মুক্তমনা হওয়া সম্ভব!!!

মুক্তমনা হওয়া সম্ভব!!!

লিখেছেনঃ এম ডি আলী

সোজা শাব্দিক অর্থে সর্ব বিষয়ে , সর্ব অবস্থায় মুক্তমনে , খোলামনে চিন্তা ভাবনা ও বিশ্লেষণ করা হল মুক্তমনা অথবা মুক্তমন আর অনেক নাস্তিক বলে, মুক্তমনা মানে ধর্মীও গণ্ডির বাইরে বের হওয়া । আরও বলে মুক্তভাবে চিন্তা করা আমার অধিকার আমার প্রাপ্য ।আচ্ছা নাস্তিকদের বলি, শুদু ধর্মের আইনের বাইরে থাকা  যদি মুক্তমনা হয় তবে কেন রাষ্ট্রের আইন তথা অ্যামেরিকার আইন, চিনের আইন, জার্মানির আইনের গণ্ডির বাইরে থাকা মুক্তমনা হবে না । ও এখানে কবি নীরব!

নাস্তিকরা শুদু ইসলাম এর মধ্যেই কথিত মুক্তমনা বিষ প্রয়োগ করার চেষ্টা করে । কখনো কি ভেবেছেন এ "মুক্তমনা" অথবা খোলা দিল চিন্তার দাবি আমরা যদি অন্য স্থানে প্রয়োগ করি তবে কি দশা হবে  ।
মুক্তমনা তথা নাস্তিক্যবাদের নিজস্ব আইন নাই, রুলস নাই তারা আসছে আবার ইসলামের আইন নিয়ে কথা বলতে লজ্জা করে না আপনাদের । এ নাস্তিকরা ফ্রি সেক্স এ বিশ্বাসী । কে বাবা , কে মা, কে ভাই , কে বোন কোন পরোয়া এরা করে না । লজ্জা হওয়া উচিৎ যারা সত্য মনের নাস্তিক আপনি কি পারবেন এক নাস্তিকের সন্তান তার নিজের মায়ের সাথেই সেক্স করবে ? ছিঃ !

ইসলাম বিষয়ে না জেনে যখন বাচ্চা সুলভ আচরণ করে প্রশ্ন করে তখন যদি বলা হয় কেন প্রশ্ন করলে বেচারা বলেঃ আমি বিজ্ঞানমনস্ক , আমি মুক্তমনা মানুষ তাই মুক্তভাবে প্রশ্ন করা আমার অধিকার । সত্যকে খুজে বের করার জন্য বেশি প্রশ্ন করে CID-রা তাদের উদ্দেশ্য থাকে সত্যকে খুজা জানা আর মুক্তমনা প্রশ্ন করে আটকানোর জন্য , হারানোর জন্য - সত্যকে মিথ্যা বানিয়ে ফেলা মুক্তমনাদের ধর্ম ।

খেয়াল করেছেন কখনো কথিত মুক্তমনা ওরফে নাস্তিক ওরফে ইসলাম বিদ্বেষীরা যে টাইপের প্রশ্ন করে ঠিক একই স্টাইলে যদি আমাদের দৈনন্দিন কাজে প্রয়োগ করা হয় তাইলে কি অবস্থা হবে ! এখন আসেন এই "মুক্তমনা" দিয়ে আজকে আমাদের সমাজ , আমাদের আদালত, আমাদের খেলায় , আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান , আমাদের আইন ,আমাদের রাষ্ট্রে এমনকি আমাদের ডিফেন্স বাহিনীর অর্থাৎ সব ক্ষেত্রেই এই মুক্তমনা বা মুক্ত স্টাইলে প্রশ্ন করি দেখি কি হয়! মজার কথা হল এই প্রশ্ন যদি কোন নাস্তিক উত্থাপন করে তাইলে নাস্তিকরাই ঐ নাস্তিকদের জুতা দিয়ে গালে উপহার দিতে ভুল করবে না !

