সাধারণ প্রশ্ন নাস্তিকতা ও ইসলাম


বিষয়ঃ সাধারণ প্রশ্ন নাস্তিকতা ও ইসলাম।

লিখেছেনঃ এমডি আলী।

==================================

প্রশ্নঃ 

নাস্তিক্যধর্ম বলতে কি বোঝায়?

উত্তরঃ 

ধর্ম শব্দের অর্থ হচ্ছে ধারণ করা। নাস্তিকরা নাস্তিক্যবাদকে অবিশ্বাস করে না বরং বিশ্বাস করে ধারণ করে তাই যৌক্তিকভাবে নাস্তিক্যবাদকে নাস্তিক্যধর্ম বললে ভুল হবার সুযোগ নেই। 

প্রশ্নঃ

নাস্তিকদের নৈতিকতার উৎস কি?

উত্তরঃ

নির্দিষ্ট কোনো উৎস নেই। যে যার ইচ্ছা সেভাবে নিজের মুক্তচিন্তা থেকে নিজের জন্য নৈতিকতা বানিয়ে নিতে পারবে। তবে অনেক নাস্তিক বলে থাকে বিবেক, সমাজ, রাষ্ট্র ইত্যাদি নাস্তিকদের নৈতিকতা। কিন্তু এখানে প্রশ্ন আসে এসব যদি নৈতিকতার উৎস হয় তাহলে কোনো নাস্তিক যদি মুক্তচিন্তায় এসব উৎসকে অবিশ্বাস করে তাহলে তার দেয়া নৈতিকতাকে কি সবাই বিশ্বাস করবে? না। তাহলে নাস্তিকরা সবার জন্য কিভাবে নৈতিকতা নির্দিষ্ট করে দিতে পারে? তাই এটা বলতে হবে যে নাস্তিকদের নির্দিষ্ট কোনো নৈতিক মানদণ্ড নেই।

প্রশ্নঃ

নাস্তিকান্ধতা আসলে কি?

উত্তরঃ

যাচাই বাছাই ছাড়াই অন্ধভাবে নাস্তিক্যবাদে বিশ্বাস করাকেই নাস্তিকান্ধতা বলা হয়। বর্তমানে বেশির ভাগ নাস্তিকই নাস্তিকান্ধতায় ডুবে রয়েছে। তারা নাস্তিক্যবাদ নিয়ে সংশয় প্রকাশ করতে পারে না। তারা ডারউইনবাদ নিয়ে সংশয় প্রকাশ করতে পারে না। অথচ বিজ্ঞান এসব বিষয় নির্দিষ্ট করে কখনো দাবি করে না যে এসব ফ্যাক্ট। বিজ্ঞান জগতে এসব বিশ্বাস নিয়ে অনেক দ্বিমত রয়েছে। নাস্তিকরা নিজেদের সুবিধা অনুযায়ী খালি ইসলামে সংশয় প্রকাশ করে তাও আবার মুক্তচিন্তায় মিথ্যাচারের আশ্রয় নিয়ে।

প্রশ্নঃ

মুসলিমরা এতো এতো প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও স্রস্টায় অবিশ্বাস করে না কেন?

