নবীজি(সা) স্রিজোফ্রিনিয়া এপিলেপ্সি রোগী?


বিষয়ঃ নবীজি(সা) স্রিজোফ্রিনিয়া এপিলেপ্সি রোগী?

লিখেছেনঃ এমডি আলী।

===========================

ভূমিকাঃ মুক্তমনা নাস্তিকরা কুরআন ও হাদিসের কিছু অংশ দেখিয়ে দাবি করে থাকে নবী মোহাম্মদ(সা) স্রিজোফ্রিনিয়া ও এপিলেপ্সি রোগী ছিলেন। নাস্তিকদের দেখানো তথ্য গুলো আমরা যাচাই করে বিচার করে দেখবো আসলেই নবী মোহাম্মদ(সা) কি সেই সব রোগে আক্রান্ত ছিলেন কিনা। আপনি কি আসল ঘটনাটি জেনে নিতে আগ্রহী আছেন? আপনি কি ভিন্নমতের লেখা গুলো নিজের বিরুদ্ধে গেলে মেনে নিবেন যদি সেটা সঠিক হয়? নাকি নিজের বিশ্বাস নিয়েই বসে থাকবেন?

স্রিজোফ্রিনিয়া কাকে বলে?

সিজোফ্রেনিয়া একটি গুরুতর মানসিক ব্যাধি যা বিস্তৃত অস্বাভাবিক আচরণ দ্বারা চিহ্নিত করা হয়: কণ্ঠস্বর শ্রবণ (হ্যালুসিনেশন) এবং বিকৃত বা মিথ্যা উপলব্ধি, প্রায়শই উদ্ভট বিশ্বাস। তারা বাস্তব এবং কল্পনাপ্রসূত ঘটনার মধ্যে পার্থক্য করতে অক্ষম। এই অস্বাভাবিক অভিজ্ঞতাগুলি ব্যক্তির কাছে বাস্তব বলে মনে হয় যখন অন্যরা ধরে নেয় যে ব্যক্তিটি তাদের নিজস্ব জগতে হারিয়ে গেছে। 

সিজোফ্রেনিয়ার লক্ষণগুলির কারণে, অসুস্থ একজন ব্যক্তি বাস্তবতাকে এমনভাবে ব্যাখ্যা করতে পারে যা অন্যদের কাছে অস্বাভাবিক বলে মনে হয়। তারা বিশ্বাস করতে পারে যে অন্যরা তাদের নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করছে বা তাদের ক্ষতি করছে, এবং নিজেকে রক্ষা করার উপায়ে কাজ করতে বাধ্য বোধ করতে পারে যা অন্যদের কাছে ব্যাখ্যাতীত মনে হয় - উদাহরণস্বরূপ, প্রতিবেশীদের প্রচেষ্টা থেকে পরিবারকে রক্ষা করার জন্য সমস্ত দরজা এবং জানালা বন্ধ রাখা। তাদের হত্যা বা ক্ষতি। সিজোফ্রেনিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তিরা তাদের আচরণের পরিবর্তন সম্পর্কে সচেতন নয়। তারা হয়তো মেনে নেবে না যে তারা ভিন্ন আচরণ করছে। এর কারণ তাদের জন্য, বাহ্যিক এবং অভ্যন্তরীণ বাস্তবতার মধ্যে রেখাগুলি অস্পষ্ট এবং তারা উভয়ের মধ্যে পার্থক্য করতে অক্ষম। এই অন্তর্দৃষ্টির অভাব তাদের পরিবার এবং বন্ধুদের থেকে সরে আসে এবং চিকিৎসা সহায়তা প্রত্যাখ্যান করে (১)।

সিজোফ্রেনিয়া একটি জটিল ও দীর্ঘস্থায়ী মানসিক রোগ। এ রোগের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে চিন্তাধারা (প্রত্যক্ষণ, চিন্তন) এবং অনুভূতি প্রকাশের মধ্যে সঙ্গতি না থাকা। সিজোফ্রেনিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের দেখলে মনে হয় বাস্তবতার সাথে তাদের কোন সম্পর্কই নেই। এই রোগকে অনেক সময় মানসিক রোগের ক্যানসার হিসেবেও উল্লেখ করা হয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, মানুষের রোগজনিত অক্ষমতার প্রথম ১০টি কারণের একটি সিজোফ্রেনিয়া। এতে আক্রান্তরা সম্মানহীন, বন্ধুহীন, আত্মীয়হীন অবস্থায় জীবনযাপন করে। শারীরিকভাবেও অসুস্থ হয়ে পড়ে (২)।

ইসলামবিরোধীদের অভিযোগ গুলো কি আসলেই সত্যি?

মুক্তমনা নাস্তিকরা এই বিষয় যা যা অভিযোগ করে সব গুলো তদন্ত করে বিশ্লেষণ করবো। যাচাই করে দেখবো আসলেই তারা যা দাবি করে তা নির্ভরযোগ্য কিনা। ইসলামবিরোধীরা যেভাবে ইসলামিক সোর্স থেকে অভিযোগ করে আমি ঠিক সেভাবেই অভিযোগ গুলো তুলে ধরছি এবং ইসলামিক সোর্স থেকেই জানার চেষ্টা করে দেখবো যে তাদের অভিযোগ গুলো সঠিক কিনা।

অভিযোগ ১ =

অডিটরি হ্যালুসিনেসন এবং ডিলিউসনাল পারসেপশনঃ এই ধরনের মানসিক রোগীরা মনে করে গায়েবি কেউ তার সাথে কথা বলছে বা তাকে কোন আদেশ দিচ্ছে। উক্ত আওয়াজটি ঐ রোগী ব্যাতিত আর কেউই শুনতে পায় না। মুহাম্মদও মনে করতেন,জিব্রাইল তার সাথে কথা বলছে,তাকে কুরআনের আয়াত পড়ে শুনাচ্ছে,যেই আওয়াজ মুহাম্মদ ছাড়া আর কেউই শুনতে পেত না। এই ধরনের রোগীরা অলিক কল্পনা করে,যেমন হয়তো তার সামনে কিছুই নেই, কিন্তু সে দেখবে, একটি বাঘ দৌড়ে তার দিকে আসছে। সেই দৃশ্য আবার সে নিজে ছাড়া অন্য কেউ দেখতে পায় না। মুহাম্মদ ও এইরকম ভাবত, জিব্রাইল তাকে জড়িয়ে ধরছে,যেটা সে নিজে ছাড়া আর কেউ দেখতে পেত না।

তদন্তঃ জিব্রাইল (আ) দুইভাবে আসতেন প্রথমটি অদৃশ্যভাবে যা নবীজি (সা) ছাড়া কেউই দেখার সুযোগ নেই কিন্তু দ্বিতীয়টি আসতেন মানুষ বেশে যা দেখার সুযোগ সবারই হয়েছে এবং দেখেছেও। ইসলামবিরোধীরা হয়তো এই হাদিসটি কখনো চোখে দেখার সুযোগ পায় নাই।

সুনানে আন নাসায়ী, হাদিসঃ ৯৩৩, সহিহ হাদিসঃ

আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, হারিস ইবন হিশাম (রাঃ) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে জিজ্ঞাসা করলেন, আপনার নিকট কি রূপে ওহী আসে? তিনি বললেন, ঘণ্টার শব্দের মত। তারপর তা শেষ হলে দেখা যায় আমি তা মুখস্থ করে ফেলেছি। এটাই আমার নিকট অত্যন্ত কঠিন বোধ হয়। আর কোন কোন সময় আমার নিকট (ওহীর ফেরেশতা) মানুষের বেশে আগমন করে তা আমাকে বলে যান।-ihadis.com / নসরুল বারী শরহে সহিহ আল বুখারী,বাংলা,৭ খণ্ড, ৩৫৭ পৃষ্ঠাও দেখতে পারেন।

সবার সামনে পূর্ণ মজলিশে এক লোক আসলো যাকে কোনো দিন কেউ দেখে নাই সে এসে আবার চলে গেল কয়েক মুহূর্তেই অনেক সন্ধান করেও আর দেখা গেল না সেই লোকটিকে-এটা কিভাবে সম্ভব? নবীজি (সা) বলেছেন সেটা জিব্রাইল (আ) ছিলেন। তাই জিব্রাইল (আ)কে নবীজি (সা) ছাড়া কেউই দেখে নাই এই দাবী ভুল,মিথ্যা। নবীজি (সা) যেহেতু দাবী করেছেন ফেরেশতা কখনো কখনো মানুষের বেশে আসে আর এমনটি ঘটেছেও তাই বুঝা যাচ্ছে নবীজি (সা) যা বলেছেন সত্যই বলেছেন। তর্কের খাতিরে যদি ধরে নেয়া হয় তিনি স্রিজোফ্রিনিয়া রোগে আক্রান্ত ছিলেন তাহলে সেই অজানা লোকটি কে ছিল? যাকে সবাই দেখল কিন্তু কয়েক মুহূর্তেই সে অদৃশ্য হয়ে গেল? এই লোকের পরিচয় হিংসুক নাস্তিকরা কুরআন সুন্নাহ থেকেই দিবেন কি? মনোযোগ দিয়ে এই হাদিসটি পড়ুন।

সহিহ বুখারি,হাদিসঃ৫০,সহিহ হাদিসঃ

আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, একদা আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম জনসমক্ষে উপবিষ্ট ছিলেন, এমন সময় তাঁর নিকট জনৈক ব্যক্তি এসে জিজ্ঞেস করলেন ‘ঈমান কি?’ তিনি বললেনঃ ‘ঈমান হল, আপনি বিশ্বাস রাখবেন আল্লাহর প্রতি, তাঁর ফেরেশতাগণের প্রতি, (ক্বিয়ামাতের দিন) তাঁর সঙ্গে সাক্ষাতের প্রতি এবং তাঁর রসূলগণের প্রতি। আপনি আরো বিশ্বাস রাখবেন পুনরুত্থানের প্রতি।’ তিনি জিজ্ঞেস করলেন, ‘ইসলাম কি?’ তিনি বললেনঃ ‘ইসলাম হল, আপনি আল্লাহর ইবাদত করবেন এবং তাঁর সাথে অংশীদার স্থাপন করবেন না, সালাত প্রতিষ্ঠা করবেন, ফরয যাকাত আদায় করবেন এবং রমযান-এর সিয়ামব্রত পালন করবেন।’ ঐ ব্যক্তি জিজ্ঞেস করলেন, ‘ইহসান কি?’ তিনি বললেনঃ ‘আপনি এমনভাবে আল্লাহর ‘ইবাদত করবেন যেন আপনি তাঁকে দেখছেন, আর যদি আপনি তাঁকে দেখতে না পান তবে (মনে করবেন) তিনি আপনাকে দেখছেন।’ ঐ ব্যক্তি জিজ্ঞেস করলেন, ‘কিয়ামত কবে?’ তিনি বললেনঃ ‘এ ব্যাপারে যাকে জিজ্ঞেস করা হচ্ছে, তিনি জিজ্ঞেসকারী অপেক্ষা অধিক জ্ঞাত নন। তবে আমি আপনাকে ক্বিয়ামাতের আলামতসমূহ বলে দিচ্ছিঃ বাঁদী যখন তার প্রভুকে প্রসব করবে এবং উটের নগণ্য রাখালেরা যখন বড় বড় অট্টালিকা নির্মাণে প্রতিযোগিতা করবে। (ক্বিয়ামাতের জ্ঞান) সেই পাঁচটি জিনিসের অন্তর্ভুক্ত, যা আল্লাহ ব্যতীত কেউ জানে না।’ অতঃপর আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এই আয়াতটি শেষ পর্যন্ত তিলাওয়াত করলেনঃ ‘কিয়ামাতের জ্ঞান কেবল আল্লাহরই নিকট.......।’ (সূরা লুক্বমান ৩১/৩৪) এরপর ঐ ব্যক্তি চলে গেলে তিনি বললেনঃ ‘তোমরা তাকে ফিরিয়ে আন।’ তারা কিছুই দেখতে পেল না। তখন তিনি বললেন, ‘ইনি জিবরীল (‘আঃ) ; লোকদেরকে তাদের দ্বীন শেখাতে এসেছিলেন।’ আবূ ‘আবদুল্লাহ বুখারী (রহঃ) বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এসব বিষয়কে ঈমানের অন্তর্ভুক্ত করেছেন।-ihadis.com / আরও পড়ুন আল লু’লু ওয়াল মারজান,হাদিসঃ৫, সহিহ হাদিস/সহিহ মুসলিম,হাদিসঃ৭,সহিহ হাদিস।

নাস্তিকদের প্রিয় কাফের আবু জাহেলের সাথে এমন কি হয়ে গেল যে নবীজি (সা)এর ঘাড় মাড়িয়ে দিতে পারে নাই? হাদিসটি পড়ুন তো।

আনওয়ারুল মিশকাত শরহে মিশকাতুল মাসাবিহ, ৭ খণ্ড,১৪৯-১৫০ পৃষ্ঠা, ৫৬০৬ নং হাদিসঃ 

হযরত আবু হুরায়রা (রা) হতে বর্ণিত তিনি বলেন একদা আবু জাহেল মক্কার কাফের কুরাইশদেরকে বলল তোমাদের সম্মুখে মোহাম্মদ (সা) কি তার চেহারা মাটিতে লাগায়? অর্থাৎ সে নামাজ পড়ে? বলা হল, হ্যাঁ।তখন আবু জাহেল বলল লাত ও উযযার কসম! যদি আমি তাকে এরূপ করতে দেখি তাহলে আমি পা দিয়ে তার ঘাড় মাড়িয়ে দেব।অতপর সে রাসুল (সা)এর নিকট আসল তখন তিনি নামাজ পড়ছিলেন।তখন আবু জাহেল নবী করীম (সা) এর দিকে অগ্রসর হচ্ছিল। তৎক্ষণাৎ দেখা গেল সে তড়িৎবেগে পিছনের দিকে চলছে এবং উভয় হাত দ্বারা নিজেকে আত্মরক্ষা করে চলছে। তখন তাকে জিজ্ঞাসা করা হলো তোমার কি হয়েছে? সে বলল আমি দেখছি আমার ও মোহাম্মদের মাঝখানে আগুনের পরিখা ও ভয়ংকর দৃশ্য এবং ডানবিশিষ্ট দল।উক্ত ঘটনা প্রসঙ্গে রাসুল (সা) বলেছেন যদি সে আবু জাহেল আমার নিকটবর্তী হতো তাহলে ফেরেশতাগণ তার এক এক অঙ্গ ছিঁড়ে টুকরো টুকরো করে ফেলত।- মুসলিম।

