নবীর যুগের নারীরাও আপত্তি করতেন তার স্বামী যেন দাসীর সাথে সহবাস না করে?



গল্পের বিষয়ঃ নবীর যুগের নারীরাও আপত্তি করতেন তার স্বামী যেন দাসীর সাথে সহবাস না করে?
লিখেছেনঃ এম ডি আলী

খগেনঃ কিরে এম ডি আলী কেমন আসিস ?
এম ডি আলীঃ হুম । ভাল আছি । আপনি যদি মানুষকে সম্মান দিয়ে কথা বলেন এতেই বেশি মানবতা প্রকাশ পাবে বলে আমি বলে করি নাইলে আপনার জন্য আপনার নাস্তিক ধর্ম মান ইজ্জত ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে তো !

খগেনঃ হইসে থাক থাক , তকে আর এত উপদেশ দিতে হবে না । পড়াশোনা কি করিস নাকি সারাদিন ফেসবুকে পরে থাকিস ?
এম ডি আলীঃ সারাদিন আপনাদের মত ফেসবুকে দিতে পারলে তো ভালই হত , আমিও সেটাই চাই কিন্তু ছাত্র মানুষ তাই এত সময় দিতে পারি না ।
খগেনঃ তকে একটি প্রশ্ন করি পারলে উত্তর দে
এম ডি আলীঃ আমি চেষ্টা করব ইনশা আল্লাহ ।

খগেনঃ এই যে হাদিসে আছেঃ * মুয়াত্তা ইমাম মালেক, ২ খণ্ড, পৃষ্ঠাঃ ২৩৬, রেওয়ায়ের ১৩ = আবদুল্লাহ ইবন দীনার (রহঃ) হইতে বর্ণিত, তিনি বলিয়াছেনঃ বয়স্কদের দুধ পানের বিষয়ে প্রশ্ন করার জন্য “দারুল কাযা” (বিচারালয় ইহা ছিল উমর ফারুক (রাঃ)-এর ঘর, তাহার শাহাদতের পর তাহার ঋণ পরিশোধ করার জন্য এই ঘর বিক্রি করা হয়, তাই ইহাকে দারুল কাযা বলা হয়)-এর নিকট এক ব্যক্তি আসিল। আবদুল্লাহ ইবন উমর (রাঃ)-এর নিকট তখন আমি উপস্থিত ছিলাম। আবদুল্লাহ ইবন উমর (রাঃ) বলিলেনঃ এক ব্যক্তি উমর ইবন খাত্তাব (রাঃ)-এর নিকট আসিয়া বলিলেন, আমার এক দাসী ছিল। আমি উহার সহিত সঙ্গম করিতাম – আমার স্ত্রী ইচ্ছাপূর্বক উহাকে দুধ খাওয়াইয়া দেয়, তারপর আমি সেই দাসীর নিকট (সঙ্গমের উদ্দেশ্যে) প্রবেশ করিলাম। আমার স্ত্রী বলিল থাম। উহার সাথে সংগত হইও না আল্লাহর কসম, আমি উহাকে দুধ পান করাইয়াছি। উমর (রাঃ) বলিলেন তোমার স্ত্রীকে শাস্তি দাও, তারপর দাসীর নিকট গমন কর, দুধ পান করানো ছোটদের বেলায় গ্রহণযোগ্য হইয়া থাকে।

আমার প্রশ্ন হলঃ

১ / তৎকালীন যুগের নারীরাও এটি মেনে নেয়নি যে তার স্বামী দাসীর সাথে সেক্স করুক ?
২/ স্বামীর দাসীর সাথে সহবাসে বাধা দেওয়ায় স্ত্রী বাধা দিলে ওমর (রা) বলছেন স্ত্রীকে শাস্তি দিতে - এটি তো অন্যায় ?
এম ডি আলীঃ দাদা আমি এর আগে কিছু বলতে পারি আপনাকে ?
খগেনঃ বল কিন্তু গোঁজামিল দিতে পারবি না ।
এম ডি আলীঃ আচ্ছা দাদা আপনি এই হাদিস প্রথমে কোথা থেকে পড়েছেন ?
খগেনঃ দেপ্প ব্যাটা , এইসব প্রশ্ন করে উত্তর থেকে পালাতে চাচ্চিশ !

