শ্রেষ্ঠ সত্যবাদীর চরম সত্যতা

 শ্রেষ্ঠ সত্যবাদীর চরম সত্যতা

লিখেছেনঃ এম ডি আলী

এমন এক মানুষ নিয়ে এখন বলব যার নিজের শত্রুরা পর্যন্ত তাঁকে সত্যবাদী উপাধি দিয়েছিল এমন কি তাঁর বেক্তিগত কোন বিষয়েই কোন আপত্তি করার সাহস দেখায়নি কারন শত্রুরা ভাল করেই জানে হজরত মোহাম্মদ (সা) একজন সুন্দর চরিত্রের শ্রেষ্ঠ মানব । কত চমৎকার ভাল মনের মানুষ হলে তাঁর সাথীরাই , প্রতিবেশীরাই এমনকি তাঁর সব স্ত্রীরা তাঁকে ভালবাসতেন,করতেন সম্মান । এমন মানুষ দ্বিতীয়টি কেউ দেখাতে পারবেন কি ?

যাদের চরিত্রে নিকৃষ্ট ,খারাপে অন্ধকারে ভরপুর তারা কি সহ্য করবে তাদের ব্যাপারে যারা সুন্দর চরিত্রের অধিকারী ।বাস্তবতা হল মিথ্যা কখনোই সত্যকে সহ্য করতে পারে না । ঠিক এই ইসলাম বিদ্বেষীরা হল মিথ্যাবাদী এবং অসৎ । তারা সুন্দর চরিত্রের মহা মানব রাসুল মোহাম্মদ (সা) কে নিয়ে মিথ্যা কথা বলে এমন কি এমন এমন মিথ্যা কথা বানিয়ে বানিয়ে বলে যা নবী মোহাম্মদ (সা) এর সাথে কোন সম্পর্ক নাই । চরিতহীন মানুষেরা নবী রাসুল (সা) কে ভালবাসবে প্রশ্নই আসে না কারন ঐ যে, মিথ্যা কখনোই সত্যকে সহ্য করতে পারে নাহ ।সামনের আলোচনায় পরিস্কার বুঝতে পারবেন যে নাস্তিকরা ওদের নোংরা চিন্তা কিভাবে হাদিসের সাথে ভুল ভাবে মিলায় অথচ সুন্দর,ভালবাসা দিয়ে মানবতায় ভরা নবী রাসুল (সা) এর সুন্নত ।

মিথ্যা টিকে থাকতে পারে নাহ । ওমুকরা যে ডাহা মিথ্যা কথা বলে , মিথ্যা দাবি করে তারই আজ খণ্ডন করব কারন ধোঁকাবাজ ওমুকরা পৃথিবীর জন্য বোঝা! এদের সুস্থ করতে হবে, ভাল ব্যাবহার দিয়ে,যুক্তি দিয়ে - যদিও এরা আমাদের কোন কথাই মানতে চায় না যতই যুক্তি দিয়ে তাদের মিথ্যা দাবি খণ্ডন করা হোক না কেন !

হযরত নবী মোহাম্মদ (সা) এমন এক মহামানব ছিলেন যার জীবনে মিথ্যার লেশমাত্র নাই । আমরা মোহাম্মদ (সা) কে বিশ্বাস করি কারন তিনি চরম সত্যবাদী মানুষ । ৪০ বছর যার জীবনে মিথ্যার একটি মাত্র প্রমান নাই তাঁকে বিশ্বাস করবো নাকি নোংরা চিন্তার অধিকারী অমানবিক নাস্তিক ধর্মের কথা মানবো!

* হযরত আব্বাস (রা) থেকে বর্ণিত , "তোমার নিকট আত্মীয়দের সতর্ক করো" এ আয়াত নাযিলের পর আল্লাহর রাসুল (সা) সাফা পাহাড়ে উঠে হুঁশিয়ার, হুঁশিয়ার বলে সবাইকে জোড় করেন । এরপরে প্রশ্ন করলেন, আমি যদি তোমাদের এই সংবাদ দেই যে এই পাহাড়ের পিছন থেকে শত্রুরা আপনাদের উপর আক্রমণ করতে যাচ্ছে , তাহলে কি আপনারা আমার কথা বিশ্বাস করবেন ? তারা বলল আমরা ত কখনো তোমাকে মিথ্যা বলতে শুনিনি ।(১)

কি বুঝলেন ভাই ! ভাবেন কেমন পর্যায়ের সত্যবাদী হলে উপস্থিত সমস্ত মানুষ এমন কথা বলতে পারে । মুক্তমনারা কি এমন কোন প্রমান নিজেদের ক্ষেত্রে দেখাতে পারবে ? পারবে না । কারন দেখাতে গেলেই থলের ভেজা ডায়নোসর বের হয়ে যাবে !

