বান্দাকে আল্লাহ মোহর মেরে দেন কেন?

বান্দাকে আল্লাহ মোহর মেরে দেন কেন?

লিখেছেনঃ এমডি আলী।

ভূমিকাঃ

নাস্তিকরা বলে থাকে আল্লাহ বিনা কারণেই বান্দাকে মোহর মেরে দেয় তাই বান্দা হেদায়েত পায় না সুতরাং যেসব নাস্তিকরা হেদায়েত পায়নি দোষ তাদের না,দোষ নাকি আল্লাহর। এটা ছাড়াও বিভিন্ন আয়াত যেমন আল্লাহ যাকে ইচ্ছা হেদায়েত দেন যাকে ইচ্ছা দেন না এরপরে আল্লাহ না চাইলে তোমরা কেউই ইচ্ছা করতে পারবে না এসব কুরআন থেকে দেখিয়ে নাস্তিকরা আল্লাহকে নিয়ে নানান অভিযোগ করে থাকে। নাস্তিকরা নিজেদের ইসলামবিরোধী বিশ্বাসকে সঠিক দাবি করার চেষ্টা করে থাকে এসব আয়াত দেখিয়ে। আজকে আমরা নাস্তিকদের দেখানো সকল তথ্যপ্রমাণ গুলো বিচার করে দেখবো তারা সঠিক ব্যাখ্যা বলে কিনা। অথবা নাস্তিকরা ইসলামের বিশুদ্ধ ব্যাখ্যা মানুষকে বলে কিনা। নাস্তিকদের সকল অভিযোগ এবং বিশ্বাসকে তদন্ত করে দেখতে হবে। যাচাই করে দেখতে হবে। বিচার করতে হবে। নাস্তিকদের ইসলামবিরোধী বিশ্বাসকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে হবে সততার সাথে। তাহলেই পরিস্কার হবে তারা সত্যিবাদী নাকি মিথ্যাবাদী।

আল্লাহর মোহর মেরে দেয়া আয়াত গুলোঃ

আল কুরআন,সূরা বাকারা ২:৬,৭ আয়াতে বর্ণিত হয়েছে, 

নিশ্চিতই যারা কাফের হয়েছে তাদেরকে আপনি ভয় প্রদর্শন করুন আর নাই করুন তাতে কিছুই আসে যায় না, তারা ঈমান আনবে না। আল্লাহ তাদের হৃদয় ও কানে মোহর মেরে দিয়েছেন, তাদের চোখের উপর আবরণ রয়েছে এবং তাদের জন্য রয়েছে মহা শাস্তি

আসুন বিভিন্ন বিখ্যাত তাফসীর গ্রন্থ থেকে উক্ত আয়াতটির ব্যাখ্যা জেনে নেই।

তাফসীরে আনওয়ারুল কুরআন ১ খণ্ড, ৪৮ পৃষ্ঠায় বলা হয়েছেঃ 

এই আয়াতটি আবু জাহেল, আবু লাহাব, উতবা , শাইবা এ ধরনের নির্দিষ্ট কিছু কাফেরদের ব্যাপারে নাজিল হয়েছেযাদের ব্যাপারে আল্লাহর ইলম ছিল যে তারা কুফরি অবস্থায় মৃত্যুবরণ করবেতারা কখনোই ইসলাম গ্রহন করবে না, সব কাফেরদের ব্যাপারে এই আয়াত নয় কারন এ কথা তো দিবালোকের ন্যায় স্পষ্ট যে এই আয়াত নাজিল হওয়ার পরেও অনেক কাফের মুসলমান হয়েছে এবং ভবিষ্যতেও হবে ইনশা আল্লাহ

তাফসীরে জালালাইন ১ খণ্ড, ৯০ পৃষ্ঠায় বলা হয়েছে,

মূলত কুরআনের ঐ আয়াত দ্বারা সাধারন কাফের উদ্দেশ্য নয় বরং বিশেষ প্রতিশ্রুত ঐ সকল কাফের উদ্দেশ্য যাদের জন্য আল্লাহর ইলমে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হচ্ছে যে এরা শেষ পর্যন্ত ইমান গ্রহন করবে না,বরং কুফরের উপরেই অটল থাকবে। যেমন আবু জাহেল ও আবু লাহাব প্রমুখ। তা ছাড়া "সাওয়া উন আলাইহিম" দ্বারা উদ্দেশ্য এই নয় যে এখন তার তাদেরকে দিনের বিধানাবলি শুনানোর এবং তাদের কাছে তাবলীগের প্রয়োজন নেই । কেননা এ তাবলীগ তো রাসুল (সা) এর উপর মর্যাদাশীল ফরজ। সুতরাং তারপরেও তিনি তাবলীগ বন্ধ করেননি। মুফাসসির (রহ) উক্ত সন্দেহকেই দূর করার দিকে "ফালা তাত মাআ" দ্বারা ইঙ্গিত করেছেন অর্থাৎ তাবলীগ ছেড়ে দেয়া উদ্দেশ্য নয় বরং তাদের থেকে ইমান গ্রহনের ব্যাপারে বিশ্বাস ও আশা না রাখার কথা বলা হচ্ছে। কেননা আশার বিপরীত ফল দ্বারা দুঃখ ও বেদনার সম্মুখীন হতে হয়। আম্বিয়া (আ) এর অন্তর যেহেতু স্নেহ ও দয়ায় পরিপূর্ণ থাকে। তাঁরা যেহেতু অধিক মহাব্বত ও স্নেহ করে থাকেন কাফেরদের ইমান পোষণের ব্যাপারে তারপর এর বিপরীত হলে কত বড় ও অসহনীয় দুঃখ তাদের মনে আসতে পারে। তাই এই আয়াতের স্থানে তাবলীগের ব্যাপারে সংযমী হওয়ার তালীম দেয়া হয়েছে। অর্থাৎ আবু জাহেল ও খগেন আবু লাহাবের মত ঐসব লোকও এ হুকুমের অন্তর্ভুক্ত , যাদের ইমান না আনার বিষয়টি আল্লাহর ইলমে রয়েছে

আল্লাহ অন্যায়ভাবে মোহর মেরে দেন এই কথা কুরআনের কোথাও বলা হয়নি। উল্টো, আল্লাহ ন্যায়বিচারকারী, আল্লাহ কারো উপর জুলুম করেন না এই ধরণের আয়াত অসংখ্য।

আল কুরআন,সুরা বাকারা ২:১০ আয়াতে বলা হয়েছে,

তাদের অন্তঃকরণ ব্যধিগ্রস্ত আর আল্লাহ তাদের ব্যধি আরো বাড়িয়ে দিয়েছেনবস্তুতঃ তাদের জন্য নির্ধারিত রয়েছে ভয়াবহ আযাব, তাদের মিথ্যাচারের দরুন

মোহর কেন মারা হয়েছে সেটার উত্তর এই আয়াতে স্পষ্ট বলা হয়েছে অর্থাৎ যেহেতু কাফেররা আল্লাহকে অস্বীকার করে এবং সেটা প্রমাণের জন্য ইচ্ছা করেই মিথ্যা কথা বলে আর এসব মিথ্যাচারের উপরে অটল থাকে তাই এসব কাজ খুবই অন্যায় আর তাই তাদের এই অন্যায় এক প্রকার রোগ যেটা বৃদ্ধি পায় প্রচুর মিথ্যাচারের ফলে আর এই সিস্টেম আল্লাহই সৃষ্টি করেছেন। অর্থাৎ আপনি মিথ্যাচারের উপর অটল না থাকলে আপনাকে আল্লাহ মোহর মারবেন না। তাহলে আমরা বুঝতে পারলাম, আল্লাহ ইচ্ছা করেই অন্যায়ভাবে মোহর মারেন না বরং কাফেরদের ইচ্ছা করে জালিয়াতির জন্য এই রোগ বেড়ে যায় তাই তাদের দিলে মোহর লেগে যায়। এখানে আল্লাহ ইচ্ছা করেই অন্তর কান চোখ বন্ধ করেছেন এই কথা ভুল। কেননা তাফসীরে ইবনে আব্বাস ১ খণ্ড, ১৭ পৃষ্ঠা থেকে এটাও জানা যায়,ইমান আনার ইচ্ছাই কাফেরদের নেই। আল্লাহর জানা আছে যে,তারা ইমান আনবে না। অর্থাৎ এই কারনেই তাদের পরিনতি যেহেতু ফাইনাল তাই মোহর মেরে দেয়া হয়। নাস্তিকদের ইসলামবিরোধী বিশ্বাস যে ইসলামের দৃষ্টিতে বাতিল সেটা পরিস্কার।

তাফসীরে জালালাইনে চমৎকার একটি উদাহরণ দিয়ে ব্যাপারটি সহজে বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। আসুন জেনে নেই। তাফসীরে জালালাইন ১ খণ্ড, ৯১ পৃষ্ঠায় আরও বলা হয়েছে যেঃ 

যখন আল্লাহ স্বয়ং তাদের ইমান গ্রহন না করার কথা বলেছেন।তাঁর সংবাদের বিপরীত হওয়া যেহেতু অসম্ভব তাই ইমান গ্রহন না করার ক্ষেত্রে এখন তাদেরকে অপারগ মনে করতে হবে এবং তাদের উপর কোন ধরনের অভিযোগ নেই এমন কথা অনেক মূর্খ নাস্তিককে বলতে শোনা যায় অথচ প্রকৃত তত্ত্ব হচ্ছে আল্লাহর "তারা ইমান গ্রহন করবে না" এই কথা বলা এমনই, যেমন কোন ডাক্তার কোন বিপদসস্কুল রোগীকে দেখে তার মৃত্যুর ভবিষ্যৎবানী করে দেয় এবং সে রোগী ডাক্তারের কথানুযায়ী ঐ সময়ে সত্যিই মরে যায়। তবে এই কারনে ডাক্তারের উপর কোন অভিযোগ আসবে না। এ কথা বলা যাবে না,যে ডাক্তার বলার কারনে রোগী মারা গেছে , যদি ডাক্তার না বলতো তবে রোগী মরতো না। বরং এটাই বলা হবে যে স্বয়ং ডাক্তারের এ কথা বলা "এ সময়ের মধ্যে মারা যাবে" রোগীর অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে ছিল , যা সঠিক হয়েছে। এমনিভাবে এস্থানে আল্লাহর জানা ও সংবাদকে তাদের অধার্মিকতা ও দুরবস্থার কারন বলা যাবে না বরং তাদের অন্যায় আচরণ, অপকর্ম ও অধার্মিকতাকে আল্লাহর সংবাদের কারন সাব্যস্ত করা হবে। অর্থাৎ তাদের দূর অবস্থার উপর ভিত্তি করে আল্লার এ সংবাদ দিয়েছেন যা সঠিক হয়েছে।আল্লাহ দোষী নয় বরং বান্দার অপকর্মই দায়ী।

নাস্তিকরা এই সহজ উদাহরণ বুঝতে না পেরে বলে এখানে নাকি আল্লাহর সাথে ডাক্তারকে তুলনা করা হয়েছে কিন্তু এই মূর্খদেরকে কে বুঝাবে যে আল্লাহর সাথে ডাক্তারকে তুলনা করা হয়নি। বলা হয়নি যে আল্লাহ আর ডাক্তার সমান। শুধু উপমা দিয়ে বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। অন্যদিকে আরেকটি প্রশ্ন আসে যে তারা যদি ইমান নাই আনে তাহলে তাদেরকে ভীতি প্রদর্শন করা বা না করাও উভয় সমান তাহলে ভীতি প্রদর্শন কেন করা হল? উত্তর হল এসকল কাফেররা যেন কিয়ামতের দিন কোনো অজুহাত পেশ করতে না পারে  এই কারণে।

