বিজ্ঞানের সাথে নাস্তিক মুক্তমনাদের দ্বন্দ্ব


বিষয়ঃ বিজ্ঞানের সাথে নাস্তিক মুক্তমনাদের দ্বন্দ্ব।

লিখেছেনঃ এমডি আলী।

==============================

ভূমিকাঃ যেহেতু আপনি এই লেখাটিতে এসেই গিয়েছেন তাহলে আসুন যাচাই করে নিন। বুদ্ধি খাটিয়ে, যুক্তি খাটিয়ে আজকে বিশ্লেষণ করুন আসলেই বিজ্ঞানের সাথে নাস্তিকদের দ্বন্দ্ব রয়েছে কিনা। নাকি নাস্তিকরাই প্রকৃত বিজ্ঞানমনস্ক। প্রশ্ন হচ্ছে আপনি কি যাচাই করতে ইচ্ছুক কিনা?

অনেকেই নাস্তিক মুক্তমনাদের কথা যাচাই ছাড়াই বিশ্বাস করে নেয়। তারা নিজেদেরকে বিজ্ঞানমনস্ক দাবি করে থাকে। কিন্তু আসলেই কি দাবিটি সত্য? আপনি কি কখনো নাস্তিকদের বই-পত্র পড়েছেন যাচাইয়ের উদ্দেশ্যে? আপনি কি নাস্তিকদের পোষণ করা বিশ্বাসগুলোকে যৌক্তিক প্রশ্ন করতে পেরেছেন? নাকি আপনি মনে করেন আপনি সবই বুঝে ফেলেছেন,আপনাকে আর কিছুই জানতে হবে না? আপনার অজান্তেই সংশয়ের নামে অযৌক্তিক ইসলামবিরোধীতায় আপনাকে লাগিয়ে দেয়া হয়নি তো? যাতে আপনি নিজের নাস্তিক্যবিশ্বাস নিয়ে চিন্তাই করবার সুযোগটুকু না পান?

আজকের লেখাটিতে এমন অনেক কথাই ফাঁস করে দেয়া হবে যা আপনার হয়তো অজানা। তাই আগেই বলে দিচ্ছি আপনার নাস্তিক্যবিশ্বাস যদি দুর্বল হয়ে থাকে আর সত্য গ্রহণ করার ইচ্ছা যদি না থাকে তাহলে আমার এই লেখাটি থেকে আপনি অবশ্যই দূরে থাকুন। কারণ সত্য সন্ধানীদের জন্য আমি লিখি। যদি নিজেকে প্রস্তুত করতে আপনি সক্ষম হয়ে থাকেন তাহলে পুরো লেখাটি মন দিয়ে বুঝে বুঝে আপনাকে পড়তে হবে। বরং দ্বিমত হও,আস্থা রাখো দ্বিতীয় বিদ্যায়। বরং বিক্ষত হও প্রশ্নের পাথরে,বরং বুদ্ধির নখে শান দেও,প্রতিবাদ করো,অন্তত আর যাই করো,সমস্ত কোথায় অনায়াসে সম্মতি দিও না।

“স্রস্টার অস্তিত্ব নাই” বিশ্বাসটি বিজ্ঞানবিরোধী?

নাস্তিকরা বলে থাকে বিজ্ঞান নাকি এখনো স্রস্টার অস্তিত্বকে প্রমাণ করতে পারেনি। প্রশ্ন হচ্ছে "স্রস্টার অস্তিত্ব নাই" দাবিটি কিভাবে বিজ্ঞান প্রমাণ করলো? নাস্তিকরা যেই প্রমাণের ভিত্তিতে বুঝতে চায় স্রস্টা আছে সেই একই প্রমাণের ভিত্তিতে "স্রস্টা নাই" দাবিটি কি প্রমাণিত? দুনিয়ার সব বিজ্ঞানীরা কি একমত সে "স্রস্টার অস্তিত্ব নাই" দাবিটিই সঠিক? তাহলে নাস্তিকরা যখন বলে বিজ্ঞান স্রস্টাকে নাই প্রমাণ করে- কিন্তু কিভাবে? নাস্তিকরা কেন এই গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন গুলোর পরিস্কার জবাব দিচ্ছে না? অথচ বিজ্ঞান জগতে আমরা এমন প্রচুর বিজ্ঞানী পাই যারা স্বীকার করেন যে মহাবিশ্বকে স্রস্টাই শুন্য থেকে সৃষ্টি করেছেন। তাহলে নাস্তিকরা যে দাবি করে বিজ্ঞান প্রমাণ করতে পারে নাই স্রস্টাকে-কথাটির ভিত্তি কি আছে? নাস্তিকবিজ্ঞানীদের কথা পুরো বিজ্ঞানের উপর চাপিয়ে দেয়াটা কি ঠিক? আবার নাস্তিকরাই ক্রিয়েশনিস্ট বিজ্ঞানীদের কথা বিশ্বাস করা যাবে না-বলে থাকে।



বিখ্যাত নাস্তিক Professor Thomas Nagel তার গ্রন্থ "The Last Word"-এ লিখেছেন: 

"আমি নিজের অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, নিজে এই ভয়ের মুখোমুখি হয়ে। আমি চাই নাস্তিক্যবাদ যেন সত্য হয়; এবং আমি অস্বস্তিবোধ করি এই বাস্তবতার কারণে যে আমার চেনা সবচেয়ে বুদ্ধিমান এবং জ্ঞানী ব্যাক্তিগন বিশ্বাসী ধার্মিক। শুধু এটি নয় যে আমি ঈশ্বরে বিশ্বাস করিনা, এবং স্বাভাবিকভাবে আমি আশা করি যে আমার বিশ্বাস সঠিক। আসলে আমি আশা করি যে কোনো ঈশ্বর নেই। আমি চাইনা কোনো ঈশ্বর থাকুক; আমি চাইনা মহাবিশ্ব এমন হোক।"

আমি প্রফেসর থমাস নেইগেলকে সাধুবাদ জানাই তার সততার জন্য। তিনি স্বীকার করেছেন যে তিনি নাস্তিক হয়েছেন কারণ তিনি ঈশ্বরের অস্তিত্ব "মানতে চাননা"। তিনি বিজ্ঞানের দোহাই দিয়ে নিজের নাস্তিক্যবাদকে সঠিক প্রমাণ করার চেষ্টা করেননি। এমনকি তিনি এটাও স্বীকার করেছেন যে, তার দেখা সবচেয়ে বুদ্ধিমান এবং জ্ঞানী ব্যাক্তিগণ ধর্মে বিশ্বাসী।



আমাদের সার্বিক তথ্য প্রমাণ, যুক্তি আমাদেরকে এই সিদ্ধান্তে আসতে বাধ্য করে যে মহাবিশ্বকে স্রস্টাই শুন্য থেকে সৃষ্টি করেছেন। কারণ মহাবিশ্ব নিজেকে নিজেই অস্তিত্ব দিতে পারে না, আবার মহাবিশ্ব শুন্য থেকে সব সময় থাকতে পারে না কারণ তাপ ও গতিবিদ্যার সুত্র আমাদেরকে জানায় যে মহাবিশ্ব সব সময় ধরে ছিল না। তাই যৌক্তিক প্রমাণের ভিত্তিতে বলা যায় “স্রস্টার অস্তিত্ব নেই” নাস্তিকদের এমন বিশ্বাসটি বিজ্ঞানবিরোধী।



স্রস্টা ছাড়া সৃষ্টি কখনো শুন্য থেকে আসতে পারেই না। যারা বলে স্রস্টা ছাড়া সৃষ্টি হয়েছে তারা যুক্তিবিরোধী কথা বলে, তারা প্রমাণহীন কথা বলে। তাদের দাবির পক্ষে এমন শক্তিশালী কোনো প্রমাণ নাই যা তারা আমাদের সামনে এনে হাজির করবেন। স্রস্টাকে স্বীকার করে নিয়েছে এমন অনেক বিজ্ঞানীদেরকে দেখবেন ক্রিয়েশনিস্ট বলে দূরে ঠেলে দেয়া হয়। তারা কি গবেষণা করেছেন, কি যুক্তি দিয়েছেন সেসব তথ্যকে যেন ধামাচাপা দিয়ে রাখাকেই পছন্দ করেন অনেক মুক্তমনারা। দেখবেন, আবার এরাই বলে মুসলিমরাই নাকি সাম্প্রদায়িক।



মার্সেলো গ্লেসার ৬০ বছর বয়সী ব্রাজিলে জন্মগ্রহণকারী। ডার্টমাউথ কলেজের তাত্ত্বিক পদার্থবিদ এবং বিজ্ঞানের বিষয় বেশ জনপ্রিয়তা অর্জনকারী এক বিজ্ঞানী। উনি বিভিন্ন পুরস্কারও জিতেছেন। এই পদার্থবিদকে যখন প্রশ্ন করা হয় আপনি নাস্তিক্যবাদ বিরোধী কেন? উনি জবাবে বলেন (১),

I honestly think atheism is inconsistent with the scientific method. What I mean by that is, what is atheism? It’s a statement, a categorical statement that expresses belief in nonbelief. “I don’t believe even though I have no evidence for or against, simply I don’t believe.” Period. It’s a declaration. But in science we don’t really do declarations. We say, “Okay, you can have a hypothesis, you have to have some evidence against or for that.” And so an agnostic would say, look, I have no evidence for God or any kind of god (What god, first of all? The Maori gods, or the Jewish or Christian or Muslim God? Which god is that?) But on the other hand, an agnostic would acknowledge no right to make a final statement about something he or she doesn’t know about. “The absence of evidence is not evidence of absence,” and all that. This positions me very much against all of the “New Atheist” guys—even though I want my message to be respectful of people’s beliefs and reasoning, which might be community-based, or dignity-based, and so on. And I think obviously the Templeton Foundation likes all of this, because this is part of an emerging conversation. It’s not just me; it’s also my colleague the astrophysicist Adam Frank, and a bunch of others, talking more and more about the relation between science and spirituality.

ভাবানুবাদঃ প্রকৃতপক্ষে আমি মনে করি নাস্তিকতা বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির সাথে অসামঞ্জস্যপূর্ণ। আমি বোঝাতে চাচ্ছি, নাস্তিকতা কী? এটা একটা স্টেইটমেন্ট, একটা ক্যাটেগরিক্যাল স্টেইটমেন্ট যা “অবিশ্বাসের প্রতি বিশ্বাসকে” প্রকাশ করে। ❝আমি বিশ্বাস করি না, যদিও এর পক্ষে-বিপক্ষে কোনো প্রমাণ নেই, আমি জাস্ট বিশ্বাস করি না।❞  এটি একটি ঘোষণা। তবে বিজ্ঞানে আমরা আসলে কোনো ঘোষণা করি না। আমরা বলি, ❝ঠিক আছে, আপনার একটি হাইপোথিসিস থাকতে পারে, আপনার কাছে এর পক্ষে বা বিপক্ষে কিছু প্রমাণ থাকতে হবে।❞ এবং তাই একজন অজ্ঞেয়বাদী বলবেন, দেখুন, আমার কাছে God কিংবা কোনও ধরণের GOD (আগে বলুন কোন GOD? মাওরি দেবতা? নাকি ইহুদি, খ্রিস্টান কিংবা মুসলিমদের আল্লাহ্?) এর পক্ষে বা বিপক্ষে আমার কোনও প্রমাণ নেই। কিন্তু অন্যদিকে, সেই অজ্ঞেয়বাদীর জানা উচিৎ যে, যা সম্পর্কে সে জানে না সেটা নিয়ে ফাইনাল স্টেইটমেন্ট দেওয়ার অধিকার নেই তার“প্রমাণের অনুপস্থিতি অনুপস্থিতির প্রমাণ নয়।” এটি আমাকে "নব্য নাস্তিক" লোকদের বিরুদ্ধে খুব বেশি অবস্থান করায় - যদিও আমি চাই যে আমার বার্তাটি মানুষের বিশ্বাস এবং যুক্তির প্রতি শ্রদ্ধাশীল হোক, যা সম্প্রদায়ভিত্তিক, বা মর্যাদা-ভিত্তিক হতে পারে ইত্যাদি। এবং আমি মনে করি স্পষ্টতই ‘টেম্পলটন ফাউন্ডেশন’ এগুলো পছন্দ করে, কারণ এটি একটি টপ গ্রোসিং আলোচনার অংশ। এটা শুধু আমি নয়; এটি আমার সহকর্মী অ্যাস্ট্রো-ফিজিসিস্ট অ্যাডাম ফ্র্যাঙ্ক এবং অন্যদের আরো অনেকেই, বিজ্ঞান এবং আধ্যাত্মিকতার মধ্যে সম্পর্ক সম্পর্কে আরও বেশি করে কথা বলে।

“শূণ্য + শূন্য”= “শূন্যই হবে”। আপনি হাজার বার ট্রাই করলেও ১ বের করতে পারবেন না। আপনি ক্যালকুলেটর ০+১ দেন = ১ আসবে। মানে অর্থ পূর্ণ সংখ্যা বের হবে। কিন্তু ০+০= ১ এটা জীবনেও আপনি বের করতে পারবেন না, আর এটা সম্ভবও না। এই গাণিতিক অকাট্য যৌক্তিক প্রমাণ নাস্তিকদের মগজ বুঝতে অক্ষম। নাস্তিকরা যে দিন নাস্তিক্যসংশয়বাদীতা ত্যাগ করে মানুষের মতো যৌক্তিক চিন্তা করতে পারবে সেই দিন এই ব্যাপার গুলো তাদের বোধগম্য হবে। তার আগে না। অথচ যে কোনো যৌক্তিক চিন্তাশীল মানুষ সহজেই বুঝে ফেলবে যে “ কিছুই নাই” “কিছুই নাই-এটাও নাই” থেকে কখনোই “কিছু” আসতে পারেই না। এটা বাস্তব সত্যি কথা। যেহেতু মহাবিশ্ব অস্তিত্বে এসেছে সেহেতু এমন কোনো সত্ত্বাই মহাবিশ্বকে অস্তিত্বে এনেছে যিনি স্বয়ং শুন্য থেকে মুক্ত মানে সর্বদাই অস্তিত্বশীল। নাস্তিকদের সাথে বিজ্ঞানের সম্পর্ক নেই। নাস্তিকদের সাথে সত্যের সম্পর্ক নাই। নাস্তিকদের সাথে যুক্তির সম্পর্ক নাই। আপনি পুরো লেখাটি মনোযোগ দিয়ে পড়তে থাকুন তাহলে নিজেই আসল রহস্যটা উপলব্ধি করতে সক্ষম হবেন।

বই ছিঁড়ে ফেলা,হিংসায় আগুনে পুড়িয়ে ফেলা বৈজ্ঞানিক?

আমার বুক সেলফে নাস্তিকদের থেকে নিয়ে হিন্দুদের প্রধান ধর্মীয় গ্রন্থ বেদ, খৃষ্টানদের প্রধান ধর্মীয় গ্রন্থ বাইবেল ইত্যাদি এমন এমন বই রয়েছে যেই বই গুলোকে আমি অবিশ্বাস করি। সেই বই গুলোর প্রতি আমার অবিশ্বাস ঠিকই আছে কিন্তু বিদ্বেষ নেই। আমি কখনো চায়ের কাপের নিচে বেদ বাইবেল ও নাস্তিকদের বই রেখে চা পান করিনি। কল্পনাতেও আনি নি। কখনো এটা মনেই করিনি এসব বই পা দিয়ে লাত্থি মেরে, থু থু মেরে ভিডিও বানাবো। কারণ আমি মনে করি, এসব বইয়ের সাথে যদিও আমার চরম দ্বিমত আছে কিন্তু তাই বলে এই বই গুলোকে আমি পা দিয়ে লাত্থি দিতে পারি না। থু থু দিতে পারি না। আগুনে জ্বালিয়ে দিতে পারি না। মুক্তমনা নাস্তিকদের মধ্যে এই বোধটুকুও নেই যে বইয়ের সাথে কেমন আচরণ করতে হয়। বইয়ের সাথেই যাদের এমন আচরণ তাদের জ্ঞানের বোধ কতটুকু হতে পারে?



“BBC NEWS বাংলা” পত্রিকায় ১৭ এপ্রিল ২০২২ তারিখে “সুইডেনে কোরআন পোড়ানোর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ অব্যাহত” শিরোনামে খবর প্রকাশ করা হয়েছে। সেখানে বর্ণিত আছে (২),

সুইডেনে মুসলিমদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ কোরআন পুড়িয়েছে এমন একটি কট্টর দক্ষিণপন্থী সংগঠনের বিরুদ্ধে পর পর তৃতীয় রাতের মতো বিক্ষোভ হয়েছে। এই সংগঠনটি আবারও কোরআন পোড়ানোর পরিকল্পনা করছে। শনিবার রাতে মালমো শহরে স্ট্রাম কুর্স নামের কট্টরপন্থী সংগঠনটির বিরুদ্ধে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। এই সংগঠনটি অভিবাসন বিরোধী এবং ইসলাম-বিদ্বেষী বলে পরিচিত এবং এর নেতৃত্ব দেন রাসমুস পালুডান নামের একজন উগ্রপন্থীবিক্ষোভকারীরা গাড়িতে আগুন দেয় এবং অনেকে পুলিশের দিকে ইট-পাটকেল ছোঁড়ে। সুইডেনের আরও কয়েকটি শহরেও বিক্ষোভ-পাল্টা বিক্ষোভের সময় পুলিশের সঙ্গে জনতার সংঘর্ষ হয়েছে। অন্তত ১৬ জন পুলিশ অফিসার আহত হয়েছেন এবং পুলিশের কিছু গাড়ির ক্ষতি করা হয়েছে। স্টকহোমের উপকণ্ঠে এবং লিনকোপিন এবং নরকোপিন শহরেও উগ্র দক্ষিণপন্থীদের মিছিলের পর গোলযোগ হয়েছে। সুইডেনের পুলিশ প্রধান অ্যান্ডার্স থর্নবার্গ বলেছেন, বিক্ষোভকারীরা পুলিশের জীবনকে হুমকির মুখে ফেলতে পর্যন্ত পরোয়া করছে না। তিনি বলেন, "আমরা আগেও সহিংস দাঙ্গা দেখেছি, কিন্তু এটা মনে হচ্ছে একেবারেই ভিন্ন কিছু।" সুইডেনের এই কট্টর দক্ষিণপন্থী গোষ্ঠী গত বৃহস্পতিবার কোরআনের একটি কপি পোড়ায় এবং সামনের দিনে তাদের সমাবেশ থেকে আবারও এই কাজ করার পরিকল্পনা করছে। এর বিরুদ্ধে সুইডেনে তীব্র ধিক্কার উঠেছে এবং সুইডেনের বাইরেও এই ঘটনার প্রতিবাদ শুরু হয়েছে। ইরাকী পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় বাগদাদে সুইডেনের দূতকে ডেকে এ ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে বলেছে, এ ঘটনায় সুইডেনের সঙ্গে মুসলিম জনগোষ্ঠীর সম্পর্কের মারাত্মক প্রভাব পড়তে পারে। ইরানও সুইডিশ রাষ্ট্রদূতকে তলব করে কঠোর ভাষায় এই ঘটনার নিন্দা করেছে। সুইডেনে স্ট্রাম কুর্সের কোরআন পোড়ানোর বিরুদ্ধে এর আগেও সহিংস বিক্ষোভ হয়েছে। ২০২০ সালে বিক্ষোভকারীরা মালমো একই ধরণের বিক্ষোভের সময় গাড়িতে আগুন দিয়েছিল এবং দোকানপাট ভাংচুর করেছিল।



“দৈনিক ইত্তেফাক” পত্রিকায় ২০ এপ্রিল ২০২২ তারিখে “সুইডেনে কোরআন পোড়ানো কে এই রাসমুস” শিরোনামে খবর প্রকাশ করা হয়। সেখানে বর্ণিত হয়েছে (৩) ,

সুইডেনে গত বৃহস্পতিবার (১৪ এপ্রিল) স্ট্রাম কুর্স নামের কট্টরপন্থী পার্টি মুসলিমদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ কোরআন পুড়িয়ে দেয়। এর জেরে দেশটিতে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। এতে এখন পর্যন্ত ৪০ জন আহত হয়েছে। দেশটির পুলিশ জানিয়েছে, সংঘর্ষে প্রায় ২৬ জন পুলিশ ও ১৪ জন ব্যক্তি আহত হয়েছে। এছাড়া ২০টির বেশি গাড়ি ক্ষতিগ্রস্থ বা ধ্বংস হয়েছে। খবরে বলা হয়েছে, স্ট্রাম কুর্স পার্টির নেতা রাসমাস পালুদা কোরআন পুড়িয়ে ফেলার পর দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় শহরগুলোতে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়েরাসমুস পালদানই মুসলিমবিরোধী বিক্ষোভের পরিকল্পনা করে এবং তা প্রদর্শন করে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। সামাজিক মাধ্যমে কোরআন পুড়িয়ে দেওয়া ছবি পোস্ট করে রাসমুস পালদা্ন ঘোষণা দিয়েছেন তিনি আরও কোরআন পোড়াবেন। রাসমুসের বাবা একজন সুইডিশ নাগরিক। তিনি ২০১৭ সালে প্রথম আলোচনায় আসেন। সামাজিম মাধ্যম ইউটিউবে মুসলিমবিরোধী ভিডিও বানানোর মাধ্যমে তিনি নজরে আসেন।২০১৮ সালের ডিসেম্বরে এক ভিডিওতে রাসমুস বলেন,' ইসলাম এবং মুসলিমরা হচ্ছে শত্রু। এই পৃথিবীতে যদি একজন মুসলিমও না থাকে তাহলে খুব ভালো হবে, তাহলে আমরা আমাদের চূড়ান্ত লক্ষ্যে পৌঁছাবো।'ডেনমার্কে বর্ণবাদী ভাষণের কারণে ২০১৯ সালে ১৪ দিনের জেল হয় পালদানের। এর এক বছর পর ১৪ ধরনের বর্ণবাদী, মানহানি এবং বিপজ্জনক ড্রাইভিংয়ের কারণে আরও জেল হয় পালদানের। সুইডেনের স্ট্রাম কুর্স কট্টরপন্থী দল ডেনমার্কের ২০১৯ সালের জাতীয় নির্বাচনে একটি আসনেও জয় পায়নি। বর্তমানে পালদান আগামী ২০২৩ সালের জুনে   নির্বাচনে ফের লড়বেন বলে পরিকল্পনা করছেন। কিন্তু তার প্রার্থীতার জন্য যথেষ্ট সংখ্যক স্বাক্ষর নেই বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। 

কুরআন জ্বালিয়ে দেয়ার ফলে বায়ু দূষণ হয়েছে এই বিজ্ঞানবিরোধী কর্মের আলাপ না হয় আরেকদিন করা যাবে কিন্তু ইসলামবিরোধী সেই মুক্তমনাদের কারণে যে অন্য মানুষদের ক্ষতি হয়েছে, আহত হয়েছে এই বিজ্ঞান বিরোধীর আলাপ কিভাবে লুকিয়ে রাখা যাবে? প্রতিটি মুক্তমনা চায় দুনিয়াতে ইসলাম না থাকুক। দুনিয়া থেকে সকল মুসলিম নারী পুরুষ এমনকি মুসলিম শিশুরা পর্যন্ত না থাকুক। এগুলো কি বিজ্ঞানমনস্ক কর্ম বলা যাবে?

সুইডেন নাস্তিক প্রধান দেশ (৪)। সেখানে নাস্তিকদের সংখ্যা বেশি। সেখানে মাক্সিমাম মানুষ মুক্তবুদ্ধি চর্চা করে থাকে। মুক্তচিন্তা চর্চা করে থাকে। সেখানে নাস্তিকদের দাবি মতে নাকি সভ্য সমাজ প্রতিষ্ঠিত। কিন্তু বাস্তব ঘটনা সম্পূর্ণ উল্টো চিত্র দেখায়। ইসলামবিরোধী খৃষ্টান ডেভিড উড কুরআনের পৃষ্ঠা ছিঁড়ে খেতে থাকে অন্যদিকে দুই পাশের নাস্তিকরা সেটা দেখে মজা নিতে থাকে(৫)। দেখে নিতে পারেন ভিডিওটি। মূর্খ নাস্তিক গুলো জানেই না বইয়ের সাথে কিভাবে আচরণ করতে হয়। নাস্তিকদেরকে শিক্ষিত করে তোলার আগে ওদেরকে শিক্ষা দিতে হবে বইয়ের সাথে কিভাবে আচরণ করতে হয় সেটা।

নাস্তিকরা কয়দিন পরে মুসলিমদেরকে হত্যা করাকে বৈজ্ঞানিক বলে চালিয়ে দেবে কিনা সেটা নিয়ে যথেষ্ট সংশয় থেকে যাবে। কারণ ইতিহাসে এমন হাজার হাজার প্রমাণ রয়েছে যে নাস্তিক মুক্তমনারা যখনই ক্ষমতায় গিয়েছে তখনই ভিন্নমতের মানুষদেরকে গণহত্যা, গণধর্ষণ, নির্যাতন-অত্যাচার করেছে। আর নাস্তিক্যধর্মে তো এসবের মুক্তচিন্তা করা খারাপ কিছু নয়।

পহেলা বৈশাখের নামে যতসব কুসন্সকারের চর্চাঃ

মুক্তমনারা বলে থাকে মুসলিমরা যে কুরবানীর ঈদে গরু জবাই করে আনন্দ উৎসব করে, ঈদের নামাজ আদায় করে, আল্লাহকে সত্যি বলে স্বীকার করে ইত্যাদি এসব নাকি বিজ্ঞানবিরোধী। তাহলে মুক্তমনাদের কাছেও একই প্রশ্ন হচ্ছে পহেলা বৈশাখে মাছ হত্যা করে আনন্দ উৎসব করা কিভাবে বৈজ্ঞানিক হতে পারে? সেই দিনে কত হাজার হাজার ইলিশ মাছ হত্যা হয়, ইলিশ মাছকে গণহত্যা করা হয় কিন্তু সেই দিনে কোনো মুক্তমনাদেরকে মাছের প্রতি মায়া দেখাতে দেখতে পাওয়া যায় না? উল্টো মাছ হত্যার ছবি খাবারের পরিবেশন করে ফেসবুকে আনন্দ উৎযাপন করে থাকে। মূর্খেটির চেহারা দেখুন খালি।



এছাড়া নানা ধরণের কুসংস্কারের চর্চা মুক্তবুদ্ধিতে পালন করা হয়ে থাকে এই দিনে। হিন্দুরা যেমন দুর্গাপূজা পালন করে, খৃষ্টানরা যেমন ক্রিসমাস পালন করে থাকে,শিখরা যেমন গুরদুয়ারায় পালন করে থাকে, বৌদ্ধরা যেমন 'বুদ্ধ দিবস' পালন করে থাকে তেমনি মুক্তমনারা পহেলা বৈশাখ তথা নববর্ষ পালন করে থাকে। এই দিনকে কেন্দ্র করে হাজার হাজার কোটি কোটি ইলিশ মাছকে গণহত্যা করা হয়। যেই নাস্তিকরা মুসলিমদের কুরবানীর ঈদে গরু,ছাগল, ভেড়া, উটদের রক্তমাখা ছবি দেখিয়ে চোখে রুমাল দিয়ে ভ্যা ভ্যা করে কান্নাকাটি করতে থাকে অথচ তারাই নববর্ষের দিন কেন জানি ইলিশ মাছের গণহত্যায় তেমন আচরণ দেখায় না। মুক্তচিন্তার ওভার ডোজের কারণে হয়তো এমনটি হয়ে থাকতে পারে। নাকি?



মুসলিমরা যখন হজ্জ পালন করে তখন নাস্তিকদের কত আপত্তি অভিযোগ। মুসলিমরা বৈজ্ঞানিক ভুল করে, মুসলিমরা বিজ্ঞানমনস্ক হতে পারেনি ইত্যাদি ভাবে মুসলিমদেরকে নিচু দেখানোর পায়তারা করে থাকে কিন্তু মুক্তমনারা কেন এই সংশয় প্রকাশ করে না যে নির্দিষ্ট একটি বছরের প্রথম দিনে কেন আনন্দ করতে হবে? এখানে তো আনন্দ করবার কিছু নেই। সেই দিনেও তো হাজার হাজার মানুষ মৃত্যুবরণ করে। কেন আনন্দকে কেন্দ্র করে ইলিশ মাছদেরকে পরিবার থেকে ছিনিয়ে নিয়ে গণহত্যা করতে হবে? ইলিশ মাছদের নিজস্ব জীবন নাই? পরিবার নাই? ইলিশদের মা নেই? বাবা নেই? সন্তান নেই? মানুষের জীবন জীবন আর মাছদের জীবন জীবন না?

বাংলা নাস্তিকদের উচিত সম্মিলিতভাবে ‘পহেলা বৈশাখ’ নামের এই অপ-সংস্কৃতির বিরোধিতা করা। পহেলা বৈশাখের এই ধারণার প্রবর্তন হয় মোঘল সম্রাট আকবরের হাত ধরে। তার নির্দেশে ৯৯৮ হিজরী মোতাবেক ১৫৮৪ খ্রিস্টাব্দে বাংলা সনের প্রবর্তন হয়। যেহেতু এই ধারণার সূত্রপাত একজন মুসলমানের হাতে এবং আরবি সন (হিজরী) অনুসরণে যেহেতু এর উদ্ভব, তাই এটার বিরোধিতা করা নাস্তিকদের জন্য একরকম ফরজ কাজ বলা যায়। উল্লেখ্য, আকবরের উদ্ভাবিত ‘দ্বীন-ই-ইলাহী’ এখানে আপাতত আলোচ্য নয়। বাংলা নাস্তিকরা নিজেদের সবসময় মুক্তচিন্তক, বিজ্ঞানমনস্ক এবং আধুনিক চিন্তা ভাবনা সম্পন্ন বলে দাবি করে। তারা দাবি করে যে, তারা কোন কুসংস্কার, কু-প্রথায় বিশ্বাস করে না।

তাদের কথা হলো, চাষা থেকে জেলে, কামার থেকে নাপিত, চারুকলার ছাত্র থেকে প্রাইমারী স্কুলের পিয়ন সবাইকেই সাইন্স ল্যাবে বসে মাইক্রোস্কোপে চোখ ডুবিয়ে দিয়ে স্রষ্টার আয়তন এবং হাবলের টেলিস্কোপে স্রষ্টার অস্তিত্ব নির্ণয় করতে জানতে হবে। যদি ল্যাবের মাইক্রোস্কোপ আর টেলিস্কোপে স্রষ্টাকে ধরা না যায়, তাহলে ধরে নিতে হবে যে স্রষ্টা বলে আদৌ কেউ নেই। কিন্তু, বাংলা নববর্ষের ইতিহাস ঘেঁটে দেখা যায়, এই ইতিহাসের সাথে জড়িয়ে আছে কিছু ‘বিশ্বাস’ এবং ‘ভক্তি’। বাংলা নববর্ষ উদযাপনের ইতিহাস থেকে জানতে পারা যায় যে, মানুষ নতুন বছরকে নতুন আশা, নতুন উদ্যম নিয়ে বরণ করে নিতো। চাষীরা মনে করতো, নতুন বছরকে বরণ করে নিলে তারা নতুন বছরে আগের বছরের তুলনায় দ্বিগুণ ফসল পাবে। যেহেতু নাস্তিকরা এরকম বিশ্বাসের থোড়াই কেয়ার করে, তাই এরকম বিশ্বাস, ভক্তিকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠা ‘বর্ষবরণ’ অনুষ্ঠানের বিরোধিতা করা বাংলা নাস্তিকদের নৈতিক দায়িত্বের মধ্যে পড়ে।

বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের সাথে ‘মঙ্গল-অমঙ্গল’ জাতীয় কিছু ব্যাপার-স্যাপার জড়িয়ে আছে। নিকট অতীতে অর্থাৎ আশির দশকে ঢাবির চারুকলা ইন্সটিটিউটের ছাত্ররা বাংলা সনের নতুন দিনটাকে একটু ভিন্নভাবে বরণ করে নেয়। তখন যেহেতু দেশে স্বৈরাচার এরশাদের সময়কাল চলছিলো, তারা স্বৈরাচারের পতন এবং যাবতীয় অমঙ্গলের হাত থেকে মুক্ত হবার প্রত্যয়ে বর্ষবরণের দিন একটি মিছিল বের করে। এই মিছিলের নাম দেওয়া হয় ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’। এই মিছিলে অমঙ্গলের বিরুদ্ধ প্রতীক হিসেবে কিছু পশু , পাখি এবং দানব টাইপ জানোয়ারের মুখোশ, ফেস্টুন এবং প্রতিকৃতি ব্যবহার করা হয়। এগুলোকে তারা মঙ্গলের প্রতীক হিসেবে ব্যবহার করে।তখন থেকে প্রতিবছর নববর্ষের দিন মঙ্গল শোভাযাত্রায় এই পশু,পাখি, দানব,জানোয়ারের প্রতিকৃতি নিয়ে হাজার হাজার মানুষ মিছিল করে। তারা বিশ্বাস করে, এতে করে সমস্ত অশুভ, অমঙ্গল নিপাত যাবে।

এরকম দানব মানবের প্রতিকৃতি নিয়ে মঙ্গল শোভাযাত্রা করলে, মঙ্গল প্রদীপ জ্বালালে অমঙ্গল দূর হয়ে মঙ্গল আসে কী আসে না সেটা পরের ব্যাপার,তবে, বাংলা নাস্তিকরা যেহেতু মঙ্গল-অমঙ্গল জাতীয় শব্দাবলী শুনলেই নাক সিটকানো শুরু করে, এবং ‘থার্ড পারসন’ কেউ যে আদৌ মঙ্গল-অমঙ্গল ঘটাতে পারে- এরকম কিছুতে যখন তারা বিশ্বাসই রাখে না, তাই ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’ নামের এরকম বিদঘুটে, অবৈজ্ঞানিক, মধ্যযুগীয় ধ্যান ধারনার বিরোধিতা করাও বাংলা নাস্তিকদের নৈতিক দায়িত্বের মধ্যে পড়ে যায়।

মুসলমানদের কোরবানি ঈদ আসলেই নাস্তিকদের ‘মানবিকতা’ নামক সপ্তম ইন্দ্রিয়টার বাম্পার ফলন দেখা যায়। কোরবানির ঈদে গরু জবাইকে তারা বিজ্ঞান, মানবিকতা দিয়ে একেবারে ধুঁয়ে দেবার চেষ্টা করে। তাদের যখন প্রশ্ন করা হয়, ‘সারাবছরই তো ব্যাপকহারে গরু জবাই হয়। তখন তো আপনাদের মধ্যে কোনো প্রতিক্রিয়া দেখা যায় না। কোরবানির ঈদ আসলেই কেনো আপনাদের মধ্যে এত্তো পশুপ্রেম জেগে উঠে?’ তারা তখন বসুন্ধরা টিস্যু দিয়ে চোখের কোণা মুছতে মুছতে বলে, ‘সারাবছর জবাই করা এক ব্যাপার, কোরবানির ঈদে জবাই করা অন্য ব্যাপার। ধর্মীয় উৎসবের নামে এরকম পশু জবাই করার কোনো মানে হয় না। মানবিকতা বলে একটা ব্যাপার আছে। পশুর প্রাণ বলে কি ওটা প্রাণ নয়?’ যাহোক, ধর্মীয় উৎসবের নাম করে গরু জবাই করা যদি নৃশংসতা হয়, অমানবিকতা হয়, তাহলে একইভাবে বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের নাম করে ইলিশ মাছ নিধন করাটাও নৃশংসতা এবং অমানবিকতা।

গরু এবং ইলিশের মধ্যে বেসিক ডিফারেন্স নেই। একটা সাইজে বড়, অন্যটা ছোট। একটা স্থলচর, অন্যটা জলচর- এইটুকুই। তবে, নাস্তিকরা যেহেতু কথায় কথায় সাম্যের কথা বলে, তাই গরু আর ইলিশের সাইজ এখানে ফ্যাক্ট না। ফ্যাক্ট হচ্ছে- দুইটারই প্রাণ আছে। তাই, বাংলা নাস্তিকদের উচিত বর্ষবরণের নাম করে এরকম ব্যাপকহারে ইলিশ নিধন, তা নিয়ে উৎসব,হৈ-হুল্লোড় ইত্যাদির চরম বিরোধিতা করা। উপরে উল্লিখিত পয়েন্টগুলো বিবেচনায় নিয়ে বাংলা নাস্তিকদের উচিত ‘বর্ষবরণ’ নামের এই অপ সংস্কৃতির বিরোধিতায় এগিয়ে আসা, জনমত গড়ে তোলা। কিন্তু আজ অবধি কোন নাস্তিককেই এটার বিরুদ্ধে ‘টু’ শব্দটিও করতে দেখা যায় নি। কারণ, এই অপ সংস্কৃতি যতোই আনকালচারড, যতোই অবৈজ্ঞানিক এবং তাদের আইডিওলোজির বিরুদ্ধে হোক না কেনো, এটা যেহেতু ইসলামের বেসিক কনসেপ্টের সাথে সাংঘর্ষিক,তাই এটার বিরোধিতা করা দূরে থাক, এটাকে ফলাও করে যতো বেশি প্রচার-প্রসার করা যায়, বাংলা নাস্তিকদের ততোই লাভ। ইতোপূর্বে যদিও তাদের ‘বর্ষবরণ’ নামের এই অপ-সংস্কৃতির বিরুদ্ধে কথা বলতে দেখা যায় নি, তবুও, আমি যেহেতু খুব আশাবাদী মানুষ, আমি আশা করছি, সামনের বছর থেকে বাংলা নাস্তিক সম্প্রদায় বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের বিরোধিতা করে আমাকে ভুল প্রমাণ করবে।

বিড়ি ও নেশা দ্রব্য সেবন করা বৈজ্ঞানিক?

আমরা সবাই জানি ধুমপান সাস্থের জন্য ক্ষতিকর। বিড়ি সিগারেট সেবনের মধ্যে বৈজ্ঞানিক উপকারিতা তো নেই। সাস্থের জন্য পুষ্টিকর মর্মে এমন কোনো প্রমাণ পাওয়া যায় না। যদি থেকেও থাকে এরপরেও এসব থেকে দূরে থাকাই ভালো। এমনকি মদ খাওয়ার বদ অভ্যাস সাস্থের জন্য ভালো নয়। কিছু নাস্তিক বলে থাকে বিড়ি সিগারেট মদ এসব অল্প পরিমাণে সেবন করা দেহের জন্য ক্ষতি নয় তাই এসব মুক্তচিন্তায় খাওয়া যাবে। কিন্তু একই যুক্তিতে নাস্তিকরা যদি নিজের পেশাব ও পায়খানা খায় তাহলে সেটাও তো দেহের জন্য তেমন ক্ষতি করে না তাহলে নাস্তিকরা নিজের পেশাব পায়খানা অল্প পরিমাণে কেন খায় না? মুক্তমনা বিজ্ঞানমনস্ক নামধারী লোকদের বিজ্ঞানবিরোধী কাণ্ড দেখে নেই আসুন।



নাস্তিকরা আসলে সাইকোপ্যাথী। মিথ্যা বলা সাইকোপ্যাথদের জন্য অত্যন্ত সহজ ব্যাপার। শুধু তাই নয়, তাদের মিথ্যা হয় অত্যন্ত গোছানো এবং তথ্যবহুল। মিথ্যা শুরু করলে তারা থামে না বা থামতে আগ্রহী নয়। তাদের মিথ্যা প্রমাণ হওয়ার বা মিথ্যুক হিসেবে ধরা পড়ে যাওয়ার কোনো ভয় তাদের থাকে না। কেননা সেই পরিস্থিতিতে কিভাবে আত্মবিশ্বাসের সাথে মিথ্যা বলে সামাল দিতে হবে, একজন সাইকোপ্যাথের তা জানা আছে। এদেরকে মানুসিক ভাবে সুস্থ করে তুলতে হবে। কারণ এরা এতোটাই অসুস্থ যে নিজেদেরকে বিজ্ঞানমনস্ক দাবি করে প্রচার করে আবার নিজেরাই বিজ্ঞানবিরোধী কাজ করে যাচ্ছে। আসুন জেনে নেই ধুমপান সাস্থের জন্য কিভাবে ক্ষতির কারণ হয়ে আসে। চার্টটি খেয়াল করে দেখুন ও পড়ুন।


যারা নিজেদেরকে ধিরে ধিরে খুন করে যাচ্ছে তাদের থেকে আর কি বা আশা করা হয়? এরা হয়তো জানে না যে নেশা জাতিও খাদ্যের ক্ষতি আর না হয় জেনেও মুক্তচিন্তায় এসব খেয়ে যাচ্ছে। কারণ মুক্তচিন্তায় যা ইচ্ছে তাই করা জায়েজ। কেউ যদি চায় নিজের জীবন নিজে শেষ করে দেবে আর কেউ চাইলে ধিরে ধিরে শেষ করবে এসব একান্ত যার যার ব্যাপার। এক যুবক মুক্তচিন্তায় নিজের পেশাব খায়। এতে নাকি নিজের যৌবন ধরে রাখা যায়। ছেলেটি খুবই আনন্দ পায় নিজের পেশাব মুক্তচিন্তায় খেতে।



“ডেইলি বাংলাদেশ” অনলাইন পত্রিকায় ৩০ এপ্রিল ২০২২ তারিখে “যৌবন ধরে রাখতে প্রতিদিন এক গ্লাস নিজের প্রস্রাব পান করেন যুবক!” শিরোনামে এক খবর প্রকাশ করা হয়। সেখানে বর্ণিত হয়েছে (৬),

তারুণ্য বা যৌবন ধরে রাখতে অনেকেই কসমেটিক সার্জারি, ওষুধ, বিভিন্ন ক্ষতিকর উপাদান গ্রহণ করে থাকেন। তবে কখনো কি শুনেছেন যৌবন ধরে রাখতে নিজের প্রস্রাব খেতে? কি বিশ্বাস হচ্ছে না? বিশ্বাস না হলেও এমনটাই করেন হ্যারি ম্যাটাডিন নামক এক ব্যক্তি। ঘটনার সূত্রপাত প্রায় ছয় বছর আগে। মানে সেই ২০১৬ সালে। মানসিক সমস্যায় ভুগছিলেন তিনি। সেই সময় থেকে এই সমস্যার সঙ্গে বুঝতেই নিজের মূত্র-পানের পন্থা বেছে নিয়েছিলেন তিনি। যাই হোক, বেশি হেঁয়ালি না-করে বিষয়টা ভেঙেই বলা যাক। নিজের মূত্রই পান করছেন হ্যাম্পশায়ারের এক যুবক। তা-ও আবার মাস-দুয়েকের পুরনো মূত্র। আর যুবকের এই কীর্তিই সাড়া ফেলে দিয়েছে পুরো বিশ্বে! এই অদ্ভুত অভ্যাসের কারণে পরিবারও সরে গিয়েছে দূরে। তাতেও কুছ পরোয়া নেই! নিজের অভ্যাস কিছুতেই বদলাননি যুবক। এমনকি, এই অভ্যাস সম্পর্কে বইও লিখে ফেলেছেন ঐ যুবক। ঐ যুবকের দাবি, নিজের প্রস্রাব কোনো পাত্রে ধরে রাখেন এবং প্রতিদিন প্রায় ২০০ মিলিলিটার মূত্র পান করেন তিনি। আর এতে না কি হাতেনাতে পেয়েছেন উপকারও! তার মনে এসেছে শান্তি এবং শান্তও হয়েছে মন। শুধু তাই নয়, হ্যারি নিজের মূত্র পান করার পাশাপাশি চোখেমুখেও মূত্রের ছিটে দিয়ে নেন। এটাই না কি তার চিরযৌবন ধরে রাখার গোপন রহস্য! এই প্রসঙ্গে হ্যারির দাবি, তার রূপচর্চার অঙ্গ এই পুরনো মূত্র। মুখে তিনি তা ঘষে থাকেন এবং এতে না কি তার ত্বক নরম ও জেল্লাদার হয়েছে। হ্যারি জানিয়েছেন, ইউরিন থেরাপির গুণাগুণ সম্পর্কে পড়েছিলেন তিনি। আর সেই উপকারিতার বিষয়ে পড়ে তবেই এই অভ্যাস নিজেও শুরু করেন।

হ্যারি আরো বলেন, 'আমি যখন এটা খাই, তখন বুঝতে পারি এর উপকারিতা। যা আমার কল্পনাশক্তিরও বাইরে! এটা খাওয়ার পর থেকে আমার মস্তিষ্ক ও মন উজ্জীবিত হয়েছে এবং আমার ডিপ্রেশনও উপশম হয়েছে। এমনকি আমার মনও শান্ত হয়েছে। আর এটা তো আমি বিনামূল্যেই পেয়ে যাচ্ছি! এমনকি এতে আমার শরীর এবং মন- দুইই সুস্থ থাকছে।' তবে কীভাবে নিজের প্রস্রাব পান করেন হ্যারি? তিনি মূলত ভেগান ডায়েটে থাকেন এবং ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং করেন। অর্থাৎ দিনের মধ্যে এক বারই খাওয়াদাওয়া করেন। হ্যারির দাবি, প্রতিদিন তিনি মাস-খানেকের পুরনো ২০০ মিলিমিটার প্রস্রাব পান করেন। অবশ্য ঐ পানীয়ের মধ্যে তিনি অল্প পরিমাণে টাটকা মূত্রও মিশিয়ে নেন। হ্যারির বক্তব্য, টাটকা প্রস্রাব কিন্তু সকলে যতটা খারাপ বলে মনে করেন, ততটাও নয়। আদতে এর কোনো সেরকম খারাপ গন্ধ বা স্বাদ থাকে না। তবে এক মাসের পুরনো প্রস্রাবে কড়া গন্ধ হয়। আর স্বাদেও তা বেশ পরিশোধিত। এর সঙ্গে খাপ খাওয়াতে একটু সময় লাগেই। সেই সঙ্গে ঐ যুবক আরো বলেন, 'আমার আসলে এক মাসের পুরনো প্রস্রাবের গন্ধই এখন বেশি ভালো লাগে। আর এটা খাওয়ার পর নানা উপকার ও আনন্দ পাই আমি। সব মিলিয়ে এই ইউরিন থেরাপি আমার জীবনই বদলে দিয়েছে।' শুধু হ্যারিই নন, এর আগেও বহু মানুষ ইউরিন থেরাপির দাবি তুলেছিলেন। তবে এই বিষয়টির কি আদৌ কোনো ভিত্তি রয়েছে? কি বলছেন বিশেষজ্ঞরা? এক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের বক্তব্য, মূত্র তো শরীরের বর্জ্য। এর মধ্যে রয়েছে ৯০ শতাংশ জল, বাকি অ্যামোনিয়া এবং লবণ। শুধু তাই নয়, মূত্রে নানা রকম ব্যাকটেরিয়া এবং অন্যান্য বর্জ্য পদার্থও বিদ্যমান। তাই মূত্র পান করার অথবা ত্বকে প্রয়োগ করার কোনো উপকারিতা সম্পর্কে এখনও কোনো প্রমাণিত তথ্য কিন্তু নেই। বরং মূত্র পান করলে ডিহাইড্রেশন বৃদ্ধির সম্ভাবনা বাড়ে এবং শরীরে ব্যাকটেরিয়ারও উপদ্রব তৈরি হয়। আর নির্দিষ্ট কারণেই বর্জ্য পদার্থ বর্জ্যই হয়!



যেই নাস্তিকরা এই যুক্তি দেখায় যে বিড়ি সিগারেট মদ অল্প পরিমাণে খেলে দেহের ক্ষতি হয় না তারা এই মুক্তমনা যুবকটির মত নিজের পেশাব মুক্তচিন্তায় খেতে পারে। অথবা নাস্তিকরা এটা স্বীকার করে নিক যে কোনো নাস্তিক চাইলে নিজের পেশাব পায়খানা মুক্তমনে খেতে পারবে। এটা যার যার মুক্তচিন্তার ব্যাপার।


নারীবাদীর যুক্তিবিরোধী কথাবার্তাঃ

যারা নারীবাদী হবে তাদের কথা থেকে জ্ঞান পাওয়া যাবে। যৌক্তিক কথা পাওয়া যাবে। তাদের আলোচনা শুনলে মনে হবে প্রতিটি কথা থেকে যেন বিজ্ঞানের মুক্তমালা প্রকাশ পাচ্ছে। কিন্তু নারীবাদী দাবিদার নারীদের কথাবার্তা যাচাই করে দেখলে হাস্যকর কৌতুকপূর্ণ কথা ছাড়া আর কিছুই লাগে না। নারীবাদীরা এতো নিন্মমানের কমেডিয়ান হয় কিভাবে? তসলিমা নাসরিন থেকেই উদাহরণ দিয়ে দেখাচ্ছি।


পূর্বপশ্চিম নিউজ” ২৯ জানুয়ারি ২০২২ তারিখে “পুরুষের লুঙ্গি খুব অশ্লীল পোশাক: তসলিমা নাসরিন” শিরোনামে খবরে বলা আছে (৭) ,


বাংলাদেশ তো বটে, উপমহাদেশের পুরুষদের প্রিয় পোশাক লুঙ্গি নিয়ে এবার কটাক্ষ করলেন নির্বাসিত লেখিকা তসলিমা নাসরিন। লুঙ্গিকে ‘অশ্লীল পোশাক’ বলে মনে করেন তিনি। শুক্রবার (২৮ জানুয়ারি) রাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুকে তসলিমা নাসরিন লিখেছেন, ‘পুরুষের লুঙ্গিটাকে আমার খুব অশ্লীল পোশাক বলে মনে হয়। ভারতীয় উপমহাদেশে যে পুরুষেরা লুঙ্গি পরে, তাদের বেশির ভাগই কোনো আন্ডারওয়্যার পরে না, লুঙ্গিটাকে অহেতুক খোলে আবার গিঁট দিয়ে বাঁধে। কখনো আবার গিঁট ছুটে গিয়ে হাঁটুর কাছে বা গোড়ালির কাছে চলে যায় লুঙ্গি।’‘তাছাড়া লুঙ্গি পরার পরই শুরু হয় তাদের অঙ্গ চুলকানো। ডানে বামে পেছনে সামনে এত কেন চুলকোয় কে জানে। সামনে মানুষ থাকলেও তারা অঙ্গ অণ্ড কিছুই চুলকোনো বন্ধ করে না, না চুলকোলেও ওগুলো ধরে রাখার, বা ক্ষণে ক্ষণে ওগুলো আছে কি না পরখ করে দেখার অভ্যাস কিছুতেই ত্যাগ করতে পারে না। পরখ করার ফ্রিকোয়েন্সি অবশ্য মেয়েদের দেখলে বেশ বেড়ে যায়।’ তসলিমার এই পোস্টে মাহমুদা শেলি নামে একজন মন্তব্য করেছেন, ‘একদম সত্য কথা গুরু। বদমাইশগুলি ইচ্ছা করেই এসব করে।’ তন্দ্রা ভট্টাচার্য নামে আরেকজনের মন্তব্য, ‘আমার খুব বাজে লাগে।’ তবে একই পোস্টের নিচে লেখক স্বকৃত নোমান জানান, ‘লুঙ্গি না পরলে তো রাতে আমার ঘুমই হয় না, আপা। লুঙ্গির জয় হোক।’এছাড়া কবি চাণক্য বাড়ৈ’র মন্তব্য, ‘হাঁটুর কাছে চলে যাওয়া বা চুলকানো ইত্যাদি আচরণগত ব্যাপার। কিন্তু পোশাক হিসেবে লুঙ্গির মতো আর কিছু হয় না। বিশেষ করে গরমের দিনে। আহা! স্বর্গে লুঙ্গি পরার ব্যবস্থা না থাকলে আমি অন্তত যাব না।’


এই খবরটা যখন আমি পড়ি তখন হাঁসতে হাঁসতে আমার মুখ ক্লান্ত হয়ে হয়ে গিয়েছিল। কারণ যেই মুক্তচিন্তক নারীদেরকে বলে ধর্ষকদেরকে ধর্ষণ করতে, রাস্তায় সহবাস করতে সেই নারীবাদী কিনা বলছে লুঙ্গি নাকি অশ্লীল পোশাক। যেই নারীবাদীর কাছে পুরুষের লুঙ্গি অশ্লীল সেই নারীবাদী নিজেই আবার বলছে মেয়ের স্তন দেখানো জানা পরলে নাকি ভালো লাগে। কি হাস্যকর ব্যাপার সেপার।


“সংবাদ প্রতিদিন” অনলাইন পত্রিকায় শনিবার ২২ অক্টোবর ২০২২ তারিখে “মেয়েরা স্তন দেখানো জামা পরলে বেশ লাগে: তসলিমা নাসরিন” শিরোনামে খবরে বলা আছে (৮),


ফেসবুক পোস্টে কী লিখলেন তসলিমা? ‘সুগোল সুডোল ফার্ম স্তন দেখতে আমার খুব ভালো লাগে। মেয়েরা স্তন দেখানো, ক্লিভেজ দেখানো জামা পরলে বেশ লাগে দেখতে। সুদর্শন পুরুষেরা যেমন শর্টস পরলে বা সুঠাম বাইসেপ দেখানো স্লিভলেস টিশার্ট, বুকের লোম দেখানো ডীপ ভি নেক টিশার্ট পরলে দেখতে ভালো লাগে, তেমন মেয়েরা কিছুটা নিতম্ব ঝিলিক দেওয়া সুগঠিত পা দেখানো মিনি শর্টস পরলে, ক্লিভেজ বা অর্ধেক স্তন দেখানো, পেট এবং নাভি দেখানো ছোট টপ পরলে দেখতে বেশ লাগে। কিন্তু আজকাল কী যে হয়েছে, যার স্তন দেখতে ভালো নয়, স্যাগিং, বা প্রায় ফ্ল্যাট, তারাও, বিশেষ করে সাংস্কৃতিক জগতের সেলেব্রিটিরা ডীপ ভি নেক ড্রেস পরেন। কেন যে পরেন, কী দেখাতে, বুঝি না। আর বিশাল বপুর কুচ্ছিত পুরুষগুলোও আঁটসাঁট জামা পরে চললেন। চোখ সরাতে পারলে বাঁচি! সমুদ্রতীরে, বা লেকের পাড়ে রোদ্রস্নান করতে থাকা সুইমিং কস্টিউম পরা ছেলে আর বিকিনি পরা মেয়ে দেখলে চোখের আরাম হয়। কিছুই না পরা ছেলে মেয়ে দেখলে তো মনের আরাম হয়। মানুষ যে প্রকৃতির সন্তান, তা তো নগরীর কোলাহলে অনেকটা ভুলতে বসেছি।’


আরও হাস্যকর ও অযৌক্তিক কথাবার্তা মুক্তচিন্তায় বলেছেন নারীবাদী তসলিনা নাসরিন। এই মূর্খ নারীবাদীটি আবার বলেছে যাদের স্তন দেখতে নাকি ভালো না তারা যাতে খোলামেলা পোশাক না পরে। নিজেই পড়ে দেখুন। “আনন্দ বাজার পত্রিকা” ২৫ মে ২০২২ তারিখে “যাঁদের স্তন দেখতে ভাল নয়, তাঁরা যে কেন খোলামেলা পোশাক পরেন বুঝি না: তসলিমা” শিরোনামে খবরে বলা আছে (৯),


তসলিমা লেখেন, ‘কিন্তু আজকাল কী যে হয়েছে, যার স্তন দেখতে ভাল নয়, স্যাগিং, বা প্রায় ফ্ল্যাট, তারাও, বিশেষ করে সাংস্কৃতিক জগতের সেলেব্রিটিরা ডীপ ভি নেক ড্রেস পরেন। কেন যে পরেন, কী দেখাতে, বুঝি না। আর বিশাল বপুর কুচ্ছিত পুরুষগুলোও আঁটসাঁট জামা পরে চললেন। চোখ সরাতে পারলে বাঁচি’! তিনি আরও লিখেছেন, ‘সমুদ্রতীরে, বা লেকের পাড়ে রোদ্রস্নান করতে থাকা সুইমিং কস্টিউম পরা ছেলে আর বিকিনি পরা মেয়ে দেখলে চোখের আরাম হয়। কিছুই না পরা ছেলেমেয়ে দেখলে তো মনের আরও আরাম হয়। মানুষ যে প্রকৃতির সন্তান, তা তো নগরীর কোলাহলে অনেকটা ভুলতে বসেছি’।


কিছু দিন আগে ফেসবুকে ব্লাউজহীন নারীর ভিডিও ভাইরাল হয়েছিল। সেই নারীকে আবার তসলিমা স্যালুট দিয়েছেন। চিন্তা করতে পারেন? তসলিমাকে নাস্তিকরা কেন প্রশ্ন করছে না যে সেই নারীর স্তন কি আপনার কাছে খুবই বৈজ্ঞানিক লেগেছিল নাকি? “Rtv NEWS” ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২২ তারিখে “ব্লাউজবিহীন শাড়ি পরা সাহসী মেয়েটিকে স্যালুট : তসলিমা নাসরিন” শিরোনামে খবরে বলা আছে (১০),


মেয়েরা যেন ছোট পোশাক না পরে, এই উপদেশ দিতে কিছু অশিক্ষিত, অসভ্য লোক তাদের অশ্লীল ব্যানার নিয়ে ঢাকার পথে নেমেছিল। তার প্রতিবাদে একটি মেয়ে ব্লাউজ ছাড়া শাড়ি পরে প্রতিবাদ করেছে। বলেছে তার নানি-দাদিকে সে ব্লাউজ ছাড়াই শাড়ি পরতে দেখেছে, কেউ কেউ মেয়েটির পক্ষ নিয়ে বাংলাদেশের এক টাকার নোট দেখিয়েছে, যে নোটে ব্লাউজবিহীন একটি গ্রামের মেয়ের ছবি ছাপানো। অথচ শহরের একটি মেয়েকে ব্লাউজ ছাড়া হাঁটতে দেখে অভুক্ত পুরুষের চোখ দিয়ে লালা ঝরেছে, অভুক্ত মেয়েদের চোখ দিয়ে হিংসে ঝরেছে। তিনি বলেন, আমি এই ব্লাউজবিহীন শাড়ি পরা সাহসী মেয়েটিকে স্যালুট দিচ্ছি। নষ্ট সমাজকে বদলানোর জন্য সাহসী মানুষের প্রয়োজন। অশিক্ষিত অসভ্য লোকদের চোখে জ্বালা ধরানোর জন্য, কানে তালা লাগানোর জন্য, নাকে ঝাঁঝালো গন্ধ দেওয়ার জন্য, মুখের ‘রা’ বন্ধ করার জন্য, উত্থানরহিত করার জন্য কিছু করা দরকার সব সময়। না হলে ওদের নিশ্বাসে কলুষিত হবে আকাশ-বাতাস। সমাজ পচে যাবে, মানুষের মৃত্যু হবে। তসলিমা নাসরিন আরও বলেন, বাঙালির পোশাক আদিকাল থেকেই স্বল্প। ব্লাউজ জিনিসটা একেবারেই নতুন, ব্রিটিশের নিয়ে আসা। যত কম পোশাক পরবে নারী-পুরুষ, ততই বাঙালিত্ব বাঁচবে। যখন নোংরা ধর্মযুদ্ধ চলছে, ধনীরা ঠকাচ্ছে গরিবদের, যখন লোভ লালসা হিংসে দ্বেষে অন্যায় অবিচারে পৃথিবী দুর্গন্ধময় হয়ে উঠছে, ক্রমশ মেকি হয়ে পড়ছে, তখন কিছু অশিক্ষিত লোক মেতে আছে মেয়েদের কাপড়-চোপড় নিয়ে, মূলত মরিয়া হয়ে উঠছে মেয়েদের বোরকা পরিয়ে নিজেদের ধর্মীয় রাজনীতির স্বার্থ উদ্ধার করতে।


মুক্তচিন্তার মানসিক রোগ এই নারীবাদী মহিলার মাথা এতো নষ্ট করে দিয়েছে যে সে ভালো মন্দের পার্থক্য করতেই ভুলে দিয়েছে। পাঠক আপনারা নিজেরাই যাচাই করে দেখুন উপরের কথাবার্তা কেমন অযৌক্তিক ও বৈপরীত্যযুক্ত। এই তসলিমাই আবার নারীদেরকে ধর্ষণ করতে উৎসাহিত করেছে। তসলিমা নাসরিনের একটি কবিতা আছে “পারো তো ধর্ষণ করো” নামে। এই কবিতায় সে স্পষ্ট বলেছে,


আর ধর্ষিতা হয়ো না, আর না, আর যেন কোনও দুঃসংবাদ কোথাও না শুনি যে তোমাকে ধর্ষণ করেছে। কোনও এক হারামজাদা বা কোনও হারামজাদার দল। আমি আর দেখতে চাই না একটি ধর্ষিতারও কাতর করুণ মুখ, আর দেখতে চাই না পুরুষের পত্রিকায় পুরুষ সাংবাদিকের লেখা সংবাদ পড়তে পড়তে কোনও পুরুষ পাঠকের আরও একবার মনে মনে ধর্ষণ করা ধর্ষিতাকে। ধর্ষিতা হয়ো না, বরং ধর্ষণ করতে আসা পুরুষের পুরুষাঙ্গ কেটে ধরিয়ে দাও হাতে, অথবা ঝুলিয়ে দাও গলায়, খোকারা এখন চুষতে থাক যার যার দিগ্বিজয়ী অঙ্গ, চুষতে থাক নিরূপায় ঝুলে থাকা অণ্ডকোষ, গিলতে থাক এসবের রস, কষ। ধর্ষিতা হয়ো না,পারো তো পুরুষকে পদানত করো, পরাভূত করো, পতিত করো, পয়মাল করো পারো তো ধর্ষণ করো, পারো তো ওদের পুরুষত্ব নষ্ট করো। লোকে বলবে, ছি ছি, বলুক। লোকে বলবে এমন কী নির্যাতিতা নারীরাও যে তুমি তো মন্দ পুরুষের মতই, বলুক, বলুক যে এ তো কোনও সমাধান নয়, বলুক যে তুমি তো তবে ভালো নও বলুক, কিছুতে কান দিও না, তোমার ভালো হওয়ার দরকার নেই, শত সহস্র বছর তুমি ভালো ছিলে মেয়ে, এবার একটু মন্দ হও। চলো সবাই মিলে আমরা মন্দ হই, মন্দ হওয়ার মত ভালো আর কী আছে কোথায়!