*  নবুওয়াত লাভের আগে কুরাইশরা যখন কাবার মেরামত কাজ শেষ করে তখন " হাজরে আসওয়াদ " কে স্থাপনের সম্মান লাভ কে করবে তা নিয়ে গোত্র গোত্রে যুদ্ধাবস্থা তৈরি হল । সিদ্ধান্ত হল, যে বেক্তি এই রাস্তা দিয়ে প্রথম আসবে তাঁর ফয়সালাই সবাই মেনে নিবে । যুবক মোহাম্মদ (সা) কে প্রবেশ করতে দেখে তারা বলে উঠল " বিশ্বস্ত বেক্তি এসেছে" ।(২)

হযরত মোহাম্মদ (সা) কে দেখেই বলে দিল বিশ্বস্ত বেক্তি এসেছে । তৎকালীন যুগের বর্বরতার কথা সবাই জানে  । কখনো কি মনে এ প্রশ্ন এসেছে কেনই একমাত্র মোহাম্মদ (সা) ভিন্ন ছিল , কেন তাঁকেই সত্যবাদী বলতো কেন কেন ?
শত্রু আবু সুফিয়ান (পরে মুসলিম হয়েছিল ) । বাইজান্তাইন সম্রাটের কাছে মোহাম্মদ (সা) এর নামে অপবাদ দিতে পারে নি সব কাফিরের সামনেও তাঁকে মিথ্যাবাদী বলতে পারে নি ।

* আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা) থেকে বর্ণিত , আবু সুফিয়ান ইবনু হারব (রা) তাকে বলেছেন, বাইজান্তাইন সম্রাট হিরাক্লিয়াস একদা তাঁর নিকট লোক প্রেরন করলেন । তিনি তখন বেবসা উপলক্ষে কুরাইশদের কাফেলায় সিরিয়ায় ছিলেন । আবু সুফিয়ান তার সাথীদের সহ হিরাক্লিয়াসের নিকট আসলে এরপরে তাকে সম্রাট নিবিজি (সা) সম্পর্কে ১০ টি প্রশ্ন করেন । আবু সুফিয়ান (রা) ইসলাম গ্রহনের পর স্বীকার করেছেন । আমি যদি এ ভয় না করতাম যে , আমার সাথে থাকা মক্কার লোকেরা আমাকে মিথ্যাবাদী বলবে তাহলে অবশ্যই আমি "ঐ দিন মোহাম্মদের নামে মিথ্যা কথা বলে আসতাম" । সম্রাটের একটি প্রশ্ন ছিল তাঁর দাবীর পূর্বে তোমরা কি কখনো তাঁকে  মিথ্যার অভিযোগে অভিযুক্ত করেছ ? আমি বললাম না ।(৩)

যার মানার সে সত্যকে এমনেই এখনি মেনে নিবে আর যার মনে সত্য গ্রহনের ইচ্ছা নাই তাদের জন্য আমার শোঁক প্রকাশ । রাজত্ব , সম্মান , নারী , সম্পদ এগুলো লাভ করার জন্য কি মোহাম্মদ (সা) মিথ্যা কথা বলেছেন ?
হে আমার নাস্তিক ভাই কথিত মুক্তচিন্তার বোনেরা এবং সমাজের কথিত বিজ্ঞানমনস্তরা আপনারা কি জানেন হজরত মোহাম্মদ (সা) কে তৎকালীন ফেমাস কাফেররা তাঁকে সম্পদের বড় অফার , বিশাল নেতৃত্বের অফার এবং সুন্দরী গরজিয়াস নারীর অফার দিয়েছিল কিন্তু বাস্তব সত্য হল একটি অফারও মোহাম্মদ (সা) গ্রহন করেন নি । তিনি মিথ্যা কথা গুলা না বললে আগেই পেতেন ঐ সব গরজিয়াস অফার । আজকে ঘুমানোর আগে মুক্ত চিন্তায় গভির ভাবে ভাবুন এই বিষয়ে !

