যুবকদের বদ অভ্যাস হতে সহজে মুক্তির উপায়।

 



📶 বিষয়ঃ

যুবকদের বদ অভ্যাস হতে সহজে মুক্তির উপায়। 

✍ লিখেছেনঃ

 এম ডি আলী। 


📯 ভুমিকাঃ আমাকে ইনবক্সে অনেকেই প্রশ্ন করে যে ভাইয়া মাস্টারবেশন থেকে কিভাবে মুক্তি পাবো। ভাইয়া আমি এটা থেকে বের হয়ে আসতে পারতেসিনা। আপনি এই বিষয় কিছু একটা লেখেন ভাইয়া। ইত্যাদি ইত্যাদি।

আমি আসলে এই টাইপের প্রশ্নের রিপ্লাই দেই না। বা আমার সাব্জেক্ট এই বিষয় নিয়েও নয়, পছন্দও করি না। একটা কথা মনে পরে গেল আমার এক বন্ধু আমাকে এই সমস্যার কথা জানালে আমি তাকে বলেছিলাম সাথে সাথে ওজু করে দুই রাকাত নফল নামাজ পরবি। এটা করার ফলে সে নাকি এই বদ অভ্যাস থেকে প্রায়ই বের হয়ে এসেছিল। পুরোনো দিনের কথা মনে পরার সাথে সাথে ভাবলাম এই বিষয়ে একটা কিছু লিখেই ফেলি। যুবকরা উপকৃত হোক। ইদানিং এতোই মেসেজ আসছে যে এটা নিয়ে লিখতে বাধ্য হলাম। 

যে সমাজে আধুনিকতার নামে অশ্লিলতার সয়লাব সেই সমাজের যুবকরা এই বদ অভ্যাসে যাবেই কিন্তু অনেক যুবকরা আছে যারা এ মহামারী থেকে নিজেকে রক্ষা করতে চান কিন্তু তারপরেও পারে না । তাদের জন্যই আজকে আমার কিছু সহজ টিপস। একদম সহজ এবং এটা করলে আপনি এই বদ অভ্যাস থেকে বের হয়ে আসতে পারবেনই ইনশাআল্লাহ। আপনাকে টিপস গুলো ফলো করতেই হবে।

অনেকে বলে মাস্টারবেশন অল্প করলে সমস্যা নেই। আমি এই কথার মারাত্মক বিরুদ্ধে। কারন এই অল্প করতে করতেই একদিন চরম আসক্তি হয়ে যাবে আপনি টেরও পাবেন না। অল্প তো গাঁজা বিড়ি খেলেও কিছু হয় না তার মানে কি এগুলা খাওয়া যাবে নাকি? একদম না। সুতরাং অল্প করলে কিছু হবে না এসব কথা এই মুহুর্তে চিন্তা থেকে ঝেড়ে ফেলুন।

বক্সিং, কুংফু, কারাতে, দৌড় প্রতিযোগিতার খেলোয়াড়রা কখনোই মাস্টারবেশন করে না। কেন জানেন? তারা জানে এটা যদি তারা করে তাহলে তাদের খেলার পারফর্মেন্স দুর্বল হয়ে যাবে। এটা করলে আত্মবিশ্বাস অনেকটাই ডাউন হয়ে যায় তাই। যারা জিম করে অথবা যারা পালোয়ান তাদেরকে ছোট বেলা থেকেই ট্রেনিং দেয়া হয় এবং যখন যুবক বয়স আসে তখন এটা থেকে বেঁচে থাকার জন্য এদেরকে খুবই সচেতন করা হয় এবং আলাদা নজরদারিতে রাখা হয়।

আপনাকে মাথায় এটা গেঁথে দিতে হবে যে এই হস্তমৈথুন থেকে আপনাকে মুক্তি পেতেই হবে। এই জাগায় যদি আপনার ইচ্ছা দুর্বল হয় তাহলে আপনাকে নাসা থেকে বিজ্ঞানীদেরকে রিক্সা ভাড়া দিয়ে আনলেও বাঁচানো সম্ভব না। আপনার ইচ্ছা হবে বিশাল পাহাড়ের মতো শক্তিশালী যাকে বোমা মেরেও দুর্বল করা যাবে না। প্রথমে নিজের মনকে শক্তিশালী করুন। হ্যাঁ, এবার চলুন সামনে আগাই। 

