ,হাদিসঃ২৩৪১, সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,
ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃতিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ "ক্ষতি করাও যাবে না, ক্ষতি সহাও যাবে না।-ihadis.com
সুনানে ইবনে মাজাহ,হাদিসঃ২৩৪২, হাসান হাদিস থেকে বর্ণিত,
আবূ সিরমাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, "যে ব্যক্তি অন্যের ক্ষতি করবে, আল্লাহ তার ক্ষতি করবেন এবং যে ব্যক্তি অন্যকে কষ্ট দিবে, আল্লাহ তাকে কষ্ট দিবেন।-ihadis.com
সুনানে আবু দাউদ, হাদিসঃ ৩৬৩৫, হাসান হাদিস থেকে বর্ণিত,
নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সাথী আবূ সিরমাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ কেউ অপরের ক্ষতি করলে আল্লাহ্ তার ক্ষতিসাধন করবেন। কেউ অযৌক্তিকভাবে কারো বিরোধীতা করলে আল্লাহ্ তার বিরোধী হবেন।-ihadis.com
জামে আত তিরমিজি, হাদিসঃ ১৯৪০, হাসান হাদিস থেকে বর্ণিত,
আবূ সিরমা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ যে লোক অন্য কারো ক্ষতিসাধন করে, আল্লাহ্ তা‘আলা তা দিয়েই তার ক্ষতিসাধন করেন। যে লোক অন্যকে কষ্ট দেয়, আল্লাহ্ তা‘আলা তাকে কষ্টের মধ্যে ফেলেন।-ihadis.com
জামে আত তিরমিজি,হাদিসঃ ১৯৪৪, সহিহ হাদিসঃ
আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃতিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ্ তা‘আলার নিকট সঙ্গীদের মাঝে উত্তম সঙ্গী হল সেই ধরনের ব্যক্তি যে তার নিজ সঙ্গীর নিকট উত্তম। আল্লাহ্ তা‘আলার দৃষ্টিতে প্রতিবেশীদের মাঝে উত্তম হল সেই ধরনের প্রতিবেশী যে তার নিজের প্রতিবেশীর নিকট উত্তম।-ihadis.com
সহিহ বুখারী,হাদিসঃ৬০৩৯, সহিহ হাদিসঃ
আসওয়াদ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃতিনি বলেন, আমি ‘আয়িশা (রাঃ) -কে জিজ্ঞেস করলামঃ নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজ গৃহে কী কাজ করতেন? তিনি বললেনঃ তিনি পারিবারিক কাজ-কর্মে ব্যস্ত থাকতেন। যখন সালাতের সময় উপস্থিত হত, তখন উঠে সালাতে চলে যেতেন।-ihadis.com
আল কুরআন,সুরা নিসা ৪ঃ১৯ আয়াতে বর্ণিত হয়েছেঃ
হে ইমানদারগণ জবরদস্তি করে নারীদের ওয়ারিশ হওয়া তোমাদের জন্য বৈধ নয় আর তাদেরকে দেয়া মাল হতে কিছু উসুল করে নেয়ার উদ্দেশ্যে তাদের সাথে খারাপ আচরণ করবে না,যদি না তারা সুস্পষ্ট ব্যভিচার করে। তাদের সাথে দয়া ও সততার সাথে জীবন যাপন করো,যদি তাদেরকে না পছন্দ করো তবে হতে পারে যে তোমরা যাকে না পছন্দ করছ,বস্তুত তারই মধ্যে আল্লাহ বহু কল্যাণ দিয়ে রেখেছেন।
আমি উপরে যে বিস্তারিত তথ্য-প্রমাণ তুলে ধরেছি হয়তো নাস্তিকিস্টরা জীবনে সেগুলো পড়ে নাই আর পড়ে থাকলে সেগুলো লুকানোর চেষ্টা করতে ভুল করেনি। না হলে আপনারাই বলুন যেখানে ইসলাম স্ত্রীর ব্যাপারে স্বামীকে কোঠর দায়িত্ব প্রদান করে সেগুলো না দেখিয়ে স্বামীর প্রতি স্ত্রীর দায়িত্বের হাদিস পেশ করে তারপরে আবার মিথ্যা কথা বানিয়ে বানিয়ে বলে অর্থাৎ স্বামী নাকি স্ত্রীর সাথে জবরদস্তি করে সহবাস করতে পারবে স্ত্রীর ইচ্ছাকে প্রাধান্য দেয়া নাকি ইসলামে নিষেধ- এরকম মুক্তমনে ইসলাম নিয়ে জালিয়াতি করার মানে কি ভাই? নাস্তিকদের মগজ কি এখনো মানুষে বিবর্তিত হয়নি?
নবী মোহাম্মদ (সা) আয়েশা (রা)কে নির্যাতন করতেন?
নবী মুহাম্মদ (সা) তাঁর স্ত্রী আয়েশা (রা) জোরে থাপ্পর মেরেছেন এতে তাঁর স্ত্রী কষ্ট পেয়েছেন এর থেকে প্রমান হয় যে নবী মুহাম্মদ (সা) স্ত্রীদের নির্যাতন করতেন? নাস্তিকরা যেই হাদিস থেকে মিথ্যা কথাটি বলার সুযোগ পায় সেই হাদিসটি পুরোটা পাঠ করি আসুন।
সহিহ মুসলিম, হাদিসঃ ২১৪৬ , সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত হয়েছে,
মুহাম্মাদ ইবনু ক্বায়স (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, ‘আমি ‘আয়িশা (রাঃ)-কে বলতে শুনেছি- তিনি বলেন, আমি কি তোমাদেরকে নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে ও আমার তরফ থেকে হাদীস বর্ণনা করে শোনাব না? আমরা বললাম, অবশ্যই! ইমাম মুসলিম (রহঃ) হাজ্জাজ আল আ‘ওয়ার (রহঃ) থেকে শুনেছেন ..... জনৈক কুরায়শী ‘আবদুল্লাহ (রহঃ) থেকে মুহাম্মাদ ইবনু ক্বায়স ইবনু মাখরামাহ্ ইবনুল মুত্ত্বালিব (রহঃ) একদিন আমাকে বলেন, আমি কি তোমাদেরকে আমার পক্ষ থেকে ও আমার আম্মাজান থেকে হাদীস বর্ণনা করে শুনাব? রাবী ‘আবদুল্লাহ বলেন, আমরা ধারণা করলাম তিনি তাঁর জননী মাকে বুঝাচ্ছেন। এরপর তিনি বললেন, ‘আয়িশা (রাঃ) বলেছেন, আমি কি তোমাদের আমার পক্ষ থেকে ও রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে হাদিস বর্ণনা করে শুনাব? আমরা বললাম, হ্যাঁ অবশ্যই। তিনি বলেন, যখন ঐ রাত আসত যে রাতে নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমার কাছে থাকতেন। তিনি এসে তাঁর চাদর রেখে দিতেন, জুতা খুলে পায়ের কাছে রাখতেন। পরে নিজ তহবন্দের (লুঙ্গি) একদিক বিছানায় বিছিয়ে কাত হয়ে শুয়ে পড়তেন। অতঃপর মাত্র কিছু সময় যতক্ষণে তিনি ধারনা করতেন যে, আমি ঘুমিয়ে পরেছি, বিশ্রাম গ্রহন করতেন। অতঃপর উঠে ধীরে ধীরে নিজ চাদর নিতেন এবং জুতা পরিধান করতেন। পরে আস্তে আস্তে দরজা খুলে বেরিয়ে পড়তেন। অতঃপর কিছু সময় নিজেকে আত্মগোপন করে রাখতেন।
একদিন আমি আমার জামা মাথার উপর স্থাপন করে তা দিয়ে মাথাটা ঢেকে লুঙ্গি পরিধান করে, অতঃপর তাঁর পেছনে রওনা হলাম। যেতে যেতে তিনি বাক্বী‘তে (ক্ববরস্থানে) পৌঁছলেন। তথায় তিনি দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থাকলেন। অতঃপর তিনি তিনবার হাত উঠিয়ে দু‘আ করলেন। এবার গৃহের দিকে ফিরে রওয়ানা করলে আমিও রওয়ানা হলাম। তিনি সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম দ্রুত রওয়ানা করলে আমিও দ্রুত চলতে লাগলাম। তাঁকে আরও দ্রুত পদক্ষেপে এগিয়ে আসতে দেখে আমি আরও দ্রুত চলতে লাগলাম। এরপর আমরা দৌড়াতে আরম্ভ করলে আমি দৌড়ে তাঁর আগেই ঘরে ঢুকে পড়লাম এবং বিলম্ব না করেই শুয়ে পড়লাম। একটু পরে তিনি গৃহে প্রবেশ করে আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, হে ‘আয়িশাহ্! তোমার কি হল? কেন হাঁপিয়ে পড়েছ? ‘আয়িশা (রাঃ) বলেন, আমি জবাব দিলাম না, তেমন কিছু না। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, হয় তুমি নিজে আমাকে ব্যাপারটা খুলে বলবে নতুবা মহান আল্লাহ আমাকে তা জানিয়ে দিবেন।
আমি বললাম, হে আল্লাহর রসূল! আপনার ওপর আমার মাতা-পিতা কুরবান হোক! এরপর তাঁকে ব্যাপারটা জানিয়ে দিলাম। তিনি বললেন, তুমিই সেই কাল ছায়াটি যা আমি আমার সামনে দেখছিলাম। আমি বললাম: জি হ্যাঁ। তিনি সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমার বুকে একটা থাপ্পড় মারলেন যাতে আমি ব্যাথা পেলাম অতঃপর বললেন, তুমি কি ধারনা করেছ আল্লাহ ও তাঁর রসূল তোমার ওপর অবিচার করবেন? ‘আয়িশা (রাঃ) বলেন, যখনি মানুষ কোন কিছু গোপন করে, আল্লাহ তা অবশ্যই জানেন। হ্যাঁ অবশ্যই জানেন। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, যখন তুমি আমাকে দেখেছ এ সময় আমার কাছে জিব্রীল (‘আঃ) এসেছিলেন এবং আমাকে ডাকছিলেন। অবশ্য তা তোমার কাছে গোপন রাখা হয়েছে। আর আমিও তা গোপন রাখা বাঞ্ছনীয় মনে করে তোমার নিকট গোপন রেখেছি। যেহেতু তুমি তোমার কাপড় রেখে দিয়েছ, তাই তোমার কাছে তিনি আসেননি। আমি ভেবেছিলাম তুমি ঘুমিয়ে পরেছ। তাই তোমাকে জাগানো সমীচীন মনে করিনি। আর আমি আশঙ্কা করেছিলাম যে, তুমি ভীত বিহ্বল হয়ে পড়বে। এরপর জিব্রীল (‘আঃ) বললেন, আপনার প্রভু আপনার প্রতি আদেশ করেছেন, বাক্বী‘র ক্ববরবাসীদের নিকট গিয়ে তাদের জন্য দু‘আ ইসতিগফার করতে। ‘আয়িশা (রাঃ) বলেন, আমি জিজ্ঞেস করলাম, হে আল্লাহর রসূল! আমি তাদের জন্য কীভাবে দু‘আ করব? তিনি বললেনঃতুমি বল, “এ বাসস্থানের অধিবাসী ঈমানদার মুসলিমদের প্রতি সালাম বর্ষিত হোক। আমাদের মধ্যে থেকে যারা আগে বিদায় গ্রহন করেছে আর যারা পিছনে বিদায় নিয়েছে সবার প্রতি আল্লাহ দয়া করুন। আল্লাহ চাহে তো আমরাও তোমাদের সাথে মিলিত হব।--ihadis.com এবং বাংলাদেশ ইসলামিক সেন্টার ঢাকা প্রকাশিত, সহিহ মুসলিম, খণ্ড ৩, হাদিসঃ ২১২৮।
অনেক সাধনা করে একটি হাদিস নাস্তিকরা খুজে পেয়েছে যেখানে অনুবাদে আছে নবীজি (সা) আয়েশা (রা)এর বুকে একটা থাপ্পড় মারলেন যাতে সে ব্যাথা পেলাম। কিন্তু সঠিক তথ্য জেনে গেলে ইসলামবিদ্বেষীরা হতাশ হবে। এখানে “থাপ্পর মারলেন” যে অনুবাদ করা হয়েছে এটা সঠিক নয় কারণ হাদিসে যে আরবি শব্দ ব্যাবহার করা হয়েছে সেটা হচ্ছে “লাহাদা” যার অর্থ হচ্ছে "দূরে সরিয়ে দেওয়া (১৬)”। তর্কের খাতিরে যদি ধরেও নেই যে এখানে থাপ্পর মারার কথাই বলা হয়েছে এরপরেও আপত্তি করার সুযোগ নেই কারণ আপনারা যদি পুরো হাদিসটি পড়েন তাহলে বুঝতে পারবেন যে এখানে নবীজি (সা) না রেগে ছিলেন আর না উনি আয়েশা (রা)কে নির্যাতন করার উদ্দেশ্যে থাপ্পর মেরেছেন। তুমি কি ধারনা করেছ আল্লাহ ও তাঁর রসূল তোমার ওপর অবিচার করবেন? উক্ত হাদিসে নবীজি (সা) এই প্রশ্নটি প্রমাণ করে যে উনি রাগের মাথায় থাপ্পর মারেন নাই বরং কৌতুকের ছলেই থাপ্পরটি মেরেছেন। নাহলে নির্যাতন করার উদ্দেশ্যেই যদি থাপ্পর মারতেন তাহলে অবিচার করবেন এই প্রশ্নই করতেন না। উপরের হাদিসে নির্যাতন করেছেন এরকম কোনো কথা নেই। আয়েশা (রা) নিজেই বলেছেন যে নবীজি (সা) স্বীয় হাত দ্বারা ইচ্ছাকৃতভাবে কাউকে প্রহার করেননি এবং কোন দাস-দাসী বা স্ত্রীলোককেও প্রহার করেননি।
শামায়েলে তিরমিজি, হাদিসঃ ২৬৬, সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,
আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, একমাত্র আল্লাহর পথে জিহাদ ছাড়া কখনো রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্বীয় হাত দ্বারা ইচ্ছাকৃতভাবে কাউকে প্রহার করেননি এবং কোন দাস-দাসী বা স্ত্রীলোককেও প্রহার করেননি।-ihadis.com
আয়েশা (রা) উনার স্বামীকে ভালবাসতেন তার প্রমাণঃ
আয়েশা (রা) নাকি অন্যায়ের শিকার হয়েছিলেন-গাধাব্বর টাইপ নাস্তিকরা এরকম দাবি করে থাকে যেন মনে হয় নাস্তিকরা মাত্র পশু থেকে বিবর্তিত হলো। কিন্তু আসলেই কি অভিযোগটি সত্য? একদমই না। নাস্তিকিস্টরা যদি হাদিস গুলো মানুষের মতো সঠিকভাবে বুঝার চেষ্টা করতে পারতো তাহলে ভালো হতো মন দিয়ে হাদিস গুলো পড়ে বুঝে নেয়ার চেষ্টা করুন।
সহিহ মুসলিম, হাদিসঃ ৬১৭২, সহিহ হাদিসঃ
আয়িশাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, আমি খাদীজাহ্ ব্যতীত নবী সহধর্মিণীদের আর কারো প্রতি ঈর্ষান্বিত হইনি, অথচ আমার সাথে তাঁর সাক্ষাৎ ঘটেনি। তিনি বলেন: রসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন বকরী যাবাহ করতেন তখন বলতেন, এর গোস্ত খাদীজার বান্ধবীদের পাঠিয়ে দাও। একদা আমি তাঁকে রাগিয়ে দিলাম এবং বললাম, খাদীজাকে এতই ভালবাসেন? রসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম তখন বললেনঃ তাঁর ভালবাসা আমার মনে জায়গা করে নিয়েছে।-ihadis.com
সহিহ মুসলিম,হাদিসঃ ৬১৭৪, সহিহ হাদিসঃ
আয়িশাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, নবী সহধর্মিণীদের কারো উপর আমি এত ঈর্ষান্বিত হইনি যতটুকু ঈর্ষা করেছি খাদীজার উপর। কারণ নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁকে বেশি স্মরণ করতেন। অথচ আমি তাঁকে কক্ষনো দেখিনি।-ihadis.com
একজন অল্প বয়স্কা স্ত্রী নারী নিজের স্বামীকে কতো গভীর ভালোবাসতেন প্রমাণ হিসেবে কি উপরের হাদিস গুলো যথেষ্ট নয়? স্ত্রী যদি স্বামীকে ঘৃণা করে তাহলে স্বামী অন্য স্ত্রীকে ভালোবাসলে কেন ঈর্ষান্বিত হবে? তাহলে যারা আয়েশা (রা)কে নিয়ে অন্ধবিশ্বাস করে যে উনি অন্যায়ের শিকার হয়েছিলেন এদের মাথায় কি সুস্থমগজ নেই? আম্মাজান আয়েশা (রা) তাঁর স্বামীকে অনেক ভালবাসতেন । নিজের জীবনের থেকেও বেশি ভালবাসতেন,বললে ভুল হবে না।নবীজি (সা) এবং আয়েশা (রা) এর গোটা জীবন অনুসন্ধান করলে এই ফলাফলে আসা যায় যে নিজের বয়সের চেয়ে অল্প বয়সে মেয়ে বিয়ে করলেও যে একটি সুখের সংসার তৈরি করা সম্ভব সেটাই নবীজি (সা) আমাদেরকে দেখিয়ে গেছেন। নিন্মে আমি বিশুদ্ধ হাদিস পেশ করেছি। সব গুলা মনোযোগ দিয়ে পড়ুন,না বুঝলে আবার পড়ুন। নিজেই বুঝতে পারবেন।
সহিহ মুসলিম। হাদিসঃ ২৫৭৭, সহিহ হাদিসঃ
আবু সালামাহ (রা) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন আমি আয়েশা (রা) কে বলতে শুনেছি আমার রমজান মাসের সিয়াম অবশিষ্ট থেকে যেত। রাসুল (সা) এর খিদমতে ব্যস্ত থাকার কারনে আমি শাবান মাস ছাড়া অন্য কোন সময়ে তা আদায় করার সুযোগ পেতাম না।-ihadis.com
নাস্তিকিস্টদের কাছে প্রশ্ন হচ্ছে একজন স্ত্রী তাঁর স্বামীকে কতটা ভালবাসলে স্বামীর সেবাযত্নে ব্যস্ত থাকতে পারে? নবীজি (সা) কি কখনো উনার সেবা যত্ন করতে জবরদস্তি করেছিলেন? আয়েশা (রা) কি কখনো বলেছিলেন স্বামীর সেবা-যত্ন করতে আমার ভালো লাগে না আমি এমন কাজ ঘৃণা করি?
