চারজন নারী বিয়ের ইসলামিক নৈতিকতা


=====================================

বিষয়ঃ চারজন নারী বিয়ের ইসলামিক নৈতিকতা

লিখেছেনঃ এমডি আলী

=====================================

সূচনাঃ ইসলামে পুরুষের জন্য চারটি বিয়ে করা বাধ্যতামূলক নয় বরং অপশনাল তাও বেশ কিছু কঠিন শর্ত রয়েছে। ইসলামে একজন পুরুষ শর্ত সাপেক্ষে ৪ জন স্ত্রী রাখতে পারবে অথচ একজন নারী ৪ জন স্বামী রাখতে পারবে না এটি অন্যায় সুতরাং ইসলামের বিধান অমানবিক- এরকম অভিযোগ করতে দেখা যায় কিছু নাস্তিকান্ধদের। কিন্তু এটি কি আসলেই অভিযোগ হবার যোগ্য? যুক্তি কি বলে? প্রমাণ কি বলে? নাস্তিক্যধর্মের দৃষ্টিতেই প্রথমে বিশ্লেষণ করে দেখা যাক। এরপরে ইসলামে আসলে কেমন দৃষ্টিতে চারটি বিয়ের অনুমতি রেখেছে সেসব যাচাই করে দেখবো। পুরো লেখাটি মনোযোগ দিয়ে পড়তে হবে। অর্ধেক পড়লে অনেক গুরুত্বপূর্ণ হয়তো মিস হয়ে যেতে পারে যা আপনার জন্য জানা আবশ্যক। পড়া শুরু করুন তাহলে।

নাস্তিক্যধর্মে এক পুরুষের সাথে একাধিক নারীর মুক্ত সম্পর্কের বৈধতা যেমনঃ

নাস্তিকতা কখনোই মানুষকে নির্দিষ্ট নৈতিকতা নির্ধারণ করে দেয় না। তাই যে যার মতো ইচ্ছা নিজের জীবনের নৈতিকতা নির্ধারণ করে নিতে পারে। এমনকি অন্যকে ক্ষতি না করে নিজে যা ইচ্ছা তাই করাও নাস্তিক্যধর্মের একটি স্বাধীন নৈতিকতা। আরেকটি বিষয় হচ্ছে উভয় সম্মতিতে উভয়ের ক্ষতি না করে যা ইচ্ছা একে অপরের সাথে করা যাবে এটাও মুক্তচিন্তায় খারাপ কিছু নয়। আসুন নাস্তিকদের বই পত্র থেকেই বিস্তারিত মনোযোগ দিয়ে পড়ে দেখি।

নাস্তিক হুমায়ুন আজাদ লিখিত "আমার অবিশ্বাস" ১৮ পৃষ্ঠায় বর্ণিত হয়েছে, 

এই যে আমি বেঁচে আছি, বেঁচে থেকে সুখ পাচ্ছি। আমি মরে যাবো,এই হাস্যকর নিরর্থকতাকে কিভাবে অর্থপূর্ণ করে তুলতে পারি? আমার জীবনকে অর্থপূর্ণ করে তোলার কখন পূর্বনির্ধারিত উপায় নেই। কোন পবিত্র বা অপবিত্র বই  বা কোন মহাপুরুষ বা প্রবর্তক আমাকে পথ দেখাতে পারেন না । তাঁরা খুঁজেছেন নিজেদের পথ,নিজেদের জীবনকে তাৎপর্যপূর্ণ করার পথঃ আমি তাদের পথে চলতে পারি নাআমি খুজতে চাই আমার পথ। নিজের জীবনকে তাৎপর্যপূর্ণ করার দায়িত্ব সম্পূর্ণরুপে আমার নিজের

নাস্তিক হুমায়ুন আজাদ লিখিত 'আমার অবিশ্বাস' ২০  পৃষ্ঠায় বর্ণিত হয়েছে, 

কোনো পূর্বনির্ধারিত পথ নেই মানুষের জন্যেকোনো গ্রন্থ পথ দেখাতে পারে না, কোনো মহাপুরুষ বা প্রবর্তক তার জন্যে পথ প্রস্তুত করতে পারেন না, ওই মহাপুরুষেরা তৈরি করেছেন নিজেদের পথ, অন্যদের নয়প্রত্যেককে খুঁজে বের করতে হয় নিজেদের পথ, তৈরি করতে হয় নিজেদের রাস্তা, অনেকের পথ আমাকে আলোড়িত করেছে, অনেক গ্রন্থ আমাকে আলো দিয়েছে, কিন্তু আমি ওইসব পথে চলি নি, ওই আলোতে পথ দেখি নি।

এক নাস্তিক আরেক নাস্তিকের দেখানো পথে চলতে পারে না। কে কোন পথে চলবে, কোন পথে জীবন পরিচালনা করবে তা সম্পুর্নই ব্যক্তিগত বিষয়। এক নাস্তিকের কাছে যা ভালো তা আরেক নাস্তিকের কাছে ভালো হতে বাধ্য নয় আবার যে জিনিস এক নাস্তিকদের কাছে খারাপ তা আরেক নাস্তিকদের কাছে খারাপ হতে বাধ্য নয়। সবাই সবার নিজের মুক্তচিন্তায় বাধহীন। মুক্তচিন্তার দৃষ্টিতে কে কাকে নিয়ে কয়জনকে নিয়ে সুখে থাকবে সেটা ব্যক্তিগত ব্যাপার। একজন নাস্তিক চাইলেই একাধিক নারীর সাথে যৌন সম্পর্ক করতে পারে অন্য নাস্তিকদের কাছে এখানে ভালো লাগুক অথবা না লাগুক তাতে সেই নাস্তিকের কিছুই আসে যায় না। এমনকি নাস্তিক পিতা ও পুত্র মিলে নিজের মাতার সাথেও সম্মতিতে সঙ্গম করার মুক্ত সম্পর্কে আস্থা রাখতে পারবে। কারণ তাদের কাছে এগুলো ভালো।

নাস্তিক হুমায়ুন আজাদ নৈতিকতা নিয়ে "আমার অবিশ্বাস" বইয়ের ১৪৩ পৃষ্ঠায় বর্ণনা করেছেন,

নৈতিকতার সীমা হওয়া উচিৎ সংকীর্ণ। আমার কোন কাজ যেন 

অন্যকে ক্ষতিগ্রস্থ না করে,এটুকু।

নাস্তিক্যদৃষ্টিতে হুমায়ুন আজাদ যে ফতোয়া গুলো দিয়েছেন সেই সুত্রে একজন পুরুষ যদি অন্য নারীকে ক্ষতি না করে একজন নারীর সম্মতিতে বিয়ে করে এটা যদি অনৈতিক না হয় তাহলে একই সাথে দ্বিতীয়, তৃতীয় , চতুর্থ, পঞ্চম, ষষ্ঠ , সপ্তম, অষ্টম, নবম, দশম এভাবে ইত্যাদি নারীকেও যদি সম্মতিতে বিয়ে করে এটা কোন যুক্তিতে খারাপ বলে প্রমাণ হবে? এবং প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ ইত্যাদি সংখ্যার নারী যদি এক পুরুষ নিয়েই সুখে থাকে তাহলে এটা নাস্তিক্যদৃষ্টিতে খারাপ বলার বিন্দুমাত্র সুযোগ থাকছে কি? কি মনে হয়? 

তাহলে ফলাফল দাঁড়াচ্ছে একজন পুরুষ যদি একাধিক নারীর সম্মতিতে একাধিক নারীকে বিয়ে করে (যদিও বিয়ে করা বা না করায় নাস্তিকদের কিছুই আসে যায় না) এবং নারীদের কাউকেই ক্ষতি না করে আর একাধিক নারী যদি এক পুরুষ নিয়ে সুখে থাকে,আনন্দে থাকে তাহলে এখানে একজন পুরুষ আর একাধিক নারীদের ব্যক্তিগত ব্যাপার হিসেবে গণ্য হবে। অন্য নাস্তিকদের কাছে যদি এরকম সম্পর্ক খারাপ মনে হয় তাহলে যারা করেছে তাদের কাছে খারাপ হিসেবে গণ্য হতে বাধ্য নয়। কারণ তারা নিজের ইচ্ছে মতো নিজেদের জীবন পরিচালনা করতে স্বাধীন। এছাড়া যেহেতু কারও ক্ষতিও হচ্ছে না এমন সম্পর্কে আর সবাই সবাইকে নিয়ে আনন্দে আছে সেহেতু এটা নাস্তিক্যধর্মের দৃষ্টিতে সম্পূর্ণ সমর্থনযোগ্য ও নৈতিক। আগেই বলা হয়েছে যে নাস্তিকতা মানুষকে নির্দিষ্ট কোনো উদ্দেশ্য- নৈতিকতা নির্ধারণ করে দেয় না।

নাস্তিক হুমায়ূন আজাদ তার "আমার অবিশ্বাস" বইয়ের ১৯ পৃষ্ঠায় বর্ণনা করেছেন, 

জীবনের কোন অর্থ নেই, কোন মহৎ উদ্দেশ্য নাই , নাস্তিক কবি সুধীন্দ্রনাথ যেমন বলেছেন জীবনের সারকথা হল পিশাচের উপজীব্য হওয়া।

নাস্তিকতা মানুষকে জীবনের উদ্দেশ্য দিতে অক্ষম এই দিকটি নাস্তিক হুমায়ুন আজাদের ফতোয়া থেকে স্পষ্ট হলেও অনেক নাস্তিক এই কথার সাথে একমত নাও হতে পারে। অর্থাৎ একেকজন নাস্তিকের সাথে একেক রকম জীবনের উদ্দেশ্য। তাহলে এই ক্ষেত্রে একজন পুরুষ যদি মুক্তচিন্তা করে যে আমি ২০ জন অসহায় নারীকে বিয়ে করে স্ত্রীর মর্যাদা দিয়ে সবার ভরণপোষণের দায়িত্ব নিব তাহলে এটা নাস্তিক্যধর্মের দৃষ্টিতে খারাপ কিভাবে? যুক্তি আছে খারাপ বলার? একাধিক নারী যদি সেচ্ছায় একজন পুরুষের সাথে আজীবন কাটিয়ে দেয় তাহলে এটা কোন যুক্তিতে নাস্তিকদের কাছে অমানবিক হবে? একজন নাস্তিক ধনী শক্তিশালী পুরুষ যদি ১৭ জন গরীব নারীর সাথে যৌনসম্পর্ক করতে চায় এবং উক্ত নারীরা যদি এই শর্তে রাজি হয় যে তাদের আজীবনের দায়িত্ব উক্ত নাস্তিক পুরুষ নিবে তাহলে এই সম্পর্ক নাস্তিক্যধর্মের দৃষ্টিতে কিভাবে অন্যায়? নাস্তিকদের কাছে কোনো যুক্তি এমন সম্পর্ককে অনৈতিক দাবি করার?

যে প্রশ্ন গুলো আরও থেকে যাচ্ছে। কোন সম্পর্ক অন্যায় আর কোন সম্পর্ক অন্যায় না এই বিধান কে নির্ধারণ করে দেবে? কার সাথে যৌনসম্পর্ক করা ঠিক আর কার সাথে ঠিক না এই বিধান কিসের ভিত্তিতে নির্ধারণ করা হবে এবং কেন? যেই বিধান দিয়ে নির্ধারণ করা হবে সেই বিধান যে সত্য সেটা কিভাবে প্রমাণ করা যাবে? নাস্তিক মা যদি তার একাধিক নাস্তিক ছেলে সন্তানদের সাথে সম্মতিতে যৌনকর্ম করতে চায় এটা নাস্তিক্যদৃষ্টিতে কেন এবং কিভাবে অন্যায় হবে? একইভাবে একজন নাস্তিক পিতা একাধিক নাস্তিক আপন মেয়েদের সাথে সম্মতিতে যৌনকর্ম করতে চায় এটা মুক্তচিন্তায় কিভাবে অযৌক্তিক হচ্ছে?

