কু-যুক্তির আফিম

কু-যুক্তির আফিম

লিখেছেনঃ এম ডি আলী

টাইটেল দেখেই অবাক হচ্ছেন ! অবাক হওয়ার কিছুই নাই কারন সব ক্ষেত্রে অতিরিক্ত মাত্রায় অবৈধ যুক্তি প্রয়োগ অনেকটা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক কেন সেটা একটু পরেই ধরতে পারবেন । তারা নিজেদের নাস্তিক পরিচয় দিতে এখন লজ্জা পায় কেন পায় জানেন কারন এখন আলহামদুলিল্লাহ মুসলিমরা সতর্ক তাদের কোন নাস্তিক ইসলাম নিয়ে কিছু প্রশ্ন করলে তারা পাল্টা জিজ্ঞাসা করে আরে ভাই আগে নিজের নাস্তিক ধর্মের ভিত্তি কি সেটা বলেন ? নাস্তিক ধর্মের কি কি হালাল আর কি কি হারাম এইটা বলেন ? তখন জবানে নাস্তিক ধার্মিক বলে “নাস্তিক আসলে কোন ধর্ম না” তখন আমরা পাল্টা বলি যদি ধর্ম না হয় তাইলে আপনি সারাদিন ইসলাম নিয়েই বিদ্বেষীটা ছড়ান কেন অনলাইনে কি আপনাদের উদ্দেশ্য ভাইজান । নাস্তিক মানে যদি স্রষ্টায় অবিশ্বাস করা হয় তাইলে সেটা নিয়েই থাকেন ইসলাম নিয়েই দেখি আপনাদের বেশি মাথা বেথা আসল ব্যাপার কি ! হিসাব কি বুঝেননি আপনি !!! ইসলাম নিয়ে কোন প্রশ্ন আপনি করতেই পারেন কিন্তু অযৌক্তিক প্রশ্ন করলে তখন তো হাস্যকর লাগে বেপারটা তাই না !

নাস্তিকরা প্রশ্ন করে আল্লাহ নাকি আরশের ওপর ছিল তো আরশ কথায় ছিল ? পানির ওপর । পানি কথায় ছিল আর আগে কি ছিল ? এই প্রশ্নের জবাবে আমি এটাই বলব এর উত্তর আমার জানা নাই । তখন নাস্তিকরা খুব হাসি দিয়ে এমন এক ভাব করে মনে হয় নাস্তিক ধর্ম জিতে গেছে আহারে ! হাসির কথা বল এই টাইপের প্রশ্ন যদি আমরাই আবার করি যেমন ধরেন, নিউটনের মাথায় যে আপেল পরেছিল সেটা কি সাদা ছিল নাকি লাল ? এককোষী ব্যাকটেরিয়া থেকে যে দ্বিতীয় কোষ ছিল সেটা লাল ছিল কেন অথবা সেটা যে লাল এর বাস্তব প্রমান কি ? একটি মশা থেকে হাতি কিভাবে এল বিবর্তনের মাধ্যমে ? আবার যদি প্রশ্ন করেন ৫০ কোটি বছর পরে ২ তারিখে কি হবে এখন আমাদের দেখান , আর আপনি যা দেখাবেন সেটা যে বাস্তব সত্য এটার প্রমান কি ? কোন জবাব কোন নাস্তিক ধার্মিক দিতেই পারবে না কারন এইসব গুলাই আমাদের রেঞ্জের বাইরের প্রশ্ন অথবা আমি যদি এইভাবে বলি এই ধাঁচের প্রশ্ন আসলে কোন প্রশ্ন না মানে অবান্তর প্রশ্ন কারন আল্লাহ্‌র আরশের নিছে পানি কথায় ছিল , আরশ দেখতে কেমন ছিল লাল নাকি সাদা ইত্যাদি এরকম যত প্রশ্ন আছে মুলত এইগুলা কোন প্রশ্নই না আর এইগুলার উত্তর আমাদের না জানলেও গুনাহ হবে এরকম কোন কথা অথবা  মানবতা বিরুধি এমন কিছুই না । সব প্রশ্নের জবাব হয় কিন্তু অযৌক্তিক প্রশ্নের কোন জবাব হয় না ।

