লিখেছেনঃ এমডি আলী।
====================
ভূমিকাঃ ইসলামের ভুল ধরে ফেলেছি দাবি করা নাস্তিকদের কথিত অভিযোগ গুলো যখন নিরপেক্ষভাবে যাচাই করা হয় তখন কোনো দিক থেকেই এটা মনে হয় না নাস্তিকরা ইসলামের ভুল আসলেই ধরতে পেরেছে উল্টো নাস্তিকরা মুক্তমনে মিথ্যাচার করতে পেরেছে এটাই দৃশ্যমান হয়ে যায়। যদিও চিন্তার মুক্তির আন্দোলন নামে ইসলাম নিয়ে জালিয়াতি করা নাস্তিকদের নতুন কোনো অভ্যাস নয়। সূর্য আরশের নিচে সেজদা দেয় হাদিসকে নাস্তিকরা নিজেদের মতো ব্যাখ্যা করে ইসলামের ভুল ধরে ফেলেছি বলে আহা কি আনন্দ আকাশে বাতাসে মনে করে, মনে মনে কলা খেলেও উক্ত হাদিসটি প্রকৃত অর্থে কি বুঝিয়েছে সেটা কখনোই মানুষকে জানতে দিতে চাইবে না। এনিমেলের বংশধর নাস্তিক গুলো না হয় মনে মনে কলা খাক কিন্তু আমরা যারা চিন্তাশীল আছি,সত্য সন্ধানী আছি তারা জেনে নেই উক্ত হাদিসের মর্মার্থ কি?
সূর্য আরশের নিচে সেজদা দেয় হাদিসটিঃ
নাস্তিকরা একটি হাদিস দেখিয়ে নিজেরা ব্যাখ্যা করে বলে,
হাদিস থেকে বুঝা যাচ্ছে সূর্য পৃথিবীর চারদিকে ঘুরে কারণ হযরত মোহাম্মদ (সা) বলেছে সূর্য আল্লাহর অনুমতি নিয়ে উদয় হয় আবার অস্ত যায় আবার নাকি সিজদাও দেয়। কিন্তু আমরা জানি সূর্য উদয় হয় না আবার অস্ত যায় না বরং পৃথিবীর আত্মিক গতির কারণে আমরা দেখি সূর্য উদয় হয় আর অস্ত যায়। যেহেতু ইসলামের নবী বলেছে সূর্য অনুমতি নেয় এরপরেই নাকি ঘুরে অথচ সূর্য নিজ অক্ষে সর্বদাই চলমান। সুতরাং এই হাদিসটি বৈজ্ঞানিক ভুল।
সহিহ মুসলিম, হাদিসঃ ২৮৯, সহিহ হাদিসঃ আবূ যার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃএকদিন নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, তোমরা কি জান, এ সূর্য কোথায় যায়? সহাবাগণ বললেন, আল্লাহ ও তাঁর রসূলই ভাল জানেন। তিনি বললেন, এ সূর্য চলতে থাকে এবং (আল্লাহ তা’আলার) ‘আর্শের নীচে অবস্থিত তার অবস্থান স্থলে যায়। সেখানে সে সাজদাবনত হয়ে পড়ে থাকে। শেষে যখন তাকে বলা হয়, উঠ এবং যেখান থেকে এসেছিলে সেখানে ফিরে যাও! অনন্তর সে ফিরে আসে এবং নির্ধারিত উদয়স্থল দিয়েই উদিত হয়। তা আবার চলতে থাকে এবং ‘আর্শের নীচে অবস্থিত তার অবস্থান স্থলে যায়। সেখানে সে সাজদাবনত অবস্থায় পড়ে থাকে। শেষে যখন তাকে বলা হয় উঠ এবং যেখান থেকে এসেছিলে সেখানে ফিরে যাও। তখন সে ফিরে আসে এবং নির্ধারিত উদয়স্থল হয়েই সে উদিত হয়। এমনিভাবে চলতে থাকবে; মানুষ তার থেকে অস্বাভাবিক কিছু হতে দেখবে না। শেষে একদিন সূর্য যথারীতি ‘আর্শের নীচে তার অবস্থানে যাবে। তাকে বলা হবে, উঠ এবং অস্তাচল থেকে উদিত হও। অনন্তর সেদিন সূর্য পশ্চিমাকাশে উদিত হবে। রসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, (কুরআনের বাণী) “কোন দিন সে অবস্থা হবে তোমরা জান? সেদিন ঐ ব্যক্তির ঈমান কোন কাজে আসবে না, যে ব্যক্তি পূর্বে ঈমান আনেনি কিংবা যে ব্যক্তি ঈমানের মাধ্যমে কল্যাণ অর্জন করেনি”-(সূরাহ আল-আন’আম ৬ : ১৫৮)।-ihadis.com