উত্তরঃ

প্রমাণ থাকলে অবিশ্বাসের প্রশ্নই আসে না। নাস্তিক বিশ্বাসীরা আসলে প্রমাণ করতে পারে না যে "এই মহাবিশ্ব স্রস্টা ছাড়া সৃষ্টি হয়েছে" । যেমন আমরা মানি যে, সূর্য আছে। এখানে অবিশ্বাসের কিছু নেই। নাস্তিকরা অন্ধবিশ্বাস করে তাই তাদের প্রমাণের অপ্রতুলতা থাকে। কেউ যদি এখন বিশ্বাস করে এককোষী ব্যাকটেরিয়া থেকে হাতি উৎপত্তি হয়েছে অথবা মানুষ এর পূর্ব পুরুষ কোনো এক চতুষ্পদ জন্তু ছিল-সে মানুষ ছিল না তাহলে একজন যুক্তিবাদী মানুষ কিভাবে এসব কাল্পনিক গল্পে বিশ্বাস করতে পারে? স্রস্টা নেই, মানুষের আগের পূর্ব পুরুষ ছিল একটি চতুষ্পদ প্রাণী, মহাবিশ্ব এর আগে কি ছিল সেটা জানি না আবার বলছে স্রস্টা ছাড়াই এই মহাবিশ্ব নিজেই নিজেকে সৃষ্টি করেছে , সমকামীতা ভালো, ফ্রি সেক্স ভালো,সম্মতি থাকলে নাস্তিক মায়ের সাথে ফ্রি সেক্স করাও বৈধ - এরকম হাজার হাজার দাবি নাস্তিক অন্ধবিশ্বাসীরা করে থাকেন কিন্তু আমাদের কাছে এর স্বপক্ষে “কেন ভালো”র কোনো প্রমাণ হাজির করা হয় নি। নাস্তিকদেরকে নিজেদের বিশ্বাসের পক্ষে যুক্তি প্রমাণ ইত্যাদি সব হাজির করতে হবে। আস্তিকরা দাবি করেছে তাই আস্তিকরা প্রমাণ দিবে নাস্তিকরা না এমন ভিতু নাস্তিকরা কিভাবে হয়? আস্তিকরা নিজেদের দাবির যেমন প্রমাণ দিতে হবে তেমনি নাস্তিকদেরকেও প্রমাণ করতে হবে কেন তারা সত্য?

প্রশ্নঃ

এই মহাবিশ্ব তৈরিতে কোনো স্রস্টা নাই,কারণ বিজ্ঞানীরা বলছেন নিজে নিজেই এই মহাবিশ্ব হতে পারে। আপনি কি বিজ্ঞানীদের কথা মানেন না?

উত্তরঃ 

আপনাকে আমি এমন অনেক বিজ্ঞানীদের রিসার্চ দেখতে পারি যারা দাবি করেছেন মহাবিশ্বকে স্রস্টাই সৃষ্টি করেছেন। তাহলে আপনি কি আপনার নাস্তিক্যধর্মের বিশ্বাস ছেড়ে দিয়ে আস্তিক হয়ে যাবেন? বিজ্ঞানীদের মধ্যে অনেক মতভেদ রয়েছে। কিন্তু নাস্তিকরা এক দলের কথাকে টেনে পুরো বিজ্ঞানের কাঁধে চাপিয়ে দেয় যা এক ধরণের অসাধুতা বটে।

প্রশ্নঃ

নাস্তিক অনুসারীদের বিশ্বাসে আঘাত করা ঠিক?

উত্তরঃ

সত্য কথা বললে যদি নাস্তিক অন্ধবিশ্বাসীরা কষ্ট পায় তাহলে এর থেকে প্রমাণিত হচ্ছে যে তাদের সত্য গ্রহণ করার ক্ষমতা নাই অথবা তারা সত্যেকে ভয় পায়। আমার ব্লগের সকল লেখা গুলো আপনি পাঠ করুন। নিজেই যাচাই করুন। কোনো নাস্তিকের যদি নিজের নাস্তিক্যবিশ্বাস দুর্বল হয় অথবা বিশ্বাস ভেঙ্গে যাবার শঙ্কা থাকে তাহলে সেই নাস্তিক আমার লেখা না পড়লেই তো হয়।

