ইসলাম পশুপাখি/কুরবানি নীতিমালা একটি তাত্ত্বিক আলোচনা

বিষয়ঃ ইসলাম পশুপাখি নীতিমালা একটি তাত্ত্বিক আলোচনা

লিখেছেনঃ এম ডি আলী

যারা সারা বছর চুপ থাকে, কিন্তু এমন একটি দদিন আসলে তাদের মানবতার গেচা উঠে যায় আপনারা কি বলতে পারেন কোন সেই দিন ? এর উত্তর হল কুরবানির দিন । যখন মুসলিমরা তাদের ইসলামী নিয়ম মাফিক একটি দিন পশু কুরবানি করে তখন ইসলাম বিদ্বেষীদের খুবই মায়া লাগে উক্ত পশুর জন্য কিন্তু এরা নিজেরাই যে হাজার প্রাণী মেরে সারা বছর ভক্ষন করছে তখন তারা মানবতার পেজ নট ফাউনড দেখায় ! । আজকে আমরা ইসলামে পশুপাখি নীতি অথবা এই বিষয় ইসলাম এর আইন কি বলে সেটাই আমরা বিস্তারিত জানব ।

হিংস্র পশু খাওয়া নিষেধঃ

ihadis.com, সহিহ মুসলিম, হাদিসঃ ৪৮৮৩, সহিহ হাদিসঃ রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সব ধরনের হিংস্র জন্তু খেতে বারণ করেছেন।

ihadis.com, সহিহ মুসলিম, হাদিসঃ ৪৮৮৮, সহিহ হাদিসঃ ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সব ধরনের হিংস্র জন্তু এবং সব ধরনের নখরধারী পাখি খেতে বারণ করেছেন।
পশুকে হত্যা করার সময় কষ্ট না দেয়াঃ

ihadis.com, সহিহ মুসলিম, হাদিসঃ ৪৯৪৯, সহিহ হাদিসঃ শাদ্দাদ ইবনু আওস (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) হতে আমি দু’টি কথা মনে রেখেছি, তিনি বলেছেনঃ আল্লাহ তা’আলা প্রত্যেক বিষয়ে তোমাদের উপর ‘ইহসান’ অত্যাবশ্যক করেছেন। অতএব তোমরা যখন হত্যা করবে, দয়ার্দ্রতার সঙ্গে হত্যা করবে; আর যখন যাবাহ করবে তখন দয়ার সঙ্গে যাবাহ করবে। তোমাদের সবাই যেন ছুরি ধারালো করে নেয় এবং তার যাবাহকৃত জন্তুকে কষ্টে না ফেলে।

অন্যায়ভাবে প্রাণী হত্যা করা নিষেধঃ প্রাণীর প্রতি মানবতাঃ

ihadis.com, সহিহ মুসলিম, হাদিসঃ ৪৯৫১, সহিহ হাদিসঃ শু’বাহ্‌ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, আমি হিশাম ইবনু যায়দ ইবনুন আনাস ইবনু মালিক (রহঃ)-এর নিকট শুনেছি। তিনি বলেন, আমি আমার দাদা আনাস ইবনু মালিক (রাঃ)-এর সাথে হাকাম ইবনু আইয়ূব (রহঃ)-এর গৃহে গেলাম। সেখানে স্থানীয় কতিপয় ব্যক্তি একটি মুরগী বেঁধে তার দিকে তীর নিক্ষেপ করছিল। তিনি বলেন, তখন আনাস (রাঃ) বললেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কোন জন্তু বেঁধে সেটিকে তীরের লক্ষ্য বানাতে বারণ করেছেন।

ihadis.com, সহিহ মুসলিম, হাদিসঃ ৪৯৫৩, সহিহ হাদিসঃ নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা এমন কোন বস্তুকে (তীর বা বন্দুকের) লক্ষ্যবস্তু বানিও না যার মধ্যে প্রাণ আছে ।

ihadis.com, সহিহ মুসলিম, হাদিসঃ ৪৯৫৫, সহিহ হাদিসঃ সা’ঈদ ইবনু জুবায়র (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, ইবনু ‘উমার (রাঃ) একদল লোকের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন যারা একটি মুরগী বেঁধে সেটির প্রতি তীর নিক্ষেপ করছিল। তারা ইবনু ‘উমারকে দেখে মুরগীটি ছেড়ে দিয়ে চলে গেল। ইবনু ‘উমার (রাঃ) বললেন, কে এ কাজ করলো? যে এমন কাজ করে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাকে লা’নাত করেছেন।

ihadis.com, সহিহ মুসলিম, হাদিসঃ ৪৯৫৭, সহিহ হাদিসঃ রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কোন প্রাণীকে বেঁধে হত্যা করতে বারণ করেছেন।

ihadis.com, সুনানে আবু দাউদ, হাদিসঃ ৫২৬৯, সহিহ হাদিসঃ একদা এক ডাক্তার নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে ঔষধ তৈরীতে ব্যাঙ ব্যবহার করা বিষয়ে প্রশ্ন করলো। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে ব্যাঙ মারতে বারণ করেন।

ihadis.com, সুনানে আবু দাউদ, হাদিসঃ ৫২৬৮, সহিহ হাদিসঃ আবদুর রহমান ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রহঃ) হতে তার পিতা থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেছেন, আমরা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে সফরে ছিলাম। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) প্রাকৃতিক প্রয়োজন সারার জন্য চলে গেলেন। এদিকে আমরা একটি ছোট পাখি দেখতে পেলাম। তার সঙ্গে ছিলো দু’টি বাচ্চা। আমরা বাচ্চা দু’টিকে ধরে ফেলি। মা পাখিটি এসে পাখা ঝাপটাতে লাগলো। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ফিরে এসে বললেনঃ কে এই পাখিটিকে তার বাচ্চা ধরে এনে ভীত সন্ত্রস্ত করেছে? তোমরা এটির বাচ্চা ফিরিয়ে দাও। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের পুড়িয়ে মারা পিঁপড়ার একটি বাসস্থানও দেখতে পেলেন। তিনি বললেনঃ এগুলো কে পুড়িয়েছে? আমরা বললাম, আমরা। তিনি বললেনঃ আগুনের রব ছাড়া আগুন দিয়ে শাস্তি দেয়া কারো পক্ষে সমীচীন নয়।

ihadis.com, সুনানে আবু দাউদ, হাদিসঃ ৫২৬৭, সহিহ হাদিসঃইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) চার প্রকার প্রাণী হত্যা করতে বারণ করেছেনঃ পিঁপড়া, মধুমক্ষিকা, হুদহুদ পাখি এবং চড়ুই সদৃশ বাজ পাখি।

ihadis.com, সুনানে আবু দাউদ, হাদিসঃ ৫২৬৬, সহিহ হাদিসঃ আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ একদা একটি পিঁপড়া এক নাবীকে কামড় দিলে তাঁর নির্দেশে সব পিঁপড়া জ্বালিয়ে দেয়া হয়। আল্লাহ ঐ নাবীর নিকট ওয়াহী পাঠালেনঃ তোমাকে একটি মাত্র পিঁপড়া কামড় দিয়েছে। অথচ তুমি তাসবীহ পাঠরত একটি উম্মাত ধ্বংস করে দিলে!

