বিষয়ঃ জ্ঞান অর্জনে ইসলাম কি নিরুৎসাহিত করে ?
লিখেছেনঃ এম ডি আলী
ইসলাম বিদ্বেষী সাহেবরা বলে থাকেন ইসলাম একজন মানুষকে যৌক্তিক চিন্তা করতে দেয় না অথবা নিষেধ করে অথবা ইসলাম এই আধুনিক! সমাজের জন্য একজন জ্ঞানী মানুষের জন্য ক্ষতিকর , তাদের এহেন দাবী যে ভুল এবং মিথ্যাচার সেটাই আজকে এখনই প্রমাণিত হবে । আসুন আমরা সরাসরি পড়াশোনায় চলে যাই।
* ihadis.com, সহিহ তারগিব ওয়াত তাহরিব, হাদিস ৮০, হাসান হাদিসঃ নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, “যে ব্যক্তি ইসলামের জ্ঞান শিক্ষা দিবে, সে তদানুযায়ী আমলকারীর অনুরূপ প্রতিদান লাভ করবে। এতে আমলকারীর প্রতিদান কোন অংশে কম হবে না।”
* ihadis.com, সহিহ তারগিব ওয়াত তাহরিব, হাদিস ৭২, সহিহ হাদিসঃ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, “জ্ঞানার্জন প্রত্যেক মুসলিম ব্যক্তির উপর ফরয।”
* ihadis.com, সহিহ তারগিব ওয়াত তাহরিব, হাদিস ৭৩, হাসান হাদিসঃ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ “সাতটি আমলের ছোয়াব বান্দার মৃত্যুর পর কবরে থাকা অবস্থায় তার জন্য জারি থাকে। যে ব্যক্তি কাউকে বিদ্যা শিক্ষা দিবে, অথবা নদী খনন করবে, অথবা কুপ খনন করবে, অথবা খেজুর গাছ লাগিয়ে যাবে, অথবা মসজিদ তৈরী করবে, অথবা পবিত্র কুরআনের উত্তরাধিকার রেখে যাবে অথবা এমন সন্তান রেখে যাবে যে মৃত্যুর পর তার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করবে।” (এসকল নেক কাজের ছোয়াব মৃত্যুর পরও লাভ করতে থাকবে।)
* ihadis.com, সহিহ তারগিব ওয়াত তাহরিব, হাদিস ৭৪, হাসান হাদিসঃ আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, আমি শুনেছি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেনঃ “দুনিয়াটা অভিশপ্ত এবং এর মধ্যস্থিত সব কিছুই অভিশপ্ত। তবে আল্লাহর যিকির, যিকিরের সাথে সংশ্লিষ্ট বিষয়, আলেম (জ্ঞানী) ও জ্ঞানার্জনকারী (অভিশপ্ত নয়)। টিকাঃ এখানে দুনিয়া বলতে উদ্দেশ্য হচ্ছে, আল্লাহ তা’আলা থেকে যা দূরে রাখে তা সবই। অভিশপ্ত হওয়ার উদ্দেশ্য হচ্ছে আল্লাহর রহমতের নযর থেকে বঞ্চিত হওয়া। আল্লাহর যিকিরের সাথে সংশ্লিষ্ট দুনিয়াবী বস্তু আল্লাহ যা পছন্দ করেন। অর্থাৎ আল্লাহর আদেশ-নিষেধের সাথে সামঞ্জস্যশীল বিষয়।
* ihadis.com, সহিহ তারগিব ওয়াত তাহরিব, হাদিস ৮১, হাসান হাদিসঃ আবু উমামা বাহেলী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর নিকট দু’ব্যক্তির কথা উল্লেখ করা হল, একজন আবেদ (সাধারণ ইবাদত গুজর) অন্যজন আলেম (ইসলামী জ্ঞানে পারদর্শী) তিনি বললেনঃ (তাঁর উপর সর্বোত্তম রহমত ও সালাম নাযিল হোক) “আবেদের উপর আলেমের মর্যাদা ঠিক তেমন, যেমন তোমাদের সাধারণ ব্যক্তির উপর আমার মর্যাদা।” অতঃপর রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেনঃ “নিশ্চয় আল্লাহ, ফেরেশতাকুল, আসমান সমূহ ও যমীনের অধিবাসীগণ এমনকি পিপিলিকা তার গর্ত থেকে- এমনকি পানির মাছও মানুষকে কল্যাণের শিক্ষাদানকারীর জন্য দু’আ করতে থাকে।” - টিকাঃ আল্লাহ দুআ করেন অর্থ রহমত নাযিল করেন। ফেরেশতাদের দুআর অর্থ হল ইক্তেগফার বা ক্ষমা প্ৰাথনা করা।