এখন ধরুনঃ কোনো নাস্তিক বিশ্বাস করে সে ইচ্ছা মতো হাজার হাজার মেয়ের সাথে সেক্স করতে পারবে-এটি তার নাস্তিকধর্মের শিক্ষা। নাস্তিকরা বিশ্বাস করে তার আগের সবাই একটি চতুষ্পদ প্রাণী ছিল যাদের মধ্যে সভ্যতা ছিল না- এটি তার নাস্তিকধর্মের শিক্ষা। নাস্তিকরা বিশ্বাস করে এই মহাবিশ্ব সৃষ্টি হয়েছে কিন্তু কেউই সৃষ্টি করে নাই-এটি তার নাস্তিকধর্মের শিক্ষা। নাস্তিকরা বিশ্বাস করে তারা নাকি সত্যবাদী অথচ ইসলাম নিয়ে ভুল ব্যাখ্যা প্রদান করে-এটি তার নাস্তিক ধর্মের শিক্ষা। নাস্তিকরা বিশ্বাস করে নারীরা উলঙ্গ হয়ে ঘুরবে,এটি নারীর স্বাধীনতা - এটি তার নাস্তিক ধর্মের শিক্ষা। নাস্তিকরা বিশ্বাস করে একজন নাস্তিক মা তার নাস্তিক মেয়ের সাথে সম্মতিতে লেসবিয়ান সোহবত করতে পারবে-এটি তার নাস্তিক ধর্মের শিক্ষা। 

এরকম হাজার হাজার বর্বর বিশ্বাস আইন নিয়ম কানুনের কথা বলতে পারি যেগুলা নাস্তিকধর্ম শিক্ষা দেয়।আচ্ছা নাস্তিক অন্ধ বিশ্বাসীদের মিথ্যাচারের এবং বর্বর নোংরা বিশ্বাসের বিরুদ্ধে যুক্তি দিয়ে, বিজ্ঞান দিয়ে , সত্য তুলে ধরে কথা বললে কি তাদের বিশ্বাসে আঘাত করা হবে বলে আপনার মনে হয়? আপনি যদি একজন সভ্য মানুষ হন , আপনি যদি একজন যুক্তিবাদী এবং বিজ্ঞানমনস্ক মানুষ হন তাহলে আপনি অবশ্যই বলবেন নাস্তিকদের বর্বর এবং অশ্লীল শিক্ষা থেকে জাতিকে মুক্ত করে একটি সভ্য সমাজ গড়তে হবে তাহলেই মানবতার জয় হবে,তাহলেই সত্য প্রকাশ হবে।

প্রশ্নঃ

আপনি কি নাস্তিক বিদ্বেষী?

উত্তরঃ

আমি নাস্তিকদের কল্যাণ চাই। এই কারণেই তারা যাতে সত্যিটা গ্রহণ করে নেয় সে জন্য তাদের যৌক্তিক সমালোচনা করি। তাদের সমালোচনা করি এর মানে এই না যে আমি তাদের ক্ষতি চাচ্ছি।

প্রশ্নঃ

নাস্তিক্যবাদের বিরুদ্ধেই লেখেন কেন আর কোনো বিষয় নাই?

উত্তরঃ

নাস্তিকরা যখন ইসলাম নিয়ে রেফারেন্স দেয়ার নামে বানিয়ে বানিয়ে মুক্তচিন্তায় ইসলাম নিয়ে মিথ্যাচার করে তখন একজন মুসলিম হিসেবে সত্যিটা প্রকাশ করা আমার অধিকার। আমার লেখা গুলো পাঠ করলেই আপনি বুঝতে পারবেন সব।

যাদের গল্প উপন্যাস ভাল লাগে, তারা সেটা নিয়ে লিখবে। যাদের রাজনীতি নিয়ে লিখতে ইচ্ছা তারা তা নিয়ে লিখবে। কেউ ফুল পাখী নিয়ে লিখলে তো জিজ্ঞেস করা হয় না, সারাক্ষণ ফুল পাখী নিয়ে কেন লেখে? যারা রাজনীতি নিয়ে সবসময় লেখে, কথা বলে, তাদেরও এরকম জিজ্ঞেস করা হয় না। নাস্তিকধর্মের প্রশংসা করে যারা, তাদেরও কেউ কখনো জিজ্ঞেস করে না শুধু নাস্তিকধর্ম নিয়ে কেন লেখেন। শুধু নাস্তিকদের সমালোচকদেরই ঘুরে ফিরে একই প্রশ্ন করা হয়। 