ihadis.com, সহিহ বুখারি, হাদিসঃ ৩৩১৯, সহিহ হাদিসঃ আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ আল্লাহর রসূল( সাঃ) বলেছেন, নবীগণের মধ্যে কোন এক নবী একটি গাছের নীচে অবতরণ করেন। অতঃপর তাঁকে একটি পিঁপড়ায় কামড় দেয়। তিনি তাঁর আসবাবপত্রের ব্যাপারে আদেশ দেন। এগুলো গাছের নিচ থেকে সরিয়ে ফেলা হয়। অতঃপর তিনি নির্দেশ দিলে পিঁপড়ার বাসা আগুন দিতে জ্বালিয়ে দেয়া হল। তখন আল্লাহ তাঁর প্রতি ওয়াহী নাযিল করলেন, ‘তুমি একটি মাত্র পিঁপড়াকে শাস্তি দিলে না কেন?’

টিকটিকি ওরফে গিরগিটি হত্যা করা, কিন্তু কেনঃ?

ihadis.com, সুনানে আবু দাউদ, হাদিসঃ ৫২৬২, সহিহ হাদিসঃ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) গিরগিটি (টিকটিকি) মারার হুকুম করেছেন। তিনি তার নাম দিয়েছেন অনিষ্টকারী।

ihadis.com, সুনানে আবু দাউদ, হাদিসঃ ৫২৬৩, সহিহ হাদিসঃ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি প্রথম আঘাতে একটি গিরগিটি (টিকটিকি) হত্যা করবে, তার জন্য এরূপ সওয়াব রয়েছে। যে ব্যক্তি দ্বিতীয় আঘাতে এটি হত্যা করবে, তার জন্য এরূপ এরূপ সওয়াব রয়েছে, যা প্রথম আঘাতে মারার তুলনায় কম। আর যে ব্যক্তি তৃতীয় আঘাতে তা হত্যা করবে, তার জন্য এরূপ এরূপ সওয়াব রয়েছে, যা দ্বিতীয় আঘাতে হত্যার চেয়ে কম।

ihadis.com, সুনানে আবু দাউদ, হাদিসঃ ৫২৬৪, সহিহ হাদিসঃ আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ প্রথম আঘাতে (টিকটিকি বা গিরগিটি) মারতে পারলে তার জন্য সত্তর নেকী রয়েছে।

ihadis.com, সহিহ বুখারি, হাদিসঃ ৩৩০৭, সহিহ হাদিসঃ নবী (সা) গিরগিটি বা রক্ত চোষা জাতীয় টিকটিকি হত্যা করার নির্দেশ দিয়েছেন।

ihadis.com, সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিসঃ ৩২৩১, সহিহ হাদিসঃ ফাকিহা ইবনুল মুগীরার মুক্তদাসী সাইবাহ (মাকবূলাহ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি আয়িশাহ (রাঃ) এর নিকট প্রবেশ করে তার ঘরে একটি বর্শা রক্ষিত দেখতে পান। তিনি জিজ্ঞেস করেন, হে উম্মুল মুমিনীন! আপনারা এটা দিয়ে কী করেন? তিনি বলেন, আমরা এই বর্শা দিয়ে এসব গিরগিটি হত্যা করি। কারণ আল্লাহর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের অবহিত করেছেন যে, ইবরাহিম (আঃ)-কে যখন অগ্নিকুন্ডে নিক্ষেপ করা হলো তখন পৃথিবীর বুকে এমন কোন প্রানী ছিল না, যা আগুন নিভাতে চেষ্টা করেনি, গিরগিটি ব্যতীত। সে বরং আগুনে ফুঁ দিয়েছিলো। তাই রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এটিকে হত্যার নির্দেশ দেন ।

বিশ্লেষণঃ উপরের হাদিস গুলা থেকে ইসলাম বিদ্বেষীরা জিজ্ঞাসা করে কেন একটি গিরিগিটিকে এভাবে অন্যায়ভাবে হত্যা করা হবে এটা তো অমানবিক । আমরা এসব ইসলাম বিদ্বেষী ওরফে নাস্তিক অন্ধ বিশ্বাসীদের বলব, উপদের হাদিসে কথায় বলা আছে যে "গিরগিটি হত্যা করা প্রত্যেক মুসলিমদের জন্য ফরজ করতেই হবে না করলে জাহান্নাম" এরকম কিছুই বলা হয়নি এ থেকে এটা প্রমাণিত হয় যে উপরের গিরগিটি হত্যা করা ঐচ্ছিক ব্যাপার যার মন চায় সে মারতে পারে যার মন চায় সে মারবে না ।

এখানে একটি মুল বিষয় হল গিরগিটি একটি ক্ষতিকর প্রাণী । তাই এর থেকে বেঁচে থাকার জন্য মেরে ফেলা ভাল সাথে নেকিও হল । হযরত ইবরাহীম (আ) এর অগ্নি কুণ্ডে ফু দিয়েছিল এই গিরগিটি এর জন্য কেন বর্তমান সময়ের গিরগিটি হত্যা করতে হবে ?

এর উত্তরও সহজঃ তাকমিলা ফাতহিল মুলহিম ৪/৩৫০ এখানে আছেঃ উক্ত হাদিসের ব্যাখ্যায় মুফতি তাকি উসমানী(হাফিযাহুল্লাহ) বলেন, “আল্লাহই সব থেকে ভালো জানেন, আমার কাছে এটা মনে হয়েছে যে – ইব্রাহিম(আ.) এর আগুনে ফুঁ দেয়ার ঘটনা গিরগিটির অনিষ্টকারী স্বভাব বোঝাতে বর্ণনা করা হয়েছে। সাথে এর নিচু প্রকৃতিও বোঝানো হয়েছে। একে মারতে আদেশ করার মূল কারণ হল, এটি ক্ষতিকর ও কষ্টদায়ক প্রাণী। নতুবা ইব্রাহিম(আ.) এর জমানায় ঐসকল গিরগিটির অন্যায়ের কারণে এ সকল গিরগিটিকে হত্যা করা, শাস্তি দেয়া যুক্তিসঙ্গত হতো না। এ জন্য মূল কারণ তাদের কষ্টদান ও অবাধ্যাচারণ। যার বহিঃপ্রকাশ ইব্রাহিম(আ.) এর ঘটনার সময়ে স্পষ্ট হয়ে যায়। তাছাড়া ihadis.com,সহিহ বুখারি, হাদিসঃ ১৮৩১, সহিহ হাদিসঃ নবী মুহাম্মদ (সা) গিরগিটিকে ক্ষতিকর রক্তচোষা প্রাণী হিসেবে বলেছেন । এবং: ihadis.com, সুনানে আবু দাউদ, হাদিসঃ ৫২৬২, সহিহ হাদিসঃ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) গিরগিটি (টিকটিকি) মারার হুকুম করেছেন। তিনি তার নাম দিয়েছেন অনিষ্টকারী।