এটা কি বৈজ্ঞানিক কোনো সমাধান হতে পারে? কিভাবে? কেন? নারী যদি পুরুষকে ধর্ষণ করতে চায় তাহলে ধর্ষক পুরুষ কি তাতে রাজি হবে? নাকি বাধা দিবে? তাহলে তসলিমা কি আসলে এখানে ধর্ষণ করাকেই পরোক্ষভাবে উৎসাহিত করছে না? নারীবাদীটির কথায় কোনো যুক্তি পেলেন আপনি?

ডারউইনবাদ বৈজ্ঞানিক ফ্যাক্ট,বিরোধীতা করা হারাম?

মুক্তমনা নাস্তিকরা তাদের বই গুলোতে ডারউইনবাদকে ফ্যাক্ট ফ্যাক্ট বলতে বলতে মুখে ত্যানা ত্যানা করে ফেলে। কিন্তু দুনিয়ার সকল বিজ্ঞানীরা এই বিষয় একমত নয় যে ডারউইনবাদ ফ্যাক্ট অথবা প্রতিষ্ঠিত সত্য কিছু। গবেষণায় জানা যায় যে অনেক বিজ্ঞানী ডারউইনবাদ নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছে (১১)। তাই এটা নিশ্চিত করেই বলা যায় সব বিজ্ঞানীরা ডারউইনবাদকে ফ্যাক্ট হিসেবে স্বীকার করে না। তাহলে মূর্খ নাস্তিকরা যে ডারউইনবাদকে বৈজ্ঞানিক ফ্যাক্ট বলে চাপিয়ে দেয় সেটা কেন করে?

Over 500 doctoral scientists have now signed a statement publicly expressing their skepticism about the contemporary theory of Darwinian evolution.The Scientific Dissent From Darwinism statement reads: “We are skeptical of claims for the ability of random mutation and natural selection to account for the complexity of life. Careful examination of the evidence for Darwinian theory should be encouraged.” The list of 514 signatories includes member scientists from the prestigious US and Russian National Academy of Sciences. Signers include 154 biologists, the largest single scientific discipline represented on the list, as well as 76 chemists and 63 physicists. 

Signers hold doctorates in biological sciences, physics, chemistry, mathematics, medicine, computer science, and related disciplines. Many are professors or researchers at major universities and research institutions such as MIT, The Smithsonian, Cambridge University, UCLA, UC Berkeley, Princeton, the University of Pennsylvania, the Ohio State University, the University of Georgia, and the University of Washington Discovery Institute first published its Scientific Dissent From Darwinism list in 2001 to challenge false statements about Darwinian evolution made in promoting PBS’s “Evolution” series. At the time it was claimed that “virtually every scientist in the world believes the theory to be true.”“Darwinists continue to claim that no serious scientists doubt the theory and yet here are 500 scientists who are willing to make public their skepticism about the theory,” said Dr. John G. West, associate director of Discovery Institute’s Center for Science & Culture. “Darwinist efforts to use the courts, the media and academic tenure committees to suppress dissent and stifle discussion are in fact fueling even more dissent and inspiring more scientists to ask to be added to the list.”

ভাবানুবাদঃ পাঁচশো এর অধিক ডক্টরাল বিজ্ঞানী এখন ডারউইনীয় বিবর্তনের সমসাময়িক তত্ত্ব সম্পর্কে তাদের সংশয় প্রকাশ করে প্রকাশ্যে একটি বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছেন। ডারউইনবাদের বৈজ্ঞানিক ভিন্নমতের বিবৃতিতে বলা হয়েছে: “জীবনের জটিলতার জন্য এলোমেলো মিউটেশন এবং প্রাকৃতিক নির্বাচনের ক্ষমতার দাবি নিয়ে আমরা সন্দিহান। ডারউইনীয় তত্ত্বের প্রমাণের যত্ন সহকারে পরীক্ষাকে উৎসাহিত করা উচিত।" ৫১৪ স্বাক্ষরকারীর তালিকায় মর্যাদাপূর্ণ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং রাশিয়ান ন্যাশনাল একাডেমি অফ সায়েন্সেসের সদস্য বিজ্ঞানীরা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে ১৫৪ জন জীববিজ্ঞানী, তালিকায় প্রতিনিধিত্ব করা বৃহত্তম একক বৈজ্ঞানিক শৃঙ্খলা, সেইসাথে ৭৬ জন রসায়নবিদ এবং ৬৩ জন পদার্থবিদ অন্তর্ভুক্ত। স্বাক্ষরকারীরা জৈবিক বিজ্ঞান, পদার্থবিদ্যা, রসায়ন, গণিত, চিকিৎসা, কম্পিউটার বিজ্ঞান এবং সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ডক্টরেট ধারণ করে। 

অনেকেই প্রধান বিশ্ববিদ্যালয় এবং গবেষণা প্রতিষ্ঠান যেমন MIT, The Smithsonian, Cambridge University, UCLA, UC বার্কলে, প্রিন্সটন, পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, ওহিও স্টেট ইউনিভার্সিটি, জর্জিয়া বিশ্ববিদ্যালয় এবং ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক বা গবেষক। ডিসকভারি ইনস্টিটিউট ২০০১ সালে PBS-এর "বিবর্তন" সিরিজের প্রচারে করা ডারউইনীয় বিবর্তন সম্পর্কে মিথ্যা বিবৃতিকে চ্যালেঞ্জ করতে ২০০১ সালে তার বৈজ্ঞানিক ভিন্নমতের তালিকা প্রকাশ করে। সেই সময়ে দাবি করা হয়েছিল যে "বিশ্বের প্রায় প্রতিটি বিজ্ঞানীই তত্ত্বটিকে সত্য বলে বিশ্বাস করেন।" "ডারউইনবাদীরা দাবি করে চলেছেন যে কোনও গুরুতর বিজ্ঞানী তত্ত্বটি নিয়ে সন্দেহ করেন না এবং এখনও এখানে ৫০০ জন বিজ্ঞানী রয়েছেন যারা তত্ত্বটি সম্পর্কে তাদের সংশয় প্রকাশ করতে ইচ্ছুক,"-বলেছেন ডাঃ জন জি ওয়েস্ট, ডিসকভারি ইনস্টিটিউটের সেন্টার ফর সায়েন্স অ্যান্ড কালচারের সহযোগী পরিচালক। "আদালত, মিডিয়া এবং একাডেমিক মেয়াদের কমিটিগুলিকে ব্যবহার করার জন্য ডারউইনের প্রচেষ্টা ভিন্নমত দমন এবং আলোচনাকে দমিয়ে রাখার জন্য প্রকৃতপক্ষে আরও বেশি ভিন্নমতকে উস্কে দিচ্ছে এবং আরও বিজ্ঞানীদের তালিকায় যুক্ত করার জন্য অনুপ্রাণিত করছে।"


এমন বিজ্ঞানীদেরকেও দেখতে পাওয়া যায় যারা স্বয়ং সৃষ্টিতত্ত্ব ও ডারউইনিয়ান বিবর্তনবাদ উভয়টিকেও প্রত্যাখ্যান করেন। আপনারা যদি The third way of evolution লিখে সার্চ দেন তাহলেই পেয়ে যাবেন (১২)। সেখানে এমন প্রচুর বিজ্ঞানী রয়েছেন যারা ডারউইনবাদকে ফ্যাক্ট হিসেবে স্বীকার করেন না। উল্টো তিব্র সমালোচনা পর্যন্ত করেছেন। তাহলে নাস্তিক বিজ্ঞানীদের কথাবার্তা পুরো বিজ্ঞানের দিকে যে, নাস্তিকরা চাপিয়ে দিয়ে দাবি করতে চায় ডারউইনের বিবর্তনবাদ ফ্যাক্ট এটা কিভাবে মিথ্যাচার নয়?

অধিক সংখ্যা দেখে ডারউইনবাদ মিথ্যা এই কথা আমি বলছি না। আমি মূর্খ নাস্তিকদেরকে এটা বুঝাতে চাচ্ছি যে ডারউইনবাদ ফ্যাক্ট নয়। বিজ্ঞান জগতের বিজ্ঞানীরাই নিশ্চিত নয় যে ডারউইনবাদ সত্য কিনা। সেখানে যে সব নাস্তিকরা বলে যে ডারউইনবাদ ফ্যাক্ট তারা নিঃসন্দেহে মিথ্যা কথা বলে। ডারউইনবাদ যদি আসলেই সত্যি হতো তাহলে এমন এমন হাজার হাজার প্রাণীর ফসিল রেকর্ড থাকতো। তাই নয় কি? 

নাস্তিকরা বলে থাকে ৯৮% বিজ্ঞানী নাকি ডারউইনের বিবর্তনকে ফ্যাক্ট হিসেবে মেনে নিয়েছে। কিন্তু সত্য প্রতিষ্ঠিত সংখ্যার বেশি বা কমের কারণে হয় না। যদি তাই হতো তাহলে ভারতে বেশির ভাগ সনাতনীরা মানেন যে গোমূত্র অনেক পুষ্টিকর তাহলে নাস্তিকরা গোমূত্র খায় না কেন? তাছাড়া সংখ্যায় বেশি হওয়া যদি সত্যের মাপকাঠি হিসেবে ধরে নিতে চায় নাস্তিকরা তাহলে একইভাবে সৌদি আরবে তো বেশির ভাগ বলতে গেলে সব মানুষরাই আল্লাহ কুরআন নবী মোহাম্মদ (সা)কে মানেন তাহলে নাস্তিকরা কি এখন বলবে এসব প্রতিষ্ঠিত ফ্যাক্ট? কিন্তু নাস্তিকরা হয়তো জানেই না অসংখ্য বিজ্ঞানীরা দাবি করেছেন তারা ডারউইনিয়ান বিবর্তনবাদ নিয়ে নিশ্চিত নয় (১৩)। তাই সততার সাথে আমাদেরকে বলতে হবে যে ডারউইনিয়ান বিবর্তনবাদ ফ্যাক্ট নয় বরং একাধিক বিজ্ঞানীও এটা নিয়ে নিশ্চিত নয়। 

ডারউইনিয়ান বিবর্তনবাদ যদি আসলেই বাস্তব হতো তাহলে তো আমরা এরকম এলোমেলো প্রাণী বহুত দেখতে পারতাম এমনকি হাজার হাজার কোটি কোটি কংকাল থাকতো সেই প্রাণীদের। কি ভুল বললাম?



ডারউইনিয়ান বিবর্তনবাদের দৃষ্টিতে ভগবান হনুমানজির অস্তিত্ব থাকার সম্ভাবনা কেন থাকবে না? শিপ্পাঞ্জির জনৈক প্রজাতি থেকে ধাপে ধাপে যদি এই যুগের মানুষের অস্তিত্ব এসে থাকে তবে সেটার মধ্যবর্তী ফসিল অর্থাৎ "অর্ধেক মানুষ অর্ধেক বানর" এর চমৎকার প্রমাণ হিসেবে কাজ করতে পারে সনাতন ধর্মের এই হনুমান ভগবানজি। নাস্তিকদের থেকে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা বেশি মুক্তচিন্তা করে থাকেন বিশেষ করে নাগা সাধুরা, গৌতম মুনিরা, এনারা এতোই মুক্তমনা যে এনাদের ছবির পরোতে পরোতে প্রমাণ মেলে। সমকামী নাস্তিকদের মুক্তচিন্তা নাগা সাধুদের কাছে কিচ্ছু না,পাত্তাই পাবে না। উনাদেরকে দেখাতে চাচ্ছি না। কেন? এটা আপনারা নিজেরাই দেখে নিয়েন পরে। তাহলেই বুঝবেন কেন এখানে দেখায় নাই।


—---------


----------


হনুমানজি কথা বলতে পারেন, উনার দেহ পুরো মানুষের মতো হলেও মাথা বানরের মতো আরো সুন্দর কথা হচ্ছে উনার লম্বা একটি লেজও রয়েছে তাই সার্বিক বিবর্তনবাদের মুক্তচিন্তায় মধ্যবর্তী ফসিল হওয়ার জন্য হনুমানজি যথেষ্ট না কিভাবে? আচ্ছা এমনটি হতে পারে যে,ডারউইন লুকিয়ে লুকিয়ে রামায়ণ পড়েছিলেন? উনি হনুমানজির বিষয় কিছু গোপন রেখেছিলেন? নাস্তিকদের উচিত হবে বিষয়টি নিয়ে মুক্তমনে তদন্ত করা এবং খতিয়ে দেখা। কারণ বিবর্তনবাদ আপনার কাছে যদি আসলেই সত্য হয়ে থাকে তাহলে মধ্যবর্তী ফসিল হনুমানজি হওয়াতে বৈজ্ঞানিক সমস্যা কোথায়? হনুমানজিকে ফসিল হিসেবে ঘোষণা দিলে কি মুক্তচিন্তায় কবিরা গুনাহ হবে?

খৃষ্টান ও নাস্তিকরা একটি দাবি করে থাকে নবী মোহাম্মদ (সা) নাকি বাইবেল থেকে কুরআন কপি করে লিখেছে কিন্তু এর পক্ষে একটিও মজবুত প্রমাণ নাই। ইসলাম বিরোধীরা পারেও না প্রমাণ পেশ করতে। বরং বাইবেল হাজার হাজার ভুল আছে আর কুরআনে একটিও ভুল নাই। আমি কিন্তু এই দাবি করছি না যে বিজ্ঞানী ডারউইন রামায়ণ লুকিয়ে লুকিয়ে পড়ে বিবর্তনবাদ তত্ত্ব দিয়েছেন বৈজ্ঞানিক প্যাকেটে অথবা ডারউইন আসলে হিন্দু ধর্ম থেকেই বিবর্তনবাদের কনসেপ্টটা চুরি করেছে। আমি ইচ্ছা করলে বলতে পারতাম যে ডারউইন রামায়ণ থেকে বিবর্তনবাদের ধারণা চুরি করসে কিন্তু আমি কখনো এটা বলবো না। কারণ আমি নাস্তিকদের মতো মিথ্যুক নই।


—-



সাম্প্রতিক গবেষণা মতে, পৃথিবীতে অন্তত ১ লক্ষ কোটি মাইক্রোবিয়াল প্রজাতি থাকতে পারে; যার ৯৯.৯৯৯ শতাংশই এখনও অজানা (১৪)। এর আগের এক গবেষণায় অনুমান করা হয়েছে যে পৃথিবীতে সুকেন্দ্রিক প্রজাতির সংখ্যা প্রায় ৮ লক্ষের মতো; যার ৮০ শতাংশই অজানা (১৫)।


এককোষী ব্যাকটেরিয়া থেকে সকল প্রাণী জগত এলোমেলোভাবে কাকতালীয় ভাবেই হয়ে গিয়েছে-দাবিটি যে বিজ্ঞানবিরোধী, যুক্তিবিরোধী সেটা বুঝিয়ে বলার দরকার নেই। চিন্তাশীল মস্তিস্ক ওয়ালাদের কাছে এই একটা প্রমাণই যথেষ্ট। মুক্তচিন্তক,বিজ্ঞানমনস্ক ইত্যাদি বেশ ধরে বিজ্ঞানের নামে নিজেদের অন্ধবিশ্বাসকে বিজ্ঞানের প্যাকেটে ভরে বিক্রি করছে নাস্তিকরা। যারা বিজ্ঞান সচেতন তারা ঠিকই এসব ধরে ফেলে।


বিবর্তনবাদী ফসিলবিদ ড. হেনরি গী বলেন (১৬),


আমরা যখন খুঁটিয়ে দেখা শুরু করলাম, তখন সহসাই বুঝতে পারলাম-বিজ্ঞানীরা আসলে সত্যের ডালা সাজিয়ে বসে নেই। দেখতে পেলাম তারা বিজ্ঞানের একেবারে বুনিয়াদী বিষয় নিয়ে বাকবিতণ্ডায় লিপ্ত। বুক বেয়ে দীর্ঘশ্বাস নেমে এল। তারা তা হলে পুরোহিত ছিল না, গ্রেফ ধাপ্পাবাজ ছিল। বিজ্ঞানের দোকান খুলে তারা আমাদের লুটে নিল। দ্বারে দ্বারে তারা সর্বরোগের মহৌষধ ফেরি করে বেড়াল। অথচ বিজ্ঞান নিয়ে তারা নিজেরাই যে একমত হতে পারে না- এই বাস্তবতা সুকৌশলে ধামাচাপা দিয়ে রাখলযদি তারা নিজেরাই একমত হতে না পারে, তা হলে আমার-আপনার মতো ভালো মানুষগুলো কেন এদের বিশ্বাস করবে?


সার্বিক তথ্যপ্রমাণকে একত্র করলে এটা বলার যৌক্তিক সুযোগ নেইযে ডারউইনিয়ান বিবর্তনবাদ ফ্যাক্ট, এর বিরোধীতা করা হারাম। তারা ডারউইনিয়ান বিবর্তনবাদকে প্রতিষ্ঠিত সত্য বলে তারা আসলে অন্ধবিশ্বাসী।

বিজ্ঞানবিরোধী মুভি তৈরি করে টাকা উপার্জন কেন?

নাস্তিকরা দাবি করে ইসলামে নাকি অনেক বৈজ্ঞানিক ভুল রয়েছে। বিজ্ঞান শিক্ষার সাথে নাকি ইসলামের দ্বন্দ্ব রয়েছে। যদিও কথাটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। এই বিষয় আলাদা করে বিস্তারিত লিখবো। নাস্তিকরা যখন দাবি করে ইসলামে বৈজ্ঞানিক ভুল আছে তারমানে তারা চায় ইসলামে বৈজ্ঞানিক ভুল না থাকুক অথবা অন্য কোনো মানুষও যাতে বৈজ্ঞানিক ভুল না করুক। অর্থাৎ নাস্তিকরা বোঝাতে চায় বৈজ্ঞানিক ভাবে ভুল হবে এমন কাজ অথবা বিশ্বাস করা ঠিক না।

মিডিয়া জগতে হাজার হাজার বৈজ্ঞানিক ভুল কাজ করা হয় কিন্তু সেই দিকে বিজ্ঞানমনস্কদের চোখ কেন জানি যেতে চায় না। মুক্তমনা পরিচালকরা বিজ্ঞানবিরোধী মুভি বানিয়ে কোটি কোটি টাকা কামিয়ে নিচ্ছে। প্রশ্ন হচ্ছে বিজ্ঞানবিরোধী কাজ করে টাকা উপার্জন করা কি ভালো কাজ? আসুন জেনে নেই বিজ্ঞানবিরোধী কিছু মুভির নাম যার সাথে বাস্তবতার সম্পর্ক নাই।

আইরন ম্যান, স্পাইডার ম্যান, সুপার ম্যান, ব্যাট ম্যান, দ্যা এভেঞ্জারস,THE INCREDIBLES,BLACK PANTHER,AVENGERS: ENDGAME,LOGAN, WONDER WOMAN, GUARDIANS OF THE GALAXY,SHAZAM!,THE SUICIDE SQUAD,X-MEN: DAYS OF FUTURE PAST,DOCTOR STRANGE,ANT-MAN AND THE WASP,DEADPOOL,THE MASK,THE INCREDIBLE HULK,AQUAMAN

এছাড়া এসব বিজ্ঞানবিরোধী মুভির বিভিন্ন পার্ট আছে। যা বলতে থাকলে লিস্ট অনেক লম্বা হবে। মুক্তচিন্তায় এসব বিজ্ঞানবিরোধী মুভি বানিয়ে হাজার হাজার কোটি কোটি টাকা কামিয়ে নিচ্ছে। এমনকি বিজ্ঞানবিরোধী কার্টুন বানিয়ে পর্যন্ত টাকা কামাই করছে। এসব ডলার বা টাকা কি বৈধ? কিন্তু একটু মনোযোগ দিলে দেখা যায় বিজ্ঞানমনস্করা কখনো এসব বন্ধ করবার জন্য আন্দোলন করে নাই। আমার জানা নাই শাহবাগে কবে এসব বৈজ্ঞানিক ভুলে ভরা মুভির বিরুদ্ধে মুক্তমনারা আন্দোলন করেছে? নাস্তিকরা যেহেতু মনে করে হিন্দু ধর্মে বৈজ্ঞানিক ভুল আছে তাই হিন্দু ধর্ম বাতিল করতে হবে, নাস্তিকরা যেহেতু মনে করে খৃষ্টান ধর্মে বৈজ্ঞানিক ভুল আছে তাই খৃষ্টান ধর্ম বাতিল করতে হবে তাহলে একই যুক্তিতে বৈজ্ঞানিক ভুলে ভরা, বিজ্ঞানবিরোধী মুভি নাস্তিকরা কেন বাতিল করতে চায় না? প্রতিবাদ কেন করে না? হয়তো এখানে কেউ কেউ বলতে পারে যে তারা চায় কিন্তু তাদের চাওয়ার কারণেই তো বিজ্ঞানবিরোধী মুভি বানানো বন্ধ হতে পারে না। 

কারণ নাস্তিক্যধর্মের মুক্তচিন্তায় বিজ্ঞানবিরোধী কাজ করবার স্বাধীনতা রয়েছে। নাস্তিকরা এই সত্যিটা অস্বীকার করতে পারবে না। নাস্তিক্য চেতনার মূলভিত্তি হচ্ছে মুক্তচিন্তা। বিজ্ঞানমনস্কদের কাউকে কখনো বলতে শুনি যে , এসব বিজ্ঞানবিরোধী মুভি বানানো বন্ধ করে দেয়া হউক। এসব বিজ্ঞানবিরোধী মুভি দেখে মনে মনে সুখ নেবার মানে হয় না। মানুষরা কেন এসব পছন্দ করবে? মানুষদেরকে এসব দেখা থেকে বিরতি থাকা উচিত কারণ এগুলো বিজ্ঞানবিরোধী।

সেলিব্রেটি নাস্তিকরা বিজ্ঞানবিরোধী মুভি বানিয়ে কোটি কোটি ডোলার হাতিয়ে নিচ্ছে। অথচ একজন বিজ্ঞানমনস্ক লোকও তাদেরকে বলছে না যে যেই জিনিস নিষিদ্ধ সেই নিষিদ্ধ জিনিস দিয়ে টাকা উপার্জন করাও অমানবিক কাজ। বর্বর কাজ।

আসুন কিছু নাস্তিক সেলিব্রেটিদের নাম জেনে নেই (১৭),

Daniel Radcliffe  নাস্তিক। Brad Pitt নাস্তিক সংশয়বাদী। Angelina Jolie নাস্তিক। Johnny Depp ধর্মহীন। Kailyn Lowry নাস্তিক। Jenelle Evans নাস্তিক। Amber Heard নাস্তিক। Kathy Griffin উগ্রবাদী নাস্তিক। Keira Knightley নাস্তিক। Morgan Freeman নাস্তিক। Seth Macfarlane নাস্তিক। 

এরা লাইফে বিভিন্ন সময়ে বিজ্ঞানবিরোধী মুভিতে কখনো নায়ক সেজেছিল আবার কখনো নায়িকা আবার কখনো ভিলেন। আমি এখানে বিস্তারিত বলছি না। এটা একটা টাস্ক আপনাদের জন্য তারা নিজেদের জীবনে কতটা বিজ্ঞানবিরোধী তা মুক্তচিন্তায় সন্ধান করা।

সায়েন্স ফিকশন কেন থাকবে?

প্রথমে বুঝে নেই, সায়েন্স ফিকশন বলতে কি বুঝায়। Science Fiction–বাংলায় 'কল্পবিজ্ঞান' বা 'বিজ্ঞান কল্পকাহিনি'। ইংরেজি শব্দযুগলটির জন্ম ১৮৫১ সালে, উইলিয়াম উইলসনের কলম থেকে। তবে শব্দ দুটো জনপ্রিয় করে তোলেন হুগো গার্নজব্যাক। প্রথম আমেরিকান সায়েন্স-ফিকশন ম্যাগাজিন 'অ্যামেজিং স্টোরিজ'-এর প্রথম সংখ্যায় তিনি প্রথম 'সায়েন্টিফিকশন' শব্দটি ব্যবহার করেন। সেই থেকে কালের বিবর্তনে শব্দটি হয়ে উঠেছে 'সায়েন্স ফিকশন'। সায়েন্স ফিকশন বা কল্পবিজ্ঞান বলতে মূলত সেসব কাহিনিকে বোঝায়, যেগুলোতে বিজ্ঞানের সাথে কোনো কাল্পনিক গল্পকে মিশিয়ে উপস্থাপন করা হবে। অর্থাৎ, বিজ্ঞানকে প্রাধান্য দিয়ে যে সাহিত্য রচনা করা হয়, তা-ই কল্পবিজ্ঞান। অতএব, সায়েন্স ফিকশনে বিজ্ঞান অবশ্যই থাকতে হবে। সায়েন্স ফিকশনের গ্র্যান্ডমাস্টার হিসেবে স্বীকৃত আইজ্যাক আজিমভের মতে, যুক্তি দিয়ে বিজ্ঞানকে গল্প লেখার কাজে ব্যবহার না করলে সত্যিকারের কল্পবিজ্ঞান সৃষ্টি সম্ভব নয়।



মুহম্মদ জাফর ইকবাল বাংলা ভাষায় রচিত সায়েন্স ফিকশন বা বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনির একচ্ছত্র সম্রাট। ‘কপোট্রনিক সুখ দুঃখ’ রচনার মাধ্যমে এ-ধারার সাহিত্য তাঁর প্রথম আবির্ভাব। বিজ্ঞানকে উপলক্ষ্য করে কল্পনার বিস্তারে অসামান্যতা তাঁর শ্রেষ্ঠ সম্পদ। তিনি একই সঙ্গে বস্তুনিষ্ঠ বিজ্ঞানী ও স্বপ্নচারী রোমান্টিক। তাঁর সাহিত্যে ও বিজ্ঞানের বস্তুনিষ্ঠা ও মানবীয় কল্পনার সম্মিলন ঘটেছে। মাতৃভূমি, মানুষ ও ধরিত্রীর প্রতি নৈতিকতা দায়বদ্ধতা তাঁর সাহিত্যিক মানসের প্রধান বৈশিষ্ট্য। বাংলাদেশের বিজ্ঞানমুখী তরুণ-প্রজন্মের তিনি আইডল বা আদর্শ। কিশোর উপন্যাস এবং ছোটগল্প রচনাতেও তিনি দক্ষতার সাক্ষর রেখেছেন। কিশোর উপন্যাস ‘দীপু নাম্বার টু’, ‘আমার বন্ধু রাশেদ’ এবং ‘আমি তপু’ তাঁর অন্যতম শ্রেষ্ঠ রচনা। ‘মহাকাশে মহাত্রাস’, ‘টুকুনজিল’, ‘নিঃসঙ্গ গ্রহচারী’, ‘একজন আতিমানবী’, ‘ফোবিয়ানের যাত্রী’সহ অনেক পাঠকপ্রিয় সায়েন্স ফিকশন বা বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনির তিনি সৃষ্টা। ২০০৪ খ্রিস্টাব্দে বিজ্ঞান লেখক হিসেবে তিনি বাংলা একাডেমি পুরস্কার লাভ করেন।



বিজ্ঞানমনস্করা মুক্তচিন্তায় কেন এই প্রশ্ন গুলো করে না যে সাইন্স ফিকশন কাহিনী গুলো বন্ধ করে দেয়া দরকার? কাল্পনিক গল্প বানিয়ে মানুষকে বিজ্ঞান থেকে দূরে সরিয়ে দেয়া হচ্ছে না তো? সাইন্স ফিকশন বইতে অথবা মুভিতে বাস্তব কাহিনী থাকে না, অবাস্তব ও অসত্য গল্প মানুষ কেন পড়বে? সত্য ও বাস্তব ভিত্তিক গল্প কাহিনী মানুষ পড়তেই পারে কিন্তু বিজ্ঞানমনস্ক মুক্তমনারা এলিয়েনদের গল্প, ডোরেমনদের গল্প ইত্যাদি কেন পড়বে? এগুলো বাতিল করে কেন দিতে চাচ্ছে না বিজ্ঞানমনস্ক মুক্তমনারা? মুক্তমনারা কুরআনকে নিষিদ্ধ করে দিতে চায় এছাড়া বিভিন্ন ধর্মের কাহিনী গুলোকে নিষিদ্ধ করে দিতে চায়, বাতিল করতে চায় তাহলে তারা কেন সাইন্স ফিকশনের সকল বই,মুভি,গল্প, কবিতা, কাহিনী বন্ধ করে দিতে চায় না?




ডারউইনিয়ান বিবর্তনবাদের জনপ্রিয় সেই ছবিটিঃ



বিবর্তন শব্দটি শুনতেই কোনো ছবি যদি আমাদের চোখে ভেসে উঠে তবে তা হল উপরের ছবিটি। কিন্তু মজার ব্যাপার হল এই ছবিটি সঠিক নয়। এটা আমি বলছি না বরং তা মূলধারার নাস্তিক, সেকুলার, বিবর্তনে বিশ্বাসী গবেষকরাই বলছেন।


বিখ্যাত Peer Reviewed জার্নাল Nature এর বায়ােলজির সিনিয়র এডিটর বিবর্তনবাদী ও নাস্তিক ড. হেনরি গী (Dr. Henry Gee) তাঁর সাম্প্রতিক গ্রন্থ 'The Accidental Species: Misunderstandings of Human Evolution (2013) এ বলেছেন (১৮), 


এই ছবি ডারউইনীয় বিবর্তনের ভুল প্রতিচ্ছবি বরং তাঁর মতে তা পুরনাে যুগের The Great Chain of Being এর সাথে মিলে যায়।


আরেক বিবর্তনবাদী ও নাস্তিক, ফ্লোরিডা স্টেট ইউনিভার্সিটির সুপরিচিত ফিলােসফার অফ সাইন্স প্রফেসর মাইকেল রুজ (Michael Ruse) তাঁর সাম্প্রতিক গ্রন্থ 'The Philosophy of Human Evolution (2012) গ্রন্থে স্পষ্ট বলেছেন (১৯),


এই ছবি ডারউইনিয় বিবর্তনের সঠিক প্রতিচ্ছবি নয়


বহু বছর আগেই হার্ভার্ডের ইভােলিউশনারি নাস্তিক জীববিজ্ঞানী  স্টিফেন যেগােল্ড তাঁর গ্রন্থে এই ছবির অসারতা তুলে ধরে সমালােচনা করেছিলেন (২০)। তাছাড়া Peer Reviewed গবেষণাপত্রে আধুনিক বিবর্তনবাদি জীববিদ্যার কেন্দ্রীয় স্তম্ভ বহুল পরিচিত ‘ইউনিভার্সাল কমন এনসেস্ট্রি'র (Universal Common Ancestry) অনুকল্পকে মূলত অনুমান নির্ভর বলা হয়েছে যার স্বপক্ষে বৈজ্ঞানিক যাচাইয়ে মনােযােগ খুবই কম দেয়া হয়েছে। যা যাচাই করাও মূলত কঠিন একটা কাজ (২১)। অপর Peer Reviewed জার্নাল Science অনুযায়ী আমাদের হাতে থাকা নগণ্য প্রমাণের উপর ভিত্তি করে এত এত বছর আগে মানবের বিবর্তনে আসলে কী হয়েছিল তার সমাধান মূলত অনুমান নির্ভর (২২)।


এমনকি রিচার্ড ডকিন্স নিজেও এটা স্বীকার করে বলেছেন যে (২৩),


ডারউইন হয়তো বিংশ শতকের শেষে সফল হয়েছিলেন তবে আমাদের অবশ্যই এই সম্ভাবনার কথা স্বীকার করতে হবে যে, ভবিষ্যতে নতুন কোনো তথ্য প্রকাশিত হতে পারে যা একবিংশ শতকে আমাদের উত্তরসূরিদের বাধ্য করবে ডারউইনিয় তত্ত্ব পরিত্যাগ করতে অথবা এমনভাবে বদলে দিতে যার আর ডারউইনের মতবাদ বলে চেনাই যাবে না।


এই নাস্তিক লোকটি এরপরেও নিজের মুরিদদের প্রশংসা পাবার জন্য নিজের কথার উল্টো কথাও বলে থাকে। নাস্তিকরা যৌক্তিক মানসিকতায় এতো দুর্বল যে প্রচুর পরস্পর বৈপরীত্য কথা এদেরকে বলতে পাওয়া যায়।



অনেক নাস্তিক এই কথাটিও জানে না যে ডারউইন আসলে পাগল ছিল। আর যদি নাস্তিকরা এই তথ্যটি জেনেও থাকে তাহলে ধাপাচামা দিয়ে রাখতে চাইবে। কারণ অসুস্থ রোগী পাগল লোক যে কোনো কিছু দাবি করে ফেলতে পারে। অসাধু মানুষ নিজেদের স্বার্থে যদি সেই পাগলের কথাকে অন্ধবিশ্বাস করে বৈজ্ঞানিক ফ্যাক্ট বলে চালিয়ে দেয় তাহলে তো বিরাট সমস্যা।


ডারউইনের মানসিক অবস্থা নিয়ে বহু গবেষণা হয়েছে। ডারউইন বলেছিলেন যে, তার স্বাস্থ্যগত সমস্যাসমূহ ১৮৫২ সালের প্রথমদিকে মাত্র ১৬ বছর বয়সে শুরু হয়েছিল এবং প্রায় ২৮ বছর বয়সের দিকে তাকে অক্ষম করে দিয়েছিল। ‘ডারউইন অসুস্থ ছিল এমনকি নিজেকে একাকী ৪০ বছর আবদ্ধ করে রেখেছিল’। ডারউইনবাদী দার্শনিক মাইকেল রুশ লিখেছেন যে, “ডারউইন তার ৩০ বছর বয়স থেকে অসুস্থ’। ডারউইনের অসুস্থতা নিয়ে ব্যাপক গবেষণাযর পরে চিকিত্সক জর্জ পিকারিং এই সিদ্ধান্ত দিয়েছিলেন যে, ৩০ বছর বয়সে ডারউইন ‘অচল নিঃসংগচারীতে’ পরিণত হয়েছিলেন। লস এঞ্জেলসের ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন বিভাগের অধ্যক্ষ ড. রবার্ট প্যাসনউ লিখেছেন, HMS Beagle জাহাজে ভ্রমণের টানা ৫ বছর-ই ডারউইন ‘নিরবিচ্ছিন্নভাবে অসুস্থ ছিল’।


ডারউইন এতো হীনমন্যতায় ভুগতো যে নাস্তিক নাকি সংশয়বাদী,স্রষ্টা আছে নাকি নাই এসব নিয়েও সে নিশ্চিত ছিল না (২৪)। কোনো মানুষ যখন যুক্তিবিদ্যায়,জ্ঞানে,বিজ্ঞানে দুর্বল হয় এসব নিয়ে নিশ্চিত সিদ্ধান্তে তখন আসতে পারে না।


ডারউইনের অসুস্থতার প্রশ্নে কয়েক ডজন বিজ্ঞানের নিবন্ধ এবং অন্তত তিনটি বই লেখা হয়েছে। বর্তমান গবেষণা অনুযায়ী, ডারউইন অ্যাগোরাফবিয়া [ভিড়ভীতি] সহ বিভিন্ন গুরুতর এবং মস্তিষ্ক অক্ষমকারী মানসিক ব্যাধিতে ভুগছিলেন। অ্যাগোরাফবিয়া হল, মানসিকভাবে নিরাপদ পরিবেশ, যেমন-নিজের বাড়ি, ভিন্ন অন্যত্র আক্রমণের ভয়ে ভীত থাকা। অন্যান্য ভিড়ভীতিতে আক্রান্ত রোগীদের মত ডারউইন বেশ কিছু জিনিস ভয় করত, যেমন- জনাকীর্ণতা ভয় করা, একা একা ভয় পাওয়া, নিজ স্ত্রী ছাড়া বাড়ির বাইরে যেতে ভয় পাওয়া ইত্যাদি। ডারউইন সম্পর্কে এর থেকেও ভয়াবহ অনেক অজানা খবর আপনি হয়তো জানেন না অথবা আপনাকে জানতে দেয়া হয় নাই। তাই বিস্তারিত এখান (২৫) থেকে প্রমাণসহ জেনে নিন।


আপেন্ডিক্সের কাজ নাই ও জাঙ্ক ডিএনএ বিশ্বাসটি বৈজ্ঞানিক সত্য?

নাস্তিক মুক্তমনারা স্রষ্টার খারাপ নকশাকে প্রমাণ করতে বলে থাকে যে আপেন্ডিক্সের কোনো কাজ নাই। এটাই নাকি প্রমাণ যে আমরা সবাই বিবর্তিত হয়েছি। স্রষ্টা যদি আমাদেরকে বানাতোই তাহলে নাকি আপেন্ডিক্সের কাজ অবশ্যই থাকতো। পড়াশোনা একটু করলেই তারা বুঝতে পারতো যে মানব দেহে আপেন্ডিক্সের অনেক কাজ রয়েছে। 


উইলিয়াম পার্কার, র‌্যান্ডি বলিঞ্জার এবং ডিউক বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকর্মীরা ২০০ 2007 সালে প্রস্তাব করেছিলেন যে অসুস্থতা যখন অন্ত্রের বাকী অংশ থেকে ব্যাকটিরিয়াকে ফ্লাশ করে তখন অ্যাপেন্ডিক্স দরকারী ব্যাকটিরিয়ার আশ্রয়স্থল হিসাবে কাজ করে (২৬)।


এছাড়া আরও আপেন্ডিক্সের কাজ জানতে এই লেখা গুলো পড়তে পারেন (২৭),(২৮),(২৯)। সত্যিটা কি এখন নাস্তিকরা মেনে নিবে নিজেদের মিথ্যা ও বিজ্ঞানবিরোধী ভুল বিশ্বাস ত্যাগ করে? শুধু কি তাই? নাস্তিকরা এও বিশ্বাস করে থাকে যে আমাদের মানুষের দেহে নাকি জাংক ডি এন এ আছে। অথচ নাস্তিকদের এই বিশ্বাস গুলো বৈজ্ঞানিক ভুল। এই ভিডিওটি (৩০) দেখতে পারেন বিস্তারিত জানতে হলে।


আক্কেল দাঁত খারাপ ডিজাইন বিশ্বাসটি বৈজ্ঞানিক সত্য?

বিজ্ঞান না জানা অনেক নাস্তিকরাই এই কথা বিশ্বাস করে রাখে যে আমাদের আক্কেল দাঁতের কোনো কাজ নাই। এই দাঁত প্রয়োজনহীন। স্রষ্টা যদি এই দাঁত সৃষ্টি করতই তাহলে অবশ্যই এই দাঁতের কাজ থাকতো কিন্তু যেহেতু এই দাঁতের কাজ নাই তাই স্রষ্টা বলে কিছু নাই। কারণ স্রষ্টা তো আর খারাপ ডিজাইন বানাবে না। তাই এই দাঁতটি আসলে বিবর্তনবাদের প্রমাণ। নাস্তিকদের এই বিশ্বাসকে অনেক আগেই আধুনিক বিজ্ঞান ভুল প্রমাণ করে দিয়েছে।

আক্কেল দাঁত (wisdom teeth)। চাপার এক্কেবারে শেষের ৪টা দাঁত। কটমটা ভাষায়, 4 pieces of third molar teeth are called wisdom teeth। যদিও আক্কেল বা wisdom এর সাথে এর কোনোই সম্পর্ক নাই। আক্কেল দাঁত সহ, আমাদের মোট দন্তসংখ্যা দাঁড়ায় ৩২, যদিও সবার ৩২ টা হয় না।



আক্কেল দাঁত উঠার ব্যাথা সহ্য করেননি এমন মানুষ খুব কম। কিন্তু আমাদের মধ্যে একটা অন্ধবিশ্বাস প্রচলিত আছে যে এই আক্কেল দাঁতকে অনেক আগে থেকেই আমাদের দেহের অন্যতম একটি অপ্রয়োজনীয় বা আজাইরা অঙ্গ (vestigial organ) হিসেবেই ধরে নেয়া হয়েছে। কি কারণ জানেন?

ডারউইনবাদীরা বলে থাকেন,

আমাদের পূর্বপুরুষদের নীচের ও ওপরের চোয়াল যথেষ্ঠ লম্বা আর চাপা ছিল বিধায় আক্কেল দাঁতসহ ৩২ টি দাঁত খুব সুন্দর করে উঠার জায়গা পেত। এবং সেই সবগুলো দাঁত তাদের চিবাতে খুব সহায়তা করতো। এমনকি আমাদের ইমেডিয়েট পূর্বপুরুষ নিয়ান্ডারথালেরও সবগুলো দাঁত জায়গা দেয়ার মতো লম্বা আর চাপা চোয়াল ছিল। কিন্তু ক্রমাগত বিবর্তনের ধারায় জিনের র‍্যান্ডম কিছু মিউটেশান (পরিবর্তনের) ফলে, আমাদের চোয়াল হয়ে যায় খাঁটো আর চওড়া। ফলে আক্কেল দাঁত উঠার মতো পর্যাপ্ত জায়গা চোয়ালে আর থাকেনা।



আর যদিও কষ্ট করেও উঠে, তা আমাদের কোনো কাজে তো আসেই না বরং তা প্রায় সময়েই তৈরী করে impacted molar tooth এর মতো প্রচুউউউর ব্যাথাময় একটি ডেন্টাল সমস্যার (ছবিতে impacted molar tooth সম্পর্কে দেয়া আছে), যার একটামাত্র চিকিৎসা হলো, তুইলা ফালান, তুইলা ফালান, আক্কেল দাঁত ধইরা তুলে ফালান। বিবর্তনের ফলে চোয়ালের গঠনের পরিবর্তন আসায়, বিবর্তনবাদীরা এই আক্কেল দাঁতকে মানব বিবর্তনের স্বপক্ষের একটি প্রমাণ হিসেবে বিশ্বাস করে আসছেন, যা একসময় পূর্বপুরুষের কাজে এসেছিল, কিন্তু এখন লুপ্তপ্রায়।



আবার,সংশয়বাদীদের (যারা স্রষ্টার অস্তিত্ব নিয়ে সন্দিহান) মতে, আক্কেল দাঁতের যেহেতু কেবল ভোগান্তি ছাড়া আর কোনো কাজ নেই, তাই এটি হচ্ছে মানুষের শরীরের অন্যতম ব্যাড ডিজাইন বা খারাপ নকশা। যা বিবর্তনের প্রত্যক্ষ এবং স্রষ্টার অস্তিত্ব না থাকার পরোক্ষ প্রমাণ। কেননা, সৃষ্টিকর্তা যদি থেকেই থাকতেন, তাহলে মানুষের প্রত্যেকটি অঙ্গ সৃষ্টি হতো মানুষের উপকারের জন্যে। কিন্তু এই আক্কেল ব্যাডা কাম তো করেই না, কেবল তো আকামই করে যাইতেসে। সুতরাং স্রষ্টা বলতে কেউ নেই এবং আমরা নিছক র‍্যান্ডমলি তৈরী হওয়া প্রকৃতি প্রদত্ত সন্তান, যা ক্রমাগত বিবর্তনের ধারায় আজ এই পর্যায়ে এসেছে। আর প্রকৃতির র‍্যান্ডম ডিজাইনে ভুল থাকবে এটাই স্বাভাবিক। যদিও এটা একটি কুযুক্তি (logical fallacy), যাকে বলা হয় slippery slope। একটি ছোট প্লট ব্যবহার করে (পিছলা খেয়ে) বিশাল একটা সিদ্ধান্তে চলে আসা। নাস্তিক সংশয়বাদীদের কথাবার্তায় লজিকাল ফ্যালাসিতে ভরপুর।

কিন্তু আসলেই কি তাই? আসলেই কি আক্কেল দাঁত মানুষের বিবর্তনের ফসল? আসলেই কি আক্কেল দাঁতের ব্যাথা দেয়া ছাড়া কোনো কাজ নেই? অবশ্যই না। 

আক্কেল দাঁত ঠিকভাবে না ওঠার কারণ হিসেবে "আমাদের ছোট আর চওড়া চোয়াল" (যা ৩২ টি দাঁত ধারণ করার জন্যে উপযোগী নয়) কে দায়ী করা যায় ঠিক, কিন্তু তা মোটেই বিবর্তনের ফসল, ব্যাড ডিজাইনের ফসল নয়। বরং তা আমাদের খাদ্যাভাসের ফল। এই কথাই বলছে আধুনিক বিজ্ঞান  (৩১)

কেমন কেমন ঠেকছে? জ্বী, ঠিকই বলছি। ফুড হ্যাবিট বা খাদ্যাভাস। যে মানুষ তার চোয়াল দ্বারা কম চিবোয়, সর্বদা রিফাইন্ড, নরম কিংবা সহজেই গলধঃকরণ করা যায়, এমন খাবার খেয়ে অভ্যস্থ, সেই মানুষের চোয়াল এপিজেনেটিক চেইঞ্জের কারণে খাটো ও চওড়া হয়ে। ফলে আক্কেল দাঁত ওঠার জন্যে উপযুক্ত জায়গা পায়না। ফলাফল: impacted molar teeth. এপিজেনেটিক্স সহজভাষায় বললে, আমরা পূর্বে মনে করতাম যে, জিনই হলো আমাদের শরীরের সবকিছুর কন্ট্রোলার। জিনে যা আছে, আমরা তাই হবো। এবং তা হবে অপরিবর্তনীয়। কিন্তু বাস্তবে যেমন দেখা যায় বাপেরও বাপ আছে, তেমন জিনেরও কন্ট্রোলার আছে। পরিবেশ, ডায়েট, আচরণ, বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীন যেকোনো কিছুর প্রভাবে জিনের গঠন পুরোপুরি অক্ষত থেকেও জিনের প্রকাশভঙ্গী পুরোপুরি ভিন্ন হতে পারে। দুটো একই ধরণের জিন থেকে একদম ভিন্নধর্মী এমনকি পরস্পর বিপরীতধর্মী দুটি বৈশিষ্ট্যও প্রকাশ পেতে পারে। জিনের উপরে কাজ করে বলে এহেন জেনেটিক্স বিদ্যার নাম epigenetics. (Epi= উপরে)।

আর যেসকল মানুষ সর্বদা শক্ত খাবার খায় ও খাবার বেশি চিবিয়ে খায়, তাদের চোয়াল লম্বা ও চ্যাপ্টা হয়। ফলে তাদের চোয়ালে ৩২ টা দাঁত হওয়ার মতো উপযুক্ত স্থান তৈরী হয়।

অর্থাৎ দেখা যাচ্ছে যে, চোয়ালের আকৃতি কোনোভাবেই বিবর্তনের ফসল নয়। বরং তা আমাদের কিছু ফুড হ্যাবিটের ফল। আমরা যত মাংসাশী থেকে শাকাশী হয়েছি আমাদের চোয়াল তত খাটো আর চওড়া হয়েছে (৩২)। এবং কেউ যদি উপযুক্ত ফুড হ্যাবিট মেইন্টেইন করতে পারে, তার চোয়ালও তার পূর্বপুরুষের লাহান লম্বা ও চওড়া হতে পারে। সহজেই ধারণ করতে পারে ৩২ টি দাঁত। চিবাতে পারে নিমিষেই। এখানে বিবর্তনবাদ বিন্দুমাত্র ভূমিকাও পালন করবে না।

এমনকি রিসেন্ট গবেষণায় এটিও প্রতীয়মান হয়ে এসেছে যে, যে সকল বাচ্চাদেরকে তাদের মা উপযুক্ত সময়ের আগেই weaning করান(ব্রেস্টফিডিং বন্ধ করে অন্য খাবার খাওয়ান) কিংবা ফিডারে খাওয়ানোর অভ্যাস করান অথবা চুষনী দেয়ার অভ্যাস করান, সেই বাচ্চাদের চোয়ালও খুব চওড়া আর খাটো হয়। ফলে তাদের দুধদাঁত গুলো অল্প জায়গায় জটলা বেঁধে উঠে (overcrowding teeth) এবং পরে যখন একসাথে অনেকগুলো দুধ দাঁত পড়ে গিয়ে নতুন দাঁত একটা একটা করে ওঠে, তখন খালি জায়গা পেয়ে দাঁতগুলো অনেক মোটা মোটা আর ফাঁকা ফাঁকা হয়ে ওঠে। (খালি জায়গা পেলে কে না আরাম করে বসতে চায়?) আর বয়স হলে আক্কেল দাঁত উঠার জায়গার সংকুলানের কারণে, হয় impacted molar teeth (৩৩)।

তাছাড়া মানুষের চেহারার জন্যে যে হাঁড়গুলো দায়ী সেগুলোর গঠনও পরিবেশের ওপর ডিপেন্ড করে (৩৪),(৩৫)। অর্থাৎ চেহারার হাড় তৈরীর জিনে যাই লেখা থাকুক, পৃথিবীর তাবোদ মানুষের, এমনকি কুকুর, বিড়াল, বানরের, চেহারার জিন যতই একরকম হউক না কেন, জিনের প্রকাশভঙ্গী পুরোপুরি নির্ভর করবে বিভিন্ন ফ্যাক্টরের ওপর। এককথায় জিনেরও বাপ আছে। বাপের নাম এপিজেনেটিক্স। সুতরাং একটা মানুষের চেহারা শিম্পাঞ্জীর মতো লাগছে বলে, আর তার চেহারার জিনের সাথে শিম্পাঞ্জীর জিনের মিল আছে বলে, আমাদের পূর্বপুরুষ শিম্পাঞ্জী টাইপ কিছু হবে, এমন ভাবাটা নিছক বোকামি ছাড়া কিছুই না। আফসোস, এই ইনফরমেশনগুলো কখনোই ফলাওভাবে প্রচার করা হবে না।  বইপত্রে কখনোই "প্রমাণিত সত্য" -এর মতো আসবে না। কারণ কি কেউ ধারণা করতে পারেন? যারা নিজেদেরকে বিজ্ঞানমনস্ক দাবি করে থাকেন তারা নিজেদের অন্ধবিশ্বাস ত্যাগ করবেন কিনা সেটা প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে।

সমকামীতা প্রথার চর্চা কুসংস্কার নয় কিভাবে?