আদালত বা কোর্টঃ

 রাষ্ট্রের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ অংশ হল এই আদালত বা কোর্ট । এটি যার ওপর ভিত্তি করে চলে তা হল সাক্ষ্য নির্ভর মানে সাক্ষের ওপর ভিত্তি করেই রায় দিয়ে হয় আবার এ এক্ষেত্রে আদালতের সময় সহ অনেক নিয়ম কানুন মেনে চলতে হয় । এখন বর্তমান সময়ের মুক্তমনা ওরফে নাস্তিক যদি প্রশ্ন করে আমি কেন আদালতের আইন মানতে যাব যেখানে আমি ইসলামের আইনই মানি না । কেন আমি সাক্ষীর কথা বিশ্বাস করবো যেখানে আমি বিশ্বের শ্রেষ্ঠ মানুষ হজরত মোহাম্মদ (সা) কেই মানি না । কেন এত সকালে আমাকে আদালতে যেতে হবে যেখানে ফজরের নামাজি আমি পড়ি না ??? । আদালতের বিচারক আগে ঐ কথিত বিজ্ঞানমনস্ত মুক্তমনা নাস্তিককে বের করে দিবে আর বলবে তোমার আদালতের প্রয়োজন  মানুষিক ডাক্তার ।

হাস্যকর হলেও সত্য ওরা ভাল করেই জানে ঐ মুক্তমনার আজিব বিষ ওরা আদালতের ক্ষেত্রে প্রয়োগ করবে না কারন জার্মানিতে , অ্যামেরিকাতে ইত্যাদি দেশে যেখানে তারা নাস্তিকিও বেবসা করে সেখানে এই সব এলিয়েন মার্কা প্রশ্ন করলে দানের বাক্স ভিক্ষার বস্তা দুইটাই হারাবে !

খেলাধুলাঃ

প্রচুর বিধি নিষেধ ,আইন কানুন থাকবেই তো সেটা যে খেলাই হকনা কেন । মাঠের মধ্যে আইন নিয়ন্ত্রন করে রেফারী । কোন মুক্তচিন্তার মানুষ যদি প্রশ্ন করে এই যুগে কত নিয়মরে ভাই! এত নিয়ম কানুন মেনে কি খেলাধুলা করা যায় । ক্রিকেট খেলা কেন এত নিয়ম , কেন এই বিজ্ঞানের যুগে ১১ জন মানুষ একটি আম্মায়ারের নিয়ন্ত্রণে চলবে তার কথা মানবে , রেফারীর বাঁশির ফু তে কেন খেলা শুরু হবে , কেন বল উড়ে গেলে ৬ রান হবে ,কেন নিচ দিয়ে গেলে ৪ রান এত নিয়ম উফ! মানি না , আমি হইলাম খেলাস্তিক তাই খেলাধুলার নিয়ম এ বিশ্বাসী না । কি বলবেন এখন আপনারা ???

শিক্ষা কেন্দ্রঃ

নাস্তিকরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করেছে কিনা জানি না তবে আপনারা কেন "মুক্ত"মনা" এই মতবাদ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এ প্রয়োগ করেন না কেননা এত নিয়ম কানুন এর সাথে শিক্ষা দেওয়া হয় । সকালে ঘুম থেকে উঠে সকালে স্কুলে অথবা কলেজে যেতে হয় , শিক্ষকের কথা মানতে হয় কিন্তু কেন মানার দরকার কি নিজের মত চললেই তো হয় !!! পরিক্ষার হলে অন্য এর খাতা দেখে লিখা আমার অধিকার কারন মুক্ত চিন্তা বলে কথা ! । কেন শিক্ষক আমাকে বাধা দিবে , কেন আমাকে স্কুলের , কলেজের নিয়ম কানুন মানতে হবে  আমি মুক্তমনা , বিজ্ঞানমনস্ক মানুষ !

