নাস্তিক্যধর্মে আত্মহত্যার বৈধতা

 

নাস্তিক্যধর্মে আত্মহত্যার বৈধতা 

লিখেছেনঃ এমডি আলী।


ভূমিকাঃ

নাস্তিকরা নিজেদেরকে অনেক শিক্ষিত, সভ্য ও উন্নত জাতি মনে করে। তারা সবার থেকে বেশিই এগিয়ে আছেন বলে ধারণা করে। তারা ইসলামের সমালোচনা করার মাধ্যমে মুসলিমদের কাছে নিজেদেরকে দরবেশ দেখানোর চেষ্টা করে। তারা এও বিশ্বাস করে দুনিয়াতে তারাই নাকি একমাত্র সুখী গোষ্ঠী। তাই আজকের গবেষণালব্ধ লেখাটি থেকে আমরা জানবো নাস্তিকদের পোষণ করা বিশ্বাস গুলো সঠিক কিনা,তারা আসলেই তাদের জীবন নিয়ে সুখী কিনা, তারা আসলেই মুসলিমদের থেকে বেশি সন্তুষ্ট কিনা নিজেদের জীবন নিয়ে। নাস্তিক্যধর্মে আত্মহত্যার বিধান নিয়ে যা বুঝানো হয়েছে সেসবও আমরা নাস্তিকদের মুক্তচিন্তার বইপত্র থেকেই জেনে নিব। আজকের লেখাটি থেকে তারাই শুধুমাত্র উপকার গ্রহণ করে নিতে পারবেন যারা বুদ্ধিমান,নিরপেক্ষ ও সততার সাথে চিন্তা করার যোগ্যতা রাখেন। কিন্তু যারা নিজেদের বুদ্ধিকে সীমাবদ্ধ করে রাখেন,জ্ঞানকে আড়ষ্ট করে রাখেন নাস্তিকদের মতো, তারা এই লেখাটি থেকে কোনো উপকার নিতে পারবেন না। এখন এই লেখাটি আপনি পড়বেন কিনা সেটা আপনার দায়িত্ব। 


আত্মহত্যা কাকে বলে?

আত্মহত্যা বা আত্মহনন হচ্ছে কোনো ব্যক্তি কর্তৃক ইচ্ছাকৃতভাবে নিজের জীবন বিসর্জন দেয়া বা স্বেচ্ছায় নিজের প্রাণনাশের প্রক্রিয়াবিশেষ। ল্যাটিন ভাষায় সুই সেইডেয়ার থেকে আত্মহত্যা শব্দটি এসেছে, যার অর্থ হচ্ছে নিজেকে হত্যা করা (১)। যখন কেউ আত্মহত্যা করেন, তখন জনগণ এ প্রক্রিয়াকে আত্মহত্যা করেছে বলে প্রচার করে। ডাক্তার বা চিকিৎসকগণ আত্মহত্যার চেষ্টা করাকে মানসিক অবসাদজনিত গুরুতর উপসর্গ হিসেবে বিবেচনা করে থাকেন। ইতোমধ্যেই বিশ্বের অনেক দেশেই আত্মহত্যার প্রচেষ্টাকে এক ধরনের অপরাধরূপে ঘোষণা করা হয়েছে। অনেক ধর্মেই আত্মহত্যাকে পাপ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। যিনি নিজেই নিজের জীবন প্রাণ বিনাশ করেন, তিনি - আত্মঘাতক, আত্মঘাতী বা আত্মঘাতিকা, আত্মঘাতিনীরূপে সমাজে পরিচিত হন।


প্রতিবছর প্রায় দশ লক্ষ মানুষ আত্মহত্যা করে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা-এর মতে প্রতি বছর সারা বিশ্বে যে সব কারণে মানুষের মৃত্যু ঘটে তার মধ্যে আত্মহত্যা ত্রয়োদশতম প্রধান কারণকিশোর-কিশোরী আর যাদের বয়স পঁয়ত্রিশ বছরের নিচে, তাদের মৃত্যুর প্রধান কারণ হচ্ছে আত্মহত্যা। নারীদের তুলনায় পুরুষদের মধ্যে আত্মহত্যার হার অনেক বেশি। পুরুষদের আত্মহত্যা করার প্রবণতা নারীদের তুলনায় তিন থেকে চার গুণ। আত্মহত্যা, সম্পূর্ণ আত্মহত্যা হিসাবেও পরিচিত, "নিজের জীবন নিজেই গ্রহণের কাজ"। আত্মহত্যা বা আত্মঘাতী আচরণের মাধ্যমে আত্মহত্যা করার চেষ্টা করে, যার ফলে মৃত্যু ঘটতে পারে না। সহায়তাকারী আত্মহত্যা হল যখন একজন ব্যক্তি অন্য কোনও ব্যক্তিকে পরামর্শ বা পরোক্ষভাবে অন্য কোন সরঞ্জাম দিয়ে মৃত্যুর জন্য সাহায্য করে । এটি ইউথান্সিয়াসের বিপরীত, যেখানে একজন ব্যক্তি অন্য একজন ব্যক্তির মৃত্যুর আনুষ্ঠানিকতায় আরও সক্রিয় ভূমিকা নেয়। 


হুমায়ুন আজাদ কে ছিলেন?

হুমায়ুন আজাদ যিনি একজন নাস্তিক, মুক্তচিন্তক, বাংলাদেশি কবি, ঔপন্যাসিক, ভাষাবিজ্ঞানী, সমালোচক, রাজনীতিক ভাষ্যকার, কিশোরসাহিত্যিক, গবেষক, এবং অধ্যাপক ছিলেন। তিনি বাংলাদেশের অন্যতম প্রথাবিরোধী এবং বহুমাত্রিক লেখক যিনি ধর্ম, মৌলবাদ, প্রতিষ্ঠান ও সংস্কারবিরোধিতা, যৌনতা, নারীবাদ ও রাজনীতি বিষয়ে তার বক্তব্যের জন্য ১৯৮০-এর দশক থেকে পাঠকগোষ্ঠীর দৃষ্টি আর্কষণ করতে সক্ষম হয়েছিলেন।


হুমায়ুন আজাদের ৭টি কাব্যগ্রন্থ, ১২টি উপন্যাস ও ২২টি সমালোচনা গ্রন্থ, ৭টি ভাষাবিজ্ঞানবিষয়ক, ৮টি কিশোরসাহিত্য ও অন্যান্য প্রবন্ধসংকলন মিলিয়ে ৬০টিরও অধিক গ্রন্থ তার জীবদ্দশায় এবং মৃত্যু পরবর্তী সময়ে প্রকাশিত হয়। ১৯৯২ সালে তার নারীবাদী গবেষণা-সংকলনমূলক গ্রন্থ নারী প্রকাশের পর বিতর্কের সৃষ্টি করে এবং ১৯৯৫ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত সাড়ে চার বছর ধরে বইটি বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক নিষিদ্ধ ছিল। এটি তার বহুল আলোচিত গবেষণামূলক কাজ হিসাবেও স্বীকৃত। এছাড়াও তার পাক সার জমিন সাদ বাদ উপন্যাসটি পাঠকমহলে বিতর্কের সৃষ্টি করেছিল। তার রচিত প্রবচন সংকলন ১৯৯২ সালে হুমায়ুন আজাদের প্রবচনগুচ্ছ নামে প্রকাশিত হয়।


তাকে ১৯৮৬ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার এবং ২০১২ সালে সামগ্রিক সাহিত্যকর্ম এবং ভাষাবিজ্ঞানে বিশেষ অবদানের জন্য মরণোত্তর একুশে পদক প্রদান করা হয়। ২০০৩ সালে তার রচিত কিশোরসাহিত্য ফুলের গন্ধে ঘুম আসে না (১৯৮৫) এবং আব্বুকে মনে পড়ে (১৯৯২) জাপানি ভাষায় অনূদিত হয়েছিলো।


হুমায়ুন আজাদ প্রথাগত ধ্যানধারা সচেতনভাবে পরিহার করতেন। তার সাহিত্যের বৈশিষ্ট্য পল্লীপ্রেম, নর-নারীরপ্রেম, প্রগতিবাদিতা ও ধর্মনিরপেক্ষতা, সামরিক শাসন ও একনায়কতন্ত্রের বিরোধিতা এবং নারীবাদের জন্য পরিচিত। তার ধর্মীয় ও রাজনৈতিক বিশ্বাস এবং ব্যক্তিগত অভীষ্ট তার সাহিত্যকে প্রভাবান্বিত করেছিল। কথাসাহিত্য ও প্রবন্ধের মাধ্যমে তিনি সমাজ, রাজনীতি ও রাষ্ট্রনীতি সম্পর্কে মতামত প্রকাশ করেছিলেন। পাক সার জমিন সাদ বাদ উপন্যাসে মৌলবাদীদের সমালোচনা করার কারণে ২০০৪ সালে তিনি হামলার শিকার হন।


১৯৬২ সালে উচ্চশিক্ষার জন্য আজাদ ঢাকায় চলে আসেন। মানবিক বিভাগে পড়ার ইচ্ছা থাকলেও বাবার ইচ্ছায় ১৯৬২ সালের সেপ্টেম্বরে তিনি ঢাকা কলেজে বিজ্ঞান বিভাগে উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণিতে ভর্তি হন। ১৯৬৪ সালে ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেন। এরপর একই বছর তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদে বাংলা বিভাগে ভর্তি হন। ১৯৬৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা সাহিত্যে স্নাতক ডিগ্রি এবং ১৯৬৮ সালে একই বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। উভয় পরীক্ষায় তিনি প্রথম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হন। হুমায়ুন আজাদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াকালীন সলিমুল্লাহ মুসলিম হল ছাত্রাবাসে থাকতেন (২)।


আত্মহত্যার ব্যাপারে হুমায়ুন আজাদের উস্কানিঃ

নাস্তিক মুক্তমনা হুমায়ুন আজাদ উনার মুক্তচিন্তার বই গুলোতে এমন এমন কথা স্বীকার করে গিয়েছেন যা বর্তমানের অনেক নাস্তিকই লজ্জিত চেহারা নিয়ে অস্বীকার করে। তার অনেক বইয়ের মধ্যে অন্যতম একটি বই হচ্ছে “আমার অবিশ্বাস‘। কথিত আছে এই বই পড়ে নাকি অনেকেই ইসলাম ত্যাগ করে নাস্তিক্যধর্মের মুক্তচিন্তাকে গ্রহণ করে নিয়েছিল। আমি যখন আগ্রহ নিয়ে হুমায়ুন আজাদের বইটি পড়লাম খুবই আশ্চর্য হয়েছি। এই বইতে এমন ভয়ংকর ও যুক্তিবিরোধী প্রচুর কথাবার্তা পেয়েছি যা আমাকে হতাশ করেছে। যেসব লোকেরা এই বই পড়ে নাস্তিক্যধর্ম গ্রহণ করেছে তাদের মগজের কার্যক্ষমতা নিয়ে আমার যথেষ্ট সংশয় আছে। এই বইটি কোনো যুক্তিবাদী বুদ্ধিমান মানুষ পড়লে সে হুমায়ুন আজাদের মুক্তচিন্তার অবস্থা দেখে হাসাহাসি করবে আমি নিশ্চিত। আসুন জেনে নেই নিজেকে খুন করা নিয়ে সে নিজের বইতে যা যা মুক্তচিন্তা করেছে সেই কথা গুলো।


"আমার অবিশ্বাস" বইয়ের ১৯ পৃষ্ঠায় লেখা আছে, 

আমরা এই নিরর্থক পুনরাবৃত্তি থেকে একটুও এগোইনি ,কামু বলেছেন আমাদের জীবন একই রোববারের পর সোমবার, সোমবারের পর মঙ্গলবার, মঙ্গলবারের পর বুধবার, একই নিরর্থক পুনরাবৃত্তি। এই নিরর্থকতার মুখোমুখি কিভাবে দাড়াতে পারি? কামুর মতে একটিই সত্যিকার দার্শনিক সমস্যা রয়েছে তা হচ্ছে আত্মহত্যা। জীবন কি যাপন করার উপযুক্ত ? বেঁচে থাকার কি কোন মানে হয় ? কোন অর্থ কি আছে নিরুদ্দেশ যাত্রা লেখার বা মহাকাশে নভোযান পাঠানোর বা নারীর নগ্ন স্তন চুম্বনের বা জন্মদানের? ...................মানুষের প্রশ্নের শেষ নেই , হাজার হাজার প্রশ্ন তার,সেগুলোর কোন উত্তর নেই। মানুষ চায় সমাধান , কিন্তু সমাধান চাইতে গিয়েই মানুষ জাগিয়ে তোলে নিরর্থকতা মানুষ যখন জীবনের অর্থ খুজতে চায় , বুঝতে চায় জীবনের অর্থ কি , তখন সে মুখোমুখি হয় নিরর্থকতার।জীবনের কোন অর্থ নেই। কোন মহৎ উদ্দেশ্য নেই। সুধীন্দ্রনাথ যেমন বলেছেন তার সার কথা পিশাচের উপজীব্য হওয়া


'আমার অবিশ্বাস' বইয়ের ২০ নং পৃষ্ঠায় লেখা আছে, 

মানুষ অভিনয় করে যেতে থাকে, কিন্তু একদিন মঞ্চ ভেঙ্গে পড়ে। জীবনের ক্লান্তিকর পুনরাবৃত্তির চমৎকার বর্ণনা দিয়েছেন কামু এভাবেঃ জাগরণ, গাড়ি, চার ঘণ্টা কাজ, আহার, নিদ্রা , এবং সোমবার , মঙ্গলবাদ, ব্রধবার বৃহস্পতিবার, শুক্রবার এবং শনিবার একই তালে পুরাবৃত্ত - এই পথেই চলা অধিকাংশ সময়। কিন্তু একদিন দেখা দেয় 'কেন'। তখন সব কিছু মনে হতে থাকে অবসার্ড, নিরর্থকএই নিরর্থকতার উদ্ভব ঘটে আমাদের চৈতন্য ও বিশ্বের মধ্যে যখন ঘটে সংঘর্ষ। মানুষ , কামু মনে করেন, এই নিরর্থকতাকে এড়াতে পারে না যতোদিন সে বেঁচে থাকে, তাই তাঁর মতে, অস্তিত্ব হচ্ছে 'চূড়ান্ত আশাহীনতা'।মানুষ এই নিরর্থকতাকে অতিক্রম করার কোনো উপায় দেখে না, কেননা বেঁচে থাকাই হচ্ছে নিরর্থকতা। সুধীন্দ্রনাথ এ পরিস্থিতির কথাই বলেছিলেন। 'মৃত্যু কেবল মৃত্যুই ধ্রুবসখা/ যাতনা কেবল যাতনা সুচির সাথীর হাহাকারে। এই নিরর্থকতার থেকে মুক্তির এক উপায় হল মৃত্যু: মৃত্যু পারে নিরর্থকতার সমাপ্তি ঘটাতে। তাই আত্মহত্যা একটি উপায় নিরর্থকতা থেকে মুক্তির


“আমার অবিশ্বাস” বইয়ের ২০ পৃষ্ঠায় লেখা আছে, 

তাহলে কি আমরা আত্মহত্যা করবো? কামু, এবং সবাই বলবে ,না। আত্মহত্যা কোন সমাধান নয়। আত্মহত্যা করে নিরর্থক জীবনকে তাৎপর্যপূর্ণ করা সম্ভব নয়, তবে প্রত্যেক মানুষের জীবনেই কোনো কোনো মুহূর্ত আসে,যা তাকে আত্মহত্যা করার প্ররোচনা দেয়, কিন্তু সবাই আত্মহত্যা করে না,শুধু তারাই আত্মহত্যা করে বা সফল হয় আত্মহত্যায়, যারা হটাত জেগে ওঠা নিরর্থক প্ররোচনা কাটাতে পারে না,যেমন পারে নি জীবনানন্দের 'আট বছর আগের একদিন' - এর তরুন , যার জানালার পাশে দাঁড়িয়েছিল উটের গ্রীবার মতো এক নিস্তব্ধতা। আমি কয়েকবার আত্মহত্যাকে সমাধান হিশেবে বিবেচনা করেছি, এবং বাতিল করেছি, একবার একটি কবিতা লিখেছি ''ছাঁদ আরোহীর কাসিদা' নামে।রবীন্দ্রনাথ কি কখনো আত্মহত্যার কথা ভেবেছেন? অবশ্যই ভেবেছেন,তাঁর প্রথম দিকের কাব্য গুলোতে এর নানা দাগ দেখতে পাই। আত্মহত্যা কোন সমাধান নয়,এটা একটি আস্তিত্ত্বিক পাপ। মানুষ তার নিজের ইচ্ছায় মরবে না,বেছে নেবে না স্বেচ্ছামৃত্যু। মানুষকে মরতে হবে মিটমাট না করে, জীবন আমাদের সুন্দর জীবন। তার কোন অর্থ নেই,অর্থের দরকার নেই, জীবনের অর্থ হচ্ছে জীবন,জীবনের অন্য অর্থ নেই বলেই জীবন সুন্দর


কেউ যদি বিশ্বাস করে জীবনের কোনো অর্থ নেই তাহলে সে জীবন দিয়ে করবেটা কি? হুমায়ুন আজাদ মাঝে মাঝে আত্মহত্যা করা মুক্তচিন্তা করতো আবার আত্মহত্যা না করাকেও মুক্তচিন্তা করতো কেমন হাস্যকর কথাবার্তা। হুমায়ুন আজাদ স্পষ্ট মুক্তচিন্তায় বলেছেন,আত্মহত্যা একটি উপায় নিরর্থকতা থেকে মুক্তির। হুমায়ুন আজাদ কি পারতেন না আত্মহত্যা করা যে খারাপ এটা স্বীকার করতে? তিনি কি পারতেন না মানুষকে আশা জাগাতে? কিন্তু সে কেমন অযৌক্তিক কথাবার্তা বলে গিয়েছে নিজের মুক্তচিন্তায় দেখেছেন? সে নিজেই দাবি করছে মানুষের জন্য পথ নেই, কেউ কাউকে পথ দেখাতে পারে না অথচ সে নিজেই কামুর কথা নিজের বইতে উল্লেখ করেছেন কি ভয়ংকর বৈপরীত্য,লক্ষ্য করেছেন?

 

'আমার অবিশ্বাস' বইয়ের ২০ পৃষ্ঠায় বর্ণিত আছে, 

কোনো পূর্বনির্ধারিত পথ নেই মানুষের জন্যে। কোনো গ্রন্থ পথ দেখাতে পারে না ,কোনো মহাপুরুষ বা প্রবর্তক তার জন্যে পথ প্রস্তুত করতে পারেন না, ওই মহাপুরুষেরা তৈরি করেছেন নিজেদের পথ, অন্যদের নয়।প্রত্যেককে খুঁজে বের করতে হয় নিজেদের পথ, তৈরি করতে হয় নিজেদের রাস্তা,অনেকের পথ আমাকে আলোড়িত করেছে,অনেক গ্রন্থ আমাকে আলো দিয়েছে, কিন্তু আমি ওইসব পথে চলি নি, ওই আলোতে পথ দেখি নি


কোনো গ্রন্থ যদি পথ দেখাতে না পারে তাহলে আপনি কেন “আমার অবিশ্বাস” গ্রন্থ রচনা করলেন? আপনি তো শুধু একটা গ্রন্থ রচনা করেননি একাধিক গ্রন্থ রচনা করেছেন তাহলে সেই বই গুলো কেন আপনি নিজেই জ্বালিয়ে দিলেন না? সবাই যদি সবার পথ বেঁছে নেয় তাহলে আপনার বই পড়ে যারা নাস্তিক্যধর্মের মুক্তচিন্তা করা শিখেছে তারা কেন আপনার পথ ধরেছে? আপনি কেন তাদেরকে মানা করলেন না যে, তারা যাতে আপনার মতো অন্ধবিশ্বাস না করে? আপনি যেখানে অন্য গ্রন্থে আলো দেখেননি সেখানে আপনার বই থেকে কেন নাস্তিকরা আলো নেবে? আপনি কেন প্রকাশনিদেরকে বললেন না যে আপনার সব বই যাতে তারা প্রকাশ না করে?