সমকামীতা নিকৃষ্ট বর্বর একটি ভাবনা ও কুসংস্কার ছাড়া কিছু নয়। দেহে গে-জিন আছে বলে একটা সময় নাস্তিকগোষ্ঠীর সমকামীরা ফালাফালি করতো বিজ্ঞানের নামে কিন্তু বর্তমানের আধুনিক বিজ্ঞান সরাসরি স্বীকার করে নিয়েছে যে গে-জিন বলে আসলে কিছুই নেই। প্রমাণ দিয়ে দিচ্ছি। পড়েন। গুরুত্বপূর্ণ কথা গুলো আমি তুলে ধরছি আপনারা চাইলে সরাসরি লিংক থেকে বিস্তারিত বৈজ্ঞানিক গবেষণাটি পড়ে নিন।

“BBC NEWS” পত্রিকায় 29 August 2019 তারিখে “No single gene associated with being gay” শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ করা হয় (৩৬)। সেখানে বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক তথ্যপ্রমাণ (৩৭) উল্লেখ করে বর্ণিত হয়েছে,

A genetic analysis of almost half a million people has concluded there is no single "gay gene".......Advocacy group GLAAD said the study confirmed "no conclusive degree to which nature or nurture influenced how a gay or lesbian person behaves." Ben Neale, an associate professor in the Analytic and Translational Genetics Unit at Massachusetts General Hospital, who worked on the study, said: "Genetics is less than half of this story for sexual behaviour, but it's still a very important contributing factor. "There is no single gay gene, and a genetic test for if you're going to have a same-sex relationship is not going to work. "It's effectively impossible to predict an individual's sexual behaviour from their genome." Fah Sathirapongsasuti, senior scientist at 23andMe, added; "This is a natural and normal part of the variation in our species and that should also support precisely the position that we shouldn't try and develop gay 'curism'. That's not in anyone's interest." David Curtis, honorary professor at the UCL Genetics Institute, University College London, said: "This study clearly shows that there is no such thing as a 'gay gene'. Zeke Stokes, from the LGBT media advocacy organisation GLAAD, said: "This new research re-confirms the long-established understanding that there is no conclusive degree to which nature or nurture influence how a gay or lesbian person behaves."

ভাবানুবাদঃ প্রায় অর্ধ মিলিয়ন মানুষের একটি জেনেটিক বিশ্লেষণ এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে যে কোনও একক "সমকামী জিন" নেই।……..অ্যাডভোকেসি গ্রুপ GLAAD বলেছে যে সমীক্ষাটি নিশ্চিত করেছে যে "একজন সমকামী বা সমকামী ব্যক্তি কীভাবে আচরণ করে তা প্রকৃতি বা লালন-পালন প্রভাবিত করে।" ম্যাসাচুসেটস জেনারেল হাসপাতালের অ্যানালিটিক অ্যান্ড ট্রান্সলেশনাল জেনেটিক্স ইউনিটের সহযোগী অধ্যাপক বেন নিলে, যিনি গবেষণায় কাজ করেছেন, বলেছেন: "জেনেটিক্স যৌন আচরণের জন্য এই গল্পের অর্ধেকেরও কম, তবে এটি এখনও একটি গুরুত্বপূর্ণ অবদানকারী কারণ "কোনও একক সমকামী জিন নেই, এবং আপনি সমকামী সম্পর্ক করতে যাচ্ছেন কিনা তার জন্য একটি জেনেটিক পরীক্ষা কাজ করবে না। "একজন ব্যক্তির যৌন আচরণ তাদের জিনোম থেকে ভবিষ্যদ্বাণী করা কার্যকরভাবে অসম্ভব। "Fah Sathirapongsasuti, 23andMe-এর সিনিয়র বিজ্ঞানী যোগ করেছেন; "এটি আমাদের প্রজাতির বৈচিত্র্যের একটি স্বাভাবিক এবং স্বাভাবিক অংশ এবং এটিকে সঠিকভাবে সমর্থন করা উচিত যে আমাদের সমকামী 'কিউরিজম' বিকাশের চেষ্টা করা উচিত নয়। এটি কারও স্বার্থে নয়।" ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের ইউসিএল জেনেটিক্স ইনস্টিটিউটের অনারারি প্রফেসর ডেভিড কার্টিস বলেছেন: "এই গবেষণাটি স্পষ্টভাবে দেখায় যে 'গে জিন' বলে কিছু নেই। এলজিবিটি মিডিয়া অ্যাডভোকেসি সংস্থা GLAAD-এর জেকে স্টোকস বলেছেন: "এই নতুন গবেষণাটি দীর্ঘদিন ধরে প্রতিষ্ঠিত বোঝার পুনঃনিশ্চিত করে যে প্রকৃতি বা লালন-পালন একজন সমকামী বা সমকামী ব্যক্তি কীভাবে আচরণ করে তা প্রভাবিত করে এমন কোন চূড়ান্ত মাত্রা নেই।"

সমকামীতা যে বিজ্ঞানবিরোধী শুধু এটাই নয় বরং এটি একটি ভয়ংকর রোগও বটে। সমকামীতার মধ্যে আক্রান্ত রোগীদের ক্ষেত্রে কি কি ভয়ংকর বিপদ আসতে পারে সেই বিষয় এখন তুলে ধরছি (৩৮)। সেন্টার ফর ডিজিস কন্ট্রোল ও প্রিভেনশন এর মতে সমকামিদের মধ্যে এইডস নামক রােগে আক্রান্ত হবার সম্ভবনা সবচেয়ে বেশী। ২০০৬ সালে এক জরিপে দেখা গেছে ৫৬০০০ নতুন এইচ আই ভি আক্রান্তের মধ্যে ৫৩% গে অথবা সমকামিতাছাড়া গে’দের মধ্যে যারা এইডসে আক্রান্ত তাদের মৃত্যুঝুঁকি অন্যন্য এইডস আক্রান্তদের থেকে ১৩গুন বেশী। সমকামীতা সিফিলিস এর মত রােগ ছড়াতেও ব্যাপকভাবে দায়ী (৩৯)। যুক্তরাষ্ট্রের মিনেসােটাতে ২০০৮ সালে সিফিলিস ৪০ভাগ বেড়ে যাবার কারণ উদঘাটনে সমকামিতার সম্পর্ককে পাওয়া যায়। ২০০৮ সালে মিনেসােটার ডিপার্টমেন্ট অব হেলথ এ ১৫৯ টি সিফিলিস এর ঘটনা পাওয়া যায়, এর মধ্যে ১৫৪টিই ঘটে পুরুষের মধ্যে আর এর মধ্যে ১৩৪ জনই আরেকজন পুরুষের সাথে যৌনক্রিয়া করেছে বলে স্বীকার করে। কিছু কিছু রােগ আবার ‘গে রােগ’ নামের খ্যাতি ইতিমধ্যেই পেয়ে গেছে, এরকই একটি হল ‘স্টাপ স্টেইন', একসময় ধারণা করা হয়েছিল এটা সাধারণ জনগণের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়তে পারে (৪০)। তাই সমকামীতায় আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার প্রয়োজন (৪১)।

বিজ্ঞানে অন্ধবিশ্বাসকারী নাস্তিকগোষ্ঠী হয়তো এরপরেও এসব বৈজ্ঞানিক গবেষণা বিশ্বাস করতে চাইবে না। যারা আসলেই সত্য-সন্ধানী তারা ঠিক যাচাই করে বুঝে নিবে। সমকামীতা যে বিজ্ঞানবিরোধী একইসাথে কুসংস্কার-এই বিষয় বিস্তারিত জানতে আপনারা আসিফ আদনানের লেখা “অভিশপ্ত রঙধনু” বইটি পড়তে পারেন। যেসব নাস্তিক বাপ-পুতে মিলে সমকামীতা চর্চা করে এমনকি তার পক্ষে সাফাই দেয় তাদের সকল অন্ধবিশ্বাসের বিরুদ্ধে বৈজ্ঞানিক তথ্য-প্রমাণ দিয়ে লেখা আছে বইটিতে।

সমকামীতা নামক কুসংস্কার ইসলামে নিষিদ্ধ। যারা নিজেদেরকে যুক্তিবাদী সভ্য ও বিজ্ঞানমনস্ক হিসেবে দাবি করে থাকেন তাদের সকলেরই উচিত  সমকামীতাকে মনে প্রাণে ঘৃণা করা। ক্যান্সার রোগকে কি আপনি ভালোবাসতে পারেন? তেমনি সমকামী রোগকেও ভালোবাসা যায় না একে মনে প্রাণে ঘৃণা করে সুস্থ হয়ে উঠতে হবে। এই রোগের বিরুদ্ধে সংগ্রাম চালিয়ে যেতে হবে। একটি সুস্থ স্বাভাবিক মানব জাতি আমি আশা করি। সমকামীতা কি বিজ্ঞানবিরোধী নয়? সমকামীতা কি কুসংস্কার নয়? সমকামীতা কি নোংরা চর্চা নয়? সকল সমকামী রোগীদের যদি একত্রে করে একটি দ্বিপে রেখে দিয়ে আসা হয় তাহলে একবার ভাবুন তো তাদের অস্তিত্ব দুনিয়া থেকে বিলীন হয়ে যেতে কয় বছর সময় লাগতে পারে? তারা পারবে তাদের প্রজন্মকে টিকিয়ে রাখতে? এরপরেও কি তারা বুঝবে না যে সমকামীতা যৌক্তিকভাবেই বাতিলযোগ্য?

ইসলাম আমাদেরকে রুচিশীল হতে শিক্ষা দেয়। ইসলাম আমাদেরকে সভ্যতা শিক্ষা দেয়। ইসলাম আমাদেরকে কল্যাণ শিক্ষা দেয়। ইসলাম আমাদেরকে মানবতা শিক্ষা দেয়। ইসলাম আমাদেরকে অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করতে শিক্ষা দেয়। ইসলাম আমাদেরকে অপরাধের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করতে শিক্ষা দেয়। ইসলাম আমাদেরকে সমাজকে সুন্দর করতে শিক্ষা দেয়।

 

আল কুরআন, সুরা আরাফ ৭ঃ ৮০,৮১,৮২,৮৪ আয়াত থেকে বর্ণিত, 

এবং আমি লূতকে প্রেরণ করেছি। যখন সে স্বীয় সম্প্রদায়কে বললঃ তোমরা কি এমন অশ্লীল কাজ করছ, যা তোমাদের পূর্বে সারা বিশ্বের কেউ করেনি? তোমরা তো কামবশতঃ পুরুষদের কাছে গমন কর নারীদেরকে ছেড়ে। বরং তোমরা সীমা অতিক্রম করেছতাঁর সম্প্রদায় এ ছাড়া কোন উত্তর দিল না যে, বের করে দাও এদেরকে শহর থেকে। এরা খুব সাধু থাকতে চায়। অতএব, দেখ গোনাহগারদের পরিণতি কেমন হয়েছে।

 

আল কুরআন, সুরা শুয়ারা ২৬ঃ ১৬৫ থেকে ১৭৩ আয়াতে বর্ণিত হয়েছে,

সারা জাহানের মানুষের মধ্যে তোমরাই কি পুরূষদের সাথে কুকর্ম কর? এবং তোমাদের পালনকর্তা তোমাদের জন্যে যে স্ত্রীগনকে সৃষ্টি করেছেন, তাদেরকে বর্জন কর? বরং তোমরা সীমালঙ্ঘনকারী সম্প্রদায়। তারা বলল, হে লূত, তুমি যদি বিরত না হও, তবে অবশ্যই তোমাকে বহিস্কৃত করা হবে। লূত বললেন, আমি তোমাদের এই কাজকে ঘৃণা করি। হে আমার পালনকর্তা, আমাকে এবং আমার পরিবারবর্গকে তারা যা করে, তা থেকে রক্ষা কর। অতঃপর আমি তাঁকে ও তাঁর পরিবারবর্গকে রক্ষা করলামএক বৃদ্ধা ব্যতীত, সে ছিল ধ্বংস প্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত। এরপর অন্যদেরকে নিপাত করলাম।  তাদের উপর এক বিশেষ বৃষ্টি বর্ষণ করলাম। ভীতি-প্রদর্শিতদের জন্যে এই বৃষ্টি ছিল কত নিকৃষ্ট। 

 

আল কুরআন, সুরা নামল ২৭ঃ ৫৪ থেকে ৫৮ আয়াতে বর্ণিত হয়েছে,

স্মরণ কর লূতের কথা, তিনি তাঁর কওমকে বলেছিলেন, তোমরা কেন অশ্লীল কাজ করছ? অথচ এর পরিণতির কথা তোমরা অবগত আছ! তোমরা কি কামতৃপ্তির জন্য নারীদেরকে ছেড়ে পুরুষে উপগত হবে? তোমরা তো এক বর্বর সম্প্রদায়। উত্তরে তাঁর কওম শুধু এ কথাটিই বললো, লূত পরিবারকে তোমাদের জনপদ থেকে বের করে দাও। এরা তো এমন লোক যারা শুধু পাকপবিত্র সাজতে চায়। অতঃপর তাঁকে ও তাঁর পরিবারবর্গকে উদ্ধার করলাম তাঁর স্ত্রী ছাড়া। কেননা, তার জন্যে ধ্বংসপ্রাপ্তদের ভাগ্যই নির্ধারিত করেছিলাম। আর তাদের উপর বর্ষণ করেছিলাম মুষলধারে বৃষ্টি। সেই সতর্ককৃতদের উপর কতই না মারাত্নক ছিল সে বৃষ্টি।

 

আল কুরআন, সুরা আনকাবুত ২৯ঃ ২৮ থেকে ৩২ আয়াতে বর্ণিত হয়েছে,

আর প্রেরণ করেছি লূতকে। যখন সে তার সম্প্রদায়কে বলল, তোমরা এমন অশ্লীল কাজ করছ, যা তোমাদের পূর্বে পৃথিবীর কেউ করেনি। তোমরা কি পুংমৈথুনে লিপ্ত আছ, রাহাজানি করছ এবং নিজেদের মজলিসে গর্হিত কর্ম করছ? জওয়াবে তাঁর সম্প্রদায় কেবল একথা বলল, আমাদের উপর আল্লাহর আযাব আন যদি তুমি সত্যবাদী হও। সে বলল, হে আমার পালনকর্তা, দুস্কৃতকারীদের বিরুদ্ধে আমাকে সাহায্য কর।যখন আমার প্রেরিত ফেরেশতাগণ সুসংবাদ নিয়ে ইব্রাহীমের কাছে আগমন করল, তখন তারা বলল, আমরা এই জনপদের অধিবাসীদেরকে ধ্বংস করব। নিশ্চয় এর অধিবাসীরা জালেম। সে বলল, এই জনপদে তো লূতও রয়েছে। তারা বলল, সেখানে কে আছে, তা আমরা ভাল জানি। আমরা অবশ্যই তাকে ও তাঁর পরিবারবর্গকে রক্ষা করব তাঁর স্ত্রী ব্যতীত; সে ধ্বংসপ্রাপ্তদের অন্তর্ভূক্ত থাকবে।

 

জামে আত তিরমিজি, হাদিসঃ ১৪৫৬, সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,

ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা যে মানুষকে লূত সম্প্রদায়ের কুকর্মে (সমকামিতায়) নিয়োজিত পাবে সেই কুকর্মকারীকে এবং যার সাথে কুকর্ম করা হয়েছে তাকে মেরে ফেলবে-ihadis.com

 

জামে আত তিরমিজি, হাদিসঃ ১৪৫৭, হাসান হাদিস থেকে বর্ণিত,

আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মাদ ইবনু আকীল (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, জাবির (রাঃ) -কে আমি বলতে শুনেছি, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ আমি যে কুকর্মটি আমার উম্মাতের মাঝে ছড়িয়ে পড়ার সর্বাধিক ভয় করি তা হল লূত সম্প্রদায়ের কুকর্ম-ihadis.com

 

সুনানে আবু দাউদ, হাদিসঃ ৪৪৬২, হাসান সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,

ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃতিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা কাউকে যদি লুত গোত্রের মতই কুকর্মে লিপ্ত দেখতে পাও তাহলে কর্তা ও যার সঙ্গে করা হয়েছে তাদের উভয়কে হত্যা করো-ihadis.com

 

সুনানে আবু দাউদ, হাদিসঃ ৪৪৬৩, সহিহ মওকুফ হাদিস থেকে বর্ণিত,

ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃতিনি বলেন, অবিবাহিতদের লাওয়াতাতে (পায়ুকামে) লিপ্ত পাওয়া গেলে রজম করা হবে। ইমাম আবূ দাঊদ (রহঃ) বলেন, ‘আসিম (রহঃ) বর্ণিত হাদীস আমর ইবনু আবূ ‘আমরের হাদীসকে দুর্বল প্রমানিত করে।-ihadis.com

 

সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিসঃ ২৫৬২, হাসান হাদিস থেকে বর্ণিত,

আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম লূত জাতির অনুরূপ অপকর্মে লিপ্ত ব্যক্তি সম্পর্কে বলেনঃ তোমরা উপরের এবং নিচের ব্যক্তিকে অর্থাৎ উভয়কে প্রস্তরাঘাতে হত্যা করো-ihadis.com

সমকামীতা কুসংস্কার ছাড়া কিছুই নয়। এসব বর্বর অযৌক্তিক প্রথা আমাদের সমাজ থেকে বিলিপ্ত করতে হবে। প্রতিটি সমকাম রোগী যারা তাদের উচিত দ্রুত ভালো ডাক্তারের কাছে গিয়ে নিজের চিকিৎসা করা। পুরুষ সমকামীদেরকে যদি কোনো নারী শুন্য দ্বীপে রেখে দিয়ে আসা হয় আর নারী সমকামীদেরকে যদি পুরুষ শুন্য দ্বীপে রেখে আসার তাহলে তারা এমনিতেই বিলুপ্ত হয়ে যাবে। বাপ-ছেলের যৌনকর্ম, মা-মেয়ের যৌনকর্ম, দাদা-নাতির যৌনকর্ম, চাচা-ভাতিজার যৌনকর্ম, নাতি-নানির যৌনকর্ম এসব বর্বর নিকৃষ্ট যৌনকর্ম যারা মুক্তচিন্তায় বিশ্বাস করে তারা যদি মুক্তচিন্তায় দাসী কিনে তার সাথে সহবাস করতো তাহলেও হয়তো ততটা খারাপ হতো না। কিন্তু নাস্তিকদের কাছে মুক্তচিন্তায় দাসী সহবাস খারাপ কিন্তু নাস্তিক ছেলে সম্মতিতে নিজে বাবার সাথে মায়ের সাথে যৌনচর্চা করবে এসব নাকি চিন্তার মুক্তির আন্দোলন।

হুমায়ুন আজাদের বিজ্ঞানবিরোধী অযৌক্তিক কথাবার্তাঃ

অনেক নাস্তিক লোকেরা আমাকে হুমায়ুন আজাদের বই পড়তে বলেছিল। তার বই পড়লে নাকি আমি মুক্তমনা হতে পারবো, বিজ্ঞানমনস্কতা থেকে প্রথাবিরোধীও নাকি হতে পারবো। তো আমি হুমায়ুন আজাদের বই পড়তে থাকলাম। আমি তো পুরাই অবাক হয়ে গেলাম যে হুমায়ুন আজাদ মুক্তমনা হয়তো হতে পারে কিন্তু বিজ্ঞানমনস্ক কখনো হতে পারে না। কারণ হুমায়ুন আজাদের বইতে অনেক বিজ্ঞানবিরোধী কথা পাওয়া যায়। প্রচুর যুক্তিবিরোধী নিন্মমানের কথাবার্তা পাওয়া যায়।

অন্ধভক্ত হবার কারণে অনেক মুক্তমনা নাস্তিকরাই সেটা খেয়াল করে না। কিন্তু আমি তো আর নাস্তিকদের মতো অন্ধভক্ত নই। অন্ধবিশ্বাসী নই। আমি নাস্তিকদের বিশ্বাসকে প্রশ্ন করি, তাদের দেয়া সকল তথ্যকে মেনে না নিয়ে তদন্ত করে দেখি আসলেই তারা সত্যি বলেছে নাকি প্রতারণা করে যাচ্ছে।

আসুন যাচাই করে দেখি হুমায়ুন আজাদের সেই বই যা পড়ে নাকি ইসলাম ত্যাগ করেছে অনেক লোকেরা। হ্যাঁ, “আমার অবিশ্বাস” বইয়ের কথাই বলছিলাম। আজকেই আপনি স্পষ্ট হয়ে যাবেন যারা তার বই পড়ে নাস্তিক্যবিশ্বাস গ্রহণ করেছে তারা বুদ্ধিবৃত্তিক ভাবে কতটা নিন্মমানের।

"আমার অবিশ্বাস" অধ্যায়ঃ আমার ইন্দ্রিয়গুলো,প্রথম পরিচ্ছেদ,১৩ পৃষ্ঠায় বর্ণিত হয়েছে, 

মানুষ হয়ে জন্মে আমি সুখী,বেশ ভাল লাগে আমার,অন্য কোন প্রাণী,এমন কি বস্তু রঙিন প্রজাপতি বা সুন্দরবনের বাঘ বা শান্ত গরু বা নির্বিকার মোঘ বা মাছ বা সাপ বা ছোট পিঁপড়ে বা আমগাছ বা শিমুল বা ঘাস বা পাথরও যদি হতাম,তাহলেও খারাপ লাগতো না,বেশ লাগতো আর যদি কখনোই জন্ম না নিতাম, কিছুই না হতাম,তাহলেও খারাপ লাগতো না।তখন আমি জানতামই না জন্ম আর পৃথিবী কাকে বলে,যেমন এসব জানবো না যখন মরে যাবো।

প্রমাণ ও যুক্তি ছাড়া কোনো কিছু মেনে নেয়াটাই অন্ধবিশ্বাস। হুমায়ুন আজাদ যে বললেন, সে যদি অন্য কোনো জানোয়ার হতো তাহলেও তার কাছে খারাপ লাগতো না কিন্তু এটা সে কিভাবে বুঝেছে? তার কাছে কি প্রমাণ আছে? কারণ সে তো অন্য কোনো জানোয়ার হয়ে দেখে নাই? তারমানে হুমায়ুন আজাদ নিশ্চিত হয়েই কথাটি বলছে অথচ তার কাছে কোনো প্রমাণ নাই তাই বলাই যায় সে বিজ্ঞানবিরোধী কথা বলেছে। কারণ আপনি পাথর হয়ে বুঝবেন কিভাবে যে আপনার ভালো লাগছে? কেউ যদি জন্মগ্রহণই না করে তাহলে সে ভালো মন্দের অস্তিত্ব বুঝবে কিভাবে?

"আমার অবিশ্বাস" প্রথম পরিচ্ছেদ,অধ্যায়ঃ আমার ইন্দ্রিয়গুলো, ১৩ পৃষ্ঠায় বর্ণিত হয়েছে, 

জন্মের আগে যেমন শুন্য ছিলাম, মরে যাওয়ার পর পর আমার কাছে আমি সম্পূর্ণ শুন্য হয়ে যাবো। আমার সূচনার আগের অধ্যায় অন্ধকার,সমাপ্তির পরের পরিচ্ছদও অন্ধকার।দুই অন্ধকারের মধ্যে ক্ষণিক আলোর ঝিলিক আমি।এই ঝিলিকটুকু আমার ভাল লাগে। আমার আগের ও পরের অন্ধকার সম্পর্কে যে আমি জানি না,তা নয়:ওই অন্ধকারকে রহস্যময় বলে ভেবে আমি বিভোর নই, আমি জানি আগে কি ছিল। আমার পরে কি হবে,আমি জানি আমি কোন মহাপরিকল্পনা নই, কোন মহাপরিকল্পনার অংশ নই। আমাকে কেউ তার মহাপরিকল্পনা অনুসারে সৃষ্টি করেনি, একরাশ প্রাকৃতিক ক্রিয়ার ফলে আমি জন্মেছি, অন্য একরাশ প্রাকৃতিক ক্রিয়াকলাপের ফলে আমি মরে যাবো,থাকবো না,যেমন কেউ থাকবে না,কিছু থাকবে না-এ সম্পর্কে সন্দেহ পোষণের কোন কারণ আমি দেখি না।

পাঠক খুব মনোযোগ দিয়ে খেয়াল দিন। নাস্তিকরা বলে থাকে মৃত্যুর পর যে আখিরাত আছে সেটার প্রমাণ কি? মুমিনরা কি পারবে আখিরাতের কোনো ভিডিও দেখাতে? কিন্তু আবার নাস্তিকরাই প্রমাণ ছাড়াই বিশ্বাস করছে যে মৃত্যুর পর কিছু হবে না। নাস্তিকদের কাছে কি ভিডিও চিত্র আছে যে মৃত্যুর আখিরাত বলে কিছুই নাই? কিভাবে নিশ্চিত হলেন যে তাকে কেউ সৃষ্টি করে নাই? প্রকৃতি কিভাবে শুন্য থেকে অস্তিত্বে আসতে পারে স্রস্টা ছাড়া? প্রকৃতি কেন ক্রিয়ার করবে যার কারণে সব অস্তিত্ব পাবে? প্রকৃতির কারণে কেন আমাদেরকে জন্মগ্রহণ করে আবার মৃত্যু হতে হবে? হুমায়ুন আজাদ নাকি তার কথায় নিশ্চিত কিন্তু সে তার বইতে না কোনো বৈজ্ঞানিক প্রমাণ দিয়েছে আর অকাট্য যুক্তি। অথচ নাস্তিকরা দিব্যি তার বই পড়ে যাচ্ছে।

"আমার অবিশ্বাস" ১৪ পৃষ্ঠায় বর্ণিত হয়েছে, 

আমার ইন্দ্রিয়গুলোর মধ্যে চোখ দুটিই শ্রেষ্ঠ - এ দুটি দিয়ে আমি দূর থেকে ভেতরে টেনে আনি দৃশ্যের পর দৃশ্য, সৌন্দর্যের পর সৌন্দর্য। অন্য কোন ইন্দ্রিয় দিয়ে এভাবে টানতে পারি না বাহিরকে

আমরা সবাই জানি চোখ কখনো দূর থেকে কোনো জিনিস ভেতরে টেনে আনতে পারে না। চোখ দিয়ে আমরা দৃশ্য দেখি। সৌন্দর্য উপভোগ করি। কিন্তু সেই দৃশ্য গুলোকে আমরা টানাটানি করতে পারি না। আমরা হাত দিয়ে শক্ত করে ধরে কোনো বস্তুকে টানাটানি করতে পারি যা চোখ দিয়ে সম্ভব না। বিজ্ঞানের দৃষ্টিতে যে হুমায়ুন আজাদ বিজ্ঞানবিরোধী কথা বইতে লিখেছে সেটা নিয়ে সংশয় থাকে না।

"আমার অবিশ্বাস" ১৫ পৃষ্ঠায় বর্ণিত হয়েছে,

যখন শিশু ছিলাম, কিশোর হয়ে উঠেছি যখন,তখনও আমি সব কিছু চুষে দেখতে চেয়েছিআজো অনেক কিছু চুষে আর চেখে দেখতে ইচ্ছে করে।ছেলেবেলা ভরে ইচ্ছে হতো চুলোর লাল আগুনের টুকরোগুলোকে চুষে দেখতে, ওগুলো লাল গোলাপের থেকেও লাল হয়ে জ্বলজ্বল করতো,সূর্যাস্তকেও চুষে স্বাদ নিতে ইচ্ছে হতো,কয়েক বছর আগে সারা সন্ধ্যা চুষতে চিবুতে ইচ্ছে হয়েছিল চুইংগামের মত এক তরুণীকে। চারপাশে ছড়িয়ে আছে যে জগত,তার স্বাদ আছে,টক মিষ্টি ঝাল তেতো বিষাক্ত স্বাদ, আমি তার স্বাদ নিয়ে সুখী হয়েছি।

কোনো বিজ্ঞান প্রেমী মানুষ কিভাবে এমন কথা বইতে লিখতে পারে যে সব কিছুকে সে চুষে দেখতে চেয়েছে? এটা কি সম্ভব? চুলোর লাল আগুন সে চুষতে চাইতো, সূর্যাস্তকেও চুষে স্বাদ নিতে ইচ্ছে হতো উনার কি-সব গাঁজাখুরি কথাবার্তার। এসব না হয় বাদ দিলাম কিন্তু সারা সন্ধ্যা যে এক অসহায় তরুণীকে চুইংগামের মতো চুষতে চাবাতে চেয়েছে এটার কি হবে? মুক্তচিন্তায় যে হুমায়ুন আজাদ ধর্ষণ করতে চাইতো সেটা কি আলাদা করে বুঝিয়ে বলতে হবে? নারীদেরকে যে সম্মান করতে হয় এটা মুক্তচিন্তায় প্রথাবিরোধী নাস্তিকটি হয়তো কখনো শিখতে জানে নি।

 'আমার অবিশ্বাস' বইয়ের ২২ পৃষ্ঠায় বর্ণিত, 

বিশ্বাস কয়েক হাজার বছর ধরে দেখা দিয়েছে মহামারীরূপে, পৃথিবীর দীর্ঘস্থায়ী মহামারীর নাম বিশ্বাস। বিশ্বাস কাকে বলে ? আমরা কি বলি পিঁপড়েয় বিশ্বাস করি, সাপে বিশ্বাস করি, জলে বিশ্বাস করি বা বজ্রপাতে বা পদ্মানদীতে বিশ্বাস করি? এসব এবং এমন বহু ব্যাপারে বিশ্বাসের কথা উঠে না,কেননা এগুলো বাস্তব সত্য বা প্রমাণিত। যা সত্য,যা প্রমাণিত যা সম্পর্কে কোন সন্দেহ নেই তাতে বিশ্বাস করতে হয় না,কেউ আমরা বলি না যে আমি বিদ্যুৎে বিশ্বাস করি বা রোদে বিশ্বাস করি বা গাড়িতে বিশ্বাস করি। কেননা সত্য বা প্রমাণিত ব্যাপারে বিশ্বাস করতে হয় না,বিশ্বাস করতে হয় অসত্য,অপ্রমাণিত,সন্দেহজনক বিষয়।অসত্য অপ্রমাণিত কল্পিত ব্যাপারে আস্থা পোষণই হচ্ছে বিশ্বাস।

আমি যদি প্রশ্ন করি হুমায়ুন আজাদের এই কথাকি বিশ্বাস করবো নাকি অবিশ্বাস? যদি বলে বিশ্বাস করতে হবে তাহলে তার যুক্তি অনুযায়ী তার কথা অবিশ্বাসযোগ্য। আর যদি বলে অবিশ্বাস করতে হবে তাহলে সেই কথা বিশ্বাস করা যাবে না সেই কথা কেন বিশ্বাস করতে হবে? আসলে বিশ্বাস সম্পর্কে নাস্তিকদের ধারণা সঠিক নয়। অন্ধবিশ্বাস কথা ঠিক নয়- কথাটি সঠিক কিন্তু যেই বিশ্বাস যৌক্তিক সেটা অবশ্যই বিশ্বাস করতে হবে। বিশ্বাসের বিভিন্ন প্রকার রয়েছে যেমন, ভুল বিশ্বাস, সঠিক বিশ্বাস ইত্যাদি।

নাস্তিকরা নাস্তিক্যবাদে বিশ্বাস করে কারণ এটাকে তারা অবিশ্বাস করে না। নাস্তিকরা ডারউইনবাদকে বিশ্বাস করে কারণ এটাকে তারা অবিশ্বাস করতে পারে না। এখন এটা যাচাই করবার প্রশ্ন আসতে পারে যে এসব সত্য বিশ্বাস নাকি মিথ্যা। আমরা গাড়িতে বিশ্বাস করি না কিন্তু গাড়িতে চলাফেরা করলে আশা করি আমরা নিরাপদে যাতায়াত করবো কথাটিকে ঠিকই বিশ্বাস করি। পিঁপড়াতে বিশ্বাসের কথা আসে না কিন্তু পিঁপড়াদের অনেক কিছু মানুষের জীবন যাত্রের সাথে মেলে- বিজ্ঞানীদের এই কথাটিকে অনেকেই বিশ্বাস করে থাকি নিজেরা গবেষণা না করা সত্ত্বেও। তাই অসত্য অপ্রমাণিত কল্পিত ব্যাপারে আস্থা পোষণই হচ্ছে বিশ্বাস কথাটি সব ক্ষেত্রে সঠিক নয়।

“আমরা কি এই বাঙলাদেশ চেয়েছিলাম” বইয়ের ২৪ পৃষ্ঠায় বর্ণনা করেছেনঃ

আমি রাজনীতিবিদদের ভক্ত নই, কখনো তাদের স্তব করি নি, তবে তাদের ভূমিকা ও মূল্য কিছুটা বোঝার চেষ্টা করি। শেখ মুজিব দৈহিকভাবেই মহাকায় ছিলেন, সাধারণ বাঙালির থেকে অনেক উচুতে ছিলো তার মাথাটি- সহজেই চোখে পড়তো তার উচ্চতা এবং আমাদের বামন রাজনীতিবিদদের মধ্যেও তিনি ছিলেন মহাকায়।


হুমায়ুন আজাদ এখানে অবৈজ্ঞানিক কথা বলে ফেললেন। আমরা সবাই জানি যে শেখ মুজিবুর রহমান অন্যান্য মানুষদের মতোই মানুষ ছিলেন অথচ মুক্তমনে হুনায়ুন আজাদ বলল উনার মাথা নাকি অনেক উচুতে ছিল। প্রাণী জগতে জিরাফের মাথা অনেক লম্বা থাকে। সাধারণ মানুষদের মাথা কখনো এতো লম্বা বা উঁচু হয় না।

“আমরা কি এই বাঙলাদেশ চেয়েছিলাম” বইয়ের ২৫ পৃষ্ঠায় বর্ণনা করেছেনঃ

আমি জানি ইতিহাস অনেক সময় তুচ্ছ ইঁদুরকে সিংহরূপে প্রসব করে, আমার চোখের সামনেই তো কতো তুচ্ছকে দেখলাম মহৎ হয়ে যেতে, তাই সভ্যতার অন্যান্য এলাকার শ্রেষ্ঠদের থেকেও তাদের আমি অনেক গৌণ, তুচ্ছ, মনে করি।

বিজ্ঞান কখনো বলে না ইতিহাস কোনো নারীর মতো প্রাণী আবার এও বলে না যে ইঁদুরকে সিংহরূপে প্রসব করতে পারবে। তাই হুমায়ুন আজাদের কথা অবৈজ্ঞানিক অর্থাৎ বৈজ্ঞানিক ভুল। কথিত বিজ্ঞানমনস্ক এসব লোকদের বইতে হাজার হাজার বৈজ্ঞানিক ভুল পাওয়া যায় কিন্তু এসব নিয়ে কথা বলতে লজ্জা পায় নাস্তিক সমাজ। নাস্তিকরা নিজেদের বিশ্বাসকে প্রশ্ন করতে ভয় পায়। নাস্তিকরা নিজেদের বিশ্বাসকে সত্য মনে করে আবার এরাই অন্যকে প্রশ্ন করে যে চার হাজার ধর্মের মধ্যে আপনার ধর্ম ঠিক কিভাবে বুঝলেন-কি হাস্যকর ব্যাপার তাই না? এদের বিশ্বাসে হাজার হাজার সাংঘর্ষিক কথাবার্তা পাওয়া যায়।

নাস্তিক হুমায়ুন আজাদের মাজার শরীফঃ

মুক্তমনা হুমায়ুন আজাদের কবরে মোমবাতিতে আগুন জ্বালিয়ে শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন উনার এক অন্ধভক্ত। কয়দিন পরে এই জায়গাতে “চিন্তার মুক্তির দরবার শরীফ” হবে কিনা সেটা নিয়ে সংশয় থেকে যাবে হয়তো। ছবিটি দেখুন।



মুজিব রহমান নাম উনার। উনার আইডিতে চেক করলে আপনি দেখবেন উনি নিজেকে মানবতাবাদী বলে দাবি করেন। নিজেকে বিজ্ঞানমনস্ক, মুক্তচিন্তক বলে প্রচার করে থাকেন। ইসলামের সমালোচনা করে থাকেন উনি। কিন্তু কবরের মরা মানুষটির জন্য মোমবাতিতে আগুন জ্বালিয়ে শ্রদ্ধা জানানোটাতে কি বিজ্ঞান উনি খুজে পেলেন সেটা প্রশ্নের দাবি রাখে। অথচ এরাই আবার বলবে মৃত মানুষের জন্য জানাজার নামাজ আদায় করা বিজ্ঞানবিরোধী কিন্তু এরা নিজেরাই আবার মরা মানুষকে শ্রদ্ধা জানাতে আগুন জ্বালায়। ধরতে পেরেছেন ভণ্ডামিটা? এই লোকটি নারীদের স্তন নিয়ে কিভাবে মুক্তচিন্তা প্রকাশ করে আসুন দেখে নেই।



নারীটি পুরো নগ্ন তাই ছবিটি পুরো দেখাতে পারলাম না। নাস্তিক্যধর্মে নারীরা লেংটা হয়ে চলাফেরা করতে পারবে এসব মুক্তচিন্তায় নারী অধিকার। হুমায়ুন আজাদ নিজের বইতে মায়ের স্তন নিয়ে কি কি বলেছে নিজেরাই পড়ে দেখুন। সামনে বিস্তারিত দেখানো হয়েছে। এরপরেও নাকি এরাই সভ্য। এরাই নাকি আদর্শ। এরাই নাকি মার্জিত। এরাই নাকি বিজ্ঞানমনস্ক। এরাই নাকি সত্যবাদী। এরাই নাকি সমাজকে বদলে দেবে। পাঠকদের বিবেকে প্রশ্নটি রেখে দিলাম।

মঙ্গল শোভাযাত্রার প্রথাঃ

শোভাযাত্রা প্রথার বিরুদ্ধে মুক্তমনাদেরকে তেমন কিছুই বলতে দেখা যায় না। এই যাত্রা করে কিভাবে অশুভকে বিদায় করা যায়? এই প্রশ্ন বস্তুবাদী নাস্তিকরা কেন করে না? “BBC NEWS বাংলা” পত্রিকায় ১৩ এপ্রিল ২০১৭ তারিখে “বাংলা নববর্ষে মঙ্গল শোভাযাত্রা নিয়ে আপত্তি কেন?” খবরে বলা আছে (৪২) ,


শিল্পকলা একাডেমির চারুকলা বিভাগের পরিচালক চিত্রশিল্পী মনিরুজ্জামান বলেন, "মঙ্গল শোভাযাত্রার মাধ্যমে আমরা একটি বার্তা দেয়ার চেষ্টা করেছি যে অশুভকে তাড়িত করে আমরা একটি শুভাগমন ঘটাতে চাই। এর একটা রাজনৈতিক প্রেক্ষিতও ছিল"। শুরুতে অবশ্য আয়োজনের নামটা মঙ্গল শোভাযাত্রা ছিল না। প্রথমবার সেটির নাম ছিল আনন্দ শোভাযাত্রা। অধ্যাপক হোসেন বলেন, নামটা মঙ্গল শোভাযাত্রাই দেয়ার ইচ্ছে ছিল তাদের। কিন্তু তখনকার পরিস্থিতিতে এর ভুল ব্যখ্যা দেয়া হতে পারে এই আশঙ্কায় নামটি দেয়া হয়নি। পরবর্তীতে এটি মঙ্গল শোভাযাত্রা নামেই পরিচিত হয়। প্রতিবছর শোভাযাত্রার অন্যতম অনুষঙ্গ থাকে এসব বাঁশ এবং কাগজের তৈরি নানা ভাস্কর্য। যা তৈরি হয় কোন একটি প্রতিপাদ্যের ওপর ভিত্তি করে। এসব মুখোশ বা অন্যান্য মোটিফের যে কোন একটা বৈশিষ্ট্য আছে, সেটা শোভাযাত্রা দেখলে হয়তবা অনেকের চোখে পড়বে। মঙ্গল শোভাযাত্রার এই অনুষঙ্গগুলো আসলো কোথা থেকে? "লোকসংস্কৃতির মধ্যে ধর্মনিরপেক্ষ উপাদানগুলো বেছে নেয়া হয়েছিল। আমাদের সোনারগাঁয়ের লোকজ খেলনা পুতুল, ময়মনসিংহের ট্যাপা পুতুল, নকশি পাখা, যাত্রার ঘোড়া এসব নেয়া হয়েছিল"। তিনি বলেন, শুরু থেকেই লক্ষ্য ছিল এই শোভাযাত্রাটিতে 'বাঙ্গালির ঐতিহ্য থেকে উপাদান নেয়া হবে এবং দেশের কল্যাণের জন্য একটি আহ্বান থাকবে'।


“নেত্রকোণা জার্নাল” অনলাইন পত্রিকায় আগস্ট ১৯, ২০২২ তারিখে “দুর্গাপুরে শ্রীকৃষ্ণের জন্মাষ্টমী উদযাপন উপলক্ষে মঙ্গল শোভাযাত্রা” শিরোনামে খবরে বলা আছে (৪৩) , 


ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্মাষ্টমী উপলক্ষে নেত্রকোনার দুর্গাপরে উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটির আয়োজনে মঙ্গল শোভা যাত্রা ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার সকাল ১১ টায় মঙ্গল শোভা পৌর শহরের দশভূজা বাড়ী মন্দির প্রাঙ্গণ থেকে শুরু হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে মন্দির প্রাঙ্গণ এসে শেষ হয়। শোভাযাত্রায় সনাতন সম্প্রদায়ের নারী পুরুষরা বিভিন্ন ব্যানার ফেষ্টুন নিয়ে শোভাযাত্রায় অংশগ্রহন করেন। মঙ্গল শোভাযাত্রা শেষে দশভূজা বাড়ি মন্দির চত্বরে আলোচনা সভার সভাপতিত্ব করেন উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি এডভোকেট মানেশ চন্দ্র সাহা।…বক্তারা বলেন,শ্রীকৃষ্ণের জন্মাষ্টমী হিন্দু সম্প্রদায়ের অন্যতম প্রধান উৎসব। হিন্দু ধর্মাবলম্বী মানুষেরা মহা আনন্দে এ উৎসব পালন করে থাকেন। ন্যায় প্রতিষ্ঠার জন্য দেশ ও জাতির মঙ্গল কামনার্থে সকল ধর্মের মানুষকে নিজ নিজ ধর্ম ও জীবন দর্শনের চর্চা আয়ত্ব করার প্রয়োজন।


আপনি কি কখনো নাস্তিক বিজ্ঞানমনস্কদেরকে দেখেছেন এই প্রশ্ন গুল করতে যে এসব তো বিজ্ঞানবিরোধী এসব পালন বন্ধ করে দেয়া দরকার? উল্টো মুক্তমনাদেরকেই দেখা যায় এসব অনুষ্ঠানে মুক্তচিন্তায় অংশগ্রহণ করতে। তাদেরকে খুশি করতে, তাদের মুখের প্রশংসা বাক্য পেতে তাদের নিয়ে কিছুই বলা হয় না। কেন?

জন্মদিন প্রথা পালনের কুসংস্কার চর্চাঃ

নাস্তিক বিজ্ঞানমনস্করা মনে করে থাকে, মুসলিমরা ঈদের দিন মুসলিমরা সবাই একত্রে জামাত বদ্ধ হয়ে নামাজ আদায় করে যার কোনো ভিত্তি নাই। মুসলিমরা যেই ইসলাম চর্চা করে থাকে সেটা আসলে বিজ্ঞানবিরোধী চিন্তাভাবনা। ইসলামে অনেক বিজ্ঞানবিরোধী তথ্য রয়েছে। ইসলাম নাকি মানবতার ক্যানসার। ইসলাম মানেই নাকি অশান্তি আর বিজ্ঞানবিরোধী মনোভাব। ইসলামে নাকি অনেক কুসংস্কার হয়েছে। ইসলামে সাথে বিজ্ঞানের নাকি দ্বন্দ্ব রয়েছে। এ সকল কথা গুলো যদিও সঠিক নয়। কিন্তু যারা এই ধরণের চিন্তা পোষণ করে থাকেন তারা কিন্তু নিজেরাই ঠিকই কুসংস্কার মুক্তচিন্তায় চর্চা করে থাকেন।



সনাতনীরা যেভাবে মুক্তচিন্তায় নিজেদের ভগবানের জন্মদিনে আনন্দ প্রকাশ করতে আগুন জ্বালায়, ফুল দিয়ে সাজায়,সবাই একত্রিত হয় তেমনি নাস্তিক মুক্তমনারাও নিজেদের জন্মদিনে আগুন জ্বালায়, বেলুন দিয়ে সাজায়, মদ খায়, যৌনসঙ্গীর সাথে ছবি তুলে ইত্যাদি মুক্তচিন্তায় করে থাকে। অথচ নাস্তিক্যধর্মের দৃষ্টিতে অথবা বস্তুবাদী দৃষ্টিতে জীবনের কোনো অর্থ নেই, মানে নাই। তাহলে কেন নিজের জন্মদিনে খুশি অথবা নিজের জন্মেই আনন্দ প্রকাশ করতে হবে তাও নির্দিষ্ট একটি দিনে?


নিহিলিজমটি লাতিন শব্দ 'নিহিল' থেকে এসেছে যা আক্ষরিক অর্থে "কিছুই না। আবার নিহিলিজম বা ধংসবাদ হচ্ছে একটি দার্শনিক মতবাদ যার অর্থ প্রচলিত ধর্মীয় ও নৈতিক বিশ্বাসের সম্পূর্ণ প্রত্যাখ্যান। জার্মান দার্শনিক ফ্রেডরিখ নিটশের দর্শন আলোচনা করতে গেলে প্রথমেই চলে আসে ‘নায়ালিজম’ বা ধ্বংসবাদের কথা। নায়ালিজমকে অনেকে বলে থাকেন এটি হচ্ছে অবিশ্বাস এবং নৈরাশ্যবাদের চূড়ান্ত পর্যায়। ধ্বংসবাদের মূলে রয়েছে সকল প্রকার নীতি নৈতিকতার ভিত্তিহীনতার বিশ্বাস। যারা ধ্বংসবাদে বিশ্বাস করে, তাদের নিকট পৃথিবীর সবকিছু অর্থহীন, উদ্দেশ্যহীন। খুব কম সংখ্যক দার্শনিকই নিজেদেরকে নায়ালিস্ট বলে দাবি করেছেন। যারা করেছেন, তাদের মধ্যেও সকলকে আবার প্রকৃত নায়ালিস্ট দাবি করা যায় না। এক্ষেত্রে ধ্বংসবাদের আলোচনায় যে নামটি সবচেয়ে প্রভাবশালী, তা হলো ফ্রেডরিখ নিটশে। অথচ অনেক সমালোচকের মতে, তিনিও প্রকৃত নায়ালিস্ট নন!