জবাবঃ নাস্তিকরা যেভাবে ব্যাখ্যা করে বুঝিয়েছে হযরত মোহাম্মদ (সা) কি আসলেই সেটাই বুঝিয়েছেন? অবশ্যই না। তাহলে উক্ত হাদিসটি দেখিয়ে মুক্তচিন্তায় বানোয়াট ব্যাখ্যা দেবার মানে কি? আসুন আমরা প্রমাণ সহ জেনে নিবো হযরত মোহাম্মদ (সা) সত্যিকার অর্থে যা বুঝিয়েছেন। আসলে সূর্য নিজ অক্ষে গতিশীল এবং আল্লাহর নিয়ন্ত্রণে-মূলত এটাই বুঝানোর জন্য রাসুলুল্লাহ (সা) বাহ্যিক ভাবে আমরা যা দেখি অর্থাৎ সূর্যের অস্ত যাওয়া ও উদয় হওয়াকে ইত্যাদি সূর্যের আল্লাহর কাছে অনুমতি চাওয়া হিসেবে উপমা দিয়ে বুঝিয়েছেন। খেয়াল করুন সূর্য অস্ত যাবার সময়ই কিন্তু রাসুল (সা) আবু যর (রা)কে তা বলে, কথা বলতেছিলেন। এমনকি নবীজি (সা) উদাহরণ দিয়ে যা বুঝাতে চেয়েছেন সেটাও পরিস্কার ভাবেই হাদিসে উল্লেখ রয়েছে কিন্তু যেই হাদিসে উল্লেখ রয়েছে সেই হাদিস গুলো মুক্তমনা আন্দোলনের বাহিনীরা কেন জানি দেখাতে চায় না হয়তো তথ্য গোপনের ব্যক্তিস্বাধীনতায় বিশ্বাসী বলে! মিথ্যাকথা বলা নাস্তিক্যধর্মে ব্যক্তিস্বাধীনতা হলেও, সত্য সবারই জানা উচিত। হাদিস গুলো মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।
সহিহ বুখারী, হাদিসঃ ৩১৯৯, সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,
আবূ যার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃতিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম সূর্য অস্ত যাবার সময় আবূ যার (রাঃ)-কে বললেন, তুমি কি জান, সূর্য কোথায় যায়? আমি বললাম, আল্লাহ এবং তাঁর রসূলই ভাল জানেন। তিনি বললেন, তা যেতে যেতে আরশের নীচে গিয়ে সিজদা পড়ে যায়। অতঃপর সে আবার উদিত হবার অনুমতি চায় এবং তাকে অনুমতি দেয়া হয়। আর শীঘ্রই এমন সময় আসবে যে, সিজ্দা করবে কিন্তু তা কবূল করা হবে না এবং সে অনুমতি চাইবে কিন্তু তাকে অনুমতি দেয়া হবে না। তাকে বলা হবে, যে পথ দিয়ে আসলে ঐ পথেই ফিরে যাও। তখন সে পশ্চিম দিক হতে উদিত হয়-- এটাই মর্ম হল মহান আল্লাহর বাণীরঃ “আর সূর্য নিজ গন্তব্যে (অথবা) কক্ষ পথে চলতে থাকে। এটা পরাক্রমশালী, সর্বজ্ঞের নিয়ন্ত্রণ।” (ইয়াসীন ৩৮)-ihadis.com
সহিহ বুখারী, হাদিসঃ ৪৮০২, সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,
আবূ যার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃতিনি বলেন, একদা সূর্য অস্ত যাওয়ার সময় আমি নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সঙ্গে মাসজিদে ছিলাম। তিনি বললেন, হে আবূ যার! তুমি কি জান সূর্য কোথায় ডুবে? আমি বললাম, আল্লাহ্ এবং তাঁর রসূল সবচেয়ে ভাল জানেন। তিনি বললেন, সূর্য চলে, অবশেষে আরশের নিচে গিয়ে সাজদাহ করে। নিুবর্ণিত وَالشَّمْسُ تَجْرِي لِمُسْتَقَرٍّ لَهَا ذَلِكَ تَقْدِيرُ الْعَزِيزِ الْعَلِيمِ এ আয়াতের কথাই বর্ণনা করা হয়েছে, অর্থাৎ সূর্য ভ্রমণ করে তার নির্দিষ্ট গন্তব্যের পানে, এ হল পরাক্রমশালী সর্বজ্ঞের নিয়ন্ত্রণ।-ihadis.com
