সুরা তালাক ৬৫ঃ৪ আয়াতে শিশু স্ত্রীর সাথে সহবাসের কথা বলে?


বিষয়ঃ সুরা তালাক ৬৫:৪ আয়াতে শিশু স্ত্রীর সাথে সহবাসের কথা বলে?

লিখেছেনঃ এমডি আলী


প্রথমে ইসলামবিরোধী মিথ্যুকবাজদের অভিযোগটি সম্পূর্ণ পড়ে নেই। তারা অভিযোগটি করে থাকে এভাবে, হুবহু তুলে দিচ্ছি পড়ুন।

শিশু স্ত্রীর সাথে সহবাস ইসলামে জায়েজ কারণ সুরা তালাক ৬৫:৪ আয়াতে বলা হয়েছে, তোমাদের যে সব স্ত্রী আর ঋতুবর্তী হওয়ার আশা নেই তাদের ইদ্দত সম্পর্কে তোমরা সন্দেহ করলে তাদের ইদ্দতকাল হবে তিন মাস এবং যারা এখনো ঋতুর বয়সে পৌঁছেনি তাদেরও; আর গর্ভবতী নারীদের ইদ্দতকাল সন্তান প্রসব পর্যন্ত। আর যে আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন করে আল্লাহ্‌তার জন্য তার কাজকে সহজ করে দেন । 

একইসাথে উল্লেখ্য, সহবাসের পূর্বে তালাক দিলে ইসলামে ইদ্দতের বিধান নেই কারণ অন্য আয়াতে বলা হচ্ছে 

সুরা আহজাব ৩৩:৪৯ আয়াতে বলা হয়েছে, হে মুমিনগণ, যখন তোমরা মুমিন নারীদেরকে বিবাহ করবে অতঃপর তাদের সাথে সহবাসের পূর্বেই তালাক দিয়ে দেবে তবে তোমাদের জন্য তাদের কোন ইদ্দত নেই যা তোমরা গণনা করবে। সুতরাং তাদেরকে কিছু উপহার সামগ্রী প্রদান কর এবং সুন্দরভাবে তাদেরকে বিদায় দাও । 

তাহলে স্পষ্টতই বোঝা যায়, যারা ঋতুর বয়সে পৌঁছে নি, তাদের যেহেতু ইদ্দতের কথা বলা আছে, তাই অবশ্যই সহবাসের অনুমতিও দেয়া আছে। নইলে ইদ্দতের নির্দেশই থাকতো না। কারণ সহবাস ছাড়া তো ইদ্দতের প্রয়োজনই নেই। সুতরাং ইসলামে শিশুর সাথে যৌনকর্ম জায়েজ।

ইসলাম নিয়ে গভীর পড়াশোনা না থাকা যে কোনো লোকই এমন অভিযোগ যে মিথ্যে সেটা সহজে বুঝতে পারবে না। আসুন আমরা সার্বিক দিক যাচাই বাচাই করে তদন্ত করে দেখবো আসলেই নাস্তিকদের উক্ত অভিযোগটি সঠিক কিনা।

আল কুরআন,সুরা তালাক ৬৫:৪ আয়াত থেকে বর্ণিত, 

তোমাদের যেসব স্ত্রীদের মাসিক হবার আশা নেই, তাদের ইদ্দত সম্পর্কে তোমরা সন্দেহ করলে তাদের ইদ্দতকাল হবে তিন মাস এবং যাদের এখনো মাসিক হয়নি তাদেরও।আর গর্ভবতী নারীদের ইদ্দতকাল সন্তান প্রসব করা পর্যন্ত। আল্লাহকে যে ভয় করবে, তিনি তার সমস্যার সমাধান সহজ করে দেবেন।

তাফসীর ও ফিকহের কিতাব থেকে আয়াতটির ব্যাখ্যাঃ

তাফসীরে আহসানুল বায়ান, সুরা তালাক ৬৫:৪ আয়াতের তাফসীর, ৯৯৪ পৃষ্ঠায় বর্ণিত হয়েছে,

এ হল সেই মহিলাদের ইদ্দত যাদের বার্ধক্যের কারনে মাসিক বন্ধ হয়ে গেছে অথবা যাদের এখনো মাসিক শুরু হয়নি। জ্ঞাতব্য যে, বিরল হলেও এমনও হয় যে মেয়ে সাবালিকা হয়ে যায় অথচ তার মাসিক আসে না

তাফসীরে আশরাফী,৬ খণ্ড,৩৬৭ পৃষ্ঠায় বর্ণিত হয়েছে,

উপরের তো ইদ্দতের মোটামুটি বর্ণনা হইয়াছিল। আর উহার বিস্তারিত বিবরণ এই যে, তোমাদের তালাক প্রদত্তা স্ত্রীদের মধ্য হইতে যারা বার্ধক্য বশত; ঋতুস্রাব হইতে নিরাশ হইয়া পড়িয়াছে, যদি তোমাদের সন্দেহ হয় অর্থাৎ তাহাদের ইদ্দতের নিশ্চয়তা সম্বন্ধে সন্দেহ কর যেমন প্রকৃতপক্ষে এরুপ সন্দেহ কেহ কেহ করিয়াছিল এবং হুজুর (সা) কে জিজ্ঞাসাও করিয়াছিল তবে তাহাদের ইদ্দত তিন মাস। আর এরুপেই যাহাদের বয়স কম বশত এযাবৎ ঋতুস্রাব হয় নাই তাহাদের ইদ্দতও তিন মাস। 

তাফসীরে ওসমানী ,৭ খণ্ড , ১৮৯ পৃষ্ঠায়, সুরা তালাক এর ৪ নং আয়াতের তাফসীর, 

যদি সন্দেহ হয় যে ঋতু হয় না,বা বয়স হবার কারনে তা মওকুফ হয়ে গেছে,তবে তার ইদ্দত কি হবে? সে সম্পর্কে বলা হয়েছে এমন নারীর ইদ্দত হবে তিনমাস।

তাফসীরে আনওয়ারুল কুরআন, ৬ খণ্ড, সুরা তালাক এর ৪ নং আয়াতের তাফসীর,

যাদের এখনো ঋতুস্রাব শুরু হয়নি তাদের ক্ষেত্রে ইদ্দত হবে ৩ মাস।

তাফসীরে তাওযিহুল কুরআন,৩ খণ্ড, ৫৬৭ পৃষ্ঠায় বর্ণিত হয়েছে,

যাদের বয়স বেশি হবার কারনে ঋতু আসা বন্ধ হয়ে গেছে তাদের ইদ্দত কি হবে? এ আয়াতে তার জবাব দেয়া হয়েছে যে তাদের ইদ্দত হবে তিনমাস। এমনকি নাবালেগ মেয়ে যার এখনো ঋতু দেখা দেয়নি তার ইদ্দতও তিনমাস।

তাফহিমুল কুরআন, সুরা তালাক ৬৫:৪ আয়াত তাফসীর,

ঋতুস্রাব যদি অল্প বয়সের জন্য না হয়ে থাকে অথবা কিছু সংখ্যক মহিলাদের অনেক দেরিতে হয়ে থাকে না থাকে এবং বিরত কিছু এমনও হয়ে থাকে যে সারাজীবন কোন স্ত্রীলোকের ঋতুস্রাব হয় না এরুপ সর্বক্ষেত্রে এরকম স্ত্রীলোকের ইদ্দত ঋতুস্রাব বৃদ্ধা স্ত্রীলোকের মত। অর্থাৎ তাদের ইদ্দত তালাকের সময় থেকে তিন মাস।

তাফসীর ফি যিলালিল কুরআন, ২০ খণ্ড , পৃষ্ঠা ২৫৫ এবং ২৫৬ থেকে বর্ণিত,

আর এখানে এই মেয়াদ বর্ণনা করা হয়েছে যাদের ঋতুর চির অবসান হয়ে গেছে এবং যেসব অপ্রাপ্তবয়স্কা কিশোরীর জন্য ,এখনো যাদের আদৌ রজস্রাব শুরুই হয়নি ।বলা হয়েছে, তোমাদের স্ত্রীদের মধ্যে যারা আর ঋতুবতী হবার আশা করে না , তাদের ব্যাপারে তোমরা সন্দিহান হলে তাদের ইদ্দত তিনমাস। 

তাফসীরে ইবনে আব্বাস, ৩ খণ্ড, ৫১৬ পৃষ্ঠায় বর্ণিত হয়েছে,

তোমাদের যে সকল স্ত্রীদের ঋতুবতী হবার আশা নেই বার্ধক্যের প্রেক্ষিতে তোমরা সন্দেহ করলে তাদের ইদ্দত সম্পর্কে সম্পর্কে সংশয়ে পড়লে তাদের ইদ্দতকাল হবে তালাকের ক্ষেত্রে তিন মাস। অতপর এক লোক দাড়িয়ে নবী মুহাম্মদ (সা) কে জিজ্ঞাসা করল, অপ্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ার কারনে যে সকল স্ত্রী ঋতুবতী নয় ,তাদের ইদ্দত কি হবে? তখন নাযিল হল এবং যারা এখনো রজ্জসিলা হয়নিকুমারিত্তের কারনে যারা ঋতুবতী হয়নি, তাদের ইদ্দতও হবে তিনমাস।

তাফসীরে ইবনে কাসির, ১৭  খণ্ড, ৫৮৩ পৃষ্ঠায় বর্ণিত হয়েছে,

যেসব নারীর বয়স বেশি হয়ে যাওয়ার কারনে মাসিক ঋতু বন্ধ হয়ে গেছে এখানে তাদের ইদ্দতের বর্ণনা দেয়া হচ্ছে যে, তাদের ইদ্দত হল তিনমাস, যেমন ঋতুমতি নারীদের ইদ্দত হবে তিন হায়েজ। একইভাবে যেসব অপ্রাপ্ত বয়স্কা মেয়েদের এখনো ঋতুস্রাব হয়নি তাদেরও ইদ্দত হবে তিন মাস । হযরত  ইবাই ইবনে কাব (রা) বলেছিলেন, হে আল্লাহ্‌র রাসুল বহু স্ত্রীলোকের ইদ্দত এখনো বর্ণনা করা হয়নি । যেমন নাবালেগ মেয়ে, বৃদ্ধা এবং গর্ভবতী স্ত্রীলোকদের। তখন এই আয়াত নাযিল হয়।

তাফসীরে জালালাইন ৬ খণ্ড, ৫৮৮ পৃষ্ঠায় বর্ণিত হয়েছে,

হযরত মুয়াজ ইবনে জাবাল (রা) রাসুলুল্লাহ (সা) কে জিজ্ঞাসা করেছেন , যে মহিলার হায়েজ হয় তার ইদ্দত সম্পর্কে তো জানলাম কিন্তু যাদের হায়েজ হয়না তাদের ইদ্দত কি রকম? তখন এই (সুরা তালাক এর ৪ নং) আয়াত নাযিল হয়। (কাবির, কুরতুবি, ফাতহুল কাদির, রাওয়ায়ে)। এছাড়া উবাই ইবনে কাব (রা) বলেন হে রাসুলুল্লাহ কিছু মহিলা এমন রয়েছে যাদের ইদ্দত সম্পর্কে কিছুই বলা হয়নি, নবী মুহাম্মদ (সা) বলেছেন কোন কোন মহিলা সম্পর্কে?তখন তিনি বললেন ছোট ও বড় (অর্থাৎ যাদের হায়েজ বন্ধ হয়ে গেছে) আর গর্ভবতী মহিলা । তখনই সুরা তালাক এর ৪ নং আয়াত নাযিল হয় । (কাবির, কুরতুবি, ফাতহুল কাবির) এছাড়া খালেদ ইবনে আন নোমান আনসারী (রা) বলেন, ইয়া রাসুলুল্লাহ যেসব মহিলাদের হায়েজ হয় না আর যাদের হায়েজ বন্ধ হয়ে গেছে এবং গর্ভবতী মহিলাদের ইদ্দত কি রকম? তখন এই আয়াত তথা সুরা তালাকের ৪ নং আয়াত নাযিল হয়।

আল হিদায়া গ্রন্থের ২ খণ্ড,২০১ পৃষ্ঠায় বর্ণিত হয়েছে,

আর যদি অল্প বয়স্কতা কিংবা বার্ধক্যের কারণে সে ঋতুবতী না হয় তাহলে তার ইদ্দত হলো তিন মাস। তদ্রুপ যারা বয়স গণনা দ্বারা সাবালিকা হয়েছে কিন্তু এখনো ঋতুস্রাব শুরু হয়নি তাদের ইদ্দত হবে তিন মাস।- আশরাফুল হিদায়া ৩ খণ্ড,৫৭৬ পৃষ্ঠাতে/ ফিকহুস সুন্নাহ, ২ খণ্ড,২৬৬ পৃষ্ঠাতেও একই রকম কথা বলা হয়েছে।