আমাদের দেশের বোর্ড পরিক্ষার কেন্দ্রের প্রবেশ পত্রের পিছনে উপদেশ ও বিধি নিষেধ দেওয়া থাকে । মুক্তমনারা কেন ঐ খানে প্রশ্ন করে না এই যুগে কেন আমরা ঐ বিধি নিষেধ মানবো আমরা আমাদের মত চলাফেরা করবো । ও....ও  মুক্তমনা বিষ শুদু ইসলামে প্রয়োগ করবে আর উল্টা আওলা জাওলা প্রশ্ন করবে যখন বলা হয় কেন এই প্রশ্ন করেছো তখন আবার বলেন আমরা মুক্তমনা প্রশ্ন করা আমাদের অধিকার স্বাধীনতা একই মাপের প্রশ্ন অন্য স্থানে করেন না কেন জনাব ?

আদালতঃ

নাস্তিকরা আদালতের ক্ষেত্রে মুক্তমনা প্রয়োগ করে না , রাষ্ট্রের  আইন , শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আইন , খেলাধুলার আইন , ডিফেন্সের আইন সহ যত আইন আছে সেখানে এই কথিত মুক্তমনা বিষ প্রয়োগ করে না কারন আশা করি এখন আপনারা সবাই বুঝেছেন । আর এই বিষ ইসলামে ঢুকাবে তাতো হয় না ভাই ।

ইসলামী জীবন বেবস্থা । খণ্ড ১ , বিশ্বকল্যাণ পাবলিকেশন প্রকাশিত । এই বইতে জাস্টিস আল্লামা মুফতি তাকি উসমানী (রহ) নিজের একটি ঘটনা উল্লেখ করেছেন যেখানে তিনি এক মুক্তমনা ভাইয়ের সাথে কথোপকথন করেছেন । সেটি এখন আপনাদের বোলব ভাল করে মনোযোগ দিয়ে পড়ুন ।

একটি বিখ্যাত আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান- "এমনেসটি ইন্টারন্যাশনাল" । এর প্রধান কার্যালয় প্যারিসে । ওইখানের এক রিসার্চ স্কলার জরিপের জন্য পাকিস্থানে এসেছিল । তাকি উসমানী হুজুরকে বলে আমাদের মিশন হল চিন্তার স্বাধীনতার জন্য কাজ করা । চিন্তার স্বাধীনতার জন্য বহু মানুষ কারাগারে বন্দিত্তের জীবন যাপন করছে । তাদের মুক্তম করতে হবে । সার্বজনীন বিষয় হল এ বিষয়ে ভিন্নমত থাকা উচিৎ না । মূলত এ বিষয়ে জরিপ করার জন্য আমাকে আসতে বলা হয়েছে । শুনেছি আপনারাও বিজ্ঞজনের সাথে সম্পর্ক আছে তাই কিছু প্রশ্ন ছিল ।
হুজুর বললঃ আপনি এই জরিপ কি উদ্দেশ্যে করতে চাচ্ছেন ?

মুক্তমনাঃ আমি জানতে চাচ্ছি পাকিস্থানের বিভিন্ন অঙ্গনে এ বিষয়ে কি মতামত পাওয়া যায় ।
হুজুর বললঃ কবে এসেছেন পাকিস্থানে ?
মুক্তমনাঃ আজই ভোরে এসে পৌঁছেছি ।
হুজুরঃ ফিরবেন কবে ?

মুক্তমনাঃ কাল সকালে ইসলামাবাদ যাব । (সাক্ষাৎ ছিল রাতে) ।
হুজুরঃ ইসলামাবাদ কত দিন থাকবেন ?
মুক্তমনাঃ একদিন ।

হুজুরঃ আপনি পাকিস্থানে বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষের মতামত জরিপ করতে যাচ্ছেন । পরে রিপোর্ট তৈরি করে উপস্থাপনা করবেন । আগে বলুন , আপনি কি মনে করেন এই দুই,তিনটি শহরে ঘুরার পর এ কাজ আপনার জন্য যথেষ্ট হবে ?