নবীজি (সা) যদি স্রিজোফ্রিনিয়া রোগী হতেন তাহলে তো আবু জাহেল এমনিতেই সেই সুযোগ নিতে পারতেন? অর্থাৎ এমন কিছুই হতো না কিন্তু আবু জাহেল যা দেখেছে সেটা কিভাবে সম্ভব? এর থেকে কি প্রমাণ হয় না মোহাম্মদ (সা) সত্য নবী ছিলেন? নাস্তিকরা এই ঘটনা কিভাবে অস্বীকার করবে? আরও প্রমাণ দিচ্ছি নবীজি (সা) শুধু একাই ফেরেশতাদের দেখেন নাই বরং উনার সাহাবীরাও দেখেছে।

হাদিস সম্ভার, হাদিসঃ ৬৪, সহিহ হাদিসঃ 

ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ বদর যুদ্ধে মুসলিমদের এক আনসার ব্যক্তি মুশরিকদের এক ব্যক্তির পিছনে ধাওয়া করছিল। হঠাৎ সে তার উপরে চাবুকের শব্দ শুনতে পেল এবং অশ্বারোহীর শব্দ (ঘোড়া হাঁকানোর শব্দ) শুনতে পেল ‘অগ্রসর হও হাইযূম।‘ অতঃপর সে মুশরিককে তার সামনে দেখতে পেল, সে চিৎ হয়ে পড়ে গেল। লক্ষ্য করল, মুশরিকের নাক বিক্ষত হয়েছে এবং তার মুখমন্ডল ছিড়ে গেছে। যেন চাবুকের আঘাত পড়েছে, ফলে পুরোটা সবুজ (বা কালো) হয়ে গেছে। আনসারী এসে নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম -কে ঘটনা খুলে বললে তিনি বললেন, “ঠিক বলেছ, এ ছিল তৃতীয় আসমান থেকে সাহায্য।”-ihadis.com

যুদ্ধের ময়দানে এমন ঘটনার কি ব্যাখ্যা দিবে মিথ্যুকনাস্তিকরা? নাকি বলবে আমরা এসব মানি না? জিব্রাইল (আ) যদি নবীজি (সা) শুধু নিজেই দেখতেন তাহলে জনসমক্ষে সবার সামনে কিছু সময়ের জন্য এসে আবার অদৃশ্য হলো কেন? কিভাবে? কিছু সময়ের জন্য জনসমক্ষে ব্যাপক মানুষের সামনে এসে আবার সবার সামনের থেকে অদৃশ্য হয়ে যাওয়া এটা কিভাবে সম্ভব? তার মানে দাঁড়াচ্ছে নবীজি (সা) নিজে যে জিব্রাইল (আ)কে দেখতেন এবং সেই ফেরেশতা যে কখনো কখনো মানুষের বেশে আসতো সেটা সম্পূর্ণ সত্য ও বাস্তব। শুধু কি তাই এমন বিশুদ্ধ ঘটনা আরও আছে যার থেকে প্রমাণ হয় নবীজি (সা) যেই ফেরেশতার দেখা পেয়েছিলেন সেটা সত্য এবং সেই ফেরেশতা আল্লাহর পক্ষ থেকে এসেছে সেটাও চিরন্তন সত্।

জামে আত তিরমিজি,হাদিসঃ২০৮০,সহিহ হাদিসঃ

উসমান ইবনু আবুল আস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃতিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমার নিকট এলেন। আমি তখন ধ্বংসাত্মক ব্যথার কারণে অস্থির ছিলাম। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেনঃ ব্যথার জায়গাতে তোমার ডানহাত দিয়ে সাতবার মর্দন কর এবং বল, “ আমি আল্লাহ তা’আলার ইজ্জাত ও সম্মান, তাঁর কুদরাত ও শক্তি এবং তাঁর রাজত্ব, সার্বভৌমত্ব ও কর্তৃত্বের নিকট আমার এই কষ্ট হতে মুক্তি প্রার্থনা করছি”। বর্ণনাকারী বলেন, আমি তা-ই করলাম। আমার সম্পূর্ণ ব্যথাই আল্লাহ তা’আলা সারিয়ে দিলেন। আমি এরপর হতেই আমার পরিবারের লোকদেরকে এবং অন্যান্যদেরকে এরূপ করার জন্য নির্দেশ দিয়ে আসছি।-ihadis.com

কোনো স্রিজোফ্রিনিয়া রোগী কি ধ্বংসাত্মক ব্যথা সাথে সাথে কিছু বাক্য পড়ে সুস্থ করতে পারে? এটার কি জবাব কুরআন সুন্নাহ থেকে দিবে নাস্তিক অন্ধবিশ্বাসীরা? এর জবাব তো বিশুদ্ধ হাদিসেই আছে যে আল্লাহ সেই লোকের ব্যথা সম্পূর্ণ সারিয়ে দিলেন।

সহিহ বুখারী,হাদিসঃ৪১৫২,সহিহ হাদিসঃ

জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃতিনি বলেন, হুদাইবিয়ার দিন লোকেরা পিপাসার্ত হয়ে পড়লেন। এ সময় রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নিকট একটি চামড়ার পাত্র ভর্তি পানি ছিল। তিনি তা দিয়ে ওযু করলেন। তখন লোকেরা তাঁর দিকে এগিয়ে আসলে তিনি তাদেরকে বললেন, কী হয়েছে তোমাদের? তারা বললেন, হে আল্লাহ্‌র রসূল! আপনার চর্মপাত্রের পানি বাদে আমাদের কাছে এমন কোন পানি নেই যা দিয়ে আমরা ওযু করতে এবং পান করতে পারি। বর্ণনাকারী জাবির (রাঃ) বলেন, এরপর নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর হাত ঐ চর্মপাত্রে রাখলেন। অমনি তার আঙ্গুলগুলো থেকে ঝরণার মতো পানি উথলে উঠতে লাগল। জাবির (রাঃ) বলেন, আমরা সে পানি পান করলাম এবং ওযু করলাম। [সালিম (রহঃ) বলেন] আমি জাবির (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করলাম, আপনারা সেদিন কতজন ছিলেন? তিনি বললেন, আমরা যদি একলাখও হতাম তবু এ পানিই আমাদের জন্য যথেষ্ট হত। আমরা ছিলাম পনের’শ।-ihadis.com

সামান্য ক্ষুদ্র একটি চামড়ার পাত্র থেকে এতো এতো মানুষ পানি খাওয়া কিভাবে সম্ভব? যেখানে, সেখানে আর পানি পাওয়ার কোনো মাধ্যম নেই? যদি উনি একজন স্রিজোফ্রিনিয়া রোগীই হবেন তাহলে এমন ঘটনা কার সাহায্যে ঘটালো? যেই সাহায্যে ঘটালো সেটা তারমানে সত্য?

সহিহ বুখারী,হাদিসঃ৫৩৮২,সহিহ হাদিসঃ 

‘আবদুর রহমান ইবনু আবূ বাক্‌র (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেনঃ একবার আমরা একশ’ ত্রিশ জন লোক নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে ছিলাম। নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেনঃ তোমাদের কারো কাছে কিছু খাবার আছে কি? দেখা গেল, জনৈক ব্যক্তির কাছে প্রায় এক সা’ পরিমাণ খাবার আছে। এগুলো গুলিয়ে খামীর করা হলো। তারপর দীর্ঘ দেহী, দীর্ঘ কেশী এক মুশরিক ব্যক্তি একটা বক্‌রী হাঁকিয়ে নিয়ে আসল। নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেনঃ এটা কি বিক্রির জন্য, না উপঢৌকন অথবা তিনি বললেনঃ দানের জন্য? লোকটি বললোঃ না, আমি বরং বিক্রি করব। তিনি তার নিকট হতে সেটি কিনে নিলেন। পরে সেটি যব্‌হ করে বানানো হল। নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর কলিজা ইত্যাদি ভুনা করার আদেশ দিলেনআল্লাহর শপথ! তিনি একশ’ ত্রিশজনের প্রত্যেককেই এক টুকরা করে কলিজা ইত্যাদি দিলেন। যারা হাযির ছিল তাদের তো দিলেনই। আর যারা অনুপস্থিত ছিল তাদের জন্যও তিনি টুকরাগুলো উঠিয়ে রাখলেন। তারপর খাবারগুলো দু’টো পাত্রে রাখলেন। আমরা সকলে তৃপ্তিসহ আহার করলাম। এরপরও দু’ পাত্রে খাবার অবশিষ্ট থাকল। আমি তা উটের পিঠে তুলে নিলাম। কিংবা রাবী যা বলেছেন।-ihadis.com

সামান্য একটি ছাগল ১৩০ জন তৃপ্তিসহ ভক্ষন করা কি সম্ভব? অথচ বিশুদ্ধ হাদিস থেকে আমরা তাই দেখছি, নবীজি (সা) আসলে কি করেছিলেন যার কারণে এমন ঘটনা ঘটে গেল? মানসিক রোগী কেউ কি এই ধরনের ঘটনা ঘটাতে পারে?এসব ঘটনার একমাত্র জবাব নবীজী (সা) আল্লাহর সাহায্যে এমন ঘটনা দেখিয়েছেন এবং সাহাবীরাও অবাক হতে বাধ্য হয়েছে কিন্তু নাস্তিকদের ভ্রান্ত কথা অনুযায়ী নবীজী (সা) যদি স্রিজোফ্রিনিয়া রোগীই হবেন তাহলে এমন একটি অসম্ভব ঘটনা কার সাহায্যে ঘটালেন? নাকি নবীজী (সা) যা বলেছেন সবই সত্য?

রিয়াদুস সলেহীন,হাদিসঃ৫০৭,সহিহ হাদিসঃ 

আবু হির নামক এক লোক প্রচুর ক্ষুধার্ত ছিল। নবীজী (সা) এর কাছে এক পেয়ালা দুধ উপহার আসে। আহলে সুফ্ফাদের ডেকে আন। উনারা ইসলামের অনেক উপকার করেছে। তিনি যখন তাঁদেরকে ডাকতে বললেন, তখন আমার খারাপ লাগল। আমি (মনে মনে) বললাম, ‘এই টুকু দুধে আহলে সূফ্ফাদের কী হবে? আমিই তো বেশী হকদার যে, এই দুধ পান করে একটু শক্তিশালী হতাম।কিন্তু নবীজির আদেশ মানাতেই হবে। উনারা আসলে নবীজী (সা) পেয়ালা হাতে নিয়ে সবাইকে দিতে বললেন এবং সবাই তৃপ্তিসহকারে দুধ পান করলেন।পরিশেষে নবীজী (সা) আমাকে পান করতে বললেন,এমনকি আরও পান করতে বললেন, আমি পেট ভরে দুধ খেলাম। নবীজী (সা) আরও পান করতে বললেন, পরিশেষে আমি বললাম, ‘না। (আর পারব না।) সেই সত্তার কসম, যিনি আপনাকে সত্যসহ প্রেরণ করেছেন, এর জন্য আমার পেটে আর কোন জায়গা নেই!’ অতঃপর তিনি বললেন, ‘‘কৈ আমাকে দেখাও।’’ সুতরাং আমি তাঁকে পিয়ালা দিলে তিনি মহান আল্লাহর প্রশংসা করলেন এবং ‘বিসমিল্লাহ’ বলে অবশিষ্ট দুধ পান করলেন।-ihadis.com

একজন স্রিজোফ্রিনিয়া মানুষ কিভাবে সামান্য একটি পেয়ালা থেকে এতো এতো মানুষদের তৃপ্তিসহকারে দুধ খাওয়াতে পারে? এটা কিভাবে সম্ভব আল্লাহর সাহায্য ছাড়া? যদি নবীজী (সা) আল্লাহর নবী নাই হতেন অথবা মিথ্যাই বলতেন অথবা রোগে আক্রানই হতেন তাহলে এমন ঘটনা কখনই দেখাতে পারতেন না। তাই এটাই প্রমাণ করে নবীজী (সা) এর কাছে আল্লাহর পক্ষ থেকে সেই ফেরেশতা আসতো তথা জিব্রাইল (আ) সেটা পুরোপুরি সত্য। এখানেই শেষ নয়। আরও আছে।

সহিহ বুখারি,হাদিসঃ৩৫৮০,সহিহ হাদিসঃ 

জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃতাঁর পিতা (‘আবদুল্লাহ্ (রাঃ) উহুদ যুদ্ধে) ঋণ রেখে শাহাদাত লাভ করেন। তখন আমি নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম -এর নিকট উপস্থিত হয়ে বললাম, আমার পিতা অনেক ঋণ রেখে গেছেন। আমার কাছে বাগানের কিছু খেজুর ছাড়া অন্য কোন মাল নেই। কয়েক বছরের খেজুর একত্র করলেও তাঁর ঋণ শোধ হবে না। আপনি দয়া করে আমার সঙ্গে চলুন, যাতে পাওনাদার আমার প্রতি কঠোর মনোভাব গ্রহণ না করে। নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর সঙ্গে গেলেন এবং খেজুরের একটি স্তূপের চারপাশে ঘুরে দু’আ করলেন। অতঃপর অন্য স্তূপের নিকটে গেলেন এবং এর উপরে বসলেন এবং জাবির (রাঃ) -কে বললেন, খেজুর বের করে দিতে থাক। সকল পাওনাদারের প্রাপ্য শোধ হয়ে গেল আর তাদের যত দিলেন তত থেকে গেল।-ihadis.com

যেই লোক নিজে দাবী করলো কয়েক বছর খেজুর জমা করলেও ঋণ পরিশোধ হবে না সেখানে নবীজী (সা) দুয়া করলেন আর সেখান থেকে প্রচুর পরিমাণে খেজর বের করলেন যে পাওনাদারের প্রাপ্ত শোধ হয়ে গেল। তারমানে নবীজী (সা) এর আল্লাহর কাছে যেই দুয়া করেছিলেন সেটা চাক্ষুষ সত্য এবং আল্লাহ সত্যই। ইসলাম সত্য। যদি নবীজী (সা) মিথ্যাবাদী হতেন তাহলে উনার দোয়ার কোনো ফলাফল দেখা যেতো না। তাই এটাও অন্যতম শক্তিশালী প্রমাণ যে নবীজী (সা) স্রিজোফ্রিনিয়া রোগী হবেন তো দূরের কথা বরং তিনি আসল সত্য আল্লাহর পক্ষে থেকেই নবী ছিলেন। স্রিজোফ্রিনিয়া রোগীরা কখনো এরকম কাজ করতে পারেন না। নিচের হাদিসটি পুরোটা পড়ুন।

