পেঁয়াজ ও রসূন খাওয়া কি ইসলামে নিষেধ যেখানে বিজ্ঞান বলছে এসব খাদ্যের অনেক উপকারিতা আছে ?


প্রশ্নঃ পেঁয়াজ ও রসূন খাওয়া কি ইসলামে নিষেধ যেখানে বিজ্ঞান বলছে এসব খাদ্যের অনেক উপকারিতা আছে ?
লিখেছেনঃ এম ডি আলী

উত্তরঃ যেসব মানুষরুপি প্রাণীরা অন্ধ ভাবে বিশ্বাস করে যে তারা বানর থেকে এসেছে তারা কিভাবে একজন শ্রেষ্ঠ মানুষের কথার গভীরতা উপলব্ধি করবে আপনারা যারা চিন্তাশীল আছেন তারাই উত্তর দিন । নাস্তিক ধর্মের অন্ধ বিশ্বাসীদের মধ্যে কেউ কেউ বলতে চান যে নবীজি নাকি পেঁয়াজ রসূনের বিষয় জানতেন না তাই তিনি খেতে নিষেধ করেছেন , যেখানে বিজ্ঞান বলে যে পেঁয়াজ রসূনের বহু বহু উপকার রয়েছে । চলুন সরাসরি মূল আলোচনায় চলে যাই । এই জবাবের পরে নাস্তিক ধর্মের অন্ধ বিশ্বাসীদের আর কোন মিথ্যাচারের রাস্তা খোলা নেই ।
 পেঁয়াজ ও রসূন বিষয় হাদিস গুলো আগে জেনে নেই আসুনঃ
ihadis.com, সহিহ মুসলিম, হাদিসঃ ১১৩৯ , সহিহ হাদিসঃ জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পিঁয়াজ ও গোরসুন খেতে নিষেধ করেছেন। কিন্তু কোন এক সময় প্রয়োজনের তাগিদে বাধ্য হয়ে তা খেলে তিনি বললেনঃ কেউ এসব দুর্গন্ধযুক্ত গাছ (উদ্ভিদ) খেলে সে যেন আমার মাসজিদের নিকটে না আসে। কেননা মানুষ যেসব জিনিসে কষ্ট পায় মালাকগণও (ফেরেশ্‌তামণ্ডলী) সেসব জিনিসে কষ্ট পায়।
ihadis.com, সহিহ মুসলিম, হাদিসঃ ১১৩৮ , সহিহ হাদিসঃ আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি এসব গাছ অর্থাৎ- উদ্ভিদ খাবে সে যেন আমার মাসজিদের নিকটেও না আসে এবং রসুনের গন্ধ দ্বারা আমাদেরকে কষ্ট না দেয়।
ihadis.com, সহিহ বুখারি , হাদিসঃ ৮৫৩ , সহিহ হাদিসঃ ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) খাইবারের যুদ্ধের সময় বলেন, যে ব্যক্তি এই জাতীয় বৃক্ষ হতে অর্থাৎ কাঁচা রসুন খায় সে যেন অবশ্যই আমাদের মসজিদে না আসে।
ihadis.com, সহিহ বুখারি , হাদিসঃ ৮৫৪ , সহিহ হাদিসঃ জাবির ইব্‌নু ‘আবদুল্লাহ্‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কেউ যদি এ জাতীয় গাছ হতে খায়, তিনি এ দ্বারা রসুন বুঝিয়েছেন, সে যেন আমাদের মসজিদে না আসে। (রাবী আতা (রহঃ) বলেন) আমি জাবির (রাঃ) কে জিজ্ঞেস করলাম, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর দ্বারা কী বুঝিয়েছেন? (জাবির (রাঃ) বলেন, আমার ধারণা যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)–এর দ্বারা কাঁচা রসুন বুঝিয়েছেন এবং মাখ্‌লাদ ইব্‌নু ইয়াযীদ (রহঃ) ইব্‌নু জুরাইজ (রহঃ) হতে দুর্গন্ধযুক্ত হবার কথা উল্লেখ করেছেন।
ihadis.com, সহিহ বুখারি , হাদিসঃ ৮৫৬ , সহিহ হাদিসঃ ‘আবদুল ‘আযীয (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, এক ব্যক্তি আনাস ইব্‌নু মালিক (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করলেন, আপনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)–কে রসুন খাওয়া সম্পর্কে কী বলতে শুনেছেন? তখন আনাস (রাঃ) বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি এ জাতীয় গাছ হতে খায় সে যেন অবশ্যই আমাদের নিকট না আসে এবং আমাদের সাথে সালাত আদায় না করে।