যুক্তি আমি পছন্দ করি তাই বলে কুযুক্তি আর গোঁজামিল দিয়ে যারা নিজেদের মুক্তমনা ওরফে সংশয়বাদী দাবি করে তারা আর যাই হোক অবশ্যই তাদের মানুষিক প্রবলেম আছে । আমি এক মহিলাকে প্রশ্ন করেছিলাম যে আপনি অফিসে চাকরি করে তো আপনি যুক্তিবাদী বা মুক্তমনা হয়ে বসের কথা মানেন কিভাবে ? কেন ঐখানে যুক্তিদেন না যে বস এ যুগে আপনার অফিসের নিয়ম চলে না আমাকে স্বাধীনতা দিতে হবে কারন আমি বাকস্বাধীনতায় বিশ্বাসী । আমি ধর্মের নিয়মি মানি না আর আপনার অফিসের নিয়ম মানব তাহলে ধর্ম আর আপনার অফিসের মাঝে কি তফাৎ । আমাকে স্বাধীনতা দেন বস আমার যখন মন চায় অফিসে আসব যখন মন চায় আসব না আপনি নাকি অফিসের কর্মকর্তাদের প্রতি খুব দয়াবান তাই আমাকে মাস শেষে ৫ কোটি টাঁকার চেক এডবান্স দিতে হবে …………………বাকিতা ইতিহাস ……আসলে কবিরা এখানে নিরব কারন যত চেতনা সব ইসলামের ওপর ঝাড়ে আজীব লাগে না আপনাদের ?

মানুষ এখন নাস্তিক ধর্মের অসারতা নিয়ে খুব সোচ্চার । এমন সব উদ্ভট ফাউল আর বাচ্চাসুলভ প্রশ্ন করে যা ভাবাও যায় না । ১+১= ২ হয় তাইবলে কেন ৪২০ হল না এটা নিয়ে গবেষণা করলে তো অংকের প্রতি আপনার ঘৃণা আসবেই । এই পদ্ধতি ওরা ইসলামের ক্ষেত্রে প্রয়োগ করে যা হাস্যকর । এটা কেন এমন, অমন হল না কেন , এমনি হল কেন ? যখন আমরা তারপরেও জবাব দেই প্রমান সহ তখন তারা গ্রহন করতে চায় না । কারন ওদের অবস্থা হয়েছে এমনঃ ধরেন এলাকার এক ভদ্র মানুষ রাস্তার দেওয়ালে লিখে দিয়েছে

              “এখানে ময়লা ফেলবেন না,ফেললে ৫০০ টাঁকা জরিমানা”

এখন ঐ ভদ্র লোকের সাথে এক নাস্তিকের শত্রুতামী আছে । এ নাস্তিক করল কি “কমা” পিছে আনল ফলে লাইনটি হলঃ

            “এখানে ময়লা ফেলবেন, না ফেললে ৫০০ টাঁকা জরিমানা”

লাইনটি মিথ্যাচার করে ঐ নাস্তিক বলছে দেখ দেখ এ লোক কত খারাপ দেওয়ালে কি লিখেছে । কুরআন সুন্নাহের তথ্য কে একই ধাঁচে বিকৃত করে, ভুল রেফারেন্স দিয়ে এরা ইসলামকে কালার করতে চায় আবার মিথ্যাকথা বলে তারা দাবি করে তারা নাকি যুক্তিবাদী । ছিঃ যুক্তির আফিম কিন্তু ভাল না ….

আমার নিজেরই কিছু ঘটনা শেয়ার করছি শুনুন । ক্লাসে Sociology টিচার কার্লমার্ক্সের “দাণ্ডিক বস্তুবাদ” পড়াচ্ছেন । তিনি বললেন সব কিছুই হল বাস্তব আর দন্দের প্রক্রিয়ায় বিকশিত হয় , যা আছে তাই বাস্তব । আমি বললাম স্যার আমার একটি প্রশ্ন আছে । স্যার বলল, বল । প্রশ্ন করলাম আমাদের বিবেক, দান্দিক বস্তুবাদ এর কোন পর্যায় পড়ে ? স্যার বলল পরে এর উত্তর দিব । আমি কলেজ শেষ করেছি বহু দিন হয়েছে জবাব তিনি দেন নি আর মজার ব্যাপার কথা হল যে আমি নিজেও জানি এর জবাব আসলে দেওয়া পসিবল না কারন কার্লমার্ক্সের এই মতবাদ দিয়ে বিবেক কে মাপা যায় না । আমার ঐ স্যার ইসলাম বিদ্বেষী ছিলেন না । আর আমি মুলত জানার জন্যই প্রশ্ন করতাম ।

