নাস্তিক্যধর্মে ধর্ষণ বৈধ?


=========================

বিষয়ঃ নাস্তিক্যধর্মে ধর্ষণ বৈধ?

লিখেছেনঃ এমডি আলী।

=========================

খুবই তিতা আজকের লেখাটি বিশেষ করে যারা নাস্তিক তাদের জন্য। কেননা আজকের লেখাতে তারা এমন কিছু পড়তে যাচ্ছে যা তাদের না পড়লেই হয়তো ভালো হতো। কিন্তু সত্যকে তো আর ধামাচাপা দিয়ে রাখা যায় না এখানে আমার আর কিই বা করার আছে,বলুন? আপনি কি সত্যকে জানতে আগ্রহী? আপনি কি রাজি সত্য আপনার বিরুদ্ধে গেলেও আপনি সত্যকেই গ্রহণ করবেন? আপনি কি সত্যকে স্বীকার করার জন্য আপনার অবিশ্বাসকে ত্যাগ করতে পারবেন? এই সৎ সাহস কি আপনার আছে? যদি আপনার উত্তর হয় “অবশ্যই” তাহলে আপনাকে সত্যের এই যাত্রায় স্বাগতম। আপনি আপনার মুক্তচিন্তা নিয়ে লেখাটি পড়তে থাকুন।

আপনি যদি নাস্তিক হয়ে থাকেন, আপনার জানার কথা যে আপনার থেকে সিনিয়ররা একটা অভিযোগ করে থাকে যে ইসলামে নাকি ধর্ষণ করা বৈধ। কুরআন সুন্নাহ নিয়ে লেখাপড়া করলে আমরা এমন অনেক তথ্য পাই যে ধর্ষণ করা নিষেধ এবং কেউ যদি করে তাকে কঠিন শাস্তি দেয়া হবে,দিতে হবে এতে কোনো সংশয় নেই। ইসলামে কখনোই ধর্ষণ বৈধ হতে পারে না। এমন একটি হাদিসও নাস্তিকরা দেখাতে পারবে যেখানে বলা হয়েছে তোমরা ধর্ষণ করো। কুরআনের একটি আয়াতও দেখাতে পারবে না যেখানে বলা হয়েছে মুমিনদেরকে আদেশ দেয়া হলো ধর্ষণ করবার। কি? মিথ্যুকবাজ নাস্তিকরা পারবে প্রমাণ পেশ করতে?

আমরা মুসলিমরা বিশ্বাস করি ধর্ষণ করা নিঃসন্দেহে অমানবিক এবং নিকৃষ্টতম একটি কাজ। ইসলাম আমাদেরকে শিক্ষা দিতে বাধ্য করে ধর্ষণ করা বর্বরতম একটি অপরাধ। একজন ধর্ষক যে মুক্তবুদ্ধির যুক্তিতেই ধর্ষণ করুক না কেন সেটা চুরান্ত ভাবেই খারাপ। এখানে ধর্ষকের ধর্ষণের পক্ষে কোনো যুক্তি চলবে না। একজন নারীকে জবরদস্তি ধর্ষণ করা হয়েছে এটা চুরান্ত ভাবেই গর্হিত অপরাধ হিসেবে বিশ্বাস করতে বাধ্য করে ইসলাম প্রতিটি মুসলিমকে। এমনকি হাদিসে এটাও বলা হয়েছে যে কোন মুমিন যদি খারাপ কাজ করে তাহলে সে আর মুমিনই থাকবে না। হাদিসটি পড়ুন,

সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিসঃ৩৯৩৬, সহিহ হাদিসঃ

আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ যেনাকারী যখন যেনায় লিপ্ত হয় তখন সে মুমিন থাকে নামদ্যপ যখন মদ পানে লিপ্ত হয় তখন সে মুমিন থাকে নাচোর যখন চৌর্যবৃত্তিতে লিপ্ত হয় তখন সে মুমিন থাকে না। আর লুটতরাজছিনতাইকারী যখন লুটতরাজ ও ছিনতাই করে এবং লোকজন তার দিকে চোখ তুলে তাকায়, তখন সে মুমিন থাকে না।-ihadis.com

এক নারীকে ধর্ষণ করা হলে সেই নিকৃষ্ট ধর্ষককে রজম তথা পাথর মারার আদেশ দিয়েছিলেন হযরত মোহাম্মদ (সা)। ধর্ষণ করা অপরাধ। ধর্ষণ করা যাবে না। মুক্তচিন্তায় হোক অথবা যেই যুক্তিতে হোক না কেন। এটাই ইসলামের শিক্ষা। বিস্তারিত জানতে পড়ুন-সুনানে আবু দাউদ,হাদিসঃ৪৩৭৯/ জামে আত তিরমিজি, হাদিসঃ১৪৫৪/  হাদিস গুলো, হাসান হাদিস। ihadis.com। এগুলো জানার পরেও কেন তাহলে ওরা এই মিথ্যা অভিযোগটি করে থাকে বা আপনাকে করতে বলে? জানেন কি? কখন প্রশ্নটি নিয়ে ভেবে দেখেছেন কি? আপনাদের নাস্তিক্যধর্মে যে নারীকে ধর্ষণ করার বৈধতা দেয় এবং এর পক্ষে শক্তিশালী যুক্তি রয়েছে এটা যেন আপনি জানতে না পারেন এই কারণে আপনাকে ইসলাম নিয়ে মিথ্যাচার করার চর্চায় বিজি রাখতে চাওয়া হয়। হয়তো আপনি এটা বুঝতেও পারেন না। আপনি হয়তো মনে করছেন ইসলামের সমালোচনা করে আপনি মানবতা উদ্ধার করে ফেলছেন কিন্তু কখনো নিজের নাস্তিক্যধর্ম নিয়ে চিন্তা করতে পেরেছেন? নাস্তিক্যধর্ম আসলেই সত্য কিনা ? নাকি মানুষকে বোকা বানাচ্ছে ইসলামের সমালোচনার নামে?

নিজের মনে কখনো এই প্রশ্ন জাগেনি যে আপনি যা অবিশ্বাস করছেন তা আসলেই সত্য কিনা? সেই সত্যের প্রমাণ গুলো কি রকম? এসবকে কখনো নিজে যাচাই করেছেন? এরপরে বিশ্বাস করতে পেরেছেন আপনি? আপনাকে শুধু মাত্র ইসলাম নিয়ে সমালোচনার মধ্যেই কেন ডুবিয়ে রাখা হচ্ছে? কেন নিজের নাস্তিক্যধর্ম নিয়ে মুক্তচিন্তা করতে দেয়া হচ্ছে না আপনাকে? নাস্তিক্যধর্ম নিয়ে কেন মুক্তবুদ্ধি চর্চা করতে দেবে না? কেন আপনার নিজের নৈতিকতা অন্য নাস্তিকরা ঠিক করে দেবে? আপনার নিজের চিন্তা করার অধিকার নেই? আপনার নিজের মন মতো চলার অধিকার নেই? অন্য নাস্তিকরা কেন আপনাকে ঠিক করে দেবে আপনি কি করতে পারবেন আর কি করতে পারবেন না?

হয়তো প্রশ্ন গুলোকে এড়িয়ে থাকতে চাইছেন। কিন্তু কেন? সত্যকে জানতে শিখা আপনার অধিকার। আপনি কেন সত্যকে জানতে পারবেন না? কেন আপনাকে সত্য জানতে দেয়া হবে না? আমি চাই এই লেখায় যেযব তথ্য-প্রমাণ-যুক্তি পেশ করা হয়েছে এসব নিয়ে আপনি নিজেই নিজের সাথে সমালোচনা করতে থাকুন। আমি চাই আপনি চিন্তা করতে শিখুন। যুক্তি দিয়ে ভাবুন। নিজের মধ্যে যেই সৎ বুদ্ধি আছে তাকে জাগিয়ে আপনি সত্য সিদ্ধান্তে চলে আসতে শিখুন। আর কত নিজেকে নাস্তিক্যধর্মের শেকলে নিজেকে বন্দী করে রাখবেন? আর কত নিজের মগজকে বিবর্তিত প্রাণীদের মগজ বলে বিশ্বাস করবেন? সুতরাং এখনো সময় আছে ভাবতে শিখুন। চিন্তা করতে শিখুন। জানতে শিখুন যা আপনাকে জানতে দেয়া হয়নি।

নাস্তিক্যধর্মের দৃষ্টিতে ধর্ষণ করা বৈধ। নাস্তিক্যধর্ম ধর্ষণ করার স্বাধীনতা দেয় সব মানুষকেই। কোনো মানুষ নিজের মুক্তচিন্তায় ধর্ষণ করার চিন্তা করলে সেটা নাস্তিক্যধর্ম সম্পূর্ণ সমর্থন করে। নাস্তিকরা বিশ্বাস করে মানুষকে নৈতিক হতে হলে ধর্মীয় গ্রন্থের দরকার নেই মানুষ নিজেই নিজের ধারণা থেকে নৈতিকতা বানিয়ে নিতে পারবে। এই দৃষ্টিতে চোরদের স্বাধীনতা আছে নিজের মুক্তবুদ্ধিকে কাজে লাগিয়ে  চুরিবিদ্যা প্রয়োগ করে চুরি করাকে নৈতিক বলে মেনে নেয়ার। ডাকাতদের এই অধিকার আছে ডাকাতি করা যৌক্তিকভাবে নিজ স্বার্থে নৈতিক কারণ এতে দ্রুত ধনী হওয়া যায়। তাই ডাকাতি করা নিজ স্বার্থে খারাপ কিছু নয়। এমনকি মুক্তমনে ধর্ষণ করাও বৈধতা পেয়ে যাবে কারণ মুক্তমনা চিন্তা করবে আমার নিজের স্বার্থে নিজের নৈতিকতা আমি নিজেই তৈরি করতে পারি তাই নাস্তিক মুক্তমনা হিসেবে মুক্তচিন্তায় ধর্ষণ করা খারাপ কিছু নয়।-ইত্যাদি ইত্যাদি আমি মুমিনের কোনো কথা নয়। আমার কথা আপনার বিশ্বাস করার বিন্দুমাত্র দরকারও নেই। যে প্রমাণ গুলো পেশ করা হবে, যেই যুক্তি গুলো সামনে নিয়ে আসা হবে আপনার। এসব আপনি নিজেই যাচাই করে দেখে নেবেন। যে যুক্তি গুলো পেশ করা হয়েছে সেসব আপনি নিজেই পরীক্ষা করে বুঝে নিবেন। এতে তো আপনার আপত্তি থাকার কথা নয়? তাই না?