ihadis.com, সহিহ বুখারি , হাদিসঃ ৪২১৫ , সহিহ হাদিসঃ ইবনু 'উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ খাইবার যুদ্ধের দিন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রসুন ও গৃহপালিত গাধার গোশত খেতে নিষেধ করেছেন। রসূন খেতে নিষেধ করেছেন কথাটি এক্ষেত্রে নাফি' থেকে বর্ণিত হয়েছে, আর গৃহপালিত গাধার গোশত খেতে নিষেধ করেছেন কথাটি সালিম [ইবনু 'আবদুল্লাহ (রাঃ)] হতে বর্ণিত হয়েছে।

 নবীজি মুহাম্মদ (সা) পেঁয়াজ রসূন খেতে বলেছেনঃ
ihadis.com, সহিহ মুসলিম, হাদিসঃ ১১৩৬ , সহিহ হাদিসঃ আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কেউ এসব সব্জি অর্থাৎ- রসুন ইত্যাদি খেলে (মুখ থেকে) তার গন্ধ দূর না হওয়া পর্যন্ত সে যেন আমার মাসজিদের কাছে না আসে ।
ihadis.com, সুনানে ইবনে মাজাহ , হাদিসঃ ১০১৪ , সহিহ হাদিসঃ উমার ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ উমার ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) জুমুআহর খুতবাহ দিতে দাঁড়ান অথবা তিনি জুমুআহর দিন খুতবাহ দেন। তিনি আল্লাহর প্রশংসা ও গুণগান করার পর বলেন, হে লোকসকল! তোমরা দু’টি গাছ খেয়ে থাকো, আমার দৃষ্টিতে তা নিকৃষ্টঃ এই রসুন ও এই পিয়াজ। আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর যুগে দেখতাম, যার মুখ থেকে এর দুর্গন্ধ পাওয়া যেতো, তার হাত ধরে তাকে আল-বাকী নামক স্থানের দিকে বের করে দেয়া হতো। অতএব যে ব্যক্তি তা খেতেই চায়, সে যেন তা রান্না করে খায়।
ihadis.com, সহিহ মুসলিম , হাদিসঃ ৫২২১ , সহিহ হাদিসঃ আবূ আইয়ূব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট কোন খাদ্য নিয়ে আসলে তিনি সামান্য খেতেন আর বাকীটুকু আমার নিকট প্রেরণ করতেন। একদা তিনি এমন কিছু খাবার প্রেরণ করলেন যা হতে তিনি কিছুই আহার করেনি। কেননা তাতে রসুন ছিল। আমি তার কাছে জানতে চাইলাম, এটা কি নিষিদ্ধ? তিনি বললেন, না। তবে গন্ধের কারণে ওটা আমার কাছে অপছন্দনীয়। তিনি বললেন, তাহলে আমিও তা পছন্দ করবো না, যা আপনি পছন্দ করেননি।
ihadis.com, সহিহ বুখারি , হাদিসঃ ৮৫৫ , সহিহ হাদিসঃ জাবির ইব্‌নু ‘আবদুল্লাহ্‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি রসুন বা পিঁয়াজ খায় সে যেন আমাদের হতে দূরে থাকে অথবা বলেছেন, সে যেন আমাদের মসজিদ হতে দূরে থাকে আর নিজ ঘরে বসে থাকে। (উক্ত সানাদে আরো বর্ণিত আছে যে,) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)–এর নিকট একটি পাত্র যার মধ্যে শাক-সব্‌জি ছিল আনা হলো। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)–এর গন্ধ পেলেন এবং এ ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলেন, তখন তাঁকে সে পাত্রে রক্ষিত শাক-সবজি সম্পর্কে জানানো হলো, তখন একজন সাহাবা [আবূ আইয়ুব (রাঃ)–কে উদ্দেশ্য করে বললেন, তাঁর নিকট এগুলো পৌঁছে দাও। কিন্তু তিনি তা খেতে অপছন্দ করলেন, এ দেখে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তুমি খাও! আমি যাঁর সাথে গোপনে আলাপ করি তাঁর সাথে তুমি