ফাতাওয়ায়ে আলমগীরি,২ খণ্ড,৬৩৯ পৃষ্ঠায় বর্ণিত হয়েছে,

‘আদাবুল কাযা' গ্রন্থে উল্লেখ আছে যে, এখনাে হায়িয জারী হয়নি নাৱালিগা স্ত্রীর সাথে তার স্বামী যদি সহবাস করে থাকে সে যদি এমন বয়সী হয় যে বয়সী বালিকাদের সাথে সচারচর সহবাস করা যায়, তবে তালাকের পর তার ইদ্দত। তিন মাস। শায়খ আবু আলী নাসাফী (র) বলেন, এই হুকুম তখনই প্রযােজ্য হবে যখন সে 'মরাহাকা' তথা নাবালিগ' হওয়ার কাছাকাছি বয়সে না পৌছে থাকে, পক্ষান্তরে সে যদি বালিগ হওয়ার কাছাকাছি বয়সে পোঁছে তবে আবুল ফযল (র)-এর মতে তার ইদ্দত মাসের হিসাব অনুসারে সম্পন্ন হবে না। বরং উক্ত সহবাসে তার গর্ব সঞ্চারিত হয়েছে কিনা তা প্রকাশিত না হওয়া পর্যন্ত তার বিষয়টি মুলতবী থাকবে। (তামারতাশী) কোন নাবালিগাকে তার স্বামী তালাক দিয়ে দিল, তারপর একদিন কম তিন মাস অতিক্রান্ত হয়ে গেল, অতঃপর তার হায়িয আসল। তাহলে তিন হায়িয না যাওয়া পর্যন্ত আর ইদ্দত পূর্ণ হবে না। এক ব্যক্তি তার স্ত্রীকে রাজই তালাক দেওয়ার পর সে একদিন কম তিন হায়িয ইদ্দত পালন করা। অতঃপর তার স্বামী মারা গেল, তবে তার উপর চারমাস দশ দিনের ইদ্দত পুনরায় ওয়াজিব হবে। (গায়াতুল বয়ান)

পাঠক মিথ্যুকবাজ ইসলামবিরোধী গোষ্ঠীদেরকে দেখবেন উপরের বর্ণনা গুলো লাল দাগ দেখিয়ে এমনভাবে বুঝানোর চেষ্টা করবে যে সেখানে বাচ্চা শিশু, কচি শিশুর কথা বলা হয়েছে। অথচ আপনারা নিজেরাই যাচাই করে দেখুন এমন কোনো কথা উপরের কোনো বর্ণনায় বলা হয়নি। বরং সার্বিকভাবে এটাই পরিস্কার বুঝা যায় যেসব নারীর সাথে সহবাস করা যাবে অর্থাৎ মনস্তাত্ত্বিক ও শারীরিকভাবে ফিট সেই সব নারীর বয়স অল্প তাই হায়েজ শুরু হয়নি এমন নারীদের কথাই বুঝানো হয়েছে। স্বপক্ষে শক্তিশালী দলীল ভিত্তিক আলোচনা সামনে আসছে। পড়তে থাকুন মন দিয়ে।

যে তথ্য ইসলামবিরোধীরা আপনাকে জানাবে নাঃ

পাঠক, আপনাদেরকে আমি অনুরোধ করছি, উপরে বর্ণিত সকল তথ্য আরেকবার পাঠ করুন মনোযোগ দিয়ে আর আমাকে বলুন তো কোথায় "শিশু" শব্দটি লেখা আছে? কোথাও বিন্দুমাত্র শিশু শব্দটিই লেখা নাই। অথচ ইসলামবিরোধী মিথ্যুকবাজ গোষ্ঠীরা দাবি করে বসে আছে যে "শিশু স্ত্রীর সাথে সহবাসের কথা বলা আছে সুরা তালাকে"। বাচ্চা বা শিশু শব্দের বিভিন্ন আরবি শব্দ রয়েছে। যেমন “তিফলুং”, “আতফালুন” ইত্যাদি। গভীরভাবে লক্ষ্য করলে দেখা যায় এই শব্দ গুলো সুরা তালাকের চার নাম্বার আয়াতে কোথাও উল্লেখ হয়নি। তাহলে নাস্তিকরা কেন মিথ্যাচার করে যাচ্ছে? 

এখানে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হচ্ছে আয়াতে তাহলে কোন ধরণের নারীদের কথা বলা হয়েছে? একেবারে সহজ উত্তর হলো উক্ত আয়াতে সেই সকল নারীদের কথা বলা হয়েছে যাদের বয়স অল্প এবং অল্প বয়স্কা হওয়ার কারণে যাদের হায়েজ এখনো হয়নি অথচ তারা শারীরিক এবং মানুসিক ভাবে উপযুক্ত-এই টাইপের নারীদের কথা বলা হয়েছে। আমরা তাদেরকে "অপ্রাপ্তবয়স্কা" "নাবালেগ" "কম বয়স" ইত্যাদি শব্দে ডাকতে পারি কিন্তু এরমানে এই না যে তারা কচি বাচ্চা শিশু।

এমন অনেক বাস্তব উদাহরণ পাওয়া যায় যেখানে খুবই কম বয়সী নারী একাধিক সন্তান জন্ম দিয়েছেন এমনকি নিজেই নিজের সন্তানদের লালন পালন করে যাচ্ছেন। নাস্তিকদের প্রিয় দেশ ব্রিটেনেই এমন অসংখ্য ঘটনার উদাহরণ পাওয়া যায় (১)। শুধু কি তাই এই তো ১৯৬৫ এর দিকেও আমেরিকার ডেলাওয়ার রাজ্যে ৫০ বছরের পুরুষ সর্বনিম্ন সাত বছরের মেয়ের সাথেও বাসর যাপন করতে পারতেন। তা সমাজগত ও আইনগতভাবেও পুরোপুরি সিদ্ধ ছিল (২)। যদি কম বয়সী কোনো নারী হতে পারে সেটা দশ,এগারো,বারো, তেরো,পনেরো-সন্তান জন্ম দেয় এবং এতে যদি কারো ক্ষতি না হয় একইসাথে শারীরিক ও মানসিকভাবে উপযুক্ত থাকে তাহলে যৌক্তিকভাবে অবশ্যই আমরা এমন নারীকে শিশু বলতে পারি না। হ্যাঁ, বয়স কম বা অপ্রাপ্তবয়স্ক এমনকি নাবালেগও বলতে পারি কিন্তু শিশু নয় (৩)।

নাস্তিকরা যেসব দেশকে সভ্য হিসেবে মনে করে থাকে সেই সব দেশেই এমন অনেক নারী আছে যাদের বয়স অনেক কম এমনকি অল্প বয়সেই সন্তান জন্ম দিয়ে নিজের স্বামীর সাথে সুখে জীবন যাপন করছে(৪)। তেরো বছর বয়সে মা হয়ে আনন্দ প্রকাশ করছে এমন ঘটনার উদাহরণও রয়েছে(৫)। বারো বছরের এক নারী সাতত্রিশ বছরের পুরুষকে বিয়ে করেছে (৬)। পনেরো বছরের নারী আশি বছরের পুরুষকে হাসিখুশি বিয়ে করেছে (৭)। আঠারো বছর বয়সী এক মেয়ে বাষট্টি বছর বয়সী পুরুষের সাথে সম্পর্কে যুক্ত (৮)। একান্ন বছর বয়সী পুরুষের সাথে রিলেশন করছে ষোল বছর বয়সী কন্যা (৯)। যে কোনো মানুষ বুঝে যাবে এই ধরণের নারীদের বয়স যদিও কম কিন্তু এরা শারীরিক এবং মনস্তাত্ত্বিকভাবে উপযুক্ত। মূর্খ নাস্তিকগোষ্ঠী কি এদেরকে কচি কচি,বাচ্চা বাচ্চা শিশু বলবে?

তর্কের খাতিরে যদি ধরেও নেই সেসব নারীরকে শিশু বলা যাবে তাহলেও নাস্তিকদের আপত্তি করার সুযোগ নেই কারণ কোনো নারী যদি কম বয়সেই হতে পারে সেটা বারো, তেরো হয় এবং সেই নারী শারীরিক এবং মনস্তাত্ত্বিকভাবে উপযুক্ত হয় তাহলে এরকম নারীদেরকে কেউ চাইলে হয়তো শিশু বলতে পারে কিন্তু সেই নারী যদি বিয়ে করে অথবা স্বামীর সাথে সহবাস পর্যন্ত করে এমনকি সন্তানও যদি হয় একইসাথে যদি কারও কোনো ক্ষতি না হয় তবে এমন নারীর দাম্পত্য জীবনকে অমানবিক বলার সুযোগ নেই। তবে যৌক্তিকভাবে এই টাইপের মেয়েদের শিশু বলার থেকে অল্পবয়স্কা বলাটাই বেশি যৌক্তিক। শিশু না বলাটাই উত্তম কারণ “সব শিশুই অপ্রাপ্ত বয়স্ক” কিন্তু “সব অপ্রাপ্ত বয়স্ক মেয়েই শিশু নয়” এই কথাটি ভালো করে মাথায় বসিয়ে নিন আপনি। উক্ত আয়াতে সেই সব নারীই উদ্দেশ্য যাদের বয়স কম হবার কারণে হায়েজ আসে নেই তবে তারা শারীরিক ও মনস্তাত্ত্বিকভাবে উপযুক্ত। কম বয়স্কা স্ত্রী যদি স্বামীর সাথে সহবাস করতে চায় সেটাও পারবে। কারণ সেই নারী কচি শিশু নয় বরং কম বয়সেই যথেষ্ট ম্যাচিউর। আর ইসলাম তো এই সম্পর্কে ক্ষতিকে নিষেধ করে দিয়েছেই। সামনের আলোচনায় আসছে পড়তে থাকুন।

তাফসীরে জালালাইন, ৬ খণ্ড, ৫৮৮ ও ৫৮৯ পৃষ্ঠায় বর্ণিত হয়েছে,

এখানে মনে রাখতে হবে কুরআনের সুস্পষ্ট ঘোষণা অনুযায়ী ইদ্দত পালনের প্রয়োজন হয় সে স্ত্রীলোকের যার সাথে স্বামী নিবিড় একাকীত্বে মিলিত হয়েছে। কারন নিবিড় একাকীত্বে মিলিত হওয়ার পূর্বে তালাক হলে আদৌ কোন ইদ্দত পালন করতে হয় না - সুরা আহযাব ৪৯ । এ কারনে যে সব স্ত্রীলোকের হায়েজ বন্ধ হয়ে গেছে , তাদের ইদ্দত বর্ণনা করার সুস্পষ্ট তাৎপর্য এই যে এ বয়সে স্ত্রীলোকদের শুধু বিবাহ দেয়াই জায়েজ নয় বরং তার সাথে স্বামীর নিবিড় একাকীত্বে মিলিত হওয়াও জায়েজ। ফলে এ কথা সুস্পষ্ট যে কুরআনে যাকে জায়েজ বলা হয়েছে তাকে নিষিদ্ধ করার সাহস বা অধিকার কোন মুসলমানেরই হতে পারে না। যে স্ত্রীলোকের হায়েজ আসা শুরু হয়নি তাকে যদি তালাক দেয়া হয় এবং পরে ইদ্দত পালনকালে তার হায়েজ এসে পড়ে তাহলে সে সেই হায়েজ হতেই ইদ্দত পালন শুরু করবে এবং হায়েজ সম্পন্না স্ত্রীলোকের মতোই তাকে ইদ্দত পালন করতে হবে - কুরতুবী।

যদি কচি শিশুর সাথে ইসলামে সহবাস করা বৈধ থাকতো তাহলে নবীজি (সা) আয়েশা (রা)কে বিয়ে করে সাথে সাথেই সহবাস করতেন। আয়েশা (রা)কে বিয়ে করে নবীজি (সা) যে কারণে তিন বছর অপেক্ষা করেছিলেন সেই কারণ গুলো মধ্যে পাওয়া যায় নবীজি (সা) এর মোহর দেয়ার মতো পর্যাপ্ত অর্থ ছিল না এবং আয়েশা (রা) তখন প্রাপ্তবয়স্কা ছিলেন না। নাস্তিকরা “দেনমোহর দেবার অর্থ ছিল না” এই রেফারেন্স দেখালেও “আয়েশা (রা)যে প্রাপ্তবয়স্কা না হবার কারণেও নবীজি (সা) তিনবছর অপেক্ষা করেছিলেন” এই রেফারেন্স কৌশলে এড়িয়ে যায়। আমি সরাসরি পরিস্কার প্রমাণ তুলে ধরছি। মন দিয়ে পড়তে থাকুন।

মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল গালিব (হাঃফি) লিখিত “সীরাতুর রাসুল (সা)” ১৯৯ পৃষ্ঠায় বর্ণিত হয়েছেঃ

একাদশ নববী বর্ষের শাওয়াল মাসে অর্থাৎ হযরত সওদা বিন্তে যাম’আর সাথে বিয়ের ঠিক এক বছরের মাথায় ওছমান বিন মাযউন (রা) এর স্ত্রী খাওলা বিনতে হাকীম (রা) এর প্রস্তাবক্রমে হযরত আবু বকরের নাবালিকা কন্যা আয়েশা রাসুলুল্লাহ (সা) বিবাহ করেন। বিয়ের তিন বছর পরে সাবালিকা হলে নয়  বছর বয়সে মদীনায় ১ম হিজরী সনের শাওয়াল মাসে তিনি নবীগ্রহে গমন করেন

সুনানে ইবনে মাজাহ,হাদিসঃ৩৩২৪,সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিতঃ

আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃআমার মা আমাকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সংসারে পাঠাতে চাচ্ছিলেন বিধায় আমার দৈহিক পরিপুষ্টির জন্য চিকিৎসা করাতেন। কিন্তু তা কোন উপকারে আসলো না। অবশেষে আমি তাজা খেজুরের সাথে শসা মিশিয়ে খেলাম এবং উত্তমরুপে দৈহিক পরিপুস্টি লাভ করলাম-ihadis.com

