হাদিস সংকলনের সংশয়ের সমাপ্তি

বিষয়ঃ হাদিস সংকলনের সংশয়ের সমাপ্তি।

লিখেছেনঃ এমডি আলী।

==========================

ভূমিকাঃ

বর্তমান সময়ে কিছু লোকদেরকে বলতে শোনা যায় উনারা নাকি হাদিস মানেন না। হাদিস মানেন না কিন্তু কুরআনকে আবার ঠিকই আল্লাহর বানী বলে বিশ্বাস করেন। আজকের লেখাটি উনাদেরকে নিয়েই লেখা হবে। উনারা আরও দাবি করে থাকেন হাদিসের মধ্যে নাকি সমস্যা আছে, ঠিক মতো নাকি নবীজি (সা) এর কথা সংগ্রহ করা হয়নি। আবার এও বলে যেই হাদিস কুরআনের সাথে মিলে সেই হাদিস মানে আর যেই হাদিস মিলে না সেই হাদিস নাকি মানে না। মানে নিজেদের সুবিধা মতো ইসলামকে এরা নিজেদের মতো করে ব্যাবহার করতে চায়। আহলে কুরআন অথবা হাদিস অস্বীকারকারীদের নিয়ে প্রচুর লেখা আছে। এরপরেও আমার পাঠকদের জন্য আরও সহজ করে ব্যাপার গুলো সহজে তুলে ধরছি। যাতে আমার পাঠকরা অন্যদের কাছে লেখা গুলো ছড়িয়ে দেন।


কিছু যৌক্তিক প্রশ্ন সমাহারঃ

প্রশ্ন গুলো বুঝতে হবে। আপনারা যদি হাদিস অস্বীকার করে থাকেন তাহলে কুরআনকে কিভাবে আল্লাহর বানী বলে বিশ্বাস করেন? কারণ নবীজি মোহাম্মদ (সা) এর সকল ইতিহাস ও ঘটনা গুলো আমরা বিভিন্ন ইতিহাস গ্রন্থ অথবা সিরাত ও বিশুদ্ধ হাদিস গ্রন্থ থেকে জানতে পারি, তাহলে হাদিস অস্বীকার করলে আপনি তো সিরাত, এরপরে বিভিন্ন ইসলামিক ইতিহাস গ্রন্থও মানতে পারবেন না, তাহলে? আপনি যদি নবী মোহাম্মদ (সা)কেই না মানেন আল্লাহর পক্ষ থেকে আসা কুরআনকে কিভাবে মানতে পারেন?


যারা হাদিস অস্বীকার করে তারা আসলে ইসলাম ঠিক মতো পালন করতেই পারবে না। ঈদের আনন্দ থেকে বঞ্চিত হবে। কারণ কোরআনে দুই ঈদের কোন উল্লেখ নেই। কোরআনে ঈদের নামাজের উল্লেখ নেই। তাই এরা ঈদের নামাজ থেকে বঞ্চিত হবে। তাছাড়া ঈদের নামাজ পড়া ওয়াজিব বা ফরজ। পশু কুরবানির কথা কোরআনে থাকলেও কোরবানি যে ঈদের দিন করতে হবে এই কথা বলা নাই। এক গরু ৭ জনে ভাগ করে কুরবানি দেয়া যাবে সেই কথাও বলা নাই। ছাগলের যে ভাগ হয় না সেটাও কোরআনে পাওয়া যায় না।ঈদের ফিতরার ব্যাপারে কোরআনে কিছু পাওয়া যায় না। তাই এরা ফিতরা দেয় না। কিন্তু ফিতরা দেয়া ফরজ বা ওয়াজিব। এগুলোর সমাধান বিস্তারিত কুরআনের আয়াত থেকে দেখাতে পারবে কি হাদিস অস্বীকারকারীরা?


জুম্মার নামাজের কথা কোরআনে থাকলেও। কোরআনে এই নামাজের সময় বলা নাই। জুম্মার নামাজ যে জোহরের নামাজের বিকল্প এবং মাত্র দুই রাকাত এই কথা কোরআনে পাওয়া যায় না। হাদিসের সাহায্য ছাড়া জুম্মার নামাজ পড়া সম্ভব না। কোরআনে কোন খাদ্য হালাল আর কোন খাদ্য হারাম বলা আছে। কিন্তু কুকুরের মাংসকে হারাম করা হয়নি। শকুনের মাংসের উপরও কোন নিষেধাজ্ঞা কোরআনে পাওয়া যায় না। কুকুর, অন্য হিংস্র পশু বা শকুন জাতীয় পাখির মাংস হারাম করা হয়েছে হাদিসের মাধ্যমে। কোরআনে মৃত প্রাণীর মাংস হারাম করা হয়েছে। এই কারণে মনে হতে পারে যে মৃত মাছ খাওয়া হারাম। কিন্তু হাদিসের মাধ্যমে মাছকে হালাল করা হয়েছে। পুরুষদের সমকামিতাকে কোরআনে নিষেধ করা হয়েছে। কিন্তু নারীদের সমকামিতার ব্যাপারে কোরআনে কিছু পাওয়া যায় না। হাদিসের মাধ্যমে পুরুষ বা নারীর সমকামিতার উপর নিষেধাজ্ঞা এবং শাস্তি সম্পর্কে আমরা জানতে পারি। হাদিস অস্বীকার করলে এসব সমস্যার সমাধান কি?


কুরআনের আয়াত গুলো তো সরাসরি বই আকারে অবতীর্ণ হয়নি তাহলে কুরআন সংকলনের ইতিহাস কিভাবে হাদিস বিদ্বেষীরা বিশ্বাস করতে পারে? যারা যারা কুরআনের হাফেজ ছিলেন উনাদের ইতিহাস কিভাবে বিশ্বাস করে তারা? নবী মোহাম্মদ (সা) নামে কেউ ছিলেন এই ব্যাপারেও তো আমাদেরকে ইতিহাসের সাহায্য নিতে হয় তাহলে সেই সব ইতিহাস কিভাবে ও কেন বিশ্বাস করে কথিত আহলে কুরআনরা? কুরআন যে বাংলায় অনুবাদ করা হয়েছে এটা কুরআনের কোথায় বর্ণিত হয়েছে? যদি না থাকে তাহলে কেন আহলে কুরআনরা বাংলা অনুবাদের কুরআন পাঠ করে?


সূরা তওবা ৯ঃ ১০০ আয়াতে বলা আছে,আর মুহাজির ও আনসারদের মধ্যে যারা প্রথম অগ্রগামী এবং যারা তাদেরকে অনুসরণ করেছে সুন্দরভাবে, আল্লাহ তাদের প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছেন আর তারাও আল্লাহর প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছে। আর তিনি তাদের জন্য প্রস্তুত করেছেন জান্নাতসমূহ, যার তলদেশে নদী প্রবাহিত, তারা সেখানে চিরস্থায়ী হবে। এটাই মহাসাফল্য। এই আয়াতে আল্লাহ মুহাজির ও আনসারদের অনুসরণ করতে বলেছেন খাঁটিভাবে।এখন এই মুহাজির ও আনসারদের অনুসরণ কর‍তে হলে তাদের ইতিহাস জানতে হবে।তারা কিভাবে ঈমান এনেছে, ঈমান ধারণ করেছে ইত্যাদি।যদি তা না ই জানি তাহলে অনুসরণ করব কিভাবে?


সুরা বাকারা ২ঃ২১৭ আয়াতে বলা আছে, তারা তোমাকে হারাম মাস সম্পর্কে, তাতে লড়াই করা বিষয়ে জিজ্ঞাসা করে। বল, ‘তাতে লড়াই করা বড় পাপ। আবার অন্য আয়াতে অর্থাৎ সুরা তওবা ৯ঃ৩৬ আয়াতে বলা আছে,নিশ্চয় মাসসমূহের গণনা আল্লাহর কাছে বার মাস আল্লাহর কিতাবে, (সেদিন থেকে) যেদিন তিনি আসমান ও যমীন সৃষ্টি করেছেন। এর মধ্য থেকে চারটি হারাম, এটাই প্রতিষ্ঠিত দীন। প্রশ্ন হচ্ছে কুরআনের কোথাও নির্দিষ্ট করে হয়নি যে কোন চারটি মাস তাহলে প্রশ্ন হচ্ছে ইতিহাসের সাহায্য ছাড়া, সহিহ হাদিসের সাহায্য ছাড়া কথিত আহলে কুরআনরা স্পষ্ট কুরআনের আয়াত থেকে দেখাক উক্ত আয়াত কোন নিষিদ্ধ মাসের কথা বলা হচ্ছে?


সুরা বাকারা ২ঃ১৮৭ আয়াতে বলা আছে,আহার কর ও পান কর যতক্ষণ না ফজরের সাদা রেখা কাল রেখা থেকে স্পষ্ট হয়। উক্ত আয়াতে কখন থেকে সিয়াম শুরু করতে হবে তার কথা বলছে। তবে সাদা রেখা থেকে কাল রেখা দ্ধারা কোন সময় কে বুঝিয়েছে তা কুরআনে উল্লেখ্য নেই তাহলে কথিত আহলে কুরআনরা এখানে বানিয়ে বানিয়ে কি ব্যাখ্যা দিবে? কুরনের আয়াত থেকে স্পষ্ট দেখান যে উক্ত আয়াতে কোন সময় বুঝানো হয়েছে?


সুরা কিয়ামত ৭৫ঃ ১৬ থেকে ১৯ আয়াতে বলা আছে, তাড়াতাড়ি শিখে নেয়ার জন্যে আপনি দ্রুত ওহী আবৃত্তি করবেন না। এর সংরক্ষণ ও পাঠ আমারই দায়িত্ব। অতঃপর আমি যখন তা পাঠ করি, তখন আপনি সেই পাঠের অনুসরণ করুন। এরপর বিশদ বর্ণনা আমারই দায়িত্ব। এই আয়াত থেকে আহলে কুরআন কাছে প্রশ্ন হচ্ছে বিশদ বর্ণনা গুলো কোথায়? এইভাবে কোরবানির বিস্তারিত বর্ণনা কুরআনে নেই কয়ভাগ হবে, কাদের দিবো, কোন কোন পশু কোরবানি দিব এগুলোর সমাধান কি? জুমার আযানের কথা আছে,বাকি নামাজের আযানের কথা কি আছে, কোরআনে? এবং আযানের মাঝে কি কি শব্দ হবে তা নেই, কেন? অযুর কথা আছে, গোসলের কথা আছে কিন্তু কখন অযু নষ্ট হয়? কখন কখন গোসল ফরজ হয়, এইসব বিস্তারিত কোথায় কুরআনে? কোন দিকে প্রশ্রাব করবো, দাঁড়িয়ে না বসে, তা কুরআনে কি আছে? কুরআনে মিরাজের কথা আছে, কিন্তু কখন হলো, কি হলো, কিভাবে হলো এর বর্ননা নেই কেন কুরআনে? ঈদের নামাজ সম্পর্কে কিছু আছে কি কুরআনে,এর পদ্বতি, খুতবা, এইসব আছে কি? হাদিসের মতো?ঈদের নামাজ পড়েন তো,ঈদুল ফিতরের, উৎযাপন করেন তো?


সুরা ইয়াসিন ৩৬ঃ ২১ আয়াতে বলা হয়েছে, তোমরা মান্য কর এদেরকে- যারা তোমাদের কাছে কোন প্রতিদান চায় না। উপরন্তু তারা সঠিক পথে পরিচালিত। এই আয়াতে কাদের অনুসরণ করতে বলা হয়েছে? এখানে একাধিক লোককে অনুসরণ করতে বলা হয়েছে ম শুধুমাত্র নবীকে নয় তাহলে?


সুরা মায়েদা ৫ঃ১ আয়াতে বলা আছে, মুমিনগণ, তোমরা অঙ্গীকারসমূহ পূর্ন কর। তোমাদের জন্য চতুষ্পদ জন্তু হালাল করা হয়েছে, যা তোমাদের কাছে বিবৃত হবে তা ব্যতীত। কিন্তু এহরাম বাধাঁ অবস্থায় শিকারকে হালাল মনে করো না! নিশ্চয় আল্লাহ তা'আলা যা ইচ্ছা করেন, নির্দেশ দেন। আবার সুরা আরাফে ৭ঃ১৭৯ আয়াতে বলা আছে,আর আমি সৃষ্টি করেছি দোযখের জন্য বহু জ্বিন ও মানুষ। তাদের অন্তর রয়েছে, তার দ্বারা বিবেচনা করে না, তাদের চোখ রয়েছে, তার দ্বারা দেখে না, আর তাদের কান রয়েছে, তার দ্বারা শোনে না। তারা চতুষ্পদ জন্তুর মত; বরং তাদের চেয়েও নিকৃষ্টতর। তারাই হল গাফেল, শৈথিল্যপরায়ণ। এই আয়াত গুলোতে কি আহলে কুরআনরা বলবে এক আয়াতে চতুস্পদ জন্তু হালাল করা হয়েছে আর অন্য আয়াতে মানুষকে চতুস্পদ জন্তুর মত বলা হয়েছে তাহলে কি কথিত আহলে কুরআনরা মানুষের মাংস খাওয়াকে হালাল বলবে?


সূরা মায়েদা ৫:৩৮ আয়াত থেকে জানা যায়, চোর চুরি করলে হাত কাটতে হবে। এখন আহলে কুরআনদের কাছে প্রশ্ন হচ্ছে,হাত কতটুকু কাটা হবে? এক হাত, না দুই হাত? যদি এক হাত হয়, তাহলে তা ডান হাত, নাকি বাম হাত? যেই চোরের হাত নাই, তার কি কাটা হবে? কিংবা যার দুই হাত কাটার পরেও আবার চুরি করেছে, তার কি কাটা হবে? নাবালগ শিশু চুরি করলে তা কি হুকুম? কোনও হিজড়া চুরি করলে তার কি হুকুম? (হিজড়া তো না পুরুষ, না নারী) কতটাকা বা কি পরিমাণ অর্থ চুরি করলে হাত কাটতে হবে? কেউ যদি দারুণ অভাবী হয়ে চুরি করে, তাহলেও কি তার হাত কাটা হবে? টাকা  ও ১,০০,০০০ টাকা চুরি করলে কতটুকু হাত কাটতে হবে? যদি হাত কাটা হয়, তাহলে কি তা সমান হয়? যুক্তি কি? কেউ আপনার ৫ টাকা দামের কলমটি চুরি করলে আপনি কি তার হাত কেটে নিবেন?


কুরআন থেকে যে আয়াত গুলো পেশ করে অপব্যাখ্যা করে তারাঃ

 আহলে কুরআনরা কিছু আয়াত দেখিয়ে দাবি করে থাকে,

যেহেতু এই কিতাব বিস্তারিতভাবেই নাজিল হয়েছে এবং এই কিতাবে কোন ত্রুটি নেই বলেছেন আল্লাহ, সেহেতু কেবলমাত্র এই কিতাবের উপরই ভরসা করতে পারে, অন্য কারো কথায় নয়।


সুরা জাসিয়া ৪৫ঃ৬ = এগুলো আল্লাহর আয়াত, আমি তা যথাযথভাবেই তোমার কাছে তিলাওয়াত করছি। অতএব তারা আল্লাহ ও তাঁর আয়াতের পর আর কোন্ কথায় বিশ্বাস করবে?


