ক্ষমতাশীল কাফেরদের বিরুদ্ধে ভবিষ্যৎবাণী


বিষয়ঃ ক্ষমতাশীল কাফেরদের বিরুদ্ধে ভবিষ্যৎবাণী

লিখেছেনঃ এমডি আলী 

=======================================


সূচনাঃ নাস্তিকতার শেকলে বন্দিত্ব বরণ করা নাস্তিকগোষ্ঠীরা সত্যকে ধামাচাপা দিতে চায়। কিন্তু তারা সফল হতে পারবে না। মিথ্যাকে বাহ্যিকভাবে যতো শক্ত মনে হোক না কেন যখন মিথ্যাকে সত্যের সামনে দাড় করানো হয় তখন উপলব্ধি করা সহজ হয়ে যায় যে মিথ্যা খুবই দুর্বল। চিন্তাশীল মগজ কখনো নাস্তিকতায় বিশ্বাস রাখতে পারে না। সে নিজেকে প্রশ্ন করবে নাস্তিকতা কি আসলেই মুক্তির পথ? নাস্তিকতা যে মিথ্যা না তার প্রমাণ গুলো কোথায়? মুক্তচিন্তার আন্দোলন নাম দিয়ে সারাদিন ইসলামের বিরুদ্ধে মিথ্যাকথা বলতে থাকলে কি প্রমাণ হবে নাস্তিক্যবাদ সঠিক? চিন্তাশীল মগজে এই প্রশ্ন গুলো আসাই স্বাভাবিক।

সেই নাস্তিক্যধর্মের শেকল থেকে বের হয়ে মুক্তির অনুভূতি পেতে আমাদেরকে কোন সত্যের দিকে ধাবিত হওয়া প্রয়োজন? এই চিরন্তন সত্য নিয়েই আজকে আলাপ করবো আপনাদের সাথে। সত্যকে বুঝে নিতে আপনার মানুষওয়ালা চিন্তাশীল মগজ প্রস্তুত তো?

আশ্চর্যময় আয়াতঃ

আল কুরআন, সুরা আল ইমরান,৩:১২ ও ১৩ আয়াতে বর্ণিত হয়েছে,

যারা অবিশ্বাস করেছে তুমি (হে মোহাম্মদ) তাদেরকে বল-অচিরেই তোমরা পরাভূত হবে এবং তোমরা জাহান্নামের দিকে একত্রিত হবে এবং ওটা নিকৃষ্টতর স্থান। নিশ্চয়ই তোমাদের জন্যে দুটি দলের পরস্পর সম্মুখীন হওয়ার মধ্যে মহান নমুনা রয়েছে, তাদের একদল আল্লাহর পথে সংগ্রাম করছিল এবং অপর দল অবিশ্বাসী ছিল। তারা প্রত্যক্ষ দৃষ্টিতে মুসলমানদেরকে দিগুণ দেখছিল এবং আল্লাহ যাকে ইচ্ছে তদীয় সাহায্য দানে শক্তিশালী করেন, নিশ্চয়ই এর মধ্যে চক্ষুমানদের জন্যে উপদেশ রয়েছে।

আয়াতটি মনোযোগ দিয়ে পাঠ করুন। এখন মন দিয়ে আয়াতটির প্রেক্ষাপট বুঝে পড়তে থাকতে হবে। কোনো লাইন মিস করা যাবে না। পড়তে থাকুন পাঠক।