নায়ালিজম কী? সহজ ভাষায় বললে চরম নৈরাশ্যবাদ এবং সবকিছুর অর্থহীনতায় বিশ্বাসই নায়ালিজম। কিন্তু এতটুকু বললে ব্যাপারটার অতি সরলীকরণ হয়ে যায়। নিটশের মতে, নায়ালিজম মানুষের মনস্তাত্ত্বিক বিকাশের একটি পর্যায় মাত্র। যখন মানুষ প্রচণ্ড নিঃসঙ্গতায় ভোগে, তখন তারা ধীরে ধীরে প্রচলিত নীতি নৈতিকতা এবং সত্যের প্রতি বিমুখ হতে থাকে। অসীম হতাশা মানুষের কাছে সবকিছু অর্থহীন করে তোলে ধীরে ধীরে। নিটশের মতে, দ্বিধা-দ্বন্দ্ব আর উদ্দেশ্যহীনতায় ভোগা এই পর্যায় মানুষের জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়। কারণ, মানুষ ততদিন নতুন কোনো নিয়ম প্রবর্তন করবে না, যতদিন না পুরাতনের প্রতি তার বিশ্বাস ভেঙে যায়। এ ব্যাপারটি পাঠকের নিকট কিছুটা স্ববিরোধী মনে হতে পারে। তাই বলে রাখা ভালো, ধ্বংসবাদ পরমকারণবাদে বিশ্বাস করে না, পৃথিবীতে কোনো কিছুর পেছনে কোনো যুক্তি বা কারণ আছে বলে বিশ্বাস করে না। ধ্বংসবাদের বিশ্বাস এই যে, সকল জীব ও জড়ের পেছনে আমরা যে কারণ বা উদ্দেশ্য খুঁজে পাই, সেগুলো পরম নয়, সেগুলো আমাদেরই কল্পনা মাত্র! অনেক নাস্তিক এই বিষয় কথা বলতে না চাইলেও হুমায়ুন আজাদ ঠিকই নিজের বইতে আসল কথাটি বলে গিয়েছেন,


"আমার অবিশ্বাস" ১৭ পৃষ্ঠায় বর্ণিত হয়েছে, 

তবে সব কিছুই নিরর্থক, জগত পরিপূর্ণ নিরর্থকতায়, রবীন্দ্রনাথ নিরর্থক,আইনস্টাইন নিরর্থক,ওই গোলাপও নিরর্থক,ভোরের শিশিরও নিরর্থক, তরুণীর চুম্বনও নিরর্থক, দীর্ঘ সুখকর সংগমও নিরর্থক, রাষ্ট্রপতি নিরর্থক, কেননা সব কিছুরই পরিনতি বিনাশ।

"আমার অবিশ্বাস" ১৮ পৃষ্ঠায় বর্ণিত হয়েছে, 

এই যে আমি বেঁচে আছি, বেঁচে থেকে সুখ পাচ্ছি । আমি মরে যাবো, এই হাস্যকর নিরর্থকতাকে কিভাবে অর্থপূর্ণ করে তুলতে পারি? আমার জীবনকে অর্থপূর্ণ করে তোলার কখন পূর্বনির্ধারিত উপায় নেই।কোন পবিত্র বা অপবিত্র বই বা কোন মহাপুরুষ বা প্রবর্তক আমাকে পথ দেখাতে পারেন না।তাঁরা খুঁজেছেন নিজেদের পথ,নিজেদের জীবনকে তাৎপর্যপূর্ণ করার পথঃ আমি তাদের পথে চলতে পারি না।আমি খুজতে চাই আমার পথ। নিজের জীবনকে তাৎপর্যপূর্ণ করার দায়িত্ব সম্পূর্ণরুপে আমার নিজের।


নাস্তিকদের নির্দিষ্ট কোনো নীতি নৈতিকতা নেই। নেই নৈতিক গ্রন্থ। নাস্তিকরা নিজেদের মুক্তচিন্তায় নিজেদেরকে পরিচালনা করে থাকেন। নাস্তিকরা বিশ্বাস করে থাকেন মহাবিশ্বকে কেউ সৃষ্টি করে নাই। নাস্তিকদের জীবনে নির্দিষ্ট কোনো উদ্দেশ্য নাই। তাদের মনে যা চায়, যা তাদের ভালো লাগে সেটাই তারা করতে পছন্দ করে। এই কারণে বিজ্ঞানবিরোধী কিছু যদি নাস্তিকদের ভালো লাগে তাহলে সেটাও তারা খুশি মনে করে থাকে। কিন্তু মাঝে মাঝে খুশির ডোজ বেশি হয়ে গেলে নিজেদেরকেই আবার বিজ্ঞানমনস্ক বলে দাবি করে থাকে। 


তারা মানুষকে যৌক্তিক চিন্তা করাতে চায় যদিও তারা নিজেরাই আবার এমন অনেক কিছুই করে যার সাথে যুক্তির সম্পর্ক নাই। তারা নাস্তিকতাকে আস্তিকতার অবিশ্বাস বলে মনে করলেও নাস্তিকতায় যে অবিশ্বাস তারা করে না এই কথাটি সহজে স্বীকার করতে চায় না। তারা চিন্তার মুক্তির নামে কুরআন নিয়ে, হাদিস নিয়ে, আল্লাহ নিয়ে, রাসুল নিয়ে রসিয়ে রসিয়ে বানিয়ে বানিয়ে মুক্তচিন্তায় মিথ্যাচার করে থাকেন। চিন্তার মুক্তির এই আন্দোলনে উনারা সবাইকে যোগ হতে বলেন।


সাম্প্রদায়িক উস্কানিতে মুক্তমনারাঃ

মুক্তমনারা দাবি করে থাকে তারা নাকি মানবতাবাদী, অনেক নাস্তিক আবার নিজেকে মানবধর্মে বিশ্বাসী বলেও প্রচার করে থাকেন। মানবতাবাদীরা কি কারো প্রতি বিদ্বেষ রাখতে পারে? হিংসা করতে পারে? দ্বিমত আছে এমন লোকের সাথেও কি নোংরা আচরণ করতে পারে? কিন্তু নাস্তিক মুক্তমনাদের মধ্যে মানবতাবাদীদের তেমন গুণ দেখা যায় না। এই তথ্যটি পড়ুন। “প্রথম আলো” পত্রিকায় ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২২ তারিখে “দক্ষিণ এশিয়ার চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশের মেয়েরা” শিরোনামে খবরে বলা হয় (৪৪),


আসলে হিমালয়ের চূড়ায় ওঠা এই বাংলাদেশকে থামানোর সাধ্য যে নেপালের ছিলই না। মেয়েদের সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের অধরা ট্রফিটা অবশেষে জিতল বাংলাদেশ। ফাইনালে আজ স্বাগতিক নেপালকে ৩-১ গোলে হারিয়েছেন সাবিনারা। প্রথমবারের মতো দক্ষিণ এশিয়ার ফুটবলের শিরোপা যাচ্ছে বাংলাদেশের ঘরে। এমন দিনে, স্মরণীয় জয়ে শামসুন্নাহার করেছেন প্রথম গোল। পরের দুটি কৃষ্ণা রানী সরকারের। ২–০ হওয়ার পর নেপালের গোলটি করেন অনিতা বাসনেত। 


পুরো নাস্তিক মুক্তমনা,সেকুলারগোষ্ঠী নারীদের ফুটবল খেলাইয় জয়ী হওয়াকে কৌশলে ইসলামের বিরুদ্ধে লাগিয়ে দেখিয়েছে। যেন মনে হয় নারীরা ইসলামের বিরুদ্ধে জয় লাভ করবার জন্যই ফুটবল খেলেছে। অথচ সেই ফুটবল টাইম কেউই নাস্তিকই ছিল না। এক মুক্তমনা কেমন ভয়ংকর ছবি একেছে নিজেরাই দেখুন,



কোনো নারী ফুটবলার কি বলেছে তারা দাড়ি টুপি পরিধার করা লোকদের বিরুদ্ধে খেলতে নেমেছে? তারা দাড়ি টুপি পরা বৃদ্ধদেরকে বল দিয়ে লাথি মারতে খেলেছে? অথচ মানবতাবাদী মুক্তমনারা ঠিকই এই ছবির পক্ষেই ছিল। মানবতাবাদী প্রগতিশীলদের কাউকেই এই প্রশ্ন গুলো করতে দেখে নি যে নিজের পিতার বয়সী অথবা দাদার মতো একজন বৃদ্ধর কার্টুন বানিয়ে লাথি দেয়াটা অমানবিক হবে না কেন? এই কার্টুন কিভাবে সভ্য হতে পারে? বৃদ্ধদেরকে যারা সম্মান কিভাবে করতে জানে না তারা নিজেদের পিতার এমন কার্টুন বানাতে পারবে? নিজের দাদার এমন কার্টুন তিরি করবে? মুক্তচিন্তার নামে, মানবতার নামে, নাস্তিকরা এমন বর্বর কর্ম করতে পারে কিন্তু আপনি বা আমি কি পারবো? এই খবর গুলো পাঠ করুন।


“প্রথম আলো” পত্রিকায় ০৪ জুলাই ২০২২ তারিখে “বুয়েটে প্রথম হওয়া আসীর ঢাবিতেও প্রথম” শিরোনামে খবরে বর্ণিত হয়েছে (৪৫),


ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান, জীববিজ্ঞান, ফার্মাসি, আর্থ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সেস ও ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি অনুষদভুক্ত ‘ক' ইউনিটের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় ১০ দশমিক ৩৯ শতাংশ শিক্ষার্থী উত্তীর্ণ হয়েছেন৷ এ ফলাফলে বুয়েটের ভর্তি পরীক্ষায় প্রথম হওয়া আসীর আন্‌জুম খান প্রথম হয়েছেন৷ 


“প্রথম আলো” পত্রিকায় ০৫ এপ্রিল ২০২২ তারিখে “মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষায় প্রথম খুলনার সুমাইয়া মোসলেম” শিরোনামে খবরে বর্ণিত হয়েছে (৪৬),


মেডিকেল কলেজ ভর্তি পরীক্ষায় সর্বোচ্চ নম্বর পেয়ে প্রথম হয়েছেন সুমাইয়া মোসলেম। তাঁর বাড়ি খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলা সদরে। ভর্তি পরীক্ষায় সুমাইয়া ৯২ দশমিক ৫ নম্বর পেয়েছেন। সব মিলিয়ে তাঁর মোট প্রাপ্ত নম্বর ২৯২ দশমিক ৫। আজ মঙ্গলবার দেশের মেডিকেল কলেজ ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের এমবিবিএস প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়। সুমাইয়া খুলনা মেডিকেল কলেজে ভর্তি পরীক্ষা দিয়েছিলেন। সুমাইয়া ডুমুরিয়া সরকারি বালিকা বিদ্যালয় থেকে এসএসসি ও খুলনার সরকারি মজিদ মেমোরিয়াল (এম এম) কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাস করেছেন। তাঁর বাবার নাম মোসলেম উদ্দীন সরদার। তিনি ডুমুরিয়া কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত।


“যুগান্তর” পত্রিকায় ০৪ এপ্রিল ২০২১ তারিখে, “মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় প্রথম মিশরী মুনমুন’ শিরোনামে খবরে বর্ণিত হয়েছে (৪৭),


এমবিবিএস ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি পরীক্ষায় প্রথম স্থান অর্জন করেছেন মেধা তালিকায় প্রথম মিশরী মুনমুন। তিনি পাবনা মেডিকেল কলেজ কেন্দ্র থেকে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন। তার মোট প্রাপ্ত নাম্বার ২৮৭.২৫। পাবনা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি ও পাবনা অ্যাডওয়ার্ড কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন মিশরী মুনমুন। বিষয়টির সত্যতা জানিয়ে পাবনা অ্যাডওয়ার্ড কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. হুমায়ুন কবির মজুমদার বলেন, আমরা খুবই গর্ববোধ করছি। তার গ্রামের বাড়ি পাবনা শহরের রাধানগর নারায়ণপুর গ্রামে। তার বাবা আবদুল কাইয়ুম স্কয়ার ফুড অ্যান্ড বেভারেজে চাকরি করেন। তার তিন বোন, কোনো ভাই নেই। বড় বোন ডাক্তার। চুয়াডাঙ্গায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। মেঝো বোন পাবনা অ্যাডওয়ার্ড কলেজে রসায়ন বিভাগে অনার্স ফাইনাল ইয়ারে পড়েন। সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুল জব্বার জানান, সে ছোট থেকেই মেধাবী ছিল। তৃতীয় শ্রেণিতে সে এসএসসি এখানে পড়াশোনা করেন। সব সময় সে ক্লাসের ফার্স্ট হতো। 


“দৈনিক ইত্তেফাক” ১৭ নভেম্বর ২০২১ তারিখে “বিনা পারিশ্রমিকে এক হাজারেরও বেশি কিডনি প্রতিস্থাপন করেছেন তিনি” শিরোনামে খবরে বর্ণিত হয়েছে (৪৮),(৪৯)


বছরের পর বছর ধরে বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা ও পরামর্শ দান —কথাটা বর্তমান সময়ে শুনতে অবাক লাগলেও বাস্তবে তা করে চলেছেন অনেকেই। সম্প্রতি দেশজুড়ে সাধারণ মানুষের মন জয় করেছেন মানবদরদী এমন এক ডাক্তার। গত একযুগ ধরে তিনি বিনামূল্যে কিডনি প্রতিস্থাপন করে আসছেন, পাশাপাশি রোগিদের বিনামূল্যে দিচ্ছেন ফলোআপ। বলছি সিকেডি অ্যান্ড  ইউরোলজি হাসপাতালের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক ডা. কামরুল ইসলামের কথা। ২০১১ সালে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব কিডনি ডিজিজেস অ্যান্ড ইউরোলজি হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক হিসেবে অবসরগ্রহণ করে ২০১২ সালে ব্যক্তিগত উদ্যোগে গড়ে তোলেন সিকেডি অ্যান্ড ইউরোলজি হাসপাতাল। মাত্র দুই লাখ দশ হাজার টাকার বিনিময়ে কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয় সেখানে। জটিল এই অস্ত্রোপচার বাবদ কোনো পারিশ্রমিক নেন না ডা. কামরুল ইসলাম। কয়েকমাস পরপর কিডনি প্রতিস্থাপন করা রোগিদের ফলোআপও দিয়ে থাকেন বিনামূল্যে। আলাপচারিতায় ডা. কামরুল ইসলাম বলেন, ‘আমি হয়তো টাকা নিইনা, কিন্তু পক্ষান্তরে যেটুকু সম্মান আর ভালোবাসা পাচ্ছি তা তো কখনো কেনা যেতো না!' অধ্যাপক কামরুল ও তার দল এ পর্যন্ত প্রায় এক হাজারের মতো কিডনি প্রতিস্থাপন করেছেন, যার সফলতার হার ৯৬ শতাংশ। গত বছর করোনার প্রকোপে অন্যান্য রোগীদের স্বাস্থ্যসেবা যেখানে প্রায় অকেজো ছিল, সেখানেও কামরুল ইসলাম ও তার সহযোগীরা মিলে প্রায় ২৫০টির মতো কিডনি প্রতিস্থাপন করেছেন। এদের মধ্যে ৩ জন ছাড়া বাকি সব রোগী সুস্থ জীবনযাপন করছে

১৯৯৩ সালে বিসিএস (স্বাস্থ্য) ক্যাডারে হিসেবে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব কিডনি ডিজিজেস অ্যান্ড ইউরোলজি হাসপাতালে যোগ দেন। প্রথমবারের মতো সফলভাবে কিডনি প্রতিস্থাপনের কাজ করেন ২০০৭ সালে। মজার বিষয় হলো, কিডনি প্রতিস্থাপক সার্জনের দায়িত্ব নেয়ার আগে কামরুল ইসলাম কোরবানির গরু-খাসির কিডনি নিয়ে প্র্যাকটিস করতেন। তিনি বলেন, 'প্রথম দিকে কিডনি প্রতিস্থাপক সার্জন হতে চাইনি, যেহেতু সরকারি প্রতিষ্ঠানে দায়িত্ব কাঁধে এসে পড়েছে তাই এক প্রকার বাধ্য হয়ে করতে হয়েছে। শুরুতে চারটা মেশিন নিয়ে ডায়ালাইসিস সেটআপ শুরু করি, অল্পদিনে ৩০ জনের মতো নিয়মিত ডায়ালাইসিস করাতো, তাদের একজনকে প্রথম ট্রান্সপ্লান্ট করি, সেটা সফল হওয়ার পর রেফারেন্সে একটার পর একটা আসতে থাকে। এখন তা নিয়মিতই করে যাচ্ছি।’'


উপরে যাদের খবর আপনারা পড়লেন অর্থাৎ আসীর আন্‌জুম,সুমাইয়া মোসলেম,মিশরী মুনমুন ও ডা. কামরুল ইসলাম এনারা কেউই নাস্তিক নয়। উনারা সবাই নাস্তিক্যবাদে অবিশ্বাস করে ইসলামে আস্থা রাখেন। আল্লাহকে সত্যি বলে স্বীকার করেন। নবী মোহাম্মদ (সা)কে সত্যি বলে স্বীকার করেন। উনারা কেউই নাস্তিক্যধর্মে বিশ্বাস রাখেন না। একজন মুক্তমনাও কি উনাদের সাফল্যকে প্রশংসা করতে পেরেছে? উনাদেরকে উৎসাহিত করতে পেরেছে? উনারা ইসলাম চর্চা করে, দাড়ি রাখেন,টুপি পরেন, নামাজ আদায় করেন, বোরখা পরে, হিজাব পরে এই কারণে উনাদেরকে প্রগতিশীলরা দূরে সরিয়ে দিতে চাচ্ছে না তো?


যেসব মুক্তমনা প্রগতিশীলরা নিজেদেরকে মানবতাবাদী অসাম্প্রদায়িক দাবি করে থাকেন। উনারা এটাও বলে থাকেন প্রতিটি মানুষকে সমান অধিকার দিতে হবে সবার প্রতি একই নজরে দৃষ্টি দিতে হবে কিন্তু উনারা কেন জানি মুসলিম ও ইসলামের ব্যাপার আসলেই মানবতার কথাটি ভুলেই যান। প্রকৃত নাস্তিক মানবতাবাদী কেমন হয়? সেই নাস্তিক কখনো নবী কে নিয়ে এমন গালি দেবে না যাতে মুসলিমরা মনে কষ্ট পায়। সেই নাস্তিক মনে করবে মুসলিমদের বিশ্বাসের স্বাধীনতা রয়েছে। যে যা ইচ্ছে বিশ্বাস করা তার অধিকার। মুসলিমদের ইসলাম ত্যাগ করবার বিন্দুমাত্র দরকার নেই। মুসলিমদের জন্য এমন কাজ সেই মানবতাবাদী নাস্তিক করবে যাতে মুসলিমরা খুশি হয়। শুধু মুসলিমদের জন্য না সবার জন্যই একজন নাস্তিক নিজেকে উপকারী বানিয়ে তুলতে পারেন। মুসলিমরা ইসলামের প্রতি উক্ত নাস্তিককে আহব্বান করলেও তো সেই নাস্তিক এমন আচরণ করবে যাতে মুসলিমরা ইসলাম প্রচারে আরও উৎসাহী হতে পারে। কিন্তু মুক্তমনা নাস্তিকরা কি আসলেই মানবধর্মে বিশ্বাসী?


আপনি যদি নাস্তিক মুক্তমনাদেরকে যাচাই করেন দেখবেন তারা মুসলিমদেরকে কিভাবে ঘৃণা করে, তারা ইসলাম নিয়ে কিভাবে জালিয়াতি করে, নবী মোহাম্মদ (সা)কে নিয়ে কিভাবে নোংরা নোংরা শব্দ ব্যাবহার করে,উনার স্ত্রীদেরকে নিয়ে কিভাবে মিথ্যা কথা বলে, আল্লাহকে নিয়ে কিভাবে গালাগালি করে। এই নাস্তিক গুলো আবার মানুষকে মুক্তচিন্তা করতে বলে। যৌক্তিকতায় মুক্তচিন্তায় সকল প্রকার অপরাধ বৈধ- এই কথাটি অনেক মুক্তমনাই বোঝে না। এই খবর গুলো পড়ুন। আপনার জন্য শেষে একটা প্রশ্ন আছে। “দৈনিক ইনকিলাব” পত্রিকায় ২৮ জানুয়ারি, ২০২২ তারিখে “যুক্তরাজ্যে সবচেয়ে বেশি বৈষম্যের শিকার মুসলিমরা” শিরোনামে খবরে বলা হয়েছে (৫০),

ইউনিভার্সিটি অফ বার্মিংহাম এবং ডাটা অ্যানালাইসিস ফার্ম ইউগভ-এর বিশ্লেষণে দেখা গেছে যে, ব্রিটিশ জনসাধারণ অন্য যে কোনও ধর্মের তুলনায় ইসলামের প্রতি বৈষম্যমূলক এবং নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করে এবং এই জনসংখ্যার একটি উল্লেখযোগ্য অংশ সংখ্যালঘু ব্রিটিশ মুসলিম সম্প্রদায়ের বিষয়ে ভুল এবং ষড়যন্ত্রমূলক মতামত পোষণ করে। সমীক্ষায় দেখা গেছে যে, বয়স্ক ব্যক্তিরা, শ্রমজীবী, পুরুষ, যারা ইইউ ছাড়ার পক্ষে ভোট দিয়েছেন এবং সেইসাথে প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের অধীনে কনজারভেটিভ পার্টির সমর্থকরাই এই ধরনের ইসলামোফোবিক দৃষ্টিভঙ্গি এবং বিশ্বাস বেশি পোষণ করেন। 

গবেষণার প্রধান লেখক স্টিফেন এইচ জোন্স বলেন, ‘ইসলাম এবং মুসলমানদের প্রতি কুসংস্কার যুক্তরাজ্যে ছড়িয়ে পড়েছে শুধুমাত্র এই কারণেই নয় যে, এটি বেশিরভাগ বর্ণবাদের চেয়ে অনেক বেশি বিস্তৃত। বরং ইসলামের প্রতি কুসংস্কার যারা ধনী এবং সুশিক্ষিত তাদের মধ্যে আরও বেশি।’ তিনি বলেন, ‘কেউ ধর্মের সমালোচনা নিয়ন্ত্রণকারী আইনের জন্য আহ্বান জানায় না, তবে আমাদের স্বীকার করতে হবে যে, ব্রিটিশ জনগণকে পদ্ধতিগতভাবে ইসলামিক ঐতিহ্য সম্পর্কে বিভ্রান্ত করা হয়েছে এবং এর প্রতিকারের জন্য পদক্ষেপ নিতে হবে।’প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অমুসলিম ব্রিটিশ জনসাধারণের মধ্যে অন্যান্য ধর্মের তুলনায় ইসলামের প্রতি কুসংস্কারপূর্ণ দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করার আশঙ্কা তিনগুণ বেশি।

“নয়াদিগন্ত” পত্রিকায় ১৪ জুন ২০২২ তারিখে “জার্মানিতে ৮ বছরে ৮৪০টি মসজিদে হামলা, নেই সুষ্ঠু তদন্ত” শিরোনামের খবরে বলা হয়েছে (৫১) ,

২০১৪ সাল থেকে জার্মানিতে আট শ’রও বেশি মসজিদ হুমকি এবং হামলার শিকার হয়েছে। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অপরাধ সঠিকভাবে তদন্ত করা হয়নি। মানবাধিকার সংগঠন ফেয়ার ইন্টারন্যাশনালের উদ্যোগে ব্রান্ডেলিগ এ তথ্য জানিয়েছে। জার্মানিতে প্রথম যখন কোনো মসজিদে হামলা হয়, তখনই সংগঠনটি প্রথম রিপোর্টিং সেন্টার চালু করে। ২০১৪ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত, আট বছরে ৮৪০টি মসজিদে হামলা, ভাঙচুর এবং হুমকির ঘটনা রেকর্ড করা হয়েছে। ২০১৮ সালে অপরাধের বিশদ বিশ্লেষণ থেকে জানা যায় যে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অপরাধীদের শনাক্ত করা যায়নি। এর কারণে নব্য-নাৎসি বা বাম উগ্রপন্থীরা মসজিদে আরো আক্রমণ চালাতে উৎসাহ পেয়েছে। 

সংগঠনটি সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ‘সাধারণভাবে, মসজিদে হামলার বিষয়টি খুব বেশ গুরুত্ব দেয়া হয় না।’ ২০১৮ সালে মসজিদে ১২০টি হামলা চালানো হয়েছে। কিন্তু মাত্র নয়টি ঘটনায় অপরাধীদের চিহ্নিত করা হয়েছে। ব্র্যান্ডেলিগের বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, ‘এই হার উদ্বেগজনক।’ তারা জোর দিয়ে বলেছেন, কমপক্ষে ২০টি হামলায় মসজিদে অগ্নিসংযোগ এবং মুসল্লিদের হত্যা ও শারীরিক ক্ষতি করার উদ্দেশ্যে চালানো হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলেন, ‘সাধারণত প্রতিটি ঘটনার পরই পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে। তদন্তও শুরু করেছে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক ব্যাপার হলো, একটি ঘটনারও সুষ্ঠু তদন্ত এবং সমাধান এখনো পর্যন্ত হয়নি।’ সাম্প্রতিক বছরগুলোতে জার্মানিতে বর্ণবাদ এবং মুসলিম বিরোধী বিদ্বেষ অনেক বেড়েছে। নব্য-নাৎসি গোষ্ঠী এবং ডানপন্থী অল্টারনেটিভ ফর জার্মানি (এএফডি) পার্টির প্রোপাগান্ডা দ্বারা প্ররোচিত হয়ে মসজিদগুলোতে হামলা চালানো হয়েছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, ‘বাম চরমপন্থী এবং পিকেকে’র সন্ত্রাসীরা বেশ কয়েকটি মসজিদে হামলার ঘটনার জন্য দায়ী ছিল। তখন বেশিরভাগ মসজিদে হামলা চালিয়েছিল ডান চরমপন্থী বা নব্য-নাৎসি গোষ্ঠীগুলো।’ উল্লেখ্য, পশ্চিম ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে ফ্রান্সের পর সবচেয়ে বেশি মুসলমানের বসবাস জার্মানিতে।

অনেক নাস্তিকদের কাছেই শুনেছি জার্মান নাকি শান্তিপ্রিয় দেশ, ফ্রান্স নাকি শান্তিপ্রিয় দেশ, অ্যামেরিকা নাকি শান্তিপ্রিয় দেশ হয়তো মুসলিমদের গণহত্যা, নির্যাতন, অত্যাচার, মুসলিম নারী ও শিশুদের গণধর্ষণ  অথবা দুনিয়া থেকেই মুছে দেয়াকে সেসব প্রগতিশীলরা মুক্তচিন্তায় শান্তি মনে করে থাকে। ফ্রান্সে মুসলিম কেমন আছে জানতে এই লেখাটি পড়ুন (৫২)। “নয়া দিগন্ত” পত্রিকায় ০৮ জুন ২০২২ তারিখে “যুক্তরাজ্যে কর্মক্ষেত্রে ইসলামবিদ্বেষের শিকার মুসলিমরা:সমীক্ষা” শিরোনামে খবরে বলা হয়েছে (৫৩) ,

যুক্তরাজ্যে কর্মক্ষেত্রে ইসলামবিদ্বেষের শিকার হচ্ছেন মুসলিমরা। দশ জনের মধ্যে সাতজনই এমন অভিজ্ঞতার শিকার হয়েছেন। মঙ্গলবার প্রকাশিত এক সমীক্ষায় এমনটাই দেখা গেছে। এতে বলা হয়েছে, বর্তমানে যুক্তরাজ্যে বসবাস করা প্রায় ৬৯ শতাংশ মুসলিমই কর্মক্ষেত্রে বিভিন্ন পর্যায়ে ইসলামবিদ্বেষী আচরণের মুখোমুখি হয়েছেন। এর মধ্যে গ্রাহক, ক্লায়েন্ট এবং অন্যান্য মানুষের সাথে যোগাযোগের সময় ৪৪ শতাংশ, কাজের সাথে সম্পর্কিত সামাজিক অনুষ্ঠানের সময় ৪২ শতাংশ এবং প্রচার কাজের সময় ৪০ শতাংশ ইসলামবিদ্বেষের শিকার হয়েছেন। ইউরোপে ইসলামেবিদ্বেষ এবং মুসলিমদের প্রতি বৈষম্য পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা হাইফেনের নির্দেশে সমীক্ষাটি পরিচালনা করেছে পোলিং কোম্পানি সাভান্তা কমরেস। মোট এক হাজার ৫০৩ জন ব্রিটিশ মুসলমানের ওপর ২২ এপ্রিল থেকে ১০ মে পর্যন্ত সমীক্ষা চালানো হয়েছে। বয়স, লিঙ্গ, জাতি এবং অঞ্চল অনুসারে যুক্তরাজ্যের মুসলমানদের প্রতিনিধিদের অভিজ্ঞতা জানতে চাওয়া হয়েছে। সমীক্ষায় উঠে এসেছে, সবচেয়ে বেশি ইসলামবিদ্বেষের শিকার হচ্ছেন কৃষ্ণাঙ্গ মুসলিমরা। যেখানে সমস্ত মুসলমানদের ৩৭ শতাংশ নিয়োগ পর্যায়ে বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন, সেখানে কৃষ্ণাঙ্গ মুসলিমদের সংখ্যা ৫৮ শতাংশ।

“BBC NEWS বাংলা” পত্রিকায় ২৭ অগাস্ট ২০২২ তারিখে “মিশর: হিজাব পরে দেশটিতে যেভাবে বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন নারীরা” শিরোনামে খবরে বলা হয়েছে (৫৪) ,

সামাজিক মাধ্যমে হিজাব বিষয়ক একটি গ্রুপের মাধ্যমে বিবিসি অ্যারাবিক দেখতে পেয়েছে, হিজাব পরার কারণে মিশরের নারীরা সমস্যার মুখোমুখি হয়েছেন, এমন প্রবণতা বাড়ছে। অনেক ক্ষেত্রে শুধুমাত্র হিজাব পরার কারণে তাদের অনেক স্থানে ঢুকতে দেয়া হয়নি

নিজেরা যখন মুসলিম নারীদেরকে বোরখা পরতে বাধা দেয়, মুসলিম পুরুষদেরকে দাড়ি, টুপি, নামাজ আদায় করতে বাধা দেয় তখন সেটা মিডিয়া পজিটিভ করে দেখায় কিন্তু মুসলিম দেশে যদি এর উল্টো হয় তখন মুসলিমদেরকে খারাপ বানিয়ে দেখাতে ভুল করে না ইসলামবিদ্বেষী মিডিয়া গুলো। ইসলামকে যাতে মানুষ ঘৃণা করে। মুসলিম নারী পুরুষ শিশুদেরকে যাতে সবাইকে ঘেন্না করে এই কারণে কোটি কোটি টাকা খরচ করা হয়। কেন? হ্যাঁ, এমন অনেক নাস্তিক মুক্তমনা রয়েছে যারা এসব অন্যায়ের বিরুদ্ধে মুসলিমদের পক্ষে প্রতিবাদ করে কিন্তু এই সংখ্যাটা খুবই কম। বেশির নাস্তিক মুক্তমনা মুসলিমদেরকে মনে প্রাণে ঘৃণা করে ও ঘৃণাকে প্রচার করে। নাস্তিকরা যদি আসলেই প্রকৃত মানবতাবাদী হতো আর আসলেই এই কথা বিশ্বাস করতো যে সবার উপরে মানুষ সত্য তাহার উপরে নেই তাহলে নাস্তিকরা কখনোই মুসলিমদের বিরুদ্ধে এমনকি কারো বিরুদ্ধেই সমালোচনা করতে পারতো না। মুসলিমদের নিয়ে মিথ্যাচার করতে পারতো না। ইসলাম নিয়ে মিথ্যাচার করতে পারতো না। মুসলিমরা যাই মানুক নাস্তিকরা মুসলিমদের প্রশংসা করতো।

“BBC NEWS বাংলা” পত্রিকায় ২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ তারিখে “'ওই চাকরিটা পাওয়ার যোগ্যতা ছিল, কিন্তু টুপি দাড়ির জন্য পাইনি” শিরোনামে খবরে বলা হয়েছে (৫৫) ,

"আমি একটা চাকরির ইন্টারভিউ দিতে গিয়েছিলাম, যেখানে আমাকে বলা হয়েছিল যে টুপি পরা চলবে না, দাড়ি কেটে ফেলতে হবে। ওই চাকরিটা পাওয়ার যোগ্যতা আমার ছিল, কিন্তু ওই টুপি দাড়ির জন্য পাই নি," নিজের অভিজ্ঞতার কথা শোনাচ্ছিলেন মনজার হোসেন। মুহম্মদ হাসান মল্লিকের অভিজ্ঞতা একটু অন্যরকম। তিনি বলছিলেন, "কর্পোরেট সেক্টরে ধর্মীয় কারণে বৈষম্য করতে দেখি নি, অন্তত আমার সঙ্গে এরকম কিছু হয় নি। ওরা যোগ্যতার ভিত্তিতেই চাকরি দেয়। কিন্তু সরকারি ক্ষেত্রে এরকম বৈষম্য হতে আমি দেখেছি।"

দাড়ি রাখার জন্য চাকরি থেকে বরখাস্ত হলেন উত্তরপ্রদেশের এক মুসলিম পুলিশকর্মী (৫৬)। বার্লিনের মুসলিমরা প্রতিনিয়ত বর্ণবাদ ও বৈষম্যের শিকার হন। চাকরিতে নিয়োগসহ বিভিন্ন সেবা পেতে সমস্যায় পড়েন তারা। কিন্তু সচেতনতার অভাবে মুসলিমবিরোধী আচরণ ও অপরাধগুলোর খবর ঠিকমতো প্রচার পায় না (৫৭)। “নয়া দিগন্ত” পত্রিকায়  ১৩ জানুয়ারি ২০২২ তারিখে “ইসলামভীতি ছড়াতে যুক্তরাষ্ট্রে ৯১ কোটি টাকা অর্থায়ন” শিরোনামে খবরে বলা আছে (৫৮) ,

শান্তির ধর্ম ইসলামকে বিতর্কিত করার চেষ্টা চলে আসছে আদিকাল থেকেই। রীতিমতো আটঘাট বেঁধে ইসলামের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাতে তৎপর একাধিক গোষ্ঠী। আর তাদের পৃষ্ঠপোষকতায় নিযুক্ত রয়েছে বিভিন্ন ব্যক্তি, সংগঠন ও সংস্থা। বছরের পর বছর মুসলিম বিদ্বেষ ছড়াতে কাড়ি কাড়ি পয়সা ঢালে তারা। তারই ধারাবাহিকতায় ২০১৭ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত ১০৬ মিলিয়ন ডলার তহবিল দেয়া হয়েছে ইসলাম বিরোধী গোষ্ঠীগুলোকে। যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তম মুসলিম নাগরিক অধিকার এবং অ্যাডভোকেসি সংস্থা মঙ্গলবার এ সংক্রান্ত খবর প্রকাশ করেছে।….মার্কিন ইসলাম বিরোধী নেটওয়ার্কের কাজই হলো মুসলিমদের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ভুয়া তথ্য ছড়ানো। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, সংবাদ মাধ্যম, মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে দেয়াসহ বিভিন্ন পন্থায় তারা ইসলামের বিরুদ্ধে গুজব ছড়ায়।

“BBC NEWS বাংলা” পত্রিকায় ২৩ জানুয়ারি ২০১৯ তারিখে “নিউইয়র্কে মুসলিমদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগে আটক ৪” শিরোনামে খবরে বলা আছে (৫৯),

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে এক কিশোরসহ চারজনকে আটক করা হয়েছে একটি মুসলিম কমিউনিটির বিরুদ্ধে হামলার ষড়যন্ত্রের অভিযোগে। মুসলিমদের একটি ছোট গোষ্ঠী বা কমিউনিটির বিরুদ্ধে হামলার ষড়যন্ত্রের অভিযোগ আনা হয়েছে ওই তিন ব্যক্তি ও এক কিশোরের বিরুদ্ধে। একই সাথে তাদের বিরুদ্ধে হাতবোমা ও অস্ত্রশস্ত্র রাখার অভিযোগ আনা হয়েছে ও বলা হচ্ছে ইসলামবার্গ সম্প্রদায়ের ওপর হামলার ষড়যন্ত্র করছিলেন তারা। এই সম্প্রদায়টি আশির দশকে পাকিস্তানী একজন ধর্মীয় নেতা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। এই ইসলামবার্গ গোষ্ঠীকে নিয়ে অনেকদিন ধরেই নানা কথা বলা হচ্ছিলো যে এটা আসলে 'সন্ত্রাসীদের প্রশিক্ষণ ক্যাম্প'। আটক তিন ব্যক্তিকে বুধবার আদালতে তোলার কথা রয়েছে। তদন্তকারীরা বলছেন আটক কিশোরের বাড়িতে বিস্ফোরক দ্রব্য পাওয়া গেছে এবং আরও অন্তত ২৩টি অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে বিভিন্ন জায়গা থেকে। নিউইয়র্ক রাজ্যে গ্রীস শহরের পুলিশ প্রধান বলছে ১৬ বছর বয়সী ওই কিশোর স্কুলে এ বিষয়ে কথা বলার সময় অন্যরা শুনে ফেলে এবং তার ভিত্তিতেই পরে তদন্ত শুরু হয়। ইসলামবার্গ কমিউনিটি বিংহ্যামটন শহরের কাছে ক্যাটস্কিল পর্বতের পশ্চিমে বসবাস করে। মূলত আফ্রিকান-আমেরিকান একটি গ্রুপ নিউইয়র্ক থেকে সরে সেখানে বসতি গড়ে। এর আগে ২০১৭ সালে এই সম্প্রদায়ের একটি মসজিদ পুড়িয়ে দেয়ার ষড়যন্ত্রের অভিযোগে একজনকে কারাদণ্ড দিয়েছিলো আদালত।

নিজেকে প্রশ্ন করুন এরপরেও কেন শুধু মুসলিমদেরকেই ভিলেন হিসেবে দেখানো হচ্ছে? এই হিসাবটা যদি আপনি মিলাতে পারেন তাহলে অনেক কিছুই আপনার চোখে দৃশ্যমান হয়ে উঠবে। এই ধাঁধাটির উত্তর আপনি সন্ধান করতে থাকুন।

নাস্তিক বিশাল দাদলানির মুক্তচিন্তাঃ

কেউ যদি নিজেকে নাস্তিক ও বিজ্ঞানমনস্ক দাবি করে থাকে তাহলে অবশ্যই সে এমন কোনো কাজে অংশগ্রহণ করবে না অথবা এমন কোনো কাজকে সম্মান করবে না যা সে বিজ্ঞানবিরোধী ও অযৌক্তিক বলে মনে করবে। ভারতের খুবই জনপ্রিয় গায়ক বিশাল ডিডলানি যিনি নিজেকে নাস্তিক ও বিজ্ঞানমনস্ক দাবি করেন। আসুন দেখে নেই।



কিন্তু উনার কীর্তিকলাপ খুবই নিন্মমানের। Indian Idol- অনুষ্ঠানে এক গায়ক সেই প্রোগ্রামকে নিয়ে অনেক সমালোচনা করেন। দাদলানি সেই গায়ককে বলেন (৬০),


আপনি যে আমাদের এই “শো”কে চিপ বললেন। আমি শুধু আপনাকে এটা বলতে চাই যে, এটা এমন জায়গা যেখানে আপনি দাড়িয়ে আছেন, এই জায়গায় পবিত্রতার উপর প্রশ্ন করে কেউ কখনো বড় হয় না। এই জায়গা থেকে কত গায়ক নিজের ক্যারিয়ার কামিয়েছে  


নাস্তিকরাই বলে প্রশ্ন করতে দেয়ার অধিকার দিতে হবে অথচ অন্যদিকে অন্য নাস্তিক এই কথা বলছে যে গানের অনুষ্ঠানের পবিত্রতা নিয়ে প্রশ্ন করে কেউ কখনো বড় হতে পারে না। কি আশ্চর্য তাই না? শুধু এখানেই নয়। ডিডলানি গানকে নিজের ধর্ম হিসেবে ঘোষণা করেছেন ()। তাহলে প্রশ্ন হচ্ছে কোনও নাস্তিক যদি গানকে নিজের ধর্ম হিসেবে মনে করতে পারে তাহলে নাস্তিক্যবাদকে কেন ধর্ম মনে করা যাবে না? “হিন্দুস্তানি টাইমস” Oct 03, 2019 তারিখে “Music is my religion, my life: Vishal Dadlani” শিরোনামে খবরে বলা হয়েছে (৬১),


Music composer, singer and reality television judge Vishal Dadlani feels he is still a beginner and has lot to learn from new-age singers. “It is a fact. No one can learn everything about music. As music is something that has and will evolve, so no one can claim to know all or learnt all. For me, I am a music lover and my religion, my life, is all about and for music. So, if you see me singing or composing, it’s something that I was meant to do,” said the popular musician during a recent visit to Lucknow for promotions of his upcoming reality show.


ভাবানুবাদঃ মিউজিক কম্পোজার, গায়ক এবং রিয়েলিটি টেলিভিশনের বিচারক বিশাল দাদলানি মনে করেন যে তিনি এখনও একজন শিক্ষানবিশ এবং নতুন যুগের গায়কদের কাছ থেকে অনেক কিছু শেখার আছে। “এটি একটি বাস্তবতা। কেউ গান সম্পর্কে সবকিছু শিখতে পারে না। যেহেতু সঙ্গীত এমন কিছু যা আছে এবং বিকশিত হবে, তাই কেউই দাবি করতে পারে না যে তিনি সবকিছু জানেন বা শিখেছেন। আমার জন্য, আমি একজন সঙ্গীতপ্রেমী এবং আমার ধর্ম, আমার জীবন, সবকিছুই সঙ্গীতের জন্য। সুতরাং, আপনি যদি আমাকে গান গাইতে বা রচনা করতে দেখেন তবে এটি এমন কিছু যা আমি করতে চেয়েছিলাম,” জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী তার আসন্ন রিয়েলিটি শো-এর প্রচারের জন্য লখনউতে সাম্প্রতিক সফরের সময় বলেছিলেন।


এই জনপ্রিয় নাস্তিক লোকটি হিন্দু নগ্ন পণ্ডিতদের কাছে গিয়ে আশীর্বাদ নিয়ে আসে (৬২)। চিন্তা করেন? অথচ এরা নিজেদেরকে ও অন্যদেরকে নাকি আবার বিজ্ঞান শেখাতে আসে। এরা নাকি বিজ্ঞানবিরোধী কোনো কাজ করে না।



আপনি যদি নাস্তিক হয়ে থাকেন আর আমার এই লেখাটির এই পর্যন্ত এসে থাকেন তাহলে আপনাকে একটি প্রশ্ন করছি উপরের ছবিটি দেখে বলুন কাকে বেশি মুক্তচিন্তক দেখাচ্ছে? নগ্ন পণ্ডিতকে নাকি নাস্তিক দাদলানিকে?


মদ সেবনের প্রথাঃ

মদ্যপান যে স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর- এইটা অনেকেরই জানা। তবে এতদিন ধরে এক ধরণের ‘আবহ’ সৃষ্টি করে রাখা হয়েছিল এই বলে যে, মডারেইট পরিমাণ মদ্যপানে সামান্য উপকারীতা আছে। কিন্তু সম্প্রতি এ বিষয়ে বিস্তর গবেষণালন্ধ ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে। সেই গবেষণা অনুযায়ী মদ্যপানের আসলে ‘নিরাপদ’ বা ‘স্বাস্থ্যকর’ কোনো মাত্রা নেই। এমনকি মাঝে মধ্যে মদ্যপানও স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। সস্তা নাস্তিকদেরকে দেখা যায় সস্তা নাস্তিক ডাক্তারদেরকে ডেকে লাইভে মদের ফজিলত বর্ণনা করতে। মদ নাকি অল্প  পরিমাণে খেলে সমস্যা নেই। কিন্তু বিভিন্ন গবেষণা উল্টো কথা বলছে। “The Guardian” Thu 23 Aug 2018 “No healthy level of alcohol consumption, says major study” শিরোনামে বলা হয়েছে (৬৩) ,


Even the occasional drink is harmful to health, according to the largest and most detailed research carried out on the effects of alcohol, which suggests governments should think of advising people to abstain completely. The uncompromising message comes from the authors of the Global Burden of Diseases study, a rolling project based at the University of Washington, in Seattle, which produces the most comprehensive data on the causes of illness and death in the world.


ভাবানুবাদঃ এমনকি মাঝে মাঝে পানীয় স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর, অ্যালকোহলের প্রভাবের উপর পরিচালিত বৃহত্তম এবং সবচেয়ে বিশদ গবেষণা অনুসারে, যা প্রস্তাব করে যে সরকারগুলিকে সম্পূর্ণরূপে পরিহার করার পরামর্শ দেওয়ার কথা ভাবা উচিত। আপোষহীন বার্তাটি গ্লোবাল বার্ডেন অফ ডিজিজেস স্টাডির লেখকদের কাছ থেকে এসেছে, সিয়াটেলের ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটিতে ভিত্তিক একটি রোলিং প্রকল্প, যা বিশ্বের অসুস্থতা এবং মৃত্যুর কারণগুলির উপর সবচেয়ে ব্যাপক তথ্য তৈরি করে।


“প্রথম আলো” পত্রিকায় ২৫ আগস্ট ২০১৮ তারিখে “মদের নিরাপদ মাত্রা নেই, বছরে ২৮ লাখ মৃত্যু” শিরোনামে খবরে বলা হয়েছে (৬৪) ,


মদ স্বাস্থ্যকে নানাভাবে ক্ষতি করে। কম মদ খাওয়া দেশগুলোর তালিকায় আছে বাংলাদেশ। বিশ্বে প্রতি তিনজনে একজন মদ পান করে। অপরিণত বয়সে মৃত্যু ও প্রতিবন্ধিতার জন্য সপ্তম ঝুঁকিপূর্ণ অভ্যাস মদ্যপান। প্রতিবছর ২৮ লাখ মানুষ মারা যায় মদের কারণে। গত বৃহস্পতিবার মদের স্বাস্থ্যঝুঁকি নিয়ে এক প্রবন্ধে এসব তথ্য প্রকাশ করেছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক জনস্বাস্থ্য ও চিকিৎসা সাময়িকী দ্য ল্যানসেট। ১৯৯০ থেকে ২০১৬ সালের মধ্যে ১৯৫টি দেশে মদের ব্যবহার, অসুস্থতা ও মৃত্যুর তথ্য এতে বিশ্লেষণ করা হয়েছে। এতে গবেষকেরা বলেছেন, মদের কোনো নিরাপদ মাত্রা নেই। প্রবন্ধে বলা হয়, ডেনমার্কের মানুষ সবচেয়ে বেশি মদ পান করে। সবচেয়ে কম মদ পান করা দেশগুলোর তালিকায় আছে বাংলাদেশ।


গ্লোবাল বার্ডেন অব ডিজিজ নামের বৈশ্বিক উদ্যোগ থেকে এই গবেষণা করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট ফর হেলথ ম্যাট্রিকস এই উদ্যোগের প্রধান কার্যালয় হিসেবে কাজ করে। গবেষণায় অর্থায়ন করে যুক্তরাষ্ট্রের বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন। এর সঙ্গে যুক্ত আছেন আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশের (আইসিডিডিআরবি) অসংক্রামক ব্যাধি বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিজ্ঞানী আলিয়া নাহিদ। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘মদ সরাসরি স্বাস্থ্যের ক্ষতি করে, উচ্চ রক্তচাপ বাড়ায়, এটা ক্যানসারের অন্যতম কারণ। এই প্রথমবারের মতো বিশ্বের গবেষকেরা এক সুরে বলছেন, মদের কোনো গ্রহণযোগ্য মাত্রা নেই।’ গবেষকেরা বলছেন, ১৫-৪৯ বছর বয়সী মানুষের ১০টি মৃত্যুর মধ্যে একটি ঘটে মদের কারণে। নিয়মিত মদ্যপান শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ ও টিস্যুতে বিরূপ প্রভাব ফেলে। মদে অভ্যস্ত মানুষ সহিংস হয় এবং অনেক সময় নিজের ক্ষতি করে। 


বিশ্বব্যাপী মানুষ কী পরিমাণ মদ পান করে, সেই হিসাব বের করতে গবেষকেরা ৬৯৪টি পূর্বের গবেষণা পর্যালোচনা করেন। এ ছাড়া মদের স্বাস্থ্যঝুঁকি নির্ণয়ের জন্য আরও ৫৯২টি গবেষণা প্রবন্ধ বিশ্লেষণ করা হয়েছে। এসব পর্যালোচনা শেষে গবেষকেরা বলছেন, ৫০ বছরের বেশি বয়সীদের ক্যানসারে মৃত্যুর পেছনে প্রধান কারণ মদ্যপান। ২০১৬ সালের বৈশ্বিক(তথ্যে দেখা গেছে, ২.২ শতাংশ নারী ও ৬.৮ শতাংশ পুরুষের অপরিণত বয়সে মৃত্যুর কারণ মূলত মদ্যপান। ১৫-৪৯ বছর বয়সীদের প্রধান মৃত্যুঝুঁকি ছিল মদসংশ্লিষ্ট কারণ। 


এই বয়সসীমায় মানুষ সড়ক দুর্ঘটনা, আত্ম-আঘাত ও যক্ষ্মায় বেশি মারা যায়। অন্যদিকে ৫০ বছর বা তার বেশি বয়সী মারা যায় মদ্যপানসংশ্লিষ্ট ক্যানসারের কারণে (নারী ২৭ ও পুরুষ ১৯ শতাংশ)। তবে দুটি ক্ষেত্রে মদের উপকারিতার তথ্য পেয়েছেন গবেষকেরা। অপর্যাপ্ত রক্ত সরবরাহসংক্রান্ত হৃদরোটের (স্কেমিক হার্ট ডিজিজ) মদ কিছুটা সুরক্ষা দেয়। অন্যদিকে ডায়াবেটিকের ক্ষেত্রে সুরক্ষার একটি সম্ভাবনার কথা বলা হয়। তবে এই দুটি ক্ষেত্রে যে পরিসংখ্যান তাঁরা পেয়েছেন, তা যৎসামান্য। বিশ্বে প্রতি তিনজনে একজন মদ পান করে। এদের মোট সংখ্যা ২৪০ কোটি। ডেনমার্কের ৯৫.৩ শতাংশ নারী এবং ৯৭.১ শতাংশ পুরুষ নিয়মিত মদ খায়। শতাংশের বিবেচনায় ডেনমার্ক তালিকার শীর্ষে। শতাংশের বিবেচনায় সবচেয়ে কম মদ পান করে পাকিস্তানের পুরুষেরা ও বাংলাদেশের নারীরা। পাকিস্তানের শূন্য দশমিক ৮ শতাংশ পুরুষ মদ পান করে। বাংলাদেশের শূন্য দশমিক ৩ শতাংশ নারী মদ পান করে।



এসব মূর্খ নাস্তিকদের মানসিক স্বাস্থ্য ও তাদের সন্তানদের নিয়ে আমরা চিন্তিত। এরা ক্ষতিকর কাজ করে যাচ্ছে অথচ বিশ্বাস করে বসে আছে যে এরা ভালো কাজ করছে। এমন মানসিক ভারসাম্যহীন রোগীকে ডাক্তারি ভাষায় বলা হয় ডিলিউশন ডিসঅর্ডার। অর্থাৎ এই ধরণের রোগীরা অস্বাভাবিক বিষয়কে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে থাকে। যেমন ইসলাম নিয়ে ঠাণ্ডামাথায় বানিয়ে বানিয়ে রসিয়ে রসিয়ে মিথ্যাচার করবে ও প্রচার করবে কিন্তু মনে মনে বিশ্বাস করবে সে যেই ইসলামবিরোধী বিশ্বাস করেছে সেটাই বিশুদ্ধ। এদের চিকিৎসার জন্য অনেক ধরণের থেরাপি রয়েছে। এই বিষয় আরেকদিন কথা বলবো। মদের আরও ভয়ংকর ক্ষতি রয়েছে যা বলে শেষ করা যাবে না। আসলে নাস্তিকরা ডিপ্রেশন থেকে নিজেকে অনেক সময় সামাল দিতে পারে না আর এই দুশ্চিন্তা থেকে অল্প সময়ের জন্য নিজেকে ভুলিয়ে রাখতে মদ সেবন করে থাকে। World Health Organization সুত্র (৬৫) থেকে জানা যায় মদ্যপানজনিত কারণে প্রতি বছর ৩.৩ মিলিয়ন মানুষ মারা যাচ্ছে। আরও অনেক ভয়ংকর ভয়ংকর ক্ষতি মদ সেবনের জন্য হয়ে থাকে। কিন্তু নাস্তিক মুক্তমনাদের এই নিয়ে আপনি কথা বলতে দেখবেন না। কেন? এর উত্তর দেবার প্রয়োজন মনে করছি না।

 

তসলিমা নাসরিনের মুক্তচিন্তায় মূর্তিপূজাঃ

যখন কোনো নাস্তিককে বলতে দেখি “এটা করা যাবে না” “সেটা করে ওমুকে ঠিক করে নাই” “সে কেন এটা করলো” “তাকে তো আমার এই কারণে ভালো লাগে না” - তখন সেই নাস্তিককে প্রশ্ন করা উচিত আপনি কি নিজের ও অন্যের মুক্তচিন্তায় বিশ্বাসী? যেমন নাস্তিকরা ইসলামের বাইরে মুক্তচিন্তা করে সেভাবে অন্য নাস্তিকরা যদি অন্য কিছুর বাইরে মুক্তচিন্তা করে তাহলে কেন সেটা করা যাবে না? এই কথা গুলো ভালো করে মুক্তমনাদেরকে বুঝে নিতে হবে। ভালো করে মাথায় ঢুকিয়ে নিতে হবে।



তসলিমা নাসরিন যিনি বিজ্ঞানমনস্ক একইসাথে নারীদের অধিকার নিয়ে নাকি কথা বলে থাকেন। নারীদের সুখ দুঃখে বিভিন্ন ফতোয়া দিয়ে থাকেন উনি। উনি বিজ্ঞানচর্চাও নাকি করে থাকেন একইসাথে মানুষকে বিজ্ঞানমনস্ক হবার জন্য দাওয়াত দিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু উনি নিজে মুক্তচিন্তায় বিজ্ঞানবিরোধী অনুষ্ঠানে গিয়ে নিজের বন্ধুদেরকে খুশি করেন। সেই বন্ধুদের বিরুদ্ধে উনি তেমন প্রতিবাদ জানাবে না। এমনকি অন্যকে খুশি করবার জন্য নিজে বিজ্ঞানবিরোধী কর্ম করতেও দ্বিধা করেন না। উনার এমন কাজ গুলো নাস্তিক্যধর্মের দৃষ্টিতে জায়েজ আছে। উনি মুক্তচিন্তায় এসব করেন কারণ উনাকে বাধা নাস্তিক মুক্তমনারা দেবে না। তাই কোনো নাস্তিকদের এক শ্রেণী যদি বিজ্ঞানমনস্ক কাজ করে তাহলে তারা যেমন সেটা করতে পারবে একইভাবে নাস্তিকদের অন্য শ্রেণীরা যদি বিজ্ঞানবিরোধী কাজ করে তাহলে সেটা সেই নাস্তিকরা মুক্তচিন্তায় করতে পারবে। উভয়টাই বৈধ।


র‍্যাগ ডে ও হোলি প্রথাঃ

বছরের যে কোন দিনে শিক্ষার্থীদের উদযাপনের অনুষ্ঠানকে সাধারণত “র‍্যাগ ডে”  বা Rag Day বলা হয়ে থাকে। স্কুল-কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাজীবনের শেষ দিনে শিক্ষার্থীরা এই দিনটিকে পালন বা উদযাপন করে থাকে। র‍্যাগ ডে পালনের চর্চা আমাদের দেশে মূলত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাজীবনের শেষদিনে বা পরবর্তীতে বিদায়ী অনুষ্ঠান- কার্যক্রম-উদযাপন হিসেবে শিক্ষার্থীদের মাঝে উদযাপন করার মাধ্যমে শুরু হলেও, বর্তমানে এটি স্কুল, কলেজ এর শিক্ষার্থীদের মাঝেও চর্চিত হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের মাঝে সর্বপ্রথম র‍্যাগ’ডে পালনের প্রচলন শুরু হয়েছিল ১৯২৫ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রিটোরিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে। যেখানে শিক্ষার্থীরা রাস্তায় একটি প্যারেডের মাধ্যমে দিনটিকে উদযাপন করেছিল, যার প্রচলন এখনো রয়েছে এবং এখনো দিনটি “প্রিসেশন” নামেই পরিচিত। 


“প্রথম আলো” পত্রিকায় ১৭ এপ্রিল ২০২২ তারিখে “শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ‘র‌্যাগ ডে’ পালনের নামে অশ্লীলতা বন্ধে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ” শিরোনামে খবরে বলা হয়েছে (৬৬) , 


‘র‌্যাগ ডে’ পালনের নামে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ডিজে পার্টিসহ নগ্ন, অশ্লীল, উন্মত্ত, কুরুচিপূর্ণ ও আপত্তিকর কর্মকাণ্ড বন্ধে ৩০ দিনের মধ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। শিক্ষাসচিব, তথ্যসচিব, সংস্কৃতিসচিব, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যানসহ বিবাদীদের প্রতি এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে আজ রোববার বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এই আদেশ দেন। ৭ এপ্রিল সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ কামরুল হাসান রিটটি করেন। আদালতে তিনি নিজেই রিটের পক্ষে শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার। পরে আইনজীবী কামরুল হাসান প্রথম আলোকে বলেন, সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ‘র‌্যাগ ডে’ পালনের নামে ডিজে পার্টিসহ নগ্ন, অশ্লীলতা, কুরুচিপূর্ণ ও আপত্তিকর কর্মকাণ্ড বন্ধে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, রুলে তা জানতে চাওয়া হয়েছে।


নাস্তিক মুক্তমনারা কেন এই প্রশ্ন করে না যে র‍্যাগ ডে হিন্দুদের হোলি থেকে কপি করা তাই এসব প্রথা বাদ দিয়ে দেয়া উচিত? যেই সব নাস্তিকরা প্রমাণ ছাড়াই বলে দেয় যে কুরআন নাকি বাইবেল থেকে কপি করা তারা ঠিক একইভাবে সেই প্রশ্নটি করে কেন বিরোধীতা কেন করে না? তসলিমা নাসরিন কি বলেছে এসব প্রথা নিয়ে? উল্টো সে নিজেও এসব প্রথায় মুক্তমনে অংশগ্রহণ করে-কি অস্বীকার করতে পারবে কেউ?

মোমবাতি প্রথার কুসংস্কার চর্চাঃ

নাস্তিক বিজ্ঞানমনস্কদের কাছে নামাজ আদায় করা, আল্লাহর স্মরণে জিকির করা, দুয়া করা এসব নাকি অবৈজ্ঞানিক কাজ। আচ্ছা আপনাকে প্রশ্ন করছি, কেউ যদি মারা যায় তাহলে তাকে স্মরণে করতে হলে কি আগুন জ্বালাতে হবে? আগুন জ্বালালে কি হবে আর না জ্বালালেই বা কি হবে না? বিজ্ঞানমনস্ক নাস্তিকরা কি আসলেই বিজ্ঞানমনস্ক নাকি ধান্দাবাজ?

“কালের কণ্ঠ” পত্রিকায় ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ তারিখে “ব্লগার ও লেখক অভিজিৎ স্মরণে মোমবাতি প্রজ্বালন” শিরোনামে খবরে বর্ণিত হয়েছে (৬৭),

ব্লগার ও লেখক অভিজিৎ রায় স্মরণে মোমবাতি প্রজ্বালন করছে প্রগতিশীল সংগঠনগুলো। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের গেটের পাশে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। এ জায়গায়ই ২০১৫ সালের এই দিনে হামলার শিকার হয়েছিলেন তিনি। কর্মসূচিতে অভিজিৎ স্মরণে ডিজিটাল ব্যানার টাঙানো হয় এবং রাস্তায় ফুল দিয়ে লেখা হয়েছিল ‘অভিজিৎ স্মরণ’। গণজাগরণ মঞ্চের পক্ষ থেকে লাগানো এ ব্যানারে লেখা ছিল ‘অভিজিৎ রায়রা হারলে, হারবে বাংলাদেশ’।



অভিজিৎ রায়রা হারলে কিভাবে হারবে বাংলাদেশ? এই কথার যৌক্তিকটা কি? আমরা সবাই জানি মুক্তিযুদ্ধে অভিজিৎ রায়রা কেউই ছিল না এরপরেও কিন্তু আমাদের মুক্তিযোদ্ধারা বাংলাদেশকে ঠিকই স্বাধীন করেছে। বাংলাদেশকে স্বাধীন করে জিতিয়েছে। তাছাড়া উক্ত কথার মধ্যে কি সাম্প্রদায়িকতার গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে না? যেসব মুক্তমনারা নিজেদেরকে অসাম্প্রদায়িক দাবি করে থাকে তারা কি কখনো এই উক্তির সমালোচনা করেছেন?