সুনানে আন নাসায়ী,হাদিসঃ ৪৩১,সহিহ হাদিসঃ
আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ আমি রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর দেহে সুগন্ধি লাগাতাম। তারপর তিনি তার সকল বিবির নিকট গমন করতেন এবং ভোরে মুহরিম অবস্থায় সুবাস ছড়াতে ছড়াতে বের হতেন।-ihadis.com
সুনানে আন নাসায়ী, হাদিসঃ ২৭৭ ও ৩৮৯, সহিহ হাদিসঃ
আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেনঃ আমি ঋতুমতি অবস্থায় রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম -এর মাথায় চিরুণী করে দিতাম।-ihadis.com
সুনানে আন নাসায়ী, হাদিসঃ ২৭৬, সহিহ হাদিসঃ
আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইতিকাফ অবস্থায় মসজিদ হতে তাঁর মাথা আমার দিকে বের করে দিতেন আর আমি তা ধুয়ে দিতাম, অথচ তখন আমি ঋতুমতি।-ihadis.com
প্রশ্ন হচ্ছে আয়েশা (রা) যদি তাঁর স্বামীকে পছন্দ না করতেন তাহলে ভালবেসে কেন নবীজির (সা) এর দেহে সুগন্ধি দিতেন? উনি কি এমন কিছু বলেছিলেন যে মোহাম্মদ (সা)কে আমার সুগন্ধি লাগাতে ভালো লাগে না? অথবা নবী মোহাম্মদ (সা) কি সুগন্ধি লাগানোর জন্য নির্যাতন করেছিলেন উনার অল্প বয়স্কা স্ত্রীকে? স্ত্রী যদি স্বামীকে ঘৃণা করে তাহলে চিরুণী করে দিতেন এই কথা কেন উনি বলতে গেলেন? ঘৃণা করলে উল্টো কথা বলতেন যে উনাকে চিরুণী করে দিতে আমার ভাল লাগে না? হযরত মোহাম্মদ (সা) আমাকে জবরদস্তি করতেন,আক্রমণ করতেন এমন কথা আয়েশা (রা) কথায় বর্ণনা করেছেন? আয়েশা (রা) কি কখনো এই কথা বলেছিলেন যে হে রাসুল আপনার সেবা করতে আমার ভালো লাগে না?
সুনানে আন নাসায়ী, হাদিসঃ ৪১৩, সহিহ হাদিসঃ
আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেনঃ আমি এবং রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম যে পাত্রে গোসল করতাম এবং সে পাত্র নিয়ে তাঁর সঙ্গে যে কাড়াকাড়ি করতাম, তা আমার এখনো স্মরণ আছে।-ihadis.com
সুনানে আন নাসায়ী, হাদিসঃ ৩৭৯, সহিহ হাদিসঃ
শুরায়হ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেনঃ আমি আয়েশা (রাঃ) কে বলতে শুনেছি, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাকে পানপাত্র দিতেন তখন আমি তা থেকে পান করতাম, অথচ তখন আমি ছিলাম ঋতুমতি। পরে আমি ঐ পাত্র তাঁকে প্রদান করতাম, তখন তিনি আমার মুখ রাখার স্থানটি তালাশ করে সেখানেই মুখ রাখতেন।-ihadis.com
সুনানে আন নাসায়ী, হাদিসঃ ২৭৯, সহিহ হাদিসঃ
শুরায়হ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ আমি আয়েশা (রাঃ) কে প্রশ্ন করলামঃ হায়য অবস্থায় স্ত্রী কি তার স্বামীর সঙ্গে খেতে পারে ? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাকে ডাকতেন, আমি তাঁর সঙ্গে খেতাম অথচ তখন আমি ঋতুমতি। আর তিনি হাড় নিতেন এবং বলতেন, আল্লাহর কসম, তুমি আগে খাও। তারপর আমি তার কিছু অংশ চিবাতাম এবং রেখে দিতাম। পরে তিনি তা চিবাতেন। হাড়টির ঐখানেই মুখ দিতেন যেখানে আমি মুখ দিয়েছিলাম। আর তিনি পানীয় আনিয়ে বলতেনঃ আল্লাহর কসম, তুমি এটি আগে পান কর। তখন আমি পাত্রটি নিয়ে তা পান করতাম এবং আমি রেখে দিলে তিনি উঠিয়ে তা থেকে পান করতেন। আর আমি পেয়ালার যেখানে মুখ দিয়েছিলাম তিনি সেখানেই মুখ দিতেন।-ihadis.com
স্বামী স্ত্রীর ভালবাসা কাকে বলে বুঝতে পেরেছেন? স্বামী স্ত্রীর এক সাথে খাবার এটা যে কত আনন্দের সেটা অসুখী দাম্পত্য জীবন কিভাবে বুঝবে? নাস্তিক প্রাণীরা কিভাবে অনুধাবন করবে? স্বামীর সাথে গসল করার মুহূর্ত যেই নারী মনে রাখে সে কিভাবে স্বামীকে ঘৃণা করতে পারে? হযরত মোহাম্মদ (সা) অল্প বয়স্কা আয়িশা (রা)কে কেমন সম্মান করলে উনাকে আগে পানি খেতে বলতেন চিন্তা করতে পারেন?
সুনানে আন নাসায়ী, হাদিসঃ ২৮৪, সহিহ হাদিসঃ
আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেনঃ আমি এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম একই চাদরে রাত্রিযাপন করতাম অথচ তখন আমি ঋতুমতি। যদি আমার কোন কিছু তাঁর শরীরে লাগত, তখন তিনি ঐ স্থানই ধুয়ে নিতেন এর বেশি ধুতেন না। আর এ অবস্থাতেই তিনি সালাত আদায় করতেন, আবার তিনি বিছানায় ফিরে আসতেন। যদি আমার কোন কিছু তাঁর শরীরে লাগত, তিনি শরীরের ঐ অংশটুকু ধুয়ে নিতেন, এর বেশি ধুতেন না। আর এ অবস্থাতেই তিনি সালাত আদায় করতেন।-ihadis.com
সহিহ মুসলিম,হাদিসঃ ৩৩৭৪,সহিহ হাদিসঃ
আয়িশাহ্ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিতঃ রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাকে শাও্ওয়াল মাসে বিবাহ করেন এবং শাও্ওয়াল মাসে আমার সাথে প্রথম মিলিত হন। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর কোন্ স্ত্রী তাঁর নিকট আমার চাইতে অধিক সম্ভোগ্য ছিলেন? ‘আয়িশা (রাঃ) তাঁর বংশের মেয়েদের শাও্ওয়াল মাসে বাসর ঘরে পাঠানো উত্তম মনে করতেন।-ihadis.com
জামে আত তিরমিজি,হাদিসঃ ১০৯৩, সহিহ হাদিসঃ
আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, শাওয়াল মাসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাকে বিয়ে করেছেন এবং বাসর রাতও শাওয়াল মাসেই কাটিয়েছেন। শাওয়াল মাসে আইশা (রাঃ) তার পরিবারের মেয়েদের জন্য বাসর উদযাপনের ইচ্ছা করতেন।-ihadis.com
সহিহ বুখারি, হাদিসঃ ৫১৩৩ ও ৫১৩৪, সহিহ হাদিসঃ
আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ যখন তাঁর ছয় বছর বয়স তখন নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁকে বিয়ে করেন। তিনি তাঁর সঙ্গে বাসর করেন নয় বছর বয়সে। হিশাম (রহঃ) বলেন, আমি জেনেছি যে, ‘আয়িশা (রাঃ) নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম – এর কাছে নয় বছর ছিলেন। ihadis.com, সুনানে আবু দাউদ, হাদিসঃ ২১২১, সহিহ হাদিসে বিয়ের বয়স সাত বলা হয়েছে।-ihadis.com
আয়েশা (রা) আনন্দের সাথে তাঁর বিয়ের কথা বলেন নাই? এই হাদিসের কোথায় বলা হচ্ছে তিনি দুঃখ প্রকাশ করেছেন? নবীজি (সা) আয়েশা (রা)কে বেশি আদর করতেন সেটা উনি নিজেই এই হাদিসে বলেন নাই? স্বামী কে কেউ এভাবে ঘৃণা করতে পারে? স্ত্রী যদি স্বামীকে পছন্দ না করে তাহলে একই চাদরের নিচে কিভাবে রাত্রি যাপন করে ? দাম্পত্য জীবনের ৯ বছর বয়সেও আয়েশা (রা) কেন তাঁর স্বামীর কাছে তালাক চাননি তাঁকে সুযোগ দেয়া সত্ত্বেও?