সাপ হত্যা করাঃ

ihadis.com, সুনানে আবু দাউদ, হাদিসঃ ৫২৫০, সহিহ হাদিসঃ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি তাদের প্রতিশোধের ভয়ে সাপ (না মেরে) ছেড়ে দিবে, সে আমার দলভুক্ত নয়। যখন হতে এগুলোর সঙ্গে আমাদের যুদ্ধ শুরু হয়েছে তখন থেকে আমরা এগুলোকে নিরাপদে ছেড়ে দেইনি।

ihadis.com, সুনানে আবু দাউদ, হাদিসঃ ৫২৫২, সহিহ হাদিসঃ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন: তোমরা সাপ মেরে ফেলবে, বিশেষ করে ডোরাকাটা ও লেজকাটা সাপ। কেননা এ দু’টি সাপ দৃষ্টিশক্তি নষ্ট করে এবং গর্ভপাত ঘটায়। ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) সাপ পেলেই মেরে ফেলেতেন। আবূ লুবাবাহ অথবা যায়িদ ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) একটি সাপের পিছু ধাওয়া করতে দেখে বললেন, ঘরে বসবাসকারী সাপ মারতে নিষেধ করা হয়েছে।

ihadis.com, সুনানে আবু দাউদ, হাদিসঃ ৫২৪৯, সহিহ হাদিসঃ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা সাপ মারবে। যে ব্যক্তি তাদের প্রতিশোধের ভয় করবে সে আমার দলভুক্ত নয়।

ihadis.com, সহিহ বুখারি, হাদিসঃ ৩৩১০, সহিহ হাদিসঃ ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ) প্রথমে সাপ মেরে ফেলতেন। পরে মারতে নিষেধ করেছেন। তিনি বলেছেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একবার তাঁর একটি দেয়াল ভেঙ্গে ফেলেন। তাতে তিনি সাপের খোলস দেখতে পান। তখন তিনি বললেন, দেখ! কোথায় সাপ আছে? লোকেরা দেখল তিনি বললেন, একে মেরে ফেল। এ কারণে আমি সাপ মেরে ফেললাম।

সাপের নিজের ঘরে তাকে হত্যা করা নিষেধ যদি না তার থেকে ক্ষতির সম্ভাবনা না থাকেঃ

ihadis.com, সুনানে আবু দাউদ, হাদিসঃ ৫২৫৩, সহিহ হাদিসঃ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ঘরে বসবাসকারী সাপ মারতে বারণ করেছেন, তবে ডোরাবিশিষ্ট এবং লেজকাটাগুলো নয়। কারণ এগুলো দৃষ্টিশক্তি নষ্ট করে এবং নারীদের গর্ভপাত ঘটায়।

ihadis.com, সুনানে আবু দাউদ, হাদিসঃ ৫২৫৪, সহিহ হাদিসঃ নাফি’ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, আবূ লুবাবাহ (রাঃ) ইবনু ‘উমর (রাঃ)- এর নিকট উপরোক্ত হাদীস বর্ণনা করার পর তিনি তার ঘরে একটি সাপ দেখতে পান। তার আদেশে ঘর হতে সাপটি বের করে বাকী’র দিকে তাড়িয়ে দেয়া হয়।

ihadis.com, সহিহ বুখারি, হাদিসঃ ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ অতঃপর আবূ লুবাবাহ (রাঃ) তাঁকে একটি হাদীস শুনালেন যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ঘরে বসবাসকারী সাপ হত্যা করতে নিষেধ করেছেন। ফলে তিনি সাপ মারা বন্ধ করে দেন।

ইসলামে মানবতার একটি অন্যতম শক্তিশালী প্রমান, গাছ কাটা নিষেধঃ

ihadis.com, সুনানে আবু দাউদ, হাদিসঃ ৫২৩৯, সহিহ হাদিসঃ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম ) বলেছেন: যে ব্যক্তি কুল গাছ কাটবেঃ, আল্লাহ তাকে মাথা উপর করে জাহান্নামে ফেলবেন। ইমাম আবূ দাঊদ (রহঃ) কে এ হাদিসের তাৎপর্য সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, এটি খুবই সংক্ষিপ্ত। অর্থাৎ খোলা ময়দানের কুল গাছ, যার ছায়ায় পথচারী ও চতুষ্পদ প্রাণী আশ্রয় নিয়ে থাকে তা কোনো ব্যক্তি নিজ মালিকানাহীন, অপ্রয়োজনে ও অন্যায়ভাবে কেটে ফেললে আল্লাহ তাকে উপর করে জাহান্নামে নিক্ষেপ করবেন।

কুকুর হত্যা করাঃ

ihadis.com, সহিহ বুখারি, হাদিসঃ ৩৩২৩, সহিহ হাদিসঃ আবদুল্লাহ ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ ‘রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কুকুর মেরে ফেলতে আদেশ করেছেন।’

কোন কুকুর হত্যা করতে বলেছেনঃ

ihadis.com, সহিহ বুখারি, হাদিসঃ ১৮২৮, সহিহ হাদিসঃ আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, পাঁচ প্রকার প্রাণী যে হত্যা করবে তার কোন দোষ নেই। (যেমন) কাক, চিল, ইঁদুর, বিচ্ছু ও হিংস্র কুকুর।

ihadis.com, সহিহ বুখারি, হাদিসঃ ১৮২৯, সহিহ হাদিসঃ আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ পাঁচ প্রকার প্রাণী এত ক্ষতিকর যে, এগুলোকে হারামের মধ্যেও হত্যা করা যেতে পারে। (যেমন) কাক, চিল, বিচ্ছু, ইঁদুর ও হিংস্র কুকুর।

ihadis.com, সহিহ বুখারি, হাদিসঃ ৩৩১৫, সহিহ হাদিসঃ রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, পাঁচ প্রকারের ক্ষতিকারক প্রাণী যাদেরকে কেউ ইহরাম অবস্থায়ও যদি মেরে ফেলে, তাহলে তার কোন গুনাহ নেই। এগুলো হল বিচ্ছু, ইঁদুর, পাগলা কুকুর, কাক এবং চিল।