হাদিসে কিন্তু সরাসরি বলেই দেয়া হয়েছে নবীজি (সা) যেই মর্মে কথা গুলো বুঝিয়েছেন। তাছাড়া হাদিস গুলো মনোযোগ দিয়ে পড়লে এটা সুস্পষ্ট যে সূর্য নিজ অক্ষে চলমান এবং আল্লাহই সূর্যকে নিয়ন্ত্রণ করে এটাই বুঝানোর জন্য নবীজি (সা) সূর্যের অস্ত যাওয়া ও উদয় হওয়াকে আল্লাহর অনুমতি সূর্য নেয় এবং অনুমতি পেলেই আবার উদয় হয় কথা গুলো উপমা দিয়ে বুঝিয়েছেন। সূর্য আরশের নিচে সিজদা দেয় এমনকি আল্লাহর অনুমতি পেয়ে আবার উদিত হয় ইত্যাদি কথা এই উদ্দেশ্যে বুঝিয়েছেন যে সূর্য সম্পূর্ণ আল্লাহর নিয়ন্ত্রণে,আল্লাহই সূর্যকে নিয়ন্ত্রণ করছেন। এরপরে আর হাদিসটি নিয়ে নাস্তিকদের মিথ্যা বলার সুযোগ নেই। নবীজি (সা) যা বুঝিয়েছেন সেই দৃষ্টিভঙ্গিকে সরিয়ে ফেলে মুক্তচিন্তার নামে বানিয়ে বানিয়ে মিথ্যা ব্যাখ্যা করে যাচ্ছে নাস্তিকগোষ্ঠী। তথ্যকে গোপন করে নাস্তিকরা যদি চিন্তার মুক্তির আন্দোলন করতে চায় তাতে আমাদের কিচ্ছুই আসে যায় না কারণ সত্য যে কঠিন তাই কঠিনেরেই ভালোবাসিলাম। পাঠক, সূর্য আরশের নিচে সিজদা দেয় এই হাদিসটি নিয়ে নাস্তিকরা যেই ধরণের প্রতারণার আশ্রয় নেয় তা একটি উদাহরণ দিয়ে বুঝিয়ে দিচ্ছি। বুঝার চেষ্টা করুন।
ধরুন আপনার সন্তানকে বুক সেলফ দেখিয়ে আপনি বলছেন, জানো জ্ঞান কোথায় যায়? আপনার সন্তান বলল, বাবা তুমি ভালো বলতে পারবে। আপনি বললেন, জ্ঞান এইসব বই-পুস্তকে বসবাস করে, কেউ যদি বই পড়ে তাহলে জ্ঞান তার অনুমতি নিয়ে তার মস্তিস্কে চলে যায় আবার যখন পড়াশোনা করে না তখন জ্ঞান অনুমতিও চায় না আর মস্তিস্কেও প্রবেশ করে না, জ্ঞান নিজের স্থানেই বসবাস করে অর্থাৎ যারা পড়াশোনা করে তারা জ্ঞান অর্জন করতে পারে। ধরুন আপনাকে কিছু লোক হিংসা করে, তারা যে আপনাকে হিংসা করে এটা যেনো সহজে মানুষ ধরতে না পারে তাই একে মুক্তচিন্তা নামে চালিয়ে দিলো। তারা করবে কি মুক্তচিন্তার নামে আপনার ভুল ধরবে। কিভাবে? আপনার সন্তানকে বলা আপনার দেয়া উদাহরণের শেষের অংশটুকু সরিয়ে ফেলবে এবং মানুষকে দেখাবে এই যে দেখো এই লোক ভয়াবহ কথা বলেছে যা বৈজ্ঞানিকভাবে ভুল। সে বলে জ্ঞান নাকি মানুষের কাছে অনুমতি চায়, জ্ঞান নাকি মানুষের মতো বসবাস করে এসবই বৈজ্ঞানিক ভুল। পাঠক বুঝে থাকলে এইবার আপনি নিজেই বলুন তো আপনি কি আপনার সন্তানকে আসলেই এসব বুঝিয়েছেন? অবশ্যই না। আপনি বুঝিয়েছেন যারা পড়াশোনা করে তারা জ্ঞান অর্জন করতে পারে আর এই কথাটি বুঝানোর জন্য আপনি জ্ঞানের বসবাস করা, জ্ঞানের অনুমতি চাওয়া,জ্ঞানের প্রবেশ করা এগুলোকে উপমা হিসেবে বলেছেন। আপনাকে হিংসা