তাফসীরে জালালাইন ১ খণ্ড, ৯২ পৃষ্ঠায় বলা হয়েছেঃ 

যেহেতু কুফর ও নাফরমানিতে সদা-সর্বদা লিপ্ত থাকার কারনে কাফেরদের অন্তর সমূহে হক তথা সত্য গ্রহনের যোগ্যতাশুন্য হয়ে পড়েছিল।অর্থাৎ এর জন্য তারা নিজেদের দোষেই এই রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়েছিল।

মূলত এটি হল আল্লাহর দেয়া মানুষের উপর একটি সিস্টেম। এখন কেউ যদি এই সিস্টেম ফলো না করে তাহলে সেটি তার দোষ আল্লাহর নয়,মানে কোনো কাফের যদি তার অপকর্ম,গোমরাহী,অহংকার, প্রবৃত্তিপুজা,মিথ্যাচার,ইত্যাদি যত খারাপ কাজ আছে এবং সে যদি মৃত্যুর আগ পর্যন্ত সেগুলা থেকে তওবা না করে তার অপরাধের দিকেই অটল থাকে তাহলে সে আল্লাহর সিস্টেমে দেয়া মোহরের মধ্যে পড়ে যাবে। অন্যদিকে কেউ যদি আল্লাহকে স্বীকার করে এবং নেক কাজ করে নবীজির দেখানো পথে চলে তাহলে সে এই সিস্টেমের মধ্যে অর্থাৎ মোহরের মধ্যে পড়বে না। আপনি বিষ খেলে মৃত্যুর বিপদ আসবে আর যদি আপনি শারীরিক ব্যায়াম করেন তাহলে আপনার শারীরিক বিপদের ঝুঁকি কম। 

পাপ কাজ করতে করতে উগ্র কাফেরদের মাঝে এমন একটি অবস্থার সৃষ্টি হয় যে ভাল কাজ তাদের কাছে আর ভাল লাগে না এদের উদাহরণ নোংরায় বসবাসকারী পোকার মতো যেই পোকার কাছে আতরের  সহ্য হয় না অনেক সময়ে মারাও যায় সেই আতরের গন্ধে কিন্তু নোংরার বাজে গন্ধ তার কাছেই কিছুই মনে হয় না-স্বাভাবিক লাগে। ঠিক একইভাবে ইসলাম বিদ্বেষীতা করতে করতে,কুরআন হাদিস দিয়ে ইচ্ছা করেই জালিয়াতি মিথ্যাচার করতে করতে , রাসুলকে নিয়ে গালাগালি দিতে দিতে কাফেরের অন্তরে এমন একটি অবস্থার তৈরি হয় যে শেষ পর্যন্ত তার কাছে ইসলাম আর ভাল লাগে না ফলে সে এর উপরেই অটল থাকে। যেহেতু সে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত এমনই থাকবে আর আল্লাহ জানেন এই ভবিষ্যতের খবর তাই আল্লাহ সেটা আগেই কুরআনে বুঝিয়ে দিয়েছেন মোহর মারা দিয়ে অর্থাৎ এটাই ফাইনাল যে সেই মিথ্যুকবাজ শয়তানরা আর ইসলামে ফিরেই আসবে না।

জামে আত তিরমিজি, হাদিসঃ ৩৩৩৪,হাসান হাদিসঃ 

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ বান্দা যখন একটি গুনাহ করে তখন তার অন্তরের মধ্যে একটি কালো চিহ্ন পড়ে। অতঃপর যখন সে গুনাহর কাজ পরিহার করে, ক্ষমা প্রার্থনা করে এবং তাওবা করে তার অন্তর তখন পরিষ্কার ও দাগমুক্ত হয়ে যায়। সে আবার পাপ করলে তার অন্তরে দাগ বৃদ্ধি পেতে থাকে এবং তার পুরো অন্তর এভাবে কালো দাগে ঢেকে যায়। এটাই সেই মরিচা আল্লাহ তা’আলা যার বর্ণনা করেছেনঃ “কখনো নয়, বরং তাদের কৃতকর্মই তাদের মনে জং (মরিচা) ধরিয়েছে” – (সূরা মুত্বাফফিফীন ১৪)।-ihadis.com

এই হাদিস থেকে আমরা জানতে পারলাম, গুনাহ করলে অন্তরে দাগ লাগে। তওবা করলে মুছে যায়,তওবা না করলে মুছে না। তওবা না করলে সেটি বৃদ্ধিই পেতে থাকে। ফলে তার অন্তরের রোগ আরও ভয়ংকর আকার ধারণ করে। মুমিন যেহেতু ইসলাম বিদ্বেষীতা করে না আবার অন্যায়য়ের উপর অটল থাকে না তাই তার তওবার সুযোগ থাকে কিন্তু উগ্র কাফের যে ইসলাম বিদ্বেষীতা করবেই বলে স্থির করে ফেলেছে সে তো আর তওবার সুযোগ পাবে না অর্থাৎ তওবাই করবে না। এখানেই পার্থক্যটা।

আসুন আরও কিছু উদাহরণের মাধ্যমে বুঝে নেই। ধরুন,আমি বললাম,- 'যারা খাবে না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েই ফেলেছে, আপনি তাদের খেতে বলুন আর না বলুন, তারা কোনোভাবেই খাবে না।আল্লাহ তাদের দেহ শুকিয়ে দেন।তাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দেন।তাদের জন্য রয়েছে কঠিন অসুখ।

খেয়াল করুন,এখানে তারা অসুস্থ হচ্ছে, তাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাচ্ছে, তারা কঠিন অসুখে পরতে যাচ্ছে- কেন এসব হচ্ছে? আল্লাহ কি ইচ্ছা করেই তাদের সাথে এগুলো করছে? নাহ। এগুলো তাদের কর্মফল।তাদের যতোই জোর করা হোক, তারা যখন কোনভাবেই খাবেনা বলে সিদ্ধান্ত নিয়েই ফেলেছে তখন সিষ্টেমেটিক্যালি না খাওয়ার ফলে তাদের শরীর শুকিয়ে যাবে, শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাবে।তারা কঠিন রোগে পতিত হবে। এসবকিছুর জন্য তারাই দায়ী। এখানে আল্লাহর ইচ্ছে বা অনিচ্ছে কিছুই নেই। কিন্তু, সিষ্টেমটা আল্লাহই চালাচ্ছেন। আল্লাহ একটি সিষ্টেম রেডি করে দিয়েছেন। আপনি না খেলে আপনার শরীর আল্লাহ শুকিয়ে দেবেন।আপনার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দেবেন। দিনশেষে, আপনার একটি কঠিন রোগ হবে। এটা একটা সিষ্টেম। এই সিষ্টেমে আপনি তখনই পড়বেন- যখন আপনি নিজ থেকে খাবেন না বলে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলবেন।

ঠিক সেভাবেই যারা সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে যে, তাদের সামনে যতো প্রমাণ, যতো দলিলই আসুক, তারা সত্যকে মেনে নিবে না, অস্বীকার করবেই করবে, তাদের অন্তরে আর কানে সিষ্টেমেটিক্যালি একটি সিল পরে যাচ্ছে। না খাওয়ার ফলে আপনি যেভাবে শুকিয়ে যান, আপনার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়, আপনার কঠিন অসুখ হয়, ঠিক সেভাবে, সত্যটা স্বীকার করবেন না বলে সিদ্ধান্ত যখন নিয়েই ফেলেছেন তখন আপনার অন্তরে,কানে সিল পরে যাচ্ছে, আর দিনশেষে, আপনার জন্য অপেক্ষা করছে কঠিন অসুখ, আই মিন আজাব। এরজন্য আল্লাহকে ব্লেইম করা হবে কেনো?

আল্লাহ মোহর মেরেছেন এটা বলবে কিন্তু কেন মেরেছেন এই বিষয়ে কুরআনের আয়াত নাস্তিকরা আপনাকে কখনোই দেখাবে না কারণ দেখালে তো তারা সরলমনা মানুষকে ধোঁকা দিতে পারবে না। কুরআনের অন্যান্য আয়াত গুলো পড়লে আরও স্পষ্ট হয়ে জানা যায়। আসুন পড়ি কুরআনের আয়াত গুলো।

আল কুরআন, সুরা মুতাফফিফীন ৮৩:১৪ আয়াতে বলা হয়েছে, 

কাফেরদের কথা সত্য নয় বরং তাদের কৃতকর্মের জন্য তাদের অন্তরে মরিচা ধরিয়ে দিয়েছে

আল কুরআন, সুরা নিসা ৪:১৪৭,১৪৮ আয়াতে বলা হয়েছে, 

যদি তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করো এবং ইমান আনো তাহলে তোমাদেরকে আযাব দিয়ে আল্লাহ্‌কি করবেন? আল্লাহ্‌পুরস্কার দানকারী,সর্বজ্ঞ।মন্দ কথার প্রচার আল্লাহ্‌পছন্দ করেন না,তবে কারো উপর যুলুম করা হলে ভিন্ন কথা।

আল কুরআন, সুরা বাকারা ২:২৮৬ আয়াতে বলা হয়েছে, 

আল্লাহ্‌ কাউকে তার সাধ্যের বাইরে কাজ চাপিয়ে দেন না

আল কুরআন, সুরা জাসিয়া ৪৫:৭ আয়াতে বলা হয়েছে, 

দুর্ভোগ প্রত্যেক চরম মিথ্যুক পাপাচারীর জন্য

আল কুরআন, সুরা জাসিয়া ৪৫:৯ আয়াতে বলা হয়েছে, 

যখন সে আমার আয়াত সমূহের কিছু জানতে পারে তখন সে এটাকে নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রূপ করে। এদের জন্য রয়েছে অপমানকর শাস্তি।

আল কুরআন, সুরা ইউনুস ১০:১০৮ আয়াতে বলা হয়েছে, 

হে মানুষ তোমাদের রবের পক্ষ থেকে তোমাদের নিকট সত্য এসেছে । সুতরাং যে হিদায়েত গ্রহণ করবে সে নিজের জন্যই হিদায়েত গ্রহন করবে আর যে পথভ্রষ্ট হবে সে নিজের ক্ষতির জন্য পথভ্রষ্ট হবে।

আল কুরআন, সুরা বাকারা ২:৮৮ আয়াতে বলা হয়েছে, 

তারা বলল আমাদের অন্তর সমূহ আচ্ছাদিত বরং তাদের কুফুরির কারনে আল্লাহ্‌ তাদেরকে লানত করেছেন অতপর তারা খুব কমই ইমান আনে

আল কুরআন, সুরা তওবা ৯:৭০ আয়াতে বলা হয়েছে, 

তাদের কাছে তাদের রাসুলগন প্রমান সমূহ নিয়ে উপস্থিত হয়েছে, অতএব আল্লাহ্‌তাদের উপর জুলুম করার নন বরং তারাই তাদের নিজেদের উপর জুলুম করছিল