সুনানে আবু দাউদ, হাদিসঃ ৪৯৩৫, সহিহ হাদিসঃ
আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, যখন আমরা মদিনায় আসলাম তখন মহিলারা আমার নিকট এলো, এ সময় আমি দোলনায় খেলছিলাম। আমার মাথায় ঘন কালো ও লম্বা চুল ছিলো। তারা আমাকে নিয়ে গিয়ে সাজিয়ে প্রস্তুত করে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট নিয়ে এলো। তিনি আমার সঙ্গে বাসর যাপন করেন। তখন আমার বয়স ছিলো নয় বছর।-ihadis.com
সুনানে আন নাসায়ী, হাদিসঃ ১৬১৬, সহিহ হাদিসঃ
মাসরূক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, আমি আয়েশা (রাঃ)-কে বললাম, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর কাছে কোন্ কাজটি অত্যধিক প্রিয় ছিল? তিনি বললেন, নিয়মিত আমল। আমি বললাম, তিনি রাত্রের কোন্ সময় জাগ্রত হতেন? তিনি বললেন, যখন মোরগের ডাকের আওয়াজ শুনতে পেতেন।-ihadis.com
সুনানে আন নাসায়ী, হাদিসঃ ২৩৯, সহিহ হাদিসঃ
আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেনঃ আমি এবং রাসূলুল্লাহ্(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একই পাত্র থেকে গোসল করতাম। তিনি আমার পূর্বে পানি নেয়ার জন্য তাড়াতাড়ি করতেন, আমি তাঁর পূর্বে নেয়ার জন্য তাড়াহুড়া করতাম। এমনকি তিনি বলতেন, আমার জন্য রাখ, আর আমি বলতাম আমার জন্য রাখুন। সুওয়ায়দ (রহঃ) বলেনঃ আয়েশা (রাঃ) বলেছেন, তিনি আমার পূর্বে ও আমি তাঁর পূর্বে পানি নেয়ার জন্য চেষ্টা করতাম। এক পর্যায়ে আমি বলতাম, আমার জন্য রাখুন, আমার জন্য রাখুন।-ihadis.com
সহিহ বুখারি, হাদিসঃ ৩৫৬৮ , সহিহ হাদিসঃ
আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, তুমি অমুকের অবস্থা দেখে কি অবাকহও না? তিনি এসে আমার হুজরার পাশে বসে আমাকে শুনিয়ে হাদীস বর্ণনা করেন। আমি তখন সালাতে ছিলাম। আমার সালাত শেষ হবার আগেই তিনি উঠে চলে যান। যদি আমি তাকে পেতাম তবে আমি অবশ্যই তাকে সতর্ক করে দিতাম যে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তোমাদের মত দ্রুততার সঙ্গে কথা বলতেন না।-ihadis.com
নিজের ভালবাসার মানুষের সাথে বাসর যাপনের কথা আয়েশা (রা) কি দুঃখ মনে বলেছেন? নিজের চুলের প্রশংসা কেন করলেন? স্বামীর কি পছন্দ সেটাও আয়েশা (রা) মনে রাখতেন? স্বামীর স্ত্রী সম্পর্ক এমন হওয়া উচিত নয় কেন? স্বামীর কথা বলাতে কত গুরুত্ব দিতেন স্ত্রী? নাস্তিকদের অন্ধবিশ্বাস যদি আসলেই সত্য হতো তাহলে আয়েশা (রা) কখনোই উনার স্বামীর কথা এতো এতো বর্ণনাই করতো না বরং ঘৃণা করে বলতো যাকে আমি পছন্দ করিনা তার কথা আমি বলতেও চাই না অথচ এরকম কিছু কি আয়েশা (রা) বলেছেন? এমনকি কিছু ইসলামবিদ্বেষী ইহুদি আয়েশা (রা)এর সামনে এসে নবী মোহাম্মদ (সা)কে নিয়ে কটূক্তি করতেছিল কিন্তু আয়েশা (রা) নিজের স্বামীর বিরুদ্ধে এমন মিথ্যাচার সহ্য করতে না পেরে তিনি নিজেও কোঠর প্রতিবাদ করেন।
সহিহ মুসলিম,হাদিসঃ৫৫৫১,৫৫৫২,৫৫৫৩,সহিহ হাদিসঃ
আয়িশাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম -এর নিকট কয়েকজন ইয়াহূদী আসলো। তারা বলল- (--) হে আবুল কাসিম! তোমার মৃত্যু হোক। তিনি বললেন, (--) তোমাদের উপরেও। আয়িশাহ্ (রাঃ) বলেন, আমি বললাম- (--) বরং তোমাদের মৃত্যু ও অপমান হোক। সে সময় রসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, হে আয়িশাহ্! তুমি অশ্লীলভাষী হয়ো না। তিনি বললেন, তারা কি বলেছে, তা কি আপনি শুনেননি? তিনি বললেন, তারা যা বলেছিল, তা-ই কি আমি তাদের ফিরিয়ে দেইনি? আমি যা বলেছি- ‘ওয়া আলাইকুম’ তোমাদের উপরেও।-ihadis.com
সহিহ বুখারী, হাদিসঃ ৬০২৪, সহিহ হাদিসঃ
নবী সহধর্মিণী আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, ইয়াহূদীদের একটি দল নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কাছে এসে বললঃ السَّامُ عَلَيْكُمْতোমাদের উপর মৃত্যু উপনীত হোক। ‘আয়িশাহ রাঃ)বলেনঃ আমি এর অর্থ বুঝলাম এবং বললামঃ وَعَلَيْكُمْ السَّامُ وَاللَّعْنَة তোমাদের উপরও মৃত্যু ও লা’নত। ‘আয়িশাহ রাঃ)বলেন, তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ থাম, হে ‘আয়িশাহ! আল্লাহ যাবতীয় কার্যে নম্রতা পছন্দ করেন। আমি বললামঃ হে আল্লাহর রাসূল! আপনি কি শোনেননি, তারা কী বলেছে? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আমি তো বলেছি عَلَيْكُمْ আর তোমাদের উপরও।-ihadis.com
কোনো সুস্থ মস্তিস্কের নাস্তিক যদি শুধুমাত্র এই ঘটনা গুলোকেও মনোযোগ দিয়ে বুঝার চেষ্টা করতো তাহলেও হয়তো মুক্তমনে মিথ্যাচার করতে পারতো না। একটি অল্প বয়স্কা নারী নিজের স্বামীর মৃত্যুকামনা করলে কেমন কষ্ট পেতে পারে যে সেও পাল্টা মৃত্যু কামনা করেছে তাদের বিরুদ্ধে? অথচ নবী মোহাম্মদ (সা) উনার অল্প বয়স্কা স্ত্রীকে কি শিক্ষা দিলেন? থামো, হে ‘আয়িশাহ! আল্লাহ যাবতীয় কার্যে নম্রতা পছন্দ করেন। নাস্তিকিস্টদের বানানোর চশমায় যদি নবী মোহাম্মদ (সা) আসলেই খারাপ লোক হতেন তাহলে উনি তো স্ত্রীকে নম্রতা শিক্ষা দেবার কথা না? নবী মোহাম্মদ (সা)কে নিয়ে অন্ধবিশ্বাস করা কবে বন্ধ করবে নাস্তিকরা? নাস্তিকরা কবে সঠিকভাবে ইসলামকে অনুধাবন করা শিখবে? হযরত মোহাম্মদ (সা)কে নিয়ে মুক্তমনে জালিয়াতি করা কবে বন্ধ করবে?
স্বামীর সাথে সম্পর্ক রাখবে নাকি রাখবে না- বিষয়ে আয়েশা (রা)কে-ই নয় শুধু বরং সব স্ত্রীকেই হযরত মোহাম্মদ (সা) স্বাধীনতা দিয়েছিলেনঃ
এমন কিছু আশ্চর্যজনক তথ্য এখন পেশ করবো যা নাস্তিকিস্টরা হয়তো জানে না আর জানলেও এসব কখনো সবার সামনে দেখাতে চাইবে না বরং ধাপাচাপা দেওয়ার অনেক চেষ্টা করবে। কারণ এই তথ্য গুলো যদি সবাই জেনে যায় তাহলে নাস্তিকান্ধরা হযরত মোহাম্মদ (সা) এর বিরুদ্ধে যেই মুক্তমনে মিথ্যাচার গুলো করে সেগুলো সহজে করতে পারবে না। করলে সাথে সাথে মুমিনদের কাছে ধরা খাবে। আমরা কিন্তু বুঝি এরা কোন স্টাইলের জালিয়াতি গুলো করে থাকে। হযরত আয়েশা (রা)কে-ই শুধু নয় বরং নবীজি (সা) তাঁর সব স্ত্রীদেরকেই এই অধিকার দিয়েছিলেন যে তাঁর সাথে সংসার করবেন কি করবেন না। আরও মজার ব্যাপার হলো তাঁর সকল স্ত্রীরাই সম্মতি দিয়েছেন যে সকলেই এক স্বামী নিয়েই রাজি-খুশি। স্ত্রীরা যেখানে স্বামীকে নিয়ে সংসার করার সম্মতি দিয়েছে আর স্বামীও সম্মতি দিয়েছে তাহলে নাস্তিক্যধর্মের দৃষ্টিতে এই সংসারকে কিভাবে অনৈতিক বলে বিশ্বাস করা যাবে?
নিজের মায়ের সাথে সম্মতিতে সহবাস করা যাবে এমন নৈতিকতায় বিশ্বাস করা নাস্তিকরা যখন প্রশ্ন করে আয়েশা (রা) তাঁর বিয়েতে সারাজীবনের জন্য মন থেকেই রাজি ছিলেন সেটার প্রমান কি? এরকম দুর্বল প্রমাণহীন প্রশ্নের উত্তরে আমি বলতে চাই আয়েশা (রা) কে নবীজি (সা) যখন বলেছিলেন তুমি চাইলেই আমাকে ছেড়ে চলে যেতে পারো ঠিক সেই মুহূর্তে আয়েশা (রা) সুযোগ কাজে লাগাতে পারতেন। কিন্তু উনি আজীবন আরকম করেন নাই। এটা কিভাবে প্রমাণ করে না যে উনি আজীবন মন থেকে রাজি ছিলেন না? মন থেকে যদি আয়েশা (রা) রাজি নাই থাকতেন তাহলে তো নবী মোহাম্মদ (সা)এর মৃত্যুর পরবর্তী সময়ে ইসলাম ত্যাগ করে স্বামীর তীব্র বিরোধিতা করতে পারতেন কিন্তু উনি তো সেটাও করলেন না,কেন? এরপরেও কি নাস্তিকিস্টরা ইসলাম নিয়ে অন্ধবিশ্বাস করতে চাইবে? আয়েশা (রা)ই না শুধু এমনকি নবীজি (সা) এর সব স্ত্রীরাই সম্মতি দিয়েছিলেন যে উনারা নবীজির সাথেই সারাজীবন কাটিয়ে দিবেন। নিচে আমি সব প্রমান পেশ করেছি। যাদের পূর্বপুরুষ চতুষ্পদ জন্তুরা ছিল তারা ইসলামকে ইসলামের মতো দেখতে নারাজ কারণ ইসলাম গ্রহণ করলে তো মানুষ হতে হবে আর পূর্বপুরুষ মানুষ ছিল স্বীকার করলে তো ডারউইনের বিবর্তনবাদকে অবিশ্বাস করা যাবে না। বোঝেন নাই ব্যাপারটা?
আরেকটি লক্ষণীয় বিষয় হলো, আয়েশার সহস্রাধিক বর্ণনার মধ্যে একটিও এমন বর্ণনা পাওয়া যায় না যা থেকে বোঝা যে, তিনি বিবাহতে অসন্তুষ্ট বা অসম্মত ছিলেন। তাই এই সম্পর্কে তাঁর কোনো অসুবিধা ছিল না। সত্যি বলতে কি, বিভিন্ন রিওয়ায়াত থেকে স্পষ্ট যে, তিনি নবি সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লামকে অত্যন্ত ভালোবাসতেন, একনকি তাঁর পাশে কাউকে দেখলে তিনি ইর্ষান্বিত হতেন। এটা থেকে কি প্রমাণিত হয় না যে, তিনি এই বিবাহে অত্যন্ত খুশি ছিলেন ? সুতরাং, যখন তাঁর নিজের কোনো সমস্য নেই তাহলে তা নিয়ে অন্যদের উদ্বেগ কেন ? আয়েশা (রাঃ) এই বিবাহতে অত্যধিক খুশি ছিলেন। তিনি হয়ে ওঠে ছিলেন নবি (সাঃ)-এর সর্বশ্রেষ্ঠ পৃষ্ঠপোষক এবং তিনি তাঁর নিকটে ইসলামের বিষয়ে অনেক কিছু শিক্ষালাভ করেছিলেন। তিনি ছিলেন তাঁর সময়ের অনেক পুরুষ ও নারীর শ্রেষ্ঠ শিক্ষিকা। তাঁর পিতামাতাও ছিলেন এই বিবাহতে যথেষ্ট সন্তুষ্ট। প্রমাণ গুলো মনোযোগ দিয়ে পড়া যাক।
আল্লাহ তাঁর রাসুলকে আদেশ দিচ্ছেন সুরা আহযাব ৩৩ঃ২৮ আয়াতেঃ
হে নবী, আপনার পত্নীগণকে বলুন, তোমরা যদি পার্থিব জীবন ও তার বিলাসিতা কামনা কর, তবে আস, আমি তোমাদের ভোগের ব্যবস্থা করে দেই এবং উত্তম পন্থায় তোমাদের বিদায় নেই।
সুনানে আন নাসায়ী, হাদিসঃ ৩২০২, সহিহ হাদিসঃ
আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর স্ত্রীগণকে তাঁর দাম্পত্য বন্ধনে থাকা না থাকার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহনের স্বাধিকার দিয়েছিলেন। তা কি তালাক বিবেচিত হয়েছিল ? অর্থাৎ এতে তাঁরা তালাক হননি।-ihadis.com
সুনানে আন নাসায়ী, হাদিসঃ ৩২০৩, সহিহ হাদিসঃ
আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদেরকে ‘ইখতিয়া’র দিলে আমরা তাঁকেই গ্রহন করলাম তা কখনো তালাক বলে গণ্য হয়নি।-ihadis.com
সহিহ বুখারি, হাদিসঃ ৪৭৮৫ ও ৪৭৮৬, সহিহ হাদিসঃ
লায়স (রহ.) থেকে বর্ণিতঃ নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সহধর্মিণী ‘আয়িশাহ (রাঃ) বলেন, যখন রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে তাঁর সহধর্মিণীদের ব্যাপারে দু’টি পন্থার একটি পন্থা বেছে নেয়ার নির্দেশ দেয়া হল, তখন তিনি প্রথমে আমাকে বললেন, তোমাকে একটি বিষয় সম্পর্কে বলব। তাড়াহুড়ো না করে তুমি তোমার আব্বা ও আম্মার সঙ্গে পরামর্শ করে নিবে। ‘আয়িশাহ (রাঃ) বলেন, তিনি অবশ্যই জানতেন, আমার আব্বা-আম্মা তাঁর থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার কথা বলবেন না। ‘আয়িশাহ (রাঃ) বলেন, এরপর তিনি বললেন, আল্লাহ্ তা‘আলা বলেছেনঃ يَا أَيُّهَا النَّبِيُّ قُلْ لِأَزْوَاجِكَ إِنْ كُنْتُنَّ تُرِدْنَ الْحَيَاةَ الدُّنْيَا وَزِينَتَهَا إِلَى أَجْرًا عَظِيمًا “হে নাবী! আপনি আপনার স্ত্রীগণকে বলুন, তোমরা যদি পার্থিব জীবন ও তার ভূষণ কামনা কর.....মহা প্রতিদান পর্যন্ত। ‘আয়িশাহ (রাঃ) বলেন, এ ব্যাপারে আমার আব্বা-আম্মার সঙ্গে পরামর্শের কী আছে? আমি তো আল্লাহ্, তাঁর রসূল এবং আখিরাতের জীবন কামনা করি। ‘আয়িশাহ (রাঃ) বলেনঃ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর অন্যান্য সহধর্মিণী আমার মতই জবাব দিলেন।-ihadis.com
সুনানে আন নাসায়ী, হাদিসঃ ৩২০১, সহিহ হাদিসঃ
আবূ সালামা ইব্ন আবদুর রহমান (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – এর স্ত্রী আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি তাঁর নিকট বর্ণনা করেছেন, আল্লাহ্ তা’আলা যখন রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম – কে তাঁর স্ত্রীগণকে দাম্পত্য সম্পর্ক ছিন্ন করার ব্যাপারে ‘ইখতিয়ার’ (স্বাধিকার) প্রদানের আদেশ করলেন, আয়েশা (রাঃ) বলেন, তখন রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাকে দিয়েই আরম্ভ করলেন। তিনি বললেনঃ আমি তোমার নিকট একটি কথা বলব, কিন্তু তুমি সে ব্যাপারে তোমার পিতামাতার পরামর্শ গ্রহনের পূর্বে অবিলম্বে সে সম্বন্ধে মতামত প্রকাশ করবে না। কারন তিনি জানতেন, আমার মাতাপিতা তাঁর কাছ থেকে বিচ্ছেদের পরামর্শ আমাকে দেবেন না। তারপর রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ (কুরআনের ভাষা অনুসারে) “হে নবী। আপনি আপনার স্ত্রীগণকে বলুন, যদি তোমরা পার্থিব জীবন এবং এর সাজসজ্জা কামনা কর; তবে আসো, আমি তোমাদের ভোগ সামগ্রীর ব্যবস্থা করে দেই এবং সৌজন্যের সাথে তোমাদের বিদায় দেই (৩৩:২৮)। আমি বললামঃ এ ব্যাপারে আমি আমার পিতামাতার নিকট পরামর্শ করব? আমি তো আল্লাহ্, আল্লাহ্র রাসূল এবং আখিরাতের জীবন কামনা করি।-ihadis.com
বিস্তারিত জানতে আরো পড়ুনঃ
তাফসীরে ইবনে কাসীর ১৫ খণ্ড, ৭৭৮ পৃষ্ঠা । ডঃ মুহাম্মদ মুজিবুর রহমানের অনুবাদ ।
তাফসীরে জালালাইন, ৫ খণ্ড, ১৩৯ পৃষ্ঠা ।
তাফসীরে ইবনে আব্বাস, ৩ খণ্ড, ৬৩ পৃষ্ঠা ।
তাফসীরে আনওয়ারুল কুরআন, ৫ খণ্ড, ১২৯ পৃষ্ঠা ।
তাফসীরে তাওযীহুল কুরআন, ৩ খণ্ড, ৭৮ পৃষ্ঠা ।
তাফসীরে ফি যিলাযিল কুরআন, ১৬ খণ্ড, ১৪৪ পৃষ্ঠা ।
তাফসীরে মাযহারী, ৯ খণ্ড, ৪৭৬ পৃষ্ঠা ।
তাফসীরে আহসানুল বয়ান, ৭৩৩ পৃষ্ঠা ।
তাফসীরে আবু বকর জাকারিয়া, সুরা আহযাব ২৮ ও ২৯ নং আয়াতের ব্যাখ্যা ।
তাফসীরে ফাতহুল মাজিদ , সুরা আহযাব ২৮ ও ২৯ নং আয়াতের ব্যাখ্যা ।
হাকিম, সিলসিলা আহাদিস সহিফা লি আলবানি, হাদিস নং ১১৪২ এবং পিস পাবলিকেশন এর রাসুল (সা) এর স্ত্রীগন কেমন ছিলেন,বইয়ের ৩৬ পৃষ্ঠায় বর্ণিত হয়েছে
আয়েশা (রা) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন রাসুল (সা) বলেছেন হে আয়েশা তুমি কি এতে খুশি নও যে তুমি দুনিয়া ও আখিরাতে আমার স্ত্রী হবে? আয়েশা (রা) বলেন কেন নয়? তখন রাসুল সা বললেন তুমি দুনিয়া ও আখিরাতে আমার স্ত্রী।
খেয়াল করুন নবীজি (সা) যদি জবরদস্তি করেই আয়েশা (রা)কে বিয়ে করতেন তাহলে এই প্রশ্ন কখনোই করতেন না যে হে আয়েশা তুমি কি খুশি নও যে তুমি উভয় জাহানেই আমার স্ত্রী হবে? এর উত্তরে আয়েশা (রা)ও বলে দিয়েছেন কেন নয়? অর্থাৎ আয়েশা (রা) নবীজি (সা) কে বিয়ে করে যে খুশি এটা উনি কনফার্ম করেছেন। যদি আয়েশা (রা) খুশি না হতেনই তাহলে অবশ্যই নবীজি (সা) উনার সংসার ত্যাগ করার সম্পূর্ণ স্বাধীনতা দিতেন,দিয়েছিলেনও। এগুলো জানার পরেও কি চিন্তার মুক্তির নামে মিথ্যাচার বন্ধ করবে না নাস্তিকগোষ্ঠী?