বাড়ি পাহারা দেয়ার জন্য কুকুর পালা বৈধঃ কুকুর দ্বারা শিকারও করা বৈধঃ

ihadis.com, সহিহ বুখারি, হাদিসঃ ৩৩২৪, সহিহ হাদিসঃ আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি কুকুর প্রতিপালন করবে, প্রত্যেক দিন তার ‘আমলনামা হতে এক ক্বীরাত করে সওয়াব কমতে থাকবে। তবে ক্ষেত খামার কিংবা পশু পাল পাহারা দেয়ার কাজে নিযুক্ত শিকারী কুকুর ছাড়া।’

ihadis.com, সহিহ বুখারি, হাদিসঃ ৩৩২৫, সহিহ হাদিসঃ সায়িব ইবনু ইয়াযীদ সুফিয়ান ইবনু আবূ যুহাইর শানাভির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃতিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছেন, যে ব্যক্তি কুকুর লালন পালন করে, যদ্‌দ্বারা না কৃষির উপকার হয়, না পশুপালনের, তার ‘আমল হতে প্রত্যহ এক কিরাত ‘আমল কমে যায়। সায়িব জিজ্ঞেস করেন, আপনি কি তা আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে শুনেছেন? তিনি বললেন, এই কিবলার (কা’বার) প্রতিপালকের শপথ!, অবশ্যই।

ihadis.com, সহিহ মুসলিম, হাদিসঃ ৪৮৬৭, সহিহ হাদিসঃ আদী ইবনু হাতিম (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, আমি রসূ্লুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কে জিজ্ঞাসা করলাম, আমরা এমন এক সম্প্রদায় যারা প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কুকুর দ্বারা শিকার করে থাকি। তখন তিনি বললেনঃ তুমি তোমার প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কুকুর আল্লাহর নাম নিয়ে ছাড়লে তাদের শিকার করা পশু খেতে পারো, যদিও তারা তা মেরে ফেলে। তবে কুকুর তার কিছু অংশ খেয়ে ফেললে তা খাবে না। কেননা আমার আশঙ্কা হচ্ছে,সে হয়তো এ শিকার নিজের জন্যই ধরেছে। আর যদি এ শিকারে অন্য কুকুর শারীক হয়ে থাকে তাহলে তুমি তা খাবে না।

তবে কুকুর না পালাই ভাল কারনঃ
১/ রাস্তায় চলাচলের ক্ষেত্রে কুকুর মানুষকে কষ্ট দেয় ।
২/ মৃত এবং নাকাপ খায় এই কুকুর ।
৩/ কুকুর অনেক রোগ জিবানু বহন করে, এমনকি এদের লালা চরম বিষাক্ত যা মানুষের জন্য ক্ষতিকর ।
৪/ কুকুর স্বজাতির প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করে, অনেক সময় এক কুকুর আরেক কুকুরকে সহ্য করতে পারতে পারে না এর প্রভাব তার মালিকের ওপর পড়তে পারে, স্বাভাবিক ।

এসব কারনে কুকুর না পালাই ভাল তবে যদি বেশি দরকারি হয় যেমন বাড়ি পাহারা দেয়া, কুকুর দিয়ে স্বীকার করানো, মাঠ পাহারা দেয়া তাহলে সেটা ভিন্ন কথা ।

পিপাসার্থ কুকুরকে পানি খাওয়ানোর ফলে জান্নাতঃ

ihadis.com, সহিহ বুখারি, হাদিসঃ ৩৩২১, সহিহ হাদিসঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ) সূত্রে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, ‘এক ব্যভিচারিণীকে ক্ষমা করে দেয়া হয়। সে একটি কুকুরের কাছ দিয়ে যাচ্ছিল। তখন সে দেখতে পেল কুকুরটি একটি কূপের পাশে বসে হাঁপাচ্ছে। রাবী বলেন, পানির পিপাসা তাকে মুমূর্ষ করে দিয়েছিল। তখন সেই নারী তার মোজা খুলে উড়নার সাথে বাঁধল। অতঃপর সে কূপ হতে পানি তুলল (এবং কুকুরটিকে পানি পান করালো) এ কারণে তাকে ক্ষমা করে দেয়া হল।’

বিড়ালকে কষ্ট দেয়ার জন্য জাহান্নামঃ

ihadis.com, সহিহ বুখারি, হাদিসঃ ৩৩১৮, সহিহ হাদিসঃ ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ) সূত্রে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, এক নারী একটি বিড়ালের কারণে জাহান্নামে গিয়েছিল, সে তাকে বেঁধে রেখেছিল। সে তাকে খাবারও দেয়নি, ছেড়েও দেয়নি, যাতে সে যমীনের পোকা মাকড় খেতে পারত।

উপরের বিশুদ্ধ তথ্য প্রমান থেকে আমরা আজকে শিখলামঃ

১/ হিংস্র পশু খাওয়া নিষেধ কারন এটি আমাদের জন্য ক্ষতিকর ।
২/ পশুকে হত্যা করার সময় কষ্ট না দেয়া , তথা কুরবানির সময় আমাদের উচিৎ আমাদের যন্ত্র যা দ্বারা পশু জবেহ করা হয় তা বেশি বেশি ধার দেয়া যাতে পশুর কষ্ট না হয় ।
৩/ অন্যায়ভাবে, অকারণে, হুদাহুদি প্রাণী হত্যা করা নিষেধ, প্রাণীর প্রতি মানবতার প্রতিক হিসেবে আমরা দেখলাম একটি পিঁপড়াকে কষ্ট দেয়ার জন্য আল্লাহ্‌ ওহী নাজিল করে তাঁর নবীকে সাবধান করলেন ।
৪/ গিরগিটি মানুষের জন্য ক্ষতিকর তাই একে দেখলে হত্যা করা । যদি কেউই না মারে নিজের সেইফ থাকে তাহলে ভিন্ন করা ।
৫/ সাপ হত্যা করা , তবে ক্ষতিকর না হলে তাড়িয়ে দেয়াই ভাল ।
৬/ ক্ষতিকর পাগলা কুকুর হত্যা করা , তবে ভাল কুকুর দিয়ে নিজ বাড়ি পাহারা দেয়া, কুকুর দিয়ে স্বীকার করা, বিভিন্ন ভাল কাজ করা ইসলামে বৈধ । তবে কুকুরের মধ্যে যেহেতু অপরিস্কার কিছু ব্যাপার আছে তাই না পালাই ভাল । বেশি দরকার হলে সেটা আলাদা কথা ।
৭/ পিপাসার্থ কুকুরকে পানি খাওয়ানোর ফলে জান্নাত পেয়ে গেল এক মানুষ ।
৮/ বিড়ালকে কষ্ট দেয়ার জন্য জাহান্নামে গেল এক মানুষ ।