সহিহ বুখারি,হাদিসঃ১০২১,সহিহ হাদিসঃ 

আনাস ইব্‌নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, জুমু‘আর দিন আল্লাহ্‌র রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম খুত্‌বা দিচ্ছিলেন। তখন লোকেরা দাঁড়িয়ে উচ্চৈঃস্বরে বলতে লাগল, হে আল্লাহ্‌র রসূল! বৃষ্টি বন্ধ হয়ে গেছে, গাছপালা লাল হয়ে গেছে এবং পশুগুলো মারা যাচ্ছে। তাই আপনি আল্লাহ্‌র নিকট দু‘আ করুন, যেন তিনি আমাদের উপর বৃষ্টি বর্ষণ করেন। তখন তিনি বললেন, হে আল্লাহ্! আমাদের উপর বৃষ্টি বর্ষণ করুন। এভাবে দু’বার বললেন। (বর্ণনাকারী বলেন,) আল্লাহ্‌র কসম! আমরা তখন আকাশে এক খণ্ড মেঘও দেখতে পাচ্ছিলাম না। হঠাৎ মেঘ দেখা দিল এবং বর্ষণ হলো। তিনি (রসূলুল্লাহ্‌) মিম্বার হতে নেমে সালাত আদায় করলেন। অতঃপর যখন তিনি চলে গেলেন, তখন হতে পরবর্তী জুমু‘আ পর্যন্ত বৃষ্টি হতে থাকে। অতঃপর যখন তিনি (দাঁড়িয়ে) জুমু‘আর খুত্‌বা দিচ্ছিলেন, তখন লোকেরা উচ্চৈঃস্বরে তাঁর নিকট নিবেদন করল, ঘরবাড়ী বিধ্বস্ত হচ্ছে, রাস্তা বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছে। তাই আপনি আল্লাহ্‌র নিকট দু‘আ করুন যেন আমাদের হতে তিনি বৃষ্টি বন্ধ করেন। তখন নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম মৃদু হেসে বললেনঃ হে আল্লাহ্‌! আমাদের আশে পাশে, আমাদের উপর নয়। তখন মদীনার আকাশ মুক্ত হলো আর এর আশে পাশে বৃষ্টি হতে লাগল। মদীনায় তখন এক ফোঁটা বৃষ্টিও হচ্ছিল না। আমি মদীনার দিকে তাকিয়ে দেখলাম, মদীনা যেন মুকুটের ন্যায় শোভা পাচ্ছিল।-ihadis.com

মূর্খমনা নাস্তিকরা কি এসব সহিহ হাদিস অস্বীকার করবে? প্রথম দুয়ায় প্রচুর বৃষ্টি, দ্বিতীয় দুয়ায় আশে পাশে বৃষ্টি এটা কি একজন স্রিজোফ্রিনিয়া রোগীর পক্ষে করা সম্ভব? একজন সাধারন মানুষের পক্ষে এমন এমন সব ঘটনা ঘটানো কিভাবে সম্ভব? নাকি কাকতালীয়? এতো এতো কিছু কিভাবে কাকতালীয় হয়? এই হাদিসটি পড়ুন।

সহিহ বুখারি,হাদিসঃ৩১৬৯,৫৭৭৭,সহিহ হাদিসঃ

আবূ হুরাইরাহ্‌(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, যখন খায়বার বিজিত হয়, তখন আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে একটি (ভুনা) বকরী হাদিয়া দেয়া হয়; যাতে বিষ ছিল। নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম আদেশ দিলেন যে, এখানে যত ইয়াহূদী আছে, সকলকে একত্র কর। তাদের সকলকে তাঁর সামনে একত্র করা হল। তখন তিনি বললেন, ‘আমি তোমাদের একটি প্রশ্ন করব। তোমরা কি আমাকে তার সত্য উত্তর দিবে?’ তারা বলল, ‘হ্যাঁ, সত্য উত্তর দিব।’ নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম জিজ্ঞেস করলেন, ‘তোমাদের পিতা কে?’ তারা বলল, ‘অমুক’। আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ‘তোমরা মিথ্যা বলেছ, বরং তোমাদের পিতা অমুক।’ তারা বলল, ‘আপনিই ঠিক বলেছেন।’ তখন তিনি বললেন, ‘আমি যদি তোমাদের একটি প্রশ্ন করি, তোমরা কি তার সঠিক উত্তর দিবে?’ তারা বলল, ‘হ্যাঁ, দিব, হে আবুল কাসিম! আর যদি আমরা মিথ্যা বলি, তবে আপনি আমাদের মিথ্যা ধরে ফেলবেন, যেমন আমাদের পিতা সম্পর্কে আমাদের মিথ্যা ধরে ফেলেছেন।’ তখন তিনি তাদের জিজ্ঞেস করলেন, ‘কারা জাহান্নামবাসী?’ তারা বলল, ‘আমরা তথায় অল্প কিছুদিন অবস্থান করব, অতঃপর আপনারা আমাদের পেছনে সেখানে থেকে যাবেন।’ নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ‘দূর হও, তোমরাই সেখানে থাকবে। আল্লাহ্‌র কসম! আমরা কখনো তাতে তোমাদের স্থলাভিষিক্ত হব না।’ অতঃপর আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ‘আমি যদি তোমাদের একটি প্রশ্ন করি, তোমরা কি তার সঠিক উত্তর দিবে?’ তারা বলল, ‘হ্যাঁ, হে আবুল কাসিম!’ আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম জিজ্ঞেস করলেন, ‘তোমরা কি এ বকরীটিতে বিষ মিশিয়েছ? তারা বলল, ‘হ্যাঁ।’ তিনি বললেন, ‘কিসে তোমাদের এ কাজে উদ্বুদ্ধ করল?’ তারা বলল, ‘আমরা চেয়েছি আপনি যদি মিথ্যাচারী হন, তবে আমরা আপনার নিকট হতে স্বস্তি লাভ করব। আর আপনি যদি নবী হন তবে তা আপনার কোন ক্ষতি করবে না।-ihadis.com

এই ইহুদীরা যেই  শর্ত দিয়েছে সেই শর্তেও নবীজি (সা) সত্য নবী প্রমানিত হয়েছেন। খেয়াল করুন নবীজি (সা) কে কেউই আগে জানায় নাই যে এই পাত্রে বিষ ছিল কিন্তু তারপরেও নবীজি (সা) সেটা জেনে ফেলেছেন। আল্লাহ যদি না জানায় তাহলে আর কে জানাবে নবীজি (সা) কে?

সহিহ বুখারী,হাদিসঃ২,সহিহ হাদিসঃ 

আয়িশা (রাঃ) বলেন, আমি তীব্র শীতের সময় ওয়াহী নাযিলরত অবস্থায় তাঁকে দেখেছি। ওয়াহী শেষ হলেই তাঁর ললাট হতে ঘাম ঝরে পড়তো। আবার অন্য বর্ণনায় আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বলেছেন, উটনীর ওপর সওয়ার থাকা অবস্থায় যখনই তার ওপর অহী নাযিল হতো উটনী তখন তার বুক মাটিতে ঠেকিয়ে দিতো। অহী নাযিল শেষ না হওয়া পর্যন্ত সে নড়াচড়া পর্যন্ত করতে পারতো না। [মুসনাদে আহমাদ: ৬/১১৮, মুস্তাদরাকে হাকিম: ২/৫০৫] [ইবন কাসীর](৩)

প্রশ্ন হচ্ছে তীব্র শীতে বিনা কারনে কি কখনো ঘাম ঝরতে পারে? অথচ নবীজি (সা) কিছুই করতেন না তারপরেও তীব্র শীতে যখন আয়াত নাযিল হতো উনার ললাট তথা কপাল থেকে ঘাম ঝরে পড়তো।শুধু কি তাই? যখন কুরআনের আয়াত নাযিল হতো আয়াতের ভারে উটনী তখন তার বুক মাটিতে ঠেকিয়ে দিতো। এবং আয়াত নাযিল শেষ না হওয়া পর্যন্ত নাড়াচাড়াই করতে পারতো না। নবীজি (সা) যদি সত্য না হতেন তাহলে এসবের কি ব্যাখ্যা মিথ্যুক নাস্তিকরা দিবে? পরিশেষে এটাই সহজে বলা যায় নবী মোহাম্মদ (সা) কখনোই আসলে স্রিজোফ্রিনিয়া রোগীই ছিলেন না। এতো এতো শক্তিশালী ঘটনা বাদ দিয়ে শুধুমাত্র জিব্রাইল (আ)এর ওহি নিয়ে আসার ঘটনা তুলে ধরে নবীজি (সা)কে রোগী দাবি করাটা মুক্তচিন্তায় প্রতারণা ছাড়া কিছু নয়।

অভিযোগ ২ = 

থট ব্রডকাস্টিং,ইন্সারসন,উইথড্রয়ালঃএই ধরনের মানসিক রোগীরা মনে করে আশেপাশের সবাই বুঝি তার চিন্তাভাবনা গুলো জেনে ফেলল বা কেউ তার মধ্যে কোন চিন্তা ঢুকিয়ে দিচ্ছে বা কেউ হয়ত তার চিন্তা গুলো তার মস্তিস্ক থেকে সরিয়ে দিচ্ছে। মুহাম্মদ ও মনে করত, সে যে বানিয়ে বানিয়ে কুরআন লিখছে; নিজের সুবিধামত আয়াত ডাউনলোড করছে, এটা আবার কেউ জেনে ফেলল কিনা, এই ভয়ে সে কুরআনের বিভিন্ন জায়গায় বলেছে, এটা মহাসত্য গ্রন্থ, এর উপর বিশ্বাস স্থাপন না করা মহাপাপ ইত্যাদি। আর এটা তো সে ভাবতই যে, জিব্রাইল কুরআনের আয়াত গুলো তার মনে ঢুকিয়ে দিচ্ছে।

তদন্তঃ নাস্তিকরা ঠাণ্ডামাথায় ডাহামিথ্যাে কিভাবে বলে এই অভিযোগটি তার প্রমাণ। পাঠক অভিযোগটি আবার পড়ুন। বৈপরীত্যটি ধরতে পেরেছেন? নবীজি (সা) যদি এটা চিন্তাই করতেন যে কেউ উনার চিন্তাভাবনা জেনে ফেলবে তাহলে উনি তো কুরআনকে গোপন করতেন,সবার থেকে লুকাতেন,নিজেকে নবীই দাবী করতেন না কিন্তু এরকম উনি করেন নাই।কেন? উনি লুকাতে চান নাই বিধাই কুরআনকে সত্য বলে স্বীকার করতে বলেছিলেন কারন কুরআন সত্য এবং এই সত্য বানী সবাই জানুক সেটাই তিনি চেয়েছিলেন। এবং আল্লাহ থেকে প্রাপ্ত একমাত্র সত্য বানী নবীজি (সা) চাইতেন যে সবাই এটা স্বীকার করুক। কুরআনকে মানুষের কাছে ছড়িয়ে দিতে বলেছিলেন নবী মোহাম্মদ (সা)।

জামে আততিরমিজি,হাদিসঃ২৬৬৯,সহিহ হাদিসঃ

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ আমার পক্ষ থেকে একটি মাত্র আয়াত হলেও তা (মানুষের নিকট) পৌঁছে দাও। আর বানী ইসরাঈলের বরাতে (হাদীস) কথা বর্ণনা করতে পার, এতে কোন ক্ষতি নেই। কিন্তু যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে আমার উপর মিথ্যা চাপিয়ে দেয়, সে যেন জাহান্নামে তার থাকার জায়গা নির্ধারণ করে নেয়।-ihadis.com

সহিহ হাদিসে কুদসী,হাদিসঃ১১০,সহিহ হাদিসঃ 

আবু ওয়াকেদ লাইসি (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেনঃ আমরা নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নিকট আসতাম, যখন তার ওপর কিছু নাযিল হত তিনি আমাদের বলতেন, একদা তিনি আমাদের বলেনঃ “আল্লাহ তা‘আলা বলেছেনঃ আমি সম্পদ নাযিল করেছি সালাত কায়েম করা ও যাকাত প্রদান করার জন্য, যদি বনি আদম একটি উপত্যকার মালিক হয়, সে পছন্দ করবে তার জন্য দ্বিতীয়টি হোক। যদি তার দু’টি উপত্যকা হয়, সে চাইবে তার জন্য তৃতীয়টি হোক। মাটি ব্যতীত কোন বস্তু বনি আদমের উদর পূর্ণ করবে না, অতঃপর যে তওবা করে আল্লাহ তার তওবা কবুল করেন।-ihadis.com

সুতরাং নবীজি (সা) যদি চাইতেন যে উনার ভাবনা কেউ না জানুক তাহলে উনি কখনই নিজেকে নবী দাবী করতেন না বরং সবাইকে বলতেন কুরআনের কথা কাউকেই জানিও না এবং আমি যে নবী এটাও কাউকে জানিও না। ইসলামবিরোধীদের দ্বিতীয় অভিযোগটিও যে মিথ্যা সেটা স্পষ্ট।

অভিযোগ ৩ =

কনট্রোল অফ ফিলিংসঃএই ধরনের মানসিক রোগীরা ভাবে, সে যা করছে বা ভাবছে, এগুলো বুঝি অন্য কেউ নিয়ন্ত্রন করছে। মুহাম্মদ ও ভাবত, আল্লাহ বুঝি তাকে নিয়ন্ত্রন করছে

তদন্তঃ প্রথম ও দ্বিতীয় নং অভিযোগ যেহেতু ভুল মিথ্যা প্রমাণ হয়েছে সেহেতু বাকি গুলো অভিযোগ অটোম্যাটিক এমনেই ভুল হয়ে যায়। তারপরেও সহজে বুঝিয়ে দিচ্ছি।

ধরুন আপনি আপনার শিক্ষকের থেকে অনেক মানবতা,নৈতিকতা,সততা শিখলেন এবং আপনি আপনার শিক্ষককে অনেক অনেক ভালবাসেন। আপনার শিক্ষক আপনাকে উপদেশ দিল যে আপনি যেখানেই থাকেন না কেন অবশ্যই শিক্ষকের দেয়া এসব নৈতিকতা আপনি মেনে চলবেন,করবেন অনুভব। এখন ধরুন আপনি কোথাও বেড়াতে গেলেন। সেখানে যেয়েও আপনার শিক্ষককে আপনি খুবই মিস করছেন। আপনি ভাবছেন আপনার শিক্ষকের দেয়া উপদেশ আপনার পাশেই আছে,মনে হচ্ছে যেন আপনাকে সেই মানবতা নৈতিকতা সততাই নিয়ন্ত্রণ করছে আর আরও ভাবলেন আপনার শিক্ষকই আপনাকে নিয়ন্ত্রণ করছে এবং এই ভালবাসা আপনি অনুভব করছেন।