আল কুরআন, সুরা জাসিয়া ৪৫:৮ আয়াতে বলা হয়েছে, 

সে শোনে আল্লাহ্‌র আয়াত সমূহ যা তার সামনে তিলওয়াত করা হচ্ছে,অতপর সে অহংকারবশত সে এমনভাবে হঠকারিতা করে যেন সে তা শুনেইনি। অতএব তুমি তাকে যন্ত্রণাদায়ক আযাবের সুসংবাদ দেও

আল কুরআন, সুরা ইবরাহীম ১৪:২৮ আয়াতে বলা হয়েছে, 

তুমি কি তাদের কে দেখনি, যারা আল্লাহর নেয়ামতকে কুফরে পরিণত করেছে এবং স্ব-জাতিকে সম্মুখীন করেছে ধ্বংসের আলয়ে

আল কুরআন, সুরা হুমাযা ১০৪:১ আয়াতে বলা হয়েছে, 

দুর্ভোগ প্রত্যেকের যে সামনে নিন্দাকারী ও পিছনে গীবতকারী

আল কুরআন, সুরা তওবা ৯:৮০ আয়াতে বলা হয়েছে, 

আল্লাহ্‌ ফাসেক মানুষদের হেদায়েত দেন না।

আল কুরআন,সুরা কাহফ ১৮: ২৯ আয়াতে বলা হয়েছে, 

সত্য হল আল্লাহ্‌র পক্ষ থেকে। সুতরাং যে ইচ্ছা করে সে যেন ইমান আসে এবং যে ইচ্ছা করে সে যেন কুফুরি করে।

আল কুরআন, সুরা কাসাস ২৮:৫০ আয়াতে বলা হয়েছে, 

তারা যদি তোমার আহ্বানে সাড়া না দেয়, তাহলে জেনে রাখো তারা তো নিজেদের খেয়াল খুশির অনুসরন করে, আর আল্লাহ্‌র দিক নির্দেশনা ছাড়া যে নিজের খেয়াল খুশির অনুসরন করে তার চেয়ে অধিক পথভ্রষ্ট আর কে? নিশ্চয় আল্লাহ্‌ জালিম কওমকে হিদায়েত করেন না।

আল কুরআন, সুরা ইনসান ৭৬:৩ আয়াতে বলা হয়েছে, 

অবশ্যই আমি তাকে পথ দেখিয়েছি এখন হয় সে কৃতজ্ঞ অথবা অকৃতজ্ঞ

আল কুরআন, সুরা শামস ৯১:৯,১০ আয়াতে বলা হয়েছে, 

নিঃসন্দেহে সে সফলকাম হয়েছে, যে লোক তাকে পরিশুদ্ধ করেছে এবং সে ব্যর্থ্য হয়েছে যে তার নফসকে পাপে নষ্ট করেছে

আল কুরআন, সুরা মুযযাম্মিল ৭৩:১৯ আয়াতে বলা হয়েছে, 

যার ইচ্ছা, সে তার পালনকর্তার দিকে পথ অবলম্বন করুক।

এছাড়াও মিথ্যা যে ধ্বংস নিয়ে আসে এবং মিথ্যা যে ক্ষতিকর এমনকি মিথ্যা আরোপকারীদের জন্য যে ধ্বংস এই কথা কুরআনের সুরা মুরসালাত ৭৭: ১৫,১৯,২৪,২৮,৩৪,৩৭,৪০,৪৫,৪৭,৪৯ আয়াতেও বলা হয়েছে। তাহলে কুরআনের আয়াত গুলো জেনে এটা বুঝা যায় কেউ যদি ইসলামবিরোধী বিশ্বাস লালন করতে থাকে তাহলে সে ইসলাম থেকে অটোম্যাটিক দূরে সরে যেতে থাকবে। নাস্তিকদের প্রিয় কাফের আবু জাহেল,আবু লাহাব,কাব বিন আশরাফ এই জাতের ইত্যাদি হাইব্রিড ইসলাম বিদ্বেষী বাদে যাদের কথা কুরআনে স্পষ্ট করে বলা হয়নি অথবা কাকে মোহর মারা হয়েছে অথবা কাকে মোহর দেয়া হয়নি সেই বিষয়ে আমরা বর্তমানে জানি না তাই আমাদের উচিৎ হবে সকল অমুসলিমদেরকে ইসলামের সত্যতা জানিয়ে দেয়া অর্থাৎ তাদেরকে দাওয়াত দেয়া বা দিতে থাকা। কারণ আল্লাহ নিজেই বলেছেন ইসলামের কথা প্রচার করতে।

আল কুরআন, সুরা নাহল ১৬:১২৫ আয়াতে বলা হয়েছে, 

তুমি তোমার রবের পথে হিকমাহ ও সুন্দর উপদেশের মাধ্যমে দাওয়াত দেও এবং সুন্দরতম পন্থায় তাদের সাথে বিতর্ক করো

আল কুরআন, সুরা আল ইমরান ৩:২০ আয়াতে বলা হয়েছে,  

যদি তারা সত্য থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়,তবে তোমার দায়িত্ব তো শুধু সত্য পৌঁছে দেয়া

আল কুরআন, সুরা গাশিয়া ৮৮:২১,২২ আয়াতে বলা হয়েছে,  

আপনি উপদেশ দিতে থাকুন,আপনি তো একজন উপদেশদাতা মাত্র । আপনি তাদের দায়গ্রস্ত কর্ম নিয়ন্ত্রক নন

আল কুরআন, সুরা নাজম ৫৩:৩৯,৪০ আয়াতে বলা হয়েছে, 

মানুষ শুধু তাই পায় যা সে অর্জন করে এবং তার কর্ম শীঘ্রই তাকে দেখানো হবে

"আল্লাহ ইচ্ছা করেই বিনা কারণে অন্যায়ভাবে কাফেরদের মোহর মেরে দিয়েছেন তাই তারা হেদায়েত পাচ্ছে না" এই কথাটি ডাহামিথ্যা। ইসলাম নিয়ে নাস্তিকদের এমন বিশ্বাস সম্পূর্ণ অন্ধবিশ্বাস। নাস্তিকদের ইসলাম নিয়ে অন্ধবিশ্বাস ত্যাগ করতে হবে। ইসলামকে সঠিকভাবে বুঝতে হবে, জানতে হবে। নাস্তিকদের মতো মিথ্যা বিশ্বাস করে বসে থাকলে চলবে না।

আরও বিস্তারিত জানতে পড়ুনঃ

তাফসীরে জালালাইন ১ খণ্ড, ৯১ থেকে ৯৫ পৃষ্ঠা।

তাফসীরে আনওয়ারুল কুরআন ১ খণ্ড , ৪৮ ও ৪৯ পৃষ্ঠা।

তাফসীরে তাওযীহুল কুরআন ১ খণ্ড, ৪১ ও ৪২ পৃষ্ঠা।

তাফসীরে ফী যিলাযিল কুরআন ১ খণ্ড , ৫৬ পৃষ্ঠা।

তাফসীরে ওসমানী ১ খণ্ড , ১৫ পৃষ্ঠা।

তাফসীরে মাযহারী ১ খণ্ড, ৪৮ ও ৪৯ পৃষ্ঠা।

তাফসীরে আহসানুল বয়ান , ৬ ও ৭ পৃষ্ঠা।

তাফসীরে ইবনে কাসীর ১ খণ্ড, ১৫৬ থেকে ১৬১ পৃষ্ঠা।

তাফহীমূল কুরআন । সূরা বাকারা ২: ৬ থেকে ৭ আয়াতের ব্যাখ্যা।

তাফসীরে তাবারী শরীফ ১ খণ্ড , সূরা বাকারার ৬ ও ৭ আয়াতের ব্যাখ্যা।

“আল্লাহ অন্যায়ভাবে বান্দাকে মোহর লাগিয়ে দেন” মর্মে কুরআনে কোন কোন আয়াত আছে? ইসলামের দৃষ্টিতে আল্লাহ অন্যায়ভাবে মোহর লাগিয়ে দেন না তাহলে নাস্তিকদের ইসলামবিরোধী বিশ্বাসের প্রমাণ কি? নাস্তিক হয়ে কিভাবে বিশ্বাস করা যায় আল্লাহ অন্যায় কাজ করেন? কাফেররা কি অন্যায় করেছি? নাস্তিকরা কি ইসলাম নিয়ে মিথ্যাচারে অটল থাকছে না? তাহলে? আর আল্লাহ যদি অন্যায়ভাবে মোহর মেরে দিতে চান তাহলে নবী রসুল কেন পাঠাবেন? কুরআন কেন পাঠালেন? নাস্তিকরা যেভাবে বুঝিয়েছে সেভাবে কি নবীজি (সা)এর কোনো হাদিস আছে? কোন হাদিসে বলা আছে যে আল্লাহ অন্যায় কাজ করেন? কোনো সাহাবী কি এই ধরণের কথা বলেছেন? সাহাবীদের ছাত্ররা কি বলেছেন? উনাদের ছাত্ররা কি বলেছেন?

প্রশ্ন উত্তর পর্বঃ

প্রশ্ন ১ = 

জুম্মার নামাজ অবহেলা করে বাদ দিলে মোহর লেগে যায় আর মোহর পড়লে তো নেক কাজ করা যাবে না তাহলে কোনো মুসলিম যদি জুম্মার নামাজ অবহেলা করে তিন জুম্মাহ মিস করে তাহলে হাদিস অনুযায়ী মোহর পড়লে এটি কি অন্যায় নয়?

সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিসঃ ১১২৫ , হাসান সহিহঃ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, যে ব্যক্তি অবহেলা করে একাধারে তিন জুমুআহ্ ত্যাগ করলো, তার অন্তরে মোহর মেরে দেয়া হয়।-ihadis.com

সুনানে ইবনে মাজাহ , হাদিসঃ ১১২৭ , হাসান সহিহঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, শোন! তোমাদের কেউ বকরী চরাবার জন্য এক বা দু’ মাইল দূরে চলে গেল, অতঃপর সেখানে ঘাস না পেয়ে আরও দূরে চলে গেল, তারপর জুমুআর দিন এলো, কিন্তু সে এসে জুমুআর সলাতে উপস্থিত হলো না। তারপর আরেক জুমুআহ এলো এবং সে তাতেও হাযির হলো না, তারপর আরেক জুমুআহ এলো এবং সে তাতেও হাযির হলো না, শেষে তার অন্তরে মোহর মেরে দেয়া হয়।-ihadis.com

উত্তরঃ 

প্রথম কথা হচ্ছে আপনি কেন ইচ্ছা করে প্রয়োজন ছাড়া তিনবারের জুম্মাহ ছেড়ে দিবেন? এটা তো অবশ্যই ইসলামের দৃষ্টিতে চরম অপরাধ। কাফেরদের মতো মোহর লাগিয়ে দেয়া হবে এমন কিছু উক্ত হাদিসে বলে হচ্ছে না। আসুন জেনে নেই হাদিসের ব্যাখ্যা গ্রন্থে এই হাদিস বিষয় কি বলা হয়েছে।

সহিহ মুসলীম শরীফ, সহজ ও বিস্তারিত ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ , সম্পাদনা হাফেয মাওলানা মুহাম্মদ হাবীবুর রহমান , ২ খণ্ড , ৭৫৯ পৃষ্ঠায় "জুমুআ ত্যাগ সম্পর্কে কঠোর সতর্কবানী" শিরোনামে ঐ হাদিসের স্পষ্ট ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে যে,