একজন নাস্তিক পুরুষ যতো ইচ্ছা তত নাস্তিক নারীর সাথে সম্মতিতে যৌনকর্ম করতে পারবে এটা নাস্তিক্যধর্মে জায়েজ। তাহলে যেসব সস্তা নাস্তিকরা এই কথা বলে যে একজন পুরুষ ৪ জন স্ত্রী রাখতে পারবে না কারণ এটি অন্যায় অমানবিক এমন কথা কি মুক্তচিন্তার দৃষ্টিতে সঠিক? অবশ্যই না। কারণ একজন পুরুষ ইচ্ছে করলেই ৪ জন স্ত্রী রাখতে পারবে আবার ইচ্ছে করলে তার চেয়েও বেশি নারীর সাথে সঙ্গম করতে পারবে। এমন অবাধ সুযোগ নাস্তিক্যধর্মে রয়েছে। তাহলে একজন নারী সেচ্ছায় কোনো পুরুষের দ্বিতীয়, তৃতীয় অথবা চতুর্থ স্ত্রী হতে যদি রাজি হয় তাহলে নাস্তিক্যধর্মের দৃষ্টিতে সেটা খারাপ না বরং ভালো? নাস্তিক্যধর্মের দৃষ্টিতে মুক্তমনা রিলেশন কেমন হয়? নাস্তিকদের বই পত্র থেকেই পড়ে দেখে নেই।

মুক্তচিন্তক নাস্তিক অভিজিৎ রায়ের লিখিত “সমকামিতা” বইয়ের ৮৭ পৃষ্ঠায় বর্ণিত হয়েছে, 

যে কোনো বিচারে হ্যভলক এলিস এবং তাঁর স্ত্রী এডিথ লীজের বিয়ে ছিল সে সময়ের প্রেক্ষাপটে খুবই ব্যতিক্রমী। এলিসের স্ত্রী এডিথ লিজ ছিলেন নারীবাদী কবি। (তাঁর জন্য চার বোনেরা ছিলেন আবার সবাই অবিবাহিত)। তাঁরা পারস্পারিকভাবে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হলেও দু’জনেই সারাজীবন মুক্ত সম্পর্কে (open relationship) আস্থাশীল ছিলেন, এবং একে অন্যের যৌনস্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করতেন না। যৌনতার ব্যাপারে তাঁরা ছিলেন সমস্ত সামাজিক সংস্কারের উর্ধে

নাস্তিক হুমায়ুন আজাদ লিখিত “আমার অবিশ্বাস” বইয়ের ১৪২ পৃষ্ঠা থেকে বর্ণিত হয়েছে,

যদি কোনো পরুষ একাধিক নারীর সাথে বিবাহিত বা অবিবাহিত জীবন যাপন করতে চায়,তারা সবাই যদি তাতে সুখী হয়,তাতে কারো আপত্তি থাকা উচিত নয়; এবং কোনো নারী যদি একাধিক পুরুষের সাথে বিবাহিত বা অবিবাহিত জীবন যাপন করতে চায়, তারা সবাই যদি তাতে সুখী হয়, তাতেও কারো আপত্তি থাকা উচিত নয়। তাদের এই জীবনযাপন অন্য কাউকে ক্ষতিগ্রস্ত করে না, সুখী করে তাদের; তাই তা অনৈতিক নয়

মুক্তমনাদের বই পত্র থেকেই পরিস্কার জানা যায় যে যৌনস্বাধীনতায় হস্কক্ষেপ করা উচিত নয় এবং যার ইচ্ছে তার সাথেই যৌন সঙ্গম করা মুক্তচিন্তায় বৈধ। এই মুক্তচিন্তার দৃষ্টিতে কোনো নাস্তিক যদি চায় নিজের মা, নিজের দাদি, নিজের নানি, নিজের খালা, নিজের বোন, ইত্যাদি নারীর সাথে যৌন সঙ্গম করবে সেটাও নাস্তিক্যধর্মে বৈধ যদি সম্মতি থাকে। তারা যদি সুখি হয় তাহলে তা অনৈতিক নয়। তাই নাস্তিকদের কোনো ধরণেরই যৌন সম্পর্ক নিয়েই অভিযোগ করার যৌক্তিক সুযোগ নেই। কোনো নাস্তিক যদি এটা বিশ্বাস করে যে সে ব্যক্তিস্বাধীনতায় বিশ্বাসী তাহলে তার এই বিশ্বাসের দৃষ্টিতে সে কখনো যৌক্তিকভাবে অন্যের যৌন সম্পর্ক নিয়ে অভিযোগ করতে পারবে না। কারণ তাকে এটাও বিশ্বাস করতে হবে যে অন্য মানুষেরও নিজস্ব স্বাধীনতা আছে।

নাস্তিকদের পরিবার আসলে কেমন হয়? একটি নাস্তিক পরিবারে পিতা চাইলে অন্য নারীকে নিয়ে রাত কাটাতে পারবে মা বাধা দিবে না। আবার নাস্তিক মাতা অন্য পুরুষের সাথেও রাত কাটাতে পারবে, পিতা বাধা দিবে না। একজন নাস্তিক পিতা তার একাধিক ছেলে সন্তানদের সাথে সম্মতিতে সমকামিতা যেমন করতে পারবে একইভাবে একজন নাস্তিক মা তার একাধিক নাস্তিক ছেলের সাথে সম্মতিতে যৌনকর্মও করতে পারবে। এসব যৌনলীলা মুক্তচিন্তায় বৈধ। একজন নাস্তিক পিতা যেমন তার চার নাস্তিক মেয়ের সাথে সম্মতিতে যৌনকর্ম করতে পারবে ঠিক একইভাবে একজন নাস্তিক মা তার চার নাস্তিক মেয়ের সাথেও যৌন সম্পর্ক রাখতে পারবে।

এই হলো মুক্তবুদ্ধির যৌনকর্মের চেহারা যা নাস্তিকরা লুকিয়ে রাখতে চায়। বিবর্তনবাদের দৃষ্টিতেও এভাবে বলা যায় যে, প্রাণী জগতে কুকুর যেমন নিজের পরিবারে সবার সাথেই চাইলে সঙ্গম করতে পারে, শূকর যেমন যাকে ইচ্ছা তাকে দিয়েই নিজের চাহিদা মিটায় ঠিক একইভাবে কোনো নাস্তিক যদি চায় তাহলে সম্মতিতে নিজের নাস্তিক বাবার সাথে সমকামিতা থেকে শুরু নিজ নাস্তিক নানির সাথে পর্যন্ত মুক্তযৌন সম্পর্ক রাখতে পারবে, করতে পারবে সঙ্গম। নাস্তিক্যধর্ম এসব মুক্তবুদ্ধির যৌনকর্মের বৈধতা প্রদান করে। কোনো নাস্তিক এই কথা অস্বীকার করতে পারবে না।

শুধু এটাই নয় আরও আছে। একজন মুসলিম পুরুষ ৪ জন মুসলিম স্ত্রীকে সম্মতিতে বিয়ে করতে পারবে না যেহেতু একজন নারী ৪ জন পুরুষকে স্বামী হিসাবে বিয়ে করতে পারবে না - নাস্তিকরা এই দাবিতে বিশ্বাস রাখতে পারবে? প্রশ্নটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ । যদি উত্তর হয় “হুম” তাহলে নাস্তিক হুমায়ুন আজাদের কথা অনুপাতে নাস্তিকরা মহামারীতে, সত্যের বিরোধীতায় লিপ্ত রয়েছে আর যদি উত্তর হয় “না” তাহলে যেই দাবিতে স্বয়ং নাস্তিকরাই বিশ্বাস করে না সেই অভিযোগ আসলে অবিশ্বাসযোগ্য যাকে বিশ্বাস করাই যাচ্ছে না। এবং যে অভিযোগ অবিশ্বাসযোগ্য সেটা বাতিল প্রমাণিত হয়ে যায়। নাস্তিকরা কি নিজেদের বই কখনো বুঝে পড়ে দেখেনি? আপনি যদি নাস্তিকান্ধ হয়ে থাকেন তবে উপরে আমি যেসব মুক্তচিন্তকদের রেফারেন্স দিয়েছি সেসব চেক করে দেখুন। নিজেদের নৈতিকতাই আপনার জানা নেই আবার অন্যজনের নৈতিকতা নিয়ে মুক্তচিন্তার নামে সমালোচনা করতে আসেন। কোন লজ্জায়? লজ্জা নেই আপনাদের? কেন? মানুষের মতো বিবেক কবে বিবর্তিত হয়ে পাবেন আপনারা?

নাস্তিকদের মুক্তমনা বই পত্র থেকেই আমি রেফারেন্স দিচ্ছি। পড়তে থাকুন।

"আমার অবিশ্বাস" বইয়ের ভূমিকার শেষের দিকে লেখা আছেঃ 

মানুষের জন্যে যা ক্ষতিকর,সেগুলোর শুরুতেই রয়েছে বিশ্বাস, বিশ্বাস সত্যের বিরোধী, বিশ্বাসের কাজ অসত্যকে অস্তিত্বশীল করা , বিশ্বাস থেকে কখনো জ্ঞানের বিকাশ ঘটে না, জ্ঞানের বিকাশ ঘটে অবিশ্বাস থেকে, প্রথাগত সিদ্ধান্ত দ্বিধাহীনভাবে না মেনে তা পরীক্ষা করার উৎসাহ থেকে

'আমার অবিশ্বাস' ২২ নং পৃষ্ঠা বর্ণিত হয়েছে, 

বিশ্বাস কয়েক হাজার বছর ধরে দেখা দিয়েছে মহামারীরূপে, পৃথিবীর দীর্ঘস্থায়ী মহামারীর নাম বিশ্বাস । বিশ্বাস কাকে বলে? আমরা কি বলি পিঁপড়েয় বিশ্বাস করি, সাপে বিশ্বাস করি, জলে বিশ্বাস করি বা বজ্রপাতে বা পদ্মানদীতে বিশ্বাস করি? এসব এবং এমন বহু ব্যাপারে বিশ্বাসের কথা উঠে না,কেননা এগুলো বাস্তব সত্য বা প্রমাণিত। যা সত্য,যা প্রমাণিত যা সম্পর্কে কোন সন্দেহ নেই তাতে বিশ্বাস করতে হয় না, কেউ আমরা বলি না যে আমি বিদ্যুৎে বিশ্বাস করি বা রোদে বিশ্বাস করি বা গাড়িতে বিশ্বাস করি।কেননা সত্য বা প্রমাণিত ব্যাপারে বিশ্বাস করতে হয় না , বিশ্বাস করতে হয় অসত্য, অপ্রমাণিত,সন্দেহজনক বিষয়।অসত্য অপ্রমাণিত কল্পিত ব্যাপারে আস্থা পোষণই হচ্ছে বিশ্বাস।