একজন মানুষ সম্পূর্ণ নষ্ট না হয়ে গেলে সে ধর্ষণ করতে পারে না। একটি বানরের মধ্যে যেমন বোধশক্তি থাকে না ঠিক ধর্ষকদেরও কোনো বোধশক্তি থাকতে পারে না,থাকে না কোন সভ্যজ্ঞান। আমি যদি আপনাকে বলি বিখ্যাত নারীবাদী তসলিমা নাসরিন মানুষকে নষ্ট হয়ে যেতে আদেশ করেছে আপনি কি আমার কথা বিশ্বাস করবেন? করবেন না,তাই তো ? জানি, এতো দিনের অন্ধভক্তি হঠাৎ উনাকে নিয়ে এমন কথা বলা হলে বিশ্বাস না করারই কথা কিন্তু বাস্তব সত্য আপনাকে অন্য কথাই দেখাবে। পড়তে থাকুন।

নারীবাদী তসলিমা নাসরিনের একটি কবিতা আছে নাম “নষ্ট মেয়ে” আপনি গুগলে সার্চ করলেই পেয়ে যাবেন। চলুন আপনাকে কবিতাটি পড়তে দেইঃ কবিতাটি আমি লম্বা করে পেশ করলে লেখার কলেবর বড় হয়ে যাবে তাই আমি পাশাপাশি করে দিচ্ছি। আপনি লাইন বাই লাইন মন দিয়ে পড়তে থাকুন।

ওরা কারো কথায় কান দেয় না, যা ইচ্ছে তাই করে,কারও আদেশ উপদেশের তোয়াককা করে না,গলা ফাটিয়ে হাসে, চেঁচায়, যাকে তাকে ধমক দেয়,নীতি রীতির বালাই নেই, সবাই একদিকে যায়, ওরা যায় উল্টোদিকে,একদম পাগল!কাউকে পছন্দ হচ্ছে তো চুমু খাচ্ছে, পছন্দ হচ্ছে না, লাত্থি দিচ্ছে,লোকে কি বলবে না বলবে তার দিকে মোটেও তাকাচ্ছে না। ওদের দিকে লোকে থুতু ছোড়ে, পেচ্ছাব করে,ওদের ছায়াও কেউ মাড়ায় না, ভদ্রলোকেরা তো দৌড়ে পালায়। নষ্ট মেয়েদের মাথায় ঘিলু বলতেই নেই, সমুদ্রে যাচ্ছে, অথচ ঝড় হয় না তুফান হয়,একবারও আকাশটা দেখে নিচ্ছে না। ওরা এরকমই, কিছুকে পরোয়া করে না,গভীর অরণ্যে ঢুকে যাচ্ছে রাতবিরেতে, চাঁদের দিকেও দিব্যি হেঁটে যাচ্ছে! আহ,আমার যে কী ভীষণ ইচ্ছে করে নষ্ট মেয়ে হতে।

এই হচ্ছে মুক্তচিন্তার-নাস্তিক্যবাদী কবিতার চেহারা। কবিতায় স্পষ্ট অর্থ ফুটে উঠেছে যে নষ্ট মেয়ে হয়ে যেতে খুবই ইচ্ছা হচ্ছে উনার। মা বোনদেরকে প্রথমে নষ্ট মেয়ে বানাবে এরপরে দ্বিতীয় ধাপে ধর্ষণ করতে উৎসাহ দেয়া হচ্ছে নারীবাদী নাস্তিক তসলিমা নাসরিনের কবিতাতেই। কি বিশ্বাস হচ্ছে না তাই তো? পড়তে থাকুন সব প্রমাণ পেয়ে যাবেন।

নাস্তিক তসলিমা নাসরিনের আরেকটি কবিতা আছে “পারো তো ধর্ষণ করো” নামে, এটিও আপনারা গুগলে সার্চ করলেই পেয়ে যাবেন। কবিতাটি হচ্ছে এরকম। আমি পুরো কবিতাটি সামনে তুলে ধরছি।

আর ধর্ষিতা হয়ো না, আর না,আর যেন কোনও দুঃসংবাদ কোথাও না শুনি যে তোমাকে ধর্ষণ করেছে,কোনও এক হারামজাদা বা কোনও হারামজাদার দল। আমি আর দেখতে চাই না একটি ধর্ষিতারও কাতর করুণ মুখ,আর দেখতে চাই না পুরুষের পত্রিকায় পুরুষ সাংবাদিকের লেখা সংবাদ,পড়তে পড়তে কোনও পুরুষ পাঠকের আরও একবার মনে মনে ধর্ষণ করা ধর্ষিতাকে।

ধর্ষিতা হয়ো না, বরং ধর্ষণ করতে আসা পুরুষের পুরুষাঙ্গ কেটে ধরিয়ে দাও হাতে,অথবা ঝুলিয়ে দাও গলায়,খোকারা এখন চুষতে থাক যার যার দিগ্বিজয়ী অঙ্গ, চুষতে থাক নিরূপায় ঝুলে থাকা। অণ্ডকোষ, গিলতে থাক এসবের রস, কষ।

ধর্ষিতা হয়ো না,পারো তো পুরুষকে পদানত করো, পরাভূত করো,পতিত করো, পয়মাল করো, পারো তো ধর্ষণ করো,পারো তো ওদের পুরুষত্ব নষ্ট করো। লোকে বলবে, ছি ছি, বলুক। লোকে বলবে এমন কী নির্যাতিতা নারীরাও যে তুমি তো মন্দ পুরুষের মতই,বলুক, বলুক যে এ তো কোনও সমাধান নয়, বলুক যে তুমি তো তবে ভালো নও বলুক, কিছুতে কান দিও না, তোমার ভালো হওয়ার দরকার নেই, শত সহস্র বছর তুমি ভালো ছিলে মেয়ে, এবার একটু মন্দ হওচলো সবাই মিলে আমরা মন্দ হই, মন্দ হওয়ার মত ভালো  আর কী আছে কোথায়!

বিশ্বাস না হলে আপনি নিজেই এই মুহূর্তে সার্চ দিন কবিতার নাম, “পারো তো ধর্ষণ করো’। কি পাঠক এবার বিশ্বাস হচ্ছে তো? পুরো লেখাটি পড়ার জন্য নিজেকে প্রস্তুত করে নিন কেননা অজানা তথ্য আপনাকে জানিয়ে দেয়া হচ্ছে। সত্য যে কঠিন তাই কঠিনেরেই ভালবাসতে হবে। একজন নারী কিভাবে ধর্ষণ থেকে নিজেকে সেফ থাকতে পারে এর জন্য “পারো তো মার্শালআর্ট শিখো” “পারো তো কুংফু ক্যারাতে শিখো” এরকম কবিতা লিখতে পারতেন কিন্তু তা লিখতে যাবে কেন? বরং একজন মেয়েকে উল্টো ধর্ষণ করার দিকে উস্কানি দিচ্ছেন এই নাস্তিক্যধর্মের পাক্কা অনুসারী নারীটি। একজন পুরুষ যদি কোনো নারীকে ধর্ষণ করতে আসে তাহলে তাকেও উল্টো ধর্ষণ করে দিতে হবে। যেই যাই বলুক পুরুষকে ধর্ষণ করা ভালো, পুরুষকে ধর্ষণ করলে যদি মন্দ হতে হয় সেই মন্দ হওয়াটাই নাকি ভালো। এর চেয়ে ভালো নাকি আর কোথাও নেই। তসলিমা নাসরিনের মুক্তচিন্তা থেকে এমন কথা প্রকাশ পাওয়া অস্বাভাবিক কিছু নয় কারণ মুক্তচিন্তায় স্বাধীনভাবে চিন্তা করার অধিকার তসলিনা নাসরিনের রয়েছে।

তসলিনা নাসরিনের চিন্তার মুক্তি থেকে যেমন এমন কথা বর্ণিত হয়েছে তেমনি অন্য কোনো নাস্তিকের মুক্তচিন্তায় যদি এরকম কথা বর্ণিত হয় যে, ধর্ষণ করা আমার নাস্তিকের মুক্তচিন্তায় ভালো। কারণ এতে আমার নিজের সুখ নিশ্চিত হয়। কোনো নারীবাদী যদি সেক্স করার সম্মতি না দেয় তাহলে আমি নাস্তিকও তার সম্মতির জন্য অপেক্ষা করতে যাবো না বরং আমার শক্তিতে আমি মুক্তমনে ধর্ষণ করবো কারণ বিবর্তিত হয়ে পুরুষরা শক্তিশালী। আর নারীবাদী যদি নিজেকে রক্ষা করতে না পারে তাহলে সেটা তার দোষ কারণ বিবর্তিত হয়ে যে দুর্বল। দেহ যার সিদ্ধান্ত তার, শিশ্ন যার সিদ্ধান্ত তার, মুক্তচিন্তা যার বৈধতা তার। তখন অন্য নাস্তিকদের কাছে কি এমন যুক্তি থাকবে ধর্ষণ করাকে খারাপ বলার? আছে যুক্তি? নাস্তিকরা যেই যুক্তিই পেশ করুক সেই একই যুক্তিতে যদি ধর্ষণ করা মুক্তচিন্তায় ভালো প্রমাণ হয় তাহলে কি নাস্তিকরা নিজেদের যুক্তি নিজেরাই মেনে নিতে পারবে?  

এখানেই শেষ নয় আরও আছে। বঙ্গীয় নাস্তিকদের আইডল হুমায়ুন আজাদও এক তরুণীকে ধর্ষণ করতে চেয়েছিল। পুরো সন্ধ্যা ধরে। প্রমাণ দিয়ে দিচ্ছি আপনি নিজেই পড়ে নিন।

হুমায়ুন আজাদ লিখিত “আমার অবিশ্বাস”, ১৫ পৃষ্ঠায় বর্ণিত হয়েছে

যখন শিশু ছিলাম,কিশোর হয়ে উঠেছি যখন, তখনও আমি সব কিছু চুষে দেখতে চেয়েছি, আজো অনেক কিছু চুষে আর চেখে দেখতে ইচ্ছা করে, ছেলেবেলা ভোরে ইচ্ছে হতো চুলোর লাল আগুনের টুকরোগুলোকে চুষে দেখতে, ওগুলো লাল গোলাপের থেকেও লাল হতে জ্বলজ্বল করতো । সূর্যাস্তকেও চুষে স্বাদ নিতে ইচ্ছে হতো,কয়েক বছর আগে সারা সন্ধ্যা চুষতে চিবুতে ইচ্ছে হয়েছিল চুইংগামের মতো এক তরুণীকে।

এই যদি হয় মুক্তমনাদের মুক্তচিন্তা তাহলে “আমার অবিশ্বাস” নামক বই পড়ে যারা নাস্তিক্যধর্ম বিশ্বাস করেছে তাদের মুক্তচিন্তার কেমন চেহারা হতে পারে? ভাবতে পারেন? আমি বা আপনি কি পারবো এরকম চিন্তা করতে যে একজন তরুণীকে দেখে সারা সন্ধ্যা চুইংগামের মতো চুষতে চাবাতে? কি? কোনো সভ্য মানুষ কি কখনো এই টাইপের চিন্তা করতে পারে? কোনো চিন্তাশীল মানুষ কি কখনো নারী দেখে এরকম চিন্তা করতে পারে? সব কিছু চুষে দেখতে চাওয়া কি কোনো সুস্থ মানুষের লক্ষণ হতে পারে? নাস্তিক হুমায়ুন আজাদ যেমন সারা সন্ধান তরুণী দেখে চুষতে চাবাতে চেয়েছিল এটা যেমন তার কাছে ভালো তেমনি অন্য নাস্তিক যদি নিজের মুক্তচিন্তায় কোনো নারীকে দেখে ধর্ষণ করে ফেলে এটাও তার কাছে ভালো এবং ব্যক্তিগত ব্যাপার বলে গণ্য হবে নাস্তিক্যধর্মের দৃষ্টিতে।

নাস্তিক হুমায়ুন আজাদ নিজের মুক্তচিন্তায় তরুণীকে ধর্ষণ করতে চেয়েছিলেন এর পক্ষে অনেক যুক্তি পাওয়া যায়। একজন মানুষ যদি এটা বিশ্বাস করে যে মৃত্যুই শেষ গন্তব্য। আমরা দুনিয়াতে যাই করি না কেন সবই নিরর্থক বা অর্থহীন এই মানুষের পক্ষে সারা সন্ধ্যা নারীদেরকে চুষতে চাওয়া, চাবাতে চাওয়া অস্বাভাবিক কিছু নয়। আশ্চর্য কথা হচ্ছে নাস্তিক হুমায়ুন আজাদ নিজেও এই কথা বিশ্বাস করতেন যে দুনিয়া সম্পূর্ণ নিরর্থক, যেহেতু আমাদের সবাইকেই একদিন মরে যেতে হবে। প্রমাণ দিয়ে দিচ্ছি নিজ দায়িত্বে পড়ে ফেলুন।

হুমায়ুন আজাদ লিখিত “আমার অবিশ্বাস” ১৭ পৃষ্ঠায় বর্ণিত হয়েছে, 

তবে সব কিছুই নিরর্থক, জগত পরিপূর্ণ নিরর্থকতায়, রবীন্দ্রনাথ নিরর্থক , আইনস্টাইন নিরর্থক, ওই গোলাপও নিরর্থক, ভোরের শিশিরও নিরর্থক, তরুণীর চুম্বনও নিরর্থক, দীর্ঘ সুখকর সংগমও নিরর্থক, রাষ্ট্রপতি নিরর্থক, কেননা সব কিছুরই পরিনতি বিনাশ।

যে এই কথা মানতে পারে যে তরুণীর চুম্বনও নিরর্থক, দীর্ঘ সুখকর সংগমও নিরর্থক তার কাছে ধর্ষণ করার মুক্তচিন্তা করা কোনো ব্যাপারই না। উনার অনুসারীরা এখানে বলতে পারেন যে উনি তো ধর্ষণ করতে চেয়েছিলেন, ধর্ষণ তো আর করেনি- হ্যাঁ আপনার কথা সঠিক কিন্তু উনি ধর্ষণ করার সুযোগ পায়নি দেখে ধর্ষণ করে নাই যেহেতু আশেপাশে হয়তো মানুষ ছিল। সুযোগ পেলে নাস্তিক হুমায়ুন আজাদ মুক্তমনে ধর্ষণ করতো এটা নিয়ে আমার সংশয় নেই। কেননা উনার লেখাতে উনি নিজেই এটা বর্ণনা করেছেন যে সারা সন্ধ্যা চুষতে চিবুতে ইচ্ছে হয়েছিল চুইংগামের মতো এক তরুণীকে। কেমন তীব্র ইচ্ছা হয়েছিল তাহলে তার? যে সারা সন্ধ্যা চুষতে চেয়েছিল? "ধর্ষণ করার ইচ্ছা করা" কি অপরাধ নয়? কেউ যদি আপনার মা অথবা বোন অথবা স্ত্রীকে ধর্ষণ করতে ইচ্ছা করে তাহলে কি আপনি তাকে কিছুই বলবেন না? ধর্ষণ করতে ইচ্ছা করা আর সুযোগ পেলে ধর্ষণ করা দুটোই সভ্য মানুষদের কাছে অমানবিক বর্বর ও নিকৃষ্ট কিন্তু নাস্তিকদের কাছে ধর্ষণ করার ইচ্ছে করা ভালো যেহেতু এখানে কারও ক্ষতি হচ্ছে না। তাই না? কোনো নাস্তিক যদি অন্য নাস্তিকদের মা বোনদের মুক্তচিন্তায় ধর্ষণ করতে চায় তাহলে যৌক্তিকভাবে একে খারাপ বলা যাবে কিভাবে? যেহেতু এখানে ক্ষতি হচ্ছে না কারও?