অন্তরে মোহর অংকনের মর্ম বলতে কোন কোন গবেষক আল্লাহর রহমত উদ্দেশ্য অর্থাৎ যে ব্যাক্তি জুমা পরিত্যাগ করবে সে আল্লাহর অনুকম্পা হতে দূরে সরে যাবে। আবার কোন কোন গবেষকের মতে আল্লাহ তাদের অন্তরে কুফুরী সৃষ্টি করে দিবে। জুমার নামার অনাদায়ী ব্যাক্তির অন্তরে এমন একটি আবরণ আচ্ছাদিত করা, যার ফলে সে সত্য উপলব্ধি করতে সক্ষম হবে না।অপবিত্র অর্থাৎ জুমার নামাজ পরিত্যাগকারীর অন্তর অপবিত্র করে দেয়া হয়।

আরও কিছু হাদিস জেনে নেই এই বিষয়,

হাদিস সম্ভার , হাদিস ৭৫০ , সহিহ হাদিসঃ 

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, “যে ব্যক্তি বিনা ওজরে তিনটি জুমআহ ত্যাগ করবে, সে ব্যক্তি মুনাফিক।-ihadis.com

হাদিস সম্ভার , হাদিস ৭৫৩ , সহিহ হাদিসঃ ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ “যে ব্যক্তি পরপর ৩টি জুমআহ ত্যাগ করল, সে অবশ্যই ইসলামকে নিজের পিছনে ফেলে দিল।”-ihadis.com

সুতরাং কোনো মুসলিম যদি ইচ্ছা করে বিনা কারণেই পরপর তিন জুমা ত্যাগ করে তাহলে এটি খুবই অন্যায় ,খুবই। এবং সে যদি তওবা না করে তাহলে তার অন্তর আল্লাহর রহমত থেকে দূরে সরে যাবে,সে মুনাফিক হয়ে এবং সে যেন ইসলামকে পিছনে ফেলে দিল তাই কোনো মুসলিমের উচিৎ নয় যে সে ইচ্ছা করে বিনা কারণে তিন জুমা ত্যাগ করবে। তওবা করে নিজেকে সংশোধন করে নেয়া দরকার। অন্যদিকে তিন শ্রেণীর মানুষের জন্য জুমার নামাজ ফরজ নয়।

হাদিস সম্ভার , হাদিস ৭৫২ ,সহিহ হাদিসঃ 

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, “প্রত্যেক মুসলিমের জন্য জামাআত সহকারে জুমআহ ফরযঅবশ্য ৪ ব্যক্তির জন্য ফরয নয়; ক্রীতদাস, মহিলা, শিশু ও অসুস্থ।-ihadis.com

প্রশ্ন ২ = 

কুরআনে এক আয়াতে আছে আল্লাহ ইচ্ছা করেই মোহর মারেন যেমন সুরা জাসিয়া ৪৫:২৩ আয়াতে বলা হয়েছে,আপনি কি তার প্রতি লক্ষ্য করেছেন, যে তার খেয়াল-খুশী কে স্বীয় উপাস্য স্থির করেছে? আল্লাহ জেনে শুনে তাকে পথভ্রষ্ট করেছেন, তার কান ও অন্তরে মহর এঁটে দিয়েছেন এবং তার চোখের উপর রেখেছেন পর্দা। অতএব, আল্লাহর পর কে তাকে পথ প্রদর্শন করবে? তোমরা কি চিন্তাভাবনা কর না? আপনি যে বললেন, আল্লাহ অন্যায় করে মোহর মারেন না তাহলে কি আপনার কথার সাথে এটি সংঘাত হল না?

উত্তরঃ 

প্রথমত আমি নিজে বানিয়ে বানিয়ে একটা কথাও বলিনি। কুরআন ও সহিহ হাদিস অর্থাৎ ইসলামের দৃষ্টিতে যা বলা হয়েছে আমি সেটাই তুলে ধরেছি মাত্র। তাছাড়া আপনি যে এই আয়াত পড়েছেন মনোযোগ দিয়ে বুঝে পড়েছেন তো? এই আয়াতেই তো বলা হয়েছে যে "আপনি কি তার প্রতি লক্ষ্য করেছেন, যে তার খেয়াল-খুশী কে স্বীয় উপাস্য স্থির করেছে?" আল্লাহর এই কথা থেকেই স্পষ্ট বুঝা যাচ্ছে যে কাফেররা ইসলাম গ্রহণ করবেই না এবং তারা নিজেদের প্রবৃত্তিকে উপাস্য বানিয়ে স্থির রেখেছে , যেহেতু তারা এই অন্যায় কাজে স্থির থাকবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েই রেখেছে তাই আল্লাহও জেনে শুনেই মোহর মেরে দিয়েছেন। এই আয়াতে আরও স্পষ্ট হয়েছে আল্লাহ বান্দাকে কেন মোহর মেরে দেন। আপনি ঐ আয়াতের আগের আয়াত পড়ুন তাহলে আরও স্পষ্ট হতে পারবেন।

আল কুরআন,সুরা জাসিয়া ৪৫:২২ আয়াতে বলা হয়েছে, 

আল্লাহ নভোমন্ডল ও ভূ-মন্ডল যথাযথভাবে সৃষ্টি করেছেন, যাতে প্রত্যেক ব্যক্তি তার উপার্জনের ফল পায়তাদের প্রতি যুলুম করা হবে না

এরপরে আল্লাহ সামেনের আয়াতেও পরিস্কার করে বলেছেন যে,

আল কুরআন,সুরা জাসিয়া ৪৫:২৭ আয়াতে বর্ণিত হয়েছে,

নভোমন্ডল ও ভূ-মন্ডলের রাজত্ব আল্লাহরই। যেদিন কেয়ামত সংঘটিত হবে, সেদিন মিথ্যাপন্থীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে

প্রশ্ন ৩ = 

সুরা আন’য়াম ৬:১১০ = আমি ঘুরিয়ে দিব তাদের অন্তর ও দৃষ্টিকে, যেমন-তারা এর প্রতি প্রথমবার বিশ্বাস স্থাপন করেনি এবং আমি তাদেরকে তাদের অবাধ্যতায় উদভ্রান্ত ছেড়ে দিব। - এখানে আল্লাহ প্রথমবার কাফেরদের ইমান না আনার জন্য কাফেরদের অন্তর ঘুরিয়ে দিচ্ছে দ্বিতীয় হেদায়েতের সুযোগ না দিয়ে এখানে কি তাহলে আল্লাহর দোষ হচ্ছে না? (নাউজুবিল্লাহ)

উত্তরঃ 

উপরের আয়াতে বলাই হয়নি যে কাফেররা হেদায়েত আনতে চেয়েছিল কিন্তু এরপরেও আল্লাহ তাদের অন্তর ঘুরিয়ে দিয়েছেন। আসলে কাফেররা প্রথমবার ইমান আনে নি এবং এর উপরেই অটল থাকবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাই আল্লাহ তাদের অন্তর অবাধ্যতায় ঘুরিয়ে দিয়েছেন। কাফেররা দ্বিতীয় সুযোগ নিবেই না যখন,তখন আল্লাহ কেন তাদের হেদায়েত দিবেন? আপনি আল্লাহকে মানবেন না এবং মৃত্যুর আগ পর্যন্ত এর উপর অটল থাকবেন বলে শপথ করছেন আবার আল্লাহকে দোষ দিয়ে বলছেন আল্লাহ কেন আপনাকে হেদায়েত দিচ্ছে না এটা তো হাস্যকর কথা। অনেকটা এরকম যে কোনো কোনো এক বিড়িখোর বিড়ি ছাড়বে না বলে প্রথম থেকেই সিদ্ধান্ত নিয়ে রেখেছে আবার যখন হার্টে সমস্যা দেখা দিয়েছে তখন স্বার্থপরের মতো ডাক্তারকে দোষ দিচ্ছে যে ডাক্তারের ঔষধ কাজ করছে না কেন? সুতরাং ডাক্তারের দোষ। আবার কোন এক ছাত্র পরিক্ষায় ফেইল করে বসে আছে আর শিক্ষককে বলছে কেন সে আমাকে পাশ করায়নি? সুতরাং আমার ফেইলের জন্য শিক্ষক দায়ী।

কেউ যদি ইমান না আনে এবং এর উপরেই অটল থাকতে চায় তাহলে তার অন্তর সেই দিকেই ঘুরে যাবে এটাই আল্লাহর সিস্টেম। কিন্তু কেউ যদি আল্লাহর কাছে সাহায্য চায় এবং তওবা করতে পারে আল্লাহ ক্ষমা করে দিবেন। নিশ্চিত থাকুন। নিচের আয়াত থেকেই স্পষ্ট যে আল্লাহ বিনা কারণে কারো অন্তর ঘুরান না অর্থাৎ কেউ যদি কুফরের উপর অটল না থাকে তাহলে তার অন্তর সেই দিকে ঘুরবে না। এখন আপনি কোন দিকে ঘুরতে চাচ্ছেন সেটা আপনার ব্যাপার।

আল কুরআন, সুরা আরাফ ৭:১৭৭ আয়াতে বলা আছে, 

কত খারাপ সে মানুষদের অবস্থা যারা আয়াত সমুহকে মিথ্যা সাব্যস্ত করে এবং নিজেদের উপর জুলুম করে।

আল কুরআন,সুরা রাদ ১৩:১১ আয়াতে বলা আছে, 

নিশ্চয় আল্লাহ্‌ কোনো জাতির অবস্থার পরিবর্তন করেন না, যে পর্যন্ত তারা নিজেরা নিজেদের অবস্থার পরিবর্তন না করে।

আল কুরআন,সুরা নাজম ৫৩:৩৯,৪০ আয়াতে বলা আছে, 

মানুষ শুধু তাই পায় যা সে অর্জন করে এবং তার কর্ম শীঘ্রই তাকে দেখানো হবে

আল কুরআন,সুরা ইউনুস ১০:১০৮ আয়াতে বলা আছে, 

হে মানুষ তোমাদের রবের পক্ষ থেকে তোমাদের নিকট সত্য এসেছে । সুতরাং যে হিদায়েত গ্রহণ করবে সে নিজের জন্যই হিদায়েত গ্রহন করবে আর যে পথভ্রষ্ট হবে সে নিজের ক্ষতির জন্য পথভ্রষ্ট হবে।

আল কুরআন,সুরা কাহফ ১৮: ২৯ আয়াতে বলা আছে, 

সত্য হল আল্লাহ্‌র পক্ষ থেকে।সুতরাং যে ইচ্ছা করে সে যেন ইমান আসে এবং যে ইচ্ছা করে সে যেন কুফুরি করে।

আল কুরআন,সূরা মুতাফফিফীন ৮৩:১৪ আয়াতে বলা আছে,

কাফেরদের কথা সত্য নয় বরং তাদের কৃতকর্মের জন্য তাদের অন্তরে মরিচা ধরিয়ে দিয়েছে

প্রশ্ন ৪ = 

সুরা আন’য়াম ৬:১০৭ আয়াতে বলা হয়েছে,যদি আল্লাহ চাইতেন তবে তারা শিরিক করতো না। আমি আপনাকে তাদের সংরক্ষক করিনি এবং আপনি তাদের কার্যনির্বাহী নন।-এখানে তো বলা হচ্ছে আল্লাহ চান না যে কাফেররা হেদায়েত পাক তাই আল্লাহ বিনা কারণে তাদেরকে শিরিক করাচ্ছেন?