                               ইসলামে কুরবানির বিধান/ ইতিহাস/ আপত্তি/ অভিযোগ / খণ্ডনঃ

এই বিষয় কিছু কুরানের আয়াত জেনে নেইঃ

* সুরা আনআ’ম ৬: ১৬২ = নিশ্চয় আমার নামাজ, আমার কুরবানি, আমার জীবন, আমার মৃত্যু; সবই বিশ্বজাহানের প্রতিপালক আল্লাহ তাআলার জন্য।’ 

*সুরা হজ্জ ২২:৩৪ = আমি প্রত্যেক উম্মাতের জন্য কুরবানির বিধান রেখেছি।’ 

*সুরা সাফফাত ৩৭: ১০২ = জখন সে তার সাথে চলাফেরা করার বয়সে পৌঁছল তখন সে বলল, হে প্রিয় ছেলে, আমি স্বপ্নে দেখেছি যে,আমি তোমাকে জবেহ করছি, অতএব দেখো তোমার কি অভিমত, সে (হজরত ইসমাইল আলাইহিস সালাম) বলল, ‘পিতা! আপনাকে যা আদেশ করা হয়েছে, আপনি তা পালন করুন। আল্লাহর ইচ্ছায় আপনি আমাকে ধৈর্যশীলদের মধ্যে পাবেন।’

* সুরা সাফফাত ৩৭: ১০৩ = আরপর তারা উভয় যখন আত্মসমর্পণ করলো এবং সে তাকে (ইসমাইলকে) কাত করে শুইয়ে দিল।

* সুরা সাফফাত ৩৭:১০৪,১০৫,১০৬,১০৭ = তখন আমি (আল্লাহ্‌) তাকে আহবান করে করে বললাম, হে ইবরাহীম, তুমি তো স্বপ্নকে সত্যে পরিণত করেছ। নিশ্চয় আমি এভাবেই সৎকর্মশীলদের পুরস্কৃত করে থাকি । নিশ্চয় এটা সুস্পষ্ট পরীক্ষা । আর আমি (আল্লাহ্‌) জবেহের (তা ছিল একটি জান্নাতি দুম্বা) বিনিময় তাকে মুক্ত করলাম ।

উপরের আয়াত সমূহ থেকে আমরা শিখলামঃ

কুরবানি শুদুমাত্র আল্লাহ্‌র জন্য । আর আল্লাহ্‌ প্রত্যেক উম্মাতের জন্যই এই আইন রেখেছিলেন । হযরত ইবরাহীম (আ) এর স্বপ্ন এবং সেটা বাস্তবায়ন এবং পরিশেষে আল্লাহ্‌ তাদের কবুল করলেন সবই আমরা সংক্ষেপে জানলাম ।

পশু কুরবানি তাও আবার উৎসব হিসেবে এটি তো অমানবিকঃ

এই প্রশ্ন ইসলাম বিদ্বেষীদের করা মানায় না কারন আমার জানা মনে এমন কোন নাস্তিক ধর্মের অনুসারী নাই যে বিফ বার্গার না খেয়েছে বরং এর পতিবাদও হয়ত জীবনে করে নাই । শুদু তাই নয়। নববর্ষ এলে সমস্ত মানুষ ইলিস মাছ হত্যা করে খায় এবং নিজেকে খাটি বাঙ্গালী দাবী করে তখন কোন মানবতা বর্জন হয় না আর মুসলিমরা বছরে একটি দিন পশু কুরবানি দিলে যত মানবতা বিরোধী কাজ হয় ! এমন দ্বিমুখী খাসলত কেন আপনাদের ?

শুদু তাই নয় অ্যামেরিকা, চিন , জাপান , জার্মানি , ফ্রান্স এসব দেশেও আপনি খাবার হোটেলে পশুর মাংস পাবেন, সেখানেও তো ইসলাম বিদ্বেষীরা কোন আপত্তি নাই ! দুনিয়াতে প্রচুর খাবারের হোটেল আছে, নামি দামী হোটেলে হাজার হাজার, কোটি কোটি পশু জবাই করে হত্যা করে , তৈরি করা হচ্ছে উন্নত মানের মজাদার খাবার । কই এখানে তো কারো চুলকানি নাই । অ্যামেরিকায় শুকর এর মাংস খুব ফেমাস । একটি শূকরকে হত্যা করে সেটা দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে, মদ, খাবার, বার্গার ইত্যাদি খাবার এইগুলা নাস্তিকরাও খায় কিন্তু বলে না, ঐ যে নাম বললে চাকরি থাকবে না যে !

সহজ একটি উদাহরণ এর মাধ্যমে এই জবাবের ইতি টানবঃ ধরেন একটি গরীব পরিবার । তাদের গরু আছে ৫ টি, দুটি গাভী আছে, একটি ষাঁড় আছে। সাথে আবার বাছুরও আছে দুইটি । ধরেন এই পরিবারে যে দুটি গাভী আছে, তারা এই বছর দুটি করে বাচ্চা দিল । তাহলে তাদের মত গরুর সংখ্যা হবে ৯ টি । ধরেন তারা পশু হত্যায় বিশ্বাসী না । তাই তারা এই গরুগুলোকে বিক্রিও করে না কারন তারা জানে যে বিক্রি হলে এই গরু গুলো কথাও না কথাও কুরবানি হবেই । আরও ধরেন এরপরের বছর আরও দুটি করে বাচ্চা দিল । তখন মত গরু ১৩ টি । এরপরের বছর দেখা গেল বাছুর গুলোর মধ্যে থেকে দুটি গাভী হয়ে উঠল , যারা বাচ্চা দিবে । এখন মত গাভীর সংখ্যা ৪ টি । ধরেন এই ৪ টি গাভীই এরপরের বছর আরও দুটি করে বাচ্চা দিল তাহলে , সে বছর ঐ পরিবারের মোট গরুর সংখ্যা হবে ১৯ টি । এখন এতগুলো গরু রাখার জন্য জায়গা, গরুকে খাওয়ানোর সামর্থ্য, পর্যাপ্ত ভুসি, খৈল, ঘাস তো একটি গরীব পরিবারের কাছে থাকে না , তাই না । তাহলে অটোমেটিক ঐ পরিবারের গরু গুলোকে বিক্রি করে দিতে হবে, এতে গরীব পরিবার ভাল অর্থ কামাতে পারবে , আর যারা কিনবে তারা তো গরুকে গুদামে ভরবে না, তারা গরুগুলোকে জবাই করে মাংস বিক্রি করবে, গরুর মাংস আমিষের চাহিদা পূরণ করবে, আর চামড়াগুলো শিল্পের কাজে লাগবে । এটা সুন্দর একটি প্রাকৃতিক ব্যাল্যান্স। তাহলে কিন্তু প্রকৃতির ব্যাল্যান্স ঠিক রাখার জন্য পশুগুলোকে জবাই করতে হচ্ছে , সেটি এমনেই হক অথবা কুরবানি করে।
মুসলিমদের উৎসব, এখানে সম্পূর্ণ ভিন্ন , এখানে নাচগান নাই, আড্ডা-মাস্তি নেই, ড্রিংকস নাই, মিছিল সভাযাত্রা নাই , আছে ত্যাগ আর তাকয়ার পরীক্ষা । আছে অসহায়দের মুখে হাসি ফোটানোর চেষ্টা তদবির। সমাজ থেকে শ্রেণী বৈষম্য দূর করতে , ধনী গরীবের সবার সাথে আনন্দ ভাগাভাগি করে নেয়া । এই রকম ভাল উৎসবে তো মনে হয় কার্ল মার্ক্স দ্বিমত থাকার কথা না । (পেরাডক্সিকাল সাজিদ,লেখকঃআরিফ আজাদ)