মুক্তমনারা যে কম বয়সের সন্তানদেরকে ধরে ধরে সেক্স করতে বাধ্য করতো আর প্রমাণ দিচ্ছি। পড়তে থাকুন। অন্যতম প্রসিদ্ধ একজন মুক্তমনা নাস্তিক নাম প্রবীর ঘোষ, উনার লিখিত “যুক্তিবাদের চোখে নারী-মুক্তি” বইয়ের ১০৩ পৃষ্ঠায় বর্ণিত হয়েছেঃ

নারীবাদী আন্দোলন ও নারীমুক্তি আন্দোলনের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সিমোন দ্য বোভোয়ার। তার সঙ্গে জঁ-পল সার্ত্রের বিবাহ বহির্ভূত শারীরিক সম্পর্ক ছিল। ‘দ্যা ডেঞ্জারাস লিয়াজো’ বইটি থেকে আমরা জানতে পারি, জঁ-পল সার্ত্র ও সিমোন দ্য বোভোয়ার তাদের ছাত্রী ও ছাত্রদের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক গড়তেন বা গড়তে বাধ্য করতেনএমনকী সার্ত্রে তার ছাত্রদের পাঠাতেন বোভোয়ারের সঙ্গে মিলনের জন্যবিনিময়ে বোভোয়ারও তার ছাত্রীদের পাঠাতেন সার্ত্রের কাছে। সেই সময়কার বুদ্ধিজীবীরা ওদের বিরুদ্ধে নষ্ট চরিত্রের অভিযোগ এনেছিলেন। কিন্তু নারী স্বাধীনতা,ক্ষমতায়ন ও চেতনামুক্তি অভিযাত্রায় সিমোন দ্য বোভোয়ার আজ প্রাতঃস্মরণীয়।

ছাত্রী ও ছাত্রদের সাথে শারীরিক সম্পর্ক গড়তে বাধ্য করতেন এই বাধ্য করাকে ধর্ষণ বলা যাবে না? জবরদস্তি করে সেক্স করাকে না ধর্ষণ বলে? এখানেও তো বাধ্য করা হচ্ছে? তাহলে? ছাত্র ছাত্রীদের সাথে জবরদস্তি করাকে কি নারীমুক্তি বলা হবে? সার্ত্রে নিজের ছাত্রদের পাঠাতেন বোভোয়ারের সাথে সেক্সের জন্য এর বিনিময়ে বোভোয়ারও নিজের ছাত্রীদের পাঠাতেন সার্ত্রের কাছে। হ্যাঁ, এভাবেই মুক্তমনে সঙ্গম করতেন ছাত্র ছাত্রীদের সাথে। কিন্তু নাস্তিকরা এগুলো নিয়ে কথা বলবে না। কেনই বা বলবে? কারণ এগুলো নাস্তিক্যধর্মে বৈধ। মুক্তচিন্তায় জায়েজ। এগুলো ব্যক্তিগত নৈতিককাজ। 

নাস্তিক প্রবীর ঘোষ, উনার লিখিত “যুক্তিবাদের চোখে নারী-মুক্তি” বইয়ের ১০৩ পৃষ্ঠাতেই বলেছেন যে,

বোভোয়ার ও সার্ত্রের জীবনে যত উচ্ছৃঙ্খলতা ছিল, তা সবই তাদের ব্যাক্তিজীবনে আবদ্ধতাদের সৃষ্টিতে তা নগ্ন রুপ পায়নি। এই বক্তব্যের মধ্য দিয়ে আমি অবশ্য তাদের বা অন্য কারও ব্যাক্তিজীবনের যৌন উচ্ছৃঙ্খলতা বা বহুগামিতালে সামান্যতম সমর্থন করছি না। বরং নিন্দা করছি, এই নিন্দনীয় কাজের চেয়ে তসলিমার কাজ বহুগুণে বেশি নিন্দনীয়

আমি এমডি আলী এখানে প্রবীর ঘোষ সাহেবের সমালোচনাকে সাধুবাদ জানাই কিন্তু উনার এই নিন্দা প্রকাশ করার কারনেই কি উপরের মুক্তচিনার সঙ্গমকে বর্বর বলে প্রমাণ করা যাবে? অবশ্যই না। কারণ উপরে যারা জোরপূর্বক যৌন কাজ গুলো করেছে তারা কিন্তু ভালো আর ব্যাক্তিস্বাধীনতা মেনেই করেছে আর প্রবীর ঘোষ প্রথমে সেটা স্বীকারও করেছে যে সেসব কাজ তাদের ব্যাক্তিজীবনে আবদ্ধ। তাদের সৃষ্টিতে তা নগ্ন রুপ পায়নি। তাই অন্য নাস্তিকদের কাছে কিছু খারাপ লাগলেই তা অন্য নাস্তিকদের কাছে খারাপ হতে বাধ্য না। কোনো শিক্ষক অথবা শিক্ষিকা যদি ছাত্র-ছাত্রীদেরকে পরীক্ষায় পাশ করার প্রলোভন দেখিয়েও যৌন কাজ করতে বাধ্য করে তবে সেটাও নাস্তিক্যধর্ম সম্পূর্ণ সমর্থন করবে এটা নিয়েও সংশয় নেই। উপরের তথ্য থেকে স্পষ্ট এটা প্রমাণ হচ্ছে যে শক্তিশালীরা দুর্বলদের দিয়ে কিভাবে যৌন কাজ করাতে বাধ্য করতেন? বিবর্তনবাদের এফেক্ট দেখা যাচ্ছে এখানে অর্থাৎ শক্তিমানদের টিকে থাকার লড়াই।

উদাহরণের সাহায্যে বিষয়টি আরো স্পষ্ট হওয়ার চেষ্টা করুন। ধরুন একজন ইয়াতিম মেয়ে যার পরিবার নেই। একজন নাস্তিক উক্ত মেয়েকে নিজের দায়িত্বে নেবে এমন লোভ দেখালো মেয়েটিও রাজি হয়ে গেল।কয়েক মাস নিজের কাছেই রেখে দিল সেই ইয়াতিম মেয়েটিকে। সেই নাস্তিকের ইচ্ছা হলো মেয়েটির সাথে সঙ্গম করবে কিন্তু মেয়েটি সম্মতি দেয়নি। একদিন সেই নাস্তিক লোকটি মেয়েটিকে একটি জঙ্গলে নিয়ে গেল ঘুরতে নিয়ে যাবে এই লোভ দেখিয়ে। সেখানে আশে পাশে কেউ নেই। নাস্তিক লোকটির আবার ইচ্ছা হলো মেয়েটির সাথে যৌনকর্ম করবে কিন্তু মেয়েটি আবারো সম্মতি দিচ্ছে না।পরে নাস্তিক লোকটি মেয়েটিকে বুঝালো যে যৌনকর্ম করা অনেক মজার তাছাড়া আমি নাস্তিক আমার বিয়ে করার জামেলা নেই। তোমাকে অনেক মজা দিব তুমি রাজি হয়ে যাও কিন্তু মেয়েটি এরপরেও সম্মতি দিল না এরপরে নাস্তিক লোকটি জোরপূর্বক মেয়েটিকে ধর্ষণ করে ফেলে এবং মুক্তচিন্তায় হত্যা করে ফেলে। মেয়েটি দুর্বল ছিল বিধায় টিকে থাকতে পারেনি।-এই কাল্পনিক ঘটনা বুঝে থাকলে বলুন নাস্তিক্যধর্ম দিয়ে কি প্রমাণ করা সম্ভব এখানে কে অনৈতিক? বরং যে নাস্তিক ধর্ষণ করেছে তার কাছে কিন্তু ঠিকই ধর্ষণ করা নৈতিক মনে হয়েছে দেখেই কিন্তু সে কাজটি করেছে। মেয়েটি যেহেতু তার মতে সম্মতি দেয়নি তেমনি যুক্তিতে ধর্ষণ নাস্তিক লোকটিও মেয়েটির কথায় সম্মতি দেয়নি। সুতরাং যুক্তিযুক্তভাবে সেই নাস্তিকের মুক্তমনে ধর্ষণ করা তার কাছে ঠিকই ভালো মনে হয়েছে। এটাই নাস্তিক্যধমের দৃষ্টি সমর্থন করে। বুঝতে পেরেছেন? চলুন এবার আপনাকে বাস্তব উদাহরণ পড়তে দেই। চীন নাস্তিক প্রদান দেশ। সেখানে উইঘুরের অসহায় মুসলিম মা বোনদেরকে ধারাবাহিকভাবে গণ ধর্ষণ করে নাস্তিক চীনা পুলিশরা। এটা জানা আছে আপনার? নাকি এসব আপনাকে জানতে দেয়া হয় না? কোনটা?

বাংলাদেশের জনপ্রিয় একটি পত্রিকা “দৈনিক ইত্তেফাক” ২০ ফেব্রুয়াতি, ২০২১ তারিখ সুত্রে বর্ণিত,

পুরুষ সহকর্মীরা ধর্ষণের ব্যাপারে গর্ব করতো। তারা যখন রাতে মদপান করতো তারা একে অপরকে বর্ণনা করতো তারা কিভাবে উইঘুর মেয়েদের ধর্ষণ করে এবং নির্যাতন চালায়

এরকম রেফারেন্স গুগলে সার্চ করলেই অহরোহর পাবেন আমি নিজেও চাচ্ছি আপনি সার্চ করে এসব তথ্য গুলো পড়ুন। আমি বাস্তব উদাহরণ দিলাম মাত্র। চীনের মুক্তমনারা ধর্ষণ করে প্রাউড ফিল করে, চিন্তা করতে পারেন এরা কতটুকু বিবর্তিত জানোয়ার হলে এরকম হতে পারে? যারা ধর্ষণ করেছিল তারা স্রষ্টাকে অস্বীকার করতো, ইসলামকে প্রচুর ঘৃণা করতো, মুসলিমদেরকে মনেপ্রাণে ঘৃণা করতো।

প্রগতিশীল বা নাস্তিকতা প্রতিষ্ঠিত দেশে ধর্ষণঃ

"American National Crime Victimization Survey" এর রিপোর্ট অনুযায়ী ১৯৯৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রে ধর্ষণের ঘটনা ঘটে ২ লাখগড়ে প্রায় আড়াই মিনিটে একটি ধর্ষণ হয় । Microsoft এর বিশ্বকোষে উল্লেখ করা হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে মাধ্যমিক স্কুলের উপর পরিচালিত এক জরীপে দেখা গেছে ২৩% থেকে ৪৮% ছাত্রী তাদের ছেলে বন্ধুদের দ্বারা যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছেকলেজে ও বিশ্ববিদ্যালয়ের চিত্র এরচেয়ে ভয়াবহ।-এক্স সংশয়বাদী ড.রাফান আহমেদ লিখিত “অবিশ্বাসী কাঠগড়ায়” বইতে নাস্তিকদের মুক্তচিন্তার বিষয় বিস্তারিত বর্ণনা দেয়া আছে। পাঠক চাইলে সরাসরি বই থেকেও এসব তথ্য জেনে নিতে পারেন।

