নবীজি (সা) ভুল ভবিষ্যৎবাণী করেছেন?

নবীজি (সা) ভুল ভবিষ্যৎবাণী করেছেন?

লিখেছেনঃ এমডি আলী

==============================


ভূমিকাঃ

যেখানে মহানবী(সা)-এর বলা ভবিষ্যৎবাণী গুলো চোখের সামনে আমরা সত্যই দেখতে পাচ্ছি সেখানে চোখে অন্ধের চশমা পরে চিন্তার মুক্তির আন্দোলনকারীরা উনার ভবিষ্যৎবাণীর ভুল নাকি খুজে পেয়েছে। এসব মুক্তমনা জোকারদের কৌতুকে আমি হাসাহাসি করি। মানে বিনোদনের জাগা যে এখনো ফুরায়নি সেটা বলাই যায়। মিথ্যায়ভরা তাদের মিথ্যাচার গুলো ধরিয়ে দিলে ব্লক খেতে হয়, নাহলে রিপোর্ট আর নাহয় কখনো কখনো মৃত্যুর হুমকি। এভাবেই বুঝি উনারা চিন্তার মুক্তির আন্দোলন করে থাকেন কিনা সেটি নিয়ে সংশয় থেকে গেলো।


এক যুবকের হায়াত শেষ তো কিয়ামত শুরু?

অভিযোগঃ

যেই হাদিস গুলো দেখিয়ে নাস্তিকরা বলে হযরত মোহাম্মদ (সা) তো বলেছেন সেই যুবকের মৃত্যু হলেই কিয়ামত হবে। সেই যুবকের তো মৃত্যু হয়েছে। কই কিয়ামত তো হলো না? তাহলে বুঝা যাচ্ছে হযরত মোহাম্মদ (সা) ভুল কথা বলেছেন? সুতরাং উনার ভবিষ্যৎবাণী ভুল প্রমাণিত হয়েছে।


আনাস ইবনু মালিক (রাযি:) থেকে বর্ণিত: এক লোক রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে প্রশ্ন করলেন যে, কিয়ামত কবে সংঘটিত হবে? এ কথা শুনে রসূল্লুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কিচ্ছুক্ষণ নীরবতা অবলম্বন করেন। এরপর তিনি সম্মুখস্থ ইয্‌দ গোত্রের এক যুবকের প্রতি তাকালেন, বস্তুতঃ ইয্‌দ শানূয়ার একটি শাখা গোত্র। অতঃপর তিনি বললেন, এ ছোট ছেলেটি যদি দীর্ঘায়ু লাভ করে তবে তার বার্ধক্যে উপনীত হওয়ার আগেই কিয়ামাত সংঘটিত হয়ে যাবে। আনাস (রাযি:) বলেন, তখন এ বালক আমার সমবয়স্ক ছিল। সহিহ মুসলিম: ৭৩০১, সহিহ হাদিস।-ihadis.com


আনাস (রাযি:) থেকে বর্ণিত: একদিন এক লোক রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে প্রশ্ন করলেন, কিয়ামত কবে সংঘটিত হবে? তখন তাঁর কাছে মুহাম্মাদ নামে এক আনসারী বালক উপস্থিত ছিল। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, এ বালক যদি জীবিত থাকে তবে সে বৃদ্ধ হওয়ার আগেই কিয়ামাত সংঘটিত হয়ে হবে। সহিহ মুসলিম: ৭৩০০, সহিহ হাদিস।-ihadis.com


জবাবঃ

ইসলামবিরোধী অন্ধবিশ্বাসী নাস্তিকদের চাকরিই হচ্ছে ইসলাম সম্পর্কে অপব্যাখ্যা ও মিথ্যায়ভরা কথা প্রচার করা। নাস্তিকরা যদি সততার সাথে একটু যাচাই বাছাই করার চেষ্টা করতো তাহলে স্পষ্ট বুঝতে পারতো উক্ত হাদিসে প্রশ্নকারী লোকদের প্রজন্মের মৃত্যুকে বুঝিয়েছেন অর্থাৎ উনাদের মৃত্যু হবার মাধ্যমে উনাদের কিয়ামত হবে। এর প্রমাণ কি? হাদিসটি পড়ুন যেটা নাস্তিকরা আপনাকে দেখাতে চাইবে না। আপনি নিজেই প্রমাণ পেয়ে যাবেন। পড়ুন।