* ihadis.com, সহিহ তারগিব ওয়াত তাহরিব, হাদিস ৮৪, সহিহ হাদিসঃ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেনঃ “যে ব্যক্তি বিদ্যান্বেষণের জন্য রাস্তা চলবে, বিনিময়ে আল্লাহ তার জন্য জান্নাতের একটি পথ সহজ করে দিবেন।”
* ihadis.com, সহিহ তারগিব ওয়াত তাহরিব, হাদিস ৮৬, হাসান হাদিসঃ নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেনঃ “যে ব্যক্তি শুধুমাত্র কল্যাণ শিক্ষা লাভ বা শিক্ষা প্রদানের উদ্দেশ্যে সমজিদে গমণ করবে, তাকে পরিপূর্ণরূপে হজ্জ পালনকারীর ন্যায় প্রতিদান দেয়া হবে।”
* ihadis.com, সহিহ তারগিব ওয়াত তাহরিব, হাদিস ৮৭, হাসান হাদিসঃ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ “যে ব্যক্তি জ্ঞানার্জন করার জন্যে (ঘর থেকে) বের হল, সে ফেরত আসার পর্যন্ত আল্লাহর পথেই থাকল।”
* ihadis.com, সুনানে আবু দাউদ, হাদিসঃ ৩৬৪৫, হাসান হাদিসঃ যায়িদ ইবনু সাবিত (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে ইয়াহুদীদের লেখা (ভাষা) শিখার আদেশ দিলেন। আমি তদনুযায়ী ইয়াহুদীদের লেখা শিখলাম। তিনি বললেনঃ আল্লাহ্র শপথ! ইয়াহুদীরা আমার পক্ষ হতে সঠিক লিখবে বলে আমার বিশ্বাস হচ্ছে না। বর্ণনাকারী বলেন, পনের দিন যেতে না যেতেই আমি তাদের লেখা আয়ত্ত করে ফেললাম। তিনি চিঠিপত্র লেখানোর ইচ্ছা করলে আমি লিখে দিতাম এবং তার নিকট চিঠিপত্র এলে আমি তা তাঁকে পড়ে শুনাতাম।
* ihadis.com, সহিহ তারগিব ওয়াত তাহরিব, হাদিস ৭৮, সহিহ হাদিসঃ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ “আদম সন্তান যখন মৃত্যু বরণ করে, তখন তিনটি আমল ব্যতীত সমস্ত আমল বন্ধ হয়ে যায়। (১) সাদকায়ে জারিয়া বা প্রবাহমান সাদকা (২) উপকারী বিদ্যা (৩) সৎ সন্তান, যে তার জন্য দু’আ করে।
* সুরা আলাক ৯৬:১ = পড় তোমার প্রভুর নামে যিনি তোমাকে সৃষ্টি করেছেন ।
* সুরা তাহা ২০:১১৪ = বল হে আমার প্রতিপালক আমার জ্ঞান বৃদ্ধি করো ।
* সুরা মুজদালা ৫৮:১১ = যাদেরকে জ্ঞান দান করা হয়েছে আল্লাহ্তাদেরকে অনেক মর্যাদায় উন্নত করবেন ।
* সুরা বনী ইসরাইল ১৭:৩৬ = যে বিষয় তোমরা জানা নাই তার অনুসরন করো না। নিশ্চয় কান, চোখ ও অন্তর এদের প্রতিটি ব্যাপারে তোমাকে জিজ্ঞাসিত করা হবে।
* সুরা ফাতির ৩৫:২৮ = বান্দাদের মধ্যে শুদু জ্ঞানীরাই আল্লাহকে ভয় করে ।
* সুরা কামার ৫৪:১৭ = আল্লাহ্ বলেন আমি কুরানকে সহজ করে দিয়েছি উপদেশ গ্রহনের জন্য , অতএব কোন উপদেশ গ্রহণকারী আছে কি?