আপনি যদি নিচে দেয়া টিপস গুলো হুবহু ফলো করেন আমি ইনশাআল্লাহ নিশ্চিত করে বলতে পারি আপনি পারবেন এই সমস্যা হতে মুক্তি পেতে। নিজেকে বুঝান অনেক ছেলে আছে যারা কখনোই হস্তমৈথুন করে না। তারা পারলে আমি কেন পারবো না? হ্যাঁ আমি পারবো।  আমাকে পারতেই হবে ইনশাআল্লাহ। প্রচুর আত্মবিশ্বাসী এবং সাহসী হোন। 

মাত্র ৪০ দিন অথবা তিনমাস নিচে দেয়া সম্পুর্ন নতুন টিপস গুলো ফলো করুন আপনি এই হস্তমৈথুন থেকে সম্পূর্ণ মুক্তি পাবেন। বিয়ের আগ পর্যন্ত টিপস গুলো ফলো করা বেস্ট আপনার জন্য। 

👉 টিপস ১ 

যখন উত্তেজনা অথবা করতে ইচ্ছা করবে সাথে সাথে কোনো কিছু চিন্তা না করেই আপনি বিল্ডিং উপর তলা থেকে নিচ তলা এবং নিচ তলা থেকে উপর তলা হেটে আসুন। দ্রুত হাটাহাটি করতে পারলে উত্তম। এভাবে পাচবার করুন। হস্তমৈথুনকে নিয়ন্ত্রণ করা আপনার কাছে একেবারে পানির মতো সহজ হয়ে যাবে।

যদি করতে পারেন আপনি এই বদ অভ্যাসের বিরুদ্ধে জয় পাবেন নিশ্চিত থাকুন।

👉 টিপস ২ 

রাত ৯ টার পরে মোবাইল ব্যবহার নিজের জন্য নিষিদ্ধ করুন। আলমারিতে তালা মেরে রাখুন। সন্ধার পরেই মোবাইল না ব্যবহার করা ভালো। এটা করলে আপনি কি থেকে রক্ষা পাবেন সেটা আপনি নিজেও জানেন। আলাদা করে আর বললাম না৷ রাতের বেলা হস্তমৈথুনের অভ্যাস থাকলে কারো সাথে রুম শেয়ার করুন। বা দরজা জানালা খোলা রেখে আলো জ্বালিয়ে ঘুমান। তাহলে রাতে চাইলেও করতে পারবেন না। সহজ হিসাব।

👉 টিপস ৩ 

সকালে দশ মিনিট একা রুমে চোখ বন্ধ রেখে এটা বার বার বলুন "যতো যাই হোক আমি আর হস্তমৈথুন করমুই না, আমি মইরা গেলেও এই খারাপ কাজ করমু না" এমন একটা আত্মবিশ্বাস নিজে নিজে সৃষ্টি করুন যে আপনি "বদ অভ্যাস এর বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করলেন" এভাবে একাধিকবার বললে আপনার মস্তিস্কে একটা শক্তি সৃষ্টি হবে যেটা আপনাকে এই বদ অভ্যাস থেকে মুক্তি দিতে সাহায্য করবে। ফজরের নামাজ শেষে মসজিদে যদি মনে মনে এটা করতে পারেন তাহলে ম্যাজিকাল একটা রেজাল্ট পাবেন আশা করি। করে দেখতে পারেন। 

👉 টিপস ৪

আজকে থেকেই জিমে ভর্তি হয়ে যান এবং এক্সারসাইজ করুন। নিজেই বুঝতে পারবেন আপনি কতটা শক্তিশালী এই বদ অভ্যাস থেকে মুক্তির জন্য। যখন জিম করবেন মনে মনে ভাববেন আপনি এই বদ অভ্যাসের বিরুদ্ধে লড়াই করছেন। জিম করলে খুবই সহজে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ কর‍তে পারবেন।