সুরা আরাফ ৭ঃ১৮৫ = তারা কি দৃষ্টিপাত করেনি আসমানসমূহ ও যমীনের রাজত্বে এবং আল্লাহ যা কিছু সৃষ্টি করেছেন তার প্রতি? আর (এর প্রতি যে) হয়তো তাদের নির্দিষ্ট সময় নিকটে এসে গিয়েছে? সুতরাং তারা এরপর আর কোন্ কথার প্রতি ঈমান আনবে?


সুরা আনআম ৬ঃ৩৮ = আর যমীনে বিচরণকারী প্রতিটি প্রাণী এবং দু’ডানা দিয়ে উড়ে এমন প্রতিটি পাখি, তোমাদের মত এক একটি উম্মত। আমি কিতাবে কোন ত্রুটি করিনি। অতঃপর তাদেরকে তাদের রবের কাছে সমবেত করা হবে।


সুরা আনআম ৬ঃ৩৯ = আর যারা আমার আয়াতসমূহকে অস্বীকার করেছে, তারা বোবা ও বধির, অন্ধকারে রয়েছে। আল্লাহ যাকে চান, তাকে পথভ্রষ্ট করেন এবং যাকে চান তাকে সরল পথে অটল রাখেন।


সুরা আনআম ৬ঃ১১৪ = আমি কি আল্লাহ ছাড়া অন্য কাউকে বিচারক হিসেবে তালাশ করব? অথচ তিনিই তোমাদের নিকট বিস্তারিত কিতাব নাযিল করেছেনআর যাদেরকে আমি কিতাব দিয়েছিলাম তারা জানত যে, তা তোমার রবের পক্ষ থেকে যথাযথভাবে নাযিলকৃত। সুতরাং তুমি কখনো সন্দেহকারীদের অন্তর্ভুক্ত হয়ো না।


সুরা আনআম ৬ঃ১১৫ = আর তোমার রবের বাণী সত্য ও ন্যায়পরায়ণতার দিক থেকে পরিপূর্ণ হয়েছে। তাঁর বাণীসমূহের কোন পরিবর্তনকারী নেই। আর তিনিই সর্বশ্রোতা ও সর্বজ্ঞানী।


সুরা আরাফ ৭ঃ২ = এটি কিতাব, যা তোমার প্রতি নাযিল করা হয়েছে। সুতরাং তার সম্পর্কে তোমার মনে যেন কোন সংকীর্ণতা না থাকে। যাতে তুমি তার মাধ্যমে সতর্ক করতে পার এবং তা মুমিনদের জন্য উপদেশ।


সুরা আরাফ ৭ঃ৩ = তোমাদের প্রতি তোমাদের রবের পক্ষ থেকে যা নাযিল করা হয়েছে, তা অনুসরণ কর এবং তাকে ছাড়া অন্য অভিভাবকের অনুসরণ করো না। তোমরা সামান্যই উপদেশ গ্রহণ কর।


সুরা কালাম ৬৮ঃ৩৭ = তোমাদের কাছে কি কোন কিতাব আছে যাতে তোমরা পাঠ করছ?


সুরা মুরসালাত ৭৭ঃ৫০ = সুতরাং কুরআনের পরিবর্তে আর কোন্ বাণীর প্রতি তারা ঈমান আনবে?


উপরের আল্লাহর বানীর কথা মানার জন্য গুরুত্ব দেবার কথা বলা আছে। কিন্তু তারমানে এই না যে নবীজি (সা) এর উপরে ইমান আনা যাবে না অথবা নবীজি (সা)কে মানা যাবে না। উপরের একটি আয়াতের মধ্যে কোথাও এই কথা স্পষ্ট করে বলা হয়নি যে “তোমরা নবী মোহাম্মদ (সা)এর আদর্শ থেকে নিয়ে নবীজির কিছুই বিশ্বাস করবে না অথবা মানবে না” তাহলে কিভাবে আহলে কুরআনরা উপরের আয়াত গুলো থেকে এই সিদ্ধান্ত নিলো যে নবী মোহাম্মদ (সা)কে মানা যাবে না? অথচ কুরআনের মধ্যেই এই কথা স্পষ্ট করে বলা হয়েছে নবীজি (সা)এর আনুগত্য করতে হবে,উনার উপর ইমান আনতে হবে। আসুন জেনে নেই সেই স্পষ্ট আয়াত গুলো। কুরআনে স্পষ্ট ঘোষণা আছে যে রাসূল সা. এর আদেশের আনুগত্য শুধু যে আবশ্যক তা নয়; বরং মুমিন হওয়ারও পূর্বশর্ত। সেই আদেশ উপদেশ ও কর্মনীতিকেই পরিভাষায় হাদিস বলা হয়।


আল কুরআন, সুরা মায়েদা ৫ঃ৯২ আয়াতে বলা আছে,

আর তোমরা আল্লাহর আনুগত্য কর এবং আনুগত্য কর রাসূলের আর সাবধান হও। তারপর যদি তোমরা মুখ ফিরিয়ে নাও তবে জেনে রাখ যে, আমার রাসূলের দায়িত্ব শুধু সুস্পষ্ট প্রচার।


আল কুরআন,সূরা নিসা ৪ঃ ৬৫ আয়াতে বলা আছে,

‘আপনার প্রতিপালকের শপথ, তারা ততক্ষণ মুমিন হবে না, যতক্ষণ না পারস্পরিক বিবাধে তারা আপনাকে মীমাংসাকারী হিসেবে মেনে নেয়। অতঃপর আপনার মীমাংসায় তাদের মনে কোনো ধরনের সঙ্কোচ না আসে এবং তা পূর্ণরূপে মেনে নেয়। 


আল কুরআন, সূরা আহযাব ৩৩ঃ ৩৬ আয়াতে বলা আছে,

কোনো মুমিন নারী-পুরুষের অবকাশ নেই যে, আল্লাহ ও তার রাসূল সা. কোনো কাজের আদেশ দিলে সে কাজে প্রশ্ন করবে। আর যে আল্লাহ ও তার রাসূলের আদেশ অমান্য করে সে স্পষ্ট গোমরাহিতে নিপতিত হলো।’


এ আয়াতে আল্লাহ তায়ালা নিজের ও তার রাসূলের আদেশ পালনকে ঈমানের জন্য অপরিহার্য ও মুসলমানের জন্য তা আবশ্যকীয় করে দিয়েছেন। আর রাসূল সা.-এর অবাধ্যতাকে খোদার অবাধ্যতার সাথে তুলনা করেছেন। সুতরাং রাসূল সা.-এর হাদিস তথা বাণী ও কর্ম যদি শরীয়তের অন্যতম দলীল না হত তবে উক্ত আয়াতে এতো কঠোর সাবধান বাণী দেয়া হতো না। শুধু মাত্র আল্লাহর হুকুম পালন করাই যদি উদ্দেশ্য হয় তাহলে আলাদা করে আবার রাসুলের আদেশ কেন মানতে বলা হয়েছে? 


আল কুরআন,সূরা জুমআ ৬২ঃ২ আয়াতে বলা আছে,

সেই আল্লাহ নিরক্ষর লোকদের কাছে, তাদের থেকে একজন রাসূল প্রেরণ করেছেন, যেন তিনি তাদের নিকট আল্লাহর আয়াতগুলো তেলাওয়াত করেন। এতে করে যাতে তিনি তাদের পবিত্র করেন এবং কিতাব ও প্রজ্ঞার শিক্ষা দান করেন। এর এই লোকেরাই ইতিপূর্বে স্পষ্ট গোমরাহীতে পতিত ছিল।


এই আয়াতে রাসূল সা. এর চারটি দায়িত্বের উল্লেখ করা হয়। কোরআন তেলাওয়াত। পরিশুদ্ধকরণ, কিতাবের শিক্ষা।  প্রজ্ঞার শিক্ষা দান। এখানে কিতাবের শিক্ষা বলতে কোরআনের তাফসির ও ব্যাখ্যার কথা বোঝানো হয়েছে। আর প্রজ্ঞা অর্থ হাদীস ও সুন্নাত। এখন আহলে কুরআনরা যদি বলে উক্ত আয়াতে শুধুমাত্র আল্লাহর হুকুম পালন করতেই বলা হয়েছে তাহলে রাসুল যে, আল্লাহ অবতীর্ণ করেছেন সেই ব্যাপারে আমরা বিস্তারিত কিভাবে জানতে পারবো?


আল কুরআন, সুরা নাহল ১৬ঃ ৪৪ আয়াতে বলা আছে,

প্রেরণ করেছিলাম তাদেরকে নিদর্শন সমূহ ও অবতীর্ণ গ্রন্থসহ এবং আপনার কাছে আমি স্মরণিকা অবতীর্ণ করেছি, যাতে আপনি লোকদের সামনে ঐসব বিষয় বিবৃত করেন, যে গুলো তোদের প্রতি নাযিল করা হয়েছে, যাতে তারা চিন্তা-ভাবনা করে।


আল কুরআন, সুরা আহজাব ৩৩ঃ ২১ আয়াতে বলা আছে,

‘অবশ্যই তোমাদের জন্য রাসুলুল্লাহর মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ তাদের জন্য যারা আল্লাহ ও পরকাল প্রত্যাশা করে এবং আল্লাহকে অধিক স্মরণ করে। 


এখানে কথিত আহলে কুরআনরা কি বলবে? শুধুমাত্র আল্লাহর বানী প্রচার করাকে তো আর উত্তম আদর্শ বলা হয় না,তাহলে এখানে উত্তম আদর্শ বলতে কি বুঝানো হয়েছে? নবী মোহাম্মদ (সা) পুরো জীবনী তো কুরআনে বলা হয়নি তাহলে মুসলিমরা কিভাবে নবীজির আদর্শ শুধুমাত্র কুরআন থেকে জানতে পারবে? নবীজি (সা) জীবনী কারা সংরক্ষণ করেছেন? কিভাবে করেছেন? কেন করেছেন? কথিত আহলে কুরআনরা এসব প্রশ্নের জবাব সরাসরি স্পষ্ট কুরআনের আয়াত থেকে কিভাবে দেখাবে?


আল কুরআন, সুরা আহজাব, ৩৩ঃ ৭১ আয়াতে বলা আছে,

হে নবী, আমি আপনাকে পাঠিয়েছি সাক্ষ্যদাতা, সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারীরূপে। আর আল্লাহর অনুমতিক্রমে তাঁর দিকে আহ্বানকারী ও আলোকদীপ্ত প্রদীপ হিসেবে।


আল কুরআন, সুরা বাকারা ২ঃ ১২৯ আয়াতে বলা আছে,

ইবরাহিম (আ.) আল্লাহ তাআলার দরবারে আকুতি জানিয়ে নিম্নের দোয়া করেছিলেন, ‘হে আমাদের রব, তাদের মধ্যে তাদের থেকে একজন রাসুল প্রেরণ করুন, যে তাদের প্রতি আপনার আয়াতসমূহ তিলাওয়াত করবে এবং তাদের কিতাব ও হিকমাহ শিক্ষা দেবে আর তাদের পবিত্র করবে।’


আল কুরআন, সুরা আলে ইমরান ৩ঃ ১৬৪ আয়াতে বলা আছে,

‘অবশ্যই আল্লাহ মুমিনদের ওপর অনুগ্রহ করেছেন, যখন তিনি তাদের মধ্য থেকে তাদের প্রতি একজন রাসুল পাঠিয়েছেন, যে তাদের কাছে তাঁর আয়াতসমূহ তিলাওয়াত করে এবং তাদের পরিশুদ্ধ করে আর তাদের কিতাব ও হিকমাহ শিক্ষা দেয়। যদিও তারা ইতিপূর্বে স্পষ্ট ভ্রান্তিতে ছিল।


আল কুরআন, সুরা আলে ইমরান ৩ঃ ৩২ আয়াতে বলা আছে,

‘আপনি বলে দিন, তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের আনুগত্য করো। তারপর যদি তারা মুখ ফিরিয়ে নেয়, তবে নিশ্চয় আল্লাহ কাফিরদের ভালোবাসেন না।


আল কুরআন, সুরা নিসা ৪ঃ ৮০ আয়াতে বলা আছে,

‘যে রাসুলের আনুগত্য করল, সে আল্লাহরই আনুগত্য করল। আর যে বিমুখ হলো, তবে আমি তোমাকে তাদের ওপর তত্ত্বাবধায়ক করে প্রেরণ করিনি।


আল কুরআন, সুরা আনফাল ৮ঃ ১ আয়াতে বলা আছে,

‘আর আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের আনুগত্য করো, যদি তোমরা মুমিন হও।’


আল কুরআন, সুরা নূর ২৪ঃ ৫৪ আয়াতে বলা আছে,

‘বলে দিন, তোমরা আল্লাহর আনুগত্য করো এবং রাসুলের আনুগত্য করো। তারপর যদি তোমরা মুখ ফিরিয়ে নাও, তবে সে শুধু তার ওপর অর্পিত দায়িত্বের জন্য দায়ী এবং তোমাদের ওপর অর্পিত দায়িত্বের জন্য তোমরাই দায়ী। আর যদি তোমরা তার আনুগত্য করো, তবে তোমরা হিদায়াতপ্রাপ্ত হবে। ’


আল কুরআন, সুরা নিসা,৪ঃ ১৪ আয়াতে বলা আছে,

আর যে আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের নাফরমানি করে এবং তাঁর সীমারেখা লঙ্ঘন করে আল্লাহ তাকে আগুনে জ্বালাবেন। সেখানে সে স্থায়ী হবে। আর তার জন্য রয়েছে অপমানজনক আজাব।


আল কুরআন, সুরা নিসা ৪ঃ ১১৫ আয়াতে বলা আছে,

আর যে রাসুলের বিরুদ্ধাচরণ করে তার জন্য হিদায়াত প্রকাশ পাওয়ার পর এবং মুমিনদের পথের বিপরীত পথ অনুসরণ করে, আমি তাকে ফেরাব যেদিকে সে ফিরে এবং তাকে প্রবেশ করাব জাহান্নামে। আর তা খুবই মন্দ আবাস।


আল কুরআন, সুরা নিসা,৪ঃ৮০ আয়াতে বলা আছে,

যে লোক রসূলের হুকুম মান্য করবে সে আল্লাহরই হুকুম মান্য করল। আর যে লোক বিমুখতা অবলম্বন করল, আমি আপনাকে (হে মুহাম্মদ), তাদের জন্য রক্ষণাবেক্ষণকারী নিযুক্ত করে পাঠাইনি।


আল কুরআন, সুরা নাজম ৫৩ঃ১,৩,৪,আয়াতে বলা আছে,

তোমাদের সংগী পথভ্রষ্ট হননি এবং বিপথগামীও হননি। এবং প্রবৃত্তির তাড়নায় কথা বলেন না। কোরআন ওহী, যা প্রত্যাদেশ হয়। 


আল কুরআন, সূরা আল-ইমরান ৩ঃ৩১ আয়াতে বলা আছে,

আল্লাহ বলেন হে নবী আপনি বলুন, যদি তোমরা আল্লাহকে ভালবাস, তাহলে আমাকে (নবীকে) অনুসরণ কর তাহলে আল্লাহও তোমাদেরকে ভালবাসবেন এবং তোমাদের গুনাহ মাফ করবেন। আর আল্লাহ অত্যন্ত ক্ষমাকারী দয়ালু।