সুতরাং কোন ভাবেই পশু হত্যা করে মাংস ভক্ষণ করা এবং সেগুলা গরীবদের মাঝে বিলিয়ে দেয়া বিন্দুমাত্র অপরাধ নয় বরং বাস্তব মানবতার উদাহরণ ।

কুরবানীর শিক্ষা: কুরবানীর ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট ও বর্ণিত আলোচনা হতে আমরা কুরবানীর যে সব শিক্ষা পাই, তা হলো:

১. আল্লাহর নির্দেশের কাছে নিজেকে সম্পূর্ণভাবে আত্মসমর্পণ করা। তাইতো আমরা লক্ষ্য করি পুত্র ইসমাঈল আলাইহিস সালামকে কুরবানীর নির্দেশ পাওয়ার পর ইবরাহীম আলাইহিস সালাম এর কোনো কারণ জিজ্ঞেস করা তো দুরের কথা; নির্দেশ পালনে তিনি কোনো দ্বিধাও করেন নি।

২. আল্লাহর রাস্তায় সবচেয়ে প্রিয় বস্তু ত্যাগের চেতনা গ্রহণ করা। বৃদ্ধকালের একমাত্র অবলম্বন কিশোর সন্তান ইসমাঈলকে কুরবানী করার চূড়ান্ত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ইবরাহীম আলাইহিস সালাম আমাদেরকে এ শিক্ষা দিয়ে গেছেন যে, প্রাণাধিক প্রিয় বস্তু ত্যাগের মাধ্যমেই মহানুভব হওয়া যায়।

৩. কু-প্রবৃত্তি দমন করা। কুরবানীর অন্যতম শিক্ষা হলো কুপ্রবৃত্তির দমন করা। আমরা জানি, মানুষের মধ্যে দুটি সত্ত্বা রয়েছে। একটি সু-প্রবৃত্তি, যা মানুষকে স' ও মানবিকতার গুণে গুণান্বিত করে। অপরটি কুপ্রবৃত্তি, যা মানুষকে অস' ও পাশবিকতার দিকে ঠেলে নিয়ে যায়। কুরবানী দাতা পশুর গলায় ছুরি চালাবার সাথে সাথে নিজের নফস নামক কুপ্রবৃত্তির গলায়ও ছুরি চালাতে হবে। অর্থ্যা' তার শিক্ষা দ্বারা নিজের মধ্যকার হিংসা, বিদ্বেষ, লোভ, লালসা, ভোগবাদিতা ইত্যাদির মৃত্যু ঘটাতে হবে।

৪. জনস্বার্থে স্বীয় সম্পদ ব্যয় করা। মহান আল্লাহ তাআলা আমাদের প্রতি দয়াপরবশ হয়ে সন্তানের স্থলে পশু কুরবানী তথা আর্থিক কুরবানীর বিধান দিয়েছেন। তাই আমাদের উচিত আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞ হয়ে কুরবানীর গোশত বিতরণের ন্যায় প্রাণাধিক প্রিয় যে সম্পদ আমরা সঞ্চয় করে চলেছি তা হতে কিছু কিছু জনগণের কল্যাণে ব্যয় করা।

৫. সর্বোপরি জীবন, সম্পদ ও সকল আমিত্বের কুরবানী এবং মানবতা তথা সকল সৃষ্টির কল্যাণে স্বীয় সত্ত্বাকে নিয়োজিত করাই হলো কুরবানীর অন্যতম শিক্ষা। যে সমাজে কুরবানীর এসব শিক্ষার প্রতিফলন ঘটবে, সে সমাজ একটি সুখী, সমৃদ্ধিশীল ও শান্তিপূর্ণ সমাজে পরিণত হবে- এ কথা নিশ্চিত করে বলা যায়।

অতএব, কুরবানী কেন করবো? এর উপকার কি? এসব কথা না ভেবে এটি যে আল্লাহর বিধান, এটা মনে-প্রাণে বিশ্বাস করে লৌকিকতা নয়; একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের নিমিত্তে সঠিক পন্থায় আমাদেরকে কুরবানী দিতে হবে। তাহলেই আমাদের কুরবানী আল্লাহর দরবারে গৃহীত হবে। আল্লাহ তাআলা আমাদের সকল নেক আমলকে কবুল করুন। আমীন।

                                                                   প্রশ্ন উত্তর পর্ব

প্রশ্নঃ আল্লাহ ইব্রাহীমের কাছে তার সবচাইতে প্রিয় বস্তুর উৎসর্গের আদেশ দিয়েছিলেন। ইব্রাহীমের কাছে সবচাইতে প্রিয় বস্তু তার ছেলে ইব্রাহীম না হয়ে তার নিজ প্রান কেন হলো না। মানুষ সবচাইতে বেশী ভালবাসে তার নিজকে, তারপর পূত্র, কন্যা, স্ত্রী, মা-বাবা, ভাই বোন ইত্যাদি। সে অর্থে- নবী ইব্রাহীম কেন নিজেকে কুরবানী না দিয়ে তার ছেলেকে কুরবানী দিলেন এটা যথেষ্ট প্রশ্ন সাপেক্ষ। অনেকে যুক্তি দেয়- ইসমাইল ছিল ইব্রাহীমের বৃদ্ধ বয়েসের পূত্র্ আর তাই তাকেই ইব্রাহীম নিজের চাইতে ভাল বাসতেন। যুক্তি হিসাবে এটা ঠিক শক্ত মনে হয় না। ইব্রাহীম অবশ্যই তার ছেলেকে ভাল বাসতেন কিন্তু তার নিজেকে ভালবাসতেন সবচাইতে বেশী আর সেটাই মানুষের স্বভাব ???