এম ডি আলীঃ 😁 আমি কিন্তু জানি দাদা, আইচ্ছা ফাইন, এইবার শুনেন জবাব । আপনি প্রথম পয়েন্ট এ যেই প্রশ্ন করেছেন তৎকালীন নারীরাও মেনে নেই নি যে তার স্বামী দাসীর সাথে সেক্স করুক । কিন্তু দাদা হাদিসে মাত্র একটি মহিলার ঘটনা উল্লেখ করা হয়েছে একাধিক নারীর কথা নয় । আপনি আমাকে তৎকালীন সময়ের মাত্র ১৩ টি নারীর কউল দেখাতে পারবেন যে সে নারীরা বলেছে "কোন নারীই তার স্বামীকে যেন দাসীর সাথে সেক্স করতে না দেয় কারন আমরা এইসব পছন্দ করি না" - আপনি হয়ত দেখাতে পারবেন না আর যদি দেখাতে পারেন তাহলে আমি আপনাকে জার্মানির ৪২০ টাকার একটি ডলার উপহার দিব এইবার খুশি ?

খগেনঃ আচ্ছা কউল মানে কি ?
এম ডি আলীঃ মানে মুখের কথা অথবা উক্তি ।
খগেনঃ তর কথা বলা শেষ হইসেরে ?

এম ডি আলীঃ না দাদা । আপনি যেহেতু মাত্র একটি নারীর ঘটনা উল্লেখ করে দাবি করছেন যে, নবীর যুগের সকল নারীই বাদীপত্নীর সাথে তার স্বামী সহবাস করুক এটি আপত্তিকর তাদের কাছে! - এটি আসলে গোঁজামিল । আমি যদি আরেকটি ভদ্র ভাবে বলি তাহলে একে কুযুক্তি বলা হবে । দাদা আপনি এই হাদিস আর প্রশ্ন যেখান থেকে প্রথম পড়েছেন সেখানেই হেতাবাস নামের আরেকটি গোঁজামিল মার্কা লেখা আছে সেইটা আবার পইড়েন কেমন ! সুতরাং আপনার প্রথম প্রশ্ন ধ্বংস করে দিলাম যুক্তি দিয়ে ।
খগেনঃ কিন্তু সেই একজন নারীই কেন আপত্তি করলেন ?

এম ডি আলীঃ একেবারেই সহজ উত্তর দাদা, ঐ নারীর সাথে তার স্বামীর দাসীর জগরা অথবা মনোমালিন্যতা হয়েছে এই কারনে । আর ঐ নারী যেহেতু মুসলিম তাই তার জানা উচিত বাদীপত্নীর সাথে তার মুনিবের সহবাস ইসলামের স্বামী স্ত্রীর মতই বৈধ জৈবিক সম্পর্ক । কমন সেন্স হল একজন মুসলিম কখনো আল্লাহর হুকুমের বিরুদ্ধে নিজের দুর্বল চিন্তা মিলাবেন না তাই না ! তাই ঐ মহিলা যেহেতু মুসলিম তাই সে তো আল্লাহর হুকুম অমান্য করতে পারেন না । আর স্বামীর বাদীর সাথে যদি স্ত্রীর ভাল সম্পর্ক থাকে তাহলে তো বাধা দেওয়ার কোন কারন আমি দেখি না ।