করে যারা মুক্তচিন্তার নামে মিথ্যা বলেছে তেমনি হযরত মোহাম্মদ (সা)কে নাস্তিকরা অন্ধবিশ্বাস করে ঘৃণা করে সেই ঘৃণাকে মুক্তচিন্তার প্যাকেটে ভরে রাখে যাতে মানুষ বুঝতে না পারে। বোঝা গেছে? পাঠক, শুনলে হয়তো আপনারাও হাসবেন এই মূর্খ নাস্তিক গুলো বলে উক্ত হাদিস থেকে নাকি বোঝা যায় সূর্য পৃথিবীর চারদিকে ঘুরে। কেমন পর্যায়ের ভণ্ড হলে এমন ডাহামিথ্যে বলতে পারে, ভাবুন তো? ইসলাম নিয়ে অন্ধবিশ্বাস করা নাস্তিকরা এটা বিশ্বাস করলেও প্রকৃত অর্থে হাদিসটি তা বুঝায় না। নবীজি (সা) নিজেই যেখানে এটা পরিস্কার করে দিয়েছেন যে সূর্য নিজ অক্ষে গতিশীল আর আল্লাহই সূর্যকে নিয়ন্ত্রণ করছেন এমনকি এটা বুঝানোর জন্যই সূর্যের অস্ত যাওয়া,উদয় হওয়া ইত্যাদিকে সূর্যের আল্লাহর অনুমতি নেয়াকে উদাহরণ দিয়ে বুঝিয়েছেন সেখানে নাস্তিকদের বানানোর ব্যাখ্যা যে ডাহামিথ্যা এটা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করার অবকাশ নেই।
সূর্যকে প্রতিদিন পূর্ব দিক থেকে ধীরে ধীরে পশ্চিম দিকে যেতে দেখা গেলেও সূর্য পৃথিবীর চারদিকে ঘোরে না, বরং সূর্য সৌরজগতের কেন্দ্রে স্থির থাকে তবে সূর্য নিজ অবস্থানে গতিশীল, সূর্যও একটি কক্ষপথ ধরে প্রতিনিয়ত চলছে। সূর্য মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সির কেন্দ্রের চতুর্দিকে একটি কক্ষপথ ধরে অবিরাম চলছে। আমাদের কাছে পৃথিবীর আহ্নিকগতির কারণেই সূর্য পূর্ব থেকে ধীরে ধীরে পশ্চিমে যায় বলে মনে হয়। তারপরও আমরা বলি, সূর্য পূর্ব দিক থেকে উঠে এবং পশ্চিম দিকে অস্ত যায়। আমরা যখন বলি, ‘সূর্য উঠেছে’ বা ‘সূর্য ডুবেছে’ বা ‘সূর্য পূর্ব থেকে পশ্চিমে যায়’ তখন আমরা কি এটা বুঝাই যে সূর্য পৃথিবীর চারদিকে ঘুরছে? অবশ্যই না। তেমনি হাদিসের মধ্যে নবীজি (সা) সূর্য আল্লাহর নিয়ন্ত্রণে তা বুঝাতে গিয়ে আমরা যে দেখছি সূর্য অস্ত যায় আবার উদয় হয়, এই দেখাকে সূর্য আল্লাহর কাছে অনুমতি চায় হিসেবে উপমা দিয়ে বর্ণনা করেছেন তাই বলে এটা প্রমাণ হয় না যে সূর্য পৃথিবীর চারদিকে ঘুরছে।
নাস্তিকদের বিখ্যাত মুক্তমনা হুমায়ুন আজাদ উনার “বুকপকেটে জোনাকিপোকা” বইয়ের ৩৭ পৃষ্ঠায় “উটের গ্রীবার মতো” নামে শিরোনাম দিয়েছেন। সেখানে বর্ণিত হয়েছে,
আমরা বাস করি বাস্তব পৃথিবীতে। একটি মেয়ে ছবি আঁকছে, সূর্য অস্ত যাচ্ছে, মৌলী সপ্ন দেখেছে; এ-ব্যাপারগুলো বাস্তব। অনেক মেয়েই ছবি আঁকতে পারে এবং আঁকে। সূর্য অস্ত যায় প্রতিদিন। সবাই আমরা সপ্ন দেখি, মৌলীও সপ্ন দেখে। এ-ঘটনাগুলোতে অবাস্তবতা কিছু নেই; অলৌকিকতা নেই কোনো। কিন্তু যদি বলি, একটি ছবি একটি মেয়েকে আঁকছে, তবে শিউরে উঠবে অনেকে। ছবি তো মেয়ে আঁকতে পারে না, যদিও কোনোকোনো মেয়ে ছবি আঁকতে পারে। সূর্য অস্ত যায় প্রতিদিন, এবং সারা পৃথিবী ভরে নেমে আসে সিলকের মতো অন্ধকার। তাই সূর্য অস্ত যাচ্ছে কোথায় চমকে উঠবে না কেউ।