* সুরা আল ইমরান ৩:৬৬ = যেসব বিষয় তোমার জ্ঞান নাই সেসব বিষয় বিতর্ক করো না । আল্লাহ্ জানেন এবং তোমরা জানো না।
* সুরা হাজ ২২:৩ = কিছু মানুষ এমন আছে যারা জ্ঞান ছাড়াই আল্লাহ্র ব্যাপারে তর্ক-বিতর্ক করে এবং সে প্রত্যেক বিদ্রোহী শয়তানের অনুসরন করতে থাকে ।
* সুরা বাকারা ২:২১৯ = আল্লাহ্ তোমাদের জন্য আয়াত সমূহ স্পস্থভাবে বর্ণনা করেন, যাতে তোমরা চিন্তা করো ।
* সুরা মুহাম্মদ ৪৭:২৪ = তারা কি কুরআন নিয়ে চিন্তা ভাবনা করে না নাকি তাদের অন্তর সমূহ তালাবধ্য ?
* সুরা ইয়াসিন ৩৬:২ = বিজ্ঞানময় কুরানের শপথ ।
* সুরা নাহল ১৬:১২৫ = তুমি তোমার রবের পথে হিকমাহ ও সুন্দর উপদেশের মাধ্যমে দাওয়াত দেও এবং সুন্দরতম পন্থায় তাদের সাথে বিতর্ক করো ।
* সুরা আল ইমরান ৩:২০ = যদি তারা সত্য থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়,তবে তোমার দায়িত্ব তো শুদু সত্য পৌঁছে দেয়া ।
* সুরা গাশিয়া ৮৮:২১ = (হে নবী)আপনি উপদেশ দিতে থাকুন,আপনি তো একজন উপদেশদাতা মাত্র ।
* সুরা গাশিয়া ৮৮:২২ = আপনি তাদের দায়গ্রস্ত কর্ম নিয়ন্ত্রক নন ।
* সুরা নাহল ১৬:৪৩ এবং সুরা আম্বিয়া ২১:৭ = তোমরা যদি না জানো তাহলে জ্ঞানীদেরকে জিজ্ঞাসা করো ।
* সুরা নাজম ৫৩:২৮ এবং সুরা ইউনুস ১০:৩৬ = অবশ্যই সত্যের মুকাবেলায় অনুমানের কোনই মূল্য নাই ।
* সুরা বাকারা ২:১১১ এবং সুরা নামল ২৭:৬৪ = যদি তোমরা তোমাদের দাবিতে সত্যবাদী হও তাহলে তোমরা প্রমান নিয়ে আসো ।
* সুরা জুমার ৩৯:৯ এবং সুরা বাকারা ২:২৬৯ এবং সুরা সোয়াদ ৩৮:২৯ এবং সুরা আনকাবুত ২৯:৪৩ = যারা জানে আর যারা জানে না তারা কি সমান ? শুদুমাত্র বিবেকবান মানুষরাই উপদেশ গ্রহণ করে । কুরানের আয়াত নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা করা ।বুদ্ধমানগণ উপদেশ গ্রহন করে । কুরানের উদাহরণ জ্ঞানী লোকেরা ছাড়া কেউই বুঝে না ।
= উপরের বিশুদ্ধ হাদিস থেকে এবং পবিত্র কুরআন থেকে আমরা আজকে শিখতে পারলাম যে"
১/ ইসলাম একজন মানুষকে মূর্খ হতে বলে না বরং একজন জ্ঞানী হতে উৎসাহ দেয় ।