"আমার অবিশ্বাস" ১৭ পৃষ্ঠায় লেখা আছে, 

তবে সব কিছুই নিরর্থক, জগত পরিপূর্ণ নিরর্থকতায়, রবীন্দ্রনাথ নিরর্থক,আইনস্টাইন নিরর্থক,ওই গোলাপও নিরর্থক,ভোরের শিশিরও নিরর্থক, তরুণীর চুম্বনও নিরর্থক, দীর্ঘ সুখকর সংগমও নিরর্থক, রাষ্ট্রপতি নিরর্থক, কেননা সব কিছুরই পরিনতি বিনাশ।


নাস্তিকরা অনেক সময় অভিযোগ করে মাদার তেরেসাকে আল্লাহ কেন জাহান্নামে দিবে? যেসব অমুসলিমরা ভালো কাজ করে গিয়েছেন তাদেরকে আল্লাহ কেন জাহান্নামে দিবে? নাস্তিকরা যদি এই কারণে ইসলাম ত্যাগ করে তাহলে একইভাবে হুমায়ুন আজাদ সব কিছুকে নিরর্থক দাবি করার কারণে যারা তার বই পড়ে নাস্তিক্যধর্ম গ্রহণ করেছে তাদের সবার উচিত নাস্তিকতা, মুক্তচিন্তা,সংশয়বাদ,ইসলামবিরোধীবিশ্বাস ত্যাগ করে ফেলা। কিন্তু নাস্তিকরা কি সেটা করবে? এই দুনিয়াতে রবীন্দ্রনাথের কোনো অবদান নেই? আইনস্টাইনের কোনো অবদান নাই? গোলাপ ফুলের কোনো উপকারীতা নেই? ভোরের শিশিরের কোনো কল্যাণ নেই? একজন তরুণী মা যে নিজের সন্তানকে চুম্বন করবে এটার কোনো অর্থ নেই? স্বামী স্ত্রী যদি নিজেদের ভালোবাসা প্রকাশের জন্য দীর্ঘ সুখকর সংগম করে এরও কোনো মর্ম নেই? রাষ্ট্রপতির কোনো সম্মান নেই?


তাহলে মৃত্যুই যদি আমাদের শেষ ঠিকানা হয় তাহলে আমাদের কবি হয়ে লাভ কি? বিজ্ঞানী হয়ে লাভ কি? মানবতাবাদী হয়ে লাভ কি? সত্যবাদী হয়ে লাভ কি? মানুষকে সম্মান করে লাভ কি? কষ্ট করে সততার সাথে জীবন যাপন করে লাভ কি? এতো কষ্ট করার দরকার কি? এর থেকে তো মুক্তচিন্তায় চুরি, ডাকাতি, ধর্ষণ , হত্যা, গণহত্যা করে জীবন যাপন করলেও কোনো সমস্যা নেই নাস্তিকদের,যেহেতু সব কিছুই অর্থহীন। তাহলে হুমায়ুন আজাদ কি এটা স্বীকার করবে যে নাস্তিক্যধর্মে কোনো নাস্তিক চাইলে চুরি, ডাকাতি, ধর্ষণ, দুর্নীতি, গণহত্যা চাইলে চিন্তার মুক্তিতে করবে পারবে? নৈতিকতাও তো অথহীন? কিসের ভালো আর কিসের খারাপ? মুক্তচিন্তায় যা ইচ্ছা তাই করবে? নাস্তিক নিজের মাকে মুক্তচিন্তায় ধর্ষণ করবে? নিজের বাবার সাথে মুক্তবুদ্ধিতে সমকামীতার চর্চা করবে? সব নাস্তিকদেরকেই যে এসব করতে হবে তেমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই? কিন্তু অন্য কোনো নাস্তিক চাইলেই পারবে এসব করতে?


নাস্তিক হুমায়ুন আজাদ যেমন নিজের মুক্তচিন্তায় নিজের পথ নিজে বেঁছে নিয়েছেন তেমনি অন্য কোনো নাস্তিকরা যদি মাওসেতুং এর মতো কোটি কোটি মানুষকে মুক্তচিন্তায় গণহত্যা করে নিজের পথ নিজে তৈরি করে তাহলে এটাও কোন যুক্তিতে অন্যায় হবে? হুমায়ন আজাদ যদি মুক্তচিন্তা করতে পারে অন্য নাস্তিকরা কেন ভিন্ন ভিন্ন মুক্তচিন্তা করতে পারবে না? কোনো নাস্তিক যদি ভালোর মুক্তচিন্তা করে তাহলে অন্য নাস্তিকরা কেন খারাপ নিয়ে মুক্তচিন্তা করতে পারবে না? কোন নাস্তিক যদি ইসলাম ত্যাগের মুক্তচিন্তা করতে পারে তাহলে অন্য নাস্তিকরা কেন নৈতিকতা ত্যাগের মুক্তচিন্তা করতে পারবে না?


"আমার অবিশ্বাস" ১৮ পৃষ্ঠায় লেখা আছে, 

এই যে আমি বেঁচে আছি,বেঁচে থেকে সুখ পাচ্ছি। আমি মরে যাবো, এই হাস্যকর নিরর্থকতাকে কিভাবে অর্থপূর্ণ করে তুলতে পারি? আমার জীবনকে অর্থপূর্ণ করে তোলার কখন পূর্বনির্ধারিত উপায় নেই। কোন পবিত্র বা অপবিত্র বই বা কোন মহাপুরুষ বা প্রবর্তক আমাকে পথ দেখাতে পারেন না। তাঁরা খুঁজেছেন নিজেদের পথ,নিজেদের জীবনকে তাৎপর্যপূর্ণ করার পথঃ আমি তাদের পথে চলতে পারি না। আমি খুজতে চাই আমার পথ। নিজের জীবনকে তাৎপর্যপূর্ণ করার দায়িত্ব সম্পূর্ণরুপে আমার নিজের


আপনি যদি নাস্তিক হয়ে থাকেন তাহলে যৌক্তিক প্রশ্ন গুলো নিয়ে ভাবুন। চিন্তা করুন। নিজেকে প্রশ্ন করুন কেন আপনাকে এসব নিয়ে আগে জানানো হয়নি? কেন আপনাকে নাস্তিক্যধর্মের ব্যাপারে বলা হয়নি? কেন আপনাকে শুধু ইসলাম বিরোধীতার ডিউটিতে লাগিয়ে দেয়া হয়? কেন আপনাকে আপনার মতো করে ভাবার সুযোগ দেয়া হয়নি? কেন আপনাকে মুক্তচিন্তার নামে শুধুমাত্র ইসলাম ত্যাগ ও ইসলাম বিরোধীতা শিখানো হয়েছে? কেন আপনার বুদ্ধিকে এককোষী ব্যাকটেরিয়ার বিশ্বাসে আটকিয়ে রাখা হয়েছে? কেন আপনাকে নাস্তিকতার নামে সংশয়বাদের শেকলে বন্দী রাখা হয়েছে? নিজেকে কখনো এভাবে প্রশ্নের পাথরে কেন বিক্ষত করেননি? কেন আগে এভাবে ভেবে দেখেননি? 


নিজেকে খুন করায় কারা উন্নত?

নাস্তিকরা বিভিন্ন সময় নিজেদেরকে সব থেকে বেশি সুখী প্রমাণ করে দেখানোর জন্য বেশ কিছু দেশের নাম আমাদের সামনে নিয়ে আসে। সেসব দেশের নাম শ্রদ্ধার সাথে নাস্তিকদের মুখে উচ্চারণ করতেও দেখা যায়। তারা বোঝাতে চায় যেহেতু তারা ধর্মহীন, তারা মুক্তচিন্তা চর্চা করে, তারা ইসলাম বিশ্বাস করে না এরপরেও তারা সুখী। কিন্তু নাস্তিকদের এমন বিশ্বাস কি আসলেই সত্য? আসুন তদন্ত করে দেখি কাহিনীর ভিতরে নাস্তিকরা কি কি লুকিয়ে রেখেছে। প্রথমে জেনে নেই নাস্তিকদের দাবি করা কথিত সুখী দেশের নাম (৩)। 


Finland,Denmark,Switzerland,Iceland,Netherlands,Norway,Sweden.


কথিত শান্তিপূর্ণ দেশের আকাম কুকামের সব তথ্য তো এখানে বলা যাবে না লেখা অনেক বিশাল হয়ে যাবে। তাই কিছু কিছু দেশের ব্যাপারে বলি যাতে আপনারা নাস্তিকদের কথিত শান্তিপূর্ণ দেশের একটা আসল চেহারা দেখতে পারেন। হাস্যকর কথা হচ্ছে নাস্তিকরা কথিত শান্তিমনা যেসব দেশের কথা শোনায় সেসব দেশে আত্মহত্যা মাত্রা অনেক বেশি। তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে সুইডেন। প্রমাণসহ দেখাচ্ছি। আপনারা মনোযোগ দিয়ে দেখে নেন। বিভিন্ন গবেষণা ও পরিসংখ্যান অনুযায়ী কারা নিজেকে খুন করায় এগিয়ে যাচ্ছে সেটার তথ্যপ্রমাণ আমরা এখন জেনে নিব।


“World Population Review” এর রিপোর্ট অনুযায়ী (৪) আসুন জেনে নেই সুইডেন আত্মহত্যার মহামারীর বিচিত্র চেহারা।


In 2019, Sweden had 14.7 suicides per 100,000 people. Historically, Sweden has had a high suicide rate, with the most suicides in the developed world during the 1960s. That may have been due, at least in part, to cultural attitudes regarding suicide and long, dark winters, particularly in the northern regions. The government responded to the crisis with social welfare and mental health services, and the numbers have dropped dramatically. Today, Scandinavian countries – Norway, Sweden, Denmark, and Finland – have very high happiness rates and relatively low suicide rates. However, the dark winters – 20 hours of darkness or more in each day in some areas – causes seasonal affective disorder (SAD), a form of depression, which has been known to correlate with higher rates of suicide. Euthanasia, or physician-assisted suicide, is still illegal in Sweden but is accepted in some instances. A physician may not administer lethal drugs to a terminally ill patient, but he or she may end life support of the patient requests doing so and demonstrates that they understand the consequences. This form of physician-assisted suicide, known as passive euthanasia, is not included in suicide statistics. Active euthanasia, when a physician administers lethal drugs to a terminally ill patient with the patient and family's consent, may soon become legal in Sweden, as it is becoming more accepted in European countries.


২০১৯ সালে, সুইডেনে লাখে ১৪.৭ (১৫) জনই আত্মহত্যা করে। ঐতিহাসিকভাবে, সুইডেনের উচ্চ আত্মহত্যার হার ছিল। উন্নত বিশ্বে ১৯৬০-এর দশকে সবচেয়ে বেশি আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে। এটি হতে পারে, অন্তত আংশিকভাবে, আত্মহত্যা এবং দীর্ঘ, অন্ধকার শীতকালীন, বিশেষ করে উত্তর অঞ্চলে সম্পর্কিত সাংস্কৃতিক মনোভাবের কারণে। সরকার সামাজিক কল্যাণ এবং মানসিক স্বাস্থ্য পরিষেবা দিয়ে সংকটের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে এবং সংখ্যা নাটকীয়ভাবে হ্রাস পেয়েছে। আজ, স্ক্যান্ডিনেভিয়ান দেশগুলি -নরওয়ে,সুইডেন, ডেনমার্ক এবং ফিনল্যান্ড-খুব বেশি সুখের হার এবং তুলনামূলকভাবে কম আত্মহত্যার হার হিসেবে বলা হয়। অন্যদিকে,কিছু কিছু এলাকায় যেখানে ২০ ঘণ্টাই খুব অন্ধকার শীত সেখানে সিজনাল অ্যাফেক্টিভ ডিসঅর্ডার (SAD) যা এক ধরনের বিষণ্নতা সৃষ্টি করে এটি আত্মহত্যার উচ্চ হারের সাথে সম্পর্কযুক্ত বলে জানা গেছে। ইউথেনেশিয়া, বা চিকিৎসকের সহায়তায় আত্মহত্যা, সুইডেনে এখনও বেআইনি হলেও কিছু কিছু ক্ষেত্রে আবার বৈধ। একজন চিকিৎসক গুরুতর অসুস্থ রোগীকে প্রাণঘাতী ওষুধ নাও দিতে পারেন, তবে তিনি রোগীর অনুরোধের কারণে রোগীর জীবন শেষ করতে পারেন তবে সে দেখবে রোগীর পরিণতি কেমন হবে। চিকিৎসকের সহায়তায় আত্মহত্যার এই রূপ, যা প্যাসিভ ইউথানেশিয়া নামে পরিচিত কিন্তু এটি আত্মহত্যার পরিসংখ্যানে অন্তর্ভুক্ত নয়। সক্রিয় ইউথানেসিয়া, যখন একজন চিকিৎসক রোগীর এবং পরিবারের সম্মতিতে একটি অস্থায়ীভাবে অসুস্থ রোগীকে প্রাণঘাতী ওষুধ দেন, শীঘ্রই সুইডেনে এটি আইনী হয়েও উঠতে পারে, কারণ এটি ইউরোপীয় দেশগুলিতে আরও গৃহীত হচ্ছে।


কথিত সুখী দেশের তালিকায় সুইডেন প্রথম হওয়া সত্ত্বেও কেন তারা আত্মহত্যায় এগিয়ে এই নিয়ে বিস্তারিত জানতে এই লেখাটি (৫) পড়তে পারেন। যেসব দেশে ধর্মহীনতা ও মুক্তচিন্তার চর্চা করা হয় এমন কিছু দেশে আত্মহত্যার খবর জেনে নেয়া যাক। সেসব দেশে কুরআনের আইন নেই, ইসলামের আইন নেই, সেখানের বেশির ভাগ মানুষ আল্লাহকে মানে না, নবীজি (সা)কে সত্য নবী হিসেবে স্বীকার করে না। আসুন একে একে তথ্য গুলো (৬) পড়ে নেই।


According to the World Health Organization, the suicide rate in South Korea is the fourth highest in the world. One factor in its high suicide rate is suicides among the elderly. Traditionally, children have been expected to care for their aging parents; however, because this system has mostly disappeared in the twenty-first century, many older adults commit suicide, rather than feel like they are a financial burden on their families. In addition to the elderly, students have higher-than-average suicide rates, at least partly because they feel high levels of pressure to succeed academically. When they do not achieve their goals, they may feel that they have dishonored their families. Alcohol use, sleep deprivation, stress, and poor social relationships can put students at increased risk of suicide.


বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, দক্ষিণ কোরিয়ায় আত্মহত্যার হার বিশ্বে চতুর্থ সর্বোচ্চ। এর মধ্যে বয়স্কদের আত্মহত্যা সব থেকে বেশি। ঐতিহ্যগতভাবে, শিশুদের তাদের বৃদ্ধ পিতামাতার যত্ন নেওয়ার আশা করা হয়। কিন্তু যেহেতু এই সিস্টেমটি বেশিরভাগই একবিংশ শতাব্দীতে অদৃশ্য হয়ে গেছে। প্রচুর প্রাপ্তবয়স্করা আত্মহত্যা করে শুধুমাত্র এই কারণে যে তারা মনে করে তারা পরিবারের জন্য আর্থিক বোঝা। বয়স্কদের পাশাপাশি, ছাত্রদের আত্মহত্যার হার গড়ের চেয়ে বেশি, অন্তত আংশিক কারণ তারা একাডেমিকভাবে সফল হওয়ার জন্য উচ্চ স্তরের চাপ অনুভব করে। যখন তারা তাদের লক্ষ্য অর্জন করতে পারে না, তখন তারা মনে করতে পারে যে তারা তাদের পরিবারকে অসম্মান করেছে। অ্যালকোহল ব্যবহার, ঘুমের অভাব, মানসিক চাপ এবং দুর্বল সামাজিক সম্পর্ক শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যার ঝুঁকি বাড়াতে পারে।


Japan's total numbers place it significantly outside the top 10, but suicide is nonetheless a serious concern there. Suicide is the leading cause of death in men between the ages of 20-44 and women between the ages of 15-34. The government has been active in intervention to decrease the risk of suicide, particularly among vulnerable populations. Japanese men are twice as likely to commit suicide as their female counterparts, particularly after a divorce. Of particular concern is suicide among men who have recently lost their jobs and are no longer able to provide for their families. People are expected to stay married to a single person and stay on a single job for their entire life, and the pressure of this expectation can make a divorce or job loss feel like a failure. Aokigahara Forest, at the base of Japan's Mount Fuji, is a hotspot for suicides, as hundreds of people go there each year to end their lives. Police regularly patrol the area for suicide victims and survivors.


জাপানের মধ্যে আত্মহত্যা একটি  গুরুতর উদ্বেগের বিষয়। পুরুষদের মধ্যে ২০ থেকে ৪৪ বছর বয়সী এবং মহিলাদের মধ্যে ১৫ থেকে ৩৪ বছর বয়সী আত্মহত্যাকারী রয়েছে। সরকার চেষ্টা করে যাচ্ছে এই সমস্যার সমাধান করতে,বিশেষ করে দুর্বল জনগোষ্ঠীর মধ্যে। জাপানি পুরুষদের আত্মহত্যা করার সম্ভাবনা তাদের নারীদের তুলনায় দ্বিগুণ, বিশেষ করে বিবাহবিচ্ছেদের পর। বিশেষ উদ্বেগের বিষয় হল এমন পুরুষদের মধ্যে আত্মহত্যা যারা সম্প্রতি তাদের চাকরি হারিয়েছেন এবং তাদের পরিবারের ভরণপোষণ দিতে আর সক্ষম নন। লোকেরা একজন অবিবাহিত ব্যক্তির সাথে বিবাহিত থাকবে এবং তাদের সারা জীবন একক চাকরিতে থাকবে বলে আশা করা হয় এবং এই প্রত্যাশার চাপ বিবাহবিচ্ছেদ বা চাকরি হারানোর ব্যর্থতার মতো অনুভব করতে পারে। জাপানের মাউন্ট ফুজির গোড়ায় অবস্থিত আওকিগাহারা অরণ্য আত্মহত্যার জন্য একটি হটস্পট, কারণ প্রতি বছর শত শত মানুষ সেখানে গিয়ে তাদের জীবন শেষ করে। আত্মহত্যার শিকার এবং বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিদের জন্য পুলিশ নিয়মিত এলাকায় টহল দেয়।


In China, suicide is the fifth leading cause of death and accounts for over one-quarter of suicides worldwide. In contrast with many Western countries, in which men are more likely to commit suicide, most suicide victims in China are women. China's economic boom has led to greater independence for women, who are now much more able to get divorced as a means of dealing with domestic violence. However, the strain of divorce means that they must work long hours while raising their children, often without family support that the culture has traditionally relied on in the past.When women show the strain of their stressful lives and are admitted to a hospital for psychiatric care, they are likely to be discharged much sooner than their male counterparts. They feel that they need to return to their jobs and families as quickly as possible, even if they are not ready to do so. Additionally, many insurances do not cover hospital stays in cases of attempted suicide. These strains have exacerbated suicide among Chinese women. People in rural parts of China are five times more likely to commit suicide than people in cities. This notion may be attributed to a lack of mental healthcare, the stigma associated with mental illnesses (such as schizophrenia), poverty, and poor education. However, exact statistics are hard to come by because the Chinese government has carried out few to no epidemiological studies on suicide. Most suicide attempts in China are carried out with a pesticide or other poison.