এখন আসি আপনার দ্বিতীয় প্রশ্নের উত্তরে - দেখুন বাদীর সাথে তার মুনিব সহবাস করতে পারবে এটি ইসলামে বৈধ । এখন এই আইনের খেলাফ কেউ অবস্থান নিলে তার শাস্তি হতেই পারে । আর উপরের হাদিসে কি আছে যে ঐ স্ত্রীকে নির্যাতন করা হয়েছে ? না , নেই । তার স্বামী তাকে শাসন করতে পারে অথবা ধরুন একটি গালে থাপ্পরই দিল । কিন্তু এর থেকে এটি প্রমান হচ্ছে না যে ঐ নারীকে নির্যাতন অথবা তার সাথে কোন অন্যায় কাজ করা হয়েছে । বুঝতে পারছেন । এইবার একটি উদাহরন কল্পনা করুন এবং বুঝেন ।

ধরুন এই গল্পটি নাস্তিক দেশ চিনের মধ্যে হয়েছে এবং এটি একটি নাস্তিক পরিবার । ধরুন একজন নাস্তিক ধর্মের অনুসারী নাম তার আসিফ মহিউদ্দিন । তার একজন সেক্স পাটনার আছেন নাম কানিজ ফাতেমা । আর আসিফের আরেকজন সমকামী সেক্স পাটনার আছেন নাম হল জামাত মল্লিক । কানিজ ফাতেমা থেকে জামাত মল্লিল ঐ আসিফ নামের ছেলেকে বেশি পছন্দ করে । জামাত মল্লিক চায় আসিফ শুধুই তার হক , কানিজের থেকে আসিফ শুধুই জামাত মল্লিককে বেশি আনন্দ দিক । এখন আসিফ হতাত চাইল সে একদিন কানিজের সাথে সংগম করবে কিন্তু সমকামী জামাত মল্লিক আসিফকে বাধা দিচ্ছে যে তুমি এটা করবে না আমি তমাকে কানিজের সাথে সংগম করতে দিব না ।

এখন আসিফ চিনের সরকারকে বিচার দিল যে স্যার আমাকে কানিজের সাথে জামাত মল্লিক সংগম করতে দিচ্ছে না । পরে নাস্তিক প্রধান, আসিফকে বললেন তুমি তাকে শাস্তি দেও এরপরে কানিজের কাছে গমন কর ।
আচ্ছা খগেন দাদা এখানে আসিফের ভুল কথায় কানিজের ভুল কথায় আর আসিফের সমকামী জামাত মল্লিকেরই বা ভুল কথায় ? আপনি একজন সহিহ কুমীন হয়ে উত্তর দিন দাদা ।

খগেনঃ না না , আসলে এখানে সমকামী জামাত মল্লিকের ভুল হয়েছে তার বুঝা উচিত যে নাস্তিক ধর্মে সম্মতিতে একজন পুরুষ একজন নারীর সাথে সংগম করতে পারেন । এখানে আসিফের অথবা কানিজের কোন ভুল হয় নাই । আর জামাত মল্লিক্কে শাস্তি স্বরূপ কিছু দেওয়াই যৌক্তিক।
এম ডি আলীঃ দাদা আপনাকে ধন্যবাদ । আমার এখন সময় নাই , পাঠকরা বাকি ইতিহাস বুঝে গেছে । আমি গেলাম ।😜
খগেনঃ মানে ?

এম ডি আলীঃ মানে ! বুঝলে বুঝ পাতা না বুঝলে তেস পাতা ! 😁
এমডি আলী

যিনি একজন লেখক, বিতার্কিক ও গবেষক। বিভিন্ন ধর্ম ও মতবাদ বিষয় পড়াশোনা করেন। ইসলামের সত্যতা মানুষের কাছে ছড়িয়ে দিতে চান। “সত্যের অনুভূতি” উনার লেখা প্রথম বই। “ফ্যান্টাস্টিক হামজা” দ্বিতীয় বই। জবাব দেবার পাশাপাশি নাস্তিক মুক্তমনাদের যৌক্তিক সমালোচনা করে থাকেন।

Previous Post Next Post