২/ ইসলামী জ্ঞান অর্জনের পাশা পাশি ইসলাম আপনাকে দুনিয়াবি জ্ঞান অর্জন করতেও উৎসাহ দেয় এই কারনে যে যদি আপনি দুনিয়ার জ্ঞান না শিখেন তাহলে আপনি বাতেলদের মুকাবেলা করতে পারবেন না ।
৩/ জ্ঞান অর্জন করা অবস্থায় একজন মুসলিম আল্লাহ্র রাস্তায় থাকেন ।
৪/ জ্ঞান অর্জন করলে হজের সওয়াব পাওয়া যায় ।
৫/ জ্ঞান অর্জন করা প্রত্যেক মুসলিমদের উপর ফরয ।
৬/ জ্ঞান অর্জনে বের হলে আল্লাহ্ পথ সহজ করে দেন ।
৭/ বেশি বেশি পড়তে হবে ।
৮/ দুয়া করতে হবে আল্লাহ্র কাছে ।
৯/ যারা জ্ঞানী তারা মর্যাদাবান আল্লাহ্ তাদের উন্নত করবেন ।
১০/ যে বিষয় জ্ঞান নাই সেই বিষয়ে অযথাই তর্ক করতে নিষেধ করা হয়েছে ।
১১/ দাবী করলেই হবে সাথে প্রমান নিয়ে আসতে হবে ।
১২/ বিবেকবান, বুদ্ধিমান, জ্ঞানী লোকেরাই সত্য বুঝতে পারে ।
১৩/ সুন্দর এবং যুক্তি দিয়ে আল্লাহ্র পথে আহ্বান করতে বলা হয়েছে ।
১৪/ কুরআন নিয়ে চিন্তাভাবনা গবেষণা করতে বলা হয়েছে ।
১৫/ যারা জ্ঞানী আর যারা জ্ঞানী নয় তারা সমান হতে পারে না ।
বিশেষ কিছু কথা
নাস্তিক ধর্মের কুমিনরা বলে থাকে ইসলাম নাকি অন্ধ বিশ্বাসীয়ের উপর ভর দিয়ে চলে , ইসলাম নাকি প্রমান ছাড়াই সব বিশ্বাস করতে বলে , ইত্যাদি ইত্যাদি মিথ্যা কথা তারা বলে থাকেন কিন্তু আসলে কি তারা কখনো কুরআন হাদিস নিজেরা পড়েছেন ? উত্তর হচ্ছে না কারন তারা যদি কুরআন হাদিস পড়ত তাহলে তারা কখনোই এইসব ভুল কথা বলত না অথবা জেনে বুঝেই তারা নিজেদের জীবিকা নির্বাহ করার জন্য মিথ্যার আশ্রয় নেয় । কুরআন আপনাকে বলছে কুরআন নিয়ে চিন্তাভাবনা করতে হাদিস আপনাকে বলছে জ্ঞান অর্জন ফরয তাহলে ইসলাম কিভাবে জ্ঞানহীন হয় এটা আমরা বুঝতে পারলাম না নাকি নাস্তিকরাই আসলে মূর্খ প্রমাণিত হল ।
প্রশ্নঃ
১/ নাস্তিক ধর্মে কথায় বলা আছে যে শিক্ষা অর্জন করতে হবে ?
২/ নাস্তিক ধর্মে কথায় বলা আছে যে বিজ্ঞানীদের মানতে হবে ?
৩/ নাস্তিক ধর্মে কথায় বলা আছে যে নাস্তিকরা সত্য কথা বলবে ?
৪/ নাস্তিক ধর্মের কথায় বলা আছে যে নাস্তিকরা সভ্য হয়ে চলবে ?
৫/ নাস্তিক ধর্মের কথায় বলা আছে যে নারীদের অধিকার দিতে হবে ?