আর পশ্চিমে তো ধর্ষণ মহামারীর চেয়েও ভয়ানক আকার ধারণ করেছে। অ্যামেরিকাতে প্রতি ৯৮ সেকেন্ডে একজন যৌন-অগ্রাসনের শিকার হন; বাৎসরিক ধর্ষণের সংখ্যা গড়ে প্রায় ৩২১৫০০। (কম বা বেশিও হতে পারে) (১)। ইউরোপও পিছিয়ে নেই ধর্ষণে! Eurostat জানায়, ২০১৫ সালে প্রায় ২১৫০০০ সহিংস যৌন-অপরাধ সংঘটিত হয়;যার মধ্যে ৮০% অধিক হলো ধর্ষণ। তালিকায় প্রথমেই আছে ইংল্যান্ড এবং ওয়েলস, দ্বিতীয় স্থানে জার্মানি, তারপর ফ্রান্স, সুইডেন (২)। আরেক পরিসংখ্যানে সুইডেন ২য় স্থানে অবস্থান করছে (৩)। পুরো ইউরোপের মাঝে সুইডেন ও ডেনমার্ক যৌন-হয়রানির তালিকায় শীর্ষে অবস্থান করছে (৪)। ফ্রান্স যেখানে ১০০% নারী পাবলিক ট্রান্সপোর্টে অন্তত একবার হলেও যৌন-হয়রানির শিকার হয় (৫)।সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান জানায়, প্রতি ৮ জনে ১ জন নারী ধর্ষিত হন ফরাসিদের দেশে(৬)। নাস্তিক প্রফেসর লরেন্স এম. ক্রউসের বিরুদ্ধেও কয়েক জন নারী যৌন-হয়রানির অভিযোগ তুলেন। শেষমেশ মুখ বাঁচাতে রিটায়ার করার সিদ্ধান্ত বেছে নেন তিনি (৭)। অ্যামেরিকানরা এমন কর্ম করে যে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জাপানের ওকিনাওয়ার ১০ হাজার ধর্ষিত নারী (৮)।

আমি মুসলিম হিসেবে, আমার বিশ্বাস অনুপাতে ধর্ষণ করা নিঃসন্দেহে নিকৃষ্টতম একটি কাজ। যারা এই নিকৃষ্ট কাজ করে তাদেরকে আমি ঘৃণা করি। ঘৃণা করি তাদের মুক্তচিন্তাকে। ঘৃণা করি তাদের নাস্তিকতাকে যেই নাস্তিকতা ধর্ষণ করার স্বাধীনতা দিয়েছে। তাদের কাজকে ইসলাম সমর্থন করে না। কিন্তু নাস্তিক্যধর্ম তো এরকম না। নাস্তিকতা ইসলামের বিপরীত। নাস্তিকতায় একজন মানুষের কাছে যা খারাপ তা অন্য মানুষের কাছে ভালো হতে পারে আবার অন্য মানুষের কাছে যা খারাপ তা আপনার কাছে ভালো মনে হতে পারে। ধর্ষণ করা আমার কাছে খারাপ মনে হলেও যেসব নাস্তিকরা ধর্ষক তাদের কাছে ধর্ষণ করা ঠিকই ভালো। তাদের কাছে খারাপ মনে হলে তো আর তারা ধর্ষণ করতো না। তাই না?

তসলিমা নাসরিনের সাথেই তার মুক্তমনা মামা চাচারা সঙ্গম করেছিল সেই ইতিহাসঃ

তসলিমা নাসরিনের অন্যতম বিখ্যাত একটি বইয়ের নাম “আমার মেয়ে বেলা”। এই বইয়ের ৬৩ নং পৃষ্ঠায় বর্ণিত হয়েছে,

চোখের বাদামি তারা নাচছে শরাফ মামার আর ঠোঁটের কিনারে একরকম হাসি, যার ঠিক অনুবাদ আমি জানি না। মজার জিনিসটা এই বার তরে দেখাই বলে একটানে আমাকে চৌকির ওপর শুইয়ে দেন মামা। আমার পরনে একটি কুঁচিঅলা রঙিন হাফপ্যান্ট শুধু। শরাফ মামা সেটিকে টেনে নিচে নামিয়ে দেন। আমি তাজ্জব। হাফপ্যান্ট দুহাতে টেনে বলি- কি মজার জিনিস দেখাইবা দেখাও। আমারে ন্যাংটা কর ক্যা? শরাফ মামা তাঁর শরীরকে হাসতে হাসতে আমার ওপরে ধপাশ করে ফেলে আবার টেনে নামান আমার হাফপ্যান্ট আর নিজের হাফপ্যান্ট খুলে তাঁর নুনু ঠেসে ধরেন আমার গায়ে। বুকে চাপ লেগে আমার শ্বাস আটকে থাকে। ঠেলে তাঁকে সরাতে চেষ্টা করি আর চেঁচিয়ে বলি- এইটা কি কর, সর শরাফ মামা, সর। গায়ের সব শক্তি দিয়ে ঠেলে তাঁকে একচুল সরাতে পারি না। মজার জিনিস দেহাইতে চাইছিলাম, এইডাই মজার জিনিস। শরাফ মামা হাসেন আর সামনের পাটির দাঁতে কামড়ে রাখেন তাঁর নিচের ঠোঁট। এইটারে কি কয় জানস,চোদাচুদিদুনিয়ার সবাই চোদাচুদি করেতর মা বাপ করে, আমার মা বাপ করেশরাফ মামার তাঁর নুনু ঠেলতে থাকেন বিষম জোরে। আমার বিচ্ছিরি লাগে। শরমে চোখ ঢেকে রাখি দু’হাতে। হঠাৎ ইঁদুর দৌড়ায় ঘরে। শব্দে শরাফ মামা লাফিয়ে নামেন। আমি এক দৌড়ে হাফপ্যান্ট ওপরে টেনে দৌড়ে বের হয়ে যাই ঘর থেকে। ঝোপ পার হতে আমি আর সাপের ভয় ইতস্তত করি না। আমার বুকের মধ্যে সড়াত সড়াত শব্দ হয়, যেন একশ ইঁদুর দৌড়াচ্ছে। শরাফ মামা পেছন থেকে অদ্ভুদ গলায় বলেন - কাউকে কইবি না। কইলে কিন্তু সর্বনাশ।

তসলিমা নাসরিনের “আমার মেয়ে বেলা” এই বইয়ের ৮০ নং পৃষ্ঠায় বর্ণিত হয়েছে, 

কাকা টেনে আমাকে ঢোকান ভেতরে। দাত মেলে হাসতে হাসতে বলেন, আরে খাড়ও, খাড়ও, ম্যাচ লইয়া যাও। ম্যাচ আছে। যাদু দেখানোর মত হঠাৎ একটি দেশলাইএর বাক্স চোখের সামনে ধরেন আমার।হাত বাড়াতে গেলে তিনি সরিয়ে নেন হাত। আবার ধরতে যাই, আবার সরিয়ে নেন। এই ভেসে ওঠে চোখের সামনে দেশলাই, এই নেই। জোনাক পোকার মত, এই আলো, এই আঁধার। দেশলাই ধরতে কাছে চাই কাকার, কাকা টেনে আমাকে আরও কাছে নেন। আরও কাছে গেলে কাকা দেশলাই না দিয়ে পেটে বগলে কাতুকুতু দিতে দিতে আমাকে বিছানায় ফেললেন চিৎ করে। আমি কুঁকড়ে থাকি শামুকের মত। আমার শামুক শরীরটি কাকা শুন্যে তুলে ছুড়ে দেন, কাকা ডাং, আর আমি যেন তাঁর ডাংএর গুটি। আমার শরীর বেয়ে কাকার হাত নেমে আসে আমার হাফপ্যান্টে, হাতটি নামাতে  থাকে হাফপ্যান্ট নিচের দিকে। গড়াতে গড়াতে আমি বিছানা থেকে নেমে যেতে থাকি। আমার পা মেঝেয়, পিঠ বিছানায়, হাফপ্যান্ট হাঁটুর কাছে, হাঁটু বিছানাতেও নয়, মেঝেতেও নয়। গলায় আমার নাল শরীফের তাবিজ। কাকা তাঁর লুঙ্গি ওপরে তোলেন, দেখি কাকার তলপেটের তল থেকে মস্ত বড় এক সাপ ফণা তুলে আছে আমার দিকে যেন এক্ষুণি ছোবল দেবেভয়ে আমি সিটিয়ে থাকি। আমাকে আরও ভয় পাইয়ে দিয়ে আমার দু’উরুর মাঝখানে ছোবল দিতে থাকে সেই সাপএক ছোবল দুই ছোবল তিন ছোবল। ভয়ে আমার গা হাত পা কাঠ হয়ে থাকে। আমার বিস্ফোরিত চোখের দিকে তাকিয়ে কাকা বলেন- লজেন্স খাইবা ? তুমারে কালকা লজেন্স কিইনা দিমু। এই নেও ম্যাচ। আর শুন মামনি, কাউরে কইও না তুমি যে আমার নুনু দেখছ আর আমি যে তুমার সুনা দেখছি। এই সব খারাপ জিনিস, কাউরে কইতে হয় না। আমি দেশলাই হাতে ঘর থেকে বেরিয়ে আসি। দুউরুর মাঝখানে ব্যথা হয়, পেচ্ছাব পায়, আবার দেখি পেচ্ছাব ভরে গেছে আমার হাফপ্যান্ট। জানি না কি নাম এই ন্যাংটো-খেলার।আমি বুঝে পাই না কি কারণে শরাফ মামা বা আমান কাকা আমার ওপরে চড়ে বসেন। কাকা বলেছেন এসব কাউকে বলতে হয় না। আমারও তাই মনে হয়, এসব কাউকে বলতে নেই। সাত বছর বয়সে হঠাৎ এক বোধ জন্ম নেয় আমার ভেতর, যে এসব বড় শরমের কাজ, এসব কথা কখনও কাউকে বলা ঠিক নয়, বড় গোপন ব্যাপার এসব।

ঘটনাটি বিস্তারিত আপনারা সরাসরি তসলিমার বই থেকেও সরাসরি পড়ে নিতে পারেন। কিন্তু এখানে যেটা বুঝার বিষয় মুক্তমনা শরাফ মামা আর আমান কাকা উনারা একান্ত ব্যক্তিগত ইচ্ছায় যে কাজটি করেছেন সেটা উনাদের কাছে নৈতিক ছিল কারণ তারা যদি এটা অনৈতিক মনে করতো তবে তো আর এসব কাজ উনারা করতেন না। উনারা যে নাস্তিক তসলিমা নাসরিনের সাথে যৌনচর্চা করেছে সেটা নৈতিক ব্যক্তিস্বাধীনতার অধিকারেই করেছে এবং এই নৈতিকতা নাস্তিক্যধর্ম সম্পূর্ণ সমর্থন করে এবং করবেও। নাস্তিকরা কখনো এই ইতিহাসকে খারাপ বলতে পারবেনা। নাস্তিকদের কাছে কোনো যুক্তি নেই। বলতে পারেন তসলিমা নাসরিনের ফিজিক্যাল ক্ষতি হয়েছে তাই এটা খারাপ। কিন্তু তসলিমার নিজের লেখা থেকেই স্পষ্ট যে সামান্য দুউরুর মাঝখানে ব্যথা হয়, পেচ্ছাব করা আর সামান্য কষ্ট ছাড়া তেমন কোনো ভয়াবহ-মারাত্মক ফিজিক্যাল ক্ষতি হয়নি ভয়ংকর ক্ষতি হয়নি দেখেই তো তসলিমা নাসরিনের শরাফ মামা আর আমান কাকা ব্যক্তিগত ভাবে মজা নিয়েছেন এবং উনারা উভয়ই একজন সরাসরি মজার জিনিস দেখিয়ে ফেলেছেন আরেকজন চকলেটের প্রলোভন দেখিয়েছেন কিন্তু চকলেট দিয়েছিলেন সেটা নিয়ে সংশয় রয়ে গেছে। তসলিমার শরাফ থেকে আমান কাকারা নিজস্ব মুক্তচিন্তায় যে লীলাখেলা করেছে তাকে খারাপ বলার কোনো ভিত্তি নেই নাস্তিক্যধর্মে।