রাশীদ হাইলামায যিনি একজন বিখ্যাত ইসলামী গবেষক, চিন্তাবিদ এবং সীরাত লেখক, তাঁর লেখা "জীবন ও কর্ম আয়েশা (রা)" অনুবাদ করেছেন মুহাম্মদ আদম আলী, এই কিতাবের ৩০ ও ৩১ পৃষ্ঠায় বর্ণিত আছে,

হযরত জিবরাইল (আ) রাসুল (সা) কাছে এসে বললেন আয়েশা আপনার স্ত্রী তাকে ঘরে তুলুন । এদিকে আবু বকর (রা)ও রাসুলের কাছে এসে একই প্রশ্ন করলেন ইয়া রাসুলুল্লাহ ! আপনার স্ত্রীকে ঘরে তুলে নিচ্ছেন না কেন? রাসুল (সা) জবাবে বললেন সাদাক। সাদাক হচ্ছে মোহরের টাকা যা বিয়ের সময় স্ত্রীকে পরিশোধ করতে হয়।আবু বকর (রা)এর নিকট কোন জাগতিক মূল্য দিয়ে রাসুল (সা)কে তুলনা করার অবকাশ ছিল না । তিনি রাসুল (সা)কে প্রয়োজনীয় টাকা ধার দিলেনরাসুল (সা) সেটি দেরি না করে আয়েশা (রা) এর কাছে পাঠিয়ে দেন। জাহেলি যুগে নারীদের কোনো অধিকার ছিল না ।মোহরের টাকা মেয়ের বাবাই আত্মসাৎ করতো এবং মেয়েকে সেটা দিত না। যতই দিন গড়াতে থাকে রাসুল (সা) সমাজের এসব দুর্নীতি দূর করতে থাকেন এবং ইসলামী সমাজ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত করেন।

ইসলামবিরোধীদের জন্য এখানে বড় বড় কিছু প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে। যদি কচি শিশুর সাথে সহবাস ইসলামে বৈধ হতো তাহলে নবীজি (সা) কেন তিন বছর অপেক্ষা করতে যাবেন? এমনকি কেনই বা আয়েশা (রা) এর আম্মাজান উনাকে দৈহিক পরিপুষ্টি লাভ করাতে চাইবেন? আরো চিন্তা করার মতো কথা হচ্ছে,হযরত মোহাম্মদ (সা) যদি মিথ্যুক আর খারাপ মানুষ হতেন অথবা পিডোফিলিয়ায় আক্রান্ত হতেন তাহলে কেন তিনি এই তিনবছর সামান্য দেন মোহরের জন্য অপেক্ষা করতে যাবেন? উনি তো চাইলেই নতুন নিয়ম বানিয়ে আয়েশা (রা)কে বিয়ে করে সাথে সাথে সঙ্গম করতে পারতেন অথচ উনি এসব কিছুই করেন নাই। কেন? ইসলামে যদি কচি শিশু স্ত্রীর সাথে সহবাস জায়েজ থাকতো তাহলে নবীজি (সা) আয়েশা (রা)কে বিয়ে করে সাথে সাথেই সহবাস করতে পারতেন।

তাফসীরের ব্যাখ্যা সমূহ খেয়াল করুন একটি ব্যাখ্যাতেও কিন্তু “বাচ্চা-কচি শিশু” অনুবাদ করা হচ্ছে না বরং সেই নারীদের কথাই বলা হচ্ছে যাদের বয়স কম হওয়ার জন্য হায়েজ হয় না বা শুরুই হয় নি। যেমন তাফসীরে ইবনে কাসীর ১৭ খণ্ডে, ৫৪৩ পৃষ্ঠায় বলা হচ্ছে 

"যদি তোমরা সন্দেহ কর" এর তাফসীরে দুটি উক্তি রয়েছে। এক তো এই যে তারা রক্ত দেখলো এবং এতে সন্দেহ থাকলো যে এটা হায়েজের রক্ত , না ইসতাহাযা রোগের রক্ত। আর দ্বিতীয় উক্তি এই যে তাদের ইদ্দতের হুকুমের ব্যাপারে সন্দেহ হয় এবং সেটা জানা যায় না। তাহলে সেটা হবে তিন মাস। এই দ্বিতীয় উক্তিটিই বেশি প্রকাশমান। এই রেওয়ায়েতটিও এর দলিল যে হযরত উবাই ইবনে কাব (রা) বলেছিলেন হে আল্লাহর রাসুল (সা) বহু স্ত্রীলোকদের ইদ্দত এখনো বর্ণনা করা হয়নি। যেমন নাবালেগ মেয়ে, বৃদ্ধা এবং গর্ববতী স্ত্রীলোকদের (ইদ্দতের বর্ণনা দেয়া হয়নি) তখন এই আয়াত অবতীর্ণ হয়। 

পাঠক খুবই গভীরভাবে লক্ষ্য করুন। সন্দেহ কখন হয়? শিশুদের ক্ষেত্রে তো হায়েজ এর সন্দেহ আসতেই পারে না কারণ শিশুদের হায়েজই হয় না-এটি সকলেই জানে। তাহলে একজন নারী যখন শারীরিক এবং মনস্তাত্ত্বিকভাবে উপযুক্ত হয়ে যায় অথচ তার বয়স কম এবং হায়েজ হচ্ছে কি হচ্ছে না সেটাও বুঝা যাচ্ছে না এই ক্ষেত্রে সন্দেহ তৈরি হয় আর এই সন্দেহর কথাই মূলত আয়াতে বলা হচ্ছে। সন্দেহ সেই সব মেয়েদের ক্ষেত্রেই হয়ে যখন মেয়ে অল্পতেই সক্ষম হয়ে যায় অথচ তার হায়েজ এসেছে কিনা সেটা জানাই যাচ্ছে না। আর এমন নারীদের ইদ্দতও হবে তিনমাস। প্রমাণ গুলো পড়ুন।

তাফসীরে আহসানুল বায়ান,৯৯৪ পৃষ্ঠায় বর্ণিত সুরা তালাক ৬৫:৪ আয়াতের তাফসীরটি খেয়াল করুন।

এ হল সেই মহিলাদের ইদ্দত যাদের বার্ধক্যের কারনে মাসিক বন্ধ হয়ে গেছে অথবা যাদের এখনো মাসিক শুরু হয়নি। জ্ঞাতব্য যে, বিরল হলেও এমনও হয় যে মেয়ে সাবালিকা হয়ে যায় অথচ তার মাসিক আসে না

কোনো নারী যদি পনেরো অথবা সতেরো বছরও হয় আর তার হায়েজ না হয় এরপরেও তাকে প্রাপ্তবয়স্কা হিসেবে ধরে নিতে হবে। তাফসীরে মাজহারী,১১ খণ্ড, ৫৬২ পৃষ্ঠায় বর্ণিত হয়েছে,

এরপর বলা হয়েছে তাদের ইদ্দত সম্পর্কে তােমরা সন্দেহ করলে তাদের ইদ্দতকাল হবে তিন মাস এবং যারা এখনাে রজঃস্বলা হয়নি, তাদেরও; আর গর্ভবতী নারীদের ইদ্দতকাল সন্তান প্রসব পর্যন্ত। একথার অর্থ সাধারণভাবে সকল তালাকপ্রাপ্তাদের ইদ্দতের সময়সীমা তাে ইতােপূর্বে বর্ণনা করা হয়েছেই, এখন যদি দ্যাখাে তােমাদের তালাকপ্রাপ্তা স্ত্রীরা বৃদ্ধা হওয়ার কারণে ঋতুস্রাব রহিতা, অথবা ঋতুস্রাবমুক্তা অপ্রাপ্তবয়স্কা হওয়ার কারণে, তবে তাদের জন্য ইদ্দতের সময়সীমা নির্ধারণ করা হলাে তিন মাস। উল্লেখ্য, তিন ঋতু হয়ে থাকে সাধারণত তিন মাসেই, যেমন প্রাপ্তবয়স্কা হওয়ার বয়স ধরা হয় সাধারণত পনেরাে অথবা সতের বৎসরএর মধ্যে কোনাে মেয়ে ঋতুগ্রস্ত না হলেও তাকে ধরে নিতে হয় প্রাপ্তবয়স্কা। যেমন সম্পদের জাকাত ফরজ হয় এক বৎসর পূর্ণ হলে। এর মধ্যে সম্পদ সাধারণত কিছু না কিছু বর্ধিত হয়েই থাকে। অথবা ঋতুস্রাব হওয়া থেকে নিরাশ হওয়ার বয়স ধরা হয় পঞ্চান্ন বা ষাট বৎসর, তেমনি বৃদ্ধা ও অপ্রাপ্তবয়স্কদের ইদ্দতের সময়সীমা এখানে নির্ধারণ করা হয়েছে তিন মাস। শরিয়তে এরকম সময় বেঁধে দেওয়ার দৃষ্টান্ত আরাে রয়েছে।

আশরাফুল হিদায়া,৩ খণ্ড, ৫৭৬,৫৭৭ পৃষ্ঠায় বর্ণিত হয়েছে,

ইবারতের মাঝে যে সকল মহিলাদের হায়েজ আসে না তার কয়েকটি সুরত বর্ণনা করেছেন। সল্প বয়সের কারণে কিংবা অতিবৃদ্ধা হওয়ার দরুন, অথবা নারী বয়সের হিসেবে বালেগা হয়েছে অর্থাৎ সাহেবাইনের মতে পনেরো বছর আর ইমাম আযমের মতে সতের বছর বয়সের হয়েছে তবে এখনো তার হায়েজ আসে না। উক্ত তিন সুরতে মহিলার ইদ্দত তিন মাস গণনা করা হবে যা মূলত তিন হায়েজের স্থলবর্তী হবে। এর প্রমাণ হলো আল্লাহর বাণী ‘তোমাদের যে সকল স্ত্রীদের আর ঋতুমতী হওয়ার আশা নেই তাদের ইদ্দত সম্পর্কে তোমরা সন্দেহ পোষণ করলে তাদের ইদ্দত হবে তিন মাস এবং যারা এখনো রজ;স্বলা হয়নি তাদেরও আর গর্ভবর্তী নারীর ইদ্দতকাল সন্তান প্রসব পর্যন্ত”।

সুতরাং সার্বিক তথ্য প্রমাণ গুলো সামনে রাখলে এটা সুস্পষ্ট হয়ে যায় যে ইসলামে কচি শিশু স্ত্রীর সাথে সহবাস বৈধ নয় বরং এমন নারীর সাথে সহবাস বৈধ করেছে যে কিনা শারীরিক ও মনস্তাত্ত্বিকভাবে উপযুক্ত অথচ তার বয়স কম হবার কারণে হায়েজ শুরুই হয়নি।

সহিহ মুসলিমের শরাহ গ্রন্থে ৯ খণ্ড,২০৬ পৃষ্ঠায় বর্ণিত হয়েছে (ক),

অল্পবয়সী মেয়েকে বিয়ে করা জায়েয হওয়ার মানে এই নয় যে, তার সাথে সহবাস করা জায়েজ; বরং এটি করা উচিত নয় যতক্ষণ না সে এটির জন্য সক্ষম হয়এ কারণে নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম আয়েশা (রাঃ)-এর সাথে তাঁর বিবাহ সম্পন্ন হতে বিলম্ব করেছিলেন। আল-নওয়াবী বলেন: বিবাহ সম্পন্ন করার সময় একটি অল্পবয়সী বিবাহিত মেয়ের বিবাহের পার্টির বিষয়ে, যদি মেয়েটির স্বামী এবং অভিভাবক এমন কিছুতে একমত হন যা যুবতীর ক্ষতি করবে না, তবে তা হতে পারে। সম্পন্ন করা যদি তারা দ্বিমত পোষণ করেন, তবে আহমদ এবং আবু উবায়দ বলেন যে একবার একটি মেয়ে নয় বছর বয়সে পৌঁছে গেলে তার সম্মতি ব্যতীত বিবাহ সম্পন্ন করা যেতে পারে, তবে কার বয়স কম তার ক্ষেত্রে এটি প্রযোজ্য নয়। মালিক,আল-শাফাঈ এবং আবু হানিফা বলেছেন: মেয়েটি সহবাসের জন্য সক্ষম হলে বিবাহ সম্পন্ন করা যেতে পারে, যা একটি মেয়ে থেকে অন্য মেয়েতে পরিবর্তিত হয়, তাই কোন বয়স সীমা নির্ধারণ করা যাবে না। এটি সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি। আয়েশা রা.-এর হাদীছে বয়সের সীমা নির্ধারণ বা নয় বছর বয়সের আগে সামর্থ্যবান মেয়ের ক্ষেত্রে নিষেধ করা বা এমন কোনো মেয়ের ক্ষেত্রে অনুমতি দেওয়ার কিছু নেই। এর জন্য সক্ষম হয়নি এবং নয় বছর বয়সে পৌঁছেছে। আল-দাউদি বলেন: ‘আয়িশাহ (রাঃ) শারীরিক পরিপক্কতায় পৌঁছেছিলেন যে সময়ে তার বিবাহ সম্পন্ন হয়েছিল।