পাঠক কোনো নাস্তিক যদি বলে আমাদের দুনিয়া পরিপূর্ণ নিরর্থকতায় তাহলে কি উক্ত নাস্তিক যাই অভিযোগ করুক না কেন সেটাও অবশ্যই অর্থহীন হয়ে যাবে? আপনার উত্তর যদি হ্যাঁ হয় তাহলে এইবার এই মুক্তমনা বার্তা পড়ুন।

আমার অবিশ্বাস" ১৭ পৃষ্ঠা থেকে বর্ণিত হয়েছে,  

তবে সব কিছুই নিরর্থক, জগত পরিপূর্ণ নিরর্থকতায়, রবীন্দ্রনাথ নিরর্থক , আইনস্টাইন নিরর্থক, ওই গোলাপও নিরর্থক, ভোরের শিশিরও নিরর্থক, তরুণীর চুম্বনও নিরর্থক, দীর্ঘ সুখকর সংগমও নিরর্থক, রাষ্ট্রপতি নিরর্থক, কেননা সব কিছুরই পরিনতি বিনাশ।

প্রাণী জগতে শূকরের যেমন মলএর মধ্যে থাকলেও কিছু আসে যায় না ঠিক একইভাবে বিবর্তিত নাস্তিকান্ধদের এসব নাস্তিক্যধর্মের মুক্তবুদ্ধির যৌন নীতিমালাতেও ঘেন্না লাগে না। কুকুর যেমন রাস্তায় সবার সামনে যৌন সঙ্গম করলে লজ্জা লাগে না তেমনি নাস্তিক্যধর্মে বিশ্বাস করা নাস্তিকদেরও মুক্তচিন্তার যৌনসঙ্গমে লজ্জা লাগে না। অথচ এদের কাছেই নাকি আবার দাসী সেক্স জায়েজ নাই-এর চেয়ে হাস্যকর কথা আর কি হতে পারে? নিজের বিবেককে নাস্তিকান্ধতার শিকলে বেধে না রেখে মানবিক বিবেক দিয়ে নাস্তিক্যধর্মকে একটু বিচার করে দেখুন,চোখ খুলে যাবে।

ইসালামের দৃষ্টিতে চার স্ত্রী বিয়ের নৈতিকতাঃ

কুরআনের আয়াতটি মনোযোগ দিয়ে পাঠ করুন, পাঠক।

আল কুরআন, সুরা নিসা ৪ঃ৩ আয়াত থেকে বর্ণিত,

আর যদি তোমরা ভয় কর যে, এতীম মেয়েদের হক যথাথভাবে পুরণ করতে পারবে না, তবে সেসব মেয়েদের মধ্যে থেকে যাদের ভাল লাগে তাদের বিয়ে করে নাও দুই, তিন, কিংবা চারটি পর্যন্ত। আর যদি এরূপ আশঙ্কা কর যে, তাদের মধ্যে ন্যায় সঙ্গত আচরণ বজায় রাখতে পারবে না, তবে, একটিই  অথবা তোমাদের অধিকারভুক্ত দাসীদেরকে; এতেই পক্ষপাতিত্বে জড়িত না হওয়ার অধিকতর সম্ভাবনা।

আল কুরআন, সুরা নিসা ৪ঃ১২৯ আয়াত থেকে বর্ণিত,

তোমরা কখনও নারীদেরকে সমান রাখতে পারবে না, যদিও এর আকাঙ্ক্ষী হও। অতএব, সম্পূর্ণ ঝুঁকেও পড়ো না যে, একজনকে ফেলে রাখ দোদুল্যমান অবস্থায়। যদি সংশোধন কর এবং খোদাভীরু হও, তবে আল্লাহ ক্ষমাশীল, করুণাময়।

ইসলাম একজন পুরুষকে ন্যায় এবং ইনসাফ বজায় রেখে এক থেকে চারটি স্ত্রী বিয়ে করার বৈধতা দেয়। সব স্ত্রীকে সমান ভালোবাসতে হবে, সমান সুবিচার করতে হবে, সব ক্ষেত্রে সমানে সমান রাখতে হবে অথবা রাখার চেষ্টা করতে হবে। প্রতিটি স্ত্রীর সাথে উত্তম ও মানবিক ব্যাবহার করতে স্বামী বাধ্য। তাছাড়া স্বাভাবিক ভাবে একজন পুরুষ একসাথে চারজন স্ত্রী রাখলে সবার ক্ষেত্রে সমানভাবে সব দিক থেকেই সুবিচার করা কষ্টসাধ্য। আর এই দিক খেয়াল করে কুরআন বলছে, সমান আচরণ করতে পারবে না তাই সুরা নিসা ৪:১২৯ আয়াত থেকে ইসলাম একটি বিয়ে করার দিকেই বেশি জোর দিচ্ছে। অথবা একজন স্ত্রীকে বিয়ে করার ব্যাপারে বেশি উৎসাহ দিচ্ছে।

সস্তা নাস্তিকরা এখানে অভিযোগ করে সুরা নিসা ৪:৩ আয়াতে চারটি বিয়ে করার কথা বলা হয়েছে আবার সুরা নিসা ৪:১২৯ আয়াতে সুবিচার করতে পারবে না তাই একটি বিয়ে করো - এই দুই আয়াতে নাকি পরস্পর বৈপরীত্য আছে। আসলে এই মূর্খদের কে বুঝাবে যে দুটো আয়াতই দুই অবস্থাকে কেন্দ্র করে বর্ণনা করা হয়েছে?

সুরা নিসা ৪:১২৯ আয়াতের ব্যাখ্যায় কাযী ছানাউল্লাহ পানিপথী (রহ) লিখিত “তাফসীরে মাযহারী” ৩ খণ্ড, ৩১২ ও ৩১৩ পৃষ্ঠায় বর্ণনা করা হয়েছে, 

আয়াতটি অবতীর্ণ হয়েছে একাধিক স্ত্রীধারীদের জন্য। এখানে বলা হয়েছে, সকল স্ত্রীর ক্ষেত্রে সমান ব্যাবহার অসম্ভব। তারপরেই বলা হয়েছে, তবে তোমরা কোনো একজনের দিকে সম্পূর্ণ ঝুঁকে পোড়োনা ও অপরকে ঝুলানো অবস্থায় রেখো না। এ কথার মাধ্যমে এই নির্দেশ দেয়া হয়েছে যে, খোরপোষ, কথাবার্তা,সহবাসের পালাবণ্টন, - এ সকল ক্ষেত্রে স্ত্রীর মধ্যে সমতা রক্ষা করতেই হবে। কিন্তু একজন অপেক্ষা অন্যজনের প্রতি অধিক ভালোবাসা থাকলে দূষণীয় হবে না। কেননা ভালোবাসার প্রসঙ্গটি হৃদয়ঘটিত ব্যাপার, যা মানুষের নিয়ন্ত্রণ বহির্ভূত। রাসুল (রা) তাঁর পার্থনায় বলতেন, হে আমার আল্লাহ্‌! আমার নিয়ন্ত্রণে যা কিছু রয়েছে তার মধ্যে আমি সমতা রক্ষা করেছি। কিন্তু আমার হৃদয় তোমারই অধিকারে। এই হৃদয়ঘটিত ব্যাপারে যদি আমি সাম্য প্রতিষ্ঠা করতে অসমর্থ হই, তবে এর জন্য তুমি আমাকে অভিযুক্ত করো না

তাফসীরে আহসানুল বয়ান, সুরা নিসা ৪:১২৯ আয়াতের ব্যাখ্যায় ১৭১ পৃষ্ঠায় বর্ণিত হয়েছে, 

এটা এক দ্বিতীয় অবস্থা। কোন ব্যক্তির একাধিক স্ত্রী থাকলে আন্তরিক সম্পর্ক ও ভালোবাসায় সে সবার সাথে এক রকম আচরণ করতে পারবে না। কেননা, ভালোবাসা হল অন্তরের কাজ যা কারো এখতিয়ারাধীন নয়। এমনকি নবী করীম (রা) এরও তাঁর স্ত্রীদের মধ্যে আয়েশা (রা)র প্রতি সব চেয়ে বেশি ভালোবাসা ছিল। চাওয়া সত্ত্বেও সুবিচার না করতে পারার অর্থ হল, আন্তরিক টান এবং ভালবাসায় অসমতাআন্তরিক এই ভালোবাসা যদি বাহ্যিক আধিকারসমূহে সমতা বজায় রাখার পথে বাধা না হয়, তাহলে তা আল্লাহর নিকট পাকড়াও যোগ্য হবে না। যেমন নবী করীম (সা) এর অতি উত্তম দৃষ্টান্ত পেশ করেছেন। কিন্তু অধিকাংশ লোক আন্তরিক এই ভালোবাসার কারণে অন্য স্ত্রীদের অধিকার সমূহ আদায়ের ব্যাপারে ত্রুটি করে এবং যার প্রতি বেশি ভালোবাসা বাহ্যিকভাবে তার মত অন্য স্ত্রীদের অধিকার আদায় না করে তাদেরকে দোদুল্যমান অবস্থায় ছেড়ে রাখে; না তাদেরকে তালাক দেয়, আর না স্ত্রীত্বের অধিকার সমূহ আদায় করে। এটা অতি বড় যুলুম, যা থেকে এখানে নিষেধ করা হয়েছে। আর নবী করীম (সা) বলেন, যে ব্যক্তির কাছে দুজন স্ত্রী আছে, সে যদি কোন একজনের প্রতি ঝুঁকে পড়ে (অর্থাৎ,অপরজনকে একেবারে ত্যাগ করে রাখে), তাহলে সে কিয়ামতের দিন এমন অবস্থায় উপস্থিত হবে যে, তার দেহের অর্ধাংশ ঝুঁকে থাকবে।

সুতরাং উক্ত আয়াত দুটিতে কোনোভাবেই বৈপরীত্য নেই বরং দুটো ভিন্ন ভিন্ন অবস্থার প্রেক্ষাপটে বর্ণিত হয়েছে।

মুসলিম নারীরা কি একজন পুরুষের ৪ টি বিয়ে নিয়ে আপত্তি করতে পারে?

