বিষয়ঃ ইসলামে রাষ্ট্রনীতি
লিখেছেনঃ এমডি আলী
======================
ভূমিকাঃ ইসলামে রাষ্ট্রনীতি যেমন হয় অনেকেই সঠিকভাবে বুঝতে পারেন না। এই সুযোগে ইসলামের দুশমনরা ইসলামে রাষ্ট্রনীতিকে ভুল ভাবে মানুষের সামনে তুলে ধরে ইসলাম বিদ্বেষ ছড়ায়। ইসলামিক রাষ্ট্র মানুষের জন্য কল্যাণকামী। লেখাটির উদ্দেশ্য হচ্ছে ইসলামবিদ্বেষীরা ইসলামের রাষ্ট্রনীতিকে যেভাবে খারাপভাবে তুলে ধরে তার অসারতা তুলে ধরে বিশুদ্ধ ইসলামিক রাষ্ট্রনীতি কেমন হবে তা বর্ণনা করা।
খলিফা কেমন হবে?
খলিফা নির্বাচন করতে হবে এমন যে হবে ভালো শাসক। ন্যায়পরায়ণ শাসক। যিনি নিজের শাসন কর্ম সততার সাথে পরিচালনা করবে।
সহিহ মুসলিম, হাদিসঃ ৪৬০৭, সহিহ হাদিস থেকে থেকে বর্ণিত,
ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, আমার পিতা যখন আহত হলেন তখন আমি তাঁর কাছে গিয়ে উপস্থিত হই। লোকজন তাঁর প্রশংসা করল তারপর বলল, আল্লাহ আপনাকে উত্তম প্রতিদান দিন! তিনি তখন বললেন, আমি আশাবাদী ও শঙ্কিত। তখন লোকেরা বললো, আপনি কাউকে খলীফা মনোনীত করে যান। তখন তিনি বললেন, আমি কি জীবিত ও মৃত উভয় অবস্থায়ই তোমাদের বোঝা বহন করব? আমার আকাঙ্খা খিলাফাতের ব্যাপারে আমার ভাগ্যে শুধু নিষ্কৃতি লাভ হোক। আমার উপর কোন অভিযোগও অর্পিত না হোক, আর আমি লাভবানও না হই। আমি যদি কাউকে খলীফা মনোনীত করি (তবে তার দৃষ্টান্ত) আমার চেয়ে যিনি উত্তম ছিলেন তিনি [অর্থাৎ- আবূ বকর (রাঃ)] খলীফা মনোনীত করে গেছেন, আর যদি আমি তোমাদের (খলীফা মনোনীত করা ছাড়াই) ছেড়ে যাই, তবে আমাদের উত্তম যিনি ছিলেন (অর্থাৎ- রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার (নীতির) উপরেই তোমাদের রেখে গেছেন।- ihadis.com
সহিহ মুসলিম, হাদিসঃ ৪৬১৮, সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,
নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, তোমাদের প্রত্যেকেই এক একজন দায়িত্ববান এবং প্রত্যেকেই তার অধীনস্থদের সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে। ‘আমীর বা নেতা তার অধীনস্থ লোকদের উপর দায়িত্ববান এবং সে তাদের সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে। প্রত্যেক ব্যক্তি তার পরিবারের লোকদের উপর দায়িত্বশীল, সে তা সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে। স্ত্রী স্বীয় স্বামীর বাড়ী ও সন্তানের উপর দায়িত্ববান, সে সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে। গোলাম তার মুনিবের মাল-সম্পদের উপর দায়িত্ববান, সে সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে। ওহে! তোমাদের প্রত্যেকেই (স্ব-স্ব স্থানে) একজন দায়িত্ববান এবং তোমাদের প্রত্যেকেই তার অধীনস্থদের সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে।-ihadis.com
সহিহ মুসলিম,হাদিসঃ ৪৬২৩, সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,
হাসান (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, ‘উবাইদুল্লাহ ইবনু যিয়াদ মা’কিল ইবনু ইয়াসারকে দেখতে যান যে অসুখে পরবর্তীতে তিনি মারা যান। মা’কিল তাঁকে বলেনঃ আমি তোমার কাছে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট থেকে আমার শ্রুত হাদীস বর্ণনা করবো। যদি আমি জানতাম যে, আমার আরও আয়ু আছে তবে আমি তোমার কাছে তা বর্ণনা করতাম না। আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি, যে বান্দাকে আল্লাহ প্রজা সাধারণের উপর দায়িত্বশীল করেন অথচ সে যখন মারা যায় তখনও সে তার প্রজা সাধারণের প্রতি প্রতারণাকারী থাকে তবে তার জন্য আল্লাহ জান্নাত হারাম করে দেন।-ihadis.com
সুনানে আন নাসায়ী, হাদিসঃ ৫৩৮০,সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ্ তা’আলা কিয়ামতের দিন সাত ব্যক্তিকে তাঁর ছায়ায় স্থান দান করবেন, যে দিন আল্লাহর ছায়া ব্যতীত আর কোন ছায়া থাকবে না। সুবিচারক শাসক; ঐ যুবক যে আল্লাহ্ তা’আলার ইবাদতে বর্ধিত হয়েছে; ঐ ব্যক্তি যে নিভৃতে আল্লাহকে স্মরন করে অশ্রু বিসর্জন করে; ঐ ব্যক্তি, যার অন্তর মসজিদের সাথে লেগে থাকে; ঐ দুই ব্যক্তি, যারা আল্লাহর জন্য একে অন্যকে ভালবাসে; ঐ ব্যক্তি, যাকে কোন সম্ভ্রান্ত রূপসী নারী নিজের দিকে ডাকে আর সে বলে, আমি আল্লাহ্ তা’আলাকে ভয় করি; আর ঐ ব্যক্তি, যে সাদকা করে এমন গোপনে যে, তার বাম হাত জানে না তার ডান হাত কি করছে।-ihadis.com
ক্ষমতার লোভ না করাঃ
সহিহ মুসলিম,হাদিসঃ ৪৬০৯, হাদিস সহিহ থেকে বর্ণিত,
‘আবদুর রহমান ইবনু সামুরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে লক্ষ্য করে বললেন, হে ‘আবদুর রহমান! তুমি শাসন ক্ষমতা চাইবে না। কারণ যদি চাওয়ার মাধ্যমে তা পাও, তবে তার দয়িত্ব তোমার উপর ন্যস্ত হবে। আর যদি তুমি চাওয়া ছাড়া তা পেয়ে যাও, তবে এ ব্যাপারে তুমি (আল্লাহর তরফ থেকে) সাহায্যপ্রাপ্ত হবে।-ihadis.com