উত্তরঃ উপরের প্রশ্নকর্তার অভিযোগ খণ্ডনঃ

১/ নবী ইবরাহীম (আ) যেহেতু তাঁর ছেলেকে কুরবানি দিতে ছেয়েছিলেন তাই এর থেকে প্রমাণিত হয় যে তিনি তাঁর নিজের থেকে তাঁর পুত্রকেই বেশি ভালবাসতেন ।

২/ উপরের প্রশ্নকর্তা কিভাবে জানলেন নবী ইবরাহীম (আ) নিজেকে বেশি ভালবাসতেন? এর উত্তর কি হবে ? 

৩/ উদাহরণ হিসেবে একজন প্রেমিক প্রেমিকার কথা এখানে বলা যায় , একজন সত্যকারী প্রেমিক তার প্রেমিকাকে বলল যে আমি তোমার জন্য আমার নিজের জীবন দিতে পারি । এখানে খেয়াল করেন নিজের জীবন থেকে কিন্তু প্রেমিকার ভালবাসা বেশি প্রাধান্য পাচ্ছে । এখানে ভালবাসা মেইন ফ্যাক্ট, নিজের জীবন না । তাছাড়া এমন অনেক ছেলে আছে যে নিজে আত্মহত্যা করে একজন মেয়ের জন্য - এখানেও কিন্তু নিজের জীবন থেকে ভালবাসা প্রাধান্য পেয়েছে । টিকাঃ ইসলামে আত্মহত্যা হারাম । এখানে শুদু উদাহরণ হিসেবে বলা হয়েছে ।

৪/ আরেকটি মজার উদাহরণ দেয়া যেতে পারে তা হলঃ আমরা অনেকেই বাংলা ছায়াছবি দেখেছি আগের, যেখানে একজন মা নিজের সন্তানের জন্য জীবন দিয়ে দেয় । এটি বর্তমানে দুর্লভ হলেও কিন্তু সত্য । 

৫/ বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে যারা যুদ্ধ করে শহীদ হয়েছেন তাদের কাছে তাদের নিজের প্রানের চেয়ে দেশটা বেশি কেন প্রিয় হল? কেন দেশ রক্ষার জন্য নিজেদের প্রাণটা মৃত্যুর মুখে ছেড়ে দিল ? একই হিসাব কিন্তু, ইবরাহীম (আ) কাছে নিজের চেয়ে প্রিয় ছিল পুত্রের প্রান আর মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে নিজের চেয়ে প্রিয় ছিল নিজের দেশ । কিন্তু পরিক্ষার ধরণ ছিল আলাদা । ইব্রাহীমকে (আ)কে বলা হল, প্রিয় জিনিস কুরবানি করতে আর মুক্তিযোদ্ধাদের বলা হলঃ প্রিয় জিনিস রক্ষা করতে । কিন্তু আমরা দেখতে পেলাম, দু'দলেরও কারো কাছেই প্রিয় বস্তু নিজের প্রান নয় । সুতরাং প্রশ্নকর্তার অভিযোগ এখানেই ভুল প্রমাণিত হল । (পেরাডক্সিকাল সাজিদ,লেখকঃআরিফ আজাদ)

প্রশ্নঃ আল্লাহ্‌ পরীক্ষাটা করেছেন ইব্রাহীমকে, তাই ইবরাহীমের পদাঙ্ক অনুসরন করে সেই পরীক্ষাটা কেন তার অনুসারীদের দিতে হবে?

উত্তরঃ আমরা নবী মুহাম্মদ (সা) কে অনুসরন করি, তাহলে আমরা কি বলতে পারি যে, কই আমাদের উপর তো জিবরাইল (আ) ওহী নিয়ে কখনোই আসেনি, তাহলে নবী মুহাম্মদ (সা) উপরে আসা ওহী আমরা কেন মানতে যাব ? এই প্রশ্ন কিন্তু আমরা করতে পারি না আর করাতাও অযৌক্তিক কারন নেতা আর তার অনুসারীর মধ্যে পার্থক্য আছে । প্রশ্নকর্তা আসলে হয়ত জানেন না যে Leader and Leaderership বিষয় আদতে কোন বিষয় আছে । তাই এরকম ভুল প্রশ্ন করেছেন ।(পেরাডক্সিকাল সাজিদ,লেখকঃআরিফ আজাদ)

প্রশ্নঃ নবী ইব্রাহীমকে তো কেবল পুত্র ইসমাইলকে কুরবানি করা সংক্রান্ত পরীক্ষাই দিতে হয়নি, অগ্নিকুণ্ডে নিক্ষিপ্ত হবার মতো কঠিন পরিক্ষাও তাকে দিতে হয়েছিল, তাহলে মুসলমানরা ইবরাহীমের সৃতি ধরে রাখতে পশু কুরবানি করলেও, ইব্রাহীমের আরেকটি পরীক্ষা মতে, মুসলমানরা নিজেদের অগ্নিকুণ্ডে নিক্ষেপ করে না, কেন ?

উত্তরঃ এখানে একটি সুন্দর উদারহন দেয়া যায় তা হলঃ আমরা অনেকেই বঙ্গ বন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ভালবাসী । স্বাধীনতার মুক্তিযুদ্ধে তার নেতৃত্বের অবদান অনেক ব্যাপক ছিল । এমনও বলা হয় বঙ্গবন্ধুর সম্মোহনী নেতৃত্ব না দিলে হয়ত দেশ স্বাধীন হত না। বঙ্গবন্ধুকে জীবনে দুটি বড় ধরনের পরিক্ষার মুখোমুখী হতে হয়েছিল , (ক) একটা দেশকে স্বাধীন করার জন্য লড়াইয়ে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেয়া । (খ) সপরিবারে খুন হওয়া ।