সহিহ মুসলিম, হাদিসঃ ৭২৯৯,সহিহ হাদিসঃ

‘আয়িশাহ্‌ (রাযি:) থেকে বর্ণিত: তিনি বলেন, বিদুঈন লোকেরা রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর কাছে এসেই তাকে কিয়ামত বিষয়ে প্রশ্ন করত, বলত, কিয়ামত কবে হবে? তখন তিনি তাঁদের মধ্যে কম বয়স লোকটির প্রতি দৃষ্টপাত করে বলতেন, এ যদি জীবিত থাকে তবে সে বৃদ্ধ হওয়ার আগেই তোমাদের কিয়ামত এসে উপস্থিত হবে।-ihadis.com


হাদিসটি থেকে একদম পরিস্কার বুঝাই যাচ্ছে প্রশ্নকারীদের মৃত্যুকে নবীজি (সা) কিয়ামত হিসেবে বুঝিয়েছেন। আর ভণ্ডবাজ চিন্তার মুক্তির আন্দোলনকারীরা কিভাবে মিথ্যা বিশ্বাস করলো যে নবীজি মোহাম্মদ (সা) ভুল ভবিষ্যৎবাণী করেছেন?


আসুন এইবার হাদিসের ব্যাখ্যাগ্রন্থ দেখে আরও স্পষ্ট অর্থ জেনে নেই উক্ত হাদিসের প্রকৃত সঠিক ব্যাখ্যা কি হবে। এই হাদিসের সঠিক ব্যাখ্যাটি নাস্তিকদের অন্ধবিশ্বাসের বিরুদ্ধে গিয়েছে দেখে তারা নানান উপায়ে এসব ব্যাখ্যাকে পছন্দ করে না।


আনওয়ারুল মিশকাত শরহে মিশকাতুল মাসাবিহ,৬ খণ্ড ,৫১০ পৃষ্ঠায় বর্ণিত হয়েছে,

এ কথাটির তাৎপর্য হলো আজ হতে একশত বৎসরের মধ্যে সাহাবীদের কেউই বেঁচে থাকবেন না। ইতিহাস হতে প্রমাণিত হয়েছে যে, রাসুল (সা)-এর এ উক্তির পর হতে সাহাবীগণ উক্ত মুদ্দতের মধ্যেই ইন্তেকাল করেছেন। 


আনওয়ারুল মিশকাত শরহে মিশকাতুল মাসাবিহ,৬ খণ্ড ,৫১১ পৃষ্ঠায় বর্ণিত হয়েছে,

মানুষদের প্রশ্ন হতো বড় কিয়ামত সম্পর্কে, যার তারিখ কেউই জানতে পারে না, কাজেই তিনি জবাব দিতেন ছোট কিয়ামত সম্পর্কে। অর্থাৎ তুমি মরে গেলেই তো তোমার কিয়ামত শুরু হয়ে গেলো


পাঠক এই সঠিক ব্যাখ্যা নাস্তিকরা গ্রহণ করবে না আপনি নিশ্চিত থাকেন কারণ নাস্তিকরা উক্ত হাদিসকে নিয়ে যেইভাবে ভুল বুঝেছে তারা সহজে নিজেদের ভুল স্বীকার করবে না বা করতে চাইবে না। নাস্তিকদের খাসলতই এমন। যেসব নাস্তিকরা সততার বিন্দুমাত্র ধারদারে তারা এরপরে আর উক্ত হাদিসটি নিয়ে মুক্তচিন্তায় মিথ্যাচার করবে না বলে আমি আশা করি- যদিও এটা হয়তো আমার দুঃস্বপ্ন!


কুরাইশদের কাছে সব সময়ই শাসনভার থাকবে?

অভিযোগঃ

নাস্তিকরা এই হাদিস গুলো দেখিয়ে দাবি করে,পৃথিবীতে এখনো কুরাইশ বংশের অনেক মানুষ আছে,কিন্তু কুরাইশদের খিলাফত এখন বহাল নেই কেনো? হাদিসে তো স্পষ্ট বলা হচ্ছে কুরাইশদের মধ্যে থেকে দুজনও অবশিষ্ট থাকলে তাদের কাছেই খেলাফত থাকবে, কই এখন তো তাদের কাছে খেলাফত নেই? তারমানে মুহাম্মাদ(স) এর ভবিষ্যৎবাণী মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে? 