শর্তঃ নাস্তিকতার সংজ্ঞা দিয়ে পারলে উপরের প্রশ্নের উত্তর দিক নাস্তিক ধর্মের অনুসারীরা দেখি পারে কিনা । নাস্তিকতা মতবাদ বুকে ধারন (ধর্ম) করবে আর সমাজের সমাধান দিতে গিলে ইসলাম থেকে ধার করবে এটা তো হতে পারে না এটা তো বেইমানী করা হল । তাই নাস্তিকতার সংজ্ঞা দিইয়েই উপরের প্রশ্নের জবাব দিতে হবে । অন্যথায় গোঁজামিল দিলে গ্রহণ যোগ্য হবে না ।
লিখেছেনঃ এম ডি আলী
ইসলাম বিদ্বেষী সাহেবরা বলে থাকেন ইসলাম একজন মানুষকে যৌক্তিক চিন্তা করতে দেয় না অথবা নিষেধ করে অথবা ইসলাম এই আধুনিক! সমাজের জন্য একজন জ্ঞানী মানুষের জন্য ক্ষতিকর , তাদের এহেন দাবী যে ভুল এবং মিথ্যাচার সেটাই আজকে এখনই প্রমাণিত হবে । আসুন আমরা সরাসরি পড়াশোনায় চলে যাই।
* ihadis.com, সহিহ তারগিব ওয়াত তাহরিব, হাদিস ৮০, হাসান হাদিসঃ নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, “যে ব্যক্তি ইসলামের জ্ঞান শিক্ষা দিবে, সে তদানুযায়ী আমলকারীর অনুরূপ প্রতিদান লাভ করবে। এতে আমলকারীর প্রতিদান কোন অংশে কম হবে না।”
* ihadis.com, সহিহ তারগিব ওয়াত তাহরিব, হাদিস ৭২, সহিহ হাদিসঃ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, “জ্ঞানার্জন প্রত্যেক মুসলিম ব্যক্তির উপর ফরয।”
* ihadis.com, সহিহ তারগিব ওয়াত তাহরিব, হাদিস ৭৩, হাসান হাদিসঃ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ “সাতটি আমলের ছোয়াব বান্দার মৃত্যুর পর কবরে থাকা অবস্থায় তার জন্য জারি থাকে। যে ব্যক্তি কাউকে বিদ্যা শিক্ষা দিবে, অথবা নদী খনন করবে, অথবা কুপ খনন করবে, অথবা খেজুর গাছ লাগিয়ে যাবে, অথবা মসজিদ তৈরী করবে, অথবা পবিত্র কুরআনের উত্তরাধিকার রেখে যাবে অথবা এমন সন্তান রেখে যাবে যে মৃত্যুর পর তার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করবে।” (এসকল নেক কাজের ছোয়াব মৃত্যুর পরও লাভ করতে থাকবে।)
* ihadis.com, সহিহ তারগিব ওয়াত তাহরিব, হাদিস ৭৪, হাসান হাদিসঃ আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, আমি শুনেছি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেনঃ “দুনিয়াটা অভিশপ্ত এবং এর মধ্যস্থিত সব কিছুই অভিশপ্ত। তবে আল্লাহর যিকির, যিকিরের সাথে সংশ্লিষ্ট বিষয়, আলেম (জ্ঞানী) ও জ্ঞানার্জনকারী (অভিশপ্ত নয়)। টিকাঃ এখানে দুনিয়া বলতে উদ্দেশ্য হচ্ছে, আল্লাহ তা’আলা থেকে যা দূরে রাখে তা সবই। অভিশপ্ত হওয়ার উদ্দেশ্য হচ্ছে আল্লাহর রহমতের নযর থেকে বঞ্চিত হওয়া। আল্লাহর যিকিরের সাথে সংশ্লিষ্ট দুনিয়াবী বস্তু আল্লাহ যা পছন্দ করেন। অর্থাৎ আল্লাহর আদেশ-নিষেধের সাথে সামঞ্জস্যশীল বিষয়।