আলাপ কর না (মালাইকার সাথে আমার আলাপ হয়, তাঁরা দুর্গন্ধকে অপছন্দ করেন)। আহমাদ ইব্‌নু সালিহ্‌ (রহঃ) ইব্‌নু ওয়াহ্‌ব (রহঃ) হতে বলেছেন 'أُتِيَ بِبَدرٍ' ইব্‌নু ওয়াহ্ব–এর অর্থ বলেছেন, খাঞ্চা যার মধ্যে শাক-সব্জী ছিল। আর লায়স ও আবূ সাফওয়ান (রহঃ) ইউনুস (রহঃ) হতে রিওয়ায়াত বর্ণনায় 'قَدرِ' এর বর্ণনা উল্লেখ করেননি। [ইমাম বুখারী (রহঃ) বলেন] -'قَدرِ' এর বর্ণনা যুহরী (রহঃ)–এর উক্তি না হাদীসের অংশ তা আমি বলতে পারছি না।
ihadis.com, সহিহ বুখারি , হাদিসঃ ৭৩৫৯ , সহিহ হাদিসঃ জাবির ইব্‌নু ‘আবদুল্লাহ্‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ যে ব্যক্তি কাঁচা রসুন কিংবা পেঁয়াজ খায়, সে যেন আমাদের থেকে কিংবা আমাদের মাসজিদ থেকে আলাদা থাকে। আর সে যেন তার ঘরে বসে থাকে। এরপর তাঁর কাছে একটি পাত্র আনা হল। বর্ণনাকারী ইবনু ওয়াহ্ব (রাঃ) বলেন, অর্থাৎ শাক-সব্জির একটি বড় পাত্র। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সেই পাত্রে এক প্রকার গন্ধ পাওয়ায় সে সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলেন। তাঁকে পাত্রের মধ্যকার শাক-সব্জি সম্পর্কে জানানো হল। তিনি তা এক সহাবীকে খেতে দিতে বললেন যিনি তাঁর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন। এরপর তিনি যখন দেখলেন, সে তা খেতে অপছন্দ করছে তখন তিনি বললেনঃ খাও, কারণ আমি যাঁর সঙ্গে গোপনে কথোপকথন করি, তুমি তাঁর সঙ্গে তা কর না।
ihadis.com, সহিহ মুসলিম , হাদিসঃ ১১৪০ , সহিহ হাদিসঃ জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ আবুত্‌ ত্বহির-এর বর্ণনায় (আরবি) এবং হারমালাহ্‌-এর বর্ণনায় (আরবি) উল্লেখিত হয়েছে। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি রসুন ও পিঁয়াজ খায় তার উচিত আমাদের থেকে দূরে থাকা অথবা আমাদের মসজিদ থেকে সরে থাকা কিংবা বাড়ীতে বসে থাকা। কোন এক সময় তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর কাছে শাক-সব্জি ভর্তি একটি ডেকচি আনা হলে তিনি তাতে খাবার গন্ধ দেখে তাতে কি আছে জানার জন্য জিজ্ঞেস করলেন। তাতে কি ধরনের সব্জি আছে তাকে তা জানানো হলে তিনি তখন তার কোন তার সহাবীর কাছে তা নিয়ে যেতে বললেন। এ কথা জেনে সহাবীও তা খাওয়া পছন্দ করলেন না। তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে বললেনঃ তুমি খেতে পার। কারণ আমি যার (মালায়িকাহ্‌) সাথে কথা বলি তোমাকে তো তার সাথে কথা বলতে হয় না।
ihadis.com, সহিহ মুসলিম , হাদিসঃ ১১৪৩ , সহিহ হাদিসঃ আবু সা’ঈদ আল খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, খায়বার বিজিত হল। আমরা এখনো ফিরে আসিনি। ইতোমধ্যে আমরা, অর্থাৎ রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সাহাবীগণ ঐ সব্জি অর্থাৎ- রসুনের উপর ঝাঁপিয়ে পড়লাম। কারণ লোকজন সবাই ছিল ক্ষুধার্ত। এরপর আমরা মাসজিদে গেলাম। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রসুনের গন্ধ পেয়ে বললেনঃ যে ব্যক্তি এ কদর্য গাছ তথা সব্জি খাবে সে যেন মাসজিদে আমাদের নিকটেও না আসে। এ কথা শুনে সবাই বলতে শুরু করল রসুন হারাম হয়ে গিয়েছে। রসুন হারাম হয়ে গিয়েছে। কিন্তু নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর কাছে এ খবর পৌঁছলে তিনি লোকজনকে সাক্ষ্য করে বললেনঃ হে লোক সকল! আমার জন্য আল্লাহ তা’আলা যা হালাল করে দিয়েছেন তা হারাম করার ক্ষমতা আমার নেই। তবে রসুন এমন একটি সব্জি (গাছ) যার গন্ধ আমি অপছন্দ করি।