গবেষক ও চিন্তাবিদ মোহাম্মদ আকরাম খাঁ লিখিত সীরাত গ্রন্থ "মোস্তফা চরিত" ৯০১ ও ৯০২ পৃষ্ঠায় বর্ণিত আছেঃ
সদ্যবিয়োগ-বিদুরা বিবি আয়েশা,হযরত (সা) এর পরলোক গমনের পর যে শোকগাথা আবৃতি করিয়াছিলেন,নিন্মে তাহার ভাবার্থ প্রধান করিতেছিঃ হায়,সেই ধর্মের রক্ষক,যিনি মানবের কল্যাণে চিন্তায় পূর্ণ এক রাত্রিও বিছানায় শুইতে পারেন নাই-তিনি চলিয়া গিয়াছেন! মানবের জন্য যিনি সম্পদ ত্যাগ করিয়া দৈন্যকে অবলম্বন করিয়াছিলেন-তিনি চলিয়া দিয়াছেন! হায়, সেই প্রিয় নবী, যিনি ধর্মক্ষেত্রে শত্রুর প্রত্যেক অসঙ্গত আঘাতকেই ধৈর্যের সহিত সহ্য করিয়াছিলেন- তিনি চলিয়া গিয়াছেন। কখনও যিনি কোন অন্যায় বা অধর্মের সংস্পর্শে গমন করেন নাই,সহস্র অত্যাচার-অনাচারেও যাহার পবিত্র হৃদয়ের কোন পার্শে একটুও মলিনতা স্পর্শ করিতে পারে নাই,কোন অভাবগ্রস্ত দীন-দুঃখীকে যিনি জীবনে কখনও "না" বলিতে পারেন নাই-তিনি আমাদিগের নিকট হইতে বিদায় গ্রহণ করিয়াছিলেন। হায় সেই রহমতের নবী, মানবের মঙ্গলার্থে সত্যপ্রচারের অপরাধে প্রস্তরের আঘাতে যাঁহার দাঁতগুলি ভাঙিয়া দেওয়া হইয়াছিল; যাঁহার সুন্দর, উজ্জ্বল ও প্রশস্ত ললাটকে রক্তরঞ্জিত করিয়া দেওয়া হইয়াছিল; এবং সেই অবস্থাতেও যিনি তাহাদিগকে আশীর্বাদ করিতে কুণ্ঠিত হন নাই,- সেই দয়ার সাগর আজ দুনিয়া ছাড়িয়া চলিয়া গিয়াছেন! সেই ধৈর্যের,ত্যাগের ও প্রেমের সাক্ষাৎ প্রতিমূর্তি যিনি পরপর দুই সন্ধ্যা যবের রুটিও পেট পুরিয়া খাইতে পারেন নাই-তিনি চলিয়া গিয়াছেন।
এসব বিশুদ্ধ তথ্য মনোযোগ দিয়ে পাঠ করার পরেও যদি নাস্তিকিস্টরা একই মুক্তমনা মিথ্যাচার বার বার করে তাহলে আমরা যারা সুস্থচিন্তা করি আমাদের পক্ষে আর কি-ই বা করার থাকবে? এরপরেও আমি নাস্তিকদের মুক্তমনা মিথ্যাচার আর তথ্য বিকৃতির বিরুদ্ধে সত্য লিখতেই থাকবো কারণ সত্য যে কঠিন তাই কঠিনেরে ভালবাসিলাম। এখানেই শেষ নয় আরও আছে। নবী মোহাম্মদ (সা) যদি নাস্তিকদের দেখানো চশমায় আসলেই খারাপ মানুষ হতেন তাহলে উনি কখনোই স্ত্রীর অনুমতি নিতেই যেতেন না বরং উল্টো নিয়ম বানাতেন। হাদিসটি পড়ুন।
সহিহ বুখারি, হাদিসঃ ৪৭৮৯ , সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,
আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ রসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্ত্রীদের সঙ্গে অবস্থানের পালার ব্যাপারে আমাদের থেকে অনুমতি চাইতেন এ আয়াত অবতীর্ণ হওয়ার পরও, আপনি তাদের মধ্যে যাকে ইচ্ছা আপনার নিকট হতে দূরে রাখতে পারেন এবং যাকে ইচ্ছা আপনার নিকট স্থান দিতে পারেন এবং আপনি যাকে দূরে রেখেছেন তাকে কামনা করলে আপনার কোন অপরাধ নেই। এ আয়াতটি নাযিল হওয়ার পর মু‘আয বলেন, আমি ‘আয়িশাহ (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করলাম, আপনি এর উত্তরে কী বলতেন? তিনি বললেন, আমি তাঁকে বলতাম, এ বিষয়ের অধিকার যদি আমার থেকে থাকে তাহলে হে আল্লাহ্র রসূল! আমি আপনার ব্যাপারে অন্য কাউকে অগ্রাধিকার দিতে চাই না। ‘আব্বাদ বিন আব্বাদ ‘আসেম থেকে এরূপ শুনেছেন।-ihadis.com
আল্লাহ নবীজি (সা)কে স্ত্রীদের ব্যাপারে স্বাধীনতা প্রদান করলেও নবীজি স্বামীর দায়িত্ব পালনে ছিলেন কোঠর। স্ত্রীদের সাথে থাকার ব্যাপারে যে স্বামী অনুমতি চায় সেই স্বামী নিঃসন্দেহে আদর্শবান স্বামী এটা নিয়ে সংশয় আছে? অন্যদিকে আয়েশা (রা)কে যখন মুয়ায (রা) আয়াতটি বিষয় জানালেন তখন উনি নিজের সাথে যেন নবী মোহাম্মদ (সা) থাকেন এই কথাই বলেছেন। আয়েশা (রা) উনার স্বামীকে কেমন পর্যায়ে ভালবাসলে স্বামীকে নিজের সাথে থাকার ব্যাপারে অগ্রাধিকার দিতে পারে কল্পনা করতে পারছেন? আমি ইচ্ছা করলে আম্মাজান আয়েশা (রা) এর এই ভালবাসার কথা দিয়েই লেখাটি সমাপ্ত করতে পারতাম কিন্তু মিথ্যুক আর হিংসুকদের কাছে এসব ভালবাসার মূল্য নেই তাই বিস্তারিতই লিখতে হচ্ছে। পড়তে থাকুন পাঠক সত্য আপনাকে জানতেই হবে। আমি জানিয়ে দিব।
এমনকি নবী মোহাম্মদ (সা) অন্যান্য নারীদের মতামতকেও খুবই প্রাধান্য দিতেনঃ
নবী মোহাম্মদ (সা) এতো ভালো একজন মানুষ ছিলেন যে উনি শুধু উনার স্ত্রীদের কথা শুনতেন এমন নয় বরং অন্য নারীদের মতামতকে প্রাধান্য দিতেন। এমনই কিছু বিশুদ্ধ হাদিস তুলে ধরছি।
সহিহ বুখারী,হাদিসঃ ৫২৫৫, সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত হয়েছে,
আবূ উসায়দ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেনঃ আমরা নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সঙ্গে বের হয়ে শাওত নামক বাগানের নিকট দিয়ে চলতে চলতে দু’টি বাগান পর্যন্ত পৌছালাম এবং এ দু’টির মাঝে বসলাম। তখন নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেনঃ তোমরা এখানে বসে থাক। তিনি ভিতরে প্রবেশ করলেন। তখন নু’মান ইব্ন শারাহীলের কন্যা উমাইয়ার খেজুর বাগানস্থিত ঘরে জাওনিয়াকে আনা হয়। আর তাঁর খিদমতের জন্য ধাত্রীও ছিল। নবী যখন তার কাছে গিয়ে বললেন, তুমি নিজেকে আমার কাছে সমর্পণ কর। তখন সে বললঃ কোন রাজকুমারী কি কোন বাজারিয়া ব্যক্তির কাছে নিজেকে সমর্পণ করে? রাবী বলেনঃ এরপর তিনি তাঁর হাত প্রসারিত করলেন তার শরীরে রাখার জন্য, যাতে সে শান্ত হয়। সে বললঃ আমি আপনার থেকে আল্লাহ্র নিকট পানাহ চাই। তিনি বললেনঃ তুমি উপযুক্ত সত্তারই আশ্রয় নিয়েছ। এরপর তিনি সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের নিকট বেরিয়ে আসলেন এবং বললেনঃ হে আবূ উসায়দ! তাকে দু’খানা কাতান কাপড় পরিয়ে দাও এবং তাকে তার পরিবারের নিকট পৌঁছিয়ে দাও।-ihadis.com
এই হাদিসকে কেন্দ্র করে নাস্তিকরা বানিয়ে বলে এখানে নাকি নবী মোহাম্মদ (সা) নারীকে যৌন হয়রানি করেছেন গায়ে হাত দেবার চেষ্টা করেছে কিন্তু পুরো প্রেক্ষাপট পর্যবেক্ষণ করলে এরকম কিছুই প্রকাশ পায় না বরং মেয়েটি যখন না বুঝে নবীজি (সা)এর সাথে খারাপ আচরণ করছিল তখন উনি নিজেই তাকে সান্তনা দেবার চেষ্টা করেছিলেন। প্রশ্ন হচ্ছে কেউ যদি কাউকে যৌন হয়রানি করার উদ্দেশ্যে গায়ে হাত দিতে চাইবে তাহলে সম্মানের সাথে কেন কাতান কাপড় দিয়ে পরিবারের কাছে পৌছিয়ে দিতে চাইবে? হযরত মোহাম্মদ (সা) যদি আসলেই খারাপ মানুষ হতেন তাহলে তো উনি এই মেয়েটির সাথে জবরদস্তি করতেন,শারীরিক নির্যাতন করতেন কিন্তু উনি তো এরকম কিছুই করেন নাই,কেন? নাস্তিকরা না নবী মোহাম্মদ (সা)কে ধর্ষক প্রমাণ করতে চায় অথচ উনি যদি সেমন হতেন তাহলে তো সাহাবীদেরকে দিয়ে সেই নারীকে জবরদস্তি করে অত্যাচার নির্যাতন আর যা যা করা যায় সব করতেন কিন্তু উনি কি এগুলো করেছিলেন? মিথ্যুকমগজধারী নাস্তিকরা এখনো কি সত্যকে গ্রহণ করে নিবে না নাকি ইসলাম নিয়ে অন্ধবিশ্বাস করতেই থাকবে?
নবীজি (সা) নিজের মেয়েকে কেন অল্প বয়সে বিয়ে দেন নাই?