এরপরেও যদি নাস্তিকগোষ্ঠী বানিয়ে বানিয়ে রসিয়ে রসিয়ে ইসলাম নিয়ে জালিয়াতি করতে থাকে তাহলে আমরা তাদের সুস্থতা কামনা করতে পারি। তারা যাতে দ্রুত মানুষের মতো চিন্তাশীল মগজ পায় সেই কামনা করতে পারি। তারা যাতে নাস্তিকতার বিষাক্ত ভাইরাস থেকে দ্রুত মুক্তি পেতে পারে সেই আশা করি। কেন এই কথা গুলো বললাম? জানতে সামনে পড়তে থাকুন।

স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদেরকে ধর্ষণ করার মুক্তচিন্তাঃ

নাস্তিকগোষ্ঠীকে মাথায় এই কথা ভালো মতো বসিয়ে নিতে হবে যে তাদের নৈতিক কোনো ভিত্তি নেই। তারা যেমন চায় নিজেদের মতো মুক্তচিন্তা করতে তেমনি অন্য লোকেরাও নিজের মতো করে মুক্তচিন্তা করে থাকে। অন্য কোনো লোকের কাছে ভালো নাকি খারাপ সেটা দেখার প্রয়োজন নেই মুক্তচিন্তা করতে হলে। চিন্তার মুক্তির আন্দোলন এমন একটি কথা যা বর্বরতা থেকে শুরু করে সকল প্রকার কুকর্মকে বৈধতা প্রদান করে। যদি আপনি এই কথার সাথে দ্বিমত পোষণ করেন তাহলে আপনি আর চিন্তার মুক্তিতে নেই বরং আপনার চিন্তায় সীমারেখা আছে যাকে চিন্তার মুক্তির বলা যায় না। যে কোনো নাস্তিক চাইলেই ধর্ষণ করার মুক্তচিন্তা করতে পারে আবার নাও করতে পারে। ইসলামের বাইরে যেমন নাস্তিক চাইলে মুক্তচিন্তা করতে পারে তেমনি “ধর্ষণ খারাপ” এই বিধানের বাইরে গিয়েই নাস্তিক চাইলে মুক্তচিন্তা করতে পারে। 

সিমোন দ্য বোভোয়ার যিনি ছিলেন একাধারে নারীবাদী আন্দোলন ও নারীমুক্তি আন্দোলনের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা এনাদের মুক্তমনা চরিত্রের চেহারা কেমন জানেন? নাস্তিকদের কিতাব গুলোতেই এসব তথ্যের বর্ণনা থাকে। আমি শুধু আপনাদের সামনে তুলে ধরছি মাত্র। অন্যতম প্রসিদ্ধ মুক্তমনা নাস্তিক নাম প্রবীর ঘোষ, উনার লিখিত “যুক্তিবাদের চোখে নারী-মুক্তি” বইয়ের ১০৩ পৃষ্ঠায় বর্ণিত হয়েছেঃ

নারীবাদী আন্দোলন ও নারীমুক্তি আন্দোলনের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সিমোন দ্য বোভোয়ার।তার সঙ্গে জঁ-পল সার্ত্রের বিবাহ বহির্ভূত শারীরিক সম্পর্ক ছিল।‘দ্যা ডেঞ্জারাস লিয়াজো’ বইটি থেকে আমরা জানতে পারি,জঁ-পল সার্ত্র ও সিমোন দ্য বোভোয়ার তাদের ছাত্রী ও ছাত্রদের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক গড়তেন বা গড়তে বাধ্য করতেন। এমনকী সার্ত্রে তার ছাত্রদের পাঠাতেন বোভোয়ারের সঙ্গে মিলনের জন্য। বিনিময়ে বোভোয়ারও তার ছাত্রীদের পাঠাতেন সার্ত্রের কাছে। সেই সময়কার বুদ্ধিজীবীরা ওদের বিরুদ্ধে নষ্ট চরিত্রের অভিযোগ এনেছিলেন।কিন্তু নারী স্বাধীনতা,ক্ষমতায়ন ও চেতনামুক্তি অভিযাত্রায় সিমোন দ্য বোভোয়ার আজ প্রাতঃস্মরণীয়।

চিন্তা করুন একজন নারীবাদী আন্দোলন ও নারীমুক্তি আন্দোলনের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা অথচ ছাত্র ছাত্রীদেরকে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সাথে সঙ্গম করার জন্য বাধ্য করতেন আর সঙ্গম করার জন্য আদান প্রদান করতেন? একে মুক্তচিন্তায় ধর্ষণ ছাড়া কিছু বলা যায় না। বুদ্ধিজীবীরা তাদের বিরুদ্ধে নষ্ট চরিত্রের অভিযোগ করলেই কি সেটা তাদের কাছে নষ্ট হয়ে যেতে বাধ্য? না। কারণ তাদের জীবন,তাদের দেহ,তাদের ক্ষমতা আপনি এখানে বলার কে? তাই না? তাদের নৈতিকতায় তাদের ছাত্রী-ছাত্রদের সাথে শারীরিক সম্পর্ক গড়তে বাধ্য করবেন নাকি করবেন না সেটা নিয়ে আপনি বলার কেন? মুক্তচিন্তায় জবরদস্তি করেও সম্মতি নেয়া যায় ও সম্মতি ছাড়াও যে সঙ্গম করা যায় এই প্রমাণ কি এখনো পাওয়া যায় নি? নাস্তিক প্রবীর ঘোষ, উনার লিখিত “যুক্তিবাদের চোখে নারী-মুক্তি” বইয়ের ১০৩ পৃষ্ঠাতেই বলেছেন যেঃ

বোভোয়ার ও সার্ত্রের জীবনে যত উচ্ছৃঙ্খলতা ছিল,তা সবই তাদের ব্যাক্তিজীবনে আবদ্ধ। তাদের সৃষ্টিতে তা নগ্ন রুপ পায়নি। এই বক্তব্যের মধ্য দিয়ে আমি অবশ্য তাদের বা অন্য কারও ব্যাক্তিজীবনের যৌন উচ্ছৃঙ্খলতা বা বহুগামিতালে সামান্যতম সমর্থন করছি না।বরং নিন্দা করছি, এই নিন্দনীয় কাজের চেয়ে তসলিমার কাজ বহুগুণে বেশি নিন্দনীয়।

নাস্তিক মুক্তমনা প্রবীর ঘোষ সাহেব যদিও নিন্দা প্রকাশ করেছেন কিন্তু উনার নিন্দা প্রকাশ করার কারণেই কি উপরে যৌন বর্বরতা খারাপ প্রমাণিত হয়ে যাবে? কারণ উপরে যারা যৌন কাজ করেছে তারা কিন্তু ভালো আর ব্যাক্তিস্বাধীনতা মেনেই করেছে আর মুক্তমনা প্রবীর ঘোষ প্রথমে সেটা স্বীকারও করে নিয়েছেন যে সেসব কাজ তাদের ব্যাক্তিজীবনে আবদ্ধ। তাহলে ফলাফল পরিস্কার, একজন মুক্তমনার কাছে একটি বিষয় অনৈতিক মনে হতেই পারে কিন্তু তারমানে এটা নয় যে সেটা অন্য মুক্তমনাদের কাছে অনৈতিক হতে বাধ্য? একইভাবে যেসব নাস্তিকরা এটা বিশ্বাস করে যে ধর্ষণ করা খারাপ তারমানে এটা না যে অন্য নাস্তিকদের কাছে ধর্ষণ করাকেও খারাপ বলে বিশ্বাস করতে হবে বরং অন্য কোনো মুক্তমনা নাস্তিক চাইলেই অবিশ্বাস করতে পারে “ধর্ষণ করা খারাপ” এই বিধানটিকে-এই স্বাধীনতা তার রয়েছে। মুক্তমনা প্রবীর ঘোষ লিখিত “যুক্তিবাদের চোখে নারী-মুক্তি” বইয়ের ১০৩ পৃষ্ঠাতে এও বর্ণিত যেঃ 

 

প্রবীর ঘোষকে প্রশ্ন করা হয় যে তসলিমা একজন ধর্মহীন,মানবতাবাদী মানুষ এটা তো স্বীকার করবেন? উত্তরে নাস্তিক প্রবীর ঘোষ বলেন তসলিমা কতটা মানবতাবাদী আসুন দেখি। কারন ধর্মহীন বা নাস্তিক হলেই মানবতাবাদী, ভালো মানুষ হবেন এমনটা সত্যি নয়। নাস্তিক লম্পট,দুর্নীতিগ্রস্ত মানুষ আমরা অনেক দেখেছি

 

নাস্তিক মুক্তমনাদের এসব জঘন্য ঘটনা আপনি যে কোনো মুক্তচিন্তকদের সামনে পেশ করবেন তারা বলবে এগুলো তাদের ব্যক্তিগত ব্যাপার। একই যুক্তিতে প্রতিটি মুক্তমনাদের ধর্ষণ করার ব্যক্তিগত অধিকার রয়েছে এই সত্যকথা অস্বীকার করা হয় কেন তাহলে? যেসব নাস্তিকরা চিন্তার মুক্তিতে ধর্ষণ করার কথা ভাবে তারা কেন আপনার দেয়া বিধানে চলবে? আপনি কি তার দেয়া বিধানে চলেন? মুক্তচিন্তায় কি এরকম কোনো বিধিনিষেধ আছে যে সবাইকে সেটা বিশ্বাস করতেই হবে? মুক্তচিন্তা কি স্বাধীনচিন্তা নয়? অবতার সিস্টেম অথবা পোপ সিস্টেম কি মুক্তচিন্তায় রয়েছে? তাহলে মুক্তচিন্তা আসলে মুক্তচিন্তা থাকবে কিভাবে? ধরুন আপনি এক হাতে কলা আরেক হাতে টক নিলেন। এখন আপনি কি সবার জন্য নির্ধারণ করে দিতে পারেন যে সবাইকেই এই দুটোই বেছে নিতে হবে? না। আপনি এমন কেউ নোন যে আপনাকে সবার মেনে নিতেই হবে। মুক্তচিন্তায় কেউ চাইলে যেমন কলা পছন্দ করতে পারে আবার কেউ টক পছন্দ করতে পারে। একইভাবে কেউ চাইলে মুক্তমনে ধর্ষণ করাকে নিজের জন্য ভালো মনে করতে পারে আবার খারাপও মনে করতে পারে। কোনো কিছু কারো কাছে জঘন্য লাগলেই সেটাকে অনৈতিক কেন মনে করতে হবে? আর কেনই বা এটা বেআইনি হবে? মুক্তবুদ্ধির দৃষ্টিতে ভালো-খারাপের বিধি-বিধান মানতে সকল মুক্তমনা বাধ্য না কারণ সবাই সবার নিজের মুক্তচিন্তা দিয়ে সিদ্ধান্ত নেবে?

শুধু কি মুক্তচিন্তায় ধর্ষণ বৈধ? না। এমনকি নারীরা নিজের শিশুকে খুন করে ফেলার মুক্তচিন্তা করে। কি বিশ্বাস হচ্ছে না? ইসলামবিরোধী সম্প্রদায় এগুলো আপনাদেরকে জানাবে না কারণ তো আপনি জানেন? কি? প্রমাণ সহ তুলে দিচ্ছি। “BBC NEWS। বাংলা” ১৮ জুলাই ২০১৯ তারিখে “যেসব মায়েরা নিজ সন্তান হত্যা করেন” শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ করা হয়। সেখানে বর্ণিত হয় (১০),

নিজেরই গর্ভজাত সন্তানকে হত্যার দায়ে রাশিয়াতে প্রতিবছর বিচারের মুখোমুখি হচ্ছেন কয়েক ডজন মা। সন্তান হত্যাকারীদের এই তালিকায়  অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন গৃহিণী থেকে শুরু করে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সফল ব্যবস্থাপকও। সন্তানকে খুন করবার এই ঘটনা কেবল রাশিয়াতেই ঘটছে না, অ্যামেরিকাতেও প্রতি চার জনের একজন মা নিজের সন্তানকে মেরে ফেলতে চায় বলে জানাচ্ছে মনোবিজ্ঞানীরা। ২০১৪ সালের এক গবেষণা থেকে জানা যাচ্ছে, অ্যামেরিকায় গত ৩২ বছরে যত খুন হয়েছে তার মোট ১৫ শতাংশই মূলত মায়ের হাতে শিশু সন্তানের মৃত্যুর ঘটনা। ডিপার্টমেন্ট অফ জাস্টিসের তথ্য থেকে জানা যায়, ১৯৭৬ থেকে ১৯৯৭ সালের মধ্যে ২১ বছরে মোট ১১ হাজার শিশু অভিভাবকদের হাতে নিহত হয়েছে। গড়ে এই মৃত্যুর সংখ্যা বছরে ৩৪০টিরও বেশি। কিন্তু রাশিয়ার চিত্রটা যেনো আরো কঠিন। রাশিয়ায় টিকে থাকতে গেলে অনেক শক্ত ও অনমনীয় মনোভাবের হতে হয়। ফলে কেউ সেখানে তার মানসিক স্বাস্থ্য সংকট নিয়ে আরেকজনের সাথে সহজে কথা বলতে চায় না। শিশু হত্যার এই কাহিনীগুলো মূলত দেখাচ্ছে যে, সন্তান জন্ম দেয়ার পরপরই অনেক মা সন্তান জন্মদান পরবর্তী বিষন্নতায় আক্রান্ত হয়। কিন্তু পরিবারের নিকটজনেরা অনেকক্ষেত্রেই এই বিষণ্নতাকে চিহ্নিত করতে পারেন না। ফলে ঘটে দুঃখজনক পরিণতি।

মায়েদের নিজের সন্তানকে খুন করাকে খারাপ হিসেবে ডাক্তাররা মনে করেন এবং এই অপরাধ বন্ধ করার ব্যবস্থাও করে যাচ্ছেন ডাক্তাররা কিন্তু কথা হচ্ছে মুক্তচিন্তার দৃষ্টিতে অথবা যুক্তি দিয়ে কি শিশু খুন করাকে খারাপ বলা যাবে? খেয়াল করুন সন্তানটি কিন্তু মায়ের নিজের তার মুক্তচিন্তায় সে তার সন্তানকে খুন করবে কি করবে না সেটা অন্য কেন কেউ বলে দিবে তাই না? “Amnesty International” ফেসবুক পেইজে যেখানে 2,431,405 লাইক করা এবং 2,647,015 মানুষ ফলো করা একটি পেইজে May,11,2022 তারিখে পোস্ট করা হয়। পোষ্টে লিখা হয়েছে,

Abortion is a human right. Abortion is a human right. Abortion is a human right. Abortion is a human right. Abortion is a human right. Abortion is a human right. Abortion is a human right. Abortion is a human right.  