সহিহ বুখারী,হাদিসঃ ৭১৪০,সহিহ হাদিসঃ ইব্‌নু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত: তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন (খিলাফাতের) এই বিষয়টি সব সময় কুরাইশদের মধ্যেই থাকবে, যতদিন তাদের থেকে দু’জন লোকও অবশিষ্ট থাকবে।-ihadis.com


জবাবঃ

পাঠক একটি ব্যাপার খেয়াল করেছেন মুক্তমনাদের ইসলাম বিরোধী অপপ্রচার গুলোর ছলচাতুরী কিন্তু একই ধরণের হয়। অর্থাৎ সামগ্রিক তথ্যপ্রমাণ ও সঠিক ব্যাখ্যা গুলোকে খুব চালাকি করে ধামাচাপ দিয়ে যতটুকু তথ্য দেখালে নিজের সুবিধা হবে সেগুলোই একএক করে দেখিয়ে মানুষকে চিন্তার মুক্তির আন্দোলনের নামে ধোঁকা দিয়ে দিবে। কিন্তু আমরা যারা সত্য ও সততার সাথে যাচাই বাছাই করি তারা ঠিকই নাস্তিকদের এসব ভণ্ডামি গুলো মানুষকে জানিয়ে দেই যাতে মানুষ নাস্তিক্যধর্মের মিথ্যুকবাজদের বাটপারিতে বিভ্রান্ত না হয়।


অংশিক হাদিস নয়,পুরো হাদিসটি পড়ে নেই। তাহলেই আমরা পরিস্কার জানতে পারবো আসলেই উক্ত হাদিসে নবীজি মোহাম্মদ (সা) কি বলেছেন। অথবা উনি কি বোঝাতে চেয়েছেন।


সহিহ বুখারী,হাদিসঃ ৩৫০০, সহিহ হাদিসঃ

মুহাম্মাদ ইব্ন জুবায়ের ইব্ন মুত্‘ঈম (রহঃ) থেকে বর্ণিত: তিনি বলেন, মু‘আবিয়া (রাঃ) -এর নিকট কুরাইশ প্রতিনিধিদের সাথে তার উপস্থিতিতে সংবাদ পৌঁছলো যে, ‘আবদুল্লাহ্ ইব্‌ন ‘আমর ইবনুল ‘আস (রাঃ) বর্ণনা করেন, শীঘ্রই কাহতান বংশীয় জনৈক বাদশাহর আগমন ঘটবে। এতদশ্রবণে মু‘আবিয়া (রাঃ) ক্রুদ্ধ হয়ে খুতবাহ দেয়ার উদ্দেশে দাঁড়িয়ে আল্লাহর যথাযোগ্য হামদ ও সানার পর তিনি বললেন, আমি জানতে পেরেছি, তোমাদের মধ্য থেকে কিছু লোক এমন সব কথাবার্তা বলতে শুরু করেছে যা আল্লাহর কিতাবে নেই এবং আল্লাহ্‌র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতেও বর্ণিত হয়নি। এরাই মূর্খ, এদের হতে সাবধান থাক এবং এমন কাল্পনিক ধারণা হতে সতর্ক থাক যা ধারণাকারীকে বিপথগামী করে। আল্লাহ্‌র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে আমি বলতে শুনেছি যে, যত দিন তারা দ্বীন কায়েমে লেগে থাকবে ততদিন খিলাফত ও শাসন ক্ষমতা কুরাইশদের হাতেই থাকবে। এ বিষয়ে যে - ই তাদের সাথে শত্রুতা করবে আল্লাহ্ তাকে অধোঃমুখে নিক্ষেপ করবেন।-ihadis.com


দ্বীন কায়েমের চেষ্টা সেভাবে করা হচ্ছে না সেভাবে নবীজি মোহাম্মদ (সা) বুঝিয়েছেন। এই কারণেই খেলাফতের দায়িত্ব কুরাইশদের কাছে নেই। নাস্তিকরা এই হাদিসটি না দেখেই কিভাবে সত্য নবী মোহাম্মদ (সা)কে নিয়ে মিথ্যাভরা কথা বলল দেখলেন? যতদিন কুরাইশরা দ্বীন কায়েমে নিয়োজিত ছিলো,ততদিন তাদের হাতেই খেলাফতের দায়িত্ব ছিলো। পরবর্তীতে কুরাইশরা দ্বীনের পথ থেকে সরে গিয়ে ভোগ-বিলাসিতা ও দুনিয়াদারীতে লিপ্ত হওয়ায় ক্ষমতা হারায়। এভাবে আব্বাসী খিলাফতের পতনের মধ্য দিয়ে কুরাইশদের পতন ঘটে। সুতরাং রাসুল(স) এর ভবিষ্যৎবাণী মিথ্যা নয়,বরং অক্ষরে অক্ষরে সত্য প্রমাণিত হয়েছে। কিন্তু এই সত্যিটি নাস্তিক্যধর্মের অনুসারীদের কাছে কি ভালো লাগবে আপ্নিই বলুন?