তাফসীরে জালালাইন,১ খণ্ড, ৬০০ পৃষ্ঠায় বর্ণিত হয়েছে,

একটি শানে নুযূল তাে ইবারতে বর্ণিত হয়েছে। কেউ বলেন, বদরের বিজয় দেখে ইহুদিরা বিশ্বাসের পথে কিছুটা এগিয়ে আসছিল। এ সময় তাদের কিছু লােক বলল, ব্যস্ত হয়াে না। দেখ, সামনে কি হয়। পরবর্তী বছরে ওহুদের পরাজয় দেখে তাদের মন শক্ত হয়ে গেল এবং স্পর্ধা বেড়ে গেল। এমনকি তারা চুক্তি ভঙ্গ করে মুসলিমগণের সাথে যুদ্ধ করতেও প্রস্তুত হয়ে গেলকবি ইবনে আশরাফ ষাট সওয়ারির একটি কাফেলা নিয়ে মক্কায় চলে গেল এবং আবু সুফিয়ান প্রমুখ কুরাইশ কাফেরদের সাথে মিলিত হয়ে বলল, তােমরা আমরা এক। কাজেই সম্মিলিত বাহিনী তৈরি করে আমাদের উচিত মুহাম্মদের মােকাবিলা করাএ পরিপ্রেক্ষিতে আলােচ্য আয়াত নাজিল হয়। আল্লাহই ভালাে জানেন। যা হােক অল্প দিনের মধ্যেই আল্লাহ তা'আলা দেখিয়ে দেন, আরব উপদ্বীপে মুশরিকদের নাম-নিশানা কিছু বাকি থাকেনি। বনু কুরায়যার বিশ্বাসঘাতকতার কারণে এ ইহুদি গােত্রকে কতল করা হয়বনু নযীরকে নির্বাসন দেওয়া হয়। নাজরানের খ্রিস্টানগণ বশ্যতা স্বীকার করে বার্ষিক কর দিতে বাধ্য হয় এবং প্রায় এক হাজার বছর পর্যন্ত বিশ্বের বৃহৎ ও উদ্ধত শক্তিবর্গ মুসলিম জাতির শ্রেষ্ঠত্ব স্বীকার করতে থাকে। মহান আল্লাহরই সমস্ত প্রশংসা। সম্ভাবনা আছে যে, কোনাে ব্যক্তি এ আয়াতে সন্দেহ করতে পারে যে, আয়াত দ্বারা বুঝা যায় কাফেররা পরাজিত হবে, অথচ দুনিয়ার সকল কাফের পরাজিত নয়। এ সন্দেহ এ কারণে করা যাবে না যে, এখানে কাফের দ্বারা দুনিয়ার সকল কাফের উদ্দেশ্য নয়, বরং সে সময়ের মুশরিক ও ইহুদি জাতি উদ্দেশ্য । আর মুশরিকদেরকে সে যুগে গ্রেফতার ও হত্যা এবং ইহুদিদেরকে গ্রেফতার, হত্যা, কর আরােপ ও দেশান্তর করার মাধ্যমে পরাজিত করা হয়েছিল, আর খায়বার বিজয়ের পর সকল ইহুদিদের উপর কর আরােপ করা হয়েছিল।

তাফসীরে ইবনে কাসীর, ডঃ মুজিবুর রহমান অনুবাদ, ৪ খণ্ড, ২৪,২৫,২৬,২৭ পৃষ্ঠায় বর্ণিত হয়েছে, 

সীরাত-ই-ইবনে ইসহাক’ গ্রন্থে রয়েছে, হযরত আমর ইবনে কাতাদাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বদর যুদ্ধে বিজয় লাভের পর যখন মদীনায় প্রত্যাবর্তন করেন তখন তিনি বানু কাইনুকার বাজারে ইয়াহুদীদেরকে একত্রিত করেন এবং তাদেরকে সম্বােধন করে বলেনঃ “হে ইয়াহুদীর দল! কুরাইশদের লাঞ্ছিত ও অপদস্ত হওয়ার ন্যায় তােমরাও লাঞ্ছিত ও পর্যুদস্ত হওয়ার পূর্বে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ কর।' এ কথা শুনে ঐ উদ্ধত ও অবাধ্য দলটি উত্তর দেয়ঃ ‘যুদ্ধবিদ্যায় অনভিজ্ঞ কয়েকজন কুরাইশকে পরাজিত করেই বুঝি আপনি অহংকারে ফেটে পড়েছেন? আমাদের সঙ্গে যুদ্ধ হলে  জানতে পারবেন যুদ্ধ কাকে বলে! এখনও আমাদের সাথে আপনার যুদ্ধ সংঘটিত হয়নিতখন এ আয়াতটি অবতীর্ণ হয়। এতে বলা হয়- মক্কা বিজয়ই এটা প্রমাণ করেছে যে, আল্লাহ তা'আলা তাঁর সত্য, উত্তম ও পছন্দনীয় দ্বীনকে ও ঐ দ্বীনধারীদেরকে সম্মান দানকারী। তিনি তাঁর রাসূলের ও তার অনুসারীদের স্বয়ং সাহায্যকারী'।