এই যে নিয়ন্ত্রণের অনুভুতি কাজ করছে আপনার মধ্যে এর কারণে কি আপনি স্রিজোফ্রিনিয়া রোগী হয়ে যাবেন নাকি একজন আদর্শ শিক্ষকের উত্তম ছাত্র হবেন? যুক্তি কি বলে? একইভাবে নবীজি (সা)কে আল্লাহ একটি দায়িত্ব দিয়ে পাঠিয়েছেন,সত্যের দাওয়াত এবং নবীজি (সা) যেহেতু আল্লাহকে ভালবাসেন তাই সেই ভালবাসা থেকে যদি এটা তিনি ভাবেন যে আল্লাহ উনাকে নিয়ন্ত্রণ করছেন তাহলে সেটা কেন রোগ হবে? বরং সবারই এই চিন্তা থাকা উচিৎ যে আল্লাহ ক্ষমতাশীল আমাদেরকে একদিন জবাব দিতে হবে কারণ আমাদের আমলনামা সবই আল্লাহ জানেন। এই চিন্তা মনে থাকলে অপরাধ কমে যাবে কিন্তু নাস্তিক্যধর্মের অন্ধবিশ্বাসীরা এমন নৈতিকতা বুঝারও যোগ্যতা রাখে না। ধরুন কেউ যদি বলে তাকে মানবতা নিয়ন্ত্রন করছে, নৈতিকতা নিয়ন্ত্রন করছে,সততা নিয়ন্ত্রন করছে তাহলে এরকম অদৃশ্য মানবিক চিন্তা করা কি মানুষিক রোগের লক্ষণ নাস্তিকদের যুক্তিতে? ইস! মিথ্যুক নাস্তিকদের এই জালিয়াতিটিও রক্ষা পেল না। ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।

অভিযোগ ৪ =

মুহাম্মদ ছিলেন একজন অবসেসিভ কমপালসিভ ডিসঅর্ডার এ আক্রান্ত মানসিক রোগী: এই ধরনের রোগীরা নিজস্ব মানসিক প্রশান্তি লাভের উদ্দেশ্যে একই কাজের পুনরাবৃত্তি করে।যেমন তারা হাত পরিস্কার থাকা স্বত্বেও মনে করে হাতে ময়লা লেগে আছে, এই ভেবে সে বারবার হাত ধুতেই থাকে। মুহাম্মদও কাল্পনিক আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের আশায় একই দিনে বারবার নামাজ পড়তেই থাকতেন, হাত পরিস্কার থাকা স্বত্বেও বারবার অজু করতেন। তিনি তার উম্মতদেরও ওসিডি এর রোগী বানিয়ে রেখে গিয়েছেন।তিনি তার উম্মতদেরকে কমপক্ষে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ার এবং কমপক্ষে পাঁচ বার অজু করার নির্দেশ দিয়ে গিয়েছেন।মুহাম্মদের উম্মতরা সেটাই করে যাচ্ছে এবং মানসিক রোগীতে পরিনত হচ্ছে। এছাড়া ও আমরা সহিহ বুখারি শরিফ থেকে জানতে পারি, মুহাম্মদ কাউকে সম্ভাসন জানানোর সময় তিনবার সালাম দিতেন এবং একই বাক্য পুনরাবৃত্তি করতেন।

তদন্তঃ নামাজ আর ওজুর মতো ভাল কাজটি নিয়েও মিথ্যাচার করতে বাদ রাখে নাই নাস্তিক সমাজ। হাত,মুখ,নাক,মাথা,পা ইত্যাদি ধৌত করাকে ওজু বলে। আমরা জানি ওজু করলে পরিস্কার থাকা যায় ময়লা আবর্জনা থেকেও মিলে মুক্তি। এটাকে কিভাবে রোগের সাথে মিলাতে পারে আমার বুঝে আসে না। একজন মানুষ যদি নামাজের আগে ওজু করে তাহলে যারা নামাজ আদায় করে না তাদের থেকে কত পরিস্কার থাকতে পারে ভাবতে পারেন? নামাজ এটা মেডিটেশন এর মতো আবার এটা ইয়োগা ব্যায়ামেরও মতো। একজন শিক্ষক যদি রেগুলার মেডিটেশন অথবা ইয়োগা ব্যায়াম করে এবং বেশি বেশি পরিস্কার থাকার জন্য হাত মুখ ধৌত করে এবং ছাত্রদেরকে করতে বলে তারমানে কি তারা সবাই অবসেসিভ কমপালসিভ ডিসঅর্ডার এ আক্রান্ত মানসিক রোগী? কি হাস্যকর, না? নবীজি (সা) নিজে পরিস্কার পবিত্র থাকাকে ভালবাসতেন এবং উনার সাহাবীদেরকে তাই করতে বলেছেন এটা বিন্দুমাত্র মানুষিক রোগ হতেই পারে না বরং একজন আদর্শ নেতারই বৈশিষ্ট হতে পারে। আমরা যেসব মুসলিমরা ইসলাম চর্চা করি তারা সব সময় পরিস্কার থাকি। কিন্তু নাস্তিকরা প্রতিদিন গোসল ঠিক মতো করে না সেটা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ থাকে। না হলে পরিস্কার থাকাকে কিভাবে রোগের সাথে মিলাতে পারে?

ভাল কাজ বেশি করা নাস্তিকদের কাছে মানুষিক রোগ হতে পারে কিন্তু আমাদের মতো যারা সভ্য এবং প্রগতিশীল তাদের কাছে সেটাই মানবিক এবং প্রত্যেক মানবতাবাদী মানুষের বেশি করে ভাল কাজ করা উচিৎ। কেউ যদি প্রতিদিন ৫ বার করে ১৫ মিনিট ইয়োগা ব্যায়াম ও মেডিটেশন করে এবং মনোযোগ বৃদ্ধির জন্য যদি হাল্কা হাত পা ধুয়ে নেয় তাহলে এটা করা কি মানুষিক রোগে আক্রান্তের লক্ষণ নাকি একজন সুস্থ ফিট মানুষের সুস্থ থাকার লক্ষণ? দুনিয়ার কোনো সুস্থ ডাক্তার বলবে এই লোক মানুষিক রোগী?

U.S. Department of Health and Human Services এর জার্নালে বলা হয়েছে,

"...বেশিরভাগ প্রাপ্ত বয়স্ক ব্যক্তি যাদের OCD রয়েছে শনাক্ত করতে পারে যে, তারা যা করছে তা অনর্থক..." "...most adults with OCD recognize that what they are doing doesn’t make sense(৪)..

নামাজ ও ওযু কোনো অনর্থক কার্য নয়। এর তাৎপর্য মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তাঁর উম্মাত ভালভাবেই জানে যে, ওযু হল স্বলাত বা, নামাজ কবুলের পূর্বশর্ত এবং গোনাহ মোচনেরও উপায়।নবীজি (সা) এর কোনো কাজই অনর্থক ছিল না বরং সব কিছুরই উদ্দেশ্য ছিল। যদি নবীজি (সা) বলতেন ওজু এবং নামাজের কোনো কারণ নেই তাহলে নাস্তিকদের মিথ্যা অভিযোগটি হয়তো সত্য হয়ে যেতো কিন্তু এরকম কিছুই নবীজি (সা) কখনই দাবী করেন নাই তাই নাস্তিকদের মিথ্যাচারের ইন্তেকাল হয়ে গেল বলা যায়।

মুসলিমদের নামাজ নিয়ে গবেষণা করার পর Journal of Physical Therapy Science এর একটি গবেষণাপত্রে ইসলামিক স্বলাত বা নামাজ সম্পর্কে বলা হয়েছে (৫), 

"Studies on the benefits of ‘salat’ have revealed that it improves not only spiritual well-being but also mental and physical health, improving muscle strength, joint mobility and blood circulation, when performed correctly and with the right postures...."

ভাবানুবাদঃ নামাজ এটি কেবল আধ্যাত্মিক সুস্থতাই নয়, মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যেরও উন্নতি করে, পেশীর শক্তি, যৌথ গতিশীলতা এবং রক্ত সঞ্চালন উন্নত করে যখন সঠিকভাবে সম্পাদন করা হয় এবং সঠিক ভঙ্গি দিয়ে

OCD-তে আক্রান্ত রোগীরা দিনে প্রায় ঘণ্টাখানেক সময় নেয় তাদের সেই পুনরাবৃত্ত কাজটিকে বার বার করার জন্য। U.S. Department of Health and Human Services জার্নালে এই সম্পর্কে বলা হয়েছে (৬),

"Spends at least 1 hour a day on these thoughts or behaviors..

Mayo Foundation for Medical Education and Research (MFMER) এর ভাষ্যমতে OCD তে আক্রান্ত রোগীদের হাত ধুতে ধুতে হাতের চামড়া raw হয়ে যায় (অর্থাৎ হাত বার বার ধুতে ধুতে চামড়া উঠে যাওয়ার মত এবং কাঁচা চামড়া বেরিয়ে আসার মত অবস্থা তৈরি হয় (৭)। "Hand-washing until your skin becomes raw.."

নবীজি (সা) কি ওজু করতে করতে ঘণ্টাখানিক সময় নিতেন? উনি কি ওজু করতে করতে হাত ক্ষয় করে ফেলেছিলেন? অথবা কোনো নামাজী মুসলিম কি কখনো ওজু করতে করতে হাত পা মুখ ঘার সব ক্ষয় করে ফেলেছে? আমার বুদ্ধিমান পাঠক আশা করি নাস্তিকদের প্রতারণা নিয়ে আলাদা করে বুঝিয়ে বলতে হবে না। দিনে অন্তত ছয় থেকে দশবার হাত ধুলে করোনাভাইরাসের মত জীবাণুর সংক্রমণ কমানো সম্ভব বলে ব্রিটেনের একটি গবেষণায় বলা হয়েছে (৮)। এটা জানেন কি? করোনা ভাইরাস থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য ডাক্তাররা কয়েক মিনিট পর পরেই আমাদের সাবান দিয়ে হাত ধুতে বলেছেন এবং পরিস্কার থাকতে বলেছেন। তাহলে ডাক্তাররা কি সবাই স্রিজফ্রিনিয়া রোগী? নাস্তিদের কুযুক্তি অনুযায়ী মুসলিমরা নামাজের আগে ওজু করে ফ্রেশ হলে যদি মানুষিক রোগী হয় তাহলে অদৃশ্য করোনা ভাইরাস থেকে বাঁচার জন্য ডাক্তাররা বেশি বেশি হাত মুখ ধুতে বলার কারণে দুনিয়ার সব ডাক্তাররাই মানুষিক রোগী হয়ে যাবে?

নাস্তিকরা হয়তো মদ গাজা নিয়ে বিজি থাকে তাই পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা ওদের পছন্দ না। কোনো ডিসিপ্লিনওয়ালা মানুষ কখনই নামাজ এবং ওজুকে খারাপ দাবী করতেই পারে না। আচ্ছা সেনাবাহিনীদের জীবন কি নাস্তিকদের যুক্তিতে স্রিজোফ্রিনিয়া রোগে আক্রান্ত? কারণ তারা সকালে উঠে দৌড়াদৌড়ি করে,ব্যায়াম করে,দেশ নিয়ে গভীর চিন্তাভাবনা করে,সব সময় পরিস্কার পরিচ্ছন্ন থাকতেই হয়,সব সময় এমনকি মাক্সিমাম টাইম একই পশাকে থাকতে হয়,কখন খেতে হবে কখন রেস্ট করতে হবে সবকিছুই রেগুলার করে তাহলে এসব কি সব মানুষিক রোগের লক্ষণ? কারণ সেনাবাহিনীরা একই কাজ বার বার করছে,দেশ নিয়ে গভীর চিন্তাভাবনা করে, মাঠে সবাইকে নিয়ে দেশ প্রেমের স্লোগানের পুনরাবৃত্তি করা হয়,জাতীয় সংগীত প্রতি সকালে গাওয়া হয় তাহলে নাস্তিকরা কি এখন উনাদেরকেও মানসিক রোগী বানিয়ে দেবে? পুনরাবৃত্তি করলেই যদি অবসেসিভ কমপালসিভ ডিসঅর্ডারে কেউ আক্রান্ত হয় তাহলে আমি বলব সমস্ত নাস্তিকরাই এই রোগে আক্রান্ত কারণ নাস্তিকদের সমস্ত জালিয়াতির জবাব হাজার বার দেওয়ার পরেও ইসলাম বিষয় সেই একই মিথ্যাচার বারবার পুনরাবৃত্তি করে তারা বলতে থাকে। নাস্তিকরা এসব মিথ্যাচার পুনরাবৃত্তি করে নিজেদেরকে সান্ত্বনা দেয় কারণ আমার মতো ইন্টেলেকচুয়াল মুসলিমরা যখন ওদের মিথ্যাচারকে নাস্তানাবুদ করে তখন নিজেকে সান্ত্বনা দেওয়ার জন্য কিছু তো লাগবে তাই না?

হাদিস গুলো পড়ুন।

শামায়েলে তিরমিযি,হাদিসঃ১৯৫,সহিহ হাদিসঃ 

মুগীরা ইবনে শু’বা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃতিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এত দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করতেন যে, তাঁর পা ফুলে যেত। তাকে বলা হলো, আপনি এত কষ্ট করছেন অথচ আল্লাহ তা’আলা আপনার পূর্বাপর সকল গুনাহ ক্ষমা করে দিয়েছেন। তিনি বললেন, আমি কি শোকরিয়া আদায়কারী বান্দা হব না?-ihadis.com

নবীজি (সা) যদি মিথ্যাবাদী হতেন তাহলে এতো কষ্ট কেন করতেন? উনি তো নিজের জন্য আরাম সিস্টেম বানাতে পারতেন ইচ্ছা করলে? এমন করেন নাই কেন? উনি সম্পূর্ণ স্বাভাবিক এবং চরিত্রবান একজন মানুষ ছিলেন তাহলে এমনটি কেন করতেন? 