মুক্তমনাঃ ৩ দিনে সবার মতামত জানা সম্ভব না এটা সত্য কিন্তু আমি বিভিন্ন চিন্তাশীল প্রতিষ্ঠান ও মহলের সাথে সাক্ষাৎ করেছি । কিছু লোকের সাথে মতবিনিময় হয়েছে । আশা করি আপনিও আমাকে কিছু দিক নির্দেশনা দিবেন ।
হুজুরঃ করাচিতে আজ কতজন লোকের সাথে দেখা করেছেন ?

মুক্তমনাঃ তিনজনের সাথে আপনি হলেন ৪র্থজন ।আমার হাতে কম সময় ছিল তাই ।
হুজুরঃ মাত্র ৪ জন! এরকম মানুষের মতামত সম্পর্কে অবহিত হয়ে রিপোর্ট প্রস্তুত করবেন যে করাচির বাসীদের মতামত এই, মাফ করুন আপনার এই জরিপের ব্যাপারে আমার সন্দেহ আছে । স্বচ্ছ তদন্ত গবেষণা ও জরিপের কাজ এভাবে হয় না । তাই আপনার কোন প্রশ্নের উত্তর দিতে আমি অপারগ ।

(পিড়াপিড়ি শুরু করলো যে) আপনার অভিযোগ যদিও সঠিক তবুও দয়া করে আমার কিছু প্রশ্নের জবাব দিন ।
হুজুরঃ মাফ করবেন । এই অসচ্ছ ও অসম্পূর্ণ জরিপের কাজে সাহায্য করা আমার পক্ষে সম্ভব না তবে আপনি অনুমতি দিলে আমি আপনার প্রতিষ্ঠানের মৌলিক চিন্তাধারা বিষয়ে কিছু জিজ্ঞেস করতে চাই ।
মুক্তমনাঃ আসলে আমি আপনাকে প্রশ্ন করতে এসেছিলাম । আপনি উত্তর দিতে সম্মত হলেন না ঠিক আছে আপনিই প্রশ্ন করুন আমি উত্তর দিব ।

হুজুরঃ আপনি বলেছেন , আপনাকে যে প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে প্রেরন করা হয়েছে , সেটি চিন্তার স্বাধীনতার পতাকাবাহী । "চিন্তার স্বাধীনতা"- বেশ চমৎকার একটি বিষয় । আচ্ছা আপনার দৃষ্টিতে এই স্বাধীনতা কি একেবারে শর্তহীন এখানে কোন বাধ্যবাধকতা থাকা দরকার ?

মুক্তমনাঃ আমি আপনার কথাটার অর্থ বুঝলাম না ।

হুজুরঃ আমার জানার বিষয় হল, চিন্তার স্বাধীনতার এই ধারনা কি এতটা মুক্ত যে , যার মনে যা আসবে সেই তা অন্নের সামনে প্রকাশ করবে । তার প্রচার করবে এবং মানুষকে তার প্রতি আহ্বান জানাবে ? যেমন, আমার চিন্তা বলছে , পুঁজিপতিরা প্রচুর সম্পদ জমা করে নিয়েছে তাই গরিবদের এই স্বাধীনতা থাকা দরকার যে , তারা দূষ্যতার মাধ্যমে পুঁজিপতিদের সম্পদ নেবে । আমি আমার এই চিন্তার প্রচারও শুরু করে দিব যাতে গরিবরা দূষ্যতা শুরু করে দেয় । আমি আরও বোলব এটা আমার স্বাধীনতা তাই কেউ যেন তাদের বাধা না দেয় , গ্রেফতার না করে কারন পুঁজিপতিরা গরিবদের রক্ত চুষে সম্পদের পাহাড় গড়েছে ।আপনি বলুন, এই চিন্তার স্বাধীনতার সমর্থক ও সহযোগী হবেন কিনা ?
মুক্তমনাঃ আমি এমন চিন্তাকে সমর্থন ও সহযোগীতা দেব না ।

হুজুরঃ আমি এ কথাতাই স্পস্থ করতে চাচ্ছি যে  চিন্তার স্বাধীনতা যখন শর্তহীন নয় তখন আপনাকে মেনে বিতে হবে যে এ ক্ষেত্রে শর্ত থাকা উচিৎ ?