ক্লাসের সময় এক স্টুডেন্ট ঐ স্যারকে প্রশ্ন করে স্যার ধর্ম বিষয়ে একটু বলেন । স্যার সাথে সাথে বলল কার্লমার্ক্স বলেছেন ধর্ম হল আফিমের মত । এটা নেশার মত । আমি সাথে সাথে বললাম আমার একটি প্রশ্ন আছে । স্যার আমাকে বললেন আমি জানি তুমি এখানে প্রশ্ন উঠাতে পার । প্রশ্ন পরে করো । স্যার শেষে এই বলে ক্লাস শেষ করলেনঃ ধর্ম আমাদের ভাল কাজের নির্দেশ দেয় আর খারাপ কাজ হতে বাচতে বলে । ক্লাসের বাইরে যাওয়ার পর একাকি প্রশ্ন করি তাঁকে স্যার ধর্ম আমাদের ভাল কাজের আদেশ ও মন্দ কাজ হতে বিরত থাকতে বলে আবার ধর্ম নাকি আফিম, আফিম একটি নেশা যা খারাপ আর আপনি শেষে বললেন ধর্ম ভাল কাজের আদেশ দেয় । আমি বুঝলাম না ব্যাপারটা ? স্যার আমাকে বলেছে দেখ আরও পড়াশোনা করো আর আমি জানি তুমি কি বলতে চাচ্ছ সুতরাং এইসব বিষয় শুদু জানার জন্য পড় তাইলেই হবে । আসলে আমি স্যারের সাথে খুব ফ্রি ছিলাম এবং তাঁকে খুব সম্মান করতাম তাই স্যারও আমাকে খুব স্নেহ করতেন কিছুই মনে করতেন না আমার প্রশ্নে ।


কলেজ জিবনে এই ধরনের ঘটনা আমার সাথে কতিপয় ঘটেছে তাই আরকি আপনাদের সাথে বলা । অনেক বন্ধু আমাকে আমাদের ভূগোল স্যারকে নিয়ে অনেক কথা বলেছে । ইসলাম নিয়ে নাকি সে আজেবাজে প্রশ্ন করে । আমার ভূগোল নেই এরপরেও একদিন স্যারের ক্লাস করব বলে ভেবেছি ।লেকচারের পাশাপাশী হটাত আমাকে স্যার প্রশ্ন করল দেখ বাবা তুমি হয়ত নামায কালাম পড় , অল্প অল্প দাড়িও উঠেছ ভাল ভাল । আমি জানতাম সে আমাকে প্রশ্ন করবেই এটা উনার স্বভাব এই যা , সবার সামনে আমাকে প্রশ্ন করলো দেখ আল্লাহ নাকি আদম (আ) কে জান্নাতে রেখে কেন আবার গন্দম ফলটা খেতে নিষেধ করলো,কেন আবার শয়তানকে পিছে লাগিয়ে দিল ? সবাই আমার দিকে তাকিয়ে আছে এটা বুঝতে পেরে আমি খুবিই নার্ভাস হয়ে গেলাম । আমি উত্তর দিতে যাব এমন সময় ক্লাসের ঘণ্টা বেজে গেল ।

পরে স্যারকে বললাম স্যার আমি তো প্রশ্নের জবাব টি দিতে পারিনি এখন কি দিব, স্যার বললেন আমি এখন ফ্রি নাই পরে দিও যখন আমি ফ্রি হব । স্যার আপনি ফ্রি আছেন কখন , প্রশ্ন করলাম আমি । ওমুক সময়ে ফ্রি আছি ।