মৃত্যুদের কাছে ফুল রাখার প্রথাঃ

শহীদ মিনারে ফুল দেয়া থেকে মোমবাতি প্রথা পর্যন্ত বিজ্ঞানমনস্কদের দাবি কি? 


কেউ মারা গেলে সে মাটিতে পঁচেগলে যায়। তার আর কোনো অস্তিত্ব থাকে না। স্মৃতি হলো মস্তিষ্কের নিউরণে ঘটে চলা জৈব রাসায়নিক প্রক্রিয়ার ফল। তাই এই “জৈব রাসায়নিক প্রক্রিয়ার প্রতি” পুস্পস্তবক অর্পন করার কোনো অর্থ নেই। এটা সম্পূর্ণ অবৈজ্ঞানিক। অণু-পরমাণুর দ্বারা গঠিত খাম্বাকে ফুল দেয়ার মত অবৈজ্ঞানিক কাজ এই আধুনিক সময়েও দেখা যাচ্ছে। অবৈজ্ঞানিক কুসংস্কারাচ্ছন্ন সমাজকে বিজ্ঞান ও যুক্তির আলোয় আলোকিত করতে আসুন এসব অবৈজ্ঞানিক কাজ বন্ধ করি। বিজ্ঞানমনস্করা কেন বলে না এসব প্রথা কুসংস্কার? সমালোচনাও করতে দেখা যায় না কেন? 


এই কথা গুলো নাস্তিক বিজ্ঞানমনস্কদেরকে বলতে দেখা যায় না কেন?


“দৈনিক ইত্তেফাক” ০৬ জুন ২০২২ তারিখে “সীতাকুণ্ডে নিহতদের স্মরণে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন” শিরোনামে খবরে বর্ণিত হয় (৬৮),


সীতাকুণ্ডে বিএম কন্টেইনার ডিপোতে অগ্নিকাণ্ড ও বিস্ফোরণের ঘটনায় নিহতদের স্মরণে রবিবার (৬ জুন) সন্ধ্যায় রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করেছে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট। এর আগে শহীদ মিনারের পাদদেশে অনুষ্ঠিত এক আলোচনা সভায় বিভিন্ন পেশার মানুষ অংশ নেন। এসময় বক্তারা নিহতদের আত্মার শান্তি কামনা করেন ও আহতদের সুস্থতা কামনা করেন। তারা বলেন, এ ধরনের ঘটনা যেন আর কখনো না ঘটে সেজন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে সচেতন হতে হবে। পরে সন্ধ্যায় শহীদ মিনার প্রাঙ্গনে মোমবাতি প্রজ্জ্বলনের মাধ্যমে নিহতদের স্মরণ করা হয় ও নিরবতা পালন করা হয়। 


“সময় নিউজ টিভি” ৭ জুন ২০২২ তারিখে “ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মোমবাতি জ্বালিয়ে সীতাকুণ্ডে অগ্নিকাণ্ডে নিহতদের স্মরণ” শিরোনামে খবরে বর্ণিত আছে (৬৯) ,


মোমবাতি প্রজ্বলনের মধ্যদিয়ে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে অগ্নিদগ্ধ হয়ে নিহতদের স্মরণ করল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সর্বস্তরের সংস্কৃতি কর্মীরা।মঙ্গলবার (৭ জুন) সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে শহরের ধীরেন্দ্র নাথ দত্ত ভাষা চত্বরে এই স্মরণ সভাটি অনুষ্ঠিত হয়। এতে কবি, সাহিত্যিক, শিক্ষক, সাংবাদিক, আইনজীবী, চিকিৎসক, আবৃত্তি শিল্পী, সঙ্গীত শিল্পীসহ সাংস্কৃতিক কর্মীরা মোমবাতি হাতে নিয়ে অংশ গ্রহণ করেন। স্মরণ সভা শেষে জেলা সম্মিলিত সংস্কৃতি জোটের আহ্বায়ক আব্দুন নূর এবং সাহিত্য একাডেমির জেলা শাখার সভাপতি কবি জয়দুল হোসেন বলেন, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিহতদের শ্রদ্ধার সাথে  স্মরণ করছি। আমরা চাই সঠিক তদন্তের মাধ্যমে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার প্রকৃত রহস্য বের হয়ে আসুক।


যেই মুক্তমনারা মুক্তবুদ্ধির চর্চা করতে গিয়ে এই কথা বলেন যে কুরবানীর ঈদে গরু জবাই না করে সেই টাকা গরীবদেরকে দান করে দিতে তারা কেন এই প্রশ্ন করছেন না যে মোমবাতি জ্বালিয়ে ক্ষতিগ্রস্থদের স্মরণ করলে যাদের ক্ষতি হয়েছে তাদের কিছুই আসে যায় না তাই মোমবাতি প্রথা না পালন করে মোমবাতি না কিনে সেই কিনার টাকা গরীবদেরকে দান করে দেয়া দরকার?


“কালের কণ্ঠ” পত্রিকায় ২৪ জুন, ২০২২ তারিখে “সিলেটে বন্যার প্রভাবে মোমবাতির সংকট চট্টগ্রামে!” শিরোনামে খবরে বলা আছে (৭০) ,


সিলেট ও সুনামগঞ্জে ভয়াবহ বন্যার কারণে চট্টগ্রামে মোমবাতির বাজারে বিরূপ প্রভাব পড়েছে বলে মনে করছেন অনেকে। চট্টগ্রামের খুচরা দোকানগুলোতে মাঝারি আকারের প্রতিটি মোমবাতির দাম এক থেকে দুই টাকা করে বেড়েছে। পাঁচ টাকার মোমবাতি সাত টাকায়, ১০ টাকার মোমবাতি ১২ থেকে ১৩ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। নগরের বহদ্দারহাট ও চকবাজার এলাকায় বেশ কয়েকটি খুচরা দোকানির সঙ্গে কথা বলে মোমবাতির মূল্য বৃদ্ধির সত্যতা পাওয়া গেছে। ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, হঠাৎ করে মোমবাতির সরবরাহ কমে গেছে। তবে কেন কমেছে তা তারা সঠিকভাবে বলতে পারেননি।  নগরের বক্সিরহাট বদরপাতি এলাকার পাইকারি মোমবাতি বিক্রেতা সৈয়দ শফিকুল ইসলাম জানান, বৃহত্তর সিলেটে বন্যার কারণে চট্টগ্রামের খুচরা বাজারে মোমবাতি সরবরাহ কমে গেছে। বিশেষ করে চট্টগ্রাম থেকে সিলেটের আশপাশের এলাকার ব্যবসায়ীরা পাইকারিভাবে বেশি মোমবাতি কিনে নিয়ে যাওয়ার কারণে স্থানীয় বাজারে সরবরাহ কমে গেছে। তবে সপ্তাহখানেক পর ঠিক হয়ে যাবে।


বিপদের সময় যেখানে মোমবাতির সংকট দেখা দিচ্ছে সেখানে অবশ্যই মোমবাতি প্রথা পালন না করে সেই মোমবাতি গুলো বিপদগ্রস্থ মানুষদের কাছে পৌছিয়ে দিলেই কি ভালো হতো না? অথবা পৌঁছানোর চেষ্টা করা যেতো না? কিছু হলেই কেন মোমবাতি প্রথা চর্চা করতে হবে?



কোনো মুসলিমরা অপরাধ করলে অবশ্যই সেটার শাস্তি হওয়া উচিত কিন্তু মুসলিমদের ভালো কাজ গুলো কি মিডিয়া সেভাবে প্রচার করে সেভাবে কোনো মুসলিম অপরাধ করে প্রচার করলে? কখনো এভাবে চিন্তা করে দেখেন নি, তাই না? আপনি কি ভেবেছেন আপনার চিন্তাকে থামিয়ে দেয়া হচ্ছে না তো মুক্তচিন্তার নামে? আপনার জ্ঞানকে সীমাবদ্ধ করে ফেলা হচ্ছে না তো বিজ্ঞানমনস্কতার নামে? আপনার মুক্তিকে বন্দী করে ফেলা হচ্ছে না তো ইসলামবিরোধী চর্চার নামে? আপনার সামনে বিষের পেয়ালা এখনো এনে দেয়া হয় নাই তাই আপনি সত্যিটা সাহস করে গ্রহণ করে ফেলুন। সত্যিটা নিয়ে চিন্তা করতে থাকুন।


কারা ডিসিপ্লিন লাইফ লিড করে?

পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা’সহ হুজুররা যেভাবে জীবন-যাপন করে সেটি বৈজ্ঞানিকভাবেই একটি হেলথি লাইফস্টাইল। যেমন: মদ্যপান-ধূমপান ও ক্ষতিকর ড্রাগ্‌স থেকে বিরত থাকা, অন্তর্বর্তীকালীন রোযা রাখা, নিয়মিত গোসল করা, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন পোশাক পরিধান করা, নিয়মিত সালাত পালন করা (সালাত এক ধরণের শরীরচর্চা), সালাত পালন উপলক্ষে দিনে কয়েকবার মুখমণ্ডল’সহ হাত-পায়ের উম্মুক্ত অংশ ধৌত করা (পানি একটি প্রাকৃতিক ময়শ্চারাইজার), বগল ও গুপ্ত স্থানের লোম পরিষ্কার করা, হাগু-পিপি করার পর যথাযথ স্থান পানি দিয়ে ধৌত করা, ইত্যাদি। এগুলোর সবই হেলথি লাইফস্টাইলের মধ্যে পড়ে। পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা মুসলিম আর গান্ধা নাস্তিকের মধ্যে পার্থক্য দেখতে ছোট উদাহরণ হতে পারে এই ছবিটি।



আমি ফজরের নামাজ আদায় করে সকালে হাঁটাচলা করি অল্প কিছু ব্যায়াম করি। এরপরে নাস্তা খেয়ে ভার্সিটিতে যাই। দুপুরের দিকে বাসায় এসে যোহরের নামাজ আদায় করি। এরপরে দুপুরের খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে যাই। এরপরে বিকেলে আসরের নামাজ আদায় করে বিকেলে হাল্কা খেলাধুলা করি। সন্ধায় মাগরিবের নামাজ আদায় করে ইশার আগ পর্যন্ত পড়াশোনা করি। ইশার নামাজ আদায় করে রাত ১১ ট অথবা ১২ পর্যন্ত আবার লেখাপড়া করি। এরপরে ঘুমিয়ে যাই। খেয়াল করেছেন আমাকে দিনে কয়বার পানি দিয়ে হাত পা মুখ ধৌত করতে হয়। সেই তুলনার নাস্তিকরা কয়বার? আমি যখন কঠিন কাজ করার মধ্যে নামাজের সময় হয়, ওজু করে নামাজ আদায় করি তখন হৃদয়ে যে রিলেক্স অনুভুতি হয় সেটা বুঝিয়ে বলতে পারবো না। আমার চঞ্চল হৃদয় যেন প্রশান্তিতে ভরপুর হয়ে উঠে নামাজের প্রতিটি সেজদায়। সততার সাথে যে কেউই একজন ভালো মুসলিম ও প্রকৃত নাস্তিকের মধ্যে পার্থক্য সন্ধান করলে প্রচুর তফাৎ পেয়ে যাবে।


নাস্তিকদের বই পুস্তকে বৈজ্ঞানিক ভুলঃ

শুরুতে কিছু কথা বলে নেয়া ভালো। আমার এই কথা সমূহ বুঝতে না পারলে আপনি আমার সাথে একমত নাও হতে পারেন তাই আমি আবারো বলছি আমার কথা সমূহ বুঝার চেষ্টা করুন। আমি আজকের লেখাটিতে নাস্তিক্যধর্মের তিনটি মূলনীতিকে সামনে রেখে লিখেছি তা হলো যুক্তিবিদ্যা, বিজ্ঞান এবং মুক্তমনা ভাবনা। নাস্তিকরা "স্রস্টা নেই" দাবিকে যেভাবে অন্ধ বিশ্বাস করে তার চেয়ে ঐ তিনটি বিষয় তারা আরও অন্ধের মতো অন্ধ বিশ্বাসী যদিও এই কথা নাস্তিকরা স্বীকার করতে চায় না। আরেকটি মজার কথা হলো যুক্তিবিদ্যা, বিজ্ঞান এবং মুক্তমনা এসব বিষয় নাস্তিকরাও সঠিক ভাবে মানে না। লেখাটি পড়তে থাকুন আপনিও বুঝে যাবেন।

বিজ্ঞান দিয়েই সব কিছুকে মানতেই হবে, যাচাই করতে হবে এবং পরিমাপ করতে হবে এই কথা নাস্তিকদের মুখে বহুবার শোনা গেছে কিন্তু তারা আসলে নিজেরাই এই কথার উপর আমল করে না। মুক্তমনা মন নিয়ে, যুক্তির চশমা লাগিয়ে বিজ্ঞান দিয়েই সব কিছু কে নির্ণয় করতে হবে। এই কথার সাথে নাস্তিকরাও আমার সাথে একমত হবে। বিজ্ঞানের ব্যাপারে নাস্তিকদের বইতে যে কথাবার্তা পাওয়া যায় তা পড়ে দেখি। প্রায় সব নাস্তিকরাই যাকে চিনে। নাম উনার অভিজিৎ রায়। উনি বিজ্ঞানমনস্কদের মধ্যে অন্যতম। তার একটি কেতাবের নাম হল "অবিশ্বাসের দর্শন" এই কেতাবের প্রথম অধ্যায় এর নাম বিজ্ঞানের গান, পৃষ্ঠা ২৭,২৮ এ বর্ণনা করা হয়েছেঃ

বিজ্ঞানের অবদান কি কেবল বড় বড় যন্ত্রপাতি বানিয়ে মানুষের জীবনে স্বাচ্ছন্দ্য বয়ে আনা? আমাদের স্কুল কলেজে যেভাবে বিজ্ঞান পড়ানো হয় তাতে এমন মনে হওয়া স্বাভাবিক । ব্যাপারটা আসলে তা নয়, বিজ্ঞানকে ব্যাবহার করে মানুষ বড় বড় যন্ত্রপাতি বানায় বটে, তবে সেগুলো স্রেফ প্রযুক্তিবিদ্যা আর প্রকৌশলীবিদ্যার আওতাধীন। বিজ্ঞানলব্ধ জ্ঞানের অভিযোজন মাত্রআসলে বিজ্ঞানের একটি মহান কাজ হচ্ছে প্রকৃতিতে বোঝা, প্রাকৃতিক ঘটনাবলীর ব্যাখ্যা খুঁজে বের করা। বিজ্ঞানের অন্তর্নিহিত সৌন্দর্য এখানেই। হ্যা, জ্যোৎস্না রাত কিংবা পাখির কৃজনের মতো বিজ্ঞানেরও একটি নান্দনিক সৌন্দর্য আছে, সৌকর্য আছে যার রসাস্বাদন কেবল বিজ্ঞানী, বিজ্ঞানমনস্ক সর্বোপরি বিজ্ঞানপ্রেমী ব্যাক্তির পক্ষেই সম্ভব। 

অবিশ্বাসের দর্শন কেতাবের পৃষ্ঠা ২৯, ৩০ এ বর্ণনা করা হয়েছেঃ 

বিজ্ঞান কি অতিপ্রাকৃত বিষয় নিয়ে অভিমত দিতে অক্ষম? আগের দিনে মানুষেরা বাড়ি থেকে একটু দূরে থাকা পুকুর পাড়ে রাতের অন্ধকারে হঠাৎ আগুন জ্বলতে দেখে ভাবতো সেটা বুঝি কোনো ভূত-জীন-পরীর কাজ । এরপরে মঞ্চে হাজির হলো বিজ্ঞানবিজ্ঞান এসে আমাদের জানাল মিথেন গ্যাসের কথা। আমাদের মনে থাকা জীন-পরীর গল্পকে শিরিষ কাগজ দিয়ে ঘষে সেখানে বসিয়ে দিল আসল সত্য । এখন আর কেউ পুকুর পাড়ে আগুন দেখলে ভয় পায় না। তারা জানে এটা সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক ব্যাপারইতিহাস সাক্ষ্য দেয় এভাবেই মানুষের মনে জমে থাকা অসংখ্য কুসংস্কার কালো নিকষ আধার দূর করে আশার প্রদীপ জালিয়েছে বিজ্ঞান। বিজ্ঞানের এই গুনের কারনে এই ধারনাটিকে আমরা আশীর্বাদ মনে করি । কিন্তু যেই বিজ্ঞান আমাদের মনের সবচেয়ে বড় কুসংস্কার সম্পর্কে কিছু বলতে যায় অমনি শুরু হয়ে যায় তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য। 

বিজ্ঞানকে পূজা করা ছাড়া বাকি সবই হয়তো করে ফেলা হয়েছে বিজ্ঞানমনস্ক এলাকায়। কিছু প্রশ্নের জবাব বিজ্ঞানের দৃষ্টিতে সমাধান করে দেয়া দরকার। বিজ্ঞানের একটি মহান কাজ হচ্ছে প্রকৃতিতে বোঝা তাহলে প্রশ্ন হলো প্রকৃতি কাকে বলে? এটার সংজ্ঞা কে নির্ণয় করবে ? এবং তাকে কেন দুনিয়ার সবাই বিশ্বাস করতে বাধ্য হবে ? সে কোন মহাপুরুষ বা অবতার সে তার বলা কথাই সবাইকে মানতে হবে ? না মানলে কি নাস্তিক্য ধর্মের আকিদা অনুযায়ী পাপ হবে ? প্রকৃতির অস্তিত্ব কেমন ? প্রকৃতির আকার কেমন ? প্রকৃতি কিভাবে শুন্য থেকে সৃষ্টি হয়েছে , কে সৃষ্টি করেছে এবং কেন ? প্রকৃতি এখন কথায় ও কিভাবে আছে ? প্রকৃতি কে না দেখে নাস্তিকরা কেন বিশ্বাস করে ? এটি কি অন্ধ বিশ্বাস নয় ? প্রকৃতি আগে কেমন ছিল এবং এখন সে কিভাবে আছে ? বিবর্তনের আগে নাকি পরে এসেছে এই প্রকৃতি ? সেটার দলিল কি ? প্রকৃতির রঙ কেমন ? এই রঙ কে সৃষ্টি করেছে এবং কেন ও কিভাবে সৃষ্টি করেছে? 

মিথেন গ্যাস শুন্যর আগে কিভাবে ছিল ? মিথেন গ্যাস কেন এই দুনিয়াতে এলো ? মিথেন গ্যাস কি বিবর্তন হয়েছে নাকি হয়নি ? মিথেন গ্যাস প্রাকৃতিক ব্যাপার কেন ? প্রকৃতি কেন মিথেন গ্যাস সৃষ্টি করেছে ? না তৈরি করলে প্রকৃতির কি ক্ষতি হত ? নাস্তিকরা যেমন অন্ধ বিশ্বাস করে বলে স্রস্টার অস্তিত্ব নেই ঠিক একইভাবে কোন নাস্তিক যদি বলে প্রকৃতির অস্তিত্ব নেই তাহলে এই নাস্তিককে কি বলা হবে এবং কেন ? নাস্তিক্যধর্মের সমাধান কি এই বিষয়? নাস্তিক্যধর্মের যুক্তির দৃষ্টিতে ইতিহাস কি বিশ্বাসযোগ্য ? ইতিহাসে কেন নাস্তিকরা বিশ্বাস করে ? কি প্রমানের ভিত্তিতে নাস্তিকরা সেটি বিশ্বাস করে এবং কেন ? ইতিহাস যে সত্য সেটি তো প্রমান করা যায় না স্রেফ বিশ্বাস করতে হয় সত্যের সাক্ষ্য অনুপাতে, এভাবে বিশ্বাস করা নাস্তিক্য ধর্মে বৈধ নাকি ? ইসলাম প্রাচিন ধর্ম তাই নাস্তিকরা ইসলামকে বাদ দিতে চান তাহলে একই যুক্তিতে ইতিহাস তো প্রাচিন কালের তাহলে ইতিহাস এখন কেন বাদ দিতে ভয় পাচ্ছেন ? 

আশীর্বাদ মনে করা কি বিজ্ঞান দ্বারা প্রমানিত? কিভাবে ? হিন্দু ধর্ম যারা বিশ্বাস করে তারা এই আশীর্বাদে বিশ্বাস করে, ইসলাম যারা অনুসরন তারা আল্লাহর রহমতে বিশ্বাস করে তাহলে নাস্তিকরা কোন যুক্তিতে আশীর্বাদে বিশ্বাস করছে এবং কেন ? নাস্তিক্যধর্মে কি আশীর্বাদে বিশ্বাস করতেই হবে ? আশীর্বাদের যৌক্তিকতা কি নাস্তিক্যধর্মে ? 

বৈজ্ঞানিক ভুল ১

হুমায়ুন আজাদের "আমার অবিশ্বাস" কেতাবের ২১ নং পৃষ্ঠায় বর্ণনা করা হয়েছে, আমরা ভয় পাই ওই চরম অন্ধকারকে, রবীন্দ্রনাথকে মনে পড়ে, যখন রোমান্টিকের চোখে দেখেছেন তখন প্রেমে পড়েছেন মৃত্যুর, কিন্তু বুড়ো বয়সে যখন সত্যিই মৃত্যু হানা দিতে থাকে তিনি ভয় পেতে থাকেন, তাঁর কবিতা মৃত্যুর ভয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে। 

বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গিঃ মৃত্যু কোনো নারী নয় যে কোন পুরুষ তার প্রেমে পরবেন। কেতাবে যেটা বলা হচ্ছে সেটি সম্পূর্ণ অবৈজ্ঞানিক। আমাদের জন্ম হয় , হয় মৃত্যু এটি চরম সত্য কথা তাহলে একজন মানুষ মৃত্যুর সাথে প্রেম করেছে এমন স্টাইলের কথা একজন বিজ্ঞানমনস্ক নাস্তিকের কেতাবে কিভাবে জাগা পায় ? রবীন্দ্রনাথের কবিতা নাকি মৃত্যুর ভয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে , এটি সরাসরি বৈজ্ঞানিক ভুল কারণ কবিতার কি রোগ হয় মানুষের মতো? কবিতা কি মানুষ ? কবিতা আবার ভয় কিভাবে পায়? কিছু ছন্দের সমষ্টিকেই তো কবিতা বলা হয় তাছাড়া কবিতা মানুষ নয় এবং ভয়ও পায় না মানুষের মতো সেখানে অসুস্থ হয়ে যাওয়ার কথা তো কোনো যুক্তিবাদী মানুষ বিশ্বাসও করতে পারেন না। 

বৈজ্ঞানিক ভুল ২

হুমায়ুন আজাদের "আমার অবিশ্বাস" কেতাবের ২২ নং পৃষ্ঠায়, দ্বিতীয় পরিচ্ছেদে বর্ণনা করেছেন, মানুষ জন্ম নিচ্ছে, বেড়ে উঠেছে পূর্বপ্রস্তুত বিশ্বাসের মধ্যে, তার জন্যে বিশ্বাসের জামাকাপড় শেলাই করা আছে, তার দায়িত্ব ওই জামাকাপড়ের মধ্যে ঢুকে পড়ে শান্তি পাওয়া। 

বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গিঃ বিশ্বাসের বিরুদ্ধে বকতে বকতে নিজেই অবৈজ্ঞানিক বার্তা বলে দিল। আমরা জানি পোশাক তারাই পরিধান করে যাদের লজ্জা শরম আছে। এখন বিশ্বাসের কি লজ্জা আছে যে তার জন্য জামা কাপড় শেলাই করতে হবে ? উত্তর হচ্ছে না। বিজ্ঞান আমাদেরকে বলে সত্য কথা বলতে। আর একজন বিজ্ঞানমনস্ক মানুষ হয়ে কিভাবে এটি বিশ্বাস করতে পারে যে বিশ্বাসের লজ্জা আছে এই কারণে জামাকাপড় শেলাই করতে হবে এবং এই জামাকাপড়ে ঢুকে শান্তি পাওয়া যাবে?

বৈজ্ঞানিক ভুল ৩

হুমায়ুন আজাদের "আমার অবিশ্বাস" কেতাবের ২৫ নং পৃষ্ঠায় বর্ণনা করা হয়েছে, কবিতায় বিশ্বাস যতোটুকু থাকে ততটুকু অকবিতায় বিশ্বাসের বাইরে যতোটুকু থাকে ততটুকু কবিতা; যুগে যুগে বিশ্বাস ভেঙে পড়ে। কিন্তু সৌন্দর্য অতো অল্প সময়ে ভেঙে পড়ে না। বিশ্বাসের কবিতা হচ্ছে ভুল কাঠামোর ওপর দাঁড়ানো আবেগগত সৌন্দর্য । আমার অবিশ্বাস কেতাবের ভূমিকার শেষের দিকে আজাদ লিখেছে আমি আনন্দিত যে বইটি বিপুল সাড়া জাগিয়েছে, বাঙালির বিশ্বাসের মেরুদণ্ডে কিছুটা ফাটল ধরাতে পেরেছে।  

বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গিঃ আকাশের ভেঙ্গে পড়া, আকাশের দরজা ইত্যাদি কথা গুলো নাস্তিকদের কাছে নাকি বৈজ্ঞানিক ভুল। যদিও কথাটি মিথ্যা। এই বিষয় বিস্তারিত জবাব আমি দিয়েছি। আপনারা আমার সেই লেখাটি পড়ে দেখতে পারেন। কোনো কিছু ভেঙে পড়া অথবা ফেটে পড়া বলতেই যে শুধু মাত্র শক্ত পদার্থর ক্ষেত্রেই বলা হবে ব্যাপারটা তা নয়। আর কুরআনে এমন কোন আয়াত নেই যেখানে বলা আছে "আকাশ শক্ত কঠিন পদার্থের তৈরি"। এসব উত্তর নাস্তিকরা মানতেই চায় না। তাহলে নাস্তিকরা কেন হুমায়ুন আজাদের বইতে বৈজ্ঞানিক ভুলটি ধরে নাই? বিশ্বাস কি শক্ত পদার্থ যে ভেঙ্গে পড়ে? বিশ্বাসকে কি ধরা যায়? ছোঁয়া যায়? বিশ্বাসের মেরুদণ্ড আছে যে ফাটল ধরবে?

বৈজ্ঞানিক ভুল ৪

হুমায়ুন আজাদের "আমার অবিশ্বাস" কেতাবের ২৯ নং পৃষ্ঠায় বর্ণনা করা হয়েছে আকাশমণ্ডল কোনো বিশুদ্ধ পবিত্র স্থান নয়, তার সদস্যরাও কারো গৌরব প্রকাশ বা প্রচার করে না এবং আমরা, আমাদের পৃথিবীতেও আকাশমণ্ডলেরই সদস্য, আমরাও ভ্রমন করে চলেছি সূর্যের চারদিকে- মহাজগতে। 

বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গিঃ আকাশমণ্ডল কোনো বিশুদ্ধ পবিত্র স্থান নয় তার বিপরীত অর্থ আকাশমণ্ডল অশুদ্ধ অপবিত্র স্থান। অথচ আমরা দেখছি আকাশ কত সুন্দর এবং চমৎকার। এখন আমরা যদি সৌন্দর্য অর্থ বুঝাতে পবিত্র অর্থ নেই কেন এটা ভুল হবে? আকাশ অবশ্যই সুন্দর এবং অপবিত্র নয়। 

বৈজ্ঞানিক ভুল ৫

হুমায়ুন আজাদের "আমার অবিশ্বাস" কেতাবের ২৯ নং পৃষ্ঠায় বর্ণনা করা হয়েছে আমি জানি পথের শেষ মৃত্যুতে, সব কামনা ও সাধনার শেষে রয়েছে নির্বিকার মাটি ও ক্ষুধার্ত আগুন কিন্তু আমি ভেঙে পড়তে চাই না

বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গিঃ বিজ্ঞান বলে আগুন কোনো বস্তুকে জ্বালাতে পারে কিন্তু মানুষের মতো আগুনের ক্ষুধা লাগে না অথচ বিজ্ঞানমনস্ক নাস্তিক কিভাবে এটা বিশ্বাস করতে পারেন যে আগুনের ক্ষুধা লাগে? ক্ষুধার্ত আগুন কিভাবে হয়? অথবা মানুষের মধ্যেই কিভাবে ক্ষুধার্ত আগুন হয়?

বৈজ্ঞানিক ভুল ৬

হুমায়ুন আজাদের "আমার অবিশ্বাস" কেতাবের ২৯ নং পৃষ্ঠায় বর্ণনা করা হয়েছে, মোহগ্রস্ত নই আমি, আমি সৎ থাকতে চাই, সিসিফাসের মতো মেনে নিতে চাই জীবনের নিরর্থকতা, এবং অস্বীকারও করতে চাই নিরর্থকতাকে । কিছুতেই বিভ্রান্ত হতে চাই না , মোহের কাছে সমর্পণ করতে চাই না নিজেকে। 

বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গিঃ বিজ্ঞানমনস্কদের উচিত সব ক্ষেত্রে বিজ্ঞান চর্চা করা- কথাটিতে কি বৈপরীত্য আছে ? উত্তর হচ্ছে না কিন্তু হুমায়ুন আজাদ একটি কথাকে সাথে সাথে মানছে আবার সাথে সাথে ত্যাগ করছে এটি কি কিভাবে যৌক্তিক হয়? যদি সিসিফাসের মতো আজাদ মেনে নেন জীবনের নিরর্থকতা তাহলে এটি অস্বীকার করলে তার প্রথম স্বীকার করার কথাটি ভুল আবার প্রথমটি স্বীকার করলে দ্বিতীয়টি ভুল হয়ে যায়। এটি কখনো বিজ্ঞানমনস্ক মানুষের কথা হতে পারে না বরং মানুষিক রোগীর পক্ষেই দুইমুখি কথা বলা সম্ভব।

বৈজ্ঞানিক ভুল ৭ =  

হুমায়ুন আজাদ নিজের “আমরা কি এই বাঙলাদেশ চেয়েছিলাম” বইয়ের ৬৩,৬৪ পৃষ্ঠায় বর্ণিত হয়েছে, বলা হয় অপসারণের প্রস্তাব আনতে হ'লেই লাগবে দুই-তৃতীয়াংশ গরিষ্ঠতা, আর তা গৃহীত করার জন্যে লাগবে তিন-চতুর্থাংশ গরিষ্ঠতা। অর্থাৎ যদি ১০০ জন সদস্য থাকে, তাহলে প্রস্তাব আনতেই লাগবে ৬৭জন, আর গৃহীত করানাের জন্যে লাগবে ৭৬জন। যা এক অসম্ভব ব্যাপার; এর চেয়ে সূর্যকে একদিনের জন্যে উঠতে না দেয়াও সহজ। রাষ্ট্রপতি হয়ে ওঠেন সংবিধানের থেকেও পবিত্র। কেননা সংবিধান, একটা তুচ্ছ জিনিশ, সংশােধন করতে লাগে ২, গরিষ্ঠতা, আর রাষ্ট্রপতিকে অপসারণ করতে লাগে ৩% গরিষ্ঠতা। রাষ্ট্রপতি হয়ে ওঠেন সংবিধানের প্রভু, তিনি অনেক ওপরে সংবিধানের; সাত আশমানের ওপর বিরাজ করেন তিনি।

বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গিঃ আমরা জানি সূর্যকে থামানো যায় না। সূর্য যদি একদিনের জন্যও থেমে যায় তাহলে পুরো সলার সিস্টেম ধ্বংস হয়ে যাবে। তাই বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিতে এটি বৈজ্ঞানিক ভুল।

মায়ের স্তন নিয়ে নাস্তিকদের বইতে মুক্তচিন্তাঃ

ভাষাবিজ্ঞানী নাস্তিক হুমায়ুন আজাদের অন্যতম একটি বই হচ্ছে “কবি অথবা দণ্ডিত অপুরুষ”। বইটিকে “যৌনমিলনের চিন্তার মুক্তির আন্দোলন” নাম দিলেও হয়তো ভুল হতো না। পুরো বইটি পড়লে যেকোনো সভ্য মানুষের বমি আসতে পারে। নাস্তিকরা চাইলে কি ধরণের মুক্তচিন্তা করতে পারে সেটার নমুনা এই বই থেকে পাওয়া যায়। পাঠক, আপনার বমি আসতে পারে এরপরেও পড়তে হবে কারণ আপনাকে জানতে হবে মুক্তমনারা কেমন নির্লজ্জ-বেহায়া ও ইতর প্রকৃতির মুক্তচিন্তা করতে পারে। সিদ্ধান্ত এখন আপনার আপনি মুক্তচিন্তা করবেন নাকি যৌক্তিক চিন্তা? আপনি নাস্তিক থাকবেন নাকি যৌক্তিক মানুষ? আপনি মুক্তবুদ্ধির চর্চা করবেন নাকি সুস্থবুদ্ধির চর্চা করবেন?



মুক্তমনা হুমায়ুন আজাদের লিখিত কবি অথবা দণ্ডিত অপুরুষ, বইয়ের ৪০,৪১,৪২ পৃষ্ঠায় বর্ণিত হয়েছে,

দুটি অ্যাডের স্ক্রিপ লেখার দায়িত্ব পরের দিনই লাফিয়ে পড়ে হাসানের ওপর। অ্যাড ১ঃ মাতৃদুগ্ধের গুণকীর্তন করে অ্যাড লিখতে হবে, চোখে খোঁচা দিয়ে দেখাতে হবে মাতৃদুগ্ধের কোনো বিকল্প নেই। অ্যাড ২ঃ ‘রাধিকা’ নামের একটি অস্ট্রেলীয় গুড়োদুধের অ্যাড লিখতে হবে, চোখে মায়াজাল ছড়িয়ে দেখাতে হবে এটা মাতৃদুগ্ধ থেকেও পুষ্টিকর, আর মায়ের দুধ বন্ধ হয়ে যায় কিন্তু রাধিকার ধারা অফুরন্ত।……প্রথম অ্যাডটা সরকারি, জাতিসংঘফংঘ হয়তো বিশ্বমায়েদের ঝোলা স্তনের দিকে তাকিয়েছে দয়া করে, ফোলা স্তন দেখে উত্তেজিত হয়ে উঠেছে, এবং বিশ্বের কোনো সম্পদকেই নষ্ট হতে দেবে না বলে মায়ের দুধের গুণকীর্তনের শ্লোগান তৈরি করে ফেলেছেহাসানকে তার অ্যাড লিখতে হবে। বেশ, সে লিখবে। দ্বিতীয়টা প্রাইভেট; ‘রাধিকা’র পিতৃপুরুষেরা মায়ের স্তনকে প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষের পুষ্টিকর খাদ্য মনে করে, শিশুর নয়, শিশুকালের স্তন নিয়ে টানাটানি ইত্যাদিতে কোমলমতি শিশুদের চরিত্র নষ্ট হয়ে যেতে পারে, দুধ খাওয়া ছেড়ে চোষাতেই অভ্যস্ত হয়ে পড়তে হবে, যা জাতির জন্য শুভ নয়; তাছাড়া মায়ের দুধ বিনেপয়সায় পাওয়া যায়, কিন্তু বিনেপয়সায় জিনিশে বিশ্ব চললে বিশ্ব চলতো না। ব্যবসা থেকে যেতো, ধস নামতো বাজারে। অন্য দিকে মাতৃদুগ্ধ উৎপাদন ব্যয়বহুল, আধলিটার মাতৃদুগ্ধের পেছনে খরচ হয় একশো টাকা, সেখানে এক লিটার রাধিকা পাওয়া যায় পাঁচ টাকায়। হাসানকে তার অ্যাড লিখতে হবে। বেশ,সে লিখবে।

প্রথম অ্যাডটি নিয়েই প্রথম বসে হাসান, সে মাতৃদুগ্ধ পান করাবে সবাইকেপ্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রপতি মহাপতি উপপতি অতিপতি যুগ্নপতি বিচারপতি আমলা মামলা অধ্যাপক পুলিশক এনজিওকে গার্মেন্টস ইন্ডাস্ট্রিয়ালিস্ট ধর্ষক ধর্মক কর্মক চর্মক সবাইকেমাতৃদুগ্ধ পান করে তারা সুস্থ হৃষ্টপুষ্ট হয়ে উঠবে, তাদের অকল বিকল মাথাগুলো ঠিকভাবে কাজ করবে, রাস্তাঘাট ধানক্ষেত পাটক্ষেতে তার বিকাশ দেখা যাবে। ওহ, তারা এখন আর মাতৃদুগ্ধ পান করে না? ওই দুধের গন্ধে তাদের বমি আসে? তারা স্তন্য পান করতে পছন্দ করে না? তারা পছন্দ করে শুধু স্তন পান করতে? মায়ের না?, অন্য কারো? তাহলে শুধু শিশুদেরকেই পান করাতে হবে মাতৃদুগ্ধ? কিন্তু কেনো শুধু শিশুদেরই পান করাতে হবে মাতৃদুগ্ধ? হাসান একবার চোখ বুজে দেশ জুড়ে গোয়ালঘর দেখতে পায়, তাতে রাশিরাশি দুগ্ধবতী গাভী দেখতে পায়, তাদের বাট ফেটে পড়তে চাচ্ছেপরমুহূর্তে সে রাশিরাশি দুগ্ধবতী মাতাদের দেখতে পায়, তাদের বাঁট ফেটে পড়তে চাচ্ছে। মাতাদের জন্যে অমন গোয়ালঘর দরকার। মাতৃদুগ্ধ বিশ্বের সম্পদ, তার এক ফোঁটাও নষ্ট করা চলবে না, এর প্রতি ফোঁটা সম্মিলিতভাবে চুষে খেতে হবে; ফুরিয়ে আসছে গরিব বিশ্বের সম্পদ, নিশ্চিত করতে হবে তার সম্পদের চূড়ান্ত ব্যাবহার। সে মাতৃদুগ্ধ পান করাবে সবাইকে, দারোগা থেকে জেনারেল সবাইকে। মাতৃদুগ্ধের কোনো বিকল্প নিই, এর পুষ্টিকরতার সীমা নেই। এটা বিনিয়োগের শতাব্দী, মাতৃদুগ্ধ খাওয়ানো হচ্ছে শ্রেষ্ঠ বিনিয়োগ। এটা এক আশ্চর্য ঔষধ। এতে সারাক্ষণ লাফালাফি দৌড়াদৌড়ি কুচকাওয়াজ গোলাগুলি করছে এমন এক জীবন্ত কোষ, যা দেশরক্ষী বাহিনীর মতোই অতন্দ্র-এটা কোনো বিদেশি বাহিনীকে ঢুকতে দেয় না ত্রিসীমার মধ্যে; এটা খেলে ঘনঘন হাগু হয় না, বাতাসের নালি জ্বালাপোড়া করে না, দাঁতগণ আর মাঢ়ি হিমালয়ের পাথরের মতো শক্ত থাকে, মাথাটা মগজটা থাকে ঝকঝকে,যে খাবে সে নিউটন আইনস্টাইন রবিন্দ্রনাথ না হয়ে যাবে না। বেশি করে মাতৃদুগ্ধ খাও, জাতিসংঘ বলে দিয়েছে খাও, মাতৃদুগ্ধ খাও, এমন বিনিয়োগ আর হয় না

কবি অথবা দণ্ডিত অপুরুষ, বইয়ের ৪২,৪৩ পৃষ্ঠায় বর্ণিত হয়েছে, 

হাসান দেশের প্রধান নারীবাদীটির সাথে একটু কথা বলতে চায়। ইচ্ছে করে এখনি তাকে ফোন করে; তবে ফোন না করে মনে মনে ফোনে তার সাক্ষাৎকার নিতে থাকে। এর নাম সে দেয় মানসিক সাক্ষাৎকার। হাসান জিজ্ঞেস করে, একটু বলুন তো মাতৃদুগ্ধের উপকারিতা কি? এভাবে প্রশ্ন করা কি ঠিক হলো বিখ্যাত নারীবাদীকে? সে ভাষা বদলে আবার জিজ্ঞেস করে, দয়া করে মাতৃদুগ্ধের উপকারিতা কি সে সম্পর্কে আপনার মতামত জানালে খুশি হবো। নারীবাদী হা হা হা হা হা হা করে হেসে উঠে বলেন, জাতিসংঘের সেক্রেটারি জেনারেলটির প্রতিদিন এক লিটার মাতৃদুগ্ধ খাওয়া উচিত, তাহলে তার মাথা সুস্থ থাকবে, পাগলামো করবে না। হাসান জিজ্ঞেস করে, আপনি কি তাহলে মাতৃদুগ্ধ খাওয়া বা খাওয়ানো পছন্দ করেন না? নারীবাদী হা হা হা করে বলেন, ওরা মনে করে নারীরা দুগ্ধবতী গাভী, নারীদের ওলানের দিকে এবার ওদের চোখ পড়েছে, আগামী বছর হয়তো ওরা উন্নত জাতের দুগ্ধবতী নারী উৎপাদনের জন্যে উন্নত মানের গোয়ালঘর বানানোর পরিকল্পনা নেবে, নারীদের উন্নত মানের ফিড দেবে, যাতে দেশে বেশি পরিমানে নারীদুগ্ধ মাতৃদুগ্ধ উৎপাদিত হয়।হাসান জিগেস করে, মাতৃদুগ্ধ থেকে কি আমরা আমাদের অতি প্রয়োজনীয় বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে পারবো? নারীবাদী বলেন, হ্যাঁ, তা খুবই পারা যাবে। বছরে যদি আমরা কয়েক কোটি লিটার মাতৃদুগ্ধ উৎপাদন করি, তাহলে তা পলিথিনের ব্যাগে ভরে বেচা যাবে, ওই দুগ্ধ থেকে বাটার চিজ ঘি কন্ডেস্নড মিল্ক আইস ক্রিম উৎপাদন করা যাবে, হা হা হা হা বিদেশে রপ্তানি করা যাবে, তখন নিজেরা অবশ্য খেতে পাবো না। হাসান বলে, আপনার কথা বেশ নেগেটিভ বলে মনে হচ্ছে। নারীবাদী বলেন, কোথায় নেগেটিভ? আমি তো খুবই পজিটিভ কহা বলছি। ব্যাপারটি হচ্ছে ওরা নারীদের ঘরে আটকে রাখার নতুন নতুন ফর্মুলা বের করছে। ওরা নারীর মগজ চায় না ওলান চায়, মেধা চায় না দুগ্ধ চায়, আর নারীর ঐতিহাসিক দেহখানা তো আছেই। মাতৃদুগ্ধ পান করানো হচ্ছে নারীর বিরুদ্ধে নতুন সুন্দর ফর্মুলা নতুন সুন্দর চক্রান্ত। হাসান জিজ্ঞেস করে, মাতৃদুগ্ধ পানে কি কোনোই উপকার হয় না? নারীবাদী বলেন, দেশে কোটি কোটি বাচ্চা মায়ের দুধ খাচ্ছে, তাতে কি তাদের স্বাস্থ্য মেধা অতুলনীয় হচ্ছে? আর মায়ের দুধে প্রতিভা? মায়ের দুধে নৈতিকতা? রবীন্দ্রনাথ তো মায়ের দুধ না খেয়েই প্রতিভাবান হয়েছেন, আর বস্তির বাচ্চাগুলো মায়ের দুঘ খেতে খেতে মরে যাচ্ছেওই দারোগা পুলিশ মাস্তানগুলো তো মায়ের দুধ খেয়েছে, ওই জেনারেলগুলোও মায়ের দুধ খেয়েছিলো। তাতে কি তারা নৈতিক হয়েছে? হা হা হা হা। হাসান জিজ্ঞেস করে, বুড়োদের মাতৃদুগ্ধ খাওয়ালে উপকার হতে পারে? নারীবাদী বলে, হ্যাঁ ওই বদমাশ বুড়োগুলোকে মাতৃদুগ্ধ খাওয়ানো দরকার; তাহলে হয়তো বদমাশি কিছুটা কমবে

কবি অথবা দণ্ডিত অপুরুষ, বইয়ের ৪৩,৪৪ পৃষ্ঠায় বর্ণিত হয়েছে, 

হাসান নারীবাদীটির সাথে কথা বন্ধ করে তার সামনে একগুচ্ছ দৈনিক পত্রিকার একটির পাতা উল্টোতে শুরু করে; দ্বিতীয় পাতায় একটি সংবাদ তাকে যারপরনাই স্বস্তি দেয়। বাক্স করে সংবাদটি ছাপা হয়েছে, যার শিরোনাম স্ত্রীর স্তন্য পান করে বেঁচে আছেন মোহাম্মদ ফজর আলি’। সংবাদে বলা হয়েছে মোহাম্মদ ফজর আলি বছর বছর বিয়ে করে চলছেন, তার ঘরে সব সময়ই কমপক্ষে একটি করে গর্ভবতী স্ত্রী থাকে, এবং থাকে একটি নতুন সন্তানবতী স্ত্রী। মোহাম্মদ ফজর আলি তার শিশু সন্তানকে মায়ের স্তন্য পান করতে দেন না, তিনি নিজেই স্ত্রীকে চেপে ধরে সকাল দুপুর বিকেলে চারবেলা স্ত্রীর দুগ্ধ পান করেন। স্ত্রীর পুষ্টিকর দুগ্ধ পান না করলে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন, তার গর্দান সরু হয়ে যায়; তাই এই কাজ তিনি করে আসছেন তিরিশ বছর ধরে। এবার তিনি গোলমালে পড়েছেন, তিনি নতুন বউটির স্তন্য পান করতে গেলে বউটি তাকে বাধা দেয়, তিনি জোর করে তিন মাস ধরে স্ত্রীর স্তন্য পান করেন, শিশু কন্যাটিকে স্তন্য পান করতে দেন না। মোহাম্মদ ফজর আলি হৃষ্টপুষ্ট হয়ে উঠলেও শিশুটি দিন দিন রোগাপটকা হয়ে পড়তে থাকে। স্বামীর স্তন্যপাননেশা বন্ধ করতে না পেরে অবশেষে বউটি গিয়ে থানায় মামলা দায়ের করে; এবং নীতিপরায়ণ পুলিশ ফজর আলিকে গ্রেফতার করে। হসান সংবাদটি পড়ে অভিবাদন জানায় মোহাম্মদ ফজর আলিকে। হাসান এবার আরও গভীরভাবে উপলব্ধি করে যে নারীদের স্তন্য জাতীয় সম্পদ, তা নষ্ট হতে দেয়া যায় না। গরিব দেশে প্রতি বছর নষ্ট হচ্ছে কোটি কোটি লিটার মাতৃদুগ্ধ; কিন্তু ওই মূল্যবান জাতীয় সম্পদ নষ্ট হতে দেয়া যায় না। মোহাম্মদ ফজর আলিকে হাসানের পথপ্রদর্শক বলে মনে হয়- আবার অভিনন্দন জানায় সে মোহাম্মদ ফজর আলিকে। জাতিসংঘ কি তাকে নেবে?

পুরো বইটি পড়লে এমন বর্বর, নির্লজ্জ ও বেহায়ামার্কা মুক্তচিন্তার নমুনা আপনারা দেখতে পাবেন। এদেরকে জুতালেও জুতাকে অসম্মান করা হবে। অন্যদিকে মায়ের প্রতি সন্তানের কি দায়িত্ব তা সুন্দর করে বর্ণনা করেছে ইসলাম। ইসলামের দৃষ্টিতে মা খুবই সম্মানের। ইসলামের দৃষ্টিতে কোনো সন্তানের এই অধিকার নেই মা নিয়ে নোংরা নোংরা কথা বলার, অধিকার নেই মা নিয়ে মুক্তচিন্তা করবার। এমনকি কোনো সন্তান যদি মা-বাবার সেবা যত্ন না করে তাহলে সেই সন্তান জাহান্নামে যাবে।

 

উপদেশ, হাদিস, ৭৫, সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত

আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃরাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘পিতা-মাতার অবাধ্য সন্তান, জুয়া ও লটারীতে অংশগ্রহণকারী, খোঁটাদানকারী এবং সর্বদা মদপানকারী জান্নাতে যাবে না-ihadis.com

হাদিস সম্ভার, হাদিসঃ ১৭১৩, সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,

ইবনে উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃআল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, “তিন ব্যক্তির প্রতি আল্লাহ কিয়ামতের দিন তাকিয়ে দেখবেন না; পিতা-মাতার অবাধ্য সন্তান, পুরুষবেশিনী বা পুরুষের সাদৃশ্য অবলম্বনকারিণী মহিলা এবং মেড়া পুরুষ; (যে তার স্ত্রী, কন্যা ও বোনের চরিত্রহীনতা ও নোংরামিতে চুপ থাকে এবং বাধা দেয় না।) আর তিন ব্যক্তি বেহেশ্তে যাবে না; পিতা-মাতার নাফরমান ছেলে, মদপানে অভ্যাসী মাতাল এবং দান করার পর যে বলে ও গর্ব করে বেড়ায় এমন খোঁটাদানকারী ব্যক্তি।”-ihadis.com

আদাবুল মুফরাদ, হাদিসঃ ৩, হাসান হাদিস থেকে বর্ণিত,

হাকীম ইবনে হিযাম (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃআমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! সদ্ব্যবহার পেতে কে অগ্রগণ্য? তিনি বলেনঃ তোমার মা। আমি বললাম, তারপর কে? তিনি বলেনঃ তোমার মা। আমি বললাম, তারপর কে? তিনি বলেনঃ তোমার মা। আমি বললাম, তারপর কে? তিনি বলেনঃ তোমার পিতা, তারপর ক্রমান্বয়ে আত্মীয়ের সম্পর্কের নৈকট্যের ভিত্তিতে।-ihadis.com 

আদাবুল মুফরাদ, হাদিসঃ ৪, সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,

ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃএক ব্যক্তি তার নিকট উপস্থিত হয়ে বললো, আমি এক মহিলাকে বিবাহের প্রস্তাব দিলাম। সে আমাকে বিবাহ করতে অস্বীকার করলো। অপর এক ব্যক্তি তাকে বিবাহের প্রস্তাব দিলে সে তাকে বিবাহ করতে পছন্দ করলো। এতে আমার আত্মমর্যাদাবোধে আঘাত লাগলে আমি তাকে হত্যা করি। আমার কি তওবার কোন সুযোগ আছে? তিনি বলেন, তোমার মা কি জীবিত আছেন? সে বললো, না। তিনি বলেন, তুমি মহামহিম আল্লাহর নিকট তওবা করো এবং যথাসাধ্য তার নৈকট্য লাভে যত্নবান হও। আতা (র) বলেন, আমি ইবনে আব্বাস (রাঃ)-এর নিকট গিয়ে জিজ্ঞেস করলাম, তার মা জীবিত আছে কিনা তা আপনি কেন জিজ্ঞেস করলেন? তিনি বলেন, আল্লাহর নৈকট্য লাভের জন্য মায়ের সাথে সদাচারের চেয়ে উত্তম কোন কাজ আমার জানা নাই-ihadis.com

আদাবুল মুফরাদ, হাদিসঃ ৫, সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,

আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃইয়া রাসূলাল্লাহ! সদাচার প্রাপ্তির অগ্রগণ্য ব্যক্তি কে? তিনি বলেনঃ তোমার মা। তিনি বলেন, তারপর কে? তিনি বলেনঃ তোমার মা। তিনি বলেন, তারপর কে? তিনি বলেনঃ তোমার মা। তিনি বলেন, তারপর কে? তিনি বলেনঃ তোমার পিতা-ihadis.com

 

আদাবুল মুফরাদ, হাদিসঃ৬ , সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,

আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃএক ব্যক্তি নবী (সাঃ)-এর নিকট এসে বললো, আপনি আমাকে কি আদেশ করেন? তিনি বলেনঃ তোমার মায়ের সাথে সদাচার করবে। সে একই কথা বললে তিনি বলেনঃ তোমার মায়ের সাথে সদাচার করবে। সে পুনরায় একই কথা বললে তিনি বলেনঃ তোমার মায়ের সাথে সদাচার করবে। সে চতুর্থবার জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেনঃ তোমার মায়ের সাথে সদাচার করবে। সে পঞ্চমবার জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেনঃ তোমার পিতার সাথে সদাচার করবে-ihadis.com

 

রিয়াদুস সলেহিন,হাদিসঃ ৩৩০, সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,

আসমা বিন্‌তে আবূ বকর সিদ্দীক রাদ্বিয়াল্লাহু ‘‘আনহুমা থেকে বর্ণিতঃতিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর যুগে আমার অমুসলিম মা আমার কাছে এল। আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে জিজ্ঞেস করলাম; বললাম, ‘আমার মা (ইসলাম) অপছন্দ করা অবস্থায় আমার সম্পদের লোভ রেখে আমার নিকট এসেছে, আমি তার সাথে সম্পর্ক বজায় রাখব কি?’ তিনি বললেন, ‘‘হ্যাঁ, তুমি তোমার মায়ের সাথে সম্পর্ক বজায় রাখ’’(বুখারী ও মুসলিম)-ihadis.com

নাস্তিকদের আত্মহত্যা করা উচিত?