সহিহ মুসলিম, হাদিসঃ ৪৬১১, সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,
আবূ মূসা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, (একদা) আমি এবং আমার দু’চাচাত ভাই নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট উপস্থিত হলাম। দু’জনের একজন বলল, হে আল্লাহ্র রসূল! মহান আল্লাহ আপনাকে যে সমস্ত রাজ্যের কর্তৃত্ব প্রদান করেছেন তার কতক অংশে আমাদেরকে প্রশাসক নিযুক্ত করুন। অপরজনও অনুরূপ বলল। তখন তিনি বললেনঃ আল্লাহর কসম! আমরা এমন কাউকে নেতৃত্বে বসাই না, যে সেটির জন্য প্রার্থী হয় এবং যে তার জন্য লালায়িত হয়।-ihadis.com
সহিহ মুসলিম, হাদিসঃ ৪৬১৩, সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,
আবূ যার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, আমি আবেদন করলাম, হে আল্লাহ্র রসূল! আপনি কি আমাকে প্রশাসক পদে প্রদান করবেন? রাবী বলেন, তিনি তখন তাঁর হাত দিয়ে আমার কাঁধে আঘাত করে বললেনঃ হে আবূ যার! তুমি দুর্বল অথচ এটি হচ্ছে একটি আমানাত। আর কিয়ামাতের দিন এ হবে লাঞ্ছনা ও অনুশোচনা। তবে যে এর হক সম্পূর্ণ আদায় করবে তার কথা ভিন্ন।-ihadis.com
সুনানে আবু দাউদ, হাদিসঃ ৩৫৭৯, সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,
নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ আমরা কখনো আমাদের কোন দায়িত্বপূর্ণ পদে এমন ব্যক্তিকে নিয়োগ করবো না যে উক্ত পদের জন্য লালায়িত হয়।-ihadis.com
রাষ্ট্রে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত করাঃ
সহিহ মুসলিম, হাদিসঃ ৪৬১৫, সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: ন্যায় বিচারকগণ (কিয়ামাতের দিন) আল্লাহর নিকটে নূরের মিম্বারসমূহে মহামহিম দয়াময় প্রভুর ডানপার্শ্বে উপবিষ্ট থাকবেন। তাঁর উভয় হাতই ডান হাত (অর্থাৎ- সমান মহিয়ান)। যারা তাদের শাসনকার্যে তাদের পরিবারের লোকদের ব্যাপারে এবং তাদের উপর ন্যস্ত দায়িত্বসমূহের ব্যাপারে সুবিচার করে।-ihadis.com
সহিহ মুসলিম, হাদিসঃ ৪৬১৬, সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,
‘আবদুর রহমান ইবনু শুমাসাহ্ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃতিনি বলেন, আমি একদা ‘আয়িশা (রাঃ)-এর নিকট কোন এক ব্যাপারে প্রশ্ন করার জন্য গেলাম। তখন তিনি জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কোথাকার লোক? আমি জবাব দিলাম, আমি একজন মিসরবাসী। তখন তিনি আবার জিজ্ঞেস করলেন তোমাদর সে গৃহযুদ্ধকালীন গভর্নর (মুহাম্মাদ ইবনু আবূ বকর) কেমন লোক ছিলেন? রাবী বলেন, আমরা তো তার নিকট থেকে অন্যায়মূলক কিছু পাইনি। যদি আমাদের কোন ব্যক্তির উট মারা যেতো তিনি তাকে উট দিতেন। গোলাম মারা গেলে গোলাম দিতেন, কারো জীবিকার প্রয়োজন হলে তিনি তাকে তা প্রদান করতেন। তখন তিনি বললেন, আমার সহোদর মুহাম্মাদ ইবনু আবূ বকরের সাথে যে দুর্ব্যবহার করা হয়েছে, তা রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে আমার এ ঘরে যা বলতে শুনেছি তা তোমাকে অবহিত করা থেকে আমাকে বিরত রাখতে পারছি না। (তিনি বলেছিলেন) হে আল্লাহ! যে আমার উম্মাতের কোনরূপ কর্তৃত্বভার লাভ করে এবং তাদের প্রতি রূঢ় আচরণ করে তুমি তার প্রতি রূঢ় হও, আর যে আমার উম্মাতের উপর কোনরূপ কর্তৃত্ব লাভ ক’রে তাদের প্রতি নম্র আচরণ করে তুমি তার প্রতি নম্র ও সদয় হও।-ihadis.com
সহিহ মুসলিম, হাদিসঃ ৪৬৬৬, সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,
নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইমাম বা শাসক ঢাল সরূপ। তার নেতৃত্বে যুদ্ধ করা হয় এবং শত্রুর ক্ষতি থেকে নিষ্কৃতি পাওয়া যায়। সে যদি তাকওয়া বা আল্লাহভীতি ও ন্যায় বিচারের ভিত্তিতে শাসনকার্য পরিচালনা করে, তবে তার জন্য সে পুরস্কার হবে। আর যদি ন্যায় ব্যতীত অন্য কিছু আদেশ করে তবে সে পাপের জন্য দায়ী হবে।-ihadis.com
সুনানে আন নাসায়ী, হাদিসঃ ৫৩৮১, সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ যখন কোন শাসক তার আদেশ জারি করে ইনসাফের সাথে এবং তা সুস্ঠূ হয়, তার জন্য দুইটি প্রতিদান রয়েছে। আর যে ইজতিহাদ করে আদেশ জারি করে, আর তা ভুল সাব্যস্ত হয়, তার জন্য একটি প্রতিদান রয়েছে।-ihadis.com
সুনানে আন নাসায়ী, হাদিসঃ ৫৪০৩, সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,
নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ দুইজন নারী বের হলো, আর তাদের সাথে ছিল তাদের দুই সন্তান। এক নারীকে নেকড়ে বাঘ আক্রমণ করে তার সন্তান নিয়ে গেল। অবশিষ্ট সন্তানের ব্যাপারে উভয় নারী দাউদ (আ)-এর নিকট উপস্থিত হয়ে নিজের সন্তান বলে দাবি করলো, তিনি তাদের মধ্যে যে নারী বয়সে বড় ছিল, তার পক্ষে রায় দিলেন। অবশেষে তারা সুলায়মান (আ) -এর নিকট দিয়ে যাওয়ার সময় তিনি জিজ্ঞাসা করলেনঃ তোমাদের ব্যাপারে কি আদেশ দেয়া হয়েছে? তারা তাঁর নিকট ঘটনা বর্ণনা করলে, তিনি বললেনঃ একখানা ছুরি নিয়ে এস, আমি এই শিশুটিকে দু’ভাগ করে তাদের মধ্যে বণ্টন করে দিব। তখন ছোট নারী বললঃ আপনি কি তাকে দ্বিখণ্ডিত করবেন? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ। সে বললঃ আপনি এরূপ করবেন না, আমার অংশ আমি তাকে দিয়ে দিলাম। তখন তিনি বললেনঃ এই শিশুটি তোমার; তিনি তার পক্ষেই মীমাংসা করলেন।-ihadis.com
সুনানে আবু দাউদ, হাদিসঃ ৩৫৭৩, সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,
নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ বিচারক তিন প্রকার। এক প্রকার বিচারক জান্নাতী এবং অপর দুই প্রকার বিচারক জাহান্নামী। জান্নাতী বিচারক হলো, যে সত্যকে বুঝে তদনুযায়ী ফায়সালা দেয়। আর যে বিচারক সত্যকে জানার পর স্বীয় বিচারে জুলুম করে সে জাহান্নামী এবং যে বিচারক অজ্ঞতা প্রসূত ফায়সালা দেয় সেও জাহান্নামী।-ihadis.com
সুনানে আবু দাউদ, হাদিসঃ ৩৫৮২, হাসান হাদিস থেকে বর্ণিত,
আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাকে ইয়ামানে বিচারক হিসাবে প্রেরণ করলেন। আমি বললাম, হে আল্লাহ্র রাসূল! আপনি আমাকে বিচারক করে ইয়ামানে পাঠাচ্ছেন, অথচ আমি একজন নব যুবক, বিচার ব্যবস্থা সম্পর্কে আমার অভিজ্ঞতা নেই। তিনি বলেনঃ আল্লাহ্ নিশ্চয়ই তোমার অন্তরকে সঠিক সিদ্ধান্তের দিকে পথ দেখাবেন এবং তোমার কথাকে প্রতিষ্ঠিত রাখবেন। যখন তোমার সামনে বাদী-বিবাদী বসবে তখন তুমি যেভাবে এক পক্ষের বক্তব্য শুনবে অনুরূপভাবে অপর পক্ষের বক্তব্য না শোনা পর্যন্ত কোন সিদ্ধান্ত নিবে না। এতে তোমার সামনে মোকদ্দমার আসল সত্য প্রকাশিত হবে। ‘আলী (রাঃ) বলেন, অতঃপর আমি সিদ্ধান্ত গ্রহণে সন্দেহে পতিত হইনি।-ihadis.com
সুনানে আবু দাউদ, হাদিসঃ৩৫৯৪ ,হাসান সহিহ থেকে বর্ণিত,
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ মুসলিম সমাজে পরস্পরের মধ্যে সন্ধি স্থাপন বৈধ। ইমাম আহমাদের বর্ণনায় রয়েছে : তবে এমন সন্ধি বৈধ নয় যা হালালকে হারাম এবং হারামকে হালাল করে। সুলাইমান ইবনু দাঊদের বর্ণনায় রয়েছে : রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ মুসলিমরা নিজেদের (চুক্তিপত্রের) শর্তসমূহ পালন করতে বাধ্য।-ihadis.com
সুনানে আবু দাউদ, হাদিসঃ৩৫৯৭ ,সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,
ইয়াহইয়া ইবনু রাশিদ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, একদা আমরা ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমারের (রাঃ) অপেক্ষায় বসে রইলাম। তিনি বেরিয়ে এসে আমাদের নিকট বসলেন এবং বললেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম -কে বলতে শুনেছি : যার সুপারিশ আল্লাহর নির্ধারিত কোন হাদ্দ বাস্তবায়িত করার পথে বাধা সৃষ্টি করে, সে আল্লাহর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে। যে ব্যক্তি জেনে বুঝে মিথ্যা মামলা দেয়, সে তা ত্যাগ না করা পর্যন্ত আল্লাহর অসন্তুষ্টি দ্বারা পরিবেষ্টিত থাকে। যে ব্যক্তি কোন ঈমানদারের এমন দোষ বলে বেড়ায় যা তার মধ্যে নেই, আল্লাহ তাকে জাহান্নামীদের আবর্জনার মধ্যে বসবাস করাবেন। অতএব তাকে শিঘ্রই তার কথা হতে তাওবাহ এবং ত্যাগ করা উচিত।-ihadis.com
খারাপ শাসক হতে সাবধানতা অবলম্বন করাঃ
সহিহ মুসলিম,হাদিসঃ ৪৬২৭, সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,
হাসান (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর জনৈক সাহাবী আয়েয ইবনু ‘আম্র (রাঃ) একদা ‘উবাইদুল্লাহ ইবনু যিয়াদ (রহঃ)-এর নিকট গেলেন। তখন তিনি তাকে লক্ষ্য করে বললেন, বৎস! আমি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি “নিকৃষ্টতম রাখাল হচ্ছে অত্যাচারী শাসক।” তুমি তাদের অন্তর্ভূক্ত হওয়া থেকে সাবধান থাকবে। তখন সে বললো, বসে পড়! তুমি হচ্ছো নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাহাবীগণের উচ্ছিষ্টের ন্যায়। জবাবে তিনি বললেন, তাঁদের মধ্যেও কি উচ্ছিষ্ট রয়েছে? উচ্ছিষ্ট তো তাদের পরবর্তীদের এবং অন্যান্যদের মধ্যে।-ihadis.com
সহিহ মুসলিম, হাদিসঃ ৪৬৪৮, সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তুমি অবশ্যই ‘আমীরের কথা শুনবে এবং মানবে তোমার সংকটকালে ও স্বাভাবিক সময়ে, অনুরাগ ও বিরাগে এবং যখন তোমার উপর অন্যকে অগ্রাধিকার দেয়া হচ্ছে তখনও।-ihadis.com
সহিহ মুসলিম, হাদিসঃ ৪৬৪৯, সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,
আবূ যার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, আমার পরম বন্ধু সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে উপদেশ দিয়েছেন, আমি যেন (‘আমীরের নির্দেশ) শুনি ও মানি যদি ‘আমীর হাত-পা কর্তিত দাসও হয়।-ihadis.com
সহিহ মুসলিম, হাদিসঃ ৪৬৫২, সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত
ইয়াহ্ইয়া ইবনু হুসায়ন (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, আমি আমার দাদী থেকে শুনেছি, তিনি নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর বিদায় হাজ্জের ভাষণ দেয়ার সময় তাঁকে বলতে শুনেছেন “যদি তোমাদের উপর একজন গোলামকেও কর্মকর্তা নিযুক্ত করা হয় আর সে তোমাদেরকে আল্লাহর কিতাব অনুসারে পরিচালনা করে, তবে তোমরা তার কথা শুনবে এবং মেনে চলবে।”-ihadis.com
সহিহ মুসলিম, হাদিসঃ ৪৬৫৭, সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,
নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে বর্ণিত। তিনি বলেছেন, মুসলিম ব্যক্তির অবশ্য পালনীয় কর্তব্য হচ্ছে শোনা ও মানা তার প্রতিটি প্রিয় ও অপ্রিয় ব্যাপারে যতক্ষণ না তাকে আল্লাহর অবাধ্যতার আদেশ করা হয়। যদি আল্লাহর অবাধ্যতার নির্দেশ তাকে দেওয়া হয় তাহলে তা শুনবেও না এবং মানবেও না।-ihadis.com
সহিহ মুসলিম, হাদিসঃ ৪৬৬২, সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,
‘উবাদাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেছেন, আমরা রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম –এর হাতে বাই’আত হলাম এ মর্মে যে, আমরা শুনবো ও মানবো, সংকটের সময় ও স্বাচ্ছন্দ্যের সময়, খুশির অবস্থায় ও অপছন্দের অবস্থায় এবং আমাদের উপর অন্যদেরকে প্রাধান্য দিলেও। আর এ মর্মে যে, আমরা যোগ্য ব্যক্তির নেতৃত্ব বরণ করে নিতে কোনরূপ কোন্দল করবো না। আর এ মর্মে যে, আমরা যেখানেই থাকবো হক কথা বলব। আল্লাহর ব্যাপারে কোন ভর্ৎসনাকারীর ভর্ৎসনাকে ভয় করবো না।-ihadis.com
সহিহ মুসলিম, হাদিসঃ ৪৬৪১, সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,
নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, যে ব্যক্তি আমার আনুগত্য করলো, সে আল্লাহর আনুগত্য করলো আর যে আমার অবাধ্যতা করলো সে আল্লাহর অবাধ্যতা করলো। যে ব্যক্তি আমীরের আনুগত্য করলো সে আমারই আনুগত্য করলো আর যে ব্যক্তি আমীরের অবাধ্যতা করলো সে আমারই অবাধ্যতা করলো।-ihadis.com
স্বজনপ্রীতি নিষেধঃ
সহিহ মুসলিম, হাদিসঃ ৪৬৩২, সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,
আবূ হুমায়দ সা’ইদী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম আসাদ গোত্রের এক ব্যক্তিকে কর্মচারী নিযুক্ত করলেন- যাকে ইবনুল লুত্বিয়্যাহ্ নামে অভিহিত করা হতো। রাবী ‘আম্র ও ইবনু আবূ ‘উমার বলেন, যাকাত আদায়ের জন্য। যখন সে ফিরে এলো, তখন সে বললো, এটি আপনাদের (অর্থাৎ- বায়তুল মালের) এবং ওটি আমাকে উপহার হিসেবে দেয়া হয়েছে। রাবী বলেন, তখন রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম মিম্বারের উপরে দাঁড়ালেন এবং আল্লাহর প্রশংসা করার পর বললেন, সে কর্মচারীর কী হলো, যাকে আমি (আদায়কারীরূপে) প্রেরণ করলাম, আর সে (যেমন দিয়ে আসে তেমন) বলে! ওটা আপনাদের আর এটি আমাকে উপঢৌকন দেয়া হয়েছে? সে তার পিতার বা মাতার ঘরে বসে থেকে দেখে না কেন যে তাকে উপঢৌকন দেয়া হয় কি-না? মুহাম্মাদের প্রাণ যে পবিত্র সত্তার হাতে তাঁর কসম! যে কেউ এরূপ সম্পদের কিছুমাত্র কুক্ষিগত করবে, কিয়ামাতের দিন তাই সে তার ঘাড়ে বহন করে নিয়ে আসবে- তার ঘাড়ের উপর চিৎকাররত উট হবে অথবা হাম্বা-হাম্বারত গাভী হবে অথবা চিৎকাররত বকরী হবে। তারপর তিনি দু’হাত উপরের দিকে উঠিয়ে ধরলেন, এমনকি তাঁর বগলের শুভ্রতা আমাদের দৃষ্টিগোচর হলো। তিনি বললেন, “হে আল্লাহ! আমি কি তোমার নির্দেশ পৌঁছিয়ে দিয়েছি?” এ কথা তিনি দু’বার বললেন।-ihadis.com
সহিহ মুসলিম, হাদিসঃ ৪৬৬৯, সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,
‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আমার পরে স্বজনপ্রীতি ও তোমাদের অপছন্দনীয় অনেক কিছু ঘটবে। তখন সাহাবাগণ বললেন, আমাদের মধ্যকার যাঁরা তা পাবে তাঁদের ব্যাপারে আপনার নির্দেশ কি হে আল্লাহর রসূল? তিনি বললেন, তোমাদের উপর আরোপিত দায়িত্ব তোমরা পালন করে যাবে, আর তোমাদের প্রাপ্য হক তোমরা আল্লাহ্র কাছে চাইবে।-ihadis.com
সহিহ মুসলিম, হাদিসঃ ৪৬৭৩, সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,