একদিন টিফিন টাইমের সময় গেলাম স্যারের কাছে , স্যার আমাকে দেখে একটি হাসি দিল হয়ত ভেবেছি একটি প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার জন্য আমি কত সিরিয়াস ! যাই হোক  স্যার আমাকে সেদিন যে প্রশ্ন গুলা করেছেন এর উত্তর আসলে খুবিই সোজা । কেননা আপনি যদি নরমাল ভাবে দেখেন তাইলেই হয় যেমনঃ স্যার আপনি আমাদের ভালবাসেন ? হ্যাঁ । দেখুন আপনি আমাদের স্নেহ করেন ভালবাসেন অথচ আপনি কিন্তু পরিক্ষায় ফেইল অপশন রেখে দিয়েছেন , এখন আমি যদি বলি যে স্যার আপনি এত দয়ালু তাইলে পরিক্ষায় কেন ফেইল এর অপশন রাখলেন , MCQ এক্সামে কেন ৩ টি ভুল উত্তর থাকে আর একটি শুদ্ধ জবাব থাকে ? খেয়াল করুন এর জবাব কিন্তু সহজ টা হল আমাদের ভালর জন্য । একই হবাব ঐ ক্ষেত্রে আল্লাহ আমাদের ভাল চান এখন সেটা কিভাবে টা আমাদের অজানা । আপনি যেমন পরিক্ষায় ফেইল অপশন রেখেছেন একইভাবে আল্লাহও বলেছেন যে ঐ ফল খেলে তোমরা ফেইল করবে । আপনি যেমন MCQ এক্সামে ৩  টি ভুল জবাব রেখেছেন একইভাবে আল্লাহও একটি অপশন অর্থাৎ শয়তানকে ভুল অপশনে রেখেছেন । আশা করি বুঝতে পেরেছেন ।

আরেকদিন স্যার আমাকে প্রশ্ন করে আল্লাহকে কেন আমি ভয় করব তিনি যদি দয়ালু হয় । উত্তরে আমি বললাম আপনি এই ভয় বলতে কি চোর ডাকাতের অথবা ভূতের ভয় বুঝাচ্ছেন – এটি ভুল স্যার । আপনি আমার স্যার আপনাকে আমি সম্মান করি ভয় করি এর মানে এই না যে আপনার ভয়ে আমি লেপের নিচে শুয়ে থাকব । মানে এইটাকে “সম্মানের ভয়” বললে চলবে । যদি আপনাকে আমি সম্মান করি ভয় না করি তাইলে সম্মানও আমি আপনাকে করতে পারব না অবশ্যই সম্মানের সাথে সাথে আপনাকে ভয় করতেই হবে কিন্তু এই ভয় হল ভালবাসার ভয় এটার সাথে ডাকাতটি ভয়ের কোন সম্পর্ক নাই । আরও অনেক কিছু নিয়ে কথা বললাম আলহামদুলিল্লাহ এরপর থেকে তিনি এই টাইপের প্রশ্ন আর করতেন না । মজার কথা হল স্যার দাড়িও রেখেছিল শেষ দিকে ।

মুলত আমি যেটা বুঝাতে চাচ্ছি আপনি যুক্তিবাদী হন আমার সমস্যা নাই কিন্তু কুযুক্তির আফিম খেয়ে নাস্তিক ধার্মিকদের মত শিশুময় প্রশ্ন করে নিজেকে নিচু করবেন না প্লিজ ।

মুসলিমঃ নাস্তিকরাও বিশ্বাস করে আর বিশ্বাস করে বলেই তারা যুক্তি দেয় । তাদের যুক্তিতে যদি তাদের নিজেদের বিশ্বাস না থাকত তাহলে তারা কি যুক্তি দিত ।

নাস্তিকঃ যুক্তি কি বিশ্বাসের উপর প্রতিষ্ঠিত নাকি বাস্তবতা এবং সত্যের উপর প্রতিষ্ঠিত ?

মুসলিমঃ হাহাহা

নাস্তিকঃ হাসলেন কেন উত্তর দিন ।

মুসলিমঃ নাস্তিকরা যে যুক্তি দেয় তাদের স্ব যুক্তির পিছনে বিশ্বাস থাকার কারনেই দেয় নাহলে দিত  না । সব কিছু নিজে নিজেই হয়েছে এটা বিশ্বাস নাকি যুক্তি ? অবশ্যই বিশ্বাস । আপনি একটু আগে যেটা বললেন এর উপর আপনার বিশ্বাস আছে নাকি নাই ? যদি না থাকে তবে আপনার কথা ভেলু নাই যদি থাকে তাহলে আছে । আশা করি বুঝাতে পেরেছি ।

নাস্তিকঃ না আপনি মনে হয় ভুল বললেন কারন প্রত্যক্ষ প্রমানের প্রয়োজন হয় না আর সত্যকে বিশ্বাস এর কারন সত্য সত্যিই থাকে তাকে প্রমান করার দরকার নাই আর বিশ্বাসেরও দরকার নাই । বিশ্বাস দুই প্রকার । তথ্য প্রমানের আলোকে বিশ্বাস আর প্রমান করা যায় না তবুও সত্য বলে মানুষ বিশ্বাস করে যা অন্ধ বিশ্বাস । আমি যেটি বিশ্বাস করি তা সত্য, বাস্তবতার উপর প্রতিষ্ঠিত বিশ্বাস । কিন্তু এটাকে আমি বিশ্বাস না বলে বাস্তবতা সত্যিও বলতে পারি আর বাস্তবতাকে মেনে নেওয়ার জন্য বিশ্বাসের প্রয়োজন হয় না ।