* ihadis.com, সহিহ তারগিব ওয়াত তাহরিব, হাদিস ৮১, হাসান হাদিসঃ আবু উমামা বাহেলী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর নিকট দু’ব্যক্তির কথা উল্লেখ করা হল, একজন আবেদ (সাধারণ ইবাদত গুজর) অন্যজন আলেম (ইসলামী জ্ঞানে পারদর্শী) তিনি বললেনঃ (তাঁর উপর সর্বোত্তম রহমত ও সালাম নাযিল হোক) “আবেদের উপর আলেমের মর্যাদা ঠিক তেমন, যেমন তোমাদের সাধারণ ব্যক্তির উপর আমার মর্যাদা।” অতঃপর রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেনঃ “নিশ্চয় আল্লাহ, ফেরেশতাকুল, আসমান সমূহ ও যমীনের অধিবাসীগণ এমনকি পিপিলিকা তার গর্ত থেকে- এমনকি পানির মাছও মানুষকে কল্যাণের শিক্ষাদানকারীর জন্য দু’আ করতে থাকে।” - টিকাঃ আল্লাহ দুআ করেন অর্থ রহমত নাযিল করেন। ফেরেশতাদের দুআর অর্থ হল ইক্তেগফার বা ক্ষমা প্ৰাথনা করা।
* ihadis.com, সহিহ তারগিব ওয়াত তাহরিব, হাদিস ৮৪, সহিহ হাদিসঃ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেনঃ “যে ব্যক্তি বিদ্যান্বেষণের জন্য রাস্তা চলবে, বিনিময়ে আল্লাহ তার জন্য জান্নাতের একটি পথ সহজ করে দিবেন।”
* ihadis.com, সহিহ তারগিব ওয়াত তাহরিব, হাদিস ৮৬, হাসান হাদিসঃ নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেনঃ “যে ব্যক্তি শুধুমাত্র কল্যাণ শিক্ষা লাভ বা শিক্ষা প্রদানের উদ্দেশ্যে সমজিদে গমণ করবে, তাকে পরিপূর্ণরূপে হজ্জ পালনকারীর ন্যায় প্রতিদান দেয়া হবে।”
* ihadis.com, সহিহ তারগিব ওয়াত তাহরিব, হাদিস ৮৭, হাসান হাদিসঃ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ “যে ব্যক্তি জ্ঞানার্জন করার জন্যে (ঘর থেকে) বের হল, সে ফেরত আসার পর্যন্ত আল্লাহর পথেই থাকল।”
* ihadis.com, সুনানে আবু দাউদ, হাদিসঃ ৩৬৪৫, হাসান হাদিসঃ যায়িদ ইবনু সাবিত (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে ইয়াহুদীদের লেখা (ভাষা) শিখার আদেশ দিলেন। আমি তদনুযায়ী ইয়াহুদীদের লেখা শিখলাম। তিনি বললেনঃ আল্লাহ্র শপথ! ইয়াহুদীরা আমার পক্ষ হতে সঠিক লিখবে বলে আমার বিশ্বাস হচ্ছে না। বর্ণনাকারী বলেন, পনের দিন যেতে না যেতেই আমি তাদের লেখা আয়ত্ত করে ফেললাম। তিনি চিঠিপত্র লেখানোর ইচ্ছা করলে আমি লিখে দিতাম এবং তার নিকট চিঠিপত্র এলে আমি তা তাঁকে পড়ে শুনাতাম।
* ihadis.com, সহিহ তারগিব ওয়াত তাহরিব, হাদিস ৭৮, সহিহ হাদিসঃ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ “আদম সন্তান যখন মৃত্যু বরণ করে, তখন তিনটি আমল ব্যতীত সমস্ত আমল বন্ধ হয়ে যায়। (১) সাদকায়ে জারিয়া বা প্রবাহমান সাদকা (২) উপকারী বিদ্যা (৩) সৎ সন্তান, যে তার জন্য দু’আ করে।
* সুরা আলাক ৯৬:১ = পড় তোমার প্রভুর নামে যিনি তোমাকে সৃষ্টি করেছেন ।
* সুরা তাহা ২০:১১৪ = বল হে আমার প্রতিপালক আমার জ্ঞান বৃদ্ধি করো ।
* সুরা মুজদালা ৫৮:১১ = যাদেরকে জ্ঞান দান করা হয়েছে আল্লাহ্তাদেরকে অনেক মর্যাদায় উন্নত করবেন ।
* সুরা বনী ইসরাইল ১৭:৩৬ = যে বিষয় তোমরা জানা নাই তার অনুসরন করো না। নিশ্চয় কান, চোখ ও অন্তর এদের প্রতিটি ব্যাপারে তোমাকে জিজ্ঞাসিত করা হবে।
* সুরা ফাতির ৩৫:২৮ = বান্দাদের মধ্যে শুদু জ্ঞানীরাই আল্লাহকে ভয় করে ।
* সুরা কামার ৫৪:১৭ = আল্লাহ্ বলেন আমি কুরানকে সহজ করে দিয়েছি উপদেশ গ্রহনের জন্য , অতএব কোন উপদেশ গ্রহণকারী আছে কি?