আসুন হাদিসের ব্যাখ্যাগ্রন্থ থেকে পড়ি।


আনওয়ারুল মিশকাত শরহে মিশকাতুল মাসাবিহ,৭ খণ্ড,২৭৪ পৃষ্ঠায় বর্ণিত হয়েছে,

এ দায়িত্ব [শাসন-কর্তৃত্ব| কুরাইশদের মধ্যে থাকবে।' দ্বারা উদ্দেশ্য হলো,খেলাফতের অধিকার যেহেতু কুরাইশদের সবচেয়ে বেশি, তাই খেলাফতের সুমহান মর্যাদা কুরাইশদের নিকট থাকাই উচিত এবং কুরাইশী ছাড়া অন্যদেরকে খলিফা নির্বাচন শরিয়তে জায়েজ নেই। সুতরাং সাহাবায়ে কেরামের যুগে এ বিষয়টির উপর ইজমা [ঐকমত্য] ছিল এবং এ মূল্যবান ঘোষণা ঐ সকল আনসারী সাহাবীদের মোকাবিলায় মুহাজিরীন সাহাবীদের জন্য দলিল হিসেবে গণ্য হয়েছিল যাঁরা খেলাফতকে আনসারদের অধিকার সাব্যস্ত করতে চেয়েছিলেন। [মাযাহেরে হক খ. ৭, পৃ. ২২৬] অর্থাৎ তাদের দুজনের একজন হবে শাসক এবং অপরজন হবে শাসিত। আল্লামা নববী (র.) বলেছেন, আলোচ্য হাদীস এবং এ মর্মের অন্যান্য হাদীস এটাই প্রমাণ করে যে, খেলাফত কুরাইশদের জন্য নির্দিষ্ট। সুতরাং কুরাইশদেরকে উপেক্ষা করে অন্যকে খলিফা বানানো জায়েজ নেই। সাহাবায়ে কেরাম ও পরবর্তী যুগে এ কথার উপরেই ইজমা সংঘটিত হয়েছে। 'চিরকাল কুরাইশদের হাতে কর্তৃত্ব থাকবে'- অধিকাংশ ওলামাদের মতে এটা নির্দেশ নয়, বরং ভবিষ্যদ্বাণী, তবে সহীহ হাদীসের মাধ্যমে তার সাথে এটা শর্ত আরোপ করা হয়েছে। অর্থাৎ কুরাইশগণই খিলাফতের হকদার, যতক্ষণ তারা দীনের উপর প্রতিষ্ঠিত থাকবে। দীন হতে বিচলিত হয়ে গেলে তাদের এ হক থাকবে না এবং এমতাবস্থায় অন্য উপযুক্ত লোককে খলিফা নিযুক্ত করা নিষিদ্ধ নয়


আনওয়ারুল মিশকাত শরহে মিশকাতুল মাসাবিহ,৭ খণ্ড,২৭৪ ও ২৭৫ পৃষ্ঠায় বর্ণিত হয়েছে,

খেলাফতের আসল উদ্দেশ্য যেহেতু দীনকে প্রতিষ্ঠা করা এবং ইসলামের পতাকা সমুন্নত করা এজন্য কুরাইশগণ যে পর্যন্ত দীন ও শরিয়তের প্রচার ও প্রসারে লেগে থাকবে এবং ইসলামের পতাকা সমুন্নত রাখার চেষ্টা-প্রচেষ্টা চালিযে যাবে তারা খেলাফাতের পদমর্যাদার অধিকারী হবে এবং আল্লাহ তা'আলাও তাদের শাসন ও কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠিত রাখবেন। কিন্তু যখন তারা তাদের মূল দায়িত্ব অর্থাৎ দীন ও ইসলাম প্রতিষ্ঠা হতে গাফেল হয়ে যাবে এবং খেলাফতের মূল চাহিদাগুলো পূরণ করা হতে পিছপা হবে তখন তারা উপেক্ষিত হবে এবং খেলাফত ও কর্তৃত্বের লাগাম তাদের থেকে ছিনিয়ে নেওয়া হবে। কতক ব্যাখ্যাকার লিখেছেন যে, 'দীন প্রতিষ্ঠা করার দ্বারা উদ্দেশ্য 'নামাজ প্রতিষ্ঠা করা।' যেমনিভাবে এক বর্ণনায় : মাতা" -এর কথাই উল্লেখ আছে । তদ্রূপ কতক স্থানে দীন ও ঈমানের প্রয়োগ নামাজের উপর হয়েছে । এ কথার উপর ভিত্তি করে কতক আলেমের বক্তব্য হলো, উক্ত মূল্যবান ঘোষণার আসল উদ্দেশ্য কুরাইশগণকে নামাজ প্রতিষ্ঠার নির্দেশ ও উৎসাহদান এবং এ কথা থেকে ভয় দেখানো যে, যদি তারা নামাজ প্রতিষ্ঠিত না রাখে তাহলে সম্ভাবনা আছে যে, খেলাফত ও কর্তৃত্বের পদমর্যাদা তাদের আয়ত্ত বহির্ভূত হবে এবং অন্য লোকেরা তাদের উপর কর্তৃত্বের ছড়ি ঘুরাবে। — মাযাহেরে হক খ. ৭, পৃ. ২২৭ ও ২২৮]