উপরের প্রতিটি আয়াত স্পষ্ট করে এই কথাই বলছে যে আল্লাহর কে মানার পাশাপাশি নবী মোহাম্মদ (সা) এর কথা মানতে হবে, উনার আনুগত্য স্বীকার করতে হবে। কথিত আহলে কুরআনরা যদি বলে নবীকে মানতে বলা মানে নবীর কথা মানতে বলা। তাহলেও প্রশ্ন থেকে যাবে যে নবীর কথা কিভাবে সংকলন করা হয়েছে? এই প্রশ্নের জবাব দিতে গেলেই কথিত হাদিস অস্বীকারকারীদের ভণ্ডামি লিক হয়ে যাবে।


কথিত আহলে কুরআনরা বলে থাকে আল্লাহর কালাম ছাড়া নিজের আদর্শ প্রচারে অনুমতি নবীজি মোহাম্মদ (সা)এর ছিল না।নিজের জীবন যাপন, কাজ-কর্ম অন্য মুসলমানদের ভেতর প্রচার করা নয়। আল্লাহর বিধান প্রচার ব্যতীত তার আর কোন দায়িত্ব ছিল বলে তারা মনে করেনা।  কারণ কুরআনেই নাকি বলা হয়েছে নবীর দায়িত্ব শুধু আল্লাহর বানী প্রচার করা। তারা বলে যখন আল্লাহ নবীকে নির্দেশ দিয়েছেন তার(রাসূলের) প্রতি আনুগত্য প্রকাশের কথা প্রচার করতে কেবল তখনই তিনি এই নির্দেশ পালন করেছেন। কুরআনে অনেক আয়াত রয়েছে যেখানে আল্লাহ তার নবীকে ‘বলতে’ বলছেন। তাদের আরেকটি অন্যতম প্রধান যুক্তি কুরআনে কোথাও মোহাম্মদের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করতে বলা হয়নি। বলা হয়েছে আল্লাহর রাসূলের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করতে। অর্থাৎ, আসল উদ্দেশ্য বার্তাবাহকের বার্তা সবার মাঝে পৌছে দেয়া। মুহম্মদের জীবনবিধানের সাথে এর কোনো সম্পর্ক নেই। 

যেমন এই আয়াত গুলো,


সুরা মায়েদা ৫ঃ৯২ = আর তোমরা আল্লাহর আনুগত্য কর এবং আনুগত্য কর রাসূলের আর সাবধান হও। তারপর যদি তোমরা মুখ ফিরিয়ে নাও তবে জেনে রাখ যে, আমার রাসূলের দায়িত্ব শুধু সুস্পষ্ট প্রচার। 


সুরা নাহল ১৬ঃ৩৫ = আর যারা শিরক করেছে, তারা বলল, যদি আল্লাহ চাইতেন তবে আমরা তাকে ছাড়া কোন কিছুর ইবাদাত করতাম না এবং আমাদের পিতৃপুরুষরাও না। আর তার বিপরীতে তো আমরা কোন কিছু হারাম করতাম না। এমনিই করেছে, যারা তাদের পূর্বে ছিল। সুতরাং স্পষ্টভাবে পৌঁছে দেয়া ছাড়া রাসূলদের কি কোন কর্তব্য আছে?


সুরা নাহল ১৬ঃ ৮২ = সুতরাং যদি তারা পৃষ্ঠ-প্রদর্শন করে, তবে তোমার দায়িত্ব তো শুধু স্পষ্টভাবে পৌঁছে দেয়া।


সুরা নুর ২৪ঃ ৫৪ = ‘তোমরা আল্লাহর আনুগত্য কর এবং রাসূলের আনুগত্য কর।’ তারপর যদি তোমরা মুখ ফিরিয়ে নাও, তবে সে শুধু তার উপর অর্পিত দায়িত্বের জন্য দায়ী এবং তোমাদের উপর অর্পিত দায়িত্বের জন্য তোমরাই দায়ী। আর যদি তোমরা তার আনুগত্য কর তবে তোমরা হিদায়াতপ্রাপ্ত হবে। আর রাসূলের দায়িত্ব শুধু স্পষ্টভাবে পৌঁছে দেয়া।


সুরা আনকাবুত ২৯ঃ১৮ = আর তোমরা যদি মিথ্যারোপ কর, তবে তোমাদের পূর্বে অনেক জাতি মিথ্যারোপ করেছিল। আর রাসূলের উপর দায়িত্ব তো কেবল সুস্পষ্টভাবে পৌঁছানো।


সুরা শুরা ৪২ঃ৪৮ = আর যদি তারা বিমুখ হয়, তবে আমি তো তোমাকে তাদের রক্ষক হিসেবে পাঠাইনি। বাণী পৌঁছে দেয়াই তোমার দায়িত্ব। আর আমি যখন মানুষকে আমার রহমত আস্বাদন করাই তখন সে খুশি হয়। আর যখন তাদের কৃতকর্মের জন্য তাদের উপর কোন বিপদ আসে তখন মানুষ বড়ই অকৃতজ্ঞ হয়।


সুরা তাগাবুন ৬৪ঃ১২ = তোমরা আল্লাহর আনুগত্য কর এবং রাসূলের আনুগত্য কর। কিন্তু তোমরা যদি মুখ ফিরিয়ে নাও, তবে আমার রাসূলের তো একমাত্র দায়িত্ব হচ্ছে স্পষ্টভাবে বাণী পৌঁছে দেয়া।


নবীজি মোহাম্মদ (সা) যে আল্লাহর বানী প্রচার করেছেন সেটা আমরা কিভাবে জানতে পারি? কারণ কুরআন তো সরাসরি উপর থেকে হার্ড কপি আকারে অবতীর্ণ হয়নি যে জান্নাতে কাগজে মোড়ানো ছিল। তাহলে দেখা যাচ্ছে যারা উপরের আয়াত গুলো থেকে এটা দাবি করতে চাইছে যে নবী মোহাম্মদ (সা) জীবন মুসলিমদের মধ্যে প্রচার করা নিষেধ তাদের কাছে প্রশ্ন হচ্ছে নবী মোহাম্মদ (সা) এর ব্যাপার ইতিহাসকে বাদ দিয়ে, বিশুদ্ধ হাদিসকে বাদ দিয়ে, বিশুদ্ধ সিরাত গ্রন্থ বাদ দিয়ে আপনারা কিভাবে এটার প্রমাণ পেলেন যে নবী মোহাম্মদ (সা) আল্লাহর বানী প্রচার করেছেন? এই একটি শক্তিশালী প্রশ্ন কথিত হাদিস অস্বীকারকারীদের ফালতু ধারণাকে বাতিল করে দেবার জন্য যথেষ্ট নয় কি? এই মূর্খরা আবার বলে থাকে নবীজি মোহাম্মদ (সা) এর কথা মানলে নাকি শিরিক হবে- কি হাস্যকর ভিত্তিহীন কথারে ভাই। তারা এই আয়াত দেখায় আবার। আয়াত দেখিয়ে বলে, যেহেতু সুন্নাহর ব্যাপারে আল্লাহর সুস্পষ্ট নির্দেশ নেই। তাই,সুন্নাহ পালন নাকি আল্লাহর সাথে শিরকের সমান।


সুরা আনআম ৬ঃ২২ = আর যেদিন আমি তাদের সকলকে সমবেত করব তারপর যারা শির্‌ক করেছে তাদেরকে বলব, ‘তোমাদের শরীকরা কোথায়, যাদেরকে তোমরা (শরীক) মনে করতে?


সুরা আনআম ৬ঃ১১৪ = আমি কি আল্লাহ ছাড়া অন্য কাউকে বিচারক হিসেবে তালাশ করব? অথচ তিনিই তোমাদের নিকট বিস্তারিত কিতাব নাযিল করেছেন। আর যাদেরকে আমি কিতাব দিয়েছিলাম তারা জানত যে, তা তোমার রবের পক্ষ থেকে যথাযথভাবে নাযিলকৃত। সুতরাং তুমি কখনো সন্দেহকারীদের অন্তর্ভুক্ত হয়ো না।


উপরের আয়াতের কোথাও এই কথা স্পষ্ট করে বলা নাই যে নবীজির সুন্নাহ পালন করা শিরিক। তাহলে কুরআনে যেই কথা বলা নেই সেই কথা নিজেরা কেন ব্যাখ্যা করতে হয়েছে আহলে কুরআনদের? নবী মোহাম্মদ (সা) তো বানিয়ে বানিয়ে কথা বলবেন না। যা বলবেন আল্লাহর পক্ষ থেকেই বলবেন। তাহলে এখানে শিরিক হয় কিভাবে? স্পষ্ট আয়াতে আছে কুরআনে। 


আল কুরআন,সুরা হাশর, ৫৯ঃ৭ আয়াতে বলা আছে, 

রসূল তোমাদেরকে যা দেন,তা গ্রহণ কর এবং যা নিষেধ করেন,তা থেকে বিরত থাক এবং আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ কঠোর শাস্তিদাতা।


আল কুরআন, সুরা আল ইমরান ৩ঃ৩১ আয়াতে বলা আছে,

বলুন,যদি তোমরা আল্লাহকে ভালবাস,তাহলে আমাকে অনুসরণ কর,যাতে আল্লাহ ও তোমাদিগকে ভালবাসেন এবং তোমাদিগকে তোমাদের পাপ মার্জনা করে দেন। আর আল্লাহ হলেন ক্ষমাকারী দয়ালু।


আল কুরআন, সুরা মুমতাহিনা ৬০ঃ৬ আয়াতে বলা আছে,

তোমরা যারা আল্লাহ ও পরকাল প্রত্যাশা কর, তোমাদের জন্য তাদের মধ্যে উত্তম আদর্শ রয়েছে। আর যে মুখ ফিরিয়ে নেয়, তার জানা উচিত যে,আল্লাহ বেপরওয়া,প্রশংসার মালিক।


আল কুরআন, সুরা নাজম ৫৩ঃ৩,৪ আয়াতে বলা আছে,

তিনি নিজের পক্ষ থেকে কোন কথা বলেন না, বরং তিনি তা’ই বলেন, যা আল্লাহ তা’আলা অহী মারফত জানাতে বলেন।


আল কুরআন, সুরা আহজাব ৩৩ঃ ২১ আয়াতে বলা আছে,

‘অবশ্যই তোমাদের জন্য রাসুলুল্লাহর মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ তাদের জন্য যারা আল্লাহ ও পরকাল প্রত্যাশা করে এবং আল্লাহকে অধিক স্মরণ করে। 


এখানে কথিত আহলে কুরআনরা কি বলবে? শুধুমাত্র আল্লাহর বানী প্রচার করাকে তো আর উত্তম আদর্শ বলা হয় না,তাহলে এখানে উত্তম আদর্শ বলতে কি বুঝানো হয়েছে? নবী মোহাম্মদ (সা) পুরো জীবনী তো কুরআনে বলা হয়নি তাহলে মুসলিমরা কিভাবে নবীজির আদর্শ শুধুমাত্র কুরআন থেকে জানতে পারবে? নবীজি (সা) জীবনী কারা সংরক্ষণ করেছেন? কিভাবে করেছেন? কেন করেছেন? কথিত আহলে কুরআনরা এসব প্রশ্নের জবাব সরাসরি স্পষ্ট কুরআনের আয়াত থেকে কিভাবে দেখাবে?


আল কুরআন, সুরা বাকারা ২ঃ ১৪৩ আয়াতে বলা আছে,

আর এভাবে আমি তোমাদেরকে মধ্যপন্থী উম্মাত করেছি, যাতে তোমরা লোকেদের উপর সাক্ষী হও এবং নাবী তোমাদের উপর সাক্ষী হয়। আর তুমি এ যাবৎ যে ক্বিবলার উপর ছিলে, তাকে এ উদ্দেশ্যে ক্বিবলা করেছিলাম, যাতে আমি জানতে পারি কে রসূলের অনুসরণ করে আর কে পায়ের ভরে উল্টো দিকে ফিরে যায়। আল্লাহ যাদেরকে হিদায়াত দিয়েছেন তারা বাদে অন্যের নিকট এটা বড়ই কষ্টকর ছিল। আর আল্লাহ তোমাদের ঈমান বিনষ্ট করবেন না, নিশ্চয়ই আল্লাহ মানুষের প্রতি করুণাশীল, অতি দয়ালু।


আল কুরআন, আল ইমরান ৩ঃ৫০ আয়াতে বলা আছে,

(আর আমি এসেছি) আমার সামনে তাওরাতের নিদর্শন যা রয়েছে তার সমর্থকরূপে যেন তোমাদের জন্য কোন কোন জিনিস হালাল করে দেই যা তোমাদের প্রতি হারাম ছিল এবং আমি তোমাদের প্রতিপালকের পক্ষ হতে নিদর্শনসহ তোমাদের নিকট এসেছি, কাজেই তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং আমাকে অনুসরণ কর’।


আল কুরআন, সুরা নিসা ৪ঃ ১৩ আয়াতে বলা আছে,

এসব আল্লাহর নির্ধারিত সীমা এবং যে ব্যক্তি আল্লাহ এবং তাঁর রসূলের অনুসরণ করবে, আল্লাহ তাকে জান্নাতে দাখিল করবেন, যার পাদদেশে ঝর্ণাধারা প্রবাহিত, তারা তাতে চিরবাসী হবে এবং এটা বিরাট সাফল্য।


আল কুরআন,সুরা নিসা, ৪ঃ ১১৫ আয়াতে বলা আছে,

যে ব্যক্তি সত্য পথ প্রকাশিত হওয়ার পরও রসূলের বিরোধিতা করে এবং মু’মিনদের পথ বাদ দিয়ে ভিন্ন পথ অনুসরণ করে, আমি তাকে সে পথেই ফিরাব যে পথে সে ফিরে যায়, আর তাকে জাহান্নামে দগ্ধ করব, কত মন্দই না সে আবাস!