আমি একজন মুসলিম হিসেবে এরকম ঘটনাকে তীব্রনিন্দা জানাই কারণ নাস্তিক্যধর্ম অনুপাতে এই ধরণের কাজ সমর্থন করলেও ইসলামে এই ধরণের অজাচারকে সমর্থন করতে বাধ্য না। ইসলামের দৃষ্টিতে তসলিমা নাসরিনের সাথে অন্যায় হয়েছে এই কথা সত্য কিন্তু নাস্তিক্যধর্মের মুক্তচিন্তার দৃষ্টিতে অন্যায় হয়নি। এটা নাস্তিকদের মেনে নিতে হবে। আপনি যদি নাস্তিক হয়ে থাকেন হয়তো এই মুহূর্তে ভাবতে পারেন যে নবীজি (সা) তো আয়েশা (রা)কে ৬ বছর বয়সে বিয়ে করেছিল একই তো ঘটনা হলো-এই তো ইসলাম নিয়ে একটা মিথ্যাকথা বলে দিলেন। আপনার ধারণা ভুল।

মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল গালিব (হাঃফি) লিখিত “সীরাতুর রাসুল (সা)” ১৯৯ পৃষ্ঠায় বলা হয়েছে, 

একাদশ নববী বর্ষের শাওয়াল মাসে অর্থাৎ হযরত সওদা বিন্তে যাম’আর সাথে বিয়ের ঠিক এক বছরের মাথায় ওছমান বিন মাযউন (রা) এর স্ত্রী খাওলা বিনতে হাকীম (রা) এর প্রস্তাবক্রমে হযরত আবু বকরের নাবালিকা কন্যা আয়েশা রাসুলুল্লাহ (সা) বিবাহ করেন। বিয়ের তিন বছর পরে সাবালিকা হলে নয় বছর বয়সে মদীনায় ১ম হিজরী সনের শাওয়াল মাসে তিনি নবীগ্রহে গমন করেন।

সুনানে ইবনে মাজাহ,হাদিসঃ৩৩২৪,সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,

আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃআমার মা আমাকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সংসারে পাঠাতে চাচ্ছিলেন বিধায় আমার দৈহিক পরিপুষ্টির জন্য চিকিৎসা করাতেন। কিন্তু তা কোন উপকারে আসলো না। অবশেষে আমি তাজা খেজুরের সাথে শসা মিশিয়ে খেলাম এবং উত্তমরুপে দৈহিক পরিপুস্টি লাভ করলাম-ihadis.com

নাস্তিকদেরকে আমি উপদেশ দিব সততারযুক্ত বিনয়ের সাথে ইসলাম নিয়ে লেখাপড়া করতে শিখুন। নাস্তিকান্ধদের মিথ্যা সমালোচনা থেকে কপি করে অভিযোগ করা থেকে বিরত থাকুন। কারণ নাস্তিকরা মিথ্যুকবাজ হয়। তারা কখনো ইসলামের সঠিকব্যাখ্যা করেনি। নবীজি (সা) আম্মাজান আয়েশা (রা)কে অল্প বয়সে বিয়ে করলেও সম্পূর্ণ দাম্পত্য জীবন শুরু করেন বিয়ে করার তিন বছর পরে অর্থাৎ আম্মাজান আয়েশা (রা) প্রাপ্তবয়স্কা হয়ে যাওয়ার পরে। আম্মাজান আয়েশা (রা) উনার বয়স্ক স্বামীকে নিয়ে সুখেই ছিলেন। আয়েশা (রা) নিজের স্বামীকে মনেপ্রাণে ভালোবাসতেন। কিন্তু আজকে আমার লেখার বিষয় এটা নয়। এই বিষয় আমার বিস্তারিত লেখা আছে সেগুলো আপনি পড়ে নিয়েন। সুতরাং নাস্তিকদের দাবি মিথ্যা অর্থাৎ একই ঘটনা নয়। মূল বিষয় যা ছিল শরাফ মামা, আমান কাকা যা করেছেন সেটা নাস্তিক্যধর্ম সম্পূর্ণ সমর্থন করে। নাস্তিকতায় কখনো নৈতিকতা চাপিয়ে দেয়া হয় না এই কারণে যার যেমন ইচ্ছা সে তেমন নৈতিকতা ধারণ করে নিতে পারে। যেমন শরাফ মামা, আমান কাকারা লজেন্স বা মজার জিনিসের প্রলোভন দেখিয়ে নিজের ব্যক্তিগত ইচ্ছায় নিজের কামনা পূরণ করেছেন। উনারা যেই কেউই হউক না কেন নাস্তিক্যধর্ম তা সম্পূর্ণ সমর্থন করে। নাস্তিক তসলিমা তার সাথে ঘটে যাওয়ার এমন ঘটনা নিয়ে আফসস করেছিলেন কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে উনি তাহলে কেন “পারো তো ধর্ষণ করো“ এমন কবিতা লিখতে গেলেন? এরমানে উনি যখন, তখন যদি বড় থাকতেন তাহলে মামা-কাকাদের সাথে কি প্রতিশোধ নেয়ার জন্য একই কাজ করে দিতেন? তাহলে ফলাফল কি দাঁড়াচ্ছে?

পাঠক আরেকটি বিষয় আপনাকে না জানিয়ে পারছি না,নাস্তিক হুমায়ুন আজাদ । তিনি তার "আমার অবিশ্বাস" কেতাবের ১৪৩ পৃষ্ঠায় বর্ণনা করেছেনঃ 

নৈতিকতা হওয়া উচিৎ সংকীর্ণ আমার কোন কাজ যেন অন্যের ক্ষতি না করে। এতটুকুই।

অন্যের ক্ষতি না করে যা ইচ্ছা তাই করা হচ্ছে নৈতিকতা। এটাই মুক্তমনা লোকটি থেকে জানা গেলো। এখন একটি কাল্পনিক উদাহরণ খেয়াল করে পড়ুন।

ধরুন আসিফ মহিউদ্দিন নামের একজন নাস্তিক লোক জার্মানিতে বাস করেন। তার একটি ছোট্ট ছেলে সন্তান আছে নাম সিদ্ধার্থ। এখন একদিন এই নাস্তিক লোকটি তার ছোট্ট ছেলেকে বললো তুমি যদি আমার শিশ্ন চুষে দেও তাহলে আমি তোমাকে অনেক চকলেট উপহার দিব। এখন ধরা যাক ছেলেটি তার বাবার শিশ্ন চুষে দিয়েছে। ফলে সেই নাস্তিক লোকটি তার নিজের সন্তানকে যেই কথা দিয়েছিল সেটা রেখেছে। এখানে বাবা এবং ছেলে উভয়ই সন্তুষ্ট, দুইজনেই সুখ পেয়েছে। কারো ক্ষতি হয়নি বরং উভয়ই আনন্দিত হয়েছে

নাস্তিক্যধর্মের দৃষ্টিতে এরকম কাজ মন্দ বলে গণ্য হবার সুযোগ আছে? অবশ্যই নেই। যেহেতু এখানে কারোই ক্ষতি হইনি বরং দুইজনেই মজা পেয়েছে,আনন্দ পেয়েছে । বাবা শিশ্নে, পুত্র চকলেটে। আমরা মুমিনরা যদি ইসলামের শিক্ষায় এরকম ঘটনাকে মন্দ বলি,নিকৃষ্ট বলি তাহলে নাস্তিকরা আমাদেরকে বলবে আমরা নাকি মুক্তচিন্তা করতে পারি না, আমরা নাকি এখনো আধুনিক হতে পারিনি, আমরা এখনো প্রাচীন যুগের আদর্শ নিয়ে আছি, ইত্যাদি ইত্যাদি। কিন্তু আপনি নিজেই নিজেকে প্রশ্ন করুন তো যেই নাস্তিক্যধর্ম এমন মুক্তচিন্তার বৈধতা দেয় সেই নাস্তিক্যবাদে বিশ্বাস করার কোনো যৌক্তিকতা থাকতে পারে? এমন নির্লজ্জ মুক্তচিন্তা নাস্তিকদের কাছে যৌক্তিকভাবে ভালো মনে হলেও আমার কাছে এমন মুক্তচিন্তা ঘৃণিত, নিকৃষ্ট। আমি এমডি আলী নাস্তিক্যধর্মে অবিশ্বাস করি। আমি এমডি আলী নাস্তিকদের মুক্তচিন্তায় অবিশ্বাস করি। আমি এমডি আলী ডারউইনিজমে অবিশ্বাস করি। আমার প্রতিটি অবিশ্বাসের যৌক্তিককারণ আছে, আছে শক্তিশালী প্রমাণ।  

হুমায়ুন আজাদ লিখিত “ধর্মানুভূতির উপকথা” বইতে বর্ণিত হয়েছে, 

পৃথিবীতে সব কিছুই চলে যুক্তির সাহায্যে; গণিত, পদার্থবিদ্যা, রসায়ন প্রভুতি থেকে শুরু করে সব কিছুই চলে যুক্তির সাহায্যে, কোনো জ্ঞানই যুক্তি ছাড়া সম্ভব না, কোনো সত্যই যুক্তি ছাড়া উদ্ঘাটন করা যায় না।

নাস্তিক্যধর্মে ধর্ষণ করা বৈধ এর পক্ষে যুক্তি রয়েছে। যদি আপনি নাস্তিক হয়ে থাকেন তাহলে ধর্ষণ করা যে খারাপ এটার কি যুক্তি বা কারণ রয়েছে আপনার কাছে? হয়তো বলতে পারেন অন্যের ক্ষতি হচ্ছে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে অন্যের ক্ষতি হচ্ছে কিন্তু যে নাস্তিক ধর্ষণ করেছে তার তো ক্ষতি হচ্ছে না বরং তার তো মজা লেগেছে, তাই না? অন্যের ক্ষতি হলে সেটা যদি অন্যায় হবে তাহলে তো একই যুক্তিতে অন্যের ক্ষতি না করে কেউ যদি চায় নিজে ইয়াবা,গাজা,ফেন্সিডিল এসব সেবন করাও বৈধ হয়ে যাচ্ছে,আপনি কি এসব সেবন করা একই যুক্তিতে সমর্থন করবেন? অন্যের ক্ষতি হলেই যদি সেটা খারাপ তাহলে এই যুক্তিতে ইসলামের সমালোচনা করাও খারাপ কারণ আপনারা ইসলাম নিয়ে মিথ্যাচার করেন এতে মানুষ ইসলাম সম্পর্কে ভুল জানবে, এটাও এক প্রকার ক্ষতি, মানুষ সঠিক তথ্য জানতে পারছে না,এই ক্ষতির জন্য কি আপনারা সমালোচনা বাদ দিচ্ছেন? বলতে পারেন এখানে তো ফিজিক্যাল ক্ষতি হচ্ছে না কিন্তু ধর্ষণ করলে একজন নারীর ফিজিক্যাল ক্ষতি হচ্ছে। আপনার এই যুক্তিকে সঠিক ধরে নিলে *ধর্ষণ করার ইচ্ছা করা* বৈধ হয়ে যাচ্ছে কেননা ধর্ষণ করার ইচ্ছা করলে তো আর ফিজিক্যাল ক্ষতি হচ্ছে না, খেয়াল করুন একই যুক্তি, একই ভিত্তি আপনি কি মেনে নিচ্ছেন? অন্যকে শারীরিক ক্ষতি না করে যা ইচ্ছা তাই করা যদি নৈতিকতা হয় তাহলে যদি কেউ চায় তবে নিজের মা-বাবা অথবা অন্যের মা-বাবাকে গালাগালি করাও নৈতিক হয়ে যাচ্ছে, যেহেতু এখানে শারীরিক ক্ষতি হচ্ছে না? ইসলাম নিয়ে মিথ্যাচার করাটাও নৈতিক হয়ে যাচ্ছে, এই কারনেই কি নাস্তিকরা ইসলাম নিয়ে মিথ্যাচার করে নাকি? নাহলে এদের মিথ্যাচার গুলো ধরিয়ে দেওয়ার পরেও একই মিথ্যাচারের প্রতি এদের ভক্তি থাকে কিভাবে? আবার অন্যের ক্ষতি হলে যদি ধর্ষণ করা খারাপ হয় তাহলে যেই নাস্তিক মুক্তমনে ধর্ষণ করতে পারছে না এতে তো তার চাহিদা পূরণ করতে না পেরে তার মনে কষ্ট লাগবে এটাও তো এক প্রকার ক্ষতি তাই একই যুক্তিতে নাস্তিকদের কাছে ধর্ষণ করা ভালো মনে হলে খারাপের যুক্তি কি?