গর্ভপাত নাকি মানুষের অধিকার। একটি শিশুকে দুনিয়াতে আসতে দিবে না সেই সকল মুক্তমনা নারী ও পুরুষরা। ধরা যাক একটি মা খুবই অসুস্থ তারমানে এই না যে গর্ভপাত বৈধ হয়ে যাবে। মাকে রক্ষা করার জন্য যদি সন্তানকে খুন করা বৈধ হয়ে যায় তাহলে একই যুক্তিতে মায়ের ইচ্ছায় কেন সন্তানকে যদি মা নিজেই খুন করে সেটা বৈধ হবে না? মুক্তচিন্তায়? কোনো মুক্তচিন্তক এটা অস্বীকার করতে পারবে না যে মা যদি চায় নিজের সন্তানকে খুন করার মুক্তচিন্তা করতে পারে। গর্ভপাত করা যেমন অধিকার সেই একই যুক্তিতে নিজের সন্তানকে মুক্তবুদ্ধিতে খুন করে ফেলাও অধিকার। অন্যদিকে ইসলাম আমাদেরকে কি শিক্ষা দেয়? বিবর্তিত মগজধারী অসভ্য ইসলামবিরোধী গোষ্ঠীদেরকে সভ্য করে তুলতে হলে ইসলামী শিক্ষার বিকল্প নেই।

সহিহ বুখারী, ১৮, সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,

‘উবাদাহ ইবনু সামিত (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ‘উবাদাহ ইবনু সামিত (রাঃ) যিনি বদ্‌র যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী ও লায়লাতুল ‘আকাবার একজন নকীব। ‘উবাদাহ ইব্‌নুস সামিত (রাঃ) বর্ণনা করেন, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর পাশে একজন সাহাবীর উপস্থিতিতে তিনি বলেনঃ তোমরা আমার নিকট এই মর্মে বায়’আত গ্রহণ করো যে, আল্লাহর সঙ্গে কোন কিছুকে অংশীদার সাব্যস্ত করবে না, চুরি করবে না, ব্যভিচার করবে না, তোমাদের সন্তানদের হত্যা করবে না, কারো প্রতি মিথ্যা অপবাদ আরোপ করবে না এবং সৎকাজে নাফরমানী করবে না। তোমাদের মধ্যে যে তা পূর্ণ করবে, তার পুরস্কার আল্লাহর নিকট রয়েছে। আর কেউ এর কোন একটিতে লিপ্ত হলো এবং দুনিয়াতে তার শাস্তি পেয়ে গেলে, তবে তা হবে তার জন্য কাফ্‌ফারা। আর কেউ এর কোন একটিতে লিপ্ত হয়ে পড়লে এবং আল্লাহ তা অপ্রকাশিত রাখলে, তবে তা আল্লাহর ইচ্ছাধীন। তিনি যদি চান, তাকে মার্জনা করবেন আর যদি চান, তাকে শাস্তি প্রদান করবেন। আমরা এর উপর বায়’আত গ্রহণ করলাম।-ihadis.com

আল লু’লু ওয়াল মারজান, হাদিসঃ ১১১১, সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,

উবাদাহ ইব্‌নুস সামিত (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃআল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর পাশে একজন সাহাবীর উপস্থিতিতে তিনি বলেনঃ তোমরা আমার নিকট এ মর্মে বায়‘আত গ্রহণ কর যে, আল্লাহ্‌র সঙ্গে কোন কিছুকে অংশীদার সাব্যস্ত করবে না, চুরি করবে না, ব্যভিচার করবে না, তোমাদের সন্তানদের হত্যা করবে না, কারো প্রতি মিথ্যা অপবাদ আরোপ করবে না এবং সৎকাজে নাফরমানী করবে না। তোমাদের মধ্যে যে তা পূর্ণ করবে, তার পুরস্কার আল্লাহ্‌র নিকট রয়েছে। আর কেউ এর কোন একটিতে লিপ্ত হলো এবং দুনিয়াতে তার শাস্তি পেয়ে গেলে, তবে তা হবে তার জন্য কাফ্‌ফারা। আর কেউ এর কোন একটিতে লিপ্ত হয়ে পড়লে এবং আল্লাহ তা অপ্রকাশিত রাখলে, তবে তা আল্লাহ্‌র ইচ্ছাধীন। তিনি যদি চান, তাকে মার্জনা করবেন আর যদি চান, তাকে শাস্তি প্রদান করবেন। আমরা এর উপর বায়‘আত গ্রহণ করলাম।-ihadis.com

“প্রথম আলো” পত্রিকায় “ভারতে বছরে ২০ হাজার শিশু ধর্ষণের শিকার” শিরোনামে ৭ জুন ২০১৮ তারিখে সংবাদ প্রকাশ করা হয়। সেখানে বর্ণিত হয়েছে (১১),

……ভারতের প্রভাবশালী সাময়িকী ইন্ডিয়া টুডের এক নিবন্ধনে উল্লেখ করা পরিসংখ্যান অনুযায়ী, দেশটিতে প্রতিবছর ২০ হাজার শিশু ধর্ষণের শিকার হয়তার মানে সেখানে প্রতিদিন ৫০ জন বা ঘণ্টায় দুজন শিশু যৌন নির্যাতনের শিকার হয়বয়সে এরা ৭ মাস থেকে ১৭ বছরের। জঘন্য ঘটনাগুলো বেশি ঘটছে কাঠুয়া, সুরাট, এটাহ, বালাশোর, ইন্দোর ও ছাত্রাতেদেশবাসীর বিক্ষোভের মুখে কেন্দ্রীয় সরকার ১২ বছর বা তার কম বয়সী শিশুকে ধর্ষণকারীর মৃত্যুদণ্ডের বিধান করে একটা অধ্যাদেশ জারি করেছে। কিন্তু তাতে কি স্বস্তি মিলবে, ভারতবাসীর মুক্তি মিলবে এই অভিশাপ থেকে? তেমনটা আশা করা কঠিন। এ অবস্থায় পারস্পরিক দোষারোপ ও প্রতিবাদ-বিক্ষোভের পাশাপাশি চলছে এ সমস্যার উৎস খোঁজার চেষ্টা। মনোচিকিৎসক, মনোবিজ্ঞানীদের সঙ্গে কথা বলে শিশু ধর্ষণকারীর মনস্তত্ত্ব বোঝার চেষ্টা করেছেন ইন্ডিয়া টুডের দময়ন্তি দত্ত।…….শিশু ধর্ষণ ও যৌন নির্যাতনের সংখ্যা বিবেচনায় ভারত বিশ্বের বৃহত্তম দেশদ্য ন্যাশনাল ক্রাইম ব্যুরোর (এনসিআরবিডি) তথ্য অনুযায়ী, ভারতে ২০১৫ সালের চেয়ে ২০১৬ সালে শিশু ধর্ষণের ঘটনা বেড়েছে ৮২ শতাংশ২০১৫ সালে ১০ হাজার ৮৫৪ শিশু ধর্ষণের শিকার হয়। এ ধরনের ঘটনা ২০১৬ সালে বেড়ে হয় ১৯ হাজার ৭৬৫। শিশু ধর্ষণের মামলা গত ১৫ বছরে ব্যাপকভাবে বেড়েছে। এ হার ২০০১ সাল থেকে ২০১১ সালের মধ্যে ৩৩৬ শতাংশ বেড়েছে। এর মধ্যে ২০০৫ ও ২০০৬ সালে বেড়েছে ৮২ শতাংশ। সবচেয়ে বেশি শিশু ধর্ষণের ঘটনা ঘটে মধ্যপ্রদেশে। এ রাজ্যে এক বছরে ২ হাজার ৪৬৭ শিশু ধর্ষণের মামলা হয়ভয়াবহতা বিবেচনায় এরপরে আছে যথাক্রমে মহারাষ্ট্র, উত্তর প্রদেশ, ওডিশা ও তামিলনাড়ু। 

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কঠিন সত্য হলো যে আমরা সবাই জানি ‘স্বাভাবিক’ মানুষেরাই এ ধরনের ঘটনা ঘটান রজত মিত্র ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট ও দিল্লির স্বনচেতন সোসাইটি ফর মেন্টাল হেলথের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক। দিল্লির তিহার কারাগারে ১৪ বছর দায়িত্ব পালনকালে তিনি বিপুলসংখ্যক শিশু ধর্ষণকারীর সঙ্গে কথা বলেছেনরজত মিত্র বলেন, তারা অন্য সব স্বাভাবিক মানুষের মতোইতারা সজ্জন প্রতিবেশী, উদার মনের দোকানি, কাছের আত্মীয়, শিক্ষক, কোচ। তারা সমাজের সব স্তরেরযদিও গরিবেরাই বেশি আইনের আওতায় আসে। রজত মিত্র বলেন, ‘আমি (ধর্ষণকারী দলে) স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি থেকে আধ্যাত্মিক নেতাদেরও দেখেছি।’ তিনি বলেন, তবে তাদের বেশির ভাগই শিশুদের খুবই প্রিয়। তারা শিশুদের সঙ্গে পরিচিত হওয়ার পর তাদের আস্থাভাজন হওয়ার চেষ্টা করে। তারপর নানাভাবে আকৃষ্ট করে। খাবার ও খেলনা কিনে দেয়। বেড়াতে নিয়ে যায়। পরিবারে ৪৬ শতাংশ শিশু বাবা ও সৎবাবার পাশবিক নির্যাতনের শিকার হয়। এটা মোট শিশু ধর্ষণের মামলার ৭ দশমিক ২ শতাংশ।

 

……..শিশু ধর্ষণের ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত হওয়া ব্যক্তিদের নিয়ে ২০১১ সালে গবেষণা করেছেন অপরাধবিজ্ঞানী হানি মাটিয়ানিতিনি দোষী সাব্যস্ত ১০০ জনের সাক্ষাৎকার নিয়েছেনএদের ৩৮ শতাংশ পরিকল্পনা করে এ অপরাধ করার কথা স্বীকার করেছেপরিকল্পনা করে ধর্ষণে জড়ানো ব্যক্তিদের ৫৩ শতাংশ বলেছে, তারা যৌন চাহিদা মেটাতে শিশু ধর্ষণে জড়িয়েছে৪০ শতাংশের লক্ষ্য ছিল প্রতিশোধ নেওয়া, ৫ শতাংশ টাকার জন্য ও অন্যরা (৩ শতাংশ) শিশুর সৌন্দর্যে ‘মুগ্ধ হয়ে’ ধর্ষণ করার কথা স্বীকার করেছে৬২ শতাংশ পরিকল্পনা না করে ধর্ষণে লিপ্ত হওয়ার কথা বলেছেতাদের ২৭ শতাংশ দাবি করেছে অনিয়ন্ত্রিত যৌন তাড়নার মুখে শিশুকে একা পেয়ে তারা ধর্ষণ করেছে। ২১ শতাংশ বলেছে শিশুরা তাদের ‘বিমোহিত’ করেছে। ২১ শতাংশ শত্রুতা থেকে এ অপরাধ ঘটায়১৩ শতাংশ বলেছে শিশুটি তাদের সঙ্গে বসবাসকালে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে৬ শতাংশ বলেছে তারা মাতাল হয়ে ধর্ষণে লিপ্ত হয়েছে। এ ক্ষেত্রে একটি শিশুকে বেছে নেওয়ার কারণ জানতে চাইলে ৩৪ শতাংশ বলেছে বয়সের কারণে ও হাতের কাছে থাকায় সহজেই শিশু ধর্ষণের শিকার হয়। ১৫ শতাংশ বলেছে শিশুকে সহজে নিয়ন্ত্রণে আনা যায় (ভয় দেখিয়ে ও জোর করে)।

 