* সুরা আল ইমরান ৩:৬৬ = যেসব বিষয় তোমার জ্ঞান নাই সেসব বিষয় বিতর্ক করো না । আল্লাহ্ জানেন এবং তোমরা জানো না।
* সুরা হাজ ২২:৩ = কিছু মানুষ এমন আছে যারা জ্ঞান ছাড়াই আল্লাহ্র ব্যাপারে তর্ক-বিতর্ক করে এবং সে প্রত্যেক বিদ্রোহী শয়তানের অনুসরন করতে থাকে ।
* সুরা বাকারা ২:২১৯ = আল্লাহ্ তোমাদের জন্য আয়াত সমূহ স্পস্থভাবে বর্ণনা করেন, যাতে তোমরা চিন্তা করো ।
* সুরা মুহাম্মদ ৪৭:২৪ = তারা কি কুরআন নিয়ে চিন্তা ভাবনা করে না নাকি তাদের অন্তর সমূহ তালাবধ্য ?
* সুরা ইয়াসিন ৩৬:২ = বিজ্ঞানময় কুরানের শপথ ।
* সুরা নাহল ১৬:১২৫ = তুমি তোমার রবের পথে হিকমাহ ও সুন্দর উপদেশের মাধ্যমে দাওয়াত দেও এবং সুন্দরতম পন্থায় তাদের সাথে বিতর্ক করো ।
* সুরা আল ইমরান ৩:২০ = যদি তারা সত্য থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়,তবে তোমার দায়িত্ব তো শুদু সত্য পৌঁছে দেয়া ।
* সুরা গাশিয়া ৮৮:২১ = (হে নবী)আপনি উপদেশ দিতে থাকুন,আপনি তো একজন উপদেশদাতা মাত্র ।
* সুরা গাশিয়া ৮৮:২২ = আপনি তাদের দায়গ্রস্ত কর্ম নিয়ন্ত্রক নন ।
* সুরা নাহল ১৬:৪৩ এবং সুরা আম্বিয়া ২১:৭ = তোমরা যদি না জানো তাহলে জ্ঞানীদেরকে জিজ্ঞাসা করো ।
* সুরা নাজম ৫৩:২৮ এবং সুরা ইউনুস ১০:৩৬ = অবশ্যই সত্যের মুকাবেলায় অনুমানের কোনই মূল্য নাই ।
* সুরা বাকারা ২:১১১ এবং সুরা নামল ২৭:৬৪ = যদি তোমরা তোমাদের দাবিতে সত্যবাদী হও তাহলে তোমরা প্রমান নিয়ে আসো ।
* সুরা জুমার ৩৯:৯ এবং সুরা বাকারা ২:২৬৯ এবং সুরা সোয়াদ ৩৮:২৯ এবং সুরা আনকাবুত ২৯:৪৩ = যারা জানে আর যারা জানে না তারা কি সমান ? শুদুমাত্র বিবেকবান মানুষরাই উপদেশ গ্রহণ করে । কুরানের আয়াত নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা করা ।বুদ্ধমানগণ উপদেশ গ্রহন করে । কুরানের উদাহরণ জ্ঞানী লোকেরা ছাড়া কেউই বুঝে না ।
= উপরের বিশুদ্ধ হাদিস থেকে এবং পবিত্র কুরআন থেকে আমরা আজকে শিখতে পারলাম যে"
১/ ইসলাম একজন মানুষকে মূর্খ হতে বলে না বরং একজন জ্ঞানী হতে উৎসাহ দেয় ।
২/ ইসলামী জ্ঞান অর্জনের পাশা পাশি ইসলাম আপনাকে দুনিয়াবি জ্ঞান অর্জন করতেও উৎসাহ দেয় এই কারনে যে যদি আপনি দুনিয়ার জ্ঞান না শিখেন তাহলে আপনি বাতেলদের মুকাবেলা করতে পারবেন না ।