আল কুরআন, সুরা নিসা ৪ঃ ৫৯ আয়াতে বলা আছে,

হে ঈমানদারগণ! আনুগত্য করো আল্লাহর এবং আনুগত্য করো রাসূলের আর সেসব লোকের যারা তোমাদের মধ্যে দায়িত্ব ও ক্ষমতার অধিকারী। এরপর যদি তোমাদের মধ্যে কোনো ব্যাপারে বিরোধ দেখা দেয় তাহলে তাকে আল্লাহ ও রাসূলের দিকে ফিরিয়ে দাও। যদি তোমরা যথার্থই আল্লাহ ও পরকালের ওপর ঈমান এনে থাকো। এটিই একটি সঠিক কর্মপদ্ধতি এবং পরিণতির দিক দিয়েও এটিই উৎকৃষ্ট।


আল কুরআন, সুরা মুহাম্মদ ৪৭ঃ ২ আয়াতে বলা আছে,

আর যারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে আর মুহাম্মাদের প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছে তাতে বিশ্বাস স্থাপন করে- কারণ তা তাদের প্রতিপালকের প্রেরিত সত্য- তিনি তাদের মন্দ কাজগুলো মুছে দেবেন, আর তাদের অবস্থার উন্নতি ঘটাবেন।


আল কুরআন, সুরা আরাফ ৭ঃ ১৫৮ আয়াতে বলা আছে,

বল, হে মানুষ! আমি তোমাদের সকলের জন্য আল্লাহর রসূল, (সেই আল্লাহর) যিনি আকাশসমূহ আর পৃথিবীর রাজত্বের মালিক, তিনি ছাড়া সত্যিকারের কোন ইলাহ নেই, তিনিই জীবিত করেন আর মৃত্যু আনেন। কাজেই তোমরা ঈমান আন আল্লাহর প্রতি ও তাঁর প্রেরিত সেই উম্মী বার্তাবাহকের প্রতি যে নিজে আল্লাহর প্রতি ও তাঁর যাবতীয় বাণীর প্রতি বিশ্বাস করে, তোমরা তাঁর অনুসরণ কর যাতে তোমরা সঠিক পথ পেতে পার


আল কুরআন, সুরা আরাফ ৭ঃ১৫৭ আয়াতে বলা আছে,

যারা প্রেরিত উম্মী নাবীকে অনুসরণ করবে যা তাদের কাছে রক্ষিত তাওরাত ও ইনজীলে তারা লিখিত পাবে। সে তাদেরকে সৎকাজের নির্দেশ দেয়, অসৎ কাজ করতে নিষেধ করে, পবিত্র বস্তুসমূহ তাদের জন্য হালাল করে, অপবিত্র বস্তুগুলো তাদের জন্য নিষিদ্ধ করে, তাদের থেকে গুরুভার সরিয়ে দেয় আর সেই শৃঙ্খল (হালাল-হারামের বানোয়াট বিধি-নিষেধ) যাতে ছিল তারা বন্দী। কাজেই যারা তার প্রতি ঈমান আনে, তাকে সম্মান প্রদর্শন করে, তাকে সাহায্য-সহযোগিতা করে আর তার উপর অবতীর্ণ আলোর অনুসরণ করে, তারাই হচ্ছে সফলকাম।


আল কুরআন, সুরা তওবা ৯ঃ২৯ আয়াতে বলা আছে,

আল্লাহ ও তাঁর রাসূল যা হারাম করেছেন তারা তাকে হারাম গণ্য করে না এবং সত্য দ্বীনকে তাদের দীন হিসাবে গ্রহণ করে না”।


প্রাথমিকভাবে আমরা কোরান-অনলিদের কথাটাকে ঠিক এই ভাবে উড়িয়ে দিতে পারি যে উক্ত ধারণাই যদি সঠিক হয়, তাহলে “রাসুলকে অনুসরণ করো”—এই কথা বলাটা পুরোপুরি অর্থহীন হয়ে যায়। কোরান যখন হাতে, তখন কোরানকে অনুসরণ করো বললেই তো হয়ে যায়, এই অবস্থায় এই বাক্যাংশের প্রয়োজনটা কী? কথা হওয়ার কথা শুধু আল্লাহকে অনুসরণ আর আল্লাহর কোরানকে অনুসরণ করা নিয়ে। রাসুলকে অনুসরণের প্রসঙ্গই আসবে কেন? কোরান কি তাহলে অপ্রয়োজনীয় বাক্য নাজিল করেছে? এবং বহুবার তা অপ্রয়োজনেই পুণরাবৃত্তি করেছে? সেই অপ্রয়োজনীয় বাক্য দেখুন বহুদিন উম্মতকে সম্পূর্ণ অন্যভাবে ভাবিয়েছে, এবং এখনো (অল্পকিছু কোরান-অনলি বাদে) উম্মতের বড় অংশ সেইভাবেই ভাবছে। আমার প্রশ্ন হলো,একটা অপ্রয়োজনীয় বাক্য আল্লাহ কোরানে এতবার কেন ইউজ করবেন? সেই অপ্রয়োজনীয় বাক্য এতবড় ভুল ধারণা মানুষের মধ্যে তৈরী করতে পারে সেইটাতো আল্লাহর অবশ্যই জানার কথা। তাহলে আল্লাহ কি আসলে আমাদের হেদায়াত চাননি, বরং কনফিউজড করতে চেয়েছেন?


নবী মুহাম্মদ (সা) এবং সাহাবীগণদের সময়ে হাদিস সংরক্ষণঃ

সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিসঃ ২৩৪,সহিহ হাদিসঃ

রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, শোন! উপস্থিতরা যেন অনুপস্থিতদের নিকট (আমার কথা) পৌঁছিয়ে দেয়।-ihadis.com


সহিহ তারগিব ওয়াত তাহরিব, হাদিসঃ ৮৯, হাসান সহিহঃ 

ইবনু মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেনঃ আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে একথা বলতে শুনেছিঃ “আল্লাহ তা’আলা মুখমন্ডল উজ্জল করুন সেই ব্যক্তির, যে আমাদের থেকে কিছু শুনবে, অতঃপর যেভাবে শুনেছে সেভাবেই অপরের কাছে পৌঁছে দিবে। কেননা যার কাছে পৌছান হয় সে অনেক সময় শ্রোতার চেয়ে অধিক সংরক্ষণকারী হয়।”-ihadis.com


সহিহ তারগিব ওয়াত তাহরিব, হাদিসঃ ৯০, সহিহ হাদিসঃ  

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ “আল্লাহ তা’আলা উজ্জলতা দান করুন সেই ব্যক্তিকে যে আমাদের একটি হাদীছ শ্রবণ করে অতঃপর তা অপরের কাছে পৌঁছে দেয়।-ihadis.com


সহিহ তারগিব ওয়াত তাহরিব, হাদিসঃ ৯২,সহিহ হাদিসঃ

জুবাইর বিন মুতএম (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃতিনি বলেনঃ আমি শুনেছি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ “আল্লাহ তা’আলা সেই বান্দাকে সৌন্দর্যতা ও উজ্জলতা দান করুন, যে আমার বক্তব্য শুনেছে, উহা মুখস্ত করেছে ও ভালভাবে সংরক্ষণ করেছে এবং যে শুনেনি তার কাছে পৌঁছে দিয়েছে। কেননা কতক জ্ঞান বহনকারী ব্যক্তি কোন জ্ঞান রাখে না। আর জ্ঞান বহনকারী কতক ব্যক্তি তার চাইতে বেশী জ্ঞানীর নিকট তা পৌঁছিয়ে দেয়। তিনটি ক্ষেত্রে মুমিন ব্যক্তির দিলে কোন হিংসা-দ্বেষ থাকে না। (১) আমলকে এখলাসের সাথে আল্লাহর জন্য নির্দিষ্ট করা। (২) মুসলমানদের নেতৃবৃন্দকে নসীহত করা এবং (৩) তাদের জামাআতকে আঁকড়ে থাকা। কেননা তাদের দু’আ পরবর্তদেরকেও শামিল করে।”-ihadis.com


সহিহ বুখারি, হাদিসঃ ৬৭, সহিহ হাদিসঃ

আবূ বাক্‌রাহ্‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি একদা নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর কথা উল্লেখ করে বলেন, (মিনায়) তিনি তাঁর উটের উপর উপবেশন করলেন। জনৈক ব্যক্তি তাঁর উটের লাগাম ধরে রেখেছিলো। তিনি বললেনঃ ‘এটা কোন্‌ দিন?’ আমরা চুপ করে রইলাম আর ধারণা করলাম যে, অচিরেই তিনি এ দিনটির আলাদা কোন নাম দিবেন। তিনি বললেনঃ “এটা কি কুরবানীর দিন নয়?” আমরা বললাম, ‘জি হ্যাঁ।’ তিনি জিজ্ঞেস করলেন: ‘এটা কোন্‌ মাস?’ আমরা নীরব রইলাম আর ধারণা করলাম যে, অচিরেই তিনি এর আলাদা কোন নাম দিবেন। তিনি বললেনঃ ‘এটা কি যিলহাজ্জ মাস নয়?’ আমরা বললাম, ‘জী হ্যাঁ।’ তিনি বললেনঃ ‘তোমাদের রক্ত, তোমাদের ধন-সম্পদ, তোমাদের সম্মান তোমাদের পরস্পরের জন্য হারাম, যেমন আজকের তোমাদের এ দিন, তোমাদের এ মাস, তোমাদের এ শহর মর্যাদাসম্পন্ন। এখানে উপস্থিত ব্যক্তিরা (আমার এ বাণী) যেন অনুপস্থিত ব্যক্তির নিকট এসব কথা পৌঁছে দেয়। কারণ উপস্থিত ব্যক্তি সম্ভবত এমন এক ব্যক্তির নিকট পৌঁছাবে, যে এ বাণীকে তার চেয়ে অধিক আয়ত্তে রাখতে পারবে।’-ihadis.com


সহিহ বুখারি, হাদিসঃ ৬৮, সহিহ হাদিসঃ 

ইব্‌নু মাস’ঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের অবস্থার প্রতি লক্ষ্য রেখে নির্দিষ্ট দিনে নাসীহাত করতেন, আমরা যাতে বিরক্ত বোধ না করি।-ihadis.com


সহিহ বুখারি, হাদিসঃ ৯৯, সহিহ হাদিসঃ 

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেনঃ একদা আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম– কে প্রশ্ন করা হলোঃ হে আল্লাহর রাসূল! ক্বিয়ামতের দিন আপনার সুপারিশ লাভের ব্যাপারে কে সবচেয়ে অধিক সৌভাগ্যবান হবে? আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, আবূ হুরায়রা ! আমি মনে করেছিলাম, এ বিষয়ে তোমার পূর্বে আমাকে আর কেউ জিজ্ঞেস করবে না। কেননা আমি দেখেছি হাদীসের প্রতি তোমার বিশেষ লোভ রয়েছে। ক্বিয়ামতের দিন আমার শাফা’আত লাভে সবচেয়ে সৌভাগ্যবান হবে সেই ব্যাক্তি যে একনিষ্ঠচিত্তে (لآ إِلَهَلا إله إلا الله) (আল্লাহ ব্যতীত প্রকৃত কোন ইলাহ নেই) বলে।-ihadis.com


সহিহ বুখারি, হাদিসঃ ১১৩, সহিহ হাদিসঃ 

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেনঃ নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সাহাবীগণের মধ্যে ‘আবদুল্লাহ্‌ ইব্‌নু ‘আম্‌র (রাঃ) ব্যতীত আর কারো নিকট আমার চেয়ে অধিক হাদীস নেই। কারণ তিনি লিখতেন, আর আমি লিখতাম না।-ihadis.com


সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিসঃ ৪, সহিহ হাদিসঃ

ইবনু উমার (রাঃ) রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নিকট কোন হাদীস শুনলে, তাতে তিনি নিজের পক্ষ থেকে কম-বেশি করতেন না।-ihadis.com


সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিসঃ ২০, সহিহ হাদিসঃ  

আলী বিন আবু তালিব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ আমি তোমাদের নিকট রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর হাদীস বর্ণনা করলে তোমরা মনে রাখবে যে, তিনি ছিলেন সর্বাধিক ধার্মিক, হিদায়াতপ্রাপ্ত ও আল্লাহ্‌ভীরু।-ihadis.com


সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিসঃ ২২, হাসান হাদিসঃ  

আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ এক ব্যক্তিকে (ইবনু আব্বাসকে) বলেন, হে ভ্রাতুষ্পুত্র! আমি তোমার নিকট রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর হাদীস বর্ণনা করলে তুমি তার বিপরীতে কোন দৃষ্টান্ত পেশ করো না।-ihadis.com


সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিসঃ ২৩, সহিহ হাদিসঃ  

আমর বিন মায়মূন থেকে বর্ণিতঃ প্রতি বৃহস্পতিবার রাতে ইবনু মসঊদ (রাঃ)-এর নিকট উপস্থিত হতে আমার ভুল হতো না। কিন্তু আমি কখনও তাঁকে “রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন” এভাবে কিছু বলতে শুনিনি। এক রাতে তিনি বলেন, “রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন”। রাবী বলেন, অতঃপর তিনি মাথা নিচু করলেন। রাবী বলেন, আমি তার দিকে তাকিয়ে দেখলাম, তিনি এমন অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছেন যে, তার জামার বোতাম খোলা, তার চক্ষুদ্বয় অশ্রু বিগলিত এবং এর শিরাগুলো ফুলে গেছে। অতঃপর তিনি বলেন, তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এই বলেছেন অথবা এর অধিক বা কম বলেছেন অথবা এর কাছাকাছি বা এর অনুরূপ বলেছেন (অর্থাৎ তিনি যা বলেছেন তা আমার হুবহু মনে নেই)।-ihadis.com


সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিসঃ ২৪, সহিহ হাদিসঃ 

মুহাম্মদ বিন সীরীন থেকে বর্ণিতঃ আনাস বিন মালিক (রাঃ) রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর হাদীস বর্ণনাকালে ভীত-শংকিত হতেন এবং বলতেন, অথবা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অনুরূপ বলেছেন।-ihadis.com


সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিসঃ ২৫, সহিহ হাদিসঃ 

আবদুর রহমান বিন আবু লাইলা থেকে বর্ণিতঃ আমরা যায়দ বিন আরকাম (রাঃ) কে বললাম, আমাদের নিকট রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর হাদীস বর্ণনা করুন। তিনি বলেন, আমি বৃদ্ধ হয়ে গেছি এবং (অনেক কিছুই) ভুলে গেছি। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর হাদীস বর্ণনা করা খুবই কঠিন দায়িত্ব।-ihadis.com


সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিসঃ ২৭,সহিহ হাদিসঃ 

তাঊস বিন কায়সান থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, আমি ইবনু আব্বাস (রাঃ) কে বলতে শুনেছি, আমরা হাদীস মুখস্থ করতাম। তখন রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর কাছেই হাদীস মুখস্থ করা হতো। কিন্তু এখন তোমরা প্রতিটি কষ্টকর ও আরামদায়ক স্থানে (পর্যালোচনা ব্যতীত) উঠতে শুরু করেছ। তোমাদের জন্য আফসোস হয়।-ihadis.com


সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিসঃ ২৮,সহিহ হাদিসঃ 

কারাযাহ বিন কা’ব থেকে বর্ণিতঃ উমার ইবনুল খাত্তাব (রাঃ), আমাদেরকে কূফার উদ্দেশ্যে পাঠালেন। তিনি আমাদের বিদায় দিতে আমাদের সাথে সিরার নামক স্থান পর্যন্ত হেঁটে আসেন। তিনি বলেন, তোমরা কি জানো আমি কেন তোমাদের সাথে চলে এসেছি? রাবী বলেন, আমরা বললাম, রসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সাহচর্যের কর্তব্য এবং আনসারদের প্রতি কর্তব্যের কারণে। উমার (রাঃ) বলেন, আমি তোমাদের নিকট একটি বিশেষ কথা বলার উদ্দেশ্যে তোমাদের সঙ্গে চলে এসেছি। আমি আশা করি তোমাদের সাথে আমার চলে আসার প্রতি খেয়াল রেখে তোমরা তা মনে রাখবে। তোমরা এমন এক সম্প্রদায়ের নিকট যাচ্ছো, যাদের বক্ষস্থলে ফুটন্ত হাঁড়ির মত কুরআনের আওয়াজ হবে। তারা তোমাদেরকে দেখে তোমাদের প্রতি তাদের আনুগত্যের গর্দান এগিয়ে দিবে এবং বলবে, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সাহাবীগণ এসেছেন। তোমরা তাদের নিকট রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর কম সংখ্যক হাদীস বর্ণনা করবে। তাহলে আমি তোমাদের সাথে আছি।-ihadis.com


সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিসঃ ২৩২,সহিহ হাদিসঃ 

আবদুল্লাহ বিন মাসঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, যে ব্যক্তি আমার নিকট হতে একটি হাদীস শুনে তা অন্যদের নিকট পৌঁছিয়ে দেয়, আল্লাহ্‌ তাকে সৌন্দর্যমণ্ডিত করেন। কখনো শ্রোতার চেয়ে প্রচারক অধিকতর স্মৃতিধর হয়ে থাকে।-ihadis.com


সহীহ বুখারী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন),হাদিসঃ১৭৪৯, সহিহ হাদিসঃ

মুহাম্মদ ইবনু বাশশার (রহঃ) … আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমাদের নিকট আল্লাহর কিতাব এবং নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত এই সহীফা ছাড়া আর কিছুই নাই। তিনি আরো বলেন, ’আয়ির নামক স্থান থেকে অমুক স্থান পর্যন্ত মদিনা হল হারাম। যদি কেউ এতে কুরআন–সুন্নাহর খেলাফ অসঙ্গত কোন কাজ করে অথবা কুরআন-সুন্নাহর খেলাফ, আচরণকারী আশ্রয় দেয়, তাহলে তাঁর উপর আল্লাহর লা’নত এবং সকল ফেরেশতা এবং মানুষের। সে ব্যাক্তির কোন নফল এবং ফরজ ইবাদাত কবুল করা হবে না। তিনি আরো বলেন, মুসলিম কর্তৃক নিরাপত্তাদানের অধিকার সকলের ক্ষেত্রে সমান। তাই যে ব্যাক্তি কোন মুসলিমের দেওয়া নিরাপত্তাকে লঙ্ঘন করবে, তাঁর প্রতি আল্লাহর লা’নত এবং সকল মানুষের ও ফিরিশতাদের। আর কবুল করা হবে না তাঁদের কোন নফল এবং ফরজ ইবাদাত। যে ব্যাক্তি তাঁর মাওলার (মিত্রের) অনুমতি ব্যতীত অন্য অন্য কাওমের সাথে বন্ধুত্ব করবে, তাঁর প্রতিও আল্লাহর লা’নত এবং সকল ফেরেশতা ও মানুষের। সে ব্যাক্তির কোন নফল এবং ফরজ ইবাদাত কবুল করা হবে না। আবূ ‘আবদুল্লাহ (রহঃ) বলেন, “আদলুন” অর্থ বিনিময়।-hadithbd.com


সহীহ বুখারী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন),হাদিসঃ ১১৯, সহিহ হাদিসঃ

‘আবদুল ‘আযীয ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ লোকে বলে, আবূ হুরায়রা (রাঃ) বড় বেশী হাদীস বর্ণনা করে। (জেনে রাখ,) কিতাবে দুটি আয়াত যদি না থাকত, তবে আমি একটি হাদিসও বর্ণনা করতাম না। এরপর তিনি তিলাওয়াত করলেনঃ “আমি সেসব স্পষ্ট নিদর্শন ও পথ-নির্দেশ অবতীর্ণ করেছি মানুষের জন্য কিতাবে তা স্পষ্টভাবে ব্যক্ত করার পরও যারা তা গোপন রাখে আল্লাহ তাদেরকে লা‘নত দেন এবং অভিশাপকারিগণও তাদেরকে অভিশাপ দেয় কিন্তু যারা তওবা করে এবং নিজদিগকে সংশোধন আর সত্যকে সুস্পষ্টভাবে ব্যক্ত করে, ওরাই তারা, যাদের প্রতি আমি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।” (সূরা বাকারাঃ ১৫৯-১৬০) (প্রকৃত ঘটনা এই যে,) আমার মুহাজির ভাইয়েরা বাজারে কেনাবেচায় এবং আমার আনসার ভাইয়েরা জমা-জমির কাজে মশগুল থাকত। আর আবূ হুরায়রা (রাঃ) (খেয়ে না খেয়ে) তুষ্ট থেকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে লেগে থাকত। তাই তারা যখন উপস্থিত থাকত না, তখন সে উপস্থিত থাকত এবং তারা যা মুখস্থ করত না সে তা মুখস্থ রাখত।-hadithbd.com


সহীহ বুখারী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন),হাদিসঃ ১২০, সহিহ হাদিসঃ

আবূ মুস‘আব আহমদ ইবনু আবূ বাকর (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি আমি আপনার কাছ থেকে বহু হাদীস শুনি কিন্তু ভুলে যাই। তিনি বলবেন তোমার চাঁদর খুলে ধর। আমি খুলে ধরলাম। তিনি দু’হাত অঞ্জলী করে তাতে কিছু ঢেলে দেওয়ার মত করে বললেনঃ এটা তোমার বুকের সাথে লাগিয়ে ধর। আমি তা বুকের সাথে লাগালাম। এরপর আমি আর কিছুই ভুলিনি।-hadithbd.com


সহীহ বুখারী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন),হাদিসঃ১১৪, সহিহ হাদিসঃ 

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাহাবীগণের মধ্য আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) ব্যতীত আর কারো কাছে আমার চাইতে বেশী হাদীস নেই। কারণ তিনি লিখে রাখতেন, আর আমি লিখতাম না। মা’মার (রহঃ) হাম্মাম (রহঃ) সূত্রে আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন।-hadithbd.com


সাহাবীরা আল্লাহর নবী থেকে যা শুনতেন তাই বলতেনঃ

সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিসঃ ৪২,সহিহ হাদিসঃ 

ইরবাদ বিন সারিয়াহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ একদিন রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের মাঝে দাঁড়িয়ে অত্যন্ত মর্মস্পর্শী ভাষায় আমাদের নাসীহাত করেন, যাতে অন্তরসমুহ ভীত হলো এবং চোখগুলো অশ্রু বর্ষণ করলো। তাঁকে বলা হলো, হে আল্লাহ্‌র রসূল! আপনি তো বিদায় গ্রহণকারীর উপদেশ দিলেন। অতএব আমাদের নিকট থেকে একটি প্রতিশ্রুতি গ্রহণ করুন (একটি সুনির্দিষ্ট আদেশ দিন)। তিনি বলেন, তোমরা আল্লাহ্‌ভীতি অবলম্বন করো, শ্রবণ করো ও আনুগত্য করো (নেতৃ-আদেশ), যদিও সে কাফ্রী গোলাম হয়। আমার পরে অচিরেই তোমরা মারাত্মক মতভেদ লক্ষ্য করবে। তখন তোমরা আমার সুন্নাত ও হিদায়াতপ্রাপ্ত খুলাফায়ে রাশিদ্বীনের সুন্নাত অবশ্যই অবলম্বন করবে, তা দাঁত দিয়ে শক্তভাবে কামড়ে ধরবে। অবশ্যই তোমরা বিদ‘আত কাজ পরিহার করবে। কারন প্রতিটি বিদ‘আতই ভ্রষ্টতা।-ihadis.com


সুনানে আবু দাউদ, হাদিসঃ ৩৬৪৬, সহিহ হাদিসঃ 

আবদুল্লাহ ইবনু ‘আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নিকট যা কিছু শুনতাম লিখে রাখতাম। মনে রাখার জন্যই আমি এরূপ করতাম। কুরাইশরা আমাকে সবকিছু লিখতে বারণ করলেন এবং বললেন, তুমি কি রাসূলুল্লাহর সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নিকট হতে শোনা সবকিছুই লিখে রাখো? তিনি তো একজন মানুষ, রাগ ও শান্ত উভয় অবস্থায় কথা বলে থাকেন। সুতরাং আমি লেখা স্থগিত রাখলাম। আমি এটা রাসূলুল্লাহর সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নিকট উল্লেখ করলাম। তিনি আঙ্গুল দিয়ে তাঁর মুখের দিকে ইশারা করে বললেনঃ তুমি লিখে রাখো, সেই সত্তার শপথ, যাঁর হাতে আমার প্রাণ! এ মুখ হতে সর্বাবস্থায় সত্য ব্যতীত অন্য কিছু বের হয় না।-ihadis.com


সুনানে আবু দাউদ, হাদিসঃ ৩৬৬০, সহিহ হাদিসঃ 

যায়িদ ইবনু সাবিত (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে বলতে শুনেছিঃ যে ব্যক্তি আমার নিকট হতে হাদীস শুনে তা মুখস্থ রাখলো এবং অন্যের নিকটও তা পৌছে দিলো, আল্লাহ তাকে চিরউজ্জ্বল করে রাখবেন। জ্ঞানের অনেক বাহক তার চেয়ে অধিক সমঝদার লোকের নিকট তা বহন করে নিয়ে যায়; যদিও জ্ঞানের বহু বাহক নিজেরা জ্ঞানী নয়।-ihadis.com


সহিহ তারগিব ওয়াত তাহরিব, হাদিস ৪, সহিহ লি গাইরিহিঃ 

আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ নবী সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিদায় হজ্জে বলেনঃ ‘আল্লাহ তা’আলা ঐ ব্যক্তির মুখমন্ডল উজ্জল করুন (তাকে সম্মানিত করুন) যে ব্যক্তি আমার কথা শুনে তা মুখস্ত রেখেছে। কেননা এমন কতই না জ্ঞান বহনকারী রয়েছে, অথচ সে ফকীহ (জ্ঞানী) নয়। তিনটি বিষয়ে কোন মুমিন ব্যক্তির অন্তরে হিংসা প্রবেশ করতে পারে না। (১) আল্লাহর জন্য আমলকে একনিষ্ঠ করা। (২) মুসলমানদের নেতৃবৃন্দকে নসীহত করা। (৩) মুসলমানদের জামাতকে আকড়ে ধরা। কেননা তাদের দু’আ তাদের পরবর্তীদেরকেও বেষ্টন করে।’-ihadis.com


সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিসঃ ৩০,সহিহ হাদিসঃ  

আবদুল্লাহ বিন মাসঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে আমার প্রতি মিথ্যারোপ করে, সে যেন জাহান্নামকে তার আবাস বানালো।-ihadis.com


সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিসঃ ৩৪,হাসান সহিহঃ 

আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি আমার নামে মনগড়া কথা রচনা করলো, যা আমি বলিনি, সে যেন তার বাসস্থান জাহান্নামে নির্ধারণ করলো।-ihadis.com


সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিসঃ ৩৫,হাসান হাদিসঃ 

আবু কাতাদাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ আমি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে এই মিম্বারের উপর বলতে শুনেছি: তোমারা আমার থেকে অধিক হাদীস বর্ণনার ব্যাপারে সাবধান হও। কেউ আমার সম্পর্কে বলতে চাইলে সে যেন হক কথা বা সত্য কথাই বলে। যে ব্যক্তি আমার নামে এমন কথা বলে যা আমি বলিনি, সে যেন তার বাসস্থান জাহান্নামে নির্ধারণ করলো।-ihadis.com


সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিসঃ ৩৬,সহিহ হাদিসঃ  

আবদুল্লাহ ইবনুয-যুবায়র (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ আমি (আমার পিতা) যুবায়র ইবনুল আওওয়াম (রাঃ)-কে বললাম, আমি যেমন বিন মাসঊদ (রাঃ) ও অমুক অমুক সহাবীকে হাদীস বর্ণনা করতে শুনি তদ্রূপ আপনাকে কেন রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর হাদীস বর্ণনা করতে শুনি না? তিনি বলেন, ইসলাম গ্রহণের পর থেকে কখনও আমি তাঁর থেকে বিচ্ছিন্ন হইনি। কিন্তু আমি তাঁকে একটি কথা বলতে শুনেছি: যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে আমার প্রতি মিথ্যারোপ করে, সে যেন জাহান্নামে তার বাসস্থান নির্ধারণ করলো।-ihadis.com


সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিসঃ ৪০,সহিহ হাদিসঃ 

আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, যে ব্যক্তি আমার নামে কোন মিথ্যা হাদীস বর্ণনা করলো, সে অন্যতম মিথ্যাবাদী।-ihadis.com


সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিসঃ ৫৩,সহিহ হাদিসঃ 

আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, দলীল-প্রমাণ ও প্রয়োজনীয় যোগ্যতা ব্যতীত কাউকে সিদ্ধান্ত (ফাতাওয়া) দেয়া হলে তার পাপের বোঝা ফাতাওয়া প্রদানকারীর উপর বর্তাবে।-ihadis.com


সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিসঃ ২৬৬,সহিহ হাদিসঃ  

আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, কোন ব্যক্তি তার জানা জ্ঞানের কথা জিজ্ঞাসিত হয়ে তা গোপন করলে, কিয়ামাতের দিন তাকে আগুনের লাগাম পরানো হবে।-ihadis.com


নবী মুহাম্মদ(সা) স্পষ্ট করে যা বলে গিয়েছেনঃ

সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিসঃ ১২, সহিহ হাদিসঃ 

আল-মিকদাম বিন মা’দীকারিব আল-কিনদী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, অচিরেই কোন ব্যক্তি তার আসনে হেলান দেয়া অবস্থায় বসে থাকবে এবং তার সামনে আমার হাদীস থেকে বর্ণনা করা হবে, তখন সে বলবে, আমাদের ও তোমাদের মাঝে মহামহিম আল্লাহ্‌র কিতাবই যথেষ্ট। আমরা তাতে যা হালাল পাব তাকেই হালাল মানবো এবং তাতে যা হারাম পাবো তাকেই হারাম মানবো। (মহানবী বলেন) সাবধান! নিশ্চয়ই রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যা হারাম করেছেন তা আল্লাহ্‌ যা হারাম করেছেন তার অনুরূপ।-ihadis.com


সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিসঃ ১৩, সহিহ হাদিসঃ  

আবু রাফি' (রাঃ) রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর মুক্ত করা দাস] থেকে বর্ণিতঃ রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ আমি যেন তোমাদের কাউকে এরূপ না পাই যে, সে তার আসনে হেলান দিয়ে বসে থাকবে এবং (এই অবস্থায়) আমার প্রদত্ত কোন আদেশ বা আমার প্রদত্ত কোন নিষেধাজ্ঞা তার নিকট পৌঁছলে সে বলবে, আমি কিছু জানিনা, আমরা আল্লাহ্‌র কিতাবে যা পাবো তার অনুসরণ করবো।-ihadis.com