মুসলিমঃ তাহলে এইমাত্র যা বললেন এটা যে মিথ্যা না সেটা কোন সত্য দ্বারা বুজলেন ? নিজে নিজে সব কিছুই হয়েছে এটা কি আপনি নিজ চক্ষে দেখেছেন জনাব ? আপনার কথা অসারতার জন্য এটাই এনাফ ।

নাস্তিকঃ এটি অবশ্যই একটি যুক্তি এবং স্বপক্ষে অনেক তথ্য প্রমান আছে ।

মুসলিমঃ স্বচক্ষে প্রমান নাই আপনার কথা থেকে বুঝা যাচ্ছে । স্বপক্ষে “নিজে নিজেই সব হয়েছে” আপনি দেখেননি আর এর বিপক্ষেও প্রচুর তথ্য প্রমান যুক্তি আছে । আচ্ছা সেই দিকে গেলাম না একটু কাছে আসি । আপনার মাথায় যে বিবেক আছে এটা কি বাস্তব দৃশমান ? না । তাহলে ?

নাস্তিকঃ আমি দেখেনি ঠিক আছে তবে এ তথ্যটি একটি বাস্তবিক গবেষণা এবং যাচাই এর মধ্য দিয়ে এসেছে  সেহেতু এটি অন্ধ বিশ্বাস নয় । আমার শরীরে বিবেক আত্মা রূহ বলতে আলাদা কিছুই নেই । আমার মন ও বিবেক বলতে ব্রেইনের কার্যাবলীকেই বুঝায় ।

মুসলিমঃ কলমের মদ্ধে তাহলে প্রান আছে আপনার কথা অনুযায়ী ? যদি না থাকে তাহলে কি চলে গেলে মানুষ মারা যায় ?

নাস্তিকঃ কলম জড়বস্তু আর মানুষের শরীর বয়াল চলে অনেক গুলো মেশিনের সমন্বয়ে । এর মধ্যে কিছু অংশ বিকল হলেই মৃত্যু ঘটে । আপনি বলেন মানুষের শরীরে যদি রূহ বলতে আলাদা কিছু থাকে তার লিভার নষ্ট হলে সে কেন মারা যায় ? নষ্ট হয়েছে লিভার বা কিডনি কিন্তু রহ বলছে আলাদা জিনিস আছে – এটা কিন্তু হয়নি !

মুসলিমঃ এখন বলেন কলম কেন জড় আর মানুষ কেন জড় বস্তু হল না ? আর বিজ্ঞান দিয়ে আপনি প্রমান দেন লিভার নষ্ট এর সাথে মৃত্যুর সম্পর্ক কি আর কলমের কালি শেষ হলে কেন কলম মারা যাবে না > অথবা এটাও বলেন কলম কেন মানুষ এর মত একটি ব্রেন পেল না আপনাদের বিবর্তনের ধারায় !!!

নাস্তিকঃ আগে আমার প্রশ্নের উত্তর দেন ।

মুসলিমঃ কিভাবে দিব আপনিই বলেন যেখানে আগেই আপনাকে প্রশ্ন করে কোন জবাব পাই নি আমার প্রশ্নের জবাব না পেলে কেন আপনার প্রশ্নের জবাব দিব । বলেন ভাইজান কেন কলম কথা বলতে পারে না আর মানুষ কেন কথা বলতে পারে, কলম কেন বস্তু আর মানুষ কেন প্রানি ?

নাস্তিকঃ শোনেন আপনি যদি আমার প্রশ্নের জবাব দেন তবে নিজের জালে নিজেই ফেসে যাবেন ।

মুসলিমঃ আপনিও কান হাতির মত করে শুনে রাখুন এটি আপনার একটি চালাকি কারন আপনার উত্তর আমার প্রশ্নেই ছিল যেখানে আপনি আমার কোন প্রশ্নের জবাব দেননি । সুতরাং কে কথায় ফেসে যাবে এটা সময় হলে একদিন আপনি ভেবে দেখবেন ।


আমি একটা কথা প্রায়ই বলি এরা নিজেদেরটা ভাল বুঝে অন্যেরটা বুঝেও মা বুঝার ভান করে যেমন আপনারা উপরের ঘটনা থেকে জানতে পারলেন । কুযুক্তির আফিম খেলে যা হয় আরকি তাই যেই মানুষ বড় বড় অফার পেয়েও তাঁর বানীর জন্য জীবন দিয়ে দিল তাঁকে বিশ্বাস করব না তো কাকে করব ?