নাস্তিক্যধর্মে আত্মহত্যা করা খারাপ কিছু নয়। যার ইচ্ছে সে মুক্তচিন্তায় নিজেকে খুন করে ফেলতে পারবে। নাস্তিকরা কি যুক্তি কি এভাবে কখনো চিন্তা করে দেখেছে কোনো নাস্তিক যদি নিজের সকল সম্পদ গরীবকে দিয়ে যদি সে আত্মহত্যা করে তাহলে মানবতার সেবা করা হলো? যেসব দেশে খাদ্য সংকট সেসব দেশে গিয়ে নাস্তিকরা যদি তাদেরকে বলে আমরা তোমাদের জন্য আত্মহত্যা করছি। আমরা মরে গেলে আমাদের মাংস আগুনে জ্বালিয়ে তোমরা রোষ্ট করে মজা করে খেতে পারবে। যুক্তি অনুযায়ী এখানে কিন্তু ক্ষতি হচ্ছে না বরং উপকার হচ্ছে। তাই নাস্তিকরা চাইলে নিজেরা আত্মহত্যা করে অন্যদেরকে খাবারের সুযোগ করে দিতে পারে। নাস্তিক্যধর্মের দৃষ্টিতে এতে জবরদস্তি নেই।

"আমার অবিশ্বাস" ১৭ পৃষ্ঠায় বর্ণিত হয়েছে, 

তবে সব কিছুই নিরর্থক, জগত পরিপূর্ণ নিরর্থকতায়, রবীন্দ্রনাথ নিরর্থক,আইনস্টাইন নিরর্থক,ওই গোলাপও নিরর্থক,ভোরের শিশিরও নিরর্থক, তরুণীর চুম্বনও নিরর্থক, দীর্ঘ সুখকর সংগমও নিরর্থক, রাষ্ট্রপতি নিরর্থক, কেননা সব কিছুরই পরিনতি বিনাশ।

"আমার অবিশ্বাস" ১৮ পৃষ্ঠায় বর্ণিত হয়েছে, 

এই যে আমি বেঁচে আছি, বেঁচে থেকে সুখ পাচ্ছি । আমি মরে যাবো, এই হাস্যকর নিরর্থকতাকে কিভাবে অর্থপূর্ণ করে তুলতে পারি? আমার জীবনকে অর্থপূর্ণ করে তোলার কখন পূর্বনির্ধারিত উপায় নেই।কোন পবিত্র বা অপবিত্র বই বা কোন মহাপুরুষ বা প্রবর্তক আমাকে পথ দেখাতে পারেন না।তাঁরা খুঁজেছেন নিজেদের পথ,নিজেদের জীবনকে তাৎপর্যপূর্ণ করার পথঃ আমি তাদের পথে চলতে পারি না।আমি খুজতে চাই আমার পথ। নিজের জীবনকে তাৎপর্যপূর্ণ করার দায়িত্ব সম্পূর্ণরুপে আমার নিজের।

"আমার অবিশ্বাস" ১৯ পৃষ্ঠায় বর্ণিত হয়েছে, 

আমরা এই নিরর্থক পুনরাবৃত্তি থেকে একটুও এগোইনি ,কামু বলেছেন আমাদের জীবন একই রোববারের পর সোমবার, সোমবারের পর মঙ্গলবার, মঙ্গলবারের পর বুধবার, একই নিরর্থক পুনরাবৃত্তি। এই নিরর্থকতার মুখোমুখি কিভাবে দাড়াতে পারি ? কামুর মতে একটিই সত্যিকার দার্শনিক সমস্যা রয়েছে তা হচ্ছে আত্মহত্যা। জীবন কি যাপন করার উপযুক্ত ? বেঁচে থাকার কি কোন মানে হয় ? কোন অর্থ কি আছে নিরুদ্দেশ যাত্রা লেখার বা মহাকাশে নভোযান পাঠানোর বা নারীর নগ্ন স্তন চুম্বনের বা জন্মদানের? ...................মানুষের প্রশ্নের শেষ নেই , হাজার হাজার প্রশ্ন তার,সেগুলোর কোন উত্তর নেই । মানুষ চায় সমাধান , কিন্তু সমাধান চাইতে গিয়েই মানুষ জাগিয়ে তোলে নিরর্থকতা। মানুষ যখন জীবনের অর্থ খুজতে চায় , বুঝতে চায় জীবনের অর্থ কি , তখন সে মুখোমুখি হয় নিরর্থকতার। জীবনের কোন অর্থ নেই । কোন মহৎ উদ্দেশ্য নেই । সুধীন্দ্রনাথ যেমন বলেছেন তার সার কথা পিশাচের উপজীব্য হওয়া

'আমার অবিশ্বাস' ২০ নং পৃষ্ঠায় বর্ণিত হয়েছে, 

মানুষ অভিনয় করে যেতে থাকে, কিন্তু একদিন মঞ্চ ভেঙ্গে পড়ে। জীবনের ক্লান্তিকর পুনরাবৃত্তির চমৎকার বর্ণনা দিয়েছেন কামু এভাবেঃ জাগরণ, গাড়ি, চার ঘণ্টা কাজ, আহার, নিদ্রা , এবং সোমবার , মঙ্গলবাদ, ব্রধবার বৃহস্পতিবার, শুক্রবার এবং শনিবার একই তালে পুরাবৃত্ত - এই পথেই চলা অধিকাংশ সময়। কিন্তু একদিন দেখা দেয় 'কেন'। তখন সব কিছু মনে হতে থাকে অবসার্ড, নিরর্থক।এই নিরর্থকতার উদ্ভব ঘটে আমাদের চৈতন্য ও বিশ্বের মধ্যে যখন ঘটে সংঘর্ষ। মানুষ , কামু মনে করেন, এই নিরর্থকতাকে এড়াতে পারে না যতোদিন সে বেঁচে থাকে, তাই তাঁর মতে, অস্তিত্ব হচ্ছে 'চূড়ান্ত আশাহীনতা'।মানুষ এই নিরর্থকতাকে অতিক্রম করার কোনো উপায় দেখে না, কেননা বেঁচে থাকাই হচ্ছে নিরর্থকতা। সুধীন্দ্রনাথ এ পরিস্থিতির কথাই বলেছিলেন। 'মৃত্যু কেবল মৃত্যুই ধ্রুবসখা/ যাতনা কেবল যাতনা সুচির সাথীর হাহাকারে। এই নিরর্থকতার থেকে মুক্তির এক উপায় হল মৃত্যু: মৃত্যু পারে নিরর্থকতার সমাপ্তি ঘটাতে। তাই আত্মহত্যা একটি উপায় নিরর্থকতা থেকে মুক্তির

'আমার অবিশ্বাস' ২০ পৃষ্ঠায় বর্ণিত হয়েছে, 

তাহলে কি আমরা আত্মহত্যা করবো? কামু, এবং সবাই বলবে ,না।আত্মহত্যা কোন সমাধান নয়। আত্মহত্যা করে নিরর্থক জীবনকে তাৎপর্যপূর্ণ করা সম্ভব নয়, তবে প্রত্যেক মানুষের জীবনেই কোনো কোনো মুহূর্ত আসে,যা তাকে আত্মহত্যা করার প্ররোচনা দেয়, কিন্তু সবাই আত্মহত্যা করে না,শুধু তারাই আত্মহত্যা করে বা সফল হয় আত্মহত্যায়, যারা হটাত জেগে ওঠা নিরর্থক প্ররোচনা কাটাতে পারে না,যেমন পারে নি জীবনানন্দের 'আট বছর আগের একদিন' - এর তরুন , যার জানালার পাশে দাঁড়িয়েছিল উটের গ্রীবার মতো এক নিস্তব্ধতা। আমি কয়েকবার আত্মহত্যাকে সমাধান হিশেবে বিবেচনা করেছি, এবং বাতিল করেছি, একবার একটি কবিতা লিখেছি ''ছাঁদ আরোহীর কাসিদা' নামে।রবীন্দ্রনাথ কি কখনো আত্মহত্যার কথা ভেবেছেন? অবশ্যই ভেবেছেন,তাঁর প্রথম দিকের কাব্য গুলোতে এর নানা দাগ দেখতে পাই।আত্মহত্যা কোন সমাধান নয়,এটা একটি আস্তিত্ত্বিক পাপ।মানুষ তার নিজের ইচ্ছায় মরবে না,বেছে নেবে না স্বেচ্ছামৃত্যু।মানুষকে মরতে হবে মিটমাট না করে, জীবন আমাদের সুন্দর জীবন।তার কোন অর্থ নেই,অর্থের দরকার নেই, জীবনের অর্থ হচ্ছে জীবন,জীবনের অন্য অর্থ নেই বলেই জীবন সুন্দর।

হুমায়ুন আজাদ নাস্তিক্যধর্মের দৃষ্টিতে লুকানো সত্যি কথা গুলোই ফাঁস করে দিয়েছে। অনেক লজ্জিত চেহারার নাস্তিক এই কথা গুলোকে স্বীকার করতে চায় না। লজ্জায় মুখ লুকিয়ে এই কথাও বলে যে আমরা নাস্তিকতা প্রচার করি না, আমরা মানুষকে মুক্তচিন্তা করতে উৎসাহিত করি। নাস্তিক্যধর্মের দৃষ্টিতে মানুষের জিবনের কোনো উদ্দেশ্য নাই। সে ভালো হবে নাকি খারাপ তাতে কিছুই আসে যায় না। খেয়াল করলে দেখবেন ইসলাম নিয়ে মিথ্যা কথা বলতে নাস্তিকদের বুক কাপে না কারণ তাদের বিশ্বাস হচ্ছে মুক্তচিন্তায় যা ইচ্ছে তাই চিন্তা করা যাবে। পারবে নাস্তিকরা এই সত্যি কথা গুলোকে অবিশ্বাস করতে? হুমায়ুন আজাদ নিজেই স্বীকার করছেন যে কোনো বই এমনকি কেউই কাউকে পথ দেখাতে পারে না।

'আমার অবিশ্বাস' বইয়ের ২০ পৃষ্ঠায় বর্ণিত আছে, 

কোনো পূর্বনির্ধারিত পথ নেই মানুষের জন্যে। কোনো গ্রন্থ পথ দেখাতে পারে না ,কোনো মহাপুরুষ বা প্রবর্তক তার জন্যে পথ প্রস্তুত করতে পারেন না, ওই মহাপুরুষেরা তৈরি করেছেন নিজেদের পথ, অন্যদের নয়।প্রত্যেককে খুঁজে বের করতে হয় নিজেদের পথ, তৈরি করতে হয় নিজেদের রাস্তা,অনেকের পথ আমাকে আলোড়িত করেছে,অনেক গ্রন্থ আমাকে আলো দিয়েছে, কিন্তু আমি ওইসব পথে চলি নি, ওই আলোতে পথ দেখি নি।

হুমায়ুন আজাদ যেমন নিজের ইচ্ছে মতো নিজের পথ সন্ধান করে নিয়েছেন তেমনি যে কোনো নাস্তিক মুক্তচিন্তায় চাইলে নিজের জন্য যা ইচ্ছে সেটাই বেঁছে নিতে পারে। নাস্তিক চাইলে মিথ্যা কথাকে ভালো মনে করতে পারে আবার সত্যি গ্রহণ করাকে নিজের জন্য খারাপ মনে করতে পারে। নাস্তিক চাইলে ধর্ষণ করাকে নিজের জন্য ভালো মনে করতে পারবে আবার নারীকে সম্মান করাকে নিজের জন্য খারাপ মনে করতে পারবে। এভাবে বলতে থাকলে মুক্তচিন্তার রহস্য বলে শেষ করা যাবে না। নাস্তিকদের মধ্যে আত্মহত্যার সংখ্যা বেশি। নাস্তিকদের আধ্যাত্মিক শক্তি নাই। দুঃখ কষ্ট ভুলে থাকতে মদ খায়, বিড়ি খায়,গাঞ্জা খায়। অথচ এসবই সাস্থের জন্য হুমকি। আত্মহত্যায় নাস্তিকরাই এগিয়ে যাচ্ছে (৭১)।



বিজ্ঞান’ই একমাত্র সত্যের মাপকাঠি কথাটি সঠিক?

আমি বিজ্ঞানের বিরোধী নই। আমি বিজ্ঞানকে জ্ঞান অর্জনের উপকারী মাধ্যম মনে করে থাকি কিন্তু তাই বলে বিজ্ঞানকে আমার অন্ধবিশ্বাস করতে হবে,বিজ্ঞানকে আমার চূড়ান্ত ও শেষ মানদণ্ড হিসেবে বিশ্বাস করে নিতেই হবে। অনেকে এও বলে থাকেন যে, "যা জ্ঞান অর্জন সম্ভব, তা কেবল বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতেই করতে হবে। বিজ্ঞান যা আবিষ্কার করতে পারবে না, মানুষ তা কখনও জানতে পারবে না"। বিজ্ঞানের বাইরে চিন্তা করা যাবে না, আমাদেরকে বিজ্ঞানের মধ্যেই সমাবদ্ধ থাকে হবে। এমন ধারণায় আমি বিশ্বাসী নই। বিজ্ঞানের কল্যাণকর দিক গুলো যেমন আমাদের উপকার করে তেমনি এর সাইট এফেক্ট আমাদের জন্য ক্ষতি বয়ে আনে। তাই ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থান বজায় রাখা প্রয়োজনীয়।



বিজ্ঞানমনস্ক ড. জাফর ইকবাল তার “একটুখানি বিজ্ঞান” বইয়ের ১৩ পৃষ্ঠায় লিখেছেন,

ধর্মের ভিত্তি হচ্ছে বিশ্বাস, কাজেই ধর্মগ্রন্থে যা লেখা থাকে সেটাকে কেউ কখনো প্রশ্ন করে না, গভীর বিশ্বাসে গ্রহণ করে নেয়। বিজ্ঞানে বিশ্বাসের কোনো স্থান নেই। 

এই লোক নিজেই আবার নিজের বইয়ের অন্য লেখায় উল্টো কথা বলেছেন। কোয়ান্টাম মেকানিক্স,বইয়ের, ৪৯ পৃষ্ঠায় বলেছেন,

"মানুষ যদি বিজ্ঞানের ক্ষমতাকে বিশ্বাস না করে, যদি ভয় না পায়, যদি ভরসা না করে, তাহলে কার উপর বিশ্বাস করবে, কাকে ভয় পাবে, কার উপর ভরসা করবে?"

বিজ্ঞানে এমন হাজার বিষয় রয়েছে যা সত্যি বলে মানুষ এক সময় বিশ্বাস করতো কিন্তু পরবর্তী বিজ্ঞানীরা সেই ধারনাকে ভুল প্রমাণ করেছেন। তাই বিজ্ঞান নিয়ে বান্দরের মতো ফালাফালি করবার কিছু নাই। বিজ্ঞানমনস্ক নামধারী কতিপয় লোক বিজ্ঞানের নামে বিজ্ঞানকে দূষিত করে তুলছে। তাই সচেতন হবার সময় এখনই। নাস্তিক বিজ্ঞানের পূজা করা ছাড়া বাকি সব কিছুই বিজ্ঞানের সাথে করে ফেলেছে। অনেক নাস্তিক যদিও বিজ্ঞানকে ঈশ্বরের কাতার দাড় করিয়ে রেখেছে। এই শ্রেণির মুক্তমনা বিজ্ঞানমনস্করা বলে থাকে বিজ্ঞান যা প্রমাণ করবে সেটাই সত্যি আর বিজ্ঞান যা বলবে না সেটা মিথ্যা ও প্রমাণহীন। বিজ্ঞান দিয়েই সব কিছুকে মাপ তে হবে। বিজ্ঞানই সব। কিন্তু যারা আসলেই বিজ্ঞান বোঝে অথবা যারা বিজ্ঞানী তারা কি সবাই এমন নিচু মানের কথা বলতে পারেন? কিছু কিছু বিজ্ঞানমনস্ক নামধারী মানুষ আবার বিজ্ঞান নিয়ে এমন প্রশংসা বাক্য বলতে থাকে যেন বিজ্ঞানকে দিনে কয়েকবার পূজা করা দরকার।

প্রখ্যাত পদার্থবিদ ফ্রিম্যান ডাইসন নিউ ইয়র্ক রিভিউতে এক আর্টিকেলে লিখেন (৭২),

The public has a distorted view of science, because children are taught in school that science is a collection of firmly established truths. In fact, science is not a collection of truths. It is a continuing exploration of mysteries. 

অর্থাৎ, বিজ্ঞান সম্পর্কে মানুষজনের একটা বিকৃত দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে। বাচ্চাকাচ্চাদের স্কুলে শেখানো হয় যে, বিজ্ঞান হচ্ছে সুপ্রতিষ্ঠিত সত্যের সমাহার! আসলে বিজ্ঞান কোন ‘কালেকশন অব ট্রুথ’ নয়। বিজ্ঞান হচ্ছে ক্রমাগত রহস্যোন্মোচন।” “Science is not a collection of Truths  

ডার্ক এনার্জির ধারণা আবিষ্কারের জন্য ২০১১ সালে নোবেল পুরস্কার পাওয়া টিমের একজন, প্রফেসর অ্যালেক্সে ফিলিপ্পেনকো এক সাক্ষাতকারে বলেন,

“… আমি মহাবিশ্বকে একজন বিজ্ঞানীর দৃষ্টিকোণ থেকে আলোচনা করতে চাই … কোন অতিমানবিক বা স্বকীয় স্রষ্টা আছেন কিনা বা এই মহাবিশ্বের কোন উদ্দেশ্য আছে কিনা সে বিষয়ে আমি কিছু বলব না – এই প্রশ্নগুলোর উত্তর বিজ্ঞানীরা দিতে পারে না…।”(৭৩)।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের National Academy of sciences এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছেঃ

"প্রাকৃতিক মহাবিশ্বকে জানার জন্য বিজ্ঞান ব্যবহার করা হয়। প্রাকৃতিক কারণে আলোকে প্রাকৃতিক মহাবিশ্ব ব্যাখ্যা করা পর্যন্তই বিজ্ঞানের সীমারেখা। অতিপ্রাকৃত ব্যাপার নিয়ে বিজ্ঞানের বলার কিছু নেই। সুতরাং ঈশ্বর আছে কি নেই, এমন প্রশ্ন করা বিজ্ঞানে অবান্তর,যতক্ষণ পর্যন্ত বিজ্ঞান তার নিরপেক্ষতা ধরে রাখে।"(৭৪)।

ধর্মবেত্তা ডেভিড মার্শাল বলেন:

"এই নব্য নাস্তিকরা বাস্তবতার বিভিন্ন দিক একেবারেই বুঝতে পারে না।প্রথমত, বোকা নাস্তিকদের বিজ্ঞানের সীমারেখা সম্পর্কে বিন্দুমাত্র ধারণা নেই। দ্বিতীয়ত,তাদের তত্ত্বগুলো অসংখ্য বাস্তবতাকে সরাসরি উপেক্ষা করে। তৃতীয়ত,গুরুত্বপূর্ণ কিছু প্রশ্ন জিজ্ঞেসা করা থেকে তারা সবসময় নিজেদের বিরত রাখে। চতুর্থত, তাদের তত্ত্বকে ভরাডুমির হাত থেকে বাঁচাতে তারা চমৎকার এক ছলনার আশ্রয় নেয়। সেই ছলনা হলো-"মনে করি"(৭৫)

জন হুট বলেনঃ

"বিবর্তন মানুষের অনুভব করার ক্ষমতাকে ব্যাখ্যা করতে পারে না। আমাদের বিভিন্ন বিষয় অনুভবের ক্ষমতা দেখলে বোঝা যায় বিবর্তন ছাড়াও অন্য এক শক্তি আমাদের উপর কাজ করছে, যার ফলে আমরা চিন্তা করতে পারে যার ফলে আমাদের মন অন্য সবার থেকে আলাদা"(৭৬)

মনোবিজ্ঞানি কিথ স্ট্যানোভিচ বলেন (৭৭),

বিজ্ঞান ইতঃপূর্বে যা সত্য বলে প্রমাণ করেছিল, তাকেই প্রতিনিয়ত মিথ্যা প্রমাণ করে চলেছে।

যারা সংশয়ের নামে ইসলামের অযৌক্তিক বিরোধীরা করে থাকে তাদেরকে আপনি কখনো দেখবেন না বিজ্ঞান নিয়ে সংশয় প্রকাশ করতে। তাদেরকে আপনি কখনো দেখবেন না নাস্তিক্যবাদ নিয়ে সংশয় প্রকাশ করতে। তাদেরকে আপনি দেখবেন না মুক্তচিন্তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করতে। তাদেরকে আপনি দেখবেন সেকুলারিজম নিয়ে সংশয় প্রকাশ করতে। তাদেরকে আপনি দেখবেন না লেবারেলিজম নিয়ে সংশয় প্রকাশ করতে। বুঝতে পেরেছেন আসল রহস্যটি? বিজ্ঞানকে মূর্খ নাস্তিকদের মতো অন্ধবিশ্বাস করা যাবে না। বিজ্ঞানকে পূজা করা যাবে না। বিজ্ঞানকে ঈশ্বরও মনে করা যাবে না। বিজ্ঞানকে বিজ্ঞানের দৃষ্টিতেই দেখতে হবে। বিজ্ঞানের উপকারী দিক গুলো ব্যাবহার করে আমাদের জীবনকে সহজ ও উপকারী বানাতে হবে। বিজ্ঞান ও বিজ্ঞানপূজার পার্থক্য জানতে এই লেখা গুলো পড়তে পারেন (৭৮),(৭৯),(৮০),(৮১),(৮২),(৮৩),(৮৪),(৮৫),(৮৬)। এই লেখা গুলো পাঠ করলে নাস্তিকরা নিজেদের মূর্খতা থেকে কিছুটা মুক্ত হয়ে আসতে পারবে বলে আমি আশাবাদী।


ফিলোসফি অফ সাইন্স সম্পর্কে যাদের ধারণা আছে তারা জানেন The Black Swan Problem (The Problem of Induction) ও একই উপাত্তের ওপর ভিত্তি করে বিভিন্ন মতবাদের সম্ভাব্যতা প্রভৃতির কারণে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে আসা কোন সিদ্ধান্ত শতভাগ সত্যের নিশ্চয়তা দেয় না। (বিবর্তনের প্রাণপন সমর্থক বহুল পরিচিত) National Center for Science Education এর ভাষায়,


“... বৈজ্ঞানিক সত্য কখনোই চূড়ান্ত নয় এবং যা আজ সত্য হিসেবে বিবেচিত হয়তো বা কাল তা পরিবর্তিত অথবা এমনকি বাতিল ঘোষিত হতে পারে। ”


বিজ্ঞানের ইতিহাস এর অজস্র প্রমাণ বহন করে। এরিস্টটলের জিওসেন্টিক মডেল থেকে কোপার্নিকান হেলিকোসেন্ট্রিক মডেল, নিউটনীয় বলবিদ্যা থেকে আইনস্টাইনীয় বলবিদ্যা, স্ট্যাটিক ইউনিভার্স মডেল থেকে বিগ ব্যাং থিওরি; বদলে যাওয়ার এমন উদাহরণের শেষ নেই। বিখ্যাত ফিলােসফার টমাস কুন এর ভাষায় এই বদল হল 'প্যারাডাইম শিফট' (৮৭)।


ব্রিস্টল ইউনিভার্সিটির ফিলােসফি অফ সাইন্সের প্রফেসর সামির ওকাশ (Samir Okasha) বলেন (৮৮),


“বৈজ্ঞানিক মত দ্রুত বদলায়। আপনার পছন্দমত বিজ্ঞানের যে কোন শাখাই বিবেচনা করুন না কেন, এবং আপনি নিশ্চিত হবেন যে (বর্তমানে) ঐ শাখার প্রভাবশালী তত্ত্বগুলাে (Theory) ৫০ বছর আগের তত্ত্ব গুলোর চেয়ে অনেক ভিন্ন হবে আর ১০০ বছরের আগের তত্ত্বগুলোর চেয়ে ব্যাপক ভিন্ন হবে।


বাংলার নাস্তিককূলের একজন তাঁর বিবর্তনের সমর্থনে রচিত গ্রন্থে বিজ্ঞান সম্পর্কে যথার্থই বলেন (৮৯),


কোন অনুকল্পকে (hypothesis) বৈজ্ঞানিক তত্ত্বের (theory) জায়গায় উঠে আসতে হলে তাকে কতগুলাে সুনির্দিষ্ট স্তর পার হয়ে আসতে হয় – প্রথমে গভীর পর্যবেক্ষণ, যুক্তি, সমস্যার বিবরণ, সম্ভাব্য কারণ, ফলাফল ইত্যাদির উপর নির্ভর করে প্রকল্পটা প্রস্তাব করা হয়, তারপর তাকে প্রমাণ করার জন্য চলতে থাকে ক্রমাগত পরীক্ষা-নিরীক্ষা। বিভিন্ন পরীক্ষা থেকে পাওয়া ফলাফল এবং তথ্যের মাধ্যমে যদি প্রকল্পটাকে প্রমাণ করা না যায় তা হলে তাকে বাদ দিয়ে দেওয়া হয়। আর যদি দীর্ঘদিন ধরে বারবার করে বিভিন্ন রকমের পরীক্ষার মাধ্যমে তাকে প্রমাণ করা যায় এবং অন্য কোন বিজ্ঞানী এই প্রমাণের বিরুদ্ধে কোন তথ্য হাজির না করেন তবেই তাকে বৈজ্ঞানিক তত্ত্বের মর্যাদা দেওয়া হয়। এখানেই কিন্তু শেষ নয়, তার সাক্ষ্যপ্রমাণের দায় কখনােই শেষ হয় না, বিজ্ঞানে বিমূর্ত বা অনাদি সত্য বলে কোন কথা নেই। এই প্রক্রিয়ায় একটি প্রচলিত এবং প্রমাণিত তত্ত্বকেও যে কোন সময় আংশিক বা সম্পূর্ণ ভুল বলে প্রমাণ করা যেতে পারে। আজকে একটা তত্ত্বকে সঠিক বলে ধরে নিলে কালকেই তাকে ভুল প্রমাণ করা যাবে না এমন কোন কথা নেই। তাই আমরা দেখি, নিউটনের তত্ত্ব পদার্থবিদ্যার জগতে কয়েকশ বছর ধরে রাজত্ব করার পরও আইনস্টাইন এসে বিশেষ কোন কোন ক্ষেত্রে তার অসারতা প্রমাণ করে দিতে পারেন। বিজ্ঞানের ইতিহাসে এমন উদাহরণের শেষ নেই।

এরপরেও যারা বিজ্ঞানকেই সত্যের মাপকাঠি হিসেবে বিশ্বাস করবেন। যারা মনে করে থাকেন বিজ্ঞান যা বলবে সেটাই ফাইনাল। বিজ্ঞানই সব, বাকি সব কিছুই অঠিক। সেই সব বিজ্ঞানমনস্ক মুক্তমনাদের জন্য সামনে আমি কিছু বৈজ্ঞানিক গবেষণা তুলে ধরবো। ধরেছিও। তখন দেখা যাবে তারা কি আসলেই বিজ্ঞানমনস্ক নাকি বিজ্ঞানের লেবাস ধরেছে মাত্র। মনোযোগ দিয়ে পড়তে থাকুন সব কিছু আপনার চোখের সামনে নিয়ে আসবো। আপনার শুধু দরকার হিম্মতওয়ালা সৎ চিন্তাশীল মগজ।

এই যে মুমিন পিয়ার রিভিউ থেকে প্রমাণ দেন নাইলে মানবো না কিন্তুঃ

বাংলার নাস্তিকদেরকে প্রায় বলতে শোনা যায় পিয়ার রিভিউ থেকে রিসার্চ পেপার দেখান নাইলে বিশ্বাস করি না। মানে এমন একটা ভাব মারবে যে পিয়ার রিভিউ বিজ্ঞানের মানদণ্ড। কিন্তু সেই নাস্তিকদেরকেই আবার পিয়ার রিভিউ থেকে কোনো রিসার্চ পেপার দেখালে বলে এসব সেই বিজ্ঞানের একান্ত অভিমত। নাস্তিকদের থেকে আসলে যৌক্তিক কিছু আশা করা বৃথা। ওরা আসলে যুক্তিই ডিজার্ভ করে না। বিজ্ঞান তো দূর কি বাত। নাস্তিকদের সাথে বিজ্ঞানের চরম দ্বন্দ্ব রয়েছে কিন্তু অনেকেই গভীরভাবে খেয়াল করে না। পিয়ার রিভিউ কখনো সঠিক হবার নিশ্চয়তা দেয় না। মাঝারি ও নিম্নমানের জার্নালে প্রকাশিত গবেষণা বঙ্গীয় বিজ্ঞান পূজারী ব্যতীত অন্যান্য কট্টর পিয়ার রিভিউ রক্ষকরা প্রত্যাখ্যান করে না এবং উপরন্তু, ভুল তথ্য প্রকাশ করে নি, এমন কোন জার্নাল নেই (৯০)। ভুল শুধরাতেও অনেক বছর লেগেছে, এমন ঘটনা কম না(৯১)। সোক্স বলেন, 'যখন কোন লেখকের একটি কাগজে মনগড়া তথ্য পাওয়া যায়, তখন বিজ্ঞানীরা সেই লেখকের সমস্ত প্রকাশনা খুব কমই পরীক্ষা করেন, তাই বৈজ্ঞানিক পত্র কল্পনার চেয়ে বেশি দূষিত হতে পারে। 'সোক্স এবং রেনি নথিভুক্ত করেছেন যে, ভুয়া কাগজটি প্রায়শই কার্যকরভাবে বৈজ্ঞানিক মহল থেকে মুছে ফেলা হয় না, কারণ নতুন গবেষণাপত্রের লেখকরা প্রত্যাহারকৃত গবেষণা উদ্ধৃত করে চলে(৯২)।


২০০৮ সালে ফিন্যান্সিয়াল টাইমস জার্নালে প্রকাশিত একটি পেপারের মতে, 


The process is under assault from critics who say it is ineffective at filtering out poor research, while it perpetuates predictable work at the expense of more imaginative thinking.


প্রক্রিয়াটি সমালোচকরা আক্রমণ করছে এই বলে যে, এটি দুর্বল গবেষণাকে ছাঁটাই করার কাজে নিষ্ক্রিয়, বরং এটি কাল্পনিক চিন্তাভাবনা ব্যয় করে অনুমানযোগ্য কাজকে স্থায়িত্ব দান করে(৯৩)। ২০১৫ সালে সাইন্স ম্যাগাজিনে ২৫০ জন সহরচয়িতা মনোবিজ্ঞানের বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক তথ্যের পুনঃউৎপাদনযোগ্যতা নিরূপনের চেষ্টা করেন (৯৪)। কারণ, একই শর্তসাপেক্ষে একই ফলাফল প্রপাওয়া যাবে- এটাই বিজ্ঞানের অন্যতম ভিত্তি। দেখা যায় যে, ১০০ টি পূর্ব প্রকাশিত গবেষণার মাত্র ৩৯ টি পুনরায় প্রতিপাদন করা গেছে। মানে, বাকি ৬১% গবেষণার উপাত্ত ভুয়া। ফার্মাকোলজির প্রফেসর David Colquhoun স্পষ্ট স্বীকার করেছেন, মিলিয়ন মিলিয়ন পেপার প্রকাশ করার কারনে পিয়ার রিভিউ সিস্টেম আর ভাল কাজ করছে না। রিভিউ করার মত জনবল নেই। তাই অনেক মান হীন গবেষণাও প্রকাশিত হচ্ছে। David Colquhoun বলেন,


“The blame for this sad situation lies with the people who have imposed a publish-or-perish culture, namely research funders and senior people in universities. To have “written” 800 papers is regarded as something to boast about rather than being rather shameful. University PR departments encourage exaggerated claims, and hard-pressed authors go along with them.”


এই দুঃখজনক পরিস্থিতির জন্য ‘প্রকাশ বা নাশ সংস্কৃতি’ সৃষ্টিকারীরা দায়ী, যথা- গবেষণা তহবিলকারী এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলির প্রবীণ ব্যক্তিরা। ৮০০ টি কাগজ “লিখে রাখা” লজ্জাজনক হওয়ার চেয়ে গর্ব করার মতো কিছু হিসাবে বিবেচিত হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ বিভাগগুলি অতিরঞ্জিত দাবিগুলিকে উত্সাহ দেয় এবং কঠোর চাপের মুখে লেখকরা তাদের সঙ্গ দেন (৯৫)। আবার ৩৬ টি সম্ভাব্য নোবেল বিজয়ী আবিষ্কারের তালিকা করেছেন, যা মানসম্পন্ন হওয়া সত্বেও কতিপয় বিজ্ঞানী মহল ও সম্পাদকরা বিরোধিতা করার কারনে প্রকাশিত হয় নি (৯৬)। নোবেল বিজয়ীদের আত্ম-জীবনী নোবেল প্রাইজের ওয়েবে গিয়ে পড়লেই দেখবেন, অনেকেই অভিযোগ করেছেন যে, তাদের গবেষণা প্রত্যাখ্যাত হয়েছিল।


পিয়ার রিভিউ সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানতে পড়ুন (৯৭)। নাস্তিকরা বিজ্ঞানকে বলৎকার করে যাচ্ছে। তাই আমরা যারা বিজ্ঞান সচেতন আমাদেরকেই বিজ্ঞানকে দূষিত হওয়া থেকে নিরাপদ করতে হবে। আমাদেরকে বিশুদ্ধ বিজ্ঞান চর্চায় আগ্রহী হয়ে উঠতে হবে। বিজ্ঞানের বিশুদ্ধ চর্চা মানুষ শিখে গেলে নাস্তিক মুক্তমনাদের মতো মূর্খতাকে সহজেই বর্জন করা সম্ভব হবে। বিজ্ঞান পূজারিদের কাছে বিজ্ঞানের ক্ষতি গুলো আপনি তেমন একটা শুনতে পাবেন না। অথচ এটা সত্যি কথা বিজ্ঞানের অনেক ক্ষতি রয়েছে। বিজ্ঞান মানুষকে দিয়েছে বেগ,কিন্তু কেড়ে নিয়েছে আবেগ। বিজ্ঞান মানুষকে বেশি কৃত্রিম করে তুলছে।বর্তমান শতাব্দীতে সংঘটিত ২টি মহাযুদ্ধের ভয়াবহ ধ্বংসলীলা বিজ্ঞানের দানবীয় শক্তিই তুলে ধরে যা মানুষের মনে সৃষ্টি করে আতঙ্ক। এটম বোমা,বোমারু ট্যাঙ্ক ইত্যাদি এর উদাহরণ। তাই তো স্টিফেন হকিং বলেছিলেন “আধুনিক প্রযুক্তিই পৃথিবী ধ্বংস করবে"। কারণ বর্তমানে সব বয়সের মানুষই বিজ্ঞানের নেতিবাচক দিকের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে।বিজ্ঞান সবচেয়ে সেরা সৃষ্টি মানুষের বিকল্প তৈরী করেছে। যা বহু মানুষকে বেকার করে তুলছে। এতে সমাজে বাড়ছে অপরাধপ্রবণতা ও আত্মহত্যার মত অপ্রীতিকর ঘটনা।


বিজ্ঞান নিয়ে যে কথাগুলো আপনাকে কেউ বলবে না!

এই বিষয় জনপ্রিয় লেখক ডাঃ শামসুল আরেফিন ভাইয়ের লেখা আছে। আমি সেই চমৎকার লেখাটি হুবহু আপনাদের সামনে তুলে ধরছি। বুঝে বুঝে পড়ুন। পশ্চিমা বিজ্ঞান দাঁড়িয়ে আছে এনলাইটেনমেন্টের দর্শনের উপর, যেমনটা বিজ্ঞানী Rupert Sheldrake তাঁর Science Set Free 10 Paths To New Discovery বইয়ে বলেন:


...কিন্তু যে চিন্তাধারা আজকের বিজ্ঞানকে পরিচালিত করছে তা স্রেফ বিশ্বাস, যার শেকড় গেঁথে আছে ঊনবিংশ শতকের ভাবতত্ত্বের (এনলাইটেনমেন্ট) উপর।


ঠিক সে কাজও করবে তেমনই। বর্তমান পশ্চিমা বিজ্ঞানের কাজই হল পশ্চিমা লিবারেল দর্শন ও নিত্যনতুন ভোগবাদী ধারণাগুলোকে সত্য বলে প্রতিষ্ঠিত করা। নারীবাদ, সমকামিতা— এগুলোর পায়ের নিচে মাটি এনে দেয়া। রিসার্চের নামে, জরিপের নামে ঘুরিয়ে পেঁচিয়ে এগুলোকে দুনিয়ার সামনে অকাট্য হিসেবে উপস্থাপন করা। মোদ্দাকথা, বিজ্ঞান এখন পুঁজিবাদ-ভোগবাদ-বস্তুবাদী পশ্চিমা সভ্যতার একটা হাতিয়ার, একটা পুতুল (৯৮)। MIT-এর প্রোফেসর পদার্থবিদ Evelyn Fox Keller বলেন: মেইনস্ট্রীম বিজ্ঞানের ভাষা হচ্ছে আধুনিক ইউরোপীয় ও উত্তর আমেরিকান সমাজের প্রভাব বিস্তারের আদর্শ থেকে উৎসারিত। যা সৃষ্টিই হয়েছে তাদের মানসগঠনের ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যবাদী চরিত্র থেকে। অর্থাৎ বিজ্ঞানের হাতিয়ারটি বর্তমানে পশ্চিমা সাদা সভ্যতা-সংস্কৃতির ভাষায়ই কথা বলে। অর্থাৎ এখানে আপনি একটা হোয়াইট সুপ্রিমেসির গন্ধও পাবেন। আজকের পপ-সায়েন্স লেখকরা এবং বিজ্ঞানবাদী গ্রুপগুলো মূলত এই White Supremacy থেকে জন্মানো কলোনিয়ালিজমেরই দালাল বই কিছু নয়। বিজ্ঞানের ছদ্মাবরণে তারা নব্য-উপনিবেশবাদের প্রোমোটার, যাতে ৩য় বিশ্ব চিরটাকাল উপনিবেশই থেকে যায়। 


অবনত মস্তকে আমরা ইউরোপ-আমেরিকার ঈশ্বরত্ব যাতে মেনে নিই, তাদের আদর্শকে তাদের চিন্তাকে 'আধুনিকতা ধর্ম' হিসেবে মেনে নিই, সেটাই এই লিবারেল মিশনারী ও বিজ্ঞান-মিশনারীদের কাজ। জেনে কিংবা না জেনে তারা ১ম বিশ্বের উপনিবেশবাদী এজেন্ডাকে বাস্তবায়ন করছে। উপনিবেশকে উপনিবেশ করে রাখার জন্য নেটিভদের আইডিওলজি খাওয়ানোর জন্য ব্যবহার হচ্ছে বিজ্ঞানের মোড়ক। আর নেটিভরা ভাবছে, বিজ্ঞান তো ধ্রুবক-সদাসত্য, অতএব পশ্চিমা মূল্যবোধগুলোও সদাসত্য, প্রশ্নাতীত। অথচ পশ্চিমের এই বিজ্ঞান অবজেক্টিভ না, অপ্রভাবিত না।


মার্কিন বিজ্ঞান-দার্শনিক Helen Longino তাঁর Science as Social Knowledge গ্রন্থে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন, বিজ্ঞান কীভাবে প্রভাবিত হয়। তাঁর যুক্তি হল, বিজ্ঞানের 'ভিতরের মূল্যবোধ' প্রভাবিত হয় 'বাইরের মূল্যবোধ' দ্বারা। একটু খুলে বলি। বিজ্ঞানের ভিতরের কিছু স্ট্যান্ডার্ড আছে, যেমন: প্রকৃতিবিজ্ঞানের কাজ যদি হয় প্রকৃতিকে ব্যাখ্যা করা, তাহলে কোন ব্যাখ্যাকে 'ভালো ব্যাখ্যা' বলা হবে। কথার কথা, Truth-accuracy-simplicity-predictability-breadth— এই শর্তগুলো পুরা হলে সেটা ‘গুড সায়েন্স’। এটাকে তিনি বলছেন বিজ্ঞানের ভিতরগত গাঠনিক মূল্যবোধ (constitutive values)। কিন্তু এই শর্তগুলো পুরা হয়েছে বলা হবে কিনা, সেটা আবার নির্ভর করে পারিপার্শ্বিক মূল্যবোধের (contextual values) উপর। পশ্চিমের কাছে যেটা Truth, যেটা এক্যুরেট, যেটা ভালো ব্যাখ্যা, সেটাই গুড সায়েন্স। অর্থাৎ ভিতরের মাপকাঠিগুলো প্রভাবিত হচ্ছে বাইরের (পশ্চিমা সমাজের) বুঝ দ্বারা। হেলেন বলেন (৯৯),


বৈজ্ঞানিক গবেষণার নির্দিষ্ট লক্ষ্য থাকে, ডেটা থেকে কী বুঝবো, আর কী বুঝবো না তা নির্দিষ্ট থাকে। এগুলো মিলে যাবার উপর নির্ভর করে গবেষণাটির সফলতা এবং সফলতার মাপার শর্ত। এবং মানব কর্মকাণ্ড হিসেবে বিজ্ঞানও সামাজিকভাবেও নির্দিষ্ট কিছু প্রক্রিয়ায় গড়ে ওঠে, যা ঠিক করে দেয় গবেষণাটির লক্ষ্য ও সাফল্যের শর্ত। আর শেষমেশ, ইতিহাস-সমাজ-রাজনীতির প্রেক্ষাপটে তৈরি হয় বিজ্ঞান। আর এদের সাথে বিজ্ঞানের লেনদেন সবসময়ই চলমান। 


অর্থাৎ বিজ্ঞান চাইলেও নৈর্ব্যক্তিক (objective) হতে পারে না, নিরপেক্ষ (value-free) হতে পারে না। এই সীমাবদ্ধতাটুকু মেনে নিলে বিজ্ঞানের উপরই স্ট্রেস কমে। এ নিয়ে পশ্চিমা একাডেমিকদের বিতর্ক ৩ ধারায় চলমান (১০০)।


একদল বলেন, ঠিক আছে বিজ্ঞান প্রভাবিত হয়, তবে যতখানি প্রভাবিত হবে, সেটা ততই ‘পচা-বিজ্ঞান’। আরেকদল বলছেন, বিজ্ঞানের পদ্ধতিটাই সামাজিক, সুতরাং সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি দ্বারা চালিত ও সমাজের স্বার্থ দ্বারা তাড়িত। তৃতীয় দল বলেন, বিজ্ঞান মূল্যবোধ দ্বারা পরিচালিত, ফলে অনিবার্যভাবে তা বিজ্ঞানী ও তাদের সমাজের প্রতিফলন।


পশ্চিমা গবেষকেরা বিজ্ঞানের থিওরি এবং দর্শনের এই পারস্পরিকতা নিয়ে কাজ করছেন। যেমন,

ডারউইনিয়ান বিবর্তনতত্ত্ব এবং ১৯ শতকের পুঁজিবাদের মাঝে সম্পর্ক, ১৯ শতকের মগজ পরিমাপ (craniometry) এবং বর্ণবাদের দ্বারা উপনিবেশের জাস্টিফিকেশান। গবেষকগোষ্ঠী বা অর্থদাতাগোষ্ঠীর স্বার্থ এবং রিসার্চের অন্তর্নিহিত সম্পর্ক পলিসি তৈরিতে রিসার্চের ভূমিকা, ইত্যাদি। বিশেষত, সরকার ও কর্পোরেট অর্থদাতা গোষ্ঠীর স্বার্থ দ্বারা পক্ষপাতদুষ্ট হয়ে পড়া তো খুবই স্বাভাবিক (১০১)।


বিশেষ করে আমেরিকার psychology academia-র scientific dishonesty তো পুরো একাডেমিয়াতে মশহুর। হস্তমৈথুন, সমকাম, নারীবাদের অধিকাংশ গবেষণা সাইকোলজিস্টরা করেছে।

সাইকোলজিস্টদের এসব ‘এসি রুমে বসা’ থিওরির সাথে ডাক্তারদের (যারা ফিল্ডে কাজ করে) বহু বিষয়ে ইখতেলাফ রয়েছে। অনেক আর্টিকেল পাবেন যেখানে পরস্পর পরস্পরকে ধুয়ে দিচ্ছে। আমেরিকার সাইকিয়াট্রিস্টদের করা DSM-5 ব্রিটিশ সাইকিয়াট্রিস্টরা বয়কট করেছিল এই অভিযোগে যে, তারা কর্পোরেট ফার্মা দ্বারা প্রভাবিত হয়ে 'অসুখ নয়'এমন জিনিসকে অসুখ প্রমাণ করেছে, যাতে ওষুধের বিক্রি বাড়ে (১০২)। চিন্তা করেন?


শুধু কি তাই। গবেষণায় প্রাপ্ত ডেটা থেকে কী সিদ্ধান্তে আসা হবে, সে ব্যাপারেও বিজ্ঞান পুরোপুরি স্বাধীন না। বিখ্যাত আধুনিক দার্শনিক W.O. Quine তাঁর বিখ্যাত ‘two dogmas of empiricism’-এ বলেন: 


... observations themselves are partly shaped by theory [theory-laden].


অর্থাৎ, প্রাপ্ত ডেটা যা-ই আসুক, তাকে টেনেটুনে প্রচলিত ডোমিনেন্ট থিওরির অধীনে ব্যাখ্যা করার প্রবণতা অবচেতনেই কাজ করে বিজ্ঞানীদের। সবাই তো আর পাগল না, ক্যারিয়ার হারানোর চেয়ে স্রোতে গা ভাসানোই সেইফ। তাহলে বুঝলেন তো, যে সর্ষের ভিতরে-বাইরে খালি ভূত আর ভূত, সেটা দিয়ে ভূত তাড়ানো বুদ্ধিমানের কাজ হবে না। পশ্চিমা বিজ্ঞান পশ্চিমা আদর্শ দ্বারা প্রভাবিত, সুতরাং পশ্চিমা বিজ্ঞানকে প্রতিটি জাতি তার নিজের আদর্শ দ্বারা যাচাই না করে গ্রহণ করাটাই বোকামি ও বদ্ধমনের পরিচয়। পশ্চিমা বিজ্ঞানকে পরম কষ্টিপাথর ধরে নেবার সুযোগ নেই।


তাহলে কি আমরা বিজ্ঞান চর্চা করবো না? অবশ্যই চর্চা করবো। কিন্তু সততার সাথে সত্যকে মেনে নিয়েই বিজ্ঞানকে চর্চা করতে হবে। মূর্খ নাস্তিকগোষ্ঠীদের মতো বিজ্ঞানকে পূজা করে নয়। বিজ্ঞান জ্ঞান অর্জনের অনেক ভালো একটি মাধ্যম। আমি যে লিখতেছি, আমার লেখা গুলো যে আপনারা পড়তে পারতেছেন এটা বিজ্ঞানের কল্যাণে সহজ হয়েছে। তাই আমাদের উচিত হবে বিজ্ঞানের ভালো দিক গুলো আমরা গ্রহণ করে নিব এবং মন্দ দিক গুলো সম্পর্কে সচেতন করবো। নাস্তিকদের মতো আমরা বিজ্ঞানমনস্কতার লেবাস ধরবো না। আমরা মুক্তচিন্তার নাম দিয়ে মিথ্যাচার করবো না। আমরা নাস্তিকান্ধ অবশ্যই হবো না। আমাদের সবার এই সৎ সাহস থাকা উচিত যে নিজের বিরুদ্ধে গেলেও সত্যিটাই বিশ্বাস করবো।


নারী পুরুষ সমান কথাটি বৈজ্ঞানিক সত্য?

নারীবাদী ও নাস্তিক্যধর্মের অনুসারীরা বিশ্বাস করে থাকে নারী ও পুরুষ সব ক্ষেত্রেই সমান। এদের মধ্যে বিন্দুমাত্র পার্থক্য নেই। কিন্তু বৈজ্ঞানিকভাবে এই কথাটি বৈজ্ঞানিক ভুল।


উপরের বাস্তব সত্য কথা গুলোতে যদি কারো এলারজি থাকে তাহলে বিজ্ঞানের দৃষ্টিতে আমাকে বলতে হচ্ছে নারী পুরুষ কখনো সমান নয়। যারা বলেন নারী পুরুষ সমান তারা আসলে অবৈজ্ঞানিক কথা বলে বৈজ্ঞানিক ভুল কথা বলে থাকেন। বিজ্ঞানের দৃষ্টিতে বলতে গেলে বলতে থাকতে হয় নারীদের উচ্চতা পুরুষের চেয়ে গড়ে ৯% ছোটো। নারীদের মস্তিস্কের আয়তন পুরুষের তুলনায় ১১% কম। হৃৎপিণ্ড ১৫% কম। লিভার ১২% কম। কিডনি দুটো ১৬% কম। ফুসফুস দুটো ২০% কম। রেফারেন্সটি যেখানটি থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে,


মস্তিস্কের হিসাবটার রেফারেন্সঃ Results from a 1994 study published in Der Pathology- and based on more than 8000 autopsies / বাকি গুলো এখান থেকে, In 2001, French researcher Grandmaison and co- authors published a paper in Forensic science International analyzing organ Weights from 684 autopsies performed on whites between 1987 and 1991. ডঃ শামসুল আরেফিন লিখিত ডাবল স্ট্যান্ডার্ড ২.0, বই থেকে উক্ত রেফারেন্সটি নেয়া হয়েছে। মুক্তমনা নারীবাদীদের অন্ধবিশ্বাস ও কুসংস্কার গুলোকে চিহ্নিত করে সমাধান দেয়া হয়েছে। বইটি খুবই উপকারী।


নারী পুরুষ কখনো সমান নয়। নারীর দ্বারা যেই কাজ হয় সেটা পুরুষের দ্বারা হয় না আবার পুরুষের দ্বারা যেই কাজ হয় সেটি নারীর দ্বারা হয় না। সুতরাং দুইজনেই দুইজনের স্থানে সমান বলা গেলেও দুইজনে হুবহু কখনো সমান নয়। তাই ইসলাম যেটা করেছে পুরুষকে নারীর অভিভাবক বানিয়ে কঠিন কাজ গুলো পুরুষের কাঁধে চাপিয়ে দিয়ে নারীর জন্য সহজ ও সুবিধা করে দিয়েছে।


লিবারাল ফেমিনিজমের একটা মূল কনসেপ্ট হচ্ছে-ইকুয়ালিটি, নারী ও পুরুষকে সর্বক্ষেত্রে সমানভাবে দেখা এবং সমান অধিকার দেয়া। কনসেপ্টটা প্রথমে শুনতে বেশ ভালো লাগলেও একটু চিন্তা করলেই কিছু বড় সমস্যা বের হয়ে আসে। প্রথমত, নারী এবং পুরুষ সমান না, নারী এবং পুরুষের মধ্যে বায়োলজিকাল অনেক পার্থক্য আছে। নারী-পুরুষ উভয়েরই ক্ষেত্র অনুসারে বায়োলজিকাল অ্যাডভানটেজ আছে, এখানে নারী বা পুরুষ কাউকেই মানুষ হিসেবে ছোট করা হচ্ছে না, স্রেফ সায়েন্টিফিক ফ্যাক্টের ভিত্তিতে পার্থক্য বলা হচ্ছে।


হরমোনাল পার্থক্যের কারণে গড়ে পুরুষের শারীরিক ক্ষমতা নারীর চেয়ে বেশি, এইজন্যই এথলেটদের মধ্যে পুরুষ এবং নারী আলাদা করা হয় যাতে পুরুষরা এক্সট্রা অ্যাডভানটেজ না পায় (১০৩)।


Glasgow Caledonian University-এর Pamela Andrews এবং Teesside University-এর Mark A Chen এর গবেষণায় ৪৭৮ জন নারী ও পুরুষ দৌড়বিদের উপর গবেষণা করা হলো পুরুষের টোটাল এবং যৌথ মানসিক শক্তি, আত্মবিশ্বাস ও কাজের প্রতি পজিটিভ দৃষ্টিভঙ্গি নারীর চেয়ে বেশি।পরিস্থিতি মোকাবেলার ধরণও তাদের ভিন্ন পুরুষ পরিস্থিতির মোকাবেলা করেছে আরও বেশি করে কাজে লেগে থেকে (task oriented coping) কিন্তু বেশিরভাগ নারীরা কাজ থেকে দূরে থেকে বা একেবারে ছেড়ে দিয়ে (disengagement and resignation coping) পরিস্থিতির মোকাবেলা করেছে বা উত্তোরণের চেষ্টা করেছে (১০৪)। Nature-এর গবেষণায় ৮০,৯২৮ জন পার্টিসিপেন্ট নিয়ে Progressive Raven's Matrices ব্যাবহার করে রিসার্চ করা হয়। সেখানে দেখা যায়, নারীদের গড় আইকিউ পুরুষদের চেয়ে ৪.৬ পয়েন্ট কম (১০৫)।


পোস্ট মনোপজ বাদে নারীদের মনে রাখার ক্ষমতা সাধারণ ক্ষেত্রে পুরুষদের চেয়ে বেশি (১০৬)। স্ট্রেস বাড়লে টেস্টোস্টেরন হরমোনের কারণে পুরুষের বেপরোয়া বা রিস্কি সিদ্ধান্ত নেয়ার প্রবণতা নারীদের চেয়ে বেশি (১০৭)। পুরুষের নিজের যৌন ইচ্ছার উপর নিয়ন্ত্রণ নারীর চেয়ে কম (১০৮)। গড়ে পুরুষের চেয়ে নারীদের করুণা-মমত্ববোধের পরিমাণ বেশি। অক্সিটোসিনের কারণে নারীদের স্নেহের আলাদা বৈশিষ্ট্য থাকে (১০৯)।


“প্রথম আলো” পত্রিকা ১১ আগস্ট ২০১৭, তারিখে “নারী-পুরুষের সমতার সমাজ” শিরোনামে খবরে বলা হয়েছে (১১০) ,

চলতি বছরের উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফলে দেখা গেছে, ছেলেদের তুলনায় মেয়েরা ভালো করেছে। মেয়েদের গড় পাসের হার ৭০.৪৩ শতাংশ। আর ছেলেদের পাসের হার ৬৮.৬১ শতাংশ। চলতি বছরের এসএসসি পরীক্ষায়ও ছেলেদের তুলনায় মেয়েরা ভালো ফল করেছে। এবার পরীক্ষায় ১০ শিক্ষা বোর্ডে গড়ে পাসের হার ৮০ দশমিক ৩৫ শতাংশ। এর মধ্যে ছাত্র ৭৯ দশমিক ৯৩ শতাংশ এবং ছাত্রী ৮০ দশমিক ৭৮ জন পাস করেছে। শুধু এই বছরই নয়, কয়েক বছর ধরেই দেখা যাচ্ছে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় মেয়েরা ছেলেদের চেয়ে ভালো ফল করেছে। নারী-পুরুষের সমতার মানে হচ্ছে জীবনের সর্বক্ষেত্রে নারী-পুরুষের সমান অংশগ্রহণ থাকবে, সমান সুযোগ-সুবিধা থাকবে এবং সমান অধিকার ভোগ করবে। কিন্তু আমাদের দেশের নারীরা কি পুরুষের সমান অধিকার ভোগ করতে পারছে? সবখানেই পুরুষের আধিপত্য। কী ঘরে, কী বাইরে আমাদের দেশের নারীরা নানা বৈষম্যের শিকার হচ্ছে। সংসারে তো বটেই বাইরেও সারা দিন হাড়ভাঙা পরিশ্রম করেও ন্যায্য মজুরি থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন নারী শ্রমিকেরা। তাঁরা কখনো পুরুষের সমান মজুরি পান না।

 

মেয়েরা যদি ছেলেদের থেকে ফলাফল বেশি ভালো করে তাহলেও নারী-পুরুষ সমান হয় কিভাবে? ধরুন আপনার কোম্পানিতে নারী ও পুরুষ চাকরি করে একজন পুরুষ যেই কঠিন কঠিন কাজ করতে পারবে নারী সেই কঠিন কঠিন ভারি ভারি কাজ সেভাবে করতে পারবে না তাহলে দুইজনকে একই বেতন দেয়া কিভাবে যৌক্তিক হয়? বিজ্ঞান যেখানে বলছে নারী পুরুষ সমান না সেখানে নারীবাদীরা কেন উল্টো কথা বলে যাচ্ছে?