প্রেক্ষাপট সরিয়ে দিয়ে বানিয়ে বানিয়ে অভিযোগ করা নাস্তিকদের পুরাতন আচরণ। আসুন প্রথমে নাস্তিকদের অভিযোগটি দেখে নেই এরপরে মূল প্রেক্ষাপট তুলে দেই যা নাস্তিকরা তুলে ধরেনি। নাস্তিকরা বলে,
নিজে আবু বকরের অল্পবয়সী মেয়ে বিয়ে করতে চাইলেও, মুহাম্মদের কন্যা ফাতিমাকে যখন আবু বকর এবং উমর বিবাহ করতে চায়, আবু বকর এবং উমর বেশি বয়ষ্ক হওয়ায় তাদের সাথে বিয়ে দেন নি মুহাম্মদ। বিয়ে দিয়েছিলেন অল্পবয়সী আলীর সাথে। মানে, নিজের মেয়ের বেলাতে তিনি ঠিকই বুঝেছিলেন, এত বেশি বয়সী লোকের সাথে তার মেয়েকে বিয়ে দেয়া ঠিক হবে না। নবী মোহাম্মদ আসলে নিজেই অল্প বয়সী নারীকে বিয়ে করা ঘৃণা করতেন যার প্রমাণ এই হাদিস।
সুনানে আন নাসায়ী,হাদিসঃ ৩২২১,সহিহ হাদিসঃ আবদুল্লাহ্ ইব্ন বুরায়দা (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ আবূ বকর এবং উমর (রাঃ) ফাতিমা (রাঃ)-এর বিবাহের পয়গাম পেশ করলে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেনঃ সে তো অল্প বয়স্কা। এরপর আলী (রাঃ) প্রস্তাব করলে তিনি তাঁর সাথে বিবাহ দিলেন।-ihadis.com
নাস্তিক্যধর্মের দৃষ্টিতে উপরের হাদিসটিকে অযৌক্তিক বলার উপায় নেই। হযরত মোহাম্মদ (সা) কাকে বিয়ে করবেন কি করবেন না সেটা উনার ব্যাপার এমনকি উনি নিজের কন্যাকে কার সাথে বিয়ে দিবেন সেটাও উনার ইচ্ছা। নাস্তিক্যধর্মের দৃষ্টিতে হযরত মোহাম্মদ (সা) সম্পূর্ণ অধিকার আছে নিজ কন্যাকে কার সাথে বিয়ে দিবেন সেটা সিদ্ধান্ত নেবার। আয়েশা (রা)কে কম বয়সে বিয়ে করার ফলে যেমন ক্ষতি হয়নি তেমনি নিজ কন্যাকে কম বয়সে বিয়ে না দিয়েও ক্ষতি হয়নি সুতরাং যুক্তি অনুযায়ী নবী মোহাম্মদ (সা) এর সিদ্ধান্তকে খারাপ বলার ভিত্তি নেই নাস্তিকদের কাছে।
নাস্তিকরা আসলে ‘জাতে মাতাল তালে ঠিক’। কিভাবে? নিজেরাই বলে যে নিজের ক্ষতি ও অন্যের ক্ষতি না করে যা করা হবে সেটাই ভালো এখানে ঠিকই জাতে মাতাল অথচ এই মানদণ্ডে অন্য কেউ কিছু করলে তাকে খারাপ বানানোর তালে ঠিকই ঠিক।
পাঠক ইসলামের দৃষ্টিতে উক্ত হাদিসের মর্মার্থ বুঝার চেষ্টা করুন। উক্ত হাদিসের উপরেই পরিচ্ছেদে পরিস্কার করে বর্ণিত হয়েছে “সম বয়সীকে বিবাহ করা” এখান থেকেই উক্ত হাদিসের পুরো মর্মার্থ ফুটে উঠে যে ইসলামের দৃষ্টিতে একজন পিতা যেমন চাইলে তার কন্যাকে অল্প বয়সে বিয়ে দিতে পারেন আবার চাইলে সমবয়সীর সাথেও বিয়ে দিতে পারেন। যেমন নবীজি (সা) আয়েশা (রা)কে কম বয়সে বিয়ে করেন এটা থেকে প্রমাণ হয় যে ইসলামে অল্প বয়সে নারী বিয়ে করা বৈধ আবার নবীজি (সা) নিজের কন্যাকে কম বয়সে বিয়ে না দিয়ে সমবয়সীর সাথে বিয়ে দেন এটা থেকে প্রমাণ হয় ইসলামে মেয়েকে সমবয়সী পুরুষের সাথে বিয়ে দেয়াটাও বৈধ। ১৪শ বছর আগে কম বয়সেই মেয়েদের বিয়ে হওয়া স্বাভাবিক ছিল। সেটি অবশ্যই সত্য, তবে সেই সময়েও অল্পবয়সী মেয়েদের অল্পবয়সী ছেলেদের সাথে বিয়ে হওয়াটাই ছিল স্বাভাবিক। সচেতন পিতামাতা কম বয়সী মেয়েকে বিয়ে দেয়া ঘৃণা করতেন এই কথা মিথ্যা। যাদের ইচ্ছে হতো তারা অল্প বয়সে বিয়ে দিত যাদের ইচ্ছে হতো না তারা দিত না। তার মানে এই না যে তারা ইসলামের বিধানকে ঘৃণা করতো। নাস্তিকদের বানানো ব্যাখ্যা যদি সঠিক হয় তাহলে যেই প্রশ্ন গুলোর জবাব নাস্তিকদেরকে দিতে হবে সেটা হচ্ছে নবী মোহাম্মদ (সা) কি আসলেই এই কারণে তার অল্প বয়স্কা কন্যা ফাতিমা (রা)কে আবু বকর ও উমর (রা) কাছে বিয়ে দিতে চান নি যে এই বিয়েকে তিনি খারাপ মনে করেছিলেন অথবা ঘৃণা প্রমাণ কি? কোন হাদিসে বর্ণিত আছে যেখানে নবী মোহাম্মদ (রা) বলেছেন কম বয়সী নারী বিয়ে করাকে উনি ঘৃণা করেন? ইসলামের দৃষ্টিতে একজন পিতার সম্পূর্ণ স্বাধীন ইচ্ছা রয়েছে সে তার কন্যাকে কার সাথে বিয়ে দিবেন আর কার সাথে দিবেন না সেটা সিদ্ধান্ত নেবার। নবীজি (সা) যখন আয়িশা (রা)কে বিয়ে করতে মতামত দেন তখন আবু বকর (রা) ইচ্ছা করলেই সেই বিয়ে নাকচ করে দিতে পারতেন। কিন্তু উনি কি এরকমটা করেছিলেন?
নাস্তিক্যধর্মে সম্মতিতে নিজ মায়ের সাথে সঙ্গম করার বৈধতা দেয়, নাস্তিক মা তার নাস্তিক মেয়ের সাথে সম্মতিতে সঙ্গম করতে চাইলে সেটারও বৈধতা প্রদান করে, নাস্তিক বাবা তার নাস্তিক ছেলের সাথে সম্মতিতে সমকামীতার চর্চা করতে চাইলে সেটাও তারা করতে পারবে। শুধু কি তাই? একজন নাস্তিক পিতা চাইলেই চকলেটের প্রলোভন দেখিয়ে কাউকেই ক্ষতি না করে নিজে কন্যা অথবা পুত্র শিশু সন্তানকে দিয়ে নিজের শিশ্ন চাটানোর মুক্তমনা কর্মও করতে পারে- এই যাদের নাস্তিকাদর্শ তারা যখন অন্য কাউকে কোনটা সচেতন আর কোনটা অসচেতন নৈতিকতার বাণী বুঝাতে চায় তখন যৌক্তিক চিন্তাশীল মুসলিম হিসেবে আমার হাসি আসাটাই স্বাভাবিক। বাঙলায় একটি প্রবাদ প্রচলিত রয়েছে, জাতে মাতাল তালে ঠিক। নাস্তিকরা জাতে মাতাল কিন্তু ঘটনা লুকিয়ে রেখে অভিযোগ করার সময় ঠিকই তালে ঠিক। এই প্রাণীদের বিবেক সুস্থচিন্তা করার জন্য বিবর্তিত হতে আর কয় কোটি বছর লাগবে?
আলী (রা)কে কেন দ্বিতীয় বিয়ে করতে দেন নাই?
হিশাম ইবনে মুগীরা গোত্রের লোক আলী (রা) কে বিয়ের প্রস্তাব দিলে নবীজি (সা) সম্মতি দেন নাই এমনকি ফাতেমা (রা)ও অনুমতি দেন নাই প্রশ্ন হচ্ছে কেন? ইসলামে যদি একাধিক বিয়ে জায়েজ হয় তাহলে নবীজি (সা) কেন নিজের মেয়ের স্বামীকে অন্য স্ত্রী বিয়ে করতে দেন নাই?
সহিহ মুসলিম,হাদিসঃ ৬২০১, সহিহ হাদিসঃ মিসওয়ার ইবনু মাখরামাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃতিনি রসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে মিম্বারের উপর থেকে বলতে শুনেছেন, হিশাম ইবনু মুগীরার ছেলেরা আমার নিকট অনুমতি চেয়েছে যে, তাদের কন্যাকে ‘আলী ইবনু আবূ তালিবের নিকট তারা বিবাহ দিতে চায়। আমি তাদের অনুমতি দিব না, আমি তাদের দিব না, আমি তাদের দিব না। কিন্তু যদি ‘আলী ইবনু আবূ তালিব আমার কন্যাকে তালাক দিয়ে তাদের মেয়েকে বিবাহ করতে চায়, সেটা আলাদা কথা। কারণ আমার কন্যা আমারই একটা অংশ। যা তাকে সম্মানহানি করে তা আমাকেও সম্মানহানি করে, তাকে যা কষ্ট দেয়, আমাকেও তা কষ্ট দেয়। জামে আত তিরমিজি, হাদিসঃ ৩৮৬৭ / সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিসঃ ১৯৯৮/ সুনানে আবু দাউদ, হাদিসঃ২০৭১ / সব সহিহ হাদিস । - ihadis.com
মূল ঘটনা বুঝার পূর্বে আগে নাস্তিক্যধর্মের দৃষ্টিতে বুঝুন। নবী মোহাম্মদ (সা) আলী (রা)কে স্বাধীনতা দিয়েছেন যে যদি অন্য নারীকে বিয়ে করতে হয় তাহলে ফাতেমা (রা)কে তালাক দিতে হবে। তো আলী (রা) এই স্বাধীনতা ভোগ করে তালাক দিয়ে বেশি নারী বিয়ে করতেই পারতেন। এমনকি উনি চাইলে ইসলাম ছেড়ে দিয়ে আরও বেশি বেশি নারী বিয়ে করতে পারতেন কিন্তু উনি এরকম করেন নাই। এর মানে আলী (রা) নবী মোহাম্মদ (সা) কথায় সম্মতি ছিল। আর নাস্তিক্যধর্মের দৃষ্টিতে যদি উভয় পক্ষের সম্মতি থাকে তাহলে সেটা অন্যায় নয়। এমনকি নবী মোহাম্মদ (সা) এর উক্ত সিদ্ধান্তের ফলে কারও ক্ষতিও হয়নি। তাই নাস্তিকদের কোনো যুক্তি নেই নবী মোহাম্মদ (সা) এর সিদ্ধান্তকে খারাপ বলার। এই কথা মাথায় ঢুকিয়ে নিন।
এখন আসুন ইসলামের দৃষ্টিতে কেন নবী মোহাম্মদ (সা) এমন সিদ্ধান্ত নিলেন সেটা জেনে নেই। হিশাম ইবনে মুগীরার ছেলেরা যেই মেয়ের প্রস্তাব নিয়ে এসেছিলেন সেটা ছিল আবু জাহেলের মেয়ে আর আবু জাহেল এবং তার মেয়ে ছিল ইসলামের চরম দুশমন। আর ইসলাম গ্রহণ না করলে তো বিয়েও করা যাবে না। তাই নবীজি (সা) ফাতেমা (রা) ও আলী (রা) কে বিয়ে করার অনুমতি দেন নাই। এরমানে এই না যে নবীজি (সা) বিনা কারণে নিজের স্বার্থে এমনটি করেছেন যেটা মিথ্যুকবাজ নাস্তিকরা বুঝায়। কাফের নারীকে বিয়ে করা ইসলামে জায়েজ নেই। আবু জায়েলের কন্যাকে বিয়ে করা আলী (রা) এর জন্য যেমন ক্ষতিকর ছিল তেমনি ফাতিমা (রা) এর জন্য এই দিক বুঝতে পেরেই নবীজি (সা) আলী (রা)কে সেই বিয়ে করতে মানা করেন। নাস্তিকরা অর্ধেক তথ্য দেখিয়েছে নিজেদের অন্ধবিশ্বাস সঠিক প্রমাণের জন্য কিন্তু আমি সম্পূর্ণ তথ্য দেখিয়ে দিব যাতে নাস্তিকরা ইসলাম বিষয় যে অন্ধবিশ্বাস করে সেটা মিথ্যা প্রমাণ হয়ে যায়। পড়তে থাকুন নিজেরাই সব পরিস্কার বুঝতে পারবেন।
আল কুরআন, সুরা মুমতাহিনা, ৬০:১০ আয়াত থেকে বর্ণিত,
আর তোমরা কাফির নারীদের সাথে বৈবাহিক সম্পর্ক বজায় রেখো না।
সহিহ মুসলিম,হাদিসঃ ৬২০৩, সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,
আলী ইবনু হুসায়ন (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ হুসায়ন ইবনু ‘আলী (রাঃ)-এর শাহাদতের পর ইয়াযীদ ইবনু মু‘আবিয়াহ্ (রাঃ)-এর নিকট হতে রাযা যখন মাদীনায় এলেন, মিসওয়ার ইবনু মাখরামাহ্ তখন তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেন এবং তাঁকে বললেন, আপনার কোন প্রয়োজন থাকলে আমাকে বলবেন। আমি বললাম, না। মিসওয়ার বললেন, রসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর তলোয়ারটি কি আপনি আমাকে দান করবেন? কেননা আমার ভয় হয় যে, লোকেরা এটি আপনার নিকট হতে আয়ত্ব করে নিবে। আল্লাহর শপথ আপনি যদি সে তলোয়ারটি আমাকে দিয়ে দেন তাহলে যতক্ষণ আমার জীবন থাকে এটি কেউ ছুঁইতে পারবে না। মিসওয়ার আরো বলেন ফাতিমার জীবিতাবস্থায় ‘আলী (রাঃ) আবূ জাহলের মেয়েকে বিবাহরে প্রস্তাব দিয়েছিলেন। তখন আমি রসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে এ ব্যাপার নিয়ে মানুষদের সম্মুখে মিম্বারে দাঁড়িয়ে বক্তৃতা দিতে শুনেছি। আমি তখন সদ্য বালিগ বয়সের। তখন তিনি বললেন, ফাতিমা আমারেই অংশ। আমার আশঙ্কা হচ্ছে, সে তার দ্বীনের সম্পর্কে ফিতনায় না পতিত হয়।তারপর তিনি ‘আব্দ-ই-শাম্স গোষ্ঠীয় তাঁর জামাতার আলোচনা করলেন, তার আত্মীয়তার প্রশংসা করলেন এবং বললেন, সে আমায় যা বলেছে সত্য বলেছে, সে আমার সাথে ওয়া‘দা করেছে, আর তা পালন করেছে। আর আমি কোন হালালকে হারাম করি না, বা হারামকে হালাল করি না, তবে আল্লাহর শপথ! আল্লাহর রসূলের কন্যা এবং আল্লাহর শত্রুর কন্যা কক্ষনো এক স্থানে একত্র হতে পারে না।-ihadis.com
জামে আত তিরমিজি, হাদিসঃ ৩৮৩৯, সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,
আবদুল্লাহ ইবনুয যুবাইর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ আলী (রাঃ) আবূ জাহলের কন্যাকে বিয়ে করার আলোচনা করেন। নবী সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম তা শুনে বললেনঃ প্রকৃতপক্ষে ফাতিমাহ্ আমার শরীরের একটি অংশ। যা তাকে কষ্ট দেয়, তা আমাকেও কষ্ট দেয়, যা তাকে ক্লান্ত করে তা আমাকেও ক্লান্ত করে।-ihadis.com
সহিহ মুসলিম,হাদিসঃ ৬২০৪, সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,