অনেক নাস্তিককে এ ক্ষেত্রে বলতে শোনা যায় তারাও নিজেকে নবী দাবী করে আর এটাও বলে ঘোড়ার ডিম নামের স্রষ্টা নাকি তাদের দ্যূত বানিয়েছেন । আমি তাদের এই হাস্যকর কল্পনার জবাবে বলতে চাই আপনি যদি সতিই এই টাইপের কিছু হতেন এটা আপনার বাহ্যিক কাজে প্রকাশ পেত । হাহাহা কারন আপনাদের এই কথা প্রচার করেন ? করেন না তাহলে বুঝাই যাচ্ছে আপনাদের এই সব শুদুই কল্পনা  । এখন আসি নবী মুহাম্মদ (সা) যে সত্য । এর বাস্তব প্রমান হল তায়েফের ঘটনা কেননা তিনি সেদিন প্রচুর মার খেয়েছেন তাঁর এই সত্য দাবির জন্য । আর আপনারা জার্মানিতে পালিয়ে থাকেন ভয় পান কিন্তু কেন  ? তাই আমাদের আর বুঝতে বাকি নাই যে আপনারা একটি মিথ্যুকের বাক্স ।

শেষে এটা বলেই শেষ করব । প্রখ্যাত জার্মান বিজ্ঞানী ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক বলেছেনঃ যে ব্যক্তি সত্যিকার অর্থেই বৈজ্ঞানিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত সে ব্যক্তি মর্মে মর্মে উপলব্ধি করে যে বিজ্ঞান নামক মন্দিরের প্রবেশ পথের তোরণে লেখা আছে “তমাকে অবশ্যই বিশ্বাসী হতে হবে” এটি এমন এক গুণ যা ছাড়া কোন বিজ্ঞানী চলতে পারে না । (Max Planck, where is science going ?, Allen and unwin, 1933. page= 214)

উপরের আলোচনায় আমরা যা বুঝতে পারলামঃ

১/ সব সময় যুক্তির উপর নির্ভর করা বুদ্ধিমানের কাজ নয় ।

২/ যুক্তি দিয়ে সব সময় সব কিছু ব্যাখ্যা করা যায় না এখানে গবেষণা আস্থা বিশ্বাস প্রয়োজন ।

৩/ ইসলাম সম্পর্কে যে প্রশ্ন নাস্তিক অন্ধ বিশ্বাসীরা তুলে একই ধাচের প্রশ্ন তাদের করলে তারা উত্তর দিতে পারে না ।

৪/ কোন প্রশ্ন উত্তর কেউ জানে না এর মানে এই না যে ঐ প্রশ্নের উত্তর নাই ।

৫/ সংশয়বাদীতা নিজেকে ধোঁকা দেয়ার নাম বা এটিও একটি বিশ্বাস কারন সে তার সংশয়য়ের প্রতি বিশ্বাস না করলে সংশয় পড়ল কিভাবে ?

৬/ নাস্তিকতা একটি বিশ্বাসের নাম । নাস্তিকরা তাদের কথায় বিশ্বাস করে বলেই তারা অন্যকে নাস্তিক ধর্মে দাওয়াত দেয় । যদি তাদের নিজেদের মতবাদে তাদের নিজেরেই বিশ্বাস না থাকতো তাহলে অন্যকে কেন ভেলু লেস মতবাদে দাওয়াত দিবে ?




এমডি আলী

যিনি একজন লেখক, বিতার্কিক ও গবেষক। বিভিন্ন ধর্ম ও মতবাদ বিষয় পড়াশোনা করেন। ইসলামের সত্যতা মানুষের কাছে ছড়িয়ে দিতে চান। “সত্যের অনুভূতি” উনার লেখা প্রথম বই। “ফ্যান্টাস্টিক হামজা” দ্বিতীয় বই। জবাব দেবার পাশাপাশি নাস্তিক মুক্তমনাদের যৌক্তিক সমালোচনা করে থাকেন।

Previous Post Next Post