উত্তরঃ 

"যদি আল্লাহ চাইতেন তাহলে শিরিক করতো না" এখানে আল্লাহর ক্ষমতা প্রকাশ পেয়েছে। এরমানে এই না যে আল্লাহ চান না তারা হেদায়েত হক। যেহেতু দুনিয়াটা পরীক্ষা হল তাই আল্লাহ কাউকে হুট করেই হেদায়েত দিবেন সেটা কিভাবে হয় যদি না সেই ব্যাক্তি নিজে কোনো চেষ্টা না করে। সহজ উদাহরণ দিয়ে বুঝিয়ে দিচ্ছি।ধরুন বিল গেটস একদিন বলল আমি ইচ্ছা করলে বাংলাদেশের সকল যুবকে ধনী করে দিতে পারি কিন্তু করব না আমি চাই তারা চেষ্টা করুক। আচ্ছা এখানে কি কেউ বলবে যে বিল গেটস চায় যে বাংলাদেশ গরীব থাকুক? উত্তর হচ্ছে না। উদাহরণ বুঝতে পারলে এটা বুঝতে সহজ হবে যে,আল্লাহ যদি চান তাহলে দুনিয়ার সবাইকেই হেদায়েত দিতে পারে কিন্তু দিবেন না কারণ আল্লাহ চান মানুষ হেদায়েত পাওয়ার জন্য চেষ্টা করুক। যেমনঃ সুরা ইউনুস ১০:১০৮ আয়াতে বলা হয়েছে, হে মানুষ তোমাদের রবের পক্ষ থেকে তোমাদের নিকট সত্য এসেছে। সুতরাং যে হিদায়েত গ্রহণ করবে সে নিজের জন্যই হিদায়েত গ্রহন করবে আর যে পথভ্রষ্ট হবে সে নিজের ক্ষতির জন্য পথভ্রষ্ট হবে।

আল্লাহ যাকে ইচ্ছা তাকে হেদায়েত দিলে নাস্তিকদের দোষ কি?


প্রথমে আয়াতটি পড়ে নেই আসুন।


আল কুরআন, ৭ নং সুরা আরাফের ১৭৮ আয়াতে বলা হয়েছে,

যাকে আল্লাহ পথ দেখাবেন, সেই পথপ্রাপ্ত হবে। আর যাকে তিনি পথ ভ্রষ্ট করবেন, সে হবে ক্ষতিগ্রস্ত


আল্লাহ যাকে ইচ্ছা হেদায়েত দিন, যাকে ইচ্ছা পথভ্রষ্ট করেন বা হেদায়েত দেন না এরকম অনেক আয়াত দেখিয়ে নাস্তিকরা বোঝাতে যায় যেহেতু আমরা নাস্তিক হয়েছি সেহেতু ইসলামের দৃষ্টিতে আল্লাহ আমাদেরকে পথভ্রষ্ট করে দিয়েছেন এই কারণে আমাদের দোষ কেন হবে? আমাদের তো কোনো দোষ নেই। কিন্তু নাস্তিকদের এই নিজস্ব বানানো বুঝ কি আসলেই ইসলামের দৃষ্টিতে সঠিক? উত্তর হচ্ছে না। কারণ হেদায়েতের মালিক একমাত্র আল্লাহই এটা নিশ্চিত এবং এটাও সত্য আল্লাহ যাকে ইচ্ছা হেদায়েত দিবেন এবং যাকে ইচ্ছা দিবেন না কিন্তু তারমানে কি এই যে মানুষ হেদায়েত পাবার জন্য চেষ্টা করবেন না? চেষ্টা ছাড়াই শুধু আল্লাহর উপর আশা রেখে বসে থাকবে? ব্যাপারটা তা নয়। কারণ আল্লাহ আমাদেরকে কুরআনে অন্য আয়াতে একইসাথে এটাও বলে দিয়েছেন উনি কাকে হেদায়েত দিবেন আর কাকে দিবেন না। আসুন আগে আয়াত গুলো পড়ে নেই।


আল কুরআন, সুরা সফ ৬১ঃ৫ আয়াতে বর্ণিত হয়েছে,


অতঃপর তারা যখন বক্রতা অবলম্বন করল, তখন আল্লাহ তাদের অন্তরকে বক্র করে দিলেন। আল্লাহ পাপাচারী সম্প্রদায়কে পথপ্রদর্শন করেন না


আল কুরআন, সুরা নিসা ৪ঃ১৬৭ ও ১৬৮ আয়াতে বর্ণিত হয়েছে,


যারা কুফরী অবলম্বন করেছে, এবং আল্লাহর পথে বাধার সৃষ্টি করেছে, তারা বিভ্রান্তিতে সুদূরে পতিত হয়েছেযারা কুফরী অবলম্বন করেছে এবং সত্য চাপা দিয়ে রেখেছে, আল্লাহ কখনও তাদের ক্ষমা করবেন না এবং সরল পথ দেখাবেন না


আল কুরআন, সুরা রাদ ১৩ঃ১১ আয়াতে বর্ণিত হয়েছে,


আল্লাহ কোন জাতির অবস্থা পরিবর্তন করেন না, যে পর্যন্ত না তারা তাদের নিজেদের অবস্থা পরিবর্তন করে।


আল কুরআন, সুরা আনকাবুত ২৯ঃ৬৯ আয়াতে বর্ণিত হয়েছে,


আর যারা আমার পথে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালায়, তাদেরকে আমি অবশ্যই আমার পথে পরিচালিত করব। আর নিশ্চয় আল্লাহ সৎকর্মশীলদের সাথেই আছেন।”


আল কুরআন, সুরা ইউনুস ১০ঃ১৩ আয়াতে বর্ণিত হয়েছে,


অবশ্যই আমি আল্লাহ্‌ তোমাদের পূর্বে বহু প্রজন্মকে ধ্বংস করেছি যখন তারা যুলুম করেছেআর তাদের নিকট তাদের রাসুলগণ প্রমানাদিসহ আগমন করেছিল,কিন্তু তারা ইমান আনার ছিল না। এভাবে আমি অপরাধী কওমকে শাস্তি প্রদান করি


আল কুরআন, সুরা রাদ ১৩ঃ২৭ আয়াতে বর্ণিত হয়েছে,


যারা কুফুরি করেছে তারা বলে তার নিকট তার রবের পক্ষ থেকে কোন নিদর্শন কেন নাযিল হয় না? বল, নিশ্চয় আল্লাহ্‌ যাকে ইচ্ছা পথভ্রষ্ট করেন এবং যে তাঁর অভুমুখী হয় তাকে তিনি তাঁর দিকে পথ দেখান।


আল কুরআন, সুরা কাসাস ২৮ঃ৫০ আয়াতে বর্ণিত হয়েছে,


অতঃপর তারা যদি আপনার কথায় সাড়া না দেয়, তবে জানবেন, তারা শুধু নিজের প্রবৃত্তির অনুসরণ করেআল্লাহর হেদায়েতের পরিবর্তে যে ব্যক্তি নিজ প্রবৃত্তির অনুসরণ করে, তার চাইতে অধিক পথভ্রষ্ট আর কে? নিশ্চয় আল্লাহ জালেম সম্প্রদায়কে পথ দেখান না


আল কুরআন, সুরা ইউনুস ১০ঃ৫২ আয়াতে বর্ণিত হয়েছে,


অতঃপর বলা হবে, গোনাহগারদিগকে, ভোগ করতে থাক অনন্ত আযাব-তোমরা যা কিছু করতে তার তাই প্রতিফল।


আল কুরআন, সুরা শুরা ৪২ঃ৩০ আয়াতে বর্ণিত হয়েছে,


তোমাদের ওপর যে বিপদ আসে, তা তোমাদের নিজ হাতের অর্জন নিজ কর্মের দোষেই আসে


আল কুরআন, সুরা রুম ৩০ঃ৪১ আয়াতে বর্ণিত হয়েছে,


জলে ও স্থলে অরাজকতা ছড়িয়ে পড়ে মানুষের নিজেরই কর্মের দোষে


আল কুরআন,৩৫ নং সুরা ফাতির ৩৬,৩৭ আয়াতে বর্ণিত হয়েছে,

আর যারা কাফের হয়েছে, তাদের জন্যে রয়েছে জাহান্নামের আগুন। তাদেরকে মৃত্যুর আদেশও দেয়া হবে না যে, তারা মরে যাবে এবং তাদের থেকে তার শাস্তিও লাঘব করা হবে না। আমি প্রত্যেক অকৃতজ্ঞকে এভাবেই শাস্তি দিয়ে থাকি। সেখানে তারা আর্ত চিৎকার করে বলবে, হে আমাদের পালনকর্তা, বের করুন আমাদেরকে, আমরা সৎকাজ করব, পূর্বে যা করতাম, তা করব না। (আল্লাহ বলবেন) আমি কি তোমাদেরকে এতটা বয়স দেইনি, যাতে যা চিন্তা করার বিষয় চিন্তা করতে পারতে? উপরন্তু তোমাদের কাছে সতর্ককারীও আগমন করেছিল। অতএব আস্বাদন করজালেমদের জন্যে কোন সাহায্যকারী নেই।


আল কুরআন,৩০ নং সুরা রুম ২৯ আয়াতে বলা হয়েছে,

বরং যারা যে-ইনসাফ, তারা অজ্ঞানতাবশতঃ তাদের খেয়াল-খূশী র অনুসরণ করে থাকেঅতএব, আল্লাহ যাকে পথভ্রষ্ট করেন, তাকে কে বোঝাবে? তাদের কোন সাহায্যকারী নেই।


আল কুরআন, ৬ নং সুরা আনআম ২৫,২৬,২৭ আয়াতে বলা হয়েছে, 

তাদের কেউ কেউ আপনার দিকে কান লাগিয়ে থাকে। আমি তাদের অন্তরের উপর আবরণ রেখে দিয়েছি যাতে একে না বুঝে এবং তাদের কানে বোঝা ভরে দিয়েছি। যদি তারা সব নিদর্শন অবলোকন করে তবুও সেগুলো বিশ্বাস করবে না। এমনকি, তারা যখন আপনার কাছে ঝগড়া করতে আসে, তখন কাফেররা বলেঃ এটি পুর্ববর্তীদের কিচ্ছাকাহিনী বৈ তো নয়তারা এ থেকে বাধা প্রদান করে এবং এ থেকে পলায়ন করেতারা নিজেদেরকে ধ্বংস করেছে, কিন্তু বুঝছে না। আর আপনি যদি দেখেন, যখন তাদেরকে দোযখের উপর দাঁড় করানো হবে! তারা বলবেঃ কতই না ভাল হত, যদি আমরা পুনঃ প্রেরিত হতাম; তা হলে আমরা স্বীয় পালনকর্তার নিদর্শনসমূহে মিথ্যারোপ করতাম না এবং আমরা বিশ্বাসীদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যেতাম


আল কুরআন,১৮ নং সুরা কাহফ ৫৭ আয়াতে বলা হয়েছে,

তার চাইতে অধিক জালেম কে, যাকে তার পালনকর্তার কালাম দ্বারা বোঝানো হয়, অতঃপর সে তা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয় এবং তার পূর্ববর্তী কৃতকর্মসমূহ ভুলে যায়? আমি তাদের অন্তরের উপর পর্দা রেখে দিয়েছি, যেন তা না বোঝে এবং তাদের কানে রয়েছে বধিরতার বোঝা। যদি আপনি তাদেরকে সৎপথের প্রতি দাওয়াত দেন, তবে কখনই তারা সৎপথে আসবে না