উসায়দ ইবনু হুরায়ব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ এক আনসার রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে একান্তে সাক্ষাৎ করলো এবং বললো আপনি ওমুককে যেভাবে কর্মচারী নিযুক্ত করেছেন, সেভাবে আমাকেও কি কর্মচারী নিয়োগ করবেন না? তখন তিনি বললেন, আমার পরে তোমরা অনেক পক্ষপাতিত্ব দেখবে তখন তোমরা ধৈর্যধারণ করবে যে পর্যন্ত না তোমরা হাওয (কাওসার)-এ আমার সাথে মিলিত হও।-ihadis.com
শাসক খারাপ হলে করনীয়ঃ
সহিহ মুসলিম, হাদিসঃ ৪৬৭৬, সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,
ওয়ায়িল হাযরামী (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, সালামাহ ইবনু ইয়াযীদ আল জু’ফী (রহঃ) রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে এ মর্মে প্রশ্ন করলেন, হে আল্লাহ্র নাবী! যদি আমাদের উপর এমন শাসকের শাসন প্রতিষ্ঠিত হয় যে, তারা তাদের হক তো আমাদের কাছে দাবী করে কিন্ত আমাদের হক তারা দেয় না। এমতাবস্থায় আপনি আমাদের কে কি করতে বলেন? তিনি তার উত্তর এড়িয়ে গেলেন। তিনি আবার তাঁকে প্রশ্ন করলেন। আবার তিনি এড়িয়ে গেলেন। এভাবে প্রশ্নকারী দ্বিতীয় ও তৃতীয়বারও একই প্রশ্নের পুনরাবৃত্তি করলেন। তখন আশ’আস ইবনু কায়স (রাঃ) তাকে (সালামাকে) টেনে নিলেন এবং বললেন, তোমরা শুনবে এবং মানবে। কেননা তাদের উপর আরোপিত দায়িত্বের বোঝা তাদের উপর বর্তাবে আর তোমাদের উপর আরোপিত দায়িত্বের বোঝা তোমাদের উপর বর্তাবে।-ihadis.com
সহিহ মুসলিম, হাদিসঃ ৪৬৭৭, সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,
সিমাক (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ উক্ত সানাদে অনুরূপ বর্ণনা করেন। এ বর্ণনাতে আছে, “আশ ‘আস ইবনু কায়স তাকে টেনে নিলেন, অতঃপর রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেনঃ তোমরা শুনবে ও মানবে। কেননা তাদের দায়িত্বের বোঝা তাদের উপর এবং তোমাদের দায়িত্বের বোঝা তোমাদের উপর বর্তাবে।”-ihadis.com
সহিহ মুসলিম, হাদিসঃ ৪৬৯৪, সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,
উম্মু সালামাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ অচিরেই এমন কতক ‘আমীরের উদ্ভব ঘটবে তোমরা তাদের চিনতে পারবে এবং অপছন্দ করবে। যে ব্যক্তি তাদের সরূপ চিনল সে মুক্তি পেল এবং যে ব্যক্তি তাদের অপছন্দ করল সে নিরাপদ হলো। কিন্তু যে ব্যক্তি তাদের পছন্দ করল এবং অনুসরণ করল (সে ক্ষতিগ্রস্ত হল)। লোকেরা জিজ্ঞেস করল, আমরা কি তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করব না? রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেনঃ না, যতক্ষণ তারা সলাত আদায়কারী থাকবে।-ihadis.com
সহিহ মুসলিম, হাদিসঃ ৪৬৯৮, সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,
রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, তোমাদের সর্বোত্তম নেতা হচ্ছে তারাই যাদেরকে তোমরা ভালবাস আর তারাও তোমাদের ভালবাসে। তারা তোমাদের জন্য দু’আ করে, তোমরাও তাদের জন্য দু’আ কর। পক্ষান্তরে তোমাদের সর্ব নিকৃষ্ট নেতা হচ্ছে তারাই যাদেরকে তোমরা ঘৃণা কর আর তারাও তোমাদের ঘৃণা করে। তোমরা তাদেরকে অভিশাপ দাও আর তারাও তোমাদেরকে অভিশাপ দেয়। বলা হল, হে আল্লাহর রসূল! আমরা কি তাদেরকে তরবারি দ্বারা প্রতিহত করব না? তখন তিনি বললেন, না, যতক্ষণ পর্যন্ত তারা তোমাদের মধ্যে সলাত কায়িম রাখবে। আর যখন তোমাদের শাসকদের মধ্যে কোনরূপ অপছন্দনীয় কাজ দেখবে; তখন তোমারা তাদের সে কাজকে ঘৃণা করবে; কিন্তু (তাদের) আনুগত্য থেকে হাত গুটিয়ে নেবে না।-ihadis.com
রাষ্ট্রে যারা অশান্তি-বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চায়ঃ
সহিহ মুসলিম,হাদিসঃ ৪৬৯০, সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,
আরফাজাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে আমি বলতে শুনেছি, অচিরেই নানা প্রকার ফিৎনা-ফাসাদের উদ্ভব হবে। যে ব্যক্তি ঐক্যবদ্ধ ‘উম্মাতের মধ্যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির প্রয়াস চালাবে, তোমরা তরবারি দিয়ে তার গর্দান উড়িয়ে দেবে, সে যে কেউ হোক না কেন।-ihadis.com
সহিহ মুসলিম,হাদিসঃ ৪৬৯২, সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,
আরফাজা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে বলতে শুনেছি, তোমাদের এক নেতার অধীনে একতাবদ্ধ থাকা অবস্থায় যে ব্যক্তি এসে তোমাদের শক্তি খর্ব করতে উদ্যত হয় অথবা তোমাদের ঐক্য বিনষ্ট করতে চায় তাকে তোমরা হত্যা করবে।-ihadis.com
সুদ-ঘুষ নিষিদ্ধঃ
আল লু’লু ওয়াল মারজান, হাদিসঃ ৫৬, সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,
আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃআবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, তোমরা সাতটি ধ্বংসকারী বস্তু থেকে সাবধান থাক। সাহাবাগণ জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহ্র রাসূল! সেগুলো কী রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, আল্লাহ্র সাথে শিরক্ করা, যাদু করা, অন্যায়ভাবে কোন মানুষকে হত্যা করা, সুদ খাওয়া, ইয়াতিমের মাল (অন্যায়ভাবে) ভক্ষণ করা, রণাঙ্গণ থেকে পলায়ন করা, নির্দোষ সতীসাধ্বী মু‘মিনা মহিলাকে অপবাদ দেয়া।
সুনানে আবু দাউদ, হাদিসঃ ৩৫৮০, সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,
আবদুল্লাহ ইবনু ‘আস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঘুষ দাতা ও ঘুষ গ্রহীতাকে অভিসম্পাত করেছেন।-ihadis.com
ইসলামিক রাষ্ট্রে অমুসলিমদের বসবাসঃ
অমুসলিম মায়ের সাথেও উত্তম আচরণের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
রিয়াদুস সলেহিন,হাদিসঃ ৩৩০, সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,
আসমা বিন্তে আবূ বকর সিদ্দীক রাদ্বিয়াল্লাহু ‘‘আনহুমা থেকে বর্ণিতঃতিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর যুগে আমার অমুসলিম মা আমার কাছে এল। আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে জিজ্ঞেস করলাম; বললাম, ‘আমার মা (ইসলাম) অপছন্দ করা অবস্থায় আমার সম্পদের লোভ রেখে আমার নিকট এসেছে, আমি তার সাথে সম্পর্ক বজায় রাখব কি?’ তিনি বললেন, ‘‘হ্যাঁ, তুমি তোমার মায়ের সাথে সম্পর্ক বজায় রাখ।’’ (বুখারী ও মুসলিম)-ihadis.com
শুধু মাত্র অমুসলিম মা-ই না বরং যেসব অমুসলিম শান্তিপূর্ণ যারা মুসলিমদেরকে হত্যা, খুন, করতে চায়নি বা নির্যাতন করতে চায়নি এরকম সব অমুসলিমদের সাথে মানবিক আচরণ করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
সহিহ বুখারী, হাদিসঃ ৫৯৭৮, সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,
আবূ বাক্র (রাঃ) -এর কন্যা আসমা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, নবীসাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম -এর যুগে আমার অমুসলিম মা আমার কাছে এলেন। আমি নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম -এর নিকট জিজ্ঞেস করলামঃ তার সঙ্গে ভাল ব্যবহার করবো কি না? তিনি বললেন, হাঁ।ইবনু ‘উয়াইনাহ (রহঃ) বলেন, এ ঘটনা প্রসঙ্গেই আল্লাহ তা‘আলা অবতীর্ণ করেনঃ “দ্বীনের ব্যাপারে যারা তোমাদের সাথে যুদ্ধ করেনি, আর তোমাদেরকে তোমাদের ঘর-বাড়ী থেকে বের ক’রে দেয়নি তাদের সঙ্গে সদয় ব্যবহার করতে আর ন্যায়নিষ্ঠ আচরণ করতে আল্লাহ নিষেধ করেননি।” (সূরাহ আল-মুমতাহিনাহ ৬০:৮)-ihadis.com
মিশকাতুল মাসাবিহ, হাদিসঃ ১৫৭৪, সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, এক ইয়াহুদী যুবক নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর খিদমাত করতেন। তাঁর মৃত্যুশয্যায় নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে দেখতে গেলেন। তিনি তার মাথার পাশে বসে বললেন, হে অমুক! তুমি ইসলাম গ্রহণ করো। যুবকটি তার পাশে থাকা পিতার দিকে তাকাল। পিতা তাকে বলল, আবুল ক্বাসিমের কথা মেনে নাও। যুবকটি ইসলাম গ্রহণ করলো। এরপর নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার কাছ থেকে বের হয়ে এসে বললেন, আল্লাহর শুকরিয়া। তিনি তাকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দিলেন। রিয়াদুস সলেহিন,হাদিসঃ৯০৫, সহিহ হাদিস-ihadis.com
সুনানে আন নাসায়ী,হাদিসঃ ৩৬৩৯,সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,
জাবির ইৱ্ন আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেনঃ আমার পিতা এক ইয়াহুদি হতে খেজুর ধার নিয়েছিলেন। তার দেনা আদায় না হতেই তিনি উহুদ যুদ্ধে শহীদ হন এবং দু’টি বাগান রেখে যান। ইয়াহুদির (পাওনা) খেজুর দুই বাগানের সব ফলকে পূর্ণরূপে গ্রাস করে ফেলেছিল। নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইয়াহুদিকে বললেনঃ তুমি কি এরূপ করতে পার যে, তোমার খেজুরের অর্ধেক এ বছর এবং বাকি অর্ধেক আগামী বছর নিবে? ইয়াহুদি এতে অস্বীকৃত জানালো। তিনি জাবির (রাঃ)-কে বললেনঃ তুমি খেজুর কাটার সময় আমাকে সংবাদ দিতে পারবে? আমি খেজুর কাটার সময় তাঁকে খবর দিলাম। তিনি আবু বকর (রাঃ)-কে সাথে নিয়ে আসলেন এবং খেজুরের নিচের দিক হতে মেপে মেপে ও কেটে দেওয়া শুরু করা হল। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বরকতের জন্য দু’আ করতে থাকলেন। ফলে তার সমস্ত পাওনা (আম্বারের বর্ণনা অনুসারে) আমাদের ছোট বাগানের খেজুর দ্বারাই আদায় হয়ে গেল। (আর বড় বাগান এমনই রয়ে গেল), জাবির (রাঃ) বলেনঃ পরে আমি তাঁদের নিকট তাজা খেজুর এবং পানি পেশ করলাম। (সকলের পানাহার শেষ হলে) পরে তিনি রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সালাম বললেনঃ এগুলো সেই নিয়ামত, যে সম্পর্কে তোমাদের জিজ্ঞাসা করা হবে।-ihadis.com