ihadis.com, সহিহ মুসলিম , হাদিসঃ ১১৪৪ , সহিহ হাদিসঃ আবু সা’ঈদ আল খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেছেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একটি পিঁয়াজের ক্ষেতে গেলেন। সাথে তাঁর সাহাবীগণও ছিলেন। কিছু সংখ্যক সহাবী ঐ ক্ষেতের পিঁয়াজ খেলেন এবং অবশিষ্ট সাহাবী খেলেন না। এরপর আমরা সবাই রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর কাছে গেলাম। কিন্তু যারা পিঁয়াজ খাননি তিনি তাদেরকে প্রথমে কাছে ডেকে নিলেন। আর অন্যদেরকে যারা পিঁয়াজ খেয়েছিল পিঁয়াজের গন্ধ দূর না হওয়া পর্যন্ত কাছে ডাকলেন না।
ihadis.com, সহিহ মুসলিম , হাদিসঃ ১১৪৫ , সহিহ হাদিসঃ ........................... রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মাসজিদের কোন লোকের মুখ থেকে ঐ দু’টি জিনিসের গন্ধ পেলে তাকে বের করে দিতে আদেশ করতেন। আর তাদেরকে বাক্বী’র দিকে বের করে দেয়া হত। তবে কেউ এ দু’টি জিনিস (পিঁয়াজ ও রসুন) খেতে চাইলে যেন রান্না করে গন্ধ দূর করে নেয়।
ihadis.com , সুনানে আন নাসায়ী, হাদিসঃ ৭০৮ , সহিহ হাদিসঃ মা’দান ইব্‌ন আবূ তালহা (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ উমর ইব্‌ন খাত্তাব (রাঃ) বলেছেন, হে লোক সকল ! তোমরা দু’প্রকার সবজি খেয়ে থাক। আমি এতদুভয়কে নিকৃষ্ট মনে করি। তা হলো পিঁয়াজ এবং রসুন। আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে দেখেছি, যখন তিনি কারও নিকট থেকে এর গন্ধ পেতেন, তখন তাকে বের করে দেয়ার নির্দেশ দিতেন। এরপর তাকে বাকী’-এর দিকে বের করে দেয়া হতো। অতএব যে ব্যক্তি তা খায়, সে যেন তা পাকিয়ে গন্ধমুক্ত করে ফেলে।
ihadis.com , সুনানে আবু দাউদ , হাদিসঃ ৩৮২৭ , সহিহ হাদিসঃ মু’আবিয়াহ ইবনু কুররাহ (রহঃ) হতে তার পিতার সূত্র থেকে বর্ণিতঃ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দু’টি গাছ খেতে বারন করেছেন। তিনি বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি ঐ গাছ দু’টো খাবে সে যেনো অবশ্যই আমাদের মাসজিদে না আসে। তিনি আরো বলেছেনঃ তোমাদের যদি একান্তই এটা খেতে হয় তাহলে রান্না করে দুর্গন্ধ দুর করে খাও। বর্ণনাকারী বলেন, গাছ দু’টি হলো পিয়াজ ও রসুন।
ihadis.com , সুনানে আবু দাউদ , হাদিসঃ ৩৮২৮ , সহিহ হাদিসঃ ‘আলি (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, কাচাঁ রসুন খেতে নিষেধ করা হয়েছে। রান্না করে খাওয়াতে দোষ নেই।


🔄  = রসূন ও পেঁয়াজ বিষয় আরও বিস্তারিত বলা হয়েছে নিচের রেফারেন্সের বিশুদ্ধ হাদিস সমূহেঃ
ihadis.com, সহিহ বুখারি, হাদিসঃ ৪২১৫, সহিহ হাদিস ।
ihadis.com, সহিহ মুসলিম , হাদিসঃ ১১৪১ , সহিহ হাদিস ।