মৃত্যুর পঞ্চম প্রধান কারণ হচ্ছে চীনে। বিশ্বব্যাপী আত্মহত্যার এক-চতুর্থাংশেরও বেশি চীনে। অনেক পশ্চিমা দেশের বিপরীতে, যেখানে পুরুষদের আত্মহত্যা করার সম্ভাবনা বেশি, চীনে বেশিরভাগ আত্মহত্যার শিকার নারী। চীনের অর্থনৈতিক উত্থান নারীদের জন্য বৃহত্তর স্বাধীনতার দিকে পরিচালিত করেছে, যারা এখন গার্হস্থ্য সহিংসতা মোকাবেলার উপায় হিসাবে বিবাহবিচ্ছেদ পেতে অনেক বেশি সক্ষম। বিবাহবিচ্ছেদের স্ট্রেনের অর্থ হল তাদের সন্তানদের লালন-পালন করার সময় তাদের দীর্ঘ সময় কাজ করতে হবে, প্রায়শই পারিবারিক সমর্থন ছাড়াই যে সংস্কৃতি অতীতে ঐতিহ্যগতভাবে নির্ভর করে। যখন মহিলারা তাদের মানসিক চাপের জীবনের চাপ দেখান এবং মানসিক যত্নের জন্য হাসপাতালে ভর্তি হন, তখন তাদের পুরুষ সমকক্ষদের তুলনায় অনেক তাড়াতাড়ি ছাড়ার সম্ভাবনা থাকে। তারা মনে করে যে তাদের যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তাদের চাকরি এবং পরিবারে ফিরে আসা দরকার, এমনকি তারা তা করতে প্রস্তুত না হলেও। উপরন্তু, অনেক বীমা আত্মহত্যার চেষ্টার ক্ষেত্রে হাসপাতালে থাকার কভার করে না। এই স্ট্রেনগুলি চীনা মহিলাদের মধ্যে আত্মহত্যাকে বাড়িয়ে তুলেছে। চীনের গ্রামাঞ্চলের মানুষের আত্মহত্যার সম্ভাবনা শহরের মানুষের তুলনায় পাঁচগুণ বেশি। এই ধারণাটি মানসিক স্বাস্থ্যসেবার অভাব, মানসিক অসুস্থতার সাথে সম্পর্কিত কলঙ্ক (যেমন সিজোফ্রেনিয়া), দারিদ্র্য এবং দুর্বল শিক্ষার জন্য দায়ী করা যেতে পারে। সঠিক পরিসংখ্যান পাওয়া কঠিন কারণ চীনা সরকার আত্মহত্যার বিষয়ে খুব কম বা কোনো মহামারী সংক্রান্ত গবেষণা চালিয়েছে। চীনে বেশিরভাগ আত্মহত্যার প্রচেষ্টাই কীটনাশক বা অন্যান্য বিষ দিয়ে করা হয়।


চায়না,উত্তরকোরিয়া,জাপান,সুইডেন,জার্মানি,রাশিয়া ইত্যাদি এসব ধর্মহীন প্রধান দেশ। সেসব দেশে পইপই করে নাস্তিক্যধর্মের অনুসারী বৃদ্ধি পাচ্ছে। সেখানের মানুষরা মুক্তবুদ্ধির চর্চা করে, সেখানের মানুষরা চিন্তার মুক্তির আন্দোলন করে। যেসব দেশে নাস্তিকদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে তার একটি তালিকা এখান থেকে (৭) দেখে নিতে পারেন। নাস্তিকদের দাবি অনুসারে কথিত সুখী দেশ সুইজারল্যান্ড অনেক মানবতার কাম শারসে। সেই দেশে নাকি এমন যন্ত্র আবিস্কার করসে যে, নিজেকে খুন করার সময় নাকি কষ্ট কম হবে। কি হাঁসি পাচ্ছে তাই তো? আসুন এই হাস্যকর তথ্যটি সরাসরি খবরের পত্রিকা থেকে জেনে নেই। “যুগান্তর” পত্রিকায় ০৮ ডিসেম্বর ২০২১ তারিখে “বেদনাহীন আত্মহত্যার যন্ত্রের বৈধতা দিল সুইজারল্যান্ড!” শিরোনামে খবরে লেখা হয়েছে (৮),


এক মিনিটেরও কম সময়ে ব্যথা-বেদনাবিহীন অনায়াস মৃত্যু। এমনই এক যন্ত্রের আইনি স্বীকৃতি দিল সুইজারল্যান্ড।কফিন আকৃতির ওই যন্ত্রে কৃত্রিম উপায়ে অক্সিজেন ও কার্বন ডাই-অক্সাইডের পরিমাণ কমিয়ে এক মিনিটেরও কম সময়ের মধ্যে মৃত্যু ডেকে আনা হয়। যন্ত্রের নাম দেওয়া হয়েছে ‘সারকো’। স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘এগজিট ইন্টারন্যাশনাল’ এই যন্ত্রটি তৈরি করেছে। ‘ডক্টর ডেথ’ হিসেবেও পরিচিত সংস্থাটির প্রধান ফিলিপ নিটশে রয়েছেন এই যন্ত্রের উদ্ভাবনের নেপথ্যে। সংস্থার দাবি— বাইরে থেকে যন্ত্র নিয়ন্ত্রণ করার পাশাপাশি ভেতর থেকেও তা চালু করা যাবে। অর্থাৎ মৃত্যুর প্রত্যাশায় যে ব্যক্তি ওই যন্ত্রের ভেতর ঢুকবেন, তিনি নিজেও যন্ত্রটি চালাতে পারবেন। এখানেই রয়েছে মূল সমস্যা। মরণেচ্ছু ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে সাধারণত দেখা যায়, এ পরিস্থিতিতে তারা অচেতন হয়ে পড়েন। পেশিশক্তি ব্যবহার করে কোনো কাজ করার মতো পরিস্থিতি তাদের বেশিরভাগের থাকে না। এই যন্ত্রে তারও সমাধান করা গেছে বলে দাবি সংস্থাটির। ‘এগজিট ইন্টারন্যাশনাল’-এর দাবি, ওই পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে শুধু চোখের পাতার নড়াচাড়া আঁচ করেই যন্ত্র সংকেত গ্রহণ করতে পারবে। সংস্থাটি জানিয়েছে, আপনার যেখানে প্রয়োজন, সেখানেই নিয়ে যাওয়া যাবে সারকোকে। মূল মেশিন থেকে সারকোকে আলাদা করলে তা দেখতে হবে অনেকটা কফিনের মতো। সেই কফিনে একবার শুয়ে পড়লেই সব শেষ! বিশেষ ক্ষেত্রে সুইজারল্যান্ডে আত্মহত্যায় সহায়তা প্রদান করা আইনিভাবে বৈধ। গত বছর অন্তত ১ হাজার ৩০০ মানুষ এ প্রক্রিয়ার সাহায্য নিয়েছেন। সংস্থাটির দাবি, এবার আইনি বৈধতা পেল আত্মহত্যা করার যন্ত্র ‘সারকো’


সংশয় হচ্ছে নিজেকে খুন করার সময় নিজের যে কষ্ট লাগে না এটা কিভাবে তারা বুঝতে পারলো? তারা কি নিজেকে করে হত্যা করে চেক করেছে নাকি? তাহলে নিশ্চিত কিভাবে হচ্ছে? মৃত্যু যদি এতোই আরামদায়ক হয় তাহলে বঙ্গীয় নাস্তিকরা কেন মুক্তচিন্তায় সেই প্রযুক্তিতে নিজেকে খুন করছে না? শুধু কি এখানেই শেষ? একদম না। জাপানে কেন আত্মহত্যা বেশি আসুন সেটাও জেনে নেয়া যাক। খবরটি খুবই মনোযোগ দিয়ে পড়বেন। বুদ্ধিমানদের জন্য ইশারাই যথেষ্ট। “BBC NEWS বাংলা”য় ৬ নভেম্বর ২০১৮ তারিখে “জাপান কেন আত্মহত্যা প্রবণ দেশ হিসেবে পরিচিত?” শিরোনামে খবরে লেখা হয়েছে(৯),


জাপানের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, গত তিন দশকের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক শিশু আত্মহত্যা করেছে গত বছরে। ২০১৬-১৭ অর্থবছরের মার্চ মাস পর্যন্ত প্রাথমিক থেকে হাইস্কুলের ২৫০ জন শিশু আত্মহত্যা করেছে বলে জানা গেছে। ১৯৮৬ সালের পর থেকে জাপানে এত বিপুল সংখ্যক শিশু আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেনি। আত্মহত্যার আগে ঐসব শিশুরা যেসব সমস্যার কথা জানিয়েছিল তার মধ্যে রয়েছে পারিবারিক সমস্যা, ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তা এবং বন্ধুদের কাছ থেকে অবজ্ঞা বা তাচ্ছিল্য পূর্ণ ব্যবহারতবে স্কুলগুলোর পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে এসব ঘটনার ১৪০টিরই সঠিক কারণ তারা জানে না কারণ সেসব ক্ষেত্রে শিশুরা আত্মহত্যার আগে কোনো নোট রেখে যায়নি। আত্মহত্যা করা অধিকাংশ শিশুই হাই স্কুলের শিক্ষার্থী। ১৮ বছরের কম বয়সী জাপানি শিক্ষার্থীরা সাধারণত এসব স্কুলে পড়ে। ২০১৫ সালে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি আত্মহত্যা প্রবণ দেশগুলোর একটি ছিল জাপান; তবে এই প্রবণতা বন্ধ করতে জাপান সরকার বিভিন্ন ধরণের পদক্ষেপ নেয়ার পর অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয় বলে উঠে আসে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার রিপোর্টে। ২০০৩ সালে জাপানে মোট আত্মহত্যার ঘটনা ছিল ৩৪ হাজার ৫০০টি, যা কমে ২১ হাজারে নেমে আসে ২০১৭ সালে। কেন জাপানে আত্মহত্যার হার এত বেশি? ২০১৪ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী জাপানে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৭০ জন মানুষ আত্মহত্যা করে। বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর সাথে তুলনা করলে দক্ষিণ কোরিয়া বাদে অন্য কোনো দেশে আত্মহত্যার হার এত ব্যাপক নয়।


ঐতিহাসিক ধারাঃ আর্থ-সামাজিক এবং ঐতিহাসিক কারণে জাপানে মানুষের আত্মহত্যার প্রবণতা অনেক বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। টোকিও'র টেম্পল বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞানী ওয়াতুরু নিশিদা বলেন, "বিষণ্ণতা এবং আত্মহত্যার অন্যতম প্রধান কারণ বিচ্ছিন্নতা বা একা থাকার প্রবণতা।" "জাপানে একসময় বৃদ্ধ অভিভাবকদের দেখাশোনা করতো তাদের সন্তানরা, তবে বর্তমানে সেরকমটা হয় না বললেই চলে। বৃদ্ধাশ্রম বা হাসপাতালে একাকী মৃত্যুবরণের ঘটনা দিন দিন বাড়ছেই।" জাপানে ঐতিহাসিকভাবে প্রচলিত 'সম্মানজনক আত্মহত্যা'র ঐতিহ্যকেও দায়ী মনে করেন অনেকে। জাপানের সামুরাই যোদ্ধাদের আত্মহত্যা, যাকে 'সেপ্পুকু' বলা হতো অথবা ১৯৪৫ সালে তরুণ 'কামিকাজে' বিমানচালকদের আত্মহত্যার ইতিহাস বর্তমান প্রজন্মের মানসিকতায় গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব রাখে বলে মনে করেন ঐ বিশেষজ্ঞরা। মি. নিশিদা বলেন, "জাপানে ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে বিবেচনা করলে, আত্মহত্যা করা পাপ নয়।" জাপান হেল্পলাইনে কাজ করা কেন জোসেফ মন্তব্য করেন অনেকসময় বৃদ্ধ ব্যক্তিরা অর্থনৈতিক দুশ্চিন্তা এবং বীমা সংক্রান্ত জটিলতা থেকে রেহাই পেতে আত্মহত্যা করেন। জাপানে আত্মহত্যা সংক্রান্ত ঘটনায় বীমা প্রতিষ্ঠানগুলো সহজেই বীমার অর্থ হস্তান্তর করে। মি. জোসেফ বলেন, "যখন আর কোনে উপায় থাকে না, তখন অনেকেই মনে করেন, আত্মহত্যা করলে সহজেই পরিবারের টাকা-পয়সা সংক্রান্ত জটিলতা দূর হবে।"


অর্থনৈতিক চাপঃ জাপানে যে শুধু নি:সঙ্গ বৃদ্ধরাই আত্মহত্যার পথ বেছে নেন, তা নয়। আত্মহত্যা করা মানুষের বয়স যাচাই করলে দেখা যায় সবচেয়ে বেশি সংখ্যক আত্মহত্যাকারী ২০ থেকে ৪৪ বছর বয়সী পুরুষ। এসব আত্মহত্যার ঘটনা যাচাই করলে দেখা যায় যে তারা জীবন নিয়ে হতাশ ছিলেন এবং কারো কাছে সাহায্য চাইতে অপারগ ছিলেন। ১৯৯৮ সালে এশিয়ার অর্থনৈতিক সঙ্কটের পর এ ধরণের আত্মহত্যার হার বেড়ে গিয়েছিল। ২০০৮ সালের বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সঙ্কটের পর আবারও এই হার বৃদ্ধি পায়। বিশেষজ্ঞদের মতে, জাপানে 'অনিশ্চিত চাকরি'র সংখ্যা বা তরুণদের স্বল্প মেয়াদী চুক্তিতে চাকরি দেয়ার প্রবণতা বৃদ্ধি পাওয়ায় মানুষের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা বেড়েছে। জাপানে এখনো অনেক বয়স্ক ব্যক্তিরা চাকরিক্ষেত্রে নিরাপত্তা এবং ব্যাপক সুবিধা পেলেও ২০১৫ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী জাপানের তরুণদের প্রায় ৪০% স্থির চাকরি পান না


মানসিকতা ও প্রযুক্তিঃ অর্থনৈতিক দুশ্চিন্তা ও অনিরাপত্তার পাশাপাশি অভিযোগ না করার মানসিকতার সংস্কৃতিও তরুণদের মধ্যে আত্মহত্যা বাড়ার পেছনে বড় ভূমিকা রাখে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। মি. নিশিদা বলেন, "রাগ বা ক্ষোভ প্রকাশ করার খুব একটা সুযোগ নেই জাপানের সমাজে।" "এটি একটি নিয়মতান্ত্রিক সমাজ। তরুণদের একটি নির্দিষ্ট গণ্ডির মধ্যে আবদ্ধ থাকতে হয়। তাদের সত্যিকার মনোভাব প্রকাশের কোনো সুযোগই থাকে না তাদের সামনে।" আর বিশেষজ্ঞরা মনে করেন দিনদিন প্রযুক্তির উন্নয়ন এবং প্রসারের কারণে এই অবস্থার আরো অবনতি হচ্ছে। আধুনিক প্রযুক্তি তরুণদের সমাজ থেকে আরো বিচ্ছিন্ন করছে বলে মনে করেন তারা। সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন থাকার এই প্রবণতার একটি বিশেষ নামও রয়েছে জাপানে; এটিকে বলা হয় 'হিক্কিমোরি'। জাপানের স্বাস্থ্য, শ্রম ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের ভাষায়, হিক্কিমোরি হলো সেসব ব্যক্তি যারা ৬ মাসের বেশি সময় ধরে নিজেদের বাড়ির বাইরে বের হয় নি এবং নিজেদের সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন করে রেখেছে। জাপানের সরকারি তথ্য অনুযায়ী ২০১০ সালে জাপানে হিক্কোমোরি হিসেবে বসবাসরত ব্যক্তির সংখ্যা ৭ লক্ষ। জাপান ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র, ওমান, স্পেন, ইতালি, দক্ষিণ কোরিয়া ও ফ্রান্সেও এই ধরণের ঘটনার প্রমাণ পাওয়া গেছে


বুদ্ধিমানদের কাছে কিছু প্রশ্ন জমা রেখে যাচ্ছি। জাপানীরা যদি যৌক্তিক ও সত্য বিশ্বাস করতো তাহলে কি নিজেকে খুন করতে পারতো? তারা যদি এটা মনে প্রাণে স্বীকার করতো আমাদেরকে মৃত্যুর বাদে আল্লাহর সামনে জবাব দিতে হবে, আমি যদি নিজেকে খুন করি তাহলে তো আমি অপরাধী হয়ে যাবো,কারণ এই জীবনের মালিক তো আমি নই, তাহলে আমি কিভাবে নিজেকে খুন করতে পারি? ফজরের নামাজ আদায় করে আল্লাহর জিকিরের মধ্যে যেই প্রশান্তি সেটা যদি জাপানীরা বুঝতো তাহলে একাকীত্ব কি জিনিস টেরই পেতো না। আত্মহত্যা করা তো দূর কি বাথ। সেসব জাপানীরা যদি মনে প্রাণে সঠিকভাবে আল্লাহর আইন মেনে চলতো তাহলে দুঃখ কষ্টের সাথে কিভাবে লড়াই করতে হয়, কিভাবে চরম বিপদের সময় ধৈর্য ধারণ করতে হয় সেটা অনুধাবন করতে পারতো। গণ্ডমূর্খ বলদ নাস্তিকরা এসব মনস্তাত্ত্বিক শক্তিশালী ব্যাপার গুলোতে হাসাহাসি করে এড়িয়ে থাকতে চায় কিন্তু যারা সঠিকভাবে গভীর চিন্তাশীল তারা ঠিকই বুঝতে পারবে এসব ব্যাপারের মর্ম।


২০১৮ সালের রিপোর্ট অনুসারে (১০),


In the Shadow of Happiness, authored by the Nordic Council of Ministers and the Happiness Research Institute in Copenhagen, some 16% of Finnish women aged 18 to 23 and 11% of young men define themselves as “struggling” or “suffering” in life. This level is only worse in the age bracket of 80 or above.Suicide rates in Finland are half what they were in 1990s…but they remain well above the European average। The last in-depth nationwide study of depression in Finland was in 2011, but not-for-profit organization Mieli (Mental Health Finland) estimates that around 20% of under 30s have experienced depressive symptoms in the last year.“It is prevalent,” says Juho Mertanen, a psychologist for the organization. “And there are signs it might be rising, although this rise is not as extreme as some of the media here have made out.”A 2017 report for the Nordic Centre for Welfare and Social Issues highlighted close links between substance abuse and ill health, noting that Finns drink more than their Nordic neighbors. There has also been an increase in drug use in the 25 to 34 age group. And while nationwide unemployment rates are low, they are significantly higher among young people. Some 12.5% of 15- to 19-year-olds were jobless at the end of 2018, the highest proportion in the Nordics and above the EU average of 11.5%.


কোপেনহেগেনের নর্ডিক কাউন্সিল অফ মিনিস্টারস এবং হ্যাপিনেস রিসার্চ ইনস্টিটিউট দ্বারা রচিত সুখের ছায়ায়, ১৮ থেকে ২৩ বছর বয়সী প্রায় ১৬% ফিনিশ মহিলা এবং ১১% যুবক নিজেদেরকে জীবনের "সংগ্রামী" বা "দুঃখিত" হিসাবে সংজ্ঞায়িত করেন৷ এই স্তরটি ৮০ বা তার বেশি বয়সের বন্ধনীতে আরও খারাপ। ফিনল্যান্ডে আত্মহত্যার হার ১৯৯০-এর দশকের তুলনায় অর্ধেক…কিন্তু তারা ইউরোপীয় গড়ের উপরেই রয়ে গেছে। ২০১১ সালে ফিনল্যান্ডে বিষণ্ণতার সর্বশেষ গভীর দেশব্যাপী অধ্যয়ন হয়েছিল, কিন্তু অলাভজনক সংস্থা মেন্টাল হেলথ ফিনল্যান্ড (Mieli) অনুমান করে যে ৩০ বছরের কম বয়সীদের মধ্যে প্রায় 20% গত বছরে বিষণ্ণতার লক্ষণগুলি অনুভব করেছে৷ সংস্থার মনোবিজ্ঞানী জুহো মারতানেন বলেছেন, "এটি প্রচলিত৷ "এবং এটি বাড়তে পারে এমন লক্ষণ রয়েছে, যদিও এই বৃদ্ধি এতটা চরম নয় যেটা এখানকার কিছু মিডিয়া প্রকাশ করেছে।" ২০১৭ সালে নর্ডিক সেন্টার ফর ওয়েলফেয়ার অ্যান্ড সোশ্যাল ইস্যুর জন্য একটি রিপোর্ট করা হয়। রিপোর্টটি পদার্থের অপব্যবহার ও অসুস্থ স্বাস্থ্যের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তুলে ধরেছে। রিপোর্টটি উল্লেখ করেছে যে, ফিনস তাদের নর্ডিক প্রতিবেশীদের চেয়ে বেশি পান করে। ২৫ থেকে ৩৪ বছর বয়সী গ্রুপের মধ্যে মাদকের ব্যবহারও বৃদ্ধি পেয়েছে। এবং দেশব্যাপী বেকারত্বের হার কম হলেও তরুণদের মধ্যে তা উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি। ১৫ থেকে ১৯ বছর বয়সীদের মধ্যে প্রায় ১২.5% ২০১৮ সালের শেষে বেকার ছিল, নর্ডিকদের মধ্যে সর্বোচ্চ অনুপাত এবং ইইউ গড় ১১.৫% এর উপরে।


চিন্তাবিদ জোনে জান্টুরা নিজেই স্পষ্ট স্বীকার করেছেন যে (১১),যদিও পরিসংখ্যান অনুসারে ফিনল্যান্ডকে বিশ্বের সুখী দেশ বলা হয় কিন্তু এই পরিসংখ্যান পুরো গল্পটি বলে না। কারণ হতাশা একটি রোগ এবং এটি সবসময় পরিস্থিতির সাথে সম্পর্কিত নয়।"


“Even though we're the happiest country in the world according to the statistics, it doesn't tell the whole story. Because depression is a disease and it doesn't always relate to circumstances.” “The moment I personally fell ill, everything was fine with my life. I was really enjoying my school. I loved my hobbies. I was in a relationship. So there was nothing dramatically wrong with my life. But still, I fell ill,” he explains.