কথিত আহলে কুরআন তথা হাদিস অস্বীকারকারীরা কি নবী মোহাম্মদ (সা) থেকে কুরআন বেশি বুঝে? যেখানে নবী মোহাম্মদ (সা) স্পষ্ট করেই বলে দিয়ে গিয়েছেন যে আল কুরআন ও সুন্নাহ মানতে হবে সেখানে কথিত আহলে কুরআনদের দাবি যে ভিত্তিহীন এটা কি স্পষ্ট নয়? আমরা জানতে পারলাম,নবী মুহাম্মদ (সা) হাদিস সংরক্ষণের ব্যাপারে ব্যাপক গুরুত্ব দিয়েছেন। সাহাবীরা হাদিস মুখস্ত করে রাখতো। সাহাবীরা নিজের থেকে কিছু বানিয়ে বলতেন না,বরং নবী মুহাম্মদ (সা) যা শিক্ষা দিতেন তাই তাঁরা নিজে শিখতেন এবং অন্যকে বলতেন। হিদায়াতপ্রাপ্ত খুলাফায়ি রাশিদ্বীনের সুন্নাতের অনুসরণ করা যেহেতু তাঁরা নবী মুহাম্মদ (সা) থেকেই ইসলাম শিখেছেন। কুরআন এবং নবী মুহাম্মদ (সা) এর সুন্নাত অনুসরণ করতে হবে অনেকেই বলেন যে আমরা শুধু কুরআন মানি হাদিস মানি না তাদের জন্য এই শেষ পয়েন্ট খুবই গুরুত্বপূর্ণ কারণ নবী (সা) নিজেই বলেছেন কুরআন এবং সুন্নাহ অনুসরণ করতে।


সাহাবীদের থেকে তাবীঈ ও তাবেতাবেইরা হাদিস যেভাবে সংরক্ষণ করেছেনঃ

মাওঃ আমিনুল ইহসান মুজাদ্দেসি (রহ), লিখিত “হাদিস শাস্ত্র ইতিহাস,” কিতাবের ২২ পৃষ্ঠায় লেখা আছে,

সাহাবাদের মধ্যে হাদিসের হাফেজদের সংখ্যা ২২ জন। প্রবীণ তাবেইদের স্তরে হাফেজদের সংখ্যা ৪০ জন । তাবেইদের মাধ্যমিক হাদিসের হাফেজদের সংখ্যা হল ৩০ জন । এ ছাড়া তাঁদের পরবর্তী যুগে বিভিন্ন সময়ে "হোফফাজে হাদিস" মানে যারা হাদিস মুখস্ত করে এদের সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পেতে থাকে। ইমাম যাহাবি (রহ) নিজের "তাযকেরাতুল হোফফাজ" গ্রন্থে আগের বহু হাদিসের হাফেজদের নাম বিস্তারিত উল্লেখ করেছেন।-তাযকেরাতুল হোফফায, ১১২ পৃষ্ঠা। 


মাওঃ আমিনুল ইহসান মুজাদ্দেসি (রহ),লিখিত “হাদিস শাস্ত্র ইতিহাস” কিতাবের ৩০ পৃষ্ঠায় লেখা আছে,

হযরত সাদ বিন ইবরাহীম (রা) বর্ণনা করেছেন, হযরত ওমর বিন আব্দুল আযিয (রা) আমাদেরকে হাদিস সংগ্রহ করার জন্য আদেশ প্রদান করেছেন। তাঁর নির্দেশক্রমে আমরা স্বতন্ত্র দফতরে হাদিস লিপিবদ্ধ করেছিলাম । ঐ দফতরগুলো খলিফার আদেশে সাম্রাজ্যের প্রত্যেক প্রদেশে প্রেরিত হয়েছিল।


মাওঃ আমিনুল ইহসান মুজাদ্দেসি (রহ),লিখিত “হাদিস শাস্ত্র ইতিহাস” কিতাবের ৪০ পৃষ্ঠায় লেখা আছে,

ইমাম মালেক (রহ) এক লক্ষ হাদিস থেকে বাছাই করে প্রথমে ১০ হাজার হাদিস সংকলন ও লিপিবদ্ধ করেন । অতপর এ বাছাই করা হাদিস থেকে ছাটাই করতে করতে বর্তমানের বইয়ের রুপ ধারন করে তথা "মুয়াত্তা ইমাম মালেক" গ্রন্থ । ইমাম মালেক (রহ) তাঁর বইটি তিনি মদিনার ৭০ জন ফকিহদের নিকট পেশ করেন সম্পাদনা করার জন্য । তাঁরা সকলেই এই বইয়ের নির্ভরযোগ্যতা এবং গ্রহণযোগ্যতার ব্যাপারে সাক্ষ্য দেয়। এর জন্য ইমাম মালেক (রহ) নিজেই বলেছেনঃ হাদিসবেত্তাগন সকলেই এই বইটি সমর্থন করেছেন এই কারনে আমি এই বইয়ের নাম দিলাম মুয়াত্তা বা সমর্থিত।


মাওঃ আমিনুল ইহসান মুজাদ্দেসি (রহ),লিখিত “হাদিস শাস্ত্র ইতিহাস” কিতাবের ৫৩ পৃষ্ঠায় লেখা আছে,

হাদিস সংকলনের যুগ থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত যত নির্ভরযোগ্য হাদিসের কিতাব লেখা হয়েছে তার বিস্তারিত উল্লেখ আছেঃ "কাশফুয জুনুন" এবং "ইতেহাফুন নোবালা"।


মাওঃ আমিনুল ইহসান মুজাদ্দেসি (রহ),লিখিত “হাদিস শাস্ত্র ইতিহাস” কিতাবের ৫৭ পৃষ্ঠায় লেখা আছে,

ইমাম বুখারি (রহ) লিখিত "বুখারি শরীফ" এর পূর্ণ নাম হলঃ আল জামেউস সহিহ আল মুসনাদু মিন হাদিসির রাসুলে (সা) ওয়া আইমামিহি। ইমাম বুখারি (রহ) এর কাছে ৬ লক্ষ হাদিস সংরক্ষিত ছিল অর্থাৎ তিনি ৬ লক্ষ হাদিসের হাফেজ ছিলেন। তিনি দীর্ঘ ১৬ বছর সময় ধরে বুখারি শরীফ লেখার কাজ সমাপ্ত করেন। "বুখারি শরীফে" হাদিসের সংখ্যা ৭০০০ এর অধিক।


তারিখে দিমাশক, ইবনে আসাকির ২০ খণ্ড ৮৯ পৃষ্ঠা ও সিয়ারু আলমিন নুবালা ২ খণ্ড, ৫৯৮ পৃষ্ঠা থেকে জানা যায়,

একবার মদিনার গভর্নর মারওয়ান আবু হুরায়রা (রা.), (যিনি রাসুলুল্লাহ (সা.) থেকে ৫৩৭৪টি হাদিস বর্ণনা করেছিলেন) তাকে না জানিয়ে তার স্মৃতিশক্তি পরীক্ষা করার উদ্দেশ্যে তাকে স্বীয় ঘরে দাওয়াত করেন। অতঃপর তাকে কিছু হাদিস শুনানোর জন্য আরজ করেন। মারওয়ান আগেই একজন লেখককে পর্দার আড়ালে আবু হুরায়রা (রা.)-এর বর্ণিত হাদিসগুলো লেখার নির্দেশ দিয়ে রেখেছিলেন। আবু হুরায়রা (রা.) বেশ কিছু হাদিস শোনালেন এবং লেখক তা লিখে রাখল। এক বছর পর আবার গভর্নর মারওয়ান আবু হুরায়রা (রা.)-কে দাওয়াত করেন এবং গত বছর বর্ণনাকৃত হাদিসগুলো পুনরায় শোনানোর জন্য আরজ করেন। আর এদিকে আগের মতো এবারও ওই লেখককে আড়ালে থেকে গত বছর লিখিত হাদিসসগুলোর সঙ্গে মেলাতে দায়িত্ব দিয়ে রাখলেন। আবু হুরায়রা (রা.) আগে বর্ণিত হাদিসগুলোই শোনাতে লাগলেন এবং লেখক আড়াল থেকে মেলাতে থাকল। শেষে দেখা গেল যে গত বছর বর্ণিত হাদিসগুলোয় কোনো বেশকম ও আগপিছ ছাড়া সম্পূর্ণটাই তিনি শুনিয়ে দিলেন


এ ছাড়া আরও যেসব বিখ্যাত হাদিসের কিতাব আছে যেমনঃ

 = সহিহ বুখারি = হাদিস সংখ্যাঃ ৭৫৬৩ টি।

 = সহিহ মুসলিম = হাদিস সংখ্যাঃ ৭৪৫৩ টি।

= সুনানে নাসায়ি = হাদিস সংখ্যাঃ ৫৭৫৮ টি।

= সুনানে আবু দাউদ = হাদিস সংখ্যাঃ ৫২৭৪ টি।

= জামে আত তিরমিজি = হাদিস সংখ্যাঃ ৩৯৫৬ টি।

= সুনানে ইবনে মাজাহ = হাদিসের সংখ্যাঃ ৪৩৪১ টি।

= মুয়াত্তা ইমাম মালেক = হাদিসের সংখ্যাঃ ১৮৩২ টি।

 = মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা = হাদিসের সংখ্যাঃ ৩৯ হাজারের বেশি হাদিস আছে এই গ্রন্থে।


আসমাউর রিজাল বা ইলমুর রিজাল বা রিজাল শাস্ত্র তথা জীবনী/জীবনবৃত্তান্ত মূল্যায়ন/মান যাচাইকরণ হল ইসলামি শরিয়তের দ্বিতীয় উৎস আল হাদিস সম্পর্কিত এক বিশেষ 'চরিত বিজ্ঞান'। ইসলাম ধর্মের অনুসারীদের নবি ও রাসুল মুহাম্মাদ এর প্রদত্ত ধর্মীয় পথনির্দেশনা , তার আদেশ নিষেধ উপদেশ কথা-কাজ ও মৌনসম্মতির বর্ণিত রুপ আল হাদিস সমুহের বর্ণনাকারীদের গ্রহণযোগ্যতার সঠিকত্ব মান যাচাই-বাছাইয়ের লক্ষ্যে সুবিজ্ঞ হাদিসবেত্তাগণ যুগে যুগে তাদের মেধা ও মনন দিয়ে অনুপুঙ্খ বিশ্লেষণ আর বিস্তর গবেষণায় হাদিস সংরক্ষণের জন্য যে বিশেষ শাস্ত্র উদ্ভাবন করেন তার নাম আসমাউর রিজাল বা রিজাল শাস্ত্র। ইলমে হাদিসের বহুবিধ শাখার মধ্যে এটি অন্যতম। যে শাস্ত্রে রাবীগণের (হাদিস বর্ণনাকারীদের) জীবনী সংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনা করা হয় তাকে ইলমে আসমাউর রিজাল বলা হয়।


ইলমে হাদিসের খেদমত আঞ্জাম দিতে গিয়ে হাদিসের রাবীদের পরিচয় জানা ও তাদের মানগত স্থান নিরুপণ করতে শত সহস্র মনীষী তাদের স্বীয় জীবন উৎসর্গ করেছেন । তারা দেশে দেশ পায়ে হেঁটে দূর দূরান্ত অতিক্রম করেন । গ্রাম থেকে গ্রামান্তরে গিয়ে রাবীদের (হাদিস বর্ণনাকারী) সাথে সাক্ষাৎ করে বর্ণনার সকল তথ্য সংগ্রহ করেন । যেসব রাবী তথ্য অনুসন্ধানকারীদের সমসাময়ীক ছিলেননা,তাদের সম্পর্কে তাদের সমসাময়িক অথবা তাদের মাধ্যমে আরও পূর্ববর্তীদের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করেছেন। এভাবে ইলমে হাদিসের গৌরবান্বিত যে শাখাটি অস্তিত্বে আসে তা-ই 'আসমাউর রিজাল' বা রিজাল শাস্ত্র নামে অভিহিত। হাদিস শাস্ত্রের প্রসিদ্ধ পণ্ডিতগণের মধ্যে যাদের নাম না বললেই নয়, তারা হলেন,


ইমাম আবু হানিফা (রহ),হযরত মা'মার ইবন্ রাশিদ (রহ), হিশাম আদ-দাস্তাওয়াঈ (রহ),ইমাম আল-আওযাঈ (রহ), শু'বা ইবনুল হাজ্জাজ (রহ),সুফইয়ান আস-সাওরী (রহ), ইমাম মালিক (রহ), ইয়াহইয়া ইবন্ সাঈদ আল-কাত্তান (রহ), ইমাম আশ-শাফিঈ (রহ), মুহাম্মাদ আস-সা'দ (রহ),ইয়াহইয়া ইবন্ মাঈন (রহ),আলী ইবনুল মাদীনী (রহ),আবু খাইসামা (রহ),ইমাম আহমাদ (রহ),আল-ফাল্লাস (রহ), ইমাম আল-বুখারী (রহ),ইমাম মুসলিম (রহ), আবু যুরআ আর-রাযী (রহ), ইমাম ইবনে মাজাহ (রহ),ইমাম আবু দাউদ (রহ),আবু হাতিম আর-রাযী (রহ),ইমাম আত-তিরমিজি (রহ),আবু যুরআ আদ-দিমাশকী (রহ)আবু বকর আল-বাজ্জার (রহ),ইমাম আন-নাসাঈ (রহ),ইবনে খুযাইমা (রহ),ইবনে জারীর আত-তাবারী (রহ),ইমাম আত-তাহাবী (রহ),ইমাম আল-উকাইলী (রহ),ইবনে আবি হাতিম (রহ),ইবনে হিব্বান (রহ),ইবনে আদী (রহ),ইমাম আদ-দারা কুতনী (রহ),ইমাম আল-হাকিম (রহ),ইমাম আল-বায়হাকী (রহ),ইবনে আবদিল বার (রহ),খতিব আল-বাগদাদী (রহ),ইমাম মা'কুলা (রহ),আস-সাম'আনী (রহ),ইবনুল জাওযী (রহ)।


আসমাউর রিজাল-এর উপর এ পর্যন্ত অসংখ্য বই রচিত হয়েছে । শুধু এই বিষয়ের বইগুলো যদি একত্রে সংগৃহীত করে কোথাও রাখা হয়-দৈর্ঘ্য-প্রস্থে স্থান সংকুলানে বিশাল আয়তনে একটি বড় লাইব্রেরির প্রয়োজন হবে এতে কোন সন্দেহ নাই। এ সম্পর্কিত উল্লেখযোগ্য প্রসিদ্ধ কিছু গ্রন্থের নাম নিম্নে প্রদত্ত হলো। এতে সাহাবি অ-সাহাবি , সিকাহ্ ও যঈফ সকল শ্রেনির রাবীর (বর্ণনাকারী) সার্বিক অবস্থা সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। এদের জীবনের খুঁটিনাটি তথ্য সংগ্রহ করে এতে তুলে ধরা হয়েছে। এই কিতাব গুলো কত কষ্ট ও শ্রম দিয়ে সংরক্ষণ করা হয়েছে তা যে কেউই জানলে অবাক হতে বাধ্য।