তাই এই প্রশ্নটা যে ইন্টেলেকচুয়াল মুসলিমদের সমালোচনার হাত থেকে রেহাই পাওয়ার ব্যর্থ কৌশল, তা বোঝা যায়। কিন্তু এভাবে হয় না। পারলে আমার লেখার পয়েন্ট ধরে ধরে জবাব দিন। আর অন্যান্য বিষয়ে আপনি নিজেই লিখুন। অন্যে কেন অমুক বিষয়ে লিখলো না, এই অভিযোগ হাস্যকর। অন্যকে উপদেশ দেয়ার চাইতে আপনার নিজের লিখে ফেলাই উত্তম।

প্রশ্নঃ

ইসলাম কেন প্রচার করেন?

উত্তরঃ কারণ ইসলাম একমাত্র সত্য। তাছাড়া আপনি আপনার নাস্তিক্যধর্ম বিশ্বাস করতে পারেন। আপনার নাস্তিক্যবাদ, আপনার মুক্তচিন্তা হচ্ছে আপনার বার্বিডল বা খেলার পুতুলের মতো। আপনি এই পুতুল দিয়ে বাসায় খেলবেন নাকি পুতুলকে দিয়ে মুক্তচিন্তা করাবেন নাকি গায়ে তেল মাখাবান নাকি পুতুলের সাথে চিন্তার মুক্তিতে লাইভে এসে সহবাস করবেন সেটা আপনার ব্যাপার। কিন্তু ইসলাম নিয়ে মিথ্যাচার করবেন না। মানুষকে ইসলামের বিরুদ্ধে অপব্যাখ্যা দিবেন না। যদি দেন তাহলে অবশ্যই আমি আপনাদের মিথ্যাচারের তীব্র সমালোচনা করবোই। করতে থাকবোই। আপনার ইসলামবিরোধী বিশ্বাস আপনার কাছে রাখুন। কিন্তু সেটা যদি আমার কাছে এসে বলেন তাহলে আপনার মুক্তচিন্তা থেকে নির্গত হওয়া মিথ্যাচারটা তো আমাকে ধরিয়ে দেখিয়ে দিতে হবে। 

প্রশ্নঃ

সাধারণ মানুষরা নীতি নৈতিকতা কোথা থেকে শিখবে?

উত্তরঃ নাস্তিকদের মতো যদি সাধারণ মানুষরা যদি মুক্তচিন্তায় বিশ্বাসী হয় তাহলে এখানে ক্ষতিই বেশি হবে। ধরুন একজন আধুনিক মানুষ হিসেবে নিজের মায়ের সাথে সেক্স করার জন্য তাকে বিছানায় নিয়ে যাওয়া আপনার জন্য খুবই নিন্দনীয় মনে হবে। কিন্তু মুক্তচিন্তার নাস্তিকদের কাছে এসব ব্যক্তিগত ব্যাপার। আমরা মুসলিমরা যতই নাস্তিকদেরকে বুঝাই না কেন যে নাস্তিক্যধর্ম বর্বর অসভ্য এরপরেও তারা মুক্তচিন্তা ত্যাগ করতে পারে না।

আপনার বিবেক, বুদ্ধি, আধুনিক মূল্যবোধ, আধুনিক ধ্যান ধারণা আপনাকে এইসব নাস্তিকিও বিশ্বাসের কাজ করতে বাধা দেবে। যদিও আপনি ভাবেন, নৈতিকতার একমাত্র মানদণ্ড আপনার চতুষ্পদ প্রাণী থেকে বিবর্তিত মগজটিই। তারপরেও আপনি আপনার বিবেক বুদ্ধি খাটিয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন। আপনি যখন বিবেক বুদ্ধি ব্যবহার করছেনই, তখন আপনার জন্য আসলে নাস্তিকদের মতো মুক্তচিন্তা করাটাই অগুরুত্বপুর্ণ।