তিনি আরও বলেন, “যে মুহূর্তে আমি ব্যক্তিগতভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলাম, আমার জীবনের সবকিছু ঠিকঠাক ছিল। আমি সত্যিই আমার স্কুল উপভোগ করছিলাম. আমি আমার শখ পছন্দ করতাম। আমি একটি সম্পর্কে পর্যন্ত ছিলাম। তাই আমার জীবনে নাটকীয়ভাবে ভুল কিছু ছিল না। কিন্তু তবুও, আমি আমার জীবন নিয়ে অসুস্থ থাকতাম।


যদিও ফিনল্যান্ড সহ নানান দেশে এই আত্মহত্যা নামক বর্বরতাকে কমানোর জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছে কিন্তু কতটুকু সফল হবে সেটা প্রশ্নের ব্যাপার। টিয়াগো জর্টিয়া একজন ক্লিনিকাল সাইকোলজিস্ট এবং গ্লাসগো বিশ্ববিদ্যালয়ের আত্মহত্যামূলক আচরণ গবেষণা গবেষণাগারের একজন পোস্টডক্টরাল গবেষক। উনি গবেষণা করে একটি চার্টের মাধ্যমে দেখিয়েছেন আত্মহত্যার অর্থাৎ নিজেকে হত্যা করে ফেলায় মুক্তচিন্তার নাস্তিকরা সব থেকে উন্নত। আসুন সরাসরি দেখে নেই গ্রাফ চার্টটি (১২)।


যেসব নাস্তিকরা মুক্তচিন্তায় নিজেকে খুন করা জায়েজ মনে করে,তারা আবার এর পক্ষে যুক্তিও দেখায়। তারা বলে,আমার দেহ আমার সিদ্ধান্ত। আমি আমাকে নিয়ে কি করবো,কি করবো না সেটা অন্য কেউ কেন নির্ধারণ করে দেবে? ইসলামে আত্মহত্যা হারাম থাকলেই কি আমাকে সেটা মেনে নিতে হবে? আমি নিজের মতো করে স্বাধীন চিন্তা করবো। মন চাইলে এই জীবন রাখবো, মনে না চাইলে সুইসাইড করবো।   আমার ইচ্ছা আমি নিজেকে হত্যা করবো তাতে কার বাপের কি? এমন কথাবার্তা আসলেই কতটা ভালো সেটা পাঠকদের কাছেই রেখে দিচ্ছি। আরও গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হচ্ছে নাস্তিক্যধর্মে সুখ কাকে বলা হবে এবং কাকে বলা হবে না? কারণ একজন মানুষ ডাকাতি করেও সুখী হতে পারে, মদ খেয়েও সুখী হতে পারে, নিজের পিতার সাথে চিন্তার মুক্তিতে সমকামীতা করেও সুখী হতে পারে আবার ধনী হলেও সুখী হয়ে পারে? এমন অনেক মানুষ রয়েছে যাদের টাকা, পয়সা, সম্মান, ইজ্জত, নারী, ঘর এক কোথায় দুনিয়ার কোনো জিনিসের অভাব ছিল না এরপরেও তারা নিজেকে নিজেই খুন করেছে, প্রশ্ন হচ্ছে কেন? তারা কেন সুখী ছিল না,যেখানে সুখের সব উপাদান তাদের কাছে মৌজুদ ছিল?


আমি কিছু প্রমাণ দিয়ে দিচ্ছি (১৩)(১৪)(১৫) যেখান থেকে আপনারা জেনে নিতে পারবেন যেসব বড় বড় ধনী পপুলার মানুষরা নিজেকে খুন করেছিল। নিজের মূল্যবান জীবন নিজেই খতম করে দিয়েছিল। নাস্তিক্যধর্মে এমন আত্মঘাতী কর্মের বৈধতা আছে। তাদের মধ্যে কবি, অভিনেতা, সাহিত্যিক সকলেই রয়েছেন। তাদেরকে মানুষ সম্মান করতো, প্রশংসা করতো, দেখলেই সেলফি নিতে চাইতো, হুমড়ি খেতো। তাদের কি জীবনে সুখ ছিল না? তারা কি গরীব ছিল? তারা কি খাবার পেতো না? তারা যদি সেলফি তোলার জন্যও অর্থ নিতো তাহলেও কোটি কোটি অর্থ উপার্জন হাতের ময়লা ছিল কিন্তু কেন আত্মহত্যা করেছে? কি সেই গোপন সমস্যা যার কারণে পৃথিবীর সব সুখের উপাদার তাদের কাছে থাকা সত্ত্বেও তারা নিজেকে খুন করেছে? তারা গরীব হলে নাস্তিকরা হয়তো বলতে পারতো যে এই এই কারণে খুন করেছে কিন্তু দুনিয়ার সুখের সব উপাদান তাদের ছিল তাহলে? আমি কিন্তু বলছি না, ধনী হওয়া খারাপ জিনিস। আমি এটাও বলছি না,ধনী হবার কারণেই তারা আত্মহত্যা করেছে। আমি কিন্তু এসব বোঝাচ্ছি না। আমি কি বুঝিয়েছি সেটা ভালো করে বুঝতে হবে। সব কিছু থাকার পরেও তাদের মধ্যে কি এমন ব্যাপার ছিল, যা তাদের মধ্যে ছিল না?


আত্মহত্যা কেন বৃদ্ধি পাচ্ছে?

সমসাময়িক পরিসংখ্যান পর্যালোচনায় মানুষের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ধরনগুলোর অন্যতম হচ্ছে আত্মহত্যা। এটি জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি হিসাবে দেশে ও অঞ্চলভেদে ভিন্নরূপ পরিগ্রহ করছে। সমকালীন আত্মহত্যার স্বীকৃত উদাহরণগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে-প্যাক্ট সুইসাইড, ম্যাস সুইসাইড, প্যারাসুইসাইড, অনার সুইসাইড, ডিউটিফুল সুইসাইড, ইউথানসিয়া, মার্ডার সুইসাইড বা মার্সি কিলিং, সুইসাইড অ্যাটাক ইত্যাদি। দেশের বিজ্ঞজনের প্রচলিত ধারণায় পারিবারিক নির্যাতন, কলহ, শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন, পরীক্ষা ও প্রেমে ব্যর্থতা, দারিদ্র্য, বেকারত্ব, প্রাত্যহিক জীবনে অস্থিরতা, নৈতিক অবক্ষয়, মাদক ইত্যাদি কারণে মানুষ আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়। আত্মহত্যার উপর পরিচালিত বিভিন্ন গবষেণায় প্রমাণিত-পৃথিবীর সব আত্মহত্যার পিছনেই রয়েছে আত্মহত্যাকালীন ব্যক্তির বিষণ্নতা, ব্যক্তিত্বের বিকার, সিজোফ্রেনিয়া, মুড ডিসঅর্ডার, মাদকাসক্তি ইত্যাদি মানসিক রোগ। প্রচলিত সমাজব্যবস্থায় এ রোগগুলোর প্রতি এক ধরনের বদনাম জড়িয়ে থাকায় সংকোচের কারণে মানুষের এসব রোগের চিকিৎসা করতে সচেষ্ট-উৎসাহিত না হওয়াও আত্মহত্যার অন্যতম কারণ।


বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গবেষণার তথ্য অনুযায়ী, প্রতি বছর বিশ্বে আত্মহত্যা করে ৮ লাখ মানুষ। দৈনিক এ হার ২ হাজার ১৯১ এবং প্রতি লাখে ১৬ জন। গত ৫০ বছরে সারা বিশ্বে, বিশেষ করে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে আত্মহত্যার হার বেড়েছে ৬০ শতাংশ। এর মধ্যে বাংলাদেশে আত্মহত্যার প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে ২ দশমিক ৬ শতাংশ। প্রতি বছরই এ হার বৃদ্ধি পাচ্ছে। গণমাধ্যম সূত্রে প্রাপ্ত তথ্যানুসারে, বিশ্বে প্রতি ৪০ সেকেন্ডে একজন এবং বাংলাদেশে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৩০ জন মানুষ আত্মহত্যা করছে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা যায়, বাংলাদেশে ৬ বছরে প্রায় ৭০ হাজার মানুষ আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) তথ্যমতে, ২০১৬ সালে বাংলাদেশে আত্মহত্যা করেছে ১০ হাজার ৭৪৯ জন। ২০১৭ ও ২০১৮ সালে দেশে আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে যথাক্রমে ১০ হাজার ২৫৬ ও ১১ হাজার। ২০১৯-২০ সময়কালে করোনার সময়ে বাংলাদেশে আত্মহত্যা করেছে ১৪ হাজার ৪৩৬ জন, যাদের মধ্যে ২০-৩৫ বয়সিরাই সবচেয়ে বেশি। স্বাভাবিক সময়ে মেয়েদের আত্মহত্যার প্রবণতা বেশি হলেও এ সময়ে মেয়েদের তুলনায় ছেলেদের আত্মহত্যার পরিমাণ ছিল তিন গুণ। ডিএমপি সূত্রে আরও জানা যায়, ২০২০ সালের এপ্রিল থেকে ২০২১ সালের ৩১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ঢাকায় আত্মহত্যাজনিত অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে ২ হাজার ১৬৬টি। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সূত্রে জানা যায়, ২০২১ সালে ১১ হাজারের বেশি মানুষ আত্মহত্যা করেছে।


তরুণদের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ কঠিন দিকনির্দেশনা সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। যেমন স্কুল; বসবাসের অবস্থা; বন্ধু ইত্যাদি। তাদের অবশ্যই ব্যক্তিগত পরিচয় গড়ে তোলা, আত্মসম্মান বৃদ্ধি, ক্রমবর্ধমান স্বাধীনতা এবং দায়িত্ব অর্জন, নতুন ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তোলা ইত্যাদি বিষয়ে নতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে। তা ছাড়াও, তারা প্রায়শই উলেস্নখযোগ্য আত্মীয় এবং বন্ধুদের কাছ থেকে অত্যধিক প্রত্যাশার মুখোমুখি হয়, কখনো কখনো খুব বেশি। এই ধরনের পরিস্থিতি অনিবার্যভাবে একটি নির্দিষ্ট মাত্রার অসহায়ত্ব, নিরাপত্তাহীনতা, চাপ এবং নিয়ন্ত্রণ বাদ দেওয়ার অনুভূতিকে উদ্বুদ্ধ করে। এই কারণে, তারা হতাশা এবং আত্মহত্যার চিন্তার মধ্য দিয়ে যায়।


প্রতিবছর বিশ্বে প্রায় ৮ লাখ লোক আত্মহত্যা করে, প্রতি ৪০ সেকেন্ডে একজন। ১৫-২৯ বছরের তরুণ–তরুণীদের মৃত্যুর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ কারণ আত্মহত্যা, ৭৯ শতাংশ আত্মহত্যা ঘটে আমাদের মতো নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে। অনেকে মনে করেন, স্বার্থপর লোকেরা আত্মহত্যা করে, তাদের প্রতি সহানুভূতি জানানো ঠিক না। কিন্তু আসলেই কি আত্মহত্যা এত সহজ ব্যাপার? মনোবিজ্ঞানী জয়েনার বলেন, ‘হত্যা করা কঠিন, বিশেষ করে নিজেকে হত্যা করা। কেননা শারীরবৃত্তীয়ভাবে আমরা “বেঁচে থাকার” জন্য তৈরি হয়েছি। আমরা জীবনের সব সম্পদ ত্যাগ করে হলেও বেঁচে থাকতে চাই।’


সেন্টার ফর সুইসাইড প্রিভেনশন–এর লেখক রবার্ট ওলসন আত্মহত্যার চেষ্টা করে বেঁচে যাওয়া একজনের নোট তুলে ধরেন, ‘আমি শুনেছি, লোকে বলে যারা আত্মহত্যা করে তারা স্বার্থপর। কিন্তু এটা সত্যি নয়। যে মুহূর্ত পর্যন্ত আপনি সেই চরম, নিঃসীম অন্ধকারকে অনুভব না করবেন, যখন আশাহীনতা, কষ্ট আপনাকে বলবে পৃথিবীতে তোমার কিছু করার নেই, সেই বিরামহীন বেদনা বন্ধের একমাত্র পথ হচ্ছে এই অসহনীয় পরিস্থিতি থেকে নিজেকে “সরিয়ে নেওয়া” ততক্ষণ পর্যন্ত আপনি তাদের মনের মর্মযন্ত্রণা বুঝতে পারবেন না।’ মনে রাখতে হবে, ৯০ শতাংশ আত্মহত্যাকারীর কোনো না কোনো মানসিক অসুস্থতা থাকে। (হয়েটন, ২০০১)। এর মধ্যে রয়েছে ডিপ্রেশন, সিজোফ্রেনিয়া, বাইপোলার ম্যুড ডিজঅর্ডার, মাদকাসক্তি, ব্যক্তিত্বের ত্রুটি, উদ্বেগজনিত রোগ ইত্যাদি। ৪০টির অধিক গবেষণায় দেখা গেছে, ৭৫ শতাংশ আত্মহত্যাকারী বিগত এক বছরের মধ্যে অন্তত একবার তাদের মানসিক অস্থিরতা ও আবেগগত সমস্যা নিয়ে চিকিৎসকের কাছে যায়। কিন্তু প্রশিক্ষণের ঘাটতি, সময়ের অভাবে বা দৃষ্টিভঙ্গির কারণে মানসিক বা আবেগগত সমস্যা চিন্তিত করা হয়নি।(ল্যুমা, ২০০২)। এমনকি হাসপাতালে ভর্তির সাত দিনের মধ্যে ও হাসপাতাল ত্যাগের তিন মাসের মধ্যে অনেক মানসিক রোগী আত্মহত্যা করে থাকে।


ডিপ্রেশন সবকিছু দুমড়েমুচড়ে, পিষে একাকার করে ফেলে। তাই সে সময় জীবনদৃষ্টি খুবই সীমিত ও একপেশে হয়ে থাকে এবং নিজেকে বিচ্ছিন্ন ও একাকী মনে করে। কিন্তু আমাদের প্রসারিত ও বিস্তৃত হতে হবে। অশান্তি, কষ্ট, হতাশা, ব্যর্থতা ঢেউয়ের মতো জীবনে আসবে, আবার চলেও যাবে। যখন সে ঢেউ উত্তুঙ্গ হয়, আমাদের সে চূড়ায় সওয়ার হয়ে ভেসে থাকার যোগ্যতা অর্জন করতে হবে। আমরা যখন নিচ থেকে নিজেকে চূড়ায় উঠিয়ে আনতে পারি, তার মানে আমরা অধিকতর শক্তিশালী এবং আমরা আরও বেশি শক্তিশালী হব, যখন আমরা এই চড়াই-উতরাইয়ে একত্রে সংগ্রাম করব, লড়ব।


তথ্য গুলো এখান (১৬)(১৭)(১৮) থেকে নেয়া হয়েছে। আপনারা বিস্তারিত পড়তে ও জানতে মূল লেখা গুলো দেখে নিতে পারেন।


বস্তুবাদ নিয়ে নাস্তিক্যধর্মের অনুসারীদের অন্ধবিশ্বাসঃ

নাস্তিকরা বিশ্বাস করে থাকে আমরা যা দেখি শুধু সেটাই সত্যি এর বাইরে কিছুই নেই। বস্তু যা দৃশ্যমান সেটাই সঠিক। নাস্তিকদের কাছে এই বিশ্বাসের কি এম্পেরিক্যাল এভিডেন্স আছে? নাস্তিকরা যে বিশ্বাস করে স্রস্টার অস্তিত্ব নেই এই দাবির কি এভিডেন্স আছে? বঙ্গীয় গণ্ডমূর্খ নাস্তিকরা স্বীকার না করলেও নাস্তিকদের এই দাবি গুলো যে অন্ধবিশ্বাসে ভরপুর সেটা স্বীকার করে নিয়েছে অন্য নাস্তিকরা। বস্তুবাদ যে অন্ধবিশ্বাস এমনকি “স্রস্টার অস্তিত্ব নাই” এই বিশ্বাসটির পক্ষে যে কোনো এভিডেন্স নাই এটাও অন্য শ্রেণীর নাস্তিকরা স্বীকার করে নিয়েছে। আসুন জেনে নেই সেই সব মুক্তমনা নাস্তিকদের স্বীকারোক্তি গুলো। বস্তুবাদ-দর্শন---একটি অন্ধ বিশ্বাস। Michael Ruse----যিনি একজন Atheist Philosopher.তিনি নিজে Atheist হয়ে---Atheist-দের ব্যাপারে বলেছেন (১৯),


”আপনি যদি স্বীকারোক্তি চান তবে শুনুন, আমি সব সময় স্বীকার করেছি-"বস্তুবাদ"--স্রেফ অন্ধবিশ্বাস।"


নাস্তিকতা হলো স্রেফ বিশ্বাসগত অবস্থান,তারা সুকৌশলে বিজ্ঞানের চাদর জড়িয়ে বস্তুবাদের বিশ্বাসকে লুকিয়ে রাখে। মিডিয়া ফিগার, নাস্তিক ও ফেমিনিস্ট লেখিকা ইজিওমা ওলু’র কলমেও এই স্বীকারোক্তি পাওয়া যায় (২০),


“…..স্রষ্টা নেই আমার এহেন দৃঢ় বিশ্বাস কেবলই অন্ধবিশ্বাস। আমরা যেমন (বস্তুগতভাবে) প্রমাণ করতে পারবো না যে---স্রষ্টা আছেন, একইভাবে এও প্রমাণ করতে পারবো না যে--স্রষ্টা নেই।স্রষ্টা না থাকার অনুভূতির স্বীয় সত্তার মাঝে পুরেই আমি দিনানিপাত করি। কিন্তু আমি মোটেও এই ঘোরের মধ্যে থাকি না যে, আমার এই অনুভূতি আস্তিকদের স্রষ্টার অস্তিত্বে দৃঢ় বিশ্বাসের তুলনায় বেশি তথ্যপ্রমাণ নির্ভর।”


বিখ্যাত সাইন্স ফিকশন লেখক আইজ্যাক অ্যামিসভ এক সাক্ষাৎকারে বলেন (২১),


আমি একজন নাস্তিক। পুরোপুরি নাস্তিক৷ বহু বছর থেকেই ঈশ্বরে বিশ্বাস করিনা৷ কিন্তু কেন জানি আমি অনুভব করেছি নিজেকে নাস্তিক দাবী করা যুক্তি বিবেচনার দিক দিয়ে সম্মানজনক নয়।  কারন এক্ষেত্রে সে এমন জ্ঞানের দাবী করে (স্রষ্টার অনস্তিত্ব) যা সে জানে না৷ শেষ মেষ আমি সিদ্ধান্ত নিলাম যেহেতু আমি আবেগ ও যুক্তিসম্পন্ন এক জীব৷ তাই আমি আবেগের দিক দিয়ে নাস্তিক। স্রষ্টা যে নেই নেই, এ ব্যাপারে আমার কাছে কোন প্রমান নেই৷ 


আলোচিত নাস্তিক ও তাত্ত্বিক পদার্থবিদ অ্যারিজোনা স্টেট ইউনিভার্সিটির প্রফেসর লরেন্স এম. ক্রাউসের মুখ থেকেও শোনা গিয়েছে হতাশার বানী। সে বলছে (২২),