একটা জিনিস রিয়েলাইজ করেছেন, দুনিয়ার টপ হ্যান্ডসাম পুরুষ ঋতিৃক রোশন ডিভোর্সি। চতুর্থ হ্যান্ডসাম বয় সালমান খান বিয়েই করে নাই। আর দ্বিতীয় হ্যান্ডসাম রবার্ট প্যাটিসন একবার প্রেমে ধোঁকা খাওয়ার পর আর কোনো রিলেশনে জড়িয়ে নিজেকে স্থায়ী করতে পারেনি। আমাদের দেশে সবচেয়ে হ্যান্ডসাম জনপ্রিয় নায়ক তাহসান ও ডিভোর্সি, মিথিলা তাকে ছেড়ে চলে গেছেন। চলচিত্রে সালমান শাহ ছিল ভীষণ জনপ্রিয়। তার আত্নহত্যার পর চারজন মেয়ে আত্নহত্যা করেছিল কিন্তু সেই সালমান শাহও অসুখী ছিল। তার স্ত্রীই নাকি হত্যার সাথে জড়িত। অপূর্ব, নিরব এদের কেউই বেশিদিন সংসার করতে পারেনি। সবাই ব্যাক্তি জীবনে সফল ছিলেন। তারপর আসি, টপ ধনীদেরকে নিয়ে বিল গেইসট ও ডিভোর্সি, ইলন মাস্ক বিয়ে করেছেন তিনখানা। আর বাকী ধনীদের তালিকা নাই বললাম। এই যে টাকা আর সৌন্দর্য দিয়ে কোনো মানুষ সুখী হতে পারে না এটা বড় প্রমাণ। সুখ হলো সাধারণ ভাবে সাধারন করেই ধরা দেয়। আপনার দামী গাড়ী কিংবা টাকা আপনার চেহারার চাকচিক্য আপনার কোনো কাজেই আসবে না যদি আপনি একজন নারীর মন বুঝতে না পারেন অথবা একজন নারীর সত্যিকারের ভালোবাসা না পান।

 

অথচ আমাদের পাড়ার রিক্সাওয়ালা জমির ভাই চারজন বাচ্চা নিয়ে খোপারী ঘরে দিন শেষে সুখী একটা মুখ নিয়ে পান চিবোয়। পানের পিক ফালাইতে ফালাইতে দিনের শেষে কষ্ট নিবারন হয়। ভাবী জন্য আবার পান বানাইতে পানের বাটা নিয়ে আসেন। ভাবীকে একদিন বলতে শুনলাম, “উনি আসলে এক সাথে ভাত খামু, রাইতে উনারা ছাড়া খাইতে বসি না।” ভালোবাসায় অদ্ভূদ একটা শক্তি আছে, এটা না কেনা যায় টাকা দিয়ে না পারা যায় জোড় করে। নারী ও পুরুষ সমান নয় এই সত্যিটা আমাদের সবাইকে মেনে নিতে হবে। পুরুষ নারীর মতো নয় আর নারী পুরুষের মতো নয়। উভয়েই উভয়ের স্থানে যোগ্যতা সম্পন্ন। একে অপরের সহায়ক, নট প্রতিপক্ষ। নারীর দ্বারা যেই কাজ হয় সেটা পুরুষকে দিয়ে হয় না। পুরুষ দিয়ে যা কাজ হয় সেটা নারীকে দিয়ে হয় না। এই বৈজ্ঞানিক সত্যিটা কেন জানি মেনেই নিতে পারে না বিজ্ঞানমনস্ক লেবাসধারী মুক্তমনারা। আবার এরাই নাকি অন্যদেরকে বিজ্ঞান শেখাতে আসে। লজ্জাও করে না।


আমার দেহ আমার সিদ্ধান্তঃ

নাস্তিকরা মানুষকে বিজ্ঞানমনস্ক হওয়ার কথা বলে। প্রতিটি মানুষই তার জীবন বিজ্ঞান ভিত্তিক উপায়ে সাজিয়ে তুলুক, প্রতিটি মুহুর্তেই যেন থাকে বিজ্ঞান। কিন্তু আপনি কখনো গভীর ভাবে ভেবে দেখেছেন নাস্তিকরা নিজেদের জীবনে কি আসলেই বিজ্ঞানমনস্ক? নাকি মুক্তচিন্তায় যে বিজ্ঞান বিরোধীতা করে লাইফ লিড করার বৈধতাও আছে? অবশ্যই এই কথাটি সত্য যে কোনো নাস্তিক চাইলে নিজের মুক্তচিন্তায় বিজ্ঞানের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে পারে এমনকি বিজ্ঞান বিরুদ্ধে কাজটি সে নিজের জন্য ভালো হিসেবেও বিশ্বাস করার ফ্রিডম রাখে। মুক্তচিন্তায় নাস্তিকরা বিজ্ঞানবিরোধী কাজ করতে পারবে। এটা মুক্তচিন্তায় বৈধ। এই লুকানো সত্যিটা ফুটিয়ে তোলা হয়েছে এই লেখাটিতে।



বিজ্ঞানমনস্করা কেন বিজ্ঞানবিরোধী সাহিত্য, কবিতার চর্চা করবে? তারা স্বীকার করে নিক যে বিজ্ঞানবিরোধী, অবৈজ্ঞানিক সাহিত্য কবিতা মুক্তচিন্তায় চর্চা করা জায়েজ। নাস্তিক্যধর্মে কোনো নাস্তিক চাইলে অবৈজ্ঞানিক কাজ করতে পারে। নারীবাদীরা যেমন বলে দেহ আমার সিদ্ধান্ত আমার অর্থাৎ যে কার সাথে রাত কাটাবে এটা যেমন সে সিদ্ধান্ত নিবে ঠিক সেভাবে কোনো নাস্তিক বিজ্ঞান মানবে কি মানবে না এটা সেই সিদ্ধান্ত নেবে। অন্য নাস্তিকরা এখানে বাধা দিতে পারবে না। নাস্তিক্যধর্মের দৃষ্টিতে বিজ্ঞানের বিরুদ্ধে কাজ করাও বৈধ। যে সব নাস্তিকরা নিজেদেরকে বিজ্ঞানমনস্ক দাবি করে তারা তাদের মুক্তচিন্তায় দাবি করে কিন্তু অন্য কোনো মুক্তমনা অথবা প্রগতিশীলরা যদি অবৈজ্ঞানিক কাজ করে তাহলে তারা সেটা ভালো মনে করেই করতে পারবে কারণ চিন্তার মুক্তিতে যা ইচ্ছে সেটাই করা যাবে।

নাস্তিক মুক্তমনারা যদি আসলেই বিজ্ঞানমনস্ক হতো তাহলে যারা বিজ্ঞান বোঝেন উনাদেরকে অবশ্যই সম্মান করতো। কিন্তু আসলেই কি নাস্তিকরা এটা করে? উদাহরণ হিসেবে বলা যায় মাহমুদুল হাসান সোহাগ যিনি একাধিক বছর নাস্তিক্যবাদের চর্চা করেছেন। কিন্তু নিজের পড়াশোনার মাত্রা উনি যতই বৃদ্ধি করেছেন ততই ধিরে ধিরে নাস্তিক্যবাদের প্রতি বিশ্বাস, ইসলামবিরোধী বিশ্বাস উনার ছুটে যাচ্ছিল। যখনই উনি নিজের ভুল বুঝতে পেরে নাস্তিকতার শেকল গলা থেকে ফেলে দিয়েছেন তখনই নাস্তিক মুক্তমনারা উনাকে নিয়ে যা ইচ্ছে তাই বলে যাচ্ছে। উনি নাকি বিজ্ঞান বোঝেন না, উনি নাকি কখনো নাস্তিক ছিলেন না, উনি নাকি নিজের বিজনেস চাংগা করবার জন্য নাটক সাজিয়েছেন ইত্যাদি। একজন নাস্তিক মুক্তমনাকেও দেখলাম না এক্স নাস্তিক সোহাগ ভাইয়ের পক্ষে কথা বলতে। নাস্তিকরা নাকি মানুষকে ভালবাসে অথচ কেউ নাস্তিকতা ত্যাগ করে, ইসলামবিরোধী বিশ্বাস ত্যাগ করে মুসলিম হয়ে গেলে নাস্তিকরা তাকে ভালোবাসতে পারে না। আবার নাস্তিকরাই প্রশ্ন করে ইসলাম ত্যাগের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড কেন? নাস্তিকরা কেমন ভণ্ড হয় এখনো টের পান নাই?

 

শয়তানধর্ম এবং নাস্তিক্যধর্ম

দার্শনিক শয়তানবাদ বা লাভীয় শয়তানবাদ (ইংরেজি: LaVeyan Satanism লাভেয়ান স্যাটানিজম) একটি ধর্মীয় মতবাদ যা নাস্তিক শয়তানবাদ (Atheistic Satanism) বা আধুনিকপন্থী শয়তানবাদ হিসেবেও পরিচিত এবং যা কখনও শিথিলভাবে শ্রেণীভুক্ত স্যাটানিজম বা শয়তানবাদের একটি শাখা। এই মতবাদ ১৯৬৬ সালে অ্যান্টন লাভী (ইংরেজি: Anton LaVey) প্রতিষ্ঠা করেন এবং এটির মূল তত্ত্বসমূহ ১৯৬৯ সালে দ্য স্যাটানিক বাইবেলে (ইংরেজি: The Satanic Bible) গ্রন্থস্থ হয়েছে। ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যবাদ, এপিকিউরীয়বাদ, নাস্তিক‍্যবাদ, অহংবাদ ও আত্ম-দেবত্ববাদ (self-deification) বা "ইবলিশ" তত্ত্বের উপর ভিত্তিশীল এ শয়তানবাদের মূল বিশ্বাস ও দর্শনগুলো বামবাদ, সামাজিক কমরেডবাদ এবং লেক্স তালিওনিস বা "চোখের পরিবর্তে চোখ" ("eye for an eye"; যে আরেকজনকে যেভাবে ক্ষতি করেছে তাকে সেভাবেই শাস্তিদান) নীতির একটি দৃষ্টিভঙ্গি প্রচার করেছে।


“কালের কণ্ঠ” পত্রিকায় ৮ মে, ২০১৯ তারিখে “শয়তানের মন্দির’কে ধর্ম হিসেবে স্বীকৃতি দিলো যুক্তরাষ্ট্র!” শিরোনামে খবরে বলা আছে (১১১),


যুক্তরাষ্ট্রে স্বীকৃতি পেলো একটি নতুন ধর্ম। ‘শয়তানের মন্দির’  খ্রিস্টানদের গির্জার মতোই কর-ছাড় পেলো। যুক্তরাষ্ট্রের আভ্যন্তরীণ রাজস্ব পরিষেবা বিভাগ এই কর ছাড় দিয়েছে ‘শয়তানের মন্দির’কে। ফলে ‘শয়তানের মন্দির’ এখন একটি বৈধ ধর্মের স্বীকৃতি পেলো। ওই মন্দিরের সদস্যরা গত প্রায় ২০ বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্রে তাদের অস্তিত্বের জানান দিয়ে চলেছেন। তারা তাদের রাজনৈতিক তৎপরতার মাধ্যমে গণমাধ্যমে সংবাদের শিরোনাম হয়েছে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের সরকারের স্বীকৃতির পর এবং সম্প্রতি তাদেরকে নিয়ে তৈরি করা "Hail Satan?" নামের একটি ডকুমেন্টারি ফিল্মের মধ্যদিয়ে তারা নতুন করে আলোচনার কেন্দ্রে আসলো। শয়তানের মন্দিরের সদরদপ্তর একটি সুদর্শন, পুরাতন, নিউইংল্যান্ড ধাঁচের বাড়ি। এটি মৃতদেহ আন্তেষ্টিক্রিয়ার আয়োজনকারী একটি বাড়িও বটে। ম্যাসাচুসেটস অঙ্গরাজ্যের সালেম এর কেন্দ্রে অবস্থিত এই শয়তানের মন্দিরের সদরদপ্তর। শয়তানের মন্দিরের সহপ্রতিষ্ঠাতা এবং মুখপাত্র লুসিয়ান গ্রিভস বলেন, ‘এটি আমাদের প্রাথমিক অনুষ্ঠানের কক্ষ। আমরা, শয়তানের মন্দিরের সদস্যরা সপ্তাহে একবার এখানে জড়ো হই। ’মন্দিরটিতে রয়েছে শয়তানের ধর্ম সম্পর্কিত একটি আর্ট গ্যালারি। আছে একটি লাইব্রেরি, যাতে রয়েছে শয়তানি সাহিত্য এবং ইতিহাস সম্পর্কিত বই।


মন্দিরটির প্রধান আকর্ষণ একটি ৮ ফুট ৬ ইঞ্চি ব্রোঞ্জ ভাস্কর্য। এর মাথাটি অনেকটা ছাগলের মতো। পিঠে আছে ইগল পাখির মতো ডানা। এর নাম ‘ব্যাফোমেট’। লুসিয়ান গ্রিভসকে প্রশ্ন করা হয়েছিলো শয়তানের মন্দিরের সদস্যরা কি এই মুর্তিটিকে পবিত্র মনে করে? উত্তরে তিনি বলেন, ‘আধ্যাত্মিক’ বা ‘পবিত্র’ এই শব্দগুলো আমাদের জন্য প্রযোজ্য নয়। আমরা কোনো অতিপ্রাকৃতিক বিশ্বাস লালন করি না। আমরা মূলত একটি নিরীশ্বরবাদী ধর্ম। আমাদের কোনো ঈশ্বর নেই। আমরা কোনো কিছুর অতিপ্রাকৃতিক ব্যাখ্যা দিই না বা সেসবকে গ্রহণও করি না। গ্রিভস ব্যাখ্যা করে বলেন, আমরা পুরাণ ও সাহিত্যে যে শয়তানের কথা বলা হয় সেটাকে স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে একটি বিদ্রোহী প্রতীক বা চরিত্র হিসেবে বিবেচনা করি। আর এ কারণেই আমরা শয়তানের উপাসনা করি না। ‘বরং এই উপাসনার ধারণাটাই, যারা নিজেদেরকে শয়তানবাদের সদস্য মনে করে, তাদের জন্য অপমানজনক একটা বিষয়। কারণ উপাসনা মানেই হচ্ছে  অন্যের দাসত্ব। আর আমাদের শয়তানবাদের মূল কথাই হলো ব্যাক্তিগত সার্বভৌমত্ব, স্বাধীনতা এবং ইচ্ছার স্বাধীনতা।


"Hail Satan?" একটি ডকুমেন্টারি ফিল্মে শয়তানের মন্দির সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে বিশ্ববাসীর সামনে। ডকুমেন্টারি ফিল্মটির নির্মাতা পেনি লেইন বলেন, ‘শয়তানের মন্দিরের সদস্যরা যেসব গণতামাশা, সামাজিক প্রতিবাদ ও আইনী  তৎপরতা চালিয়ে আসছে তার বেশিরভাগই ছিলো গির্জা ও রাষ্ট্রকে তথা ধর্ম ও রাষ্ট্রকে আলাদা রাখা বিষয়ক। প্রথমে বিষয়টিকে আমার একধরনের তামাশা মনে হলেও পরে আমি এর মধ্যে আরো গভীর কিছু দেখতে পাই। যা সত্যিই ধর্ম সম্পর্কিত। ’‘আমি আগে কখনো বুঝতে পারতামনা লোকে কেন ধর্মপালন করে। এবং তারা এ থেকে কী পায়। কিন্তু এই প্রকল্পটি করতে গিয়ে আমি বুঝতে পারি আসলে ধর্ম কোনো সমস্যা নয়। বরং ধর্ম হলো ,মানুষের একটি সহজাত প্রবণতা। যা মানুষ কোনো না কোনোভাবে ধারণ করে। আমাদের এখনো মুল্যবোধ ও পৌরাণিক গল্পকে কেন্দ্র করে একত্রিত হওয়ার ও সম্প্রদায় হিসেবে সংঘবদ্ধ হওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। আমি মনে করি শয়তানের মন্দির আমাকে একটি নতুন পথের সন্ধান দিলো। ’


কি পাঠক কিছু বুঝেছেন? নাকি আমাকেই বিস্তারিত বলতে হবে? আচ্ছা আরেকটা খবর পড়ুন তো। দেখুন এইবার কিছু ধরতে পারেন কিনা। “BBC NEWS বাংলা” পত্রিকায় ২৩ অগাস্ট ২০১৯ তারিখে “হেইল সেটান?: মুক্ত ধর্মচর্চার অধিকার চায় শয়তানের পূজারীরা” শিরোনামে খবরে বলা হয়েছে (১১২),


—'হেল স্যাটান?' - এই নামে একটি চলচ্চিত্র তৈরি করেছেন মার্কিন চলচ্চিত্র নির্মাতা পেনি লেন। তিনি এই চলচ্চিত্রে দেখানোর চেষ্টা করেছেন যে, রাজনৈতিক প্রভাব সৃষ্টির মাধ্যমে খ্রিস্ট ধর্ম মার্কিনীদের জীবনে কথিত যে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছে, তা কমিয়ে আনতে শয়তানের মন্দির কিভাবে কাজ করছে।—যদিও শয়তানের আরাধনা হিসেবে বিভিন্ন নাটক এবং সিনেমায় ব্ল্যাক ম্যাস বা কালো পোশাক পরে শয়তানের পূজার রীতিকে অশুভ হিসেবেই তুলে ধরা হয়, শয়তানের এই উপাসকরা অবশ্য স্বীকার করেছেন যে, তারা কেউই শয়তানকে আধ্যাত্মিক কোন সত্ত্বা হিসেবে বিশ্বাস করেন না। বরং হিব্রু ভাষায় স্যাটান বা শয়তান বলতে যে অর্থ বোঝানো হয় অর্থাৎ "বিরোধী" বা "বিপক্ষের শক্তি" হিসেবেই মনে করেন তারা। লেন বলেন, "তারা যে তাদের ধর্মীয় বিশ্বাসটাকে একটা বিমূর্ত কিংবা কাল্পনিক চরিত্রকে কেন্দ্র করে গড়ে তুলেছে, এই বিষয়টিকে আমার কাছে অতটা জটিল বা কঠিন মনে হয় না।"---"গত ১০ থেকে ১৫ বছর আগেও এক ধরণের বিশ্বাস ছিলো যে, শয়তানের পূজারীরা সংঘবদ্ধ, গুপ্ত এবং তারা গোপনে ষড়যন্ত্র করে বেড়ায়, তারা শয়তানের দোহাই দিয়ে বিভিন্ন অনৈতিক কাজকর্ম যেমন মানুষ হত্যা, পশু নির্যাতন এবং শিশু ধর্ষণ করে থাকে," লেন ব্যাখ্যা করে বলেন।—লেন বলেন, "আমার চলচ্চিত্রে যারা অভিনয় করেছে তাদের নিরাপত্তা নিয়েও চিন্তিত আমি। কারণ আমার ছবিতে অভিনয় করে বাইরের বিশ্বে নিজেদের প্রতি হুমকি ডেকে এনেছে তারা। এটা আমি ভালো করেই জানি এবং এ নিয়ে আমি চিন্তিত।" "ধর্ম বিশ্বাসীদের নিয়ে আমি সারা জীবনই খুব দ্বিধা-দ্বন্দ্বে ভুগতাম। আমি জানি যে এটা শুনতে খুব খারাপ শোনায়, তবে আমি বলতে চাই। আমার মনে হয়েছে যে, ধর্ম হচ্ছে মানুষের এক ধরণের মানসিক অসুস্থতা যার চিকিৎসা জরুরী। আমি এটা বুঝিনি। আমি আসলে জন্মেছি নাস্তিক হয়ে," লেন বলেন।


নাস্তিক শয়তানবাদ (অ্যাথেইস্টিক স্যাটানিজম, যা দার্শনিক শয়তানবাদ বা আধুনিকপন্থী শয়তানবাদ বলেও পরিচিত) একটি ধর্ম যা লাভেয়ান স্যাটানিজম নামে বেশি পরিচিত। ১৯৬৬ সালে অ্যান্টন লাভেই এই ধর্ম প্রচার শুরু করে। এর মূল তত্ত্বগুলো আত্মকেন্দ্রিকতা, স্বভোগ ও চোখের পরিবর্তে চোখ (Eye for an Eye) নৈতিকতার ওপর প্রতিষ্ঠিত। লাভীয় শয়তানবাদি দলগুলো নাস্তিকতা ও অজ্ঞেয়বাদে বিশ্বাসী এবং তারা শয়তানকে মানুষের সহজাত সুপ্ত প্রবৃত্তির প্রতীক মনে করে। এরা সংখ্যালঘু একটি মতবাদের লোক যারা কোন ধরনের ধর্মবিশ্বাসের সাথে জড়িত নয় এবং যার অনুসারীরা নিজ ইচ্ছাপূরণে সচেষ্ট, বন্ধুদের প্রতি সদয় ও শত্রুদের অনিষ্টে বিশ্বাসী হয়ে থাকে। তাদের বিশ্বাসগুলো স্যাটানিক বাইবেলে লিপিবদ্ধ যা চার্চ অব স্যাটান দেখাশোনা করে। নাস্তিকতার যে কত হরেক রকমের চেহারা আছে সেটা স্বয়ং নাস্তিকরাও জানে না। জানবেই বা কিভাবে পড়াশোনা তো ঠিক মতো করে না। সারাদিন আল্লাহ ও নবীকে গাইলাইতে থাকলে জ্ঞান অর্জনের সময় কিভাবে পাবে?


নারীর নগ্নতাময় পোশাক বিজ্ঞানবিরোধী?

নারীদের পোশাক নিয়ে রয়েছে বেশ বিতর্ক। কিন্তু কোন পোশাক বিজ্ঞানভিত্তিক এটা নিয়ে অনেকেই আলোচনা করেন না। মানুষ স্বভাবতই বিপরীত লিঙ্গের প্রতি আকর্ষিত। এই চরম সত্য কথাটি অকপটে স্বীকার করায় এক বৃদ্ধ সম্মানিত হুজুরকে বাংলার নাস্তিক সমাজ রীতিমত হাসাহাসির বস্তুতে পরিণত করেছিল। এমনকি সেই হুজুরকে সম্মান করার বদলে তাকে অনেক অপমান করেছিল মানবতাবাদী নামধারী মুক্তমনারা। সেই হুজুরকে অসম্মান করতে নাম দিয়েছিল তেতুল হুজুর। এর কারণ হচ্ছে, কোন এককালে শফী হুজুর মেয়েদেরকে ‘তেঁতুল’ এর সাথে তুলনা করেছিলেন। তেঁতুল দেখলেই যেমন মানুষের জিভে জল চলে আসে, তেমনি মেয়ে মানুষ দেখলে পুরুষদের মধ্যেও এরকম একটা ফিলিংস তৈরি হয়। শফী হুজুরের কথাটা যতোটা না স্ট্রেইট ফরোয়ার্ড, তারচেয়ে বেশি মেটাফোরিক্যাল।


বাংলা নাস্তিক সম্প্রদায়, যাদের বেশিরভাগই ইন্টার লেভেলের  যারা আবার কথায় কথায় আমাদের ‘বিজ্ঞান’ শেখাতে প্রস্তুত হয়ে থাকে, তারা সবসময় একটি টার্ম খুব ইউজ করে। সেটি হলো- পিয়ার রিভিউড জার্নাল। বিজ্ঞানের কোনো বিষয় কোনো পিয়ার রিভিউ জার্নালে প্রকাশ হওয়া মানেই বাংলা নাস্তিকদের কাছে তা ইশ্বরের বাণীর মতো। যখন কেউ তাদের কাছে এসে কিছু জিজ্ঞেস করে, তারা বলে, ‘পিয়ার রিভিউ জার্নাল থেকে প্রমাণ দেন।’ আমেরিকার University Of Chicago তে একটি রিসার্চ চলে। এই রিসার্চ প্রকাশিত হয় বৈজ্ঞানিক জার্নাল ‘Evolution & Human Behavior’ এ। টপিক ছিলো- ‘Behavioral and hormonal responses of men to brief interactions with women’ এই স্ট্যাডি চালিয়েছিলেন James R. Roney, Stephen V. Mahler, Dario Maestripieri। এই স্ট্যাডিতে পুরুষ এবং মহিলাদের উপর একটি সমীক্ষা চালানো হয়। সরেজমিনে এই সমীক্ষা চালাতে গিয়ে উঠে এসেছে দারুন কিছু তথ্য। স্ট্যাডি বলছে, পুরুষরা (সমীক্ষাটা চলেছিলো বেসিক্যালি ১৮-৩৬ বৎসর বয়সীদের মধ্যে) যখন মহিলাদের নিকটে থাকে, সংস্পর্শে আসে, তখন পুরুষদের মধ্যে Hormonal Response টা তীব্র হয়ে উঠে। তারা ব্যাপারটার কনক্লুশান দিতে গিয়ে লিখেছে,


‘This study represents one of the first attempts to assess hormonal and behavioral reactions of men to brief interactions with women. Results were generally consistent with the possibility of a mating response in human males. Men in the female condition showed a significant increase in testosterone over baseline levels and were rated as having expressed more polite interest and display behaviors than were men in the male condition. In addition, those men who were rated as having directed more courtship-like behaviors toward their female conversation partners also showed more positive changes in T levels and rated the female confederates as more attractive romantic partners. No such relationships were significant in the male condition.’


পুরুষদের মহিলাদের প্রতি যে testosterone ( testosterone হচ্ছে পুরুষদের সেক্স হরমোন) আপিল আছে, তা স্ট্যাডি কন্ডিশনে খুবই ফলপ্রসূ এবং পজিটিভ হিসেবে দেখা গেছে। এই স্ট্যাডি বা রিসার্চ যারা করেছে তারা কিন্তু সবাই বিবর্তনবাদী। তারা দেখিয়েছে, মহিলাদের প্রতি পুরুষদের একটা আপিল থাকে। আপিলটা hormonal. আলাদাভাবে testosterone বা পুরুষদের সেক্স হরমোনাল। শুধু তাই নয়, ব্রিটিশ পত্রিকা ডেইলি মেইল বিজ্ঞানীদের রেফারেন্স দিয়ে শিরোনাম করেছে (১১৩) ‘Pretty women make a man’s mouth water’ অর্থাৎ, সুন্দরী মহিলা পুরুষের মুখে লালা ঝরায়। সুতরাং, তাদের গবেষণা মতে , নারীরা পুরুষদের কাছে খুবই লোভনীয়। যে সব নাস্তিক পুরুষরা বলে পুরুষের চাহিদা কি এতো ঠুনকো যে নারী দেখলে শিশ্ন দাড়িয়ে যায়- এই সব পুরুষ নাস্তিকের কাছে প্রশ্ন থেকে যাবে আপনি আসলেই পুরুষ কিনা জলদি ডাক্তার দেখান। কারণ ন্যাচারালভাবেই নারীর প্রতি পুরুষের আকর্ষণ থাকবে এটাই বাস্তব সত্যি। যারা চায় নারীরা ছোট ছোট পোশাক পরে রাস্তায় চলাফেরা করুক তারা যে মনে মনে নারী দেখে মজা নিতে চায় না সেটার গ্যারান্টি কি?


নাস্তিক্যধর্মের নারীরা নিজেদের ইসলামবিরোধী বিশ্বাস চর্চা করতে ছোট ছোট পোশাক পরিধান করে থাকেন। অনেকেই আছেন টাইট জিন্স পরিধান করেন। কিন্তু টাইট জিন্স পরিধান করলে অনেক বিপদের সম্ভাবনা রয়েছে তা হয়তো সেই নারীরা জানেন না। আপনার স্বাস্থ্যের উপর আপনার পছন্দ করা টাইট জিন্স প্যান্ট পরিধানকারীর স্বাস্থ্যের জন্য যথেষ্ট হুমকি সৃষ্টি করে। স্নায়ু ক্ষতি থেকে ভেরিকোজ শিরা পর্যন্ত, ট্রেন্ডি জিন্স আপনার ধারণার চেয়ে বেশি ক্ষতি করে চলেছে (১১৪)। “প্রথম আলো” পত্রিকা ২০ মার্চ ২০১৭ তারিখে “আঁটসাঁট জিনস পরলে যে ক্ষতি” শিরোনামে খবরে বলা হয় (১১৫),


যুক্তরাজ্যের ওই গবেষকেদের মতে, ৭৩ শতাংশ নারীর ক্ষেত্রে ব্যাকপেইন বা পিঠে ব্যথার জন্য তাঁদের ওয়ার্ডরোব দায়ী। সেখানে থাকা পোশাক পিঠ ও ঘাড়ে ব্যথা তৈরি করে বলে ২৮ শতাংশ নারীর মত। কিন্তু ৩৩ শতাংশ নারী এ বিষয় সম্পর্কে একেবারেই জানেন না। এর মধ্যে ২০ শতাংশ নারী হাইহিল জুতা পরেন বলে তাঁরা পা ও পিঠে ব্যথা অনুভব করেন। ১০ শতাংশ নারী ভারী গয়না পরেন, এতে গলার ওপর চাপ পড়ে। গবেষকেরা বলছেন, আঁটসাঁট জিনস, একধারে ঝোলানো ভারী ব্যাগ, ফোলানো হুডযুক্ত কোট, হাইহিল ও ব্যাকলেস জুতা বেশি সমস্যা তৈরি করে। বিসিএর গবেষক টিম হাচফুল বলেন, কিছু জনপ্রিয় পোশাকপরিচ্ছদ আছে, যা আড়ালেই শরীরের ওপর প্রভাব ফেলে। অতিরিক্ত ভারী হাতব্যাগ যেমন সমস্যার জন্য দায়ী, তেমনি অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে আঁটসাঁট জিনসও সমস্যা তৈরি করতে পারে।  হাচফুল বলেন, ‘ভেবে আশ্চর্য লাগে, আমার কাছে আসা রোগীদের অনেকেই জানেন না তাঁদের পিঠে ব্যথা ও চালচলনে অসুবিধার জন্য পোশাকপরিচ্ছদ দায়ী হতে পারে। এমনকি অনেকেই জেনেশুনে ব্যথা সহ্য করে এ ধরনের পোশাক পরেন। অবশ্য এর আগেও বিষয়টি নিয়ে গবেষণা হয়েছে। 


যুক্তরাষ্ট্রের গ্রেটার বাল্টিমোর মেডিকেল সেন্টারের চিকিৎসকেরা সতর্ক করে বলেছিলেন, প্রচলিত পোশাকি ধারার সঙ্গে তাল মিলাতে এই জিনস পরা হলেও এসবে স্বাস্থ্যগত ঝুঁকিও রয়েছে যথেষ্ট। এ ধরনের জিনস মারাত্মক স্নায়বিক ঝুঁকির কারণ হতে পারে। হালের এই পোশাক (জিনস) পরে আগে অনেকেই ‘মেরালজিয়া প্যারেসথেটিকা’ রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। আঁটসাঁট কাপড় শরীরে অস্বস্তি তৈরি করে। এ ধরনের কাপড় শরীরকে অবশও করে দেয়। তা ছাড়া এ ধরনের পোশাক ঊরুতে ব্যথার অন্যতম কারণ। ২০০৩ সালে ‘কানাডিয়ান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন জার্নাল’ নামের একটি সাময়িকীতে আঁটসাঁট জিনসের কুফল সম্পর্কে লিখেছিলেন চিকিৎসক মালভিন্দার এস পারমার। পারমার উল্লেখ করেন, সে সময়ে আঁটসাঁট জিনস পরার ফলে অস্বস্তিতে ভোগা অনেক নারী রোগী তাঁর কাছে এসেছিলেন। তাঁদের সবাই ছিলেন স্থূল প্রকৃতির। ঊরুতে অস্বস্তি ও জ্বালা অনুভব করছিলেন তাঁরা। তাঁর পরামর্শ অনুযায়ী ঢিলেঢালা পোশাক পরার পর তাঁদের অনেকেই পরবর্তী ছয় সপ্তাহের মধ্যে সুস্থ হয়েছিলেন। প্রসঙ্গত, আঁটসাঁট প্যান্ট এর আগেও আলোচনায় এসেছে। এ ধরনের পোশাক ছেলেদের শুক্রাণু হ্রাস করতে পারে। চামড়ার সঙ্গে লেগে থাকা এসব পোশাক ক্ষতও তৈরি করতে পারে। তাই চিকিৎসকেরা এ ধরনের পোশাক পরতে মানা করেছেন


ইসলামিক পোশাক তথা ঢিলাঢালা পোশাক যে কেন গুরুত্বপূর্ণ এটা আলাদা করে বুঝিয়ে বলার দরকার নাই। বুদ্ধিমান মানুষরা নিজে থেকেই বুঝে নিতে পারবে। তাছাড়া যেসব নারীরা ছোট ছোট পোশাক পরিধান করাকে খুব উৎসাহিত করে তারা কি বিজ্ঞান বোঝে না? তারা কি পড়াশোনা করে না? তারা কি আসলেই মূর্খ? কারণ বৈজ্ঞানিক গবেষণা আমাদেরকে ভিন্ন কথা জানায়। কিভাবে? বৈজ্ঞানিক গবেষণা গুলো জেনে নেবার আগে একটি প্রশ্ন খুবই গুরুত্বপূর্ণ নারীবাদী বিজ্ঞানমনস্করা কি আসলেই এই রিসার্চ গুলো মেনে নেবে?


অনেক দিন আগের কথা। এক গবেষণায় দেখা যায় অন্যান্য বছরের তুলনায় ১৯৯০ সালের দিকে মার্কিন আমেরিকায় ধর্ষণের কেস সবচেয়ে বেশি ঘটেছে এর সংখ্যা প্রায় ১ লক্ষ! প্রচারিত হতে থাকে বিভিন্ন মাত্রা গবেষণা। ধর্ষণ  পোশাক এবং নারী সংক্রান্ত গবেষণার পরিমাণ তৎকালীন সময়ে বেশ বৃদ্ধি পায়। 

বিখ্যাত Journal of American College Health জার্নালে প্রকাশিত গবেষণাপত্র অনুযায়ী (১১৬) ,


নারীদের যৌনতার শিকার হওয়ার সাথে সম্পর্কিত যে পরিবর্তনগুলি পাওয়া গেছে তা হল (ক) বিভিন্ন আজীবন যৌন সঙ্গীর সংখ্যা, (খ) উত্তেজক পোশাক এবং (গ) অ্যালকোহল ব্যবহার। 


বিখ্যাত Sex Roles জার্নালে প্রকাশিত আরেকটি গবেষণাপত্র অনুযায়ী (১১৭), 


এই সমীক্ষার অংশে দেখা গেছে যে একজন মহিলা যেভাবে পোষাক পছন্দ করেন তা কখনও কখনও তার চরিত্র সম্পর্কে একটি স্টেটমেন্ট হিসাবে নেওয়া হয় যার মধ্যে পুরুষের দুর্বলতা, আকাঙ্ক্ষা এবং/অথবা সেক্স করার ইচ্ছা থাকে এবং পুরুষদের জন্য এটি উস্কানিমূলক যার  ফলস্বরূপ এটি ধর্ষণের সম্ভাবনাকে প্রভাবিত করে এমনকি ডেট রেপ কেও প্রভাবিত করে। 


প্রখ্যাত Journal of Applied Social Psychology জার্নালে প্রকাশিত আরেকটি গবেষণাপত্র অনুযায়ী তারা একটি পরীক্ষা করেন (১১৮)।


যেখানে গবেষণাগারে  বিষয়বস্তু হিসেবে সেখানে দুজন শিক্ষার্থীর দুটো ছবি রাখা হয় এবং পর্যবেক্ষণ এর ভিত্তিতে দেখা যায় নারী হিসেবে পুরুষের তুলনায় নারীকে অধিক যৌনউদ্দীপক এবং সিডিউসিং হিসেবে রেট করা হয়েছে। উপরন্তু  প্রেডিকশন অনুযায়ী, যেসকল মেয়েরা উন্মুক্ত পোশাক পরিধান করেছিল তারা যারা মোটামুটি শালীন পোশাক পরিধান করেছিল তাদের তুলনায় বেশি যৌনআবেদনমূলক এবং সিডিউসিং হিসেবে রেট করা হয়েছে। গবেষণার সারমর্মের শেষের দিকে গবেষকগণ উল্লেখ করেছেন, ❝গবেষণাটি অনুমান করে যে উত্তেজক পোষাক (প্রাথমিকভাবে স্বামী/স্ত্রী এবং/অথবা ডেট রেপ)  স্বামী-স্ত্রীর ধর্ষণের সম্ভাবনা বাড়িয়ে তুলতে পারে।


ইভোলিউশন অ্যান্ড হিউম্যান বিহেভিয়ার জার্নালে প্রকাশিত (১১৯), 


একটি গবেষণায় ২০ বছর বয়সী বিষমকামী ছাত্ররা বিপরীত লিঙ্গের সাথে মিথস্ক্রিয়া করার উপায়গুলি পরীক্ষা করে। পুরুষরা যখন অন্য পুরুষদের সাথে ছোট ছোট কথা বলেন, তখন তাদের লালায় টেস্টোস্টেরনের মাত্রা অপরিবর্তিত থাকে। যখন তারা মহিলাদের সাথে যোগাযোগ করে, তখন ই তাদের লালায় টেস্টোস্টেরনের মাত্রা নাটকীয়ভাবে বেড়ে যায়। অধ্যয়নের সাথে জড়িত ছাত্রদের বয়স ২১-৩১এর মধ্যে এ পরীক্ষায় মোট, ৩৯ জন অংশগ্রহণ করেছিলেন। এছাড়াও অধ্যয়নের সাথে জড়িত ছিল পাঁচজন মহিলা, যাদের সকলেই পূর্বনির্বাচিত এবং অধ্যয়নের উদ্দেশ্য সম্পর্কে সচেতন ছিলেন। তাদের বয়স ১৯-২৩বছর। প্রতিটি কথোপকথনের আগে, পুরুষদের টেস্টোস্টেরনের নমুনার জন্য তাদের মুখ থেকে লালা সংগ্রহ করা হয়েছিলো।  মহিলাদের সাথে মাত্র পাঁচ মিনিটের কথা বলার মধ্যে, পুরুষদের টেস্টোস্টেরনের মাত্রা নাটকীয়ভাবে পরিবর্তিত হয়।তদুপরি, মহিলার দ্বারা পুরুষের আকর্ষণ যত বেশি অনুভূত হয়, গবেষকরা পুরুষদের লালায় টেসটোস্টেরন তত বেশি খুঁজে পান। সুতরাং মহিলা যদি পুরুষ কে আকর্ষণ করে সেক্ষেত্রে পুরুষ উত্তেজিত হবেই।



ছেলেরা পাবলিক প্লেসে সিগারেট খাচ্ছে, আমাকেও খেতে হবে। ছেলেরা জিন্সের প্যান্ট পরছে, আমাকেও পরতে হবে। ছেলেরা ফুটবল খেলছে, আমাকেও খেলতে হবে। পুরুষতন্ত্র খারাপ, কিন্তু পুরুষই হইলো আমার স্ট্যান্ডার্ড। নারীত্ব বর্জন করে পুরুষের মত হওয়াই আমার জীবনের মূল লক্ষ্য। পুরুষ যা যা করবে, কোনো রকম বাছ-বিবেচনা ছাড়াই আমারো তাই তাই করতে হইবে। আমারে পুরুষ হয়া উঠতে হবে, নারীত্ব হলো ইনফেরিয়র। পুরুষত্বই শ্রেষ্ঠত্ব, নারী মানেই ঘৃণ্য। কি হাস্যকর ব্যাপার। নারী পুরুষ সমান দাবি করে আবার পুরুষ থেকে নারী ভালো ফতোয়া দেয় এসব কৌতুক শুনতে শুনতে এখন আর হাঁসিও পায় না। নারীর পোষাক নিয়ে কথা বলা যাবে না’ এই বুলিটা সেকু-বামরা বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠা করতে চায়, আইনী রূপ দিতে চায়। এই ব্যাপারে তারা খুব এগ্রেসিভ খুব রেডিক্যাল! নারী অধিকারের নামে মূলত সেকু-বাম-ধর্মহীনরা তাদের ভোগের অধিকার চায়। পরকালে তাদের অবিশ্বাস। তাই এখানে থাকতে যত ভোগ বিলাস করা যায় সেটাই তাদের চাওয়া। আর ভোগ বিলাসের সবচেয়ে লোভনীয় হচ্ছে নারী। খোলামেলা পোষাকের যেসব নারী রাত-বিরাইতে পোলা নিয়া ঘুরে তাদেরকে ভোগ করা সহজ। এজন্য ভার্সিটির মেয়ে হলগুলো সারা রাত খোলার জন্যও তারা প্রায়ই আন্দোলন করে।


নারীর দেহ নিয়ে আধুনিক চামড়ার ব্যবসাঃ

নারী উত্ত্যক্তকরণ বা ইংরেজি পরিভাষায় ইভ টিজিং প্রকাশ্যে যৌন হয়রানি, পথেঘাটে উত্যক্ত করা বা পুরুষ দ্বারা নারীনিগ্রহ নির্দেশক একটি শব্দ। এটি এক ধরনের যৌন আগ্রাসন যার মধ্যে রয়েছে যৌন ইঙ্গিতবাহী মন্তব্য, প্রকাশ্যে অযাচিত স্পর্শ, শিস দেওয়া বা শরীরের সংবেদনশীল অংশে হস্তক্ষেপ। নারী উত্ত্যক্তকারীরা নানান সৃজনশীল কৌশলে মেয়েদের উত্ত্যক্ত করে থাকে। ফলে এ অপরাধ প্রমাণ করা কঠিন। এমনকি অনেক নারীবাদী একে "ছোটোখাটো ধর্ষণ" বলে আখ্যায়িত করেছেন। অথচ নারীদের দেহ দেখিয়ে, ছোট ছোট পোশাক পরিয়ে, নারীদের দিয়ে বিভিন্ন অঙ্গ ভঙ্গি করে নারীদের প্রশংসা করা অথবা কেউ যদি বিচারকদের মনকে খুশি করতে না পারে তাহলে অনুষ্ঠান থেকে বের করে দেয়া এগুলো কিভাবে নারীর জন্য সভ্য বা মার্জিত হতে পারে? নারীবাদীরা কি এই প্রশ্ন তুলেছে?


যেই নারীদের হাতাচলা বিচারকদের কাছে সুন্দর দেখায়, যার মুখের হাঁসি সুন্দর দেখায়, যার দেহ বেশি আকর্ষণীয় তাকে প্রথম হিসেবে গণ্য করা হয় আর বাকিদেরকে ধিরে ধিরে অনুষ্ঠান থেকে বিদায় করে দেয়া হয়। কিভাবে এটা যৌক্তিক? এই ধরণের অনুষ্ঠানই বা কেন যৌক্তিক? অথচ এসব নারীদেরকে ব্যাবহার করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে পুঁজিবাদীরা, সেই খবর কি রাখা আছে? আপনার মা বোন অথবা স্ত্রীকে যদি তারা নিজেদের সুবিধা অনুযায়ী ব্যাবহার করতে না পারে তাহলে তাদের কোটি কোটি টাকা লস হবে। এই চিন্তা কি কখনো করেছেন?


মনে করেন আজ থেকে পৃথিবীর সব নারী/মেয়েরা পর্দা করা শুরু করলো। তারা নিজের শরীর সম্পূর্ণ ঢেকে রাখা শুরু করলো। তাহলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি কার জানেন? তাহলে এ পৃথিবীতে সবচেয়ে বড় ধাক্কাটা খাবে এই পৃথিবীর বড় বড় ব্যাবসায়ীরা বা কোম্পানিগুলো। কিভাবে জানেন? ধরেন সবাই পর্দা করা শুরু করলো তাহলে কোম্পানিগুলো তাদের প্রডাক্টের এডের জন্য যৌন আবেদনময়ী দৃষ্টিনন্দন মডেল পাবেনা। আর এতে তাদের ইমপ্রেশন অনেক কমে যাবে। সেলের জন্য কষ্ট বাড়বে এতে কম্পানির প্রফিট কমতে থাকবে। কম্পানিগুলোর হিসাব বাদ দিয়ে শুধু পৃথিবী জুড়ে এড ইন্ড্রাস্ট্রির ভ্যালু কত জানেন? প্রায় ৫৯০.৩ বিলিয়ন ডলার যার অধিকাংশ টিকে আছে নগ্নতার উপর। যদি একটা অফিস/প্রতিষ্ঠানে দৃষ্টিনন্দন মেয়ে রিসিপশনে বসাইতে না পারে তাহলে সেখানে ক্লায়েন্টদের আনাগোনা কম হয়, সেল কমে যায়। এজন্য দেখবেন পৃথিবীর অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের রিসিপশনে একটা সুন্দরী রমনীকে বসিয়ে রাখা হয়। আপনার কি মনেহয় এটা কেবল নারীর কর্মসংস্থান? যদি এতোই কর্মসংস্থান করাতে চায় তবে শুধু রিসিপশনেই কেন সুন্দরী নারী বসে? যদি আজ সব মেয়ে পর্দা করা শুরু করে তবে এই পৃথিবীর ফ্যাশন ডিজাইন ইনডাস্ট্রিতে বিশাল ধাক্কা আসবে। 


আর এই ইন্ডাস্ট্রির পরিমার প্রায় ৩ ট্রিলিয়ন ডলার! ভাবতে পারে কত টাকা? যার অর্ধেকের বেশি দাড়িয়ে আছে নারীর পোশাকের স্বাধীনতার উপর। যদি আজ সব মেয়েরা পর্দা করে তবে পৃথিবীর পর্ণ ইনডাস্ট্রিতে ধ্বস নামবে। কারন তখন পর্ণ ভিডিও করার মতো মডেল পাওয়া যাবেনা। আর এই পর্ণ ইন্ডাস্ট্রির বাজার কতো জানেন? প্রায় ৯৭ বিলিয়ন ডলার! যদি আজ মেয়েরা পর্দা করা শুরু করে তবে ছবি বানানোর জন্য মডেল নাই, তখন মুভিতে দর্শক কমবে। এই পৃথিবীর মুভি ইন্ডাস্ট্রির পরিমান ১০১ বিলিয়ন ডলার! আজ যদি সব মেয়েরা পর্দা করা শুরু করে তবে পৃথিবীর অধিকাংশ দেহ ব্যাবসার সাথে সংশ্লিষ্ট আবাসিক হোটেল ব্যাবসায় ধ্বস নামবে। পৃথিবী জুড়ে হোটেল ইন্ড্রাস্ট্রির পরিমান ৫২৩ বিলিয়ন ডলার! যদি আজ মেয়েরা পর্দা করা শুরু করে তবে বিমান কম্পানিগুলো বিমান বালা পাবেনা যা তাদের কাষ্টমার পাবার একটা রেসিপি। এতে ব্যাবসার প্রফিট কমে আসবে। ২০১৯ এই এয়ারলাইন্স ইন্ড্রাস্ট্রির পরিমান ছিলো প্রায় ৮১৮ বিলিয়ন ডলার!


অর্থাৎ এই পৃথিবী জুড়ে নারী স্বাধীনতার নামে নগ্নতাকে বারবার উৎসাহ দেওয়ার মূল কারন হচ্ছে "পূঁজিবাদ" আর নারী স্বাধীনতার নামে অর্ধ নগ্ন পোশাকের জন্য গলা ফাটানোর পেছনে যারা রয়েছে তারা অধিকাংশই "পুঁজিবাদী"। কারন আপনি নিশ্চয়ই চাইবেননা আপনার কোটি কোটি টাকার বিজনেসে লস আসুক। আপনি বাংলাদেশের দিকে তাকান, ভারতের দিকে তাকান বা পৃথিবীর যেকোন দেশের দিকে তাকান, যারা নারীর পোশাকের স্বাধীনতার জন্য গলা ফাটাচ্ছে তারা সবাই পুঁজিবাদী বা এরসাথে সংশ্লিষ্ট।

এই পৃথিবীতে নারীর পোশাকের স্বাধীনতার কারন আসলে "টাকা কামানো"। নিজেদের প্রয়োজনে এরা শুধু কতিপয় নারীদের ব্যাবহার করছে। আর নারীর আবেদনময়ীতার পেছনে টিকে আছে ট্রিলিয়ন ট্রিলিয়ন ডলার এর ব্যাবসা। কিন্তু আফসোস এটা বুঝার মতো মস্তিস্ক অনেকের নাই। নারীর দেহ নিয়ে যে চামড়ার বিজনেস দারা দুনিয়াতে চলছে এর বিরুদ্ধে আপনি নারীবাদী ও নাস্তিক মুক্তমনাদেরকে কথা বলতে দেখতে পাবেন না।


বেশির ভাগ নাস্তিকদের মুখেই দাড়ি নেইঃ

দাড়ির উপকারীতা বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত । এমনকি যৌক্তিকভাবেও দাড়ি রাখার বিভিন্ন সুবিধা ও লাভ আছে। কিন্তু নাস্তিকরা দাড়িকে নিয়ে বিভিন্নভাবে হাঁসি ঠাট্টা করে থাকে। দাড়ি রাখা মুসলিমদেরকে নাস্তিকরা অনেক সময় ছাগলা দাড়িওয়ালা বলে কটূক্তি করে। অথচ এই মূর্খ নাস্তিক গুলো জানেই না আধুনিক বিজ্ঞান দাড়ি রাখা বিষয় কি কি কথা বলেছে। দাড়ি রাখা মধ্যযুগীয় বর্বরতার নিদর্শন এমন বিশ্বাস পোষণ করা নাস্তিকরা নিঃসন্দেহে বৈজ্ঞানিক ভুল বিশ্বাস পোষণ করেছে।


ইউনিভার্সিটি অফ সাউদার্ন কুইন্সল্যান্ডের গবেষকদের মতে, একটি ঘন, রুক্ষ দাড়িও এমন সুবিধা দেয় যা তাকে স্বাস্থ্যকর এবং সুদর্শন করে তোলে।  ২০১২ সালের গবেষণায়, গবেষকরা অস্ট্রেলিয়ান আউটব্যাকের কড়া রোদের নীচে একদল পুঁথি রেখেছিলেন, কিছু দাড়িওয়ালা এবং কিছু খালি মুখ। যখন তারা প্রতিটি বিষয় দ্বারা শোষিত বিকিরণের পরিমাণের তুলনা করেন, তখন তারা দেখতে পান যে দাড়ি ৯০ থেকে ৯৫ শতাংশ ক্ষতিকারক UV রশ্মিকে ম্যানেকুইনগুলির মুখ থেকে ব্লক করে। মানুষের দাড়ি-মালিকদের মধ্যে অন্তর্নির্মিত সুরক্ষার এই স্তরটি সফলভাবে বার্ধক্য প্রক্রিয়াকে ধীর করবে এবং একদিনে ত্বকের ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি কমিয়ে দেবে (১২০)।


দাড়ি শুধুমাত্রই বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমানিত নয় বরং গবেষণায় উন্মোচন করা হয়েছে যে গ্রিজলি দাড়িগুলিও একটি বড় স্বাস্থ্য সুবিধা দিয়ে থাকে। দাড়ি আপনাকে ২১ পর্যন্ত ইউপিএফ (আল্ট্রাভায়োলেট প্রোটেকশন ফ্যাক্টর) সহ ৯০-৯৫ শতাংশ ক্ষতিকারক UV রশ্মি থেকে রক্ষা করতে পারে, কুইন্সল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকদের একটি সমীক্ষা আগে প্রকাশ করেছে, এবং বিশেষজ্ঞরা দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্টের ফলাফলগুলিকে সমর্থন করেছেন। "যদিও দাড়ি কখনই সানস্ক্রিনের মতো সূর্যে নিরাপদ হবে না, তবে দাড়ি অবশ্যই UV রশ্মিকে ব্লক করার একটি কারণ," প্রধান লেখক অধ্যাপক প্যারিসি গবেষণায় তাই ব্যাখ্যা করেছেন। UV-এর সাথে কম এক্সপোজারের অর্থ এইও হতে পারে যে দাড়ি বার্ধক্য প্রক্রিয়াকে বিলম্বিত করে, সুরক্ষিত ত্বককে তারুণ্য রাখে এবং বলি মুক্ত রাখে। এছাড়াও, দাড়িওয়ালাদেরও ত্বকের ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা কম (১২১)।


আরও অনেক অনেক কল্যাণ রয়েছে দাড়ি রাখা নিয়ে। আপনারা বিস্তারিত জানতে চাইলে লিংকে (১২২),(১২৩),(১২৪),(১২৫),(১২৬),(১২৭) দেয়া লেখা গুলো পড়ে জানতে পারেন। আমরা মুসলিমরা দাড়ি রাখি এমনকি পাঁচ বার নামাজের আগে দাড়ি পানি দিয়ে ফ্রেশ করে রাখি। তাই দাড়িতে ময়লা জমা থাকে টাইপ নিন্মমানের কথা যাতে নাস্তিকরা বলে নিজেদেরকে মূর্খ প্রমাণ না করে। আমার লেখা থেকে এসব তথ্য জেনেও দেখবেন নাস্তিকরা দাড়ি রাখবে না। কারণ কি জানেন? কারণ হচ্ছে মুক্তচিন্তায় বিজ্ঞানবিরোধী কাজ করা জায়েজ আছে।


স্রস্টার অস্তিত্ব নিয়ে বৈজ্ঞানিক গবেষণাঃ

আধুনিক বিজ্ঞানে বেশ কিছু গবেষণা রয়েছে স্রষ্টার অস্তিত্বের ব্যাপারে। কিন্তু এই গবেষণা গুলোকে ধামাচাপা দিয়ে রাখতে চায় এক শ্রেণির লোকেরা। আরে এসব কি সত্যি নাকি, আরে এসব তো ফালতু, আরে তারা বিশ্বাস দ্বারা প্রভাবিত ইত্যাদি ভাবে এসব গবেষণা গুলোকে দূরে সরিয়ে রাখা হয়। কিন্তু যারা সত্যি সন্ধানী তারা ঠিকই সত্যিটা বুঝে ফেলতে পারবে। আসুন খুব মনোযোগ দিয়ে পাঠ করতে থাকি।


অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেভেলোপমেন্টাল সাইন্টিস্ট ড, জাস্টিন এল ব্যারেট শিশুদের উপর গবেষণা করেন। এ ব্যাপারে বেশ কিছু বইও লিখেছেন তিনি। বই গুলোর মধ্যে একটি হল “Born Believers” যেখানে তিনি স্পষ্ট ভাষায় উল্লেখ করেছেন (১২৮),


শিশুরা জন্মগতভাবে স্রস্টার অস্তিত্বে বিশ্বাসী, যাকে আমি বলি সহজাত ধর্ম


সন্ধান করলে পাওয়া যায় এমন একাধিক নাস্তিক বিজ্ঞানী রয়েছেন যারা গবেষণা করে সত্যিটাকে স্বীকার করে নেন। স্বাভাবিকভাবেই অন্ধবিশ্বাসী নাস্তিকরা এগুলো পছন্দ করতে চাইবে না। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের নাস্তিক মনোবিজ্ঞানী ড. অলিভেরা পেট্রোভিচ Peer Reviewed জার্নালে তার গবেষণার ফল প্রকাশ করেন উনি জানান (১২৯)


কিছু ধর্মীয় বিশ্বাস যে সার্বজনীন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে (যেমন কোন বিমূর্ত সত্তাকে বিশ্বজগতের স্রষ্টা হিসেবে মৌলিক বিশ্বাস), এর স্বপক্ষে শক্তিশালী প্রমাণ ধর্মগ্রন্থের বানীর চেয়ে বরং (বৈজ্ঞানিক) গবেষণা থেকেই বেশি বেরিয়ে আসছে বলে প্রতীয়মান হচ্ছে।


অনেক ধর্মহীন সেকুলার গবেষকদের গবেষণায় প্রতীয়মান হচ্ছে (১৩০), 


ধর্মবিশ্বাস প্রাথমিকভাবে ব্যক্তির ভেতর থেকেই উৎপত্তি হয়, যা মৌলিকভাবে মানব মনের এক অংশ।


প্রায় দুই মিলিয়ন পাউন্ড খরচে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের দুইজন গবেষকদের নেতৃত্বে পরিচালিত তিন বছরব্যাপী এক আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রকল্পে ৫৭ জন গবেষক ২০ টি দেশে ৪০ টি ভিন্ন ভিন্ন গবেষণা পরিচালনা করেন। তাদের গবেষণার উদ্দেশ্য ছিল স্রষ্টা ও পরকালের ধারণা কি পিতামাতা বা সমাজ দ্বারা চাপিয়ে দেয়ার ফল নাকি মানব প্রকৃতির মৌলিক অভিব্যক্তি তা খুঁজে বের করা। দীর্ঘ গবেষণার পর তারা সিদ্ধান্তে উপনীত হন (১৩১),


স্রস্টার পাশাপাশি মৃত্যু পরবর্তী জীবনে বিশ্বাসও মানুষের সহজাত প্রবণতার অন্তর্গত।


ড, জাস্টিন এল ব্যারেট BBC Radio 4 এ এক সাক্ষাৎকারে বলেন (১৩২),


বিগত ১০ বছর বা তার বেশি সময় ধরে আমরা যে অগণিত বৈজ্ঞানিক প্রমাণ পেয়েছি তা প্রমাণ করে, আমরা একদা যা ভেবেছিলাম তার চেয়েও বেশি কিছু ধারণা গড়ে উঠে শিশুদের মানসের প্রাকৃতিক বিকাশে। এর মধ্যে রয়েছে প্রকৃতিতে সুপরিকল্পিত ও উদ্দেশ্যপূর্ণ হিসেবে দেখা ও কোন না কোন বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন সত্ত্বাকে এই উদ্দেশ্যের পিছে ক্রিয়াশীল হিসেবে দেখার প্রবণতা। আপনি যদি কিছু সংখ্যক শিশুকে কোন দ্বীপে রেখে আসেন আর তারা নিজেরাই বেড়ে উঠে, আমি মনে করি তারা স্রষ্টায় বিশ্বাস করবে।


সুপরিচিত মহাকাশতত্ত্ববিদ ও তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানী নাস্তিক স্টিফেন হকিং এক সাক্ষাতকারে (ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞানের) অধ্যাপক গ্রেগরি বেনফোর্ডকে বলেন (১৩৩),


“(এই মহাবিশ্বে) অবাক করা সুশৃঙ্খলার ছাপ রয়েছে। মহাবিশ্ব সম্পর্কে আমরা যতই আবিষ্কার করি ততই খুঁজে পাই যে এটি যৌক্তিক নিয়মের দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে। কেউ চাইলে বলতেই পারে যে, এই সুশৃঙ্খলা স্রষ্টার কাজ। আইনস্টাইনও তাই ভেবেছিলেন।”


ভেবে দেখুন, একেবারে সহজ ব্যবহার করুন, কীভাবে এলােমেলাে, উদ্দেশ্যহীন, চেতনাহীন মৃত প্রক্রিয়ায় কেবল পদার্থের অণুসমূহ একে অন্যের সাথে সংঘর্ষের ফলে বুদ্ধিমত্তা প্রাণ, চেতনার উদ্ভব হতে পারে? এমনকি Peer Reviewed গবেষণাপত্রে নাস্তিক বিজ্ঞানী হুবার্ট ইয়ােকি (Hubert P. Yockey) গবেষণার দ্বারা প্রমাণ দেখিয়েছেন (১৩৪),


যে বিজ্ঞানী মহলে প্রাণের স্বতঃস্ফূর্ত উদ্ভাবনের প্রচলিত বিশ্বাস কেবলই অন্ধবিশ্বাস।


নােবেল বিজয়ী নাস্তিক বিজ্ঞানী জর্জ ওয়াল্ড বলেন (১৩৫) , 


“প্রাণের উৎপত্তি কীভাবে হল সে বিষয়ে কেবল দুটি সম্ভাবনা রয়েছে: কেউ তা সৃষ্টি করেছে অথবা স্বতঃস্ফূর্তভাবে এর উদ্ভব হয়েছে। তৃতীয় কোনো পথ নেই। স্বতঃস্ফূর্তভাবে উদ্ভব হওয়ার ধারণা একশ বছর আগেই ভুল প্রমাণিত হয়েছে, কিন্তু তা আমাদের কেবল অন্য সিদ্ধান্তের দিকে ধাবিত করছে আর তা হল ঐশ্বরিক সৃষ্টি। আমরা দর্শনগত (বস্তুবাদের) কারণে তা স্বীকার করতে পারি না; তাই আমরা অসম্ভবকে বিশ্বাস করব বলে বেছে নিই: তা এই যে, প্রাণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে হঠাৎ করে উদ্ভব হয়েছে।”


বঙ্গীয় জার্মান প্রবাসী নাস্তিকের এক অন্ধভক্তকে আমি এসব বৈজ্ঞানিক গবেষণা নিয়ে কথা বললে সে আমাকে বলে এসব কি আমার সামেন ঘটেছে না এসবে আমি কেন বিশ্বাস করবো? আমি তখন মুচকি হাসি নিয়ে ভেবেছিলাম বেচারা এককোষী ব্যাকটেরিয়া থেকে এলোমেলো হাজার হাজার কোটি কোটি প্রাণী নাকি হয়েছে এই কাল্পনিক কথায় ঠিকই এই প্রশ্ন করে না যে এসব তো আমার সামনে হয় নাই তাহলে কেন বিশ্বাস করবো কিন্তু নিজের বিশ্বাসের বিরুদ্ধেই যখন বিজ্ঞান যায় তখন এরা পল্টি মেরে দেয়। এই সহজ জিনিস যেই মস্তিস্ক বুঝার যোগ্যতা রাখে না তাদেরকে আসলে বৈজ্ঞানিক বিষয় গুলো বুঝিয়ে সময় নষ্ট ছাড়া আর কিছুই হয় না। ক্লাস ওয়ানে তিনবার ফেইল করা নাস্তিকটি যখন বুয়েটে গ্রাজুয়েশন শেষ করা ছেলেকে বলে সে বিজ্ঞান বুঝে না তখন হাঁসতে হাঁসতে পেট ব্যাথা হওয়া ছাড়া উপায় থাকে না।


পদার্থবিজ্ঞানের সুত্র গুলো আসলো কোথা থেকে? কেন এই সুত্র গুলো অস্তিত্বে আসতে হলো? সুত্র গুলোর উৎস কি? সুত্র গুলো নিয়ন্ত্রণ করেই কেন মহাবিশ্বকে হতে হলো? শুন্য যেখানে কিছুই নাই সেখান থেকে কিভাবে সব কিছু অস্তিত্ব আসলো? কেন কোনো কিছু নাই এর বদলে কিছু আছে? 