না। প্রকৃত মুসলিম নারীরা কখনোই আল্লাহর দেয়া বিধানের খেলাফ কিছু করবে না বরং একজন স্বামীকে নিয়েই সুখেই জীবন যাপন করতে চাইবে। তবে কোনো নারী যদি চায় দ্বিতীয় স্বামী গ্রহণ করতে তাহলে অবশ্যই প্রথম স্বামীর থেকে তালাক নিয়ে এরপরে পরবর্তী স্বামী গ্রহণ করতে পারবে। স্ত্রীদের সাথে বিন্দুমাত্র দুর্ব্যবহার করা যাবে না। বরং পরস্পরের মিমাংসা কর‍তে উৎসাহিত করেছে ইসলাম।

আল কুরআন, সুরা নিসা ৪ঃ১২৮ আয়াত থেকে বর্ণিত,

যদি কোন নারী তার স্বামীর পক্ষ থেকে কোন দূরব্যাবহার কিংবা উপেক্ষার আশঙ্কা করে, তাহলে তারা উভয়ে কোন মীমাংসা করলে তাদের কোন অপরাধ নেই। আর মীমাংসা কল্যাণকর এবং মানুষের মধ্যে কৃপণতা বিদ্যমান রয়েছে। আর যদি তোমরা সৎকর্ম কর এবং তাকওয়া অবলম্বন কর  তবে আল্লাহ্‌ তোমরা যা কর সে বিষয় সম্যক অবগত।

সহিহ বুখারী,হাদিসঃ ২৬৯৪, সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত হয়েছে,

‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ আল্লাহ্‌ তা‘আলার বাণীঃ কোন স্ত্রী যদি তার স্বামীর অবজ্ঞা ও উপেক্ষার আশংকা করে- (সূরা আন-নিসা : ১২৮)। এই আয়াতটি সম্পর্কে তিনি বলেন, আয়াতের লক্ষ্য হল, ‘কেউ তার স্ত্রীর মধ্যে বার্ধক্য বা অপছন্দনীয় কিছু দেখতে পেয়ে তাকে ত্যাগ করতে মনস্থ করে আর স্ত্রী বলে যে, তুমি আমাকে তোমার নিকট রাখ এবং তোমার যেটুকু ইচ্ছা আমার অংশ নির্ধারণ কর।’ ‘আয়িশা (রাঃ) বলেন, ‘উভয় রাজী হলে এতে দোষ নেই-ihadis.com

কাযী ছানাউল্লাহ পানিপথী (রহ) লিখিত “তাফসীরে মাযহারী” ৩ খণ্ড,৩০৭,৩০৮ পৃষ্ঠায় বর্ণিত হয়েছে,

দাম্পত্য জীবনে জটিলতা দেখা দিলে স্বামী স্ত্রীর মধ্যে আপোষরফস করাতে কোনো দোষ নেই। এই আয়াতে যে জটিলতার কথা বলা হয়েছে তা হচ্ছে, স্বামী যদি দূরব্যাবহার করে অথবা উপেক্ষা করে, যেমন দাম্পত্য সম্পর্ক শিথিল হওয়া, কথাবার্তা কম হওয়া ইত্যাদি; এমতাবস্থায় সন্ধির উদ্দেশ্যে স্ত্রী যদি মোহরানার দাবি সম্পূর্ণ কিংবা আংশিক ছেড়ে দেয়, অবশ্য পরিশোধ্য খোরপোষের দাবি শিথিল করে অথবা রাতের স্বামীসঙ্গের অধিকার (পালা) পরিত্যাগ করে, তবে তা অতি উত্তম। এ রকম অবস্থায় স্ত্রী স্বামীকে আকৃষ্ট করার উদ্দেশ্যে কিছু সম্পদও প্রদান করতে পারে। বাগবী লিখেছেন, স্বামী যদি তার স্ত্রী বলে তোমার বয়স বেশি হয়ে গিয়েছে। এবার আমি কোনো যুবতী সুন্দরী রমণীকে বিবাহ করতে চাই এবং বিবাহের পর তোমার চেয়ে তাকেই পালা বেশি করে দিতে চাই। এই সিদ্ধান্তে তুমি যদি প্রসন্ন হও, তবে আমার কাছে থাকতে পারো। আর যদি অপ্রসন্ন হও তবে চলে যেতে পারো। স্বামীর এই সিদ্ধান্তে যদি স্ত্রী সম্মত হয় তবে এটা হবে স্বামীর প্রতি স্ত্রীর অনুগ্রহএ রকম ক্ষেত্রে স্বামীকে তার স্ত্রীর উপর কোনো জুলুম করতে পারবে না। আর স্ত্রী সম্মত না হলে স্বামীকে তার হক পুরোপুরি আদায় করতে হবে (পালা কোন কিংবা পরিত্যাগ করা যাবে না)। অন্যথায় স্বামী তার স্ত্রীকে শিষ্টাচারের সঙ্গে মুক্ত করে দিবে। স্বামী যদি এমতাবস্থায় স্ত্রীকে মুক্তি না দেয় এবং অপ্রিয় হওয়া সত্ত্বেও স্ত্রীর হক পুরোপুরি আদায় করে, তবে সেটা হবে স্ত্রীর প্রতি তার অনুগ্রহ। অর্থাৎ স্ত্রী তার হক ছেড়ে দিয়ে এক সঙ্গে থাকতে চাইলে সে হবে স্বামীর প্রতি অনুগ্রহকারিনী আর স্বামী তার হক ছেড়ে দিয়ে স্ত্রীকে রাখতে চাইলে সে হবে স্ত্রীর প্রতি অনুগ্রহকারী। এভাবে দাম্পত্য সম্পর্ক রক্ষা করা সৎকর্মপরায়ণতার নিদর্শনআয়াতে তাই বলা হয়েছে আপোষ নিষ্পত্তি শ্রেয়। মুকাতিল বিন হাব্বান বলেছেন, বৃদ্ধা স্ত্রীর স্বামী কোনো যুবতী রমণীকে বিবাহের পর যদি প্রথম স্ত্রীকে বলে, এই শর্তে আমি তোমাকে কিছু সম্পদ প্রদান করবো যে, তুমি তোমার পালার অধিকার শিথিল করবে (কমিয়ে দেবে)। অর্থাৎ তোমার পালা অধিকাংশ কিংবা সম্পূর্ণ ছেড়ে দিবে আমার নতুন স্ত্রীর জন্য - এ কথায় বৃদ্ধা স্ত্রী যদি সম্মত হয় তবে তা অতি উত্তম। আর যদি সম্মত না হয়, তবে পালার ক্ষেত্রে স্বামীকে সমতা রক্ষা করে চলতেই হবে। আর এই আয়াতের প্রেক্ষিতে হযরত আলী (রা) বলেছেন, যদি কোনো স্বামী তার কুরুপা অথবা যৌবনহীনা স্ত্রীকে সুনজরে না দেখে, স্ত্রীও যদি তার স্বামী থেকে পৃথক হতে না চায় এবং দাম্পত্য সম্পর্ক অটুট রাখার জন্য স্ত্রী যদি তার স্বামীকে কিছু সম্পদ প্রদান করে, তবে ওই সম্পদ স্বামীর জন্য হালাল। সম্পদ না দিয়ে স্ত্রী যদি তার পালার অধিকার ছেড়ে দেয়, তবুও তা সিদ্ধ হবে। ৩১২ পৃষ্ঠায় বর্ণিত হয়েছে, আয়াতের প্রথমাংশে সন্ধির প্রতি উৎসাহিত করা হয়েছে এবং শেষ অংশে স্বভাবগত একগুয়েমি থেকে মুক্ত থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, এবং যদি তোমরা সৎকর্মপরায়ণ হও ও সাবধান হও, তবে তোমরা যা করো আল্লাহ্‌ তার খবর রাখেন। ওয়া ইন তুহসিনু (এবং যদি সৎকর্মপরায়ণ হও) এ কথার মাধ্যমে স্বামী ও স্ত্রীকে পরস্পরের প্রতি নম্র হওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, তারা যেনো পারস্পারিক অধিকারকে সম্মান জানাতে সচেষ্ট হয়- অপ্রিয় হলেও যেনো ন্যায়ানুতাকে প্রতিষ্ঠিত রাখে।

আদাবুল মুফরাদ, হাদিসঃ ১৯৫, সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,

আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃরাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ উত্তম সদাকা হলো সচ্ছলতা বজায় রেখে যা করা হয়। উপরের (দাতার) হাত নিচের (গ্রহীতার) হাতের চেয়ে উত্তম। পোষ্যদের থেকে (দান-খয়রাত) শুরু করো। অন্যথায় তোমার স্ত্রী বলবে, আমার ভরণপোষণ দাও নতুবা আমাকে তালাক দাও। তোমার দাস বলবে, আমাকে ভরণপোষণ দাও অন্যথায় আমাকে বিক্রয় করো। তোমার সন্তান বলবে, আমাকে কার দায়িত্বে ছেড়ে যাচ্ছেন।-ihadis.com

কোনো পুরুষ যদি ইসলামে দেয়া কঠিন কঠিন শর্ত না মেনে ৪ জন স্ত্রীকে বিয়ে করে এবং স্ত্রীদের যাবতীয় অধিকার পূরণ না করে তাহলে সেই স্ত্রীর অবশ্যই এই অধিকার আছে যে স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা করবে। এবং আমি নিজেও যদি জানতে পারি এরকম কোনো ঘটনা তাহলে আমি নিজেই উক্ত পুরুষের বিরুদ্ধে অবস্থান নিব। ইসলামের বিধান মানতে প্রতিটি মুসলিম বাধ্য।

মিশকাতুল মাসাবিহ, হাদিসঃ ১৮৯৬, সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,

আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃতিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ মানুষের উচিত শরীরের প্রতি জোড়ার জন্য প্রতিদিন সদাক্বাহ্ দেয়া। দু‘ ব্যক্তির মধ্যে ন্যায়বিচার করাও সদাক্বাহ্, কোন ব্যক্তিকে অথবা তার আসবাবপত্র নিজের বাহনে উঠিয়ে নেয়াও সদাক্বাহ্, কারো সাথে ভালো কথা বলা, সলাতের দিকে যাবার প্রতিটি কদম, এসবই এমনকি চলাচলের পথ থেকে কষ্টদায়ক কিছু সরিয়ে দেয়াও সদাক্বাহ্-ihadis.com

সহিহ বুখারী, হাদিসঃ ২৭০৭, সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃতিনি বলেন, আল্লাহ্‌র রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘মানুষের প্রতিটি হাতের জোড়ার জন্য তার উপর সদকা রয়েছে। সূর্য উঠে এমন প্রত্যেক দিন মানুষের মধ্যে সুবিচার করাও সদকা।’-ihadis.com

আল্লাহ্‌ নৈতিকতা দিয়েছেন তাই একজন নারী একত্রে ৪ জন স্বামী রাখতে পারবে না। এটাই ইসলামের আইন। তবে নারী চাইলে প্রথম স্বামী থেকে তালাক নিয়ে দ্বিতীয়, দ্বিতীয় স্বামী থেকে তালাক দিয়ে তৃতীয় এভাবে রাখতে পারবে। ৪ জন স্ত্রী যদি আল্লাহর হুকুম সন্তুষ্টভাবে মেনে একজন স্বামী নিয়েই খুশি থাকে, সুখেই থাকে এখানে আপনি কোন যুক্তিতে এটাকে অনৈতিক বলবেন? কারণ এখানে তো ৪ জন নারীই আল্লাহর বিধানে খুশি এবং একজন স্বামী নিয়েই খুশি। তাহলে? মুসলিম নারীদের কি নিজ ইচ্ছায় আল্লাহর বিধান খুশি মনে মেনে নেয়ার অধিকার থাকবে না? ৪ জন মুসলিম স্ত্রী যদি একজন মুসলিম পুরুষ স্বামী নিয়ে সেচ্ছায় সুখের সংসার করে তাহলে এই সুখের সংসার করার অধিকার নাস্তিকরা কেন হরণ করবে? একজন পুরুষ ৪ জন অসহায় গরীব নারীর দায়িত্ব নেয়ার জন্যও যদি বিয়ে করে এবং সবার ভরণপোষণ ঠিক ভাবে আদায় করে এই ক্ষেত্রে কিভাবে এটা অনৈতিক দাবি করবেন? যুক্তি আছে খারাপ প্রমাণ করার?