মুক্তমনাঃ হ্যাঁ , কিছু শর্ত তো থাকা দরকার । যেমন আমার মতে চিন্তার স্বাধীনতার জন্য এই শর্ত থাকা আবশ্যক যে তার ফলাফল যেন অন্নের উপর অবিচারের আকৃতিতে প্রকাশ না পায় ।

হুজুরঃ বাধ্যবাধকতা তো আপনি আপনার চিন্তা অনুযায়ী আরোপ করেছেন । যদি কারো অভিমত এই হয় যে , অনেক মহৎ লক্ষ্য প্রভাব খাটানো ছাড়া অর্জিত হয় না এবং সেসব লক্ষ্য অর্জনে শক্তি প্রয়োগের ক্ষয়ক্ষতি মেনে নেওয়া উচিৎ । তবে তার এই চিন্তার স্বাধীনতা সমর্থন যোগ্য হবে কিনা ? তাছাড়া আপনি যেমন আপনার চিন্তা অনুপাতে চিন্তার স্বাধীনতার ওপর একটি বাধকতা আরোপ করে দিয়েছেন তেমনি অন্য কেউ যদি তার ভাবনা অনুপাতে অন্য কোন শর্ত এর কথা বলে সেই অধিকারও তো তার থাকা উচিৎ। অন্যথায় একটি কারন থাকা দরকার যার ভিত্তিতে আপনার চিন্তা গ্রাহ্য হবে , অন্নেরটা হবে প্রত্যাখ্যাত ।

কাজেই মূল প্রশ্ন হল, সেই বাধকতা কি হওয়া উচিৎ ? এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে কে ? আপনার কাছে সেই মাপকাঠি কি যার ওপর ভিত্তি করে আপনি সিদ্ধান্ত নেবেন যে , চিন্তার স্বাধীনতার অমুক অমুক বাধ্যবাধকতা আরোপ করা যেতে পারে ? আমাকে সঠিক একটি মাপকাঠি বলে দিন  যাতে সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন অমুক ধরনের বাধকতা বৈধ আর অমুক ধরনেরটা অবৈধ ?

মুক্তমনাঃ জনাব ! এই দিকটি নিয়ে আমি কখনো ভাবিনি ।

হুজুরঃ আপনি এত বড় একটি আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের সাথে যুক্ত এবং সে কাজেরই জরিপের জন্য মাঠে নেমেছেন অথচ চিন্তার স্বাধীনতার সীমারেখা কি হওয়া উচিৎ তার মেকাপ কি হওয়া দরকার - এসব আপনার জানা নাই!  এমতাবস্থায় আপনি কিভাবে স্বচ্ছতার সাথে দায়িত্ব পালন করবেন ? আমার তো বুঝে আসে না । দয়া করে পরে হলেও আমার প্রশ্নটির উত্তর জানবেন ।

মুক্তমনাঃ আমি আপনার প্রশ্ন ও মতামত প্রতিষ্ঠানকে অবহিত করবো এবং এ বিষয়ের উপর যেসব লিটারেচার আছে , সেগুলাও আপনাকে পৌছাবোঁ ।