👉 টিপস ৫

উপরের টিপস গুলা ঠিক মতো মানতে পারলে। ছোট ছোট টার্গেট সেট করুন। ধরুন প্রথম টার্গেট টানা দুইদিন হস্তমৈথুন করবেন না। দুইদিন না করে পারলে ধীরে ধীরে সময় বাড়াবেন। এবার আপনি একটা খাতায় একটা হিসাব রাখবেন কতবার করলেন এবং কতবার করেননি। যদি দেখেন একমাসে দশবার করছেন তাহলে পরের মাসে সেই সংখ্যা কমিয়ে আনার জন্য নিজের সাথে লড়াই করতে থাকুন। এভাবে একমাসে পাচ বার, চারবার এভাবে ধিরে ধিরে বদ অভ্যাসটাকে হারিয়ে ফেলুন। হস্তমৈথুনে চরম ভাবে এডিক্টেড হলে কখনোই একা থাকবেন না, ঘরে সময় কম কাটাবেন, বাইরে বেশি সময় কাটাবেন। জগিং করতে পারেন, সাইকেল নিয়ে ঘুরে আসতে পারেন। ছাত্র হলে ক্লাসমেটদের সাথে একসাথে পড়াশুনা করতে পারেন। লাইব্রেরি বা কফি শপে গিয়ে সময় কাটাতে পারেন।

👉 টিপস ৬

যে সময়ে করতে ইচ্ছা করে সেই সময় গুলো একটা খাতায় লিখে রাখেন অথবা মনে রাখুন। যখনই সেই সময় আসবে তখনই ইচ্ছা করে এমন একটা কাজে নিজেকে বিজি রাখেন যেন সেই কাজ আপনি চাইলেও করতে পারবেন না। যেমন হতে পারে বাজার করতে চলে গেলেন, এটা না পারলে ঘরেই ১০০ বা ৫০ বার জাম্পিং জ্যাক এক্সারসাইজ বা যে কয়টা পারেন বুক ডাউন দিলেন। এটা করলে আপনার হস্তমৈথুন করার ইচ্ছাটা শেষ হবে কিছুক্ষনের জন্য। এই সুযোগ আপনি লুফে নিবেন। আবার উত্তেজনা আসলে আবার এই টিপস ফলো করবেন। দেখবেন নিজের কাছেই ভাল লাগবে। জয় পাওয়ার আনন্দ যাকে বলে।

👉 টিপস ৭ 

যদি ঘরে একা থাকেন আর খুবই করতে ইচ্ছা করে তাহলে সাথে সাথে ওজু করে দুই রাকাত নফল নামাজ পড়ুন। আবার ইচ্ছা করলে আবার ওজু করে নামাজ  পড়ুন। সেজদার সময় মনে মনে দুয়া করবেন আল্লাহ আমাকে আপনি এ সমস্যা থেকে রক্ষা করেন। এভাবে এক সপ্তাহ করুন। নিজেই একটা অলৌকিক রেজাল্ট পাবেন। 

👉 টিপস ৮

যখনই মনে খারাপ চিন্তা আসবে তখনই সাথে সাথে গুনে গুনে ৪০ বার, বা একশবার অথবা দুইশবার "লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ" জিকির করবেন। "আল্লাহু" জিকিরও ৪০০ বার করতে পারেন। এতে সাথে সাথে মন থেকে সেসব খারাপ চিন্তা দূর হয়ে যাবে। যখন দূর হয়ে যাবে তখন সাথে সাথে ওজু করে নিবেন এতে মনে প্রশান্তি আসবে। এটা ম্যাজিকের মতো কাজ করবে সাথে সাথে। আজকেই পরীক্ষা করে দেখতে পারেন। 

🎞🎞🎞

মাস্টারবেশন কেন এখনোই ছেড়ে দেয়া দরকার। এই বিষয় গুরুত্বপূর্ণ ৫ টি ভিডিও সম্পুর্নটা দেখুন। আশা করি অনেক অনুপ্রেরণা পাবেন ভিডিও গুলো সব দেখার পরে। 

1  https://youtu.be/da9aE7FX-dI


2  https://youtu.be/6yz1zYiCyD0


3  https://youtu.be/a0MaJePI3No


4  https://youtu.be/K3nSjE7viTs


5  https://youtu.be/seciRS9PF7M


💐💐💐

এমডি আলী

যিনি একজন লেখক, বিতার্কিক ও গবেষক। বিভিন্ন ধর্ম ও মতবাদ বিষয় পড়াশোনা করেন। ইসলামের সত্যতা মানুষের কাছে ছড়িয়ে দিতে চান। “সত্যের অনুভূতি” উনার লেখা প্রথম বই। “ফ্যান্টাস্টিক হামজা” দ্বিতীয় বই। জবাব দেবার পাশাপাশি নাস্তিক মুক্তমনাদের যৌক্তিক সমালোচনা করে থাকেন।

Previous Post Next Post