তাহলে আমরা বুঝতে পারলাম আল্লাহ অপরাধী,পাপী, বর্বর, অমানবিক, অসভ্য, ইসলাম বিদ্বেষীদেরকে হেদায়েত দিবেন না যদি না তারা তওবা করে ফিরে আসে। আল্লাহ যদি কাউকে দয়া করে হেদায়েত দিন তাহলে এটা উনি অবশ্যই পারবেন কিন্তু তারমানে এই না যে সব মানুষ চেষ্টা করবে না হেদায়েত পাবার জন্য। নাস্তিকরা কুরআনের কিছু আয়াত দেখিয়ে বাকি আয়াত গুলো দেখাতে চায় না কারণ তথ্য গোপন করলে ইসলাম নিয়ে মানুষকে ধোঁকা দেয়া সহজ হয় তাদের। নাস্তিকরা ইচ্ছা করে ইসলাম নিয়ে মিথ্যাচার করবে, ইসলাম নিয়ে মানুষকে ধোঁকা দিবে, আল্লাহর বানীর অপব্যাখ্যা করবে,মুক্তচিন্তার নামে নবীজি মোহাম্মদ (সা)কে গালাগালি করবে আবার এরাই নিজেদের দোষ আল্লাহর দিকে চাপিয়ে দিচ্ছে আর বলছে আল্লাহ নাকি তাদেরকে অন্যায়ভাবে পথভ্রষ্ট করেছেন। ব্যাপারটা এমন যে আপনি লেখা পড়বেন না, আর শিক্ষক যখন ফেইল করিয়ে দিবেন তখন শিক্ষকের দিকে নিজের দোষ চাপিয়ে বলবেন শিক্ষক কেন আমাকে ফেইল করিয়ে দিয়েছে? আসুন আরও দুটি গুরুত্বপূর্ণ আয়াত পড়ি।


আল কুরআন,২৮ নং সুরা কাসাসের ৫৬ আয়াতে বলা আছে,

আপনি যাকে পছন্দ করেন, তাকে সৎপথে আনতে পারবেন না, তবে আল্লাহ তা'আলাই যাকে ইচ্ছা সৎপথে আনয়ন করেন। কে সৎপথে আসবে, সে সম্পর্কে তিনিই ভাল জানেন।


আল কুরআন, ১০ নং সুরা ইউনুসের ১০০ আয়াতে বলা আছে,

আর কারো ঈমান আনা হতে পারে না, যতক্ষণ না আল্লাহর হুকুম হয়। পক্ষান্তরে তিনি অপবিত্রতা আরোপ করেন যারা বুদ্ধি প্রয়োগ করে না তাদের উপর।


কে আল্লাহর পথে আসবে এটা আল্লাহই ভালো জানেন আর এটা উনি জেনেই কাউকে হেদায়েত দিবেন আর কাউকে দিবেন না। খেয়াল করেন অন্য আয়াতে আল্লাহ বলেছেন তিনি পবিত্রহীনতা আরোপ করেন যারা বুদ্ধি প্রয়োগ করে না। তারমানে আল্লাহ চান যে আমরা আমাদের বুদ্ধি ব্যাবহার করে আল্লাহর পথকে বেঁছে নেই, আল্লাহ পথেই নিজের জীবনকে পরিচালনা করি। নাস্তিক্যধর্ম ছেড়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করি। কেউ যদি এসব না করে তাহলে আল্লাহ তাকে হেদায়েত কেন দিবেন? কেন শাস্তি দিবেন না? মানবজাতির মধ্যে যে ব্যক্তি নিজের স্বাধীন ইচ্ছা, যুক্তি ও বুদ্ধিমত্তা দিয়ে আল্লাহর সঠিক পথে চলার পথ বেছে নেয়, সে সৎপথে পরিচালিত হয়। যে ব্যক্তি নিজের ইচ্ছায় অন্য কোন পথ বেছে নেয়, সে শয়তানের পথ বেছে নিয়েছে এবং এভাবেই পথভ্রষ্ট হয়েছে। এরপরে নাস্তিকদের আর উক্ত আয়াত নিয়ে মিথ্যাচারের সুযোগ নেই।


আল্লাহ ইচ্ছা না করলে তোমরা ইচ্ছা করতে পারবে নাঃ


আল কুরআন, ৮১ নং সুরা তাকভীরে ২৯ আয়াতে বলা হয়েছে,

তোমরা ইচ্ছে কর না যদি বিশ্বজগতের প্রতিপালক আল্লাহ ইচ্ছে না করেন


নাস্তিকরা এই আয়াতটি দেখিয়েও সাধারণ মুসলিমদেরকে ধোঁকা দিয়ে থাকে। নাস্তিকরা এই আয়াত দেখিয়ে মুসলিমদেরকে বলে আল্লাহর ইচ্ছাতে নাস্তিকরা নাস্তিক হয়েছে। তাই নাস্তিকরা জাহান্নামে গেলে সেটা আল্লাহর ইচ্ছাতেই যাবে সুতরাং নাস্তিকদেরকে দোষ না দিয়ে আল্লাহকে দোষ দেয়া উচিত। সরলমনা মুসলিমরাও নাস্তিকদের চুরিবিদ্যা ধরতে না পেরে অনেক সময় নাস্তিকদের ব্যাখ্যাকে অন্ধভাবে বিশ্বাস করে নেয় যাচাই বাছাই না করেই। তাই আসুন উক্ত আয়াতের সঠিক ব্যাখ্যাটি জেনে নেই তাহলে আপনি যখন এই আয়াত নিয়ে সঠিক ব্যাখ্যাটি জানবেন তখন নাস্তিকদের প্রতারণা সহজেই ধরে ফেলে অন্যকে সেটা জানিয়ে দিতে পারবেন।


আল্লাহ যদি আমাদেরকে ইচ্ছা শক্তি না দিত তাহলে কি আমরা ইচ্ছা করতে পরতাম? অবশ্যই না। আর এটাই বুঝানো হয়েছে উক্ত আয়াতে যে আল্লাহ ইচ্ছা না করলে কেউই ইচ্ছে করতে পারে না। কিন্তু তারমানে এই না যে মানুষের মন্দ কর্মের জন্য আল্লাহ দায়ী। কেননা আল্লাহ আপনাকে গাইড লাইন দিয়ে রেখেছেন আপনাকে ইচ্ছা শক্তি দেবার পাশাপাশি। তাই আপনি যদি আল্লাহর দেয়া আপনার ইচ্ছাশক্তিতে ভুলভাবে ব্যাবহার করেন তাহলে এর জন্য আল্লাহ দায়ী না যদিও ইচ্ছাশক্তিটা আল্লাহই দিয়েছেন।


সহজ উদাহরণ দিয়ে ব্যাপারটা বুঝিয়ে দেই। মার্ক জুকারবার্গ আমাদেরকে ফেসবুক চালাতে দিয়েছে। আমরা ফেসবুকে যা ইচ্ছে সেটাই করতে পারি। কারণ মার্ক আমাদেরকে সেই সুযোগ দিয়েছে। এখন কেউ যদি ফেসবুকে চুরি করে, ডাকাতি করে তাহলে কি এর জন্য মার্ক জুকারবার্গ দায়ী? এভাবেও বলা যায় ফেসবুক যদি সে তৈরি না করতো তাহলে ফেসবুকে চুরি হতো না, ডাকাতি হতো না কিন্তু এর জন্য তো মার্ক জুকারবার্গকে দায়ী করা যাবে না কারণ হচ্ছে কমিউনিটি গাইড লাইন। সে আপনাকে বলেনি আপনি ফেসবুকে অন্যায় কাজ করেন। তাই সব কিছু সে করলেও আপনার অপরাধের জন্য আপনি দায়ী। এই উদাহরণ বুঝে থাকলে এটা আপনি সহজেই বুঝতে পারবেন যে তেমনি আল্লাহ আমাদেরকে ইচ্ছাশক্তি দিয়েছেন। উনি যদি আমাদেরকে ইচ্ছাশক্তি না দিতেন তাহলে আমরা কিছুই ইচ্ছা করতে পারতাম না। কিন্তু আল্লাহ আমাদেরকে ইচ্ছাশক্তি দেবার পাশাপাশি আমাদেরকে সঠিক পথের গাইড বুক অর্থাৎ আল কুরআন দিয়েছেন। আর আল্লাহ মন্দ কাজের আদেশ কখনো দেন না, দিবেনও না। তাহলে মানুষ যদি আল্লাহর দেয়া ইচ্ছাশক্তিকে অন্যায়পথে ব্যাবহার করে তাহলে এর জন্য মানুষ অপরাধী হবে। আল্লাহকে অপরাধী বলা যাবে না, যায় না।


মহাবিশ্বের সব কিছুই আল্লাহ সৃষ্টি করেছেন। আল্লাহ যদি মহাবিশ্ব সৃষ্টি না করতেন তাহলে কিছুই সৃষ্টি হতো না। কোনো কিছু ছিল না, উনি সৃ্ষ্টি করেছেন বলে হয়েছে। কোনো কিছু হয় না, উনি সৃ্ষ্টি করলে হয়। কোনো কিছু হবে না, উনি সৃ্ষ্টি করলে তবেই হবে। প্রত্যেক বস্তুকে নিজস্ব আকৃতিতে উনি সৃষ্টি করেন। আকৃতি সম্পন্ন করে সৃষ্টির পর যে ক্রিয়াশীলতা অর্থাৎ গতি-প্রকৃতি এগুলোও উনি সৃষ্টি করেন। যেহেতু আল্লাহর গুণ-ক্রিয়াশীলতা-ক্ষমতার সাহায্য ছাড়া কোন কিছু হতে পারে না __ তাই প্রত্যেকটি আকৃতি এবং প্রত্যেকটি সৃষ্টির প্রতিটি গতি-প্রকৃতি প্রতি মূহুর্তে উনার ক্ষমতা বা কুদরত থেকে নিয়ণ্ত্রিত এবং অনুমোদিত (কোনো কোনো ক্ষেত্রে প্রত্যক্ষ ও কোনো কোনো ক্ষেত্রে পরোক্ষ ভাবে) হয়। এক বস্তুর সাথে আরেক বস্তুর বিভিন্ন সংযোজন-বিয়োজন ইত্যাদির যে স্থান-কাল-পাত্রীয় সমাপতনে ভিন্ন ভিন্ন বস্তু-আকৃতি-পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় তার সবকিছুর সমস্ত কার্যকারণের মূল এবং চুড়ান্ত উৎস হল আদিতম মূল ক্ষমতা-ক্রিয়াশীলতার সাথে, এগুলোর সংযুক্তি এক মহান সত্তার সাথে যাঁর নাম আল্লাহ।