৩/ জ্ঞান অর্জন করা অবস্থায় একজন মুসলিম আল্লাহ্র রাস্তায় থাকেন ।
৪/ জ্ঞান অর্জন করলে হজের সওয়াব পাওয়া যায় ।
৫/ জ্ঞান অর্জন করা প্রত্যেক মুসলিমদের উপর ফরয ।
৬/ জ্ঞান অর্জনে বের হলে আল্লাহ্ পথ সহজ করে দেন ।
৭/ বেশি বেশি পড়তে হবে ।
৮/ দুয়া করতে হবে আল্লাহ্র কাছে ।
৯/ যারা জ্ঞানী তারা মর্যাদাবান আল্লাহ্ তাদের উন্নত করবেন ।
১০/ যে বিষয় জ্ঞান নাই সেই বিষয়ে অযথাই তর্ক করতে নিষেধ করা হয়েছে ।
১১/ দাবী করলেই হবে সাথে প্রমান নিয়ে আসতে হবে ।
১২/ বিবেকবান, বুদ্ধিমান, জ্ঞানী লোকেরাই সত্য বুঝতে পারে ।
১৩/ সুন্দর এবং যুক্তি দিয়ে আল্লাহ্র পথে আহ্বান করতে বলা হয়েছে ।
১৪/ কুরআন নিয়ে চিন্তাভাবনা গবেষণা করতে বলা হয়েছে ।
১৫/ যারা জ্ঞানী আর যারা জ্ঞানী নয় তারা সমান হতে পারে না ।
বিশেষ কিছু কথা
নাস্তিক ধর্মের কুমিনরা বলে থাকে ইসলাম নাকি অন্ধ বিশ্বাসীয়ের উপর ভর দিয়ে চলে , ইসলাম নাকি প্রমান ছাড়াই সব বিশ্বাস করতে বলে , ইত্যাদি ইত্যাদি মিথ্যা কথা তারা বলে থাকেন কিন্তু আসলে কি তারা কখনো কুরআন হাদিস নিজেরা পড়েছেন ? উত্তর হচ্ছে না কারন তারা যদি কুরআন হাদিস পড়ত তাহলে তারা কখনোই এইসব ভুল কথা বলত না অথবা জেনে বুঝেই তারা নিজেদের জীবিকা নির্বাহ করার জন্য মিথ্যার আশ্রয় নেয় । কুরআন আপনাকে বলছে কুরআন নিয়ে চিন্তাভাবনা করতে হাদিস আপনাকে বলছে জ্ঞান অর্জন ফরয তাহলে ইসলাম কিভাবে জ্ঞানহীন হয় এটা আমরা বুঝতে পারলাম না নাকি নাস্তিকরাই আসলে মূর্খ প্রমাণিত হল ।
প্রশ্নঃ
১/ নাস্তিক ধর্মে কথায় বলা আছে যে শিক্ষা অর্জন করতে হবে ?
২/ নাস্তিক ধর্মে কথায় বলা আছে যে বিজ্ঞানীদের মানতে হবে ?
৩/ নাস্তিক ধর্মে কথায় বলা আছে যে নাস্তিকরা সত্য কথা বলবে ?
৪/ নাস্তিক ধর্মের কথায় বলা আছে যে নাস্তিকরা সভ্য হয়ে চলবে ?
৫/ নাস্তিক ধর্মের কথায় বলা আছে যে নারীদের অধিকার দিতে হবে ?
শর্তঃ নাস্তিকতার সংজ্ঞা দিয়ে পারলে উপরের প্রশ্নের উত্তর দিক নাস্তিক ধর্মের অনুসারীরা দেখি পারে কিনা । নাস্তিকতা মতবাদ বুকে ধারন (ধর্ম) করবে আর সমাজের সমাধান দিতে গিলে ইসলাম থেকে ধার করবে এটা তো হতে পারে না এটা তো বেইমানী করা হল । তাই নাস্তিকতার সংজ্ঞা দিইয়েই উপরের প্রশ্নের জবাব দিতে হবে । অন্যথায় গোঁজামিল দিলে গ্রহণ যোগ্য হবে না ।