এ কথা বলে সে আমাকে (মুফতি তাকি উসমানী) ধন্যবাদ জানিয়ে দ্রুত বিদায় নিয়ে গেল । আজ পর্যন্ত আমি তার প্রতিশ্রুতি মোতাবেক লিটারেচার ও উত্তরের অপেক্ষায় আছি । আমার পূর্ণ বিশ্বাস কিয়ামত পর্যন্ত সে না আমাকে আমার প্রশ্নের উত্তর জানাতে পারবে , না এমন কোন মাপকাঠির কথা জানাতে সক্ষম হবে , সেটা সার্বজনীন স্বীকৃতি লাভের যোগ্য হবে । কারন আপনি একটি মাপ কাঠি বলবেন তো আরেকজন আরেকটি মাপকাথির কথা বলবে । জগতে এমন কোন বেক্তি নাই যে একটি মাপকাঠি ঠিক করে দেবে যা সমগ্র জগতের জন্য পরিপূর্ণতা গ্রহনযোগ্য হবে ।
মানুষের কাছে ওহিয়ে এলাহি ছাড়া তথা আল্লাহর বানী ছাড়া আর কোন মাপকাঠি নাই - যেটি আমাদের এই অস্বচ্ছ চিন্তা চেতনার উপর বৈধ সীমারেখা ঠিক করে দেওয়ার কোন আবশ্যিক ও স্থায়ী মাপকাঠি সরবরাহ করে দিতে সক্ষম । মহান আল্লাহর দিক নির্দেশনা ছাড়া মানুষের কাছে আর কোন সার্বজনীন মাপকাঠি নাই ।

আপনি দর্শন শাস্রের পাতা উলটিয়ে দেখুন , তাতে একটি বিষয় আলোচিত হয়েছে সে নৈতিকতার সাথে আইনের সম্পর্ক কি ? আইন বিষয়ক এক গবেষণা প্রতিষ্ঠানের বক্তব্য হচ্ছে "নৈতিকতার সাথে আইনের কোন সম্পর্ক নাই" এবং ভাল-মন্দের ধারনা  ভুল" । তাদের কথা হল ন্যায়-অন্যায় ও ভাল মন্দ ইত্যাদি সব্দ গুলো মূলত মানুষের প্রবৃত্তির সৃষ্টি । অন্যথায় এ জাতীয় কোন ধারনার বাস্তবতা নাই । এ জন্য যে সমাজ যখন যে বিষয়টি গ্রহন করে নেয় সেটিই তার জন্য সঠিক । নির্দিষ্ট কোন মাপকাঠি নেই ।

আইনের এই মূলনীতি বিষয়ক একটি টেক্সট বই আছে যার নাম হল "জরিসপ্রড্যান্স (Jurisprudence)" বা আইন বিজ্ঞান । বইটিতে এই আলোচনার শেষে একটি বাক্য লিখা আছেঃ
"মানুষের কাছে এসব বিষয় নির্ধারণের জন্য একটি জিনিস মাপকাঠি হতে পারে তাহল Religion তথা ধর্ম কিন্তু ধর্মের সম্পর্ক যেহেতু মানুষের বিশ্বাসের সঙ্গে আর সেকুলার জীবন বেবস্থায় তার কোন স্থান নেই তাই আমরা একে ভিত্তি হিসেবে গ্রহন করতে পারি না"

Islam is the code of life - তাই আমাদের মাপকাঠি হল ইসলাম ।ভাল করে মনে রাখতে হবে এরি শুদু ধর্ম না । ইসলাম হল এক সংস্কৃতি , জাতীয়তা । আমাদের বেক্তিগত , পারিবারিক , সামাজিক  , রাষ্ট্রীয় , রাজনৈতিক , অর্থনৈতিক , আন্তর্জাতিক , জীবন , খাদ্য , সভাব, আত্মীয় , জাগতিক লেনদেন , চিত্র বিনোদন সহ সমস্থ সীমানা সব ইসলামে আছে । এক কথায় পূর্ণ জীবন বিধান । এরকম সর্ব বিষয়ে বিধান অন্য ধর্মে খুবই বিরল ।





এমডি আলী

যিনি একজন লেখক, বিতার্কিক ও গবেষক। বিভিন্ন ধর্ম ও মতবাদ বিষয় পড়াশোনা করেন। ইসলামের সত্যতা মানুষের কাছে ছড়িয়ে দিতে চান। “সত্যের অনুভূতি” উনার লেখা প্রথম বই। “ফ্যান্টাস্টিক হামজা” দ্বিতীয় বই। জবাব দেবার পাশাপাশি নাস্তিক মুক্তমনাদের যৌক্তিক সমালোচনা করে থাকেন।

Previous Post Next Post