স্বামী যদি চায় দ্বিতীয় বিয়ে করতে তাহলে স্বামীর উচিত প্রথম স্ত্রীকে রাজি করিয়ে বা খুশি করে এরপরে দ্বিতীয় স্ত্রীকে বিয়ে করা। কেননা হাদিসে আছে তোমাদের কাছে সেই লোক উত্তম যে তার স্ত্রীর কাছে উত্তম। তাই প্রথম স্ত্রীকে নারাজ করে দ্বিতীয় স্ত্রী বিয়ে না করাই ভালো অথবা একজন আদর্শ স্বামীর খেলাফ। আর একজন খাটি মুসলিম নারী কখনো আল্লাহর দেয়া বিধানের বিরুদ্ধে যেতেই পারে না। বরং মুসলিম মেয়েরা উল্টো স্বামীকে একাধিক বিয়ে করতে বলে এরকম ঘটনার বাস্তব উদাহরণ রয়েছে। একাধিক স্ত্রী একজন স্বামীকে নিয়েই যে আনন্দের সংসার করে তাও প্রফুল্লতার সাথে সেটার বাস্তব নমুনা নিজ চোখে দেখতে ভিডিও গুলো অবশ্যই,অবশ্যই দেখুনঃ

সুত্রঃ https://youtu.be/xP-v_Q0MVcA

সুত্রঃ https://youtu.be/dfU-gehmOmo

একজন নারী যদি সেচ্ছায় একজন পুরুষের দ্বিতীয়, তৃতীয় অথবা চতুর্থ স্ত্রী হতে রাজি হয় তাহলে আপনার সেখানে আপত্তি থাকছে কেন? একজন নারী যদি গরীব হয় আর সে যদি একজন চরিত্রবান ধনী পুরুষের দ্বিতীয়, তৃতীয় অথবা চতুর্থ স্ত্রী হতে রাজি হয় নিজের স্বার্থে এখানেও আপনার অভিযোগ থাকবে কেন? সুতরাং কোনো নাস্তিক নারী যেমন নাস্তিক্যধর্ম বিশ্বাস করতে বাধ্য তেমনি মুসলিম নারী আল্লাহর দেয়া আইন মেনে নিতে বাধ্য। নাস্তিকরা যেমন নাস্তিকতায় অবিশ্বাস করলে নাস্তিক থাকতে পারবে না তেমনি মুসলিম নারী আল্লাহর দেয়া আইন অবিশ্বাস করলে মুসলিমই থাকতে পারবে না।

প্রশ্নঃ নাস্তিকান্ধদের দাবি সুরা নিসার ৪:৩ আয়াতে সুবিচার করা বলতে নাকি শুধুমাত্র দেন মোহরের ব্যাপারে সুবিচার করতে বলা হয়েছে ভরণপোষণের পাশাপাশি সমান ভাবে ভালবাসার কথা বলা হয়নি,এর সপক্ষে কিছু হাদিস দেখায়। যেমনঃ

সহিহ বুখারী, হাদিসঃ ৫০৯৮, সহিহ হাদিসঃ ‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ‘যদি তোমরা ভয় কর ইয়াতীমদের মধ্যে পূর্ণ ইনসাফ কায়িম করতে পারবে না’– (সূরাহ আন্‌-নিসা ৪/৩) – এ আয়াতের ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এ আয়াত ঐ সমস্ত ইয়াতীম বালিকাদের সম্পর্কে অবতীর্ণ হয়েছে, যাদের অভিভাবক তাদের সম্পদের লোভে বিয়ে করে। কিন্তু তাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে এবং তাদের সম্পত্তিকে ইনসাফের সঙ্গে রক্ষণাবেক্ষণ করে না। তার জন্য সঠিক পন্থা এই যে, ঐ বালিকাদের ছাড়া মহিলাদের মধ্য থেকে তার ইচ্ছা অনুযায়ী দু’জন অথবা তিনজন অথবা চারজনকে বিয়ে করতে পারবে। - ihadis.com

সহিহ বুখারী, হাদিসঃ ২৭৬৩, সহিহ হাদিসঃ ‘উরওয়াহ ইব্‌নু যুবাইর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি ‘আয়িশা (রাঃ) -কে জিজ্ঞেস করেনঃ (আরবী) “যদি আশংকা কর যে, তাদের মধ্যে সুবিচার করতে পারবে না, তবে একজনকে অথবা তোমাদের স্বত্বাধীন ক্রীতদাসীকে”-(আন নিসা ৩)। আয়াতটির অর্থ কী? ‘আয়িশা (রাঃ) বললেন, এখানে সেই ইয়াতীম মেয়েদের উদ্দেশ্য করা হয়েছে, যে তার অভিভাবকের লালন-পালনে থাকে। অতঃপর সে অভিভাবক তার রূপ-লাবণ্য ও ধন-সম্পদে আকৃষ্ট হয়ে, তার সম মানের মেয়েদের প্রচলিত মোহর থেকে কম দিয়ে তাকে বিয়ে করতে চায়। অতএব যদি মোহর পূর্ণ করার ব্যাপারে এদের প্রতি ইনসাফ করতে না পারে তবে ঐ অভিভাবকদেরকে নিষেধ করা হয়েছে এদের বিবাহ করতে এবং নির্দেশ দেয়া হয়েছে তাদের ব্যতীত অন্য মেয়েদের তোমরা বিবাহ করবে। ‘আয়িশা (রাঃ) বলেন, অতঃপর লোকেরা আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর নিকট এ সম্পর্কে জানতে চাইলে আল্লাহ্‌ তা‘আলা এই আয়াত নাযিল করেনঃ ---- “আর লোকেরা আপনার কাছে নারীদের সম্বন্ধে বিধান জানতে চায়। বলুনঃ আল্লাহ তাদের সম্বন্ধে তোমাদের ব্যবস্থা দিচ্ছেন”- (আন-নিসা ১২৭)। ‘আয়িশা (রাঃ) বলেন, আল্লাহ তা‘আলা এই আয়াতে বর্ণনা করেন যে, ইয়াতীম মেয়েরা সুন্দরী ও সম্পদশালীনী হলে অভিভাবকেরা তাদের বিয়ে করতে আগ্রহী হয়, কিন্তু পূর্ণ মোহর প্রদান করে না। আবার ইয়াতীম মেয়েরা গরীব হলে এবং সুশ্রী না হলে তাদের বিয়ে করতে চায় না বরং অন্য মেয়ে তালাশ করে। ‘আয়িশা (রাঃ) বলেন যে, আকর্ষণীয়া না হলে তারা যেমন ইয়াতীম মেয়েদের পরিত্যাগ করে, তেমনি আকর্ষণীয়া মেয়েদেরও তারা বিয়ে করতে পারবে না, যদি তাদের ইনসাফের ভিত্তিতে পূর্ণ মোহর প্রদান এবং তাদের হক ন্যায়সঙ্গতভাবে আদায় না করে।-ihadis.com

এর জবাব কি ?

উত্তরঃ যদি সুরা নিসার ৪:৩ আয়াতে “সুবিচার” অর্থ শুধু দেনমোহর ও সম্পত্তি বণ্টন বুঝায়- এই ক্ষেত্রেও যদি ধরে নেই এরপরেও আমাদের সমস্যা নেই। কারণ স্ত্রীদেরকে যে সমান ভাবেই ভালবাসতে হবে এর সপক্ষে সরাসরি প্রচুর হাদিস রয়েছে। নাস্তিকরা ইসলাম বোঝে না। অর্ধেক অংশের তথ্য দেখিয়ে কৌশলে মিথ্যা দাবি প্রবেশ করিয়ে মানুষকে বোকা বানায় নাস্তিকগোষ্ঠী। স্ত্রীর সাথে স্বামীর মানবিক আচরণ বিষয় হাদিস গুলো পড়া যাক।

আদাবুল মুফরাদ, হাদিসঃ ১৯৫, সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,

আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃরাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ উত্তম সদাকা হলো সচ্ছলতা বজায় রেখে যা করা হয়। উপরের (দাতার) হাত নিচের (গ্রহীতার) হাতের চেয়ে উত্তম। পোষ্যদের থেকে (দান-খয়রাত) শুরু করো। অন্যথায় তোমার স্ত্রী বলবে, আমার ভরণপোষণ দাও নতুবা আমাকে তালাক দাও। তোমার দাস বলবে, আমাকে ভরণপোষণ দাও অন্যথায় আমাকে বিক্রয় করো। তোমার সন্তান বলবে, আমাকে কার দায়িত্বে ছেড়ে যাচ্ছেন।-ihadis.com

বুলগুল মারাম, হাদিসঃ ১০৫৬, সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ নাবী সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন – যার দু’জন স্ত্রী আছে, আর সে তাদের একজনের চেয়ে অপরজনের প্রতি বেশী ঝুঁকে পড়ে, সে ক্বিয়ামাতের দিন একদিকে বক্রভাবে ঝুঁকে থাকা অবস্থায় উপস্থিত হবে-ihadis.com

সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিসঃ ১৯৬৯, সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃতিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ যার দু’জন স্ত্রী আছে, আর সে তাদের একজনের চেয়ে অপরজনের প্রতি বেশী ঝুঁকে পড়ে, সে কিয়ামাতের দিন তার (দেহের) এক পার্শ্ব পতিত অবস্থায় উপস্থিত হবে-ihadis.com

সুনানে আন নাসায়ী, হাদিসঃ ৫৩৭৯, সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,

আব্দুল্লাহ ইব্‌ন আমর ইব্‌ন আস (রাঃ) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেনঃ সুবিচারক লোক আল্লাহ্‌ তা’আলার নিকট তাঁর ডান হাতের দিকে নূরের মিম্বরের উপর উপবিষ্ট থাকবেনযারা তাদের বিচারকার্যে, পরিবারে ও দায়িতবভুক্ত বিষয়ে ইনসাফ রক্ষা করে।- ihadis.com

এই হাদিস গুলো স্পষ্ট আমাদেরকে জানাচ্ছে যে স্ত্রীদের প্রতি শুধু মাত্র দেনমোহরের ক্ষেত্রেই না বরং সব ক্ষেত্রে তথা ভরণপোষণ, ভালোবাসার দিক থেকেও সমান সুবিচার করতেই হবে। একজন মুসলিম পুরুষ তার স্ত্রীদের সাথে সব ক্ষেত্রে সুবিচার করতে বাধ্য। এটাই ইসলামের শিক্ষা। এটাই ইসলামের আইন। আমরা যখন দাবি করি স্ত্রীদের সাথে সব দিক থেকেই সুবিচার করতে হবে তখন আমরা শুধু মাত্র একটি আয়াতের উপর ভিত্তি করেই দাবি করি না বরং এই বিষয়ে সমস্ত তথ্য এক সাথে যুক্ত করে এরপরে দাবি করি। কিন্তু নাস্তিকান্ধরা তো আর ইসলামের সব তথ্য এক সাথে পড়ে দেখার ইচ্ছা করে না কারণ এই ইচ্ছা করলে তো ইসলামের সমালোচনা করতে পারবে না। বোঝেন নাই ব্যাপারটা? কথিত ভুল বের করতে অক্ষম হয়ে যাবে ওরা। 

পৃথিবীতে সার্বিক শান্তি স্থাপন করতে ইসলাম শিক্ষা দেয়। যেমন, 

আল কুরআন, সুরা আরাফ ৭ঃ৫৬ আয়াত থেকে বর্ণিত,

দুনিয়াতে শান্তি স্থাপনের পর তোমরা তাতে বিপর্যয় ঘটিও না। 

এই ক্ষেত্রেও কোনো মুসলিম পুরুষ যদি একাধিক স্ত্রীর ব্যাপারে সব ক্ষেত্রেই সুবিচার করতে না পারে তাহলে অবশ্যই পরিবারে অশান্তির সৃষ্টি হবে যা ইসলাম কখনোই চায় না। তাই এটা অবশ্যই একজন আদর্শবান পুরুষ একাধিক স্ত্রীর সাথে সব দিক থেকেই সুবিচার করতে বাধ্য। যদি কোনো স্ত্রী তার স্বামীর বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ করে আর সেটা যদি প্রমাণিত হয় তাহলে অবশ্যই স্বামীর শাস্তি হবে।