দু'টি দল যুদ্ধে পরস্পর সম্মুখীন হয়। একটি সাহাবা-ই-কিরামের দল এবং অপরটি মুশরিক কুরাইশদের দল। এটা বদর যুদ্ধের ঘটনা। সেদিন মুশরিকদের উপর এমন প্রভাব পড়ে (মুসলমানদের) এবং মহান আল্লাহ মুসলমানদেরকে এমনভাবে সাহায্য করেন যে, যদিও মুসলমানেরা সংখ্যায় মুশরিকদের অপেক্ষা বহু কম ছিল, কিন্তু মুশরিকরা বাহ্যিক দৃষ্টিতে মুসলমানদেরকে দ্বিগুণ দেখছিল। যুদ্ধ আরম্ভ হওয়ার পূর্বে মুশরিকরা উমায়ের ইবনে সাদকে গােয়েন্দাগিরির জন্যে প্রেরণ করেছিল। সে এসে সংবাদ দেয় যে, মুসলমানদের সংখা কিছু কম বেশী তিনশ জন। আসলেও তাই ছিল। তাদের সংখ্যা ছিল তিনশ দশ এবং আর কয়েকজন বেশী। কিন্তু যুদ্ধ শুরু হওয়া মাত্রই আল্লাহ তা'আলা তাঁর বিশিষ্ট ও নির্বাচিত এক হাজার ফেরেশতা পাঠিয়ে দেন। একটি অর্থ তো এই। দ্বিতীয় ভাবার্থ এও বর্ণনা করা হয়েছে যে, কাফিরদের সংখ্যা মুসলমানদের দ্বিগুণ ছিল, এটা মুসলমানেরা জানতাে এবং প্রত্যক্ষও করছিল। তথাপি আল্লাহ তা'আলা তাদেরকে সাহায্য করতঃ কাফিরদের উপর জয়যুক্ত করেন। হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) বর্ণনা করেন যে, বদরী সাহাবীরা (রাঃ) ছিলেন তিনশ তেরােজন এবং মুশরিকরা ছিল দু’শ ষােল জন। কিন্তু ইতিহাসের পুস্তকগুলোতে মুশরিকদের ন’শ হতে এক হাজার বর্ণনা করা হয়েছে। তাহলে সম্ভবতঃ হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) কুরআন শরীফের শব্দ দ্বারাই দলীল গ্রহণ করে থাকবেন। বানু হাজ্জাজ গোত্রের একটি কৃষ্ণ বর্ণের ক্রীতদাস যে ধৃত হয়ে এসেছিল, তাকে রাসূলুল্লাহ (সঃ) কুরাইশদের সংখ্যা জিজ্ঞেস করলে সে বলেঃ “অনেক।' তিনি পুনরায় জিজ্ঞেস করেনঃ “তারা দৈনিক কতটি উট যবেহ করছে? সে বলেঃ “একদিন নয়টি এবং আর একদিন দশটি। তখন রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেনঃ “তাহলে মুশরিকদের সংখ্যা নয়শ এবং এক হাজারের মধ্যবর্তীসুতরাং জানা যাচ্ছে যে, মুশরিকরা মুসলমানদের তিনগুণ ছিল। কিন্তু এটা স্মরণ রাখবার বিষয় যে, আরববাসী বলে থাকে, 'আমার নিকট এক হাজার তাে রয়েছে কিন্তু আমার আরও এর দ্বিগুণ প্রয়ােজন এবং তার তিন হাজারের উদ্দেশ্য হয়ে থাকে। তাহলে কোন অসুবিধা থাকলো না কিন্তু প্রশ্ন আরও একটি রয়েছে, তা এই যে কুরআন কারীমের মধ্যে অন্য জায়গায় রয়েছে, অর্থাৎ যখন তোমরা মুখোমুখি হয়ে গেলে তখন আল্লাহ তাদেরকে তোমাদের চোখে কম দেখালেন যেন আল্লাহ যা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তা হয়ে যায় (৮ঃ৪৪)। সুতরাং এ পবিত্র আয়াতের দ্বারা বুঝা যাচ্ছে যে, প্রকৃত সংখ্যার চেয়েও অল্প পরিলক্ষিত হয়। আর উপরােক্ত আয়াত দ্বারা জানা যাচ্ছে যে, বেশী এমন কি দ্বিগুণ পরিলক্ষিত হয়। তাহলে আয়াতদ্বয়ের মধ্যে সামঞ্জস্য কিরুপে হতে পারে? উওর এই যে, এ আয়াতে অবস্থা ছিল এক কম এবং এ আয়াতে অবস্থা ছিল অন্য রকম। হযরত ইবনে মাসউদ (রাঃ) বলেনঃ 'বদরের দিন মুশরিকদের সংখ্যা আমাদের চোখে মােটেই বেশী দেখায়নি। আমরা আবার গভীরভাবে দৃষ্টিপাত করেও বুঝতে পারি যে, তাদের সংখ্যা আমাদের অপেক্ষা বেশী নয়।' 

অন্য বর্ণনায় রয়েছে, হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেনঃ ‘মুশরিকদের সংখ্যা আমাদের নিকট এত অল্প মনে হলাে যে, আমি আমার পাশ্ববর্তী একজনকে বললাম-এরা সত্তরজন হবে। ঐ লােকটি তখন বললােঃ না না,একশজন হবে। তাদের একজন লােক ধৃত হলে আমরা তাকে মুশরিকদের সংখ্যা জিজ্ঞেস করি। সে বলেঃ “এক হাজার।' অতঃপর যখন উভয় পক্ষ সারিবদ্ধভাবে মুখােমুখি দাঁড়িয়ে যায় তখন মুসলমাদের মনে হয় যে, মুশরিকরা তাদের দ্বিগুণ হবে। এটা এ জন্যই যে, যেন তারা নিজেদের দুর্বলতার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করতঃ মহান আল্লাহর উপর ভরসা করে, সমস্ত মনােযােগ তারই দিকে ফিরিয়ে দেয় এবং তারই নিকট সাহায্যের জন্য প্রার্থনা জানায়। অনুরূপভাবে মুশরিকদের নিকটও মুসলমানদের সংখ্যা তাদের দ্বিগুণ অনুভূত হয়, যেন তাদের অন্তরে ভয় ও সন্ত্রাসের সৃষ্টি হয় এবং তারা হতবুদ্ধি হয়ে পড়ে। 'অতঃপর যখন যুদ্ধ আরম্ভ হয়ে যায় তখন প্রত্যেক দলের দৃষ্টিতে নিজেদের তুলনায় অন্য দলের সংখ্যা কম পরিলক্ষিত হয় যেন উভয় দলই উদ্যমের সাথে যুদ্ধ করে এবং আল্লাহ তা'আলা সত্য ও মিথ্যার স্পষ্ট মীমাংসা করে দেন। যেন কুফর ও ঔদ্ধত্যের উপর ঈমানের বিজয় লাভ ঘটে এবং যেন মুসলমানেরা সম্মানিত হয় এবং কাফিরেরা লাঞ্ছিত ও অপমানিত হয়। যেমন অন্য জায়গায় রয়েছেঃ