নাস্তিকরা বিশ্বাস করে হুমায়ুন আজাদ বিজ্ঞানমনস্ক মানুষ ছিলেন কিন্তু উনার বই থেকে উনি যে বর্ণনা করলেন “সূর্য অস্ত যায় এবং সারা পৃথিবীতে নাকি সিলকের মতো অন্ধকার নেমে আসে”- এসব কথাবার্তা থেকে কেউ যদি বলে হুমায়ুন আজাদ বিশ্বাস করতো সূর্য পৃথিবীর চারদিকে ঘুরছে তাহলে সেই লোকের কথা ঠিক হবে? কেউ যদি বলে যেসব মুক্তমনারা হুমায়ুন আজাদের বই পড়ে নাস্তিক্যধর্মকে বিশ্বাস করেছে সবাই বিশ্বাস করে সূর্য পৃথিবীর চারদিকে ঘুরে কথাটি কি ঠিক হবে? উত্তর হচ্ছে না। কারণ বাহ্যিকভাবে হুমায়ুন আজাদের বই থেকে সেটা মনে হলেও আসলে উনি এটা বুঝায় নাই বরং আমরা যে দেখি সূর্য অস্ত যায়, যার ফলে আমাদের কাছে মনে হয় পৃথিবী অন্ধকার হয়ে গিয়েছে এটাই বুঝিয়েছেন। আমি এমডি আলী হুমায়ুন আজাদের নাস্তিক্যবাদের বিশ্বাসকে যৌক্তিক কারণে অবিশ্বাস করি এমনকি হুমায়ুন আজাদের সমালোচনাও করি কিন্তু তারমানে কি এটা যে হুমায়ুন আজাদকে নিয়ে আমার মিথ্যাকথা বলতে হবে যেভাবে নাস্তিকরা ইসলাম নিয়ে করে যাচ্ছে? অবশ্যই না। সমালোচনা করলে অবশ্যই সততার সাথে করা উচিত কিন্তু চিন্তার মুক্তির আন্দোলন নাম দিয়ে বানিয়ে বানিয়ে ডাহামিথ্যা কথা বলা আর যাই হউক একে সমালোচনা নাম দিলে স্বয়ং “সমালোচনা” শব্দটিকেই অপমান করা হবে।
সূর্য আরশের নিচে সেজদা দেয় পুরো হাদিসটি আসলেই নবীজি (সা) যা বুঝিয়েছেন তা পরিস্কারভাবে বিস্তারিতই বলা আছে তাফসীর গ্রন্থ তাফসীরে জালালাইনে। তাফসীরে জালালাইন ৫ খণ্ড, ৩৪২ পৃষ্ঠায় বর্ণিত হয়েছে,
হযরত ইবনে ওমর (রা) হতেও অনুরূপ একটি বর্ণনা রয়েছে- যাতে উল্লেখ আছে যে, অস্ত যাওয়ার পর সূর্য আরশের নিচে সেজদা করে। এবং পরবর্তী কক্ষে গমনের অনুমতি প্রার্থনা করে। অনুমতি প্রাপ্ত হয়ে পুনরায় চলা আরম্ভ করে। এমনকি এক দিন আসবে যেদিন সূর্য পরবর্তী কক্ষে যাওয়ার জন্য অনুমতি প্রার্থনা করবে কিন্তু তাকে অনুমতি দেওয়া হবে না। বরং তাকে বলা হবে যেদিক থেকে এসেছো সেদিকেই চলে যাও। এর এটা হলো কিয়ামতের একটি নিদর্শন। এ আলোচনার প্রেক্ষিতে বলা যায় যে, সূর্য স্বীয় ইচ্ছাধীন চলতে পারে না; বরং মহান রাব্বুল আলামীনের বেঁধে দেওয়া নিয়ম অনুপাতে তা চলমান; রাসুল (সা) হযরত আবু যর গিফারী (রা)কে তাই বুঝিয়ে দিতে চেয়েছেন। সারকথা হলো, সূর্যের উদয় অস্তের সময় বিশ্ব জগতে এক বিশাল পরিবর্তনের সৃষ্টি হয় যা সূর্যের কারণে হয়ে থাকে। মহানবী (সা) এ পরিবর্তনশীল সময় দ্বারা মানুষকে সতর্ক করার সুবর্ণ সুযোগ মনে করে মানুষকে জানিয়ে দিলেন যে, তোমরা সূর্যকে স্বয়ংসম্পূর্ণ ও সেচ্ছাচারী মনে কর না। আল্লাহর ইচ্ছায়ই সূর্য অনুগামী হাদিসে আল্লাহর অনুগত হওয়াকেই সেজদাবনত হয় বাক্যে ব্যক্ত করা হয়েছে। প্রত্যেক বস্তুর সেজদা তার অবস্থা মাফিক হয়ে থাকে। যেমন আল্লাহ বলেন অর্থাৎ প্রত্যেকেই তার ইবাদত ও তাসবীহের পদ্ধতি সম্পর্কে অবগত। যেমনিভাবে মানুষকে শিখিয়ে তার সালাত ও তাসবীহের পদ্ধতি শিখিয়ে দেওয়া হয়েছে অনুরূপভাবে প্রত্যেকটি সৃষ্টিকে তার ইবাদত ও তাসবীহের পদ্ধতি শিখিয়ে দেওয়া হয়েছে। সুতরাং সূর্যের সেজদা করার দ্বারা মানুষের জমিনে মাথা ঠেকানো বুঝা সঠিক হবে না। - বিস্তারিত পড়ার জন্য দেখুন শরহে নাসরুল বারী, ৯ খণ্ড ৫৩০ থেকে ৫৩৩ পৃষ্ঠা / তাফসীরে মাযহারী, ১০ খণ্ড, ২৪ পৃষ্ঠা / তাফসীরে আহসানুল বয়ান, ৭৭১ পৃষ্ঠা।
হযরত মাওলানা মোহাম্মদ আবুল কালাম মাসুম (হাঃফি) এর রচনায় ও সংকলন ‘তাফসীরে আনওয়ারুল কুরআন’,৫ খণ্ড, ৩০৭ পৃষ্ঠায় বর্ণিত হয়েছে,
মোটকথা, বিশেষভাবে সূর্যাস্ত, অতঃপর আরশের নিচে যাওয়া ও সেজদা করা এবং পরবর্তী পরিভ্রমণের অনুমতি চাওয়ার যেসব ঘটনা উপরিউক্ত হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, সেগুলো পয়গম্বরসুলভ কার্যকর শিক্ষার একান্ত উপযোগী এবং জনসাধারণের দৃষ্টিতে পৌঁছে পুরোপুরি একটি উপমা মাত্র; এতে জরুরী হয় না যে, সূর্য মানুষের মতো মাটিতে মাথা রেখে সেজদা করে এবং সেজদা করার সময় সূর্যের গতিতে বিরতি হওয়াও অনিবার্য হয় না। এটাও উদ্দেশ্য নয় যে, সূর্য দিবারাত্রিতে মাত্র একবার কোনো বিশেষ জায়গায় পৌঁছে সেজদা করে এবং শুধু অস্তমিত হওয়ার পর আরশের নিচে যায়। কিন্তু এই বৈপ্লবিক সময়ে সমস্ত মানুষই প্রত্যক্ষ করে যে, সূর্য তাদের দৃষ্টি থেকে উধাও হয়ে যাচ্ছে, তখন উপমাস্বরূপ তাদেরকে অবহিত করার হয়েছে যে, এসব প্রকৃতপক্ষে আরশের নিচে সূর্যের আজ্ঞাধীন হয়ে চলার কারণেই হচ্ছে। সূর্য স্বয়ং কোনো শক্তি ও ক্ষমতা রাখে না। তখন মদিনাবাসীরা যেমন স্বস্থানে অনুভব করছিল যে, এখন সূর্য সেজদা করে পরবর্তী পরিভ্রমণের অনুমতি নিবে, তেমনি যে যে জায়গায় অস্ত হতে থাকবে, সবার জন্যই একই শিক্ষা হয়ে যাবে। আসল কথা এই জানা গেল যে, সূর্য তার কক্ষপথে বিচরণকালে প্রতি মুহূর্তে আল্লাহকে সেজদাও করে এবং সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ারও প্রার্থনা করে। এর জন্য তাঁর কোনো বিরতির প্রয়োজন হয় না। - বিস্তারিত পড়ার জন্য তাফসীরে আনওয়ারুল কুরআন,৫ খণ্ড, ৩০৪ থেকে ৩০৭ পৃষ্ঠা দেখুন।
সূর্য পৃথিবীর চারদিকে ঘুরে এটা যদি বুঝানো হতো তাহলে তো আবু যর (রা) থেকে এমন তথ্য পাওয়ার কথা যেখানে উনি বলেছেন সূর্য পৃথিবীর চারদিকে ঘুরে কিন্তু এমন কোনো তথ্য পাওয়া যায় না। সূর্য পৃথিবীর চারদিকে ঘুরে এই কথা যে নবীজি (সা) উনার হাদিসে বুঝান নি তা এই হাদিস গুলো পড়লেও পরিস্কার হয়ে যায়। সূর্য পৃথিবীর চারদিকে ঘুরে এটাই যদি নবীজি (সা) বুঝাতেন তাহলে সূর্যের গন্তব্য আরশের নিচে এটা কেন বলতে যাবেন? উনি তো এটা বলতে পারতেন যে সূর্যের গন্তব্যস্থল পৃথিবীর চারদিকে কিন্তু এটা বলেন নাই কেন?