নাস্তিকদেরকে সত্য বোঝানো আর গাধাকে গণিত শেখানো একই কথা। আপনি যখন নাস্তিকদের কাছে তাদের জালিয়াতি গুলো তুলে ধরতে থাকবেন তখন তারা হযরত মোহাম্মদ (সা)কে ব্যক্তিগত আক্রমণ বা ঠাট্টা বিদ্রুপ করবে অথবা প্রসঙ্গ ঘুরিয়ে দাসদাসী, শিশু বিবাহ, জিহাদ এসব টপিকে কথা বলবে। আবার আপনি যখন এসব টপিক নিয়ে তাদের মিথ্যা গুলো ধরিয়ে দিবেন তখন আরেক টপিকে লাফ দিবে। এভাবেই এক জাগা থেকে আরেক জায়গায় লাফালাফি করে নিজেদের পূর্ব পুরুষদের আদর্শ নাস্তিকরা বজায় রাখছে। এরপরেও সত্যকে সততার সাথে গ্রহণ করতে চাইবে না মুক্তমনা নামধারী বদমাইশ গুলো।


উপসংহারঃ

তাহলে সমগ্র তথ্যপ্রমাণ বিবেচনায় আমরা পরিস্কার বুঝতে পারলাম হযরত মোহাম্মদ (সা) ঠিকই ভবিষ্যৎবাণী করেছেন। কিন্তু মুক্তচিন্তা ও মিথ্যার আশ্রয়ে নাস্তিক্যধর্মের অনুসারীরা অর্ধেক তথ্য দেখিয়ে অপপ্রচার রটাচ্ছে যে উনি নাকি ভুল ভবিষ্যৎবাণী করেছেন। মহানবী (সা)এর বলা প্রতিটি ভবিষ্যৎবাণী সত্যি প্রমাণিত হয়েছে আর বাকিগুলো ধিরে ধিরে সত্য প্রমাণিত হচ্ছে। চিন্তার মুক্তির আন্দোলনকারীরা যতোই বাহানা মারুক না কেন ইসলামই যে সত্য সেটা সত্যনিষ্ঠ হৃদয়ের অধিকারী যেকেউই উপলব্ধি করতে সক্ষম। বাকিটুকু পাঠকদের বিবেচনায় আজ রেখে যাচ্ছি। 


==============================

আরও পড়ুনঃ


মক্কাবিজয়সহ সত্যময় ভবিষ্যৎবাণী


ক্ষমতাশীল কাফেরদের বিরুদ্ধে ভবিষ্যৎবাণী


কুরআনের ভবিষ্যৎবাণীর নিশ্চিত সত্যতা


কুরআনে আবু লাহাবকে গালাগালি করা হয়েছে?


ইরামের খবর কুরআনে কিভাবে?


বক্ষ সংকুচিত ও কুরআনের মোজেজা


আঙ্গুলের অগ্রভাগ ও কুরআনের সত্যতা


নবী মুহাম্মদ (সা) কি লিখতে ও পড়তে পারতেন ?


কুরআনে বৈপরীত্য আয়াত আছে?


==========================================

বালকের বৃদ্ধ হবার পূর্বেই ‘কিয়ামত’ হওয়া শীর্ষক হাদিসঃ নবী(ﷺ) কি কিয়ামতের ভুল ভবিষ্যৎবাণী করেছেন? https://response-to-anti-islam.com/

===========================================

এমডি আলী

যিনি একজন লেখক, বিতার্কিক ও গবেষক। বিভিন্ন ধর্ম ও মতবাদ বিষয় পড়াশোনা করেন। ইসলামের সত্যতা মানুষের কাছে ছড়িয়ে দিতে চান। “সত্যের অনুভূতি” উনার লেখা প্রথম বই। “ফ্যান্টাস্টিক হামজা” দ্বিতীয় বই। জবাব দেবার পাশাপাশি নাস্তিক মুক্তমনাদের যৌক্তিক সমালোচনা করে থাকেন।

Previous Post Next Post