সুনানে আবু দাউদ, হাদিসঃ ৪৮৩৫, সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,
আবূ মূসা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃতিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহি ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন তাঁর কোন সাহাবীকে কোন কাজে প্রেরণ করতেন তখন তাকে নির্দেশ দিতেনঃ তোমরা লোকদেরকে সুসংবাদ দিবে, দূরে ঠেলে দিবে না, আর সহজ করবে, কঠিন করবে না।-ihadis.com
সহিহ মুসলিম, হাদিসঃ ৪৪১৭, সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,
আবূ মূসা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃতিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন তাঁর কোন সাহাবীকে কোন কাজে পাঠাতেন, তখন তাঁকে এ কথা বলতেন যে, তোমরা লোকদেরকে শুভ সংবাদ দেবে; ঘৃণা-বিদ্বেষ ছড়াবে না, সহজ করবে; কঠিন করবে না।-ihadis.com
সহিহ মুসলিম, হাদিসঃ ৫১১১, সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,
আবূ বুরদাহ্ (রাঃ) তার পিতা থেকে বর্ণিতঃতিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাকে ও মু’আয (রাঃ)-কে ইয়ামানে প্রেরণ করে বললেনঃ তোমরা লোকদেরকে (দ্বীনের) আহ্বান করবে, সুখবর দিবে, কাউকে তাড়িয়ে দিবে না। সহজ করবে-কঠিন করবে না। তিনি বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রসূল! ইয়ামানে আমরা দু’রকমের মদ তৈরি করি, আপনি সে ব্যাপারে আমাদেরকে জানান। (১) আল-বিত’ই, যা মধু পাকিয়ে ঘন করে প্রস্তুত করা হয়; (২) আল-মিয্র, যা যব পাকিয়ে ঘন করে তৈরি হয়। বর্ণনাকারী বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে কিছু শব্দ অথচ ব্যাপক অর্থবোধক কথা পূর্ণতার সঙ্গে প্রকাশ করার সামর্থ্য দেয়া হয়েছিল। তিনি বললেনঃ প্রত্যেক নেশাযুক্ত জিনিস যা সলাত হতে গাফিল করে তা (পান করতে) বারণ করছি।-ihadis.com
পাঠক আমি আপনাদের সামনে যেই দলিল-প্রমাণ পেশ করলাম এগুলো নাস্তিকরা চাইবে না মানুষ জেনে যাক। এগুলো জেনে গেলে তো মানুষের সামনে ইসলামকে ভুল ভাবে দেখানো যাবে না। আপনি সুক্ষভাবে যাচাই করে দেখুন নাস্তিকরা আসলেই কিভাবে মিথ্যাচার করে যাচ্ছে বছরের পর বছর। এদের না আছে যৌক্তিক চিন্তা করার বোধগম্যতা আর না আছে সত্যকে গ্রহণ করে নেবার সাহস। ইসলামের সমালোচনা করা যদি কারো পেশা হয়ে হয় তাহলে তাকে ইসলাম বুঝানো আর গাধাকে জ্ঞান অর্জনের উপকারিতা বুঝানো একই কথা।
বুলগুল মারাম, হাদিসঃ ২১, সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,
আবূ শালাবা আল-খুশানী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, আমি বললাম, ‘হে আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমরা তো আহলে কিতাব আধুষিত এলাকায় বসবাস করি। তাহলে কি আমরা তাদের পাত্রে আহার করতে পারব? তিনি সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, সেগুলোতে খাবে না। তবে অন্য বাসনপত্র না পাও তবে খেতে পার; যদি না পাও তবে তা ধুয়ে নিয়ে তাতে খাবে।’-ihadis.com
সহিহ বুখারী, হাদিসঃ ৫৪৭৮, সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,
আবূ সা’লাবা আল খুশানী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃতিনি বলেন, আমি জিজ্ঞেস করলামঃ হে আল্লাহ্র নবী! আমরা আহলে কিতাব সম্প্রদায়ের এলাকায় বসবাস করি। আমরা কি তাদের থালায় খেতে পারি? তাছাড়া আমরা শিকারের অঞ্চলে থাকি। তীর ধনুকের সাহায্যে শিকার করি এবং প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ও প্রশিক্ষণবিহীন কুকুর দিয়ে শিকার করে থাকি। এমতাবস্থায় আমার জন্য কোন্টা বৈধ হবে? উত্তরে তিনি বললেনঃ তুমি যে সকল আহলে কিতাবের কথা উল্লেখ করলে তাতে বিধান হলঃ যদি অন্য পাত্র পাও তাদের পাত্রে খাবে না। আর যদি না পাও, তাহলে তাদের পাত্রগুলো ধুয়ে নিয়ে তাতে আহার কর। আর যে প্রাণীকে তুমি তোমার তীর ধনুকের সাহায্যে শিকার করেছ এবং বিসমিল্লাহ পড়েছ সেটি খাও। আর যে প্রাণীকে তুমি তোমার প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কুকুরের দ্বারা শিকার করেছ এবং বিসমিল্লাহ পড়েছ, সেটি খাও। আর যে প্রাণীকে তুমি তোমার প্রশিক্ষণবিহীন কুকুর দ্বারা শিকার করেছ, সেটি যদি যবহ করতে পার তবে তা খেতে পার।-ihadis.com
অমুসলিমদেরকে প্রতিবেশী হিসেবেও সম্মান করা হয়েছে ইসলামে। এমনকি প্রতিবেশীর অধিকার বিষয় ইসলাম কি শিক্ষা দেয় তা পড়ুন।
জামে আত তিরমিজি,হাদিসঃ ১৯৪৩, সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,