আরজ আলী গাধাব্বর থুককু মাতাব্বর টাইপ নাস্তিকদের বাস্তবতার জ্ঞান নেই। এই কারণে তারা আবল তাবোল কথা বকে যায়। নাস্তিকদের অভিযোগ ও সমালোচনা দেখলে আমার প্রচুর হাঁসি পায়। আমরা যারা স্কুলে ছোট বেলায় লেখাপড়া করেছি তারা জানি যে পড়া মুখস্ত করার জন্য শিক্ষক একটি কথা বার বার পুনরাবৃত্তি করে বলতে বলতেন। এখন কি দুনিয়ার সব শিক্ষক নাস্তিকদের যুক্তিতে স্রিজোফ্রিনিয়া রোগী হয়ে যাবে? আমরা ছোটবেলায় কবিতা মুখস্ত করতাম এবং একই কবিতা বার বার পুনরাবৃত্তি করতাম তারমানে আমরা ছোটবেলা থেকেই মানুষিক রোগী ছিলাম? ভার্সিটিতে অথবা অনুষ্ঠানে অনেক সময় প্রেজেন্টেশন দেওয়ার জন্য আগে থেকেই লেকচার মুখস্ত করতে হয় এবং একা রুমে প্র্যাকটিস করতে হয় এবং লেকচার শিটের গুরুত্বপূর্ণ কথা মনে রাখার জন্য একই কথা পুনরাবৃত্তি করতে হয় তারমানে নাস্তিকদের যুক্তিতে এসব মানুষিক রোগ? এই হচ্ছে মুক্তমনা নাস্তিকদের যুক্তির অবস্থা? যারা সমকামীতার মতো রোগকে বৈজ্ঞানিক বলে চালিয়ে দিতে পারে তাদের কাছে এসব ছাড়া কিছু আশা করা যায় না। আসলে একটি কথার গুরুত্ব বা মর্যাদা বুঝাতে নবীজি (সা) কথার পুনরাবৃত করতেন। হাদিস গুলো পড়ুন।

সহিহ বুখারি,হাদিসঃ৬২৪৪,সহিহ হাদিসঃ 

আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ যে ,নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন সালাম করতেন , তখন তিনবার সালাম দিতেন এবং যখন কথা বলতেন তখন তিনবার তার পুনরাবৃত্তি করতেন।-ihadis.com

১০০ সুসাব্যস্ত হাদিস,হাদিসঃ৮৮,সহি হাদিসঃ 

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ এক ব্যক্তি নবী করীম সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে বললো, আমাকে উপদেশ দিন। তিনি বললেন, “রাগ করো না।” সে কয়েকবার একই কথার পুনরাবৃত্তি করলো। আর তিনি বললেন, “রাগ করো না।-ihadis.com

খেয়াল করুন সালাম শব্দের পুরো অর্থ আপনার উপর শান্তি বর্ষিত হোক। এই কথা কি তিন বার বলা কি অপরাধ? একজন মানুষ আরেকজন মানুষের তিন বার শান্তি কামনা করছে এটা যদি অপরাধ হয় তাহলে নাস্তিকরা নিজেদেরকে মানবিক মানবিক বলে যে চিল্লায় সেটা আগে মানুষিক রোগ হিসেবে ঘোষণা দেয়া দরকার নাস্তিকদের, তাই তো? নবীজি (সা) উনার সাহাবীদেরকে কত সুন্দর উপদেশ দিতেন যে রাগ করো না,রাগ করো না,রাগ করো না। এভাবে বলা কেন অন্যায় হবে? কেন রোগ হবে? যদি ক্লাসের একজন শিক্ষক উনার ছাত্রদেরকে বলে সব সময় মানুষের সেবা করবে এবং এই উপদেশ ছাত্রদের দিলে গেঁথে দেওয়ার জন্য যদি সবাইকে বলে আমার সাথে এই নৈতিকতা পঞ্চাশ বার উচ্চারণ করো তাহলে কি সেটা মানুষিক রোগ হবে? আসলে নাস্তিকরাই মানুষিক রোগী নাহলে এমন মিথ্যাচার কোনো সুস্থ স্বাভাবিক মানুষ করতে পারে? অনেক সময় শপথ বাক্য বার বার পুনরাবৃত্তি করে পাঠ করা হয় তারমানে পুনরাবৃত্তি করলেই মানুষিক রোগী হবে? কারণ শপথ বাক্যের মর্যাদা যেন দিলে অনুভব করা যায় এই কারণে পুনরাবৃত্তি করা হয়।

শামায়েলে তিরমিযি,হাদিসঃ১৬৫,সহিহ হাদিসঃ 

আনাস ইবনে মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোন কথা তিনবার বলতেন, যাতে (শ্রোতারা) ভালোভাবে হৃদয়ঙ্গম করতে পারে।-ihadis.com

শামায়েলে তিরমিযি,হাদিসঃ১৬৬,সহিহ হাদিসঃ 

আনাস ইবনে মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোন কথা তিনবার বলতেন, যাতে (শ্রোতারা) ভালোভাবে হৃদয়ঙ্গম করতে পারে।-ihadis.com

নবীজি (সা) কেন কিছু কিছু কথা পুনরাবৃত্তি তথা তিনবার বলবেন সেটাও বলেছেন অথচ অন্ধবিশ্বাসী নাস্তিকরা সেই হাদিসটি দেখায় না। অথবা নিজেরা কখনো সেই হাদিস চোখেও দেখে নাই।

অভিযোগ ৫ = 

মুহাম্মদ ছিলেন এপিলেপ্সিতে আক্রান্ত রোগী::এই রোগে আক্রান্ত রোগীর চারটে ফেজ থাকে। একঃ অরা ফেজ: এই ফেজ এ অ্যাবনরমাল সেন্সেসন বা হ্যালুসিনেসন হয়। যখন প্রথম বার হেরা গুহায় নবীজির কাছে জিব্রাইল এসেছিলেন, তখন মুহাম্মদ জিব্রাইলকে দেখতেই পেয়েছিলেন,এরপর মুহাম্মদের সমগ্র শরীর কাঁপতে থাকে এবং জ্বর এসে যায়। এর কিছুক্ষন পর তিনি সুস্থ অনুভব করেন। এরপর থেকে যখনই জিব্রাইল ওহি নিয়ে আসতেন, তখন মুহাম্মদ প্রথমে ঘণ্টার শব্দ শুনতে পেতেন [অরা] 

দুইঃ টনিক স্টেজ:এই স্টেজ এ হাত পা শক্ত হয়ে যায়। তার আশেপাশে যারা থাকতেন,তাদের বর্ণনা মতে, মুহাম্মদ এক স্থানে শক্ত হয়ে দাঁড়িয়ে যেতেন এবং তার চেহারার বর্ণ পরিবরতন হয়ে যেত [টনিক স্টেজ] 

তিনঃ ক্লনিক স্টেজ:এই স্টেজ এ রোগীর হাত পা কাঁপতে থাকে। এরপর মুহাম্মদের হাত,পা, ঠোঁট কাঁপতে থাকতো এবং তিনি অজ্ঞান হয়ে মাটিতে পড়ে যেতেন [ক্লনিক স্টেজ] 

চারঃ পোস্টইকটাল স্টেজ বা রিকভারি স্টেজ। কিছুক্ষন পর তিনি আবার সুস্থ অনুভব করতেন৷ (রিকভারি স্টেজ)

তদন্তঃ নাস্তিকদের এমন এমন বানিয়ে মিথ্যাচারপূর্ণ কথা পড়লে অবাক হই না। যারা বিশ্বাস করে তাদের মগজ চতুষ্পদ জানোয়ার থেকে ধিরে ধিরে আপডেট হয়েছে তাদের মগজ থেকে এসব মিথ্যাকথা আসাটাই স্বাভাবিক। কারণ মূর্খ অভিযোগদাতা গোঁজামিল দিয়ে নবীজি (সা)কে এপিলেপ্সি রোগী দাবী করলেন সেটা সম্পূর্ণই ভ্রান্ত এমনকি দিন দুপুরে চুরি করার মত ব্যাপার। একটি জালিয়াতি ধরিয়ে দেই তাহলে সব গুলো খণ্ডন হয়ে যাবে। যারা এপিলেপ্সি রোগী হয় তারা কাঁপতে কাঁপতে অজ্ঞান হয়ে যায় এবং এই অবস্থায় অনেকক্ষন অতিবাহিত হয়ে যায় কিন্তু নবীজি (সা) এর কাছে যখন জিব্রাইল (আ) এসেছিলেন তখন তিনি কি কাঁপতে কাঁপতে অজ্ঞান হয়ে গিয়েছিলেন? তিনি নিজে কিন্তু হেটে খাদিজা (রা) এর কাছে চলে আসেন এবং উনাকে বলেন আমাকে কম্বল দিয়ে জড়িয়ে ধরো। নবীজি (সা)এর শরীর তখন কাঁপেন নাই বরং উনার অন্তর কাঁপছিল তারপরেও ধরে নিলাম উনার শরির কাঁপছিল কিন্তু উনি কি অজ্ঞান হয়ে গিয়েছিলেন? “একদম নাহ”। তাহলে এপিলেপ্সি রোগী হয় কিভাবে?

এপিলেপ্সি রোগীদের একটি বড় লক্ষণ বার বার অজ্ঞান হয়ে যাবে কাঁপতে কাঁপতে। নবীজি (সা) উনার পুরো জীবনে কয়বার খিঁচুনি দিয়ে কাঁপতে কাঁপতে অজ্ঞান হয়েছিলেন? উনার হাত পা জীবনে কয়বার শক্ত হয়ে গিয়েছিল? ১০০ বার ? ২০০ বার? ৫০০ বার? ১০০০ বার? ৫ বার ? ৪ বার? ৩ বার? ১বার? একবার হলেই কি কেউ মৃগী হয়ে যাবে? ধরুন আপনি হটাত জানতে পারলেন আপনার বাবা মারা গিয়েছে এটা শুনে আপনি সহ্য করতে না পেরে একটি কাঁপুনি দিয়ে অজ্ঞান হয়ে গেলেন এরমানে কি আপনি মৃগী রোগে আক্রান্ত হয়ে গেলেন?

সহিহ মুসলিম, হাদিসঃ ২৯৫, সহিহ হাদিস,

নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর স্ত্রী ‘আয়িশাহ্‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ অতঃপর নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম হেরা গুহা থেকে এমন অবস্থায় খাদিজাহ্‌ (রাঃ)-এর নিকট (বাড়ি) ফিরলেন যে, ভয়ে তাঁর অন্তর কাঁপছিল। এরপর হাদীসের অবশিষ্ট ঘটনা ইউনুস ও মা’মারের হাদীসের অনুরূপ বর্ণনা করেন। কিন্তু তাদের উভয়ের বর্ণিত হাদীসের প্রথম অংশে ‘আয়িশা (রাঃ)-এর বক্তব্য “রসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর কাছে ওয়াহী আসার প্রথম অবস্থা ছিল সত্য-স্বপ্ন”-এ বাক্যটির উল্লেখ নেই। তবে মা’মার “আল্লাহর শপথ! আল্লাহ কখনো আপনাকে অপমান করবেন না”-এ বাক্য বর্ণনায় ইউনুসের অনুসরণ করেছেন এবং এ কথাও বর্ণনা করেছেন যে, “খাদীজাহ্‌ ওয়ারাকাকে বললেন, হে আমার চাচাত ভাই! আপনার ভাতিজা কি বলেন, তা শুনেন।”-ihadis.com

নসরুলবারী শরহে সহিহ বুখারী,বাংলা, ১ খণ্ড, ১৬৫ পৃষ্ঠায় বর্ণিত আছে, 

তারপর এসব আয়াত নিয়ে রাসুল (সা) ফিরে এলেন। তাঁর অন্তর  তখন কাঁপছিলেন, তিনি খাদিজা বিনতে খুয়াইলদের কাছে এসে বললেন আমাকে কম্বল দিয়ে ঢেকে দাও,আমাকে কবল দিয়ে ঢেকে দাও। তারা তাকে চাদর দিয়ে ঢেকে দিলেন। আরও পড়ুন,সীরাতে বিশ্বকোষ, ৪ খণ্ড, ৪৪৯,৪৭২ পৃষ্ঠা, আবু আহমাদ সাইফুদ্দিন বেলাল লিখিত “সীরাতুল হাবিব” ২৯ পৃষ্ঠা,আসাদুল্লাহ আল গালিব লিখিত “সীরাতুল রাসুল (সা)” ৮৪ পৃষ্ঠা।

অর্থাৎ নবীজি (সা) এর পুরো দেহ কাঁপেনি বরং শুধু উনার অন্তর কাঁপছিল। তাহলে দেখা যাচ্ছে নবীজি (সা) জিব্রাইল (আ) কে হটাত দেখে ভয় পেয়ে যান এবং উনি হেরা গুহা থেকে বাসায় আসলে সবাই দেখে উনার অন্তর কাঁপছিল। স্বাভাবিক ভাবেই আমরা যখন বেশি ভয় পাই তখন আমাদের হার্টবিট বেড়ে যায়। অথচ মিথ্যুক নাস্তিকরা অভিযোগ করেছে নবীজি (সা)এর নাকি শরীর কাঁপছিল এটা ডাহা মিথ্যাচার। যুক্তির খাতিরে যদি ধরেও নেয়া হয় উনার শরীর কাঁপছিল তাহলে প্রশ্ন আসে উনি কি অজ্ঞান হয়ে গিয়েছিলেন? এবং উনার পুরো জীবনে এসব কি বার বার হয়েছিল?

আসুন জেনে নেই মৃগী রোগ বলতে যা বোঝায়(৯)।

মৃগী রোগ কি: মৃগী স্নায়ুতন্ত্রের জটিলতাজনিত একটি রোগ। সুস্থ স্বাভাবিক একজন ব্যক্তি যদি হঠাৎ করে অস্বাভাবিকভাবে কাঁপুনি বা খিঁচুনির শিকার হয়, চোখ-মুখ উল্টিয়ে ফেলে কিংবা কোনো শিশুর চোখের পাতা স্থির হয়ে যায়, এক দৃষ্টিতে চেয়ে থাকে অথবা মানসিকভাবে সুস্থ কোনো ব্যক্তি যদি অস্বাভাবিক আচরণ শুরু করে তবে তাকে মৃগী রোগী হিসেবে চিহ্নিত করা যায়। মানবদেহের সমস্ত কার্যাবলি পরিচালিত ও নিয়ন্ত্রিত হয় মস্তিষ্কের স্নায়ুতন্ত্রের মাধ্যমে। কোনো কারণে মানবদেহের কার্য পরিচালনাকারী মস্তিষ্কের স্নায়ুতন্ত্রের উদ্দীপক ও নিবৃত্তিকারক অংশদ্বয়ের কার্যপ্রণালির ভারসাম্য নষ্ট হয়ে গেলে মৃগী রোগের লক্ষণসমূহ দেখা দিতে পারে। মস্তিষ্কের অতি সংবেদনশীলতা ছাড়াও ব্রেইন টিউমার, স্ট্রোক, মাথায় আঘাত ও রক্তপাত, রক্তশিরায় সমস্যা, ব্রেইনের পুরনো ক্ষত, ইনফেকশন এবং মানসিক প্রতিবন্ধকতা থেকেও মৃগী রোগ দেখা দিতে পারেমৃগী রোগের একটি বৈশিষ্ট্য হচ্ছে বারবার খিঁচুনি ও এর উপসর্গে আক্রান্ত হওয়া। - অধ্যাপক ডা. এম এস জহিরুল হক চৌধুরী ক্লিনিক্যাল নিউরোলজি বিভাগ, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরো সায়েন্সেস ও হাসপাতাল, ঢাকা।

একজন মৃগীরোগীর হঠাৎ মারাত্মক উপসর্গ দেখা দিতে পারে। যেমন শরীর শক্ত বা টান টান হয়ে হঠাৎ অচেতন অবস্থা, শিথিল হয়ে ঢলে পড়া, শরীরের কোনো অংশে খিঁচুনি ও পর্যায়ক্রমে সারা শরীরে তা ছড়িয়ে পড়া, হঠাৎ অস্বাভাবিক আচরণ এবং হাত, পা ও মুখের অস্বাভাবিক নড়াচড়া ইত্যাদি। সাধারণত খিঁচুনি থামার পর দীর্ঘ সময় রোগীর চেতনা থাকে না। খিঁচুনির সময় দাঁতে জিব কাটা বা প্রস্রাব বা মলত্যাগের মতো ঘটনাও হতে পারে (১০)।