* মুশরিক উতবা ইবনে রাবিয়া নিবিজি (সা) কে অফার দেয় । ওহে পুরুষ তোমার যদি আর্থিক চাহিদা থাকে তাহলে আমাদের সবার সম্পদ থেকে অংশ বিশেষ জমা করে তোমাকে দেব , তাতে তুমি হয়ে যাবে "কুরাইশদের সবচেয়ে বিত্তশালী পুরুষ" আর যদি বিয়ের প্রয়োজন বোধ করো "আমরা তোমার কাছে ১০ জনকে বিয়ে দিব" ।(৪)
খেয়াল করেছেন ! শুদু আল্লাহর কথা বলতে যেয়ে কত কষ্ট করেছেন । কাফেররা তাদের দুষ্ট ছেলেদেরকে এবং দাস শ্রেণীর লোকদেরকে নবীজির পেছনে লেলিয়ে দিত । নবীজিকে গালাগালি করতো এবং নবিজির (সা) এর দেহে পাথর নিক্ষেপ করতো । নবিজির পবিত্র দেহে রক্তের ধারা বইতে থাকতো তাঁর পবিত্র রক্ত জুতার সাথে লেগে আটকে যেত । রক্তের প্রচুরতার ফলে মাটিতে বসে পড়তেন । দুষ্টু ছেলেদের দল পুনরায় তাঁকে দুই বাহু তুলে দিত যখন তিনি চলতে শুরু করতেন তখন পুনরায় পাথর নিক্ষেপ শুরু করতো এবং অট্টহাসিতে ফেটে পড়তো ।

বুখারি ও মুসলিমে উল্লেখ আছে , ওহুদের যুদ্ধের পর হযরত আম্মাজান আয়েশা (রা) নবীজি সা কে প্রশ্ন করে - ইয়া রাসুলুল্লাহ ওহুদের চেয়েও কি অধিক কষ্টকর কোন ঘটনা কি আপনার জীবনের উপর দিয়ে গিয়েছিল ? উত্তরে নবী সা বলেন, আয়েশা তায়েফবাসীদের অত্যাচার ছিল আমার জীবনের কঠিনতম বিপদ । আমি অত্যাচারিত হয়ে যখন তায়েফ হতে ফেরত আসছিলাম এবং মক্কা থেকে একদিনের রাস্তার মাথায় "করনুছ ছালিম" নামক স্থানে (ইয়েমেন ও নজদ বাসী হাজীদের মিকাত) পৌঁছলাম , তখন দেখি আমার মাথার ওপর মেঘের ছায়া এবং হযরত জিব্রায়িল (আ) ঐ মেঘমালা থেকে দায়িত্তে নিয়োজিত ফেরেশতা ইসমাইল আপনার নির্দেশ পালনের জন্য পাঠিইয়েছেন ।
নবীজি (সা) বলেন পর্বতের দায়িত্তে নিয়োজিত উক্ত ফেরেশতা আমাকে সালাম দিয়ে আরজ করলো ইয়া রাসুলুল্লাহ , আপনি নির্দেশ করলে এখনি আমি তায়েফের "আখশাবাইন" নামক দুটি পর্বতকে তাদের উপর নিক্ষেপ করে তাদের ধ্বংস করে দিবো । এটাই আল্লাহর পক্ষ থেকে আমার প্রতি নির্দেশ ।

শত্রুকে ধ্বংস করার এমন সুবর্ণ সুযোগ পেয়েও নবী করীম (সা) সে দিন বলেছিলেন, না । বরং আমার একান্ত ইচ্ছা , তাদের বংশধরেরা অন্তত ইসলাম গ্রহন করে আল্লাহর ইবাদত করুক এবং শিরিক থেকে বেঁচে থাকুক ।
আপনাদের মাথায় ত বিবেক আছে তাইনা! ভাবেন ত এত কষ্ট কেন করলেন । মিথ্যা না বললেই ত এত কষ্ট পেতে হত না! যুদ্ধ করতে হত না , সিরিয়াতে গাছের পাতা খেয়ে দুই বছর কাটাতে হত না । কত বড় বড় অফার তিনি ফেলে দিয়েছেন কেন কেন কেন ?