আত-তাবাকাতুল কুবরা - এ গ্রন্থের প্রণেতা হলেন মুহাম্মাদ ইবনে সা'দ (মৃত্যু : ২৩০ / ৮৪৫ ) পাঠক ও গবেষক মহলে এটি তাবাকাত ইবনে সা'দ নামে পরিচিত। এরপরে কিতাবুত-তাবাকাত - এটির রচয়িতা হলেন আলী ইবনুল মাদীনী (র) (মৃত : ২৩৪/৮৪৯)। এরপরে কিতাবুত-তাবাকাত - এটি রচনা করেন খলিফা ইবনে খাইয়াত (র) ( মৃত: ২৪০/৮৫৪)। এরপরে আত-তারিখুল কাবির - এ গ্রন্থটি প্রণয়ন করেন ইমাম বুখারী (মৃ: ২৫৬ / ৮৭০)।গ্রন্থটি বর্ণনাক্রমিক ভাবে সাজানো। এরপরে  কিতাবুত-তারিখ - এর রচয়িতা হলেন ইবনে আবু খাইসামা যুহাইর ইবনে হারব আল-বাগদাদি (মৃ: ২৭৯ / ৮৯২) । গ্রন্থটি বার খণ্ডে বিভক্ত। এটি রিজাল শাস্ত্রের একটি বিরাট গ্রন্থ। এরপরে কিতাবুত-তারিখ,এরপরে আত-তামঈয, এভাবে আরো যেমন, কিতাবুল জারহি ওয়াত তা'দিল,কিতাবুল জারহি ওয়াত তা'দিল,কিতাবুল ওয়াহাম ওয়াল ইহাম,আল-ই'তিবার,আল-ইরশাদ,মিজানুল ই'তিদাল,আত-তাকমিল ফি আসমাইস সিকাত ওয়ায যু'আফা,আত-তাকমিল ফি মা'রিফাতিস সিকাত ওয়ায যু'আফা ওয়াল মাজাহিল,তাবাকাতুল মুহাদ্দিসীন,আল-কামাল ফি মা'রিফাতির রিজাল,তাহযিবুল কামাল ফি আসমাইর রিজাল,তাহযিবুত তাহযিব,লিসানুল মিজান - ইবনে হাজার আসকালানী। আল-মুগনী - গ্রন্থটির রচয়িতা হলেন শায়খ মুহাম্মাদ তাহির পাট্টনী সিন্ধী (মৃত্যু : ৯৮৬ / ১৫৭৮) হরকতসহ নির্ভুলভাবে রাবীগণের নামসমুহ এতে উল্লিখিত হয়েছে।


মহান আল্লাহ উম্মাতে মুহাম্মাদীর প্রথম যুগের মানুষদেরকে তাঁর মহান রাসূল (ﷺ)-এর হাদীস সংরক্ষণের বিষয়ে একটি সঠিক ও সময়োপযোগী কর্মের তাওফীক প্রদান করেন। প্রথম হিজরী শতক থেকে সাহাবী, তাবিয়ী ও তৎপরবর্তী যুগের আলিমগণ মুসলিম বিশ্বের প্রতিটি গ্রামগঞ্জ, শহর ও জনপদ ঘুরে ঘুরে সকল হাদীস ও বর্ণনাকারীগণের তথ্যাদি সংগ্রহ করতেন। হাদীস শিক্ষা, লিখে রাখা, শেখানো ও হাদীস কেন্দ্রিক আলোচনাই ছিল ইসলামের প্রথম তিন-চার শতকের মানুষদের অন্যতম কর্ম, পেশা, নেশা ও আনন্দ। তাবিয়ীগণের যুগ থেকে বা হিজরী প্রথম শতকের মাঝামাঝি থেকে পরবর্তী প্রায় তিন শতাব্দী পর্যন্ত সময়কালে আমরা দেখতে পাই যে, হাদীস বর্ণনাকারীগণ দুই প্রকারের: অনেকে নিজ এলাকার ‘রাবী’ বা মুহাদ্দিসগণের কাছ থেকে এবং সম্ভব হলে অন্যান্য কিছু দেশের কিছু মুহাদ্দিসের কাছে হাদীস শিক্ষা করেছেন। এরপর তিনি হাদীস বর্ণনা ও শিক্ষায় রত থেকেছেন। তাঁর কাছে যে শিক্ষা গ্রহণ করতে গিয়েছে তাঁকে সে হাদীসগুলো শিক্ষা দিয়েছেন। এরা সাধারণভাবে ‘রাবী’ বা বর্ণনাকারী নামে পরিচিত। অপরদিকে এ যুগগুলোতে অনেক মুহাদ্দিস নিজ এলাকার সকল ‘রাবী’র কাছ থেকে হাদীস শিক্ষা ও লিপিবদ্ধ করার পরে বেরিয়ে পড়েছেন তৎকালীন মুসলিম বিশ্বের প্রতিটি জনপদ সফর করতে। তাঁরা প্রত্যেকে দীর্ঘ কয়েক বছর বা কয়েক যুগ এভাবে প্রতিটি জনপদে গমন করে সকল জনপদের সকল ‘রাবী’ বা মুহাদ্দিসের কাছ থেকে হাদীস শুনেছেন ও লিপিবদ্ধ করেছেন। একজন সাহাবীর বা একজন তাবিয়ীর একটিমাত্র হাদীস বিভিন্ন ‘রাবী’র মুখ থেকে শুনতে ও সংগ্রহ করতে তাঁরা মক্কা, মদীনা, খোরাসান, সমরকন্দ, মারভ, ওয়াসিত, বাসরা, কূফা, বাগদাদ, দামেশক, হালাব, কায়রো, সান‘আ... ইত্যাদি অগণিত শহরে সফর করেছেন। একটি হাদীসই তাঁরা শত শত সনদে সংগ্রহ করে তুলনার মাধ্যমে নির্ভুল ও ভুল বর্ণনার মধ্যে পার্থক্য নির্ণয় করেছেন।-“হাদীসের নামে জালিয়াতি” লিখেছেনঃ ড. খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর (রহ.)। লিংকঃ https://www.hadithbd.com/books/link/?id=4603


সাহাবীদের ছাত্ররা উনাদের থেকে মুখস্ত করে আবার নিজেরা কিতাব আকারে সংরক্ষণ করতেন। অনেক ইসলামবিরোধীরা বলে থাকে সাহাবীদের সময় হাদিস সংরক্ষণ ছিল না। কথাটি মিথ্যা।

“হাম্মাম বিন মুনাব্বিহের সহীফা” প্রাচীনতম হাদিস সংকলনগুলির মধ্যে একটি। হাম্মাম বিন মুনাব্বিহ আবু হুরায়রার ছাত্র ছিলেন এবং হাদিস বিশারদদের মধ্যে বিশ্বস্ত হওয়ার জন্য সুপরিচিত। আরবি লিটারেচার টু দ্য এন্ড অফ উমাইয়াদ পিরিয়ডট বই অনুসারে: একটি উদাহরণ হল হাম্মাম বিন মুনাব্বিহের সহীফাহ, (মৃত্যু ১১০) একজন ইয়েমেনি অনুসারী এবং সাহাবী আবু হুরায়রার একজন শিষ্য,যার কাছ থেকে হাম্মাম এই সহীফা লিখেছেন, যা ১৩৮ টি হাদিস নিয়ে গঠিত এবং এটি প্রথম হিজরি/সপ্তম শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে লেখা হয়েছে বলে বিশ্বাস করা হয়। এটা তাৎপর্যপূর্ণ যে হাম্মাম তার পাঠ্যটি এই শব্দগুলির সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন: "আবু হুরায়রা রাসুল (সাঃ) থেকে যা বর্ণনা করেছেন সে সম্পর্কে তিনি আমাদের বলেছেন", এইভাবে তার তথ্যের উৎস এমনভাবে দিয়েছেন যা "সনদ" বা "ইসনাদ" নামে পরিচিত হয়েছিল। ,অর্থাৎ, শিক্ষকদের শৃঙ্খলের শিক্ষক যার মাধ্যমে একজন লেখক নবীর কাছে পৌঁছান, হাদিস সংকলনে সর্বদা এবং নিয়মতান্ত্রিকভাবে অনুসরণ করা একটি অনুশীলন। আমরা আরও দেখি যে, ইমাম আহমাদের মুসনাদ-এর একটি অংশে দু'টি ব্যতীত সমস্ত বর্ণনা পাওয়া যায়, যা আবার হাদিস সংরক্ষণের সাক্ষ্য দেয় এবং আগের কাজগুলি পরবর্তী দলিলগুলিতে বিশ্বস্তভাবে উপস্থাপন করা হয়েছিল। - Are There Any Early Hadiths? https://www.islamic-awareness.org/hadith/hadith


হাদিস সংকলন বিষয় বিস্তারিত জানতে যেই কিতাব গুলো আপনার পড়া উচিতঃ                         


হাদিস শাস্ত্রের ইতিহাস। লিখেছেনঃ মাওঃ আমিনুল ইহসান মুজাদ্দেদি (রহ)।


হাদিস সংকলনের ইতিহাস। লিখেছেনঃ মাওঃ মোহাম্মদ আব্দুর রহিম (রহ)।


রিজাল শাস্র ও জাল হাদিসের ইতিবৃত্ত। লেখকঃ ডঃ মুহাম্মদ জামাল উদ্দিন।


আসমাউর রিজাল (প্রসিদ্ধ কয়জন রাবির জীবনী)। লেখকঃ মুফতি গোলাম রব্বানি ভুইয়া (রহ)।


ছিহা ছিত্তাহর রাবি পরিচিতি। লেখকঃ হাফেজ মুহাম্মদ উসমান গনি।


হাদিস শরিফ শাস্ত্র। লেখকঃ মুহাম্মদ আব্দুল হাই নদভি।


হাদিসের তত্ব ও ইতিহাস। লেখকঃ মাওঃ নুর মুহাম্মদ আজমি (রহ)।


হাদিস চর্চায় ইমাম আবু হানিফা (রহ)এর অবদান। লেখকঃ মোঃ আবুল কাসেম ভুইয়া।


ইসলামী ফিকহের ঐতিহাসিক পটভূমি। লেখকঃ মাওঃ মুহাম্মদ তাকি আমিনি (রহ)।


হাদিসের পরিভাষা। লেখকঃ ডঃ মুহাম্মদ আত তাহহান (রহ)।


আমি অল্প কিছু উল্লেখ করলাম মাত্র। উক্ত বই গুলো পড়লে জানতে পারবেন আল্লাহর নবীর কথাকে সাহাবায় কেরাম কত নিরাপদ ও শক্তিশালীভাবে সংরক্ষণ করেছেন আর উনাদের থেকে উনাদের ছাত্ররা এভাবে আমাদের পর্যন্ত। এসব ছাড়াও আরও প্রচুর হাদিস রয়েছে। হাদিসের বিশাল বিশাল কিতাব আছে যা এখানে উল্লেখ করলে লেখা অনেক বিশাল হয়ে যাবে। এটা স্পষ্ট সত্যি কথা নবী মোহাম্মদ (সা) থেকে উনার সম্মানিত সাহাবাগণ হাদিস মুখস্ত করে সংরক্ষণ করেছে,পরে উনাদের থেকে পরবর্তী মুজতাহিদ ইমামগণ হাদিস মুখস্ত করে সংরক্ষণ করেছেন। মুসলিম উম্মাহ রাসূলের নবুওয়তী জিন্দেগীর প্রাথমিক পর্যায় হতে আজ অবধি হাদীসে রাসূলের (সা.) সংরক্ষণের ক্ষেত্রে প্রধানত চারটি পন্থা অবলম্বন করে আসছেন: ১. হাদীসের শিক্ষা গ্রহণ ও মুখস্থকরণ। ২. হাদীসের শিক্ষাদান। ৩. হাদীস মোতাবেক আমল। ৪. হাদীস লিপিবদ্ধকরণ। এভাবে আমাদের বর্তমান যুগ পর্যন্ত। নবী মোহাম্মদ(সা) সাহাবাগণ,তাবি’ঈগণ,তাবি তাবি‘ঈগণ এই যুগ গুলো উত্তম বলেছেন। এই হাদিস গুলো পড়ুন।


সহিহ বুখারী, হাদিসঃ ২৬৫২,সহিহ হাদিসঃ

‘আবদুল্লাহ (ইবনু মাসঊদ) (রাঃ) সূত্রে নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, আমার যুগের লোকেরাই সর্বোত্তম ব্যক্তি, অতঃপর যারা তাদের নিকটবর্তী। অতঃপর যারা তাদের নিকটবর্তী। এরপর এমন সব ব্যক্তি আসবে যারা কসম করার আগেই সাক্ষ্য দিবে, আবার সাক্ষ্য দেয়ার আগে কসম করে বসবে। ইবরাহীম (নাখ্‌ঈ) (রহঃ) বলেন, আমাদেরকে সাক্ষ্য দিলে ও অঙ্গিকার করলে মারতেন।


বুলগুল মারাম, হাদিসঃ ১৪০০, সহিহ হাদিসঃ

ইমরান ইবনু হুসাইন (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, আমার যুগের লোকেরাই তোমাদের মধ্যে সর্বোত্তম। অতঃপর তাদের নিকটবর্তী যুগের লোকেরা, অতঃপর তাদের নিকটবর্তী যুগের লোকেরা। অতঃপর তোমাদের পর এমন লোকেরা আসবে, যারা সাক্ষ্য দিতে না ডাকলেও তারা সাক্ষ্য দিবে, যারা খিয়ানাত করবে, আমানত রক্ষা করবে না। তারা মান্নত করবে কিন্তু তা পুর্ন করবে না। তাদের মধ্যে মেদওয়ালাদের প্রকাশ ঘটবে।-ihadis.com


জামে আত তিরমিজি, হাদিসঃ ২৩০২, সহিহ হাদিসঃ

ইমরান ইবনু হুসাইন (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃতিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে আমি বলতে শুনেছিঃ আমার যুগই (যুগের মানুষই) সর্বোত্তম, তারপর তাদের পরবর্তী যুগ, তারপর তাদের পরবর্তী যুগ (তিনবার বলেছেন)। তাদের পরবর্তী যুগে (তিনযুগ পরে) এমন সম্প্রদায়ের আবির্ভাব ঘটবে যারা হবে মোটা দেহ বিশিষ্ট এবং তারা মোটা দেহ বিশিষ্ট হওয়াটাই পছন্দ করবে। তারা সাক্ষ্য তলবের পূর্বেই সাক্ষ্য দিতে যাবে।-ihadis.com


আল লু’লু ওয়াল মারজান, হাদিসঃ ১৬৪৬, সহিহ হাদিসঃ

‘আবদুল্লাহ ইবনু মাস‘ঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, আমার যুগের লোকেরাই সর্বোত্তম ব্যক্তি, অতঃপর যারা তাদের নিকটবর্তী। এরপরে এমন সব ব্যক্তি আসবে যারা কসম করার আগেই সাক্ষ্য দিবে, আবার সাক্ষ্য দেয়ার আগে কসম করে বসবে।-ihadis.com


জামে আত তিরমিজি, হাদিসঃ ২৩০৩, সহিহ হাদিসঃ

উমার ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ নাবী সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ “আমার যুগ হচ্ছে সর্বোত্তম যুগ, তারপর তাদের পরবর্তী যুগ, তারপর তাদের পরবর্তী যুগ। তারপর এরূপভাবে মিথ্যার প্রসার ঘটবে যে, কারো নিকট সাক্ষ্য তলব না করা হলেও সে সাক্ষ্য দিবে, শপথ করতে বলা না হলেও শপথ করবে”।-ihadis.com