তারপরেও যুক্তির খাতিরে যদি ধরেও নেই সুরা নিসার ৪:৩ আয়াতে সুবিচার বলতে শুধুমাত্র দেনমোহর প্রদানের ক্ষেত্রে সুবিচার করতে বলা হয়েছে এরপরেও বিন্দুমাত্র সমস্যা নেই। কারণ কুরআন-সুন্নাহে এমন কোনো তথ্যই নেই যেখানে বলা হচ্ছে স্ত্রীদেরকে নির্যাতন করো,অত্যাচার করো, যৌন নির্যাতন করো, স্ত্রীদেরকে খাবার দেবে না, পোশাক দেবে না। শুধু স্ত্রীই না বরং সন্তানদের প্রতিও ইনসাফ বজায় রাখতে বলা হয়েছে ইসলামে। এই তথ্য নাস্তিকান্ধরা কখনোই মানুষকে দেখাতে চাইবে না। কেন?র জবাব তো আপনি ভালো করেই জানেন।

সুনানে আবু দাউদ, হাদিসঃ ৩৫৪৪, সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,

নু‘মান ইবনু বশীর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃতিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের সন্তানদের সাথে সমান আচরণ করো; তোমাদের সন্তানদের সাথে ইনসাফ করো। -ihadis.com

স্ত্রীর সাথে স্বামীর সার্বিক ব্যাবহার কেমন হবে এই বিষয় অন্যান্য আয়াত ও হাদিস গুলো পড়লেই নাস্তিকান্ধরা ইসলামের যে যে তথ্য গুলোকে ধামাচাপা দেবার চেষ্টা করেছে তা অটোমেটিক প্রকাশিত হয়ে যাবে। পাঠক আপনারা মনোযোগ দিয়ে পড়তে থাকুন। প্রয়োজনে যাচাই করে দেখে নিতে পারেন এটা বেশি উত্তম বলে আমি মনে করি এরপরেও নাস্তিকদের মিথ্যা কথা বিশ্বাস করার কোনো যৌক্তিক কারণ নেই। পড়তে থাকুন পাঠক।

আল কুরআন, সুরা নিসা ৪:১৯ আয়াত থেকে বর্ণিত,

হে ঈমাণদারগণ! বলপূর্বক নারীদেরকে উত্তরাধিকারে গ্রহন করা তোমাদের জন্যে হালাল নয় এবং তাদেরকে আটক রেখো না যাতে তোমরা তাদেরকে যা প্রদান করেছ তার কিয়দংশ নিয়ে নাও; কিন্তু তারা যদি কোন প্রকাশ্য অশ্লীলতা করে! নারীদের সাথে সদ্ভাবে জীবন-যাপন কর। অতঃপর যদি তাদেরকে অপছন্দ কর, তবে হয়ত তোমরা এমন এক জিনিসকে অপছন্দ করছ, যাতে আল্লাহ, অনেক কল্যাণ রেখেছেন

আল কুরআন, সুরা তাওবা ৯:৭১ আয়াত থেকে বর্ণিত,

আর ঈমানদার পুরুষ ও ঈমানদার নারী একে অপরের সহায়কতারা ভাল কথার শিক্ষা দেয় এবং মন্দ থেকে বিরত রাখে। নামায প্রতিষ্ঠা করে, যাকাত দেয় এবং আল্লাহ ও তাঁর রসূলের নির্দেশ অনুযায়ী জীবন যাপন করে। এদেরই উপর আল্লাহ তা'আলা দয়া করবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ পরাক্রমশীল, সুকৌশলী।

আল কুরআন, সুরা বাকারা ২:১৯৫ আয়াত থেকে বর্ণিত,

তোমরা নিজেদের জীবন ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিও না আর মানুষের সাথে ভাল ব্যাবহার করো,নিশ্চয় আল্লাহ্‌ ভাল ব্যাবহারকারীদের ভালবাসেন

সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিসঃ ১৯৭৮, সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,

আব্দুল্লাহ বিন আম্‌র (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃতিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,তোমাদের মধ্যে উত্তম লোক তারাই,যারা তাদের স্ত্রীদের কাছে উত্তম-ihadis.com

সুনানে আবু দাউদ, হাদিস নং ২১৪৪, সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,

রাসুল (সা) বলেন তোমরা যা খাবে স্ত্রীদেরকেও তাই খাওয়াবে এবং তোমরা যা পরবে,তাদেরকেও তা পরিধান করাবে।তাদেরকে প্রহার করবে না এবং গালিগালাজ করবে না-ihadis.com

সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিসঃ ১৯৭৭, সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,

ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,তোমাদের মধ্যে সেই ব্যক্তি উত্তম যে নিজের পরিবারের কাছে উত্তম। আর আমি তোমাদের চেয়ে আমার পরিবারের কাছে অধিক উত্তম-ihadis.com

বুলগুল মারাম,হাদিসঃ১০৫৭, সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,

আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃতিনি বলেছেন – নাবী সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সুন্নাত হচ্ছে, যদি কেউ বিধবা স্ত্রী থাকা অবস্থায় কুমারী বিয়ে করে তবে সে যেন তার সঙ্গে সাত দিন অতিবাহিত করে এবং এরপর পালা অনুসারে এবং কেউ যদি কোন বিধবাকে বিয়ে করে এবং তার ঘরে পূর্ব থেকেই কুমারী স্ত্রী থাকে তবে সে যেন তার সঙ্গে তিন দিন কাটায় এবং তারপর পালাক্রমে-ihadis.com

বুলগুল মারাম,হাদিসঃ১০৫৮, সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,

উম্মু সালামাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃতিনি বলেনঃ এটা সুন্নাত বা বিধিসম্মত হবে – যখন মানুষ কোন কুমারীকে অকুমারীর উপর বিয়ে করবে, তার সাথে সাত দিন অবস্থান করার পর তার স্ত্রীদের মধ্যে সমানভাবে পালা বন্টন করবে। আর যখন কোন অকুমারীকে বিয়ে করবে তখন তার সাথে একাধিক্রমে তিন দিন অবস্থান করার পর তাদের পালা সমভাবে বন্টন করবে-ihadis.com

বুলগুল মারাম,হাদিসঃ১০৫৯, সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,(পরিচ্ছেদ ৫, কোন স্ত্রী তার সতীনকে তার পালা দান করতে পারে)

আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃতিনি বলেন, সওদা বিনতে যাম‘আহ (রাঃ) তাঁর পালার রাত ‘আয়িশা (রাঃ) কে দান করেছিলেন। নাবী সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম ‘আয়িশা (রাঃ) এর জন্য দু’দিন বরাদ্দ করেন – ‘আয়িশা’র (রাঃ) দিন এবং সওদা (রাঃ)’র দিন-ihadis.com

জামে আত তিরমিজি, হাদিস নং ২২৬৩, সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত

নবী (সা) বলেন, সেই লোক তোমাদের মধ্যে সবচাইতে উত্তম যার নিকট কল্যাণ কামনা করা যায় এবং যার ক্ষতি হতে মুক্ত থাকা যায়। আর সেই লোক তোমাদের মধ্যে সবচাইতে নিকৃষ্ট যার নিকট কল্যাণের আশা করা যায় না এবং যার ক্ষতি হতেও নিরাপদ থাকা যায় না-ihadis.com

সহিহ বুখারি, হাদিস নং ৬০৩৯, সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত

এক লোক আয়েশা (রা) কে জিজ্ঞেস করেন, নবী (সা) নিজ গৃহে কি কাজ করতেন ? তিনি বলেন, তিনি পারিবারিক কাজকর্মে বাস্ত থাকতেন । যখন সালাতের সময় উপস্থিত হত তখন উঠে সালাতে চলে যেতেন।-ihadis.com

রিয়াদুস সলেহীন, হাদিসঃ ২৮৯, সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,

ইবনু উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃনবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘প্রতিটি মানুষই দায়িত্বশীল, সুতরাং প্রত্যেকেই অবশ্যই তার অধীনস্থদের দায়িত্বশীলতা বিষয়ে জিজ্ঞাসিত হবে। দেশের শাসক জনগণের দায়িত্বশীল, সে তার দায়িত্বশীলতা ব্যাপারে জবাবদিহী করবে। একজন পুরুষ তার পরিবারের দায়িত্বশীল, অতএব সে তার দায়িত্বশীলতা বিষয়ে জিজ্ঞাসিত হবে। স্ত্রী তার স্বামী ও সন্তানের দায়িত্বশীল, কাজেই সে তার দায়িত্বশীলতা বিষয়ে জিজ্ঞাসিতা হবে। তোমরা প্রত্যেকেই দায়িত্বশীল। অতএব প্রত্যেকেই নিজ নিজ অধীনস্থের দায়িত্বশীলতা ব্যাপারে জিজ্ঞাসিত হবে।’-ihadis.com

সহিহ বুখারি, হাদিস নং ৫৬, সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,

রাসুল (সা) বলেছেনঃ ‘তুমি আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের উদ্দেশ্যে যা-ই ব্যয় করো না কেন, তোমাকে তার প্রতিদান নিশ্চিতরূপে প্রদান করা হবে। এমনকি তুমি তোমার স্ত্রীর মুখে যা তুলে দাও, তারও-ihadis.com

সুনানে আবু দাউদ, হাদিসঃ ২১৪৪, সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,

মু’আবিয়াহ্‌ আল-কুশাইরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, একদা আমি রাসূলল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নিকট এসে বললাম, আমাদের স্ত্রীদের (হক) সম্পর্কে আপনি কি বলেন? তিনি বললেনঃ তোমরা যা খাবে তাদেরকেও তাই খাওয়াবে এবং তোমরা যা পরবে, তাদেরকেও তা পরিধান করাবে। তাদেরকে প্রহার করবে না এবং গালিগালাজ করবে না।-ihadis.com

রিয়াদুস সলেহীন, হাদিসঃ ৩০০, সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,

আব্দুল্লাহ ইবনু ‘আমর ইবনু আস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘একটি মানুষের পাপী হওয়ার জন্য এটা যথেষ্ট যে, সে তাদের অধিকার নষ্ট করবে অর্থাৎ তাদের ভরণ-পোষণে কার্পণ্য করবে যাদের জীবিকার জন্য সে দায়িত্বশীল-ihadis.com

জামে আত তিরমিজি, হাদিসঃ ১৯৬৫, সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,

নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ পরিবার-পরিজনের জন্য ব্যক্তির ধন-সম্পদ ব্যয় সাদকারূপে গণ্য-ihadis.com

জামে আত তিরমিজি, হাদিসঃ ১৯৬৪, হাসান হাদিস থেকে বর্ণিত,

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ মু’মিন ব্যক্তি চিন্তাশীল, গম্ভীর ও ভদ্র হয়ে থাকে। আর পাপিষ্ঠ ব্যক্তি প্রতারক, ধোঁকাবাজ, কৃপণ, নীচ ও অসভ্য হয়ে থাকে-ihadis.com

জামে আত তিরমিজি, হাদিসঃ ১৯২২, সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ যে লোক মানুষের প্রতি দয়া-অনুগ্রহ প্রদর্শন করে না তাকে আল্লাহ্‌ তা‘আলাও দয়া করেন না-ihadis.com