ihadis.com, সহিহ মুসলিম , হাদিসঃ ১১৪২ , সহিহ হাদিস ।
ihadis.com, সহিহ মুসলিম , হাদিসঃ ৫২৫৩ , সহিহ হাদিস ।
ihadis.com, সুনানে আন নাসায়ী , হাদিসঃ ৭০৭ , সহিহ হাদিস ।
ihadis.com , সুনানে আবু দাউদ , হাদিসঃ ৩৮২২ , সহিহ হাদিস ।
ihadis.com , সুনানে আবু দাউদ , হাদিসঃ ৩৮২৬ , সহিহ হাদিস ।
ihadis.com, জামে আত তিরমিজি , হাদিসঃ ১৮০৬ , সহিহ হাদিস ।
ihadis.com, জামে আত তিরমিজি , হাদিসঃ ১৮০৭ , সহিহ হাদিস ।
ihadis.com, জামে আত তিরমিজি , হাদিসঃ ১৮০৮ , সহিহ হাদিস ।
ihadis.com, সুনানে ইবনে মাজাহ , হাদিসঃ ১০১৫ , সহিহ হাদিস ।
ihadis.com , সুনানে ইবনে মাজাহ , হাদিসঃ ৩৩৬৩ , সহিহ হাদিস ।

 উপরের সকল বিশুদ্ধ তথ্য প্রমান থেকে আমরা জানতে পারলামঃ
১/ নবীজি মুহাম্মদ (সা) পেঁয়াজ রসূন খেতে এই কারনে নিষেধ করেছেন যে পেঁয়াজ ও রসূন কাঁচা খেলে মুখ থেকে বাজে গন্ধ বের হয় ।
২/ নবীজি মুহাম্মদ (সা) সাহাবীদেরকে পেঁয়াজ রসূন খেতে বলেছেন ।
৩/ পেঁয়াজ রসূন খেলে মুখ না পরিস্কার করে মসজিদে এবং মানুষের কাছে আসা ভাল না এতে মুখের গন্ধে মানুষ ইতস্ত বোধ করবে ।
৪/ পেঁয়াজ ও রসূন রান্না করে খাওয়া উচিৎ যেন খাদ্য থেকে গন্ধ না আসে ।
৫/ নবীজি মুহাম্মদ (সা) কখনো বলেননি যে পেঁয়াজ রসূন খেও না বরং গন্ধ আসার কারনে দূরে যেয়ে খেতে বলেছেন ।
৬/ নাস্তিক ধর্মের অন্ধ বিশ্বাসীরা যে দাবি করেছে "ইসলামে পেঁয়াজ রসূন খাওয়া নিষেধ" এই কথা নিঃসন্দেহে ভুল ।
৭/ পেঁয়াজ রসূন খাদ্যের ব্যাপারে ইসলামে আইন হল ঐচ্ছিক আইন অথবা অপশনাল আইন অর্থাৎ কেউ চাইলে পেঁয়াজ রসূন খেতে পারে আবার নাও পারে তবে শর্ত হল যদি খায় তাহলে খাওয়ার পরে মুখ পরিস্কার করবে যেন মুখ থেকে বাজে গন্ধ না আসে , মুখে গন্ধ নিয়ে মসজিদে যাওয়া ভাল নয় এতে অন্য মানুষদের কষ্ট হওয়া স্বাভাবিক ।
৮/ নাস্তিক ধর্ম যেহেতু ইসলামের বিপরীত তাই নাস্তিকরা ইসলামের বিরোধিতা করতে হলে মুখে গন্ধ রাখতে হবে এবং মুখের গন্ধে যেন অন্য খগেনরা কষ্ট পায় সে দিকেও লক্ষ্য রাখতে হবে নাইলে ইসলামের বিরোধিতা করা হবে কিভাবে ?
৯/ মানুষের কষ্ট হবে তাই মুখে গন্ধ নিয়ে অন্য মানুষের সাথে কথা না বলাই ইসলামের শিক্ষা পক্ষান্তরে নাস্তিক ধর্ম যেহেতু ইসলামের বিপরীত তাই ইসলামের বিরোধিতা করতে হলে সকল সহিহ নাস্তিকদের মুখ পরিস্কার করতে পারবে না অর্থাৎ মুখে গন্ধ নিয়েই মানুষের সাথে কথা বলতে হবে । তানা হলে ইসলামের বিরোধিতা সঠিক ভাবে করবেন কিভাবে ?
১০/ সুতরাং পেঁয়াজ রসূন খাওয়া ইসলামে নিষেধ না বরং পেঁয়াজ রসূন খেতে হলে ইসলাম কিছু শর্ত দিয়ে দেয় সেগুলা মানলেই খাওয়া যাবে । নবীজি মুহাম্মদ (সা) পেঁয়াজ ও রসূনের গন্ধ লাইক করতেন না তাই তিনি খেতেন না কিন্তু কেউ খেলে তিনি নিষেধও করতেন না । এটাই ইসলামের সিস্টেম ।
এমডি আলী

যিনি একজন লেখক, বিতার্কিক ও গবেষক। বিভিন্ন ধর্ম ও মতবাদ বিষয় পড়াশোনা করেন। ইসলামের সত্যতা মানুষের কাছে ছড়িয়ে দিতে চান। “সত্যের অনুভূতি” উনার লেখা প্রথম বই। “ফ্যান্টাস্টিক হামজা” দ্বিতীয় বই। জবাব দেবার পাশাপাশি নাস্তিক মুক্তমনাদের যৌক্তিক সমালোচনা করে থাকেন।

Previous Post Next Post