একচ্ছত্র শাসন ক্ষমতার অধিকারী হবার পরেও দুই বেলা পেট ভরে যবের রুটি খেতে পারতেন না । একটি পাটি , কলসি ছিল যার "মহলের" আসবাব । ঘুম থেকে উঠলে গায়ে লেগে থাকতো পাটির দাগ  - এই বেক্তির মিথ্যা বলার উদ্দেশ্য আমার বুঝে আসে না । হিসাব মেলে না , মিলবেও না যদি হিসাব করতে জানেন । হাদিস গুলা পড়ুন আর ভাবুন ।

* মুগিরা ইবনে শুবা থেকে বর্ণিত । তিনি বলেন রাসুল (সা) এত দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করতেন যে তাঁর পা মুবারক ফুলে যেত । তাঁকে বলা হল, আপনি এত কষ্ট করছেন অথচ আল্লাহ আপনার পূর্বাপর সকল গুনাহ ক্ষমা করে দিয়েছে । তিনি বললেন আমি কি শোঁকরিয়া আদায় কারী বান্দা হব না ?(৫)

* হযরত আয়েশা (রা) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসুল (সা) এর ওফাত পর্যন্ত মোহাম্মদ (সা) এর পরিবারবর্গ একধারে দুই দিন পেট ভরে যবের রুটি আহার করেন নি ।(৬)

* আব্দুলাহ ইবনে মাসউদ (রা) থেকে বর্ণিত , রাসুল (সা) একদা চাটাই এর ওপর শুলেন । অতপর তিনি ঐ অবস্থায় উঠলেন যে তাঁর পার্শ্বদেশে তার দাগ পরে গিয়েছিল । আমরা বললাম হে আল্লাহর রাসুল যদি (আপনার অনুমতি হয়,তাহলে) আমরা আপনার জন্য নরম গদি বানিয়ে দেই । তিনি সা বললেন দুনিয়ার সাথে আমার কি সম্পর্ক ? আমি তো (এ) জগতে ঐ সওয়ারের মত যে  (ক্লান্ত হয়ে একটু বিশ্রামের জন্য) গাছের ছায়ায় থামল। পুনরায় সে চলতে আরম্ব করলো এবং ঐ গাছটি ছেড়ে দিল । (৭)

ভাবতে ভাবতে আপনি মরে গেলে তো হবে না । সত্যকে গ্রহন করার মানুসিকতা থাকতে হবে  । নিরপেক্ষ হতে হবে এখন আপনি তাল গাছ পকেটে নিয়ে থাকলে তো আর হবে না !

হযরত মোহাম্মদ (সা) সম্পর্কে নাস্তিক ধর্ম বেবসায়ি ও পচ্ছিমা দেশ গুলা যে মিথ্যাচার , ভুল খবর উপস্থাপনা করে মানুষকে ধোঁকা দিচ্ছে এবং তারা তাদের ভুল বুঝতে পেরেছে এমন কিছু জ্ঞানীদের কউল আজকে বোলব মনোযোগ দিয়ে পড়ুন যদিও অহংকারী নাস্তিকরা কখনোই সত্য স্বীকার করতে চায় না । পশ্চাতের কত মানুষ আছে যারা নিজেরাই স্বীকার করেছে মোহাম্মদ (সা) সম্পর্কে তারা যা ভাবে তা বিদ্বেষ সুলভ । নাস্তিকরা যদি সারা জীবন নাস্তিকদের ব্লগ থেকেই ইসলাম শিখে তবে সত্য ইসলাম তারা জীবনেও উপলব্ধি করতে পারবে না  ।

* Thomas Carlyle বলেনঃ এ লোকটি (মোহাম্মদ (সা) ঘিরে যে মিথ্যাগুলো (পচ্চিমা অপবাদ) পুঞ্জীভূত হয়ে আছে - যার ভাল অর্থ হতে পারে ধর্মান্ধতা । তা আমাদের (পচ্চিমাদের) জন্যই লজ্জাজনক ।(৮) 