মিসওয়ার ইবনু মাখরামাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ আলী ইবনু আবূ তালিব (রাঃ) নাবী-তনয় ফাতিমাকে ঘরে রেখেই আবূ জাহলের কন্যাকে বিবাহের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। ফাতিমা (রাঃ) যখন এ খব শুনলেন তখন রসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নিকট এসে বললেন, লোকেরা কথোপকথন করে যে, আপনি আপনার কন্যাদের সম্বন্ধে রাগ প্রকাশ করেন না। আর এই যে, ‘আলী (রাঃ) আবূ জাহলের কন্যাকে বিবাহ করতে যাচ্ছেন।মিসওয়ার (রাঃ) বললেন, তখন নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম দাঁড়ালেন। এ সময় আমি শুনলাম, তিনি তাশাহুদ পড়লেন এবং বললেনঃ আমি আবুল ‘আস ইবনু রাবী‘র নিকট বিয়ে দিয়েছি, সে আমাকে যা বলেছে তা বাস্তবে পরিণত করেছে। আর মুহাম্মাদ কন্যা ফাতিমা আমারই একটা টুকরা, আমি অপছন্দ করি যে, লোকে তাঁকে ফিতনায় ফেলুক। আল্লাহর শপথ! আল্লাহর রসূলের মেয়ে ও আল্লাহর শত্রুর মেয়ে কোন লোকের নিকট কক্ষনো একসাথে মিলিত হতে পারে না। মিসওয়ার (রাঃ) বলেন, তারপর ‘আলী (রাঃ) প্রস্তাব প্রত্যাহার করেন।-ihadis.com
সহিহ বুখারী, হাদিসঃ ৩১১০, সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,
‘আলী ইব্নু হুসাইন (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃতিনি বলেন, যখন তাঁরা ইয়াযীদ ইব্নু মু‘আবিয়াহ্র নিকট হতে হুসাইন (রাঃ) -এর শাহাদাতের পর মদীনায় আসলেন, তখন তাঁর সঙ্গে মিসওয়ার ইব্নু মাখরামা (রাঃ) মিলিত হলেন এবং বললেন, আপনার কি আমার নিকট কোন প্রয়োজন আছে? থাকলে বলুন। তখন আমি তাঁকে বললাম, না। তখন মিসওয়ার (রাঃ) বললেন, আপনি কি আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম -এর তরবারিটি দিবেন? আমার আশঙ্কা হয়, লোকেরা আপনাকে কাবু করে তা ছিনিয়ে নিবে। আল্লাহ্র কসম! আপনি যদি আমাকে এটি দেন, তবে আমার জীবন থাকা অবধি কেউ আমার নিকট হতে তা নিতে পারবে না। একবার ‘আলী ইব্নু আবূ তালিব (রাঃ) ফাতিমা (রাঃ) থাকা অবস্থায় আবূ জাহল কন্যাকে বিবাহ করার প্রস্তাব দেন। আমি তখন আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম -কে তাঁর মিম্বারে দাঁড়িয়ে লোকদের এ খুত্বা দিতে শুনেছি, আর তখন আমি সাবালক। আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ‘ফাতিমা আমার হতেই। আমি আশঙ্কা করছি সে দ্বীনের ব্যাপারে পরীক্ষার সম্মুখীন হয়ে পড়ে।’ অতঃপর আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বানূ আবদে শামস গোত্রের এক জামাতার ব্যাপারে আলোচনা করেন। তিনি তাঁর জামাতা সম্পর্কে প্রশংসা করেন এবং বলেন, সে আমার সঙ্গে যা বলেছে, তা সত্য বলেছে, আমার সঙ্গে যে ওয়াদা করেছে, তা পূরণ করেছে। আমি হালালকে হারামকারী নই এবং হারামকে হালালকারী নই। কিন্তু আল্লাহর কসম! আল্লাহর রসূলের মেয়ে এবং আল্লাহর দুশমনের মেয়ে একত্র হতে পারে না।-ihadis.com
ইসলামে মুশরিকদের বিয়ে করা নিষেধ। আল কুরআন, সুরা বাকারা ২:২২১ আয়াত থেকে বর্ণিত,
আর তোমরা মুশরেক নারীদেরকে বিয়ে করোনা, যতক্ষণ না তারা ঈমান গ্রহণ করে। অবশ্য মুসলমান ক্রীতদাসী মুশরেক নারী অপেক্ষা উত্তম, যদিও তাদেরকে তোমাদের কাছে ভালো লাগে। এবং তোমরা নারীরা কোন মুশরেকের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়ো না, যে পর্যন্ত সে ঈমান না আনে। একজন মুসলমান ক্রীতদাসও একজন মুশরেকের তুলনায় অনেক ভাল, যদিও তোমরা তাদের দেখে মোহিত হও। তারা দোযখের দিকে আহ্বান করে, আর আল্লাহ নিজের হুকুমের মাধ্যমে আহ্বান করেন জান্নাত ও ক্ষমার দিকে। আর তিনি মানুষকে নিজের নির্দেশ বাতলে দেন যাতে তারা উপদেশ গ্রহণ করে।
সুতরাং পরিস্কারভাবেই বুঝা গেলো যে আবু জাহেলের কন্যা কাফের ছিল এবং আবু জাহেল ছিল ইসলামের বড় দুশমন এমনকি নিজের মেয়েকে ব্যাবহার করে ইসলামের ক্ষতি করতেও আবু জাহেলের বুক কাঁপবে না। নবীজি (সা) নিজেই কিন্তু বলেছেন এই কথা যে আল্লাহর রসূলের মেয়ে ও আল্লাহর শত্রুর মেয়ে কোন লোকের নিকট কক্ষনো একসাথে মিলিত হতে পারে না। এই কথাই প্রমাণ করে আবু জাহেলের মেয়ে মুসলিম ছিল না বিধায় নবীজি (সা) আলী (রা) বিয়ে করতে মানা করেন। নাস্তিকরা নিজেরা ইসলাম বোঝে না আর মানুষকেও সঠিকভাবে ইসলাম বুঝতে দিতে চায় না। আমাদেরকে সচেতন হতে হবে।
বাংলাদেশের আইন দিয়ে আয়েশা (রা) এর বিয়ের সমালোচনা করার হাস্যকর অপচেষ্টাঃ
বাংলাদেশের বাল্যবিবাহ আইনে যা বর্ণিত হয়েছে তা কি সব দেশের আইনে বর্ণিত হয়েছে? অবশ্যই না। তাহলে জার্মানের চিপা গলিতে বসবাস করা নাস্তিক বাংলাদেশের আইন দেখিয়ে আয়েশা (রা)এর বিয়ের সমালোচনা করছে- এটা হাস্যকর না তো কি-রে ভাই? চতুষ্পদ প্রাণী থেকে বিবর্তিত মস্তিস্কের পক্ষেই এরকম সমালোচনা করা সম্ভব হয়তো? যাই হউক। বিভিন্ন দেশের বিয়ের সর্বনিন্ম বয়স কতো সেটা জেনে নেয়া যায়। এক দেশে যদি বিয়ের বয়স নারীদের ১৮ হয় তাহলে এই ভিত্তিতে অন্য যেসব দেশে নারীর বিয়ের সর্বনিন্ম বয়স ১৩ অথবা ১২ এরা কি শিশু? এসব দেশের তুলনায় আবার ১৮ বছরের নারীরা কি বৃদ্ধ?
এখনকার আইন দিয়ে কি তখন বিয়ের বয়স হিসাব করা হতো? না। তাহলে এখনকার আইন দিয়ে তখনকার মানুষ কেন বিয়ে করতে যাবে? এই প্রশ্নে অতি আবেগপ্রবল নাস্তিকান্ধরা বলতে পারে তাহলে ইসলামের আইন দিয়ে এই যুগের মানুষ কেন চলবে? এই প্রশ্নের জবাবে আমি বলবো ইসলাম মানুষকে সত্য কথা বলার আইন দেয় আপনি নাস্তিক তা অবিশ্বাস করে মুক্তমনে মিথ্যাচার করুন? ইসলাম বড়দের সম্মান ও ছোটদের স্নেহ করতে বলে আপনি নাস্তিক এটা অবিশ্বাস করে নিজের পিতামাতাকে গালাগালি করুন ও আপনার সন্তানকে মুক্তমনে নির্যাতন করুন? ইসলাম ধর্ষককে শাস্তি প্রদানের আইন দেয় আপনি এটা অবিশ্বাস করে মুক্তচিন্তায় ধর্ষণ করুন? কোনো নাস্তিক চাইলে যে মুক্তচিন্তার ধর্ষণ করতে পারে জানেন আপনি? ইসলামের বিরুদ্ধে বলতে হবে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে নিজেদের চিন্তা চেতনা যে পশু থেকে এসেছে সেটাই নাস্তিকরা বার বার প্রমাণ করে দেয়। অথচ নাস্তিকরা যদি নিজেদেরকে মানুষ হিসেবে বিশ্বাস করতো তাহলে হয়তো অমানুষের মতো কাজ করতে পারতো না।
মাইকেল এইচ হার্টের লেখা বিখ্যাত একটি বই “১০০ বিশ্বের শ্রেষ্ঠ মনীষী” অনুবাদ ও সম্পাদনা করেছে তপন রুদ্র। এই বইতে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বিষয় অনেক কিছু লেখা হয়েছে। উনার বিয়ে নিয়ে ৪২৬ পৃষ্ঠায় বর্ণিত হয়েছে,
১৮৮৩,৯ ডিসেম্বর, রবীন্দ্রনাথের বিবাহ হল ঠাকুরবাড়িরই এক কর্মচারীর কন্যা। বারো বছর বয়স। বিয়ের আগে নাম ছিল ভবতারিণী। নতুন নাম হল মৃণালিনী।
এখন কি নাস্তিক গণ্ড মূর্খরা বলবে রবীন্দ্রনাথ বাংলাদেশের আইন ভঙ্গ করে বাল্যবিবাহ করেছে? শুধু কি তাই? “মানবজমিন” নামের এক অনলাইন পত্রিকায় ৮ মার্চ ২০১৮ তারিখে,”যৌন সম্পর্কে সম্মতির বয়স ১৫ বছর করা হচ্ছে ফ্রান্সে” শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ করা হয়। সেখানে বর্ণিত হয়েছে (১৭),
ধর্ষণ নিয়ে তীব্র ক্ষোভের মুখে যৌন সম্মতির বয়স পুনর্নির্ধারণ করছে ফ্রান্স। সরকারের তরফ থেকে প্রস্তাব করা হয়েছে, ১৫ বছর বয়স হলেই যৌন সম্পর্কে সম্মতি দিতে পারবে মেয়েরা। অর্থাৎ যৌন সম্পর্ক গড়ে তোলার জন্য তাদের বৈধ বয়স হবে ১৫ বছর। এর ফলে ১৫ বছরের বেশি বয়স হলেই একটি মেয়ে বা একটি ছেলে যৌন সম্পর্ক স্থাপনে বৈধভাবে সম্মতি দিতে পারবে। সম্প্রতি সেখানে উচ্চ পর্যায়ের দুজন রাজনীতিকের বিরুদ্ধে অপ্রাপ্ত বয়স্ক বালিকাদের সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপনের অভিযোগে তোলপাড় হয় রাজনৈতিক অঙ্গন। বলা হয়, মাত্র ১১ বছর বয়সী বালিকাদের যৌন সম্পর্কে ব্যবহার করেছেন ওই রাজনীতিকরা। এতে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এমন সম্পর্ককে সেখানে ধর্ষণ হিসেবে দেখা হয়। ফলে ফ্রান্সের সমতা বিষয়ক মন্ত্রী মারলেন শিয়াপ্পা তার সরকারের নতুন প্রস্তাব ঠেলে দেন সামনে। এর আগে জনগণ ও বিশেষজ্ঞ প্যানেলের সঙ্গে আলোচনা করা হয়। এরপর তিনি বলেন, তার সরকার যৌন সম্পর্ক গড়ার ক্ষেত্রে সম্মতি দেয়ার জন্য বয়স ১৫ বছরকে নির্ধারণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ বিষয়ে আগামী ২১শে মার্চ একটি নতুন আইন উপস্থাপন করা হবে কাউন্সিল অব মিনিস্টারসে বা মন্ত্রিপরিষদে। ফ্রান্সে এখন যে আইন আছে তাতে ১৫ বছর বয়সের কোনো ছেলে বা মেয়ের সঙ্গে যৌন সম্পর্ককে অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়। এমন দুটি ঘটনায় ১১ বছর বয়সী বালিকাদের ব্যবহার করা হয়েছিল। ফলে অভিযোগ ছিল, ওই বালিকাদের ধর্ষণ করা হয়েছে। কিন্তু যারা তাদের ধর্ষণ করেছে তাদেরকে অভিযোগ থেকে খালাস দেয়া হয়। নভেম্বরেই ঘটে গেছে এ ঘটনা। তখন ৩০ বছর বয়সী এক ব্যক্তিকে ধর্ষণের অভিযোগ থেকে মুক্তি দেয়া হয়। আরেকটি ঘটনায় ২৮ বছর বয়সী এক যুবকের বিরুদ্ধে ১১ বছর বয়সী একটি বালিকাকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। কিন্তু সেই মামলাও খারিজ করে দেয়া হয়। এতে ফ্রান্সে তীব্র ক্ষোভ দেখা দেয়। ফলে সমতা বিষয়ক মন্ত্রী মারলেন শিয়াপ্পা বলেন, অনেক সময়ই তিনি বলেছেন যৌন সম্পর্কে সম্মতির বয়স হওয়া উচিত ১৫ বছর। ফরাসি প্রেসিডেন্টও এমন সম্পর্কের জন্য বয়স নির্ধারণ করতে চেয়েছেন ১৫ বছর। গত অক্টোবরে মারলেন শিয়াপ্পা সিএনএনকে বলেছিলেন, ফ্রান্সে ধর্ষণের যে সংস্কৃতি আছে সে বিষয়ে তিনি কাজ করতে চান। আরো বলেছিলেন, আমরা যৌন সম্মতির বয়স আরো কমিয়ে আনতে চাই। এই বয়সসীমার নিচে কোনো বালক, বালিকার সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করলে তা ধর্ষণ বলে বিবেচনা করা হবে।
ধর্মহীনতা চর্চা করা হয় এমন একটি রাষ্ট্র হচ্ছে ফ্রান্স। যেসব মুক্তমনারা নিজেদের মুক্তচিন্তায় কম বয়সী নারীদেরকে ধর্ষণ করেছে সেই ধর্ষণ যাতে বন্ধ হয় এই কারণে মন্ত্রী মারলেন শিয়াপ্পা যৌন সম্পর্কের বয়স কমিয়ে ১৫ বছরে নিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এখানে প্রশ্ন হচ্ছে বাংলাদেশের সস্তা নাস্তিকরা কি এখন বলবে ফ্রান্সের মন্ত্রী বাংলাদেশের আইন ভঙ্গ করেছে? নাস্তিকদের মাথায় আসলেই মগজ আছে কিনা সেটা নিয়েই স্বয়ং সংশয় আছে। আর থাকলেও সেই মগজ দিয়ে চিন্তা করা যায় কিনা সেটা নিয়েও সংশয় আছে।
বাংলাদেশের বৈবাহিক আইন দিয়ে কি পুরো পৃথিবীর আইন বানানো হয়েছে? উত্তর হচ্ছে না তাহলে কোনো সুস্থ স্বাভাবিক মানুষ কি পারে একটি আইন দিয়ে অন্যান্য সব মানুষকে অপরাধী বানিয়ে ফেলতে? নাকি শুধু মুসলিমদেরকে অপরাধী বানাতে চাচ্ছে মুসলিমবিদ্বেষীরা? ইসলাম যে সিস্টেম দিয়েছে অর্থাৎ যেহেতু প্রতিটি দেশের নারীদের শারীরিক মানুসিক ও পিরিয়ডের অবস্থা এক হয় না তাই অবস্থা নির্ণয় করে দেখতে হবে তার মধ্যে এসব লক্ষণ পাওয়া যায় কি না। আবার যদি পিরিয়ড আসতে লেট হয় কিন্তু শারীরিক ও মানুসিক ভাবে পরিপক্কতা আসে তাহলে পরিবার ইচ্ছা করলে তাকে বিয়ে দিতেই পারে। ইসলামের এই পদ্ধতি কিন্তু সব স্থানেই প্রয়োগযোগ্য। আইন দেখিয়ে অল্প বয়স্কা নারীকে বিয়ে করা যাবে না বলা নাস্তিকান্ধটি ধর্মীয় অনুভুতিতে আঘাত করা যাবে না আইনের বিরুদ্ধে মুক্তচিন্তার আন্দোলনে নেমেছে। হাস্যকর না?
শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব (১৮) যিনি ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্ত্রী। তার ডাকনাম ছিল রেনু। তার পিতার নাম শেখ জহুরুল হক ও মাতার নাম হোসনে আরা বেগম। পাঁচ বছর বয়সে তার পিতা-মাতা মারা যান। তিনি তার স্বামী শেখ মুজিবুর রহমানের চাচাতো বোন ছিলেন। শেখ মুজিবের বয়স যখন ১৩ ও বেগম ফজিলাতুন্নেসার বয়স যখন মাত্র তিন, তখন পরিবারের বড়রা তাদের বিয়ে ঠিক করেন। ১৯৩৮ সালে বিয়ে হবার সময় রেনুর বয়স ছিল ৮ বছর ও শেখ মুজিবের ১৮ বছর। পরে এই দম্পতির দুই কন্যা ও তিন ছেলে হয়। তারা হলেন শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা এবং শেখ কামাল,শেখ জামাল ও শেখ রাসেল।
নাস্তিকরা বলে,
ইসলামে শুধুমাত্র অল্প বয়সে বিয়েই জায়েজ নয় এর জন্য বাংলাদেশের আইন লঙ্গন করে মিথ্যা বলাও জায়েজ আছে।
ফাতাওয়ায়ে ফকীহুল মিল্লাত, ষষ্ঠ খণ্ড,ফকীহুল মিল্লাত ফাউন্ডেশন, ফকীহুল মিল্লাত মুফতি আব্দুর রহমান, পৃষ্ঠা ৪২ থেকে বর্ণিত, শিরোনামঃ আইনি ঝামেলা এড়ানোর জন্য বয়স বাড়িয়ে লেখা। প্রশ্নঃ বাংলাদেশের সরকারের আইন অনুযায়ী ১৮ বছর বয়সের কমে কোনো মেয়েকে বিবাহ দেওয়া নিষিদ্ধ। অথচ শরয়ী আইন অনুযায়ী বিবাহে আবদ্ধ করানো জায়েজ আছে। শরিয়ত অনুযায়ী বিবাহ দিলে অনেক সময় সরকারিভাবে চাপ সৃষ্টি করা হয়। প্রশ্ন হলো, সরকারি হয়রানি থেকে বাঁচার জন্য ১৪ বছর বয়সী মেয়েকে সরকারি খাতায় ১৮ বছর লিখিয়ে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ করা জায়েজ হবে কিনা? উত্তরঃ ইসলামী শরিয়ত মেয়ের অভিভাবকদের ওপর চাপ সৃষ্টি করেছে যে মেয়ে বিবাহের উপযুক্ত হওয়ামাত্রই যেন তাড়াতাড়ি বিবাহ দেয়া হয়। এর বিপরীত কেউ যদি চাপ সৃষ্টি করে তাহলে জুলুম বা অন্যায়ের অন্তর্ভুক্ত হবে। শরীয়তের বিধান মানতে গিয়ে জুলুম বা অন্যায় থেকে বাঁচার যেকোনো পদ্ধতি অবলম্বন করার অবকাশ আছে।
নাস্তিকরাই বলে নাস্তিকতা নাকি যুক্তির উপর প্রতিষ্ঠিত। অথচ মুসলিমদেরকে আইনিভাবে বিপদে ফেলে দেবার জন্য নাস্তিকরা এভাবে অভিযোগ করে সেই অভিযোগ অযৌক্তিক হলেও। ভাবা যায়? কোনো মেয়ে যদি বিয়ের উপযুক্ত হয় তাহলে যুক্তি অনুযায়ী তাকে অবশ্যই বিয়ে দিয়ে দেয়া উচিত। কারণ সেই নারীর বৈধভাবে সহবাস করার অধিকার আছে। এখন কোনো নারী যদি বিয়ের উপযুক্ত হয় আর সেই নারীকে যদি আইনের কারণে বিয়ে দিতে দেরি করা হয় তাহলে অবশ্যই এটি সেই নারীর জন্য ক্ষতিকর। এই ক্ষতি থেকে রক্ষা পেতে যদি বয়স বৃদ্ধি করে দেয়া হয় তাহলে যৌক্তিকভাবেও একে খারাপ বলার ভিত্তি নেই নাস্তিকদের কাছে। কারণ নাস্তিক্যধর্মের দৃষ্টিতে নিজের বয়স কমিয়ে দেয়া অথবা বৃদ্ধি করে দেয়া একান্ত ব্যক্তিগত ব্যাপার। বাংলাদেশের আইনে ১৮ বছর হলে বিয়ে দিতে বলা হয়েছে কারণ হচ্ছে এতে নারীর ক্ষতি হবে না কিন্তু যুক্তি অনুযায়ী একটি নারীর যদি ১৪ বছরেই পরিপক্ক হয় এবং সে যদি নিজের বয়স ১৮ লিখে তাহলে একে যুক্তি দিয়ে ভুল বলার সুযোগ নেই নাস্তিকদের। কারণ ১৮ বছর বয়সী নারী যেই পরিপক্ষ হয় সেই পরিপক্ক যদি কোনো নারী ১৪ বছরেই হয়ে যায় তাহলে এটা মোটেও অন্যায় কিছু নয়।
যেই গাধা নাস্তিক লোকটি জার্মানে বসে বাংলাদেশের মুসলিমরা আইন লংঘন করলো নিয়ে খুব চিন্তিত আসুন দেখি সেই নাস্তিকগোষ্ঠী নিজেরা কেমন আইন মেনে চলে বাংলাদেশের। বাংলাদেশের দণ্ডবিধির ৩৭৭ ধারা মোতাবেক পায়ুমৈথুন শাস্তিযোগ্য অপরাধ (১৯)। লজ অব বাংলাদেশ সুত্রে বর্ণিত হয়েছে,
Whoever voluntarily has carnal intercourse against the order of nature with any man, woman or animal, shall be punished with 2[imprisonment] for life, or with imprisonment of either description for a term which may extend to ten years, and shall also be liable to fine.Explanation. Penetration is sufficient to constitute the carnal intercourse necessary to the offense described in this section.
ভাবানুবাদঃ যে ব্যক্তি স্বেচ্ছায় প্রকৃতির নিয়মের বিরুদ্ধে কোনো পুরুষ, মহিলা বা পশুর সাথে শারীরিক মিলন করে, তাকে 2 [কারাদণ্ড] যাবজ্জীবন, বা দশ বছর পর্যন্ত মেয়াদের জন্য যেকোন বর্ণনার কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হবে, এবং দায়বদ্ধও হতে হবে। জরিমানা। ব্যাখ্যা। এই ধারায় বর্ণিত অপরাধের জন্য প্রয়োজনীয় শারীরিক মিলন গঠনের জন্য অনুপ্রবেশ যথেষ্ট।
এখন কি সেই নাস্তিক লোকটি বাংলাদেশের আইন মেনে বলবে সমকামীতা অপরাধ? তাই দুনিয়াতে যারা সমকামী আছে সবাই অপরাধী? নাস্তিকদের উচিত নয় সমকামে বিশ্বাসী হবার যেহেতু এটা নিষিদ্ধ? শুধু কি তাই? লজ অব বাংলাদেশ এর ২৯৫ ধারার সুত্রে (২০) আরও বর্ণিত হয়েছে,
Whoever destroys, damages or defiles any place of worship, or any object held sacred by any class of persons with the intention of thereby insulting the religion of any class of persons or with the knowledge that any class of persons is likely to consider such destruction, damage or defilement as an insult to their religion, shall be punished with imprisonment of either description for a term which may extend to two years, or with fine, or with both.
ভাবানুবাদঃ যে ব্যক্তি কোনো উপাসনালয়কে ধ্বংস করে, ক্ষতি করে বা অপবিত্র করে, বা কোনো শ্রেণির ব্যক্তির দ্বারা পবিত্র ধারণ করা কোনো বস্তুকে এর দ্বারা কোনো শ্রেণীর ব্যক্তির ধর্মকে অবমাননা করার অভিপ্রায়ে বা কোনো শ্রেণির ব্যক্তি এই ধরনের ধ্বংসের কথা বিবেচনা করতে পারে এমন জ্ঞান নিয়ে, তাদের ধর্মের অবমাননা হিসাবে ক্ষতি বা অপবিত্রতা, দুই বছর পর্যন্ত বিস্তৃত মেয়াদের জন্য যেকোন বর্ণনার কারাদণ্ড, বা জরিমানা, বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবে।
জার্মানে বসবাস করা নাস্তিক লোকটি কি এখন তার ভক্তদেরকে এই আদেশ দিবে যে যেহেতু আইনে বলা হয়েছে ধর্মীয় অবমাননা করা যাবে না সেহেতু আজ থেকে নাস্তিকগোষ্ঠী কেউই ইসলামের কোনো সমালোচনা করে মুসলিমদের মনে আঘাত দিবে না? ইসলাম বিরোধী যতো লেখা আছে সব গুলো মুছে দিতে হবে যেহেতু বাংলাদেশের আইনে সেটা লেখা আছে? পাঠক আপনার কি মনে হয় নাস্তিকরা এতো সাধু? তাছাড়া একজন মানুষের প্রাপ্তবয়স্ক হওয়া নিয়েও যথেষ্ট সংশয়যুক্ত খবর পাওয়া যায়। “প্রথম আলো’ সংবাদ মাধ্যমে ‘মানুষ প্রাপ্তবয়স্ক হয় ৩০ বছরে!’ শিরোনামে একটি খবর প্রকাশ করা হয় ২১ মার্চ ২০১৯ তারিখে। সেখানে বর্ণিত হয়েছেঃ(২১)
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ১৮ বছরের কম বয়সীদের নাবালক বা শিশু এবং ১৮ বছর বা তার বেশি বয়সীদের সাবালক বা প্রাপ্তবয়স্ক বলা হয়ে থাকে। প্রাপ্তবয়স্কদের আইনগত অধিকার ও সুযোগ-সুবিধাও সেভাবেই নির্ধারিত হয়। তবে বিদেশি এক গবেষণায় বলা হচ্ছে, মানুষ প্রাপ্তবয়স্ক হয় ৩০ বছর বয়সে! বিবিসি অনলাইনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাজ্যের বর্তমান আইনেও আছে, কারও বয়স ১৮ বছর হলে তিনি প্রাপ্তবয়স্ক হবেন। আর সেখানকার বিজ্ঞানীরা বলছেন, ৩০ বছর না হলে মানুষ ‘প্রাপ্তবয়স্ক’ হতে পারে না। মস্তিষ্ক ও স্নায়ুতন্ত্র নিয়ে গবেষণা করা বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, কোন বয়সে কে প্রাপ্তবয়স্ক হবে, সেটি প্রত্যেকের জন্য আলাদা। ওই গবেষণায় বলা হচ্ছে, ১৮ বছর বয়সে মস্তিষ্কের পরিবর্তন চলমান থাকে। এর ফলে মানুষের আচরণ ও তাদের মানসিক স্বাস্থ্য উন্নত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। গবেষণা দলের সমন্বয়ক ও কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক পিটার জোনস বলেন, ‘নাবালক থেকে সাবালকে পরিণত হওয়ার বিষয়ে সত্যিকার অর্থে আমরা যা বলতে চাই, সেটা কারও কাছে হাস্যকর মনে হতে পারে। তবে সাবালক বা প্রাপ্তবয়স্কে রূপান্তর হওয়ার বিষয়টি অনেক বেশি সূক্ষ্ম, যা হতে তিন দশকের বেশি সময় প্রয়োজন হয়।’ প্রতিষ্ঠিত শিক্ষাব্যবস্থা, স্বাস্থ্যব্যবস্থা ও আইনি ব্যবস্থার জন্য বয়সকে সংজ্ঞায়িত করে স্ব স্ব ক্ষেত্রে সুবিধাজনক করা হয়েছে বলেও মনে করেন পিটার জোনস।
এই তথ্যের আলোকে বাংলাদেশের ১৮ বছরের কন্যা ও ২১ বছরের ছেলে এরা প্রাপ্তবয়স্ক না? একেক বিজ্ঞানী একেক রকম কথা বলে। আস্তিক বিজ্ঞানীরা আস্তিকদের পক্ষে গবেষণা করে তো নাস্তিক বিজ্ঞানীরা নাস্তিকদের পক্ষে তাহলে নাস্তিকরা নিজেদেরকে একতরফা বিজ্ঞানমনস্ক দাবি করার অর্থ কি? বিজ্ঞানীদের গবেষণায় যে ৩০ বছর বয়সে একজন মানুষ প্রাপ্তবয়স্ক হয় তাহলে ১৮ বছরের মেয়ে ও ২১ বছরের ছেলেকে কি শিশু বলা যাবে? না। হ্যাঁ, এদেরকে অল্প বয়স্কা এমনকি বয়স অনেক কম এটাও বলা যেতে পারে কিন্তু শিশু না। একইসাথে যেসব বিজ্ঞানী এটা গবেষণা করেছে যে ৩০ বছর বয়সে মানুষ প্রাপ্তবয়স্ক হয় তারা সবাই কি বাংলাদেশের আইন লংঘন করেছে? পশুর মগজধারী নাস্তিকরা কি এটাই বলবে? কি হাস্যকর তাই না?
নবীজি (সা) যদি সর্বকালের আদর্শ হয় তাহলে সকল মুসলিমরা কেন ৬ বছরে বিয়ে করে ৯ বছরে ঘরে তুলে সুন্নত আদায় করে না?