এখানে কথা হচ্ছে ভয়ংকর এই অপরাধ তারা স্বীকার করেছে ঠিকই কিন্তু যখন করেছে তখন কিন্তু নিজস্ব মুক্তবুদ্ধিতেই কুকর্মটি করেছে। ডারউইনবাদের দৃষ্টিতে আসলে উগ্রতা ও হিংস্রতা এগুলো ন্যাচারাল ব্যাপার। উদাহরণ হিসেবে বলা যায় তিমি মাছ প্রচুর ছোট মাছ গিলে খেয়ে ফেলে। হাঙ্গর মাছ যে কত কত মানুষ খুন করে চিবিয়ে চিবিয়ে খেয়েছে তার হয়তো সংখ্যা অনেক। কিন্তু কথা হচ্ছে তারা কি এগুলোকে অন্যায় মনে করে? অবশ্যই না। তেমনি যারা শিশু ধর্ষণ করে, গণহত্যা করে তারা নিজেদের চিন্তার মুক্তিতেই কাজগুলো করে থাকে-এটা নিয়ে সংশয় নেই। অথচ ইসলাম কি বলে? পড়ুন।

 

আদাবুল মুফরাদ,৩৫৬, সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত, 

আমর ইবনে শোয়াইব (র) থেকে বর্ণিতঃ রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেনঃ যে ব্যক্তি আমাদের বড়দের অধিকার মানে না এবং আমাদের ছোটদের স্নেহ করে না সে আমাদের অন্তর্ভুক্ত নয়।-ihadis.com

 

আদাবুল মুফরাদ, হাদিসঃ ৩৫৯, সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,

আবদুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি আমাদের ছোটদের দয়া করে না এবং আমাদের বড়দের সম্মান করে না  সে আমাদের অন্তর্ভুক্ত নয়।-ihadis.com

সুনানে ইবনে মাজাহ, ৯৮৯, সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,

 

আনাস বিন মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃতিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, আমি সালাত শুরু করে তা দীর্ঘায়িত করার সংকল্প করি। কিন্তু আমি শিশুদের কান্না শুনতে পাই এবং তাতে তার মায়ের বিচলিত হওয়ার কথা চিন্তা করে আমার সালাত সংক্ষিপ্ত করি।-ihadis.com

 

সেই সব মুক্তমনা ধর্ষকরা যদি ইসলামের দেয়া বিধানটি মনে প্রাণে বিশ্বাস করে আমল করতো তাহলে কি তারা শিশুদেরকে মুক্তমনে খুন করতে পারতো? ধর্ষণ করতে পারতো? এমনকি যুদ্ধের সময়েও নারী ও শিশুদের হত্যা করতে নিষেধ করেছেন নবী মোহাম্মদ (সা)। এগুলো ইসলামবিরোধীরা আপনাকে দেখাবে না।

আল লু’লু ওয়াল মারজান, হাদিসঃ ১১৩৮, সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,

ইব্‌নু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর এক যুদ্ধে এক নারীকে নিহত অবস্থায় পাওয়া যায়। তখন আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম নারী ও শিশুদের হত্যায় অসন্তোষ প্রকাশ করেন-ihadis.com

জামে আত তিরমিজি,১৪০৮, সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,

সুলাইমান ইবনু বুরাইদা (রাঃ) হতে তার বাবা থেকে বর্ণিতঃ তিনি (বুরাইদা) বলেন, যখন কোন লোককে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম কোন বাহিনীর আমীর করে পাঠাতেন তখন তাকে বিশেষকরে আল্লাহভীতির উপদেশ দিতেন এবং তার সাথের মুসলিমদের সাথে সৎ ও কল্যাণময় আচরণের নির্দেশ দিতেন। তিনি বলতেনঃ তোমরা আল্লাহ্‌র নামে আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ কর, আল্লাহ তা‘আলার সাথে কুফরীকারীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ কর, খিয়ানাত ও প্রতারণা কর না, বিশ্বাসঘাতকতা কর না। মুসলা (নাক, কান ইত্যাদি কর্তন) কর না এবং শিশুদের হত্যা কর না।-ihadis.com

জামে আত তিরমিজি, হাদিসঃ ১৫৬৯, সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,

ইবনু উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ একজন মহিলাকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কোন এক যুদ্ধে মৃত অবস্থায় পাওয়া গেল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম এতে খুবই অসুন্তুষ্টি প্রকাশ করেন এবং নারী ও শিশুদের মেরে ফেলতে বারণ করেন।-ihadis.com

যুদ্ধে অনিচ্ছায় শিশু হত্যা হয়ে গেলে সেই সব হাদিস গুলো দেখিয়ে ইসলামবিরোধী গোষ্ঠী ইসলামকে খারাপ হিসেবে দেখানো চেষ্টা করে অথচ নবীজি (সা) পরিস্কার করে বলে দিয়েছেন যুদ্ধে নারী ও শিশু হত্যা করা যাবে না। এই হাদিস গুলো নাস্তিকরা আপনাদের সামনে নিয়ে আসবে না। ইসলাম আমাদেরকে সভ্যতা শেখায় নাস্তিক্যধর্মের মুক্তচিন্তায় জানোয়ারবাদে বিশ্বাস করতে শেখায় না। আপনি যদি নিজেকে মুক্তমনা দাবি করে থাকেন তাহলে নিজেকে আয়নার সামনে দাড় করিয়ে নিজেকে প্রশ্ন করুন কোন আদর্শ বেশি সভ্য নাস্তিক্যধর্মের মুক্তচিন্তা নাকি ইসলামী শিক্ষা? সব থেকে বেশি ধর্মহীনতা চর্চা করা হয় যেই দেশে সেই দেশের নাম হচ্ছে চায়না (১২)। সেখানে মুসলিম মা-বোনদের কিভাবে ধর্ষণ করে আনন্দ প্রকাশ করে সেই আলাপে আজকে যাবো না কিন্তু চায়নাতে কি পরিমাণ ধর্ষণ হয় সেই আলাপও আজকে করবো না। রেফারেন্স দিয়ে দিলাম। নিজেই পড়ে দেখুন। কিন্তু চায়নাতে যেই পরিমাণ ধর্ষণ হয় সেগুলো মিডিয়াতে খুবই কম আসে(১৩)। যেসব সস্তা নাস্তিকরা জার্মানে বসে ইসলামবিরোধিতা চর্চা করে থাকে খেয়াল করলে দেখবেন জার্মানে যে সব অপরাধ হয় ধর্মহীনদের মুক্তচিন্তার দ্বারা সে সব নিয়ে সেই নাস্তিকদের তেমন একটা মাথা ব্যথা নেই। জার্মানে শিশু যৌন নিপীড়ন হয়। শিশুদেরকে যৌন নির্যাতন পর্যন্ত করা হয় (১৪)। শিশু ধর্ষণকারী, শিশু খুনকারী, শিশু নির্যাতনকারী মুক্তমনাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়া হলেও নাস্তিক্যধর্মের দৃষ্টিতে এসব যে বৈধ সেটা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করার অবকাশ নেই।

মুক্তমনারা যে সব দেশকে সভ্যতার অবতার মনে করে সেই সব দেশে যে আর কতো কতো প্রকার মুক্তচিন্তা দেখা যায় তা বলে আর শেষ করা যাবে না। কিন্তু নাস্তিকরা সেসব নিয়ে কথা বলতে তেমন একটা পছন্দ করে না। পছন্দ করে না মানুষের সাথে সেসব নিয়ে আলোচনা করতে। তারা আনন্দ পায় নবী মোহাম্মদ (সা) নামে বানিয়ে বানিয়ে, রসিয়ে রসিয়ে চিন্তার মুক্তির আন্দোলনের নামে মিথ্যাচার করতে থাকতে। এসব বর্বর প্রাণীদের জন্য জাহান্নামের আগুনের শাস্তিই প্রয়োজন। মানুষ যতো বেশি চিন্তার মুক্তি করা শেখবে ততই মুক্তমনে যা ইচ্ছে তাই করতে পারবে। মানুষকে নৈতিকতার শেকলে বন্দী থাকা যাবে না। নৈতিকতার কালো চাদর থেকে নাস্তিকরা মানুষকে মুক্তি দিতে চায়,তাই না? হ্যাঁ, নাস্তিক মুক্তমনাদের কাছে এসব কথা গুলো বলতে দেখা যায়। অবাক হবার কিছুই নেই।

কেউ যদি ইচ্ছা করে শিশু স্ত্রীর সাথে সহবাস করে আর এই কারণে স্ত্রী যদি মারা যায় তাহলে কি স্বামীর শাস্তি হবে?

পাঠক নাস্তিকরা খুব কৌশলে নিজেদের মিথ্যা দাবি গুলো ইসলামের নামে মিশিয়ে দিতে চেষ্টা করে থাকে। কারণ আগের সময়কার নাস্তিকরা সরাসরি দাবি করতো কিন্তু যখন যাচাই করা হতো দেখা যেতো ইসলাম যা বলেই না সেটা সে বলে বসে আছে কিন্তু এখন নাস্তিকরা তাদের জালিয়াতির কৌশল বিবর্তিত করে ফেলেছে। এই অভিযোগটি একটি উদাহরণ হতে পারে। চলুন আপনাদেরকে সরাসরি দেখাই।

নাস্তিকরা দাবি করে,ইসলামে খুব পরিস্কারভাবে শিশুকামকে বৈধতা দিয়েছে তার প্রমাণ বহন করে এই কিতাবটি অর্থাৎ মুমিনদের খেয়াল রাখতে হবে যে অপ্রাপ্তবয়স্ক বাচ্চাটির যৌনীপথ এবং পায়ুপথ যেন ফেটে একাকার না হয়ে যায়। এইটুকু না করলেই হলো। আর সেটি হয়ে গেলে সামান্য জরিমানা দিয়ে দিলেই তো হলো। 

পাঠক আসুন দেখে নেই ফিকহুস সুন্নাহ, ২ খণ্ড, ৪৬৩ পৃষ্ঠায় কি বলা হয়েছে,

স্বামীর সহবাসে যদি স্ত্রীর যােনি ফেটে প্রশস্ত হয়ে যায় :কোনাে ব্যক্তি যখন স্বীয় স্ত্রীর সাথে সহবাস করতে গিয়ে তার যােনি বিদীর্ণ করে প্রশস্ত করে দেয়, তবে স্ত্রী যদি এরূপ প্রাপ্তবয়স্কা হয় যে, তার সমান মহিলার সাথে সাধারণ সহবাস করা হয়ে থাকে, তাহলে তার কোনাে ক্ষতিপূরণ দিতে হবেনা। এটা ইমাম আবু হানিফা ও আহমদের মত, শাফেয়ি ও মালেকের মতে দিয়াত দিতে হবে। তবে মালেকের যে মতটি অধিক প্রসিদ্ধ, তদনুসারে সালিশী দ্বারা ফায়সালা করা হবে। আর যদি এমন অপ্রাপ্তবয়স্কা হয়, যার সমান মেয়ের সাথে সচরাচর সহবাস করা হয়না, তাহলে তার উপর দিয়াত ওয়াজিব। উল্লেখ্য যে, এই বিধিটি তখনই প্রযােজ্য, যখন যােনি বিদীর্ণ হয়ে মলদ্বারের সাথে একাকার হয়ে যায় এবং এই দুই অঙ্গের মধ্যে কোনাে আড়াল থাকেনা

পাঠক লক্ষ্য করুন তো উক্ত কিতাবে “অপ্রাপ্তবয়স্কা বাচ্চাটির” সাথে সঙ্গম বুঝানো হয়েছে কিনা? যেই কথা কিতাবে বলাই হয়নি সেটা মিথ্যুকবাজ নাস্তিকটি কিভাবে মিশিয়ে দিতে চেষ্টা করলো দেখেছেন? নাস্তিকরা কি কুরআন থেকে ও বিশুদ্ধ হাদিস থেকে প্রমাণ দেখাতে পেরেছে যেখানে বর্ণিত হয়েছে তোমরা কচি শিশুর সাথে সহবাস করো? উক্ত কিতাবে কি শাস্তি হতে পারে সেটা বলা হয়েছে সেখানে এটা কি বলা হয়েছে যে অপ্রাপ্তবয়স্কা মেয়ের ক্ষতি করা যাবে? তাহলে? শুধুমাত্র মানুষের সামনে ইসলামকে খারাপ হিসেবে দেখানোর জন্য এভাবেই মিথ্যুকবাজিতা করে আসছে নাস্তিকগোষ্ঠীরা। স্ত্রীর যদি অল্প বয়স্ক এবং শারীরিক আর মনস্তাত্ত্বিকভাবে উপযুক্ত না হয় আর যদি ক্ষতির আশংকা থাকে তাহলে তো সহবাস করা নিষেধ। আর এটা জানা সত্ত্বেও কেউ যদি ইচ্ছা করে সহবাস করে আর এই কারণে যদি স্ত্রী মারা যায় তাহলে অবশ্যই উক্ত স্বামীর শাস্তি হবে।

আল কুরআন, সুরা নিসা ৪:২৯,৩০ আয়াত থেকে বর্ণিত, 

হে ঈমানদারগণ! তোমরা একে অপরের সম্পদ অন্যায়ভাবে গ্রাস করো না। কেবলমাত্র তোমাদের পরস্পরের সম্মতিক্রমে যে ব্যবসা করা হয় তা বৈধ। আর তোমরা নিজেরা নিজেদের কাউকে হত্যা করো না । নিঃসন্দেহে আল্লাহ তা'আলা তোমাদের প্রতি দয়ালু। আর যে কেউ সীমালঙ্ঘন কিংবা জুলুমের বশবর্তী হয়ে এরূপ করবে, তাকে খুব শীঘ্রই আগুনে নিক্ষেপ করা হবে। এটা আল্লাহর পক্ষে খুবই সহজসাধ্য।