সহিহ বুখারী, হাদিসঃ ৩৬৫১,সহিহ হাদিসঃ 

আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, আমার উম্মাতের সর্বোত্তম মানুষ আমার যুগের মানুষ (সাহাবীগণ)। অতঃপর তৎপরবর্তী যুগ। অতঃপর তৎপরবর্তী যুগ। অতঃপর এমন লোকদের আগমন হবে যাদের কেউ সাক্ষ্য দানের পূর্বে কসম এবং কসমের পূর্বে সাক্ষ্য দান করবে। ইব্রাহীম (নাখ্‌য়ী; রাবী) বলেন, ছোট বেলায় আমাদের মুরুব্বীগণ আল্লাহ্‌র নামে কসম করে সাক্ষ্য প্রদানের জন্য এবং ওয়াদা-অঙ্গীকার করার কারণে আমাদেরকে মারধর করতেন।-ihadis.com


সহিহ মুসলিম, হাদিসঃ ৬৩৬৩, সহিহ হাদিসঃ

আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃতিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ আমার উম্মাতের মাঝে সর্বাধিক উত্তম তারাই যারা আমার যুগের সাথে সংশ্লিষ্ট লোকেরা (অর্থ্যাৎ সাহাবাগণ)। তারপর তাদের সন্নিকটবর্তী সংযুক্ত যুগের লোক (অর্থ্যাৎ তাবি’ঈগণ)। তারপর তাদের সংযুক্ত যুগ (অর্থ্যাৎ তাবি তাবি‘ঈগণ)। অতঃপর এমন সম্প্রদায়ের উদ্ভব হবে যারা শপথের পূর্বে সাক্ষী দিবে এবং সাক্ষীর পূর্বে শপথ করবে। আর হান্নাদ তার হাদীসে (যুগ বা সময় ) কথাটি বর্নণা করেননি এবং কুতাইবাহ বলেছেন অতঃপর অনেক সম্প্রদায়ের সৃষ্টি হবে।-ihadis.com


আমি কিছু ভিডিওের লিংক দিয়ে দিচ্ছি। আপনারা দেখুন সেসব ইসলামিক লাইব্রেরী। তাহলে বুঝতে পারবেন ইসলামের সকল তথ্যভাণ্ডার কত সুন্দর ও শক্তিশালীভাবে সংরক্ষণ করা হয়েছে। আপনারা যে কোনো ইসলামিক প্রাচীন কিতাব সম্পর্কে দেখতে চাইলে, জানতে চাইলেপ সেখানে গেলে বিস্তারিত সব পেয়ে যাবেন। এই ভিডিও গুলো সব দেখুন।


EXCLUSIVE Tour of BIGGEST Islamic LIBRARY in Utah | Must Watch!

https://www.youtube.com/watch?v=Ubtu2P4wbq0&t=5240s


The Library of the Prophet’s Mosque in Al Madinah, Saudi Arabia

https://www.youtube.com/watch?v=Oa6q-SOeUoQ


MUST WATCH! UNBOXING THE BIGGEST BOOK IN MY LIBRARY!!

https://www.youtube.com/watch?v=EtU4O6PCFrE


5 Essential Books : Hadeeth

https://www.youtube.com/watch?v=64wvwfzZDOI


Unboxing ENGLISH Books!!!

https://www.youtube.com/watch?v=gSt-zz3CmxY


My Library Tour

https://www.youtube.com/watch?v=hWdZjS_V3IU


Tour of an Islamic Library by Maulana Fadhlul Islam

https://www.youtube.com/watch?v=BHcvjnEgl7k


হাদিস অস্বীকারীদের ব্যাপারে নবীজি মোহাম্মদ (সা) ভবিষ্যৎবানীঃ

নবী মোহাম্মদ (সা) স্পষ্ট করেই সেই সব ভ্রান্ত দলদের সম্পর্কে সচেতন করে গিয়েছেন। যখন নবীজি (সা) এই হাদিস বর্ণনা করেন তখন কিন্তু এই দল ছিল না। তাহলে উনি যদি আল্লাহর নবী না হয়ে থাকেন কিভাবে এই কথা উনি নিশ্চিত করে বলে যেতে পারলেন? নবীজি (সা)এর হাদিসকে বাদ দিলে তো পরোক্ষভাবে কুরআনকেই বাদ দিয়ে দেয়া হয় এই সহজ কথাটি কি সেই পথভ্রষ্টদের মাথায় ঢুকে না? তাদের মস্তিস্ক কোথায় হারিয়ে গিয়েছে যার ফলে এই সহজ সহজ ব্যাপার গুলো তারা বুঝতে পারছে না?


মিশকাতুল মাসাবিহ, হাদিসঃ ১৬৩, সহিহ হাদিসঃ

মিক্বদাম ইবনু মা‘দীকারিব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন: সাবধান! আমাকে কুরআন দেয়া হয়েছে এবং তার সাথে তার অনুরূপ জিনিসও। জেনে রেখ, শীঘ্রই এমন এক সময় এসে যাবে, যখন কোন উদরভর্তি বড় লোক তার গদিতে বসে বলবে, তোমরা কেবল এ কুরআনকেই গ্রহণ করবে। এতে যা হালাল পাবে তাকেই হালাল জানবে এবং যা এতে হারাম পাবে তাকেই হারাম মনে করবে। অথচ রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যা হারাম বলেছেন, তা আল্লাহ্‌ যা হারাম করেছেন তারই অনুরূপ। তাই জেনে রেখ! গৃহপালিত গাধা তোমাদের জন্য হালাল নয় এবং শিকারী দাঁতওয়ালা কোন হিংস্র পশুও হালাল নয়। এমতাবস্থায় মুসলিম রাষ্ট্রের অমুসলিম নাগরিকের কোন হারানো বস্তুও তোমাদের জন্য হালাল নয়, তবে সে যদি সেটির মুখাপেক্ষী না হয় সেক্ষেত্রে ভিন্ন কথা। যখন কোন লোক কোন সম্প্রদায়ের নিকট পৌঁছে, তাদের উচিত ঐ লোকের মেহমানদারি করা। যদি তারা তার মেহমানদারি না করে তবে সে জোরপূর্বক তাদের নিকট থেকে তার মেহমানদারির সম-পরিমাণ জিনিস আদায় করার অধিকার রাখবে। (অথচ কুরআনে এ সকল বিষয়ের উল্লেখ নেই)।-ihadis.com


সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিসঃ ১৩, সহিহ হাদিসঃ 

আবু রাফি' (রাঃ) রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর মুক্ত করা দাস থেকে বর্ণিতঃ রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ আমি যেন তোমাদের কাউকে এরূপ না পাই যে, সে তার আসনে হেলান দিয়ে বসে থাকবে এবং (এই অবস্থায়) আমার প্রদত্ত কোন আদেশ বা আমার প্রদত্ত কোন নিষেধাজ্ঞা তার নিকট পৌঁছলে সে বলবে, আমি কিছু জানিনা, আমরা আল্লাহ্‌র কিতাবে যা পাবো তার অনুসরণ করবো।-ihadis.com


কথিত আহলে কুরআনদের গোমরাহীঃ

সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিসঃ ৪৭, সহিহ হাদিসঃ 

আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ আয়াত তিলাওয়াত করলেন (অনুবাদ): “তিনি তোমার প্রতি এ কিতাব নাযিল করেছেন যার কতক আয়াত সুস্পষ্ট, দ্ব্যর্থহীন, এগুলো কিতাবের মূল অংশ, আর অন্যগুলো রূপক। যাদের অন্তরে সত্য লঙ্ঘন প্রবণতা আছে শুধু তারাই বিশৃঙ্খলা ও ভুল ব্যাখ্যার উদ্দেশ্যে যা রূপক তার অনুসরণ করে। আল্লাহ্‌ ব্যতীত আর কেউ তার ব্যাখ্যা জানে না। আর যারা সুগভীর জ্ঞানের অধিকারী তারা বলে, আমরা এর প্রতি ঈমান আনলাম, সমস্তই আমার রবের নিকট থেকে আগত। বোধশক্তিসম্পন্ন ব্যক্তিগণ ব্যতীত অপর কেউ শিক্ষা গ্রহণ করে না”-(সূরাহ আলে-ইমরান ২:৭)। অতঃপর তিনি বলেন, হে আয়িশাহ! যখন তুমি তাদেরকে এ আয়াতের ব্যাখ্যায় বাদানুবাদ করতে দেখবে, তখন মনে করবে যে, এরা সেই লোক যাদের আল্লাহ্‌ অপদস্থ করেন। তোমরা তাদের পরিহার করো।-ihadis.com


সহিহ তারগিব ওয়াত তাহরিব, হাদিসঃ ৫২, সহিহ হাদিসঃ 

আবু বারযাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, “নিশ্চয় আমি তোমাদের উপর যা আশংকা করছি তা হচ্ছে, পেটের ব্যাপারে এবং যৌনাঙ্গের বিষয়ে লোভে পড়ে পথভ্রষ্ট হওয়া এবং প্রবৃত্তির অনুসরণ করে বিভ্রান্ত হওয়া।"-ihadis.com


মিশকাতুল মাসাবিহ, হাদিসঃ ১৫৭, সহিহ হাদিসঃ 

ইবনু মাস্‘ঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: আমার পূর্বে আল্লাহ্‌ তা‘আলা এমন কোন নাবীকে তাঁর উম্মাতের মধ্যে পাঠাননি, যাঁর উম্মাতের মধ্যে কোন সাহায্যকারী বা সহাবীর দল ওই উম্মাতে ছিল না। এ তারা সুন্নাতের পথ অনুসরণ করেছে, তার হুকুম-আহকাম মেনে চলেছে। তারপর এমন লোক তাদের স্থলাভিষিক্ত হল, যারা অন্যদেরকে যা বলত নিজেরা তা করত না। আর তারা সে সব কাজ করত যার আদেশ (শারী‘আতে) তাদেরকে দেয়া হয়নি। (আমার উম্মাতের মধ্যেও এমন কতিপয় লোক থাকতে পারে)। তাই যে নিজের হাত দ্বারা তাদের বিরুদ্ধে জিহাদ করবে সে (পূর্ণ) মু’মিন। আর যে মুখের দ্বারা তাদের বিরুদ্ধে জিহাদ করবে সেও মু’মিন। আর যে অন্তর দিয়ে তাদের বিরুদ্ধে জিহাদ করবে সেও মু’মিন। আর এরপর সরিষার দানা পরিমাণও ঈমান নেই।-ihadis.com

 

মিশকাতুল মাসাবিহ, হাদিসঃ ১৬২, সহিহ হাদিসঃ 

আবূ রাফি‘ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: আমি তোমাদের কাউকেও যেন এরূপ অবস্থায় না দেখি যে, সে তার গদিতে হেলান দিয়ে বসে থাকবে। আর তার নিকট আমার নির্দেশাবলীর কোন একটি পৌঁছবে, যাতে আমি কোন বিষয় আদেশ করেছি অথবা কোন বিষয় নিষেধ করেছি। তখন সে বলবে, আমি এসব কিছু জানি না, যা কিছু আমি আল্লাহ্‌র কিতাবে পাব তার অনুসরণ করব।-ihadis.com


রিয়াদুস সলেহীন, হাদিসঃ ১৬২, সহিহ হাদিসঃ 

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘আমার উম্মতের সবাই জান্নাতে যাবে; কিন্তু সে নয় যে অস্বীকার করবে।’’ জিজ্ঞাসা করা হল, ‘হে আল্লাহর রাসূল! (জান্নাতে যেতে আবার) কে অস্বীকার করবে?’ তিনি বললেন, ‘‘যে আমার অনুসরণ করবে, সে জান্নাতে যাবে এবং যে আমার অবাধ্যতা করবে, সেই জান্নাতে যেতে অস্বীকার করবে।-ihadis.com


উপদেশ, হাদিসঃ ১৭৩, সহিহ হাদিসঃ 

জাবের (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ জাবের (রাঃ) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে বর্ণনা করেন যে, একদিন যখন ওমর (রাঃ) তাঁর কাছে এসে বললেন, আমরা ইহুদীদের নিকটে তাদের অনেক পুরানো ধর্মীয় কাহিনীগুলি, যা আমাদের নিকটে চমৎকার বোধ হয়, তার কিছু কিছু লিখে রাখার জন্য আপনি আমাদের অনুমতি দিবেন কি? তখন জবাবে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, ‘তোমরা কি দিকভ্রান্ত হয়েছ, যেমন ইহুদী-নাছারারা দিকভ্রান্ত হয়েছে? অথচ আমি তোমাদের কাছে এসেছি উজ্জ্বল ও পরিচ্ছন্ন দ্বীন নিয়ে। যদি আজকে মূসাও বেঁচে থাকতেন, তাহলে তাঁর পক্ষেও আমার অনুসরণ ব্যতীত গত্যন্তর থাকত না’-ihadis.com


উপসংহারঃ যারা বলে আমরা শুধু কুরআন মেনে মুসলিম তারা আসলে কুরআনকেই অস্বীকার করে ফেলছে। ইসলামে আল্লাহ পরিপূর্ণভাবে প্রবেশ করতে বলেছেন। আপনি অর্ধেক আয়াত মানবেন আর অর্ধেক মানবেন না সেটা হবে না। কেউ যদি এক পা ঘরে দিয়ে বলে আমি পুরো প্রবেশ করেছি এটা যেমন মিথ্যা তেমনি যারা বলে আমরা হাদিস মানি না কুরআন মানি তারাও ইসলামে পরিপূর্ণ প্রবেশ করতে পারে নাই। আল্লাহ নিজেই বলেছেন ইসলামে পূর্ণভাবে প্রবেশ কর।


আল কুরআন, সুরা বাকারা ২ঃ২০৮ আয়াতে বলা আছে,

হে মু’মিনগণ! ইসলামের মধ্যে পূর্ণভাবে প্রবেশ কর এবং শায়ত্বনের পদাঙ্ক অনুসরণ করে চলো না, নিশ্চয়ই সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু। 


এই বিষয় আরও দরকারী লেখাঃ


‘নব্য আহলে কুরআনের’ মূল অপরাধ রাসূল অবমাননা

https://www.alkawsar.com/bn/article/2719/


হাদীস অস্বিকারকারী আহলে কুরআন কাফির কেন? প্রমাণিক আলোচনা

https://ahlehaqmedia.com/2946-2/


আহলে কুরআনদের বিভ্রান্তি ও তা নিরসনের উপায়

https://ikhlasbd.com/article_details/9381


'আহলে কুরআন' একটি ভ্রান্ত ফির্কা

https://www.assiratmission.com/2014/04/blog-post_15.html


আহলে কুরআন ফিরকা সম্পর্কে

https://ifatwa.info/11854/


Are Hadith Necessary? An Examination of the Authority of Hadith in Islam

https://yaqeeninstitute.org/read/paper/are-hadith-necessary


এমডি আলী

যিনি একজন লেখক, বিতার্কিক ও গবেষক। বিভিন্ন ধর্ম ও মতবাদ বিষয় পড়াশোনা করেন। ইসলামের সত্যতা মানুষের কাছে ছড়িয়ে দিতে চান। “সত্যের অনুভূতি” উনার লেখা প্রথম বই। “ফ্যান্টাস্টিক হামজা” দ্বিতীয় বই। জবাব দেবার পাশাপাশি নাস্তিক মুক্তমনাদের যৌক্তিক সমালোচনা করে থাকেন।

Previous Post Next Post