অর্থাৎ আল্লাহ বদরের দিন তােমাদেরকে সাহায্য করেছিলেন, অথচ তােমরা সে সময় দুর্বল ছিলে।' (৩ঃ ১২৩) এ জন্যেই এখানেও বলেছেন- 'আল্লাহ যাকে ইচ্ছে করেন তদীয় সাহায্যদানে শক্তিশালী করে থাকেন। অতঃপর আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ “নিশ্চয়ই এর মধ্যে চক্ষুষ্মনদের জন্যে শিক্ষা ও উপদেশ রয়েছে।' অর্থাৎ যারা স্থির মস্তিষ্ক বিশিষ্ট তারা আল্লাহ তা'আলার আদেশ পালনে উঠেপড়ে লেগে যাবে এবং বুঝে নেবে যে, আল্লাহ পাক তাঁর মনােনীত বান্দাদেরকে এ ইহলৌকিক জগতেও সাহায্য করবেন এবং কিয়ামতের দিনও। তাদেরকে জাহান্নামের কঠিন শাস্তি হতে রক্ষা করবেন।

সততার সাথে একটু চিন্তা করুন তোঃ

নবীজি (সা) এর উপর যখন আয়াতটি অবতীর্ণ হয় সেই মুহূর্তটি একটু কল্পনা করবার চেষ্টা করুন। নবী মোহাম্মদ (সা) যখন ইহুদীদের সামনে গিয়ে সবাইকে ইসলাম গ্রহণের দাওয়াত দেয় তখন ইহুদীরা অহংকার করে উনাকে হুমকি দিতে থাকে ঠিক সেই মুহূর্তে কুরআনের উক্ত আয়াত গুলো অবতীর্ণ হয়। নবীজি (সা) কিভাবে এটা নিশ্চিতভাবে জেনেছিলেন যে সামনের যুদ্ধ গুলোতে উনি বিজয় লাভ করবেন? যখন এই আয়াত অবতীর্ণ হয় তখন মুসলিমরা ক্ষমতায় ছিল খুবই অসহায়-দুর্বল। তাই এই কথা বলার সুযোগ নেই যে মুসলিমরা ক্ষমতাশীল ছিল দেখে নবী মোহাম্মদ (সা) নিজে বানিয়ে বলে ফেলেছেন আর কাকতালীয়ভাবে মিলে গেছে। 

শুধু কি তাই? যুদ্ধের মুহূর্তে মুসলিম মুক্তিযোদ্ধাদের সংখ্যা কম ছিল আর কাফেরদের সংখ্যা ছিল বেশি এরপরেও কাফেররা মুসলিমদেরকে সংখ্যায় বেশি দেখেছিল। অন্যদিকে মুসলিমরা কাফেরদের সংখ্যা দেখছিল কম অথচ কাফেররা ছিল সংখ্যায় বেশি। কুরআনের এই মোজেজাকে কিভাবে খণ্ডন করবে ইসলামবিদ্বেষীগোষ্ঠী? এক মূর্খ নাস্তিক যুক্তিযুক্ত জবাব দিতে না পেরে অভিযোগ করেছে যে সেই আয়াত গুলোতে নাকি আল্লাহ মিথ্যা বলেছেন। কেমন বুদ্ধিহীন হলে এমন কথা বলতে পারে ভাবতে পারেন? 

অলৌকিক ঘটনা কাকে বলে? আর মিথ্যা কথা কাকে বলে? এর পার্থক্যই জানা নেই সেই নাস্তিকটির। আরও বড় প্রশ্ন হচ্ছে নবী মোহাম্মদ (সা) ছিলেন না জাদুকর, ছিলেন না জ্যোতির্বিদ। কেউ যদি দাবি করে নবী মোহাম্মদ (সা) জাদুবিদ্যা ও জ্যোতির্বিদ্যার সাহায্য নিয়ে ভবিষ্যৎবাণী করেছেন সে যেন অবশ্যই প্রমাণ পেশ করে। নবী মোহাম্মদ (সা) জীবনে কখনো জাদুবিদ্যার ও জ্যোতির্বিদ্যার চর্চা করতেন এরকম কোনো প্রমাণ নেই। তাহলে উনি কিভাবে পারলেন এরকম সত্য ভবিষ্যৎবাণী করতে? এমনকি যুদ্ধের ময়দানে যে অলৌকিক সিচুয়েশন তৈরি হয়েছে সেটাই বা উনি কিভাবে করলেন? এতো বড় একটি ঘটনাকে কাকতালীয় বলা যায় কিভাবে?