নবীজি (সা)এর কাছে যখন জিব্রাইল (আ)আসতেন তখন কি উনি কাঁপতে থাকতেন?অজ্ঞান হয়ে যেতেন? নবীজি (সা)এর চোখ মুখ কি উল্টিয়ে যেত? নবীজির (সা) এর কি ব্রেন টিউমার ছিল? জীবনে স্টোক করেছিলেন কয়বার? মাথায় আঘাত পেয়েছিলেন? নবীজী (সা) কি রক্তশিরায় সমস্যা ছিল? ব্রেইনে পুরোনো ক্ষত ছিল? কোনো ইনফেকশন ছিল? কোনো মানসিক প্রতিবন্ধকতা ছিল? নবীজি (সা) যখন হেরা গুহা থেকে বাসায় এসে খাদিজা (রা)কে বিস্তারিত বলেন তখন খাদিজা (রা)কে বলেছিলেন আপনি তো আত্মীয়তার বন্ধন জুড়ে রাখেন, সত্যকথা বলেন, অনাথ অক্ষমদের বোঝা বহন করেন, মেহমানদের মেহমানদারী করেন এবং হকের পথে আগত যাবতীয় বিপদে সাহায্য করেন। তারমানে নবীজি (সা) আগেও যেমন সাধারন ছিলন ওহী নাজিলের পরেও স্বাভাবিকই ছিলেন শুধু পার্থক্য এতটুকু যে উনি ভয় পেয়েছেন ফলে উনাকে কম্বল দিয়ে ডেকে দেন। তাহলে গণ্ডমূর্খ,হিংসুক,মিথ্যাবাদী,ধোঁকাবাজ,প্রতারক নাস্তিকরা কেন ভ্রান্ত দাবী করে যে নবীজি (সা) স্রিজোফ্রিনিয়া রোগী ছিলেন? নবীজি (সা) কি হাত পা ও মুখের অস্বাভাবিক নাড়াচাড়া করতেন? যখন কুরআন এর আয়াত নাজিল হতো তখন উনি দ্রুত মুখস্ত করতে চাইতেন তখন মুখ নাড়াচাড়া বেশি করতেন কিন্তু হাত পা কি নাড়াচাড়া করতেন? আরও মজার কথা হলো পরবর্তীতে যখন আয়াত নাজিল হতো তখন উনি রিলেক্স থাকতেন এবং মুখস্ত করার চেষ্টাও করতেন না কারণ আল্লাহই উনাকে নিষেধ করে দেন তাড়াহুড়ো করতে।

নসরুল বারী শরহে সহিহ আল বুখারী,বাংলা,১ খণ্ড, ১৯১ পৃষ্ঠাঃ

শুরুতে যখন হযরত জিব্রাইল (আ) ওহীয়ে ইলাহী তথা কুরআন মাজীদ নিয়ে আসতেন,তখন হযরত জিব্রাইল (আ) পড়ার সাথে সাথে রাসুল (সা) মুখস্তের প্রতি লক্ষ্য করে দ্রুত পুনরাবৃত্তির চেষ্টা করতেন। যাতে ভুলে না যান। কিন্তু পদ্ধতি নবীজি (সা)এর ভীষণ কষ্ট হত। একতো স্বয়ং ওহীয়ে ইলাহীর কষ্টকর। দ্বিতীয়ত,ইয়াদ করা ও জবান মুবারক নাড়াচাড়ার কষ্ট,তৃতীয়ত,অর্থের প্রতি গভীরভাবে লক্ষ করার কষ্ট।এসব কষ্ট হত। এ জন্য আল্লাহ তা’লা আয়াত নাযিল করেন।অর্থাৎ আপনি এ সময় পাঠ ও জবান নাড়াচাড়া করার চেষ্টা করবেন না বরং আপনি গভীর মনোযোগ সহকারে শুনুন,এ কুরআন আমার কালাম।আমি যে উদ্দেশ্যে এ কুরআন অবতীর্ণ করছি তা সম্পূর্ণ করা আমার দায়িত্ব। এ জন্য অবতীর্ণ ওহীকে প্রশান্তভাবে শুনুন তা মুখস্ত করার জন্য আপনি চিন্তা করবেন না।

আল কুরআন, সুরা কিয়ামাহ ৭৫:১৬,১৭,১৮,১৯ আয়াতে বলা আছে, 

তাড়াতাড়ি শিখে নেয়ার জন্যে আপনি দ্রুত ওহী আবৃত্তি করবেন না। এর সংরক্ষণ ও পাঠ আমারই দায়িত্ব। অতঃপর আমি যখন তা পাঠ করি, তখন আপনি সেই পাঠের অনুসরণ করুন। এরপর বিশদ বর্ণনা আমারই দায়িত্ব। 

আয়াতের প্রেক্ষাপট বিস্তারিত জানতে ihadis.com,সহিহ বুখারী,হাদিসঃ৪৯২৭,৪৯২৮,৪৯২৯,সহিহ হাদিস  গুলো পাঠ করুণ। এছাড়া নসরুল বারী শরহে সহিহ আল বুখারী,বাংলা,১ খণ্ড,১৮৯-১৯০ পৃষ্ঠায় বর্ণিত হয়েছে,

যখন রাসুল (সা)এর কাছে জিব্রাইল (আ) আসতেন তখন তিনি মনোযোগ সহকারে কেবল শুনতেন। জিব্রাইল (আ) চলে গেলে যেমন পড়েছিলেন রাসুল (সা)-ও ঠিক তেমনই পড়তেন।

আর কিভাবে মিথ্যাচার করবে নাস্তিকরা? নাস্তিকরা কেন ইসলাম নিয়ে মিথ্যাচার ত্যাগ করতে পারছে না? নাস্তিকরা কি সত্যি গ্রহণ করতে চায় না? নাস্তিকরা কেন তাহলে নিজেদেরকে সত্য সন্ধানী দাবি করে যাচ্ছে? অথচ সত্যের সাথে বিন্দুমাত্র সম্পর্কও কি তাদের আছে? কি মনে হয় পাঠক? কোথাও কি এটা বলা হচ্ছে উনি হাত পা মুখ অস্বাভাবিক নাড়াচাড়া করতেন? অথবা কাঁপতেন? নবীজি (সা) এর যদি এপিলেপ্সি বা মৃগী রোগে আক্রান্ত থাকতো তাহলে উনার সাহাবীরা সেই দাবী করতেন অথবা নবীজি (সা) নিজেও সেটা দাবী করতেন। উনারা যদি দাবী নাও করতেন তাহলে ইসলাম বিদ্বেষী কাফেররা তো সেই দাবী অবশ্যই করতো কিন্তু এরকম তথ্য কেউই দেয় নাই। প্রশ্ন হচ্ছে কেন? নবীজি (সা) এপিলেপ্সি বা মৃগী রোগে আক্রান্তই ছিলেন না। এটাই চুরান্ত সত্য কথা।

ডাক্তার মুহাম্মাদ আব্দুর রহমান যিনি একজন নিউরোলজিস্ট এবং epilepsy এবং EEG এর ওপর একজন sub-specialist, তিনি আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ওপর এপিলেপ্সির অপবাদকে চরম ভাবে নাস্তানাবুদ করেছেন। আগ্রহী পাঠকগণ সেই খণ্ডন জানার জন্য ভিডিওর আলোচনাটি দেখতে পারেন (১১)। রাস্তায় এমন অনেক গরীব মানুষ আছেন যেসব মানুষরা প্রচণ্ড শীতে অনেক সময় দেখবেন কাঁপতে কাঁপতে অজ্ঞান তো দূরের কথা মারাই যায়। তাহলে নাস্তিকরা কি বলবে এসব মানুষরা মৃগী রোগী ছিল? নাস্তিকরা বলতেও পারে কারণ এদের মগজে সুস্থ মার্জিত ভাবনা নেই।

অভিযোগ ৬ =

অসংলগ্ন আচরণ করতেন নবীজি (সা)? জীবন এবং তার সংশ্লিষ্ট কাজের প্রতি উৎসাহ হারিয়ে ফেলা। মুড: মেজাজগত দিক থেকেও এরা থাকে উত্তেজিত, বিচ্ছিন্নতাবাদী মনোভাব এদের কোনকাজেই শান্তি পেতে দেয় নাফলে মানসিক উদ্বেগ, দুশ্চিন্তা বা অতিরিক্ত আবেগপ্রবণ হয়ে উঠতে দেখা যায় এদের। নবীজি (সা) কি এমন ছিলেন?

তদন্তঃ মোটেও না। নবীজি (সা) কত চমৎকার মানব ছিলেন নিচের দুটো হাদিস পড়ুন তাহলেই হবে। এই দুটো হাদিস নাস্তিকদের সকল মিথ্যাচারের উপর চপেটাঘাত করবার জন্য যথেষ্ট।

সুনানে আবু দাউদ, হাদিসঃ ৪৮৩৫, সহিহ হাদিসঃ 

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহি ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন তাঁর কোন সাহাবীকে কোন কাজে প্রেরণ করতেন তখন তাকে নির্দেশ দিতেনঃ তোমরা লোকদেরকে সুসংবাদ দিবে, দূরে ঠেলে দিবে না, আর সহজ করবে, কঠিন করবে না।-ihadis.com

শামায়েলে তিরমিযি,হাদিসঃ২৬৯,সহিহ হাদিসঃ 

হাসান ইবনে আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, হুসাইন ইবনে আলী (রাঃ) বলেছেন, আমি আমার পিতাকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথীদের ব্যাপারে তাঁর আচরণ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করি। উত্তরে তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছিলেন সদা হাস্যোজ্জোল ও বিনম্র স্বভবের অধিকারী। তিনি রূঢ়ভাষী বা কঠিন হৃদয়ের অধিকারী ছিলেন না। তিনি উচ্চৈঃস্বরে কথা বলতেন না, অশ্লীল ভাষা ব্যবহার করতেন না, অপরের দোষ খোঁজে বেড়াতেন না এবং কৃপণ ছিলেন না। তিনি অপছন্দনীয় কথা হতে বিরত থাকতেন। তিনি কাউকে নিরাশ করতেন না, আবার মিথ্যা প্রতিশ্রুতিও দিতেন না। তিনটি বিষয় থেকে তিনি দূরে থাকতেন— ঝগড়া-বিবাদ ও অহংকার করা এবং অযথা কথাবর্তা বলা। তিনটি কাজ হতে লোকদেরকে বিরত রাখতেন- কারো নিন্দা করতেন না, কাউকে অপবাদ দিতেন না এবং কারো দোষ-ত্রুটি তালাশ করতেন না। যে কথায় সওয়াব হয়, শুধু তাই বলতেন। তিনি যখন কথা বলতেন তখন উপস্থিত শ্রোতাদের মনোযোগ এমনভাবে আকর্ষণ করতেন, যেন তাদের মাথার উপর পাখি বসে আছে। তিনি কথা বলা শেষ করলে অন্যরা তাকে প্রয়োজনীয় কথাবার্তা জিজ্ঞেস করতে পারত। তাঁর কথায় কেউ বাদানুবাদ করতেন না। কেউ কোন কথা বলা শুরু করলে তাঁর কথা শেষ না হওয়া পর্যন্ত তিনি চুপ থাকতেন। কেউ কোন কথায় হাসলে বা বিস্ময় প্রকাশ করলে তিনিও হাসতেন কিংবা বিস্ময় প্রকাশ করতেন। অপরিচিত ব্যক্তির দৃঢ় আচরণ কিংবা কঠোর উক্তি ধৈৰ্য্যের সঙ্গে সহ্য করতেন। কখনো কখনো সাহাবীগণ অপরিচিত লোক নিয়ে আসতেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলতেন, কারো কোন প্রয়োজন দেখলে তা সামাধা করতে তোমরা সাহায্য করবে। কেউ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলে তিনি চুপ করে থাকতেন। কেউ কথা বলতে থাকলে তাকে থামিয়ে দিয়ে নিজে কথা আরম্ভ করতেন না। অবশ্য কেউ অযথা কথা বলতে থাকলে তাকে নিষেধ করে দিতেন, অথবা মজলিস হতে উঠে যেতেন, যাতে বক্তার কথা বন্ধ হয়ে যায়।-ihadis.com

অভিযোগ ৭ =

আচরণগত:এদের আচরণ হয় অদ্ভুত। এরা মনে করে সবাই এদের বিরুদ্ধে চক্রান্তে লিপ্ত। তাই অনেক সময় এদের রাগ বা ভয় হয়ে ওঠে মাত্রাছাড়া। সমাজের কারোর সাথে যোগাযোগ রাখা এরা নিরাপদ বলে মনে করে না

তদন্তঃ নবী মোহাম্মদ (সা)এর মধ্যে তেমন কিছুই ছিল না। তিনি উনার অমুসলিম ইহুদী প্রতিবেশিদের প্রতিও যত্নশীল ছিলেন এবং সবার সাথেই ভাল ব্যাবহার করতেন।

জামে আত তিরমিজি, হাদিসঃ ১৯৪৩, সহিহ হাদিসঃ 

মুজাহিদ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ)-এর জন্য তার পরিবারে একটি ছাগল যবেহ করা হল। তিনি এসে বললেন, তোমরা কি আমাদের ইয়াহুদী প্রতিবেশীকে (গোশত) উপহার পাঠিয়েছ? আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে বলতে শুনেছিঃ প্রতিবেশীর অধিকার প্রসঙ্গে জিবরাঈল (আঃ) আমাকে অবিরত উপদেশ দিতে থাকেন। এমনকি আমার ধারণা হল যে, হয়ত শীঘ্রই প্রতিবেশীকে উত্তরাধিকারী বানিয়ে দিবে।-ihadis.com

শামায়েলে তিরমিযি,হাদিসঃ২৬৪,সহিহ হাদিসঃ 

আমর ইবনে আস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃতিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সমাজের নিকৃষ্ট ব্যক্তির সাথেও পূর্ণ মনোযোগ ফিরিয়ে মনোরঞ্জনের উদ্দেশ্যে কথা বলতেন। এমনকি আমার সঙ্গেও তিনি কথা বলতেন অনুরূপভাবে। তাতে আমার মনে হলো, আমি সমাজের উত্তম মানুষ। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমি ভালো, না আবু বকর ভালো? তিনি বললেন, আবু বকর! আমি জিজ্ঞেস করলাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমি ভালো, না উমার ভালো? তিনি বললেন, উমার! আমি আবার জিজ্ঞেস করলাম, আমি ভালো না উসমান? তিনি বললেন, উসমান! আমি যখন বিস্তারিতভাবে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জিজ্ঞেস করলাম, তখন আমাকে সঠিক কথা বলে দিলেন। পরে আমি মনে মনে কামনা করলাম, যদি আমি তাকে এরূপ প্রশ্ন না করতাম।-ihadis.com