সুরা নিসা ৪:৯৩ আয়াত থেকে বর্ণিত হয়েছে,

যে ইচ্ছা করে কোন মুমিনকে হত্যা করবে তার প্রতিদান হচ্ছে জাহান্নাম,সেখানে সে স্থায়ী হবে। আর আল্লাহ তার উপর রাগান্বিত হবেন।তাকে লানত করবেন এবং তার জন্য বিশাল শাস্তি প্রস্তুত করে রাখবেন।

ইসলাম এই শিক্ষা দিচ্ছে যে নিজেরা নিজেদের কাউকেই হত্যা করা যাবে না। এটা আল্লাহর বিধান। এই হুকুম পালন করা সকল মুসলিমদের জন্য ফরজ। ইচ্ছা করে কাউকে হত্যা করলে জাহান্নামে যেতে হবে এবং ভয়াবহ শাস্তি ভোগ করতে হবে। তাহলে একজন প্রকৃত মুসলিম কিভাবে কাউকে হত্যা করতে পারে? যদি কোনো স্বামী নিজের স্ত্রীকে জবরদস্তি করে সহবাস করে হত্যা করে ফেলে অবশ্যই এর দুনিয়াবি শাস্তিও রয়েছে। সেই স্বামীকে মৃত্যুদণ্ড দিতে হবে। কিসাসের বিধান এখানে প্রযোজ্য হবে যেহেতু হত্যা করা হয়েছে। 

আল কুরআন, সুরা বাকারা ২:১৭৮ আয়াত থেকে বর্ণিত হয়েছে,

হে ঈমানদারগন! তোমাদের প্রতি নিহতদের ব্যাপারে কেসাস গ্রহণ করা বিধিবদ্ধ করা হয়েছেস্বাধীন ব্যক্তি স্বাধীন ব্যক্তির বদলায়, দাস দাসের বদলায় এবং নারী নারীর বদলায়। অতঃপর তার ভাইয়ের তরফ থেকে যদি কাউকে কিছুটা মাফ করে দেয়া হয়, তবে প্রচলিত নিয়মের অনুসরণ করবে এবং ভালভাবে তাকে তা প্রদান করতে হবে। এটা তোমাদের পালনকর্তার তরফ থেকে সহজ এবং বিশেষ অনুগ্রহ। এরপরও যে ব্যাক্তি বাড়াবাড়ি করে,তার জন্য রয়েছে বেদনাদায়ক আযাব।

বুলগুল মারাম হাদিসঃ ১১৭১,সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত হয়েছে,

ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি অজ্ঞাত অবস্থার মধ্যে নিহত হয় অথবা পাথর ছোড়াছড়ি হচ্ছে এমন সময় পাথরের আঘাতে নিহত হয় অথবা কোড়া বা লাঠির আঘাতে নিহত হয়, তবে অনিচ্ছাকৃভাবে ভুলক্রমে হত্যা করার অনুরূপ দিয়াত বা আর্থিক ক্ষতিপূরণ লাগবে। আর যাকে ইচ্ছাকৃতভাবে হত্যা করা হয় সে ক্ষেত্রে কিসাস (জানের বদলে জান) নেয়ার হাক্বদার হবে। আর যে কিসাস কায়িম করার ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি করবে (সুপারিশ বা অন্য উপায় দ্বারা) তার উপরে আল্লাহর লানত বর্ষিত হবে।-ihadis.com,

এরপরেও নাস্তিকরা যদি নিজেদের চিন্তার মুক্তির ঠেলায় মিথ্যা কথা বলতে থাকে যে ইসলামে স্বামী তার অল্প বয়স্কা স্ত্রীর সাথে জবরদস্তি করে যৌনকর্ম করতে পারবে এমনকি সহবাস করার ফলে স্ত্রী মারা গেলে এই খুনও করে ফেলতে পারবে তাহলে আর সেসব বিবর্তিত মগজধারীদের জন্য আমার আর কিছু বলার নেই। যারা সততার সাথে চিন্তা করার যোগ্যতা রাখেন তাদের জন্য আমি আরও কিছু প্রমাণ তুলে ধরছি।

জামে আত তিরমিজি,হাদিসঃ ২৬২৭,হাসান সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,

আবূ হুরাইরাহ্‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃতিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ যার জিহ্বা ও হাত থেকে মুসলিমগণ নিরাপদ থাকে সে ব্যক্তিই প্রকৃত মুসলিম। আর যাকে মানুষ তাদের জান ও মালের জন্য নিরাপদ মনে করে সে-ই প্রকৃত মু’মিন-ihadis.com

জামে আত তিরমিজি,হাদিসঃ১১৬২,হাসান সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,

আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃতিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের মধ্যে ঈমানে পরিপূর্ণ মুসলমান হচ্ছে সর্বোত্তম চরিত্রের অধিকারী ব্যক্তি। যেসব লোক নিজেদের স্ত্রীদের নিকট উত্তম তারাই তোমাদের মধ্যে অতি উত্তমihadis.com

এই হাদিস গুলো ইসলামবিরোধী সম্প্রদায় আপনাকে জানতে দিতে চাইবে না। ইসলাম আমাদেরকে কল্যাণ শেখায়, মানবিকতা শেখায় আর নাস্তিকরা দাবি করে ইসলাম নাকি অশান্তি। তাহলে দেখা যাচ্ছে নাস্তিকরাই ইসলাম নিয়ে অন্ধবিশ্বাস করে যাচ্ছে। কোনো স্বামী যদি লম্পট হয়, স্ত্রীদের প্রতি অত্যাচার করে, নির্যাতন করে তাহলে সেটাকে প্রতিরোধ করা শেখায় ইসলামে। এমনকি ক্ষতি করাও যাবে না আবার ক্ষতি সহ্য করাও যাবে না-এটাই ইসলামের শিক্ষা। অন্যায়ের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করাটাও ইসলামের শিক্ষা। প্রমাণ দিচ্ছি পড়তে থাকুন মন দিয়ে।

সুনানে ইবনে মাজাহ,হাদিসঃ ২৩৪০, সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,

উবাদাহ ইবনুস সাবিত (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম নির্দেশ দিয়েছেন যে, "ক্ষতি করাও যাবে না, ক্ষতি সহাও যাবে না।-ihadis.com 

সুনানে ইবনে মাজাহ,হাদিসঃ২৩৪১, সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,

ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃতিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ "ক্ষতি করাও যাবে না, ক্ষতি সহাও যাবে না।-ihadis.com

সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিসঃ ১২৭৫, সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,

নবীজি মুহাম্মদ (সা) বলেছেনঃ তোমাদের মধ্যে কেউ অন্যায় কাজ হতে দেখলে এবং তার হাত দিয়ে তা প্রতিহত করার সামর্থ্য থাকলে সে যেন তা নিজ হাতে প্রতিহত করে। তার সেই সামর্থ্য না থাকলে সে যেন মুখের ভাষায় তা প্রতিহত (বা প্রতিবাদ) করে। যদি মুখের ভাষায় প্রতিহত করার সামর্থ্য তার না থাকে তবে সে যেন তার অন্তরে তা প্রতিহত করে। এটা ঈমানের খুবই নিম্নস্তর।-ihadis.com

ইসলাম কেমন বয়সের নারী বিয়ে করতে উৎসাহিত করে?

ইসলাম এমন নারীদের বিয়ে করার ব্যাপারে উৎসাহিত করে যেসব নারীরা সন্তান জন্মদানে সক্ষম। অন্যদিকে অল্প বয়স্কা নারী বিয়ে করাটা আবশ্যক কিছু নয় বরং এটি অপশনাল একটি বিধান। কেউ চাইলে করতে পারে তবে কঠিন শর্ত গুলো অবশ্যই মানতে হবে আবার কেউ চাইলে নাও করতে পারে।

হাদিস সম্ভার,হাদিসঃ২৫৫৮,সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,

একাধিক সাহাবী কর্তৃক বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমরা কুমারী বিবাহ কর। কারণ কুমারীদের মুখ অধিক মিষ্টি, তাদের গর্ভাশয় অধিক সন্তানধারী, তাদের যোনীপথ অধিক উষ্ণ, তারা ছলনায় কম হয় এবং স্বল্পে অধিক সমতুষ্ট থাকে।-hadithbd.com

সহিহ বুখারী, হাদিসঃ ৫০৮২, সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃতিনি বর্ণনা করেন, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, উষ্ট্রারোহী মহিলাদের মধ্যে কুরাইশ বংশীয়া মহিলারা সর্বোত্তমতারা শিশু সন্তানদের প্রতি স্নেহশীল এবং স্বামীর মর্যাদার উত্তম রক্ষাকারিণী।-ihadis.com

যেসব নারীরা সন্তান অধিক জন্ম দিতে পারে তাদেরকে বিয়ে করতে বলা হয়েছে এবং সেই সব নারীদের যারা শিশুদের প্রতি অধিক স্নেহশীল। ইসলাম যদি কচি কচি শিশুর সাথে সহবাস করতে বলে তাহলে অধিক সন্তান জন্ম দিতে পারে এমন নারীকে বিয়ে করার কথা বলবে কেন? কচি শিশু স্ত্রী কি অধিক সন্তান দিতে পারে? এমনকি কোনো মেয়ের যদি স্বামীকে পছন্দ না করে তাহলে বিয়ে ভেঙ্গে ফেলার অধিকার পাবে। এক নারী নবীজি (সা)কে এর কাছে অভিযোগ করলে উনি বিয়ে বাতিল করে দেন। এই হাদিস থেকে এটাও প্রমাণ করে যে পিতা জবরদস্তি নিজের মেয়েকে বিয়ে দিতে পারবে না।

সুনানে আবু দাউদ, হাদিসঃ ২১০১, সহিহ হাদিসঃ

খানসাআ বিনতু খিযাম আল-আনসারিয়্যাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তার পিতা তাকে বিয়ে দেন তখন তিনি বয়স্কা (সাবালিকা) তিনি এ বিয়ে অপছন্দ করলেন। অতঃপর তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কাছে এসে অভিযোগ করলে তিনি তার এ বিয়ে বাতিল করে দেন।-ihadis.com

সুনানে আবু দাউদ, হাদিসঃ ২০৯৬, সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,

ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ একদা নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নিকট এক যুবতী এসে বললো, তার অসম্মতিতে তার পিতা তাকে বিয়ে দিয়েছে। নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে এখতিয়ার প্রদান করলেন সে বিয়ে রাখতেও পারে অথবা বিচ্ছেদ ঘটাতেও পারে-ihadis.com

নবী মোহাম্মদ (সা) এর কমবয়স্কা  স্ত্রী উনাকে কেমন ভালবাসতেন যে ঈর্ষা করতেন। ইসলাম এমন এক দাম্পত্য জীবনের কথাই বলে যেখানে স্বামী স্ত্রীর মধ্যে ভালোবাসা থাকবে। সেখানে থাকবে না নির্যাতন, অত্যাচার। নাস্তিকরা খুবই চালাকি করে মিথ্যার আশ্রয়ে ইসলামের এই দিকটিকে ধামাচাপা দেবার চেষ্টা করে যায়।

সহিহ বুখারী,হাদিসঃ৬০০৪,সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,

আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃতিনি বলেন, আমি অন্য কোন মহিলার উপর ততটা ঈর্ষা পোষণ করতাম না, যতটা ঈর্ষা করতাম খাদীজার উপর। অথচ আমার বিয়ের তিন বছর আগেই তিনি মারা যান। কারণ, আমি শুনতাম, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর নাম উল্লেখ করতেন। আর জান্নাতের মাঝে মণি-মুক্তার একটি ঘরের খোশ-খবর খাদীজাকে শোনানোর জন্যে তাঁর প্রতিপালক তাঁকে নির্দেশ দেন। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম কখনও ছাগল যবহ করলে তার একটি টুকরো খাদীজার বান্ধবীদের কাছে অবশ্যই পাঠাতেন।– জামে আত তিরমিজি, হাদিসঃ ৩৮৭৫, ৩৮৭৬, সহিহ হাদিস।ihadis.com

নবীজি (সা) উনার কম বয়সী স্ত্রীকে ভালবাসতেন। উনি খেয়াল রাখতেন অথবা বুঝতে পারতেন যে উনার স্ত্রী কখন রাগ করেন আর কখন করেন না। নাস্তিকরা নবীজি (সা)কে খারাপ মানুষ বানানোর পয়তারা যেভাবে করতে থাকে অথচ বাস্তবতা পুরো উল্টো। একজন ভালো স্বামী ছাড়া কোনো অত্যাচারী স্বামী কি স্ত্রীর রাগ অভিমানের খেয়াল রাখবে? নাস্তিকরা না হয় মানুষের মতো চিন্তা করতে পারে না কিন্তু আপনি তো পারেন। কি মনে হয় আপনার?