খাটি সংশয়বাদীরা এসব বিষয় একদম চুপ থাকবে। কারণ তারা এসব যৌক্তিক প্রশ্নের জবাব জানে না। কিন্তু ভণ্ড ধাপ্পাবাজ সংশয়বাদীরা একে তো বলে তারা এসব প্রশ্নের জবাব জানে না? “জানি না” দাবি করে সারাদিন আবার এটা প্রমাণ করতে চেষ্টা করে যে এগুলোকে স্রষ্টা সৃষ্টি করে নাই। ধরুন আপনি কোনো বিষয় কিছুই জানেন না/ আপনি এটা বলতেই পারেন আপনি জানেন না কিন্তু জানি না বলে আবার যদি সেই বিষয় এটা প্রমাণ করতে চেষ্টা করেন যে সেই বিষয় এটা ঠিক না, সেটা ঠিক না তাহলে কি এটা ভণ্ডামির চিত্র নয়? বাংলার মূর্খ নাস্তিক গুলো এই ভণ্ডামিটাই করে যাচ্ছে। তারা নিজেদেরকে সংশয়বাদী বলে দাবি করে আর অন্য দিকে প্রমাণ করতে চেষ্টা করে স্রষ্টা বলে কেউ নাই, ইসলাম ঠিক না ইত্যাদি। কথায় আছে না, “নাচতে না জানলে উঠান বাকা”। 

অজানা আরও কিছু বৈজ্ঞানিক রিসার্চঃ


গবেষণায় এমন অনেক নতুন নতুন বিষয় বেরিয়ে আসছে যা অনেকেই জানে না। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য একটি হচ্ছে “Strong Naturalness Theory” যা পূর্বের প্রভাবশালী “Anthropomorphism Theory” কে ছুঁড়ে ফেলেছে। Strong Naturalness Theory এর বক্তব্য হচ্ছে (১৩৬), 


ধর্মবিশ্বাসের উদ্ভব স্বয়ংক্রিয় ও অভ্যন্তরীণ এবং তা প্রকৃতপক্ষে স্বতঃস্ফূর্তভাবে শিশুদের মাঝে তৈরি হয়।


নাস্তিক মুক্তমনারা এখনো সেই আরজ আলী মাতুব্বরের যুগে আটকিয়ে রয়েছে অথচ আধুনিক বৈজ্ঞানিক গবেষণা ভিন্ন ভিন্ন গবেষণা করে অনেক এগিয়ে গিয়েছেন। আমেরিকার বিখ্যাত সাইকোলজি সংস্থা ‘আমেরিকান সাইকোলজি এসোসিয়েশন’ থেকে প্রকাশিত পিয়ার রিভিউ জার্নাল ‘সাইকোলজি অফ রিলিজিওন এন্ড স্পিরিচুয়ালিটি’ এ প্রকাশিত গবেষণার ফলাফল থেকে জানা গেছে একত্ববাদে বিশ্বাসী মানুষেরা জীবনে বেশি পরিতৃপ্তি লাভ করে। জার্মানির ম্যানহাইম বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক পরিচালিত এই গবেষণায় ৭০ হাজারের মতো মানুষ অংশ নেয়। আমেরিকার ইলিনোয়িস বিশ্ববিদ্যালয়ের এমিরেটাস প্রফেসর অফ সাইকোলজি ডঃ এড ডাইনারের সুখ পরিমাপ করার পদ্ধতি 'Satisfaction with Life Scale' (SWLS) ব্যবহার করা হয় এই স্টাডিতে। গবেষণায় বিভিন্ন ধর্মের মানুষ ছাড়াও ধর্ম ও সৃষ্টিকর্তায় অবিশ্বাসী তথা নাস্তিকেরাও অংশ নেয়, এদের সংখ্যা এক চতুর্থাংশ। ফলাফলে দেখা গেছে, যাদের একত্ববাদ সবচেয়ে খাঁটি তারাই জীবন নিয়ে বেশি সন্তুষ্ট। সঙ্গত কারণে মুসলিমরা সর্বোচ্চ স্কোর পেয়েছে এই স্টাডিতে। এর পরেই আছে অন্যান্য ধর্মের অনুসারীরা। এর কারণও সুস্পষ্ট কারণ অন্যান্য ধর্মের অনুসারীদের মধ্যে খাঁটি তাওহীদ নেই। এই গবেষণার সবচেয়ে আকর্ষণীয় অংশ হলো, নাস্তিকদের হ্যাপিনেস 'স্কোর' সবচেয়ে কম হওয়া। তারমানে একত্ববাদে অবিশ্বাসী তথা ধর্মে বিশ্বাস না করা মানুষেরা, মুসলিম তো বটেই এমনকি অন্য ধর্মে বিশ্বাসীদের থেকেও জীবন নিয়ে বেশি অসন্তুষ্ট। জীবন নিয়ে এদের স্যাটিসফেকশন লেভেল সর্বনিম্ন (১৩৭),(১৩৮)।


নাস্তিক তথা কলাবিজ্ঞানীদের কথা আর কি বলবো,  পিয়ার রিভিউ জার্নালের রেফারেন্স ছাড়া যারা কথা বলেন না, তাদের জন্য এবার সময় এসেছে পিয়ার রিভিউ জার্নালের ফলাফলের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করার ও সত্য গ্রহণ করার। যে পিয়ার রিভিউকে নিজেদের পক্ষের ম্যাটেরিয়াল মনে করতেন, সেই পিয়ার রিভিউ গবেষণা আপনাদের চরম অসুখী ও জীবন নিয়ে বিরক্ত টাইপের মানুষ মনে করে।


এখন বুঝতে পারি কলাবিজ্ঞানীরা কেনো স্বাভাবিক মানুষের মতো আচরণ করে না। জীবনে যাদের এতো অশান্তি, তারা উম্মাদের মতো আচরণ করবে, গালিগালাজ, অশ্লীল নোংরা চিন্তা ভাবনা করবে এটাই স্বাভাবিক। আপনাদের এই মেন্টাল ট্রুমা থেকে বের হওয়ার একটাই পথ সেটা হলো, একত্ববাদ তথা আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসের বলয়ে নিজেকে নিয়ে আসা, আল্লাহ সুবহানাহুওয়া তায়ালার  কাছে নিজেকে সমর্পন করা, দেখবেন জীবনের সব অশান্তি নিমিষেই উধাও, জীবন হবে প্রশান্তিময় ও আনন্দে পরিপূর্ন। আল্লাহ আপনাদের সঠিক পথ দেখান, আমীন।


এসব বৈজ্ঞানিক গবেষণা গুলোকে নাস্তিকরা ত্যানা প্যাঁচানো বলে নিজেকে লুকিয়ে রাখতে চাইবে। নাস্তিক কথিত বিজ্ঞানমনস্কদের ভাবশাপ দেখলে মনে হবে,কোনো ডাক্তার,ইঞ্জিনিয়ার যদি ধার্মিক হয় এবং দাঁড়িটুপি রাখে তাহলে সে বিজ্ঞানমনস্ক না,আধুনিক না। সে ব্যাকডেটেড, জংলী,কুসংস্কারাচ্ছন্ন ব্যাক্তি। আর কেউ যদি শাহবাগে বসে গাঞ্জা খায় আর গান গায় তাহলে সে বিজ্ঞানী। কেউ যদি ঢাকা শহর অথবা নিউইয়র্কের ব্যস্থতম রাস্তায় শাড়ি পড়ে বৃষ্টিতে ভিজে নাচে, তাহলে সে আরো বড় বিজ্ঞানী। কেউ যদি অন্তর্বাসের ফিতা বের করে রাস্তায় হাঁটে, তাহলে তো সে মহা বিজ্ঞানী। কেউ যদি মেয়েদের প্রাইভেট পার্ট নিয়ে ছবি আঁকে অথবা কবিতা লিখে,তাহলে তার মত তো বিজ্ঞানী আর পৃথিবীতেই নাই। কেউ যদি বিদেশী সাইন্স ফিকশান কপি করে বই বের করে,তাহলে সে সব বিজ্ঞানীদের বাপ। আর কেউ যদি দিন রাত নবী আর ইসলাম নিয়ে গালাগালি, কুটুক্তি করে তাহলে সে সব বিজ্ঞানীদের দাদা। আইন্সটাইন, নিউটন তার ছাত্র।

নাস্তিকরা দাবি করে যে তারা বুদ্ধিগতভাবে ধর্মীয় লোকেদের থেকে উচ্চতর কারণ তারা তাদের বিশ্বাস নিয়ে প্রশ্ন তুলতে ইচ্ছুক, যেখানে ধর্মীয় লোকেরা গোঁড়া এবং তাদের গভীরতম বিশ্বাস নিয়ে প্রশ্ন করতে অস্বীকার করে এবং সেই প্রমাণগুলিকে বিবেচনা করে না যা সম্ভাব্যভাবে সেই বিশ্বাসগুলিকে দুর্বল করতে পারে। আচ্ছা, আপনি কি কখনো একজন নাস্তিককে বলতে শুনেছেন: "আমি ভাবছি ক্রমাগত ব্যক্তি স্বাধীনতা বৃদ্ধি করা ভাল জিনিস কিনা।" "গণতন্ত্রকে একটি কার্যকর ব্যবস্থা বলে আমি ভুল ছিলাম।" "সম্ভবত যৌন বিপ্লব একটি ভুল ছিল।" "প্রমাণ দেখায় যে লিঙ্গের সমতা ধ্বংসাত্মক।" "বাক স্বাধীনতা এবং ধর্ম সমাজের জন্য ভাল কিনা তা নিয়ে বিতর্ক করা যাক।" "এটা কি হতে পারে যে (x গ্রুপের) কম অধিকারের প্রয়োজন?" আমি আক্ষরিক অর্থে কখনই একজন নাস্তিককে এই প্রশ্নগুলি উত্থাপন করতে বা এই অবস্থানগুলিকে গুরুতর যাচাই-বাছাই করতে দেখিনি। অথবা তারা এই বিষয়ে তাদের বিশ্বাসের জন্য কোন প্রমাণ প্রদান করে না। তারা কেবল তাদের দাবি করে এবং তাদের সাথে একমত না এমন কাউকে উপহাস ও উপহাস করে।

 

চিন্তার মুক্তির আন্দোলন বিশ্বাস যৌক্তিক?

প্রথমে আমাদেরকে জেনে নিতে হবে মুক্তচিন্তা বলতে কি বুঝায়। মুক্তচিন্তা (ইংরেজি: Freethought) হল এক প্রকার দার্শনিক দৃষ্টিভঙ্গী যা বলে যে বিজ্ঞান, যুক্তিবিদ্যা এবং যুক্তির আলোকে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত; মতামত গঠনের ক্ষেত্রে প্রথা, অন্ধ বিশ্বাস এবং কর্তৃপক্ষ দ্বারা প্রভাবিত হওয়া বাঞ্ছনীয় নয়। তবে সমাজে মুক্তচিন্তার মানুষ হিসেবে পরিচিত কেউ বিজ্ঞানের সাথে সম্পৃক্ত নয়। প্রকৃতপক্ষে মুক্তচিন্তায় সমাজের বুনিয়াদী ও সম্পুর্ণভাবে প্রত্যাখাত হয়। সচেতনভাবে মুক্তচিন্তার প্রয়োগকে বলে "মুক্তচিন্তন" এবং এর অনুশীলনকারীদের বলে "মুক্তমনা"।


আসুন ডিকশনারি (১৩৯) থেকে জেনে নেই ফ্রিথিংকার বলতে কি বুঝায়।


a person who forms opinions on the basis of reason, independent of authority or tradition, especially a person whose religious opinions differ from established belief.


ভাবানুবাদঃ একজন ব্যক্তি যিনি যুক্তির ভিত্তিতে মতামত গঠন করেন, যিনি কর্তৃত্ব বা ঐতিহ্য থেকে মুক্ত, বিশেষত এমন একজন ব্যক্তি যার ধর্মীয় মতামত প্রতিষ্ঠিত বিশ্বাস থেকে আলাদা।


এই সংজ্ঞাটি নিয়ে যথেষ্ট যৌক্তিক আপত্তি রয়েছে। একজন মানুষকে কেন শুধু ধর্মীয় বিশ্বাস থেকে আলাদা হলেই মুক্তচিন্তক বা মুক্তমনা বলতে হবে? তারমানে এই সংজ্ঞাটি আসলে মুক্তচিন্তাকে যৌক্তিকভাবে ব্যাখ্যা করতে পারেনি। স্বয়ং সংজ্ঞাটি আসলে ভুল। কেউ যদি নাস্তিক্যবাদ থেকে আলাদা হয় তাকে কেন মুক্তচিন্তক বলা যাবে না? কেউ যদি ডারউইনবাদের বিশ্বাস থেকে আলাদা হয় তাকে কেন মুক্তচিন্তক বলা যাবে না? কেউ যদি সেকুলারিজম, লিবারেলিজম বিশ্বাস থেকে আলাদা হয় তাকে কেন মুক্তচিন্তক বলা যাবে না? আমি যদি নাস্তিকদের পোষণ করা সকল বিশ্বাস ও দৃষ্টিভঙ্গিকে অবিশ্বাস করে নিজেকে আলাদা করে নেই তাহলে কি নাস্তিকরা আমাকে মুক্তচিন্তক বলে স্বীকার করবে?


যৌক্তিক ভাবেই কোনো মানুষই মুক্তচিন্তক নয় হতে পারে না। যারা বলে আমরা মুক্তচিন্তা করি তারাও খেয়াল করলে দেখবেন কোনো না কোনো বিশ্বাসে বন্দী। হয় নাস্তিক্যবাদের বিশ্বাসের বন্দী। না হয় ডারউইনবাদ বিশ্বাসে বন্দী। না হয় ইসলামবিরোধী বিশ্বাসে বন্দী। না হয় সেকুলারিজম বিশ্বাসে বন্দী। না হয় লিবারেলিজম বিশ্বাসে বন্দী। না হয় নারীবাদী বিশ্বাসে বন্দী। এখানে যে কয়টা বিশ্বাসের কথা বললাম তারা কি পারবে এসবকে অবিশ্বাস করতে? তারা এসব মতবাদে বিশ্বাসী দেখেই এসবকে তারা অবিশ্বাস করতে পারে না। খেয়াল করলে দেখবেন মুক্তচিন্তার সংজ্ঞায় নাস্তিক দার্শনিকদের উক্তিকে গ্রহণযোগ্য হিসেবে ধরে নেয়া হয় যেমন নাস্তিক গ্রন্থপ্রণেতা এডাম লি “Daylight Atheism” বইতে মুক্তচিন্তাকে সংজ্ঞায়িত করেছেন এইভাবে মুক্তচিন্তা হলো দৈববানী, ঐতিহ্য, প্রতিষ্ঠিত বিশ্বাস এবং কোনো প্রভূর ছত্রচ্ছায়ার চিন্তা থেকে মুক্তি। এরপরে দার্শনিক বার্ট্রাণ্ড রাসেল এর কথাকে উল্লেখ করা হয়। সে বলেছে (১৪০) ,


একজন মানুষের বিশ্বাসের দরুণ কেও মুক্তমনা হয় না, সে মুক্তমনা হয়ে উঠে কিভাবে বিশ্বাসকে সে ধারণ করে। যদি সে একারণেই বিশ্বাসকে ধারণ করে, কারণ তার বড় কেও তাকে ছোটবেলায় এই বিশ্বাসকে সত্য বলে অবহিত করেছে অথবা এইকারণে ধারণ করে, কারণ বিশ্বাস ত্যাগ করলেই সে অসুখী হয়ে উঠবে, তাহলে তার বিশ্বাস মুক্ত নয়। কিন্তু যদি সতর্কভাবে বিবেচনার পর সে তার বিশ্বাসের সপক্ষে পর্যাপ্ত যুক্তি খুঁজে পায়, তবে তার এই চিন্তা মুক্তচিন্তা; তা যতই অস্বাভাবিক হোক না কেন। 


খুবই যৌক্তিক প্রশ্ন করি বার্ট্রাণ্ড রাসেল সেই কথা বললেন সেই কথাকে কি নাস্তিকরা বিশ্বাস করবে নাকি অবিশ্বাস? এই একটি প্রশ্নেই সকল নাস্তিক দার্শনিকরা নাকানিচুবানি খায়। আরেকটি বিষয় লক্ষ্য করুন তো তারমানে নাস্তিক দার্শনিকরা নির্ধারণ করে দিচ্ছে কিভাবে মুক্তচিন্তা করতে হবে বা কাকে বলতে হবে। কোনো মানুষের নির্ধারণ করে দেয়া কথা অনুযায়ী যদি আপনি বা আমি মুক্তচিন্তা করি তাহলে সেটা কিভাবে মুক্তচিন্তা হতে পারে? কারণ আমার বা আপনার চিন্তাকেই তো সে নির্ধারণ করে দিয়েছে-তাই না?


বাইবেলকে, বেদকে, ত্রিপিটককে এমনকি কুরআনকেও তো মানুষ মুক্তচিন্তায় গ্রহণ করতেই পারে। এই কথাটি কি নাস্তিক মুক্তমনারা মানবে? উত্তর হচ্ছে না। কারণ তাদের দার্শনিকরা নির্ধারণ করে দিয়েছে মুক্তচিন্তা কিভাবে করতে হবে। তাহলে কেউ যদি কিছু ঠিক করে দেয় তাহলে সেটা চিন্তা করাকে কিভাবে মুক্তচিন্তা বলা যাবে? এতটুকু সেন্স কি নাস্তিকগোষ্ঠীদের মাথায় ঢুকে না? যারা চিন্তার মুক্তির আন্দোলনের নামে ইসলামকে দুনিয়া থেকে গায়েব করে দিতে চাচ্ছে তারা কি একইভাবে চিন্তার মুক্তিতে ইসলামকে গ্রহণ করতে পারবে? তারা নিজেদের ইসলামবিরোধী বিশ্বাসকে অবিশ্বাস করে চিন্তার মুক্তির প্রকাশ করতে পারবে? কি মনে হয় আপনার? এসব যৌক্তিক প্রশ্ন গুলো নিয়ে চিন্তার মুক্তির সৈনিকরা কখনো চিন্তা করতে পারে না? তারা মানুষকে মুক্তচিন্তার নামে নিজেদের ইসলামবিরোধী বিশ্বাসকে ঢুকিয়ে দিতে চায়?


সমস্ত তথ্যপ্রমাণকে সামনে নিলে এটা বলতে বাধ্য হতে হয় যে যৌক্তিকভাবে মুক্তচিন্তার সংজ্ঞায় বলা উচিত একজন মানুষ যা ইচ্ছে, যেভাবে ইচ্ছা, কোনো বাধা-নিষেধ, আইন-কানুন, কোনো কিছুরই পাত্তা না দিয়ে যা মনে চায় সেটাই চিন্তা করাকে মুক্তচিন্তা বলতে হবে। কেননা আপনি আস্তিকতার বিপরীত নাস্তিক্যবাদে বিশ্বাস করে নিজেকে কিভাবে মুক্তমনা দাবি করতে পারেন? আপনি ডারউইনবাদকে বিশ্বাস করে কিভাবে নিজেকে মুক্তমনা দাবি করবেন? আপনি ইসলামবিরোধী বিশ্বাসকে ধারণ করে নিজেকে কিভাবে মুক্তমনা দাবি করবেন? আপনি সেকুলারিজমে বিশ্বাস করে কিভাবে নিজেকে মুক্তমনা দাবি করবেন? আপনি লিবারেলিজমে বিশ্বাস রেখে কিভাবে নিজেকে মুক্তচিন্তার মানুষ দাবি করবেন? আপনি নারীবাদে বিশ্বাসী হয়ে নিজেকে কিভাবে মুক্তচিন্তক দাবি করতে পারে? সুতরাং একটু বুদ্ধি প্রয়োগ করে দেখুন যারা নিজেদেরকে চিন্তার মুক্তির আন্দোলনকারী দাবি করছে তারা কেউই আসলে চিন্তার মুক্তিতেই নেই।


উপসংহারঃ বিজ্ঞানবিরোধী কাজ করা যার যার ব্যক্তিগত ব্যাপার। কোনো নাস্তিক যদি মুক্তমনে চায় যে, সে বিজ্ঞানের বিরোধী হবে তাহলে অন্য নাস্তিকরা তাকে বুঝাতে পারে কিন্তু বাধা দিতে পারবে না। কারণ নাস্তিক্যধর্মের দৃষ্টিতে প্রতিটি মানুষই নিজের স্বাধীনভাবে চলাফেরা করতে পারবে। যেসব নাস্তিকরা দাবি করে যে তারা বিজ্ঞানমনস্ক- হ্যাঁ তারা দাবি করতেই পারে কিন্তু তারমানে এই না যে অন্য নাস্তিকরা বিজ্ঞানের বিরোধী কাজ করতে পারবে না। পহেলা বৈশাখে ইলিশ মাছ মজা করে হত্যা করে খেয়ে নাস্তিক আনন্দ করবে আর মুসলিমদের কুরবানীর ঈদে গরু প্রেম দেখায়ে ফেসবুকে পোস্ট করবে। হিন্দুদের মূর্তি পুজায় গিয়ে মুক্তচিন্তায় তাদেরকে খুশি করে দিয়ে আসবে নারীবাদীদের অবতার তসলিমা নাসরিন। প্রথা বিরোধী, ভাষা বিজ্ঞানী, বিজ্ঞানমনস্ক নামধারী নাস্তিক হুমায়ুন আজাদ যা ইচ্ছে গাঁজাখুরি কথাবার্তা তার বইতে লিখে বিজ্ঞান নামে চালিয়ে দেবে। মুক্তচিন্তার নামে, বিজ্ঞানে নামে নানান প্রথার কুসংস্কার মুক্তবুদ্ধিতে স্বাধীনভাবে চর্চা করা নাস্তিক্যধর্মের দৃষ্টিতে জায়েজ।

রেফারেন্স সমূহঃ

(১) Atheism Is Inconsistent with the Scientific Method, Prizewinning Physicist Says

https://www.scientificamerican.com/article/atheism-is-inconsistent-with-the-scientific-method-prizewinning-physicist-says/

(২) সুইডেনে কোরআন পোড়ানোর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ অব্যাহত

https://www.bbc.com/bengali/news-61134725

(৩) সুইডেনে কোরআন পোড়ানো কে এই রাসমুস

https://www.ittefaq.com.bd/

(৪) Most Atheist Countries 2022

https://worldpopulationreview.com/country-rankings/most-atheist-countries

(৫) CHRISTIAN EATS QUR'AN & EX MUSLIMS LAUGH

https://www.youtube.com/watch?v=537sdVOfe4M

(৬) যৌবন ধরে রাখতে প্রতিদিন এক গ্লাস নিজের প্রস্রাব পান করেন যুবক!

https://www.daily-bangladesh.com/feature/312047


(৭) পুরুষের লুঙ্গি খুব অশ্লীল পোশাক: তসলিমা নাসরিন”

https://www.ppbd.news/social-media/230849/


(৮) মেয়েরা স্তন দেখানো জামা পরলে বেশ লাগে: তসলিমা নাসরিন

https://www.sangbadpratidin.in/entertainment/cinema/taslima-nasrin-new-facebook-post-about-women-body-goes-viral/


(৯) যাঁদের স্তন দেখতে ভাল নয়, তাঁরা যে কেন খোলামেলা পোশাক পরেন বুঝি না: তসলিমা

https://www.anandabazar.com/lifestyle/netizens-accuses-taslima-nasrin-of-body-shaming-in-her-latest-facebook-post-dgtl/cid/1346528?fbclid=IwAR1Vhp6yFjlL-nvaJ-3Ilvm1B7G1cL_V34sSIIapRoElnvjvec9tztEhGmI


(১০) ব্লাউজবিহীন শাড়ি পরা সাহসী মেয়েটিকে স্যালুট : তসলিমা নাসরিন

https://www.rtvonline.com/

 

(১১) Over 500 Scientists Proclaim Their Doubts About Darwin’s Theory of Evolution

https://evolutionnews.org/2006/02/over_500_scientists_proclaim_t/?fbclid=IwAR1OiPKoGjObGDUgqDYxu5vmRm_cfOPnu1gqXrqw0mB9E_Ng7MpJg2mLY4A


(১২) https://www.thethirdwayofevolution.com/

(১৩) “We are skeptical of claims for the ability of random mutation and natural selection to account for the complexity of life. Careful examination of the evidence for Darwinian theory should be encouraged.” https://dissentfromdarwin.org/


(১৪) Kenneth J.Locey & Jay T.Lennon (2016), Scaling laws Predict global microbial diversity. PNAS 113 (21): 5970-5975


(১৫) Lee Swrrtlove (2011), Number of species on Earth tagged at 8.7 million. Nature । News


(১৬) Henry Gee (2013), Science: The religion that must not be questioned. The Guardian


(১৭) No Faith, No Problem! The 21 Most Famous Celebrity Atheists

https://okmagazine.com/photos/famous-celebrity-atheists/?fbclid=IwAR2C_DwdD_irb83-zSxJCI-8BLH4iawg-LWru8RQjE5xbJc-vcVIsQ0P06c


(১৮) Henry Gee, The Accidental Species: Misunderstandings of Human Evolution; p. 39-41 (University of Chicago Press, Oct 15, 2013)


(১৯) Michael Ruse, The Philosophy of Human Evolution; Chapter: 4 (Progress), p. 99-127 (University of Chicago Press, Jan 12, 2012)


(২০) Stephen Jay Gould, Wonderful Life: The Burgess Shale and the Nature of History; p. 30-36 (New York City: W.W. Norton & Company, 1989)


(২১) Sober E., Steel M., Testing the hypothesis of common ancestry Journal of Theoretical Biology (2002 Oct 21); 218(4):395-408. Avail. able at: https://www.ncbi.nlm.nih.gov/pubmed/12384044


(২২) The Politics of Paleoanthropology, Science 14 Aug 1981: Vol. 213, Issue 4509, pp. 737-740; Available at: http://science.sciencemag.org/content/213/ 4509/737


(২৩) Richard Dawkins. A Devil's Chaplain: Reflection on Hope, Lies, Science and Love; page 81 (Houghton Mifflin Harcourt,2004)


(২৪) Darwin Correspondence Project / To John Fordyce   7 May 1879 / 

https://www.darwinproject.ac.uk/letter/DCP-LETT-12041.xml


(২৫) ডারউইন কি পাগল ছিল?

https://islamicauthors.com/


(২৬) Associated Press. "Scientists may have found appendix's purpose". NBC News, 5 October 2007. Accessed 24 August 2019. 


(২৭) Scientists discover true function of appendix organ

https://www.abc.net.au/news/2007-10-10/scientists-discover-true-function-of-appendix-organ/693946

 

(২৮) Appendix may have important function, new research suggests

https://www.sciencedaily.com/releases/2017/01/170109162333.htm


(২৯) Scientists Find More Evidence That Your Appendix Serves a Purpose

https://www.mentalfloss.com/article/90821/scientists-find-more-evidence-your-appendix-serves-purpose


(৩০) Junk DNA | Fact Or Myth ? | Jaahilo Ke Claims

https://www.youtube.com/watch?v=x2NNWHrC8Ng

(৩১) Jaw size linked to diet: Could too soft a diet cause lower jaw to stay too short and cause orthodontic problems? https://www.sciencedaily.com/releases/2011/11/111122112032.htm?fbclid=IwAR2WnsOscgnE1jPdVzLiE8e4SOcdLNAGKK4PjZQU_0tJWi0_2g5R7YkCrg8

 

(৩২) Incongruity between Affinity Patterns Based on Mandibular and Lower Dental Dimensions following the Transition to Agriculture in the Near East, Anatolia and Europe https://www.ncbi.nlm.nih.gov/pmc/articles/PMC4317182/

 

(৩৩) Incongruity between Affinity Patterns Based on Mandibular and Lower Dental Dimensions following the Transition to Agriculture in the Near East, Anatolia and Europe; https://www.ncbi.nlm.nih.gov/pubmed/10815573

(৩৪) Epigenetic regulation of face formation https://medicalxpress.com/news/2017-03-epigenetic-formation.html?fbclid=IwAR3c1nZJRWqfsQUf1mdZrulnn9C-7cnenoWTygPL-NlXebFYr-OtDXe1TaA

(৩৫) Gene bivalency at Polycomb domains regulates cranial neural crest positional identity

https://www.science.org/doi/10.1126/science.aal2913

 

[৩৬] No single gene associated with being gay:

https://www.bbc.com/news/health-49484490

 

[৩৭] How do genes affect same-sex behavior?

https://www.science.org/doi/full/10.1126/science.aay2726

 

[৩৮] Syphilis spike linked to homosexual activity;

http://www.startribune.com/syphilis-spike-linked-to-homosexualactivity/40434042/

 

[৩৯] Is Staph Strain a 'Gay Disease'?

http://www.newsweek.com/staph-strain-gay-disease-87285

 

[৪০] Sci/Tech Doubt cast on 'gay gene'

http://news.bbc.co.uk/2/hi/science/nature/325979.stm

 

[৪১] সমকামীতা কি কোন রোগ? রোগ হলে তার চিকিৎসা কি?

https://www.faijulhuq.com/

 

(৪২) বাংলা নববর্ষে মঙ্গল শোভাযাত্রা নিয়ে আপত্তি কেন?

https://www.bbc.com/bengali/news-39579890


(৪৩) দুর্গাপুরে শ্রীকৃষ্ণের জন্মাষ্টমী উদযাপন উপলক্ষে মঙ্গল শোভাযাত্রা

https://netrokonajournal.com/


(৪৪) দক্ষিণ এশিয়ার চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশের মেয়েরা

https://www.prothomalo.com/sports/football/au3t28b3us


(৪৫) বুয়েটে প্রথম হওয়া আসীর ঢাবিতেও প্রথম

https://www.prothomalo.com/


(৪৬) মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষায় প্রথম খুলনার সুমাইয়া মোসলেম

https://www.prothomalo.com/


(৪৭) মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় প্রথম মিশরী মুনমুন

https://www.jugantor.com/


(৪৮) বিনা পারিশ্রমিকে এক হাজারেরও বেশি কিডনি প্রতিস্থাপন করেছেন তিনি

https://www.ittefaq.com.bd/


(৪৯) পারিশ্রমিক ছাড়াই এক হাজার কিডনি প্রতিস্থাপন করেছেন ডা. কামরুল ইসলাম | Dr. Kamrul

https://www.youtube.com/watch?v=UlzusBhdWcg

(৫০) যুক্তরাজ্যে সবচেয়ে বেশি বৈষম্যের শিকার মুসলিমরা

https://m.dailyinqilab.com/

(৫১) জার্মানিতে ৮ বছরে ৮৪০টি মসজিদে হামলা, নেই সুষ্ঠু তদন্ত

https://www.dailynayadiganta.com/

(৫২) বৈষম্যের শিকার ফ্রান্সের মুসলিমরা

https://www.kalerkantho.com/print-edition/dhormo/2015/01/30/181543?fbclid=IwAR3YTwv1TI74In8LqnQwf4k2oYMiwmrBMMaBAg8wNtJtPFVsOLHqaLV73b4

(৫৩) যুক্তরাজ্যে কর্মক্ষেত্রে ইসলামবিদ্বেষের শিকার মুসলিমরা : সমীক্ষা

https://www.dailynayadiganta.com/

(৫৪) মিশর: হিজাব পরে দেশটিতে যেভাবে বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন নারীরা

https://www.bbc.com/bengali/news-62699019

(৫৫) 'ওই চাকরিটা পাওয়ার যোগ্যতা ছিল, কিন্তু টুপি দাড়ির জন্য পাইনি'

https://www.bbc.com/bengali/news-47101654

(৫৬) দাড়ি রাখার জন্য চাকরি থেকে বরখাস্ত হলেন উত্তরপ্রদেশের এক মুসলিম পুলিশকর্মী

https://www.sangbadsafar.com/news/up-muslim-cop-suspended-for-keeping-beard/

(৫৭) বার্লিনে বর্ণবৈষম্যের শিকার মুসলিমরা: রিপোর্ট

https://www.jagonews24.com/

(৫৮) ইসলামভীতি ছড়াতে যুক্তরাষ্ট্রে ৯১ কোটি টাকা অর্থায়ন

https://www.dailynayadiganta.com/

(৫৯) নিউইয়র্কে মুসলিমদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগে আটক ৪

https://www.bbc.com/bengali/news-46969030


(৬০) Indian Idol Season 13 | Vishal ने सिखाया इस Contestant को Singer होने का असली मतलब | Best Moments https://www.youtube.com/watch?v=idQJt1yi36A


(৬১) Music is my religion, my life: Vishal Dadlani

https://www.hindustantimes.com/music-is-my-religion-my-life-vishal-dadlani/story-1ORWy96ZhvOn2iEAPmlB6M.html


(৬২) Vishal Dadlani seeks apology from Jain Monk Tarun Sagar in Chandigarh

https://www.youtube.com/watch?v=NtLKMl8kVL4


(৬৩) No healthy level of alcohol consumption, says major study

https://www.theguardian.com/society/2018/aug/23/no-healthy-level-of-alcohol-consumption-says-major-study


(৬৪) মদের নিরাপদ মাত্রা নেই, বছরে ২৮ লাখ মৃত্যু

https://www.prothomalo.com/


(৬৫) Alcohol

https://www.who.int/en/news-room/fact-sheets/detail/alcohol

 

(৬৬) শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ‘র‌্যাগ ডে’ পালনের নামে অশ্লীলতা বন্ধে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ

https://www.prothomalo.com/


(৬৭) ব্লগার ও লেখক অভিজিৎ স্মরণে মোমবাতি প্রজ্বালন

https://www.kalerkantho.com/print-edition/news/2021/02/27/1008983?fbclid=IwAR1cLEa49GcD_lS2R5J-YwnrQDgLvZzAO4ClLBdklEiGu7EoTDM8QmSJ0Ug


(৬৮) সীতাকুণ্ডে নিহতদের স্মরণে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন

https://www.ittefaq.com.bd/


(৬৯) ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মোমবাতি জ্বালিয়ে সীতাকুণ্ডে অগ্নিকাণ্ডে নিহতদের স্মরণ 

https://www.somoynews.tv

(৭০) সিলেটে বন্যার প্রভাবে মোমবাতির সংকট চট্টগ্রামে! https://www.kalerkantho.com/online/country-news/2022/06/24/1158410


(৭১) Is religion protective against suicidal behaviour for LGBT individuals?

https://netecr.org/2017/09/15/religion-lgbt/?fbclid=IwAR1Sj6kVzWnn2Ui72VD-IdPEUEgBcTdzopJVZdl-CvrGUf3St8Sb8vUTA_A

 

(৭২) https://www.goodreads.com/quotes/360178-the-public-has-a-distorted-view-of-science-because-children

 

(৭৩) Scientists only understand 4% of universe’ Retrieved from: https://www.rt.com/news/universe-physics-laws-energy-329

 

(৭৪) National Academy of sciences,Teaching about Evolotion and the nature of science (Washington, DC:National Academy of sciences,1998)page:58

https://nap.nationalacademies.org/catalog/5787/teaching-about-evolution-and-the-nature-of-science

 

(৭৫) David Marshal, The truth brhind the new Atheism, Eugene,Or:Harvest House,2007- অবিশ্বাসের দর্শন পৃঃ৪০

 

(৭৬) John F.Haught,God and the new Atheism, Westminster John Knox press,2007 P.46

https://blog.magiscenter.com/blog/23-famous-scientists-who-are-not-atheists

 

(৭৭) Stanovich, Keith E.. How to think straight about Psychology. Boston: Pearson Education. Page-106-107

 

(৭৮) বিবর্তন বনাম স্রষ্টা [Evolution or God]

https://rafanofficial.wordpress.com/2019/09/16/evolution-or-god/

(৭৯) বিজ্ঞানবাদ-এর লক্ষণঃ পশ্চিমা অ্যাকাডেমিকের চোখে

https://rafanofficial.wordpress.com/2021/03/09/signs-of-scientism-susan-haack/

(৮০) করোনা ভাইরাস আর বিজ্ঞানপূজো

https://rafanahmed.com/coronavirus-and-science-worship/

(৮১) বিজ্ঞান ও নাস্তিকতা

https://rafanahmed.com/science-vs-atheism/

(৮২) বিজ্ঞান কি নিরপেক্ষ সত্য বলে?

https://shamsularefin.com/biggan-ki-niropekkho

(৮৩) বিজ্ঞান নিয়ে যে কথাগুলো আপনাকে কেউ বলবে না

https://shamsularefin.com/biggan-niye-je-kothagulo-apnake-keo-bolbe-na

(৮৪) LECTURE: DOES SCIENCE LEAD TO ATHEISM? HAS SCIENCE KILLED RELIGION?

https://www.hamzatzortzis.com/does-science-lead-to-atheism-has-science-killed-religion/

(৮৫) HAS SCIENCE DISPROVED GOD? DECONSTRUCTING FALSE ASSUMPTIONS

https://www.hamzatzortzis.com/has-science-disproved-god-deconstructing-false-assumptions/

(৮৬) বিজ্ঞানের দর্শন

https://faith-and-theology.com/%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%9C%E0%A7%8D%E0%A6%9E%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%A6%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%B6%E0%A6%A8/#lwptoc4


(৮৭) এ সম্পর্কিত Peer Reviewed :Scientific Change. Available at: http://www.iep.utm.edu/s-change


(৮৮) Samir Okasha, Philosophy of Science, A very Short Introduction, page 77 (Ozford: Oxford University press,2002)


(৮৯) বন্যা আহমেদ, বিবর্তনবাদের পথ ধরে; ২৭-২৮ পৃষ্ঠা (ঢাকা, অবসর প্রকাশন, ফেব্রুয়ারি ২০০৮)

(৯০) Altman, L.K., For Science's Gatekeepers, a Credibility Gap, New York Times, 2 May 2006


(৯১) Higgs, R., Peer Review, Publication In Top Journals, Scientific Consensus, And So Forth, History News Network, 7 May 2007, hnn.us.


(৯২) Sox H. C. and Rennie, D., Research Misconduct, Retraction, and Cleansing the Medical Literature: Lessons from the Poehlman Case, Annals of Internal Medicine, pp. 609–613, 18 April 2006

(৯৩) Clive Cookson and Andrew Jack, “Science stifled?,” Financial Times (June 12, 2008).


(৯৪) Open Science Collaboration, “Estimating the Reproducibility of Psychological Science,” Science349 (August 2015): aac4716, doi:10.1126/science.aac4716.


(৯৫) David Colquhoun, “Publish-or-perish: Peer review and the corruption of science,” The Guardian (September 5, 2011).


(৯৬) Campanario, J.M. Rejecting and resisting Nobel class discoveries: accounts by Nobel Laureates. Scientometrics 81, 549–565 (2009). https://doi.org/10.1007/s11192-008-2141-5


(৯৭) পিয়ার রিভিউ না হলে বিজ্ঞানসম্মত না?

https://islamicauthors.com/

(৯৮) Science, Capitalism, and the Rise of the “Knowledge Worker”: The Changing Structure of Knowledge Production in the United States, Author(s): Daniel Lee Kleinman and Steven P. Vallas. Source: Theory and Society, Vol. 30, No. 4 (Aug., 2001), pp. 451-492 


(৯৯) Helen Longino, Science as Social Knowledge, p17


(১০০) ibid, p7


(১০১) ibid, p3


(১০২) Watts G. Critics attack DSM-5 for over medicalising normal human behavior BMJ 2012; 344:e1020

 

(১০৩) Circulating Testosterone as the Hormonal Basis of Sex Differences in Athletic Performance,David J Handelsman.


(১০৪) Gender Differences in Mental Toughness and Coping with Injury in Runners,Journal of Athletic Enhancement


(১০৫) Is there a sex difference in IQ scores?,Nature


(১০৬) Who has the better memory, men or women? NAMS


(১০৭) Cortisol boosts risky decision-making behavior in men but not in women,psychoneuroendocrinology


(১০৮) Is There a Gender Difference in Strength of Sex Drive? Roy F. Baumeister


(১০৯) Girls exhibit greater empathy than boys,Nature


(১১০) নারী-পুরুষের সমতার সমাজ

https://www.prothomalo.com/


(১১১) ‘শয়তানের মন্দির’কে ধর্ম হিসেবে স্বীকৃতি দিলো যুক্তরাষ্ট্র!

https://www.kalerkantho.com/online/world/2019/05/08/767166


(১১২) হেইল সেটান?: মুক্ত ধর্মচর্চার অধিকার চায় শয়তানের পূজারীরা

https://www.bbc.com/bengali/news-49444166

 

(১১৩) Pretty women make a man's mouth water

https://www.dailymail.co.uk/health/article-201319/Pretty-women-make-mans-mouth-water.html


(১১৪) Your Skinny Jeans Can Possibly Be Affecting Your Health Adversely

https://www.grazia.co.in/lifestyle/health-and-wellness/your-skinny-jeans-can-possibly-be-affecting-your-health-aversely-7842.html


(১১৫) আঁটসাঁট জিনস পরলে যে ক্ষতি

https://www.prothomalo.com/


(১১৬) Synovitz, L. B., & Byrne, T. J. (1998). Antecedents of sexual victimization: Factors discriminating victims from nonvictims. Journal of American College Health, 46(4), 151-158.


(১১৭) Workman, J. E., & Freeburg, E. W. (1999). An examination of date rape, victim dress, and perceiver variables within the context of attribution theory. Sex Roles, 41(3), 261-277.


(১১৮) Abbey, A., Cozzarelli, C., McLaughlin, K., & Harnish, R. J. (1987). The Effects of Clothing and Dyad Sex Composition on Perceptions of Sexual Intent: Do Women and Men Evaluate These Cues Differently 1. Journal of Applied Social Psychology, 17(2), 108-126.


(১১৯) Roney, J. R., Mahler, S. V., & Maestripieri, D. (2003). Behavioral and hormonal responses of men to brief interactions with women. Evolution and human Behavior, 24(6), 365-375.


(১২০) Beards Keep You Healthy and Handsome, According to Science

https://www.mentalfloss.com/article/69252/beards-keep-you-healthy-and-handsome-according-science?fbclid=IwAR16epoXdftgx2YFjyz1CbuxSGK9Tio8Bc-vwOHKSs3Q5DY7ltM0nypwbKY


(১২১) Beards keep you healthy and handsome, research indicates

https://www.independent.co.uk/life-style/beards-healthy-handsome-research-men-facial-hair-a7909731.html?cmpid=facebook-post&fbclid=IwAR3K-q3os5CeAztJiyxa_6pKgQ_jPP6c9IQGDr14w2p3oh51nFb_vC1Qyvg


(১২২) 7 Science-Backed Reasons Having A Beard Is Good For You

https://www.huffpost.com/entry/beards-are-good-for-you-and-science-says-so_n_560d72f7e4b07681270115c2?fbclid=IwAR2TSTi94nWR6en0fiZfwOWYBKa62hmIt9h3ylkc4kvr5dYtp5rx14-fY7w


(১২৩) 7 Health Benefits Of Having A Beard

https://www.mensxp.com/health/fitness/9317-7-health-benefits-of-having-a-beard.html?fbclid=IwAR245JgxvUOyy_W4b5jD6PweqkfeGttY7VLeo5eLK4NOl9a9h4XtPd8o83A


(১২৪) Beards may be more hygienic and bacteria-resistant than shaven skin, study finds

https://www.independent.co.uk/news/science/beards-good-for-health-more-hygienic-bacteriaresistant-than-shaven-skin-study-finds-a6823461.html


(১২৫) Beards are GOOD for you: How having facial hair can be beneficial for your health

https://www.mirror.co.uk/news/weird-news/beards-good-you-how-having-4531421?fbclid=IwAR2ZF3vwIAjkt4i7Zlw5T-AJGpM3gx3T1EGcA9_R9fIDf6IDaPsNZFw7yt4


(১২৬) 10 Benefits of Beard Most People Don’t Know

https://www.lifehack.org/299301/its-not-just-cooler-but-also-healthier-10-reasons-why-men-should-grow-beards?fbclid=IwAR1eHJs57aRqyNsH0VcYI5KlQvKuyWOrGiajed-OXdZzOPaLONYL5MMl7Bo


(১২৭) 8 Benefits To Having A Beard

https://www.huffpost.com/entry/why-grow-a-beard-here-are-8-reasons_n_55e726e1e4b0b7a9633b2b82?fbclid=IwAR2l-xhpKNE69RmlLQMaU-XM8QQ27A4Rb_kA9dfWmq6dGfjXB9WtjVea3Zk

 

(১২৮) Dr. Justine L. Barrett, Born Believers; The Science of Children's Religious Belief; page 136 (simon and schuster,mar 20,2012)


(১২৯) Olivera Petrovich, Key Psychological issues in the study of religion; psihologija (2007), volume 40, issue 3, page,360; Available at https://doi.org/10.2298/PSI0703351P

(১৩০) Patrick McNamara Ph.D, Wesley J. Wildman (etd),Science and the world's Religions;vol,02 (Person and Groups), page 206,209 (Publisher ABC-CLIO,July 19,2012)


(১৩১) University of Oxford.Humans 'predisposed' to believe in gods and the afterlife, ScienceDaily,14 july 2011.

https://www.sciencedaily.com/releases/2011/07/110714103828.htm


(১৩২) Children are born believers in God, academic claims: https://www.telegraph.co.uk/news/religion/3512686/Children-are-born-believers-in-God-academic-claims.html


(১৩৩) Professor Gregory Benford, Leaping the Abyss: Stephen Hawking on Black Holes, Unified Field Theory and Marilyn Monroe; Retrieved from: Reason Magazine, Issues: April 2002, online edition: https://reason.com/2002/04/01/leaping-the-abyss-2/


(১৩৪) Hubert P.Yockey, A Calculation Of The Probability of spontaneous Bioge- Nesis By Information Theory: Journal of The ical Biology, Volume 67, Issue 3, 7 August 1977, Pages 377-398 

https://www.sciencedirect.com/science/article/abs/pii/0022519377900443


(১৩৫) George Wald, The Origin of Life; Scientific American,191;48, May 1954


(১৩৬) স্রষ্টার অস্তিত্বে বিশ্বাস কি সহজাত ? (Is Belief in GOD Natural ?)

https://www.youtube.com/watch?v=8CH2Cra2auA


(১৩৭) People With a Sense of Oneness Experience Greater Life Satisfaction

https://www.apa.org/news/press/releases/2019/04/greater-life-satisfaction


(১৩৮) Effect is found regardless of religion / April 11, 2019 / People with a sense of oneness experience greater life satisfaction

https://www.sciencedaily.com/releases/2019/04/190411101803.htm

 

(১৩৯) freethinker

https://www.dictionary.com/browse/freethinker


(১৪০)বার্ট্রান্ড রাসেল, The Value of Free Thought. How to Become a Truth-Seeker and Break the Chains of Mental Slavery, from the first paragraph



এমডি আলী

যিনি একজন লেখক, বিতার্কিক ও গবেষক। বিভিন্ন ধর্ম ও মতবাদ বিষয় পড়াশোনা করেন। ইসলামের সত্যতা মানুষের কাছে ছড়িয়ে দিতে চান। “সত্যের অনুভূতি” উনার লেখা প্রথম বই। “ফ্যান্টাস্টিক হামজা” দ্বিতীয় বই। জবাব দেবার পাশাপাশি নাস্তিক মুক্তমনাদের যৌক্তিক সমালোচনা করে থাকেন।

Previous Post Next Post