নাস্তিকদের মতো আপনি যদি দাবি করেন যে নৈতিক হতে হলে ধর্ম গ্রন্থের দরকার নেই তাহলে আপনাকে মুক্তচিন্তায় এটা বিশ্বাস করতে হচ্ছে যে কোনো নাস্তিক চাইলে নিজের মায়ের সাথে সেক্স করতে পারবে। সম্মতি থাকলে পিতার সাথে তার নিজ নাস্তিক মেয়ে সহবাস করতে পারবে। একজন নাস্তিক পরিবারের বাবা,মা ,মেয়ে এবং ছেলে চাইলে তারা সম্মতিতে একত্রে ৪ জন সহবাস করতে পারবে এটিও নাস্তিক্যধর্মে জায়েজ।

আপনি কিন্তু আপনার মার্জিত বিবেক ব্যবহার করে সেগুলো মুক্তচিন্তায় করেন না। নাস্তিক হলে মুক্তচিন্তায় সেসবকে বৈধ মনে করতে হবে। আর যদি নাও করেন তাহলে অন্য নাস্তিকরা চাইলে করতে পারবে এই বিশ্বাস করতে হবে। তাহলে নাস্তিকদের মুক্তচিন্তাকে বাদ দিয়ে নিজের বিবেককে মার্জিত রাখার জন্য আল্লাহর অবতীর্ণ কিতাবে আস্থা রাখলে দোষ কোথায়? মহাবিশ্বের স্রস্টা যদি আসলেই থেকে থাকেন তাহলে কি তাঁর দেয়া বিধানে খারাপ থাকতে পারে? অবশ্যই না। তাই দুনিয়াতে সত্যিটা আপনাকেই সন্ধান করে নিতে হবে।

নৈতিক হতে হলে ধর্মের দরকার নাই- যদি তাই হয় তাহলে নৈতিক হতে হলে বিবেকের দরকার নাই কেন হবে না? সমাজের দরকার নাই কেন হবে না? রাষ্ট্রের দরকার নাই কেন হবে না? আইনের দরকার নাই কেন হবে? নাস্তিক্যধর্মে লেংটা হয়ে রাস্তায় চলাফেরা করা যাবে,কুকুরের মতো মুক্তচিন্তায় যৌনকর্ম করা যাবে। নিজের বাবার সাথে সমকামীতা চর্চা করা যাবে। এগুলো তো মানুষের নৈতিকতা হতে পারে না। এর চেয়ে দাসীর সাথে সহবাস করাও হাজার গুণে ভালো। নাস্তিকরা চাইলে মুক্তচিন্তায় এই বিধান গুলো অবিশ্বাস করতে পারে কিন্তু একজন মুসলিম কখনো তা পারে না। 

আল কুরআন, সুরা বাকারা ২:১৯৫ আয়াতে বলা আছে, 

তোমরা নিজেদের জীবন ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিও না আর মানুষের সাথে ভাল ব্যাবহার করো , নিশ্চয় আল্লাহ্‌ভাল ব্যাবহারকারীদের ভালবাসেন

আল কুরআন, সুরা নিসা ৪:৩৬ আয়াতে বলা আছে,

পিতামাতা, আত্মীয় স্বজন এতিম, অভাব গ্রস্থ, কাছের প্রতিবেশি, দুরের প্রতিবেশি, সঙ্গী-সাথী,মুসাফির ও তোমাদের অধিকারভুক্ত দাস দাসীদের প্রতি উত্তম ভাল ব্যাবহার করবে । নিশ্চয় আল্লাহ্‌অহংকারীদের পছন্দ করেন না

আল কুরআন, সুরা নিসা ৪:৫৮ আয়াতে বলা আছে,

নিশ্চয় আল্লাহ্‌ তোমাদেরকে নির্দেশ দিচ্ছেন আমানত সমূহ তাদের প্রাপকদের কাছে পৌছে দিতে।তোমরা যখন মানুষের মধ্যে বিচার কাজ পরিচালনা করবে তখন ন্যায়-পরায়নতার সাথে বিচার করবে।