সহিহ মুসলিম, হাদিসঃ ৬১৭৯, সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,

আয়িশাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃতিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমায় বলেছেন: আমি কিন্তু আঁচ করতে পারি তুমি কখন আমার উপর সন্তুষ্ট থাকো, আর কখন আমার উপর ক্রোধান্বিত হও। আমি বললাম, কিসের মাধ্যমে এটা বুঝতে পারেন? রসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেনঃ যখন তুমি আমার উপর সন্তুষ্ট থাকো তখন তুমি বলে থাকো- না, মুহাম্মাদের প্রতিপালকের শপথ! আর যখন তুমি রাগান্বিত হও তখন বলো- না, ইব্রাহীমের প্রতিপালকের শপথ!আমি বললাম, হ্যাঁ আল্লাহর শপথ! হে আল্লাহর রসূল! আপনার নামটা শুধু বাদ দেই।-ihadis.com

ইসলামে নির্দিষ্ট করে বয়স নির্ধারণ করে দেয়া হয়নি যে সেই বয়সেই বিয়ে করা যাবে অথবা যাবে না। এর যুক্তিযুক্ত কারণ হচ্ছে সবার শারীরিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক গঠন একই সময়ে হয় না। সবার আলাদা আলাদা। মেয়ের বেলাতে তো ভিন্নতাই বেশি। অ্যামেরিকার মেয়েরা ও বাংলাদেশের মেয়েরা কি একই ফিটনেসের অধিকারী? চায়নার মেয়েরা ও ভারতের মেয়েরাও? সবার ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট করে কিছুই বলা যায় না। কারণ এমন মেয়ে রয়েছে যাদের বয়সের সংখ্যা হয়তো কম অথচ বুদ্ধিবৃত্তিক ও শারীরিকভাবে বয়সের আগেই উপযুক্ত হয়ে গিয়েছে। এমন নারী যদি সেচ্ছায় কাউকে বিয়ে করে এবং নিজের স্বামীর সাথে সুখেই থাকে এমনকি সহবাস করে সন্তান জন্ম দেয় তাহলে কি যৌক্তিকভাবে এমন সম্পর্ককে খারাপ বলা যাবে?

এমনকি বংশ-গোত্র, পারিবারিক জীবন-মান ও আবহাওয়ার তারতম্যের কারণে মেয়েদের মধ্যে যথেষ্ট পার্থক্য হয়ে থাকে। একারণে কোনো এক নীতি বা কোনো ধরাবাঁধা কথা এ ব্যাপারে বলা যায় না। কাজেই ছেলে-মেয়ের বিবাহের জন্য কোনো বয়সসীমা নির্দিষ্ট করে দেয়া এবং ঐ নির্ধারিত বয়স সীমার পূর্বে বিবাহ নিষিদ্ধ করে আইন জারি করা মোটেই যুক্তিসঙ্গত হতে পারে না। বিয়ে বলতে যদি শুধুমাত্র যৌন মিলনকে বোঝানো হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই উভয়কে সব দিক থেকে উপযুক্ত হতে হবে। অন্যদিকে বিবাহ বলতে যদি শুধু আক্দ ও ইজাব-কবুল বোঝায় তাহলে তা যে কোনো বয়সেই হতে পারে। এমনকি দোলনায় শোয়া বা দুগ্ধপোষ্য শিশুরও হতে পারে তা পিতা বা বৈধ অভিভাবকের তত্ত্বাবধানে। ইসলামী শরীয়তে এ বিবাহ নিষিদ্ধ নয় এবং এতে অশোভনও কিছু নেই। 

এই কথাকে যদি নাস্তিকরা খারাপ মনে করে থাকে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে বড় যে প্রশ্নটি থেকে যাচ্ছে সেটা হচ্ছে আপনাদের কথিত গোল্ডেন রুলের বিধান দিয়ে পারলে ইসলামের এই বিধানকে অন্যায় প্রমাণ করে দেখান। পারবেন? উনবিংশ শতাব্দীতে বেশিরভাগ অ্যামেরিকান রাজ্যে বিয়ের বয়সের সর্ব নিন্ম বয়স ছিল দশ বছর এবং ডেলাওয়ারে বয়স ছিল মেয়েদের সাত বছর (১৫) তা সমাজগত ও আইনগতভাবেও পুরোপুরি সিদ্ধ ছিল। নিউইয়র্ক ১৮৮৫ সাল পর্যন্ত বিয়ের বয়স ছিল দশ বছর। ১৮৮৫ সালের পর থেকে দেশের আইন "সম্মতি আইন" পরিবর্তন হয় ১৮৮৯ সালে। নিউইয়র্কে ষোল বছর এবং ১৮৯৫ সালে হয় আঠারো বয়স। এই পরিবর্তনের আগে সম্মতির বয়স মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বেশির ভাগ স্থানে দশ বা বারো বছর ছিল বিয়ের বয়স(১৬)। এসব দাম্পত্য সম্পর্কে যদি কারো ক্ষতি হয় তাহলে নাস্তিকরা বলতে পারে যে তাদের এই বয়সে বিয়ে হওয়াটা ঠিক হয়নি কিন্তু যদি ক্ষতি না হয়ে তাহলে কি এই কথা বলার যৌক্তিক সুযোগ থাকছে?

নাস্তিকগোষ্ঠীকে আরো যে উত্তর দিতে হবেঃ

অল্প বয়সে কোনো মেয়ে যদি শারীরিক এবং মনস্তাত্ত্বিকভাবে সক্ষম হয়ে যায় এবং সে যদি বিয়ে করে এবং স্বামীর সাথে সহবাস করে তাহলে এটি নাস্তিক্যধর্ম অনুপাতে কেন অবৈধ হবে? কোন যুক্তিতে একে খারাপ প্রমাণ করা যাবে? তাদের যদি সুখ নিশ্চিত হয় তাহলে কেন এটি খারাপ? যদি উভয় পরিবার তাদের সন্তানদের শিশু অবস্থায় বিয়ে দেয় আত্মীয়তার বন্ধন মজবুত করার জন্য তাহলে এটি কেন খারাপ হবে? উভয়ের পরিবারে সম্মতি আছে। তাহলে? তাদের কোনো ক্ষতি হয়নি। তাহলে?

নাস্তিকরা বলে থাকে নাস্তিকতা নাকি ধর্ম না। নাস্তিকতা নাকি মানুষের জীবন নিয়ে ডিল করে না তাহলে নাস্তিকরা কেন ইসলামের বিষয় নিয়ে ডিল করে? কিভাবে করে? কিসের ভিত্তিতে করে? কোন যুক্তিতে করে? নাস্তিকতা যদি জীবন নিয়ে ডিল না করে তাহলে নাস্তিকরা কেন ইসলামের আইন নিয়ে ডিল করে? “ইসলামের এই ওমুক জিনিস খারাপ” এরকম বিধান বর্ণিত করা কি নাস্তিক্যবাদকে ধর্ম হিসেবে প্রমাণ করার জন্য যথেষ্ট নয়?

ইসলামের কোথাও তো এই বিধান বর্ণিত নেই যে স্ত্রীকে নির্যাতন করো, অত্যাচার করো তাহলে ইসলাম নিয়ে কেন নাস্তিকরা মুক্তচিন্তায় মিথ্যাচার করে যাচ্ছে? নাস্তিকরা কি মানুষের মতো চিন্তাশীল হতে পারেনি? কেন? আর কয় কোটি বছর বিবর্তিত হলে মানুষ হবে নাস্তিকগোষ্ঠী? কোন বয়সে বিয়ে করা যাবে আর কোন বয়সে বিয়ে করা যাবে না এই নৈতিকতা নাস্তিকরা কেন ঠিক করবে? অন্যকে কেন ঠিক করে দেবে? প্রতিটি মানুষের নিজস্ব মুক্তচিন্তা করার স্বাধীনতা থাকবে না? বিয়ে করার মানদণ্ড বিষয় নাস্তিক্যধর্ম কি বলেছে? নাস্তিক্যধর্মর আলোকে বিয়েই কাকে বলে? এই সংজ্ঞা কোন মানুষ বর্ণনা করবে? আর কে করবে না? কেন করবে? সে মানুষের কথা বিশ্বাস করতে দুনিয়ার সকল মানুষ বাধ্য? নাস্তিক্যধর্ম অনুযায়ী মৃত্যুই সব কিছুর শেষ সমাপ্তি। তাহলে সত্যে -মিথ্যার গুরুত্ব এখানে কতটুকু? যদি একজন মানুষ মিথ্যা জেনে মরলেই বা কি ক্ষতি অথবা সত্য জেনে মরলেই বা কি লাভ হবে? দুনিয়ার সব মেয়েরা কি একই সময়ে প্রাপ্তবয়স্কা হয়? এমন একটা বিশুদ্ধ হাদিস দেখান যেখানে নবীজি (সা) অথবা উনার কোনো সাহাবী শিশুর সাথে সহবাস করেছেন এবং সেই শিশুটি শুধুমাত্র সহবাস করার জন্যই মারা গিয়েছে? অথবা এমন কোনো বিশুদ্ধ ঘটনা দেখান কোনো সাহাবী শিশুর সাথে সহবাস করে হত্যা করে ফেলে আর নবীজি (সা) সেটাকে বৈধতা দেন? এমন একটি কুরআনের আয়াত দেখান অথবা বিশুদ্ধ হাদিস যেখানে বলা হচ্ছে তোমারা জবরদস্তি অত্যাচার করে শিশু স্ত্রীর সাথে সহবাস করো? তাদেরকে কুপিয়ে খুন করে ফেলো?

উপসংহারঃ সব কিছু পরিস্কার। যুক্তি-তথ্য প্রমাণ সব কিছুই আপনাদের সামনে দিয়ে রেখেছি। এখন আপনাদের দায়িত্ব ইসলামকে সঠিকভাবে বুঝে নেয়া। এরপরেও যদি নাস্তিকরা যায় তারা পেশাদার ইসলামবিরোধীতাতেই ডুবে থাকবে তাহলে চিন্তাশীল মানুষ হিসেবে আমার কিছুই করার নেই। কারণ মুক্তচিন্তায় যারা মিথ্যুকবাজিতাকে সত্য হিসেবে বিশ্বাস করে নিয়েছে তাদের কাছে প্রকৃত সত্যকে মিথ্যা মনে হওয়া অস্বাভাবিক কিছু নয়।

রেফারেন্স সমূহঃ

[ক] On acting; and the ruling on marrying young girls;

https://islamqa.info/en/answers/22442/on-acting-and-the-ruling-on-marrying-young-girls

[১] Discovering Pregnancy On Labour | Britain's Youngest Mums And Dads | Real Families https://www.youtube.com/watch?v=x99CCWiJd2A

[২] Professor AJP Cortese (2006), Opposing Hate Speech (Praeger Publishers) p. 85.

[৩] পেডোফিলিয়ার অভিযোগ বনাম সুস্থচিন্তার চর্চাঃ https://rafanofficial.wordpress.com/2020/10/01/the-wrong-accusation-of-pedophilia/

[৪] From Cheerleader & Footballer To Pregnant at 15 | MY EXTRAORDINARY FAMILY: https://www.youtube.com/watch?v=Myd2dVwIDNI

[৫] Getting Pregnant At 13 Doesn’t Mean I'm A Bad Mum | MY EXTRAORDINARY FAMILY

https://www.youtube.com/watch?v=pJVpq2T8m3k

[৬] 12 Year-Old Girl Got Married To A 37 Year-Old Man

https://www.youtube.com/watch?v=Ks8SKiokFVc&t=62s

[৭] 80 Years Old Man Marriage With young beautiful Girl | Old man with young girl | Zeeshan Tv| 

https://www.youtube.com/watch?v=6zC5pfbrr1U

[৮] This 18 Year Old Girl is Dating a 68 Year Old Man

https://www.youtube.com/watch?v=DD14EH9Fwac

[৯] 51-Year-Old Actor Doug Hutchison Marries Teenager: Couple Speaks Out

https://www.youtube.com/watch?v=BynJmKpzJEw

[১০] যেসব মায়েরা নিজ সন্তান হত্যা করেন

https://www.bbc.com/bengali/news-49033135

[১১] ভারতে বছরে ২০ হাজার শিশু ধর্ষণের শিকার

https://www.prothomalo.com/

[১২] Most Atheist Countries 2022

https://worldpopulationreview.com/country-rankings/most-atheist-countries

[১৩] WIKIPEDIA: Rape in China

https://en.wikipedia.org/wiki/Rape_in_China#:~:text=25.1%25%20who%20had%20raped%20reported,experience%20physical%20or%20sexual%20violence.

[১৪] DW.COM,07,06,2019 তারিখে বর্ণিতঃ জার্মানিতে দিনে ৪০ শিশু যৌন নিপীড়নের শিকার।

[১৫] parental kidnapping in america: an historical and cultural analysis- by maureen dabbagh, page 128. আরও দেখুন Professor AJP Cortese (2006), Opposing Hate Speech (Praeger Publishers) p. 85 

[১৬] prostitution and sex work - by melissa hope ditmore, page: 21 {introduction}


এমডি আলী

যিনি একজন লেখক, বিতার্কিক ও গবেষক। বিভিন্ন ধর্ম ও মতবাদ বিষয় পড়াশোনা করেন। ইসলামের সত্যতা মানুষের কাছে ছড়িয়ে দিতে চান। “সত্যের অনুভূতি” উনার লেখা প্রথম বই। “ফ্যান্টাস্টিক হামজা” দ্বিতীয় বই। জবাব দেবার পাশাপাশি নাস্তিক মুক্তমনাদের যৌক্তিক সমালোচনা করে থাকেন।

Previous Post Next Post