নবী মোহাম্মদ (সা) যদি খারাপ মানুষ হতেন অথবা ফেইক নবী হতেন যেমনটা ইসলামবিদ্বেষী গোষ্ঠীরা উনাকে নিয়ে অন্ধবিশ্বাস করে থাকে তাহলে তো উনি এতো কম লোক নিয়ে যুদ্ধেই যেতেন না বরং এমন এমন নতুন নিয়ম বানাতেন যে কাফেররা উনার উপর খুশি হয়ে যেতো। কাফেরদেরকে খুশি করতে পারলে উনি নিজের সকল স্বার্থ সহজেই হাসিল করতে পারতেন কিন্তু উনি এরকম কিছুই করেননি বরং সত্যকে অবিশ্বাস করার ফলে ইসলামবিদ্বেষীগোষ্ঠীরা যে পরাজয় বরণ করবে সেটাই কুরআনে আল্লাহ জানিয়ে দিয়েছেন এবং সেটাই সত্য বলে প্রমাণিত হয়েছে। নবী মোহাম্মদ (সা) সত্যিই আল্লাহর পক্ষ থেকে নবী ছিলেন কথাটিতে কোনো সংশয় নেই। আপনাকে অবশ্যই সাহসের সাথে ভেবে দেখতে হবে।

আরেকটি মজার ব্যাপার হচ্ছে কুরআনের সেই আয়াতে পরিস্কার করে বলে দেয়া হয়েছে যে এই আয়াতে চক্ষুমানদের জন্য উপদেশ রয়েছে অর্থাৎ এই মোজেজা দেখে তারাই ইসলামকে মেনে নিবে যাদের অন্তর চক্ষু খোলা। যারা এমন পরিস্কার সত্য দেখেও ইসলামকে সত্য বলে স্বীকার করতে চাইবে না সেসব অন্ধরা মিথ্যাতেই ডুবে থাকবে। আমরা যারা সত্যবাদী আছি মনে প্রাণে সাক্ষ্য দিতেই থাকবো। এক আল্লাহ ব্যতীত আর কোনো মাবুদ নাই, তিনি এক ও একক, তাঁর কোনো শরিক বা অংশীদার নাই; আমি আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি নিশ্চয়ই হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আল্লাহ তায়ালার অতি প্রিয় খাস বান্দা ও তাঁর প্রেরিত রাসুল।’

আরও ভবিষ্যৎবাণীর সত্যতাঃ

আল কুরআন, সুরা কামার ৫৪ঃ৪৩ থেকে ৪৫ আয়াতে বর্ণিত হয়েছে,

তােমরা মক্কার কাফিররা কি তাদের নূহ, সালিহ, পূত প্রমুখের কওম থেকে ভাল? না কি তােমাদের জন্য মুক্তির কোনাে ঘােষণা রয়েছে আসমানি কিতাবসমূহে? না কি তারা বলে, “আমরা সংঘবদ্ধ বিজয়ী দল’? হে মুহাম্মদ তাদের সংঘবদ্ধ দলটি শীঘ্রই পরাজিত হবে এবং পিঠ দেখিয়ে পালাবে

সহিহ বুখারী, হাদিসঃ ৪৮৭৫, সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,

ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃরসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বদর যুদ্ধের দিন একটি ছোট্ট তাঁবুতে অবস্থান করে এ দু‘আ করেছিলেন- হে আল্লাহ্! আমি তোমার নিকট তোমার ওয়াদা ও অঙ্গীকার বাস্তবায়ন কামনা করছি! হে আল্লাহ্! তুমি যদি চাও, আজকের দিনের পর তোমার ‘ইবাদাত না কর হোক....ঠিক এ সময়ই আবূ বাক্র সিদ্দীক (রাঃ) তাঁর হস্ত ধারণ পূর্বক বললেন, হে আল্লাহ্‌র রসূল! যথেষ্ট হয়েছে। আপনি আপনার প্রতিপালকের নিকট অনুনয়-বিনয়ের সঙ্গে বহু দু‘আ করেছেন। এ সময় রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বর্ম পরিহিত অবস্থায় উঠে দাঁড়ালেন। তাই তিনি আয়াত দু’টো পড়তে পড়তে তাঁবু থেকে বেরিয়ে এলেন, “এ দল তো শীঘ্রই পরাজিত হবে এবং পৃষ্ঠ পৃদর্শন করবে (সূরাহ আল-কামার ৫৪/৫১)।-ihadis.com

সহিহ বুখারী, হাদিসঃ ৪৮৭৭, সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,

ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃতিনি বলেন, বদর যুদ্ধের দিন নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছোট্ট একটি তাঁবুতে অবস্থান করে এ দু‘আ করছিলেন, আয় আল্লাহ্! আমি তোমার কাছে তোমার ওয়াদা ও অঙ্গীকার পূরণ কামনা করছি। হে আল্লাহ্! যদি তুমি চাও, আজকের পর আর কখনো তোমার ‘ইবাদাত না করা হোক.....। ঠিক এ সময় আবূ বাক্র (রাঃ) রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর হাত ধরে বললেন, হে আল্লাহ্‌র রসূল! যথেষ্ট হয়েছে। আপনি আপনার প্রতিপালকের কাছে অনুনয়-বিনয়ের সঙ্গে বহু দু‘আ করেছেন। এ সময় তিনি লৌহবর্ম পরে ছিলেন। এরপর তিনি এ আয়াত পড়তে পড়তে তাঁবু থেকে বের হয়ে এলেন, একদল তো শীঘ্রই পরাজিত হবে এবং পৃষ্ঠপ্রদর্শন করবে। অধিকন্তু ক্বিয়ামাত তাদের শাস্তির নির্ধারিত কাল এবং ক্বিয়ামাত হবে কঠিনতর ও তিক্ততর”। (সূরাহ আল-কামার ৫৪/৪৫-৪৬)

তাফসীরে জালালাইন,৬ খণ্ড,৩১২ পৃষ্ঠায় বর্ণিত হয়েছে,

এতে হযরত রাসূলে কারীম - -এর প্রতি সান্ত্বনা রয়েছে এ মর্মে যে, মক্কার কাফেররা যত | দৌরাত্ম্যই প্রদর্শন করুক না কেন, অচিরেই তাদেরকে পরাজয়ের গ্লানি ভােগ করতে হবে। তারা পরাজিত হয়ে রণাঙ্গন থেকে পৃষ্ঠ-প্রদর্শন করে পালিয়ে যাবে, তখন তাদের প্রকৃত অবস্থা তারা দেখতে পাবে। দ্বিতীয় হিজরিতে অনুষ্ঠিত বদরের যুদ্ধে এবং পঞ্চম হিজরিতে অনুষ্ঠিত খন্দকের যুদ্ধে পবিত্র কুরআনের এ ভবিষ্যদ্বাণী বাস্তবে রূপায়িত হয়েছিল।-তাফসীরে আল বাহরুল মুহীত খ. ৮, পৃ. ১৮৩।

জামে আত তিরমিজি, হাদিসঃ ৩০৮১, হাসান হাদিস থেকে বর্ণিত,

উমার ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, (বদর যুদ্ধের দিন) মুশরিকদের উপর নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম দৃষ্টিপাত করলেন। তারা (সংখ্যায়) ছিল এক হাজার। আর তাঁর সাথীরা ছিলেন তিন শত দশজনের কিছু বেশি। আল্লাহর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ক্বিবলার দিকে মুখ করে দুই হাত তুলে তাঁর প্রভুর নিকট দু’আ করতে লাগলেন : “হে আল্লাহ! তুমি আমার সাথে যে ওয়া’দাহ করেছিলে তা পূর্ণ কর। হে আল্লাহ! তুমি আমাকে তা দান কর যার ওয়া’দাহ তুমি করেছ। হে আল্লাহ! যদি কতিপয় মুসলিমের এ ক্ষুদ্র দলটি ধ্বংস করে দাও তাহলে যমিনে তোমার ‘ইবাদাত অনুষ্ঠিত হবে না”। রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ক্বিবলামুখী হয়ে দুই হাত তুলে এমনভাবে তাঁর প্রভুর নিকট ফারিয়াদ করেন, তাঁর উভয় কাঁধ হতে তাঁর চাদর গড়িয়ে পড়ে গেল। তখন আবূ বকর (রাঃ) তাঁর কাছে এসে চাদরটি উঠিয়ে তাঁর কাঁধে তুলে দিলেন এবং তাঁর পেছন দিক হতে তাঁকে চেপে ধরে বললেন, হে আল্লাহর নাবী! আপনার প্রভুর সমীপে আপনার যথেষ্ট পরিমাণ ফরিয়াদ করা হয়েছে। আপনার সাথে আল্লাহ তা’আলা যে ওয়া’দাহ্‌ করেছেন তা অবশ্যই তিনি পূর্ণ করবেন। এ প্রসঙ্গে বারাকাত্ময় আল্লাহ তা’আলা নিম্মোক্ত আয়াত অবতীর্ণ করেন (অনুবাদ) : “স্মরণ কর যখন তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের নিকট সাহায্য প্রার্থনা করছিলে তখন তিনি তোমাদের ডাকে সাড়া দিলেন, আমি তোমাদেরকে পর্যায়ক্রমে এক হাজার ফেরেশতা দ্বারা সাহায্য করব” (সূরা আল-আনফাল ৯)। অতএব আল্লাহ তা’আলা ফেরেশতাদের পাঠিয়ে তাদেরকে সাহায্য করেন।-ihadis.com