যেমন কোন মানুষ লিখতে চাইল ‘কলম’। লিখতে চাওয়ার এই ইচ্ছাটির উৎপত্তি প্রথমে ঘটবে হৃদয়ে। সেখান থেকে ‘ইচ্ছা’ টির প্রাবল্য ধাবিত-প্রবাহিত হবে মস্তিষ্কে, যুক্তিমনষ্ক বুদ্ধিসম্পন্ন মস্তিষ্ক কৌশল এবং কর্মপ্রণালী বিষয়ক সিদ্ধান্ত নেবে কোন অঙ্গকে কার্যকর কিভাবে করা হবে সেই বিষয়ে। অতএব মস্তিষ্ক নির্দেশ পাঠাবে হস্তকে। হস্ত কলম সংগ্রহ এবং ধারণ করবে মাংসপেশীসমূহ ও অঙ্গুলিসমন্বয়ের বিশেষ কৌশলে যা মস্তিষ্ক দ্বারা পরিচালিত হবে। মস্তিষ্কের বুদ্ধিবৃত্তিক নির্দেশনায় হস্ত ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে লিখতে থাকবে ‘কলম’। সুতরাং, ‘ইচ্ছা’ র উৎপত্তি প্রথমতঃ হৃদয়ে অতঃপর সিদ্ধান্ত কর্মকৌশল বাস্তাবায়ন ইত্যাদি সম্পাদিত হয় অঙ্গসমূহের সমন্বিত সৈন্যদল সহযোগে স্বয়ং মস্তিষ্কের নেতৃত্বে। এই ইচ্ছাশক্তি নামক প্রযুক্তি আল্লাহ মানুষকে দিয়েছেন। এখন এই প্রযুক্তির খারাপ ব্যাবহার করলে সেটার জন্য মানুষ দায়ী হবে। আল্লাহ নয়। কারণ আল্লাহ প্রযুক্তি বানালেও প্রযুক্তিকে অন্যায় ও ভুল পথে ব্যাবহার করতে নিষেধ করে দিয়েছেন। এই আয়াত নিয়েও আর নাস্তিকরা চাইলে মিথ্যাচার করতে পারবে না।


আল কুরআন, ৯০ নং সুরা বালাদ ৪ আয়াতে বলা হয়েছে,

নিশ্চয় আমি মানুষকে শ্রমনির্ভররূপে সৃষ্টি করেছি।


হেদায়েত নিয়ে নবীজি মোহাম্মদ (স)এর কিছু কথাঃ

আমাদের সমাজে এমন মানুষের অভাব নেই। যার অন্য কিছু নিয়ে ভাবার অনেক সময় আছে কিন্তু আল্লাহকে নিয়ে ভাবার কোন সময় নেই। যে তার বর্তমান প্রয়োজন ছাড়া আর কিছু নিয়ে ভাবেনা। যে যাখুশি করে ফেলে, কাজের ভাল মন্দ নিয়ে ভাবেনা। যার নিত্য দিনের কাজ হলো জুলুম অত্যাচর। আল্লাহর স্থানে যে অন্যকে বসায়। সব কিছুতে অপচয় করা যার কাজ। মিথ্যা ধোকা প্রতারণা যার প্রিয় কাজ। প্রতিটি ক্ষেত্রে যে অকৃতজ্ঞ। যার অবস্থান কোন কারণ ছাড়াই তার আপনজনদের বিপরীতে। যে মানুষের মাঝে ঝগড়া বাধায়। যে মানুষের দোষ বলে বেড়ায়। যে অপরকে অহেতুক কষ্টদেয়। কারো বিপদে যার সাড়া মিলেনা। যে আল্লাহর গুণগুলো না দেখে তাঁর দোষ খুঁজে বেড়ায়। যে আল্লাহর প্রিয় হাবিবের গুণগুলো না দেখে তাঁর দোষ খুঁজে বেড়ায়। যে আল্লাহর কোরআনের গুণ না দেখে এর দোষ খুঁজে বেড়ায়। যে আল্লাহর মনোনীত ইসলামের গুণ না দেখে এর দোষ খুঁজে বেড়ায়। আল্লাহ নবি (সা.) কোরআন ও ইসলামের জন্য যে শুকরিয়া জ্ঞাপন করেনা। যে হেদায়েত কামনা করেনা এবং পথভ্রষ্টতা থেকে বাঁচতে চায়না। 


প্রশ্ন হচ্ছে এমন মানুষকে আল্লাহ কেন হেদায়েত দিবেন যদি না তারা নিজে সংশোধন হতে চায়? এমন সব লোকদেরকে যদি আল্লাহ তাঁর প্রিয় জিনিস প্রদান না করেন তবে কি আল্লাহর দোষ হবে? আর এদের প্রতি আল্লাহ রাগ হয়ে যদি এদেরকে তিনি পথভ্রষ্ট করে দেন তাহলেও কি তাঁর দোষ হবে? আল্লাহর প্রিয় জিনিস হেদায়েত ও জান্নাত। যার বিপরীত পথভ্রষ্টতা ও জাহান্নাম। কেউ প্রথমটা না পেলে পরেরটা পায়। আর প্রথমটা না পাওয়ার কারণ যোগ্যতা নেই। আর পরেরটা পাওয়ার কারণ এটাই তাদের প্রাপ্য। আর আল্লাহ কারো প্রাপ্য প্রদানে কার্পণ্য করেননা। যারা আল্লাহর দরবারে কান্নাকাটি করে হেদায়েত কামনা করে দেখা গেছে তারা হেদায়েতের পথেই চলে।কিন্তু যারা আল্লাহর দরবারে হেদায়েতের কামনা করেনা দেখা গেছে তারা হেদায়েতের পথে চলেনা। আর হেদায়েতের পথে না চলাই পথভ্রষ্টতা। এর দ্বারা প্রতিয়মান হয় যে পথভ্রষ্টতার একটি কারণ হেদায়েত কামনা না করা।


আমরা যাতে হেদায়াত পাই সেই জন্য আল্লাহ আমাদের কাছে নবীজি (সা)কে পাঠিয়েছেন। হেদায়াত নিয়ে নিচের হাদিস গুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। মনোযোগ দিয়ে সব হাদিস পাঠ করুন। তাহলে নাস্তিকদের মতো ভুল বিশ্বাস করতে পারবেন না। 


সহিহ বুখারী, হাদিসঃ ৭২৮২, সহিহ হাদিসঃ

হুযাইফাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, হে কুরআন পাঠকারী সমাজ! তোমরা (কুরআন ও সুন্নাহর উপর) সুদৃঢ় থাক। নিশ্চয়ই তোমরা অনেক পশ্চাতে পড়ে আছ। আর যদি তোমরা ডানদিকের কিংবা বামদিকের পথ অনুসরণ কর তাহলে তোমরা সঠিকপথ (হেদায়েত থেকে) অনেক দুরে সরে পড়বে।-ihadis.com


সহিহ তারগিব ওয়াত তাহরিব, হাদিসঃ ১৯৭, সহিহ হাদিসঃ

ছাওবান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ “তোমরা সত্য ও সঠিক পথের উপর অটল ও অবিচল থাক। আমলের ছোয়াব গণনা করে রেখো না। জেনে রেখো তোমাদের সর্বোত্তম আমল হল, সালাত। আর মুমিন ব্যক্তি ছাড়া কেউ ওযুর প্রতি যত্নশীল হয় না।” (ইবনু মাজাহ সহীহ সনদে এবং হাকেম হাদীছটি বর্ণনা করেছেন) সহীহ ইবনু হিব্বানের বর্ণনায় হাদীসের প্রথমাংশে উল্লেখিত হয়েছেঃ “তোমরা সঠিক পথ অনুসন্ধান করে তদানুযায়ী আমল কর এবং তার নিকটবর্তী থাকার চেষ্টা কর। বাড়াবাড়ী ও শিথীলতা পরিহার কর। আর জেনে রেখো তোমাদের সর্বোত্তম আমল হল সালাত…।”-ihadis.com


মিশকাতুল মাসাবিহ, হাদিসঃ১০৭২, সহিহ হাদিসঃ

আবদুল্লাহ ইবনু মাস্‘ঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, আমরা নিজেদের দেখেছি জামা‘আতে সলাত আদায় করা থেকে শুধু মুনাফিক্বরাই বিরত থাকত যাদের মুনাফিক্বী অত্যন্ত স্পষ্ট ছিল অথবা রুগ্ন লোক। তবে যে রুগ্ন লোক দু’ব্যক্তির ওপর ভর করে চলতে পারতো সেও জামা‘আতে আসত। এরপর ‘আবদুল্লাহ ইবনু মাস্‘উদ (রাঃ) বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদেরকে হিদায়াতের পথসমূহ শিখিয়ে দিয়েছেন। তাঁর শিখানো হিদায়াতের পথসমূহ থেকে একটি এই যে, যে মাসজিদে আযান দেয়া হয় সেটাতে জামা‘আতের সাথে সলাত আদায় করা। অপর একটি বর্ণনায় আছে, নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ যে ব্যক্তি আগামীকাল আল্লাহর সাথে পূর্ণ মুসলিম হিসেবে সাক্ষাৎ করে আনন্দিত হতে চায়, সে যেন পাঁচ ওয়াক্ত সলাত উপযুক্ত সময়ে আদায় করার প্রতি যত্নবান হয়ে যেখানে সলাতের জন্যে আযান দেয়া হয় সেখানে সলাত আদায় করে। কারণ আল্লাহ তা‘আলা তোমাদের রসূলের জন্যে ‘সুনানুল হুদা’ (হিদায়াতের পথ) নির্দিষ্ট করেছেন। জামা‘আতের সাথে এ পাঁচ বেলা সলাত আদায় করাও এ ‘সুনানুল হুদার’ মধ্যে একটি অন্যতম। তোমরা যদি তোমাদের ঘরে সলাত আদায় কর, যেভাবে এ পিছে পড়ে থাকা লোকগুলো (মুনাফিক্ব) তাদের বাড়িতে সলাত আদায় করে, তবে তোমরা অবশ্যই তোমাদের নাবীর সুন্নাতকে ছেড়ে দিলে। যদি তোমরা তোমাদের নাবীর হিদায়াতসমূহ ছেড়ে দাও তাহলে অবশ্যই পথভ্রষ্ট হবে। তোমাদের মধ্যে যারা ভাল করে পাক-পবিত্রতা অর্জন করে, তারপর এসব মাসজিদের কোন মাসজিদে সলাত আদায় করতে যায়, তবে আল্লাহ তা‘আলা তার প্রতি কদমে একটি করে নেকী দান করবেন, তার মর্যাদা এক ধাপ উন্নত করবেন এবং তার একটি পাপ মাফ করে দেন। আমি আমাদেরকে দেখেছি যে, প্রকাশ্য মুনাফিক্বরা ছাড়া অন্য কেউ সলাতের জামা‘আত থেকে পিছে থাকতো না বরং তাদেরকে দু’জনের কাঁধে হাত দিয়ে এনে সলাতের সারিতে দাঁড় করিয়ে দেয়া হত।-ihadis.com