ধর্ষণ করলে অন্যের শারীরিক ক্ষতি হয় তাই ধর্ষণ করা খারাপ। প্রশ্ন হচ্ছে শারীরিক ক্ষতি বলতে আসলে কি বুঝাচ্ছেন? বলতে পারেন মুক্তমনে ধর্ষক উক্ত নারীকে অত্যাচার করেছে। মেরেছে বা নির্যাতন করেছে তাই ফিজিক্যাল ক্ষতি হয়েছে তাই ধর্ষণ করা খারাপ। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে একজন নাস্তিক শারীরিক ক্ষতি না করে যদি স্রেফ জবরদস্তি নিজের শিশ্নটি শুধু প্রবেশ করিয়ে দিতে থাকে নিজের শক্তি খাটিয়ে এবং নারীটি যদি শিশ্নটি থেকে নিজেকে রক্ষা করতে না পারে তাহলে কি এই টাইপের ধর্ষণ করা ভালো নাস্তিকদের যুক্তিতে? এখানে তো শারীরিক কোনো ক্ষতি হচ্ছে না বরং বিবর্তিত প্রাপ্ত শক্তি প্রয়োগ করে নিজের শিশ্নটি স্রেফ প্রবেশ করে দেয়া হয়েছে সুখ নেবার জন্য এটা কিভাবে খারাপ বলা যাবে নাস্তিক্যধর্ম দিয়ে বা বিবর্তনবাদের দৃষ্টিতে? আবার ধরুন নারীকে অজ্ঞান করে যদি সেক্স করা হয় তাহলে এটি কে ধর্ষণ বলা যাবে? কারণ এখানেও তো কারও ক্ষতি হয়নি? অজ্ঞান করার ঔষধে ক্ষতি হয় না তো?

ধরুন এক নাস্তিক পুরুষ এক নাস্তিক নারীকে নিয়ে জাহাজে করে ভ্রমণ করতে গেল। জাহাজে আর কেউই নেই। নাস্তিক পুরুষটি উক্ত নাস্তিক নারীকে সেক্স করার জন্য আহ্বান জানালে নারীটি রাজি হয় নাই তাই পুরুষটি নিজের শক্তি খাটিয়ে নারীটিকে রশি নিয়ে বেধে নিজের চাহিদা পূরণ করলো। মেয়েটি সেক্স করার আগে সম্মতি না দিলেও শেষ দিকে মজা পেয়ে উক্ত লোকটির সাথে ইচ্ছাতেই সহবাস করলো। অর্থাৎ প্রথম দিকে সম্মতি না দিলেও শেষ দিকে মজা পেয়ে সম্মতি দিয়ে দিল। প্রশ্ন হচ্ছে প্রথম দিকে জোরপূর্বক যৌনকর্মকে ধর্ষণ বলা যায় কি? যদি আপনার উত্তর হয় "না" তাহলে কি একটি মেয়েকে এভাবে শারীরিক ক্ষতি না করে বেধে সহবাস করা নাস্তিক্যদৃষ্টিতে সমর্থনযোগ্য হয়ে যাবে?

বলতে পারেন মেয়েটি প্রথমে সম্মতি দেয় নাই পরে দিয়েছে তাই এটা ধর্ষণ না। কিন্তু সম্মতি দেয় নাই এটা কি উক্ত নাস্তিক পুরুষ প্রাণী মেনে নিতে বাধ্য? মেয়েটি যদি *আমার দেহ আমার সিদ্ধান্ত* যুক্তি মেনে চলে তাহলে একই যুক্তিতে নাস্তিক পুরুষটি যদি বলে আমার শিশ্ন আমার সিদ্ধান্ত একইসাথে শারীরিক ক্ষতি না করে রশি দিয়ে বেধে সেক্স করলে সেটা নাস্তিক্যদৃষ্টিতে কিভাবে অন্যায় হচ্ছে? কোন যুক্তি গুলোর ভিত্তিতে অনৈতিক হচ্ছে? ধরুন কোনো সমকামীর খুবই কামনা জেগেছে সেক্স করবে। আশেপাশে কাউকে না পেয়ে নিজের নাস্তিক বৃদ্ধ পিতার সাথেই যৌনকর্ম করার চেষ্টা করলো। পিতা বৃদ্ধ থাকার কারণে বাধা দিতে পারেনি কিছু বলেওনি। মুক্তমনাদের এমন সঙ্গমকে ধর্ষণ বলা যাবে? ধরুন পিতা বৃদ্ধ নয়। পুত্র তার সাথে জবরদস্তি সঙ্গম করলো। পিতা রাগ করে পুত্রের সাথে জবরদস্তি সমকামীতা চর্চা করলো। এখানে কে অন্যায় করলো? নাস্তিক্যদৃষ্টিতে ও বিবর্তনবাদের দৃষ্টিতে কি অন্যায়? এবং কেন? যুক্তি কি? প্রমাণ কেমন? ধরুন দুইজন সমকামী যাদের তীব্র যৌন ইচ্ছা জেগেছে কিন্তু তারা একজন অপরজনকে দেখতে পারে না। এখন দুইজনে দুইজনের সাথে জবরদস্তি সেক্স করলে এটা কি ধর্ষণ বলে গণ্য হবে? দুইজনেই দুইজনের সাথে জবরদস্তি করেছে কিন্তু?

ধরুন নাস্তিক পিতা ও নাস্তিক পুত্র উভয়ই জেলখানায় বন্দি। নাস্তিক পিতা সব সময় পুত্রের সাথে যৌনকর্ম করে নিজের চাহিদা মেটায় কিন্তু পুত্র এটা পছন্দ করেনা কিন্তু নিজের পিতা তাই মানাও করতে পারে না। এই ধরনের যৌনকর্মকে নাস্তিক্যদৃষ্টিতে ধর্ষণ বলা যাবে কি? উপরের উদাহরণগুলো কাল্পনিক হলেও যৌক্তিক। আরও যে প্রশ্নমালা থেকে যায়।

প্রানীজগতে সবার নৈতিকতা এক না তাহলে ধর্ষণ করা কিভাবে যুক্তি দিয়ে চুরান্ত খারাপ প্রমাণ করা যাবে? মানুষ নিজেই নিজের নৈতিকতা তৈরিতে যথেষ্ট - এই কথার ভিত্তিতে ধর্ষণকে কিভাবে খারাপ প্রমাণ করা যাচ্ছে? প্রতিটি মানুষের ব্যক্তিস্বাধীনতা রয়েছে কথার ভিত্তিতে ধর্ষণ করা খারাপ কিভাবে? নাস্তিকতা যদি ধর্ষণ নিয়ে ডিল না করে তাহলে সব নাস্তিকদের নৈতিকতা সবার কাছে চুরান্ত না তাহলে এই ক্ষেত্রেও ধর্ষণ করা খারাপ কিভাবে প্রমাণিত হয়? চতুষ্পদ জন্তু থেকে কোটি কোটি বছরে বিবর্তিত মগজ কিভাবে নিশ্চিত হবে ধর্ষণ করা আসলেই খারাপ? কোন যুক্তির সাহায্যে ধর্ষণ করাকে খারাপ প্রমাণিত করতে পারবে মুক্তচিন্তারগোষ্ঠী? প্রতিটি মানুষের মুক্তচিন্তা করার অধিকার আছে এই কথা থেকে ধর্ষণকে খারাপ প্রমাণ করা যাবে কিভাবে?

নাস্তিক্যমুক্তচিন্তারদৃষ্টিতে দেখা যাচ্ছে অন্যের ক্ষতি ধর্ষণকে খারাপ প্রমাণ করে না তাই নাস্তিক হিসেবে মাত্র এমন একটি যৌক্তিক সন্দেহের উর্ধে যুক্তি পেশ করতে হবে নাস্তিক্যধর্মের দৃষ্টিতে যে ধর্ষণ করা অনৈতিক? বিবর্তনবাদের সুত্র দিয়েও চাইলে প্রমাণ করতে পারেন যে ধর্ষণ করা কিভাবে খারাপ? ধর্ষণ করা খারাপ-এর যুক্তি গুলো কি কি? সেই যুক্তি গুলো যে সঠিক তার প্রমাণ গুলো কেমন হবে? অন্যের ক্ষতি হচ্ছে তাই ধর্ষণ করা অনৈতিক - এই যুক্তিতে আপনি যদি ধর্ষককে মৃত্যুদণ্ডের শাস্তি দেন অথবা যেকোনই শাস্তি দেন না কেন এতে তো একই যুক্তিতে ধর্ষকেরও উল্টো ক্ষতি হচ্ছে। তাহলে আপনাদের দেয়া স্ববিরোধী যুক্তির এরকম দুর্ঘটনায় নাস্তিক্যধর্মের বা বিবর্তনবাদের কাছে সমাধান কি হতে যাচ্ছে? চিন্তা করেছেন কখনো? ভাবতে থাকুন তো?

নাস্তিক্যধর্মের বা নাস্তিক্যদৃষ্টিতে ধর্ষণ করাকে কখনোই খারাপ বলে প্রমাণ করা সম্ভব না আর যৌক্তিকভাবে সম্ভব হচ্ছেও না। হয়তো আপনি ব্যক্তিগত ভাবে ধর্ষণ করাকে খারাপ বলে স্রেফ বিশ্বাস করতে পারেন কিন্তু যে মুক্তমনা ধর্ষক সে নিজের যুক্তি মেনেই ধর্ষণ করছে এটা আপনাকে নাস্তিক্যদৃষ্টিতে স্বীকার করতে হচ্ছে আপনার অনিচ্ছা সত্ত্বেও কারণ সবাই সবার মুক্তচিন্তায় স্বাধীন। নৈতিকতা আকাশ থেকে আসে না মানুষ নিজেই নিজের নৈতিকতার উৎস। নাস্তিকরাই তো এমন কথা বলে থাকে।

প্রাণীজগতে বিবর্তনবাদের দৃষ্টিতে ধর্ষণঃ

মানুষ,অন্যান্য প্রাণী থেকে সম্পূর্ণরূপে আলাদা, এমন ভাবার কোনো কারণ নেই। মানুষ জীবজগতেরই একটা অংশমাত্র। কুকুর, শিম্পাঞ্জী, হাতি, গরিলা যেমন আলাদা-আলাদা প্রজাতি, মানুষও তেমন। তবে প্রজাতিভিত্তিক প্রাণিকুলের স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য আছে। নাস্তিক অভিজিৎ রায় “সমকামিতা” নামে একটি বই লিখেছেন। “বিবর্তনের দৃষ্টিতে সমকামিতা” নামে শিরোনামও দিয়েছেন। উনি সমকামিতাকে ন্যাচারাল প্রমাণ করার জন্য বিভিন্ন প্রাণীদের মধ্যে যে সমকামিতা উপস্থিত এসব প্রমাণ সামনে নিয়ে এসেছেন।