“Reality doesn’t owe us comfort.” অর্থাৎ বাস্তবতা আমাদের সান্ত্বনা দেয় না।


নাস্তিক ও প্রবল ধর্মবিদ্বেষী প্রফেসর রিচার্ড ডকিন্স অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির পাবলিক ডায়ালগেও অকপটে স্বীকার করেছেন (২৩), 


স্রষ্টা যে নেই এই ব্যাপারে আমি শতভাগ নিশ্চিত নয়৷


“স্রষ্টার অস্তিত্ব নেই” তথ্যটির উপর যে নাস্তিকদের বিশ্বাস আছে এই কথা অনেক নাস্তিকই স্বীকার করতে চায় না। আমরা জানি যে আস্তিকতার বিপরীত হচ্ছে নাস্তিকতা। আস্তিকতার বিশ্বাসের প্রতি অবিশ্বাস করাকেও নাস্তিকতা বলা যায় কিন্তু এর অর্থ এটা নয় যে নাস্তিকতা কোনো বিশ্বাসই না। আস্তিকতার বিপরীতে গিয়ে বিশ্বাস করাকেও নাস্তিকতা বলা যায়। এতে তেমন কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু নাস্তিকরা এই সহজ সত্য কথাটি মানতে চায় না। নব্য নাস্তিক্যবাদের অন্যতম পুরোধা রিচার্ড ডকিন্স নাস্তিকদের এই বিশ্বাস সম্পর্কে বলেন (২৪),


“দার্শনিক বস্তবাদি অর্থে নাস্তিক হলো এমন ব্যক্তি যে বিশ্বাস করে পার্থিব, ভৌত জগতের বাইরে কিছু নেই। কোনো স্রষ্টা নেই যিনি দৃশ্যমান এই মহাবিশ্বের পিছনে চুপিসারে কলকাটি নাড়ছেন। আত্মার কোন অস্তিত্ব নেই যা মৃত্যুর পরও বেঁচে থাকে, নেই অলৌকিক বলে কোনো কিছু। কেবলই রয়েছে জাগতিক ঘটনাবলী, যা আমরা এখনো বুঝে উঠতে পারি নি।”


যদি এভাবে বলা হয় “যারা বিজ্ঞান”কে বিজ্ঞানের স্থান থেকে নামিয়ে ঈশ্বরের কাতারে নিয়ে যায় তারাই বিজ্ঞানবাদী তাহলেও কথাটি ভুল হবে না। বঙ্গীয় নাস্তিক গুলো না হয় নিজেদের স্বার্থে ইসলাম নিয়ে প্রতারণা করে বুঝলাম তাই বলে বিজ্ঞান নিয়েই এদেরকে প্রতারণা করতে হবে? বিজ্ঞান নিয়ে যেভাবে অপচর্চা করা হয়ে থাকে নাস্তিকগোষ্ঠীতে সেটার প্রমাণ দিতে থাকলে বইয়ের পৃষ্ঠা বৃদ্ধি পেতে থাকবে। সেখান থেকে অল্প কিছু প্রমাণ আপনাদের সামনে তুলে দিচ্ছি। যারা বিজ্ঞানকে একমাত্র সত্যের মানদণ্ড হিসেবে বিশ্বাস করে থাকেন তাদের এহেন বিশ্বাস যে অন্ধ সেটা এই প্রমান গুলো পড়লে পরিস্কার হয়ে যাবে। বিজ্ঞানবাদী দার্শনিক ডেনিয়েল ডেনেট লিখেছেন (২৫),


‘Since the belief in the integrity of scientific procedures is almost as important as the actual integrity, there is always a tension between a whistle-blower and the authorities, even when they know that they have mistakenly conferred scientific respectability on a fraudulently obtained result.’


'যেহেতু বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির সাধুতায় বিশ্বাস রাখা প্রকৃত সাধুতার মতোই গুরুত্বপূর্ণ, তাই একজন তথ্য-ফাসকারী এবং কর্তৃপক্ষের মধ্যে সর্বদা একটি উত্তেজনা থাকে, এমনকি যখন তারা জানে যে তারা ভুল ফলাফলকে বৈজ্ঞানিক সম্মান প্রদান করেছে। '


একবিংশ শতাব্দীতে পদার্থবিদ্যায় প্রতারণার সবচেয়ে বড় ঘটনাগুলির মধ্যে একটি নিউ জার্সির বেল ল্যাবরেটরিজ-এর ন্যানোটেকনোলজির একজন তরুণ গবেষক জ্যান হেনড্রিক শোনের সাথে জড়িত। তিনি যুগান্তকারীর সাফল্যের পর সাফল্য অর্জন করেছেন এবং তিনটি মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার পেয়েছেন। কিন্তু ২০০২ সালে, বেশ কিছু পদার্থবিজ্ঞানী লক্ষ্য করেছিলেন যে একই ডেটা বিভিন্ন গবেষণাপত্রে বিভিন্ন পরীক্ষায় উপস্থিত রয়েছে। এরপর একটি তদন্ত কমিটি বৈজ্ঞানিক অসদাচরণের ষোলটি ঘটনা খুঁজে পায়, যার বেশিরভাগই ডেটা তৈরি করা বা পুনর্ব্যবহার করা। তদন্তের ফলস্বরূপ, সাইন্স ম্যাগাজিনের নয়টি এবং ন্যাচারের সাতটি সহ অন্য বৈজ্ঞানিক জার্নালগুলি থেকে মোট 2৮টি গবেষণাপত্র প্রত্যাহার করা হয়েছিল(২৬)৷ শোনের সহ-লেখকদের নির্দোষ বলে ঘোষণা করা হয়েছিল, যদিও ফলাফলগুলি যখন প্রসব করা হয়েছিল তখন তারা কৃতিত্ব ঠিকই ভাগাভাগি করেছিল৷ উল্লেখযোগ্যভাবে, পিয়ার-রিভিউ প্রক্রিয়ায় ২৮ টি প্রতারণার এই দৃষ্টান্তগুলির একটিও সনাক্ত করা যায়নি


আরেকটি সাম্প্রতিক ক্ষেত্রে, হার্ভার্ডের জীববিজ্ঞানের অধ্যাপক মার্ক হাউসারকে ২০১০ সালে হার্ভার্ডে একটি অফিসিয়াল তদন্তে বৈজ্ঞানিক অসদাচরণের জন্য দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল। তিনি বানরদের উপর পরীক্ষায় তথ্য মিথ্যে বা উদ্ভাবন করেছিলেন (২৭)। আবার, তার অসততা পিয়ার-রিভিউ প্রক্রিয়া দ্বারা সনাক্ত করা যায়নি। সমালোচনা আলোচনায় আসে যখন একজন স্নাতক ছাত্র তথ্য ফাঁস করে দেয়। হাউসার Moral Minds: The Nature of Right and Wrong (2007) নামে একটি বইয়ের লেখক, যেখানে তিনি দাবি করেন যে নৈতিকতা একটি উত্তরাধিকারসূত্রে প্রাপ্ত প্রবৃত্তি, যা বিবর্তন দ্বারা উত্পাদিত এবং ধর্ম থেকে স্বাধীন। হাউসার একজন নাস্তিক, এবং তার ফলাফল একটি নাস্তিকিয় দৃষ্টিকোণকে সমর্থন করে। তার জালিয়াতি উন্মোচিত হওয়ার কয়েক মাস আগে একটি সাক্ষাৎকারে, তিনি বলেছিলেন যে তার গবেষণায় দেখা গেছে যে 'নাস্তিকরা ধার্মিকদের মতোই নীতিবান' (২৮)। 


বিজ্ঞানে জালিয়াতি এবং প্রতারণার একটি অন্তর্দৃষ্টিপূর্ণ গবেষণায়, উইলিয়াম ব্রড এবং নিকোলাস ওয়েড দেখিয়েছেন যে প্রতারণা সহজে বিনা প্রতিরোধে পাস হয় যতক্ষণ ফলাফলগুলি প্রচলিত প্রত্যাশা অনুযায়ী হয় (২৯),


Acceptance of fraudulent results is the other side of that familiar coin, resistance to new ideas. Fraudulent results are likely to be accepted in science if they are plausibly presented, if they conform with prevailing prejudices and expectations, and if they come from a suitably qualified scientist affiliated with an elite institution. It is for the lack of all these qualities that new ideas in science are likely to be resisted . . . For the ideologists of science, fraud is taboo, a scandal whose significance must be ritually denied on every occasion


প্রতারণামূলক ফলাফল গ্রহণ করা সেই পরিচিত মুদ্রার অন্য দিক, নতুন তত্ত্বকে প্রতিরোধ। প্রতারণামূলক ফলাফল বিজ্ঞানে গৃহীত হতে পারে যদি সেগুলিকে যুক্তিসঙ্গতভাবে উপস্থাপন করা হয়, যদি সেগুলি প্রচলিত কুসংস্কার এবং প্রত্যাশাগুলির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয় এবং যদি সেগুলি একটি অভিজাত প্রতিষ্ঠানের সাথে যুক্ত একজন উপযুক্ত যোগ্য বিজ্ঞানী থেকে আসে। এই সমস্ত গুণাবলীর অভাবের জন্যই বিজ্ঞানের নতুন ধারণাগুলি প্রতিহত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। . . বিজ্ঞানবাদীদের জন্য, জালিয়াতি ফাঁস নিষিদ্ধ, একটি কলঙ্ক যার তাত্পর্য অবশ্যই প্রতিটি অনুষ্ঠানে আচারিকভাবে ইখলাসের সঙ্গে অস্বীকার করা উচিত। বিজ্ঞানীরা সাধারণত ধরে নেন যে জালিয়াতি বিরল এবং গুরুত্বহীন কারণ বিজ্ঞান নিজেই নিজেকে সংশোধন করে। হেটিঞ্জারের মতে, হাস্যকরভাবে, এই আত্মতুষ্টির বিশ্বাস এমন একটি পরিবেশ তৈরি করে যেখানে প্রতারণার বিকাশ ঘটতে পারে (৩০)৷ 


আর কেন হাস্যকর হবে না? সংশোধন করতে হলে একই পরীক্ষার পুনরাবৃত্তি করতে হবে। কিন্তু কোনো গবেষক নিজের মূল্যবান সময় নষ্ট করে অন্যের ভুল ধরতে চান না। কারণ প্রকাশনা সংস্থাগুলো মৌলিক কাজ ছাপাতে চায়, পুনরাবৃত্তি নয়। তো এই হচ্ছে বিজ্ঞান জগতের ভিতরের কিছু চিত্র যা সব সময় সবার কাছে প্রকাশ পায় না। মিডিয়া এসব তেমন একটা প্রচার পর্যন্ত করতে চায় না। বলতেই হয় নাস্তিকরা বিজ্ঞানকে ডাকাতি করেছে। বিজ্ঞান নাস্তিকদের কাছে যতো যাবে ততোই এর অপচর্চা বৃদ্ধি পেতে থাকবে তাই আমাদেরকে এখন থেকেই সাবধান হতে হবে। বিজ্ঞানকে ভুল ব্যাবহার করা যাবে না। বিজ্ঞানের অপচর্চা করা যাবে না। বিজ্ঞান জ্ঞান অর্জনের একটি মাধ্যম মাত্র কিন্তু “একমাত্রই” নয়।


যেসব বিজ্ঞানীরা ডারউইনবাদকে যুক্তি প্রমাণ দিয়ে অকাট্যভাবে ভুল প্রমাণ করেছে সেসব গবেষণা নাস্তিক বিজ্ঞানীরা ধামাচাপা দিয়ে রাখতে চায়। রেখেছেও। যেসব বিজ্ঞানী ডারউইনবাদ বিরোধী অথবা বিবর্তন যে একটি মিথ্যা ভুলে ভরা ধারনা প্রমান করেছেন - এরকম বিজ্ঞানীদের গবেষণা সত্য হওয়া সত্ত্বেও তাদের গবেষণা যেন বাইরে বের না হয় এরকম ব্যবস্থা করা হয়। নাস্তিকরা এসব কথা কখনো আপনাকে বলেছে? বলবেও না। এ বিষয় ইউটিউবে Expelled: No intelligence allowed লিখে সার্চ দিলেই সেই ডকুমেন্টারি দেখতে পাবেন। এই বিষয় বিখ্যাত জীবাশ্মবিদ "গুনটার বেকলির" সাথে ঘটে যাওয়া সাম্প্রতিক ঘটনা প্রাধান্য পায় (৩১)।


তিনি জার্মানির ষ্টেটগার্ডে অবস্থিত ষ্টেট মিউজিয়াম অব ন্যাচারাল হিষ্ট্রি-তে কিউরেটর হিসেবে কর্মরত ছিলেন গুনটার বেকলি ফসিল ড্রাগন ফ্লাই বিষয়ে বিশেষজ্ঞ। তিনি অনেকগুলো ফসিল ড্রাগন ফ্লাই প্রজাতি আবিষ্কার করেন এবং তার নামে একাধিক প্রজাতির নামকরনও করা হয়। তিনি ছিলেন বিবর্তনবাদী এবং ঐ মিউজিয়ামে বিবর্তন সম্পর্কে নিয়মিত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতেন। কিন্তু গত কয়েক বছর তিনি তার পড়ালেখার আলোকে বিবর্তনবাদের কথিত প্রমানাদির ওপর সন্দেহ পোষণ করতে শুরু করেন এবং শেষ পর্যন্ত এ সিদ্ধান্তে এসে পৌঁছান যে, এলোপাতাড়ি বিবর্তন এর প্রস্তাবিত কোন পদ্ধতিই প্রজাতির বিবর্তন প্রমানের জন্য যথেষ্ট না। প্রথম প্রথম তিনি তার সিদ্ধান্তের বিষয়টি গোপন রাখলেও গত বছর তা প্রকাশ করেন। যার ফলে তাকে মিউজিয়ামের কিউরেটর পদ থেকে কোন উপযুক্ত কারন প্রদর্শন না করেই অপসারণ করা হয়। উইকিপিডিয়ার মত তথাকথিত নিরপেক্ষ অনলাইন বিশ্বকোষ থেকে তার পেজটি এমনভাবে নিশ্চিহ্ন করা হয় যেন জীবাশ্মবিদ্যায় তার কোন অবদানই নাই।


অ্যামেরিকান অণুজীব বিজ্ঞানী "জোনাথন ওয়েলস" ২০০০ সালে প্রকাশিত তার বই "Icons of Evolution" page 235-236 তে তিনি লিখেছেনঃ


গোঁড়া ডারউনবাদীরা প্রথমে ডারউনের সংকীর্ণ ব্যাখ্যা চাপিয়ে দিয়ে ঘোষণা করে যে বিজ্ঞানচর্চার এটাই একমাত্র রাস্তা। তখন সমালোচনাকারীরা হয়ে পড়ে অবৈজ্ঞানিক। সমালোচনা নিবন্ধ সমূহ গোঁড়াবাদী বিজ্ঞান-সাময়িকীগুলো প্রত্যাখ্যান করে। সরকারী সংস্থাগুলো সমালোচকদের অর্থায়নে অস্বীকৃতি জানায়। সবশেষে সমালোচকদের বৈজ্ঞানিক সম্প্রদায় থেকে বহিস্কার করা হয়। এভাবেই ডারউনবাদী মতবাদের বিপক্ষে সকল প্রমান আস্তে আস্তে অদৃশ্য হয়ে যায় অথবা প্রমানগুলোকে গায়েব করা হয় বিশেষায়িত প্রকাশনা গুলোতে,যার সন্ধান পায় কেবল অতি কৌতূহলী উদ্দীপক গবেষকরাই। আর যখনই সমালোচকদের মুখ বন্ধ করে দেয়া হয় এবং প্রমানগুলো গায়েব করে দেয়া হয়। ঠিক তখনই ডারউনবাদীরা প্রচার করে বেড়ায় যে, বিবর্তনবাদের বিপক্ষে বৈজ্ঞানিক বিতর্ক আছে কিন্তু কোন প্রমান মজুদ নেই।


নিজেদের বস্তুবাদী অন্ধবিশ্বাসকে প্রতিষ্ঠিত করতে মুক্তচিন্তায় আরও যে কি কি করা হয় সেসব হয়তো আমাদের পর্যন্ত আসতেই দেয়া হয় না। কিন্তু গভীর সন্ধান করে আমরা যতটুকু জানতে পেয়েছি ততটুকুতেও গা শিউরে উঠে। আপনি নিজেও যখন নাস্তিকদের সামনে সেই সব সাইন্টিস্টদের যুক্তি ও প্রমাণ তুলে ধরবেন যারা মেনে নিয়েছে মহাবিশ্বকে স্রস্টা সৃষ্টি করেছেন তখন নাস্তিকরা সেই সব বিজ্ঞানীদেরকে ক্রিয়েশোনিস্ট বলে সাম্প্রদায়িক তাচ্ছিল্য করবে,অপমান করবে কিন্তু সেই সব সাইন্টিস্টরা কি যুক্তি দেখিয়েছে, কি প্রমাণ দেখিয়েছে সেসব নিয়ে আলোচনা করতে চাইবে না।


নাস্তিক্যবাদ সত্য নয়, মিথ্যা। নাস্তিক্যধর্মের মুক্তচিন্তা মুক্তি নয়, বিণাশ। ডারউইনবাদ একটি অজ্ঞতা। নাস্তিক্যধর্ম আলো নয়, অন্ধকার। স্বাধীনতার নামে বন্দিত্বই নাস্তিক্যধর্ম। ডারউইনবাদ মানুষকে মানুষ মনে করে না, আধুনিক উন্নত জানোয়ার মনে করে। সংশয়ের নামে ইসলাম নিয়ে মিথ্যাকথা বলা ও মুসলিমদের নিয়ে ঘৃণা ছড়িয়ে দেয়াই চিন্তার মুক্তির আন্দোলন। নাস্তিকরা নিজেদের ব্যক্তিগত মতামত দিবে কিন্তু একই নাস্তিক যদি অন্যরকম মত দেয় তখন তাকে ব্যক্তিগত মতামত বলে দমিয়ে রাখার চেষ্টা করবে। বিবর্তিত বিবেক নাস্তিকদের মানদণ্ড কিন্তু একই বিবর্তিত বিবেক দিয়ে নাস্তিকদের বিরুদ্ধে গেলে সেই বিবেক নাস্তিকরা গ্রহণ করে না। উপরে সকল বক্তব্য গুলো নাস্তিকদের বিশ্বাসের বিরুদ্ধে গিয়েছে বলে তারা বলবে, সেসব নাস্তিকদের একন্ত ব্যক্তিগত মতামত কিন্তু একইভাবে যে, সেই সব নাস্তিক বিজ্ঞানীদের কথা অনুযায়ী এই নাস্তিকদের কথাও ব্যক্তিগত মতামতের কারণে বাতিল হয় এই ব্যাপার বঙ্গীয় মূর্খ নাস্তিকরা বুঝতে পারছে না। অন্ধত্ব কাকে বলে? কানা কাকে বলে? সেটা বঙ্গীয় নাস্তিকদের কথাবার্তা তদন্ত না করলে আমি হয়তো বুঝতেই পারলাম না। বাকিটুকু বুদ্ধিমান পাঠকদের চিন্তাশিল মগজে রেখে দিচ্ছি।


নাস্তিক্যধর্মে পরিবার নীতিমালা কেমন হবে?

প্রশ্নটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমার নিজের বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে বলছি। আপনি যখনই এই প্রশ্নটি কোনো নাস্তিককে করবেন সে সাথে সাথে আপনার মুখের উপর জবাব দিয়ে বলবে, আমার পরিবার কিভাবে সাজাবো নাকি সাজাবো না সেটা আমার ব্যাপার। আপনি জিজ্ঞাসা করার কে? নাস্তিকরাই বলে থাকে, নাস্তিকতা পরিবার নিয়ে ডিল করে না, নৈতিকতা নিয়ে ডিল করে না, আপনি কিভাবে কার সাথে কেমন আচরণ করবেন সেসব নিয়ে নাস্তিকতা ডিল করে তাহলে প্রশ্ন হচ্ছে নাস্তিকরা কি দিয়ে ডিল করবে? বিবেক দিয়ে? যদি তাই হয় তাহলে প্রশ্ন হচ্ছে সবার বিবেক তো এক নয়? সবার চিন্তা তো এক নয়? বিবেকের মানদণ্ডে খারাপ কাজকেও ভালো মনে করে করা যায় না? যে মুক্তচিন্তায় স্বাধীনভাবে ধর্ষণ করে তার কি বিবেক নেই? আছে কিন্তু তার বিবেকে স্বাধীনভাবে ধর্ষণ করা ভালো কাজ একইভাবে যারা গরীবদেরকে দান করে তাদের বিবেকে আবার এটা ভালো কাজ। তাহলে বস্তুবাদী বিবর্তিত বিবেক কিভাবে চূড়ান্ত মানদণ্ড হতে পারে?