কাফেররা এতো শক্তিশালী ছিল যে নবী মোহাম্মদ (সা) পর্যন্ত নার্ভাস হয়ে গিয়েছিল। সেই মুহূর্তটি একবার নিজে কল্পনা করুন। নিজেকে সেই সিচুয়েশনে ভাবুন। নবীজি (সা) পরবর্তীতে আল্লাহর কাছে দোয়া করেন এবং আল্লাহ উনাকে সাহায্যও করেন। আগেই জানিয়ে দেন যুদ্ধে যে মুসলিমরা বিজয় লাভ করবে। পাঠক নিজেকে প্রশ্ন করুন আরবের মরুভূমিতে বসবাস করা শক্তিহীন একটি দল বাহ্যিকভাবে যাদের যুদ্ধে বিজয়ের কোনো সম্ভাবনাই নেই ঠিক সেই মুহূর্তে দুর্বল দল অর্থাৎ মুসলিমরা বিজয় লাভ করবে এটা নিশ্চিত করে জানিয়ে দেয়া কার পক্ষে সম্ভব হতে পারে? আল্লাহ।

কুরআন নাকি প্রাচীন বই থেকে কপি করে নবী মোহাম্মদ (সা) লিখেছেন-কথাটি যে ডাহামিথ্যে তার প্রমাণ এই ভবিষ্যৎবাণীর সত্যতা গুলো। নবী মোহাম্মদ (সা) যদি আসলেই কুরআন কপি করে লিখতেন তাহলে এমন ভবিষ্যৎবাণী কুরআনে থাকা তো দূরে থাক একটাও সত্য প্রমাণ হতো না।

এগুলো সবই কাকতালীয়?

নবী মোহাম্মদ (সা) বদদোয়ার সত্যতাঃ

মন দিয়ে নিচের ঘটনা গুলো পাঠ করুন।

সহিহ বুখারী, হাদিসঃ ৩১৮৫, সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,

‘আবদুল্লাহ্‌ ইব্‌নু মাস’ঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃতিনি বলেন, একদা আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাজদাহরত ছিলেন, তাঁর আশে-পাশে কুরাইশ মুশরিকদের কিছু লোক ছিল। এ সময় ‘উকবাহ ইব্‌নু আবূ মুআইত উটনীর ভুঁড়ি এনে নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর পিঠে ফেলে দেয়ফলে তিনি তাঁর মাথা উঠাতে পারলেন না। অবশেষে ফাতিমাহ (রাঃ) এসে তাঁর পিঠ হতে তা সরিয়ে দেন আর যে ব্যক্তি এ কাজ করেছে তার বিরুদ্ধে বদদু’আ করেন। অতঃপর আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, হে আল্লাহ্‌! কুরাইশদের এ দলের বিচার আপনার উপর ন্যস্ত করলাম। হে আল্লাহ্‌! আপনি শাস্তি দিন  আবূ জাহ্‌ল ইব্‌নু হিশাম, উত্‌বাহ ইব্‌নু রাবী’আহ, শায়বাহ ইব্‌নু রাবী’আহ,উকবাহ ইব্‌নু আবূ মুআইত ও উমাইয়াহ ইব্‌নু খালফ (অথবা রাবী বলেছেন), উবাই ইব্‌নু খালফকে। ইব্‌নু মাস’ঊদ (রাঃ) বলেন, আমি দেখেছি, তারা সবাই বদর যুদ্ধে নিহত হয়। তাদের সবাইকে কূপে নিক্ষেপ করা হয়, উমাইয়াহ অথবা উবাই ছাড়া। কেননা, সে ছিল মোটা দেহের। যখন তার লাশ টানা হচ্ছিল, তখন কূপে নিক্ষেপ করার পূর্বেই তার জোড়াগুলি বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।-ihadis.com

সহিহ বুখারী, হাদিসঃ ৩৮৫৪, সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,

আবদুল্লাহ ইব্‌নু মাস’উদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃতিনি বলেন, একবার নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাজদাহ করলেন। তাঁর আশেপাশে কয়েকজন কুরাইশ লোক বসেছিল এমন সময় উকবা ইব্‌নু আবূ মুয়াইত উটের নাড়িভূঁড়ি নিয়ে উপস্থিত হল এবং নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম- এর পিঠের উপর চাপিয়ে দিলফলে তিনি তাঁর মাথা উঠাতে পারলেন না। ফাতিমাহ (রাঃ) এসে তাঁর পিঠের উপর হতে তা হটিয়ে দিলেন এবং যে এ কাজটি করেছে তার জন্য বদ দূ’আ করলেন। এরপর নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, হে আল্লাহ্‌! পাকড়াও কর কুরাইশ নেতৃবৃন্দকে - আবূ জাহাল ইব্‌নু হিশাম, ‘উৎবা ইবনু রাবি’য়াহ, শায়বাহ ইব্‌নু রাবি’য়াহ, উমাইয়াহ ইব্‌নু খালফ অথবা উবাই ইব্‌নু খালাফ। উমাইয়াহ ইব্‌নু খালফ না উবাই ইব্‌নু খালফ এ বিষয়ে শু’বা রাবী সন্দেহ করেন। ইব্‌নু মাসউদ (রাঃ বলেন, আমি এদের সবাইকে বদর যুদ্ধে নিহত অবস্থায় দেখেছি। উমাইয়া অথবা উবাই ছাড়া তাদের সকলকে সে দিন একটি কূপে ফেলা হয়েছিল। তার জোড়গুলি এমনভাবে ছিন্নভিন্ন হয়েছিল যে তাকে কূপে ফেলা যায়নি।-ihadis.com