সুনানে আবু দাউদ, হাদিসঃ ৪৬০৭, সহিহ হাদিসঃ

‘আবদুর রহমান ইবনু ‘আমর আস-সুলামী ও হুজর ইবনু হুজর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃএকদা আমরা আল-ইরবাদ ইবনু সারিয়াহ (রাঃ)-এর নিকট আসলাম। যাদের সম্পর্কে এ আয়াত নাযিল হয়েছে তিনি তাদের অন্তর্ভুক্ত : “তাদেরও কোন অপরাধ নেই যারা তোমার নিকট বাহনের জন্য এলে তুমি বলেছিলে : আমি তোমাদের জন্য কোন বাহনের ব্যবস্থা করতে পারছি না” (সূরাহ আত-তাওবাহ : ৯২)। আমরা সালাম দিয়ে বললাম, আমরা আপনাকে দেখতে, আপনার অসুস্থতার খবর নিতে এবং আপনার কাছ থেকে কিছু অর্জন করতে এসেছি। আল-ইরবাদ (রাঃ) বললেন, একদিন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদেরকে সঙ্গে নিয়ে সলাত আদায় করলেন, অতঃপর আমাদের দিকে ফিরে আমাদের উদ্দেশ্যে জ্বালাময়ী ভাষণ দিলেন, তাতে চোখগুলো অশ্রুসিক্ত হলো এবং অন্তরগুলো বিগলিত হলো। তখন এক ব্যক্তি বললেন, হে আল্লাহ্‌র রাসূল! এ যেন কারো বিদায়ী ভাষণ! অতএব আপনি আমাদেরকে কি নির্দেশ দেন? তিনি বলেনঃ আমি তোমাদেরকে আল্লাহ্ভীতির, শ্রবণ ও আনুগত্যের উপদেশ দিচ্ছি, যদিও সে (আমীর) একজন হাবশী গোলাম হয়। কারণ তোমাদের মধ্যে যারা আমার পরে জীবিত থাকবে তারা অচিরেই প্রচুর মতবিরোধ দেখবে। তখন তোমরা অবশ্যই আমার সুন্নাত এবং আমার হিদায়াতপ্রাপ্ত খলীফাহ্গণের সুন্নাত অনুসরণ করবে, তা দাঁত দিয়ে কামড়ে আঁকড়ে থাকবে। সাবধান! (ধর্মে) প্রতিটি নবাবিষ্কার সম্পর্কে! কারণ প্রতিটি নবাবিষ্কার হলো বিদ’আত এবং প্রতিটি বিদ’আত হলো ভ্রষ্টতা।-ihadis.com


সহিহ বুখারী, হাদিসঃ ২৮৩৭, সহিহ হাদিসঃ

বারা’ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, আহযাবের দিন আমি আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে দেখেছি যে, তিনি মাটি বহন করছেন। আর তাঁর পেটের শুভ্রতা মাটি ঢেকে ফেলেছে। সে সময় তিনি আবৃত্তি করছিলেন, (হে আল্লাহ্): আপনি না হলে আমরা হিদায়াত পেতাম না; সদকা দিতাম না এবং সালাত আদায় করতাম না। তাই আমাদের উপর শান্তি নাযিল করুন। যখন আমরা শত্রু সম্মুখীন হই তখন আমাদের পা সুদৃঢ় করুন। ওরা আমাদের বিরুদ্ধাচরণ করেছে। তারা যখনই কোন ফিত্‌না সৃষ্টি করতে চায় তখনই আমরা তা থেকে বিরত থাকি।-ihadis.com


সুনানে আবু দাউদ, হাদিসঃ ৫১৩৬, সহিহ হাদিসঃ

ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃনাবী(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রোম সম্রাট হিরাকালের নিকটে চিঠি লিখেছিলেন: “আল্লাহর প্রেরিত পুরুষ মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)–এর পক্ষ হতে রোমের সম্রাট হিরাকলের নিকট। যে ব্যক্তি হেদায়াতের অনুসারী তার উপর শান্তি বর্ষিত হোক। ইবনু ইয়াহ্‌য়াহ (রহঃ) ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণনা করেন, আবূ সুফিয়ান (রাঃ) তাকে এ ব্যাপারে জানিয়ে দিয়ে বলেন, আমরা হিরাকলের দরবারে উপস্থিত হলে তিনি আমাদেরকে তার সামনে বসালেন। অতঃপর তিনি রাসূলুল্লাহ(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর চিঠি নিয়ে ডাকলেন। তাতে লেখা রয়েছে : বিসমিল্লাহির রহমানির রাহীম; আল্লাহর রাসূল মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) –এর পক্ষ হতে মহান রোম সম্রাট হিরাক্‌ল–এর প্রতি। যিনি হেদায়েতের অনুসারী তার উপর শান্তি বর্ষিত হোক; অতঃপর।-ihadis.com


সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিসঃ ২৬২১, সহিহ হাদিসঃ

সালিম বিন আবুল জা‘দ থেকে বর্ণিতঃইবনু আব্বাস (রাঃ) কে এমন এক ব্যক্তি সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলো যে কোন ঈমানদার মুসলমানকে ইচ্ছাকৃতভাবে হত্যা করলো, অতঃপর তওবা করলো, ঈমান আনলো (ইসলাম গ্রহন করলো), সৎকাজ করলো, অতঃপর হেদায়েত মত চললো। তিনি বলেন, আফসোস তার জন্য! কোথায় তার জন্য হেদায়েত? আমি তোমাদের নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে বলতে শুনেছিঃ কিয়ামতের দিন হত্যাকারী তার মাথার সাথে নিহত ব্যক্তির মাথা লটকানো অবস্থায় উপস্থিত হবে। নিহত ব্যক্তি বলবে, হে প্রভু! তাকে জিজ্ঞেস করুন, সে কেন আমাকে হত্যা করেছে? আল্লাহর শপথ! অবশ্যি আল্লাহ্ তাআলা তোমাদের নবীর উপর এ কথা নাযিল করেছেন এবং অতঃপর এমন কিছু নাযিল করেননি যা উক্ত কথাকে রহিত করতে পারে।-ihadis.com


সহিহ বুখারী, হাদিসঃ ৭৯, সহিহ হাদিসঃ

আবূ মূসা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আল্লাহ তা’আলা আমাকে যে হিদায়াত ও ‘ইল্‌ম দিয়ে পাঠিয়েছেন তার দৃষ্টান্ত হলো যমীনের উপর পতিত প্রবল বর্ষণের ন্যায়। কোন কোন ভূমি থাকে উর্বর যা সে পানি শুষে নিয়ে প্রচুর পরিমাণে ঘাসপাতা এবং সবুজ তরুলতা উৎপাদন করে। আর কোন কোন ভূমি থাকে কঠিন যা পানি আটকে রাখে। পরে আল্লাহ তা’আলা তা দিয়ে মানুষের উপকার করেন; তারা নিজেরা পান করে ও (পশুপালকে) পান করায় এবং তা দ্বারা চাষাবাদ করে। আবার কোন কোন জমি রয়েছে যা একেবারে মসৃণ ও সমতল; তা না পানি আটকে রাখে, আর না কোন ঘাসপাতা উৎপাদন করে। এই হলো সে ব্যক্তির দৃষ্টান্ত যে দ্বীনের জ্ঞান অর্জন করে এবং আল্লাহ তা’আলা আমাকে যা দিয়ে প্রেরণ করেছেন তাতে সে উপকৃত হয়। ফলে সে নিজে শিক্ষা করে এবং অপরকে শিখায়। আর সে ব্যক্তিরও দৃষ্টান্ত- যে সে দিকে মাথা তুলে দেখে না এবং আল্লাহর যে হিদায়াত নিয়ে আমি প্রেরিত হয়েছি, তা গ্রহণও করে না। আবূ ‘আবদুল্লাহ (বুখারী) (রহঃ) বলেনঃ ইসহাক (রহঃ) আবূ উসামা (রহঃ) থেকে বর্ণনা করেছেনঃ তিনি قَبِلت এর স্থলে قَيَّلَت (আটকিয়ে রাখে) ব্যবহার করেছেন। قَاعَا হলো এমন ভূমি যার উপর পানি জমে থাকে। আর الصَّفصفُ হলো সমতল ভূমি।-ihadis.com


উপসংহারঃ

নাস্তিকরা আল্লাহকে অপরাধী বানাবার জন্য মুক্তচিন্তায় মিথ্যাচার করে থাকে। নাস্তিকরাই আল্লাহকে নিয়ে অন্ধবিশ্বাস করে। ইসলাম যেই দৃষ্টিভঙ্গি সমর্থন করে না সেই দৃষ্টিভঙ্গি ইসলামের দিকে চাপিয়ে দেয়াটা অন্যায়,যা মুক্তচিন্তায় নাস্তিকরা করে থাকে। কুরআনের আয়াত, সহিহ হাদিস এবং তাফসীর থেকে এটাই প্রমাণিত হয় যে আল্লাহ অন্যায়ভাবে কাউকেই মোহর লাগিয়ে দেন না বরং বান্দা নিজের অতিরিক্ত অপরাধের উপর অটল থাকার কারণে আল্লাহর পক্ষ থেকে বান্দাকে মোহর লাগিয়ে দেয়া হয়। আল্লাহ মানুষকে ইচ্ছা করার শক্তি দিয়েছে তাই আল্লাহ ইচ্ছা না করলে মানুষ ইচ্ছা করতে পারতো না। কিন্তু আল্লাহ ইচ্ছাশক্তি মানুষ কিভাবে ব্যাবহার করবে সেটাও উনি জানিয়ে দিয়েছেন। তাই ভুল ব্যাবহার করলে মানুষ দায়ী হবে। আল্লাহ আমাদের নিজেদের মধ্যে এবং আমাদের চারপাশের ঘটনা এবং নবী রাসুল ও ধর্মগ্রন্থের মাধ্যমে সত্য-মিথ্যাকে স্পষ্ট করে দিয়ে সকলকে হেদায়েত দান করেন; এবং প্রত্যেকে তারা যা ইচ্ছা তা অনুসরণ করতে স্বাধীন করে দিয়েছেন। যে ব্যক্তি বাণী শোনে এবং আকাঙ্ক্ষা দেখায়, আল্লাহ সেই ব্যক্তিকে আরও পথ প্রদর্শন করেন, কিন্তু যে ব্যক্তি সত্যকে প্রত্যাখ্যান করে,অহংকার করে, বেআদবী করে আল্লাহ সেই ব্যক্তিকে তার পছন্দের পথে চলতে দেন এবং তার থেকে আরও নির্দেশনা বন্ধ করে দেন এবং এভাবে বলা যায়, তাকে বিপথগামী করে দেন।


প্রাসঙ্গিক আরও কিছু লেখা পড়তে পারেনঃ


আল্লাহ তা‘আলার ইচ্ছার প্রকারভেদ এবং সৃষ্টিগত ইচ্ছা ও শরীয়াতগত ইচ্ছার মধ্যে পার্থক্য

https://www.hadithbd.net/books/link/?id=8880&fbclid=IwAR3hOdUaPukqzD2CyAs1Paiv_yVufDrsu6UQCdmTMLGAIn5QfcVQm5JAcBg


মানুষ কি আল্লাহর ইচ্ছায় বাঁধা তাকদির নিয়ন্ত্রিত রোবট? 

http://askislambd.weebly.com/vw-i3.html?fbclid=IwAR3HJmRujToNExBEew9XgzZqAlqRK2g0hqrsZ66dG-8zGM7dwDTDqzEo2WA


হেদায়েত আল্লাহ্‌র পক্ষ থেকে আর উপায়-উপকরণ বান্দার পক্ষ থেকে

https://islamqa.info/bn


Reconciling the Divine Decree and Free Will in Islam

https://yaqeeninstitute.org/read/paper/reconciling-the-divine-decree-and-free-will-in-islam?fbclid=IwAR1eEc1AG6Jp6mUPMN0mSEZdYmS3YsVN_dUNU3IWt_KnIS2FsOhNDwIlUTA


এমডি আলী

যিনি একজন লেখক, বিতার্কিক ও গবেষক। বিভিন্ন ধর্ম ও মতবাদ বিষয় পড়াশোনা করেন। ইসলামের সত্যতা মানুষের কাছে ছড়িয়ে দিতে চান। “সত্যের অনুভূতি” উনার লেখা প্রথম বই। “ফ্যান্টাস্টিক হামজা” দ্বিতীয় বই। জবাব দেবার পাশাপাশি নাস্তিক মুক্তমনাদের যৌক্তিক সমালোচনা করে থাকেন।

Previous Post Next Post