শামায়েলে তিরমিযি,হাদিসঃ২৬৯,সহিহ হাদিসঃ 

হাসান ইবনে আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, হুসাইন ইবনে আলী (রাঃ) বলেছেন, আমি আমার পিতাকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথীদের ব্যাপারে তাঁর আচরণ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করি। উত্তরে তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছিলেন সদা হাস্যোজ্জোল ও বিনম্র স্বভবের অধিকারী। তিনি রূঢ়ভাষী বা কঠিন হৃদয়ের অধিকারী ছিলেন না। তিনি উচ্চৈঃস্বরে কথা বলতেন না, অশ্লীল ভাষা ব্যবহার করতেন না, অপরের দোষ খোঁজে বেড়াতেন না এবং কৃপণ ছিলেন না। তিনি অপছন্দনীয় কথা হতে বিরত থাকতেন। তিনি কাউকে নিরাশ করতেন না, আবার মিথ্যা প্রতিশ্রুতিও দিতেন না। তিনটি বিষয় থেকে তিনি দূরে থাকতেন— ঝগড়া-বিবাদ ও অহংকার করা এবং অযথা কথাবর্তা বলা। তিনটি কাজ হতে লোকদেরকে বিরত রাখতেন- কারো নিন্দা করতেন না, কাউকে অপবাদ দিতেন না এবং কারো দোষ-ত্রুটি তালাশ করতেন না। যে কথায় সওয়াব হয়, শুধু তাই বলতেন। তিনি যখন কথা বলতেন তখন উপস্থিত শ্রোতাদের মনোযোগ এমনভাবে আকর্ষণ করতেন, যেন তাদের মাথার উপর পাখি বসে আছে। তিনি কথা বলা শেষ করলে অন্যরা তাকে প্রয়োজনীয় কথাবার্তা জিজ্ঞেস করতে পারত। তাঁর কথায় কেউ বাদানুবাদ করতেন না। কেউ কোন কথা বলা শুরু করলে তাঁর কথা শেষ না হওয়া পর্যন্ত তিনি চুপ থাকতেন। কেউ কোন কথায় হাসলে বা বিস্ময় প্রকাশ করলে তিনিও হাসতেন কিংবা বিস্ময় প্রকাশ করতেন। অপরিচিত ব্যক্তির দৃঢ় আচরণ কিংবা কঠোর উক্তি ধৈৰ্য্যের সঙ্গে সহ্য করতেন। কখনো কখনো সাহাবীগণ অপরিচিত লোক নিয়ে আসতেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলতেন, কারো কোন প্রয়োজন দেখলে তা সামাধা করতে তোমরা সাহায্য করবে। কেউ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলে তিনি চুপ করে থাকতেন। কেউ কথা বলতে থাকলে তাকে থামিয়ে দিয়ে নিজে কথা আরম্ভ করতেন না। অবশ্য কেউ অযথা কথা বলতে থাকলে তাকে নিষেধ করে দিতেন, অথবা মজলিস হতে উঠে যেতেন, যাতে বক্তার কথা বন্ধ হয়ে যায়।-ihadis.com

এসব রোগের লক্ষণের আচরণ তো নাস্তিকদের মধ্যেই দেখা যায়। এরা মুসলিমদেরকে দেখলেই মনে করে মুসলিমরা নাস্তিকদেরকে হত্যা করবে এবং এদের রাগ বা ভয় হয়ে ওঠে মাত্রাছাড়া। যা সম্পূর্ণ গলদ ধারণা। সমাজের কারো সাথে এরা যোগাযোগ রাখা নিরাপদ মনে করে না এমনকি নিজের পিতামাতা সম্পর্কেও। এই কারণে দেখবেন মাক্সিমাম বঙ্গীয় নাস্তিক নিজের পিতামাতাকে ছেড়ে বিদেশ চলে যায়। বৃদ্ধ বয়সে এরা নিজেদের পিতামাতাকে সেবাযত্ন তো দুরের থাক, কল্পনাও করে না এতটাই অসভ্য এরা।

অভিযোগ ৮ = 

ডিপ্রেশনে থাকতেন সব সময় হযরত মোহাম্মদ (সা)?

তদন্তঃ একজন সুস্থ স্বাভাবিক মানুষও মাঝে মাঝে ডিপ্রেশনে ভুক্তে পারে এরমানে এই না যে স্রিজোফ্রিনিয়া রোগে আক্রান্ত বলতে হবে। ধরুন আপনার সামনের মাসে ফাইনাল এক্সাম। এখন আপনি এক্সামের আগে অবশই চিন্তিত হবেন,কিছুটা ডিপ্রেশনে ভুগবেন এক্সামের আগে সবার থেকে আলাদা হয়ে হয়তো একা একা বেশি পড়াশোনা করবেন,বন্ধুদের সাথে কম মিশবেন। এসব তো সাধারন বিষয়। কিন্তু এরমানে কি আপনি স্রিজোফ্রিনিয়া রোগে আক্রান্ত হয়ে যাবেন? অথবা ধরুন কোনো এক গরীব বাবা যে উনার মেয়েকে বিয়ে দিবেন কিন্তু টাকার অভাবে বিয়ে দিতে পারছেন না এই কারণেও সে ডিপ্রেশনে ভুগতে পারেন। তারপর ধরুন আপনার চাকরি হচ্ছে না এটা নিয়েও আপনি ডিপ্রেশনে ভুগতে পারেন একা একা আরও প্রস্তুতি নিতে পারেন যেন চাকরি হয়ে যায় কিন্তু তারমানে এই না যে ডিপ্রেশনে থাকার জন্য বা একা একা থাকার জন্য তারা স্রিজোফিরনিয়া রোগী হয়ে যাবে। অনেক সময় ডাক্তাররা রোগীদের অপারেশন করার আগে খুবি চিন্তিত থাকেন,অনেক সময় ডাক্তারদের কপাল দিয়ে ঘামও হয় এরমানে এই না যে ডাক্তাররা স্রিজোফ্রিনিয়া রোগী। যদি ধরেও নেই নবী মোহাম্মদ (সা) মাঝে মাঝে চিন্তায় মগ্ন হতেন তাহলেও উনাকে রোগী দাবি করবার ভিত্তি নাই। নবী মোহাম্মদ (সা) কেমন মানুষ ছিলেন সেটা তো উপরের হাদিস গুলোতে পড়েছেনই। আসুন আরও হাদিস জেনে নেই। উনি কি ডিপ্রেশনে থাকতেন নাকি হাঁসিখুশি থাকতেন।

জামে আত তিরমিজি,হাদিসঃ৩৬৪১,সহিহ হাদিসঃ 

আবদুল্লাহ ইবনুল হারিস ইবনু জায্‌য়ি (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃতিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর চেয়ে বেশী মুচকি হাসি দিতে আমি আর কাউকে দেখিনি।-ihadis.com

সহিহ বুখারি,হাদিসঃ৩১৪৯,সহিহ হাদিসঃ 

আনাস ইব্‌নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)–এর সঙ্গে পথে চলছিলাম। তখন তিনি নাজরানে প্রস্তুত মোটা পাড়ের চাদর পরিহিত অবস্থায় ছিলেন। এক বেদুঈন তাঁকে পেয়ে খুব জোরে টেনে দিল। অবশেষে আমি দেখলাম, জোরে টানার কারনে নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম -এর স্কন্ধে চাদরের পাড়ের দাগ বসে গেছে। অতঃপর বেদুঈন বলল, ‘আল্লাহ্‌র যে সম্পদ আপনার নিকট আছে তা হতে আমাকে কিছু দেয়ার আদেশ দিন।’ আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসি দিলেন, আর তাকে কিছু দেয়ার আদেশ দিলেন।-ihadis.com

শামায়েলে তিরমিজিতে “রাসুলুল্লাহ (সা) এর হাসি” “রাসুলুল্লাহ (সা) এর কৌতুক” এই নামে একটি অধ্যায়ই আছে পড়ে দেখতে পারেন। আশা করি অনেক ভালো লাগবে। “ihadis.com”

অভিযোগ ৯ =

নবী মোহাম্মদ অজ্ঞান হয়ে যেতেন বার বার?

তদন্তঃ সহিহ বুখারি,হাদিসঃ৩৮২৯/সহিহ মুসলিম,হাদিসঃ৬৫৯,সহিহ হাদিসঃ

জাবির ইব্‌নু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, যখন কা‘বা গৃহ পুনর্নির্মাণ করা হচ্ছিল তখন নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও ‘আব্বাস (রাঃ) পাথর বয়ে আনছিলেন। ‘আব্বাস (রাঃ) নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম - কে বললেন, তোমার লুঙ্গিটি কাঁধের উপর রাখ, পাথরের ঘর্ষণ হতে তোমাকে রক্ষা করবে। (লুঙ্গি খুলতেই) তিনি অজ্ঞান হয়ে মাটিতে পড়ে গেলেন। তাঁর চোখ দু’টি আকাশের দিকে নিবিষ্ট ছিল। তাঁর চেতনা ফিরে এল, তখন তিনি বলতে লাগলেন, আমার লুঙ্গি, আমার লুঙ্গি। তৎক্ষণাৎ তাঁর লুঙ্গি পরিয়ে দেয়া হল।... যাবির (রাঃ) বলেন, সেদিনের পর থেকে আর কখনো তাঁকে উলঙ্গ দেখা যায়নি।-ihadis.com

এই হাদিসে স্পষ্ট বুঝা যাচ্ছে যে লুঙ্গি খুলে যাওয়ার কারণে উনি অজ্ঞান হয়ে যান। এরপরে আর উনি কি কখনো বিনা কারনে অজ্ঞান হয়ে গিয়েছিলেন? এই সামান্য ছোটবেলার ঘটনার অজ্ঞান দিয়ে কিভাবে প্রমানিত হয় উনি স্রিজোফ্রিনিয়া বা এপিলেপ্সি রোগী ছিলেন? বার বার বিনা কারনে অজ্ঞান হয়ে যেতেন এই কথা হাদিসে কোথায় আছে? তাছাড়া নবী মোহাম্মদ (সা) অনেক লজ্জা ছিল তাই অধিক লজ্জার কারণে অজ্ঞান হয়ে যাওয়াটা খুবই স্বাভাবিক।

শামায়েলে তিরমিজি, হাদিসঃ ২৭৫, সহিহ হাদিস,

আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পর্দানশীল কুমারী মেয়ের চেয়েও অধিক লজ্জাশীল ছিলেন। কোন কিছু তাঁর অপছন্দ হলে তাঁর চেহারা দেখেই আমরা তা বুঝতে পারতাম।-ihadis.com

আদাবুল মুফরাদ, হাদিসঃ ৪৬৯, সহিহ হাদিস,

আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ রাসূলুল্লাহ (সাঃ) ছিলেন পর্দানশীন কুমারী মেয়েদের চেয়েও অধিক লজ্জাশীল। কোন কিছু তাঁর অপছন্দ হলে আমরা তাঁর চেহারা দর্শনেই তা বুঝতে পারতাম-(বুখারী, মুসলিম)।-ihadis.com

রিয়াদুস সলেহিন, হাদিসঃ ৬৮৯, সহিহ হাদিস,

আবূ সা‘ঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অন্তঃপুরবাসিনী কুমারীর চেয়েও বেশি লজ্জাশীল ছিলেন। যখন তিনি কোন জিনিস অপছন্দ করতেন আমরা তাঁর চেহারায় তা বুঝতে পারতাম।’ (বুখারী ও মুসলিম) আলেমগণ বলেন, ‘লজ্জাশীলতার প্রকৃতত্ব হল এমন সৎচরিত্রতা, যা নোংরা বর্জন করতে মানুষকে উদ্বুদ্ধ করে এবং অধিকারীর অধিকার আদায়ে ত্রুটি প্রদর্শন করতে বিরত রাখে। আবুল কাসেম জুনাইদ (রাহিমাহুল্লাহ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেছেন, ‘লজ্জাশীলতা হল, নিয়ামত লক্ষ্য করা এবং সেই সাথে (তার কৃতজ্ঞতায়) ত্রুটি লক্ষ্য করা। এই দুয়ের মাঝে যে অনুভূতি সৃষ্টি হয়, তাকেই লজ্জা বলা হয়।’-ihadis.com

অভিযোগ ১০ = 

হযরত মোহাম্মদ (সা) বার বার আত্মহত্যা করতে চাইতেন?

তদন্তঃ বিশাল হাদিসের থেকে মুল অংশঃ ihadis.com, সহিহ বুখারি, হাদিসঃ ৬৯৮২ , সহিহ হাদিসঃ তিনি পর্বতের চূড়া থেকে নিচে পড়ে যাবার জন্য একাধিকবার দ্রুত সেখানে চলে গেছেন। যখনই নিজেকে ফেলে দেয়ার জন্য পর্বতের চূড়ায় পৌঁছতেন, তখনই জিব্রীল (আঃ) তাঁর সামনে আত্মপ্রকাশ করে বলতেন, হে মুহাম্মাদ! নিঃসন্দেহে আপনি আল্লাহর রাসূল। এতে তাঁর অস্থিরতা দূর হত এবং নিজ মনে শান্তিবোধ করতেন। তাই সেখান থেকে ফিরে আসতেন। ওয়াহী বন্ধ অবস্থা যখন তাঁর উপর দীর্ঘ হত তখনই তিনি ঐরূপ উদ্দেশে দ্রুত চলে যেতেন। যখনই তিনি পর্বতের চূড়ায় পৌঁছতেন, তখনই জিব্রীল (আঃ) তাঁর সামনে আত্মপ্রকাশ করে আগের মত বলতেন।

নবীজি (সা) এর কাছে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ওহী নাজিল হয়েছে অথচ উনি কখনোই আর আত্মহত্যা করতে চান নাই । কেন? বরং আত্মহত্যাকে এরপরে ইসলাম হারাম করে দিয়েছে। যদি নবীজি (সা) এর আত্মহত্যা করার প্রবনতা থাকতোই তাহলে এটা এরপরে বন্ধ করে দিলেন কেন? আরেক্তি কথা হচ্ছে যদি নবীজি (সা) জিব্রাইল (আ) নিয়ে মিথ্যাচারই করবেন তাহলে আত্মহত্যার সময় সেই জিব্রাইল (আ) এসে বার বার উনাকে নিষেধ করতেন কেন? আত্মহত্যা তো করেই ফেলতেন তাই না?

কখনো ভেবেছেন মিথ্যুক নাস্তিকরা এমন মিথ্যাচার কেন করে?