“সমকামিতা” বইয়ের ৬৭ ও ৬৮ পৃষ্ঠায় বর্ণিত হয়েছে, 

ভেড়ার জীবন যাত্রা খুব কাছ থেকে পর্যবেক্ষণ করে বিজ্ঞানীরা সমকামি প্রবণতার প্রচুর উদাহরণ পেয়েছেন। তবে মেষপালকেরা ভেড়ার এই প্রবণতার কথা অনেক আগে থেকেই জানতেন। এই ধরণের ভেড়ার পাল সবসময়ই মেষপালকদের জন্য হতাশা বয়ে আনে। কারণ এরা বংশবিস্তারে কোনো সাহায্য করে না। তারা প্রথম থেকেই ভেড়ীদের প্রতি থাকে একেবারেই অনাগ্রহী। এদের আগ্রহের পুরোটা জুড়েই থাকে আরেকটি ভেড়া বা মেঘ। অরেগন হেলথ এন্ড সায়েন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের চার্লস রসেলির মতে শতকরা ৮ ভাগ ভেড়া এরকম সমকামী প্রবৃত্তিসম্পন্ন হয়ে থাকে।……………….. ভেড়া ছাড়াও সমকামী আচরণ লক্ষ্য করা গেছে বিভিন্ন স্তন্যপায়ী জীবের ক্ষেত্রেওএদের মধ্যে হাতি, সিংহ, চিতাবাঘ, হায়না, ক্যাঙ্গারু, হরিণ, জিরাফ, আমেরিকা, ইউরোপ ও আফ্রিকার মোষ, জেব্রা উল্লেখযোগ্য।পাখিদের মধ্যে পেঙ্গুইন, ধুসর পাতিহাস, কানাডা পাতিহাস,কালো রজহাঁস, বরফী পাতিহাঁস, মিউট রাজহাঁস, শকুন সহ অনেক প্রাণীর মধ্যে সমকামিতার সুস্পষ্ট উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। সরীসৃপের মধ্যে সমকামিতার আলামত আছে কমন অ্যামিভা, অ্যানোল, গিরগিটি, স্কিনক, গেকো মাউরিং, কচ্ছপ, রাটেল স্নেক প্রভুতিতে। সমকামিতার অস্তিত্ব আছে বিভিন্ন প্রজাতির ব্যাঙ, সালাম্যান্ডারের মতো উভয়চর এবং বিভিন্ন মাছেও।

সমকামিতা বইয়ের ৭০ পৃষ্ঠায় বর্ণিত হয়েছে, 

২০০৬ সালের হিসেব অনুযায়ী বিজ্ঞানীরা প্রাণীজগতে ১৫০০’রও বেশি প্রজাতিতে সমকামিতার সন্ধান পেয়েছেনআর মেরুদণ্ডী প্রাণীর তিনশ’রও বেশি প্রজাতিতে সমকামিতার অস্তিত্ব খুব ভালভাবেই নথিবদ্ধ

সমকামিতা বইয়ের ৭১ পৃষ্ঠায় বর্ণিত হয়েছে, 

এত কিছু পরও সমকামিতার পুরো ব্যাপারটিকে “প্রাকৃতিক” বলে মেনে নিতে অনেকেরই প্রবল অনীহা আছে। প্রাণীজগতের অসংখ্য উদাহরণ হাজির করা হলেও মানুষকে এগুলো থেকে আলাদা রাখতেই পছন্দ করেন সবাই। কিন্তু যতই আলাদা করে রাখি না কেন, আমরা “সৃষ্টির সেরা জীব” বলে কথিত গর্বিত মানুষেরাও কিন্তু ঘুরে ফিরে সেই প্রকৃতিরই (আরো ভালোভাবে বললে প্রাইমেটদের) অংশ। ইংল্যান্ডের লিভারপুল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রবিন ডানবার এ প্রসঙ্গে বলেন - সব কথার শেষ কথা হলো, অন্যান্য প্রাইমেটদের মধ্যে বিশেষতঃ এ পদের মধ্যে কোনো কিছু ঘটলে এর একটা বিবর্তনীয় ধারাবাহিকতা হয়ত মানুষের মধ্যেও থাকবে বলে ভেবে নিলে হয়ত সেটা অযৌক্তিক হবে না।

পাঠক আপনারা সমকামিতা বইটির চতুর্থ অধ্যায়,”বিবর্তনের দৃষ্টিতে সমকামিতা” ৫৭ পৃষ্ঠা থেকে ৭৩ পৃষ্ঠা পর্যন্ত বিস্তারিত পড়ে দেখতে পারেন। প্রশ্ন হচ্ছে প্রাণীজগতে বিবর্তনের ভিত্তিতে সমকামীতা প্রাকৃতিক ও সমর্থনযোগ্য হতে পারলে একই ভিত্তিতে ধর্ষণ করা কেন সমর্থনযোগ্য বা প্রাকৃতিক হতে পারবে না? প্রাণীদের মধ্যে সমকামীর অস্তিত্ব থাকলে যদি সমকামীতা ন্যাচারাল হয় তাহলে একই ভিত্তিতে প্রানিজগতে ধর্ষণ করার অস্তিত্ব বিদ্যমান থাকা সত্ত্বেও ধর্ষণ করা কেন ন্যাচারাল হওয়ার যৌক্তিকতা রাখে না? বিবর্তনবাদের দৃষ্টিতে এসব প্রশ্নের জবাব গুলোর যৌক্তিকতা কি কি?

প্রাণিজগতে ধর্ষণের অনেক উদাহরণ রয়েছে। প্রথমে আর্থোপোডা পর্বের একটা পতঙ্গকে দিয়ে শুরু করা যাক। ওয়াটার স্ট্রাইডার (Water Strider),পানির উপরিতলে ঘুরে বেড়ানো একটা পতঙ্গ। বিভিন্ন পুকুর, জলাশয়ে পানির উপর দিয়ে এদেরকে হেঁটে বেড়াতে দেখা যায়। ফিমেল স্ট্রাইডারের শরীরে যৌনাঙ্গকে রক্ষা করার জন্যে একটা আবরণ থাকে। মেল স্ট্রাইডার তাই সেক্সের ক্ষেত্রে একটা কৌশল অবলম্বন করে। ফিমেলকে সে জোরপূর্বক ধরে রেখে পা দিয়ে পানিতে আঘাত করতে থাকে। এতে পানিতে তরঙ্গের সৃষ্টি হয়। যা অন্যান্য পোকা, মাছকে আকৃষ্ট করে। ফিমেল স্ট্রাইডারের তখন উভয় সংকট ! হয় মাছের খাদ্য হতে হবে, নয়ত মেল স্ট্রাইডারের কাছে নতি স্বীকার করতে হবে। স্বভাবতই সে যখন নত হয়, মেল পতঙ্গটি তখন পানিতে ভাইব্রেশন বন্ধ করে। এভাবে ক্ষুদ্র প্রজাতির এই প্রাণিদের মধ্যে একটা বলপূর্বক যৌনমিলন ঘটে (৯)।

ডলফিন (Bottlenose Dolphin) আমাদের পরিচিত একটা প্রাণি। প্রধানত স্তন্যপায়ী প্রাণিদের মধ্যে মানুষের পরেই অনেকক্ষেত্রে এদেরকে স্থান দেওয়া হয়। ডলফিন প্রজাতিতে যৌন-আক্রমণ বেশ তীব্রমেল ডলফিন সাধারণত একটা দলের মধ্যে থেকে ফিমেলকে আলাদা করে। যদি কাউকে না পায়, তাহলে দলের সবচেয়ে ছোট মেল ডলফিনকে তখন যৌনাকাঙ্ক্ষা (কিছু স্তন্যপায়ী শুধুমাত্র বংশবৃদ্ধির জন্যে সেক্স করে, এমন নয়। কামনা থেকেও সেক্স করে, যাকে ‘sex for pleasure’ বলা হয়। পরবর্তীতে এ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।) মেটাবার কাজে ব্যবহার করা হয়। এছাড়া কোনো একটা দলের ফিমেল ডলফিনদেরকে আলাদাভাবে সুরক্ষা দেওয়া হয়, যাতে বাইরের কেউ এসে তাদের ভোগ করতে না পারে (১০)। তিন চারজন কুকুর মিলে একজন অসহায় কুকুরকে ধর্ষণ করার চেষ্টা করছে (১১)। একটি কুকুর একটি মোরগকে ধর্ষণ করছে (১২)।

নাস্তিকদেরকে কখনো দেখেছেন কুকুর ধর্ষণের বিচার চাই,মোরগ ধর্ষণের বিচাই চাই, ইত্যাদি প্রাণী ধর্ষণের বিচার চাই- এরকম স্লোগান দিয়ে আন্দোলন করতে? প্রাণীজগতে যেমন সমকামীতার অস্তিত্ব রয়েছে বলে সমকামীতা ন্যাচারাল বলে নাস্তিকরা একই ভিত্তিতে প্রাণীজগতে ধর্ষণ করার অস্তিত্বও রয়েছে তাই ধর্ষণ করাও বিবর্তনবাদের দৃষ্টিতে ন্যাচারাল হবে। আর মানব প্রজাতিও বিবর্তনবাদের দৃষ্টিতে চতুষ্পদ প্রাণী। তাই মানুষ প্রাণীদের মধ্যে ধর্ষণ থাকলে সেটা বিবর্তনবাদের দৃষ্টিতে খারাপ বলার কোনো যৌক্তিক সুযোগ থাকছে না।

প্রশ্নঃ হুমায়ুন আজাদ,তসলিমা নাসরিন উনারা ধর্ষণ করতে চেয়েছিলেন বা করতে বলেছেন এর থেকে তো এটা প্রমাণ হয় না যে সব নাস্তিকরাই ধর্ষণ করায় বিশ্বাস করবে?

উত্তরঃ  আপনি ব্যক্তিগতভাবে যেমন বিশ্বাস করতে পারেন যে ধর্ষণ করা খারাপ একইভাবে যারা ধর্ষক তাদের কাছে কিন্তু ঠিকই ধর্ষণ করার পক্ষে যুক্তি রয়েছে এবং নাস্তিক্যধর্মে তা যৌক্তিকভাবেও সমর্থন করছে। ধর্ষণ করা যে খারাপ এটা আপনি নাস্তিক্যদৃষ্টিতে প্রমাণ করতে পারছেন না। একজন নাস্তিকের কাছে ধর্ষণ করা ভালো হতে পারে আবার অন্য নাস্তিকের কাছে ধর্ষণ করা ভালো নাও লাগতে পারে। এটা একান্তই যার যার ব্যক্তিগত ব্যাপার। আপনার কাছে ধর্ষণ করা খারাপ হতেই পারে তারমানে এই না যে সব নাস্তিকের কাছে সেটা খারাপ। হুমায়ুন আজাদ বা তসলিমা নাসরিন এরা যদি ধর্ষণ করতে চায় বা করতে বলেছে এটা উনাদের কাছে ভালো লেগেছে দেখেই করতে চেয়েছে বা বলেছে এখন এই ক্ষেত্রে কার ক্ষতি হলো অথবা কার লাভ হলো এটা তো উনাদের দেখার বিষয় না। তাই না? 

বিবর্তনবাদের দৃষ্টিভঙ্গী ধর্ষণ করার বৈধতা দেয় অর্থাৎ যোগ্যতমদের টিকে থাকার লড়াই সুত্রে। এমনকি প্রাণীজগতে সমকামীতা থাকার ফলে সমকামীতা যদি ন্যাচারাল হয় একই যুক্তিতে প্রাণীজগতে ধর্ষণের অস্তিত্ব রয়েছে বিধায় ধর্ষণ করাও ন্যাচারাল। একজন শক্তিশালী পুরুষ প্রাণী একজন দুর্বল নারী প্রাণীর দিকে যদি যৌন হামলা করে আর উক্ত নাস্তিক নারী যদি নিজেকে রক্ষা করে টিকতে না পারে তাহলে তো এখানে কারো কিছু বলার নেই যেহেতু সে দুর্বল তাই শক্তিশালীর কাছে হেরে গেছে। দিন শেষে দুনিয়ার সবাই বিবর্তিত জন্তু জানোয়ার ডারউইনিজমের দৃষ্টিতে। একটি বাঘ যেমন একটি হরিণকে মেরে খেয়ে দিলে বাঘের কাছে অনৈতিক হবে না ঠিক তেমনি একজন নাস্তিক ধর্ষক যদি কোনো নাস্তিক নারীকে ধর্ষণ করে তাহলে সেটা ধর্ষক নাস্তিকের কাছেও খারাপ বলে প্রমাণিত হতে পারে না। হয়তো বলতে পারেন ধর্ষিতা নারীর তো ক্ষতি হচ্ছে, কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে তাতে নাস্তিক ধর্ষকের কি আসে যায়? একজন ধর্ষক নাস্তিক কেন দেখবে অন্যের কি লাভ বা অন্যের কি ক্ষতি? এতে তারই বা লাভ কিসের? অন্যের ক্ষতি দেখলে তো একই যুক্তিতে তারও ক্ষতি হচ্ছে, সে চাইছে এক নারীকে ধর্ষণ করতে কিন্তু পারছে না,মনের ইচ্ছা স্বাধীনভাবে পূরণ না করতে পারাও খুবই কষ্টকর-এটাকে ক্ষতি বলা যাবে না কোন যুক্তিতে?