সন্ত্রাসী কাফেররা নিজেদের মুক্তচিন্তায় নবী মোহাম্মদ (সা)কে অনেক অত্যাচার নির্যাতন করতো। যারা ইসলাম গ্রহণ করতো অথবা ইসলামের দাওয়াত প্রদান করতো সবাইকেই সেই কাফেররা বিভিন্নভাবে অত্যাচার করে থাকতো। হ্যাঁ, মুক্তচিন্তা এগুলোর বৈধতা প্রদান করে। এখানে অবাক করার মতো কথা হচ্ছে নবী মোহাম্মদ (সা) যাদের বিরুদ্ধে দোয়া করেছিলেন প্রায় সকলেই যুদ্ধে নিহত হয়েছিল। প্রশ্ন হচ্ছে কিভাবে? এটা কি চিন্তার করার মতো বিষয় নয় যে উনি যেসব অপরাধীদের নাম ধরে ধরে বদদোয়া করেছিলেন সকলেই নিহত হয়েছে? নবী মোহাম্মদ (সা) যদি মিথ্যুক নবী হতেনই তাহলে কাফেরদের বিরুদ্ধে যাবার প্রশ্নই আসে না উল্টো কাফেরদেরকে খুশি করে নিজের স্বার্থ সহজেই হাসিল করা যেতো কিন্তু উনি এরকম কিছুই করেন নাই বরণ যা সত্য সেটাই বলেছেন এমনকি সেটা সকলের বিরুদ্ধে গেলেও। আর কত প্রমাণ পেলে আপনি সত্যকে গ্রহণ করতে পারবেন?

উপসংহারঃ  সত্যকে জানতে পারা আপনার অধিকার। এই অধিকার আপনি গ্রহণ করবেন কি করবেন না সেটা আপনার ইচ্ছা। ইসলামবিদ্বেষীগোষ্ঠীর মিথ্যাচার গুলোতে অন্ধবিশ্বাস করে আপনি সত্যকে সামনে দেখেও যদি গ্রহণ করতে না চান সেটাও আপনার ব্যাপার। আমি শুধু আপনাকে নাস্তিকতার বন্দিত্ব থেকে মুক্তির উপায় বাতলিয়ে দিলাম মাত্র।

কুরআনের একটি আয়াত পড়তে দিয়ে আজকের মতো এখানেই সমাপ্ত করছি।

আল কুরআন,সুরা ইউনুস,১০ঃ১০৮ আয়াত থেকে বর্ণিত,

বলে দাও, হে মানবকুল, সত্য তোমাদের কাছে পৌঁছে গেছে তোমাদের পরওয়ারদেগারের তরফ থেকেএমন যে কেউ পথে আসে সেপথ প্রাপ্ত হয় স্বীয় মঙ্গলের জন্যআর যে বিভ্রান্ত ঘুরতে থাকে, সে স্বীয় অমঙ্গলের জন্য বিভ্রান্ত অবস্থায় ঘুরতে থাকবে। অনন্তর আমি তোমাদের উপর অধিকারী নই


প্রাসঙ্গিক লেখা গুলোও পড়ুনঃ

ইরামের খবর কুরআনে কিভাবে?

কুরআনে আবু লাহাবকে গালাগালি করা হয়েছে?

কুরআনের ভবিষ্যৎবানীর নিশ্চিত সত্যতা

বক্ষ সংকুচিত ও কুরআনের মোজেজা

মেঘের ওজন ও কুরআনের সত্যতা



এমডি আলী

যিনি একজন লেখক, বিতার্কিক ও গবেষক। বিভিন্ন ধর্ম ও মতবাদ বিষয় পড়াশোনা করেন। ইসলামের সত্যতা মানুষের কাছে ছড়িয়ে দিতে চান। “সত্যের অনুভূতি” উনার লেখা প্রথম বই। “ফ্যান্টাস্টিক হামজা” দ্বিতীয় বই। জবাব দেবার পাশাপাশি নাস্তিক মুক্তমনাদের যৌক্তিক সমালোচনা করে থাকেন।

Previous Post Next Post