সহিহ মুসলিম, হাদিসঃ ২৯১, সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,
আবূ যার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃএকদা আমি মাসজিদে নাবাবীতে প্রবেশ করলাম। রসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম তথায় উপবিষ্ট ছিলেন। সূর্য ঢলে পড়লে তিনি সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, হে আবূ যার! জান এ সূর্য কোথায় যায়? আমি বললাম, আল্লাহ ও তাঁর রসূলই ভাল জানেন। রসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, সে তার গন্তব্যে যায় এবং আল্লাহর নিকট সাজদার অনুমতি চায়। তখন তাকে অনুমতি দেয়া হয়। পরে একদিন যখন তাকে বলা হবে যেদিক থেকে এসেছো সেদিকে ফিরে যাও। তখন সে পশ্চিম দিক থেকে উঠবে।এরপর তিনি ‘আবদুল্লাহ ইবনু মাস’উদের কিরাআত অনুসারে তিলাওয়াত করেঃ এ তার গন্তব্যস্থল।-ihadis.com
সহিহ মুসলিম, হাদিসঃ ২৯২, সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,
আবূ যার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃআমি রসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে “এবং সূর্য ভ্রমণ করে তার নির্দিষ্ট গন্তব্যের দিকে”-(সূরাহ ইয়া-সীন ৩৬ : ৩৮)। এ আয়াত সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে, তিনি বললেনঃ ‘আর্শের নীচে হলো তার গন্তব্যস্থল।-ihadis.com
সহিহ বুখারী, হাদিসঃ ৪৮০৩, সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,
আবূ যার গিফারী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃতিনি বলেন, আমি নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে আল্লাহ্র বাণী ঃ وَالشَّمْسُ تَجْرِي لِمُسْتَقَرٍّ لَهَا সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বলেছেন, সূর্যের গন্তব্যস্থল আরশের নিচে।-ihadis.com
সহিহ বুখারী, হাদিসঃ ৭৪৩৩, সহিহ হাদিস থেকে বর্ণিত,
আবূ যার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃতিনি বলেছেন, আমি নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে জিজ্ঞেস করেছি, "আর সূর্য ভ্রমণ করে তার নির্দিষ্ট গন্তব্যের দিকে" আল্লাহ্র এ কথা সম্পর্কে। তিনি বলেছেনঃ সূর্যের নির্দিষ্ট গন্তব্য হল আরশের নিচে।-ihadis.com
নবীজি (সা) যদি এটাই বুঝাতো যে সূর্য পৃথিবীর চারদিকে ঘুরে তাহলে উনি এটা বলতেনই না যে সূর্যের নির্দিষ্ট গন্তব্য হল আরশের নিচে বরং উনি বলতেন সূর্য পৃথিবীর সাথে লেগে চ্যাপ্টা হয়ে চারদিকে ঘুরছে। সূর্য তার নিজ অবস্থানেই আছে হযরত মোহাম্মদ (সা) এর এই কথাটি প্রমাণ করে সূর্য পৃথিবীর চারদিকে ঘুরে এটা উনি বুঝান নাই। পরিস্কার প্রমাণ দেখা সত্ত্বেও নাস্তিকগোষ্ঠী যদি এরপরেও মিথ্যার আশ্রয়ে থাকতে চায় তাহলে আমাদের মতো চিন্তাশীল মানুষদের কি-ই বা করার আছে? পাঠক আপনারাই বলুন?