জামে আত তিরমিজি, হাদিসঃ ১৯২৩, হাসান হাদিস থেকে বর্ণিত,

আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, আবুল কাসিম রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে আমি বলতে শুনেছিঃ শুধুমাত্র হৃদয়হীন, নিষ্ঠুর ও দুর্ভাগা মানুষের কাছ থেকেই রাহমাত ছিনিয়ে নেয়া হয়-ihadis.com

সহিহ বুখারী, হাদিসঃ ৫১৮৬, সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,

নবী (সা) থেকে বর্ণিত, আর তোমরা নারীদের সঙ্গে সদ্ব্যবহার করবে। কেননা, তাদেরকে সৃষ্টি করা হয়েছে পাঁজরার হাড় থেকে এবং সবচেয়ে বাঁকা হচ্ছে পাঁজরার ওপরের হাড়। যদি তা সোজা করতে যাও, তাহলে ভেঙ্গে যাবে। আর যদি তা যেভাবে আছে সেভাবে রেখে দাও তাহলে বাঁকাই থাকবে। অতএব, তোমাদেরকে ওসীয়ত করা হলো নারীদের সঙ্গে সদ্ব্যবহার করার জন্য। আল লু’লু ওয়াল মারজান, হাদিসঃ ৯৩৪ / বুলগুল মারাম, হাদিসঃ ১০১৫, / সহিহ হাদিস।-ihadis.com

বুলগুল মারাম,হাদিসঃ১০৬৩, সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,

আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃতিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম সফরের মনস্থ করলে স্ত্রীগণের মধ্যে লটারি করতেন। যার নাম আসত তিনি তাঁকে নিয়েই সফরে বের হতেন-ihadis.com

জামে আত তিরমিজি, হাদিসঃ ১৯২৪, সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ্‌ তা‘আলা দয়ালুদের উপর দয়া ও অনুগ্রহ করেনযারা যমীনে বসবাস করছে তাদের প্রতি তোমরা দয়া কর, তাহলে যিনি আকাশে আছেন তিনি তোমাদের প্রতি দয়া করবেন। দয়া রাহমান হতে উদগত। যে লোক দয়ার সম্পর্ক বজায় রাখে আল্লাহ্‌ তা‘আলাও তার সাথে নিজ সম্পর্ক বজায় রাখেন। যে লোক দয়ার সম্পর্ক ছিন্ন করে, আল্লাহ্‌ তা‘আলাও তার সাথে দয়ার সম্পর্ক ছিন্ন করেন।-ihadis.com

সহিহ বুখারী, হাদিসঃ ৬১২৫,সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,

আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিততিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা নম্র হও এবং কঠোর হয়ো নাশান্তি দান কর, বিদ্বেষ সৃষ্টি করো না-ihadis.com

প্রশ্নঃ হিশাম ইবনে মুগীরা গোত্রের লোক আলী (রা) কে বিয়ের প্রস্তাব দিলে নবীজি (সা) সম্মতি দেন নাই এমনকি ফাতেমা (রা)ও অনুমতি দেন নাই প্রশ্ন হচ্ছে কেন? ইসলামে যদি একাধিক বিয়ে জায়েজ হয় তাহলে নবীজি (সা) কেন নিজের মেয়ের স্বামীকে অন্য স্ত্রী বিয়ে করতে দেন নাই?

সহিহ মুসলিম,হাদিসঃ ৬২০১, সহিহ হাদিসঃ মিসওয়ার ইবনু মাখরামাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃতিনি রসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে মিম্বারের উপর থেকে বলতে শুনেছেন, হিশাম ইবনু মুগীরার ছেলেরা আমার নিকট অনুমতি চেয়েছে যে, তাদের কন্যাকে ‘আলী ইবনু আবূ তালিবের নিকট তারা বিবাহ দিতে চায়। আমি তাদের অনুমতি দিব না, আমি তাদের দিব না, আমি তাদের দিব না। কিন্তু যদি ‘আলী ইবনু আবূ তালিব আমার কন্যাকে তালাক দিয়ে তাদের মেয়েকে বিবাহ করতে চায়, সেটা আলাদা কথা। কারণ আমার কন্যা আমারই একটা অংশ। যা তাকে সম্মানহানি করে তা আমাকেও সম্মানহানি করে, তাকে যা কষ্ট দেয়, আমাকেও তা কষ্ট দেয়। জামে আত তিরমিজি, হাদিসঃ ৩৮৬৭ / সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিসঃ ১৯৯৮/ সুনানে আবু দাউদ, হাদিসঃ২০৭১ / সব সহিহ হাদিস । - ihadis.com

উত্তরঃ হিশাম ইবনে মুগীরার ছেলেরা যেই মেয়ের প্রস্তাব নিয়ে এসেছিলেন সেটা ছিল আবু জাহেলের মেয়ে আর আবু জাহেল এবং তার মেয়ে ছিল ইসলামের চরম দুশমন। আর ইসলাম গ্রহণ না করলে তো বিয়েও করা যাবে না। তাই নবীজি (সা) ফাতেমা (রা) ও আলী (রা) কে বিয়ে করার অনুমতি দেন নাই। এরমানে এই না যে নবীজি (সা) বিনা কারণে নিজের স্বার্থে এমনটি করেছেন যেটা মিথ্যুকবাজ নাস্তিকরা বুঝায়। কাফের নারীকে বিয়ে করা ইসলামে জায়েজ নেই। আবু জায়েলের কন্যাকে বিয়ে করা আলী (রা) এর জন্য যেমন ক্ষতিকর ছিল তেমনি ফাতিমা (রা) এর জন্য এই দিক বুঝতে পেরেই নবীজি (সা) আলী (রা)কে সেই বিয়ে করতে মানা করেন। নাস্তিকরা অর্ধেক তথ্য দেখিয়েছে নিজেদের অন্ধবিশ্বাস সঠিক প্রমাণের জন্য কিন্তু আমি সম্পূর্ণ তথ্য দেখিয়ে দিব যাতে নাস্তিকরা ইসলাম বিষয় যে অন্ধবিশ্বাস করে সেটা মিথ্যা প্রমাণ হয়ে যায়। পড়তে থাকুন নিজেরাই সব পরিস্কার বুঝতে পারবেন।

আল কুরআন, সুরা মুমতাহিনা, ৬০:১০ আয়াত থেকে বর্ণিত, 

আর তোমরা কাফির নারীদের সাথে বৈবাহিক সম্পর্ক বজায় রেখো না।

সহিহ মুসলিম,হাদিসঃ ৬২০৩, সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,

আলী ইবনু হুসায়ন (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ হুসায়ন ইবনু ‘আলী (রাঃ)-এর শাহাদতের পর ইয়াযীদ ইবনু মু‘আবিয়াহ্ (রাঃ)-এর নিকট হতে রাযা যখন মাদীনায় এলেন, মিসওয়ার ইবনু মাখরামাহ্ তখন তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেন এবং তাঁকে বললেন, আপনার কোন প্রয়োজন থাকলে আমাকে বলবেন। আমি বললাম, না। মিসওয়ার বললেন, রসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর তলোয়ারটি কি আপনি আমাকে দান করবেন? কেননা আমার ভয় হয় যে, লোকেরা এটি আপনার নিকট হতে আয়ত্ব করে নিবে। আল্লাহর শপথ আপনি যদি সে তলোয়ারটি আমাকে দিয়ে দেন তাহলে যতক্ষণ আমার জীবন থাকে এটি কেউ ছুঁইতে পারবে না। মিসওয়ার আরো বলেন ফাতিমার জীবিতাবস্থায় ‘আলী (রাঃ) আবূ জাহলের মেয়েকে বিবাহরে প্রস্তাব দিয়েছিলেন। তখন আমি রসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে এ ব্যাপার নিয়ে মানুষদের সম্মুখে মিম্বারে দাঁড়িয়ে বক্তৃতা দিতে শুনেছি। আমি তখন সদ্য বালিগ বয়সের। তখন তিনি বললেন, ফাতিমা আমারেই অংশ। আমার আশঙ্কা হচ্ছে, সে তার দ্বীনের সম্পর্কে ফিতনায় না পতিত হয়।তারপর তিনি ‘আব্দ-ই-শাম্স গোষ্ঠীয় তাঁর জামাতার আলোচনা করলেন, তার আত্মীয়তার প্রশংসা করলেন এবং বললেন, সে আমায় যা বলেছে সত্য বলেছে, সে আমার সাথে ওয়া‘দা করেছে, আর তা পালন করেছে। আর আমি কোন হালালকে হারাম করি না, বা হারামকে হালাল করি না, তবে আল্লাহর শপথ! আল্লাহর রসূলের কন্যা এবং আল্লাহর শত্রুর কন্যা কক্ষনো এক স্থানে একত্র হতে পারে না-ihadis.com

জামে আত তিরমিজি, হাদিসঃ ৩৮৩৯, সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,

আবদুল্লাহ ইবনুয যুবাইর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ আলী (রাঃ) আবূ জাহলের কন্যাকে বিয়ে করার আলোচনা করেন। নবী সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম তা শুনে বললেনঃ প্রকৃতপক্ষে ফাতিমাহ্ আমার শরীরের একটি অংশ। যা তাকে কষ্ট দেয়, তা আমাকেও কষ্ট দেয়, যা তাকে ক্লান্ত করে তা আমাকেও ক্লান্ত করে।-ihadis.com

সহিহ মুসলিম,হাদিসঃ ৬২০৪, সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,

মিসওয়ার ইবনু মাখরামাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ আলী ইবনু আবূ তালিব (রাঃ) নাবী-তনয় ফাতিমাকে ঘরে রেখেই আবূ জাহলের কন্যাকে বিবাহের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। ফাতিমা (রাঃ) যখন এ খব শুনলেন তখন রসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নিকট এসে বললেন, লোকেরা কথোপকথন করে যে, আপনি আপনার কন্যাদের সম্বন্ধে রাগ প্রকাশ করেন না। আর এই যে, ‘আলী (রাঃ) আবূ জাহলের কন্যাকে বিবাহ করতে যাচ্ছেন।মিসওয়ার (রাঃ) বললেন, তখন নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম দাঁড়ালেন। এ সময় আমি শুনলাম, তিনি তাশাহুদ পড়লেন এবং বললেনঃ আমি আবুল ‘আস ইবনু রাবী‘র নিকট বিয়ে দিয়েছি, সে আমাকে যা বলেছে তা বাস্তবে পরিণত করেছে। আর মুহাম্মাদ কন্যা ফাতিমা আমারই একটা টুকরা, আমি অপছন্দ করি যে, লোকে তাঁকে ফিতনায় ফেলুক। আল্লাহর শপথ! আল্লাহর রসূলের মেয়ে ও আল্লাহর শত্রুর মেয়ে কোন লোকের নিকট কক্ষনো একসাথে মিলিত হতে পারে না। মিসওয়ার (রাঃ) বলেন, তারপর ‘আলী (রাঃ) প্রস্তাব প্রত্যাহার করেন।-ihadis.com

সহিহ বুখারী, হাদিসঃ ৩১১০, সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,