নাস্তিক্যধর্মের অন্ধ বিশ্বাসীরা আসলে 'Psychopath' সাইকোপ্যাথি। এটি একটি পার্সোনালিটি ডিজঅর্ডার যা বিভিন্ন চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য সনাক্তকরনেই বুঝা যায়। অগভীর আবেগ, কম ভয়, উদাসীন সহানুভূতি, ঠাণ্ডা মাথায় অন্যায় করা, নিজ দোষ শিকার না করা, নিজেকে অনেক কিছু মনে করা, মানুষকে মিথ্যা দিয়ে প্রভাবিত করা, দায়িত্বজ্ঞানহীনতা, পরিকল্পনা করে খারাপ কাজ করা, ধান্দাবাজি, মানুষের ক্ষতি করে অনুতপ্ত না হওয়া, মানুষের কষ্ট দেখে উপহাস করা এবং অসামাজিক আচরণ যেমন খারাপ চরিত্রের দিকে ধাবিত হওয়া, স্বার্থ হাসিলের জন্য নিজের চরিত্র নষ্ট করা, পরের সাফল্যের বা শ্রমের উপর নিজ জীবনধারা বিন্যাস করা এবং ঠাণ্ডা মস্তিষ্কে অপরাধিত্ব বজায় রাখা ইত্যাদি । মানুষের মধ্যে এসব আচরন বিদ্যমান থাকলে বুঝবেন সেই মানুষটি একটি সাইকোপ্যাথ । এসব কারণ নাস্তিকদের মধ্যে বিদ্ধমান। কি বিশ্বাস হচ্ছে না? আমি সহজে বুঝিয়ে দিচ্ছি।

নাস্তিকরা ইসলামের ব্যাপারে খুবই উদাসীন থাকে। তথ্য চুরি করে,বিকৃতি করে ইসলামের ভুল ব্যাখ্যা করে এবং এটা করতে তারা নৈতিক ভয় পায় না।এমন ঠাণ্ডা মাথায় মিথ্যাচার করে মানুষের সহানুভূতি নিতে চায় যদিও সভ্য মানুষদের কাছে ওরা অপমানিত।

আমি হাজার শক্তিশালী যুক্তি, তথ্য প্রমান আর ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ দেই না কেন ওরা নিজের দোষ স্বীকার করবে না বরং নিজেকে অনেক কিছু মনে করে এবং মানুষকে মিথ্যা দিয়ে প্রভাবিত করে।সরল মনা মুসলিম যারা ইসলাম বিষয় কম জ্ঞান রাখে তাদেরকে পরিকল্পনা করে ধোঁকা দেওয়ার চেষ্টা করে।এসব করে কখনই নাস্তিকরা অনুতপ্ত বোধ করে না। নাস্তিকরা খারাপ চরিত্রের অধিকারি হয় মদ গাজা এসব ব্যাক্তি সাধিনতা বলে অন্ধ বিশ্বাস করে ওরা।আজকে আমার লেখার বিষয় যেহেতু এটা না তাই আমি শুধু কারণ গুলো মিলিয়ে পাঠকদের সামনে পেশ করলাম যদিও উপরে আমি দেখিয়েছি নাস্তিকরা কিভাবে নবীজি (সা)কে নিয়ে মিথ্যাচার করেছে।

নাস্তিকদের সাইকোপ্যাথি রোগ নিয়ে বিস্তারিত একটি আর্টিকেল লিখবো আর সেখানে আরও ব্যাপক বিশ্লেষণ করবো ইনশাআল্লাহ। সাইকোপ্যাথি রোগে আক্রান্ত নাস্তিকরা নবীজি (সা) এর মত একজন শ্রেষ্ঠ সত্যবাদী মানুষকে নিয়ে মিথ্যাচার করবে এটাই স্বাভাবিক।

কিন্তু বিবেকবান,যুক্তিবাদী,সুস্থমনা,সত্যসন্ধানী,সত্য গ্রহণকারী সভ্য মানুষদের কাছে নাস্তিকদের মিথ্যাচার সরাসরি বাতিল,বাতিল এবং বাতিল। সন্দেহ নাই।

অভিযোগ ১১ = 

নাস্তিকরা কুকুর মেরে ফেলার কিছু হাদিস দেখিয়ে দাবি করে নবী মোহাম্মদ (সা) নাকি সাইনোফোবিয়া বা কুকুরের ভীতিতে আক্রান্ত ছিলেন। প্রথমে হাদিস গুলো জেনে নেই।

সহিহ বুখারি, হাদিসঃ ৩৩২৩, সহিহ হাদিসঃ আবদুল্লাহ ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ ‘রসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম কুকুর মেরে ফেলতে আদেশ করেছেন।’-ihadis.com

দ্য সাইনোফোবিয়া বা কুকুরের ফোবিয়াএটি কুকুরের ভয় দ্বারা চিহ্নিত একটি মানসিক ব্যাধি যা অযৌক্তিক এবং অবিচল উভয়ই। এটি এই প্রাণীদের উপস্থিতিতে অস্বস্তি বোধ করার চেয়ে আরও বেশি কিছু, যা অনেক মানুষের পক্ষে স্বাভাবিক হতে পারে। বিপরীতে, সাইনোফোবিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তিরা কুকুরের চরম ভয় পেয়ে থাকেন, যা তাদের দৈনন্দিন জীবনের বিকাশে হস্তক্ষেপ করতে পারে। যখন তারা এই প্রাণীগুলির মধ্যে একটির মুখোমুখি হয়, তারা সাধারণত শ্বাসকষ্ট, মাথা ঘোরা, উদ্বেগ বা সম্ভাব্য বিপদ সম্পর্কে অযৌক্তিক ধারণার মতো লক্ষণগুলি অনুভব করে।

তদন্তঃ ইসলামবিরোধী দায়িত্ব মুক্তচিন্তায় পালন করতে হবে দেখে সততার মাথা খেয়ে হলেও ইসলামের বিরুদ্ধে অভিযোগ নাস্তিকদের করতেই হবে। “কুকুর মেরে ফেলতে বলেছে” হাদিস দেখাবে কিন্তু কোন কুকুর মারতে হবে এই হাদিস আর মুক্তচিন্তায় নাস্তিকরা আপনাকে বলবে না। ঐযে চিন্তার মুক্তিতে নবী মোহাম্মদ(সা)কে খারাপ বানাতে হবে যে! আসুন কোন কুকুর মেরে ফেলতে বলেছে সেই হাদিস গুলো জেনে নেই তাহলেই প্রমাণ হয়ে যাবে নাস্তিকরা নবী মোহাম্মদ (সা)কে নিয়ে মিথ্যা কথা বলেছে। 

সহিহ বুখারি, হাদিসঃ ১৮২৮, সহিহ হাদিসঃ 

আল্লাহ্‌র রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, পাঁচ প্রকার প্রাণী যে হত্যা করবে তার কোন দোষ নেই। (যেমন) কাক, চিল, ইঁদুর, বিচ্ছু ও হিংস্র কুকুর।-ihadis.com

সহিহ বুখারি, হাদিসঃ ১৮২৯, সহিহ হাদিসঃ 

আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ আল্লাহ্‌র রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ পাঁচ প্রকার প্রাণী এত ক্ষতিকর যে, এগুলোকে হারামের মধ্যেও হত্যা করা যেতে পারে। (যেমন) কাক, চিল, বিচ্ছু, ইঁদুর ও হিংস্র কুকুর।-ihadis.com

সহিহ বুখারি, হাদিসঃ ৩৩১৫, সহিহ হাদিসঃ 

রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, পাঁচ প্রকারের ক্ষতিকারক প্রাণী যাদেরকে কেউ ইহরাম অবস্থায়ও যদি মেরে ফেলে, তাহলে তার কোন গুনাহ নেই। এগুলো হল বিচ্ছু, ইঁদুর, পাগলা কুকুর, কাক এবং চিল।

নবী মোহাম্মদ (সা) হিংস্র পাগলা কুকুর মেরে ফেলতে বলেছেন। এখন আসুন বাড়ি পাহারা দেয়ার জন্য ইসলামে কুকুর পালন করা এমনকি কুকুর দিয়ে শিকার করাও বৈধ। পাঠক আপনার কি মনে? মুক্তমনা নাস্তিকরা কি এই হাদিস গুলো বলবে? বা দেখাবে?

সহিহ বুখারি, হাদিসঃ ৩৩২৪, সহিহ হাদিসঃ 

আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি কুকুর প্রতিপালন করবে, প্রত্যেক দিন তার ‘আমলনামা হতে এক ক্বীরাত করে সওয়াব কমতে থাকবে। তবে ক্ষেত খামার কিংবা পশু পাল পাহারা দেয়ার কাজে নিযুক্ত শিকারী কুকুর ছাড়া।’-ihadis.com

সহিহ বুখারি, হাদিসঃ ৩৩২৫, সহিহ হাদিসঃ 

সায়িব ইবনু ইয়াযীদ সুফিয়ান ইবনু আবূ যুহাইর শানাভির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে বলতে শুনেছেন, যে ব্যক্তি কুকুর লালন পালন করে, যদ্‌দ্বারা না কৃষির উপকার হয়, না পশুপালনের, তার ‘আমল হতে প্রত্যহ এক কিরাত ‘আমল কমে যায়। সায়িব জিজ্ঞেস করেন, আপনি কি তা আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে শুনেছেন? তিনি বললেন, এই কিবলার (কা’বার) প্রতিপালকের শপথ!, অবশ্যই।-ihadis.com

সহিহ মুসলিম, হাদিসঃ ৪৮৬৭, সহিহ হাদিসঃ 

আদী ইবনু হাতিম (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, আমি রসূ্লুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জিজ্ঞাসা করলাম, আমরা এমন এক সম্প্রদায় যারা প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কুকুর দ্বারা শিকার করে থাকি। তখন তিনি বললেনঃ তুমি তোমার প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কুকুর আল্লাহর নাম নিয়ে ছাড়লে তাদের শিকার করা পশু খেতে পারো, যদিও তারা তা মেরে ফেলে। তবে কুকুর তার কিছু অংশ খেয়ে ফেললে তা খাবে না। কেননা আমার আশঙ্কা হচ্ছে,সে হয়তো এ শিকার নিজের জন্যই ধরেছে। আর যদি এ শিকারে অন্য কুকুর শারীক হয়ে থাকে তাহলে তুমি তা খাবে না।-ihadis.com

নাস্তিক মুক্তমনাদের উচিত কান ধরে সবার সামনে ক্ষমা চাওয়া। এতো এতো স্পষ্ট করে যাচাই করা হয়েছে যে নাস্তিকদের মিথ্যাচার অস্বীকার করবার সুযোগ নেই। এরপরেও যদি নাস্তিকরা নবী মোহাম্মদ(সা) কে নিয়ে মিথ্যাচার করে তাহলে বুঝে নিতে হবে নাস্তিক্যধর্মের মুক্তচিন্তায় মিথ্যাচার করা বৈধ সেহেতু নাস্তিকরা নিজেদের নাস্তিক্যধর্ম মুক্তবুদ্ধিতে চর্চা করে যাচ্ছে এই আরকি।

উপসংহারঃ সকল তথ্য প্রমাণ ও যুক্তির সামনে এটা পরিস্কার যে নবী মোহাম্মদ (সা) স্রিজোফ্রিনিয়া এমনকি এপিলেপ্সি নামে কোনো রোগেই আক্রান্ত ছিলেন না। যারা বলে তিনি এসব রোগে আক্রান্ত ছিলেন তারা মিথ্যুকবাজ। প্রমাণ দেয়া সত্ত্বেও যদি সত্য মানতে নাস্তিকদের কষ্ট হয় এবং মিথ্যাচারের শিকল থেকে যদি বের হতে না পারে তাহলে আমাদের মত সভ্য এবং যুক্তিবাদী মানুষদের কিছুই করার নেই। আমরা নাস্তিকদের বোধগম্যতা আশা করি। তারা নাস্তিক্যবাদ ও মুক্তচিন্তার যুক্তিহীন শেকল নিজেদের গলা থেকে ফেলে দিক এই কামনা করি।

রেফারেন্স সমূহঃ

[১] Schizophrenia

https://www.whiteswanfoundation.org/disorders/psychotic-disorders/schizophrenia?gclid=Cj0KCQjwy5maBhDdARIsAMxrkw0fzkeHS1Q-NhB_T-D_gL-LUcSne_F927eJoS4Au8nzcPLEunIV3usaAkPrEALw_wcB

[২] মানসিক রোগ সিজোফ্রেনিয়াঃ

https://www.daily-bangladesh.com/health-and-medical/26374

[৩] https://www.hadithbd.com/quran/tafsir/?sura=73

[৪] Obsessive-Compulsive Disorder

https://www.nimh.nih.gov/health/topics/obsessive-compulsive-disorder-ocd

[৫] Physical Activity Associated with Prayer Regimes Improves Standing Dynamic Balance of Healthy People

https://www.ncbi.nlm.nih.gov/pmc/articles/PMC3885840/

[৬] Obsessive-Compulsive Disorder

https://www.nimh.nih.gov/health/topics/obsessive-compulsive-disorder-ocd

[৭] Obsessive-compulsive disorder (OCD)

https://www.mayoclinic.org/diseases-conditions/obsessive-compulsive-disorder/symptoms-causes/syc-20354432

[৮] করোনা ভাইরাস: দিনে অন্তত ছয়বার ভাল করে হাত ধোয়ার পরামর্শ

https://www.bbc.com/bengali/news-52740128

[৯] মৃগী রোগের লক্ষণ ও চিকিৎসা

https://www.bd-pratidin.com/health/2020/02/23/504611

[১০] পত্রিকা “প্রথম আলো” ৬ সেপ্টেম্বর ২০১৬। শিরোনামঃ হঠাৎ খিঁচুনিতে আতঙ্ক নয়।

https://www.prothomalo.com/lifestyle/health/%E0%A6%B9%E0%A6%A0%E0%A6%BE%E0%A7%8E-%E0%A6%96%E0%A6%BF%E0%A6%81%E0%A6%9A%E0%A7%81%E0%A6%A8%E0%A6%BF%E0%A6%A4%E0%A7%87-%E0%A6%86%E0%A6%A4%E0%A6%99%E0%A7%8D%E0%A6%95-%E0%A6%A8%E0%A7%9F-2

[১১] Neurologist debunks ex-Muslim! [Epilepsy Argument Deflated]

https://www.youtube.com/watch?v=sejJCQYAvaI

এমডি আলী

যিনি একজন লেখক, বিতার্কিক ও গবেষক। বিভিন্ন ধর্ম ও মতবাদ বিষয় পড়াশোনা করেন। ইসলামের সত্যতা মানুষের কাছে ছড়িয়ে দিতে চান। “সত্যের অনুভূতি” উনার লেখা প্রথম বই। “ফ্যান্টাস্টিক হামজা” দ্বিতীয় বই। জবাব দেবার পাশাপাশি নাস্তিক মুক্তমনাদের যৌক্তিক সমালোচনা করে থাকেন।

Previous Post Next Post