তর্কের খাতিরে যদি ধরেও নেয়া হয় সূর্য পৃথিবীর চারদিকে ঘুরে তাহলেও ভুল হবে না কারণ আমরা তো দেখছি-ই সূর্য সকালে পূর্ব দিক থেকে উঠছে, ধিরে ধিরে আমাদের চোখের সামনেই মাথার উপরে যাচ্ছে, এভাবে নিচে যেতে যেতে পশ্চিম দিকে ডুবে যাচ্ছে। আমাদের সবার এই দেখা কি বৈজ্ঞানিক ভুল? অবশ্যই না। আমরা যেহেতু স্থির অবস্থায় আছি এবং সূর্যকে উঠতে দেখছি আবার ডুবতে দেখছি এটা কি সূর্যকে ঘুরতে দেখার মতো নয়? হুম। তাহলে এই দৃষ্টিতে সূর্য আমাদের পৃথিবীর চারদিকে ঘুরে এই কথাকে ভুল বলার সুযোগ নেই। তাই তর্কের খাতিরে যদি ধরেও নেয়া হয় হাদিসে সূর্য পৃথিবীর চারদিকে ঘুরছে এটা বুঝাচ্ছে তাহলেও আসলে ভুল হবে না কারণ চোখে দেখাই যাচ্ছে সূর্য পৃথিবীর চারদিকে ঘুরছে। আমরা তো জানি পৃথিবী সূর্যের চারদিকে ঘুরছে তাই আমাদের দেখা অনুপাতে সূর্য পৃথিবীর চারদিকে ঘুরছে দেখা গেলেও বাস্তবে কিন্তু পৃথিবী সূর্যের চারদিকে ঘুরছে তাই প্রশ্ন আসতে পারে যে হযরত মোহাম্মদ (সা) কি এটা জানতেন না যে পৃথিবী সূর্যের চারদিকে ঘুরছে? এই প্রশ্নের উত্তর খুবই সহজ, পৃথিবী সূর্যের চারদিকে ঘুরে এমন কথা সরাসরি হাদিসে আমি পাই নি। হযরত মোহাম্মদ (সা)কে আল্লাহ যতটুকু জানিয়েছেন উনি ততুকুই জানবেন। তাছাড়া পৃথিবী সূর্যের চারদিকে ঘুরছে নবীজি (সা) যদি এটা না জেনেও থাকেন তাহলেও তো সূর্য আরশের নিচে সেজদা দেয় হাদিসকে বৈজ্ঞানিক ভুল বলার বিন্দুমাত্র সুযোগ নেই। কারণ হাদিসে বর্ণিত কথা থেকে সূর্যের উদয় হওয়া, অস্ত যাওয়া এমনকি সূর্য অস্ত গেলে আমরা যে সূর্যকে উদয় হতে দেখি না এই হিসেবে আমাদের কাছে সূর্যের উদয় হওয়া কিছু সময়ের জন্য থেমে থাকা ইত্যাদি সবই কিন্তু বাস্তবে দেখাই যাচ্ছে। হযরত মোহাম্মদ (সা) বাস্তবেই সূর্যকে অস্ত যেতে দেখে কথা বলেছেন যাকে বৈজ্ঞানিক ভুল বলার সুযোগ নেই। নবীজি (সা) যখন কথা বলতেছিলেন তখন উনি সূর্যের উদয় হওয়া, অস্ত যাওয়া নিয়ে কিন্তু কথা বলেছেন তাই উনার দেখার সাপেক্ষে যদি এটা ধরেও নেয়া হয় হাদিসে সূর্য পৃথিবীর চারদিকে ঘুরছে বুঝায় তাহলেও হাদিসকে ভুল বলার সুযোগ নেই।
এছাড়া পুরো মহাবিশ্বকেই তো আল্লাহ নিয়ন্ত্রণে রেখেছেন এর মধ্যে তো পৃথিবীর অস্তিত্ব থাকা আল্লাহর উপর নির্ভরশীল এই হিসেবে তো বলাই যায় যে পৃথিবী সূর্যের চারদিকে ঘুরছে এই কথাকে ইসলামের দৃষ্টিতে অস্বীকার করার উপায় নেই। হাদিসে এটা সরাসরি বলা নেই,পৃথিবী সূর্যের চারদিকে ঘুরছে নাকি সূর্য পৃথিবী সূর্যের চারদিকে ঘুরছে কিন্তু এটা স্পষ্ট করা যে আল্লাহ সূর্যকে নিয়ন্ত্রণ করছেন তাই যৌক্তিক কারণে এটা বলতে বাধ্য হতেই হচ্ছে “সূর্য আরশের নিচে সেজদা দেয়” হাদিসটির প্রকৃত মর্মার্থ হলো সূর্য আল্লাহর নিয়ন্ত্রণে এটা বুঝানোর জন্যই হযরত মোহাম্মদ (সা) সূর্যের উদয় হওয়া, অস্ত যাওয়া, সূর্যের থেমে যাওয়া ইত্যাদি শব্দকে উদাহরণ হিসেবে বলেছেন। এই সহজ কথা গুলো না বুঝার কি আছে? এরপরেও নাস্তিক বিবর্তিত প্রাণীরা মুক্তমনে মিথ্যাচার করতে থাকলে কবে সুস্থচিন্তা করা শেখবে? এটা নিয়ে সংশয় থেকেই যাচ্ছে! কি যাচ্ছে না?
উপসংহারঃ সততার সাথে সার্বিক আলোচনায় হাদিসের কোনো দিক থেকেও এটা বুঝা যায় না যে, সূর্য পৃথিবীর চারদিকে ঘুরছে। তাই উক্ত হাদিসে বৈজ্ঞানিক ভুল আছে এমন দাবি করা সম্পূর্ণ মিথ্যাচার। অন্যান্য তথ্যগুলো পড়লে পরিস্কার বুঝা যায় হযরত মোহাম্মদ (সা) মূলত সূর্য যে সম্পূর্ণ আল্লাহর নিয়ন্ত্রণে সেটাই বুঝিয়েছেন একইসাথে বুঝানোর সুবিধার্থে সূর্যের উদয় হওয়া,অস্ত যাওয়া ইত্যাদিকে সূর্য আল্লাহর অনুমতি নেয় উপমা দিয়ে বর্ণনা করেছেন। সুতরাং সব দিক থেকেই এটা পরিস্কার যে নাস্তিকরা উক্ত হাদিসের যেই ব্যাখ্যা দেয় সেই ব্যাখ্যা যৌক্তিকভাবেই অবিশ্বাসযোগ্য।
=======
আরও জানতে পড়ুনঃ
সূর্য ঘোরে নাকি পৃথিবী ঘোরে? সূর্য কি আরশের নিচে সিজদা করে?