নাস্তিকরা এখানে গোল্ডেন রুলের কথা বলতে পারে। তারা বলতে পারে যে নিজের ক্ষতি ও অন্যের ক্ষতি না করে একজন নাস্তিক নিজের পরিবার চালাবে। এখানে প্রশ্ন হচ্ছে একজন নাস্তিক কি দিয়ে নিজের পরিবার চালাবে, নিজের পরিবারে কিভাবে সে চলবে সেটা অন্য নাস্তিকরা কেন ঠিক করে দিবে? এটা কি বৈপরীত্য না? কোনো নাস্তিকের স্ত্রী যদি অন্য নাস্তিক পুরুষের সাথে নিজে নাস্তিক স্বামীর বাসায় রাত কাটায় তাহলে নাস্তিক স্বামীর কি অধিকার আছে স্ত্রীর মুক্তচিন্তায় বাধা দেবার? অথবা নাস্তিক স্বামী যদি মুক্তচিন্তায় পতিতা ভাড়া করে নিজের ঘরে মুক্তচিন্তায় মদ খেয়ে আর ডিংডং করে রাত কাটায় তাহলে কি স্ত্রীর অধিকার আছে স্বামীর মুক্তচিন্তায় বাধা দেবার? শুধু কি তাই? নাস্তিক সন্তান যদি নিজ নাস্তিক মায়ের সাথে সম্মতিতে সহবাস করে নিজ বাপের রুমে তাহলে নাস্তিক বাপের কি তাদের চিন্তার মুক্তিতে বাধা দেবার অধিকার আছে? 


পাঠক,নাস্তিকদের বিধান অনুযায়ী খেয়াল করুন সেখানে কিন্তু কারো ক্ষতি হচ্ছে না তাহলে? এভাবে কোনো সন্তান যদি চায় নিজের বৃদ্ধ পিতামাতাকে বৃদ্ধাশ্রমে রেখে আসবে তাহলে পিতামাতা কি কোনো যুক্তি দেখাতে পারবে যে কেন তার সন্তান তাদেরকে নিজেদের থেকে আলাদা করতে পারবে না? ধরে নিলাম নাস্তিক পিতামাতা সন্তানকে যুক্তি দেখাচ্ছে, আমরা তোকে জন্ম দিয়েছি, ছোট বেলা থেকে আদর করে এই পর্যন্ত বড় করেছি তুই আমাদেরকে এই শেষ বয়সে আলাদা করে দিচ্ছিস। তখন মুক্তচিন্তক নাস্তিক ছেলেটি যদি এই যুক্তি দেখায়, আমি কি বলেছিলাম আমাকে জন্ম দিতে? তোমরা কনডম ব্যাবহার করলে না কেন? আমি কি বলেছিলাম আমাকে আদর করে বড় করতে? আমাকে ছোট বেলাতেই মুক্তচিন্তায় হত্যা করতে পারলে না কেন? আমার ইচ্ছা হয়েছে তাই তোমাদেরকে আজকে নিজের থেকে আলাদা করে দিব কারণ আমার সময় নেই তোমাদেরকে সেবা করার আর তোমাদেরকে সেবা করলে আমার কি? উল্টো আমি যদি তোমাদের সেবা না করে অফিসে সময় বেশি দেই তাহলে টাকা বেশি পাবো তাহলে যুক্তি অনুযায়ী তোমাদের সেবা করা অযৌক্তিক হবে না কেন?


সব নাস্তিকই যে এমন আচরণ করতে এটা আমি বলছি না কিন্তু নাস্তিক্যধর্মের মুক্তচিন্তায় নাস্তিকরা চাইলে এটা করতে পারবে এবং ভালো মনে করেই সেটা করতে পারবে। এসব নাস্তিক্যধর্মে জায়েজ আছে। অন্য নাস্তিকদের কাছে এসব ভালো না লাগলে তাতে সব নাস্তিকদের কাছেই যে সেটা খারাপ লাগবে এমন কোনো কথা নেই। নাস্তিকরা এখানে বলতে পারে অনেক মুসলিমরাও তো নিজেদের পিতামাতাকে আলাদা করে বৃদ্ধাশ্রমে দিয়ে দেয় কিন্তু নাস্তিকরা হয়তো জানে না এটা ইসলামে নিষিদ্ধ। এখন কোনো নামধারী মুসলিম যদি মুক্তচিন্তার সাহায্যে নিজের পিতামাতার সাথে এমন আচরণ করে তাহলে সেটার জন্য ইসলাম দায়ী নয় সেই মুসলিমই অপরাধী। অন্যদিকে নাস্তিক্যধর্মে নিজের পিতামাতার সাথে এমন আচরণ করা জায়েজ আছে।


সব কিছু জেনে, বুঝেও এরপরেও যদি আপনার সন্তানকে আপনি নাস্তিক মুক্তমনা বস্তুবাদী বানালে নিজের বেদনাদায়ক সমাপ্তির জন্য নিজেকে প্রস্তুত করে রাখতে হবে। আত্মহত্যা করা ছাড়া সময় কিভাবে খরচ করবেন তখন? ভালো লাগবে? সন্তানের জন্য এতো কিছু করলাম সেই সন্তান মুক্তচিন্তার যুক্তি দেখিয়ে আজকে আমাদেরকে নিজের থেকে আলাদা করে দিচ্ছে এই তীব্র যন্ত্রণাদায়ক কষ্টের চাপ কিভাবে হজম করবে আপনার হৃদয়? কিন্তু আপনার সন্তানকে যদি আপনি আদব-লেহাজ শেখান, আল্লাহর প্রতি ভয় শেখান, জাহান্নামের শাস্তির ভয় দেখান তাহলে আপনার সন্তান আপনার সাথে কথা বলার সময় এই এই কথা গুলো মেনে চলতে বাধ্য থাকবে। আপনি পড়ে নিন।


আল কুরআন,৪ নং সুরা নিসার ৩৬ আয়াতে বলা আছে,

আর উপাসনা কর আল্লাহর, শরীক করো না তাঁর সাথে অপর কাউকে। পিতা-মাতার সাথে সৎ ও সদয় ব্যবহার কর এবং নিকটাত্নীয়, এতীম-মিসকীন , প্রতিবেশী, অসহায় মুসাফির এবং নিজের দাস-দাসীর প্রতিও। নিশ্চয়ই আল্লাহ পছন্দ করেন না অহংকারীদেরকে।


আল কুরআন,৩১ নং সুরা লুকমান ১৪ ও ১৫ আয়াতে বলা আছে,

আর আমি মানুষকে তার পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহারের জোর নির্দেশ দিয়েছি। তার মাতা তাকে কষ্টের পর কষ্ট করে গর্ভে ধারণ করেছে। তার দুধ ছাড়ানো দু বছরে হয়। নির্দেশ দিয়েছি যে, আমার প্রতি ও তোমার পিতা-মতার প্রতি কৃতজ্ঞ হও। অবশেষে আমারই নিকট ফিরে আসতে হবে। পিতা-মাতা যদি তোমাকে আমার সাথে এমন বিষয়কে শরীক স্থির করতে পীড়াপীড়ি করে, যার জ্ঞান তোমার নেই; তবে তুমি তাদের কথা মানবে না এবং দুনিয়াতে তাদের সাথে সদ্ভাবে সহঅবস্থান করবে। যে আমার অভিমুখী হয়, তার পথ অনুসরণ করবে। অতঃপর তোমাদের প্রত্যাবর্তন আমারই দিকে এবং তোমরা যা করতে, আমি সে বিষয়ে তোমাদেরকে জ্ঞাত করবো।


আল কুরআন, ৪৬ নং সুরা আহকাফ ১৫ আয়াতে বলা আছে,

আমি মানুষকে তার পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহারের আদেশ দিয়েছি। তার জননী তাকে কষ্টসহকারে গর্ভে ধারণ করেছে এবং কষ্টসহকারে প্রসব করেছে। তাকে গর্ভে ধারণ করতে ও তার স্তন্য ছাড়তে লেগেছে ত্রিশ মাস। অবশেষে সে যখন শক্তি-সামর্ থে?র বয়সে ও চল্লিশ বছরে পৌছেছে, তখন বলতে লাগল, হে আমার পালনকর্তা, আমাকে এরূপ ভাগ্য দান কর, যাতে আমি তোমার নেয়ামতের শোকর করি, যা তুমি দান করেছ আমাকে ও আমার পিতা-মাতাকে এবং যাতে আমি তোমার পছন্দনীয় সৎকাজ করি। আমার সন্তানদেরকে সৎকর্মপরায়ণ কর, আমি তোমার প্রতি তওবা করলাম এবং আমি আজ্ঞাবহদের অন্যতম।


রিয়াদুস সলেহিন, হাদিসঃ ৩২১, সহিহ হাদিসঃ

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, একটি লোক রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এসে জিজ্ঞেস করল, ‘হে আল্লাহর রাসূল! আমার কাছ থেকে সদ্ব্যবহার পাওয়ার বেশী হকদার কে?’ তিনি বললেন, ‘‘তোমার মা।’’ সে বলল, ‘তারপর কে?’ তিনি বললেন, ‘‘তোমার মা।’’ সে বলল, ‘তারপর কে?’ তিনি বললেন, ‘‘তোমার মা।’’ সে বলল, ‘তারপর কে?’ তিনি বললেন, ‘‘তোমার বাপ।’’-ihadis.com


সহিহ মুসলিম, হাদিসঃ ৬৩৯৪, সহিহ হাদিসঃ

আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, এক ব্যক্তি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর নিকট এসে জিজ্ঞেস করল, হে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! মানুষের মধ্যে আমার সদ্ব্যবহারের সর্বাপেক্ষা হাক্দার ব্যক্তি কে? তিনি বললেন, তোমার মা। সে বলল, এরপর কে? তিনি বললেন, এরপরেও তোমার মা। সে বলল তারপর কে? তিনি বললেন, তারপরও তোমার মা। সে বলল, এরপর কে? তিনি বললেন, এরপর তোমার পিতা। আর কুতাইবাহ্ বর্ণিত হাদিসে “আমার সদ্ব্যবহার পাওয়ার সর্বাপেক্ষা যোগ্য কে” – এর উল্লেখ আছে। তিনি (কুতাইবাহ্) তাঁর রিওয়ায়াতে “মানুষ” শব্দটি উল্লেখ করেন নি।-ihadis.com


আপনার সন্তান যদি নাস্তিক্যধর্মের অনুসারী হয় তাহলে সে আপনাকে এসব কথা বলতেই পারে এমনকি সে আপনার বিরুদ্ধে গিয়ে বলবে আল্লাহ ভালো কাজ করতে বললেই কি আমাকে ভালো হতে হবে? আমি আল্লাহর দেয়া কথা কেন মানতে যাবো? আমি ইসলামের কথা কেন মানতে যাবো? আমি ইসলামের বিরুদ্ধে চিন্তার মুক্তির আন্দোলন করবো, তাতে আপনার কি? আমি মুক্তচিন্তায় নিজের ইচ্ছা মতো চলবো? পিতামাতার কথা অনুযায়ী কেন চলবো? তখন আফসোস আর কষ্ট ছাড়া আপনার আর কিই বা করার থাকবে? কারণ আপনি তাকে ছোট বেলা থেকে সঠিকভাবে বড় করে তোলেননি এখন যখন সে আপনার বিরুদ্ধে চলে গিয়েছে তখন আপনি কেন কষ্ট পাবেন? তাই সময় থাকতে সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়ে রাখতে হয় এবং সেই অনুযায়ী কাজ করতে হয়। 


ইসলাম আত্মহত্যা বিরোধীঃ

আল কুরআন, ২ নং সুরা বাকারা ১৯৫ আয়াতে বলা হয়েছে,

আর ব্যয় কর আল্লাহর পথে, তবে নিজের জীবনকে ধ্বংসের সম্মুখীন করো না। আর মানুষের প্রতি অনুগ্রহ কর। আল্লাহ অনুগ্রহকারীদেরকে ভালবাসেন।


আল কুরআন, ৪ নং সুরা নিসার ২৯,৩০ আয়াতে বলা হয়েছে,

হে ঈমানদারগণ! তোমরা একে অপরের সম্পদ অন্যায়ভাবে গ্রাস করো না। কেবলমাত্র তোমাদের পরস্পরের সম্মতিক্রমে যে ব্যবসা করা হয় তা বৈধ। আর তোমরা নিজেদের কাউকে হত্যা করো না। নিঃসন্দেহে আল্লাহ তা'আলা তোমাদের প্রতি দয়ালু।আর যে কেউ সীমালঙ্ঘন কিংবা জুলুমের বশবর্তী হয়ে এরূপ করবে, তাকে খুব শীঘ্রই আগুনে নিক্ষেপ করা হবে। এটা আল্লাহর পক্ষে খুবই সহজসাধ্য।


সহিহ মুসলিম, হাদিসঃ ২০০, সহিহ হাদিসঃ

আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃরসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, যে ব্যক্তি কোন ধারালো অস্ত্র দ্বারা আত্মহত্যা করবে জাহান্নামের মধ্যে সে অস্ত্র দ্বারা সে নিজের পেটে আঘাত করতে থাকবে, এভাবে তথায় সে চিরকাল অবস্থান করবেআর যে ব্যক্তি বিষপানে আত্মহত্যা করবে সে জাহান্নামে আগুনের মধ্যে অবস্থান করে উক্ত বিষপান করতে থাকবে, এভাবে তথায় সে চিরকাল অবস্থান করবেআর যে ব্যক্তি নিজে পাহাড় থেকে পড়ে আত্মহত্যা করবে, সে ব্যক্তি সর্বদা পাহাড় থেকে নীচে গড়িয়ে জাহান্নামের আগুনে পড়তে থাকবে, এভাবে সে ব্যক্তি তথায় চিরকাল অবস্থান করবে।-ihadis.com


সহিহ মুসলিম, হাদিসঃ ২০২, সহিহ হাদিসঃ

সাবিত ইবনু যাহ্‌হাক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃতিনি (হুদাইবিয়াহ্‌ প্রান্তরে) গাছের নীচে রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর হাতে বাই’আত করেছেন। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি ইসলাম ব্যতীত অন্য কোন ধর্মের উপর মিথ্যা কসম করে, সে সে দলেরই। আর যে ব্যক্তি কোন বস্তু দ্বারা আত্মহত্যা করবে, কিয়ামাত দিবসে উক্ত বস্তু দ্বারা তাকে শাস্তি দেয়া হবে। যে ব্যক্তি এমন বস্তুর মানৎ করে যার মালিক সে নয়, এরূপ মানৎ কার্যকরী নয়।-ihadis.com


সহিহ বুখারী, হাদিসঃ ১৩৬৩, সহিহ হাদিসঃ

সাবিত ইব্‌নু যাহ্‌হাক (রাঃ) সূত্রে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেনঃ যে ব্যক্তি ইসলাম ব্যতীত অন্য কোন ধর্মের (অনুসারী হবার) ইচ্ছাকৃতভাবে মিথ্যা হলফ করে সে যেমন বলল, তেমনই হবে আর যে ব্যক্তি কোন ধারালো লোহা দিয়ে আত্মহত্যা করে, তাকে তা দিয়েই জাহান্নামে ‘আযাব দেয়া হবে।-ihadis.com


সুনানে আন নাসায়ী, হাদিসঃ ৩৮১৩, সহিহ হাদিসঃ

সাবিত ইব্‌ন যাহ্‌হাক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃতিনি বলেন : রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন : যে ব্যক্তি ইসলাম ব্যতীত অন্য কোন ধর্মের শপথ করবে অথচ সে এ ব্যপারে মিথ্যাবাদী, তখন সে ঐরূপই হয়ে যাবে, যেমন সে বলবে। আর যে ব্যক্তি পৃথিবীতে কোন বস্তু দ্বারা আত্মহত্যা করবে, কিয়ামতের দিন তা দিয়েই তাকে আযাব দেয়া হবেমানুষ যার মালিক নয়, তাতে তার মান্নত হয় না।-ihadis.com


ইসলামের দৃষ্টিতে আমাদের এই জীবন আল্লাহর দান। এই জীবন আমাদের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ কারণ এই জীবনে আমরা যদি বেশি বেশি ভালো কাজ করি তাহলে আল্লাহ আমাদের উপর সন্তুষ্ট হবেন আর অন্যায় করলে আল্লাহ শাস্তি দিবেন। যেহেতু এই জীবন আমরা নিজেরা আমাদেরকে দেই নি আল্লাহ দিয়েছেন সেহেতু এই জীবন নেয়ার একমাত্র অধিকার আল্লাহর। কোনো মানুষের না। এই কারণে একজন মানুষ যদি অন্য মানুষকে হত্যা করে, অথবা কোনো মানুষ নিজেকে যদি হত্যা করে তাহলে এসব ইসলামের দৃষ্টিতে চরম অন্যায় কাজ। বড় গুনাহের কাজ। নাস্তিকরা যতোই ত্যানা পেঁচিয়ে আত্মহত্যার পক্ষে সাফাই গাক না কেন ইসলাম তা সমর্থন করবে না কারণ ইসলাম মানবজাতির কল্যাণ চায়। ইসলাম আমাদেরকে সত্যিটা গ্রহণ করে নিতে বলে। ইসলাম আমাদেরকে সব সময় অন্যায়ের বিরুদ্ধে ন্যায়ের পক্ষে অটল থাকার শিক্ষা দেয়। পাশ্চাত্যের বস্তুবাদী সভ্যতা রবের সাথে মানুষের সম্পর্ককে বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে। এটা পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে বড় বিপর্যয়। এ মহাবিপর্যয় কাটিয়ে উঠা মানব জাতির একমাত্র ধ্যান-ধারণা হওয়া উচিত।


কারা বেশি সুখী? রিসার্চ কি বলে?

জার্মানের এক গবেষণা দাবি করছে যে মুসলিমরা তাদের জীবন নিয়ে পুরো সন্তুষ্ট (৩২) (New German Study Claims That Muslims Are the Most Satisfied With Their Lives)।


As reported by StepFeed, the new report by Dr. Laura Marie Edinger-Schons, PhD, of the University of Mannheim, defines oneness as “the idea that everything in the world is connected and interdependent.” The study, which was published in the journal Psychology of Spirituality and Religion, was carried out by Dr. Edinger-Schons to identify the link between oneness and greater life satisfaction without specifically focusing on any one religion. However, during the course of the fieldwork, she found that Muslims have higher levels of life satisfaction that people of other faiths.


স্টেপফিড দ্বারা রিপোর্ট করা হয়েছে, ম্যানহেইম বিশ্ববিদ্যালয়ের ডক্টর লরা মেরি এডিঞ্জার-শন্স, পিএইচডি-এর নতুন রিপোর্ট, একতাকে সংজ্ঞায়িত করে "এই ধারণা যে বিশ্বের সবকিছু সংযুক্ত এবং পরস্পর নির্ভরশীল।" গবেষণাটি, যা সাইকোলজি অফ স্পিরিচুয়ালটি অ্যান্ড রিলিজিয়ন জার্নালে প্রকাশিত হয়েছিল, ডক্টর এডিঞ্জার-শন্স দ্বারা পরিচালিত হয়েছিল যাতে কোনো একটি ধর্মের উপর বিশেষভাবে ফোকাস না করে একতা এবং বৃহত্তর জীবন সন্তুষ্টির মধ্যে যোগসূত্র সনাক্ত করা যায়। যাইহোক, মাঠপর্যায়ের সময়, তিনি দেখতে পান যে মুসলমানদের জীবন তৃপ্তির উচ্চ স্তর অন্যান্য ধর্মের লোকদের তুলনায়।


According to a recent article by Newsweek, Dr. Edinger-Schons explained what motivated her to conduct the study, saying, “I was wondering whether the larger belief in oneness is something that is independent of religious beliefs and how it affects satisfaction with life.” To answer this question, she carried out her study in two parts. First, participants completed a questionnaire dissecting their beliefs on topics relating to oneness, such as empathy, social connectedness, and nature. Then, they were asked to re-do the questionnaire again six weeks later in order to measure if their attitudes were constant. What the study eventually showed is that people who believed in oneness were more satisfied with life. It also revealed that women were significantly more likely to believe in oneness than men, those with middle-to-high incomes related more to the principle than those with lower incomes, and that Muslims, on average, had the highest mean value of oneness beliefs, followed by Christians who do not identify as Protestant or Catholic. Following closely were Buddhists, Hindus, Catholics, Protestants, Jews, other non-Christians, and finally atheists.