প্রশ্নঃ নাস্তিকরা এসব অস্বীকার করে কেন?

উত্তরঃ এরা তো সংখ্যালুঘু তাই নিজেদের ভিতরের খবর এরা প্রকাশ করতে যাবে কেন? যখন এদের হাতেও চীনের নাস্তিকদের মতো ক্ষমতা এসে যাবে তখন এরাও আপনাকে আমাকে গণহত্যা হত্যা করতে আসবে। গণহত্যা করা নাস্তিক্যদৃষ্টিতে খারাপ নয়। অসহায় মা বোনদের ধর্ষণ করবে আর আনন্দিত হবে। কমিউনিস্ট নাস্তিকদের ইতিহাস নিজ দায়িত্বে পড়ুন বিস্তারিত সব নিজেই জেনে যাবেন যে আপনার নাস্তিক পূর্বপুরুষরা আস্তিকদের সাথে কেমন আচরণ করেছে। নাস্তিকরা নিজেদের ব্যাপারে মানুষকে বলতে চায় না কারণ চিন্তাশীল মানুষরা নাস্তিকদের অজানা অধ্যায় জেনে গেলে গণহারে থু থু দিবে। ধর্ষণ করা নাস্তিক্যধর্ম সম্পুর্ন সমর্থন করে। কোনো নাস্তিক যদি অস্বীকার করে তাহলে তাকে যুক্তি দিয়ে প্রমাণ পেশ করতে হবে যে ধর্ষণ করা কেন খারাপ? আর নাস্তিক ধর্ষকরা কিসের ভিত্তিতে উক্ত নাস্তিকের দেয়া যুক্তিকে সঠিক হিসেবে ধরে নেবে?

প্রশ্নঃ অনেক নাস্তিক এভাবে বলে থাকে যে, গরু ঘাস খেলে ধর্ষণের শাস্তি কি? এই প্রশ্ন যেমন অবান্তর নাস্তিকতায় ধর্ষণের শাস্তি কি? এই প্রশ্নটিও অবান্তর কারণ নাস্তিকতা ধর্ষণ করা অথবা না করা নিয়ে ডিল করে না?

উত্তরঃ আপনি আগে আয়নার সামনে দাড়িয়ে নিজেকে প্রশ্ন করুন। যেই প্রশ্ন আপনি করেছেন এটা কি আসলেই যৌক্তিক প্রশ্ন নাকি আপনার অন্ধবিশ্বাস? কেননা নাস্তিকতায় যদি ধর্ষণ করা বা না করা নিয়ে ডিল না করে তাহলে এর অর্থ দাড়ায় কেউ যদি ধর্ষণ করে অথবা না করে এতে নাস্তিকতার কিছু আসে যায় না এটা একান্তই মানুষের ব্যক্তিগত ব্যাপার। আর নাস্তিকতা যদি ধর্ষণ করা নিয়ে ডিল না করে থাকে তাহলে নাস্তিকদের কাছে ধর্ষণ করা খারাপ হিসেবে প্রমাণ হবে কোন যুক্তি গুলোর ভিত্তিতে? আপনার এই প্রশ্ন যে শরাফ মামা আর আমান কাকার কর্মকে আরো শক্তিশালী ভাবে সমর্থন করছে এটা কি আপনি ধরতে পেরেছেন? নাস্তিকতা ধর্ষণ নিয়ে ডিল করে না তাহলে নাস্তিক নিজের মুক্তচিন্তার মগজ থেকে ধর্ষণ করাকে ভালো মনে করতেই পারে তাতে আপনার কি? আপনার নাস্তিক্য মগজ দিয়ে অন্য মুক্তমনার মগজকে যাচাই করার যৌক্তিক ভিত্তি কি?

নাস্তিকতা ধর্ষণ নিয়ে ডিল করে যা যেমন নাস্তিক গরুরা ঘাস খেলে শাস্তি নেই-তর্কের খাতিরে যদি ধরেও নেই তাহলে যেই গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নটি উঠছে তা হচ্ছে নাস্তিকরা তাহলে কিসের ভিত্তিতে ধর্ষণ করাকে খারাপ বলতে চাইছে? আপনি এই নৈতিকতা কোথা থেকে নিবেন? যদি আপনার উত্তর হয় বিবেক থেকে তাহলে একই বিবেক তো ধর্ষকের কাছেও আছে। আপনার বিবেক থেকে ধর্ষণ করা খারাপ হতেই পারে কিন্তু অন্যদিকে নাস্তিক ধর্ষকদের বিবেকে সেটা ভালো। আপনি যদি চান আপনার বিবেক থেকে আপনি সব সিদ্ধান্ত নিবেন একইভাবে অন্য যে কেউই নিজের বিবেক থেকে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতেই পারে। যদি বলেন রাষ্ট্র থেকে , সমাজ থেকে , পরিবার থেকে  নৈতিকতা নিবেন তাহলে প্রশ্ন হচ্ছে রাষ্ট্র,সমাজ,পরিবার এরা কোথা থেকে ও কিভাবে এবং কোন যুক্তিতে নৈতিকতা পাবে? রাষ্ট্র, পরিবার, সমাজ এগুলো মানুষ নিয়ন্ত্রণ করে তাহলে মানুষরা নিজের ইচ্ছায় যা সিদ্ধান্ত নেবে সেই সিদ্ধান্ত সবাই তো মেনে নিতে বাধ্য না? তাহলে বাকস্বাধীনতার কি হবে? ব্যক্তিগত অধিকারের কি হবে? মুক্তচিন্তার করার স্বাধীনতার কি হবে? রাষ্ট্র, সমাজ,পরিবার চালায় মানুষরা তাহলে এরা কিসের ভিত্তিতে ও কোন যুক্তিতে অন্য মানুষদের জন্য চুরান্ত নৈতিকতা ঠিক করে দিচ্ছে? একজন মানুষ আরেকজন মানুষকে নৈতিকতা দিবে কেন আর নিবেই বা কেন? নিজের চিন্তার স্বাধীনতা থাকবে না? নিজের সিদ্ধান্ত নেয়ার স্বাধীনতা থাকবে না? অথবা সবার স্বাধীনতা ও সিদ্ধান্ত নেয়ার স্বাধীনতা থাকবে না?

সুতরাং আপনি যদি এই দাবি করেন যে ধর্ষণ করা বা না করা নিয়ে নাস্তিকতা ডিল করে না তাহলে আপনি নিজে একজন নাস্তিকতার অনুসারী হয়ে ধর্ষণ করাকে মন্দ অথবা খারাপ কিছুই বলতেও পারছেন না। আপনার কথা অনুপাতে নাস্তিকতা যদি ধর্ষণ নিয়ে ডিল না করেই থাকে তাহলে নাস্তিক ধর্ষণ করলে কেন খারাপ হবে? ধর্ষণ করা কেন খারাপ? এসব প্রশ্নের উত্তর নাস্তিকতা দিতে অক্ষম। আর আপনার নাস্তিকতা যদি এসব প্রশ্নের জবাব দিতে অক্ষম হয় আপনি নিজেও এসব সমস্যার জবাব দিতে অক্ষম কারণ আপনি কোনো চুরান্ত যুক্তির সাহায্যে ধর্ষণ করাকে খারাপ প্রমাণ করবেন? আপনার নাস্তিকতা যদি আপনাকে ধর্ষণ করা অথবা না করা নিয়ে ডিল না করতে শিখায় তাহলে আপনি কিভাবে ধর্ষণ করাকে খারাপ বলবেন অথবা ভালো? আপনার বিবর্তিত মগজ যে সত্য সিদ্ধান্ত নিতে পারে এটাই বা আপনি কিভাবে নিশ্চিত সত্য হিসেবে ধরে নিচ্ছেন?

প্রশ্নঃ আপনি কি এমন প্রমাণ দেখাতে পারবেন যে কোনো নাস্তিক দাবি করেছে ধর্ষণ করা ভালো?

উত্তরঃ “পারো তো ধর্ষণ করো” কবিতাটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন। আর একজন নাস্তিকের স্রেফ দাবি করার কারণে ধর্ষণ করা খারাপ প্রমাণ হয়ে যাবে কেন? ধরুন দুনিয়ার একজন নাস্তিকও এই দাবি করে নাই যে ধর্ষণ করা ভালো কিন্তু যারা ধর্ষক তাদের যুক্তিতে কিন্তু ঠিকই ধর্ষণ করা ভালো আর তাদের যুক্তি আর চিন্তা অবশ্যই মুক্তকাম ও ব্যক্তিগত ইচ্ছার স্বাধীনতারই অংশ যা নাস্তিক্যধর্ম সমর্থন করছে।

প্রশ্নঃ নারীরা কি মেনে নিবে ধর্ষণ করা নাস্তিকতায় বৈধ?

উত্তরঃ যেসব নারীরা বিশ্বাস করে যে ধর্ষণ করা খারাপ তারা বিশ্বাসের স্থান থেকে অবশ্যই ধর্ষণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতেই পারেন। কিন্তু যারা নারীবাদী তারা তো অবশ্যই নাস্তিক তসলিমা নাসরিনের মতো পারো তো ধর্ষণ করো নীতিতে যৌক্তিকভাবে ধর্ষণ করা যে নাস্তিকতা সমর্থন করে এটাতে সমর্থন করতেই পারেন। এছাড়া সমকামীতার বৈধতার যুক্তি অথবা বিবর্তনবাদের দৃষ্টিতেও ধর্ষণ করা যে ন্যাচারাল বিষয় এটাও মুক্তচিন্তার নাস্তিক নারীদেরকে বুঝানো নাস্তিক পুরুষদের কর্তব্য। যারা নিজেকে নাস্তিক আর যুক্তিবাদী পুরুষ অথবা নারী বলে দাবি করে উনাদের কাছে অবশ্যই ধর্ষণ করার যৌক্তিক কারণ রয়েছে। এছাড়া কোনো নাস্তিক নারীর স্বীকার করা অথবা স্বীকার না করে নেয়াতে যৌক্তিকভাবে ধর্ষণ করা খারাপ প্রমাণ হয়ে যায় না।

রেফারেন্সমালাঃ

[১] Victims of Sexual Violence: Statistics. RAINN, Available at:

https://www.rainn.org/statistics/victims-sexual-violence

[২] Violent sexual crimes recorded in the EU. Eurostat, Available at:

https://ec.europa.eu/eurostat/web/products-eurostat-news/-/EDN-20171123-1

[৩] Emma Beswick, Which EU countries have the highest rate of sex crimes? Euronews, 24 November,2017

[৪] Hardeep Matharu, Sweden and Denmark have highest rates of sexual harassment in Europe. The Independent, 7 January 2016

[৫] Henry Samuel, 100 percent of French Women ‘victims of sexual harassment on Public transport’. The Telegraph, 17 April 2015

[৬] Lucy Pasha-Robinson, One in eight French Women say they have been raped, finds study. The Independent, 23 February 2018

[৭] Matthew Haag, Lawrence Krauss to Retire From Arizona State After Sexual Misconduct Accusations. The New York Times, 22 Oct.2018

[৮]  A Dark Secret of World War II Comes to Light The Journal of Historical Review, September/October 2000 (Vol. 19, No.5), Page 25 (চিন্তাপরাধ বইতে লেখক আসিফ আদনান বিস্তারিত এসব তথ্য উল্লেখ করেছেন)

[৯] Aggressive Personalities in Water Striders:

https://www.youtube.com/watch?v=UqysfCC9VvU

[১০] Bottlenose Dolphin Gang Rumble | National Geographic:

https://www.youtube.com/watch?v=7d5nLGzG8YU

[১১] Dog Gangs Abused A Girl Doggy:

https://www.youtube.com/watch?v=eyGabsHP3TA

[১২] Dog and chicken having unwanted sex:

https://www.youtube.com/watch?v=pMoO99Gua-M


এমডি আলী

যিনি একজন লেখক, বিতার্কিক ও গবেষক। বিভিন্ন ধর্ম ও মতবাদ বিষয় পড়াশোনা করেন। ইসলামের সত্যতা মানুষের কাছে ছড়িয়ে দিতে চান। “সত্যের অনুভূতি” উনার লেখা প্রথম বই। “ফ্যান্টাস্টিক হামজা” দ্বিতীয় বই। জবাব দেবার পাশাপাশি নাস্তিক মুক্তমনাদের যৌক্তিক সমালোচনা করে থাকেন।

Previous Post Next Post