আল কুরআন, সুরা নিসা ৪:১৩৫ আয়াতে বলা আছে, 

হে ইমানদারগণ,তোমরা ইনসাফের উপর অটল থাকো এবং খুশিমনে আল্লাহ্‌র জন্য সাক্ষী দেও যদিও সেটি তোমাদের নিজেদের অথবা পিতামাতা ও নিকট আত্মীয়দের বিপক্ষে হয়

আল কুরআন, সুরা যারিয়াত ৫১:১৯ আয়াতে বলা আছে, 

নীদের ধন সম্পদে রয়েছে অভাব গ্রস্থ ও বঞ্চিতদের অধিকার

জামে আত তিরমিজি, হাদিসঃ ১৯২২, সহিহ হাদিসঃ 

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে লোক মানুষের প্রতি দয়া-অনুগ্রহ প্রদর্শন করে না তাকে আল্লাহ্‌ তা‘আলাও দয়া করেন না।-ihadis.com

জামে আত তিরমিজি, হাদিসঃ ১৯২৩, হাসান হাদিসঃ 

আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, আবুল কাসিম রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে আমি বলতে শুনেছিঃ শুধুমাত্র হৃদয়হীন, নিষ্ঠুর ও দুর্ভাগা মানুষের কাছ থেকেই রাহমাত ছিনিয়ে নেয়া হয়।-ihadis.com

প্রশ্নঃ

ইসলাম মানে কি ? মুসলিম আসলে কে ?

উত্তরঃ

ইসলাম মানে হচ্ছে শান্তি। মানব জীবনের প্রতিটি উপকারী দিক ইসলাম বর্ণনা করে। যে নিজেকে আল্লাহর কাছে নিজেকে সমর্পণ করে দেয় উনাকে বলা হয় মুসলিম। ইসলাম আপনাকে ভালো মানুষ হতে শিক্ষা দেয়। জীবনের প্রত্যেক দিকে ইসলাম আপনাকে এমন সমাধান দিবে যেটা আপনি সঠিকভাবে পালন করলে দুনিয়াতেও সফল হবেন আর পরকালেও সফল হবেন।

আল কুরআন, সুরা বাকারা ২:১৯৫ আয়াতে বলা আছে, 

তোমরা নিজেদের জীবন ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিও না আর মানুষের সাথে ভাল ব্যাবহার করো , নিশ্চয় আল্লাহ্‌ ভাল ব্যাবহারকারীদের ভালবাসেন।

একজন মুসলিম মিথ্যা কথা বলে না। একজন মুসলিম কখনো মানুষদের ধোঁকা দিবে না। একজন মুসলিম কখনো সমাজে অন্যায় কাজ করবে না । একজন মুসলিম কখনো নারীদের সাথে নোংরা আচরণ করবে না একজন মুসলিম কখনো অন্যকে গালি দিবে না । একজন মুসলিম কখনো ফেতনা ফাসাদ সৃষ্টি করবে না। এটাই ইসলামের শিক্ষা। ইসলামের আদর্শ।

জামে আত তিরমিজি, হাদিসঃ ১৯২২, সহিহ হাদিসঃ 

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে লোক মানুষের প্রতি দয়া-অনুগ্রহ প্রদর্শন করে না তাকে আল্লাহ্‌ তা‘আলাও দয়া করেন না।-ihadis.com

সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিসঃ ৩৬৮৪, হাসান হাদিসঃ 

সা’দ বিন উবাদাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, আমি জিজ্ঞাসা করলাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! কোন প্রকারের দান সর্বোত্তম? তিনি বলেনঃ পানি পান করানো।-ihadis.com

জামে আত তিরমিজি, হাদিসঃ ১৯৬৪, হাসান হাদিসঃ 

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ মু’মিন ব্যক্তি চিন্তাশীল, গম্ভীর ও ভদ্র হয়ে থাকে। আর পাপিষ্ঠ ব্যক্তি প্রতারক, ধোঁকাবাজ, কৃপণ, নীচ ও অসভ্য হয়ে থাকে।-ihadis.com

প্রশ্নঃ

ইসলামের ভিত্তি কি?