নিউজউইকের একটি সাম্প্রতিক নিবন্ধ অনুসারে, ডঃ এডিঞ্জার-শন্স ব্যাখ্যা করেছেন কী তাকে অধ্যয়ন পরিচালনা করতে অনুপ্রাণিত করেছিল, বলেন, “আমি ভাবছিলাম যে একত্বের বৃহত্তর বিশ্বাস এমন কিছু যা ধর্মীয় বিশ্বাস থেকে স্বাধীন এবং কীভাবে এটি জীবনের সন্তুষ্টিকে প্রভাবিত করে। " এই প্রশ্নের উত্তর দিতে, তিনি দুটি অংশে তার অধ্যয়ন চালিয়েছিলেন। প্রথমত, অংশগ্রহণকারীরা সহানুভূতি, সামাজিক সংযোগ এবং প্রকৃতির মতো একতা সম্পর্কিত বিষয়গুলির উপর তাদের বিশ্বাসগুলিকে বিচ্ছিন্ন করে একটি প্রশ্নাবলী সম্পন্ন করেছিল। তারপর, তাদের মনোভাব ধ্রুবক কিনা তা পরিমাপ করার জন্য তাদের ছয় সপ্তাহ পরে আবার প্রশ্নাবলী পুনরায় করতে বলা হয়েছিল। অধ্যয়ন শেষ পর্যন্ত যা দেখিয়েছে তা হল যে যারা একত্বে বিশ্বাস করেছিল তারা জীবনে বেশি সন্তুষ্ট ছিল। এটি আরও প্রকাশ করেছে যে নারীরা পুরুষদের তুলনায় একত্বে বিশ্বাস করার সম্ভাবনা বেশি ছিল, যারা মধ্য-উচ্চ আয়ের অধিকারী তারা নিম্ন আয়ের লোকদের তুলনায় নীতির সাথে বেশি সম্পর্কিত এবং মুসলমানদের গড়ে একত্ব বিশ্বাসের সর্বোচ্চ গড় মূল্য ছিল। , পরে খ্রিস্টানরা যারা প্রোটেস্ট্যান্ট বা ক্যাথলিক হিসাবে পরিচয় দেয় না। বৌদ্ধ, হিন্দু, ক্যাথলিক, প্রোটেস্ট্যান্ট, ইহুদি, অন্যান্য অ-খ্রিস্টান এবং অবশেষে নাস্তিকরা ঘনিষ্ঠভাবে অনুসরণ করেছিল।


নাস্তিক্যধর্মে বিশ্বাস করলে শান্তি, সুখ নিশ্চিত হবে নাস্তিকদের এমন ধারণা ঠিক নয়। গবেষণায় প্রমাণিত যে নাস্তিকরা ভুল। একইরকম গবেষণা নিয়ে আরও যেখানে বিস্তারিত বলা হয়েছে আগ্রহীরা দেখে নিতে পারেন । মুসলিম, হিন্দু, খ্রিস্টান, নাস্তিক সবাইকে নিয়েই গবেষণাটি করা হয়েছিল। পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী মানুষ হিসেবে গবেষণায় ওঠে এসেছে মুসলিমদের নাম। জার্মানির ম্যানহেইম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাইকোলজিস্ট ড. লরা ম্যারি এডিনগার-স্কন্সের নেতৃত্বে গবেষণাটি পরিচালনা করা হয়। সেখানে কি ফলাফল প্রকাশ পেয়েছিল আসুন জেনে নেই (৩৩)(৩৪),


যুক্তরাজ্যভিত্তিক ডেইলি মেইলের তথ্য মতে জানা যায়, সুখী মানুষ হিসেবে শীর্ষস্থানে রয়েছে মুসলিমরা। এরপর যথাক্রমে খ্রিষ্টান, বৌদ্ধ ও হিন্দুরা। আর যারা কোনো ধর্মে বিশ্বাস করে না তথা নাস্তিকরা হচ্ছে পৃথিবীর সবচেয়ে অসুখী মানুষ।পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী মানুষ নির্ণয়ের এ গবেষণাটি যুক্তরাষ্ট্রের সাইকোলজিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের জার্নালে প্রকাশিত হয়। যুক্তরাজ্যভিত্তিক ডেইলি মেইলের বরাতে জানা যায়, জার্মানির ম্যানহেইম বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক সুখী মানুষের চিত্র তুলে ধরতে ৬৭ হাজার ৫৬২ জন মানুষের ওপর জরিপ চালায়। আর এ জরিপের আলোকে মুসলিমরাই হলো পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী মানুষ। গবেষণা প্রতিবেদনে সুখী হওয়ার উপায় সম্পর্কে বলা হয়, ‘মুসলমানদের এক আল্লাহর ওপর দৃঢ় বিশ্বাসই তাদেরকে কোনো হতাশা ও উদ্বেগ স্পর্শ করতে পারে না। আবার মুসলিমরাই মানুষের প্রতি সবচেয়ে বেশি সহনশীল। কুরআন এবং হাদিসের নির্দেশনাও হলো মানুষের প্রতি সহনশীল হওয়া। আর এসব কারণে মুসলিমদের মধ্যে আত্মহত্যা, হতাশা ও উদ্বেগ প্রবণতা অন্যদের তুলনায় অনেক কম। এ গবেষণার ফলাফল ও জরিপে নেতৃত্ব দেন জার্মানির ম্যানহেইম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাইকোলজিস্ট ড. লরা ম্যারি এডিনগার-স্কন্স। গবেষণা একটি বিষয় সুস্পষ্টভাবে ফুটে ওঠেছে যে, মানুষের সন্তুষ্টি ও আত্ম-তৃপ্তির সঙ্গে একত্ববাদের এক গভীর সম্পর্ক রয়েছে। একত্ববাদ মানুষকে উদার, মানবিক ও ত্যাগী হতে উদ্বুদ্ধ করে। আর মুসলিমদের মধ্যে ধর্মের প্রভাব সবচেয়ে বেশি কার্যকর। যে কোনো কাজের ক্ষেত্রে আল্লাহ ভয়ই মানুষকে জবাবদিহিতার দায়িত্ববোধ জাগিয়ে তোলে। তাই মুসলমানরা সাধারণত অন্যায় ও অপরাধমূলক কাজ থেকে বিরত থাকে। আর এটিই তাদেরকে বিশ্বব্যাপী সুখী মানুষ হতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। উল্লেখ্য যে, ২০১৬ সালে পিও গবেষণা কেন্দ্রের এক তথ্যেও ধর্মের প্রতি আন্তরিক সুসম্পর্ক ও সহনশীলতায় মানুষের সুখী হওয়ার বিষয়টি ওঠে আসে। প্রকৃত অর্থেই ইসলাম হলো শান্তির ধর্ম। দুনিয়ার সবচেয়ে বেশি সুখ ও শান্তি রয়েছে একত্ববাদে বিশ্বাসী ধর্ম ইসলামে।


“আলী দাওয়া” নামে এক যুবক যে কিনা সংশয়বাদী ছিল। সে স্বীকার করেছে যে, আমি যদি ইসলাম গ্রহণ না করতাম তাহলে আমি এখন মানসিক হাসপাতালে থাকতাম। সে নিজের জীবনে সব কিছু থাকা সত্ত্বেও কেন ডিপ্রেশনে ছিল এই নিয়ে বিস্তারিত বলেছে এবং ইসলাম তাকে কিভাবে কিভাবে হতাশাময় জীবন থেকে মুক্তি দিয়েছে সেই বিষয় গুলো খুবই চমৎকারভাবে সে তার ইন্টার্ভিউতে বর্ণনা করেছে। আপনারা উনার আলোচনাটি দেখতে পারেন (৩৫)।


পাকিস্তানের জনপ্রিয় নাস্তিক সেলিব্রেটি হামজা আলী আব্বাসী। উনি আগে মুসলিম ছিলেন কিন্তু পরবর্তী সময়ে নাস্তিক হয়ে যান। উনিও যখন সফলতার একদম উঁচুতে উঠেন তখন উনার মনে নানান প্রশ্ন জাগতো “এরপরে কি?” আমি এই সফলতা দিয়ে করবো কি? আমি এখানে কেন এসেছি? আবার কোথায় চলে যেতে হবে? আমার মৃত্যু কেন হবে? আমি কেনই বা জন্মেছি? আমি মরে গেলে আমার সব এওয়ার্ড আমার কি কাজে লাগবে? ইত্যাদি ইত্যাদি প্রশ্ন উনার মনে বাসা বাঁধে। এক পর্যায়ে উনি উনার জীবন নিয়ে ডিপ্রেশনে ডুবে যান। এরপরে বিভিন্ন ধর্ম সম্পর্কে নতুন করে গবেষণা শুরু করেন এমনকি ইসলামকে উনি আরও ভালো করে যাচাই বাছাই করা শুরু করেন। ইসলাম সম্পর্কে উনার আগের সব ভুল ধারণা উনি বুঝতে পারেন। পরিশেষে উনি নিজের ভুল পথ ত্যাগ করে স্বেচ্ছায়, বুঝে শুনে পুনরায় ইসলামে ফিরে আসেন। উনার নিজের আলোচনাটিও আপনারা দেখতে পারেন (৩৬)।


নাস্তিকরা যদি আসলেই চিন্তার মুক্তিতে বিশ্বাস করতো তাহলে যারা নাস্তিক্যধর্ম ছেড়ে দিয়ে ইসলামে ফিরে এসেছে তাদেরকে সাধুবাদ জানাতো। কিন্তু নাস্তিকরা কি সেই আচরণ করে? নাস্তিকর উল্টো বলে তারা নাকি ঠিক মতো নাস্তিক্যধর্মের অনুসারীই ছিল না। মাহমুদুল হাসান সোহাগ যিনি একজন একজন আলোচিত বাংলাদেশি উদ্যোক্তা। তিনি রকমারি ডট কম ওয়েবসাইটের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহপ্রতিষ্ঠাতা। এছাড়াও, তিনি উদ্ভাস কোচিং সেন্টার ও অন্যরকম ওয়েব সার্ভিস লিমিটেড প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি সর্বপ্রথম বাংলাদেশে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) তৈরি করেছেন। এছাড়াও তিনি বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াডের একাডেমিক কাউন্সিলর ছিলেন। বর্তমানে তিনি অন্যরকম গ্রুপের চেয়ারম্যান (৩৭)। উনি দীর্ঘ বছর নাস্তিকতার মুক্তচিন্তা চর্চা করেছেন কিন্তু যখন গভীর গবেষণা করে বুঝতে পারলেন যে উনি ভুলের পথে আছেন তখন উনি সেই ভুল ত্যাগ করে ইসলামে ফিরে আসেন। এই ঘটনা শুনে (৩৮) পুরো নাস্তিকগোষ্ঠীর যেন জাত চলে গিয়েছিল। উনাকে নিয়ে যা ইচ্ছে তাই বকেছে। নাস্তিকরা যদি আসলেই মানবতাবাদী হতো তাহলে উনাকে নিয়ে তেমন আচরণ করতে পারতো?


নাস্তিকরা এই গবেষণা গুলো মানতে চাইবে না কনফার্মাটিভ বায়াসের কারণে। তাই তর্কের খাতিরে যদি এই গবেষণা গুলো বাদও দেই এরপরে যৌক্তিকভাবেও আপনি যদি এক আল্লাহকে স্বীকার করে নেন। পরকালের বিচার দিবসে আপনার যৌক্তিক বিশ্বাস থাকে তাহলে স্বাভাবিকভাবে আপনার দুনিয়ার সব কষ্ট দুঃখ এমনিতেই কমে আসবে কারণ আপনি তখন যৌক্তিক সান্ত্বনা অনুভব করবেন যে, এই দুনিয়াতে কষ্ট যা পেয়েছি তার থেকে উত্তম প্রতিদান আল্লাহ আমাকে আখিরাতে দিবে। এই চিন্তাগুলো মনস্তাত্ত্বিকভাবে আপনাকে অনেক শক্তিশালী করে তুলবে।


অন্যদিকে আপনি যখন নাস্তিক্যধর্মে বিশ্বাস করবেন তখন আপনার কাছে এই দুনিয়াকেই সব কিছু মনে হবে এমনকি অন্যকে ধোঁকা দিয়ে নিজের উন্নতি সাধন করতেও আপনার মনে ভয় কাজ করবে না। যেমন নাস্তিকরা ইসলামকে ভুল প্রমাণ করার জন্য মুক্তচিন্তায় জালিয়াতি, প্রতারণা, মিথ্যাচার, ধোঁকাবাজি করতেও বাদ দেয় না। যদিও মানুষ এখন নাস্তিকদের ছলচাতুরী সব বুঝে। আর আপনি যখন কষ্ট দুঃখের সাথে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারবেন না তখন মুক্তচিন্তায় আত্মহত্যা করা ছাড়া আপনার কাছে বেস্ট অপশন থাকবে না। এই কারণেই নাস্তিকদের নাস্তিক্যধর্ম কোনো সমাধান নয় বরং, সমস্যা। মুক্তচিন্তার নামে নাস্তিকরা আসলে মানবজাতিকেই নগ্ন করে ফেলতে চায়। নাস্তিকদের পূর্বপুরুষ বান্দর, শিপ্পাঞ্জিদের ইতিহাস তো আপনার জানা আছে। তাই না?


অনুরোধ করছি একটু থামুনঃ

আপনি একটা কৌতুকে যদি একাধিক বার না হাসেন তাহলে একই ব্যাপারে বার বার কষ্ট কেন পান? আপনার আত্মহত্যার যদি একটি কারণ থাকে তাহলে আপনার বেঁচে থাকার জন্য হাজারটি কারণ আছে। আপনি কেন সেই একটি কারণের জন্য নিজেকে হত্যা করবেন? আত্মহত্যা কিভাবে সমাধান হতে পারে? আপনার দুনিয়া থেকে চলে গেলে আপনার পিতার কি অবস্থা হবে ভেবেছেন? আপনার মার চোখের পানি গুলোর কি হবে? আপনার ঘরে যে ছোট বোন আছে তার আবেগটার সম্মান কি আপনার কাছে নেই? আল্লাহ আপনাকে যেই মূল্যবান দামী জীবন দিয়েছেন সেই জীবনটাই যদি আপনি শেষ করে দেন তাহলে আপনি কোন মুখ নিয়ে আপনার রবের সামনে দাঁড়াবেন? কি জবাব দিবেন আপনি?


নিজের জীবনের সকল সমস্যার বিরুদ্ধে লড়াই করতে শিখুন কারণ আত্মহত্যা জীবনে সবচেয়ে বড় কাপুরুষতার পরিচয়। আত্মহত্যা কোনো উত্তর নয় বরং জীবন নামক যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পালানোর অজুহাত মাত্র। আত্মহত্যা কখনোই কোনো সমাধান হতে পারে না বরং সমস্যার সমাধান এর জন্য চেষ্টা চালিয়ে যান। আত্মহত্যা কখনো ব্যাথার অবসান ঘটায় না বরং এটি তা অন্য কারোর উপর চাপিয়ে দেয়। আত্মহত্যা নয় বরং যে স্মৃতিগুলোর জন্য করতে চাচ্ছিলেন সেই খারাপ স্মৃতিগুলোকে হত্যা করুন। দেখবেন ভালো আছেন।


বস্তুবাদী জগত আপনাকে কিছু দেয়নি তো কি হয়েছে? আল্লাহ আপনাকে সব দিবেন এই যৌক্তিক বিশ্বাসটি করতে শিখুন আপনার জীবন বদলে যাবে। এই সত্য যৌক্তিক বিশ্বাসটি রাখতে শিখুন যে এই দুনিয়াটা আপনার জন্য পরিক্ষা। আপনাকে আপনার সর্বচ্চটা দিয়ে এখানে ভালো কাজ করে যেতে হবে। যাতে আপনি আল্লাহকে সন্তুষ্ট করতে পারেন। এই সত্য বিশ্বাস আপনার জীবন থেকে সকল দুঃখ, কষ্ট, বেদনাকে সরিয়ে রাখবে। আমি নিজেই এর বাস্তব প্রমাণ। অন্যদিকে এটাও সত্য, নাস্তিক্যধর্ম আপনাকে যৌক্তিক কিছু কিছু দেবে না, মুক্তচিন্তা আপনাকে যৌক্তিক কিছু দেবে না কিন্তু আপনার যৌক্তিক বিশ্বাস আপনাকে সব কিছু দেবে যদি আপনি সেটা সঠিকভাবে করতে জানেন তাহলে। আপনাকে যেই আল্লাহ সৃষ্টি করেছেন সেই আল্লাহ আপনার সব সমস্যার যৌক্তিক সমাধান রেখেছেন কিন্তু আপনি সেই দিকে গভীরভাবে দৃষ্টি দিচ্ছেন না দেখে সমাধান পাচ্ছেন না। আল্লাহর দেয়া সমাধানকে মেনে নিন দেখবেন আপনার মধ্যে এমন এক ক্ষমতার সৃষ্টি হবে পাহাড় ধ্বংস হয়ে যাবে কিন্তু আপনাকে কেউ ভাঙতে পারবে না ইংশাআল্লাহ।


ইসলাম আপনাকে মনস্তাত্ত্বিকভাবে ক্ষমতাশীল করেঃ

একটা মানুষ কতটা অসহায় হলে নিজেকে মেরে ফেলতে পারে, সেটা আসলে আমাদের কারোই জানা নেই। একটা মানুষ কতটা দুর্বল হলে লড়াই না করে মরে যায়, সেটাও কিন্তু আমরা জানি না। তাই মানুষের জন্য যৌক্তিক সত্য বিশ্বাস করা প্রয়োজন।


অন্যের কথা জানি না কিন্তু আমি নিজের কথা আপনাদেরকে বলতে পারি ইসলাম আমাকে কতটা সাহায্য করে বিভিন্ন বিপদ, কষ্ট, দুঃখের সাথে লড়াই করতে। আমি যখন নামাজে সেজদা দিয়ে আল্লাহকে বলি আল্লাহ আমার কষ্ট লাগতেছে আপনি সাহায্য করেন। এই কথাটি আমার ভিতরে কতটা শক্তিশালী প্রভাব ফেলে সেটা আপনাকে বুঝিয়ে বলতে পারবো না। তাছাড়া কেউ যদি জান্নাতের কথা ভাবে তাহলেও দুনিয়ার সকল বিপদ আপদ তার কাছে তুচ্ছ মনে হবে। এমনকি জাহান্নামের শাস্তির ভয়ও আত্মহত্যাকে যৌক্তিকভাবে থামিয়ে দিতে পারে।


আমাদের সমাজেই এমন অনেক মানুষ আপনি পাবেন যাদের ঘরে কিচ্ছু নেই এরপরেও প্রশান্তির সাথে মুচকি হাঁসি দিয়ে বলবে আল্লাহর রহমতে শান্তিতেই আছি। এই দুনিয়ার অল্প  কিছু সময়ই তো এরপরে আল্লাহ আমাকে জান্নাত দিবে। জান্নাতের তুলনায় এই দুঃখ কষ্ট কিছুই না আমার কাছে। শিপ্পাঞ্জিদের বংশধর নাস্তিকরা দেখবেন জান্নাতের বিভিন্ন বিষয় যেমন হুর নিয়ে অনেক হাঁসিঠাট্টা করে কিন্তু আত্মহত্যার মতো বর্বরতাকে মৃত্যুর পরবর্তী জান্নাতের যৌক্তিক বিশ্বাস যে থামিয়ে দিতে পারে এটা নাস্তিকরা বুঝতে চায় না। নিজেদের ইসলামবিরোধী বিশ্বাসকে টিকাতে যুক্তিকে, সত্যকে, প্রমাণকে,চিন্তাকে খুন করতে নাস্তিকরা ভুল করে না।


