🚩বিষয়ঃ মুনাফিকদের নিয়ে নাস্তিকরা কিভাবে সরলমনা মানুষদের সাথে প্রতারণা করে?
✍ লিখেছেনঃ এম ডি আলী।
ভুমিকাঃ ইসলামের ইতিহাস নিয়ে যারা গবেষণা করেন তারা খুব ভাল করে জানেন যে মুনাফিক নামের কিছু মানুষ ইসলামের ইতিহাসেও ছিল এবং এই যুগেও আছে,সামনেও থাকবে । এদের বিষয় নবীজি (সা) আমাদেরকে সচেতন করেছেন। কেন? কারন এরা নিজেদেরকে মুসলিম পরিচয় দেয় ঠিকই কিন্তু তলে তলে ইসলামের চরম শত্রুতা পোষণ করে।আমাদেরকে সাবধান হতে হবে। এই যুগেও পাক্কা মুনাফিক আছে। দেখতে পুরো মুসলিমের মতোই যেমন দাঁড়ি আছে, একতলা টুপি আছে,পাঞ্জাবি পরিহিত আরও কত কি! শুধু রুহানি চোখ দরকার এদের মতো বদমাইশদের সনাক্ত করতে।
👉 মুনাফিকদের নিয়ে কুরআন-সুন্নাহ কি বলে?
* সুরা বাকারা ২ঃ৮ = আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, ‘আর মানুষের মধ্যে এমন কতিপয় লোক আছে, যারা বলে আমরা আল্লাহ ও আখিরাতে ঈমান এনেছি, অথচ তারা মুমিন নয়।
* সুরা মুনাফিকুন ৬৩ঃ১ = যখন মোনাফেকরা তোমার কাছে আসে, তখন বলে, “আমরা সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আপনি অবশ্যই আল্লাহর রসূল।” আল্লাহ জানেন যে, তুমি অবশ্যই তাঁর রসূল; তবে আল্লাহ সাক্ষ্য দিচ্ছেন যে, মোনাফেকরা অবশ্যই মিথ্যাবাদী।
* ihadis.com, সুনানে আন-নাসায়ী, হাদিস নং ৫০৩৭, সহিহ হাদিসঃ ইব্ন উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ মুনাফিকের উদাহরণ ঐ বকরীর ন্যায়, যে দুই বকরীর পালের মধ্যস্থলে থাকে। কখনও এই পালের দিকে আসে, কখনও ঐ পালের দিকে যায়, সে বুঝতে পারেনা সে কোন দলের সাথে থাকবে।
👉 মুনাফিকদের ষড়যন্ত্র নাস্তিকতার অন্তরালেঃ
যখন ইসলামের শত্রুরা তথ্য, যুক্তি, বিজ্ঞান, প্রমান, দর্শন ইত্যাদিকে ইসলামের বিরুদ্ধে ভুল ভাবে, মিথ্যা দৃষ্টিতে, অপব্যাখ্যার প্রয়োগ করেও ইসলামের সত্যতার সাথে পেরে উঠে না ঠিক তখনই এরা একটা ফাঁদ পাতে। নাস্তিকদের উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন করবে এমন কিছু মানুষ, যারা নিজেদেরকে মুসলিম দাবি করবে ঠিকই কিন্তু আসলে তারা মুসলিম না। এরা বই লিখবে ইসলামের পক্ষে দুর্বল যুক্তি দিয়ে যাতে মানুষকে সহজেই ধোকা দেয়া যায়।
মানুষ যখন মেলায় গিয়ে এদের বই কিনে পড়বে তখন এদের অজ্ঞতাবশত যুক্তি পড়ে ভাববে ইসলামের যুক্তি কি এতো দুর্বল? অথচ সেই মুনাফিকরা মুসলিম নাম ব্যবহার করে ইচ্ছা করেই মিথ্যা যুক্তি দিয়ে ইসলামের পক্ষে বই লিখে। যখন ফেমাস হবে কৌশলে নিজেকে নাস্তিক হিসেবে অনলাইনে দেখাবে আর জার্মান ভিসার সাথে সেই দেশের সাদা চামড়ার নারীরা তো ফ্রিই। এদের দেখে সাধারণ মানুষ প্রতারণার স্বীকার হবে। কে বুঝাবে এই সাধা সিধা অবলা মুসলিমদেরকে যে ওরা ইচ্ছা করেই এরকম ধোঁকাবাজি করে? নাস্তিক্যধর্মে প্রতারণা, মিথ্যা কথা বলা, তথ্য চুরি করা, সত্যকে মিথ্যায় রূপান্তর করা ইত্যাদি ব্যক্তিস্বাধীনতা হবে নাস্তিকদের যুক্তি অনুপাতে?