* Dr. William Draper বলেনঃ জাস্তিনিয়ানের মৃত্যুর পর চার বছর পর ৫৬৯ খৃষ্টাব্দে আরবে একজন মানুষ জন্মগ্রহন করেন যিনি সকলের চাইতে মানবজাতির ওপর সবচেয়ে বেশি প্রভাব বিস্তার করেছিল....... অনেক সম্রাজ্জের ধর্মীও প্রধান হওয়া , মানব জাতির এক তৃতীয়াংশের প্রাত্যহিক জিবনে পথ নির্দেশক হিসেবে কাজ করা - এসব কিছুই সৃষ্টিকর্তার দূত হিসেবে তাঁর উপাধি যথার্থতা প্রমান
 করে । (৯)

* Alphonse De Lamartaine বলেনঃ  উদ্দেশের মহত্ত্ব , লক্ষ্য অর্জনের উপায় সমূহের ক্ষুদ্রতা এবং আশ্চর্যজনক ফলাফল যদি অসাধারন মানুষের ৩ টি বিশিষ্ট হয় তবে কে মোহাম্মদের সাথে ইতিহাসের অন্য কোন মহামানবের তুলনা করতে সাহস করবে ?

বেশির ভাগ বিখ্যাত বেক্তি শুদুমাত্র সেনাবাহিনী,আইন এবং সাম্রাজ্য তৈরি করেছেন  । তারা যদি কোন কিছু প্রতিষ্ঠা করে থাকেন সেটা কিছুতেই জাগতিক ক্ষমতার চাইতে বেশি কিছু নয় যা প্রায়ই তাদের চোখের সামনে ছিন্ন বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে । এই মানুষটি শুদুমাত্র সেনাবাহিনী , আইন , সাম্রাজ্য , শাসক , লোকবলেই পরিচালনা করেননি সেই সাথে  তৎকালীন বিশ্বের লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবনকে আন্দোলিত করেছিল । সব চেয়ে বড় কথা হলঃ তিনি দেব-দেবী (ফেরেশতা বুঝানো হয়েছে) , ধর্ম সমূহ , ধারনাগুল বিশ্বাস সমূহ এবং আত্মাগুলোকে আন্দোলিত করেছিল ।
দার্শনিক , বাগ্মী , বার্তাবাহক ,আইন প্রণেতা নতুন ধারনার উদ্ভাবন কারী / ধারনাকে বাস্তবে রূপদানকারী , বাস্তবে বিশ্বাসের পুনরুদ্ধার কারী .... বিশটি জাগতিক এবং একটি আধ্যাত্মিক সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা - এ হল মোহাম্মদ । মানুষের শ্রেষ্ঠত্তের পরিমাপের যত মাপকাঠি আছে তার ভিত্তিতে বিবেচনা করলে আমরা নিজেকে প্রশ্ন করতে পারি - মোহাম্মদের চেয়ে শ্রেষ্ঠ কেউ আছে কি ? (১০)

* W. Montgomery Watt বলেনঃ নিজ আদর্শ প্রতিষ্ঠার জন্য সকল প্রকার কষ্ট সহ্য করা, তাঁকে যারা বিশ্বাস করতো এবং নেতা হিসেবে অনুসরণ করতো তাঁদের সুউচ্চ চারিত্রিক গুণাবলি এবং মোহাম্মদের  অর্জনের বিশালত্ত - এ সব কিছুই তাঁর সততার সাক্ষ্য দেয় । মনে করুন একজন অসাধু বেক্তি যিনি সমাধানের চেয়ে সমস্যাই বেশি সৃষ্টি করেছেন । অধিকন্তু  আর কোন ঐতিহাসিক বেক্তিত্তই মোহাম্মদ এর মত পশ্চাতে এত বেশি অবমুল্লায়িত হয় নি .... শুদু মাত্র যা বর্ণিত হয়েছে  তার ভিত্তিতে নয় , আমরা যদি মোহাম্মদকে সামান্য পরিমাণও বুঝতে চাই তবে অবশ্যই প্রয়োজনীয়ত সততা ও ন্যায়পরায়নতা সহকারে তাঁকে বিচার করতে হবে । আমরা যদি আমাদের অতীত থেকে উত্তরাধিকার সুত্রে প্রাপ্ত ভুলগুলো সংশোধন করতে চাই  তবে এটি ভুলে গেলে চলবে না যে চূড়ান্ত প্রমান আপাতত দৃষ্টিতে যা সত্য বলে প্রতিয়মান হয় তারচেয়ে অনেক কঠিন শর্ত এবং এ ব্যাপারে প্রমান অর্জন সত্যিই দুঃসাধ্য হবে ।(১১) 