আল কুরআন, সুরা হামীম,৪১ নং সুরা, ৩০,৩১,৩২ নং আয়াতে বলা আছে,

নিশ্চয় যারা বলে, আমাদের পালনকর্তা আল্লাহ, অতঃপর তাতেই অবিচল থাকে, তাদের কাছে ফেরেশতা অবতীর্ণ হয় এবং বলে, তোমরা ভয় করো না, চিন্তা করো না এবং তোমাদের প্রতিশ্রুত জান্নাতের সুসংবাদ শোন।ইহকালে ও পরকালে আমরা তোমাদের বন্ধু। সেখানে তোমাদের জন্য আছে যা তোমাদের মন চায় এবং সেখানে তোমাদের জন্যে আছে তোমরা দাবী কর। এটা ক্ষমাশীল করুনাময়ের পক্ষ থেকে সাদর আপ্যায়ন।


আল কুরআন, সুরা যুখরুফ, ৪৩ সুরা, ৭০ থেকে ৭৩ আয়াতে বলা আছে,

জান্নাতের প্রবেশ কর তোমরা এবং তোমাদের বিবিগণ সানন্দে। তাদের কাছে পরিবেশন করা হবে স্বর্ণের থালা ও পানপাত্র এবং তথায় রয়েছে মনে যা চায় এবং নয়ন যাতে তৃপ্ত হয়। তোমরা তথায় চিরকাল অবস্থান করবে। এই যে, জান্নাতের উত্তরাধিকারী তোমরা হয়েছ, এটা তোমাদের কর্মের ফল। তথায় তোমাদের জন্যে আছে প্রচুর ফল-মূল, তা থেকে তোমরা আহার করবে


সহিহ মুসলিম, হাদিসঃ ৭০৪১, সহিহ হাদিসঃ

আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃরসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে লোক সর্বপ্রথমে জান্নাতে প্রবেশ করবে। কুতাইবাহ্ ও যুহায়র ইবনু হার্ব (রহঃ) ….. আবূ হুরায়রা্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ সর্বপ্রথম যে দলটি জান্নাতে প্রবেশ করবে তাদের মুখমণ্ডল পূর্ণিমার চাঁদের মতো উজ্জ্বল হবে। তাদের পর যারা জান্নাতে প্রবেশ করবে তাদের মুখমণ্ডল আকাশে উদিত আলোকজ্জ্বল নক্ষত্রের মতো হবে। তারা প্রস্রাব-পায়খানা করবে না, থু-থু ফেলবে না এবং নাক ঝাড়বে না। তাদের চিরুনী হবে স্বর্ণের। তাদের গায়ের ঘাম হতে মিশকের ঘ্রাণ আসবে এবং তাদের ধূপদানী হবে ‘আলূওয়াহ্’ নামে এক ধরণের সুগন্ধি কাষ্ঠের তৈরি। তাদের স্ত্রীগণ হবে ডাগর চক্ষু বিশিষ্ট। তাদের চরিত্র হবে একই লোকের চরিত্রের মতো। আদি পিতা আদাম (‘আঃ)-এর আকৃতির মতো হবে তাদের আকৃতি। যা ষাট হাত দীর্ঘ আকৃতি বিশিষ্ট।-ihadis.com


জামে আত তিরমিজি, হাদিসঃ ২৫৩৭, সহিহ হাদিসঃ

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃরাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে দলটি সর্বপ্রথম জান্নাতে প্রবেশ করবে, সেই দলের মানুষদের আকৃতি হবে পূর্ণিমার চাঁদের মতো উজ্জ্বল। তারা সেখানে থুথু ফেলবে না, নাকের শিকনিও বের হবে না, প্রস্রাব-পায়খানাও করবে না। তাদের ব্যবহার্য পাত্রসমূহ হবে স্বর্ণের তৈরি আর সোনা–রূপার সংমিশ্রণে তৈরি হবে চিরুনি। চন্দন কাঠ ও আগরবাতি জ্বালানো থাকবে। তাদের শরীরের ঘাম হবে মিশকের মতো সুগন্ধময়। তাদের প্রত্যেকের জন্য দুজন করে স্ত্রী (হুর) থাকবে। সৌন্দর্যের কারণে মাংসের ভিতর দিয়ে তাদের পায়ের জংঘার হাড়ের মজ্জা পর্যন্ত দৃষ্টিগোচর হবে। তাদের মধ্যে না থাকবে ঝগড়া–বিবাদ, আর না থাকবে হিংসা–বিদ্বেষ। তাদের সকলের অন্তর যেন একটি অন্তরে পরিণত হবে। সকাল-বিকাল তারা আল্লাহ্‌ তা‘আলার পবিত্রতা বর্ণনা করবে।-ihadis.com


ইসলাম ধৈর্য ধারণ করার শিক্ষা দেয়ঃ

আল কুরআন, সুরা বাকারা,২ঃ ১৫৩ আয়াতে বলা আছে,

হে মুমিন গন! তোমরা ধৈর্য্য ও নামাযের মাধ্যমে সাহায্য প্রার্থনা কর। নিশ্চিতই আল্লাহ ধৈর্য্যশীলদের সাথে রয়েছেন


আল কুরআন, সুরা ইমরান ৩ঃ২০০ আয়াতে বলা আছে,

হে ঈমানদানগণ! ধৈর্য্য ধারণ কর এবং মোকাবেলায় দৃঢ়তা অবলম্বন কর। আর আল্লাহকে ভয় করতে থাক যাতে তোমরা তোমাদের উদ্দেশ্য লাভে সমর্থ হতে পার।


আল কুরআন, সুরা হজ্জ ২২ঃ ৩৫ আয়াতে বলা আছে,

যাদের অন্তর আল্লাহর নাম স্মরণ করা হলে ভীত হয় এবং যারা তাদের বিপদাপদে ধৈর্য্যধারণ করে এবং যারা নামায কায়েম করে ও আমি যা দিয়েছি, তা থেকে ব্যয় করে।


আল কুরআন,সুরা সাদ ৩৮ঃ ৪৪ আয়াতে বলা আছে,

তুমি তোমার হাতে এক মুঠো তৃণশলা নাও, তদ্বারা আঘাত কর এবং শপথ ভঙ্গ করো না। আমি তাকে পেলাম সবরকারী। চমৎকার বান্দা সে। নিশ্চয় সে ছিল প্রত্যাবর্তনশীল।


আল কুরআন, সুরা ইবরাহীম ১৫ঃ৫ আয়াতে বলা আছে,

আমি মূসাকে নিদর্শনাবলী সহ প্রেরণ করেছিলাম যে, স্বজাতিকে অন্ধকার থেকে আলোর দিকে আনয়ন এবং তাদেরকে আল্লাহর দিনসমূহ স্মরণ করান। নিশ্চয় এতে প্রত্যেক ধৈর্যশীল কৃতজ্ঞের জন্যে নিদর্শনাবলী রয়েছে


সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিসঃ ১৫৯৬, সহিহ হাদিসঃ

আনাস ইবন মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃরাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ বিপদের প্রথম আঘাতে ধৈর্য ধারণই হচ্ছে প্রকৃত ধৈর্য।-ihadis.com


সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিসঃ ১৫৯৭, সহিহ হাদিসঃ

আবূ উমামাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃনাবী (সাল্লালাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, মহান আল্লাহ্‌ বলেছেনঃ হে বনী আদম! যদি তুমি সওয়াবের আশায় প্রথম আঘাতেই ধৈর্য ধারণ করো তাহলে আমি তোমাকে সওয়াবের বিনিময় হিসাবে জান্নাত দান না করে সন্তুষ্ট হবো না।-ihadis.com


রিয়াদুস সলেহিন, হাদিসঃ ২৮, সহিহ হাদিসঃ

আবূ ইয়াহয়া সুহাইব ইবনু সিনান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃআল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘মুমিনের ব্যাপারটাই আশ্চর্যজনক। তার প্রতিটি কাজে তার জন্য মঙ্গল রয়েছে। এটা মু’মিন ব্যতীত অন্য কারো জন্য নয়। সুতরাং তার সুখ এলে আল্লাহর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে। ফলে এটা তার জন্য মঙ্গলময় হয়। আর দুঃখ পৌঁছলে সে ধৈর্য ধারণ করে। ফলে এটাও তার জন্য মঙ্গলময় হয়।’’-ihadis.com


আল লুলু ওয়াল মারজান, হাদিসঃ ৬২৭, সহিহ হাদিসঃ

আবূ সা‘ঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ কিছু সংখ্যক আনসারী সহাবী আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট কিছু চাইলে তিনি তাঁদের দিলেন, পুনরায় তাঁরা চাইলে তিনি তাঁদের দিলেন। এমনকি তাঁর নিকট যা ছিল সবই শেষ হয়ে গেল। এরপর তিনি বললেনঃ আমার নিকট যে মাল থাকে তা তোমাদের না দিয়ে আমার নিকট জমা রাখি না। তবে যে চাওয়া হতে বিরত থাকে, আল্লাহ তাকে বাঁচিয়ে রাখেন আর যে পরমুখাপেক্ষী না হয়, আল্লাহ তাকে অভাবমুক্ত রাখেন। যে ব্যক্তি ধৈর্য ধারণ করে, আল্লাহ তাকে সবর দান করেন। সবরের চেয়ে উত্তম ও ব্যাপক কোন নি‘আমত কাউকে দেয়া হয়নি।-ihadis.com


নাস্তিকরা মুক্তচিন্তার দোহাই দিয়ে এসব উপদেশকে অবিশ্বাস করতে পারে কিন্তু যারা বুদ্ধিমান তারা ঠিকই ইসলামের মর্ম গভীর থেকে গভীরে উপলব্ধি করতে পারবে। দুনিয়াতে চলতে ফিরতে ধৈর্যের বিকল্প নেই। ধৈর্য যে ধরতে পারে না সে কিছুই করতে পারে না। ইসলাম আমাদেরকে শুধু আখিরাতের জিনিস শিক্ষা দেয় না বরং দুনিয়াতে কিভাবে নিরাপদে চলাফেরা করতে হবে সেই ব্যাপার গুলো সুন্দর করে শিক্ষা দেয়। মানুষের জীবন যাপনের জন্য যা যা করা প্রয়োজন সব কিছুই ইসলাম আমাদেরকে শিক্ষা দেয়।


উপসংহারঃ

আত্মহত্যা করার মতো একটি বর্বর ও নিকৃষ্ট বিধান নাস্তিক্যধর্মের মুক্তচিন্তায় জায়েজ আছে। কোনো নাস্তিকই এই কথাকে অস্বীকার করতে পারবে না। যেকোনো নাস্তিক চাইলেই নিজের নাস্তিক্যধর্মের এই মুক্তচিন্তাটি সহজেই করতে পারবে। নাস্তিক্যধর্মের মুক্তচিন্তা নাস্তিকদেরকে গহীন থেকে হতাশার সৃষ্টি করে। অন্যদিকে ইসলাম আমাদেরকে আত্মহত্যা করতে নিষেধ করে একইসাথে আশা,ভরশা,যৌক্তিক বিশ্বাস দিয়ে আমাদের ভিতরের মনস্তাত্ত্বিক শক্তিকে জাগিয়ে তোলে যাতে আমরা দুনিয়ার সব হতাশা, সমস্যা ও বিপদের সাথে আত্মবিশ্বাসের সাথে লড়াই করে সামনে যেতে পারি। আর নাস্তিকরা ইসলামকেই দুনিয়া থেকে ধ্বংস করে দিতে চায়। নাস্তিকরা চায় মানুষ যাতে ইসলাম গ্রহণ না করুক। নাস্তিকরা চায় সকল মানুষ নাস্তিক্যধর্ম গ্রহণ করে চিন্তার মুক্তির আন্দোলন করুক। আপনার সন্তানকে আপনি নাস্তিক মুক্তমনাদের মতো বানাবেন নাকি মানবিক মানুষ হিসেবে বড় করবেন সেটা আপনার বিবেচনায় জমা দিচ্ছি। সকল তথ্যপ্রমাণই আপনাদের সামনে আছে। সময় ফুরাবার আগে সিদ্ধান্তটিও আপনাকেই নিতে হবে। সময় কিন্তু ঠিকই আপনার জন্য থেমে নেই, তাহলে আপনি কেন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে সময় অপচয় করবেন?


তথ্যপ্রমাণ সমূহঃ


[১] উইকিপিডিয়াঃ “আত্মহত্যা”।


[২] উইকিপিডিয়াঃ হুমায়ুন আজাদ।


[৩] Happiest Countries in the World 2022

https://worldpopulationreview.com/country-rankings/happiest-countries-in-the-world?fbclid=IwAR3Jdun5FHZmmVDLTGvPXDgpMdggbhrxf5EVfv5CeNYdKBqGKE0KpchtsBc


[৪] Suicide Rate by Country 2022

https://worldpopulationreview.com/country-rankings/suicide-rate-by-country


[৫] The No. 1 ‘happiest country’ in the world also has one of the highest suicide rates — economists have a theory why

https://www.marketwatch.com/story/people-reach-their-lowest-depth-of-misery-at-50-but-life-improves-after-that-heres-why-2020-01-13?fbclid=IwAR0osXsfRidLWm3iqYelkXcY0lNDS39bGw20Nd5R3x940_W57mowibQrCLM


[৬] Suicide Rate by Country 2022

https://worldpopulationreview.com/country-rankings/suicide-rate-by-country


[৭] Most Atheist Countries 2022

https://worldpopulationreview.com/country-rankings/most-atheist-countries


[৮] বেদনাহীন আত্মহত্যার যন্ত্রের বৈধতা দিল সুইজারল্যান্ড!

https://www.jugantor.com/


[৯] জাপান কেন আত্মহত্যা প্রবণ দেশ হিসেবে পরিচিত?

https://www.bbc.com/bengali/news-46106195


[১০] Being depressed in the 'world's happiest country'

https://www.bbc.com/worklife/article/20190924-being-depressed-in-the-worlds-happiest-country


[১১] Being depressed in the 'world's happiest country'

https://www.bbc.com/worklife/article/20190924-being-depressed-in-the-worlds-happiest-country


[১২] Is religion protective against suicidal behaviour for LGBT individuals? 15 September, 2017,Tiago Zortea is a Clinical Psychologist and a postdoctoral researcher in the Suicidal Behaviour Research Laboratory, University of Glasgow:

https://netecr.org/2017/09/15/religion-lgbt/?fbclid=IwAR1Sj6kVzWnn2Ui72VD-IdPEUEgBcTdzopJVZdl-CvrGUf3St8Sb8vUTA_A


[১৩] Famous People Who Committed Suicide

https://www.thefamouspeople.com/suicide.php


[১৪] Actors and Celebrities Who Committed Suicide

https://www.imdb.com/list/ls097007717/


[১৫] 100 Celebrities Who Committed Suicide & Their Stories

https://optimalhappiness.com/celebrity-who-committed-suicide/


[১৬] “যুগান্তর” পত্রিকা,২১ জুলাই ২০২২,আত্মহনন বাড়ছে কেন?

www.jugantor.com


[১৭] “যায়যায়দিন” পত্রিকা, ০১ নভেম্বর ২০২২,তারুণ্যের মধ্যে কেন আত্মহত্যা উদ্বেগজনকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে?

https://www.jaijaidinbd.com/feature/jjd-friends-forum/301609


[১৮] “প্রথম আলো” পত্রিকা, ১০ অক্টোবর ২০১৯, আত্মহত্যা প্রতিরোধে মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নয়ন।

www.prothomalo.com


[১৯] R.B Steward (ed), Intelligent Design: William A. Dembski & Michael Ruse in Dialogue. p37 (Minneapolis, MN: Fortress Press, 2007।


[২০] Ijeoma Oluo, My atheism does not make me superior to believers. It’s a leap of faith too. The Guardian, 24 Oct 2015।


[২১] Pauk kurtz (etd) Isaac Asimov on science and the Bible. Free Inquiry 2, NO. 2 (spring 1982)


[২২] Lawrence M. Krauss > Quotes:  https://www.goodreads.com/

Lawrence M. Krauss, A Universe from Nothing: Why There Is Something Rather than Nothing


[২৩] Jhon Bingham, Richard Dawkings: I can't sure God doesn't exist. The Tele-graph,24 Feb 2012]


[২৪] RICHARD DAWKIS, THE GOD DELUSION; P. 14 (LONDON: BANTHAM PRESS 2006)

নাস্তিকতা কেন অন্ধবিশ্বাস এই লেখাটিও পড়তে পারেন;

https://rafanofficial.wordpress.com/2019/09/21/athesim-is-a-belief/


[২৫] Dennett, D. (2006), Breaking the Spell: Religion as a Natural Phenomenon, Viking, New York, NY.


[২৬] Wikipedia entry on ‘Schön scandal

https://en.wikipedia.org/wiki/Sch%C3%B6n_scandal?fbclid=IwAR29PRWGuQoxY-qoV7umwX8hOODG4mPu6nBR_xvViDYJ0tMQ-D8Xt990UcE


[২৭] Nature (2010), ‘News briefing’, Nature, 467, 11.


[২৮] Daily Telegraph (2010), ‘ “Atheists just as ethical as churchgoers”, new research shows’, Daily Telegraph, 9 February.


[২৯] Broad, W., and Wade, N. (1985), Betrayers of the Truth: Fraud and Deceit in Science, Oxford University Press, Oxford.


[৩০] Hettinger, T. P. (2010), ‘Misconduct: don’t assume science is self-correcting’, 466, 1040.


[৩১] Wikipedia Erases Paleontologist Günter Bechly

https://evolutionnews.org/2017/10/wikipedia-erases-paleontologist-gunter-bechly/?fbclid=IwAR0BAeIYL63No_XkaDSba7-CuF64JIh6wmbN4oQ7VCxvvb9Tzw8ZLQEw-Pc


[৩২] New German Study Claims That Muslims Are the Most Satisfied With Their Lives

https://www.abouther.com/node/18901/people/features/new-german-study-claims-muslims-are-most-satisfied-their-lives?fbclid=IwAR3lqqAyo3a0jTkHWTTdz-N7Jg9nguKVShqZPQX4Z2oJFw0AiqG5_kPcBtg


[৩৩] Muslims have the highest life satisfaction: They have a feeling of 'oneness' that trumps Christians, Buddhists and yogis, study suggests

https://www.dailymail.co.uk/health/article-6908769/Muslims-highest-life-satisfaction-thanks-feeling-oneness.html


[৩৪] Muslims are the most satisfied with their lives, according to new study

https://stepfeed.com/muslims-are-the-most-satisfied-with-their-lives-according-to-new-study-5626


[৩৫] Tough Questions To Ali Dawah! - "If I Didn't Convert To Islam, I Could Be In Mental Hospital"

https://www.youtube.com/watch?v=YqigffuUaX0&t=1680s


[৩৬] From Atheism to ISLAM: Hamza Ali Abbasi

https://www.youtube.com/watch?v=guI0xG8lLcE


[৩৭] উইকিপিডিয়াঃ মাহমুদুল হাসান সোহাগ।


[৩৮] কেন আমি বিশ্বাসী হলাম ! Branding Bangladesh I Episode :42 I Studio of Creative Arts ltd

https://www.youtube.com/watch?v=w0NN-mJWowo


=======


প্রাসঙ্গিক আরও কিছু লেখাঃ


নাস্তিকদের বিভিন্ন প্রকার মুক্তচিন্তা


মীরজাফরদের মুক্তচিন্তা


মুক্তমনাদের ধর্ষণের মুক্তচিন্তা


নাস্তিক্যধর্মে ধর্ষণ বৈধ?


আমার অবিশ্বাস VS যৌক্তিক প্রশ্ন


=======

এমডি আলী

যিনি একজন লেখক, বিতার্কিক ও গবেষক। বিভিন্ন ধর্ম ও মতবাদ বিষয় পড়াশোনা করেন। ইসলামের সত্যতা মানুষের কাছে ছড়িয়ে দিতে চান। “সত্যের অনুভূতি” উনার লেখা প্রথম বই। “ফ্যান্টাস্টিক হামজা” দ্বিতীয় বই। জবাব দেবার পাশাপাশি নাস্তিক মুক্তমনাদের যৌক্তিক সমালোচনা করে থাকেন।

Previous Post Next Post