আলী ইব্‌নু হুসাইন (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃতিনি বলেন, যখন তাঁরা ইয়াযীদ ইব্‌নু মু‘আবিয়াহ্‌র নিকট হতে হুসাইন (রাঃ) -এর শাহাদাতের পর মদীনায় আসলেন, তখন তাঁর সঙ্গে মিসওয়ার ইব্‌নু মাখরামা (রাঃ) মিলিত হলেন এবং বললেন, আপনার কি আমার নিকট কোন প্রয়োজন আছে? থাকলে বলুন। তখন আমি তাঁকে বললাম, না। তখন মিসওয়ার (রাঃ) বললেন, আপনি কি আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম -এর তরবারিটি দিবেন? আমার আশঙ্কা হয়, লোকেরা আপনাকে কাবু করে তা ছিনিয়ে নিবে। আল্লাহ্‌র কসম! আপনি যদি আমাকে এটি দেন, তবে আমার জীবন থাকা অবধি কেউ আমার নিকট হতে তা নিতে পারবে না। একবার ‘আলী ইব্‌নু আবূ তালিব (রাঃ) ফাতিমা (রাঃ) থাকা অবস্থায় আবূ জাহল কন্যাকে বিবাহ করার প্রস্তাব দেন। আমি তখন আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম -কে তাঁর মিম্বারে দাঁড়িয়ে লোকদের এ খুত্‌বা দিতে শুনেছি, আর তখন আমি সাবালক। আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ‘ফাতিমা আমার হতেই। আমি আশঙ্কা করছি সে দ্বীনের ব্যাপারে পরীক্ষার সম্মুখীন হয়ে পড়ে।’ অতঃপর আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বানূ আবদে শামস গোত্রের এক জামাতার ব্যাপারে আলোচনা করেন। তিনি তাঁর জামাতা সম্পর্কে প্রশংসা করেন এবং বলেন, সে আমার সঙ্গে যা বলেছে, তা সত্য বলেছে, আমার সঙ্গে যে ওয়াদা করেছে, তা পূরণ করেছে। আমি হালালকে হারামকারী নই এবং হারামকে হালালকারী নই। কিন্তু আল্লাহর কসম! আল্লাহর রসূলের মেয়ে এবং আল্লাহর দুশমনের মেয়ে একত্র হতে পারে না।-ihadis.com

ইসলামে মুশরিকদের বিয়ে করা নিষেধ। আল কুরআন, সুরা বাকারা ২:২২১ আয়াত থেকে বর্ণিত,

আর তোমরা মুশরেক নারীদেরকে বিয়ে করোনা, যতক্ষণ না তারা ঈমান গ্রহণ করে। অবশ্য মুসলমান ক্রীতদাসী মুশরেক নারী অপেক্ষা উত্তম, যদিও তাদেরকে তোমাদের কাছে ভালো লাগে। এবং তোমরা নারীরা কোন মুশরেকের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়ো না, যে পর্যন্ত সে ঈমান না আনে। একজন মুসলমান ক্রীতদাসও একজন মুশরেকের তুলনায় অনেক ভাল, যদিও তোমরা তাদের দেখে মোহিত হও। তারা দোযখের দিকে আহ্বান করে, আর আল্লাহ নিজের হুকুমের মাধ্যমে আহ্বান করেন জান্নাত ও ক্ষমার দিকে। আর তিনি মানুষকে নিজের নির্দেশ বাতলে দেন যাতে তারা উপদেশ গ্রহণ করে।

সুতরাং পরিস্কারভাবেই বুঝা গেলো যে আবু জাহেলের কন্যা কাফের ছিল এবং আবু জাহেল ছিল ইসলামের বড় দুশমন এমনকি নিজের মেয়েকে ব্যাবহার করে ইসলামের ক্ষতি করতেও আবু জাহেলের বুক কাঁপবে না। নবীজি (সা) নিজেই কিন্তু বলেছেন এই কথা যে আল্লাহর রসূলের মেয়ে ও আল্লাহর শত্রুর মেয়ে কোন লোকের নিকট কক্ষনো একসাথে মিলিত হতে পারে না। এই কথাই প্রমাণ করে আবু জাহেলের মেয়ে মুসলিম ছিল না বিধায় নবীজি (সা) আলী (রা) বিয়ে করতে মানা করেন। নাস্তিকরা নিজেরা ইসলাম বোঝে না আর মানুষকেও সঠিকভাবে ইসলাম বুঝতে দিতে চায় না। আমাদেরকে সচেতন হতে হবে।

প্রশ্নঃ বিয়ে করতে হলে নারীর অনুমতি লাগবে তার প্রমাণ কি ?

উত্তরঃ নারীর অনুমতি নিয়ে,পরিবারের অনুমতি নিয়ে বিয়ে করতে হবে। মহিলারা পুরুষদের বিয়ের প্রস্তাব দিতে পারবে।

সহিহ বুখারী, হাদিসঃ ৫১১৩, সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,

হিশামের পিতা ‘উরওয়া (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃতিনি বলেন, যে সব মহিলা নিজেদেরকে নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম - এর নিকট সমর্পণ করেছিলেন, খাওলা বিনতে হাকীম তাদেরই একজন ছিলেন। ‘আয়িশা (রাঃ) বলেন, মহিলাদের কি লজ্জা হয় না যে, নিজেদেকে পুরুষের কাছে সমর্পণ করছে? কিন্তু যখন কুরআনের এ আয়াত অবতীর্ণ হল- “হে মুহাম্মাদ! তোমাকে অধিকার দেয়া হল যে, নিজ স্ত্রীগণের মধ্য থেকে যাকে ইচ্ছা আলাদা রাখতে পার...।” (আল-আহযাব: ৫১) ‘আয়িশা (রাঃ) বলেন, হে আল্লাহ্‌র রসূল! আমার মনে হয়, আপনার রব আপনার মনোবাঞ্ছা পূর্ণ করার ত্বরিৎ ব্যবস্থা নিচ্ছেন। উক্ত হাদীসটি আবূ সা’ঈদ মুয়াদ্দিব, মুহাম্মাদ ইব্‌নু বিশ্‌র এবং ‘আবদাহ্‌ হিশাম থেকে আর হিশাম তার পিতা হতে একে অপরের চেয়ে কিছু বর্ধিতভাবে ‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন।-ihadis.com

সহিহ বুখারী, হাদিসঃ ৫১২০, সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,

সাবিত আল বুনানী (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃতিনি বলেন, আমি আনাস (রাঃ) - এর কাছে ছিলাম। তখন তাঁর কাছে তাঁর কন্যাও ছিলেন। আনাস (রাঃ) বললেন, একজন মহিলা নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম - এর কাছে নিজেকে সমর্পণ করতে এসে বলল, হে আল্লাহ্‌র রসূল! আপনার কি আমার প্রয়োজন আছে? এ কথা শুনে আনাস (রাঃ) - এর কন্যা বললেন, সেই মহিলা কতই না নির্লজ্জ, ছি: লজ্জার কথা। আনাস (রাঃ) বললেন, সে মহিলা তোমার চেয়ে উত্তম, সে নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম - এর সাহচর্য পেতে অনুরাগী হয়েছিলএ কারনেই সে নিজেকে নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম - এর কাছে পেশ করেছে।-ihadis.com

সহিহ বুখারী, হাদিসঃ ৬১২৩, সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,

আনাস (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, এক মহিলা রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম -এর কাছে এলো এবং তাঁর সামনে নিজেকে পেশ করে বললঃ আপনার কি আমার প্রয়োজন আছে? খবরটি জানার পরে আনাস (রাঃ) -এর মেয়ে বলেছিলঃ এ মহিলার লজ্জা কত কম! আনাস (রাঃ) বললেনঃ সে তোমার চেয়ে উত্তমসে তো রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম -এর খিদমতে নিজেকে পেশ করেছে।-ihadis.com

এখানে নাস্তিকান্ধরা একটি সরাসরি মিথ্যাচার করে যে কুমারি মেয়েকে নাকি বিয়ে করতে হলে নাকি অনুমতি লাগবে না যেহেতু হাদিসে আছে চুপ থাকাই হচ্ছে কুমারির সম্মতি। যেমন,মুয়াত্তা ইমাম মালেক, হাদিসঃ ১০৮৬, সহিহ হাদিসে আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রা) থেকে বর্ণিতঃ রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, আইয়্যেম তার ব্যাপারে অভিভাবকের তুলনায় অধিক হকদার এবং কুমারীর বিবাহের ব্যাপারে তার অনুমতি নিতে হবে। চুপ থাকাই হচ্ছে তার অনুমতি।-ihadis.com

এরকম হাদিসে শুধুমাত্র বলা হয়েছে চুপ থাকাই তার অনুমতি কিন্তু চুপ থাকার অর্থ কি সেটার স্পষ্ট করা হয়েছে অন্য হাদিস গুলোতে রয়েছে যা মিথ্যুক নাস্তিকরা দেখাতে চায় না এখানেই ওদের ধাপ্পাবাজি। এই হাদিস গুলো পড়ুন নিজেরাই বুঝতে পারবেন।

জামে আত তিরমিজি,হাদিসঃ ১১০৯, হাসান সহিহ থেকে বর্ণিত,

আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ ইয়াতীম কুমারীর বিয়ের ব্যাপারে তার নিজের মত নিতে হবে। সে চুপ থাকলে তবে এটাই তার সম্মতিগণ্য হয়ে যাবে। সে সরাসরি অস্বীকার করলে তবে তার উপর জোর খাটানো যাবে না।-ihadis.com

সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিসঃ ১৮৭০, সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,

ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ "বিধবা নারী নিজের ব্যাপারে তার অভিভাবক অপেক্ষা অধিক কর্তৃত্বশীল এবং কুমারী মেয়ের বিবাহের ব্যাপারে তার সম্মতি গ্রহণ করতে হবে। " বলা হলো, ইয়া রসূলুল্লাহ! কুমারী তো বিবাহের ব্যাপারে কথা বলতে লজ্জাবোধ করে। তিনি বলেন, "তার নীরবতাই তার সম্মতি।-ihadis.com

সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিসঃ ২০৯৩, সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃতিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ ইয়াতীম কুমারী মেয়ে থেকে সরাসরি সম্মতি নিতে হবে। তার চুপ থাকাই তার সম্মতি। সে অসম্মতি প্রকাশ করলে তার উপর কোন জবরদস্তি করা চলবে না।-ihadis.com

সহিহ মুসলিম, হাদিসঃ ৩৩৬৬, সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,

আয়িশাহ্‌ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নিকট জিজ্ঞেস করলামঃ যে মেয়েকে তার অভিভাবক বিবাহ দেয়, তার নিকট থেকেও সম্মতি নিতে হবে কি না? রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে বললেনঃ হাঁ, তার সম্মতি নিতে হবে। ‘আয়িশা (রাঃ) বলেন, আমি তাঁকে পুর্নবার বললাম, সে তো লজ্জায় পড়বে। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, তার নীরবতাই তার সম্মতি।-ihadis.com

সহিহ বুখারী, হাদিসঃ ৫১৩৭, সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,

‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃতিনি বলেন, হে আল্লাহ্‌র রসূল! নিশ্চয়ই কুমারী মেয়েরা লজ্জা করে। নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, চুপ থাকাটাই হচ্ছে তার সম্মতি।-ihadis.com


এমডি আলী

যিনি একজন লেখক, বিতার্কিক ও গবেষক। বিভিন্ন ধর্ম ও মতবাদ বিষয় পড়াশোনা করেন। ইসলামের সত্যতা মানুষের কাছে ছড়িয়ে দিতে চান। “সত্যের অনুভূতি” উনার লেখা প্রথম বই। “ফ্যান্টাস্টিক হামজা” দ্বিতীয় বই। জবাব দেবার পাশাপাশি নাস্তিক মুক্তমনাদের যৌক্তিক সমালোচনা করে থাকেন।

Previous Post Next Post