মুজাহিদ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ)-এর জন্য তার পরিবারে একটি ছাগল যবেহ করা হল। তিনি এসে বললেন, তোমরা কি আমাদের ইয়াহুদী প্রতিবেশীকে (গোশত) উপহার পাঠিয়েছ? আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে বলতে শুনেছিঃ প্রতিবেশীর অধিকার প্রসঙ্গে জিবরাঈল (আঃ) আমাকে অবিরত উপদেশ দিতে থাকেন। এমনকি আমার ধারণা হল যে, হয়ত শীঘ্রই প্রতিবেশীকে উত্তরাধিকারী বানিয়ে দিবে।-ihadis.com
আদাবুল মুফরাদ, হাদিসঃ ১১১, সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,
ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ ইবনে আব্বাস (রাঃ) ইবনুয যুবাইর (রাঃ)-কে অবহিত করে বলেন, আমি নবী (সাঃ)-কে বলতে শুনেছিঃ যে ব্যক্তি তার প্রতিবেশীকে অভুক্ত রেখে তৃপ্তি সহকারে আহার করে সে মুমিন নয়।-ihadis.com
আদাবুল মুফরাদ, হাদিসঃ ১২৭, সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,
আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেনঃ যার প্রতিবেশী তার অনিষ্ট থেকে নিরাপদ নয়, সে বেহেশতে প্রবেশ করতে পারবে না।-ihadis.com
আদাবুল মুফরাদ,হাদিসঃ ১২১, সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,
আমর ইবনে মুআয আল-আশহালী (র) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) আমাকে বলেছেনঃ হে মুমিন নারীগণ! তোমাদের মধ্যকার কোন নারী যেন তার প্রতিবেশীকে যৎসামান্য দান করাকেও তুচ্ছ মনে না করে, যদিও তা রান্না করা বকরীর বাহুর সামান্য গোশতও হয়।-ihadis.com
আদাবুল মুফরাদ,হাদিসঃ ১২৭, সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,
জাহিদ (র) থেকে বর্ণিতঃআমি আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রাঃ)-এর নিকট ছিলাম। তখন তার গোলাম ছাগলের চামড়া ছাড়াচ্ছিলো। তিনি বলেন, হে বালক! অবসর হয়েই তুমি প্রথমে আমাদের ইহুদী প্রতিবেশীকে গোশত দিবে। এক ব্যক্তি বললো, ইহুদী! আল্লাহ আপনাকে সংশোধন করুন। তিনি বলেন, আমি নবী (সাঃ)-কে প্রতিবেশী সম্পর্কে উপদেশ দিতে শুনেছি। এমনকি আমাদের আশংকা হলো বা আমাদের নিকট প্রতিভাত হলো যে, তিনি অচিরেই প্রতিবেশীকে ওয়ারিস বানাবেন।-ihadis.com
আদাবুল মুফরাদ, হাদিসঃ ১০৪, সহিহ হাদিসঃ
আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তার জন্য একটি ছাগল যবেহ করা হলে তিনি তার গোলামকে বলতে লাগলেন, তুমি কি আমাদের ইহুদী প্রতিবেশীকে তা দিয়েছো? তুমি কি আমাদের ইহুদী প্রতিবেশীকে তা দিয়েছো? আমি রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-কে বলতে শুনেছিঃ জিবরাঈল (আবু দাউদ) আমাকে প্রতিবেশী সম্পর্কে অবিরত নসীহত করতে থাকেন। আমি মনে মনে ভাবলাম যে, তিনি তাকে হয়তো ওয়ারিস বানাবেন।-ihadis.com
আদাবুল মুফরাদ, হাদিসঃ ১০৭, সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,
আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃআমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমার দুইজন প্রতিবেশী আছে। তাদের মধ্যে কোন প্রতিবেশীকে আমি উপহারাদি দিবো? তিনি বলেনঃ যার দরজা তোমার অধিকতর নিকটবর্তী তাকে (বুখারী, আবু দাউদ)।-ihadis.com
অমুসলিম প্রতিবেশী যদি নিজের ঘরের কাছে থাকে তাহলে তাকেই আগে খাবার খাওয়াতে হবে। ইসলাম শান্তির ধর্ম এটা নিয়ে কোনো সংশয় নাই। মিথ্যার আশ্রয় গ্রহণ করে হলেও ইসলামকে খারাপভাবে দেখাতে চায় যারা তারা নিজেরাই আসলে অশান্তির ধর্মে বসবাস করছে আর নিজেদের অপকর্মের দোষ ইসলামের দিকে চাপিয়ে দেবার পয়তারা করছে। কিন্তু তাতে কি? সত্যের জন্মই হয়েছে মিথ্যাকে ধ্বংস করার জন্য আর ইসলাম হচ্ছে একমাত্র সত্য। মিথ্যাচার করে ইসলামের বিরুদ্ধে যতো অবস্থান নেয়া হোক না কেন ইসলাম চিরকাল থাকবে। কোনো সন্দেহ নাই। আসলেই নাই।
উপসংহারঃ খলিফা বা একজন ন্যায়বান শাসক নির্বাচন করতে হবে। শাসকের মধ্যে ক্ষমতার লোভ থাকা যাবে না। কারণ শাসক হওয়া একটি দায়িত্ব এবং আমানত। রাষ্ট্রে প্রতিটি সেক্টরেই ন্যায় বিচার কায়েম করতে হবে। রাষ্ট্রে মুসলিম অমুসলিম সবার প্রতিই ন্যায় বিচার করতে হবে। শাসক যদি খারাপ হয় তাহলে তার থেকে দূরে থাকতে হবে। সামর্থ্য অনুযায়ী অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে হবে। ভালো কাজে শাসকের অনুসরন করা এবং খারাপ কাজ অনুসরন করা যাবে না। সরকারি কর্মকর্তাদের উপহার গ্রহণ করা যাবে না যাতে তাদের প্রতি দুর্বলতা সৃষ্টি হয় একইসাথে স্বজনপ্রীতি করা যাবে না। অযোগ্যদের দায়িত্ব দেয়া যাবে না। রাষ্ট্রে যারা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চায় তাদের শাস্তি দিতে হবে।কোনো কাজেই ঘুষ নেয়া এবং দেয়া যাবে না , নিষেধ।