আমরা বাঙ্গালীরা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ভালবাসি । এবং ৭১-এর চেতনায় নিজেকে বলিয়ান ভাবি । ১৬ই ডিসেম্বর সভা-সমাবেশে জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু বলে শ্লোগান দেই । কিন্তু ১৫-ই অগাস্টে রাস্তায় বেরিয়ে আমরা কি কোনদিন বলি যে হে মেজর ডালিমের বংশধর, হে খোন্দকার মোশতাকের বংশধর, তোমরা কে কথায় আছো , এসো আমাকেও বঙ্গবন্ধুর মত সপরিবারে খুন করো , কখনো কি আমরা এই কথা বলি ? উত্তর হল না । কেউই এরকম বলে । কেউ যদি বলেও তাহলে মানুষ তাকে পাগল বলবে, কিন্তু এর অর্থ এটা নয় যে, বঙ্গবন্ধুকে আমরা ভালবাসি না । (পেরাডক্সিকাল সাজিদ,লেখকঃআরিফ আজাদ)

আরও সহজ ভাবে বললে, আমরা ইবরাহীম (আ) এর অগ্নিকুণ্ডে পরিক্ষার অনুসরনে, আমরা অগ্নিকুণ্ডে লাভ দেই না কারন আল্লাহ্‌ ও তাঁর রাসুল (সা) আমাদেরকে সেরকম কিছুই করতে বলেননি । সোজা কথা ।

প্রশ্নঃ আল্লাহ ইব্রাহীমকে সবচেয়ে প্রিয় বস্তু কোরবানী করতে আদেশ দিয়েছিলেন স্বপ্নে, বাস্তবে নয়। মনোবিজ্ঞান, জ্যোতিশাস্ত্র, ধর্ম সহ সকল শাস্ত্র বলে স্বপ্ন হলো রূপক বিশেষ। আর ইব্রাহীমের বেলায় সে রূপকটির অর্থ ছিল তিনি আল্লাহ কে কতটা ভালবাসেন তা পরীক্ষা করা। তিনি সে পরীক্ষায় উত্তীর্ন হয়েছিলেন। পরীক্ষাটা ছিল শুধুমাত্র ইব্রাহীমের জন্য। তা যদি হয় তাহলে তার পদাংক অনুসরন করে বর্তমানে যারা কোরবানীর নামে নির্মম ও নৃশংসভাবে পশু জবাই করে তারা আল্লাহকে এর মাধ্যমে কি ধরনের ভালবাসা দেখায় ? এতে কি আদৌ আল্লাহর প্রতি ভালবাসা প্রকাশ পায়?

উত্তরঃ প্রশ্নকর্তার অভিযোগ খণ্ডনঃ

১/ প্রশ্নকর্তা হয়ত জানেন না যে, নবীদের স্বপ্ন বাস্তবের মতই সত্য । ihadis.com, সহিহ বুখারি, হাদিসঃ ৬৯৮৪, সহিহ হাদিসঃ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেছেনঃ ভাল স্বপ্ন আল্লাহ্‌র পক্ষ থেকে হয় আর খারাপ স্বপ্ন শয়তানের পক্ষ থেকে হয়ে থাকে। এবং ihadis.com, সহিহ বুখারি, হাদিসঃ ৬৯৮৩, সহিহ হাদিসঃ রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ নেক্‌কার লোকের ভাল স্বপ্ন নবুয়তের ছেচল্লিশ ভাগের এক ভাগ ।

২/ কুরআন হাদিসে কথায় বলা আছে "স্বপ্ন হল রূপক বিশেষ" ? এখানে প্রশ্নকর্তা মিথ্যা বলেছেন ।

৩/ পশুকে নির্মম এবং নৃশংসভাবে হত্যা করা হয় না , এখানেও প্রশ্নকর্তা ভুল বলেছেন কারনঃ * ihadis.com, সহিহ মুসলিম, হাদিসঃ ৪৯৪৯, সহিহ হাদিসঃ শাদ্দাদ ইবনু আওস (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) হতে আমি দু’টি কথা মনে রেখেছি, তিনি বলেছেনঃ আল্লাহ তা’আলা প্রত্যেক বিষয়ে তোমাদের উপর ‘ইহসান’ অত্যাবশ্যক করেছেন। অতএব তোমরা যখন হত্যা করবে, দয়ার্দ্রতার সঙ্গে হত্যা করবে; আর যখন যাবাহ করবে তখন দয়ার সঙ্গে যাবাহ করবে। তোমাদের সবাই যেন ছুরি ধারালো করে নেয় এবং তার যাবাহকৃত জন্তুকে কষ্টে না ফেলে।

৪/ আল্লাহ্‌ পশু কুরবানির দ্বারা কি ধরনের ভালবাসা দেখায় ? ধরেন কোন যুদ্ধে এক নেতা তার সৈন্যদের বলছেন, দেশ প্রেমের জন্য নিজের জীবন দিয়ে দেও, দরকার পড়লে এর জন্য যত কষ্ট ত্যাগ করতে হয় আমরা করব । এর ফলে যদি আমরা নিজের দেশের স্বাধীনতার জন্য জীবন দেই এতে আমরা গর্ববোধ করব । যে আমরা খাটি দেশপ্রেমী । আচ্ছা কেউ যদি এখানে বলে দেশের জন্য আবার নিজের জীবন দিলে এটা আবার কেমন আনন্দের, ভালবাসার জিনিস হয়, দেশের জন্য আবার জীবন কিভাবে দেয় ? এই প্রশ্ন যেমন ভুল একই ভাবে উপরের প্রশ্নকর্তার প্রশ্নটিও ভুল ।

প্রশ্নঃ ইসলামে পশুর সাথে সেক্স করার বিধান কি ?

উত্তরঃ ihadis.com, জামে আত তিরমিজি, হাদিসঃ ১৪৫৫, হাসান সহিহ হাদিসঃ ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা যে মানুষকে পশুর সাথে কু-কর্মে লিপ্ত দেখ, তাকে এবং পশুটিকে হত্যা কর।

উপরের হাদিস থেকে প্রমান হল ইসলামে যদি কেউ পশুর সাথে সেক্স করে তাহলে তার শাস্তি মৃত্যুদণ্ড । পশুকে কেন হত্যা করতে বলা হয়েছে ? কারন উক্ত পশুকে দেখে কেউ যেন সেই অপরাধের কথা মনে আনতে না পারে । এর জন্য অপরাধীর সাথে উক্ত পশুকেও হত্যা করতে হবে ।


এমডি আলী

যিনি একজন লেখক, বিতার্কিক ও গবেষক। বিভিন্ন ধর্ম ও মতবাদ বিষয় পড়াশোনা করেন। ইসলামের সত্যতা মানুষের কাছে ছড়িয়ে দিতে চান। “সত্যের অনুভূতি” উনার লেখা প্রথম বই। “ফ্যান্টাস্টিক হামজা” দ্বিতীয় বই। জবাব দেবার পাশাপাশি নাস্তিক মুক্তমনাদের যৌক্তিক সমালোচনা করে থাকেন।

Previous Post Next Post