খেয়াল করে দেখবেন এই টাইপের মুনাফিকদের বই নাস্তিকরা প্রমোট করে যেন মুসলিমরা এদের বইগুলো মেলা থেকে কিনে নেয়। মুনাফিকদের সুনাম করে নাস্তিকরা অথচ যুক্তিবাদী সত্য মুসলিম গবেষকদের দুই চোখেও সহ্য করতে পারে না মুনাফিকরা। একটা আয়াত মনে আসলো সুরা আল ইমরান ৩ঃ৫৪ = তারা (অবিশ্বাসীরা) ষড়যন্ত্র করেছিল আর আল্লাহও (তাদের ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে পাল্টা) কৌশল করেছিলেন। আল্লাহ হচ্ছেন সেরা কৌশলকারী।
একজন খাটি মুসলিম যখন শক্তিশালী প্রমান দিয়ে ইসলামের পক্ষে লিখবে তখন সেই মুনাফিকরা নাস্তিকদের কাছে গিয়ে মুসলিমদের বিরুদ্ধে কথা বলবে। আসলে ওরা এভাবেই কাজ করে যাচ্ছে। আরও অনেক সিস্টেমে ইসলামের শত্রুরা কাজ করে। আমার তো মনে হয় শয়তান নিজেও এদের দেখে শয়তানীর সবক আদায় করে! আসলে যারা ইসলামের সমালোচনা করে মাক্সিমাম এদের সাথে সততার সম্পর্ক নাই। মিথ্যা বলা, ভুল ব্যাখ্যা করা এগুলো সহজ ব্যাপার হয়ে গেছে নাস্তিকদের কাছে। এদের বিবেককে এরা ধ্বংস করে দিয়েছে। বিবেকবুদ্ধি দিয়ে সত্য জানার অনুভুতিটাই এরা হারিয়ে ফেলেছে।
যারা ফেসবুক ব্যবহার করেন তাদেরকে বলবো, কেউ দুই একটা ইসলামের বই লিখলেই তাকে মহাবিশ্বের একমাত্র জ্ঞানী ইনিই এই ধরনের চিন্তা করবেন না। যাচাই করুন, ভাবুন, সচেতন থাকুন। আপনাকে অন্ধকারের চিপা থেকে আলোতে নিয়ে আসতেসে দাবি করছে অথচ ইসলামের শত্রুদের সাথে তার সম্পর্ক এক্কেবারে লাইলি মজনুর মতো! এই টাইপের মানুষ আসলে কতটা ক্ষতিকর ইসলামের জন্য ভেবেছেন? তাই এখনো সময় আছে নিজে সাবধান থাকুন অন্য ভাইদেরকেও সচেতন করুন লেখাটি ছড়িয়ে দিন সবার মাঝে।
পরিশেষ আমার প্রিয় রাসুলের কথা দিয়েই আজকে ইতি টানবো।
* ihadis.com, সহিহ বুখারী, হাদিসঃ২১৪২,সহিহ হাদিসঃ ইবনু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) প্রতারণামূলক দালালী হতে নিষেধ করেছেন।