* Gibbon বলেনঃ মোহাম্মদের মহত্তের ধারনা আড়ম্বরপূর্ণ রাজকীয়তার ধারনাকে অস্বীকার করেছে । স্রষ্টার বার্তাবাহক পারিবারিক গ্রহকর্মে নিয়োজিত ছিলেন , তিনি আগুন জ্বালাতেন, ঘর ঝাড়ু দিতেন , ভেড়ার দুধ দোয়াতেন এবং নিজে হাতে নিজের জুতা ও পোশাক মেরামত করতেন । পাপের প্রায়শ্চিত্তের ধারনা ও বৈরাগ্যবাদকে তিনি অস্বীকার করেছেন , তাঁকে কখনো অযথা দম্ভ প্রকাশ করতে দেখা যায়নি , একজন আরবের সাধারণ খাদ্যই ছিল তাঁর আহার্য । (১২) 

* Lane Poole বলেনঃ তিনি (মোহাম্মদ) যাদেরকে আশ্রয় দিতেন তাদের জন্য ছিলেন সবচেয়ে বিশ্বস্ত রক্ষাকারী , কথাবার্তায় ছিলেন অত্যন্ত মিষ্টভাষী ও নম্র , তাঁকে যারা দেখত তারা শ্রদ্ধায় পূর্ণ হত , যারাই তাঁর কাছে এসেছিল তাঁকে ভালবেসেছিল , যারা তাঁর সম্বন্ধে বর্ণনা দিত তারা বলত তাঁর মত মানুষ আগে বা পরে আমি কখনো দেখেনি ।(১৩)

(এরকম এমন অনেক বড়দের উক্তি দেওয়া যাবে যারা সত্য প্রকাশ করে দিয়েছিলেন যে কিভাবে ইসলাম বিদ্বেষীরা ইসলাম এর ব্যাপারে মানুষদের ভুল খবর দিয়ে ইসলাম থেকে দূরে রাখার চেষ্টা করত । নাস্তিকরা না মানলে আমাদের কিছুই করার নাই ।  )

রেফারেন্স সমূহঃ
 
(১) সহিহ বুখারি , সহিহ মুসলিম

(২) মুস্তাদরাকে হাকিম , মুসলিম শর্তে এ হাদিস সহিহ , মাজমাউজ জাওয়ায়েদ

(৩) সহিহ বুখারি

(৪) ইবনে আবি শাইবা, হাকিম , সিরাতুন নবী

(৫) মুসলিম ৭৩০২ , নাসায়ি ১৬৪৪

(৬) ইবনে মাজাহ, শারহুস সুন্নাহ , শামায়েলে তিরমিজি

(৭)  তিরিমিজি , ইবনে মাজাহ

(৮) Heroes And Hero Worship and The Heroic in History, 1840 .

(৯)  History Of Intellectual Development Of Europe .

(১০) History De La turquie, Paris , 1854

(১১) Muhammad At Mecca, Oxford, 1953

(১২) The Decline And Fall Of The Roman Empire 1823

(১৩) Speeches And Table Talk Of The Prophet Muhammad .




এমডি আলী

যিনি একজন লেখক, বিতার্কিক ও গবেষক। বিভিন্ন ধর্ম ও মতবাদ বিষয় পড়াশোনা করেন। ইসলামের সত্যতা মানুষের কাছে ছড়িয়ে দিতে চান। “সত্যের অনুভূতি” উনার লেখা প্রথম বই। “ফ্যান্টাস্টিক হামজা” দ্বিতীয় বই। জবাব দেবার পাশাপাশি নাস্তিক মুক্তমনাদের যৌক্তিক সমালোচনা করে থাকেন।

Previous Post Next Post