এসব সস্তা প্রশ্নের জবাব দেয়া সময় নষ্ট কিন্তু মানুষকে সচেতন করার জন্য দিতে হয় আরকি। নাস্তিকান্ধরা ইসলামকে এতোটাই ঘৃণা করে যে ইসলামের উসুল বিষয় বিন্দুমাত্র পড়াশোনা না করেই আপত্তি তুলে নিজেদেরকে ইসলামের সমালোচক ভেবে বসে থাকে। ইসলামে অল্প বয়সী মেয়েকে বিয়ে করা বাধ্যতামূলক না। নবীজি (সা) কোথাও এটা বলেন নাই যে সব মুসলিমরা ৬ বছর বয়সে বিয়ে করতেই হবে বা বাধ্য। বিভিন্ন বয়সের নারীরা নবী (সা) এর স্ত্রী হয়েছিলেন।তাই যেই বয়সে ইচ্ছা পারিবারিক সম্মতিতে ক্ষতি না করে ছেলে-মেয়ের পরামর্শে বিয়ে করা যাবে। সমস্যা নেই। ইসলাম ক্ষতি চায় না, ইসলাম কল্যাণ চায়। নবীজি (সা) কখনো এই কথা বলেন নাই যে অল্প বয়স্কা নারীকে বিয়ে করতে মুসলিমরা বাধ্য তাই বলাই যায় যে এটা ইসলামের অপশনাল একটি বিধান কেউ চাইলে অল্পবয়স্কা মেয়েকে বিয়ে করবে আবার কেউ চাইলে বেশি বয়স্কা মেয়েকেও বিয়ে করতে পারে। ইসলাম এই বিষয় সহজতা দিয়েছে।
রিয়াদুস সলেহিন,হাদিসঃ ৬৬৯, সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত হয়েছে,
আমরা যখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট তাঁর কথা শোনার ও আনুগত্য করার উপর বায়‘আত করছিলাম, তখন তিনি বলেছিলেন, ‘‘যাতে তোমাদের সাধ্য রয়েছে।’’-ihadis.com
সহিহ বুখারী, হাদিসঃ ৭১৭২,সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,
আবূ বুরদাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমার পিতা ও মু‘আয ইব্নু জাবালকে ইয়ামানে প্রেরণ করলেন। তখন তিনি বললেন, তোমরা সহজ করো, কঠোর করো না,তাদের সুসংবাদ দাও, ভয় দেখায়ও না এবং পরস্পর পরস্পরকে মেনে চলো। তখন আবূ মূসা (রাঃ) তাঁকে বললেন, আমাদের দেশে ‘বিত্’ নামীয় এক ধরণের পানীয় প্রস্তুত করা হয়। জওয়াবে তিনি বললেনঃ প্রত্যেক নেশা সৃষ্টিকারী বস্তুই হারাম।-ihadis.com
রিয়াদুস সলেহিন,হাদিসঃ ৬৪২, সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,
আনাস রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিতঃনবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘তোমরা সহজ কর, কঠিন করো না এবং লোকদেরকে সুসংবাদ দাও। তাদের মধ্যে ঘৃণা সৃষ্টি করো না।’’-ihadis.com
উপসংহারঃ কেউ যদি ইসলামের বিরুদ্ধে সমালোচনা করার চাকরি পায় তাহলে তাকে যাই বলা হউক সে কখনো সত্যকে অনুভব করতে পারবে না। এরপরেও যদি কোনো নাস্তিক মানসিক অসুস্থতার জন্য এই টপিক নিয়ে একই মিথ্যাচার বারবার করতেই থাকে তবে আমার আর কিছুই বলার নেই। আমি চাই নাস্তিকরা সুস্থভাবে চিন্তা করতে শিখুক। নিজেকে ব্যক্তিস্বাধীনতায় বিশ্বাসী দাবি করে নবী মোহাম্মদ (সা)এর প্রতি বিদ্বেষ রেখে অভিযোগ করে নিজস্ব নৈতিকতা চাপিয়ে দিতে চাইবেন এটা তো হতে পারে না,তাই না? নাস্তিক্যদৃষ্টিতে বিবর্তনবাদ সত্য হয়ে থাকলে নাস্তিকদের এটা অস্বীকার করার উপায় নেই যে প্রাণীজগতে সবার বিবেক সমান অর্থাৎ সবাই সবার বিবেক দিয়ে চলার ইচ্ছা রাখে। হে নাস্তিক তুমি কি পারো না ইসলামবিদ্বেষ থেকে কিছুক্ষনের জন্য মুক্ত থেকে সততার সাথে ইসলাম নিয়ে চিন্তা করতে? তোমার নাস্তিক্যবাদ কি এতোই দুর্গন্ধযুক্ত যে ইসলাম নিয়ে সঠিকভাবে চিন্তা করতে তোমাকে বাধা প্রদান করে? নবী মোহাম্মদ (সা) ও আয়েশা (রা) এর দাম্পত্য জীবনকে নাস্তিক্যধর্মের দৃষ্টিতে সমালোচনার কোনো যৌক্তিক ভিত্তি নেই।
তথ্যসুত্র বাতায়নঃ
[A] ‘If it [man-boy sexual contact] is consensual, it can be constructive’.
https://www.josephnicolosi.com/collection/psych-association-loses-credibility-say-insiders
[B] ‘If I were to see the case of a boy aged ten or eleven who’s intensely erotically attracted toward a man in his twenties or thirties,if the relationship is totally mutual,and the bonding is genuinely totally mutual...then I would not call it pathological in any way’-Interview:John money,PAIDIKA:The journal of Paedophilia,spring 1991,Vol 2,no 3, page 5.
[C] Singer Peter, Heavy Petting, Nerve,2001.
[D] Matt Blake (1 july 2013) Bestiality brothels are spreading through Germany.Dailymail.
[১] সময় এখন প্রকাশ্যে সেক্স করার : তসলিমা নাসরিন: https://www-jagonews24-com.cdn.ampproject.org/v/s/www.jagonews24.com/amp/80119?amp_js_v=a6&_gsa=1&usqp=mq331AQKKAFQArABIIACAw%3D%3D&fbclid=IwAR1623xXKrtBPBuXx4406HlppyzsnFpz1s5XNydJ7dRSlG8R-JKX1AxgIGE#aoh=16376721837209&referrer=https%3A%2F%2Fwww.google.com&_tf=From%20%251%24s&share=https%3A%2F%2Fwww.jagonews24.com%2Fsocial-media%2Fnews%2F80119
[২] নেক্রোফিলিয়া, সেক্সুয়াল স্যাডিজম, পেডোফিলিয়া, ক্লেপটোম্যানিয়াসহ যে সাত মানসিক ব্যাধি মানুষকে বানাতে পারে অপরাধীঃ https://www.bbc.com/bengali/news-55027600
[৩] নবী(ﷺ) কি ৯ বছর বয়সে আয়েশা(রা.) এর সাথে সহবাস করেন:https://response-to-anti-islam.com/
[৪] মুহাম্মাদ ﷺ কি কোলের বাচ্চার প্রতি আকৃষ্ট হয়ে তাকে বিয়ে করার আশা প্রকাশ করেছিলেন:https://islamicauthors.com/
[৫] উমার ইবনুল খাত্তাব (রাদিয়াল্লাহু আনহু) ও উম্মু কুলসুম বিনত আলি (রহিমাহাল্লাহ) এর বিয়ে সম্পর্কিত তিনটি তথ্যের তাহকিক: https://islamicauthors.com/
[৬] A Medieval Miscellany By Margaret Wade Labarge, page 52
[৭] Parental Kidnapping in America: An Historical and Cultural Analysis By Maureen Dabbagh Page 128; https://discover-the-truth.com/2013/09/09/age-of-consent-in-european-american-history/
[৮] সিয়ারুল আ’লাম আল-নুবালা, ১০ম খণ্ড, ৯১ পৃষ্ঠায় বর্ণিত।
[৯] সুনানে বায়হাকি কুবরা : ১/৩১৯।
[১০] তাহ্ক্বীক্ব ফী আহাদিস আল-খিলাফ, ২য় খণ্ড, পৃঃ ২৬৭।
[১১] সুনানে কুবরা বায়হাক্বী : ১ম খন্ড ৪৭২ পৃষ্ঠা হাদীছ শরীফ নং ১৫৩১ প্রকাশনা: দারুল কুতুবুল ইলমিয়া বইরুত লেবানন , জাওয়াহিরুন নক্বী ১ম খণ্ড ৩১৯ পৃষ্ঠা। https://www.askislampedia.com/en/wiki/-/wiki/English_wiki/_Answering_Allegations_Marriage+of+Aisha+to+our+Prophet?fbclid=IwAR1GKMLptcK4oY2rMZDXlZCubci8a769A2I3gpNnhx7SqmPmcT7vhdiVZJo#r3
[১২] PUBERTY INFORMATION FOR BOYS AND GIRLS - [ https://www.avert.org/sex-stis/puberty]
[১৩] সুরা তালাক ৬৫:৪ আয়াতে শিশু স্ত্রীর সাথে সহবাসের কথা বলে: https://omukderkotha1.blogspot.com/2021/04/blog-post.html
[১৪]https://hadithbd.com/hadith/detail/?pageNum_mainHadith=1&totalRows_mainHadith=66&book=19§ion=419
[১৫] আয়িশাহ (রা.) এর মতে তিনি ৯ বছর বয়সে প্রাপ্তবয়স্কা ছিলেন:response-to-anti-islam.com
[১৬]“Arabic-English Lexicon” Volume 7, Page 204 / https://discover-the-truth.com/2013/12/23/refuting-the-allegation-that-muhammed-hit-his-wife-aisha-and-more/
[১৭] যৌন সম্পর্কে সম্মতির বয়স ১৫ বছর করা হচ্ছে ফ্রান্সে:https://mzamin.com/article.php?mzamin=108042
[১৮] উইকিপিডিয়াঃ শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব।
[১৯] http://bdlaws.minlaw.gov.bd/act-11/section-3233.html?lang=bn
[২০] http://bdlaws.minlaw.gov.bd/act-11/section-3115.html
[২১] মানুষ প্রাপ্তবয়স্ক হয় ৩০ বছরেঃ https://www.prothomalo.com/world/%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A7%81%E0%A6%B7-%E0%A6%AA%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%AA%E0%A7%8D%E0%A6%A4%E0%A6%AC%E0%A7%9F%E0%A6%B8%E0%A7%8D%E0%A6%95-%E0%A6%B9%E0%A7%9F-%E0%A7%A9%E0%A7%A6-%E0%A6%AC%E0%A6%9B%E0%A6%B0%E0%A7%87
আরো যেসব কিতাবের সাহায্য নেয়া হয়েছেঃ
[২২] বইয়ের নাম “আমার অবিশ্বাস” লিখেছেন হুমায়ুন আজাদ।
[২৩] বইয়ের নাম “সমকামিতা” লিখেছেন অভিজিৎ রায়।
[২৪] বইয়ের নাম “আমার মেয়ে বেলা” লিখেছেন তসলিমা নাসরিন।
[২৫] মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল গালিব (হাঃফি) লিখিত “সীরাতুর রাসুল (সা)”।
[২৬] “সুনানে ইবনে মাজাহ” লিখছেন ইমাম ইবনে মাজাহ।
[২৭] ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক বিশিষ্ট গবেষক ও চিন্তাবিদ ডঃ হাসান জামান স্যারের লিখিত বই “কমিউনিস্ট শাসনে ইসলাম”।
[২৮] “সুনানে আবু দাউদ” লিখেছেন আবু দাউদ সুলাইমান ইবনে আল-আশআস আল-আজদি আস-সিজিস্তানি যিনি ইমাম আবু দাউদ নামে পরিচিত।
[২৯] রাশীদ হাইলামায যিনি একজন ইসলামী গবেষক, চিন্তাবিদ এবং সীরাত লেখক, তাঁর লেখা "জীবন ও কর্ম আয়েশা (রা)" অনুবাদ করেছেন মুহাম্মদ আদম আলী।
[৩০] মুয়াল্লীমা মোরশেদা বেগম সংকলনে “রাসুলুল্লাহ (সা) এর স্ত্রীগণ যেমন ছিলেন”।
[৩১] “সহিহ বুখারি শরীফ” লিখেছেন মুহাম্মদ বিন ইসমাইল বিন ইবরাহীম বিন মুগীরাহ বিন বারদিযবাহ। এনি ইমাম বুখারি নামে পরিচিত।
[৩২] THE LIFE OF MUHAMMAD (A TRANSLATION OF ISHAQ'S SIRAT RASUL ALLAH)
[৩৩] “হাদিস সম্ভার” ওয়াহীদিয়া ইসলামিয়া লাইব্রেরী।
[৩৪] ইবনে সাদের তাবাকাত আল কাবীর গ্রন্থ।
[৩৫] অধ্যাপক,সাংবাদিক ও গবেষক গোলাম মুরশিদ সাহেবের "হাজার বছরের বাঙালি সংস্কৃতি"।
[৩৬] Spirit of laws
[৩৭] গবেষক মাইকেল এইচ হার্ট লিখিত "১০০ বিশ্বের শ্রেষ্ঠ মনিষী" (বাংলা অনুবাদ)
[৩৮] “আল লু’লু ওয়াল মারজান”
[৩৯] আল কুরআন।
[৪০] তাফসীরে আহসানুল বায়ান।
[৪১] মুফতি আল্লামা তাকি উসমানী সাহেবের লিখিত বিখ্যাত কিতাব “দারসে তিরমিজি”।
[৪২] নসরুল বারী শরহে সহীহ বুখারী।
[৪৩] আল্লামা ইদরীস কান্ধলবী (রহ) লিখিত সীরাতুল মুস্তফা (সা)।
[৪৪] সাইয়েদ সুলাইমান নদভী (রহ) লিখিত বিখ্যাত সিরাত গ্রন্থ "উম্মুল মুমিনীন সীরাতে আয়েশা (রা)"।
[৪৫] সাইয়েদ আবুল হাসান আলী নাদভী (রহ) লিখিত “নবীয়ে রহমত”।
[৪৬] Muhammad: A Biography of the Prophet - Karen Armstrong;
[৪৭] “সুনানে আন নাসায়ী” এই গ্রন্থের সংকলনকারী ইমাম নাসাই (র:)।
[৪৮] “সহিহ মুসলিম” ইমাম মুসলিম বিন হাজ্জাজ ইবনে মুসলিম আল কুশাইরী হলেন এই মহান গ্রন্থের সংকলক।
[৪৯] “জামে আত তিরমিজি” লিখেছেন আবু ঈসা মুহাম্মদ ইবনে ঈসা আস-সুলামি আদ-দারির আল-বুগি আত-তিরমিজি।
[৫০] সিলসিলা আহাদিস সহিফা লি আলবানি।
[৫১] গবেষক ও চিন্তাবিদ মোহাম্মদ আকরাম খাঁ লিখিত সীরাত গ্রন্থ "মোস্তফা চরিত"।
[৫২] “রিয়াদুস সলেহিন” হল ইয়াহিয়া নববী রচিত আর কুরআনের আয়াতের সমর্থনে নির্বাচিত হাদিস সংকলন গ্রন্থ।