উত্তরঃ

ইসলামের ভিত্তি হচ্ছে সত্য। যাকে যুক্তি দিয়ে ভাঙ্গা যায় না। ইসলাম জ্ঞান অর্জনকে অনেক উৎসাহিত করে।

আল কুরআন, সুরা তাহা ২০:১১৪ আয়াতে বলা আছে, 

বল হে আমার প্রতিপালক আমার জ্ঞান বৃদ্ধি করো।

আল কুরআন, সুরা বাকারা ২:২১৯ আয়াতে বলা আছে,

আল্লাহ্‌ তোমাদের জন্য আয়াত সমূহ স্পস্থভাবে বর্ণনা করেন, যাতে তোমরা চিন্তা করো

আল কুরআন, সুরা মুহাম্মদ ৪৭:২৪ আয়াতে বলা আছে,

তারা কি কুরআন নিয়ে চিন্তা ভাবনা করে না নাকি তাদের অন্তর সমূহ তালাবধ্য?

আল কুরআন, সুরা নাহল ১৬:১২৫ আয়াতে বলা আছে,

তুমি তোমার রবের পথে হিকমাহ ও সুন্দর উপদেশের মাধ্যমে দাওয়াত দেও এবং সুন্দরতম পন্থায় তাদের সাথে বিতর্ক করো

প্রশ্নঃ

ইসলাম ও নাস্তিকতা দ্বন্দ্বের শেষ কোথায়?

উত্তরঃ চিন্তার মুক্তির আন্দোলন নামে ইসলামের বিরুদ্ধে বানিয়ে বানিয়ে মিথ্যাচার করা বাদ দিয়ে ভিন্নমতকে গ্রহণের মার্জিত চিন্তাভাবনা থাকলে অনেকটাই দ্বন্দ্ব কমে আসবে। যুক্তির বিরুদ্ধে যুক্তি, মতের বিরুদ্ধে মত, প্রমাণের বিরুদ্ধে প্রমাণ, আলোচনা এবং সমালোচনার পরিবেশই এই দ্বন্দ্ব শেষ করতে পারে। কিন্তু প্রায়শই দেখা যায় মুসলিমরা যখন নাস্তিকদের বর্বর ভিডিও সবাইকে দেখাতে চায় তখন নাস্তিকরা মুসলিমদের আইডিতে, পেইজে, চ্যানেলে রিপোর্ট মেরে মুসলিমদের দমিয়ে রাখতে চায়। এমনকি কোনো মুসলিম নাস্তিকদের লাইভে গিয়ে যুক্তিতর্ক করতে চাইলে নাস্তিকরা লাত্থি মেরে মুসলিমকে লাইভ থেকে বের করে দেয়। মুসলিমদের মিউট করে রাখা হয়। এটাই প্রমাণ করে যদি নাস্তিকরা ক্ষমতা পায় তাহলে মুসলিমদেরকে মুক্তচিন্তায় হত্যা করতে নাস্তিক দ্বিধা করবে না। এভাবে যুক্তির বদলে যুক্তি, কলমের বিরুদ্ধে কলম কিভাবে চালানো যাবে তা পাঠকদের হাতেই রেখে দিলাম।

এমডি আলী

যিনি একজন লেখক, বিতার্কিক ও গবেষক। বিভিন্ন ধর্ম ও মতবাদ বিষয় পড়াশোনা করেন। ইসলামের সত্যতা মানুষের কাছে ছড়িয়ে দিতে চান। “সত্যের অনুভূতি” উনার লেখা প্রথম বই। “ফ্যান্টাস্টিক হামজা” দ্বিতীয় বই। জবাব দেবার পাশাপাশি নাস্তিক মুক্তমনাদের যৌক্তিক সমালোচনা করে থাকেন।

Previous Post Next Post